Alay Imran লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Alay Imran লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

০৬ জানুয়ারী ২০২১

Al Quran, Sura-Alay Imran(1-200)

৩-আলে-ইমরান


(3:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ



অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে



(3:1)
الٓمَّٓۙ



অনুবাদ:    আলিফ লাম-মীম।



(3:2)
اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۙ الْحَیُّ الْقَیُّوْمُؕ



অনুবাদ:    আল্লাহ্‌ এক চিরঞ্জীব ও শাশ্বত সত্ত্বা, যিনি বিশ্ব –জাহানের সমগ্র ব্যবস্থাপনাকে ধারণ করে আছেন, আসলে তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্‌ নেই।



(3:3)
نَزَّلَ عَلَیْكَ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ وَ اَنْزَلَ التَّوْرٰىةَ وَ الْاِنْجِیْلَۙ



অনুবাদ:    তিনি তোমার ওপর এই কিতাব নাযিল করেছেন, যা সত্যের বাণী বহন করে এনেছে এবং আগের কিতাবগুলোর সত্যতা প্রমাণ করছে। আর তিনি তাওরাত ও ইঞ্জিল নাযিল করেছিলেন



(3:4)
مِنْ قَبْلُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَ اَنْزَلَ الْفُرْقَانَ۬ؕ اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا بِاٰیٰتِ اللّٰهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِیْدٌؕ وَ اللّٰهُ عَزِیْزٌ ذُو انْتِقَامٍ



অনুবাদ:    এর আগে মানুষের হিদায়াতের জন্য । আর তিনি মানদণ্ড নাযিল করেছেন (যা সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করে দেয়)। এখন যারা আল্লাহ‌র বিধানসমূহ মেনে নিতে অস্বীকার করবে, তারা অবশ্যই কঠিন শাস্তি পাবে। আল্লাহ‌ অসীম ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি অন্যায়ের শাস্তি দিয়ে থাকেন।



(3:5)
اِنَّ اللّٰهَ لَا یَخْفٰى عَلَیْهِ شَیْءٌ فِی الْاَرْضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِؕ



অনুবাদ:    পৃথিবী ও আকাশের কোন কিছুই আল্লাহ‌র কাছে গোপন নেই।



(3:6)
هُوَ الَّذِیْ یُصَوِّرُكُمْ فِی الْاَرْحَامِ كَیْفَ یَشَآءُؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ



অনুবাদ:    তিনি মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের আকৃতি গঠন করেন। এই প্রবল পরাক্রান্ত মহাজ্ঞানের অধিকারী সত্ত্বা ছাড়া আর কোন ইলাহ্‌ নেই।



(3:7)
هُوَ الَّذِیْۤ اَنْزَلَ عَلَیْكَ الْكِتٰبَ مِنْهُ اٰیٰتٌ مُّحْكَمٰتٌ هُنَّ اُمُّ الْكِتٰبِ وَ اُخَرُ مُتَشٰبِهٰتٌؕ فَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ زَیْغٌ فَیَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ وَ ابْتِغَآءَ تَاْوِیْلِهٖ ﳘ وَ مَا یَعْلَمُ تَاْوِیْلَهٗۤ اِلَّا اللّٰهُ ﳕ وَ الرّٰسِخُوْنَ فِی الْعِلْمِ یَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِهٖۙ كُلٌّ مِّنْ عِنْدِ رَبِّنَاۚ وَ مَا یَذَّكَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الْاَلْبَابِ



অনুবাদ:    তিনিই তোমাদের প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন। এ কিতাবে দুই ধরনের আয়াত আছেঃ এক হচ্ছে, মুহকামাত, যেগুলো কিতাবের আসল বুনিয়াদ এবং দ্বিতীয় হচ্ছে, মুতাশাবিহাত। যাদের মনে বক্রতা আছে তারা ফিতনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সবসময় মুতাশাবিহাতের পিছনে লেগে থাকে এবং তার অর্থ করার চেষ্টা করে থাকে। অথচ সেগুলোর আসল অর্থ আল্লাহ‌ ছাড়া আর কেউ জানে না। বিপরীত পক্ষে পরিপক্ক জ্ঞানের অধিকারীরা বলেঃ “আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি, এসব আমাদের রবের পক্ষ থেকেই এসেছে”। আর প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানবান লোকেরাই কোন বিষয় থেকে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।



(3:8)
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ اِذْ هَدَیْتَنَا وَ هَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةًۚ اِنَّكَ اَنْتَ الْوَهَّابُ



অনুবাদ:    তারা আল্লাহ‌র কাছে দোয়া করতে থাকেঃ “হে আমাদের রব! যখন তুমি আমাদের সোজা পথে চালিয়েছো তখন আর আমাদের অন্তরকে বক্রতায় আচ্ছন্ন করে দিয়ো না, তোমার দান ভাণ্ডার থেকে আমাদের জন্য রহমত দান করো কেননা তুমিই আসল দাতা।



(3:9)
رَبَّنَاۤ اِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِیَوْمٍ لَّا رَیْبَ فِیْهِؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُخْلِفُ الْمِیْعَادَ۠



অনুবাদ:    হে আমাদের রব! অবশ্যি তুমি সমগ্র মানব জাতিকে একদিন একত্রে সমবেত করবে, যে দিনটির আগমনের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। তুমি কখনো ওয়াদা থেকে বিচ্যুত হও না।”



(3:10)
اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لَنْ تُغْنِیَ عَنْهُمْ اَمْوَالُهُمْ وَ لَاۤ اَوْلَادُهُمْ مِّنَ اللّٰهِ شَیْــٴًـاؕ وَ أُولَٰئِكَ هُمْ وَ قُوْدُ النَّارِۙ



অনুবাদ:    যারা কুফরী নীতি অবলম্বন করেছে, তাদের না ধন–সম্পদ, না সন্তান–সন্ততি আল্লাহ‌র মোকাবিলায় কোন কাজে লাগবে। তারা দোজখের ইন্ধনে পরিণত হবেই।



(3:11)
كَدَاْبِ اٰلِ فِرْعَوْنَۙ وَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْؕ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَاۚ فَاَخَذَهُمُ اللّٰهُ بِذُنُوْبِهِمْؕ وَ اللّٰهُ شَدِیْدُ الْعِقَابِ



অনুবাদ:    তাদের পরিণাম ঠিক তেমনি হবে যেমন ফেরাউনের সাথী ও তার আগের নাফরমানদের হয়ে গেছেঃ তারা আল্লাহ‌র আয়াতের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে, ফলে আল্লাহ‌ তাদের গোনাহের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেছেন। আর যথার্থই আল্লাহ‌ কঠোর শাস্তিদানকারী।



(3:12)
قُلْ لِّلَّذِیْنَ كَفَرُوْا سَتُغْلَبُوْنَ وَ تُحْشَرُوْنَ اِلٰى جَهَنَّمَؕ وَ بِئْسَ الْمِهَادُ



অনুবাদ:    কাজেই হে মুহাম্মাদ! যারা তোমরা দাওয়াত গ্রহণ করতে অস্বীকার করলো, তাদের বলে দাও, সেই সময় নিকটবর্তী যখন তোমরা পরাজিত হবে এবং তোমাদের জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, আর জাহান্নাম বড়ই খারাপ আবাস।



(3:13)
قَدْ كَانَ لَكُمْ اٰیَةٌ فِیْ فِئَتَیْنِ الْتَقَتَاؕ فِئَةٌ تُقَاتِلُ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ اُخْرٰى كَافِرَةٌ یَّرَوْنَهُمْ مِّثْلَیْهِمْ رَاْیَ الْعَیْنِؕ وَ اللّٰهُ یُؤَیِّدُ بِنَصْرِهٖ مَنْ یَّشَآءُؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّاُولِی الْاَبْصَارِ



অনুবাদ:    তোমাদের জন্য সেই দু’টি দলের মধ্যে একটি শিক্ষার নিদর্শন ছিল যারা (বদরে) পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল। একটি দল আল্লাহ‌র পথে যুদ্ধ করছিল এবং অন্য দলটি ছিল কাফের। চোখের দেখায় লোকেরা দেখছিল, কাফেররা মু’মিনদের দ্বিগুণ। কিন্তু ফলাফল (প্রমাণ করলো যে) আল্লাহ‌ তাঁর বিজয় ও সাহায্য দিয়ে যাকে ইচ্ছা সহায়তা দান করেছেন। অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন লোকদের জন্য এর মধ্যে বড়ই শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে।



(3:14)
زُیِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوٰتِ مِنَ النِّسَآءِ وَ الْبَنِیْنَ وَ الْقَنَاطِیْرِ الْمُقَنْطَرَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَ الْفِضَّةِ وَ الْخَیْلِ الْمُسَوَّمَةِ وَ الْاَنْعَامِ وَ الْحَرْثِؕ ذٰلِكَ مَتَاعُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَاۚ وَ اللّٰهُ عِنْدَهٗ حُسْنُ الْمَاٰبِ



অনুবাদ:    মানুষের জন্য নারী, সন্তান, সোনা-রূপার স্তূপ, সেরা ঘোড়া, গবাদী পশু ও কৃষি ক্ষেতের প্রতি আসক্তিকে বড়ই সুসজ্জিত ও সুশোভিত করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের সামগ্রী মাত্র। প্রকৃতপক্ষে উত্তম আবাস তো রয়েছে আল্লাহ‌র কাছে।



(3:15)
قُلْ اَؤُنَبِّئُكُمْ بِخَیْرٍ مِّنْ ذٰلِكُمْؕ لِلَّذِیْنَ اتَّقَوْا عِنْدَ رَبِّهِمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا وَ اَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَّ رِضْوَانٌ مِّنَ اللّٰهِؕ وَ اللّٰهُ بَصِیْرٌۢ بِالْعِبَادِۚ



অনুবাদ:    বলো, আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেবো, ওগুলোর চাইতে ভালো জিনিস কি? যারা তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করে তাদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে বাগান, তার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরন্তন জীবন লাভ করবে। পবিত্র স্ত্রীরা হবে তাদের সঙ্গিনী এবং তারা লাভ করবে আল্লাহ‌র সন্তুষ্টি। আল্লাহ‌ তার বান্দাদের কর্মনীতির ওপর গভীর ও প্রখর দৃষ্টি রাখেন।



(3:16)
اَلَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَاۤ اِنَّنَاۤ اٰمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَ قِنَا عَذَابَ النَّارِۚ



অনুবাদ:    এ লোকেরাই বলেঃ “হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের গোনাহখাতা মাফ করে দাও এবং জাহান্নামের আগুন থেকে আমাদের বাঁচাও।



(3:17)
اَلصّٰبِرِیْنَ وَ الصّٰدِقِیْنَ وَ الْقٰنِتِیْنَ وَ الْمُنْفِقِیْنَ وَ الْمُسْتَغْفِرِیْنَ بِالْاَسْحَارِ



অনুবাদ:    এরা সবরকারী, সত্যনিষ্ঠ, অনুগত ও দানশীল এবং রাতের শেষভাগে আল্লাহ‌র কাছে গোনাহ মাফের জন্য দোয়া করে থাকে।”



(3:18)
شَهِدَ اللّٰهُ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۙ وَ الْمَلٰٓئِكَةُ وَ اُولُوا الْعِلْمِ قَآئِمًۢا بِالْقِسْطِؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُؕ



অনুবাদ:    আল্লাহ্‌ নিজেই সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্‌ নেই। আর ফেরেশতা ও সকল জ্ঞানবান লোকই সততা ও ন্যায়পরায়ণতার সাথে এ সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, সেই প্রবল পরাক্রান্ত ও জ্ঞানবান সত্ত্বা ছাড়া আর কোন ইলাহ্‌ নেই।



(3:19)
اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللّٰهِ الْاِسْلَامُ۫ وَ مَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ اِلَّا مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۢا بَیْنَهُمْؕ وَ مَنْ یَّكْفُرْ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ فَاِنَّ اللّٰهَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ



অনুবাদ:    ইসলাম আল্লাহ‌র নিকট একমাত্র দ্বীন–জীবন বিধান। যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল, তারা এ দ্বীন থেকে সরে গিয়ে যেসব বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে, সেগুলো অবলম্বনের এছাড়া আর কোন কারণই ছিল না যে, প্রকৃত জ্ঞান এসে যাওয়ার পর তারা নিজেদের মধ্যে পরস্পরের ওপর বাড়াবাড়ি করার জন্য এমনটি করেছে। আর যে কেউ আল্লাহ‌র হেদায়াতের আনুগত্য করতে অস্বীকার করে, তার কাছ থেকে হিসেব নিতে আল্লাহ‌র মোটেই দেরী হয় না।



(3:20)
فَاِنْ حَآجُّوْكَ فَقُلْ اَسْلَمْتُ وَجْهِیَ لِلّٰهِ وَ مَنِ اتَّبَعَنِؕ وَ قُلْ لِّلَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ وَ الْاُمِّیّٖنَ ءَاَسْلَمْتُمْؕ فَاِنْ اَسْلَمُوْا فَقَدِ اهْتَدَوْاۚ وَ اِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّمَا عَلَیْكَ الْبَلٰغُؕ وَ اللّٰهُ بَصِیْرٌۢ بِالْعِبَادِ۠



অনুবাদ:    এখন যদি এ লোকেরা তোমার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের বলে দাওঃ “আমি ও আমার অনুগতরা আল্লাহ‌র সামনে আনুগত্যের শির নত করেছি।” তারপর আহলি কিতাব ও অ-আহলি কিতাব উভয়কে জিজ্ঞেস করো, “তোমরাও কি তাঁর বন্দেগী কবুল করেছো?” যদি করে থাকে তাহলে ন্যায় ও সত্যের পথ লাভ করেছে আর যদি তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে থাকে, তাহলে তোমার ওপর কেবলমাত্র পয়গাম পৌঁছিয়ে দেবার দায়িত্বই অর্পিত হয়েছিল। পরবর্তী পর্যায়ে আল্লাহ‌ নিজেই তার বান্দাদের অবস্থা দেখবেন।



(3:21)
اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ یَقْتُلُوْنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیْرِ حَقٍّۙ وَّ یَقْتُلُوْنَ الَّذِیْنَ یَاْمُرُوْنَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِۙ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍ



অনুবাদ:    যারা আল্লাহ‌র বিধান ও হিদায়াত মানতে অস্বীকার করে এবং তাঁর নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে আর এমন লোকদের প্রাণ সংহার করে, যারা মানুষের মধ্যে ন্যায়, ইনসাফ ও সততার নির্দেশ দেবার জন্য এগিয়ে আসে, তাদের কঠিন শাস্তির সুসংবাদ দাও।



(3:22)
أُولَٰئِكَ الَّذِیْنَ حَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ٘ وَ مَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَ



অনুবাদ:    এরা এমন সব লোক যাদের কর্মকাণ্ড (আমল) দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই নষ্ট হয়ে গেছে এবং এদের কোন সাহায্যকারী নেই।



(3:23)
اَلَمْ تَرَ اِلَى الَّذِیْنَ اُوْتُوْا نَصِیْبًا مِّنَ الْكِتٰبِ یُدْعَوْنَ اِلٰى كِتٰبِ اللّٰهِ لِیَحْكُمَ بَیْنَهُمْ ثُمَّ یَتَوَلّٰى فَرِیْقٌ مِّنْهُمْ وَ هُمْ مُّعْرِضُوْنَ



অনুবাদ:    তুমি কি দেখনি কিতাবের জ্ঞান থেকে যারা কিছু অংশ পেয়েছে, তাদের কি অবস্থা হয়েছে? তাদের যখন আল্লাহ‌র কিতাবের দিকে সে অনুযায়ী তাদের পরস্পরের মধ্যে ফায়সালা করার জন্য আহবান জানানো হয় তখন তাদের মধ্য থেকে একটি দল পাশ কাটিয়ে যায় এবং এই ফায়সালার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।



(3:24)
ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْا لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ اِلَّاۤ اَیَّامًا مَّعْدُوْدٰتٍ۪  وَّ غَرَّهُمْ فِیْ دِیْنِهِمْ مَّا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ



অনুবাদ:    তাদের এ কর্মপদ্ধতির কারণ হচ্ছে এই যে, তারা বলেঃ “জাহান্নামের আগুন তো আমাদের স্পর্শও করবে না। আর যদি জাহান্নামের শাস্তি আমরা পাই তাহলে তা হবে মাত্র কয়েক দিনের।” তাদের মনগড়া বিশ্বাস নিজেদের দ্বীনের ব্যাপারে তাদেরকে বড়ই ভুল ধারণার মধ্যে নিক্ষেপ করেছে।



(3:25)
فَكَیْفَ اِذَا جَمَعْنٰهُمْ لِیَوْمٍ لَّا رَیْبَ فِیْهِ۫ وَ وُفِّیَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ



অনুবাদ:    কিন্তু সেদিন কি অবস্থা হবে, যেদিন আমি তাদের একত্র করবো, যেদিনটির আসা একেবারেই অবধারিত? সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার উপার্জনের পুরোপুরি প্রতিদান দেয়া হবে এবং কারো ওপর জুলুম করা হবে না।



(3:26)
قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِی الْمُلْكَ مَنْ تَشَآءُ وَ تَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَآءُ٘ وَ تُعِزُّ مَنْ تَشَآءُ وَ تُذِلُّ مَنْ تَشَآءُؕ بِیَدِكَ الْخَیْرُؕ اِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ



অনুবাদ:    বলোঃ হে আল্লাহ! বিশ্ব–জাহানের মালিক! তুমি যাকে চাও রাষ্ট্রক্ষমতা দান করো এবং যার থেকে চাও রাষ্ট্রক্ষমতা ছিনিয়ে নাও। যাকে চাও মর্যাদা ও ইজ্জত দান করো এবং যাকে চাও লাঞ্ছিত ও হেয় করো। কল্যাণ তোমার হাতেই নিহিত। নিঃসন্দেহে তুমি সবকিছুর ওপর শক্তিশালী।



(3:27)
تُوْلِجُ الَّیْلَ فِی النَّهَارِ وَ تُوْلِجُ النَّهَارَ فِی الَّیْلِ٘ وَ تُخْرِ جُ الْحَیَّ مِنَ الْمَیِّتِ وَ تُخْرِ جُ الْمَیِّتَ مِنَ الْحَیِّ٘ وَ تَرْزُقُ مَنْ تَشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ



অনুবাদ:    তুমি রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের মধ্যে। জীবনহীন থেকে জীবন্তের আবির্ভাব ঘটাও এবং জীবন্ত থেকে জীবনহীনের। আর যাকে চাও তাকে তুমি বেহিসেব রিযিক দান করো।



(3:28)
لَا یَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُوْنَ الْكٰفِرِیْنَ اَوْلِیَآءَ مِنْ دُوْنِ الْمُؤْمِنِیْنَۚ وَ مَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَلَیْسَ مِنَ اللّٰهِ فِیْ شَیْءٍ اِلَّاۤ اَنْ تَتَّقُوْا مِنْهُمْ تُقٰىةًؕ وَ یُحَذِّرُكُمُ اللّٰهُ نَفْسَهٗؕ وَ اِلَى اللّٰهِ الْمَصِیْرُ



