Text Message

আল কুরআন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আল কুরআন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

২৬ জুন ২০২১

আল কুরআন, সুরা (৫৬) ওয়াকিয়া

 ( প্রতি রাতে পড়া দরকার, এখানে বাংলা অনুবাদ দেওয়া হল)

৫৬-ওয়াক্বিয়া

(56:0)
অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

(56:1)
অনুবাদ:    যখন সেই মহা ঘটনা (কেয়ামত বা মহা প্রলয়) সংঘটিত হবে

(56:2)
অনুবাদ:    তখন তার সংঘটিত হওয়াকে কেউ-ই মিথ্যা বলতে পারবে না।

(56:3)
অনুবাদ:    তা হবে উলট-পালটকারী মহা প্রলয়।

(56:4)
অনুবাদ:    পৃথিবীকে সে সময় অকস্মাত ভীষণভাবে আলোড়িত করা হবে

(56:5)
অনুবাদ:    এবং পাহাড়কে এমন টুকরো টুকরো করে দেয়া হবে

(56:6)
অনুবাদ:    যে, তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে।

(56:7)

অনুবাদ:    সে সময় তোমরা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে যাবে। ডান দিকের লোক।

(56:8)

অনুবাদ:    ডান দিকের লোকদের (সৌভাগ্যের) কথা আর কতটা বলা যাবে।

(56:9)
অনুবাদ:    বাম দিকের লোক বাম দিকের লোকদের (দুর্ভাগ্যের) পরিণতি আর কি বলা যাবে।

(56:10)

অনুবাদ:    আর অগ্রগামীরা তো অগ্রগামীই।

(56:11)

অনুবাদ:    তারাই তো নৈকট্য লাভকারী।

(56:12)
অনুবাদ:    তারা নিয়ামতে ভরা জান্নাতে থাকবে।

(56:13)
অনুবাদ:    পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে হবে বেশী

(56:14)

অনুবাদ:    এবং পরবর্তীদের মধ্য থেকে হবে কম।

(56:15)
অনুবাদ:    তারা মণিমুক্তা খচিত আসনসমূহে

(56:16)

অনুবাদ:    হেলান দিয়ে সামনা সামনি বসবে।

(56:17)
অনুবাদ:    তাদের মজলিসে চির কিশোররা ঘুরাফিরা করবে

(56:18)
অনুবাদ:    বহমান ঝর্ণার সুরায় ভরা পান পাত্র, হাতল বিশিষ্ট সুরা পাত্র এবং হাতলবিহীন বড় সুরা পাত্র নিয়ে ( সেই চির কিশোররা ) সদা ব্যস্ত থাকবে

(56:19)

অনুবাদ:    ---যা পান করে মাথা ঘুরবে না। কিংবা বুদ্ধিবিবেক লোপ পাবে না।

(56:20)

অনুবাদ:    তারা তাদের সামনে নানা রকমের সুস্বাদু ফল পরিবেশন করবে যাতে পছন্দ মত বেছে নিতে পারে।

(56:21)
অনুবাদ:    পাখীর গোশত পরিবেশন করবে, যে পাখীর গোশত ইচ্ছামত ব্যবহার করতে পারবে।

(56:22)

অনুবাদ:    তাদের জন্য থাকবে সুনয়না হুর

(56:23)

অনুবাদ:    এমন অনুপম সুন্দরী যেন লুকিয়ে রাখা মুক্তা।

(56:24)

অনুবাদ:    দুনিয়াতে তারা যেসব কাজ করেছে তার প্রতিদান হিসেবে এসব লাভ করবে।

(56:25)

অনুবাদ:    সেখানে তারা কোন অর্থহীন বা গোনাহর কথা শুনতে পাবে না।

(56:26)

অনুবাদ:    বরং যে কথাই শুনবে তা হবে যথাযথ ও ঠিকঠাক।

(56:27)

অনুবাদ:    আর ডান দিকের লোকেরা। ডান দিকের লোকদের সৌভাগ্যের কথা আর কতটা বলা যাবে।

(56:28)

অনুবাদ:    তারা কাঁটাবিহীন কুল গাছের কুল,

(56:29)

অনুবাদ:    থরে বিথরে সজ্জিত কলা,

(56:30)
অনুবাদ:    দীর্ঘ বিস্তৃত ছায়া,

(56:31)
অনুবাদ:    সদা বহমান পানি,

(56:32)

অনুবাদ:    প্রচুর ফলমূল

(56:33)
অনুবাদ:    অবাধ লভ্য অনিশেষ যোগ্য

(56:34)

অনুবাদ:    এবং সুউচ্চ আসনসমূহে অবস্থান করবে।

(56:35)

অনুবাদ:    তাদের স্ত্রীদেরকে আমি বিশেষভাবে নতুন করে সৃষ্টি করবো

(56:36)
অনুবাদ:    অত:পর আমি তাদের চিরকুমারী বানিয়ে দেব।

(56:37)
অনুবাদ:    তারা হবে নিজের স্বামীর প্রতি আসক্ত ও তাদের সময়বস্কা।

(56:38)

অনুবাদ:    এসব হবে ডান দিকের লোকদের জন্য।

(56:39)

অনুবাদ:    তাদের সংখ্যা পূববর্তীদের মধ্য থেকেও হবে অনেক

(56:40)

অনুবাদ:    এবং পরবর্তীদের মধ্য থেকেও হবে অনেক।

(56:41)
অনুবাদ:    বাঁ দিকের লোক। বাঁ দিকের লোকদের দুর্ভাগ্যের কথা আর কি বলা যাবে।

(56:42)

অনুবাদ:    তারা লু হাওয়ার হলকা, ফুটন্ত পানি

(56:43)

অনুবাদ:    এবং কালো ধোঁয়ার ছায়ার নীচে থাকবে।

(56:44)

অনুবাদ:    তা না হবে ঠাণ্ডা, না হবে আরামদায়ক।

(56:45)

অনুবাদ:    এরা সেসব লোক যারা এ পরিণতিলাভের পূর্বে সুখী ছিল

(56:46)
অনুবাদ:    এবং বারবার বড় বড় গোনাহ করতো।

(56:47)

অনুবাদ:    বলতোঃ আমরা যখন মরে মাটিতে মিশে যাবো এবং নিরেট হাড্ডি অবশিষ্ট থাকবো তখন কি আমাদেরকে জীবিত করে তোলা হবে?

(56:48)
অনুবাদ:    আমাদের বাপ দাদাদেরকেও কি উঠানো হবে যারা ইতিপূর্বে অতিবাহিত হয়েছে?

(56:49)

অনুবাদ:    হে নবী, এদের বলে দাও, নিশ্চিতভাবেই পূর্ববর্তী ও পরবর্তী (সময়ের সব মানুষকে)

(56:50)

অনুবাদ:    ( সব মানুষকে) একদিন অবশ্যই একত্রিত করা হবে। সেজন্য সময় নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে।

(56:51)

অনুবাদ:    তারপর হে পথভ্রষ্ট ও অস্বীকারকারীরা

(56:52)

অনুবাদ:    তোমাদেরকে ‘যাককূম’ বৃক্ষজাত খাদ্য খেতে হবে।

(56:53)
অনুবাদ:    তোমরা ঐ খাদ্য দিয়েই পেট পূর্ণ করবে

(56:54)
অনুবাদ:    অত:পর তারা পান করবে ফুটন্ত পানি থেকে

(56:55)
অনুবাদ:    অত:পর তারা পান করবে পিপাসার্ত উটের মত

(56:56)

অনুবাদ:    প্রতিদান দিবসে বাঁ দিকের লোকদের আপ্যায়নের উপকরণ।

(56:57)
অনুবাদ:    আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি। এরপরও কেন তোমরা মানছো না?

(56:58)
অনুবাদ:    তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো, যে শুক্র তোমরা নিক্ষেপ করো

(56:59)
অনুবাদ:    তা দ্বারা সন্তান সৃষ্টি তোমরা করো, না তার স্রষ্টা আমি?

(56:60)
অনুবাদ:    আমি তোমাদের মধ্যে মৃত্যুকে বন্টন করেছি। আর আমি অক্ষম নই -

(56:61)
অনুবাদ:    তোমাদের আকার আকৃতি পাল্টে দিতে এবং তোমাদের অজানা কোন আকার-আকৃতিতে সৃষ্টি করতে (আমি অক্ষম নই)।

(56:62)
অনুবাদ:    নিজেদের প্রথমবার সৃষ্টি সম্পর্কে তোমরা জান। তবুও কেন শিক্ষা গ্রহণ করোনা।

(56:63)
অনুবাদ:    তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো, যে বীজ তোমরা বপন করে থাকো

(56:64)
অনুবাদ:    তা থেকে ফসল উৎপন্ন তোমরা করো, না আমি?

(56:65)
অনুবাদ:    আমি চাইলে এসব ফসলকে দানাবিহীন ভূষি বানিয়ে দিতে পারি। তখন তোমরা নানা রকমের কথা বলতে থাকবে।

(56:66)
অনুবাদ:    বলবে আমাদেরকে তো উল্টা জরিমানা দিতে হলো।

(56:67)
অনুবাদ:    বরং আমরা বঞ্চিত হয়েছি (আমাদের ভাগ্যটাই মন্দ।)

(56:68)
অনুবাদ:    তোমরা কি চোখ মেলে কখনো দেখেছো, যে পানি তোমরা পান করো,

(56:69)
অনুবাদ:    মেঘ থেকে তা তোমরা বর্ষণ করো, না তার বর্ষণকারী আমি?

(56:70)

অনুবাদ:    আমি চাইলে তা লবণাক্ত বানিয়ে দিতে পারি। তা সত্ত্বেও তোমরা শোকরগোজার হও না কেন?

(56:71)
অনুবাদ:    তোমরা কি কখনো লক্ষ্য করেছো,-এই যে আগুন তোমরা জ্বালাও তার গাছ

(56:72)
অনুবাদ:    তোমরা সৃষ্টি করো, না তার সৃষ্টিকর্তা আমি?

(56:73)
অনুবাদ:    আমি সেটিকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার উপকরণ এবং মুখাপেক্ষীদের জন্য জীবনোপকরণ বানিয়েছি।

(56:74)

অনুবাদ:    অতএব হে নবী, তোমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করো।

(56:75)
অনুবাদ:    অতএব না, আমি শপথ করছি তারকাসমূহের ভ্রমণ পথের।

(56:76)
অনুবাদ:    এটা এক অতি বড় শপথ যদি তোমরা বুঝতে পার।

(56:77)
অনুবাদ:    এ তো মহা সম্মানিত কুরআন।

(56:78)
অনুবাদ:    একখানা সুরক্ষিত গ্রন্থে লিপিবদ্ধ।

(56:79)

অনুবাদ:    পবিত্র সত্তাগণ ছাড়া আর কেউ তা স্পর্শ করতে পারে না।

(56:80)
অনুবাদ:    এটা বিশ্ব-জাহানের রবের নাযিলকৃত।

(56:81)

অনুবাদ:    এরপরও কি তোমরা এ বাণীর প্রতি উপেক্ষার ভাব প্রদর্শন করছো?

(56:82)

অনুবাদ:    এ নিয়ামতে তোমরা নিজেদের অংশ রেখেছো এই যে, তোমরা তা অস্বীকার করছো?

(56:83)
অনুবাদ:    তাহলে মৃত্যু পথযাত্রীর প্রাণ যখন কণ্ঠনালীতে উপনীত হয়

(56:84)
অনুবাদ:    এবং তোমরা তাদের দিকে তাকিয়ে থাকো

(56:85)
অনুবাদ:    সে সময় তোমাদের চেয়ে আমিই তার অধিকতর নিকটে থাকি। কিন্তু তোমরা দেখতে পাওনা ।

(56:86)
অনুবাদ:    তোমরা যদি কারো অধীন না হয়ে থাকো

(56:87)
অনুবাদ:    আর নিজেদের এ ধারণার ব্যাপারে যদি সত্যবাদী হয়ে থাকো তাহলে মৃত্যু পথযাত্রীর বিদায়ী প্রাণবায়ূকে ফিরিয়ে আন না কেন?

(56:88)

অনুবাদ:    মৃত সেই ব্যক্তি যদি মুকাররাবীনদের কেউ হয়ে থাকে

(56:89)
অনুবাদ:    তাহলে তার জন্য রয়েছে আরাম-আয়েশ, উত্তম রিযিক এবং নিয়ামতে ভরা জান্নাত।

(56:90)
অনুবাদ:    আর সে যদি ডান দিকের লোক হয়ে থাকে

(56:91)
অনুবাদ:    তাহলে তাকে সাদর অভিনন্দন জানানো হয় এভাবে যে, তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।

(56:92)
অনুবাদ:    আর সে যদি অস্বীকারকারী পথভ্রষ্টদের কেউ হয়ে থাকে

(56:93)
অনুবাদ:    তাহলে তার সমাদরের জন্য রয়েছে ফূটন্ত গরম পানি

(56:94)
অনুবাদ:    এবং জাহান্নামে ঠেলে দেয়ার ব্যবস্থা।

(56:95)
অনুবাদ:    এ সবকিছুই অকাট্য সত্য।

(56:96)
অনুবাদ:    অতএব, হে নবী, আপনার মহান রবের নামের তাসবীহ-- তথা পবিত্রতা ঘোষণা করুন।

২০ মে ২০২১

৫২ তুর

  ৫২-তূর

(52:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ

অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

(52:1)

وَ الطُّوْرِۙ

অনুবাদ:    তূরের শপথ।

(52:2)

وَ كِتٰبٍ مَّسْطُوْرٍۙ

অনুবাদ:    এবং এমন একখানা খোলা গ্রন্থের শপথ


(52:3)

فِیْ رَقٍّ مَّنْشُوْرٍۙ

অনুবাদ:    যা সূক্ষ্ম চামড়ার ওপর লিখিত।


(52:4)

وَّ الْبَیْتِ الْمَعْمُوْرِۙ

অনুবাদ:    আর শপথ আবাদ ঘরের,


(52:5)

وَ السَّقْفِ الْمَرْفُوْعِۙ

অনুবাদ:    সুউচ্চ ছাদের


(52:6)

وَ الْبَحْرِ الْمَسْجُوْرِۙ




অনুবাদ:    এবং তরঙ্গ বিক্ষুব্ধ সমুদ্রের।




(52:7)

اِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ لَوَاقِعٌۙ




অনুবাদ:    তোমার রবের আযাব অবশ্যই আপতিত হবে




(52:8)

مَّا لَهٗ مِنْ دَافِعٍۙ




অনুবাদ:    যার রোধকারী কেউ নেই।




(52:9)

یَّوْمَ تَمُوْرُ السَّمَآءُ مَوْرًاۙ




অনুবাদ:    তা ঘটবে সেদিন, যেদিন আসমান প্রচণ্ডভাবে দুলিত হবে




(52:10)

وَّ تَسِیْرُ الْجِبَالُ سَیْرًاؕ




অনুবাদ:    এবং পাহাড় শূন্যে উড়তে থাকবে।




(52:11)

فَوَیْلٌ یَّوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِیْنَۙ




অনুবাদ:    ধ্বংস রয়েছে সেদিন সেসব অস্বীকারকারীদের জন্য




(52:12)

الَّذِیْنَ هُمْ فِیْ خَوْضٍ یَّلْعَبُوْنَۘ




অনুবাদ:    যারা আজ, তামাসাচ্ছলে নিজেদের যুক্তি-প্রমাণ উপস্থাপনে ব্যস্ত আছে।




(52:13)

یَوْمَ یُدَعُّوْنَ اِلٰى نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّاؕ




অনুবাদ:    যেদিন তাদের ধাক্কা দিতে দিতে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে




(52:14)

هٰذِهِ النَّارُ الَّتِیْ كُنْتُمْ بِهَا تُكَذِّبُوْنَ




অনুবাদ:    সেদিন তাদের বলা হবে এতো সেই আগুন যা তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে।




(52:15)

اَفَسِحْرٌ هٰذَاۤ اَمْ اَنْتُمْ لَا تُبْصِرُوْنَۚ




অনুবাদ:    এখন বলো, এটা কি যাদু না এখনো তোমরা উপলব্ধি করতে পারছো না?




(52:16)

اِصْلَوْهَا فَاصْبِرُوْۤا اَوْ لَا تَصْبِرُوْا١ۚ سَوَآءٌ عَلَیْكُمْ١ؕ اِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    যাও, এখন এর মধ্যে ঢুকে দগ্ধ হতে থাকো। তোমরা ধৈর্য্য ধর আর না ধর, এখন উভয়টিই তোমাদের জন্য সমান। তোমরা যেমন কাজ করে এসেছো ঠিক তেমন প্রতিদানই তোমাদের দেয়া হচ্ছে।




(52:17)

اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ جَنّٰتٍ وَّ نَعِیْمٍۙ




অনুবাদ:    মুত্তাকীরা সেখানে বাগান ও নিয়ামতসমূহের মধ্যে অবস্থান করবে




(52:18)

فٰكِهِیْنَ بِمَاۤ اٰتٰىهُمْ رَبُّهُمْ١ۚ وَ وَقٰىهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ الْجَحِیْمِ




অনুবাদ:    এবং তাদের রব তাদের যা কিছু দান করবেন তা মজা করে উপভোগ করতে থাকবে। আর তাদের রব তাদেরকে দোযখের আযাব থেকে বাঁচিয়ে নেবেন।




(52:19)

كُلُوْا وَ اشْرَبُوْا هَنِیْٓئًۢا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَۙ




অনুবাদ:    (তাদেরকে বলা হবে) তোমরা যেসব কাজ করে এসেছো তার বিনিময়ে মজা করে পানাহার করো।




(52:20)

مُتَّكِئِیْنَ عَلٰى سُرُرٍ مَّصْفُوْفَةٍ١ۚ وَ زَوَّجْنٰهُمْ بِحُوْرٍ عِیْنٍ




অনুবাদ:    তারা সামনা-সামনি রাখা সুসজ্জিত আসনসমূহে হেলান দিয়ে বসবে এবং আমি সুনয়না হুরদের সাথে তাদের বিয়ে দেব।




(52:21)

وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ اتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّیَّتُهُمْ بِاِیْمَانٍ اَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّیَّتَهُمْ وَ مَاۤ اَلَتْنٰهُمْ مِّنْ عَمَلِهِمْ مِّنْ شَیْءٍ١ؕ كُلُّ امْرِئٍۭ بِمَا كَسَبَ رَهِیْنٌ




অনুবাদ:    যারা ঈমান গ্রহণ করেছে এবং তাদের সন্তানরাও ঈমানসহ তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে আমি তাদের সেসব সন্তানকেও তাদের সাথে (জান্নাতে) একত্রিত করে দেব। আর তাদের আমলের কোন ঘাটতি আমি তাদেরকে দেব না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার উপার্জিত কর্মের হাতে জিম্মী রয়েছে।




(52:22)

وَ اَمْدَدْنٰهُمْ بِفَاكِهَةٍ وَّ لَحْمٍ مِّمَّا یَشْتَهُوْنَ




অনুবাদ:    আমি তাদেরকে সব রকমের ফল, গোশত এবং তাদের মন যা চাইবে তাই প্রচুর পরিমাণে দিতে থাকবো।




(52:23)

