Text Message

০৫ অক্টোবর ২০২৪

যে সব খাবারে রক্ত চাপ বাড়ে

আর টিভি এর সৌজন্যে :

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নির্দিষ্ট কোনো বয়সের মধ্যে আবদ্ধ নেই। উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা দেখা দিতে পারে যেকোনো বয়সী মানুষের মধ্যেই। অতিরিক্ত ওজন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে অনেকেই খুব কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে আক্রান্ত হন।

উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী মনে করা হয় শরীরে সোডিয়ামের স্তরকে। এর কারণ হলো, সোডিয়াম আমাদের রক্তে ফ্লুইডের পরিমাণ ও সমতা বজায় রাখে। উচ্চ রক্তচাপ থেকেই ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ এবং হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে। কিছু খাবার আছে যেগুলোতে লবণের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। সেগুলো উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। চিপস, পিৎজা, স্যান্ডুইচ, ব্রেড ও রোল, ক্রেন্ড স্যুপ, প্রসেসড বা ফ্রোজেন ফুড জাতীয় খাবার।

জেনে নিন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় কোন খাবারগুলো থেকে দূরে থাকবেন-

চিজ খাওয়া বাদ দিন: চিজ বা পনির খেতে সুস্বাদু হলেও এটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এটি এমন এক খাবার যাতে সোডিয়ামের পরিমাণ থাকে অত্যন্ত বেশি। এই খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটও থাকে। যে কারণে চিজ খেলে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল দুটিই বেড়ে যায়।

কফি আর খাবেন না: যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের জন্য কফি খাওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ ক্যাফেইন রক্তনালীকে সরু করে দেয়, ফলে হঠাৎ করে বেড়ে যায় রক্তচাপ।

লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা খাবার: অনেক ধরনের খাবার আছে যেগুলো সংরক্ষণ করার জন্য লবণ ব্যবহার করা হয়। যেসব অতিরিক্ত লবণ দেওয়া খাবার দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষিত আছে সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ লবণ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।

রেড মিটকে বিদায়: উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় রেড মিট অর্থাৎ গরুর মাংস, খাসির মাংস এবং মহিষের মাংস একেবারেই বর্জন করা একান্তভাবে জরুরি।

অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার: কেবল লবণই নয়, রক্তচাপ বৃদ্ধির জন্য দায়ী হতে পারে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার। বিভিন্ন মিষ্টিজাত খাবারে চিনির ব্যবহার বেশি করলে স্থূলতার ভয় থাকে। যা পরবর্তীতে রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পান করলে বাড়ে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি। তাই অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করার অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিন।

মুরগির চামড়া এবং ডিমের কুসুম: মুরগির চামড়া এবং ডিমের কুসুম খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় সেই সাথে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও। তাছাড়া মুরগি ত্বকে উচ্চ মাত্রার চর্বি থাকে যা প্রতিটি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। চর্বির জন্য উচ্চ রক্তচাপের ব্যক্তিদের এটা বর্জন করতে হবে।

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাহান্নাম হয়ে জান্নাতে যাবেন যারা

 


 English

Menu

 জাতীয়

 রাজনীতি

 আইন ও আদালত

 আন্তর্জাতিক

 খেলা

 বিনোদন

 তথ্যপ্রযুক্তি

 শিল্প-সাহিত্য

 লাইফস্টাইল

 চট্টগ্রাম প্রতিদিন

 জেলার খবর

 কর্পোরেট কর্নার

 ফিচার

 অর্থনীতি-ব্যবসা

 স্বাস্থ্য

 শিক্ষা

 ইসলাম

 ভারত

 ক্যারিয়ার

 রাশিফল

 নির্বাচন ও ইসি

 শেয়ারবাজার

 আরও



সর্বশেষ জাতীয় আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিনোদন খেলা স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা চট্টগ্রাম প্রতিদিন

search


জাহান্নাম হয়ে জান্নাতে যাবেন যারা

নিউজ ডেস্ক


আপডেট: ১০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪



জাহান্নাম হয়ে জান্নাতে যাবেন যারা

যারা ঈমানদার তারা জান্নাতে যাবেন। আর যারা কাফির (ঈমান আনেনি) তারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবেন।



এটা আল্লাহ তাআলার মৌলিক নীতি। কিন্তু এমন কিছু ঈমানদার আছেন, যারা মুসলমান হয়েও প্রথমবারে জান্নাতে যাবেন না।


বরং তারা নিজেদের গুনাহর কারণে প্রথমে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবেন। তারপর আল্লাহ তাআলা চাইলে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।



তবে তারা যদি মৃত্যুর আগে আল্লাহর কাছে তওবা করে নিজেদের গুনাহ মাফ করিয়ে নেন, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাদের বিনা শাস্তিতে জান্নাত দিতেও পারেন।

জাহান্নাম হয়ে কারা জান্নাতে যাবেন- হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো-


যে হারাম খাবার খায় জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা লালিতপালিত হয়েছে, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।



’ (বায়হাকি শরিফ, হাদিস নং  ৫৫২০)

আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জুবাইর ইবনে মুতইম (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। ’ (বুখারি, হাদিস নং  ৫৫২৫)


প্রতিবেশীকে কষ্টদাতা আবু হুরাইরা (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘যার অত্যাচার (আচরণ) থেকে প্রতিবেশীরা নিরাপদ নয়, তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। ’ (মুসলিম, হাদিস নং  ৬৬)


অবাধ্য সন্তান ও ‘দাইয়ুস’ রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তিন শ্রেণির লোক জান্নাতে যাবেন না—মাতাপিতার অবাধ্য সন্তান, দাইয়ুস (অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-বোন প্রমুখ অধীন নারীকে বেপর্দা চলাফেরায় বাধা দেন না) এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী। ’ (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস নং  ২২৬)


অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি হারেছা বিন ওহাব (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি লোক জান্নাতে যাবেন না। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নং  ৪১৬৮)


প্রতারণাকারী শাসক মাকাল বিন ইয়াসার (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘মুসলমানদের ওপর প্রতিনিধিত্বকারী শাসক যদি এ অবস্থায় মারা যায় যে, সে তার অধীনদের ধোকা দিয়েছে। তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। ’ (বুখারি, হাদিস নং  ৬৬১৮)


অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কসম করে কোনো মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দেন এবং জান্নাত হারাম করেন। এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! যদি সামান্য কোনো জিনিস হয় তিনি বললেন, পিপুল গাছের একটি ছোট ডাল হলেও। ’ (সহিহ মুসলিম  ১৯৬)


খোঁটাদাতা, অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপী আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘উপকার করে খোঁটা দানকারী, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, সর্বদা মদপানকারী—এই তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। ’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস নং  ৫৫৭৭)


‘চোগলখোর’ (যারা মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশে কুৎসা রটায়) হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। ’ (মুসলিম, হাদিস নং  ১৫১)


অন্যকে নিজের পিতা পরিচয়দাতা সাদ (রা.) ও আবু বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জেনে শুনে নিজেকে অন্য পিতার সঙ্গে সম্পর্কিত করে—অর্থাৎ নিজেকে অন্য পিতার সন্তান বলে পরিচয় দেয়, তার জন্য জান্নাত হারাম। ’ (বুখারি, হাদিস নং  ৬২৬৯)


দাম্ভিক ও অহংকারকারী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছে, তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। ’ (মুসলিম, হাদিস নং  ১৩১)


আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর নাফরমান আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমার সব উম্মত জান্নাতে যাবেন, কিন্তু যিনি (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছেন, তিনি নন। সাহাবিরা বললেন, আল্লাহর রাসুল! কে অস্বীকার করেছেন তিনি বললেন, যিনি আমার আনুগত্য করেন, তিনি জান্নাতে যাবেন। আর যিনি আমার নাফরমানি করেন, তিনি (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছেন। ’ (বুখারি, হাদিস নং  ৬৭৩৭)


দুনিয়াবি উদ্দেশে ইলম শিক্ষাকারী আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা হয়, সেই ইলম যদি কোনো ব্যক্তি দুনিয়াবি স্বার্থ-সম্পদ হাসিলের উদ্দেশে শিক্ষা করেন, তিনি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেন না। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নং  ৩১৭৯)


যে নারী অকারণে তালাক চান সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে নারী তার স্বামীর কাছে অকারণে তালাক কামনা করেন, তিনি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেন না। ’ (তিরমিজি  ১১০৮)


কালো কলপ ব্যবহারকারী আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘শেষ যুগে কিছু লোক কবুতরের সিনার মতো কালো কলপ ব্যবহার করবেন। তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেন না। ’ (নাসায়ি, হাদিস নং  ৪৯৮৮)


লৌকিকতা প্রদর্শনকারী আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম একজন শহীদকে ডাকা হবে। অতঃপর একজন কারিকে। তারপর একজন দানশীল ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। প্রত্যেককে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। অতঃপর শহীদকে বীর-বাহাদুর উপাধি লাভের উদ্দেশে জিহাদ করার অপরাধে, কারি সাহেবকে বড় কারির উপাধি ও সুখ্যাতি লাভের জন্য কেরাত শেখার অপরাধে এবং দানশীলকে বড় দাতা উপাধি লাভের উদ্দেশে দান-সদকা করার অপরাধে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ’ (মুসলিম, হাদিস নং  ৩৫২৭)


ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওয়ারিসকে তার অংশ (প্রাপ্য) থেকে বঞ্চিত করল, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ  ২৬৯৪)


আল্লাহ আমাদের এসব অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বেঁচে পরকালে সর্বাগ্রে জান্নাত লাভের তাওফিক দান করুন।  


বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

এসআইএস



ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন  

এই বিভাগের সর্বশেষ সংবাদ

১৬ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী

১৬ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী


৯ ঘণ্টা আগে পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে বোনাস পাচ্ছে বাংলাদেশ দল

পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে বোনাস পাচ্ছে বাংলাদেশ দল


১৪ ঘণ্টা আগে সম্পদ বাড়াবে ‘মিতব্যয়’