অনুবাদ:    মু’মিনরা যেন ঈমানদারদের বাদ দিয়ে কখনো কাফেরদেরকে নিজেদের পৃষ্ঠপোষক, বন্ধু ও সহযোগী হিসেবে গ্রহণ না করে। যে এমনটি করবে, আল্লাহ‌র সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে হ্যাঁ, তাদের জুলুম থেকে আত্মরক্ষার জন্য তোমরা যদি বাহ্যত এ নীতি অবলম্বন করো তাহলে তা মাফ করে দেয়া হবে। কিন্তু আল্লাহ‌ তোমাদেরকে তাঁর নিজের সত্ত্বার ভয় দেখাচ্ছেন আর তোমাদের তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে।



(3:29)
قُلْ اِنْ تُخْفُوْا مَا فِیْ صُدُوْرِكُمْ اَوْ تُبْدُوْهُ یَعْلَمْهُ اللّٰهُؕ وَ یَعْلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِؕ وَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ



অনুবাদ:    হে নবী! লোকদের জানিয়ে দাও, তোমাদের মনের মধ্যে যা কিছু আছে তাকে তোমরা লুকিয়ে রাখো বা প্রকাশ করো, আল্লাহ‌ তা জানেন। পৃথিবী ও আকাশের কোন কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে অবস্থান করছে না এবং তাঁর কর্তৃত্ব সবকিছুর ওপর পরিব্যাপ্ত।



(3:30)
یَوْمَ تَجِدُ كُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ مِنْ خَیْرٍ مُّحْضَرًا ﳝ  وَّ مَا عَمِلَتْ مِنْ سُوْٓءٍۚۛ تَوَدُّ لَوْ اَنَّ بَیْنَهَا وَ بَیْنَهٗۤ اَمَدًۢا بَعِیْدًاؕ وَ یُحَذِّرُكُمُ اللّٰهُ نَفْسَهٗؕ وَ اللّٰهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ۠



অনুবাদ:    সেদিন আসবে, যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের ফল সামনে উপস্থিত পাবে, তা ভালো কাজই হোক আর মন্দ কাজ। সেদিন মানুষ কামনা করবে, হায়! যদি এখনো এই দিন এর থেকে অনেক দূরে অবস্থান করতো! আল্লাহ‌ তোমাদেরকে তাঁর নিজের সত্ত্বার ভয় দেখাচ্ছেন। আর তিনি নিজের বান্দাদের গভীর শুভাকাঙ্খী।



(3:31)
قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوْنِیْ یُحْبِبْكُمُ اللّٰهُ وَ یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ



অনুবাদ:    হে নবী! লোকদের বলে দাওঃ “যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ‌কে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ‌ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।”



(3:32)
قُلْ اَطِیْعُوا اللّٰهَ وَ الرَّسُوْلَۚ فَاِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الْكٰفِرِیْنَ



অনুবাদ:    তাদেরকে বলোঃ আল্লাহ‌ ও রসূলের আনুগত্য করো। তারপর যদি তারা তোমাদের এ দাওয়াত গ্রহণ না করে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ‌ এমন লোকদের ভালোবাসবেন না, যারা তাঁর ও তাঁর রসূলদের আনুগত্য করতে অস্বীকার করে।



(3:33)
اِنَّ اللّٰهَ اصْطَفٰۤى اٰدَمَ وَ نُوْحًا وَّ اٰلَ اِبْرٰهِیْمَ وَ اٰلَ عِمْرٰنَ عَلَى الْعٰلَمِیْنَۙ



অনুবাদ:    আল্লাহ্‌ আদম, নূহ, ইবরাহীমের বংশধর ও ইমরানের বংশধরদেরকে সমগ্র বিশ্ববাসীর ওপর প্রাধান্য দিয়ে (তাঁর রিসালাতের জন্য) মনোনীত করেছিলেন।



(3:34)
ذُرِّیَّةًۢ بَعْضُهَا مِنْۢ بَعْضٍؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌۚ



অনুবাদ:    এরা সবাই একই ধারায় অন্তর্গত ছিল, একজনের উদ্ভব ঘটেছিল অন্যজনের বংশ থেকে। আল্লাহ‌ সবকিছু শোনেন ও জানেন।



(3:35)
اِذْ قَالَتِ امْرَاَتُ عِمْرٰنَ رَبِّ اِنِّیْ نَذَرْتُ لَكَ مَا فِیْ بَطْنِیْ مُحَرَّرًا فَتَقَبَّلْ مِنِّیْۚ اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ



অনুবাদ:    (তিনি তখন শুনছিলেন) যখন ইমরানের মহিলা বলছিলঃ “হে আমার রব! আমার পেটে এই যে সন্তানটি আছে এটি আমি তোমার জন্য নজরানা দিলাম, সে তোমার জন্য উৎসর্গীত হবে। আমার এই নজরানা কবুল করে নাও। তুমি সবকিছু শোনো ও জানো।”



(3:36)
فَلَمَّا وَضَعَتْهَا قَالَتْ رَبِّ اِنِّیْ وَضَعْتُهَاۤ اُنْثٰىؕ وَ اللّٰهُ اَعْلَمُ بِمَا وَضَعَتْؕ وَ لَیْسَ الذَّكَرُ كَالْاُنْثٰىۚ وَ اِنِّیْ سَمَّیْتُهَا مَرْیَمَ وَ اِنِّیْۤ اُعِیْذُهَا بِكَ وَ ذُرِّیَّتَهَا مِنَ الشَّیْطٰنِ الرَّجِیْمِ



অনুবাদ:    তারপর যখন সেই শিশু কন্যাটি তার ওখানে জন্ম নিল, সে বললোঃ “হে আমার প্রভু! আমার এখানে তো মেয়ে জন্ম নিয়েছে। অথচ সে যা প্রসব করেছিল তা আল্লাহ‌র জানাই ছিল।-আর পুত্র সন্তান কন্যা সন্তানের মতো হয় না। যা হোক আমি তার নাম রেখে দিলাম মারয়াম। আর আমি তাকে ও তার ভবিষ্যৎ বংশধরদেরকে অভিশপ্ত শয়তানের ফিতনা থেকে রক্ষার জন্য তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করছি।”



(3:37)
فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُوْلٍ حَسَنٍ وَّ اَنْۢبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنًاۙ وَّ كَفَّلَهَا زَكَرِیَّاؕ كُلَّمَا دَخَلَ عَلَیْهَا زَكَرِیَّا الْمِحْرَابَۙ وَجَدَ عِنْدَهَا رِزْقًاۚ قَالَ یٰمَرْیَمُ اَنّٰى لَكِ هٰذَاؕ قَالَتْ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللّٰهِؕ اِنَّ اللّٰهَ یَرْزُقُ مَنْ یَّشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ



অনুবাদ:    অবশেষে তার রব কন্যা সন্তানটিকে সন্তুষ্টি সহকারে কবুল করে নিলেন, তাকে খুব ভালো মেয়ে হিসেবে গড়ে তুললেন এবং যাকারিয়াকে বানিয়ে দিলেন তার অভিভাবক। যাকারিয়া যখনই তার কাছে মিহরাবে যেতো, তার কাছে কিছু না কিছু পানাহার সামগ্রী পেতো। জিজ্ঞেস করতোঃ “মারয়াম! এগুলো তোমরা কাছে কোথা থেকে এলো?” সে জবাব দিতোঃ আল্লাহ‌র কাছ থেকে এসেছে। আল্লাহ‌ যাকে চান, বেহিসেব দান করেন।



(3:38)
هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِیَّا رَبَّهٗۚ قَالَ رَبِّ هَبْ لِیْ مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّیَّةً طَیِّبَةًۚ اِنَّكَ سَمِیْعُ الدُّعَآءِ



অনুবাদ:    এ অবস্থা দেখে যাকারিয়া তার রবের কাছে প্রার্থনা করলোঃ “হে আমার রব! তোমার বিশেষ ক্ষমতা বলে আমাকে সৎ সন্তান দান করো। তুমিই প্রার্থনা শ্রবণকারী।”



(3:39)
فَنَادَتْهُ الْمَلٰٓئِكَةُ وَ هُوَ قَآئِمٌ یُّصَلِّیْ فِی الْمِحْرَابِۙ اَنَّ اللّٰهَ یُبَشِّرُكَ بِیَحْیٰى مُصَدِّقًۢا بِكَلِمَةٍ مِّنَ اللّٰهِ وَ سَیِّدًا وَّ حَصُوْرًا وَّ نَبِیًّا مِّنَ الصّٰلِحِیْنَ



অনুবাদ:    যখন তিনি মেহরাবে দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলেন তখন এর জবাবে তাকে ফেরেশতাগণ বললোঃ “আল্লাহ্‌ তোমাকে ইয়াহইয়ার সুসংবাদ দান করেছেন। সে আল্লাহ‌র পক্ষ থেকে একটি ফরমানের সত্যতা প্রমাণকারী হিসেবে আসবে। তার মধ্যে নেতৃত্ব ও সততার গুণাবলী থাকবে। সে পরিপূর্ণ সংযমী হবে, নবুওয়াতের অধিকারী হবে এবং সৎকর্মশীলদের মধ্যে গণ্য হবে।”



(3:40)
قَالَ رَبِّ اَنّٰى یَكُوْنُ لِیْ غُلٰمٌ وَّ قَدْ بَلَغَنِیَ الْكِبَرُ وَ امْرَاَتِیْ عَاقِرٌؕ قَالَ كَذٰلِكَ اللّٰهُ یَفْعَلُ مَا یَشَآءُ



অনুবাদ:    যাকারিয়া বললোঃ “হে আমার রব! আমার সন্তান হবে কেমন করে? আমি তো বুড়ো হয়ে গেছি এবং আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা।” জবাব এলোঃ “এমনটিই হবে। আল্লাহ্‌ যা চান তাই করেন।”



(3:41)
قَالَ رَبِّ اجْعَلْ لِّیْۤ اٰیَةًؕ قَالَ اٰیَتُكَ اَلَّا تُكَلِّمَ النَّاسَ ثَلٰثَةَ اَیَّامٍ اِلَّا رَمْزًاؕ وَ اذْكُرْ رَّبَّكَ كَثِیْرًا وَّ سَبِّحْ بِالْعَشِیِّ وَ الْاِبْكَارِ۠



অনুবাদ:    আরজ করলোঃ “হে প্রভু! তাহলে আমার জন্য কোন নিশানী ঠিক করে দাও।” জবাব দিলেনঃ “নিশানী হচ্ছে এই যে, তুমি তিন দিন পর্যন্ত মানুষের সাথে ইশারা-ইঙ্গিত ছাড়া কোন কথা বলবে না। এই সময়ে নিজের রবকে খুব বেশী করে ডাকো এবং সকাল সাঁঝে তাঁর ‘তাস্‌বীহ’ করতে থাকো।”



(3:42)
وَ اِذْ قَالَتِ الْمَلٰٓئِكَةُ یٰمَرْیَمُ اِنَّ اللّٰهَ اصْطَفٰىكِ وَ طَهَّرَكِ وَ اصْطَفٰىكِ عَلٰى نِسَآءِ الْعٰلَمِیْنَ



অনুবাদ:    তারপর এক সময় এলো, ফেরেশতারা মারয়ামের কাছে এসে বললোঃ “হে মারয়াম! আল্লাহ‌ তোমাকে মনোনীত করেছেন, তোমাকে পবিত্রতা দান করেছেন এবং সারা বিশ্বের নারী সমাজের মধ্যে তোমাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিজের সেবার জন্য বাছাই করে নিয়েছেন।



(3:43)
یٰمَرْیَمُ اقْنُتِیْ لِرَبِّكِ وَ اسْجُدِیْ وَ ارْكَعِیْ مَعَ الرّٰكِعِیْنَ



অনুবাদ:    হে মারয়াম! তোমার রবের ফরমানের অনুগত হয়ে থাকো। তাঁর সামনে সিজদাবনত হও এবং যেসব বান্দা তাঁর সামনে অবনত হয় তুমিও তাদের সাথে অবনত হও।”



(3:44)
ذٰلِكَ مِنْ اَنْۢبَآءِ الْغَیْبِ نُوْحِیْهِ اِلَیْكَؕ وَ مَا كُنْتَ لَدَیْهِمْ اِذْ یُلْقُوْنَ اَقْلَامَهُمْ اَیُّهُمْ یَكْفُلُ مَرْیَمَ۪ وَ مَا كُنْتَ لَدَیْهِمْ اِذْ یَخْتَصِمُوْنَ



অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এসব অদৃশ্য বিষয়ের খবর, অহীর মাধ্যমে আমি এগুলো তোমাকে জানাচ্ছি। অথচ তুমি তখন সেখানে ছিলে না, যখন হাইকেলের সেবায়েতরা মারয়ামের তত্ত্বাবধায়ক কে হবে একথার ফায়সালা করার জন্য নিজেদের কলম নিক্ষেপ করছিল। আর তুমি তখনো সেখানে ছিলে না যখন তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছিল।



(3:45)
اِذْ قَالَتِ الْمَلٰٓئِكَةُ یٰمَرْیَمُ اِنَّ اللّٰهَ یُبَشِّرُكِ بِكَلِمَةٍ مِّنْهُۙ اسْمُهُ الْمَسِیْحُ عِیْسَى ابْنُ مَرْیَمَ وَجِیْهًا فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ وَ مِنَ الْمُقَرَّبِیْنَۙ



অনুবাদ:    যখন ফেরেশতারা বললঃ “হে মারয়াম! আল্লাহ‌ তোমাকে তাঁর একটি ফরমানের সুসংবাদ দান করেছেন। তার নাম হবে মসীহ ঈসা ইবনে মারয়াম। সে দুনিয়ায় ও আখেরাতে সম্মানিত হবে। আল্লাহ‌র নৈকট্যলাভকারী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।



(3:46)
وَ یُكَلِّمُ النَّاسَ فِی الْمَهْدِ وَ كَهْلًا وَّ مِنَ الصّٰلِحِیْنَ



অনুবাদ:    দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সেও মানুষের সাথে কথা বলবে এবং সে হবে সৎব্যক্তিদের অন্যতম।”



(3:47)
قَالَتْ رَبِّ اَنّٰى یَكُوْنُ لِیْ وَلَدٌ وَّ لَمْ یَمْسَسْنِیْ بَشَرٌؕ قَالَ كَذٰلِكِ اللّٰهُ یَخْلُقُ مَا یَشَآءُؕ اِذَا قَضٰۤى اَمْرًا فَاِنَّمَا یَقُوْلُ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُ



অনুবাদ:    একথা শুনে মারয়াম বললোঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমার সন্তান কেমন করে হবে? আমাকে তো কোন পুরুষ স্পর্শও করেনি।” জবাব এলোঃ “এমনটিই হবে। আল্লাহ্‌ যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কোন কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন তখন কেবল এতটুকুই বলেন, হয়ে যাও, তাহলেই তা হয়ে যায়।”



(3:48)
وَ یُعَلِّمُهُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ التَّوْرٰىةَ وَ الْاِنْجِیْلَۚ



অনুবাদ:    (ফেরেশতারা আবার তাদের আগের কথার জের টেনে বললোঃ) “আর আল্লাহ‌ তাকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেবেন, তাওরাত ও ইনজীলের জ্ঞান দান করবেন



(3:49)
وَ رَسُوْلًا اِلٰى بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ  اَنِّیْ قَدْ جِئْتُكُمْ بِاٰیَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ      اَنِّیْۤ اَخْلُقُ لَكُمْ مِّنَ الطِّیْنِ كَهَیْــٴَـةِ الطَّیْرِ فَاَنْفُخُ فِیْهِ فَیَكُوْنُ طَیْرًۢا بِاِذْنِ اللّٰهِۚ وَ اُبْرِئُ الْاَكْمَهَ وَ الْاَبْرَصَ وَ اُحْیِ الْمَوْتٰى بِاِذْنِ اللّٰهِۚ وَ اُنَبِّئُكُمْ بِمَا تَاْكُلُوْنَ وَ مَا تَدَّخِرُوْنَۙ فِیْ بُیُوْتِكُمْؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَۚ



অনুবাদ:    এবং নিজের রসূল বানিয়ে ইসরাঈলদের কাছে পাঠাবেন।” (আর বনী ইসরাঈলদের কাছে রসূল হিসেবে এসে সে বললোঃ) “আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে নিশানী নিয়ে এসেছি। আমি তোমাদের সামনে মাটি থেকে পাখির আকৃতি বিশিষ্ট একটি মূর্তি তৈরী করছি এবং তাতে ফুৎকার দিচ্ছি, আল্লাহ‌র হুকুমে সেটি পাখি হয়ে যাবে। আল্লাহ‌র হুকুমে আমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে নিরাময় করি এবং মৃতকে জীবিত করি। আমি তোমাদের জানিয়ে দিচ্ছি, তোমরা নিজেদের গৃহে কি খাও ও কি মজুদ করো। এর মধ্যে তোমাদের জন্য যথেষ্ট নিশানী রয়েছে, যদি তোমরা ঈমানদার হও।



(3:50)
وَ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوْرٰىةِ وَ لِاُحِلَّ لَكُمْ بَعْضَ الَّذِیْ حُرِّمَ عَلَیْكُمْ وَ جِئْتُكُمْ بِاٰیَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ۫ فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِ



অনুবাদ:    আমি সেই শিক্ষা ও হিদায়াতের সত্যতা ঘোষণা করার জন্য এসেছি, যা বর্তমানে আমার যুগে তাওরাতে আছে। আর তোমাদের জন্য যেসব জিনিস হারাম ছিল তার কতকগুলো হালাল করার জন্য আমি এসেছি। দেখো, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে আমি নিশানী নিয়ে এসেছি। কাজেই আল্লাহ‌কে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।



(3:51)
اِنَّ اللّٰهَ رَبِّیْ وَ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوْهُؕ هٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِیْمٌ



অনুবাদ:    আল্লাহ্‌ আমার রব এবং তোমাদেরও রব। কাজেই তোমরা তাঁর বন্দেগী করো। এটিই সোজাপথ।”



(3:52)
فَلَمَّاۤ اَحَسَّ عِیْسٰى مِنْهُمُ الْكُفْرَ قَالَ مَنْ اَنْصَارِیْۤ اِلَى اللّٰهِؕ قَالَ الْحَوَارِیُّوْنَ نَحْنُ اَنْصَارُ اللّٰهِۚ اٰمَنَّا بِاللّٰهِۚ وَ اشْهَدْ بِاَنَّا مُسْلِمُوْنَ



অনুবাদ:    যখন ঈসা অনুভব করলো, ইসরাঈল কুফরী ও অস্বীকার করতে উদ্যোগী হয়েছে, সে বললোঃ “কে হবে আল্লাহ‌র পথে আমার সাহায্যকারী? হাওয়ারীগণ বললোঃ আমরা আল্লাহ‌র সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহ‌র প্রতি ঈমান এনেছি। সাক্ষী থাকো, আমরা মুসলিম (আল্লাহ্‌র সামনে আনুগত্যের শির নতকারী) ।