یَتَنَازَعُوْنَ فِیْهَا كَاْسًا لَّا لَغْوٌ فِیْهَا وَ لَا تَاْثِیْمٌ




অনুবাদ:    তারা সেখানে পরস্পরের নিকট থেকে ক্ষিপ্রতার সাথে শরাব পাত্র গ্রহণ করতে থাকবে। কিন্তু সেখানে কোন অপ্রয়োজনীয় কথা থাকবে না এবং থাকবে না কোন চরিত্রহীনতা।




(52:24)

وَ یَطُوْفُ عَلَیْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَاَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُوْنٌ




অনুবাদ:    তাদের সেবার জন্য সেসব বালকেরা ছুটাছুটি করতে থাকবে যারা কেবল তাদের জন্য নির্দিষ্ট হবে তারা এমন সুদর্শন যেন সযত্নে লুকিয়ে রাখা মোতি।




(52:25)

وَ اَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلٰى بَعْضٍ یَّتَسَآءَلُوْنَ




অনুবাদ:    তারা একে অপরকে (পৃথিবীতে অতিবাহিত) অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে।




(52:26)

قَالُوْۤا اِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِیْۤ اَهْلِنَا مُشْفِقِیْنَ




অনুবাদ:    তারা বলবে আমরা প্রথমে নিজের পরিবারের লোকদের মধ্যে ভয়ে ভয়ে জীবন যাপন করতাম।




(52:27)

فَمَنَّ اللّٰهُ عَلَیْنَا وَ وَقٰىنَا عَذَابَ السَّمُوْمِ




অনুবাদ:    পরিশেষে আল্লাহ‌ আমাদের ওপর মেহেরবানী করেছেন এবং দগ্ধকারী আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।




(52:28)

اِنَّا كُنَّا مِنْ قَبْلُ نَدْعُوْهُ١ؕ اِنَّهٗ هُوَ الْبَرُّ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    অতীত জীবনে আমরা তাঁর কাছেই দোয়া করতাম সত্যিই তিনি অতি বড় উপকারী ও দয়াবান।




(52:29)

فَذَكِّرْ فَمَاۤ اَنْتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَّ لَا مَجْنُوْنٍؕ




অনুবাদ:    তাই হে নবী (সা.), তুমি উপদেশ দিতে থাক। আল্লাহর মেহেরবাণীতে তুমি গণকও নও, পাগলও নও।




(52:30)

اَمْ یَقُوْلُوْنَ شَاعِرٌ نَّتَرَبَّصُ بِهٖ رَیْبَ الْمَنُوْنِ




অনুবাদ:    এসব লোক কি বলে যে, এ ব্যক্তি কবি, যার ব্যাপারে আমরা কালের আবর্তনের অপেক্ষা করছি।




(52:31)

قُلْ تَرَبَّصُوْا فَاِنِّیْ مَعَكُمْ مِّنَ الْمُتَرَبِّصِیْنَؕ




অনুবাদ:    তাদেরকে বলো, ঠিক আছে অপেক্ষা করতে থাক, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।




(52:32)

اَمْ تَاْمُرُهُمْ اَحْلَامُهُمْ بِهٰذَاۤ اَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُوْنَۚ




অনুবাদ:    তাদের বিবেক-বুদ্ধি কি তাদেরকে এসব কথা বলতে প্ররোচিত করে, না কি প্রকৃতপক্ষে তারা শত্রুতায় সীমালংঘনকারী লোক?




(52:33)

اَمْ یَقُوْلُوْنَ تَقَوَّلَهٗ١ۚ بَلْ لَّا یُؤْمِنُوْنَۚ




অনুবাদ:    তারা কি বলে যে, এ ব্যক্তি নিজেই কুরআন রচনা করে নিয়েছে? প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে তারা ঈমান গ্রহণ করতে চায় না।




(52:34)

فَلْیَاْتُوْا بِحَدِیْثٍ مِّثْلِهٖۤ اِنْ كَانُوْا صٰدِقِیْنَؕ




অনুবাদ:    তাদের একথার ব্যাপারে তারা যদি সত্যবাদী হয় তাহলে এ বাণীর মত একটি বাণী তৈরি করে আনুক।




(52:35)

اَمْ خُلِقُوْا مِنْ غَیْرِ شَیْءٍ اَمْ هُمُ الْخٰلِقُوْنَؕ




অনুবাদ:    কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এরা কি নিজেরাই সৃষ্টি হয়েছে? না কি এরা নিজেরাই নিজেদের সৃষ্টিকর্তা?




(52:36)

اَمْ خَلَقُوا السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ١ۚ بَلْ لَّا یُوْقِنُوْنَؕ




অনুবাদ:    না কি পৃথিবী ও আসমানকে এরাই সৃষ্টি করেছে? প্রকৃত ব্যাপার হলো, তারা বিশ্বাস পোষণ করে না।




(52:37)

اَمْ عِنْدَهُمْ خَزَآئِنُ رَبِّكَ اَمْ هُمُ الْمُصَۜیْطِرُوْنَؕ




অনুবাদ:    তোমার রবের ভাণ্ডারসমূহ কি এদের অধিকারে? নাকি ঐ সবের ওপর তাদের কর্তৃত্ব চলে?




(52:38)

اَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ یَّسْتَمِعُوْنَ فِیْهِ١ۚ فَلْیَاْتِ مُسْتَمِعُهُمْ بِسُلْطٰنٍ مُّبِیْنٍؕ




অনুবাদ:    তাদের কাছে কি কোন সিঁড়ি আছে, যাতে আরোহণ করে তারা ঊর্ধ্বজগতের কথা শুনে নেয়? এদের মধ্যে যে শুনেছে সে পেশ করুক কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ।




(52:39)

اَمْ لَهُ الْبَنٰتُ وَ لَكُمُ الْبَنُوْنَؕ




অনুবাদ:    আল্লাহর জন্য কি কেবল কন্যা সন্তান আর তোমাদের জন্য যত পুত্র সন্তান?




(52:40)

اَمْ تَسْئَلُهُمْ اَجْرًا فَهُمْ مِّنْ مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُوْنَؕ




অনুবাদ:    তুমি কি তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক দাবী করছো যে, তাদের ওপর জোরপূর্বক চাপানো জরিমানার বোঝার নীচে তারা নিস্পেষিত হচ্ছে?




(52:41)

اَمْ عِنْدَهُمُ الْغَیْبُ فَهُمْ یَكْتُبُوْنَؕ




অনুবাদ:    তাদের কাছে কি অদৃশ্য সত্যসমূহের জ্ঞান আছে যার ভিত্তিতে তারা লিখছে? (তারা কি কোন চক্রান্ত আঁটতে চাচ্ছে?)




(52:42)

اَمْ یُرِیْدُوْنَ كَیْدًا١ؕ فَالَّذِیْنَ كَفَرُوْا هُمُ الْمَكِیْدُوْنَؕ




অনুবাদ:    তারা কি কোন চক্রান্ত আঁটতে চাচ্ছে? (যদি তাই হয়) তাহলে কাফেররাই উল্টো নিজেদের ষড়যন্ত্রের জালে আটকা পড়বে।




(52:43)

اَمْ لَهُمْ اِلٰهٌ غَیْرُ اللّٰهِ١ؕ سُبْحٰنَ اللّٰهِ عَمَّا یُشْرِكُوْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহ ছাড়া কি তাদের আর কোন ইলাহ আছে? যে শির্‌ক তারা করছে আল্লাহ‌ তা থেকে পবিত্র।




(52:44)

وَ اِنْ یَّرَوْا كِسْفًا مِّنَ السَّمَآءِ سَاقِطًا یَّقُوْلُوْا سَحَابٌ مَّرْكُوْمٌ




অনুবাদ:    এরা যদি আসমানের একটি অংশ পতিত হতে দেখে তাহলেও বলবে, এ তো ধাবমান মেঘরাশি।




(52:45)

فَذَرْهُمْ حَتّٰى یُلٰقُوْا یَوْمَهُمُ الَّذِیْ فِیْهِ یُصْعَقُوْنَۙ




অনুবাদ:    অতএব, হে নবী, তাদেরকে আপন অবস্থায় থাকতে দাও। যাতে তারা সে দিনটির সাক্ষাত পায় যেদিন তাদেরকে মেরে ভূপাতিত করা হবে।




(52:46)

یَوْمَ لَا یُغْنِیْ عَنْهُمْ كَیْدُهُمْ شَیْئًا وَّ لَا هُمْ یُنْصَرُوْنَؕ




অনুবাদ:    সেদিন না তাদের কোন চালাকি কাজে আসবে, না কেউ তাদেরকে সাহায্য করতে এগুবে।




(52:47)

وَ اِنَّ لِلَّذِیْنَ ظَلَمُوْا عَذَابًا دُوْنَ ذٰلِكَ وَ لٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    আর সেদিনটি আসার আগেও জালেমদের জন্য একটা আযাব আছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না

(52:48)

وَ اصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَاِنَّكَ بِاَعْیُنِنَا وَ سَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِیْنَ تَقُوْمُۙ


অনুবাদ:    হে নবী! তোমার রবের ফায়সালা আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করো। তুমি আমার চোখে চোখেই আছ। তুমি যখন উঠবে তখন তোমার রবের প্রশংসায় তাসবীহ পাঠ করো


(52:49)

وَ مِنَ الَّیْلِ فَسَبِّحْهُ وَ اِدْبَارَ النُّجُوْمِ۠


অনুবাদ:    তাছাড়া রাত্রিকালেও তাঁর তাসবীহ পাঠ করো। আর তারকারাজি যখন অস্তমিত হয় সে সময়ও।


৫১ যারিয়াত

  ৫১-যারিয়াত



(51:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(51:1)

وَ الذّٰرِیٰتِ ذَرْوًاۙ




অনুবাদ:    শপথ সে বাতাসের যা ধূলাবালি উড়ায়।




(51:2)

فَالْحٰمِلٰتِ وِقْرًاۙ




অনুবাদ:    আবার পানি ভরা মেঘরাশি বয়ে নিয়ে যায়




(51:3)

فَالْجٰرِیٰتِ یُسْرًاۙ




অনুবাদ:    তারপর ধীর মৃদুমন্দ গতিতে বয়ে যায়।




(51:4)

فَالْمُقَسِّمٰتِ اَمْرًاۙ




অনুবাদ:    অতঃপর একটি বড় জিনিস (বৃষ্টি) বন্টন করে।




(51:5)

اِنَّمَا تُوْعَدُوْنَ لَصَادِقٌۙ




অনুবাদ:    প্রকৃত ব্যাপার হলো, তোমাদেরকে যে জিনিসের ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে তা সত্য।




(51:6)

وَّ اِنَّ الدِّیْنَ لَوَاقِعٌؕ




অনুবাদ:    কর্মফল প্রদানের সময় অবশ্যই আসবে।




(51:7)

وَ السَّمَآءِ ذَاتِ الْحُبُكِۙ




অনুবাদ:    শপথ বিবিধ আকৃতি ধারণকারী আসমানের।




(51:8)

اِنَّكُمْ لَفِیْ قَوْلٍ مُّخْتَلِفٍۙ




অনুবাদ:    (আখেরাত সম্পর্কে) তোমাদের কথা পরস্পর ভিন্ন।




(51:9)

یُّؤْفَكُ عَنْهُ مَنْ اُفِكَؕ




অনুবাদ:    তার ব্যাপারে সে-ই বিরক্ত যে হকের প্রতি বিমুখ।




(51:10)

قُتِلَ الْخَرّٰصُوْنَۙ




অনুবাদ:    ধ্বংস হয়েছে অনুমান ও ধারণার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা,




(51:11)

الَّذِیْنَ هُمْ فِیْ غَمْرَةٍ سَاهُوْنَۙ




অনুবাদ:    যারা অজ্ঞতায় নিমজ্জিত এবং গাফলতিতে বিভোর।




(51:12)

یَسْئَلُوْنَ اَیَّانَ یَوْمُ الدِّیْنِؕ




অনুবাদ:    তারা জিজ্ঞেস করে, তবে সেই কর্মফল দিবস কবে আসবে?




(51:13)

یَوْمَ هُمْ عَلَى النَّارِ یُفْتَنُوْنَ




অনুবাদ:    তা সেদিন আসবে যেদিন তাদের আগুনে ভাজা হবে।




(51:14)

ذُوْقُوْا فِتْنَتَكُمْ١ؕ هٰذَا الَّذِیْ كُنْتُمْ بِهٖ تَسْتَعْجِلُوْنَ




অনুবাদ:    (এদের বলা হবে) এখন তোমাদের ফিতনার স্বাদ গ্রহণ করো। এটা সেই বস্তু যার জন্য তোমরা তাড়াহুড়া করছিলে।




(51:15)

اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍۙ




অনুবাদ:    তবে মুত্তাকীরা সেদিন বাগান ও ঝর্ণাধারার মধ্যে অবস্থান করবে।




(51:16)

اٰخِذِیْنَ مَاۤ اٰتٰىهُمْ رَبُّهُمْ١ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا قَبْلَ ذٰلِكَ مُحْسِنِیْنَؕ




অনুবাদ:    তাদের রব যা কিছু তাদের দান করবেন তা সানন্দে গ্রহণ করতে থাকবে। সেদিনটি আসার পূর্বে তারা ছিল সৎকর্মশীল।




(51:17)

كَانُوْا قَلِیْلًا مِّنَ الَّیْلِ مَا یَهْجَعُوْنَ




অনুবাদ:    রাতের বেলা তারা কমই ঘুমাতো।




(51:18)

وَ بِالْاَسْحَارِ هُمْ یَسْتَغْفِرُوْنَ




অনুবাদ:    তারপর তারাই আবার রাতের শেষ প্রহরগুলোতে ক্ষমা প্রার্থনা করতো।




(51:19)

وَ فِیْۤ اَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّآئِلِ وَ الْمَحْرُوْمِ




অনুবাদ:    তাদের সম্পদে অধিকার ছিল প্রার্থী ও বঞ্চিতদের।




(51:20)

وَ فِی الْاَرْضِ اٰیٰتٌ لِّلْمُوْقِنِیْنَۙ




অনুবাদ:    দৃঢ় প্রত্যয় পোষণকারীদের জন্য পৃথিবীতে বহু নিদর্শন রয়েছে।




(51:21)

وَ فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ١ؕ اَفَلَا تُبْصِرُوْنَ




অনুবাদ:    এবং তোমাদের সত্তার মধ্যেও। তোমরা কি দেখ না?




(51:22)

وَ فِی السَّمَآءِ رِزْقُكُمْ وَ مَا تُوْعَدُوْنَ




অনুবাদ:    আসমানেই রয়েছে তোমাদের রিযিক এবং সে জিনিসও যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হচ্ছে।




(51:23)

فَوَرَبِّ السَّمَآءِ وَ الْاَرْضِ اِنَّهٗ لَحَقٌّ مِّثْلَ مَاۤ اَنَّكُمْ تَنْطِقُوْنَ۠




অনুবাদ:    তাই আসমান ও যমীনের মালিকের শপথ, একথা সত্য এবং তেমনই নিশ্চিত যেমন তোমরা কথা বলছো।




(51:24)

هَلْ اَتٰىكَ حَدِیْثُ ضَیْفِ اِبْرٰهِیْمَ الْمُكْرَمِیْنَۘ




অনুবাদ:    হে নবী, ইবরাহীমের সম্মানিত মেহমানদের কাহিনী কি তোমার কাছে পৌঁছেছে?




(51:25)

اِذْ دَخَلُوْا عَلَیْهِ فَقَالُوْا سَلٰمًا١ؕ قَالَ سَلٰمٌ١ۚ قَوْمٌ مُّنْكَرُوْنَۚ




অনুবাদ:    তারা যখন তার কাছে আসলো, বললোঃ আপনার প্রতি সালাম। সে বললোঃ “আপনাদেরকেও সালাম- কিছু সংখ্যক অপরিচিত লোক।




(51:26)

فَرَاغَ اِلٰۤى اَهْلِهٖ فَجَآءَ بِعِجْلٍ سَمِیْنٍۙ




অনুবাদ:    পরে সে নীরবে তার পরিবারের লোকদের কাছে গেল এবং একটা মোটা তাজা বাছুর




(51:27)

فَقَرَّبَهٗۤ اِلَیْهِمْ قَالَ اَلَا تَاْكُلُوْنَ٘




অনুবাদ:    এনে মেহমানদের সামনে পেশ করলো। সে বললোঃ আপনারা খান না কেন?




(51:28)

فَاَوْجَسَ مِنْهُمْ خِیْفَةً١ؕ قَالُوْا لَا تَخَفْ١ؕ وَ بَشَّرُوْهُ بِغُلٰمٍ عَلِیْمٍ




অনুবাদ:    তারপর সে মনে মনে তাদের ভয় পেয়ে গেল। তারা বললোঃ ভয় পাবেন না। তাছাড়া তারা তাকে এক জ্ঞানবান পুত্র সন্তান জন্মের সুসংবাদ দিল।




(51:29)

فَاَقْبَلَتِ امْرَاَتُهٗ فِیْ صَرَّةٍ فَصَكَّتْ وَجْهَهَا وَ قَالَتْ عَجُوْزٌ عَقِیْمٌ




অনুবাদ:    একথা শুনে তার স্ত্রী চিৎকার করতে করতে অগ্রসর হলো। সে আপন গালে চপেটাঘাত করে বললোঃ বুড়ী বন্ধ্যা।




(51:30)

قَالُوْا كَذٰلِكِ١ۙ قَالَ رَبُّكِ١ؕ اِنَّهٗ هُوَ الْحَكِیْمُ الْعَلِیْمُ




অনুবাদ:    তারা বললোঃ তোমার রব একথাই বলেছেন। তিনি মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ।




(51:31)

قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ اَیُّهَا الْمُرْسَلُوْنَ




অনুবাদ:    ইবরাহীম বললোঃ হে আল্লাহর প্রেরিত দূতগণ, আপনাদের অভিপ্রায় কি?