সম্পদ বাড়াবে ‘মিতব্যয়’


১৬ ঘণ্টা আগে

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী কবে, জানা যাবে আজ

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী কবে, জানা যাবে আজ


১৭ ঘণ্টা আগে সুখ-শান্তির আশায় শুধু আল্লাহর শরণাপন্ন হতে হবে

সুখ-শান্তির আশায় শুধু আল্লাহর শরণাপন্ন হতে হবে


১ দিন আগে


মহান আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান

মহান আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান


৩ দিন আগে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে যে নামাজ

সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে যে নামাজ


৪ দিন আগে মুসলমানদের প্রথম রাষ্ট্রদূত ছিলেন যিনি

মুসলমানদের প্রথম রাষ্ট্রদূত ছিলেন যিনি


৫ দিন আগে আমলনামায় নেকের পরিমাণ বৃদ্ধি উপায়

আমলনামায় নেকের পরিমাণ বৃদ্ধি উপায়


৫ দিন আগে

আজকের সর্বশেষ খবর

৯৬ মামলায় জামিন নিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেলেন রিজেন্টের সাহেদ

৯৬ মামলায় জামিন নিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেলেন রিজেন্টের সাহেদ


৩ ঘণ্টা আগে বিশ্বনাথ উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি মতছিন গ্রেপ্তার

বিশ্বনাথ উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি মতছিন গ্রেপ্তার


৪ ঘণ্টা আগে চট্টগ্রামে এখনও জমা দেয়নি ১০৭ বৈধ অস্ত্র

চট্টগ্রামে এখনও জমা দেয়নি ১০৭ বৈধ অস্ত্র


৪ ঘণ্টা আগে পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরলো টাইগাররা

পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরলো টাইগাররা


৫ ঘণ্টা আগে ৪,৭০১টি পরিবারকে ত্রাণ এবং ২,৭৩৫ জনকে চিকিৎসাসেবা দিলো বিজিবি

৪,৭০১টি পরিবারকে ত্রাণ এবং ২,৭৩৫ জনকে চিকিৎসাসেবা দিলো বিজিবি


৫ ঘণ্টা আগে

যুক্তরাষ্ট্রের লাল তালিকায় বাংলাদেশ, ভ্রমণ না করার পরামর্শ

যুক্তরাষ্ট্রের লাল তালিকায় বাংলাদেশ, ভ্রমণ না করার পরামর্শ


৬ ঘণ্টা আগে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী প্রণয় ভার্মা

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী প্রণয় ভার্মা


৬ ঘণ্টা আগে ছাত্রদের রক্তে অর্জিত সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে: নৌ উপদেষ্টা

ছাত্রদের রক্তে অর্জিত সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে: নৌ উপদেষ্টা


৬ ঘণ্টা আগে জাহাজে রপ্তানির কনটেইনার পৌঁছানোর সময় বাড়ালো বন্দর

জাহাজে রপ্তানির কনটেইনার পৌঁছানোর সময় বাড়ালো বন্দর


৬ ঘণ্টা আগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের সিপিইউ ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার অনুমতি

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের সিপিইউ ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার অনুমতি


৭ ঘণ্টা আগে সাভার-আশুলিয়ায় বন্ধ থাকা পোশাক কারখানা কবে খুলছে, জানা গেল

সাভার-আশুলিয়ায় বন্ধ থাকা পোশাক কারখানা কবে খুলছে, জানা গেল


৭ ঘণ্টা আগে ববিতে পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম একদিনের জন্য স্থগিত

ববিতে পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম একদিনের জন্য স্থগিত


৭ ঘণ্টা আগে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আরও ৩৮৫ রোগী হাসপাতালে ভর্তি

ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আরও ৩৮৫ রোগী হাসপাতালে ভর্তি


৭ ঘণ্টা আগে ‘জামায়াত প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না’

‘জামায়াত প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না’


৭ ঘণ্টা আগে যশোরের সাবেক এমপি আফিলসহ ১১ জনের নামে মামলা

যশোরের সাবেক এমপি আফিলসহ ১১ জনের নামে মামলা


৭ ঘণ্টা আগে তিন বিভাগে হতে পারে ভারী বৃষ্টি

তিন বিভাগে হতে পারে ভারী বৃষ্টি


৭ ঘণ্টা আগে বাগেরহাটে আ. লীগ নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি জব্দ

বাগেরহাটে আ. লীগ নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি জব্দ


৭ ঘণ্টা আগে চবিতে কাওয়ালি সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের ঢল

চবিতে কাওয়ালি সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের ঢল


৭ ঘণ্টা আগে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার-মানোন্নয়নে ১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি

স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার-মানোন্নয়নে ১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি


৮ ঘণ্টা আগে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে হামলা-অপপ্রচারের প্রতিবাদে নির্বাহী পরিষদের নিন্দা

ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে হামলা-অপপ্রচারের প্রতিবাদে নির্বাহী পরিষদের নিন্দা


৮ ঘণ্টা আগে

Find us at Apple AppStore

Find us at Googel Play

সম্পাদক : জুয়েল মাজহার

editor@banglanews24.com

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২

আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১

নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯

ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬

ইমেইল: news@banglanews24.com

Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 | marketing@banglanews24.com


কপিরাইট © 2006-2024 banglanews24.com | একটি ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পিএলসির (ইডব্লিউএমজিপিএলসি) প্রতিষ্ঠান


১৪ আগস্ট ২০২৪

D. Muhammad Yunus



উইকিপিডিয়া



মুহাম্মদ ইউনূস [ a ] (জন্ম 28 জুন 1940) হলেন একজন বাংলাদেশী উদ্যোক্তা, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সুশীল সমাজের নেতা যিনি 8 আগস্ট 2024 সাল থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। [ 1 ] ইউনূস ছিলেন গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা এবং ক্ষুদ্রঋণ ও ক্ষুদ্রঋণের ধারণার অগ্রগামীর জন্য 2006 সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন । [ ২ ] ইউনূস 2009 সালে ইউনাইটেড স্টেটস প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম এবং 2010 সালে কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল সহ আরও বেশ কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মান পেয়েছেন। [ 3 ]


মাননীয়

মুহাম্মদ ইউনূস

মুহাম্মদ ইউনুস

নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। সাদা স্যুট পরা চশমা পরা একজন মধ্যবয়সী মানুষ।

ইউনূস 2019 সালে

বাংলাদেশের ৫ম প্রধান উপদেষ্টা ড

দায়িত্বশীল


8 আগস্ট 2024 তারিখে কার্যভার গ্রহণ করা হয়

রাষ্ট্রপতি

মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন

এর আগে

শেখ হাসিনা ( প্রধানমন্ত্রী হিসেবে )

ব্যক্তিগত বিবরণ

জন্ম

28 জুন 1940 (বয়স 84)

হাটহাজারী , বাংলা , ব্রিটিশ ভারত

নাগরিকত্ব

ব্রিটিশ রাজ (1940-1947)

পাকিস্তান (1947-1971)

বাংলাদেশ (1971 সাল থেকে)

রাজনৈতিক দল

স্বাধীন (2007-বর্তমান)

অন্যান্য রাজনৈতিক

সংশ্লিষ্টতা

নাগরিক শক্তি (2007)

পত্নী

ভেরা ফরোস্টেনকো

আমি

আমি( মি.  1970; বিভাগ  1979 )

আফরোজী ইউনুস আমি( মি.  1983 )

শিশুরা

মনিকাদীনা

আত্মীয়স্বজন

মুহাম্মদ ইব্রাহিম (ভাই)

বাসস্থান(গুলি)

যমুনা স্টেট হাউস , ঢাকা , বাংলাদেশ

শিক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ( বিএ , এমএ ),

ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় ( পিএইচডি )

পেশা

অর্থনীতিবিদউদ্যোক্তা

পুরস্কার

অলিম্পিক লরেল (2020)

কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল (2010)

 স্বাধীনতার রাষ্ট্রপতি পদক (2009)

নোবেল শান্তি পুরস্কার (2006)

 স্বাধীনতা পুরস্কার (1987)

স্বাক্ষর


ওয়েবসাইট

muhammadyunus.org​

একাডেমিক কাজ

শৃঙ্খলা

অর্থনীতি

স্কুল বা ঐতিহ্য

ক্ষুদ্রঋণ

সামাজিক ব্যবসা

প্রতিষ্ঠান

চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল

চট্টগ্রাম কলেজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি

গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়

উল্লেখযোগ্য কাজ

গ্রামীণ ব্যাংক

ক্ষুদ্রঋণ

সামাজিক ব্যবসা

2012 সালে, ইউনূস স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হন , এই পদটি তিনি 2018 সাল পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন। [ 4 ] [ 5 ] পূর্বে, তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। [ 6 ] তিনি তার আর্থিক কাজের সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ করেছেন। তিনি গ্রামীণ আমেরিকা এবং গ্রামীণ ফাউন্ডেশনের একজন প্রতিষ্ঠাতা বোর্ড সদস্য , যা ক্ষুদ্রঋণ সমর্থন করে। [ ৭ ] ইউনূস ১৯৯৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইউনাইটেড নেশনস ফাউন্ডেশন , একটি পাবলিক দাতব্য সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদেও দায়িত্ব পালন করেন । [ 9 ]


6 আগস্ট 2024-এ সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ছাত্রদের দাবি মেনে ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে মনোনীত করেন । [ ১০ ] শ্রমবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের পরের দিন আপীলে তার খালাস, যাকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখা হয়েছিল , তার দেশে ফিরে আসা এবং নিয়োগের সুবিধা হয়েছিল। [ 11 

০৯ আগস্ট ২০২৪

‘র’ যেভাবে শেখ হাসিনার ‘ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে’ এগিয়ে এলো!


ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ বিদেশী মিশনগুলোর মধ্যে এখন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাংলাদেশ মিশন। ভারতের ভূ-রাজনৈতিক নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের উপর নিয়ন্ত্রন রাখা খুবই জরুরি। তাই বাংলাদেশের উপর নিয়ন্ত্রন হারানো ভারতের জন্য উদ্বেগ ও শংকার বিষয়। গত প্রায় দেড় দশকে ‘র’ এর বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিডিআর বিদ্রোহ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে যেভাবেই হোক আওয়ামী লীগ নিয়ে জিতিয়ে নিয়ে আসা। এই চ্যালেঞ্জ ‘র’ ভালোভাবেই উতরে গেছে। ২০২৪ সালেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে তারা সফল হয়েছে। 


দিল্লীর কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ২০২৩ সালের মে মাসে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর শেখ হাসিনার মালদ্বীপ সফরে ‘র’ এর তৎকালীন চিফ ও বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা দু’জন সাবেক হাই কমিশনারের সঙ্গে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দীর্ঘ বৈঠক করেন। মূলত ওই বৈঠকেই যুক্তরাষ্ট্রকে বশে করার পরিকল্পনা ঠিক করা হয়। এই পরিকল্পনাতেও ‘র’ সফল হয়েছে। তাই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা ও ‘র’ উভয়েই নির্ভার ছিল।  


সম্প্রতি শেখ হাসিনা দিল্লী সফরে গিয়ে ‘র’ এর সাহায্যের  প্রতিদান স্বরুপ ভারতের সঙ্গে তিনটি চুক্তি করেছেন। বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বলছে এসব চুক্তিতে ভারতকে সুবিধা দেয়া হয়েছে একতরফা ভাবে। মংলা বন্দরের নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা ভারতকে দেয়া হয়েছে। বাকী দুটো হচ্ছে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে আসাম ও ত্রিপুরায় রেল চলাচলের করিডোর  ও তিস্তা নদী প্রকল্প। মংলা ও রেল করিডোর চুক্তি শেষ পর্যন্ত হলেও তিস্তা প্রকল্প থেমে যায় বাংলাদেশের কিছু আামলার উদ্দেশ্য প্রনোদিত কালক্ষেপনের কারণে। চুক্তির খসড়া প্রস্তুত হয়নি বলে কৌশলে চুক্তির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।


বাংলাদেশের আমলাদের একটি সূত্র বলছে, রেল করিডোর চুক্তি সংক্রান্ত ফাইলটি দিল্লির বাংলাদেশী হাইকমিশন বা রেল মন্ত্রনালয়ে নেই। এই ফাইলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আছে। কারণ চুক্তির একটি ধারায় বলা হয়েছে, ‘চলন্ত রেলে ভারত কি পরিবহন করবে তা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দেখতে ও জানতে পারবে না। তবে ভারতীয় রেল বাংলাদেশ ভূখন্ডে কোন নিরাপত্তাজনিত সংকটে পড়লে বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করবে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।’ মানে বাংলাদেশে ভারতের সৈন্য প্রবেশ করতে পারবে তাদের রেলকে নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলে। অনেকেই মনে করছেন এই চুক্তি করে ভারত মূলত বাংলাদেশে সৈন্য পাঠানোর এক ধরনের বন্দোবস্তু করে রাখলো। 


এই তিনটি চুক্তির বিষয় ফাঁস হওয়ার পর চীন শেখ হাসিনার উপর নাখোশ হয়। চীনের ধারণা বাংলাদেশের রেল কড়িডোর দিয়েই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চীনকে ঠেকাতে সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করা হবে। এ কারণেই শেখ হাসিনা চীন সফর গিয়ে প্রত্যাশিত সফলতা পাননি। চীনের পক্ষ থেকে এরকম শীতল আচরণই করা হয়েছে।  


শেখ হাসিনার চীন সফর নিয়ে যখন দিল্লিতে ‘র’ কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে তখনই ঢাকায় ছাত্ররা কোটা আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নেমে আসে। এই আন্দোলনের গতিবিধির উপর নজর রাখার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এক নবীন বাঙালি ‘র’ কর্মকর্তাকে।


ওই বাঙালি কর্মকর্তার ১৭ জুলাই পাঠানো তথ্য পেয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন ‘র’ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দিল্লীতে ‘র’এর কাছে তথ্য আসে ঢাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গুলির নির্দেশ দিয়েছে পুলিশের হাইকমান্ড। শুরুতে এটা পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদের অনুসারীদের কাজ হিসাবে ভাবলেও পরে তারা জানতে পারে সরকারের উচ্চমহল বেশ ঘৃণাসূচক শব্দ উচ্চারণ করেই গুলির নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ গুলি করে দমানোর চেষ্টা করলেও ২৪ ঘন্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ১৮ জুলাই উভয় দেশের সরকার বিচলিত হয়ে পড়ে। দিল্লিতে শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বেশ কয়েকজন ভারতীয় কূটনীতিকের সাথে আলোচনা করে জানায় পরিস্থিতি ‘বিডিআর বিদ্রোহের চেয়ে ভয়াবহ’। তিনি বলেন Our student has rebelled। 


এরপর শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘র’ প্রধানের সরাসরি ফোনালাপ হয়। ওই আলাপে কারফিউ জারির বিষয়টি উঠে আসে এবং শুক্রবার জুমার নামাজের পর আন্দোলনে জামাত শিবির প্রবেশ বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে বার্তা দেওয়া হয়। 


টেলফোন আলোচনায় ‘র’ এর পক্ষ থেকে কারফিউ জারির পরামর্শ দেওয়াও পাশাপাশি দ্রুত একটি দল পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা কারফিউ জারি করতে রাজি হলেও ডিজিএফআইয়ের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু ডিজিএফআইয়ের আগেই ‘র’ হাসিনাকে সেনাবাহিনীর বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। উল্লেখ্য ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের পর ডিজিএফআইয়েরই একটি অংশ ‘র’ এর বাংলাদেশ সেলে পরিনত হয়েছে। এরাই মূলত ভারতকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব তথ্য সরবরাহ করে থাকে। এই সেল ভারতের কাছ থেকে সামরিক অস্ত্র কেনাসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রভাবিত করে।  


‘র’ ও শেখ হাসিনার ধারণা ছিল কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দিলে পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু শনিবার ঢাকায় কারফিউ ভেঙে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে এবং অর্ধশত নিহত হয় বলে তথ্য যায় দিল্লিতে। একই সঙ্গে ‘র’ জানতে পারে আওয়ামী লীগের একাংশের নীরব সমর্থন রয়েছে আন্দোলনের প্রতি। 


এ অবস্থায় শনিবার দিল্লি ও কলকাতায় একাধিক বৈঠক করে ভারতীয় নীতি নির্ধাকরা। পরামর্শ নেওয়া হয় বাংলাদেশের উপর নজর রাখা সাংবাদিক ও মালদ্বীপে বৈঠকে থাকা ওই দুই ভারতীয় সাবেক কূটনৈতিকেরও। বৈঠকে অনেকেই শেখ হাসিনার দিন শেষ মন্তব্যও করেন। কিন্তু তার মধ্যেই ‘র’ প্রধান বৈঠকে বার্তা একটি বার্তা পাঠায় ‘ প্রয়োজনে পূর্বে আরেকটা কাশ্মীর বানাও তবুও শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখো।’


নির্দেশ পেয়েই ‘র’ এর দলটি শনিবার ঢাকায় তেঁজগাও বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ঢাকায় নেমেই ‘র’এর দলটি বৈঠক করে ডিজিএফআই, ডিবি পুলিশ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে। বিশেষ নজর রাখা হয় মার্কিন দূতাবাস ও চীনা দূতাবাসের উপর।


শনিবারই সিদ্ধান্ত হয় ২০১৯ সালে কাশ্মীরে দমনের পদ্ধতি অনুসরণ করে ঢাকা মিশন ২০২৪ সফল করা হবে। সব ধরনের ফোন কল ফোন কলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসারদের উপর বিশেষ নজর রাখা হয়। লাশ গুম করার টিমও তৈরী করা হয়। কাশ্মীরের মতই বাড়ি বাড়ি তল্লাশী শুরু করে যৌথ বাহিনী।


‘র’ কর্মকর্তারা সরাসরি ঢাকার মাঠে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় ঢাকায় ভারত বিরোধী নানা গুঞ্জন তৈরী হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলতে শোনা যায় কিছু লোককে। হাইকোর্টের রায় ও সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পাশাপাশি পরিস্থিতি শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে ২৪ জুলাই ‘র’ এর দলটিকে আর মাঠে না নামার  নির্দেশ দেয়া হয় দিল্লি থেকে। ২৫ জুলাই থেকে মাঠ থেকে সরে আসে ‘র’ দলটি। এরপর সহায়ক একটি টিম দিল্লি থেকে পরামর্শ দিচ্ছে। 


এর পাশাপাশি দিল্লী ও কলকাতাতেও যেন বাংলাদেশ বিরোধী কোনো বিক্ষোভ না হয় সে বিষয়ে বিশেষ সতর্ককতা অবলম্বন করা হয়। বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি তদারক করছে চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া এক কর্মকতা। এরপর কলকাতায় বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলো বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশন ঘেরাও করলে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন চাপে পড়ে যায়।


২১ জুলাই রবিবার জওহারলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের এক অধ্যাপককে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনে মধ্যাহ্ন ভোজনের নিমন্ত্রন করা হয়। ওই মধ্যাহ্ন ভোজনে জওহারলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি সংগঠনগুলো যেন দিল্লিতে কোন বিক্ষোভ না করে বা হাইকমিশন ঘেরাও করতে না আসে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় এই অধ্যাপককে।


লেখা:~ উত্তম গুহ দিল্লী থেকে

০৬ আগস্ট ২০২৪

ওজন কমাতে

 ২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট

M@mun M@mun

4 months ago

ওজন কমানোর জন্য একটি ডায়েট চার্ট খুবই গুরুত্বপূর্ন। ১০ থেকে ২০ কেজি ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন নিয়ম পালনের সাথে এই ডায়েট চার্টটি ফলো করুন। ব্যয়াম না করে মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য ডায়েট চার্ট দেখুন।