(3:53)
رَبَّنَاۤ اٰمَنَّا بِمَاۤ اَنْزَلْتَ وَ اتَّبَعْنَا الرَّسُوْلَ فَاكْتُبْنَا مَعَ الشّٰهِدِیْنَ



অনুবাদ:    হে আমাদের মালিক! তুমি যে ফরমান নাযিল করেছ, আমরা তা মেনে নিয়েছি এবং রসূলের আনুগত্য কবুল করে নিয়েছি। সাক্ষ্যদানকারীদের মধ্যে আমাদের নাম লিখে নিয়ো।”



(3:54)
وَ مَكَرُوْا وَ مَكَرَ اللّٰهُؕ وَ اللّٰهُ خَیْرُ الْمٰكِرِیْنَ۠



অনুবাদ:    তারপর বনী ইসরাঈল (ঈসার বিরুদ্ধে) গোপন চক্রান্ত করতে লাগলো। জবাবে আল্লাহ‌ও তাঁর গোপন কৌশল খাটালেন। আর আল্লাহ‌ শ্রেষ্ঠতম কুশলী।



(3:55)
اِذْ قَالَ اللّٰهُ یٰعِیْسٰۤى اِنِّیْ مُتَوَفِّیْكَ وَ رَافِعُكَ اِلَیَّ وَ مُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ جَاعِلُ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْكَ فَوْقَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اِلٰى یَوْمِ الْقِیٰمَةِۚ ثُمَّ اِلَیَّ مَرْجِعُكُمْ فَاَحْكُمُ بَیْنَكُمْ فِیْمَا كُنْتُمْ فِیْهِ تَخْتَلِفُوْنَ



অনুবাদ:    (এটি আল্লাহ‌রই একটি গোপন কৌশল ছিল) যখন তিনি বললেনঃ “হে ঈসা! এখন আমি তোমাকে ফিরিয়ে নেবো এবং তোমাকে আমার নিজের দিকে উঠিয়ে নেবো। আর যারা তোমাকে অস্বীকার করেছে তাদের থেকে (অর্থাৎ তাদের সঙ্গ এবং তাদের পূতিগন্ধময় পরিবেশে তাদের সঙ্গে থাকা থেকে) তোমাকে পবিত্র করে দেবো এবং তোমাকে যারা অস্বীকার করেছে তাদের ওপর তোমার অনুসারীদের কিয়ামত পর্যন্ত প্রাধান্য দান করবো। তারপর তোমাদের সবাইকে অবশেষে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে। সে সময় আমি তোমাদের মধ্যে যেসব বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোর মীমাংসা করে দেবো।



(3:56)
فَاَمَّا الَّذِیْنَ كَفَرُوْا فَاُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا شَدِیْدًا فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ٘ وَ مَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَ



অনুবাদ:    যারা কুফরী ও অস্বীকার করার নীতি অবলম্বন করেছে তাদেরকে দুনিয়ায় ও আখেরাতে উভয় স্থানে কঠোর শাস্তি দেবো এবং তারা কোন সাহায্যকারী পাবে না।



(3:57)
وَ اَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فَیُوَفِّیْهِمْ اُجُوْرَهُمْؕ وَ اللّٰهُ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیْنَ



অনুবাদ:    আর যারা ঈমান ও সৎকাজ করার নীতি অবলম্বন করেছে, তাদেরকে তাদের পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে। ভালো করেই জেনে রাখো আল্লাহ‌ জালেমদের কখনোই ভালোবাসেন না।”



(3:58)
ذٰلِكَ نَتْلُوْهُ عَلَیْكَ مِنَ الْاٰیٰتِ وَ الذِّكْرِ الْحَكِیْمِ



অনুবাদ:    এই আয়াত ও জ্ঞানগর্ভ আলোচনা আমি তোমাকে শুনাচ্ছি।



(3:59)
اِنَّ مَثَلَ عِیْسٰى عِنْدَ اللّٰهِ كَمَثَلِ اٰدَمَؕ خَلَقَهٗ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُ



অনুবাদ:    আল্লাহ্‌র কাছে ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের মতো। কেননা আল্লাহ‌ তাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেন এবং হুকুম দেন, হয়ে যাও, আর তা হয়ে যায়।



(3:60)
اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَلَا تَكُنْ مِّنَ الْمُمْتَرِیْنَ



অনুবাদ:    এ প্রকৃত সত্য তোমার রবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। কাজেই তুমি সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।



(3:61)
فَمَنْ حَآجَّكَ فِیْهِ مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ اَبْنَآءَنَا وَ اَبْنَآءَكُمْ وَ نِسَآءَنَا وَ نِسَآءَكُمْ وَ اَنْفُسَنَا وَ اَنْفُسَكُمْ  ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَلْ لَّعْنَتَ اللّٰهِ عَلَى الْكٰذِبِیْنَ



অনুবাদ:    এই জ্ঞান এসে যাওয়ার পর এখন যে কেউ এ ব্যাপারে তোমার সাথে ঝগড়া করে, হে মুহাম্মাদ! তাকে বলে দাওঃ “এসো আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রগণকে এবং তোমাদের পুত্রগণকে। আর আমাদের নারীদেরকে এবং তোমাদের নারীদেরকে আর আমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের নিজেদেরকে; তারপর আল্লাহ‌র কাছে এই মর্মে দোয়া করি যে, যে মিথ্যাবাদী হবে তার ওপর আল্লাহ‌র লানত বর্ষিত হোক।”



(3:62)
اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الْقَصَصُ الْحَقُّۚ وَ مَا مِنْ اِلٰهٍ اِلَّا اللّٰهُؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ



অনুবাদ:    নিঃসন্দেহে এটা নির্ভুল সত্য বৃত্তান্ত। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ‌ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আর আল্লাহ‌র সত্ত্বা প্রবল পরাক্রান্ত এবং তার জ্ঞান ও কর্মকৌশল সমগ্র বিশ্ব ব্যবস্থায় সক্রিয়।



(3:63)
فَاِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌۢ بِالْمُفْسِدِیْنَ۠



অনুবাদ:    কাজেই এরা যদি (এই শর্তে মোকাবিলায় আসার ব্যাপারে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে (তারা যে ফাসাদকারী একথা পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং) আল্লাহ‌ অবশ্যই ফাসাদকারীদের অবস্থা ভালো করেই জানেন।



(3:64)
قُلْ یٰۤاَهْلَ الْكِتٰبِ تَعَالَوْا اِلٰى كَلِمَةٍ سَوَآءٍۭ بَیْنَنَا وَ بَیْنَكُمْ اَلَّا نَعْبُدَ اِلَّا اللّٰهَ وَ لَا نُشْرِكَ بِهٖ شَیْــٴًـا وَّ لَا یَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا اَرْبَابًا مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِؕ فَاِنْ تَوَلَّوْا فَقُوْلُوا اشْهَدُوْا بِاَنَّا مُسْلِمُوْنَ



অনুবাদ:    বলঃ হে আহলি কিতাব! এসো এমন একটি কথার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই ধরনের। তা হচ্ছেঃ আমরা আল্লাহ‌ ছাড়া কারোর বন্দেগী ও দাসত্ব করবো না। তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবো না। আর আমাদের কেউ আল্লাহ‌ ছাড়া আর কাউকেও নিজের রব হিসেবে গ্রহণ করবে না। যদি তারা এ দাওয়াত গ্রহণ করতে প্রস্তুত না হয়, তাহলে পরিষ্কার বলে দাওঃ “তোমরা সাক্ষী থাকো, আমরা অবশ্যই মুসলিম (একমাত্র আল্লাহ‌র বন্দেগী ও আনুগত্যকারী)।”



(3:65)
یٰۤاَهْلَ الْكِتٰبِ لِمَ تُحَآجُّوْنَ فِیْۤ اِبْرٰهِیْمَ وَ مَاۤ اُنْزِلَتِ التَّوْرٰىةُ وَ الْاِنْجِیْلُ اِلَّا مِنْۢ بَعْدِهٖؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ



অনুবাদ:    হে আহলি কিতাব! তোমরা ইব্রাহীমের ব্যাপারে আমার সাথে ঝগড়া করছো কেন? তাওরাত ও ইঞ্জিল তো ইব্রাহীমের পরে নাযিল হয়েছে। তাহলে তোমরা কি এতটুকু কথাও বুঝো না?



(3:66)
هٰۤاَنْتُمْ هٰۤؤُلَآءِ حَاجَجْتُمْ فِیْمَا لَكُمْ بِهٖ عِلْمٌ فَلِمَ تُحَآجُّوْنَ فِیْمَا لَیْسَ لَكُمْ بِهٖ عِلْمٌؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ وَ اَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ



অনুবাদ:    -তোমরা যেসব বিষয়ের জ্ঞান রাখো সেগুলোর ব্যাপারে বেশ বিতর্ক করলে, এখন আবার সেগুলোর ব্যাপারে বিতর্ক করতে চললে কেন যেগুলোর কোন জ্ঞান তোমাদের নেই?-আল্লাহ্‌ জানেন কিন্তু তোমরা জানো না।



(3:67)
مَا كَانَ اِبْرٰهِیْمُ یَهُوْدِیًّا وَّ لَا نَصْرَانِیًّا وَّ لٰكِنْ كَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًاؕ وَ مَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ



অনুবাদ:    ইব্রাহীম ইহুদী ছিল না, খৃস্টানও ছিল না বরং সে তো ছিল একজন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং সে কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।



(3:68)
اِنَّ اَوْلَى النَّاسِ بِاِبْرٰهِیْمَ لَلَّذِیْنَ اتَّبَعُوْهُ وَ هٰذَا النَّبِیُّ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْاؕ وَ اللّٰهُ وَلِیُّ الْمُؤْمِنِیْنَ



অনুবাদ:    ইব্রাহীমের যারা অনুসরণ করেছে তারাই তাঁর সাথে ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক রাখার অধিকারী। আর এখন এই নবী এবং এর ওপর যারা ঈমান এনেছে তারাই এই সম্পর্ক রাখার বেশী অধিকারী। আল্লাহ‌ কেবল তাদেরই সমর্থক ও সাহায্যকারী যারা ঈমান এনেছে।



(3:69)
وَدَّتْ طَّآئِفَةٌ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ یُضِلُّوْنَكُمْؕ وَ مَا یُضِلُّوْنَ اِلَّاۤ اَنْفُسَهُمْ وَ مَا یَشْعُرُوْنَ



অনুবাদ:    (হে ঈমানদারগণ!) আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে একটি দল যে কোন রকমে তোমাদের সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত করতে চায়। অথচ তারা নিজেদের ছাড়া আর কাউকেই বিপথগামী করছে না। কিন্তু তারা এটা উপলব্ধি করে না।



(3:70)
یٰۤاَهْلَ الْكِتٰبِ لِمَ تَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ اَنْتُمْ تَشْهَدُوْنَ



অনুবাদ:    হে আহলি কিতাব! কেন আল্লাহ‌র আয়াত অস্বীকার করছো, অথচ তোমরা নিজেরাই তা প্রত্যক্ষ করছো?



(3:71)
یٰۤاَهْلَ الْكِتٰبِ لِمَ تَلْبِسُوْنَ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَ تَكْتُمُوْنَ الْحَقَّ وَ اَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ۠



অনুবাদ:    হে আহলি কিতাব! কেন সত্যের গায়ে মিথ্যার প্রলেপ লাগিয়ে তাকে সন্দেহযুক্ত করে তুলছো? কেন জেনে বুঝে সত্যকে গোপন করছো?



(3:72)
وَ قَالَتْ طَّآئِفَةٌ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ اٰمِنُوْا بِالَّذِیْۤ اُنْزِلَ عَلَى الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَجْهَ النَّهَارِ وَ اكْفُرُوْۤا اٰخِرَهٗ لَعَلَّهُمْ یَرْجِعُوْنَۚۖ



অনুবাদ:    আহলি কিতাবদের একটি দল বলে, এই নবীকে যারা মেনে নিয়েছে তাদের ওপর যা কিছু নাযিল হয়েছে, তার প্রতি তোমরা সকাল বেলায় ঈমান আনো এবং সাঁঝের বেলায় তা অস্বীকার করো। সম্ভবত এই উপায়ে এই লোকেরা নিজেদের ঈমান থেকে ফিরে যাবে।



(3:73)
وَ لَا تُؤْمِنُوْۤا اِلَّا لِمَنْ تَبِـعَ دِیْنَكُمْؕ قُلْ اِنَّ الْهُدٰى هُدَى اللّٰهِۙ اَنْ یُّؤْتٰۤى اَحَدٌ مِّثْلَ مَاۤ اُوْتِیْتُمْ اَوْ یُحَآجُّوْكُمْ عِنْدَ رَبِّكُمْؕ قُلْ اِنَّ الْفَضْلَ بِیَدِ اللّٰهِۚ یُؤْتِیْهِ مَنْ یَّشَآءُؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌۚۙ



অনুবাদ:    তাছাড়া এই লোকেরা পরস্পর বলাবলি করে, নিজের ধর্মের লোক ছাড়া আর কারো কথা মেনে নিয়ো না। হে নবী! এদের বলে দাও, “আল্লাহ্‌র হিদায়াতই তো আসল হিদায়াত এবং এটা তো তাঁরই নীতি যে, এক সময় যা তোমাদের দেয়া হয়েছিল, তাই অন্য একজনকে দেয়া হবে অথবা অন্যেরা তোমাদের রবের কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে পেশ করার জন্য শক্তিশালী প্রমাণ পেয়ে যাবে।” হে নবী! তাদের বলে দাও, “অনুগ্রহ ও মর্যাদা আল্লাহ‌র ইখতিয়ারভুক্ত, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। তিনি ব্যাপক দৃষ্টির অধিকারী



(3:74)
یَّخْتَصُّ بِرَحْمَتِهٖ مَنْ یَّشَآءُؕ وَ اللّٰهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِیْمِ



অনুবাদ:    এবং সবকিছু জানেন। নিজের রহমতের জন্য তিনি যাকে চান নির্ধারিত করে নেন এবং তাঁর অনুগ্রহ বিশাল ব্যাপ্তির অধিকারী।”



(3:75)
وَ مِنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ مَنْ اِنْ تَاْمَنْهُ بِقِنْطَارٍ یُّؤَدِّهٖۤ اِلَیْكَۚ وَ مِنْهُمْ مَّنْ اِنْ تَاْمَنْهُ بِدِیْنَارٍ لَّا یُؤَدِّهٖۤ اِلَیْكَ اِلَّا مَا دُمْتَ عَلَیْهِ قَآئِمًاؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْا لَیْسَ عَلَیْنَا فِی الْاُمِّیّٖنَ سَبِیْلٌۚ وَ یَقُوْلُوْنَ عَلَى اللّٰهِ الْكَذِبَ وَ هُمْ یَعْلَمُوْنَ



অনুবাদ:    আহলি কিতাবদের মধ্যে কেউ এমন আছে, তার ওপর আস্থাস্থাপন করে যদি তাকে সম্পদের স্তূপ দান করো, তাহলেও সে তোমার সম্পদ তোমাকে ফিরিয়ে দেবে। আবার তাদের কারো অবস্থা এমন যে, যদি তুমি তার ওপর একটি মাত্র দীনারের ব্যাপারেও আস্থাস্থাপন করো, তাহলে সে তা তোমাকে ফিরিয়ে দেবে না, তবে যদি তোমরা তার ওপর চড়াও হয়ে যাও। তাদের এই নৈতিক অবস্থার কারণ হচ্ছে এই যে, তারা বলেঃ “নিরক্ষরদের (অ–ইহুদী) ব্যাপারে আমাদের কোন দায়দায়িত্ব নেই।” আর এটা একটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট কথা তারা আল্লাহ‌র প্রতি আরোপ করছে। অথচ তারা জানে, (আল্লাহ্‌ এমন কোন কথা বলেননি। )



(3:76)
بَلٰى مَنْ اَوْفٰى بِعَهْدِهٖ وَ اتَّقٰى فَاِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُتَّقِیْنَ



অনুবাদ:    আচ্ছা, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না কেন? যে ব্যক্তিই তার অঙ্গীকার পূর্ণ করবে এবং অসৎকাজ থেকে দূরে থাকবে, সে আল্লাহ‌র প্রিয়ভাজন হবে। কারণ আল্লাহ‌ মুত্তাকীদের ভালোবাসেন।



(3:77)
اِنَّ الَّذِیْنَ یَشْتَرُوْنَ بِعَهْدِ اللّٰهِ وَ اَیْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِیْلًا أُولَٰئِكَ لَا خَلَاقَ لَهُمْ فِی الْاٰخِرَةِ وَ لَا یُكَلِّمُهُمُ اللّٰهُ وَ لَا یَنْظُرُ اِلَیْهِمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ وَ لَا یُزَكِّیْهِمْ۪ وَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ



অনুবাদ:    আর যারা আল্লাহ‌র সাথে করা অঙ্গীকার ও নিজেদের শপথ সামান্য দামে বিকিয়ে দেয়, তাদের জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ‌ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পাক–পবিত্রও করবেন না। বরং তাদের জন্য রয়েছে কঠোর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।



(3:78)
وَ اِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِیْقًا یَّلْوٗنَ اَلْسِنَتَهُمْ بِالْكِتٰبِ لِتَحْسَبُوْهُ مِنَ الْكِتٰبِ وَ مَا هُوَ مِنَ الْكِتٰبِۚ وَ یَقُوْلُوْنَ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللّٰهِ وَ مَا هُوَ مِنْ عِنْدِ اللّٰهِۚ وَ یَقُوْلُوْنَ عَلَى اللّٰهِ الْكَذِبَ وَ هُمْ یَعْلَمُوْنَ



অনুবাদ:    তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে, তারা কিতাব পড়ার সময় এমনভাবে জিভ ওলট পালট করে যে, তোমরা মনে করতে থাকো, তারা কিতাবেরই ইবারত পড়ছে, অথচ তা কিতাবের ইবারত নয়। তারা বলে, যা কিছু আমরা পড়ছি, তা আল্লাহ‌র কাছ থেকেই পাওয়া অথচ তা আল্লাহ‌র কাছ থেকে পাওয়া নয়, তারা জেনে বুঝে আল্লাহ‌র ওপর মিথ্যা আরোপ করে।



(3:79)
مَا كَانَ لِبَشَرٍ اَنْ یُّؤْتِیَهُ اللّٰهُ الْكِتٰبَ وَ الْحُكْمَ وَ النُّبُوَّةَ ثُمَّ یَقُوْلَ لِلنَّاسِ كُوْنُوْا عِبَادًا لِّیْ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَ لٰكِنْ كُوْنُوْا رَبّٰنِیّٖنَ بِمَا كُنْتُمْ تُعَلِّمُوْنَ الْكِتٰبَ وَ بِمَا كُنْتُمْ تَدْرُسُوْنَۙ



অনুবাদ:    কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ‌ কিতাব, হিকমত ও নবুওয়াত দান করবেন আর সে লোকদের বলে বেড়াবে, তোমরা আল্লাহ‌র পরিবর্তে আমার দাস হয়ে যাও, এটা তার জন্য শোভনীয় নয়। সে তো একথাই বলবে, তোমরা খাঁটি রব্বানী হয়ে যাও, যেমন এই কিতাবের দাবী, যা তোমরা পড়ো এবং অন্যদের পড়াও।



(3:80)
وَ لَا یَاْمُرَكُمْ اَنْ تَتَّخِذُوا الْمَلٰٓئِكَةَ وَ النَّبِیّٖنَ اَرْبَابًاؕ اَیَاْمُرُكُمْ بِالْكُفْرِ بَعْدَ اِذْ اَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ۠



অনুবাদ:    তারা তোমাদের কখনো বলবে না, ফেরেশতা বা নবীদেরকে তোমাদের রব হিসেবে গ্রহণ করো। তোমরা যখন মুসলিম তখন তোমাদেরকে কুফরীর হুকুম দেয়া একজন নবীর পক্ষে কি সম্ভব?