(51:32)

قَالُوْۤا اِنَّاۤ اُرْسِلْنَاۤ اِلٰى قَوْمٍ مُّجْرِمِیْنَۙ




অনুবাদ:    তারা বললোঃ আমাদেরকে একটি পাপী জাতির কাছে পাঠানো হয়েছে।




(51:33)

لِنُرْسِلَ عَلَیْهِمْ حِجَارَةً مِّنْ طِیْنٍۙ




অনুবাদ:    যাতে আমরা তাদের ওপর পোড়ানো মাটির পাথর বর্ষণ করি।




(51:34)

مُّسَوَّمَةً عِنْدَ رَبِّكَ لِلْمُسْرِفِیْنَ




অনুবাদ:    যা আপনার রবের কাছে সীমালংঘনকারীদের জন্য চিহ্নিত আছে।




(51:35)

فَاَخْرَجْنَا مَنْ كَانَ فِیْهَا مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَۚ




অনুবাদ:    অতঃপর ঐ জনপদে যারা মু’মিন ছিলো তাদের সবাইকে বের করে নিলাম।




(51:36)

فَمَا وَجَدْنَا فِیْهَا غَیْرَ بَیْتٍ مِّنَ الْمُسْلِمِیْنَۚ




অনুবাদ:    আমি সেখানে একটি পরিবার ছাড়া আর কোন মুসলিম পরিবার পাইনি।




(51:37)

وَ تَرَكْنَا فِیْهَاۤ اٰیَةً لِّلَّذِیْنَ یَخَافُوْنَ الْعَذَابَ الْاَلِیْمَؕ




অনুবাদ:    অতঃপর যারা কঠোর আযাবকে ভয় করে তাদের জন্য সেখানে একটি নিদর্শন রেখে দিয়েছি।




(51:38)

وَ فِیْ مُوْسٰۤى اِذْ اَرْسَلْنٰهُ اِلٰى فِرْعَوْنَ بِسُلْطٰنٍ مُّبِیْنٍ




অনুবাদ:    এছাড়া (তোমাদের জন্য নিদর্শন আছে) মূসার কাহিনীতে। আমি যখন তাকে স্পষ্ট প্রমাণসহ ফেরাউনের কাছে পাঠালাম




(51:39)

فَتَوَلّٰى بِرُكْنِهٖ وَ قَالَ سٰحِرٌ اَوْ مَجْنُوْنٌ




অনুবাদ:    তখন সে নিজের শক্তিমত্তার ওপর গর্ব প্রকাশ করলো এবং বললোঃ এ তো যাদুকর কিংবা পাগল।




(51:40)

فَاَخَذْنٰهُ وَ جُنُوْدَهٗ فَنَبَذْنٰهُمْ فِی الْیَمِّ وَ هُوَ مُلِیْمٌؕ




অনুবাদ:    অবশেষে আমি তাকে ও তার সৈন্যদেরকে পাকড়াও করলাম এবং সবাইকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। আর সে তিরস্কৃত ও নিন্দিত হলো।




(51:41)

وَ فِیْ عَادٍ اِذْ اَرْسَلْنَا عَلَیْهِمُ الرِّیْحَ الْعَقِیْمَۚ




অনুবাদ:    তাছাড়া (তোমাদের জন্য নিদর্শন আছে) আদ জাতির মধ্যে। যখন আমি তাদের ওপর এমন অশুভ বাতাস পাঠালাম যে,




(51:42)

مَا تَذَرُ مِنْ شَیْءٍ اَتَتْ عَلَیْهِ اِلَّا جَعَلَتْهُ كَالرَّمِیْمِؕ




অনুবাদ:    তা যে জিনিসের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলো তাকেই জরাজীর্ণ করে ফেললো।




(51:43)

وَ فِیْ ثَمُوْدَ اِذْ قِیْلَ لَهُمْ تَمَتَّعُوْا حَتّٰى حِیْنٍ




অনুবাদ:    তাছাড়া (তোমাদের জন্য নিদর্শন আছে) সামূদ জাতির মধ্যে। যখন তাদের বলা হয়েছিলো যে, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মজা লুটে নাও।




(51:44)

فَعَتَوْا عَنْ اَمْرِ رَبِّهِمْ فَاَخَذَتْهُمُ الصّٰعِقَةُ وَ هُمْ یَنْظُرُوْنَ




অনুবাদ:    কিন্তু এ সতর্কীকরণ সত্ত্বেও তারা তাদের রবের হুকুম অমান্য করলো। অবশেষে তারা দেখতে দেখতে অকস্মাত আগমনকারী আযাব তাদের ওপর আপতিত হলো।




(51:45)

فَمَا اسْتَطَاعُوْا مِنْ قِیَامٍ وَّ مَا كَانُوْا مُنْتَصِرِیْنَۙ




অনুবাদ:    এরপর উঠে দাঁড়ানোর শক্তিও তাদের থাকলো না এবং তারা নিজেদের রক্ষা করতেও সক্ষম ছিল না।




(51:46)

وَ قَوْمَ نُوْحٍ مِّنْ قَبْلُ١ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا قَوْمًا فٰسِقِیْنَ۠




অনুবাদ:    আর এদের সবার পূর্বে আমি নূহের কওমকে ধ্বংস করেছিলাম। কারণ তারা ছিল ফাসেক।




(51:47)

وَ السَّمَآءَ بَنَیْنٰهَا بِاَیْىدٍ وَّ اِنَّا لَمُوْسِعُوْنَ




অনুবাদ:    আসমানকে আমি নিজের ক্ষমতায় বানিয়েছি এবং সে শক্তি আমার আছে।




(51:48)

وَ الْاَرْضَ فَرَشْنٰهَا فَنِعْمَ الْمٰهِدُوْنَ




অনুবাদ:    যমীনকে আমি বিছিয়ে দিয়েছি। আমি উত্তম সমতলকারী।




(51:49)

وَ مِنْ كُلِّ شَیْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَیْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ




অনুবাদ:    আমি প্রত্যেক জিনিসের জোড়া বানিয়েছি। হয়তো তোমরা এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে।




(51:50)

فَفِرُّوْۤا اِلَى اللّٰهِ١ؕ اِنِّیْ لَكُمْ مِّنْهُ نَذِیْرٌ مُّبِیْنٌۚ




অনুবাদ:    অতএব আল্লাহর দিকে ধাবিত হও। আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমার জন্য স্পষ্ট সাবধানকারী।




(51:51)

وَ لَا تَجْعَلُوْا مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ١ؕ اِنِّیْ لَكُمْ مِّنْهُ نَذِیْرٌ مُّبِیْنٌۚ




অনুবাদ:    আল্লাহর সাথে আর কাউকে উপাস্য বানাবে না। আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য স্পষ্ট সাবধানকারী।




(51:52)

كَذٰلِكَ مَاۤ اَتَى الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا قَالُوْا سَاحِرٌ اَوْ مَجْنُوْنٌۚ




অনুবাদ:    এভাবেই হয়ে এসেছে। এদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহের কাছেও এমন কোন রসূল আসেনি যাকে তারা যাদুকর বা পাগল বলেনি।




(51:53)

اَتَوَاصَوْا بِهٖ١ۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُوْنَۚ




অনুবাদ:    এরা কি এ ব্যাপারে পরস্পর কোন সমঝোতা করে নিয়েছে? না, এরা সবাই বরং বিদ্রোহী।




(51:54)

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَاۤ اَنْتَ بِمَلُوْمٍ٢ۗ٘




অনুবাদ:    অতএব, হে নবী, তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও। এজন্য তোমার প্রতি কোন তিরস্কার বাণী নেই।




(51:55)

وَّ ذَكِّرْ فَاِنَّ الذِّكْرٰى تَنْفَعُ الْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    তবে উপদেশ দিতে থাকো। কেননা, উপদেশ ঈমান গ্রহণকারীদের জন্য উপকারী।




(51:56)

وَ مَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَ الْاِنْسَ اِلَّا لِیَعْبُدُوْنِ




অনুবাদ:    জিন ও মানুষকে আমি শুধু এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার দাসত্ব করবে।




(51:57)

مَاۤ اُرِیْدُ مِنْهُمْ مِّنْ رِّزْقٍ وَّ مَاۤ اُرِیْدُ اَنْ یُّطْعِمُوْنِ




অনুবাদ:    আমি তাদের কাছে কোন রিযিক চাই না কিংবা তারা আমাকে খাওয়াবে তাও চাই না।




(51:58)

اِنَّ اللّٰهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِیْنُ




অনুবাদ:    আল্লাহ নিজেই রিযিকদাতা এবং অত্যন্ত শক্তিধর ও পরাক্রমশালী।




(51:59)

فَاِنَّ لِلَّذِیْنَ ظَلَمُوْا ذَنُوْبًا مِّثْلَ ذَنُوْبِ اَصْحٰبِهِمْ فَلَا یَسْتَعْجِلُوْنِ




অনুবাদ:    তাই যারা জুলুম করেছে তাদের প্রাপ্য হিসেবে ঠিক তেমনি আযাব প্রস্তুত আছে যেমনটি এদের মত লোকেরা তাদের অংশ পুরো লাভ করেছে। সেজন্য এসব লোক যেন আমার কাছে তাড়াহুড়ো না করে।




(51:60)

فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ كَفَرُوْا مِنْ یَّوْمِهِمُ الَّذِیْ یُوْعَدُوْنَ۠




অনুবাদ:    যেদিনের ভয় তাদের দেখানো হচ্ছে পরিণামে সেদিন তাদের জন্য ধ্বংস রয়েছে।


৫০ কাফ

  ৫০-ক্বাফ



(50:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(50:1)

قٓ١ۚ۫ وَ الْقُرْاٰنِ الْمَجِیْدِۚ




অনুবাদ:    ক্বাফ, মহিমান্বিত কল্যাণময় কুরআনের শপথ।




(50:2)

بَلْ عَجِبُوْۤا اَنْ جَآءَهُمْ مُّنْذِرٌ مِّنْهُمْ فَقَالَ الْكٰفِرُوْنَ هٰذَا شَیْءٌ عَجِیْبٌۚ




অনুবাদ:    তারা বরং বিস্মিত হয়েছে এজন্য যে, তাদের কাছে তাদের মধ্য থেকেই একজন সতর্ককারী এসেছে। এরপর অস্বীকারকারীরা বলতে শুরু করলো এটা তো বড় আশ্চর্যজনক কথা,




(50:3)

ءَاِذَا مِتْنَا وَ كُنَّا تُرَابًا١ۚ ذٰلِكَ رَجْعٌۢ بَعِیْدٌ




অনুবাদ:    আমরা যখন মরে যাব এবং মাটিতে মিশে যাব (তখন কি আমাদের উঠানো হবে)? এ প্রত্যাবর্তন তো যুক্তি-বুদ্ধি বিরোধী।




(50:4)

قَدْ عَلِمْنَا مَا تَنْقُصُ الْاَرْضُ مِنْهُمْ١ۚ وَ عِنْدَنَا كِتٰبٌ حَفِیْظٌ




অনুবাদ:    অথচ মাটি তার দেহের যা কিছু খেয়ে ফেলে তা সবই আমার জানা। আমার কাছে একখানা কিতাব আছে। তাতে সবকিছু সংরক্ষিত আছে।




(50:5)

بَلْ كَذَّبُوْا بِالْحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمْ فَهُمْ فِیْۤ اَمْرٍ مَّرِیْجٍ




অনুবাদ:    এসব লোকেরা তো এমন যে, যখনই তাদের কাছে সত্য এসেছে, তখনই তারা তাকে মিথ্যা মনে করেছে। এ কারণেই তারা এখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে আছে।




(50:6)

اَفَلَمْ یَنْظُرُوْۤا اِلَى السَّمَآءِ فَوْقَهُمْ كَیْفَ بَنَیْنٰهَا وَ زَیَّنّٰهَا وَ مَا لَهَا مِنْ فُرُوْجٍ




অনুবাদ:    আচ্ছা, এরা কি কখনো এদের মাথার ওপরের আসমানের দিকে তাকায়নি? আমি কিভাবে তা তৈরী করেছি এবং সজ্জিত করেছি। তাতে কোথাও কোন ফাটল নেই।




(50:7)

وَ الْاَرْضَ مَدَدْنٰهَا وَ اَلْقَیْنَا فِیْهَا رَوَاسِیَ وَ اَنْۢبَتْنَا فِیْهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍۭ بَهِیْجٍۙ




অনুবাদ:    ভূপৃ‌ষ্ঠকে আমি বিছিয়ে দিয়েছি, তাতে পাহাড় স্থাপন করেছি এবং তার মধ্যে সব রকম সুদৃশ্য উদ্ভিদরাজি উৎপন্ন করেছি।




(50:8)

تَبْصِرَةً وَّ ذِكْرٰى لِكُلِّ عَبْدٍ مُّنِیْبٍ




অনুবাদ:    এসব জিনিসের সবগুলোই দৃষ্টি উন্মুক্তকারী এবং শিক্ষাদানকারী ঐ সব বান্দার জন্য যারা সত্যের দিকে প্রত্যাবর্তন করে।




(50:9)

وَ نَزَّلْنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً مُّبٰرَكًا فَاَنْۢبَتْنَا بِهٖ جَنّٰتٍ وَّ حَبَّ الْحَصِیْدِۙ




অনুবাদ:    আমি আসমান থেকে বরকতপূর্ণ পানি নাযিল করেছি। অতঃপর তা দ্বারা বাগান ও খাদ্য শস্য উৎপন্ন করেছি।




(50:10)

وَ النَّخْلَ بٰسِقٰتٍ لَّهَا طَلْعٌ نَّضِیْدٌۙ




অনুবাদ:    তাছাড়া থরে থরে সজ্জিত ফলভর্তি কাঁদি বিশিষ্ট দীর্ঘ সুউচ্চ খেজুর গাছ।




(50:11)

رِّزْقًا لِّلْعِبَادِ١ۙ وَ اَحْیَیْنَا بِهٖ بَلْدَةً مَّیْتًا١ؕ كَذٰلِكَ الْخُرُوْجُ




অনুবাদ:    এটা হচ্ছে বান্দাহদেরকে রিযিক দেয়ার ব্যবস্থা। এ পানি দ্বারা আমি মৃত ভূমিকে জীবন দান করি। (মৃত মানুষের মাটি থেকে) বেরিয়ে আসাও এভাবেই হবে।




(50:12)

كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوْحٍ وَّ اَصْحٰبُ الرَّسِّ وَ ثَمُوْدُۙ




অনুবাদ:    এদের আগে নূহের কওম, আসহাবুর রাস, সামূদ,




(50:13)

وَ عَادٌ وَّ فِرْعَوْنُ وَ اِخْوَانُ لُوْطٍۙ




অনুবাদ:    আদ, ফেরাউন, লূতের ভাই,




(50:14)

وَّ اَصْحٰبُ الْاَیْكَةِ وَ قَوْمُ تُبَّعٍ١ؕ كُلٌّ كَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ وَعِیْدِ




অনুবাদ:    আইকাবাসী এবং তুব্বা কওমের লোকেরাও অস্বীকার করেছিল। প্রত্যেকেই রসূলদের অস্বীকার করেছিল এবং পরিণামে আমার শাস্তির প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য কার্যকর হয়েছে।




(50:15)

اَفَعَیِیْنَا بِالْخَلْقِ الْاَوَّلِ١ؕ بَلْ هُمْ فِیْ لَبْسٍ مِّنْ خَلْقٍ جَدِیْدٍ۠




অনুবাদ:    আমি কি প্রথমবার সৃষ্টি করতে অক্ষম ছিলাম? আসলে নতুন করে সৃষ্টির ব্যাপারে এসব লোক সন্দেহে নিপতিত হয়ে আছে।




(50:16)

وَ لَقَدْ خَلَقْنَا الْاِنْسَانَ وَ نَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهٖ نَفْسُهٗ١ۖۚ وَ نَحْنُ اَقْرَبُ اِلَیْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِیْدِ




অনুবাদ:    আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি আর তাদের মনে যেসব কুমন্ত্রণা উদিত হয় তা আমি জানি। আমি তার ঘাড়ের রগের চেয়েও তার বেশী কাছে আছি।




(50:17)

اِذْ یَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّیٰنِ عَنِ الْیَمِیْنِ وَ عَنِ الشِّمَالِ قَعِیْدٌ




অনুবাদ:    (আমার এ সরাসরি জ্ঞান ছাড়াও) দু’জন লেখক তার ডান ও বাঁ দিকে বসে সবকিছু লিপিবদ্ধ করছে।




(50:18)

مَا یَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ اِلَّا لَدَیْهِ رَقِیْبٌ عَتِیْدٌ




অনুবাদ:    এমন কোন শব্দ তার মুখ থেকে বের হয় না যা সংরক্ষিত করার জন্য একজন সদা প্রস্তুত রক্ষক উপস্থিত থাকে না।




(50:19)

وَ جَآءَتْ سَكْرَةُ الْمَوْتِ بِالْحَقِّ١ؕ ذٰلِكَ مَا كُنْتَ مِنْهُ تَحِیْدُ




অনুবাদ:    তারপর দেখো, মৃত্যুর যন্ত্রণা পরম সত্য নিয়ে হাজির হয়েছে। এটা সে জিনিস যা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলে।




(50:20)

وَ نُفِخَ فِی الصُّوْرِ١ؕ ذٰلِكَ یَوْمُ الْوَعِیْدِ




অনুবাদ:    এরপর শিংগায় ফুৎকার দেয়া হলো। এটা সেদিন যার ভয় তোমাদের দেখানো হতো।




(50:21)

وَ جَآءَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّعَهَا سَآئِقٌ وَّ شَهِیْدٌ




অনুবাদ:    প্রত্যেক ব্যক্তি এমন অবস্থায় এসে হাজির হলো যে, তাদের সাথে হাঁকিয়ে নিয়ে আসার মত একজন এবং সাক্ষ্য দেয়ার মত একজন ছিল।




(50:22)

لَقَدْ كُنْتَ فِیْ غَفْلَةٍ مِّنْ هٰذَا فَكَشَفْنَا عَنْكَ غِطَآءَكَ فَبَصَرُكَ الْیَوْمَ حَدِیْدٌ




অনুবাদ:    এ ব্যাপারে তুমি অজ্ঞ ছিলে। তাই তোমার সামনে যে আবরণ ছিল তা আমি সরিয়ে দিয়েছি। তাই আজ তোমার দৃষ্টি অত্যন্ত প্রখর।




(50:23)

وَ قَالَ قَرِیْنُهٗ هٰذَا مَا لَدَیَّ عَتِیْدٌؕ




অনুবাদ:    তার সাথী বললোঃ এতো সে হাজির আমার ওপরে যার তদারকীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।




(50:24)

اَلْقِیَا فِیْ جَهَنَّمَ كُلَّ كَفَّارٍ عَنِیْدٍۙ




অনুবাদ:    নির্দেশ দেয়া হলোঃ “জাহান্নামে নিক্ষেপ করো, প্রত্যেক কট্টর কাফেরকে ---যে সত্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতো,




(50:25)

مَّنَّاعٍ لِّلْخَیْرِ مُعْتَدٍ مُّرِیْبِۙ




অনুবাদ:    কল্যাণের প্রতিবন্ধক ও সীমালংঘনকারী ছিল, সন্দেহ সংশয়ে নিপতিত ছিল




(50:26)

اِ۟لَّذِیْ جَعَلَ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ فَاَلْقِیٰهُ فِی الْعَذَابِ الشَّدِیْدِ




অনুবাদ:    এবং আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ইলাহ বানিয়ে বসেছিল। নিক্ষেপ কর তাকে কঠিন আযাবে।




(50:27)

قَالَ قَرِیْنُهٗ رَبَّنَا مَاۤ اَطْغَیْتُهٗ وَ لٰكِنْ كَانَ فِیْ ضَلٰلٍۭ بَعِیْدٍ




অনুবাদ:    তার সহগামী আরয করলোঃ হে প্রভু, আমি তাকে বিদ্রোহী করিনি বরং সে নিজেই চরম গোমরাহীতে ডুবে ছিল।




(50:28)

قَالَ لَا تَخْتَصِمُوْا لَدَیَّ وَ قَدْ قَدَّمْتُ اِلَیْكُمْ بِالْوَعِیْدِ




অনুবাদ:    জবাবে বলা হলোঃ আমার সামনে ঝগড়া করো না। আমি আগে তোমাদেরকে মন্দ পরিণতি সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছিলাম।




(50:29)

مَا یُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَیَّ وَ مَاۤ اَنَا بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِیْدِ۠




অনুবাদ:    আমার কথার কোন রদবদল হয় না। আর আমি আমার বান্দাদের জন্য অত্যাচারী নই।




(50:30)

یَوْمَ نَقُوْلُ لِجَهَنَّمَ هَلِ امْتَلَاْتِ وَ تَقُوْلُ هَلْ مِنْ مَّزِیْدٍ




অনুবাদ:    সেদিনের কথা স্মরণ করো, যখন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করবো যে, তোমার পেট কি ভরেছে? সে বলবে, “আরো কিছু আছে নাকি?”