এই ডায়েট চার্টটিতে প্রতিদিন প্রায় ১৫০০-১৮০০ ক্যালোরি থাকবে।


সকালের নাস্তা (৭:০০ টা):


ওটমিল: ১ কাপ ওটমিল (পানি বা দুধ দিয়ে রান্না করা)

फल: ১/২ কাপ যেকোনো ধরণের ফল (যেমন: কলা, আপেল, পেঁপে)

বাদাম: ৫-১০ টি বাদাম (যেমন: কাজু, বাদাম, পেস্তা)

চা: ১ কাপ চা (চিনি ছাড়া)

মধ্যবর্তী নাস্তা (১০:০০ টা):


দই: ১ কাপ দই

ফল: ১/২ কাপ যেকোনো ধরণের ফল (যেমন: আপেল, বেরি)

দুপুরের খাবার (১:০০ টা):


ভাত: ১ কাপ লাল ভাত/বাদামী ভাত

মাছ/মাংস: ১৫০ গ্রাম মাছ/মাংস (যেমন: মুরগির বুকের মাংস, ইলিশ, রুই)

সবজি: ১ প্লেট সবজি (যেমন: লাউ, শাক, ব্রকলি)

ডাল: ১ কাপ ডাল

সালাদ: ১ কাপ সালাদ (যেমন: পাতা কপি, টমেটো, শসা)

বিকেলের নাস্তা (৪:০০ টা):


মুড়ি: ১ মুঠো মুড়ি

চানা: ৫০ গ্রাম চানা

ফল: ১/২ কাপ যেকোনো ধরণের ফল (যেমন: আপেল, বেরি)

রাতের খাবার (৮:০০ টা):


রুটি: ২ টি আটার রুটি

সবজি: ১ প্লেট সবজি (যেমন: ঢেঁড়স, পালং শাক, মটরশুঁটি)

ডাল: ১ কাপ ডাল

মাছ/ডিম: ১৫০ গ্রাম মাছ/ডিম (যেমন: ইলিশ, রুই, সাদা ডিম)

সালাদ: ১ কাপ সালাদ (যেমন: পাতা কপি, টমেটো, শসা)

রাতের ঘুমের আগে (১০:০০ টা):


দুধ: ১ গ্লাস গরম দুধ (চিনি ছাড়া)

পানি: প্রতিদিন 2-3 লিটার পানি পান করুন।


এই ডায়েট চার্ট ছাড়াও, ওজন কমানোর জন্য আরও কিছু টিপস:


নিয়মিত ব্যায়াম করুন: সপ্তাহে অন্তত 150 মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত ঘুমোন: প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

মানসিক চাপ কমিয়ে রাখুন: যোগ, ধ্যান, বা গভীর শ্বাস নিন।

সচরাচর প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন কত ক্যালরি খাওয়া উচিত?


উত্তর: নির্ভর করে ব্যক্তির উপর, ডাক্তার/পুষ্টিবিদ নির্ধারণ করবেন।


প্রশ্ন: ওজন কমানোর জন্য রাতে কি কি খাওয়া উচিত?


উত্তর: হালকা খাবার, যেমন সবজি, ডাল, মাছ, ইত্যাদি।


প্রশ্ন: এক মাসে ৪ কেজি ওজন কমানোর উপায়?


উত্তর: সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, ডাক্তারের পরামর্শ।


প্রশ্ন: ৪ দিনে ৪ কেজি ওজন কমানোর উপায়?


উত্তর: অসম্ভব ও ঝুঁকিপূর্ণ, দ্রুত ওজন কমানো এড়িয়ে চলুন।


প্রশ্ন: হাটলে এক মাসে ৩ কেজি ওজন কমানোর উপায়?


উত্তর: নিয়মিত হাঁটা (প্রতিদিন ৪৫-৬০ মিনিট), সুষম খাদ্য।


প্রশ্ন: এক ঘন্টায় কত কদম হাঁটতে হয়?


উত্তর: ব্যক্তির উপর নির্ভর করে, গড়ে ৮০০০-১০,০০০ পদক্ষেপ।


প্রশ্ন: ২ মাসে কি ১০ কেজি ওজন কমানো যায়?


উত্তর: সম্ভব, তবে সুস্থ ও টেকসই উপায়ে।


প্রশ্ন: প্রতিদিন ৬ কিলোমিটার হাটলে কি ওজন কমবে?


উত্তর: হ্যাঁ, নিয়মিত হাঁটা ওজন কমাতে সাহায্য করে।


Categories: স্বাস্থ্যকথা

Tags: ৭ থেকে ১০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট, diet chart, weight loss chart, ওজন কমানোর উপায়, ওজন কমানোর টিপস, ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট, ডায়েট চার্ট

২২ মে ২০২৪

[৬০:১] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌

[৬০:১] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنوا لا تَتَّخِذوا عَدُوّي وَعَدُوَّكُم أَولِياءَ تُلقونَ إِلَيهِم بِالمَوَدَّةِ وَقَد كَفَروا بِما جاءَكُم مِنَ الحَقِّ يُخرِجونَ الرَّسولَ وَإِيّاكُم أَن تُؤمِنوا بِاللَّهِ رَبِّكُم إِن كُنتُم خَرَجتُم جِهادًا في سَبيلي وَابتِغاءَ مَرضاتي تُسِرّونَ إِلَيهِم بِالمَوَدَّةِ وَأَنا أَعلَمُ بِما أَخفَيتُم وَما أَعلَنتُم وَمَن يَفعَلهُ مِنكُم فَقَد ضَلَّ سَواءَ السَّبيلِ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

হে ঈমানদারগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করো না, অথচ তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে তা তারা অস্বীকার করেছে এবং রাসূলকে ও তোমাদেরকে বের করে দিয়েছে এজন্য যে, তোমরা তোমাদের রব আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছ। তোমরা যদি আমার পথে সংগ্রামে ও আমার সন্তুষ্টির সন্ধানে বের হও (তবে কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না) তোমরা গোপনে তাদের সাথে বন্ধুত্ব প্রকাশ কর অথচ তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর তা আমি জানি। তোমাদের মধ্যে যে এমন করবে সে সরল পথ হতে বিচ্যুত হবে।

[৬০:২] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



إِن يَثقَفوكُم يَكونوا لَكُم أَعداءً وَيَبسُطوا إِلَيكُم أَيدِيَهُم وَأَلسِنَتَهُم بِالسّوءِ وَوَدّوا لَو تَكفُرونَ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

তারা যদি তোমাদেরকে বাগে পায় তবে তোমাদের শত্রু হবে এবং মন্দ নিয়ে তোমাদের দিকে তাদের হাত ও যবান বাড়াবে; তারা কামনা করে যদি তোমরা কুফরি করতে!

[৬০:৩] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



لَن تَنفَعَكُم أَرحامُكُم وَلا أَولادُكُم يَومَ القِيامَةِ يَفصِلُ بَينَكُم وَاللَّهُ بِما تَعمَلونَ بَصيرٌ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

কিয়ামত দিবসে তোমাদের আত্নীয়তা ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের কোন উপকার করতে পারবে না। তিনি তোমাদের মাঝে ফায়সালা করে দেবেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।

[৬০:৪] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



قَد كانَت لَكُم أُسوَةٌ حَسَنَةٌ في إِبراهيمَ وَالَّذينَ مَعَهُ إِذ قالوا لِقَومِهِم إِنّا بُرَآءُ مِنكُم وَمِمّا تَعبُدونَ مِن دونِ اللَّهِ كَفَرنا بِكُم وَبَدا بَينَنا وَبَينَكُمُ العَداوَةُ وَالبَغضاءُ أَبَدًا حَتّى تُؤمِنوا بِاللَّهِ وَحدَهُ إِلّا قَولَ إِبراهيمَ لِأَبيهِ لَأَستَغفِرَنَّ لَكَ وَما أَملِكُ لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن شَيءٍ رَبَّنا عَلَيكَ تَوَكَّلنا وَإِلَيكَ أَنَبنا وَإِلَيكَ المَصيرُ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

ইবরাহীম ও তার সাথে যারা ছিল তাদের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। তারা যখন স্বীয় সম্প্রদায়কে বলছিল, ‘তোমাদের সাথে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যা কিছুর উপাসনা কর তা হতে আমরা সম্পর্কমুক্ত। আমরা তোমাদেরকে অস্বীকার করি; এবং উদ্রেক হল আমাদের- তোমাদের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য; যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আন। তবে স্বীয় পিতার প্রতি ইবরাহীমের উক্তিটি ব্যতিক্রম: ‘আমি অবশ্যই তোমার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব আর তোমার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আমি কোন অধিকার রাখি না।’ হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে।

[৬০:৫] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



رَبَّنا لا تَجعَلنا فِتنَةً لِلَّذينَ كَفَروا وَاغفِر لَنا رَبَّنا إِنَّكَ أَنتَ العَزيزُ الحَكيمُ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে কাফিরদের উৎপীড়নের পাত্র বানাবেন না। হে আমাদের রব, আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

[৬০:৬] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



لَقَد كانَ لَكُم فيهِم أُسوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَن كانَ يَرجُو اللَّهَ وَاليَومَ الآخِرَ وَمَن يَتَوَلَّ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ الغَنِيُّ الحَميدُ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

নিশ্চয় তোমাদের জন্য তাদের মধ্যে* উত্তম আদর্শ রয়েছে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রত্যাশা করে, আর যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, (সে জেনে রাখুক) নিশ্চয় আল্লাহ তো অভাবমুক্ত, সপ্রশংসিত। \n\n*ইবরাহীম আ. ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে

[৬০:৭] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



عَسَى اللَّهُ أَن يَجعَلَ بَينَكُم وَبَينَ الَّذينَ عادَيتُم مِنهُم مَوَدَّةً وَاللَّهُ قَديرٌ وَاللَّهُ غَفورٌ رَحيمٌ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

যাদের সাথে তোমরা শত্রুতা করছ, আশা করা যায় আল্লাহ তোমাদের ও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। আর আল্লাহ সর্ব শক্তিমান এবং আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