(3:81)
وَ اِذْ اَخَذَ اللّٰهُ مِیْثَاقَ النَّبِیّٖنَ لَمَاۤ اٰتَیْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّ حِكْمَةٍ ثُمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَ لَتَنْصُرُنَّهٗؕ قَالَ ءَاَقْرَرْتُمْ وَ اَخَذْتُمْ عَلٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِیْؕ قَالُوْۤا اَقْرَرْنَاؕ قَالَ فَاشْهَدُوْا وَ اَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِیْنَ



অনুবাদ:    স্মরণ করো, যখন আল্লাহ‌ নবীদের থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, “আজ আমি তোমাদের কিতাব ও হিকমত দান করেছি, কাল যদি অন্য একজন রসূল এই শিক্ষার সত্যতা ঘোষণা করে তোমাদের কাছে আসে, যা আগে থেকেই তোমাদের কাছে আছে, তাহলে তোমাদের তার প্রতি ঈমান আনতে হবে এবং তাকে সাহায্য করতে হবে।” এই বক্তব্য উপস্থাপন করার পর আল্লাহ‌ জিজ্ঞেস করেনঃ “তোমরা কি এ কথার স্বীকৃতি দিচ্ছো এবং আমার পক্ষ থেকে অঙ্গীকারের গুরুদায়িত্ব বহন করতে প্রস্তুত আছো?” তারা বললো, হ্যাঁ, আমরা স্বীকার করলাম। আল্লাহ্‌ বললেনঃ “আচ্ছা, তাহলে তোমরা সাক্ষী থাকো এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী থাকলাম,



(3:82)
فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ



অনুবাদ:    এরপর যারাই এ অঙ্গীকার ভঙ্গ করবে তারাই হবে ফাসেক।”



(3:83)
اَفَغَیْرَ دِیْنِ اللّٰهِ یَبْغُوْنَ وَ لَهٗۤ اَسْلَمَ مَنْ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ طَوْعًا وَّ كَرْهًا وَّ اِلَیْهِ یُرْجَعُوْنَ



অনুবাদ:    এখন কি এরা আল্লাহ‌র আনুগত্যের পথ (আল্লাহ্‌র দ্বীন) ত্যাগ করে অন্য কোন পথের সন্ধান করছে? অথচ আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছুই স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আল্লাহ‌র হুকুমের অনুগত (মুসলিম) এবং তাঁরই দিকে সবাইকে ফিরে যেতে হবে।



(3:84)
قُلْ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ مَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْنَا وَ مَاۤ اُنْزِلَ عَلٰۤى اِبْرٰهِیْمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ وَ الْاَسْبَاطِ وَ مَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰى وَ عِیْسٰى وَ النَّبِیُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْ۪ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ٘ وَ نَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ



অনুবাদ:    হে নবী! বলোঃ “আমরা আল্লাহ‌কে মানি, আমাদের ওপর অবতীর্ণ শিক্ষাকে মানি, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও ইয়াকূব সন্তানদের ওপর অবতীর্ণ শিক্ষাকেও মানি এবং মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীদেরকে তাদের রবের পক্ষ থেকে যে হিদায়াত দান করা হয় তার উপরও ঈমান রাখি। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না এবং আল্লাহ‌র হুকুমের অনুগত (মুসলিম)।”



(3:85)
وَ مَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْهُۚ وَ هُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ



অনুবাদ:    এ আনুগত্য (ইসলাম) ছাড়া যে ব্যক্তি অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে চায় তার সে পদ্ধতি কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ব্যর্থ, আশাহত ও বঞ্চিত।



(3:86)
كَیْفَ یَهْدِی اللّٰهُ قَوْمًا كَفَرُوْا بَعْدَ اِیْمَانِهِمْ وَ شَهِدُوْۤا اَنَّ الرَّسُوْلَ حَقٌّ وَّ جَآءَهُمُ الْبَیِّنٰتُؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ



অনুবাদ:    ঈমানের নিয়ামত একবার লাভ করার পর পুনরায় যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে, তাদেরকে আল্লাহ‌ হিদায়াত দান করবেন, এটা কেমন করে সম্ভব হতে পারে? অথচ তারা নিজেরা সাক্ষ্য দিয়েছে যে, রসূল সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তার কাছে উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহও এসেছে। আল্লাহ্‌ জালেমদের হিদায়াত দান করেন না।



(3:87)
أُولَٰئِكَ جَزَآؤُهُمْ اَنَّ عَلَیْهِمْ لَعْنَةَ اللّٰهِ وَ الْمَلٰٓئِكَةِ وَ النَّاسِ اَجْمَعِیْنَۙ



অনুবাদ:    তাদের ওপর আল্লাহ‌, ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের লানত, এটিই হচ্ছে তাদের জুলুমের সঠিক প্রতিদান।



(3:88)
خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۚ لَا یُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَ لَا هُمْ یُنْظَرُوْنَۙ



অনুবাদ:    এই অবস্থায় তারা চিরদিন থাকবে। তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না এবং তাদের বিরামও দেয়া হবে না।



(3:89)
اِلَّا الَّذِیْنَ تَابُوْا مِنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ وَ اَصْلَحُوْا۫ فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ



অনুবাদ:    তবে যারা তাওবা করে নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন করে নেয় তারা এর হাত থেকে রেহাই পাবে। আল্লাহ‌ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।



(3:90)
اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا بَعْدَ اِیْمَانِهِمْ ثُمَّ ازْدَادُوْا كُفْرًا لَّنْ تُقْبَلَ تَوْبَتُهُمْۚ وَ أُولَٰئِكَ هُمُ الضَّآلُّوْنَ



অনুবাদ:    কিন্তু যারা ঈমান আনার পর আবার কুফরী অবলম্বন করে তারপর নিজেদের কুফরীর মধ্যে এগিয়ে যেতে থাকে, তাদের তাওবা কবুল হবে না। এ ধরনের লোকেরা তো চরম পথভ্রষ্ট।



(3:91)
اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ مَاتُوْا وَ هُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْ اَحَدِهِمْ مِّلْءُ الْاَرْضِ ذَهَبًا وَّ لَوِ افْتَدٰى بِهٖؕ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ وَّ مَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَ۠



অনুবাদ:    নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, যারা কুফরী অবলম্বন করেছে এবং কুফরীর অবস্থায় জীবন দিয়েছে, তাদের মধ্য থেকে কেউ যদি নিজেকে শাস্তি থেকে বাঁচাবার জন্য সারা পৃথিবীটাকে স্বর্ণে পরিপূর্ণ করে বিনিময় স্বরূপ পেশ করে তাহলেও তা গ্রহণ করা হবে না। এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এবং তারা নিজেদের জন্য কোন সাহায্যকারীও পাবে না।



(3:92)
لَنْ  تَنَالُوا  الْبِرَّ  حَتّٰى  تُنْفِقُوْا  مِمَّا  تُحِبُّوْنَ  ﱟ  وَ  مَا  تُنْفِقُوْا  مِنْ  شَیْءٍ  فَاِنَّ  اللّٰهَ  بِهٖ  عَلِیْمٌ



অনুবাদ:    তোমরা নেকী অর্জন করতে পারো না যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় বস্তুগুলো (আল্লাহ্‌র পথে) ব্যয় করো। আর তোমরা যা ব্যয় করবে আল্লাহ‌ তা থেকে বেখবর থাকবেন না।



(3:93)
كُلُّ  الطَّعَامِ  كَانَ  حِلًّا  لِّبَنِیْۤ  اِسْرَآءِیْلَ  اِلَّا  مَا  حَرَّمَ  اِسْرَآءِیْلُ  عَلٰى  نَفْسِهٖ  مِنْ  قَبْلِ  اَنْ  تُنَزَّلَ  التَّوْرٰىةُؕ قُلْ  فَاْتُوْا  بِالتَّوْرٰىةِ  فَاتْلُوْهَاۤ  اِنْ  كُنْتُمْ  صٰدِقِیْنَ



অনুবাদ:    এসব খাদ্যবস্তু (শরীয়াতে মুহাম্মাদীতে যেগুলো হালাল) বনী ইসরাঈলদের জন্যও হালাল ছিল। তবে এমন কিছু বস্তু ছিল যেগুলোকে তাওরাত নাযিল হবার পূর্বে বনী ইসরাঈল নিজেই নিজের জন্য হারাম করে নিয়েছিল। তাদেরকে বলে দাও, যদি তোমরা (নিজেদের আপত্তির ব্যাপারে) সত্যবাদী হয়ে থাকো, তাহলে তাওরাত নিয়ে এসো এবং তার কোন বাক্য পেশ করো।



(3:94)
فَمَنِ  افْتَرٰى  عَلَى  اللّٰهِ  الْكَذِبَ  مِنْۢ  بَعْدِ  ذٰلِكَ  فَأُولَٰئِكَ  هُمُ  الظّٰلِمُوْنَ



অনুবাদ:    এরপরও যারা নিজেদের মিথ্যা মনগড়া কথা আল্লাহ‌র প্রতি আরোপ করতে থাকবে তারাই আসলে জালেম।



(3:95)
قُلْ  صَدَقَ  اللّٰهُ۫ فَاتَّبِعُوْا  مِلَّةَ  اِبْرٰهِیْمَ  حَنِیْفًاؕ وَ  مَا  كَانَ  مِنَ  الْمُشْرِكِیْنَ



অনুবাদ:    বলে দাও, আল্লাহ‌ যা কিছু বলেছেন, সত্য বলেছেন। কাজেই তোমাদের একাগ্রচিত্তে ও একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের পদ্ধতির অনুসরণ করা উচিত। আর ইব্রাহীম শিরককারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।



(3:96)
اِنَّ  اَوَّلَ  بَیْتٍ  وُّضِعَ  لِلنَّاسِ   لَلَّذِیْ  بِبَكَّةَ  مُبٰرَكًا  وَّ  هُدًى  لِّلْعٰلَمِیْنَۚ



অনুবাদ:    নিঃসন্দেহে মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ইবাদাত গৃহটি নির্মিত হয় সেটি মক্কায় অবস্থিত। তাকে কল্যাণ ও বরকত দান করা হয়েছিল এবং সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য হিদায়াতের কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছিল।



(3:97)
فِیْهِ  اٰیٰتٌۢ  بَیِّنٰتٌ  مَّقَامُ  اِبْرٰهِیْمَ  ﳛ  وَ  مَنْ  دَخَلَهٗ  كَانَ  اٰمِنًاؕ وَ  لِلّٰهِ  عَلَى  النَّاسِ   حِجُّ  الْبَیْتِ  مَنِ  اسْتَطَاعَ  اِلَیْهِ  سَبِیْلًاؕ وَ  مَنْ  كَفَرَ  فَاِنَّ  اللّٰهَ  غَنِیٌّ  عَنِ  الْعٰلَمِیْنَ



অনুবাদ:    তার মধ্যে রয়েছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ এবং ইব্রাহীমের ইবাদাতের স্থান। আর তার অবস্থা হচ্ছে এই যে, যে তার মধ্যে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। মানুষের মধ্য থেকে যারা সেখানে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন এই গৃহের হজ্ব সম্পন্ন করে, এটি তাদের ওপর আল্লাহ‌র অধিকার। আর যে ব্যক্তি এ নির্দেশ মেনে চলতে অস্বীকার করে তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ‌ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন।



(3:98)
قُلْ  یٰۤاَهْلَ  الْكِتٰبِ  لِمَ  تَكْفُرُوْنَ  بِاٰیٰتِ  اللّٰهِ    ط    وَ  اللّٰهُ  شَهِیْدٌ  عَلٰى  مَا  تَعْمَلُوْنَ



অনুবাদ:    বলো, হে আহলি কিতাব! তোমরা কেন আল্লাহ‌র কথা মানতে অস্বীকার করছো? তোমরা যেসব কাজ কারবার করছো, আল্লাহ‌ তা সবই দেখছেন।



(3:99)
قُلْ  یٰۤاَهْلَ  الْكِتٰبِ  لِمَ  تَصُدُّوْنَ  عَنْ  سَبِیْلِ  اللّٰهِ  مَنْ  اٰمَنَ  تَبْغُوْنَهَا  عِوَجًا  وَّ  اَنْتُمْ  شُهَدَآءُؕ وَ  مَا  اللّٰهُ  بِغَافِلٍ  عَمَّا  تَعْمَلُوْنَ



অনুবাদ:    বলো, হে আহলি কিতাব! তোমরা এ কেমন কর্মনীতি অবলম্বন করেছো, যে ব্যক্তি আল্লাহ‌র কথা মানে তাকে তোমরা আল্লাহ‌র পথ থেকে বিরত রাখো এবং সে যেন বাঁকা পথে চলে এই কামনা করে থাকো? অথচ তোমরা নিজেরাই তার (সত্য পথাশ্রয়ী হবার) সাক্ষী। তোমরা যা কিছু করছো সে সম্পর্কে আল্লাহ‌ গাফিল নন।



(3:100)
یٰۤاَیُّهَا  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوْۤا  اِنْ  تُطِیْعُوْا  فَرِیْقًا  مِّنَ  الَّذِیْنَ  اُوْتُوا  الْكِتٰبَ  یَرُدُّوْكُمْ  بَعْدَ  اِیْمَانِكُمْ  كٰفِرِیْنَ



অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা এই আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে একটি দলের কথা মানো, তাহলে তারা তোমাদের ঈমান থেকে কুফরীর দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।



(3:101)
وَ  كَیْفَ  تَكْفُرُوْنَ  وَ  اَنْتُمْ  تُتْلٰى  عَلَیْكُمْ  اٰیٰتُ  اللّٰهِ  وَ  فِیْكُمْ  رَسُوْلُهٗؕ وَ  مَنْ  یَّعْتَصِمْ  بِاللّٰهِ  فَقَدْ  هُدِیَ  اِلٰى  صِرَاطٍ  مُّسْتَقِیْمٍ۠



অনুবাদ:    তোমাদের জন্যে কুফরীর দিকে ফিরে যাবার এখন আর কোন্‌ সুযোগটি আছে, যখন তোমাদের শুনানো হচ্ছে আল্লাহ‌র আয়াত এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ‌র রসূল? যে ব্যক্তি আল্লাহ‌কে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরবে, সে অবশ্যই সত্য সঠিক পথ লাভ করবে।



(3:102)
یٰۤاَیُّهَا  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوا  اتَّقُوا  اللّٰهَ  حَقَّ  تُقٰتِهٖ  وَ  لَا  تَمُوْتُنَّ  اِلَّا  وَ  اَنْتُمْ  مُّسْلِمُوْنَ



অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহ‌কে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়।



(3:103)
وَ  اعْتَصِمُوْا  بِحَبْلِ  اللّٰهِ  جَمِیْعًا  وَّ  لَا  تَفَرَّقُوْا۪ وَ  اذْكُرُوْا  نِعْمَتَ  اللّٰهِ  عَلَیْكُمْ  اِذْ  كُنْتُمْ  اَعْدَآءً  فَاَلَّفَ  بَیْنَ  قُلُوْبِكُمْ  فَاَصْبَحْتُمْ  بِنِعْمَتِهٖۤ  اِخْوَانًاۚ وَ  كُنْتُمْ  عَلٰى  شَفَا  حُفْرَةٍ  مِّنَ  النَّارِ  فَاَنْقَذَكُمْ  مِّنْهَاؕ كَذٰلِكَ  یُبَیِّنُ  اللّٰهُ  لَكُمْ  اٰیٰتِهٖ  لَعَلَّكُمْ  تَهْتَدُوْنَ



অনুবাদ:    তোমরা সবাই মিলে আল্লাহ‌র রুজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং দলাদলি করো না। আল্লাহ‌ তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন সে কথা স্মরণ রেখো। তোমরা ছিলে পরস্পরের শত্রু। তিনি তোমাদের হৃদয়গুলো জুড়ে দিয়েছেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহ ও মেহেরবানীতে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেছো। তোমরা একটি অগ্নিকুণ্ডের কিনারে দাঁড়িয়ে ছিলে। আল্লাহ‌ সেখান থেকে তোমাদের বাঁচিয়ে নিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ‌ তাঁর নির্দশনসমূহ তোমাদের সামনে সুস্পষ্ট করে তুলেন। হয়তো এই নিদর্শনগুলোর মাধ্যমে তোমরা নিজেদের কল্যাণের সোজা সরল পথ দেখতে পাবে।



(3:104)
وَ  لْتَكُنْ  مِّنْكُمْ  اُمَّةٌ  یَّدْعُوْنَ  اِلَى  الْخَیْرِ  وَ  یَاْمُرُوْنَ  بِالْمَعْرُوْفِ  وَ  یَنْهَوْنَ  عَنِ  الْمُنْكَرِؕ وَ  أُولَٰئِكَ  هُمُ  الْمُفْلِحُوْنَ



অনুবাদ:    তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে।



(3:105)
وَ  لَا  تَكُوْنُوْا  كَالَّذِیْنَ  تَفَرَّقُوْا  وَ  اخْتَلَفُوْا  مِنْۢ  بَعْدِ  مَا  جَآءَهُمُ  الْبَیِّنٰتُؕ وَ  أُولَٰئِكَ  لَهُمْ  عَذَابٌ  عَظِیْمٌۙ



অনুবাদ:    তোমরা যেন তাদের মতো হয়ে যেয়ো না, যারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে এবং সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য হিদায়াত পাওয়ার পরও মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে। যারা এ নীতি অবলম্বন করেছে তারা সেদিন কঠিন শাস্তি পাবে



(3:106)
یَّوْمَ  تَبْیَضُّ   وُجُوْهٌ  وَّ  تَسْوَدُّ  وُجُوْهٌۚ فَاَمَّا  الَّذِیْنَ  اسْوَدَّتْ  وُجُوْهُهُمْ۫ اَكَفَرْتُمْ  بَعْدَ  اِیْمَانِكُمْ  فَذُوْقُوا  الْعَذَابَ  بِمَا  كُنْتُمْ  تَكْفُرُوْنَ



অনুবাদ:    যেদিন কিছু লোকের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং কিছু লোকের মুখ কালো হয়ে যাবে। তাদেরকে বলা হবে, ঈমানের নিয়ামত লাভ করার পরও তোমরা কুফরী নীতি অবলম্বন করলে? ঠিক আছে, তাহলে এখন এই নিয়ামত অস্বীকৃতির বিনিময়ে আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো।



(3:107)
وَ  اَمَّا  الَّذِیْنَ  ابْیَضَّتْ  وُجُوْهُهُمْ  فَفِیْ  رَحْمَةِ  اللّٰهِؕ هُمْ  فِیْهَا  خٰلِدُوْنَ