(50:31)

وَ اُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِیْنَ غَیْرَ بَعِیْدٍ




অনুবাদ:    আর বেহেশতকে আল্লাহ‌ ভীরুদের নিকটতর করা হবে- তা মোটেই দূরে থাকবে না।




(50:32)

هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍۚ




অনুবাদ:    তখন বলা হবেঃ এ হচ্ছে সেই জিনিস, যার কথা তোমাদেরকে আগাম জানানো হতো। এটা প্রত্যেক প্রত্যাবর্তনকারী ও সংরক্ষণকারীর জন্য,




(50:33)

مَنْ خَشِیَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَیْبِ وَ جَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِیْبِۙ




অনুবাদ:    যে অদেখা দয়াময়কে ভয় করতো, যে অনুরক্ত হৃদয় নিয়ে এসেছে।




(50:34)

اِ۟دْخُلُوْهَا بِسَلٰمٍ١ؕ ذٰلِكَ یَوْمُ الْخُلُوْدِ




অনুবাদ:    বেহেশতে ঢুকে পড় শান্তির সাথে। সেদিন অনন্ত জীবনের দিন হবে।




(50:35)

لَهُمْ مَّا یَشَآءُوْنَ فِیْهَا وَ لَدَیْنَا مَزِیْدٌ




অনুবাদ:    সেখানে তাদের জন্য যা চাইবে তাই থাকবে। আর আমার কাছে আরো কিছু অতিরিক্ত জিনিসও থাকবে।




(50:36)

وَ كَمْ اَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِّنْ قَرْنٍ هُمْ اَشَدُّ مِنْهُمْ بَطْشًا فَنَقَّبُوْا فِی الْبِلَادِ١ؕ هَلْ مِنْ مَّحِیْصٍ




অনুবাদ:    আমি তাদের আগে আরো বহু জাতিকে ধ্বংস করেছি। তারা ওদের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিধর ছিল এবং তারা সারা দুনিয়ার দেশগুলো তন্ন তন্ন করে ঘুরেছে। অথচ তারা কি কোন আশ্রয়স্থল পেলো?




(50:37)

اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَذِكْرٰى لِمَنْ كَانَ لَهٗ قَلْبٌ اَوْ اَلْقَى السَّمْعَ وَ هُوَ شَهِیْدٌ




অনুবাদ:    যাদের হৃদয় আছে কিংবা যারা একাগ্রচিত্তে কথা শোনে তাদের জন্য এ ইতিহাসে অনেক শিক্ষা রয়েছে।




(50:38)

وَ لَقَدْ خَلَقْنَا السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ وَ مَا بَیْنَهُمَا فِیْ سِتَّةِ اَیَّامٍ١ۖۗ وَّ مَا مَسَّنَا مِنْ لُّغُوْبٍ




অনুবাদ:    আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং তার মধ্যকার সকল জিনিসকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছি অথচ তাতে আমি ক্লান্ত হইনি।




(50:39)

فَاصْبِرْ عَلٰى مَا یَقُوْلُوْنَ وَ سَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوْعِ الشَّمْسِ وَ قَبْلَ الْغُرُوْبِۚ




অনুবাদ:    কাজেই তারা যেসব কথা তৈরী করছে তার ওপর ধৈর্যধারণ করো। আর স্বীয় প্রভুর প্রশংসা সহকারে গুণগান করতে থাকো সূর্যোদয় ও সুর্যাস্তের আগে,




(50:40)

وَ مِنَ الَّیْلِ فَسَبِّحْهُ وَ اَدْبَارَ السُّجُوْدِ




অনুবাদ:    আবার রাতে পুনরায় তার গুণগান করো এবং সিজ্দা দেয়ার পরেও করো।




(50:41)

وَ اسْتَمِعْ یَوْمَ یُنَادِ الْمُنَادِ مِنْ مَّكَانٍ قَرِیْبٍۙ




অনুবাদ:    আর শোনো যেদিন আহ্বানকারী (প্রত্যেক মানুষের) নিকট স্থান থেকে আহ্বান করবে,




(50:42)

یَّوْمَ یَسْمَعُوْنَ الصَّیْحَةَ بِالْحَقِّ١ؕ ذٰلِكَ یَوْمُ الْخُرُوْجِ




অনুবাদ:    যেদিন সকলে হাশরের কোলাহল ঠিকমত শুনতে পাবে, সেদিনটি হবে কবর থেকে মৃতদের বেরুবার দিন।




(50:43)

اِنَّا نَحْنُ نُحْیٖ وَ نُمِیْتُ وَ اِلَیْنَا الْمَصِیْرُۙ




অনুবাদ:    আমিই জীবন দান করি, আমিই মৃত্যু ঘটাই। এবং আমার কাছেই সবাইকে ফিরে আসতে হবে সেদিন---




(50:44)

یَوْمَ تَشَقَّقُ الْاَرْضُ عَنْهُمْ سِرَاعًا١ؕ ذٰلِكَ حَشْرٌ عَلَیْنَا یَسِیْرٌ




অনুবাদ:    যেদিন পৃথিবী বিদীর্ণ হবে, এবং লোকেরা তার ভেতর থেকে বেরিয়ে জোর কদমে ছুটতে থাকবে, এরূপ হাশর সংঘটিত করা আমার নিকট খুবই সহজ।




(50:45)

نَحْنُ اَعْلَمُ بِمَا یَقُوْلُوْنَ وَ مَاۤ اَنْتَ عَلَیْهِمْ بِجَبَّارٍ١۫ فَذَكِّرْ بِالْقُرْاٰنِ مَنْ یَّخَافُ وَعِیْدِ۠




অনুবাদ:    হে নবী! ওরা যেসব কথা বলে, তা আমি ভালো করেই জানি, বস্তুত তাদের কাছ থেকে বলপ্রয়োগে আনুগত্য আদায় করা তোমার কাজ নয়। কাজেই তুমি এ কুরআন দ্বারা আমার হুশিয়ারীকে যারা ডরায়, তাদেরকে তুমি উপদেশ দাও।


৪৯ আল হুজরাত

  ৪৯-হুজুরাত



(49:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(49:1)

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُقَدِّمُوْا بَیْنَ یَدَیِ اللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ




অনুবাদ:    হে মু’মিনগণ! আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের চেয়ে অগ্রগামী হয়ো না। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ‌ সবকিছু শোনেন ও জানেন।




(49:2)

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَرْفَعُوْۤا اَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِیِّ وَ لَا تَجْهَرُوْا لَهٗ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ اَنْ تَحْبَطَ اَعْمَالُكُمْ وَ اَنْتُمْ لَا تَشْعُرُوْنَ




অনুবাদ:    হে মু’মিনগণ! নিজেদের আওয়ায রসূলের আওয়াযের চেয়ে উঁচু করো না এবং উচ্চস্বরে নবীর সাথে কথা বলো না, যেমন তোমরা নিজেরা পরস্পর বলে থাকো। এমন যেন না হয় যে, তোমাদের অজান্তেই তোমাদের সব কাজ-কর্ম ধ্বংস হয়ে যায়।




(49:3)

اِنَّ الَّذِیْنَ یَغُضُّوْنَ اَصْوَاتَهُمْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللّٰهِ اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ امْتَحَنَ اللّٰهُ قُلُوْبَهُمْ لِلتَّقْوٰى١ؕ لَهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّ اَجْرٌ عَظِیْمٌ




অনুবাদ:    যারা আল্লাহর রসূলের সামনে তাদের কণ্ঠ নিচু রাখে তারাই সেসব লোক, আল্লাহ‌ যাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য বাছাই করে নিয়েছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় পুরস্কার।




(49:4)

اِنَّ الَّذِیْنَ یُنَادُوْنَكَ مِنْ وَّرَآءِ الْحُجُرٰتِ اَكْثَرُهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ




অনুবাদ:    হে নবী! যারা তোমাকে গৃহের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করতে থাকে তাদের অধিকাংশই নির্বোধ।




(49:5)

وَ لَوْ اَنَّهُمْ صَبَرُوْا حَتّٰى تَخْرُجَ اِلَیْهِمْ لَكَانَ خَیْرًا لَّهُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ




অনুবাদ:    যদি তারা তোমার বেরিয়ে আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতো তাহলে তাদের জন্য ভাল হতো। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।




(49:6)

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ جَآءَكُمْ فَاسِقٌۢ بِنَبَاٍ فَتَبَیَّنُوْۤا اَنْ تُصِیْبُوْا قَوْمًۢا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوْا عَلٰى مَا فَعَلْتُمْ نٰدِمِیْنَ




অনুবাদ:    হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে তা অনুসন্ধান করে দেখ। এমন যেন না হয় যে, না জেনে শুনেই তোমরা কোন গোষ্ঠীর ক্ষতি করে বসবে এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।




(49:7)

وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ فِیْكُمْ رَسُوْلَ اللّٰهِ١ؕ لَوْ یُطِیْعُكُمْ فِیْ كَثِیْرٍ مِّنَ الْاَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَ لٰكِنَّ اللّٰهَ حَبَّبَ اِلَیْكُمُ الْاِیْمَانَ وَ زَیَّنَهٗ فِیْ قُلُوْبِكُمْ وَ كَرَّهَ اِلَیْكُمُ الْكُفْرَ وَ الْفُسُوْقَ وَ الْعِصْیَانَ١ؕ اُولٰٓئِكَ هُمُ الرّٰشِدُوْنَۙ




অনুবাদ:    ভাল করে জেনে নাও, আল্লাহর রসূল তোমাদের মাঝে বর্তমান। তিনি যদি বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই তোমাদের কথা মেনে নেন তাহলে তোমরা নিজেরাই অনেক সমস্যার মধ্যে পড়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহ‌ তোমাদের মধ্যে ঈমানের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা তোমাদের কাছে পছন্দনীয় করে দিয়েছেন। আর কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে তোমাদের কাছে ঘৃণিত করে দিয়েছেন। এসব লোকই সৎপথের অনুগামী -




(49:8)

فَضْلًا مِّنَ اللّٰهِ وَ نِعْمَةً١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ




অনুবাদ:    - আল্লাহর দয়া ও মেহেরবানীতে । আল্লাহ জ্ঞানী ও কুশলী।




(49:9)

وَ اِنْ طَآئِفَتٰنِ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اقْتَتَلُوْا فَاَصْلِحُوْا بَیْنَهُمَا١ۚ فَاِنْۢ بَغَتْ اِحْدٰىهُمَا عَلَى الْاُخْرٰى فَقَاتِلُوا الَّتِیْ تَبْغِیْ حَتّٰى تَفِیْٓءَ اِلٰۤى اَمْرِ اللّٰهِ١ۚ فَاِنْ فَآءَتْ فَاَصْلِحُوْا بَیْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَ اَقْسِطُوْا١ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُقْسِطِیْنَ




অনুবাদ:    ঈমানদারদের মধ্যকার দু’টি দল যদি পরস্পর লড়াইয়ে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। তারপরও যদি দু’টি দলের কোন একটি অপরটির বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করে তবে যে দল বাড়াবাড়ি করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করো। যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। এরপর যদি তারা ফিরে আসে তাহলে তাদের মাঝে ন্যায় বিচারের সাথে মীমাংসা করিয়ে দাও এবং ইনসাফ করো। আল্লাহ‌ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন।




(49:10)

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ اِخْوَةٌ فَاَصْلِحُوْا بَیْنَ اَخَوَیْكُمْ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۠




অনুবাদ:    মু’মিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই। অতএব তোমাদের ভাইদের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক করে দাও। আল্লাহকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি মেহেরবানী করা হবে।




(49:11)

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا یَسْخَرْ قَوْمٌ مِّنْ قَوْمٍ عَسٰۤى اَنْ یَّكُوْنُوْا خَیْرًا مِّنْهُمْ وَ لَا نِسَآءٌ مِّنْ نِّسَآءٍ عَسٰۤى اَنْ یَّكُنَّ خَیْرًا مِّنْهُنَّ١ۚ وَ لَا تَلْمِزُوْۤا اَنْفُسَكُمْ وَ لَا تَنَابَزُوْا بِالْاَلْقَابِ١ؕ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوْقُ بَعْدَ الْاِیْمَانِ١ۚ وَ مَنْ لَّمْ یَتُبْ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ




অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ, পুরুষরা যেন অন্য পুরুষদের বিদ্রূপ না করে। হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম। আর মহিলারাও যেন অন্য মহিলাদের বিদ্রূপ না করে। হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অপরকে বিদ্রূপ করো না। এবং পরস্পরকে খারাপ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণের পর গোনাহর কাজে প্রসিদ্ধি লাভ করা অত্যন্ত জঘন্য ব্যাপার। যারা এ আচরণ পরিত্যাগ করেনি তারাই জালেম।




(49:12)

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اجْتَنِبُوْا كَثِیْرًا مِّنَ الظَّنِّ١٘ اِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ اِثْمٌ وَّ لَا تَجَسَّسُوْا وَ لَا یَغْتَبْ بَّعْضُكُمْ بَعْضًا١ؕ اَیُحِبُّ اَحَدُكُمْ اَنْ یَّاْكُلَ لَحْمَ اَخِیْهِ مَیْتًا فَكَرِهْتُمُوْهُ١ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ تَوَّابٌ رَّحِیْمٌ




অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ, বেশী ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো কারণ কোন কোন ধারণা ও অনুমান গোনাহ। দোষ অন্বেষণ করো না। আর তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে। এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে, যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে? দেখো, তা খেতে তোমাদের ঘৃণা হয়। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ‌ অধিক পরিমাণে তাওবা কবুলকারী এবং দয়ালু।




(49:13)

یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقْنٰكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ وَّ اُنْثٰى وَ جَعَلْنٰكُمْ شُعُوْبًا وَّ قَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوْا١ؕ اِنَّ اَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللّٰهِ اَتْقٰىكُمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌ خَبِیْرٌ




অনুবাদ:    হে মানবজাতি, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। তারপর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করে দিয়েছি যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার। তোমাদের মধ্যে যে অধিক পরহেজগার সে-ই প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদার অধিকারী। নিশ্চয়ই আল্লাহ‌ মহাজ্ঞানী ও সবকিছু সম্পর্কে অবহিত।




(49:14)

قَالَتِ الْاَعْرَابُ اٰمَنَّا١ؕ قُلْ لَّمْ تُؤْمِنُوْا وَ لٰكِنْ قُوْلُوْۤا اَسْلَمْنَا وَ لَمَّا یَدْخُلِ الْاِیْمَانُ فِیْ قُلُوْبِكُمْ١ؕ وَ اِنْ تُطِیْعُوا اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ لَا یَلِتْكُمْ مِّنْ اَعْمَالِكُمْ شَیْئًا١ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ




অনুবাদ:    এ বেদুইনরা বলে, “আমরা ঈমান এনেছি” তাদের বলে দাও তোমরা ঈমান আন নাই। বরং বল, আমরা অনুগত হয়েছি। ঈমান এখনো তোমাদের মনে প্রবেশ করেনি। তোমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্যের পথ অনুসরণ করো তাহলে তিনি তোমাদের কার্যাবলীর পুরস্কার দানে কোন কার্পণ্য করবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।




(49:15)

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ ثُمَّ لَمْ یَرْتَابُوْا وَ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ اُولٰٓئِكَ هُمُ الصّٰدِقُوْنَ




অনুবাদ:    প্রকৃত ঈমানদার তারাই যারা আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান এনেছে এবং এ ব্যাপারে পরে আর কোন সন্দেহ পোষণ করেনি। তারপর প্রাণ ও অর্থ-সম্পদ দিয়ে জিহাদ করেছে। তারাই সত্যবাদী।




(49:16)

قُلْ اَتُعَلِّمُوْنَ اللّٰهَ بِدِیْنِكُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِ١ؕ وَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ




অনুবাদ:    হে নবী! ঈমানের এ দাবীদারদের বলো, তোমরা কি আল্লাহকে তোমাদের দ্বীনের কথা অবগত করাচ্ছো? আল্লাহ তো আসমান ও যমীনের প্রত্যেকটি জিনিস ভালভাবে অবহিত।




(49:17)

یَمُنُّوْنَ عَلَیْكَ اَنْ اَسْلَمُوْا١ؕ قُلْ لَّا تَمُنُّوْا عَلَیَّ اِسْلَامَكُمْ١ۚ بَلِ اللّٰهُ یَمُنُّ عَلَیْكُمْ اَنْ هَدٰىكُمْ لِلْاِیْمَانِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    এসব লোক তোমাকে বুঝাতে চায় যে, তারা ইসলাম গ্রহণ করে তোমার উপকার করেছে। তাদের বলো, ইসলাম গ্রহণ করে আমার উপকার করেছো একথা মনে করো না। বরং যদি তোমরা নিজেদের ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী হয়ে থাকো তাহলে আল্লাহ‌ তা’আলাই তোমাদের উপকার করে চলেছেন। কারণ তিনি তোমাদেরকে ঈমানের পথ দেখিয়েছেন।




(49:18)

اِنَّ اللّٰهَ یَعْلَمُ غَیْبَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ وَ اللّٰهُ بَصِیْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْنَ۠




অনুবাদ:    আল্লাহ আসমান ও যমীনের প্রতিটি গোপনীয় বিষয় সম্পর্কে জানেন। তোমরা যা কিছু করছো তা সবই তিনি দেখছেন।


৪৮ আল ফাতাহ

  ৪৮-ফাতাহ্



(48:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(48:1)

اِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِیْنًاۙ




অনুবাদ:    হে নবী, আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি




(48:2)

لِّیَغْفِرَ لَكَ اللّٰهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْۢبِكَ وَ مَا تَاَخَّرَ وَ یُتِمَّ نِعْمَتَهٗ عَلَیْكَ وَ یَهْدِیَكَ صِرَاطًا مُّسْتَقِیْمًاۙ




অনুবাদ:    যাতে আল্লাহ‌ তোমার আগের ও পরের সব ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করে দেন, তোমার জন্য তাঁর নিয়ামতকে পূর্ণতা দান করেন, তোমাকে সরল সহজ পথ দেখিয়ে দেন




(48:3)

وَّ یَنْصُرَكَ اللّٰهُ نَصْرًا عَزِیْزًا




অনুবাদ:    এবং তিনি আল্লাহ তোমাকে অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে সাহায্য করেন।




(48:4)

هُوَ الَّذِیْۤ اَنْزَلَ السَّكِیْنَةَ فِیْ قُلُوْبِ الْمُؤْمِنِیْنَ لِیَزْدَادُوْۤا اِیْمَانًا مَّعَ اِیْمَانِهِمْ١ؕ وَ لِلّٰهِ جُنُوْدُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلِیْمًا حَكِیْمًاۙ