[৬০:৮] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



لا يَنهاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذينَ لَم يُقاتِلوكُم فِي الدّينِ وَلَم يُخرِجوكُم مِن دِيارِكُم أَن تَبَرّوهُم وَتُقسِطوا إِلَيهِم إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ المُقسِطينَ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।

[৬০:৯] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



إِنَّما يَنهاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذينَ قاتَلوكُم فِي الدّينِ وَأَخرَجوكُم مِن دِيارِكُم وَظاهَروا عَلى إِخراجِكُم أَن تَوَلَّوهُم وَمَن يَتَوَلَّهُم فَأُولئِكَ هُمُ الظّالِمونَ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

আল্লাহ কেবল তাদের সাথেই বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে ও তোমাদেরকে বের করে দেয়ার ব্যাপারে সহায়তা করেছে। আর যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে, তারাই তো যালিম।

[৬০:১০] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنوا إِذا جاءَكُمُ المُؤمِناتُ مُهاجِراتٍ فَامتَحِنوهُنَّ اللَّهُ أَعلَمُ بِإيمانِهِنَّ فَإِن عَلِمتُموهُنَّ مُؤمِناتٍ فَلا تَرجِعوهُنَّ إِلَى الكُفّارِ لا هُنَّ حِلٌّ لَهُم وَلا هُم يَحِلّونَ لَهُنَّ وَآتوهُم ما أَنفَقوا وَلا جُناحَ عَلَيكُم أَن تَنكِحوهُنَّ إِذا آتَيتُموهُنَّ أُجورَهُنَّ وَلا تُمسِكوا بِعِصَمِ الكَوافِرِ وَاسأَلوا ما أَنفَقتُم وَليَسأَلوا ما أَنفَقوا ذلِكُم حُكمُ اللَّهِ يَحكُمُ بَينَكُم وَاللَّهُ عَليمٌ حَكيمٌ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কাছে মু’মিন মহিলারা হিজরত করে আসলে তোমরা তাদেরকে পরীক্ষা করে দেখ। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে অধিক অবগত। অতঃপর যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা মুমিন মহিলা, তাহলে তাদেরকে আর কাফিরদের নিকট ফেরত পাঠিও না। তারা কাফিরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফিররাও তাদের জন্য হালাল নয়। তারা* যা ব্যয় করেছে, তা তাদেরকে ফিরিয়ে দাও। তোমরা তাদেরকে বিয়ে করলে তোমাদের কোন অপরাধ হবে না, যদি তোমরা তাদেরকে তাদের মোহর প্রদান কর। আর তোমরা কাফির নারীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রেখ না, তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা তোমরা ফেরত চাও, আর তারা যা ব্যয় করেছে, তা যেন তারা চেয়ে নেয়। এটা আল্লাহর বিধান। তিনি তোমাদের মাঝে ফয়সালা করেন। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। \n\n*কাফির স্বামীরা

[৬০:১১] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



وَإِن فاتَكُم شَيءٌ مِن أَزواجِكُم إِلَى الكُفّارِ فَعاقَبتُم فَآتُوا الَّذينَ ذَهَبَت أَزواجُهُم مِثلَ ما أَنفَقوا وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذي أَنتُم بِهِ مُؤمِنونَ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

আর তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে কাফিরদের নিকট চলে যায়, অতঃপর যদি তোমরা যুদ্ধজয়ী হয়ে গনীমত লাভ কর, তাহলে যাদের স্ত্রীরা চলে গেছে, তাদেরকে তারা যা ব্যয় করেছে, তার সমপরিমাণ প্রদান কর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী।

[৬০:১২] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



يا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذا جاءَكَ المُؤمِناتُ يُبايِعنَكَ عَلى أَن لا يُشرِكنَ بِاللَّهِ شَيئًا وَلا يَسرِقنَ وَلا يَزنينَ وَلا يَقتُلنَ أَولادَهُنَّ وَلا يَأتينَ بِبُهتانٍ يَفتَرينَهُ بَينَ أَيديهِنَّ وَأَرجُلِهِنَّ وَلا يَعصينَكَ في مَعروفٍ فَبايِعهُنَّ وَاستَغفِر لَهُنَّ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفورٌ رَحيمٌ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

হে নবী, যখন মুমিন নারীরা তোমার কাছে এসে এই মর্মে বাইআত করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, তারা জেনে শুনে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না এবং সৎকাজে তারা তোমার অবাধ্য হবে না। তখন তুমি তাদের বাইআত গ্রহণ কর এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

[৬০:১৩] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌



يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنوا لا تَتَوَلَّوا قَومًا غَضِبَ اللَّهُ عَلَيهِم قَد يَئِسوا مِنَ الآخِرَةِ كَما يَئِسَ الكُفّارُ مِن أَصحابِ القُبورِ


বায়ান ফাউন্ডেশন:

হে ঈমানদারগণ, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করো না, যাদের প্রতি আল্লাহ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা তো আখিরাত সম্পর্কে নিরাশ হয়ে পড়েছে, যেমনিভাবে কাফিররা কবরবাসীদের সম্পর্কে নিরাশ হয়েছে।

আল্লাহর নুরের বর্ণনা

আল কুরআন, সুরা: ২৪-আন্-নূর

আয়াত নং :-35

টিকা নং:61, 62, 63, 64, 65, 66, 67, 


اَللّٰهُ نُوْرُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ مَثَلُ نُوْرِهٖ كَمِشْكٰوةٍ فِیْهَا مِصْبَاحٌ١ؕ اَلْمِصْبَاحُ فِیْ زُجَاجَةٍ١ؕ اَلزُّجَاجَةُ كَاَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّیٌّ یُّوْقَدُ مِنْ شَجَرَةٍ مُّبٰرَكَةٍ زَیْتُوْنَةٍ لَّا شَرْقِیَّةٍ وَّ لَا غَرْبِیَّةٍ١ۙ یَّكَادُ زَیْتُهَا یُضِیْٓءُ وَ لَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌ١ؕ نُوْرٌ عَلٰى نُوْرٍ١ؕ یَهْدِی اللّٰهُ لِنُوْرِهٖ مَنْ یَّشَآءُ١ؕ وَ یَضْرِبُ اللّٰهُ الْاَمْثَالَ لِلنَّاسِ١ؕ وَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌۙ

আল্লাহ৬১ আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর আলো।৬২ (বিশ্ব-জাহানে) তাঁর আলোর উপমা যেন একটি তাকে একটি প্রদীপ রাখা আছে, প্রদীপটি আছে একটি চিমনির মধ্যে, চিমনিটি দেখতে এমন যেন মুক্তোর মতো ঝকঝকে নক্ষত্র, আর এ প্রদীপটি যয়তুনের এমন একটি মুবারক৬৩ গাছের তেল দিয়ে উজ্জল করা হয়, যা পূর্বেরও নয়, পশ্চিমেরও নয়।৬৪ যার তেল আপনাআপনিই জ্বলে ওঠে, চাই আগুন তাকে স্পর্শ করুক বা নাকরুক। (এভাবে) আলোর ওপরে আলো (বৃদ্ধির সমস্ত উপকরণ একত্র হয়ে গেছে)৬৫ আল্লাহ যাকে চান নিজের আলোর দিকে পথনির্দেশ করেন।৬৬ তিনি উপমার সাহায্যে লোকদের কথা বুঝান। তিনি প্রত্যেকটি জিনিস খুব ভালো করেই জানেন।৬৭

তাফসীর : 

টিকা:৬১) এখান থেকে শুরু হয়েছে মুনাফিকদের প্রসঙ্গ। ইসলামী সমাজের মধ্যে অবস্থান করে তারা একের পর এক গোলযোগ ও বিভ্রাট সৃষ্টি করে চলছিল এবং ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী রাষ্ট্র ও দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ব্যাপারে ঠিক তেমনিভাবে তৎপর ছিল যেমন বাইরের প্রকাশ্য কাফের ও দুশমনরা তৎপর ছিল। তারা ছিল ঈমানের দাবীদার। মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত ছিল তারা। মুসলমানদের বিশেষ করে আনসারদের সাথে ছিল তাদের আত্মীয়তা ও ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক। এ জন্য তারা মুসলমানদেরমধ্যে ফিতনা বিস্তারের সুযোগও বেশী পেতো এবং কোন কোন আন্তরিকতা সম্পন্ন মুসলমানও নিজের সরলতা বা দুর্বলতার কারণে তাদের ক্রীড়নক ও পৃষ্ঠপোষকেও পরিণত হয়ে যেতো। কিন্তু আসলে বৈষয়িক স্বার্থ তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছিল এবং ঈমানের দাবী সত্ত্বেও কুরআন ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের বদৌলতে দুনিয়ায় যে আলো ছড়িয়ে পড়ছিল তা থেকে তারা ছিল একেবারেই বঞ্চিত। এ সুযোগে তাদেরকে সম্বোধন না করে তদের সম্পর্কে যা কিছু বলা হচ্ছে তার পিছনে রয়েছে তিনটি উদ্দেশ্য। প্রথমত তাদেরকে উপদেশ দেয়া। কারণ আল্লাহর রহমত ও রবুবিয়াতের প্রথম দাবী হচ্ছে, পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত মানুষকে তার সকল নষ্টামি ও দুষ্কৃতি সত্ত্বেও শেষ সময় পর্যন্ত বুঝাবার চেষ্টা করতে হবে। দ্বিতীয়ত ঈমান ও মুনাফিকির পার্থক্যকে পরিষ্কার ও খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করে দেয়া। এভাবে কোন বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী ব্যক্তির জন্য মুসলিম সমাজে মু’মিন ও মুনাফিকের মধ্যে ফারাক করা কঠিন হবে না। আর এ ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত বর্ণনার পরও যে ব্যক্তি মুনাফিকদের ফাঁদে জড়িয়ে পড়বে অথবা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করবে সে তার নিজের এ কাজের জন্য পুরোপুরি দায়ী হবে। তৃতীয়ত মুনাফিকদেরকে পরিষ্কার ভাষায় সতর্ক করে দেয়া। তাদেরকে এ মর্মে জানিয়ে দেয়া যে, মু’মিনদের জন্য আল্লাহর যে ওয়াদা রয়েছে তা কেবলমাত্র তাদের জন্য যারা সাচ্চা দিলে ঈমান আনে এবং তারপর এ ঈমানের দাবী পূরণ করে। এ প্রতিশ্রুতি এমন লোকদের জন্য নয় যারা নিছক আদমশুমারীর মাধ্যমে মুসলমানদের দলে ভিড়ে গেছে। কাজেই মুনাফিক ও ফাসিকদের এ প্রতিশ্রুতির মধ্য থেকে কিছু অংশ পাওয়ার আশা করা উচিত নয়।