অনুবাদ:    আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে, তারা আল্লাহ‌র রহমতের আশ্রয় লাভ করবে এবং তারা চিরকাল এই অবস্থায় থাকবে।



(3:108)
تِلْكَ  اٰیٰتُ  اللّٰهِ  نَتْلُوْهَا  عَلَیْكَ  بِالْحَقِّؕ وَ  مَا  اللّٰهُ  یُرِیْدُ  ظُلْمًا  لِّلْعٰلَمِیْنَ



অনুবাদ:    এগুলো আল্লাহ‌র বাণী, তোমাকে যথাযথভাবে শুনিয়ে যাচ্ছি। কারণ দুনিয়াবাসীদের প্রতি জুলুম করার কোন এরাদা আল্লাহ‌র নেই।



(3:109)
وَ  لِلّٰهِ  مَا  فِی  السَّمٰوٰتِ  وَ  مَا  فِی  الْاَرْضِؕ وَ  اِلَى  اللّٰهِ  تُرْجَعُ  الْاُمُوْرُ۠



অনুবাদ:    আল্লাহ্‌ পৃথিবী ও আকাশের সমস্ত জিনিসের মালিক এবং সমস্ত বিষয় আল্লাহ‌র দরবারে পেশ হয়।



(3:110)
كُنْتُمْ  خَیْرَ  اُمَّةٍ  اُخْرِجَتْ  لِلنَّاسِ   تَاْمُرُوْنَ  بِالْمَعْرُوْفِ  وَ  تَنْهَوْنَ  عَنِ  الْمُنْكَرِ  وَ  تُؤْمِنُوْنَ  بِاللّٰهِؕ وَ  لَوْ  اٰمَنَ  اَهْلُ  الْكِتٰبِ  لَكَانَ  خَیْرًا  لَّهُمْؕ مِنْهُمُ  الْمُؤْمِنُوْنَ  وَ  اَكْثَرُهُمُ  الْفٰسِقُوْنَ



অনুবাদ:    এখন তোমরাই দুনিয়ায় সর্বোত্তম দল। তোমাদের কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে মানুষের হিদায়াত ও সংস্কার সাধনের জন্য। তোমরা নেকীর হুকুম দিয়ে থাকো, দুষ্কৃতি থেকে বিরত রাখো এবং আল্লাহ‌র প্রতি ঈমান আনো। এই আহলি কিতাবরা ঈমান আনলে তাদের জন্যই ভালো হতো। যদিও তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ঈমানদার পাওয়া যায়; কিন্তু তাদের অধিকাংশই নাফরমান।



(3:111)
لَنْ  یَّضُرُّوْكُمْ  اِلَّاۤ  اَذًىؕ وَ  اِنْ  یُّقَاتِلُوْكُمْ  یُوَلُّوْكُمُ  الْاَدْبَارَ۫ ثُمَّ  لَا  یُنْصَرُوْنَ



অনুবাদ:    এরা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারে না। বড় জোর কিছু কষ্ট দিতে পারে। এরা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করলে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে তারপর এমনি অসহায় হয়ে পড়বে যে কোথাও থেকে কোন সাহায্য পাবে না।



(3:112)
ضُرِبَتْ  عَلَیْهِمُ  الذِّلَّةُ  اَیْنَ  مَا  ثُقِفُوْۤا  اِلَّا  بِحَبْلٍ  مِّنَ  اللّٰهِ  وَ  حَبْلٍ  مِّنَ  النَّاسِ   وَ  بَآءُوْ  بِغَضَبٍ  مِّنَ  اللّٰهِ  وَ  ضُرِبَتْ  عَلَیْهِمُ  الْمَسْكَنَةُؕ ذٰلِكَ  بِاَنَّهُمْ  كَانُوْا  یَكْفُرُوْنَ  بِاٰیٰتِ  اللّٰهِ  وَ  یَقْتُلُوْنَ  الْاَنْۢبِیَآءَ  بِغَیْرِ  حَقٍّؕ ذٰلِكَ  بِمَا  عَصَوْا  وَّ  كَانُوْا  یَعْتَدُوْنَۗ



অনুবাদ:    এদের যেখানেই পাওয়া গেছে সেখানেই এদের ওপর লাঞ্ছনার মার পড়েছে। তবে কোথাও আল্লাহর দায়িত্বে বা মানুষের দায়িত্বে কিছু আশ্রয় মিলে গেলে তা অবশ্যি ভিন্ন কথা, আল্লাহর গযব এদেরকে ঘিরে ফেলেছে। এদের ওপর মুখাপেক্ষিতা ও পরাজয় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এসব কিছুর কারণ হচ্ছে এই যে, এরা আল্লাহর আয়াত অস্বীকার করতে থেকেছে এবং নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। এসব হচ্ছে এদের নাফরমানি ও বাড়াবাড়ির পরিণাম।



(3:113)
لَیْسُوْا  سَوَآءًؕ مِنْ  اَهْلِ  الْكِتٰبِ  اُمَّةٌ  قَآئِمَةٌ  یَّتْلُوْنَ  اٰیٰتِ  اللّٰهِ  اٰنَآءَ  الَّیْلِ  وَ  هُمْ  یَسْجُدُوْنَ



অনুবাদ:    কিন্তু সমস্ত আহলি কিতাব এক ধরনের নয়। এদের মধ্যে কিছু লোক রয়েছে সত্য পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তারা রাতে আল্লাহর আয়াত পাঠ করে এবং তাঁর সামনে সিজদাবনত হয়।



(3:114)
یُؤْمِنُوْنَ  بِاللّٰهِ  وَ  الْیَوْمِ  الْاٰخِرِ  وَ  یَاْمُرُوْنَ  بِالْمَعْرُوْفِ  وَ  یَنْهَوْنَ  عَنِ  الْمُنْكَرِ  وَ  یُسَارِعُوْنَ  فِی  الْخَیْرٰتِؕ وَ  أُولَٰئِكَ  مِنَ  الصّٰلِحِیْنَ



অনুবাদ:    আল্লাহ ও আখেরাতের দিনের প্রতি ঈমান রাখে। সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অসৎকাজ থেকে বিরত রাখে এবং কল্যাণ ও নেকীর কাজে তৎপর থাকে। এরা সৎলোক।



(3:115)
وَ  مَا  یَفْعَلُوْا  مِنْ  خَیْرٍ  فَلَنْ  یُّكْفَرُوْهُؕ وَ  اللّٰهُ  عَلِیْمٌۢ  بِالْمُتَّقِیْنَ



অনুবাদ:    এরা যে সৎকাজই করবে তার অমর্যাদা করা হবে না। আল্লাহ‌ মুত্তাকীদেরকে খুব ভালোভাবেই জানেন।



(3:116)
اِنَّ  الَّذِیْنَ  كَفَرُوْا  لَنْ  تُغْنِیَ  عَنْهُمْ  اَمْوَالُهُمْ  وَ  لَاۤ  اَوْلَادُهُمْ  مِّنَ  اللّٰهِ  شَیْــٴًـاؕ وَ  أُولَٰئِكَ  اَصْحٰبُ  النَّارِۚ هُمْ  فِیْهَا  خٰلِدُوْنَ



অনুবাদ:    আর যারা কুফরীনীতি অবলম্বন করেছে, আল্লাহর মোকাবিলায় তাদের ধন-সম্পদ কোন কাজে লাগবে না এবং তাদের সন্তান–সন্ততিও। তারা তো আগুনের মধ্যে প্রবেশ করবে এবং সেখানেই তারা থাকবে চিরকাল।



(3:117)
مَثَلُ  مَا  یُنْفِقُوْنَ  فِیْ  هٰذِهِ  الْحَیٰوةِ  الدُّنْیَا  كَمَثَلِ  رِیْحٍ  فِیْهَا  صِرٌّ  اَصَابَتْ  حَرْثَ  قَوْمٍ  ظَلَمُوْۤا  اَنْفُسَهُمْ  فَاَهْلَكَتْهُؕ وَ  مَا  ظَلَمَهُمُ  اللّٰهُ  وَ  لٰكِنْ  اَنْفُسَهُمْ  یَظْلِمُوْنَ



অনুবাদ:    তারা তাদের এই দুনিয়ার জীবনে যা কিছু ব্যয় করছে তার উপমা হচ্ছে এমন বাতাস যার মধ্যে আছে তুষার কণা। যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছে তাদের শস্যক্ষেতের ওপর দিয়ে এই বাতাস প্রবাহিত হয় এবং তাকে ধ্বংস করে দেয়। আল্লাহ তাদের ওপর জুলুম করেননি। বরং প্রকৃতপক্ষে এরা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছে।



(3:118)
یٰۤاَیُّهَا  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوْا  لَا  تَتَّخِذُوْا  بِطَانَةً  مِّنْ  دُوْنِكُمْ  لَا  یَاْلُوْنَكُمْ  خَبَالًاؕ وَدُّوْا  مَا  عَنِتُّمْۚ قَدْ  بَدَتِ  الْبَغْضَآءُ  مِنْ  اَفْوَاهِهِمْ ﭕ وَ  مَا  تُخْفِیْ  صُدُوْرُهُمْ  اَكْبَرُؕ قَدْ  بَیَّنَّا  لَكُمُ  الْاٰیٰتِ  اِنْ  كُنْتُمْ  تَعْقِلُوْنَ



অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! তোমাদের নিজেদের জামায়াতের লোকদের ছাড়া অন্য কাউকে তোমাদের গোপন কথার সাক্ষী করো না। তারা তোমাদের দুঃসময়ের সুযোগ গ্রহণ করতে কুন্ঠিত হয় না। যা তোমাদের ক্ষতি করে তাই তাদের কাছে প্রিয়। তাদের মনের হিংসা ও বিদ্বেষ তাদের মুখ থেকে ঝরে পড়ে এবং যা কিছু তারা নিজেদের বুকের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে তা এর চাইতেও মারাত্মক। আমি তোমাদের পরিষ্কার হিদায়াত দান করেছি। তবে যদি তোমরা বুদ্ধিমান হও (তাহলে তাদের সাথে সম্পর্ক রাখার সতর্কতা অবলম্বন করবে) ।



(3:119)
هٰۤاَنْتُمْ  اُولَآءِ  تُحِبُّوْنَهُمْ  وَ  لَا  یُحِبُّوْنَكُمْ  وَ  تُؤْمِنُوْنَ  بِالْكِتٰبِ  كُلِّهٖۚ وَ  اِذَا  لَقُوْكُمْ  قَالُوْۤا  اٰمَنَّا   وَ  اِذَا  خَلَوْا  عَضُّوْا  عَلَیْكُمُ  الْاَنَامِلَ  مِنَ  الْغَیْظِؕ قُلْ  مُوْتُوْا  بِغَیْظِكُمْؕ اِنَّ  اللّٰهَ  عَلِیْمٌۢ  بِذَاتِ  الصُّدُوْرِ



অনুবাদ:    তোমরা তাদেরকে ভালোবাসো কিন্তু তারা তোমাদেরকে ভালোবাসে না অথচ তোমরা সমস্ত আসমানী কিতাবকে মানো। তারা তোমাদের সাথে মিলিত হলে বলে, আমরাও(তোমাদের রসূল ও কিতাবকে) মেনে নিয়েছি। কিন্তু তোমাদের থেকে আলাদা হয়ে যাবার পর তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের ক্রোধ ও আক্রোশ এতবেশী বেড়ে যায় যে, তারা নিজেদের আঙুল কামড়াতে থাকে। তাদেরকে বলে দাও, নিজেদের ক্রোধ ও আক্রোশে তোমরা নিজেরাই জ্বলে পুড়ে মরো। আল্লাহ‌ মনের গোপন কথাও জানেন।



(3:120)
اِنْ  تَمْسَسْكُمْ  حَسَنَةٌ  تَسُؤْهُمْ٘ وَ  اِنْ  تُصِبْكُمْ  سَیِّئَةٌ  یَّفْرَحُوْا  بِهَاؕ وَ  اِنْ  تَصْبِرُوْا  وَ  تَتَّقُوْا  لَا  یَضُرُّكُمْ  كَیْدُهُمْ  شَیْــٴًـاؕ اِنَّ  اللّٰهَ  بِمَا  یَعْمَلُوْنَ  مُحِیْطٌ۠



অনুবাদ:    তোমাদের ভালো হলে তাদের খারাপ লাগে এবং তোমাদের ওপর কোন বিপদ এলে তারা খুশী হয়। তোমরা যদি সবর করো এবং আল্লাহকে ভয় করে কাজ করতে থাকো, তাহলে তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের কোন কৌশল কার্যকর হতে পারে না। তারা যা কিছু করছে আল্লাহ‌ তা চতুর্দিক থেকে বেষ্টন করে আছেন।



(3:121)
وَ  اِذْ  غَدَوْتَ  مِنْ  اَهْلِكَ  تُبَوِّئُ  الْمُؤْمِنِیْنَ  مَقَاعِدَ  لِلْقِتَالِؕ وَ  اللّٰهُ  سَمِیْعٌ  عَلِیْمٌۙ



অনুবাদ:    (হে নবী! মুসলমানদের সামনে সে সময়ের কথা বর্ণনা কারো) যখন তুমি অতি প্রত্যুষে নিজের ঘর থেকে বের হয়েছিলে এবং (ওহোদের ময়দানে) মুসলমানদেরকে যুদ্ধের জন্য বিভিন্ন স্থানে নিযুক্ত করেছিলে। আল্লাহ‌ সমস্ত কথা শুনেন এবং তিনি সবকিছু ভালো করে জানেন।



(3:122)
اِذْ  هَمَّتْ  طَّآئِفَتٰنِ  مِنْكُمْ  اَنْ  تَفْشَلَاۙ وَ  اللّٰهُ  وَلِیُّهُمَاؕ وَ  عَلَى  اللّٰهِ  فَلْیَتَوَكَّلِ  الْمُؤْمِنُوْنَ



অনুবাদ:    স্মরণ করো, যখন তোমাদের দুটি দল কাপুরুষতার প্রদর্শনী করতে উদ্যোগী হয়েছিল, অথচ আল্লাহ‌ তাদের সাহায্যের জন্য বর্তমান ছিলেন এবং মু’মিনদের আল্লাহরই ওপর ভরসা করা উচিত।



(3:123)
وَ  لَقَدْ  نَصَرَكُمُ  اللّٰهُ  بِبَدْرٍ  وَّ  اَنْتُمْ  اَذِلَّةٌۚ فَاتَّقُوا  اللّٰهَ  لَعَلَّكُمْ  تَشْكُرُوْنَ



অনুবাদ:    এর আগে বদরের যুদ্ধে আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেছিলেন অথচ তখন তোমরা অনেক দুর্বল ছিলে। কাজেই আল্লাহর না –শোকরী করা থেকে তোমাদের দূরে থাকা উচিত, আশা করা যায় এবার তোমরা শোকর গুজার হবে।



(3:124)
اِذْ  تَقُوْلُ  لِلْمُؤْمِنِیْنَ  اَلَنْ  یَّكْفِیَكُمْ  اَنْ  یُّمِدَّكُمْ  رَبُّكُمْ  بِثَلٰثَةِ  اٰلٰفٍ  مِّنَ  الْمَلٰٓئِكَةِ  مُنْزَلِیْنَؕ



অনুবাদ:    স্মরণ করো যখন তুমি মু’মিনদের বলছিলেঃ “আল্লাহ তাঁর তিন হাজার ফেরেশতা নামিয়ে দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন, এটা কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয়? ”



(3:125)
بَلٰۤىۙ اِنْ  تَصْبِرُوْا  وَ  تَتَّقُوْا  وَ  یَاْتُوْكُمْ  مِّنْ  فَوْرِهِمْ  هٰذَا  یُمْدِدْكُمْ  رَبُّكُمْ  بِخَمْسَةِ  اٰلٰفٍ  مِّنَ  الْمَلٰٓئِكَةِ  مُسَوِّمِیْنَ



অনুবাদ:    অবশ্যি, যদি তোমরা সবর করো এবং আল্লাহকে ভয় করে কাজ করতে থাকো, তাহলে যে মুহূর্তে দুশমন তোমাদের ওপর চড়াও হবে ঠিক তখনি তোমাদের রব (তিন হাজার নয়) পাঁচ হাজার চিহ্নযুক্ত ফেরেশতা দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন।



(3:126)
وَ  مَا  جَعَلَهُ  اللّٰهُ  اِلَّا  بُشْرٰى  لَكُمْ  وَ  لِتَطْمَئِنَّ  قُلُوْبُكُمْ  بِهٖؕ وَ  مَا  النَّصْرُ  اِلَّا  مِنْ  عِنْدِ  اللّٰهِ  الْعَزِیْزِ  الْحَكِیْمِۙ



অনুবাদ:    একথা আল্লাহ‌ তোমাদের এ জন্য জানিয়ে দিলেন যে, তোমরা এতে খুশী হবে এবং তোমাদের মন আশ্বস্ত হবে। বিজয় ও সাহায্য সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। তিনি প্রবল পরাক্রান্ত ও মহাজ্ঞানী।



(3:127)
لِیَقْطَعَ  طَرَفًا  مِّنَ  الَّذِیْنَ  كَفَرُوْۤا  اَوْ  یَكْبِتَهُمْ  فَیَنْقَلِبُوْا  خَآئِبِیْنَ



অনুবাদ:    (আর এ সাহায্য তিনি তোমাদের এ জন্য দেবেন) যাতে কুফরীর পথ অবলম্বনকারীদের একটি বাহু কেটে দেবার অথবা তাদের এমন লাঞ্জনাপূর্ণ পরাজয় দান করার ফলে তারা নিরাশ হয়ে পশ্চাদপসরণ করবে।



(3:128)
لَیْسَ   لَكَ  مِنَ  الْاَمْرِ  شَیْءٌ  اَوْ  یَتُوْبَ  عَلَیْهِمْ  اَوْ  یُعَذِّبَهُمْ  فَاِنَّهُمْ  ظٰلِمُوْنَ



অনুবাদ:    (হে নবী!) চূড়ান্ত ফায়সালা করার ক্ষমতায় তোমার কোন অংশ নেই। এটা আল্লাহর ক্ষমতা-ইখতিয়ারভুক্ত, তিনি চাইলে তাদের মাফ করে দেবেন। আবার চাইলে তাদের শাস্তি দেবেন। কারণ তারা জালেম।



(3:129)
وَ  لِلّٰهِ  مَا  فِی  السَّمٰوٰتِ  وَ  مَا  فِی  الْاَرْضِؕ یَغْفِرُ  لِمَنْ  یَّشَآءُ  وَ  یُعَذِّبُ  مَنْ  یَّشَآءُؕ وَ  اللّٰهُ  غَفُوْرٌ  رَّحِیْمٌ۠



অনুবাদ:    পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহর মালিকানাধীন। যাকে চান মাফ করে দেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।



(3:130)
یٰۤاَیُّهَا  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوْا  لَا  تَاْكُلُوا  الرِّبٰۤوا  اَضْعَافًا  مُّضٰعَفَةً۪   وَّ  اتَّقُوا  اللّٰهَ  لَعَلَّكُمْ  تُفْلِحُوْنَۚ



অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! এ চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খাওয়া বন্ধ করো এবং আল্লাহকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।



(3:131)
وَ  اتَّقُوا  النَّارَ  الَّتِیْۤ  اُعِدَّتْ  لِلْكٰفِرِیْنَۚ



অনুবাদ:    সেই আগুন থেকে দূরে থাকো, যা কাফেরদের জন্য তৈরী করা হয়েছে



(3:132)
وَ  اَطِیْعُوا  اللّٰهَ  وَ  الرَّسُوْلَ  لَعَلَّكُمْ  تُرْحَمُوْنَۚ



অনুবাদ:    এবং আল্লাহ‌ ও রসূলের হুকুম মেনে নাও, আশা করা যায় তোমাদের ওপর রহম করা হবে।



(3:133)
وَ  سَارِعُوْۤا  اِلٰى  مَغْفِرَةٍ  مِّنْ  رَّبِّكُمْ  وَ  جَنَّةٍ  عَرْضُهَا  السَّمٰوٰتُ  وَ  الْاَرْضُۙ اُعِدَّتْ  لِلْمُتَّقِیْنَۙ



অনুবাদ:    দৌঁড়ে চলো তোমাদের রবের ক্ষমার পথে এবং সেই পথে যা পৃথিবী ও আকাশের সমান প্রশস্ত জান্নাতের দিকে চলে গেছে, যা এমন সব আল্লাহভীরু লোকদের জন্য তৈরী করা হয়েছে,



(3:134)
الَّذِیْنَ  یُنْفِقُوْنَ  فِی  السَّرَّآءِ  وَ  الضَّرَّآءِ  وَ  الْكٰظِمِیْنَ  الْغَیْظَ  وَ  الْعَافِیْنَ  عَنِ  النَّاسِؕ وَ  اللّٰهُ  یُحِبُّ  الْمُحْسِنِیْنَۚ



অনুবাদ:    যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সব অবস্থায়ই অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ দমন করে ও অন্যের দোষ–ত্রুটি মাফ করে দেয়। এ ধরনের সৎলোকদের আল্লাহ‌ অত্যন্ত ভালোবাসেন।



(3:135)
وَ  الَّذِیْنَ  اِذَا  فَعَلُوْا  فَاحِشَةً  اَوْ  ظَلَمُوْۤا  اَنْفُسَهُمْ  ذَكَرُوا  اللّٰهَ  فَاسْتَغْفَرُوْا  لِذُنُوْبِهِمْ۫ وَ  مَنْ  یَّغْفِرُ  الذُّنُوْبَ  اِلَّا  اللّٰهُ   وَ  لَمْ  یُصِرُّوْا  عَلٰى  مَا  فَعَلُوْا  وَ  هُمْ  یَعْلَمُوْنَ



অনুবাদ:    আর যারা কখনো কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা কোন গোনাহের কাজ করে নিজেদের ওপর জুলুম করে বসলে আবার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়ে তাঁর কাছে নিজেদের গোনাহ খাতার জন্য মাফ চায় – কারণ আল্লাহ‌ ছাড়া আর কে গোনাহ মাফ করতে পারেন – এবং জেনে বুঝে নিজেদের কৃতকর্মের ওপর জোর দেয় না,



(3:136)
أُولَٰئِكَ  جَزَآؤُهُمْ  مَّغْفِرَةٌ  مِّنْ  رَّبِّهِمْ  وَ  جَنّٰتٌ  تَجْرِیْ  مِنْ  تَحْتِهَا  الْاَنْهٰرُ  خٰلِدِیْنَ  فِیْهَاؕ وَ  نِعْمَ  اَجْرُ  الْعٰمِلِیْنَؕ



অনুবাদ:    এ ধরনের লোকদের যে প্রতিদান তাদের রবের কাছে আছে তা হচ্ছে এই যে, তিনি তাদের মাফ করে দেবেন এবং এমন বাগীচায় তাদের প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। সৎকাজ যারা করে তাদের জন্য কেমন চমৎকার প্রতিদান!



(3:137)
قَدْ  خَلَتْ  مِنْ  قَبْلِكُمْ  سُنَنٌۙ فَسِیْرُوْا  فِی  الْاَرْضِ   فَانْظُرُوْا  كَیْفَ  كَانَ  عَاقِبَةُ  الْمُكَذِّبِیْنَ



অনুবাদ:    তোমাদের আগে অনেক যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে। পৃথিবীতে ঘোরাফেরা করে দেখে নাও যারা (আল্লাহর বিধান ও হিদায়াতকে) মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কি হয়েছে।



(3:138)
هٰذَا  بَیَانٌ  لِّلنَّاسِ   وَ  هُدًى  وَّ  مَوْعِظَةٌ  لِّلْمُتَّقِیْنَ



অনুবাদ:    এটি মানব জাতির জন্য একটি সুস্পষ্ট সতর্কবাণী এবং যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য পথনির্দেশ ও উপদেশ।



(3:139)
وَ  لَا  تَهِنُوْا  وَ  لَا  تَحْزَنُوْا  وَ  اَنْتُمُ  الْاَعْلَوْنَ  اِنْ  كُنْتُمْ  مُّؤْمِنِیْنَ



অনুবাদ:    মনমরা হয়ো না, দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।



(3:140)
اِنْ  یَّمْسَسْكُمْ  قَرْحٌ  فَقَدْ  مَسَّ  الْقَوْمَ  قَرْحٌ  مِّثْلُهٗؕ وَ  تِلْكَ  الْاَیَّامُ  نُدَاوِلُهَا  بَیْنَ  النَّاسِۚ وَ  لِیَعْلَمَ  اللّٰهُ  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوْا  وَ  یَتَّخِذَ  مِنْكُمْ  شُهَدَآءَؕ وَ  اللّٰهُ  لَا  یُحِبُّ  الظّٰلِمِیْنَۙ



অনুবাদ:    এখন যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে, তাহলে এর আগে এমনি ধরনের আঘাত লেগেছে তোমাদের বিরোধী পক্ষের গায়েও। এ–তো কালের উত্থান-পতন, মানুষের মধ্যে আমি এর আবর্তন করে থাকি। এ সময় ও অবস্থাটি তোমাদের ওপর এ জন্য আনা হয়েছে যে, আল্লাহ‌ দেখতে চান তোমাদের মধ্যে সাচ্চা মুমিন কে? আর তিনি তাদেরকে বাছাই করে নিতে চান, যারা যথার্থ (সত্য ও ন্যায়ের) সাক্ষী হবে -কেননা জালেমদেরকে আল্লাহ‌ পছন্দ করেন না



(3:141)
وَ  لِیُمَحِّصَ   اللّٰهُ  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوْا  وَ  یَمْحَقَ  الْكٰفِرِیْنَ



অনুবাদ:    – এবং তিনি এই পরীক্ষার মাধ্যমে সাচ্চা মুমিনদের বাছাই করে নিয়ে কাফেরদের চিহ্নিত করতে চাইছিলেন।



(3:142)
اَمْ  حَسِبْتُمْ  اَنْ  تَدْخُلُوا  الْجَنَّةَ  وَ  لَمَّا  یَعْلَمِ  اللّٰهُ  الَّذِیْنَ  جٰهَدُوْا  مِنْكُمْ  وَ  یَعْلَمَ  الصّٰبِرِیْنَ



অনুবাদ:    তোমরা কি মনে করে রেখেছো তোমরা এমনিতেই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ এখনো আল্লাহ‌ দেখেনইনি, তোমাদের মধ্যে কে তাঁর পথে প্রাণপণ যুদ্ধ করতে প্রস্তুত এবং কে তাঁর জন্য সবরকারী।



(3:143)
وَ  لَقَدْ  كُنْتُمْ  تَمَنَّوْنَ  الْمَوْتَ  مِنْ  قَبْلِ  اَنْ  تَلْقَوْهُ۪ فَقَدْ  رَاَیْتُمُوْهُ  وَ  اَنْتُمْ  تَنْظُرُوْنَ۠



অনুবাদ:    তোমরা তো মৃত্যুর আকাংখা করছিলে! কিন্তু এটা ছিল তখনকার কথা যখন মৃত্যু সামনে আসেনি। তবে এখন তা তোমাদের সামনে এসে গেছে এবং তোমরা স্বচক্ষে তা দেখছো।



(3:144)
وَ  مَا  مُحَمَّدٌ  اِلَّا  رَسُوْلٌۚ قَدْ  خَلَتْ  مِنْ  قَبْلِهِ  الرُّسُلُؕ اَفَاۡئِنْ  مَّاتَ  اَوْ  قُتِلَ  انْقَلَبْتُمْ  عَلٰۤى  اَعْقَابِكُمْؕ وَ  مَنْ  یَّنْقَلِبْ  عَلٰى  عَقِبَیْهِ  فَلَنْ  یَّضُرَّ  اللّٰهَ  شَیْــٴًـاؕ وَ  سَیَجْزِی  اللّٰهُ  الشّٰكِرِیْن



অনুবাদ:    মুহাম্মাদ একজন রসূল বৈ তো আর কিছুই নয়। তার আগে আরো অনেক রসূলও চলে গেছে। যদি সে মারা যায় বা নিহত হয়, তাহলে তোমরা কি পেছনের দিকে ফিরে যাবে? মনে রেখো, যে পেছনের দিকে ফিরে যাবে সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করবে না, তবে যারা আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হয়ে থাকবে তাদেরকে তিনি পুরস্কৃত করবেন।



(3:145)
وَ  مَا  كَانَ  لِنَفْسٍ  اَنْ  تَمُوْتَ  اِلَّا  بِاِذْنِ  اللّٰهِ  كِتٰبًا  مُّؤَجَّلًاؕ وَ  مَنْ  یُّرِدْ  ثَوَابَ  الدُّنْیَا  نُؤْتِهٖ  مِنْهَاۚ وَ  مَنْ  یُّرِدْ  ثَوَابَ  الْاٰخِرَةِ  نُؤْتِهٖ  مِنْهَاؕ وَ  سَنَجْزِی  الشّٰكِرِیْنَ



অনুবাদ:    কোন প্রাণীই আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মরতে পারে না। মৃত্যুর সময় তো লেখা আছে। যে ব্যক্তি দুনিয়াবী পুরস্কার লাভের আশায় কাজ করবে আমি তাকে দুনিয়া থেকেই দেবো। আর যে ব্যক্তি পরকালীন পুরস্কার লাভের আশায় কাজ করবে সে পরকালের পুরস্কার পাবে এবং শোকরকারীদেরকে আমি অবশ্যি প্রতিদান দেবো।



(3:146)
وَ  كَاَیِّنْ  مِّنْ  نَّبِیٍّ  قٰتَلَۙ مَعَهٗ  رِبِّیُّوْنَ  كَثِیْرٌۚ فَمَا  وَ  هَنُوْا  لِمَاۤ  اَصَابَهُمْ  فِیْ  سَبِیْلِ  اللّٰهِ  وَ  مَا  ضَعُفُوْا  وَ  مَا  اسْتَكَانُوْاؕ وَ  اللّٰهُ  یُحِبُّ  الصّٰبِرِیْنَ



অনুবাদ:    এর আগে এমন অনেক নবী চলে গেছে যাদের সাথে মিলে বহু আল্লাহ‌ ওয়ালা লড়াই করেছে। আল্লাহর পথে তাদের ওপর যেসব বিপদ এসেছে তাতে তারা মনমরা ও হতাশ হয়নি, তারা দুর্বলতা দেখায়নি এবং তারা বাতিলের সামনে মাথা নত করে দেয়নি। এ ধরনের সবরকারীদেরকে আল্লাহ‌ ভালবাসেন।



(3:147)
وَ  مَا  كَانَ  قَوْلَهُمْ  اِلَّاۤ  اَنْ  قَالُوْا  رَبَّنَا  اغْفِرْ  لَنَا  ذُنُوْبَنَا  وَ  اِسْرَافَنَا  فِیْۤ  اَمْرِنَا  وَ  ثَبِّتْ  اَقْدَامَنَا  وَ  انْصُرْنَا  عَلَى  الْقَوْمِ  الْكٰفِرِیْنَ



অনুবাদ:    তাদের দোয়া কেবল এতটুকুই ছিলঃ “হে আমাদের রব! আমাদের ভুল –ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দাও। আমাদের কাজের ব্যাপারে যেখানে তোমার সীমালংঘিত হয়েছে, তা তুমি মাফ করে দাও। আমাদের পা মজবুত করে দাও এবং কাফেরদের মোকাবিলায় আমাদের সাহায্য করো।”



(3:148)
فَاٰتٰىهُمُ  اللّٰهُ  ثَوَابَ  الدُّنْیَا  وَ  حُسْنَ  ثَوَابِ  الْاٰخِرَةِؕ وَ  اللّٰهُ  یُحِبُّ  الْمُحْسِنِیْنَ۠



অনুবাদ:    শেষ পর্যন্ত আল্লাহ‌ তাদেরকে দুনিয়ার পুরস্কারও দিয়েছেন এবং তার চেয়ে ভালো আখেরাতের পুরস্কারও দান করেছেন। এ ধরনের সৎকর্মশীলদেরকে আল্লাহ‌ পছন্দ করেন।



(3:149)
یٰۤاَیُّهَا  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوْۤا  اِنْ  تُطِیْعُوا  الَّذِیْنَ  كَفَرُوْا  یَرُدُّوْكُمْ  عَلٰۤى  اَعْقَابِكُمْ  فَتَنْقَلِبُوْا  خٰسِرِیْنَ



অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা তাদের ইশারায় চলো, যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে, তাহলে তারা তোমাদের উল্টো দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এবং তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।



(3:150)
بَلِ  اللّٰهُ  مَوْلٰىكُمْۚ وَ  هُوَ  خَیْرُ  النّٰصِرِیْنَ



অনুবাদ:    (তাদের কথা ভুল) প্রকৃত সত্য এই যে, আল্লাহ‌ তোমাদের সাহায্যকারী এবং তিনি সবচেয়ে ভালো সাহায্যকারী।



(3:151)
سَنُلْقِیْ  فِیْ  قُلُوْبِ  الَّذِیْنَ  كَفَرُوا  الرُّعْبَ  بِمَاۤ  اَشْرَكُوْا  بِاللّٰهِ  مَا  لَمْ  یُنَزِّلْ  بِهٖ  سُلْطٰنًاۚ وَ  مَاْوٰىهُمُ  النَّارُؕ وَ  بِئْسَ  مَثْوَى  الظّٰلِمِیْنَ



অনুবাদ:    শীঘ্রই সেই সময় এসে যাবে যখন আমি সত্য অস্বীকারকারীদের মনের মধ্যে বিভীষিকা সৃষ্টি করে দেবো। কারণ তারা আল্লাহর সাথে তাঁর খোদায়ী কর্তৃত্বে অংশীদার করে, যার স্বপক্ষে আল্লাহ‌ কোন প্রমাণপত্র অবতীর্ণ করেননি। তাদের শেষ আবাস জাহান্নাম এবং ঐ জালেমদের ভাগ্যে জুটবে অত্যন্ত খারাপ আবাসস্থল।



(3:152)
وَ  لَقَدْ  صَدَقَكُمُ  اللّٰهُ  وَعْدَهٗۤ  اِذْ  تَحُسُّوْنَهُمْ  بِاِذْنِهٖۚ حَتّٰۤى  اِذَا  فَشِلْتُمْ  وَ  تَنَازَعْتُمْ  فِی  الْاَمْرِ  وَ  عَصَیْتُمْ  مِّنْۢ  بَعْدِ  مَاۤ  اَرٰىكُمْ  مَّا  تُحِبُّوْنَؕ مِنْكُمْ  مَّنْ  یُّرِیْدُ  الدُّنْیَا  وَ  مِنْكُمْ  مَّنْ  یُّرِیْدُ  الْاٰخِرَةَۚ ثُمَّ  صَرَفَكُمْ  عَنْهُمْ  لِیَبْتَلِیَكُمْۚ وَ  لَقَدْ  عَفَا  عَنْكُمْؕ وَ  اللّٰهُ  ذُوْ  فَضْلٍ  عَلَى  الْمُؤْمِنِیْنَ



অনুবাদ:    আল্লাহ তোমাদের কাছে (সাহায্য ও সমর্থনদানের) যে ওয়াদা করেছিলেন, তা পূর্ণ করেছেন। শুরুতে তাঁর হুকুমে তোমরাই তাদেরকে হত্যা করেছিলে। কিন্তু যখন তোমরা দুর্বলতা দেখালে এবং নিজেদের কাজে পারস্পরিক মতবিরোধে লিপ্ত হলে আর যখনই আল্লাহ‌ তোমাদের সেই জিনিস দেখালেন যার ভালোবাসায় তোমরা বাঁধা ছিলে (অর্থাৎ গনীমতের মাল) , তোমরা নিজেদের নেতার হুকুম অমান্য করে বসলে, কারণ তোমাদের কিছু লোক ছিল দুনিয়ার প্রত্যাশী আর কিছু লোকের কাম্য ছিল আখেরাত, তখনই আল্লাহ‌ কাফরদের মোকাবিলায় তোমাদেরকে পিছিয়ে দিলেন, তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য। তবে যথার্থই আল্লাহ এরপরও তোমাদের মাফ করে দিয়েছেন। কারণ মুমিনদের প্রতি আল্লাহ‌ বড়ই অনুগ্রহের দৃষ্টি রাখেন।



(3:153)
اِذْ  تُصْعِدُوْنَ  وَ  لَا  تَلْوٗنَ  عَلٰۤى  اَحَدٍ  وَّ  الرَّسُوْلُ  یَدْعُوْكُمْ  فِیْۤ  اُخْرٰىكُمْ  فَاَثَابَكُمْ  غَمًّۢا  بِغَمٍّ  لِّكَیْلَا  تَحْزَنُوْا  عَلٰى  مَا  فَاتَكُمْ  وَ  لَا  مَاۤ  اَصَابَكُمْؕ وَ  اللّٰهُ  خَبِیْرٌۢ  بِمَا  تَعْمَلُوْنَ



অনুবাদ:    স্মরণ করো, যখন তোমরা পালাবার কাজে এমনই ব্যস্ত ছিলে যে, কারোর দিকে ফিরে তাকাবার হুঁশও কারো ছিল না এবং রসূল তোমাদের পেছনে তোমাদের ডাকছিল। সে সময় তোমাদের এহেন আচরণের প্রতিফল স্বরূপ আল্লাহ‌ তোমাদের দিলেন দুঃখের পর দুঃখ। এভাবে তোমরা ভবিষ্যতে এই শিক্ষা পাবে যে, যা কিছু তোমাদের হাত থেকে বের হয়ে যায় অথবা যে বিপদই তোমাদের ওপর নাযিল হয়, সে ব্যাপারে দুঃখিত হবে না। আল্লাহ‌ তোমাদের সমস্ত কার্যকলাপ সম্পর্কে জানেন।