অনুবাদ:    তিনিই তো সে সত্তা যিনি মু’মিনদের মনে প্রশান্তি নাযিল করেছেন যাতে তারা নিজেদের ঈমান আরো বাড়িয়ে নেয়। আসমান ও যমীনের সমস্ত বাহিনী আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। তিনি মহাজ্ঞানী ও কৌশলী।




(48:5)

لِّیُدْخِلَ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا وَ یُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَیِّاٰتِهِمْ١ؕ وَ كَانَ ذٰلِكَ عِنْدَ اللّٰهِ فَوْزًا عَظِیْمًاۙ




অনুবাদ:    (এ কাজ তিনি এ জন্য করেছেন) যাতে ঈমানদার নারী ও পুরুষদেরকে চিরদিন অবস্থানের জন্য এমন জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে এবং তাদের মন্দ কর্মসমূহ দূর করবেন। এটা আল্লাহর কাছে বড় সফলতা।




(48:6)

وَّ یُعَذِّبَ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ الْمُنٰفِقٰتِ وَ الْمُشْرِكِیْنَ وَ الْمُشْرِكٰتِ الظَّآنِّیْنَ بِاللّٰهِ ظَنَّ السَّوْءِ١ؕ عَلَیْهِمْ دَآئِرَةُ السَّوْءِ١ۚ وَ غَضِبَ اللّٰهُ عَلَیْهِمْ وَ لَعَنَهُمْ وَ اَعَدَّ لَهُمْ جَهَنَّمَ١ؕ وَ سَآءَتْ مَصِیْرًا




অনুবাদ:    আর যেসব মুনাফিক নারী ও পুরুষ এবং মুশরিক নারী ও পুরুষ আল্লাহ‌ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করে তাদের শাস্তি দেবেন। তারা নিজেরাই অকল্যাণর চক্রে পড়ে গিয়েছে। আল্লাহর গযব পড়েছে তাদের ওপর তিনি লা’নত করেছেন তাদেরকে এবং তাদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন-যা অত্যন্ত জঘন্য জায়গা।




(48:7)

وَ لِلّٰهِ جُنُوْدُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَزِیْزًا حَكِیْمًا




অনুবাদ:    আসমান ও যমীনের সকল বাহিনী আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। তিনি মহাজ্ঞানী ও কৌশলী।




(48:8)

اِنَّاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّ مُبَشِّرًا وَّ نَذِیْرًاۙ




অনুবাদ:    হে নবী, আমি তোমাকে সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদ দানকারী এবং সতর্ককারী হিসেবে পাঠিয়েছি-




(48:9)

لِّتُؤْمِنُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ تُعَزِّرُوْهُ وَ تُوَقِّرُوْهُ١ؕ وَ تُسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّ اَصِیْلًا




অনুবাদ:    যাতে হে মানুষ, তোমরা আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আন, তাঁকে সাহায্য কর, তাঁর প্রতি সম্মান ও মর্যাদা দেখাও এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা কর।




(48:10)

اِنَّ الَّذِیْنَ یُبَایِعُوْنَكَ اِنَّمَا یُبَایِعُوْنَ اللّٰهَ١ؕ یَدُ اللّٰهِ فَوْقَ اَیْدِیْهِمْ١ۚ فَمَنْ نَّكَثَ فَاِنَّمَا یَنْكُثُ عَلٰى نَفْسِهٖ١ۚ وَ مَنْ اَوْفٰى بِمَا عٰهَدَ عَلَیْهُ اللّٰهَ فَسَیُؤْتِیْهِ اَجْرًا عَظِیْمًا۠




অনুবাদ:    হে নবী যারা তোমার হাতে বাইয়াত করছিলো প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কাছেই বাইয়াত করছিলো। তাদের হাতের ওপর ছিল আল্লাহর হাত। যে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করবে তার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করার অশুভ পরিণাম তার নিজের ওপরেই বর্তাবে। আর যে আল্লাহর সাথে কৃত এ প্রতিশ্রুতি পালন করবে, আল্লাহ অচিরেই তাকে বড় পুরস্কার দান করবেন।




(48:11)

سَیَقُوْلُ لَكَ الْمُخَلَّفُوْنَ مِنَ الْاَعْرَابِ شَغَلَتْنَاۤ اَمْوَالُنَا وَ اَهْلُوْنَا فَاسْتَغْفِرْ لَنَا١ۚ یَقُوْلُوْنَ بِاَلْسِنَتِهِمْ مَّا لَیْسَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ١ؕ قُلْ فَمَنْ یَّمْلِكُ لَكُمْ مِّنَ اللّٰهِ شَیْئًا اِنْ اَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا اَوْ اَرَادَ بِكُمْ نَفْعًا١ؕ بَلْ كَانَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرًا




অনুবাদ:    হে নবী (সা.) ! বদ্দু আরবদের মধ্যে যাদেরকে পিছনে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল এখন তারা এসে অবশ্যই তোমাকে বলবেঃ “আমাদেরকে আমাদের ধন-মাল ও সন্তান-সন্ততিদের চিন্তা-ই ব্যস্ত রেখেছিল, আপনি আমাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করুন।” এ লোকেরা নিজেদের মুখে সেসব কথা বলছে যা তাদের অন্তরে থাকে না। তাদেরকে বলো ঠিক আছে। ইহাই যদি সত্য হয়ে থাকে তা হলে তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর ফায়সালাকে কার্যকর হওয়া থেকে বাধাদানের সামান্য ক্ষমতা কি কারো আছে যদি তিনি তোমাদের কোন ক্ষতি করতে চান ; অথবা চান কোন কল্যাণ দান করতে? তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে তো আল্লাহই ভালভাবে অবহিত




(48:12)

بَلْ ظَنَنْتُمْ اَنْ لَّنْ یَّنْقَلِبَ الرَّسُوْلُ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ اِلٰۤى اَهْلِیْهِمْ اَبَدًا وَّ زُیِّنَ ذٰلِكَ فِیْ قُلُوْبِكُمْ وَ ظَنَنْتُمْ ظَنَّ السَّوْءِ١ۖۚ وَ كُنْتُمْ قَوْمًۢا بُوْرًا




অনুবাদ:    (কিন্তু আসল কথা তো তা নয় যা তোমরা বলছো) ; বরং তোমরা মনে করি নিয়েছ যে, রসূল ও মু’মিনগণ নিজেদের ঘরে কখনই ফিরতে পারবে না। এ খেয়ালটা তোমাদের অন্তরে খুব ভাল লেগেছিল এবং তোমরা খুবই খারাপ ধারণা মনে স্থান দিয়েছো, আসলে তোমরা খুবই খারাপ মন-মানসিকতার লোক।




(48:13)

وَ مَنْ لَّمْ یُؤْمِنْۢ بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ فَاِنَّاۤ اَعْتَدْنَا لِلْكٰفِرِیْنَ سَعِیْرًا




অনুবাদ:    আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি যারা ঈমান আনেনি এমন কাফেরদের জন্য আমরা দাউ দাউ করে জ্বলা অগ্নি কুণ্ডলি তৈরী করে রেখেছি।




(48:14)

وَ لِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ یَغْفِرُ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ یُعَذِّبُ مَنْ یَّشَآءُ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا




অনুবাদ:    আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবীর বাদশাহীর (প্রভুত্ব ও প্রশাসন ক্ষমতা) একচ্ছত্র মালিক একমাত্র আল্লাহ। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। আল্লাহ-ইক্ষমাশীল ও করুণাময়।




(48:15)

سَیَقُوْلُ الْمُخَلَّفُوْنَ اِذَا انْطَلَقْتُمْ اِلٰى مَغَانِمَ لِتَاْخُذُوْهَا ذَرُوْنَا نَتَّبِعْكُمْ١ۚ یُرِیْدُوْنَ اَنْ یُّبَدِّلُوْا كَلٰمَ اللّٰهِ١ؕ قُلْ لَّنْ تَتَّبِعُوْنَا كَذٰلِكُمْ قَالَ اللّٰهُ مِنْ قَبْلُ١ۚ فَسَیَقُوْلُوْنَ بَلْ تَحْسُدُوْنَنَا١ؕ بَلْ كَانُوْا لَا یَفْقَهُوْنَ اِلَّا قَلِیْلًا




অনুবাদ:    তোমরা যখন গনীমতের মাল লাভ করার জন্য যেতে থাকবে তখন এ পিছনে রেখে যাওয়া লোকেরা তোমাকে অবশ্যই বলবে যে, আমাদেরকেও তোমাদের সাথে যেতে দাও। এরা আল্লাহর ফরমান পরিবর্তন করে দিতে চায়। এদের স্পষ্ট ভাষায় বলে দাওঃ ‘তোমরা কখনই আমাদের সাথে যেতে পারো না, আল্লাহ‌ তো আগেই একথা বলে দিয়েছেন।” এর বলবেঃ “না, তোমরাই বরং আমাদের প্রতি হিংসা পোষণ কর।” (অথচ এটা কোন হিংসার কথা নয়) আসলে এরা সঠিক কথা খুব কমই বুঝে।




(48:16)

قُلْ لِّلْمُخَلَّفِیْنَ مِنَ الْاَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ اِلٰى قَوْمٍ اُولِیْ بَاْسٍ شَدِیْدٍ تُقَاتِلُوْنَهُمْ اَوْ یُسْلِمُوْنَ١ۚ فَاِنْ تُطِیْعُوْا یُؤْتِكُمُ اللّٰهُ اَجْرًا حَسَنًا١ۚ وَ اِنْ تَتَوَلَّوْا كَمَا تَوَلَّیْتُمْ مِّنْ قَبْلُ یُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا اَلِیْمًا




অনুবাদ:    এ পিছনে রেখে যাওয়া বদ্দু আরবদেরকে বলে দাওঃ “খুব শীঘ্রই তোমাদেরকে এমন সব লোকের সাথে লড়াই করার জন্য ডাকা হবে যারা বড়ই শক্তি সম্পন্ন।” তোমাদেরকে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে, কিংবা তারা অনুগত হয়ে যাবে। সে সময় তোমরা জিহাদের নির্দেশ পালন করলে আল্লাহ‌ তোমাদেরকে উত্তম সওয়াব দিবেন। আর যদি তোমরা পিছনে হটে যাও যেমন পূর্বে হটে গিয়েছিলে, তাহলে আল্লাহ‌ তোমাদেরকে কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি দেবেন।




(48:17)

لَیْسَ عَلَى الْاَعْمٰى حَرَجٌ وَّ لَا عَلَى الْاَعْرَجِ حَرَجٌ وَّ لَا عَلَى الْمَرِیْضِ حَرَجٌ١ؕ وَ مَنْ یُّطِعِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ یُدْخِلْهُ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ١ۚ وَ مَنْ یَّتَوَلَّ یُعَذِّبْهُ عَذَابًا اَلِیْمًا۠




অনুবাদ:    যদি অন্ধ, পংগু ও রোগাক্রান্ত লোক জিহাদে না আসে তাহলে কোন দোষ নেই। যে কেউ আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ‌ তাকে সেসব জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যেসবের নিম্নদেশে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহমান থাকবে। আর যে মুখ ফিরিয়ে থাকবে আল্লাহ‌ তাকে মর্মান্তিক আযাব দেবেন।




(48:18)

لَقَدْ رَضِیَ اللّٰهُ عَنِ الْمُؤْمِنِیْنَ اِذْ یُبَایِعُوْنَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِیْ قُلُوْبِهِمْ فَاَنْزَلَ السَّكِیْنَةَ عَلَیْهِمْ وَ اَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِیْبًاۙ




অনুবাদ:    আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নিচে তোমরা কাছে বাইয়াত করছিলো। তিনি তাদের মনের অবস্থা জানতেন। তাই তিনি তাদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করেছেন, পুরস্কার স্বরূপ তাদেরকে আশু বিজয় দান করেছেন।




(48:19)

وَّ مَغَانِمَ كَثِیْرَةً یَّاْخُذُوْنَهَا١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَزِیْزًا حَكِیْمًا




অনুবাদ:    এবং প্রচুর গনীমতের সম্পদ দান করেছেন যা তারা অচিরেই লাভ করবে। আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।




(48:20)

وَعَدَكُمُ اللّٰهُ مَغَانِمَ كَثِیْرَةً تَاْخُذُوْنَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هٰذِهٖ وَ كَفَّ اَیْدِیَ النَّاسِ عَنْكُمْ١ۚ وَ لِتَكُوْنَ اٰیَةً لِّلْمُؤْمِنِیْنَ وَ یَهْدِیَكُمْ صِرَاطًا مُّسْتَقِیْمًاۙ




অনুবাদ:    আল্লাহর তোমাদরকে অঢেল গনীমতের সম্পদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তোমাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিজয় দিয়েছেন এবং তোমাদের বিরুদ্ধে মানুষের হাত উত্তোলনকে থামিয়ে দিয়েছেন যাতে মু’মিনদের জন্য তা একটি নিদর্শন হয়ে থাকে। আর আল্লাহ‌ তোমাদেরকে সোজা পথের হিদায়াত দান করেন।




(48:21)

وَّ اُخْرٰى لَمْ تَقْدِرُوْا عَلَیْهَا قَدْ اَحَاطَ اللّٰهُ بِهَا١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرًا




অনুবাদ:    এছাড়া তিনি তোমাদেরকে আরো গনীমতের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যা তোমরা এখনো পর্যন্ত লাভ করতে পারনি। কিন্তু আল্লাহ‌ তা পরিবেষ্টন করে রেখেছেন। আল্লাহ সবকিছুর ওপরে ক্ষমতাবান।




(48:22)

وَ لَوْ قٰتَلَكُمُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لَوَلَّوُا الْاَدْبَارَ ثُمَّ لَا یَجِدُوْنَ وَلِیًّا وَّ لَا نَصِیْرًا




অনুবাদ:    এ মুহূর্তেই এসব কাফের যদি তোমাদের সাথে লড়াই বাধিয়ে বসতো তাহলে অবশ্যই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করতো এবং কোন সহযোগী ও সাহায্যকারী পেতো না।




(48:23)

سُنَّةَ اللّٰهِ الَّتِیْ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلُ١ۖۚ وَ لَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللّٰهِ تَبْدِیْلًا




অনুবাদ:    এটা আল্লাহর বিধান যা পূর্ব থেকেই চলে আসছে। তুমি আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন পাবে না।




(48:24)

وَ هُوَ الَّذِیْ كَفَّ اَیْدِیَهُمْ عَنْكُمْ وَ اَیْدِیَكُمْ عَنْهُمْ بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنْۢ بَعْدِ اَنْ اَظْفَرَكُمْ عَلَیْهِمْ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرًا




অনুবাদ:    তিনিই সেই সত্তা যিনি মক্কা ভূমিতে তাদের হাত তোমাদের থেকে আর তোমাদের হাত তাদের থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাদের ওপর তোমাদেরকে আধিপত্য দান করার পর। তোমরা যা কিছু করছিলে আল্লাহ‌ তা দেখছিলেন।




(48:25)

هُمُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ صَدُّوْكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَ الْهَدْیَ مَعْكُوْفًا اَنْ یَّبْلُغَ مَحِلَّهٗ١ؕ وَ لَوْ لَا رِجَالٌ مُّؤْمِنُوْنَ وَ نِسَآءٌ مُّؤْمِنٰتٌ لَّمْ تَعْلَمُوْهُمْ اَنْ تَطَئُوْهُمْ فَتُصِیْبَكُمْ مِّنْهُمْ مَّعَرَّةٌۢ بِغَیْرِ عِلْمٍ١ۚ لِیُدْخِلَ اللّٰهُ فِیْ رَحْمَتِهٖ مَنْ یَّشَآءُ١ۚ لَوْ تَزَیَّلُوْا لَعَذَّبْنَا الَّذِیْنَ كَفَرُوْا مِنْهُمْ عَذَابًا اَلِیْمًا




অনুবাদ:    এরাই তো সেসব লোক যারা কুফরী করেছে, তোমাদেরকে মসজিদে হারামে যেতে বাধা দিয়েছে এবং কুরবানীর উটসমূহকে কুরবানী গাহে পৌঁছতে দেয়নি। যদি (মক্কায়) এমন নারী পুরুষ না থাকতো যাদেরকে তোমরা চিন না অজান্তে তাদেরকে পদদলিত করে ফেলবে এবং তাদের কারণে তোমরা বদনাম কুড়াবে এমন আশঙ্কা না থাকতো (তাহলে যুদ্ধ থামানো হতো না। তা বন্ধ করা হয়েছে এ কারণে) যে, আল্লাহ‌ যাকে ইচ্ছা যেন তাঁর রহমতের মধ্যে স্থান দেন। সেসব মু’মিন যদি আলাদা হয়ে যেতো তাহলে (মক্কাবাসীদের মধ্যে) যারা কাফের ছিল আমি অবশ্যই তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিতাম।




(48:26)

اِذْ جَعَلَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا فِیْ قُلُوْبِهِمُ الْحَمِیَّةَ حَمِیَّةَ الْجَاهِلِیَّةِ فَاَنْزَلَ اللّٰهُ سَكِیْنَتَهٗ عَلٰى رَسُوْلِهٖ وَ عَلَى الْمُؤْمِنِیْنَ وَ اَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوٰى وَ كَانُوْۤا اَحَقَّ بِهَا وَ اَهْلَهَا١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمًا۠




অনুবাদ:    এ কারণেই যখন ঐ সব কাফেররা তাদের মনে জাহেলী সংকীর্ণতার স্থান দিল তখন আল্লাহ‌ তাঁর রসূল ও ঈমানদারদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদেরকে তাকওয়ার নীতির ওপর সুদৃঢ়রূপে প্রতিষ্ঠিত রাখলেন। তারাই এ জন্য বেশী উপযুক্ত ও হকদার ছিল। আল্লাহ‌ সব জিনিস সম্পর্কেই পরিজ্ঞাত।




(48:27)

لَقَدْ صَدَقَ اللّٰهُ رَسُوْلَهُ الرُّءْیَا بِالْحَقِّ١ۚ لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ اِنْ شَآءَ اللّٰهُ اٰمِنِیْنَ١ۙ مُحَلِّقِیْنَ رُءُوْسَكُمْ وَ مُقَصِّرِیْنَ١ۙ لَا تَخَافُوْنَ١ؕ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوْا فَجَعَلَ مِنْ دُوْنِ ذٰلِكَ فَتْحًا قَرِیْبًا




অনুবাদ:    প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ‌ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন- যা ছিল সরাসরি হক। ইনশাআল্লাহ তোমরা পূর্ণ নিরাপত্তার সাথে অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে। নিজেদের মাথা মুণ্ডন করবে, চুল কাটাবে এবং তোমাদের কোন ভয় থাকবে না। তোমরা যা জানতে না তিনি তা জানতেন। তাই স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করার পূর্বে তিনি তোমাদেরকে এ আসন্ন বিজয় দান করেছেন।




(48:28)

هُوَ الَّذِیْۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَهٗ بِالْهُدٰى وَ دِیْنِ الْحَقِّ لِیُظْهِرَهٗ عَلَى الدِّیْنِ كُلِّهٖ١ؕ وَ كَفٰى بِاللّٰهِ شَهِیْدًاؕ




অনুবাদ:    আল্লাহই তো সে মহান সত্তা যিনি তাঁর রসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন যেন তাকে সমস্ত দ্বীনের ওপর বিজয়ী করে দেন। আর এ বাস্তবতা সম্পর্কে আল্লাহর সাক্ষই যথেষ্ট।