টিকা:৬২) আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী শব্দ সাধারণভাবে কুরআন মজীদে “বিশ্ব-জাহান” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কাজেই অন্য কথায় আয়াতের অনুবাদ এও হতে পারেঃ আল্লাহ সমগ্র বিশ্ব-জাহানের আলো। আলো বলতে এমন জিনিস বুঝানো হয়েছে যার বদৌলতে দ্রব্যের প্রকাশ ঘটে। অর্থাৎ যে নিজে নিজে প্রকাশিত হয় এবং অন্য জিনিসকেও প্রকাশ করে দেয়। মানুষের চিন্তায় নূর ও আলোর এটিই আসল অর্থ। কিছুই না দেখা যাওয়ার অবস্থাকে মানুষ অন্ধকার নাম দিয়েছে। আর এ বিপরীতে যখন সবকিছু দেখা যেতে থাকে এবং প্রত্যেকটি জিনিস প্রকাশ হয়ে যায় তখন মানুষ বলে আলো হয়ে গেছে। আল্লাহ তা’আলার জন্য “নূর” তথা আলো শব্দটির ব্যবহার ও মৌলিক অর্থের দিক দিয়েই করা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ তিনি এমন কোন আলোকরশ্মি নন যা সেকেণ্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল বেগে চলে এবং আমাদের চোখের পর্দায় পড়ে মস্তিষ্কের দৃষ্টি কেন্দ্রকে প্রভাবিত করে, আলোর এ ধরণের কোন অর্থ এখানে নেই। মানুষের মস্তিষ্ক এ অর্থের জন্য এ শব্দটি উদ্ভাবন করেছে, আলোর এ বিশেষ অবস্থা সে অর্থের মৌল তত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং তার ওপর এ শব্দটি আমরা এ বস্তুজগতে আমাদের অভিজ্ঞতায় যে আলো ধরা দেয় তার দৃষ্টিতে প্রয়োগ করি। মানুষের ভাষায় প্রচলিত যতগুলো শব্দ আল্লাহর জন্য বলা হয়ে থাকে সেগুলো তাদের আসল মৌলিক অর্থের দৃষ্টিতে বলা হয়ে থাকে, তাদের বস্তুগত অর্থের দৃষ্টিতে বলা হয় না। যেমন আমরা তাঁর জন্য দেখা শব্দটি ব্যবহার করি। এর অর্থ এ হয় না যে, তিনি মানুষ ও পশুর মতো চোখ নামক একটি অংগের মাধ্যমে দেখেন। আমরা তাঁর জন্য শোনা শব্দ ব্যবহার করি। এর মানে এ নয় যে, তিনি আমাদের মতো কানের সাহায্যে শোনেন। তাঁর জন্য আমরা পাকড়াও ও ধরা শব্দ ব্যবহার করি। এর অর্থ এ নয় যে, তিনি হাত নামক একটি অংগের সাহায্যে ধরেন। এসব শব্দ সবসময় তাঁর জন্য একটি প্রায়োগিক মর্যাদায় বলা হয়ে থাকে এবং একমাত্র একজন স্বল্প বুদ্ধিমান ব্যক্তিই এ ভুল ধারণা করতে পারে যে, আমাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় শোনা, দেখা ও ধরার যে সীমাবদ্ধ ও বিশেষ আকৃতি রয়েছে তার বাইরে এগুলোর অন্য কোন আকৃতি ও ধরন হওয়া অসম্ভব। অনুরূপভাবে “নূর” বা আলো সম্পর্কেও একথা মনে করা নিছক একটি সংকীর্ণ চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয় যে, এর অর্থের ক্ষেত্র শুধুমাত্র এমন রশ্মিরই আকারে পাওয়া যেতে পারে যা কোন উজ্জ্বল অবয়ব থেকে বের হয়ে এসে চোখের পর্দায় প্রতিফলিত হয়। এ সীমিত অর্থে আল্লাহ আলো নন বরং ব্যাপক, সার্বিক ও আসল অর্থে আলো। অর্থাৎ এ বিশ্ব-জাহানে তিনিই এক আসল “প্রকাশের কার্যকারণ”, বাকি সবই এখানে অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই নয়। অন্যান্য আলোক বিতরণকারী জিনিসগুলোও তাঁরই দেয়া আলো থেকে আলোকিত হয় ও আলো দান করে। নয়তো তাদের কাছে নিজের এমন কিছু নেই যার সাহায্যে তারা এ ধরনের বিস্ময়কর কাণ্ড করতে পারে। আলো শব্দের ব্যবহার জ্ঞান অর্থেও হয় এবং এর বিপরীতে অজ্ঞতা ও অজ্ঞানতাকে অন্ধকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এ অর্থেও আল্লাহ বিশ্ব-জাহানের আলো। কেননা, এখানে সত্যের সন্ধান ও সঠিক পথের জ্ঞান একমাত্র তাঁর মাধ্যমেই এবং তার কাছ থেকেই পাওয়া যেতে পারে। তাঁর দান গ্রহণ করা ছাড়া মূর্খতা ও অজ্ঞতার অন্ধকার এবং তার ফলশ্রুতিতে ভ্রষ্টতা ও গোমরাহী ছাড়া আর কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়।

টিকা:৬৩) মুবারক অর্থাৎ বহুল উপকারী, বহুমুখী কল্যাণের ধারক।

টিকা:৬৪) অর্থাৎ যা খোলা ময়দানে বা উঁচু জায়গায় অবস্থান করে। যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর রোদ পড়ে। তার সামনে পেছনে কোন আড় থাকে না যে, কেবল সকালের রোদটুকু বা বিকালের রোদটুকু তার ওপর পড়ে। এমন ধরনের যয়তুন গাছের তেল বেশী স্বচ্ছ হয় এবং বেশী উজ্জ্বল আলো দান করে। নিছক পূর্ব বা নিছক পশ্চিম অঞ্চলের যয়তুন গাছ তুলনামূলকভাবে অস্বচ্ছ তেল দেয় এবং প্রদীপে তার আলোও হালকা থাকে।

টিকা:৬৫) এ উপমায় প্রদীপের সাথে আল্লাহর সত্তাকে এবং তাদের সাথে বিশ্ব-জাহানকে তুলনা করা হয়েছে। আর চিমনি বলা হয়েছে এমন পর্দাকে যার মধ্যে মহাসত্যের অধিকারী সমস্ত সৃষ্টিকুলের দৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন, অর্থাৎ এ পর্দাটি যেন গোপন করার পর্দা নয় বরং প্রবল প্রকাশের পর্দা। সৃষ্টির দৃষ্টি যে তাঁকে দেখতে অক্ষম এর কারণ এটা নয় যে, মাঝখানে অন্ধকার আছে, বরং আসল কারণ হচ্ছে, মাঝখানের পর্দা স্বচ্ছ এবং এ স্বচ্ছ পর্দা অতিক্রম করে আগত আলো এত বেশী তীক্ষ্ম, তীব্র, অবিমিশ্র ও পরিবেষ্টনকারী যে, সীমিত শক্তি সম্পন্ন চক্ষু তা দেখতে অক্ষম হয়ে গেছে। এ দুর্বল চোখগুলো কেবলমাত্র এমন ধরনের সীমাবদ্ধ আলো দেখতে পারে যার মধ্যে কমবেশী হতে থাকে, যা কখনো অন্তর্হিত আবার কখনো উদিত হয়, যার বিপরীতে কোন অন্ধকার থাকে এবং নিজের বিপরীতধর্মীর সামনে এসে সে সমুজ্জ্বল হয়। কিন্তু নিরেট, ভরাট ও ঘন আলো, যার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিযোগীই নেই, যা কখনো অন্তর্হিত ও নিশ্চিহ্ন হয় না এবং যা সবসময় একইভাবে সব দিক আচ্ছন্ন করে থাকে তাকে পাওয়া ও তাকে দেখা এদের সাধ্যের বাইরে। 

আর “এ প্রদীপটি যয়তুনের এমন একটি মুবারক গাছের তেল দিয়ে উজ্জ্বল করা হয় যা পূর্বেরও নয় পশ্চিমের নয়।” এ বক্তব্য কেবলমাত্র প্রদীপের আলোর পূর্ণতা ও তার তীব্রতার ধারণা দেবার জন্য বলা হয়েছে। প্রাচীন যুগে যয়তুনের তেলের প্রদীপ থেকে সর্বাধিক পরিমাণ আলোক লাভ করা হতো। এর মধ্যে আবার উঁচু ও খোলা জায়গায় বেড়ে ওঠা যয়তুন গাছগুলো থেকে যে তেল উৎপন্ন হতো সেগুলোর প্রদীপের আলো হতো সবচেয়ে জোরালো। উপমায় এ বিষয়বস্তুর বক্তব্য এই নয় যে, প্রদীপের সাথে আল্লাহর যে সত্তার তুলনা করা হয়েছে তা অন্য কোন জিনিস থেকে শক্তি (Energy) অর্জন করছে। বরং একথা বলার উদ্দেশ্য এই যে, উপমায় কোন মামুলি ধরনের প্রদীপ নয় বরং তোমাদের দেখা উজ্জ্বলতম প্রদীপের কথা চিন্তা করো। এ ধরনের প্রদীপ যেমন সারা বাড়ি আলোকাজ্জল করে ঠিক তেমনি আল্লাহর সত্তাও সারা বিশ্ব-জাহানকে আলোক নগরীতে পরিণত করে রেখেছে। আর এই যে বলা হয়েছে, “তার তেল আপনা আপনিই জ্বলে ওঠে আগুন তাকে স্পর্শ না করলেও”, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রদীপের আলোকে অত্যধিক তীব্র করার ধারণা দেয়া। অর্থাৎ উপমায় এমন সর্বাধিক তীব্র আলো দানকারী প্রদীপের কথা চিন্তা করো যার মধ্যে এ ধরণের স্বচ্ছ ও চরম উত্তেজক তেল রয়েছে। এ তিনটি জিনিস অর্থাৎ যয়তুন, তার পুরবীয় ও পশ্চিমী না হওয়া এবং আগুনের স্পর্শ ছাড়াই তার তেলের আপনা আপনি জ্বলে ওঠা উপমার স্বতন্ত্র অংশ নয় বরং উপমার প্রথম অংশের অর্থাৎ প্রদীপের আনুসঙ্গিক বিষয়াদির অন্তর্ভুক্ত। উপমার আসল অংশ তিনটিঃ প্রদীপ, তাক ও স্বচ্ছ চিমনি বা কাঁচের আবরণ। 