(3:154)
ثُمَّ  اَنْزَلَ  عَلَیْكُمْ  مِّنْۢ  بَعْدِ  الْغَمِّ  اَمَنَةً  نُّعَاسًا  یَّغْشٰى  طَآئِفَةً  مِّنْكُمْۙ وَ  طَآئِفَةٌ  قَدْ  اَهَمَّتْهُمْ  اَنْفُسُهُمْ  یَظُنُّوْنَ  بِاللّٰهِ  غَیْرَ  الْحَقِّ  ظَنَّ  الْجَاهِلِیَّةِؕ یَقُوْلُوْنَ  هَلْ  لَّنَا  مِنَ  الْاَمْرِ  مِنْ  شَیْءٍؕ قُلْ  اِنَّ  الْاَمْرَ  كُلَّهٗ  لِلّٰهِؕ یُخْفُوْنَ  فِیْۤ  اَنْفُسِهِمْ  مَّا  لَا  یُبْدُوْنَ  لَكَؕ یَقُوْلُوْنَ  لَوْ  كَانَ  لَنَا  مِنَ  الْاَمْرِ  شَیْءٌ  مَّا  قُتِلْنَا  هٰهُنَاؕ قُلْ  لَّوْ  كُنْتُمْ  فِیْ  بُیُوْتِكُمْ  لَبَرَزَ  الَّذِیْنَ  كُتِبَ  عَلَیْهِمُ  الْقَتْلُ  اِلٰى  مَضَاجِعِهِمْۚ وَ  لِیَبْتَلِیَ  اللّٰهُ  مَا  فِیْ  صُدُوْرِكُمْ  وَ  لِیُمَحِّصَ   مَا  فِیْ  قُلُوْبِكُمْؕ وَ  اللّٰهُ  عَلِیْمٌۢ  بِذَاتِ  الصُّدُوْرِ



অনুবাদ:    এ দুঃখের পর আল্লাহ‌ তোমাদের কিছু লোককে আবার এমন প্রশান্তি দান করলেন যে, তারা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লো। কিন্তু আর একটি দল, নিজের স্বার্থই ছিল যার কাছে বেশী গুরুত্বপূর্ণ, আল্লাহ‌ সম্পর্কে নানান ধরনের জাহেলী ধারণা পোষণ করতে থাকলো, যা ছিল একেবারেই সত্য বিরোধী। তারা এখন বলেছে, “এই কাজ পরিচালনার ব্যাপারে আমাদেরও কি কোন অংশ আছে?” তাদেরকে বলে দাও, “(কারো কোন অংশ নেই, ) এ কাজেই সমস্ত ইখতিয়ার রয়েছে এক মাত্র আল্লাহর হাতে।” আসলে এরা নিজেদের মনের মধ্যে যে কথা লুকিয়ে রেখেছে তা তোমাদের সামনে প্রকাশ করে না। এদের আসল বক্তব্য হচ্ছে, “যদি (নেতৃত্ব) ক্ষমতায় আমাদের কোন অংশ থাকতো, তাহলে আমরা মারা পড়তাম না।” ওদেরকে বলে দাও, “যদি তোমরা নিজেদের গৃহে অবস্থান করতে তাহলেও যাদের মৃত্যু লেখা হয়ে গিয়েছিল, তারা নিজেরাই নিজেদের বধ্যভূমির দিকে এগিয়ে আসতো।” আর এই যে বিষয়টি সংঘটিত হলো, এটি এ জন্য ছিল যে, তোমাদের বুকের মধ্যে যা কিছু গোপন রয়েছে আল্লাহ‌ তা পরীক্ষা করে নেবেন এবং তোমাদের মনের মধ্যে যে গলদ রয়েছে তা দূর করে দেবেন। আল্লাহ‌ মনের অবস্থা খুব ভালো করেই জানেন।



(3:155)
اِنَّ  الَّذِیْنَ  تَوَلَّوْا  مِنْكُمْ  یَوْمَ  الْتَقَى  الْجَمْعٰنِۙ اِنَّمَا  اسْتَزَلَّهُمُ  الشَّیْطٰنُ  بِبَعْضِ   مَا  كَسَبُوْاۚ وَ  لَقَدْ  عَفَا  اللّٰهُ  عَنْهُمْؕ اِنَّ  اللّٰهَ  غَفُوْرٌ  حَلِیْمٌ۠



অনুবাদ:    তোমাদের মধ্য থেকে যারা মোকাবিলার দিন পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল তাদের এ পদস্খলনের কারণ এই ছিল যে, তাদের কোন কোন দুর্বলতার কারণ শয়তান তাদের পা টলিয়ে দিয়েছিল। আল্লাহ‌ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আল্লাহ‌ বড়ই ক্ষমাশীল ও সহনশীল।



(3:156)
یٰۤاَیُّهَا  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوْا  لَا  تَكُوْنُوْا  كَالَّذِیْنَ  كَفَرُوْا  وَ  قَالُوْا  لِاِخْوَانِهِمْ  اِذَا  ضَرَبُوْا  فِی  الْاَرْضِ   اَوْ  كَانُوْا  غُزًّى  لَّوْ  كَانُوْا  عِنْدَنَا  مَا  مَاتُوْا  وَ  مَا  قُتِلُوْاۚ لِیَجْعَلَ  اللّٰهُ  ذٰلِكَ  حَسْرَةً  فِیْ  قُلُوْبِهِمْؕ وَ  اللّٰهُ  یُحْیٖ  وَ  یُمِیْتُؕ وَ  اللّٰهُ  بِمَا  تَعْمَلُوْنَ  بَصِیْرٌ



অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! কাফেরদের মতো কথা বলো না। তাদের আত্মীয়স্বজনরা কখনো সফরে গেলে অথবা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলে (এবং সেখানে কোন দুর্ঘটনায় পতিত হলে) তারা বলে, যদি তারা আমাদের কাছে থাকতো তাহলে মারা যেতোনা এবং নিহত হতো না। এ ধরনের কথাকে আল্লাহ‌ তাদের মানসিক খেদ ও আক্ষেপের কারণে পরিণত করেন। নয়তো জীবন–মৃত্যু তো একমাত্র আল্লাহই দান করে থাকেন এবং তোমাদের সমস্ত কার্যকলাপের ওপর তিনি দৃষ্টি রাখেন।



(3:157)
وَ  لَئِنْ  قُتِلْتُمْ  فِیْ  سَبِیْلِ  اللّٰهِ  اَوْ  مُتُّمْ  لَمَغْفِرَةٌ  مِّنَ  اللّٰهِ  وَ  رَحْمَةٌ  خَیْرٌ  مِّمَّا  یَجْمَعُوْنَ



অনুবাদ:    যদি তোমরা আল্লাহর পথে নিহত হও বা মারা যাও তা হলে তোমরা আল্লাহর যে রহমত ও ক্ষমা লাভ করবে, তা এরা যা কিছু জমা করে তার চাইতে ভালো।



(3:158)
وَ  لَئِنْ  مُّتُّمْ  اَوْ  قُتِلْتُمْ  لَاۡاِلَى  اللّٰهِ  تُحْشَرُوْنَ



অনুবাদ:    আর তোমরা মারা যাও বা নিহত হও, সব অবস্থায় তোমাদের অবশ্যি আল্লাহর দিকেই যেতে হবে।



(3:159)
فَبِمَا  رَحْمَةٍ  مِّنَ  اللّٰهِ  لِنْتَ  لَهُمْۚ وَ  لَوْ  كُنْتَ  فَظًّا  غَلِیْظَ  الْقَلْبِ  لَا  نْفَضُّوْا  مِنْ  حَوْلِكَ۪   فَاعْفُ  عَنْهُمْ  وَ  اسْتَغْفِرْ  لَهُمْ  وَ  شَاوِرْهُمْ  فِی  الْاَمْرِۚ فَاِذَا  عَزَمْتَ  فَتَوَكَّلْ  عَلَى  اللّٰهِؕ اِنَّ  اللّٰهَ  یُحِبُّ  الْمُتَوَكِّلِیْنَ



অনুবাদ:    (হে নবী!) এটা আল্লাহর বড়ই অনুগ্রহ যে, তোমার ব্যবহার তাদের প্রতি বড়ই কোমল। নয়তো যদি তুমি রুক্ষ স্বভাবের বা কঠোর চিত্ত হতে, তাহলে তারা সবাই তোমার চার পাশ থেকে সরে যেতো। তাদের ত্রুটি ক্ষমা করে দাও। তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করো এবং দ্বীনের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শে তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করো। তারপর যখন কোন মতের ভিত্তিতে তোমার স্থির সংকল্প হবে তখন আল্লাহর ওপর ভরসা করো। আল্লাহ‌ তাদেরকে পছন্দ করেন যারা তাঁর ওপর ভরসা করে কাজ করে।



(3:160)
اِنْ  یَّنْصُرْكُمُ  اللّٰهُ  فَلَا  غَالِبَ  لَكُمْۚ وَ  اِنْ  یَّخْذُلْكُمْ  فَمَنْ  ذَا  الَّذِیْ  یَنْصُرُكُمْ  مِّنْۢ  بَعْدِهٖؕ وَ  عَلَى  اللّٰهِ  فَلْیَتَوَكَّلِ  الْمُؤْمِنُوْنَ



অনুবাদ:    আল্লাহ যদি তোমাদের সাহায্য করেন তাহলে কোন শক্তি তোমাদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের পরিত্যাগ করেন, তাহলে এরপর কে আছে তোমাদের সাহায্য করার মতো? কাজেই সাচ্চা মুমিনদের আল্লাহর ওপরই ভরসা করা উচিত।



(3:161)
وَ  مَا  كَانَ  لِنَبِیٍّ  اَنْ  یَّغُلَّؕ وَ  مَنْ  یَّغْلُلْ  یَاْتِ  بِمَا  غَلَّ  یَوْمَ  الْقِیٰمَةِۚ ثُمَّ  تُوَفّٰى  كُلُّ  نَفْسٍ  مَّا  كَسَبَتْ  وَ  هُمْ  لَا  یُظْلَمُوْنَ



অনুবাদ:    খেয়ানত করা কোন নবীর কাজ হতে পারে না। যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে কিয়ামতের দিন সে নিজের খেয়ানত করা জিনিস সহকারে হাজির হয়ে যাবে। তারপর প্রত্যেকেই তার উপার্জনের পুরোপুরি প্রতিদান পেয়ে যাবে এবং কারো প্রতি কোন জুলুম করা হবে না।



(3:162)
اَفَمَنِ  اتَّبَعَ  رِضْوَانَ  اللّٰهِ  كَمَنْۢ  بَآءَ  بِسَخَطٍ  مِّنَ  اللّٰهِ  وَ  مَاْوٰىهُ  جَهَنَّمُؕ وَ  بِئْسَ  الْمَصِیْرُ



অনুবাদ:    যে ব্যক্তি সবসময় আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী চলে সে কেমন করে এমন ব্যক্তির মতো কাজ করতে পারে, যাকে আল্লাহর গযব ঘিরে ফেলেছে এবং যার শেষ আবাস জাহান্নাম, যা সবচেয়ে খারাপ আবাস?



(3:163)
هُمْ  دَرَجٰتٌ  عِنْدَ  اللّٰهؕ وَ  اللّٰهُ  بَصِیْرٌۢ  بِمَا  یَعْمَلُوْنَ



অনুবাদ:    আল্লাহর কাছে এ উভয় ধরনের লোকদের মধ্যে বহু পর্যায়ের পার্থক্য রয়েছে। আল্লাহ‌ সবার কার্যকলাপের ওপর নজর রাখেন।



(3:164)
لَقَدْ  مَنَّ  اللّٰهُ  عَلَى  الْمُؤْمِنِیْنَ  اِذْ  بَعَثَ  فِیْهِمْ  رَسُوْلًا  مِّنْ  اَنْفُسِهِمْ  یَتْلُوْا  عَلَیْهِمْ  اٰیٰتِهٖ  وَ  یُزَكِّیْهِمْ  وَ  یُعَلِّمُهُمُ  الْكِتٰبَ  وَ  الْحِكْمَةَۚ وَ  اِنْ  كَانُوْا  مِنْ  قَبْلُ  لَفِیْ  ضَلٰلٍ  مُّبِیْنٍ



অনুবাদ:    আসলে ঈমানদারদের মধ্যে তাদেরই মধ্য থেকে একজন নবী পাঠিয়ে আল্লাহ‌ মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। সে তাঁর আয়াত তাদেরকে শোনায়, তাদের জীবনকে পরিশুদ্ধ ও সুবিন্যস্ত করে এবং তাদেরকে কিতাব ও জ্ঞান শিক্ষা দেয়। অথচ এর আগে এই লোকেরাই সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত ছিল।



(3:165)
اَوَ  لَمَّاۤ  اَصَابَتْكُمْ  مُّصِیْبَةٌ  قَدْ  اَصَبْتُمْ  مِّثْلَیْهَاۙ قُلْتُمْ  اَنّٰى  هٰذَاؕ قُلْ  هُوَ  مِنْ  عِنْدِ  اَنْفُسِكُمْؕ اِنَّ  اللّٰهَ  عَلٰى  كُلِّ  شَیْءٍ  قَدِیْرٌ



অনুবাদ:    তোমাদের ওপর যখন বিপদ এসে পড়লো তোমরা বলতে লাগলে, এ আবার কোথায় থেকে এলো? তোমাদের এ অবস্থা কেন? অথচ (বদরের যুদ্ধে) এর দ্বিগুণ বিপদ তোমাদের মাধ্যমে তোমাদের বিরোধী পক্ষের ওপর পড়েছিল। হে নবী! ওদের বলে দাও, তোমরা নিজেরাই এ বিপদ এনেছো। আল্লাহ প্রতিটি জিনিসের ওপর শক্তিমান।



(3:166)
وَ  مَاۤ  اَصَابَكُمْ  یَوْمَ  الْتَقَى  الْجَمْعٰنِ  فَبِاِذْنِ  اللّٰهِ  وَ  لِیَعْلَمَ  الْمُؤْمِنِیْنَۙ



অনুবাদ:    যুদ্ধের দিন তোমাদের যে ক্ষতি হয় তা ছিল আল্লাহর হুকুমে এবং তা এ জন্য ছিল যাতে আল্লাহ‌ দেখে নেন তোমাদের মধ্যে কে মুমিন



(3:167)
وَ  لِیَعْلَمَ  الَّذِیْنَ  نَافَقُوْا ۚۖ وَ  قِیْلَ  لَهُمْ  تَعَالَوْا  قَاتِلُوْا  فِیْ  سَبِیْلِ  اللّٰهِ  اَوِ  ادْفَعُوْاؕ قَالُوْا  لَوْ  نَعْلَمُ  قِتَالًا  لَّا  اتَّبَعْنٰكُمْؕ هُمْ  لِلْكُفْرِ  یَوْمَئِذٍ  اَقْرَبُ  مِنْهُمْ  لِلْاِیْمَانِۚ یَقُوْلُوْنَ  بِاَفْوَاهِهِمْ  مَّا  لَیْسَ   فِیْ  قُلُوْبِهِمْؕ وَ  اللّٰهُ  اَعْلَمُ  بِمَا  یَكْتُمُوْنَۚ



অনুবাদ:    এবং কে মুনাফিক। এ মুনাফিকদের যখন বলা হলো, এসো আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো অথবা (কমপক্ষে) নিজের শহরের প্রতিরক্ষা করো, তারা বলতে লাগলোঃ যদি আমরা জানতাম আজ যুদ্ধ হবে, তাহলে আমরা অবশ্যি তোমাদের সাথে চলতাম। যখন তারা একথা বলছিল তখন তারা ঈমানের তুলনায় কুফরীর অনেক বেশী কাছে অবস্থান করছিল। তারা নিজেদের মুখে এমন সব কথা বলে, যা তাদের মনের মধ্যে নেই এবং যা কিছু তারা মনের মধ্যে গোপন করে আল্লাহ‌ তা খুব ভালো করেই জানেন।



(3:168)
اَلَّذِیْنَ  قَالُوْا  لِاِخْوَانِهِمْ  وَ  قَعَدُوْا  لَوْ  اَطَاعُوْنَا  مَا  قُتِلُوْاؕ قُلْ  فَادْرَءُوْا  عَنْ  اَنْفُسِكُمُ  الْمَوْتَ  اِنْ  كُنْتُمْ  صٰدِقِیْنَ



অনুবাদ:    এরা নিজেরা বসে থাকলো এবং এদের ভাই –বন্ধু যারা লড়াই করতে গিয়ে মারা গিয়েছিল, তাদের সম্পর্কে বলেছিলঃ যদি তারা আমাদের কথা মেনে নিতো, তাহলে মারা যেতো না। ওদের বলে দাও, তোমরা নিজেদের একথায় যদি সত্যবাদী হয়ে থাকো, তাহলে তোমাদের নিজেদের মৃত্যু যখন আসবে তখন তা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করে দেখাও।



(3:169)
وَ  لَا  تَحْسَبَنَّ  الَّذِیْنَ  قُتِلُوْا  فِیْ  سَبِیْلِ  اللّٰهِ  اَمْوَاتًاؕ بَلْ  اَحْیَآءٌ  عِنْدَ  رَبِّهِمْ  یُرْزَقُوْنَۙ



অনুবাদ:    যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে করো না। তারা আসলে জীবিত। নিজেদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকা লাভ করছে।



(3:170)
فَرِحِیْنَ  بِمَاۤ  اٰتٰىهُمُ  اللّٰهُ  مِنْ  فَضْلِهٖۙ وَ  یَسْتَبْشِرُوْنَ  بِالَّذِیْنَ  لَمْ  یَلْحَقُوْا  بِهِمْ  مِّنْ  خَلْفِهِمْۙ اَلَّا  خَوْفٌ  عَلَیْهِمْ  وَ  لَا  هُمْ  یَحْزَنُوْنَۘ



অনুবাদ:    আল্লাহ নিজের অনুগ্রহ থেকে তাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন তাতেই তারা আনন্দিত ও পরিতৃপ্ত এবং যেসব ঈমানদার লোক তাদের পরে এ দুনিয়ায় রয়ে গেছে এবং এখনো সেখানে পৌঁছেনি, তাদের জন্যও কোন ভয় ও দুঃখের কারণ নেই, একথা জেনে তারা নিশ্চিন্ত হতে পেরেছে।



(3:171)
یَسْتَبْشِرُوْنَ  بِنِعْمَةٍ  مِّنَ  اللّٰهِ  وَ  فَضْلٍۙ وَّ  اَنَّ  اللّٰهَ  لَا  یُضِیْعُ  اَجْرَ  الْمُؤْمِنِیْنَ



অনুবাদ:    তারা আল্লাহর পুরস্কার ও অনুগ্রহ লাভে আনন্দিত ও উল্লসিত এবং তারা জানতে পেরেছে যে, আল্লাহ‌ মুমিনদের প্রতিদান নষ্ট করেন না।



(3:172)
ﮎ اَلَّذِیْنَ  اسْتَجَابُوْا  لِلّٰهِ  وَ  الرَّسُوْلِ  مِنْۢ  بَعْدِ  مَاۤ  اَصَابَهُمُ  الْقَرْحُ  لِلَّذِیْنَ  اَحْسَنُوْا  مِنْهُمْ  وَ  اتَّقَوْا  اَجْرٌ  عَظِیْمٌۚ



অনুবাদ:    আহত হবার পরও যারা আল্লাহ‌ ও রসূলের আহবানে সাড়া দিয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সৎ-নেককার ও মুত্তাকী তাদের জন্য রয়েছে বিরাট প্রতিদান। আর যাদেরকে