(48:29)

مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللّٰهِ١ؕ وَ الَّذِیْنَ مَعَهٗۤ اَشِدَّآءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَیْنَهُمْ تَرٰىهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا یَّبْتَغُوْنَ فَضْلًا مِّنَ اللّٰهِ وَ رِضْوَانًا١٘ سِیْمَاهُمْ فِیْ وُجُوْهِهِمْ مِّنْ اَثَرِ السُّجُوْدِ١ؕ ذٰلِكَ مَثَلُهُمْ فِی التَّوْرٰىةِ١ۛۖۚ وَ مَثَلُهُمْ فِی الْاِنْجِیْلِ١ۛ۫ۚ كَزَرْعٍ اَخْرَجَ شَطْئَهٗ فَاٰزَرَهٗ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوٰى عَلٰى سُوْقِهٖ یُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِیَغِیْظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ١ؕ وَعَدَ اللّٰهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ مِنْهُمْ مَّغْفِرَةً وَّ اَجْرًا عَظِیْمًا۠




অনুবাদ:    মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল। আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে আপোষহীন এবং নিজেরা পরস্পর দয়া পরবশ। তোমরা যখনই দেখবে তখন তাদেরকে রুকূ' ও সিজদা এবং আল্লাহর করুণা ও সন্তুষ্টি কামনায় তৎপর পাবে। তাদের চেহারায় সিজদার চিহ্ন বর্তমান যা দিয়ে তাদেরকে আলাদা চিনে নেয়া যায়। তাদের এ পরিচয় তাওরাতে দেয়া হয়েছে। আর ইনযীলে তাদের উপমা পেশ করা হয়েছে এই বলে যে, একটি শস্যক্ষেত যা প্রথমে অঙ্কুরোদগম ঘটালো। পরে তাকে শক্তি যোগালো তারপর তা শক্ত ও মজবুত হয়ে স্বীয় কাণ্ডে ভর করে দাঁড়ালো। যা কৃষককে খুশী করে কিন্তু কাফের তার পরিপুষ্টি লাভ দেখে মনোকষ্ট পায়। এ শ্রেণীর লোক যারা ঈমান আনয়ন করছে এবং সৎকাজ করেছে আল্লাহ‌ তাদেরকে ক্ষমা ও বড় পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।


৪৭ মুহাম্মদ

৪৭-মুহাম্মাদ


(47:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ

শব্দার্থ:   بِسْمِ = নামে,     اللَّهِ = আল্লাহ(র),     الرَّحْمَٰنِ = পরমকরুণাময়,     الرَّحِيمِ = অসীমদয়ালু,

অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে



(47:1)
اَلَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ صَدُّوْا عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ اَضَلَّ اَعْمَالَهُمْ

শব্দার্থ:        الَّذِينَ =  যারা,     كَفَرُوا =   অস্বীকার করেছে,     وَصَدُّوا =  ওবাধা  দিয়েছে (লোকদেরকে) ,     عَنْ =  হতে,     سَبِيلِ =  পথ,     اللَّهِ =  আল্লাহর,     أَضَلَّ =  ব্যর্থকরে  দিয়েছেন তিনি ,     أَعْمَالَهُمْ =  তাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    যারা কুফরী করেছে এবং আল্লাহর পথে চলতে বাধা দিয়েছে আল্লাহ তাদের সমস্ত কাজ-কর্ম ব্যর্থ করে দিয়েছেন।



(47:2)
وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ اٰمَنُوْا بِمَا نُزِّلَ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّ هُوَ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّهِمْ١ۙ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَیِّاٰتِهِمْ وَ اَصْلَحَ بَالَهُمْ

শব্দার্থ:        وَالَّذِينَ =  আর যারা,     آمَنُوا =   ঈমান  এনেছে,     وَعَمِلُوا =  ও কাজ করেছে,     الصَّالِحَاتِ =  সৎকর্মের,     وَآمَنُوا =  এবং  ঈমান  এনেছে,     بِمَا =   (তার উপর ) যা,     نُزِّلَ =   অবতীর্ণ করাহয়েছে,     عَلَىٰ =   উপর ,     مُحَمَّدٍ =  মুহাম্মাদের,     وَهُوَ =  এবং তা,     الْحَقُّ =  সত্য,     مِنْ =   পক্ষ হতে ,     رَبِّهِمْ =  তাদের  রবের ,     كَفَّرَ =   (আল্লাহ্‌) মিটিয়েদিয়েছেন,     عَنْهُمْ =  তাদের হতে,     سَيِّئَاتِهِمْ =  তাদের ত্রুটিসমুহ,     وَأَصْلَحَ =  ওশুধরেদিবেন,     بَالَهُمْ =  তাদের অবস্থা,

অনুবাদ:    আর যারা ঈমান এনেছে নেক কাজ করেছে এবং মুহাম্মদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তা মেনে নিয়েছে- বস্তুত তা তো তাদের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত অকাট্য সত্য কথা- আল্লাহ‌ তাদের খারাপ কাজগুলো তাদের থেকে দূর করে দিয়েছেন এবং তাদের অবস্থা শুধরে দিয়েছেন।



(47:3)
ذٰلِكَ بِاَنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوا اتَّبَعُوا الْبَاطِلَ وَ اَنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّبَعُوا الْحَقَّ مِنْ رَّبِّهِمْ١ؕ كَذٰلِكَ یَضْرِبُ اللّٰهُ لِلنَّاسِ اَمْثَالَهُمْ

শব্দার্থ:        ذَٰلِكَ =  এটা,     بِأَنَّ =  এ কারণে যে,     الَّذِينَ =  যারা,     كَفَرُوا =   অস্বীকার করেছে,     اتَّبَعُوا =  তারা  অনুসরণ করেছে,     الْبَاطِلَ =  মিথ্যা কে,     وَأَنَّ =  আর নিশ্চয়ই ,     الَّذِينَ =  যারা,     آمَنُوا =   ঈমান  এনেছে,     اتَّبَعُوا =  তারা  অনুসরণ করেছে,     الْحَقَّ =  সত্যকে,     مِنْ =   (আগত)  পক্ষ হতে ,     رَبِّهِمْ =  তাদের  রবের ,     كَذَٰلِكَ =  এভাবে,     يَضْرِبُ =   বর্ণনা  করেন ,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     لِلنَّاسِ =  লোকদের জন্যে ,     أَمْثَالَهُمْ =  তাদের দৃষ্টান্তসমুহ,

অনুবাদ:    কারণ হলো, যারা কুফরী করেছে তারা বাতিলের আনুগত্য করেছে এবং ঈমান গ্রহণকারীগণ তাদের রবের পক্ষ থেকে আসা সত্যের অনুসরণ করেছে। আল্লাহ‌ এভাবে মানুষের সঠিক মর্যাদা ও অবস্থান বলে দেন।



(47:4)
فَاِذَا لَقِیْتُمُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا فَضَرْبَ الرِّقَابِ١ؕ حَتّٰۤى اِذَاۤ اَثْخَنْتُمُوْهُمْ فَشُدُّوا الْوَثَاقَ١ۙۗ فَاِمَّا مَنًّۢا بَعْدُ وَ اِمَّا فِدَآءً حَتّٰى تَضَعَ الْحَرْبُ اَوْزَارَهَا١ۛ۫ۚ۬ ذٰؔلِكَ١ۛؕ وَ لَوْ یَشَآءُ اللّٰهُ لَانْتَصَرَ مِنْهُمْ وَ لٰكِنْ لِّیَبْلُوَاۡ بَعْضَكُمْ بِبَعْضٍ١ؕ وَ الَّذِیْنَ قُتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ فَلَنْ یُّضِلَّ اَعْمَالَهُمْ

শব্দার্থ:        فَإِذَا =   অতঃপর  যখন,     لَقِيتُمُ =   তোমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ  হবে ,     الَّذِينَ =  তাদের সাথে  (যারা) ,     كَفَرُوا =   অস্বীকার করেছে,     فَضَرْبَ =   তখন  আঘাত করা (প্রথমকাজ) ,     الرِّقَابِ =   (তাদের ) ঘাড়ে-গর্দানে,     حَتَّىٰ =  এমনকি,     إِذَا =  যখন ,     أَثْخَنْتُمُوهُمْ =  তাদের কেসম্পূর্ণভাবেপরাজিত করবে,     فَشُدُّوا =   তোমরা  তখন শক্তকরেবাঁধবে,     الْوَثَاقَ =   (বন্দীদের) বাঁধন,     فَإِمَّا =   অতঃপর হয়তো,     مَنًّا =  অনুকম্পা করবে,     بَعْدُ =  পরে,     وَإِمَّا =  নাহয়,     فِدَاءً =   মুক্তিপণ নেবে,     حَتَّىٰ =   যতক্ষণ না,     تَضَعَ =  সংবরণ করবে,     الْحَرْبُ =  যুদ্ধ,     أَوْزَارَهَا =  তারঅস্ত্র  সমূহ কে,     ذَٰلِكَ =  এটা (বিধান) ,     وَلَوْ =  এবং যদি,     يَشَاءُ =  ইচ্ছেকরতেন,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌ (তবে) ,     لَانْتَصَرَ =   অবশ্যই প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন,     مِنْهُمْ =  তাদের হতে,     وَلَٰكِنْ =  কিন্তু,     لِيَبْلُوَ =   (এপন্থানিয়েছেন) যাতে তিনি পরীক্ষা করতে পারেন,     بَعْضَكُمْ =    তোমাদের এককে,     بِبَعْضٍ =  অপরকেদিয়ে,     وَالَّذِينَ =   এবং  যারা ,     قُتِلُوا =  নিহতহয়,     فِي =  মধ্যে,     سَبِيلِ =  পথের,     اللَّهِ =   আল্লাহ্‌র ,     فَلَنْ =  সেক্ষেত্রেকখনও না,     يُضِلَّ =   তিনি নিষ্ফল   করবেন ,     أَعْمَالَهُمْ =  তাদের কর্মসমুহকে,

অনুবাদ:    অতএব এসব কাফেরের সাথে যখনই তোমাদের মোকাবিলা হবে তখন প্রথম কাজ হবে তাদেরকে হত্যা করা। এভাবে তোমরা যখন তাদেরকে আচ্ছাতম পর্যুদস্ত করে ফেলবে তখন বেশ শক্ত করে বাঁধো। এরপর (তোমাদের ইখতিয়ার আছে) হয় অনুকম্পা দেখাও, নতুবা মুক্তিপণ গ্রহণ করো যতক্ষণ না যুদ্ধবাজরা অস্ত্র সংবরণ করে। এটা হচ্ছে তোমাদের করণীয় কাজ। আল্লাহ‌ চাইলে নিজেই তাদের সাথে বুঝাপড়া করতেন। কিন্তু (তিনি এ পন্থা গ্রহণ করেছেন এ জন্য) যাতে তোমাদেরকে পরস্পরের দ্বারা পরীক্ষা করেন। আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হবে আল্লাহ‌ কখনো তাদের আমলসমূহ ধ্বংস করবেন না।



(47:5)
سَیَهْدِیْهِمْ وَ یُصْلِحُ بَالَهُمْۚ

শব্দার্থ:        سَيَهْدِيهِمْ =   তিনি  অচিরেই  তাদের কেপরিচালিত   করবেন সৎপথে,     وَيُصْلِحُ =  ও ভালো   করবেন ,     بَالَهُمْ =  তাদের অবস্থা,

অনুবাদ:    তিনি তাদের পথপ্রদর্শন করবেন। তাদের অবস্থা শুধরে দিবেন।



(47:6)
وَ یُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ عَرَّفَهَا لَهُمْ

শব্দার্থ:        وَيُدْخِلُهُمُ =  এবং তাদের  প্রবেশ করাবেন,     الْجَنَّةَ =  জান্নাতে,     عَرَّفَهَا =  তারপরিচয় তিনি জানিয়েছেন,     لَهُمْ =  তাদের কে,

অনুবাদ:    এবং তাদেরকে সেই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পরিচয় তিনি তাদেরকে আগেই অবহিত করেছেন।



(47:7)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ تَنْصُرُوا اللّٰهَ یَنْصُرْكُمْ وَ یُثَبِّتْ اَقْدَامَكُمْ

শব্দার্থ:        يَاأَيُّهَا =  হে,     الَّذِينَ =  যারা,     آمَنُوا =   ঈমান এনেছ,     إِنْ =  যদি,     تَنْصُرُوا =   তোমরা  সাহায্য কর,     اللَّهَ =  আল্লাহকে,     يَنْصُرْكُمْ =   তিনি   তোমাদের কে সাহায্য    করবেন ,     وَيُثَبِّتْ =  ওসুদৃঢ়   করবেন ,     أَقْدَامَكُمْ =    তোমাদের  পা গুলোকে ,

অনুবাদ:    হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দিবেন।



(47:8)
وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَّهُمْ وَ اَضَلَّ اَعْمَالَهُمْ

শব্দার্থ:        وَالَّذِينَ =   এবং  যারা ,     كَفَرُوا =   অস্বীকার করেছে,     فَتَعْسًا =  দুর্গতিসেক্ষেত্রে,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,     وَأَضَلَّ =  এবং  তিনি  পণ্ডকরে  দিয়েছেন,     أَعْمَالَهُمْ =  তাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে শুধু ধ্বংস। আল্লাহ তাদের কাজ-কর্ম পণ্ড করে দিয়েছেন।



(47:9)
ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ كَرِهُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ فَاَحْبَطَ اَعْمَالَهُمْ

শব্দার্থ:        ذَٰلِكَ =  এটা,     بِأَنَّهُمْ =  এ কারণে যে তারা ,     كَرِهُوا =  অপছন্দকরেছে,     مَا =  যা,     أَنْزَلَ =  নাযিল  করেছেন ,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     فَأَحْبَطَ =    অতএব  তিনি নষ্টকরে  দিয়েছেন,     أَعْمَالَهُمْ =  তাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    কারণ আল্লাহ‌ যে জিনিস নাযিল করেছেন তারা সে জিনিসকে অপছন্দ করেছে। অতএব, আল্লাহ‌ তাদের আমলসমূহ ধ্বংস করে দিয়েছেন।



(47:10)
اَفَلَمْ یَسِیْرُوْا فِی الْاَرْضِ فَیَنْظُرُوْا كَیْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ١ؕ دَمَّرَ اللّٰهُ عَلَیْهِمْ١٘ وَ لِلْكٰفِرِیْنَ اَمْثَالُهَا

শব্দার্থ:        أَفَلَمْ =  নি  তবেকি  ,     يَسِيرُوا =  তারা ভ্রমণকরে,     فِي =  মধ্যে,     الْأَرْضِ =  পৃথিবীর,     فَيَنْظُرُوا =  তারা দেখে তখন  (নাই) ,     كَيْفَ =  কেমন,     كَانَ =  ছিল,     عَاقِبَةُ =  পরিণাম,     الَّذِينَ =   (তাদের ) যারা,     مِنْ =    মধ্য হতে ,     قَبْلِهِمْ =  তাদের পূর্বে (ছিল) ,     دَمَّرَ =   ধ্বংস করে  দিয়েছেন,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     عَلَيْهِمْ =  তাদের কে,     وَلِلْكَافِرِينَ =  এবং কাফেরদেরজন্য (নির্দিষ্টহয়েআছে) ,     أَمْثَالُهَا =  তারঅনুরূপপরিণতি,

অনুবাদ:    . তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে সেসব লোকের পরিণাম দেখে না, যারা তাদের পূর্বে অতীত হয়েছে? আল্লাহ‌ তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। এসব কাফেরের জন্যও অনুরূপ পরিণাম নির্ধারিত হয়ে আছে।



(47:11)
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ مَوْلَى الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ اَنَّ الْكٰفِرِیْنَ لَا مَوْلٰى لَهُمْ۠

শব্দার্থ:        ذَٰلِكَ =  এটা,     بِأَنَّ =  এ জন্যে যে,     اللَّهَ =  আল্লাহ্‌,     مَوْلَى =  অভিভাবক,     الَّذِينَ =   (তাদের ) যারা,     آمَنُوا =   ঈমান  এনেছে,     وَأَنَّ =  এবং  (এও) যে,     الْكَافِرِينَ =  কাফেরদের,     لَا =  নেই,     مَوْلَىٰ =  কোনোঅভিভাবক,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,

অনুবাদ:    এর কারণ, আল্লাহ‌ নিজে ঈমান গ্রহণকারীদের সহযোগী ও সাহায্যকারী। কিন্তু কাফেরদের সহযোগী ও সাহায্যকারী কেউ নেই।



(47:12)
اِنَّ اللّٰهَ یُدْخِلُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ١ؕ وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا یَتَمَتَّعُوْنَ وَ یَاْكُلُوْنَ كَمَا تَاْكُلُ الْاَنْعَامُ وَ النَّارُ مَثْوًى لَّهُمْ

শব্দার্থ:        إِنَّ =  নিশ্চয়ই,     اللَّهَ =  আল্লাহ্‌,     يُدْخِلُ =   প্রবেশ করাবেন,     الَّذِينَ =   (তাদের কে) যারা,     آمَنُوا =   ঈমান  এনেছে,     وَعَمِلُوا =  ও কাজ করেছে,     الصَّالِحَاتِ =  সৎকর্ম,     جَنَّاتٍ =  জান্নাতে,     تَجْرِي =  প্র্রবাহিতহয়,     مِنْ =  থেকে,     تَحْتِهَا =  তার নিচ,     الْأَنْهَارُ =  ঝর্নাধারাসমুহ,     وَالَّذِينَ =   এবং  যারা ,     كَفَرُوا =   অস্বীকার করেছে,     يَتَمَتَّعُونَ =  তারা ভোগবিলাসকরছে,     وَيَأْكُلُونَ =  ও তারা খাচ্ছে,     كَمَا =  যেমন,     تَأْكُلُ =  খায়,     الْأَنْعَامُ =  চতুষ্পদজন্তু,     وَالنَّارُ =  এবং জাহান্নামই,     مَثْوًى =  নিবাস,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,

অনুবাদ:    আল্লাহ ঈমান গ্রহণকারী ও সৎকর্মশীলদের সে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা বয়ে যায়। আর কাফেররা দুনিয়ার ক’দিনের জীবনের মজা লুটছে, জন্তু-জানোয়ারের মত পানাহার করছে। ওদের চূড়ান্ত ঠিকানা জাহান্নাম।



(47:13)
وَ كَاَیِّنْ مِّنْ قَرْیَةٍ هِیَ اَشَدُّ قُوَّةً مِّنْ قَرْیَتِكَ الَّتِیْۤ اَخْرَجَتْكَ١ۚ اَهْلَكْنٰهُمْ فَلَا نَاصِرَ لَهُمْ

শব্দার্থ:        وَكَأَيِّنْ =  এবং কতইনা,     مِنْ =  থেকে,     قَرْيَةٍ =  জনপদ (বিলীনহয়েছে) ,     هِيَ =  যা (ছিল) ,     أَشَدُّ =  অধিকতরদৃঢ়,     قُوَّةً =  শক্তিতে,     مِنْ =  চেয়েও,     قَرْيَتِكَ =  তোমারজনপদের,     الَّتِي =  যা (হতে) ,     أَخْرَجَتْكَ =  তোমাকে বেরকরেছে,     أَهْلَكْنَاهُمْ =  আমরা তাদের কে ধ্বংস করেদিয়েছি,     فَلَا =   অতঃপর না (ছিল) ,     نَاصِرَ =  কোনো সাহায্যকারী,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,

অনুবাদ:    হে নবী, অতীতের কত জনপদ তো তোমার সে জনপদ থেকে অধিক শক্তিশালী ছিল, যারা তোমাকে বের করে দিয়েছিল। আমি তাদের এমনভাবে ধ্বংস করেছি যে, তাদের কোন রক্ষাকারী ছিল না।



(47:14)
اَفَمَنْ كَانَ عَلٰى بَیِّنَةٍ مِّنْ رَّبِّهٖ كَمَنْ زُیِّنَ لَهٗ سُوْٓءُ عَمَلِهٖ وَ اتَّبَعُوْۤا اَهْوَآءَهُمْ

শব্দার্থ:        أَفَمَنْ =    তবেকি  যে,     كَانَ =  হয়,     عَلَىٰ =   (হেদায়াতের)  উপর ,     بَيِّنَةٍ =  সুস্পষ্ট,     مِنْ =   পক্ষ হতে ,     رَبِّهِ =   তার রবের ,     كَمَنْ =   (তার) মতো যাকে ,     زُيِّنَ =  শোভনীয়করাহয়েছে,     لَهُ =  তার জন্যে ,     سُوءُ =  খারাপ,     عَمَلِهِ =  তারকাজকে,     وَاتَّبَعُوا =  এবং তারা  অনুসরণ করেছে,     أَهْوَاءَهُمْ =  তাদের খেয়ালখুশির,

অনুবাদ:    এমনকি কখনো হয়, যে ব্যক্তি তার রবের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট হিদায়াতের ওপর আছে সে ঐ সব লোকের মত হবে যাদের মন্দ কাজকর্মকে সুদৃশ্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে গিয়েছে?