আয়াতের “তাঁর আলোর উপমা যেমন” এ বাক্যাংশটিও উল্লেখযোগ্য। “আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর আলো” আয়াতের একথাগুলো পড়ে কারোর মনে যে ভুল ধারণা সৃষ্টি হতে পারতো ওপরের বাক্যাংশটির মাধ্যমে তা দূর হয়ে যায়। এ থেকে জানা যায়, আল্লাহকে “আলো” বলার মানে এ নয় যে, নাউযুবিল্লাহ, আলোই তাঁর স্বরূপ। আসলে তিনি তো হচ্ছেন একটি পরিপূর্ণ ও পূর্ণাংগ সত্তা। তিনি জ্ঞানী, শক্তিশালী, প্রাজ্ঞ, বিচক্ষণ ইত্যাদি হবার সাথে সাথে আলোর অধিকারীও। কিন্তু তাঁর সত্তাকে আলো বলা হয়েছে নিছক তাঁর আলোকোজ্জলতার পূর্ণতার কারণে। যেমন কারোর দানশীলতা গুণের পূর্ণতার কথা বর্ণনা করার জন্য তাকেই “দান” বলে দেয়া অথবা তার সৌন্দর্যের পূর্ণতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে স্বয়ং তাকেই সৌন্দর্য আখ্যা দেয়া।

টিকা:৬৬) যদিও আল্লাহর এ একক ও একচ্ছত্র আলো সমগ্র বিশ্ব-জাহান আলোকিত করছে কিন্তু তা দেখার, জানার ও উপলব্ধি করার সৌভাগ্য সবার হয় না। তা উপলব্ধি করার সুযোগ এবং তার দানে অনুগৃহীত হবার সৌভাগ্য আল্লাহই যাকে চান তাকে দেন। নয়তো অন্ধের জন্য যেমন দিনরাত সমান ঠিক তেমনি অবিবেচক ও অদূরদর্শী মানুষের জন্য বিজলি, সূর্য, চাঁদ ও তারার আলো তো আলোই, কিন্তু আল্লাহর নূর ও আলো সে ঠাহর করতে পারে না। এ দিক থেকে এ দুর্ভাগার জন্য বিশ্ব-জাহানে সবদিকে অন্ধকারই অন্ধকার। দু’চোখ অন্ধ। তাই নিজের একান্ত কাছের জিনিসই সে দেখতে পারে না। এমনকি তার সাথে ধাক্কা খাওয়ার পরই সে জানতে পারে এ জিনিসটি এখানে ছিল। এভাবে ভিতরের চোখ যার অন্ধ অর্থাৎ যার অন্তর্দৃষ্টি নেই সে তার নিজের পাশেই আল্লাহর আলোয় যে সত্য জ্বলজ্বল করছে তাকেও দেখতে পায় না। যখন সে তার সাথে ধাক্কা খেয়ে নিজের দুর্ভাগ্যের শিকলে বাঁধা পড়ে কেবলমাত্র তখনই তার সন্ধান পায়।

টিকা:৬৭) এর দু’টি অর্থ হয়। এক, তিনি জানেন কোন্ সত্যকে কোন্ উপমার সাহায্যে সর্বোত্তম পদ্ধতিতে বুঝানো যেতে পারে। দুই, তিনি জানেন কে নিয়ামতের হকদার এবং কে নয়। যে ব্যক্তি সত্যের আলোর সন্ধানী নয়, যে ব্যক্তি সমগ্র মনপ্রাণ দিয়ে নিজের পার্থিব স্বার্থেরই মধ্যে বিলীন হয়ে যায় এবং বস্তুগত স্বাদ ও স্বার্থের সন্ধানে নিমগ্ন থাকে আল্লাহ জানেন যে, সে এর সন্ধানী ও ঐকান্তিক সন্ধানী সে-ই এ দান লাভের যোগ্য।





০৫ মে ২০২৪

পারিবারিক সুখ শান্তির জন্য দোয়া।

 আল কুরআন, ২৫  আল-ফুরকান, আয়াত: ৭৪


وَ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْیُنٍ وَّ اجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِیْنَ اِمَامًا


তারা প্রার্থনা করে থাকে, “হে আমাদের রব! আমাদের নিজেদের স্ত্রীদের ও নিজেদের সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম।”


২৬ জানুয়ারী ২০২৪

সুরা ফাতিহার অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

১-ফাতিহা

(1:1)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ

(1:2)

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ

(1:3)

الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِۙ

(1:4)

مٰلِكِ یَوْمِ الدِّیْنِؕ

(1:5)

اِیَّاكَ نَعْبُدُ وَ اِیَّاكَ نَسْتَعِیْنُؕ

(1:6)

اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِیْمَۙ

(1:7)

 صِرَاطَ الَّذِیْنَ اَنْعَمْتَ عَلَیْهِمْ١ۙ۬ۦ غَیْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَیْهِمْ وَ لَا الضَّآلِّیْنَ۠

রুকু-১

1:1

প্রচন্ড দয়ালু, সবসময় দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে [2]


1:2

সকল প্রশংসা ও ধন্যবাদ আল্লাহ্‌র [3], বিশ্বজগতের প্রভু ও প্রতিপালনকারী [4]


1:3

প্রচন্ড দয়ালু, সবসময় দয়ালু


1:4

বিচার দিবসের মালিক ও অধিপতি [5]


1:5

আমরা শুধু তোমারই ইবাদত ও দাসত্ব করি [6] এবং সাধ্যমতো চেষ্টার পাশাপাশি তোমার কাছেই সাহায্য চাই [7]


1:6

আমাদেরকে সরল, উর্দ্ধগামী পথটি দেখাও


1:7

তাদের পথ যারা তোমার অনুগ্রহ পেয়ে গেছে [9] তাদের নয় যারা রাগের কারণ অথবা যারা পথ হারিয়েছে [10]


সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা:

[1] “ফাতিহা” শব্দের অর্থ opening বা উদ্বোধন। সূরা ফাতিহাকে সমস্ত কুরআনের সারমর্ম বলা হয়।


[2] “রহমান” বলতে বোঝায় প্রচন্ড দয়ালু । এটা এমন দয়া যা এই মুহুর্তে করা হচ্ছে, অর্থাৎ এটা ক্রিয়া বুঝায়। রহমান এমন দয়া যা অনুপস্থিতও হয়ে যেতে পারে। যেমন – আল্লাহ যখন আমাদের শাস্তি দেন, তখন সেখানে আল্লাহর দয়া অনুপস্থিত থাকে।


অন্যদিকে “রহিম” বলতে বোঝানো হয় যে দয়া সবসবময় থাকে। যেমন – সর্বদাই কোনো না কোনোভাবে আমরা আল্লাহর দয়ার ছায়ায় থাকি। রহিম কাজ করে বিশেষণের মতো – আল্লাহ দয়ালু – অর্থাৎ কিনা আল্লাহ সবসময় দয়ালু।


[3] “হামদ” শব্দের দুটি অর্থ হয় – প্রশংসা ও ধন্যবাদ। লক্ষ্যণীয়, এই বাক্যটির একটি স্বাভাবিক গঠন হতে পারত – “আমি/আমরা আল্লাহ্‌র প্রশংসা করি”। কিন্ত সেক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও ধন্যবাদপ্রাপ্তি আমাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে যেত। তা না করে কুরআনে বাক্যটি এমনভাবে গঠন করা হয়েছে যাতে আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও ধন্যবাদ প্রাপ্তিকে কোনো কিছুর উপর নির্ভরতাহীন ও চির সত্য রূপে বলা হয়েছে। কারণ, মহান আল্লাহর প্রশংসা কোনো প্রাণী বা বস্তুর মুখাপেক্ষি নয়।


সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করা ও তাঁকে মেনে নেয়ার সর্বপ্রথম ধাপ হচ্ছে কৃতজ্ঞতাবোধ। যারা নাস্তিক ও অবিশ্বাসী তাদের মূল বিষয়টা হলো স্রষ্টার প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতাবোধের অভাব। যে স্রষ্টা মানুষকে প্রাণ দিলেন, প্রজ্ঞা দিলেন, ভালোবাসা ও রিজিক দিলেন – সেই স্রষ্টাকে অস্বীকার করা বা চেনার চেষ্টা না করা চরম অকৃতজ্ঞতা, আর তাই ইসলামে শিরক সবচাইতে বড় অপরাধ।