(47:15)
مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِیْ وُعِدَ الْمُتَّقُوْنَ١ؕ فِیْهَاۤ اَنْهٰرٌ مِّنْ مَّآءٍ غَیْرِ اٰسِنٍ١ۚ وَ اَنْهٰرٌ مِّنْ لَّبَنٍ لَّمْ یَتَغَیَّرْ طَعْمُهٗ١ۚ وَ اَنْهٰرٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشّٰرِبِیْنَ١ۚ۬ وَ اَنْهٰرٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى١ؕ وَ لَهُمْ فِیْهَا مِنْ كُلِّ الثَّمَرٰتِ وَ مَغْفِرَةٌ مِّنْ رَّبِّهِمْ١ؕ كَمَنْ هُوَ خَالِدٌ فِی النَّارِ وَ سُقُوْا مَآءً حَمِیْمًا فَقَطَّعَ اَمْعَآءَهُمْ

শব্দার্থ:        مَثَلُ =  একটিদৃষ্টান্ত,     الْجَنَّةِ =  জান্নাতের,     الَّتِي =  যা,     وُعِدَ =   প্রতিশ্রুতি দেওয়াহয়েছে,     الْمُتَّقُونَ =  মুত্তাকীদের ( জন্যে ) ,     فِيهَا =  তার মধ্যে  আছেে,     أَنْهَارٌ =  ঝর্নাধারা সমূহ ,     مِنْ =  থেকে,     مَاءٍ =   পানির,     غَيْرِ =  নয়অ,     آسِنٍ =   পরিবর্তন ীয় (তার রংগন্ধ) ,     وَأَنْهَارٌ =  এবং ঝর্ণা সমূহ ,     مِنْ =  থেকে,     لَبَنٍ =  দুধের,     لَمْ =  না,     يَتَغَيَّرْ =   পরিবর্তন হয়,     طَعْمُهُ =  তারস্বাদ,     وَأَنْهَارٌ =  এবং ঝর্ণা সমূহ ,     مِنْ =  থেকে,     خَمْرٍ =  সুধার,     لَذَّةٍ =  সুস্বাদু,     لِلشَّارِبِينَ =  পানকারীদের  জন্যে ,     وَأَنْهَارٌ =  এবং ঝর্ণা সমূহ ,     مِنْ =  থেকে,     عَسَلٍ =  মধুর,     مُصَفًّى =  পরিশোধিতপরিচ্ছন্ন,     وَلَهُمْ =  এবং তাদের   জন্যে   (রয়েছে) ,     فِيهَا =  তার মধ্যে ,     مِنْ =  থেকে,     كُلِّ =  সব (ধরনের) ,     الثَّمَرَاتِ =  ফলমূল,     وَمَغْفِرَةٌ =  এবং ক্ষমা,     مِنْ =   পক্ষ হতে ,     رَبِّهِمْ =  তাদের  রবের ,     كَمَنْ =   (এসবেরঅধিকারীকি) তারমতো,     هُوَ =  যে,     خَالِدٌ =  স্থায়ী হবে ,     فِي =  মধ্যে,     النَّارِ =  জাহান্নামের,     وَسُقُوا =  ওযাদেরকেপানকরানো হবে ,     مَاءً =   পানি ,     حَمِيمًا =  উত্তপ্তফুটন্ত,     فَقَطَّعَ =  ছিন্নবিচ্ছিন্নকরেদেবে,     أَمْعَاءَهُمْ =  তাদের নাড়িভুঁড়ি,

অনুবাদ:    মুত্তাকীদের জন্য যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার অবস্থা এই যে, তার মধ্যে স্বচ্ছ ও নির্মল পানির নহর বইতে থাকবে। এমন সব দুধের নহর বইতে থাকবে যার স্বাদে সামান্য কোন পরিবর্তন বা বিকৃতিও আসবে না, শরাবের এমন নহর বইতে থাকবে পানকারীদের জন্য যা হবে অতীব সুস্বাদু এবং বইতে থাকবে স্বচ্ছ মধুর নহর। এছাড়াও তাদের জন্য সেখানে থাকবে সব রকমেরফল এবং তাদের রবের পক্ষ থেকে থাকবে ক্ষমা। (যে ব্যক্তি এ জান্নাত লাভ করবে সেকি) ঐ ব্যক্তির মত হতে পারে যে চিরদিন জাহান্নামে থাকবে, যাদের এমন গরম পানি পান করানো হবে যা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে?



(47:16)
وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّسْتَمِعُ اِلَیْكَ١ۚ حَتّٰۤى اِذَا خَرَجُوْا مِنْ عِنْدِكَ قَالُوْا لِلَّذِیْنَ اُوْتُوا الْعِلْمَ مَا ذَا قَالَ اٰنِفًا١۫ اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ طَبَعَ اللّٰهُ عَلٰى قُلُوْبِهِمْ وَ اتَّبَعُوْۤا اَهْوَآءَهُمْ

শব্দার্থ:        وَمِنْهُمْ =  এবং তাদের মধ্যে,     مَنْ =  কেউকেউ (এমনআছে) ,     يَسْتَمِعُ =  যেশুনে,     إِلَيْكَ =  তোমারদিকেমনোযোগদিয়ে,     حَتَّىٰ =  এমনকি,     إِذَا =  যখন ,     خَرَجُوا =  তারা বেরহয়েযায়,     مِنْ =  হতে,     عِنْدِكَ =  তোমারনিকট,     قَالُوا =  তারা বলে,     لِلَّذِينَ =  যাদের (আহলে-কিতাবদেরকে) ,     أُوتُوا =  দেওয়াহয়েছে,     الْعِلْمَ =  জ্ঞান,     مَاذَا =  কি,     قَالَ =  বলল,     آنِفًا =  এইমাত্র,     أُولَٰئِكَ =  ঐসবলোক,     الَّذِينَ =   (তারা ই) যাদের,     طَبَعَ =  মোহরমেরে  দিয়েছেন,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     عَلَىٰ =   উপর ,     قُلُوبِهِمْ =  তাদের অন্তরগুলোর,     وَاتَّبَعُوا =  এবং তারা  অনুসরণ করে,     أَهْوَاءَهُمْ =  তাদের খেয়ালখুশির,

অনুবাদ:    তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা মনযোগ দিয়ে তোমার কথা শোনে এবং যখন তোমার কাছ থেকে চলে যায় তখন যাদেরকে জ্ঞানের নিয়ামত দান করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করে যে, এই মাত্র তিনি কী বললেন? এরাই সেসব লোক যাদের অন্তরে আল্লাহ‌ তা’আলা মোহর লাগিয়ে দিয়েছেন। তারা তাদের প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে গিয়েছে।



(47:17)
وَ الَّذِیْنَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَّ اٰتٰىهُمْ تَقْوٰىهُمْ

শব্দার্থ:        وَالَّذِينَ =   এবং  যারা ,     اهْتَدَوْا =  সৎপথঅবলম্বনকরেছে,     زَادَهُمْ =  তাদের কে (আল্লাহ্‌) বাড়িয়েদেন,     هُدًى =  সৎপথেচলারশক্তি,     وَآتَاهُمْ =  এবং তাদের দান করেন ,     تَقْوَاهُمْ =  তাদের তাকওয়া,

অনুবাদ:    আর যারা হিদায়াত লাভ করেছে আল্লাহ‌ তাদেরকে আরো অধিক হিদায়াত দান করেন। এবং তাদেরকে তাদের অংশের তাকওয়া দান করেন।



(47:18)
فَهَلْ یَنْظُرُوْنَ اِلَّا السَّاعَةَ اَنْ تَاْتِیَهُمْ بَغْتَةً١ۚ فَقَدْ جَآءَ اَشْرَاطُهَا١ۚ فَاَنّٰى لَهُمْ اِذَا جَآءَتْهُمْ ذِكْرٰىهُمْ

শব্দার্থ:        فَهَلْ =  তবে (কি) ,     يَنْظُرُونَ =  তারা অপেক্ষাকরছে,     إِلَّا =  এছাড়া,     السَّاعَةَ =  কিয়ামতের,     أَنْ =  যে,     تَأْتِيَهُمْ =  তাদের  কাছে  আসবে ,     بَغْتَةً =  হঠাৎকরে,     فَقَدْ =  নিশ্চয়ই,     جَاءَ =  এসেছে,     أَشْرَاطُهَا =  তারলক্ষণ সমূহ ,     فَأَنَّىٰ =    অতএব কেমন করে,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,     إِذَا =  যখন ,     جَاءَتْهُمْ =  তাতাদের  কাছে  আসবে  (কিয়ামত) ,     ذِكْرَاهُمْ =  তাদের    উপদেশ  ( গ্রহণ সম্ভব হবে ?) ,

অনুবাদ:    এখন কি এসব লোক শুধু কিয়ামতের জন্যই অপেক্ষা করছে যে, তা তাদের ওপর অকস্মাৎ এসে পড়ুক। তার আলামত তো এসে গিয়েছে। যখন কিয়ামতই এসে যাবে তখন তাদের জন্য উপদেশ গ্রহণের আর কি অবকাশ থাকবে?



(47:19)
فَاعْلَمْ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ وَ اسْتَغْفِرْ لِذَنْۢبِكَ وَ لِلْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ١ؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَ مَثْوٰىكُمْ۠

শব্দার্থ:        فَاعْلَمْ =    অতএব জেনেরাখো,     أَنَّهُ =  যে,     لَا =  নেই,     إِلَٰهَ =  কোনোইলাহ (যেইবাদাতপেতেপারে) ,     إِلَّا =  ছাড়া,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     وَاسْتَغْفِرْ =  এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকরো,     لِذَنْبِكَ =  তোমার পাপের জন্যে ,     وَلِلْمُؤْمِنِينَ =  এবং মুমিন পুরুষদের  জন্যে ,     وَالْمُؤْمِنَاتِ =  এবং মুমিননারীদের জন্যে ,     وَاللَّهُ =  এবং আল্লাহ্‌,     يَعْلَمُ =  জানেন,     مُتَقَلَّبَكُمْ =    তোমাদের গতিবিধি,     وَمَثْوَاكُمْ =  এবং তোমাদের অবস্থান,

অনুবাদ:    অতএব, হে নবী! ভাল করে জেনে নাও, আল্লাহ‌ ছাড়া আর কেউ ইবাদাতের যোগ্য নয়। নিজের ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং মু’মিন নারী ও পুরুষদের জন্যও। আল্লাহ তোমাদের তৎপরতা সম্পর্কে অবহিত এবং তোমাদের ঠিকানা সম্পর্কেও অবহিত।



(47:20)
وَ یَقُوْلُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَوْ لَا نُزِّلَتْ سُوْرَةٌ١ۚ فَاِذَاۤ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ مُّحْكَمَةٌ وَّ ذُكِرَ فِیْهَا الْقِتَالُ١ۙ رَاَیْتَ الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ یَّنْظُرُوْنَ اِلَیْكَ نَظَرَ الْمَغْشِیِّ عَلَیْهِ مِنَ الْمَوْتِ١ؕ فَاَوْلٰى لَهُمْۚ

শব্দার্থ:        وَيَقُولُ =  এবং বলে,     الَّذِينَ =  যারা,     آمَنُوا =   ঈমান  এনেছে,     لَوْلَا =  কেননা,     نُزِّلَتْ =  নাযিলকরাহয়,     سُورَةٌ =  একটি সূরাহ (যুদ্ধাদেশ দিয়ে) ,     فَإِذَا =   অতঃপর  যখন,     أُنْزِلَتْ =  নাযিলকরা হলো ,     سُورَةٌ =  একটি সূরাহ,     مُحْكَمَةٌ =  দ্ব্যর্থহীন,     وَذُكِرَ =  এবং উল্লেখকরাছিল,     فِيهَا =  তার মধ্যে ,     الْقِتَالُ =  যুদ্ধের ( নির্দেশ ) ,     رَأَيْتَ =   তুমি দেখলে,     الَّذِينَ =  তাদের কে (যাদের) ,     فِي =  আছে,     قُلُوبِهِمْ =  তাদের অন্তর সমূহে,     مَرَضٌ =  রোগ,     يَنْظُرُونَ =  তারা তাকাচ্ছে,     إِلَيْكَ =  তোমারদিকে,     نَظَرَ =   (এমন) দৃষ্টিতে,     الْمَغْشِيِّ =  ছেয়েগেছে,     عَلَيْهِ =  যার উপর ,     مِنَ =  থেকে,     الْمَوْتِ =  মৃত্যু,     فَأَوْلَىٰ =  সুতরাংদুর্ভোগ,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,

অনুবাদ:    যারা ঈমান আনায়ন করেছে তারা বলছিলো, এমন কোন সূরা কেন নাযিল করা হয় না (যাতে যুদ্ধের নির্দেশ থাকবে) ? কিন্তু যখন সুস্পষ্ট নির্দেশ সম্বলিত সূরা নাযিল করা হলো এবং তার মধ্যে যুদ্ধের কথা বলা হলো তখন তোমরা দেখলে, যাদের মনে রোগ ছিল তারা তোমার প্রতি সে ব্যক্তির মত তাকাচ্ছে যার ওপর মৃত্যু চেপে বসেছে। তাদের এ অবস্থার জন্য আফসোস।



(47:21)
طَاعَةٌ وَّ قَوْلٌ مَّعْرُوْفٌ١۫ فَاِذَا عَزَمَ الْاَمْرُ١۫ فَلَوْ صَدَقُوا اللّٰهَ لَكَانَ خَیْرًا لَّهُمْۚ

শব্দার্থ:        طَاعَةٌ =   (তাদের মুখেতো) আনুগত্য,     وَقَوْلٌ =  ওকথা,     مَعْرُوفٌ =  ন্যায়সংগতভালোভালো,     فَإِذَا =  কিন্তুযখন ,     عَزَمَ =  চূড়ান্ত হলো ,     الْأَمْرُ =   (জিহাদের) বিষয়টি,     فَلَوْ =   তখন যদি,     صَدَقُوا =  তারা সত্য প্রমাণ করত,     اللَّهَ =  আল্লাহকে (দেওয়াওয়াদা) ,     لَكَانَ =  অবশইহতো,     خَيْرًا =  উত্তম,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,

অনুবাদ:    (তাদের মুখে) আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি এবং ভাল ভাল কথা। কিন্তু যখন অলংঘনীয় নির্দেশ দেয়া হলো তখন যদি তারা আল্লাহর সাথে কৃত নিজেদের অঙ্গীকারের ব্যাপারে সত্যবাদী প্রমাণিত হতো তাহলে তা তাদের জন্যই কল্যাণকর হতো।



(47:22)
فَهَلْ عَسَیْتُمْ اِنْ تَوَلَّیْتُمْ اَنْ تُفْسِدُوْا فِی الْاَرْضِ وَ تُقَطِّعُوْۤا اَرْحَامَكُمْ

শব্দার্থ:        فَهَلْ =    তবেকি  ,     عَسَيْتُمْ =    তোমাদের হতেএসম্ভাবনাআছে?,     إِنْ =  যদি,     تَوَلَّيْتُمْ =   তোমরা ক্ষমতায়অধিষ্ঠিতহও,     أَنْ =  যে,     تُفْسِدُوا =   তোমরা বিপর্যয় সৃষ্টি  করবে,     فِي =  মধ্যে,     الْأَرْضِ =  পৃথিবীর,     وَتُقَطِّعُوا =  এবং  তোমরা ছিন্ন করবে,     أَرْحَامَكُمْ =    তোমাদের আত্মীয়তারবন্ধন  সমূহ কে,

অনুবাদ:    এখন তোমাদের থেকে এছাড়া অন্য কিছুর কি আশা করা যায় যে, তোমরা যদি ইসলাম থেকে ফিরে যাও তাহলে পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং একে অপরের গলা কাটবে?



(47:23)
اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ فَاَصَمَّهُمْ وَ اَعْمٰۤى اَبْصَارَهُمْ

শব্দার্থ:        أُولَٰئِكَ =  ঐসবলোক,     الَّذِينَ =  তারা ই,     لَعَنَهُمُ =  যাদেরকেঅভিশাপ  দিয়েছেন,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     فَأَصَمَّهُمْ =  এরপরতাদের কেবধিরকরে  দিয়েছেন,     وَأَعْمَىٰ =  ওঅন্ধকরে  দিয়েছেন,     أَبْصَارَهُمْ =  তাদের দৃষ্টিশক্তিকে,

অনুবাদ:    আল্লাহ তা’আলা এসব লোকের ওপর লা’নত করেছেন এবং তাদেরকে অন্ধ ও বধির বানিয়ে দিয়েছেন।



(47:24)
اَفَلَا یَتَدَبَّرُوْنَ الْقُرْاٰنَ اَمْ عَلٰى قُلُوْبٍ اَقْفَالُهَا

শব্দার্থ:        أَفَلَا =   না   তবেকি   ,     يَتَدَبَّرُونَ =  তারা চিন্তাগবেষণাকরে,     الْقُرْآنَ =  কুরআন (সম্বন্ধে) ,     أَمْ =  অথবা,     عَلَىٰ =   উপর ,     قُلُوبٍ =  অন্তর সমূহের,     أَقْفَالُهَا =  তাদের তালা (পড়েছে) ,

অনুবাদ:    তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেনি, নাকি তাদের মনের ওপর তালা লাগানো আছে?