[4] “রব” শব্দের অনেক অর্থ হয় – স্রষ্টা, তত্ত্বাবধায়ক, উপহারদানকারী, রক্ষনাবেক্ষণকারী ও প্রতিপালনকারি। তবে রব শব্দের মূল যে অর্থ এখানে প্রযোজ্য তা হলো – প্রভু ও প্রতিপালক । আল্লাহ্‌ আমাদের প্রভু আর আমরা তাঁর দাস। একজন দাস ২৪ ঘন্টাই তার প্রভুর দাস। দাস কখনো তার প্রভুর আদেশ-নিষেধের বাইরে কিছু করতে পারে না। পৃথিবীতে কোনো দাস তার মালিকের অবাধ্য হলেই শাস্তি পায়। কিন্তু আল্লাহ দয়াময়, তাই তাঁর দাসেরা বারবার ভুল করা সত্ত্বেও তিনি তাদের মাফ করতে থাকেন, তাদের গুনাহগুলো অন্যদের থেকে গোপন করে রাখেন। আমৃত্যু দাসকে তাওবাহ করার সুযোগ দেন –তিনি যে রহমান ও রহিম। আল্লাহর ইবাদত (ritual) করতে আমাদের বেশিরভাগ মানুষের সমস্যা নেই, কিন্তু আল্লাহর দাসত্ব করা আমাদের জন্য অনেক বেশী কঠিন। কারণ, দাসত্ব করতে হলে অনেক ছাড় দিতে হয়, নিজেকে অহংকারমুক্ত হতে হয় এবং নিজের ইচ্ছাকে বিসর্জন দিতে হয়। ইবাদত করা কয়েক মিনিটের কাজ, কিন্তু দাসত্ব করা ২৪ ঘন্টার দায়িত্ব।


[5] এর আগে আল্লাহ বলছিলেন – আমরা তাঁর প্রশংসা করব ও তাঁকে রব বলে মানব – কারণ তিনি রহমান ও রহিম – তিনি দয়াময়। আর এবার তিনি জানিয়ে দিলেন – তিনি কিন্তু বিচারও করবেন। কাজেই আমরা যদি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং তাঁকে আমাদের রব না মানি – তিনি বিচারের মাধ্যমে আমাদের প্রাপ্য শাস্তি আমাদেরকে বুঝিয়ে দিবেন।


লক্ষ্যণীয় – আল্লাহ নিজেকে বিচারক বা বিচারের মালিক বলেননি, বলেছেন বিচার দিবস তথা সময়ের মালিক। নিজেকে সময়ের মালিক দাবি করা একমাত্র আল্লাহকেই মানায়। আর, যেহেতু আল্লাহ পুরো দিবসটির মালিক – কাজেই এদিন যতকিছু হবে, যে যা বলবে-করবে, যত সুপারিশ হবে, যা পুরষ্কার বা শাস্তি প্রদান করা হবে – তার সবকিছুই হবে আল্লাহর হুকুমে।


আরেকটা বিষয় হলো: এখানে আরবী “মালিক” শব্দটিকে দুইভাবে উচ্চারণ করা যায় – “মা-লিক” (এক আলিফ টান সহ) ও মালিক (টান ছাড়া)। মা-লিক শব্দের অর্থ হলো স্বত্বাধিকারী (owner) বা সোজা বাংলায় মালিক। আর “মালিক” শব্দের অর্থ হলো রাজা (King) বা অধিপতি। অর্থাৎ বিচার দিবসের স্বত্ব ও কর্তৃত্ব – দুইটাই কেবল আল্লাহর। আবার আরেকভাবে চিন্তা করলে –বিশাল কিছুর ওপর কর্তৃত্ব বুঝাতে আমরা রাজা / অধিপতি শব্দটি ব্যবহার করি, আর সাধারণ কিছুর উপর কর্তৃত্ব বুঝাতে আমরা মালিক শব্দটি ব্যবহার করি। আল্লাহ বিচার দিবসের মালিক ও অধিপতি – অর্থাৎ সেদিনের বড় ও ছোট সবকিছুরই পূর্ণ কর্তৃত্ব কেবল আল্লাহর।


[6] আরবী ইবাদত বলতে – প্রার্থনা ও দাসত্ব দুইই বুঝায়


[7] আরবী ইস্তি’আনা বলতে বুঝায় – নিজের সাধ্যমতো চেষ্টার পাশাপাশি সাহায্য চাওয়া


[8] “সিরাত” এমন একটি পথ যা সরল, লম্বা ও প্রশস্ত। সরল মনে মানুষ যা চিন্তা করে তার সাথে এই পথ মিলে যাবে – কাজেই এটা সরল পথ। এই পথ প্রশস্ত, যত মানুষ আসতে চায় আসতে পারবে; তবে যাত্রাটা হবে দীর্ঘ। সিরাতের কোনো বিকল্প রাস্তা হয় না – অর্থাৎ আল্লাহকে পেতে হলে এই এক পথেই (অর্থাৎ ইসলামের পথে) পাওয়া যাবে।


“মুস্তাকিম” বলতে বোঝায় সোজা হয়ে দাঁড়ানো। এর আরো অর্থ হলো – ভারসাম্যমূলক ও উর্দ্ধগামী। আমরা আল্লাহর কাছে সিরাতুল মুস্তাকিম চাচ্ছি – অর্থাৎ এমন এক উর্দ্ধমূখী সরল পথের দিশা চাচ্ছি যা আমাদের চিন্তা-চেতনাকে পার্থিব সংকীর্নতা থেকে, লোভ-লালসার মধ্যাকর্ষীয় শক্তি থেকে সমূলে বিচ্ছিন্ন করে বিশাল আকাশের দিকে নিয়ে যাবে, কিন্তু আমাদেরকে এমন ভারসাম্য শেখাবে যে আমরা আমাদের পৃথিবীর জীবনের দায়িত্বগুলোও সমান তালে পালন করতে পারব। সিরাতুল মুস্তাকিম আমাদেরকে খোদা-ভীরু ও দায়িত্ববান হতে শেখায়, চরমপন্থী হতে নিষেধ করে।


[9] এই আয়াতে আল্লাহ অতীতকাল ব্যবহার করেছেন, অর্থাৎ যারা সরল পথের উপর মৃত্যুবরণ করেছে তাদের কথা বলছেন। কারন, আজ যে ব্যক্তি সরল পথে আছে, আগামীকালও যে সে তা থাকতে পারবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।


[10] আগের আয়াতে বলা হয়েছিল সুপথপ্রাপ্ত শ্রেনীর কথা। আর এই আয়াতে বলা হচ্ছে আরো দুই শ্রেণীর কথা – “মাগদুব” ও “দল্লিন”। “মাগদুব” হলো তারা – যাদের মধ্যে সঠিক ও ভুল পথের পার্থক্যমূলক জ্ঞান আছে, কিন্তু তারপরেও তারা ভুল পথকেই বেছে নেয়, অবাধ্যতাকে বেছে নেয়। রাসূলুল্লাহ (সা) এর সময়ে ইহুদীরা এই শ্রেণির ছিল – কারণ তারা সত্য নবী বুঝার পরেও তাঁকে মেনে নেয়নি।


এই আয়াতে যখন রাগের কথা বলে হয়েছে – তখন “মাগদুব” দের উপর কে রাগ করেছে তা উহ্য রাখা হয়েছে। কিছু না বলেও বলে দেয়া ভালো সাহিত্যের একটি গুণ। “মাগদুব”দের প্রতি আল্লাহর রাগ এতই বেশী যে তাদের উপর কে কে রেগে আছে আল্লাহ তা নির্দিষ্ট করে বলার প্রয়োজন অনুভব করলেন না। আয়াতের প্রেক্ষাপট (context) অনুসারে বোঝা যায় – “মাগদুব”রা মহান আল্লাহ, ফেরেশতা ও মুমিনদের রাগ ও অসন্তোষের কারণ।


আর “দল্লিন” হলো যারা পথ হারিয়েছে, যারা ঠিকমতো জানে না, বোঝে না এদের কী করা উচিত, সঠিক পথ সম্পর্কে এদের কাছে যথেষ্ট জ্ঞান নেই। রাসূলুল্লাহ (সা) এর সময়ে খ্রিষ্টানরা এই শ্রেণির ছিল – কারণ ধর্ম সম্পর্কে তাদের যথেষ্ট জ্ঞান ছিল না। তাদের কিতাব বিকৃত হয়ে পড়েছিল বহু আগেই এবং কী করা উচিত তা তারা বুঝত না।


স্কলারেরা বলেন – উপরে বর্ণিত এই তিন শ্রেনী তিনটি ভিন্ন গোষ্ঠি হতে পারে, আবার একই লোক এই তিন শ্রেণীতেই পড়তে পারে। উদাহরনস্বরুপ বলা যায় – যখন আমরা আল্লাহর ইবাদত করি ও প্রতিনিয়ত আল্লাহর দেয়া আদেশ-নিষেধ মাথায় রেখে কাজ-কর্ম করি তখন আমরা সরল পথে থাকি। আবার সেই আমিই যখন গুনাহ হবে জেনেও কোনো পাপকাজে জড়িয়ে পড়ি, তখন আমি “মাগদুব”-দের একজন। আর, জীবনের কোনো বিষয়ে আমি যা করছি সেটা হালাল বা হারাম তা যদি না জেনে থাকি এবং জানার চেষ্টা না করে নিজের মনমতো চলতে থাকি – তখন আমি পথহারা “দল্লিন”।


আমরা কেউ যদি ইসলামের আলোর সন্ধান পাওয়ার পরেও বারবার আল্লাহর অবাধ্যতা করি বা নিজেকে “মাগদুব”দের অন্তর্ভুক্ত করি, তাহলে মহান আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের কাজের শাস্তিস্বরূপ আরেক স্তর নামিয়ে দিয়ে “দল্লীন” করে ফেলতে পারেন, যখন আমাদের হৃদয়ে এমন মোহর লেগে যাবে যে আমরা আর আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার ভয় পর্যন্ত করব না। আল্লাহ আমাদেরকে এহেন বিচ্যুতি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।


উস্তাদ নুমান আলি খানের লেকচার অনুসরণ করে অনুবাদটি করা হয়েছে – যেখানে আরবী শব্দগুলোকে কেবল আক্ষরিক অনুবাদ না করে ভেঙে বোঝানোর চেষ্টা করানো হয়েছে।



বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যে সব খাবারে রক্ত চাপ বাড়ে

আর টিভি এর সৌজন্যে : উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নির্দিষ্ট কোনো বয়সের মধ্যে আবদ্ধ নেই। উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা দেখা দিতে পারে যেকোনো বয়সী মানুষের ম...

জনপ্রিয় লেখা সমূহ