(47:25)
اِنَّ الَّذِیْنَ ارْتَدُّوْا عَلٰۤى اَدْبَارِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الْهُدَى١ۙ الشَّیْطٰنُ سَوَّلَ لَهُمْ١ؕ وَ اَمْلٰى لَهُمْ

শব্দার্থ:        إِنَّ =  নিশ্চয়ই,     الَّذِينَ =  যারা,     ارْتَدُّوا =  ফিরেযায়,     عَلَىٰ =  দিকে,     أَدْبَارِهِمْ =  তাদের পিছনের,     مِنْ =  থেকে,     بَعْدِ =   এরপরে ও,     مَا =  যা,     تَبَيَّنَ =  সুস্পষ্টহয়েছে,     لَهُمُ =  তাদের  কাছে ,     الْهُدَى =   (অর্থাৎ) সৎপথ,     الشَّيْطَانُ =  শয়তান,     سَوَّلَ =  শোভনকরেদেখায়,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে   (একাজ) ,     وَأَمْلَىٰ =  মিথ্যা আশাদেয়,     لَهُمْ =  তাদের   জন্যে  ,

অনুবাদ:    প্রকৃত ব্যাপার হলো, হিদায়াত সুস্পষ্ট হওয়ার পরও যারা তা থেকে ফিরে গেল শয়তান তাদের জন্য এরূপ আচরণ সহজ বানিয়ে দিয়েছে এবং মিথ্যা আশাবাদকে দীর্ঘায়িত করে রেখেছেন।



(47:26)
ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْا لِلَّذِیْنَ كَرِهُوْا مَا نَزَّلَ اللّٰهُ سَنُطِیْعُكُمْ فِیْ بَعْضِ الْاَمْرِ١ۖۚ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ اِسْرَارَهُمْ

শব্দার্থ:        ذَٰلِكَ =  এটা,     بِأَنَّهُمْ =  এ কারণে যে তারা ,     قَالُوا =  বলে,     لِلَّذِينَ =   (তাদের ) -কেযারা,     كَرِهُوا =  অপছন্দকরেছে,     مَا =  যা,     نَزَّلَ =  অবতরণ  করেছেন ,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     سَنُطِيعُكُمْ =   অচিরেই আমরা   তোমাদের আনুগত্যকরব,     فِي =  ক্ষেত্রে,     بَعْضِ =  কিছু,     الْأَمْرِ =  বিষয়ের,     وَاللَّهُ =  এবং আল্লাহ্‌,     يَعْلَمُ =  জানেন,     إِسْرَارَهُمْ =  তাদের গোপনঅভিসন্ধি ( সম্পর্কে ) ,

অনুবাদ:    এ কারণেই তারা আল্লাহর নাযিলকৃত দ্বীনকে যারা পছন্দ করে না তাদের বলেছে, কিছু ব্যাপারে আমরা তোমাদের অনুসরণ করবো। আল্লাহ তাদের এ সলা-পরামর্শ ভাল করেই জানেন।



(47:27)
فَكَیْفَ اِذَا تَوَفَّتْهُمُ الْمَلٰٓئِكَةُ یَضْرِبُوْنَ وُجُوْهَهُمْ وَ اَدْبَارَهُمْ

শব্দার্থ:        فَكَيْفَ =   অতঃপর কেমন হবে ,     إِذَا =   ( তখন ) যখন ,     تَوَفَّتْهُمُ =  তাদের প্রানহরণ করবে,     الْمَلَائِكَةُ =  ফেরেশতারা ,     يَضْرِبُونَ =  তারা মারবে,     وُجُوهَهُمْ =  তাদের মুখমন্ডলগুলোতে,     وَأَدْبَارَهُمْ =  ও তাদের পিঠে,

অনুবাদ:    সে সময় কী অবস্থা হবে যখন ফেরেশতারা তাদের রূহ কবজ করবে এবং তাদের মুখ ও পিঠের ওপর আঘাত করতে করতে নিয়ে যাবে।



(47:28)
ذٰلِكَ بِاَنَّهُمُ اتَّبَعُوْا مَاۤ اَسْخَطَ اللّٰهَ وَ كَرِهُوْا رِضْوَانَهٗ فَاَحْبَطَ اَعْمَالَهُمْ۠

শব্দার্থ:        ذَٰلِكَ =  এটা,     بِأَنَّهُمُ =  এ কারণে যে তারা ,     اتَّبَعُوا =   অনুসরণ  করেছিল  (সেইপথের) ,     مَا =  যা,     أَسْخَطَ =  অসন্তুষ্টকরেছে,     اللَّهَ =  আল্লাহকে,     وَكَرِهُوا =  ও তারা অপছন্দকরেছে,     رِضْوَانَهُ =  তাঁরসন্তুষ্টির (পথ) ,     فَأَحْبَطَ =  ফলে তিনি নষ্টকরে  দিয়েছেন,     أَعْمَالَهُمْ =  তাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    এসব হওয়ার কারণ হচ্ছে, তারা এমন পন্থার অনুসরণ করেছে যা আল্লাহর অসন্তুষ্টি উৎপাদন করে এবং তাঁর সন্তুষ্টির পথ অনুসরণ করা পছন্দ করেনি। এ কারণে তিনি তাদের সব কাজ-কর্ম নষ্ট করে দিয়েছেন।



(47:29)
اَمْ حَسِبَ الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ اَنْ لَّنْ یُّخْرِجَ اللّٰهُ اَضْغَانَهُمْ

শব্দার্থ:        أَمْ =  কি,     حَسِبَ =  মনেকরেছে,     الَّذِينَ =  তারা ,     فِي =  আছে,     قُلُوبِهِمْ =  যাদেরঅন্তর সমূহে,     مَرَضٌ =  রোগ (আছে) ,     أَنْ =  যে,     لَنْ =  কখনও না,     يُخْرِجَ =   প্রকাশ    করবেন ,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     أَضْغَانَهُمْ =  তাদের বিদ্বেষ গুলোকে ,

অনুবাদ:    যেসব লোকের মনে রোগ আছে তারা কি মনে করে নিয়েছে যে, আল্লাহ‌ তাদের মনের ঈর্ষা ও বিদ্বেষ প্রকাশ করবেন না?



(47:30)
وَ لَوْ نَشَآءُ لَاَرَیْنٰكَهُمْ فَلَعَرَفْتَهُمْ بِسِیْمٰىهُمْ١ؕ وَ لَتَعْرِفَنَّهُمْ فِیْ لَحْنِ الْقَوْلِ١ؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ اَعْمَالَكُمْ

শব্দার্থ:        وَلَوْ =  এবং যদি,     نَشَاءُ =  আমরা ইচ্ছে করি,     لَأَرَيْنَاكَهُمْ =  আমরা  অবশ্যই তাদের দেখাতেপারি,     فَلَعَرَفْتَهُمْ =   তুমি  তখন তাদের চিনবেই,     بِسِيمَاهُمْ =  দ্বারাতাদের লক্ষণগুলো,     وَلَتَعْرِفَنَّهُمْ =  এবং তাদের কে তুমি  অবশ্যই চিনবে,     فِي =  আছে,     لَحْنِ =  ভংগিতে,     الْقَوْلِ =  কথা (বলার) ,     وَاللَّهُ =  এবং আল্লাহ্‌ই,     يَعْلَمُ =  জানেন,     أَعْمَالَكُمْ =    তোমাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    আমি চাইলে তাদেরকে চাক্ষুষ দেখিয়ে দিতাম আর তুমি তাদের চেহারা দেখেই চিনতে পারতে। তবে তাদের বাচনভঙ্গি থেকে তুমি তাদেরকে অবশ্যই চিনে ফেলবে। আল্লাহ‌ তোমাদের সব আমল ভাল করেই জানেন।



(47:31)
وَ لَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتّٰى نَعْلَمَ الْمُجٰهِدِیْنَ مِنْكُمْ وَ الصّٰبِرِیْنَ١ۙ وَ نَبْلُوَاۡ اَخْبَارَكُمْ

শব্দার্থ:        وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ =  এবং তোমাদের পরীক্ষাকরবআমরা  অবশ্যই ,     حَتَّىٰ =   যতক্ষণ না,     نَعْلَمَ =  আমরা জানবো,     الْمُجَاهِدِينَ =  মুজাহিদদেরকে,     مِنْكُمْ =    তোমাদের মধ্যকার,     وَالصَّابِرِينَ =  ওধৈর্যশীলদেরকে,     وَنَبْلُوَ =  এবং আমরা পরীক্ষা করবো ,     أَخْبَارَكُمْ =    তোমাদের খবরাদি,

অনুবাদ:    আমি তোমাদের কে অবশ্যই পরীক্ষা করবো যাতে আমি তোমাদের অবস্থা যাচাই করে দেখে নিতে পারি তোমাদের মধ্যে কে জিহাদকারী এবং কে ধৈর্যশীল।



(47:32)
اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ صَدُّوْا عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ شَآقُّوا الرَّسُوْلَ مِنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الْهُدٰى١ۙ لَنْ یَّضُرُّوا اللّٰهَ شَیْئًا١ؕ وَ سَیُحْبِطُ اَعْمَالَهُمْ

শব্দার্থ:        إِنَّ =  নিশ্চয়ই,     الَّذِينَ =  যারা,     كَفَرُوا =   অস্বীকার করেছে,     وَصَدُّوا =  ও বাধাদিয়েছে  (লোকদেরকে) ,     عَنْ =  হতে,     سَبِيلِ =  পথ,     اللَّهِ =   আল্লাহ্‌র ,     وَشَاقُّوا =  এবং বিরোধিতাকরেছে,     الرَّسُولَ =  রাসুলের,     مِنْ =    মধ্য হতে ,     بَعْدِ =   এরপরে ও,     مَا =  যা,     تَبَيَّنَ =  সুস্পষ্টহয়েছে,     لَهُمُ =  তাদের  কাছে ,     الْهُدَىٰ =   (অর্থাৎ) সৎপথ,     لَنْ =  কখনও না,     يَضُرُّوا =  তারা ক্ষতি করতে পারবে,     اللَّهَ =  আল্লাহকে,     شَيْئًا =  কিছুমাত্রও,     وَسَيُحْبِطُ =  এবং  অচিরেই   তিনি বিনষ্ট করে দিবেন,     أَعْمَالَهُمْ =  তাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    যারা কুফরী করেছে, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে এবং তাদের সামনে সঠিক পথ স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর রসূলের সাথে বিরোধ করেছে, প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। বরং আল্লাহই তাদের সব কৃতকর্ম ধ্বংস করে দিবেন।



(47:33)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَطِیْعُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ وَ لَا تُبْطِلُوْۤا اَعْمَالَكُمْ

শব্দার্থ:        يَاأَيُّهَا =  হে,     الَّذِينَ =  যারা,     آمَنُوا =   ঈমান এনেছ,     أَطِيعُوا =   তোমরা আনুগত্যকরো,     اللَّهَ =   আল্লাহ্‌র ,     وَأَطِيعُوا =  ওআনুগত্যকরো,     الرَّسُولَ =  রাসুলের,     وَلَا =   এবং  না ,     تُبْطِلُوا =   তোমরা বিনষ্টকরো,     أَعْمَالَكُمْ =    তোমাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, রসূলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের আমল ধ্বংস করো না।



(47:34)
اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ صَدُّوْا عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ثُمَّ مَاتُوْا وَ هُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ یَّغْفِرَ اللّٰهُ لَهُمْ

শব্দার্থ:        إِنَّ =  নিশ্চয়ই,     الَّذِينَ =  যারা,     كَفَرُوا =   অস্বীকার করেছে,     وَصَدُّوا =  ও বাধাদিয়েছে  (লোকদেরকে) ,     عَنْ =  হতে,     سَبِيلِ =  পথ,     اللَّهِ =   আল্লাহ্‌র ,     ثُمَّ =  তারপর,     مَاتُوا =  তারা মারাগেছে,     وَهُمْ =   এমতাবস্থায় যে ,     كُفَّارٌ =  কাফের (ছিল) ,     فَلَنْ =  ফলেকখনও না,     يَغْفِرَ =  ক্ষমা   করবেন ,     اللَّهُ =  আল্লাহ্‌,     لَهُمْ =  তাদের কে,

অনুবাদ:    কুফর অবলম্বনকারী, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টিকারী এবং কুফরীসহ, মৃত্যুবরণকারীকে আল্লাহ‌ কখনো ক্ষমা করবেন না।



(47:35)
فَلَا تَهِنُوْا وَ تَدْعُوْۤا اِلَى السَّلْمِ١ۖۗ وَ اَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَ١ۖۗ وَ اللّٰهُ مَعَكُمْ وَ لَنْ یَّتِرَكُمْ اَعْمَالَكُمْ

শব্দার্থ:        فَلَا =     অতএব  না ,     تَهِنُوا =   তোমরা সাহসহারিয়োনা,     وَتَدْعُوا =  এবং  তোমরা আহবানকরো (না) ,     إِلَى =  দিকে,     السَّلْمِ =  সন্ধির,     وَأَنْتُمُ =  এবং  তোমরা ই ( হবে ) ,     الْأَعْلَوْنَ =  বিজয়ী,     وَاللَّهُ =  এবং আল্লাহ্‌,     مَعَكُمْ =    তোমাদের  সাথে  (আছেন) ,     وَلَنْ =  এবংকখনও না,     يَتِرَكُمْ =    তোমাদের কমাবেন,     أَعْمَالَكُمْ =    তোমাদের কর্ম  সমূহ কে,

অনুবাদ:    তোমরা দুর্বল হয়ো না এবং সন্ধির জন্য আহ্বান করো না। তোমরাই বিজয়ী থাকবে। আল্লাহ‌ তোমাদের সাথে আছেন। তিনি তোমাদের আমল কখনো নষ্ট করবেন না।



(47:36)
اِنَّمَا الْحَیٰوةُ الدُّنْیَا لَعِبٌ وَّ لَهْوٌ١ؕ وَ اِنْ تُؤْمِنُوْا وَ تَتَّقُوْا یُؤْتِكُمْ اُجُوْرَكُمْ وَ لَا یَسْئَلْكُمْ اَمْوَالَكُمْ

শব্দার্থ:        إِنَّمَا =  প্রকৃতপক্ষে,     الْحَيَاةُ =  জীবন,     الدُّنْيَا =  পার্থিব,     لَعِبٌ =  খেলা,     وَلَهْوٌ =  ওতামাশা (মাত্র) ,     وَإِنْ =  এবং যদি,     تُؤْمِنُوا =   তোমরা  ঈমান আন,     وَتَتَّقُوا =  ও তোমরা ভয়করেচল,     يُؤْتِكُمْ =   তিনি   তোমাদের দান   করবেন ,     أُجُورَكُمْ =    তোমাদের কর্মফল  সমূহ কে,     وَلَا =   এবং  না ,     يَسْأَلْكُمْ =    তোমাদের থেকে  তিনি  চান,     أَمْوَالَكُمْ =    তোমাদের সম্পদ গুলোকে ,

অনুবাদ:    দুনিয়ার এ জীবন তাতো খেল তামাশা মাত্র। তোমরা যদি ঈমানদার হও এবং তাকওয়ার পথে চলতে থাক তাহলে আল্লাহ‌ তোমাদেরকে তোমাদেরকে তোমাদের ন্যায্য প্রতিদান অবশ্যই দিবেন। আর তিনি তোমাদের সম্পদ চাইবেন না।



(47:37)
اِنْ یَّسْئَلْكُمُوْهَا فَیُحْفِكُمْ تَبْخَلُوْا وَ یُخْرِجْ اَضْغَانَكُمْ

শব্দার্থ:        إِنْ =  যদি,     يَسْأَلْكُمُوهَا =  তা  তোমাদের থেকেচান তিনি ,     فَيُحْفِكُمْ =   অতঃপর   তোমাদের কেচাপদেন,     تَبْخَلُوا =   তোমরা কৃপণতা করবে,     وَيُخْرِجْ =  এবং  তিনি   প্রকাশ    করবেন ,     أَضْغَانَكُمْ =    তোমাদের গোপনত্রুটিকে,

অনুবাদ:    তিনি যদি কখনো তোমাদের সম্পদ চান এবং সবটাই চান তাহলে তোমরা কৃপণতা করবে এবং তিনি তোমাদের ঈর্ষা পরায়ণতা প্রকাশ করে দিবেন।



(47:38)
هٰۤاَنْتُمْ هٰۤؤُلَآءِ تُدْعَوْنَ لِتُنْفِقُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ۚ فَمِنْكُمْ مَّنْ یَّبْخَلُ١ۚ وَ مَنْ یَّبْخَلْ فَاِنَّمَا یَبْخَلُ عَنْ نَّفْسِهٖ١ؕ وَ اللّٰهُ الْغَنِیُّ وَ اَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ١ۚ وَ اِنْ تَتَوَلَّوْا یَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَیْرَكُمْ١ۙ ثُمَّ لَا یَكُوْنُوْۤا اَمْثَالَكُمْ۠

শব্দার্থ:        هَاأَنْتُمْ =   তোমরা দেখ,     هَٰؤُلَاءِ =  ঐসবলোক (যাদের) ,     تُدْعَوْنَ =  আহবানকরাহচ্ছে,     لِتُنْفِقُوا =   তোমরা খরচকরযেন,     فِي =  মধ্যে,     سَبِيلِ =  পথের,     اللَّهِ =   আল্লাহ্‌র ,     فَمِنْكُمْ =   তখন   তোমাদের   মধ্য হতে ,     مَنْ =  কেউকেউ,     يَبْخَلُ =  কৃপণতাকরে,     وَمَنْ =  অথচযে,     يَبْخَلْ =  কৃপণতাকরে,     فَإِنَّمَا =  প্রকৃতপক্ষে,     يَبْخَلُ =  সেকৃপণতাকরে,     عَنْ =  প্রতি,     نَفْسِهِ =  তারনিজের,     وَاللَّهُ =  এবং আলাহ,     الْغَنِيُّ =  অভাবমুক্ত,     وَأَنْتُمُ =  কিন্তু তোমরা ,     الْفُقَرَاءُ =  অভাবগ্রস্ত,     وَإِنْ =  আরযদি,     تَتَوَلَّوْا =   তোমরা মুখফিরাও (তবে) ,     يَسْتَبْدِلْ =   তিনি  পরিবর্তন করেআনবেন,     قَوْمًا =   (অন্যএক) জাতিকে,     غَيْرَكُمْ =    তোমাদের ব্যতীত,     ثُمَّ =  এরপর,     لَا =  না,     يَكُونُوا =  তারা  হবে ,     أَمْثَالَكُمْ =    তোমাদের মতো,

অনুবাদ:    দেখো, তোমাদেরকে আল্লাহর পথে অর্থ-সম্পদ ব্যয় করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে অথচ তোমাদের মধ্যকার কিছু লোক কৃপণতা করেছে। যারা কৃপণতা করে তারা প্রকৃতপক্ষে নিজের সাথেই কৃপণতা করছে। আল্লাহ‌ তো অভাব শূন্য। তোমরাই তার মুখাপেক্ষী। তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আল্লাহ‌ তোমাদের স্থানে অন্য কোন জাতিকে নিয়ে আসবেন। তারা তোমাদের মত হবে না।

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

পারিবারিক সুখ শান্তির জন্য দোয়া।

 আল কুরআন, ২৫  আল-ফুরকান, আয়াত: ৭৪ وَ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْیُنٍ وَّ ا...

জনপ্রিয় লেখা সমূহ