(3:173)
اَلَّذِیْنَ  قَالَ  لَهُمُ  النَّاسُ  اِنَّ  النَّاسَ  قَدْ  جَمَعُوْا  لَكُمْ  فَاخْشَوْهُمْ  فَزَادَهُمْ  اِیْمَانًا    ط    وَّ  قَالُوْا  حَسْبُنَا  اللّٰهُ  وَ  نِعْمَ  الْوَكِیْلُ



অনুবাদ:    লোকেরা বললোঃ তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনা সমাবেশ ঘটেছে। তাদেরকে ভয় করো, তা শুনে তাদের ঈমান আরো বেড়ে গেছে এবং তারা জবাবে বলেছেঃ আমাদের জন্য আল্লাহ‌ যথেষ্ট এবং তিনি সবচেয়ে ভালো কার্য উদ্ধারকারী।



(3:174)
فَانْقَلَبُوْا  بِنِعْمَةٍ  مِّنَ  اللّٰهِ  وَ  فَضْلٍ  لَّمْ  یَمْسَسْهُمْ  سُوْٓءٌۙ وَّ  اتَّبَعُوْا  رِضْوَانَ  اللّٰهِؕ وَ  اللّٰهُ  ذُوْ  فَضْلٍ  عَظِیْمٍ



অনুবাদ:    অবশেষে তারা ফিরে এলো আল্লাহর নিয়ামত ও অনুগ্রহ সহকারে। তাদের কোন রকম ক্ষতি হয়নি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির ওপর চলার সৌভাগ্যও তারা লাভ করলো। আল্লাহ‌ বড়ই অনুগ্রহকারী।



(3:175)
اِنَّمَا  ذٰلِكُمُ  الشَّیْطٰنُ  یُخَوِّفُ  اَوْلِیَآءَهٗ   ۪ فَلَا  تَخَافُوْهُمْ  وَ  خَافُوْنِ  اِنْ  كُنْتُمْ  مُّؤْمِنِیْنَ



অনুবাদ:    এখন তোমরা জেনে ফেলেছো, সে আসলে শয়তান ছিল, তার বন্ধুদের অনর্থক ভয় দেখাচ্ছিলো। কাজেই আগামীতে তোমরা মানুষকে ভয় করো না, আমাকে ভয় করো, যদি তোমরা যথার্থ ঈমানদার হয়ে থাকো।



(3:176)
وَ  لَا  یَحْزُنْكَ  الَّذِیْنَ  یُسَارِعُوْنَ  فِی  الْكُفْرِۚ اِنَّهُمْ  لَنْ  یَّضُرُّوا  اللّٰهَ  شَیْــٴًـاؕ یُرِیْدُ  اللّٰهُ  اَلَّا  یَجْعَلَ  لَهُمْ  حَظًّا  فِی  الْاٰخِرَةِۚ وَ  لَهُمْ  عَذَابٌ  عَظِیْمٌ



অনুবাদ:    (হে নবী!) যারা আজ কুফরীর পথে খুব বেশী দৌড়াদৌড়ি করছে তাদের তৎপরতা যেন তোমাকে মলিন বদন না করে। এরা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ‌ আখেরাতে এদের কোন অংশ দিতে চান না। আর সবশেষে তারা কঠোর শাস্তি পাবে।



(3:177)
اِنَّ  الَّذِیْنَ  اشْتَرَوُا  الْكُفْرَ  بِالْاِیْمَانِ  لَنْ  یَّضُرُّوا  اللّٰهَ  شَیْــٴًـاۚ وَ  لَهُمْ  عَذَابٌ  اَلِیْمٌ



অনুবাদ:    যারা ঈমানকে ছেড়ে দিয়ে কুফরী কিনে নিয়েছে তারা নিঃসন্দেহে আল্লাহর কোন ক্ষতি করছে না। তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রয়েছে।



(3:178)
وَ  لَا  یَحْسَبَنَّ  الَّذِیْنَ  كَفَرُوْۤا  اَنَّمَا  نُمْلِیْ  لَهُمْ  خَیْرٌ  لِّاَنْفُسِهِمْؕ اِنَّمَا  نُمْلِیْ  لَهُمْ  لِیَزْدَادُوْۤا  اِثْمًاۚ وَ  لَهُمْ  عَذَابٌ  مُّهِیْنٌ



অনুবাদ:    কাফেরদের আমি যে ঢিল দিয়ে চলছি এটাকে যেন তারা নিজেদের জন্য ভালো মনে না করে। আমি তাদেরকে এ জন্য ঢিল দিচ্ছি, যাতে তারা গোনাহের বোঝা ভারী করে নেয়, তারপর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন অপমানকর শাস্তি।



(3:179)
مَا  كَانَ  اللّٰهُ  لِیَذَرَ  الْمُؤْمِنِیْنَ  عَلٰى  مَاۤ  اَنْتُمْ  عَلَیْهِ  حَتّٰى  یَمِیْزَ  الْخَبِیْثَ  مِنَ  الطَّیِّبِؕ وَ  مَا  كَانَ  اللّٰهُ  لِیُطْلِعَكُمْ  عَلَى  الْغَیْبِ  وَ  لٰكِنَّ  اللّٰهَ  یَجْتَبِیْ  مِنْ  رُّسُلِهٖ  مَنْ  یَّشَآءُ   ۪   فَاٰمِنُوْا  بِاللّٰهِ  وَ  رُسُلِهٖۚ وَ  اِنْ  تُؤْمِنُوْا  وَ  تَتَّقُوْا  فَلَكُمْ  اَجْرٌ  عَظِیْمٌ



অনুবাদ:    তোমরা বর্তমানে যে অবস্থায় আছো আল্লাহ‌ মুমিনদের কখনো সেই অবস্থায় থাকতে দেবেন না। পাক–পবিত্র লোকেদেরকে তিনি নাপাক ও অপবিত্র লোকদের থেকে আলাদা করেই ছাড়বেন। কিন্তু তোমাদেরকে গায়েবের খবর জানিয়ে দেয়া আল্লাহর রীতি নয়। গায়েবের খবর জানাবার জন্য তিনি নিজের রসূলদের মধ্য থেকে যাকে চান বাছাই করে নেন। কাজেই (গায়েবের ব্যাপারে) আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান রাখো। যদি তোমরা ঈমান ও আল্লাহকে ভয় করার নীতি অবলম্বন করো তাহলে বিরাট প্রতিদান পাবে।



(3:180)
وَ  لَا  یَحْسَبَنَّ  الَّذِیْنَ  یَبْخَلُوْنَ  بِمَاۤ  اٰتٰىهُمُ  اللّٰهُ  مِنْ  فَضْلِهٖ  هُوَ  خَیْرًا  لَّهُمْؕ بَلْ  هُوَ  شَرٌّ  لَّهُمْؕ سَیُطَوَّقُوْنَ  مَا  بَخِلُوْا  بِهٖ  یَوْمَ  الْقِیٰمَةِؕ وَ  لِلّٰهِ  مِیْرَاثُ  السَّمٰوٰتِ  وَ  الْاَرْضِؕ وَ  اللّٰهُ  بِمَا  تَعْمَلُوْنَ  خَبِیْرٌ۠



অনুবাদ:    আল্লাহ যাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং তারপরও তারা কার্পণ্য করে, তারা যেন এই কৃপণতাকে নিজেদের জন্য ভালো মনে না করে। না, এটা তাদের জন্য অত্যন্ত খারাপ। কৃপণতা করে তারা যা কিছু জমাচ্ছে তাই কিয়ামতের দিন তাদের গলার বেড়ি হবে। পৃথিবী ও আকাশের স্বত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। আর তোমরা যা কিছু করছো, আল্লাহ‌ তা সবই জানেন।



(3:181)
لَقَدْ  سَمِعَ  اللّٰهُ  قَوْلَ  الَّذِیْنَ  قَالُوْۤا  اِنَّ  اللّٰهَ  فَقِیْرٌ  وَّ  نَحْنُ  اَغْنِیَآءُۘ سَنَكْتُبُ  مَا  قَالُوْا  وَ  قَتْلَهُمُ  الْاَنْۢبِیَآءَ  بِغَیْرِ  حَقٍّۙ وَّ  نَقُوْلُ  ذُوْقُوْا  عَذَابَ  الْحَرِیْقِ



অনুবাদ:    আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন যারা বলে, আল্লাহ‌ গরীব এবং আমরা ধনী। এদের কথাও আমি লিখে নেবো এবং এর আগে যে পয়গাম্বরদেরকে এরা অন্যায়ভাবে হত্যা করে এসেছে তাও এদের আমলনামায় বসিয়ে দেয়া হয়েছে। (যখন ফায়সালার সময় আসবে তখন) আমি তাদেরকে বলবোঃ এই নাও, এবার জাহান্নামের আযাবের মজা চাখো!



(3:182)
ذٰلِكَ  بِمَا  قَدَّمَتْ  اَیْدِیْكُمْ  وَ  اَنَّ  اللّٰهَ  لَیْسَ  بِظَلَّامٍ  لِّلْعَبِیْدِۚ



অনুবাদ:    এটা তোমাদের হাতের উপার্জন। আল্লাহ‌ তাঁর বান্দাদের জন্য জালেম নন।



(3:183)
اَلَّذِیْنَ  قَالُوْۤا  اِنَّ  اللّٰهَ  عَهِدَ  اِلَیْنَاۤ  اَلَّا  نُؤْمِنَ  لِرَسُوْلٍ  حَتّٰى  یَاْتِیَنَا  بِقُرْبَانٍ  تَاْكُلُهُ  النَّارُؕ قُلْ  قَدْ  جَآءَكُمْ  رُسُلٌ  مِّنْ  قَبْلِیْ  بِالْبَیِّنٰتِ  وَ  بِالَّذِیْ  قُلْتُمْ  فَلِمَ  قَتَلْتُمُوْهُمْ  اِنْ  كُنْتُمْ  صٰدِقِیْنَ



অনুবাদ:    যারা বলেঃ “আল্লাহ্‌ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা কাউকে রসূল বলে স্বীকার করবো না যতক্ষণ না তিনি আমাদের সামনে এমন কুরবানী করবেন যাকে আগুন (অদৃশ্য থেকে এসে) খেয়ে ফেলবে।” তাদেরকে বলোঃ আমার আগে তোমাদের কাছে অনেক রসূল এসেছেন, তারা অনেক উজ্জ্বল নিদর্শন এনেছিলেন এবং তোমরা যে নিদর্শনটির কথা বলছো সেটিও তারা এনেছিলেন। এক্ষেত্রে (ঈমান আনার জন্য এ শর্ত পেশ করার ব্যাপারে) যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তাহলে ঐ রসূলদেরকে তোমরা হত্যা করেছিলে কেন?



(3:184)
فَاِنْ  كَذَّبُوْكَ  فَقَدْ  كُذِّبَ  رُسُلٌ  مِّنْ  قَبْلِكَ  جَآءُوْ  بِالْبَیِّنٰتِ  وَ  الزُّبُرِ  وَ  الْكِتٰبِ  الْمُنِیْرِ



অনুবাদ:    এখন, হে মুহাম্মাদ! যদি এরা তোমাকে মিথ্যা বলে থাকে, তাহলে তোমার পূর্বে বহু রসূলকে মিথ্যা বলা হয়েছে। তারা স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ, সহীফা ও আলোদানকারী কিতাব এনেছিলে।



(3:185)
كُلُّ  نَفْسٍ   ذَآئِقَةُ  الْمَوْتِؕ وَ  اِنَّمَا  تُوَفَّوْنَ  اُجُوْرَكُمْ  یَوْمَ  الْقِیٰمَةِؕ فَمَنْ  زُحْزِحَ  عَنِ  النَّارِ  وَ  اُدْخِلَ  الْجَنَّةَ  فَقَدْ  فَازَؕ وَ  مَا  الْحَیٰوةُ  الدُّنْیَاۤ  اِلَّا  مَتَاعُ  الْغُرُوْرِ



অনুবাদ:    অবশেষে প্রত্যেক ব্যক্তিকে মরতে হবে এবং তোমরা সবাই কিয়ামতের দিন নিজেদের পূর্ণ প্রতিদান লাভ করবে। একমাত্র সেই ব্যক্তিই সফলকাম হবে, যে সেখানে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাবে এবং যাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। আর এ দুনিয়াটা তো নিছক একটা বাহ্যিক প্রতারণার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।



(3:186)
لَتُبْلَوُنَّ  فِیْۤ  اَمْوَالِكُمْ  وَ  اَنْفُسِكُمْ     وَ  لَتَسْمَعُنَّ  مِنَ  الَّذِیْنَ  اُوْتُوا  الْكِتٰبَ  مِنْ  قَبْلِكُمْ  وَ  مِنَ  الَّذِیْنَ  اَشْرَكُوْۤا  اَذًى  كَثِیْرًاؕ وَ  اِنْ  تَصْبِرُوْا  وَ  تَتَّقُوْا  فَاِنَّ  ذٰلِكَ  مِنْ  عَزْمِ  الْاُمُوْرِ



অনুবাদ:    (হে মুসলমানগণ!) তোমাদের অবশ্যি ধন ও প্রাণের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এবং তোমরা আহলি কিতাব ও মুশরিকদের থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে। যদি এমন অবস্থায় তোমরা সবর ও তাকওয়ার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো তাহলে তা হবে বিরাট সাহসিকতার পরিচায়ক।



(3:187)
وَ  اِذْ  اَخَذَ  اللّٰهُ  مِیْثَاقَ  الَّذِیْنَ  اُوْتُوا  الْكِتٰبَ  لَتُبَیِّنُنَّهٗ  لِلنَّاسِ   وَ  لَا  تَكْتُمُوْنَهٗ٘ فَنَبَذُوْهُ  وَرَآءَ  ظُهُوْرِهِمْ  وَ  اشْتَرَوْا  بِهٖ  ثَمَنًا  قَلِیْلًاؕ فَبِئْسَ   مَا  یَشْتَرُوْنَ



অনুবাদ:    এ আহলি কিতাবদের সেই অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দাও, যা আল্লাহ‌ তাদের থেকে নিয়েছিলেন। তাতে বলা হয়েছিলঃ তোমরা কিতাবের শিক্ষা মানুষের মধ্যে প্রচার করবে, তা গোপন করতে পারবে না। কিন্তু তারা কিতাবকে পিছনে ফেলে রেখেছে এবং সামান্য দামে তা বিক্রি করে দিয়েছে। কতই না নিকৃষ্ট কারবার তারা করে যাচ্ছে!



(3:188)
لَا  تَحْسَبَنَّ  الَّذِیْنَ  یَفْرَحُوْنَ  بِمَاۤ  اَتَوْا  وَّ  یُحِبُّوْنَ  اَنْ  یُّحْمَدُوْا  بِمَا  لَمْ  یَفْعَلُوْا  فَلَا  تَحْسَبَنَّهُمْ  بِمَفَازَةٍ  مِّنَ  الْعَذَابِۚ وَ  لَهُمْ  عَذَابٌ  اَلِیْمٌ



অনুবাদ:    যারা নিজেদের কার্যকলাপে আনন্দিত এবং যে কাজ যথার্থই তারা নিজেরা করেনি সেজন্য প্রশংসা পেতে চায়, তাদেরকে তোমরা আযাব থেকে সংরক্ষিত মনে করো না। আসলে তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তৈরী রয়েছে।



(3:189)
وَ  لِلّٰهِ  مُلْكُ  السَّمٰوٰتِ  وَ  الْاَرْضِؕ وَ  اللّٰهُ  عَلٰى  كُلِّ  شَیْءٍ  قَدِیْرٌ۠



অনুবাদ:    আল্লাহ পৃথিবী ও আকাশের মালিক এবং তাঁর শক্তি সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে।



(3:190)
اِنَّ  فِیْ  خَلْقِ  السَّمٰوٰتِ  وَ  الْاَرْضِ   وَ  اخْتِلَافِ  الَّیْلِ  وَ  النَّهَارِ  لَاٰیٰتٍ  لِّاُولِی  الْاَلْبَابِۚۙ



অনুবাদ:    পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের পালাক্রমে যাওয়া আসার মধ্যে সেই সমস্ত বুদ্ধিমান লোকদের জন্য রয়েছে বহুতর নিদর্শন -



(3:191)
الَّذِیْنَ  یَذْكُرُوْنَ  اللّٰهَ  قِیٰمًا  وَّ  قُعُوْدًا  وَّ  عَلٰى  جُنُوْبِهِمْ  وَ  یَتَفَكَّرُوْنَ  فِیْ  خَلْقِ  السَّمٰوٰتِ  وَ  الْاَرْضِۚ رَبَّنَا  مَا  خَلَقْتَ  هٰذَا  بَاطِلًاۚ سُبْحٰنَكَ  فَقِنَا  عَذَابَ  النَّارِ



অনুবাদ:    যে সমস্ত বুদ্ধিমান লোক উঠতে, বসতে ও শয়নে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর গঠনাকৃতি নিয়ে চিন্তা- ভাবনা করে, (তারা আপনা আপনি বলে ওঠেঃ) “হে আমাদের প্রভু! এসব তুমি অনর্থক ও উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে সৃষ্টি করো নি। বাজে ও নিরর্থক কাজ করা থেকে তুমি পাক-পবিত্র ও মুক্ত। কাজেই হে প্রভু! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করো।



(3:192)
رَبَّنَاۤ  اِنَّكَ  مَنْ  تُدْخِلِ  النَّارَ  فَقَدْ  اَخْزَیْتَهٗؕ وَ  مَا  لِلظّٰلِمِیْنَ  مِنْ  اَنْصَارٍ



অনুবাদ:    তুমি যাকে জাহান্নামে ফেলে দিয়েছো, তাকে আসলে বড়ই লাঞ্ছনা ও অপমানের মধ্যে ঠেলে দিয়েছো এবং এহেন জালেমদের কোন সাহায্যকারী হবে না।



(3:193)
رَبَّنَاۤ  اِنَّنَا  سَمِعْنَا  مُنَادِیًا  یُّنَادِیْ  لِلْاِیْمَانِ  اَنْ  اٰمِنُوْا  بِرَبِّكُمْ  فَاٰمَنَّا    ط    رَبَّنَا  فَاغْفِرْ  لَنَا  ذُنُوْبَنَا  وَ  كَفِّرْ  عَنَّا  سَیِّاٰتِنَا  وَ  تَوَفَّنَا  مَعَ  الْاَبْرَارِۚ



অনুবাদ:    হে আমাদের মালিক! আমরা একজন আহ্বানকারীর আহ্বান শুনেছিলাম। তিনি ঈমানের দিকে আহবান করছিলেন। তিনি বলছিলেন, তোমরা নিজেদের রবকে মেনে নাও। আমরা তার আহবান গ্রহণ করেছি। কাজেই, হে আমাদের প্রভু! আমরা যেসব গোনাহ করছি তা মাফ করে দাও। আমাদের মধ্যে যেসব অসৎবৃত্তি আছে সেগুলো আমাদের থেকে দূর করে দাও এবং নেক লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করো।



(3:194)
رَبَّنَا  وَ  اٰتِنَا  مَا  وَعَدْتَّنَا  عَلٰى  رُسُلِكَ  وَ  لَا  تُخْزِنَا  یَوْمَ  الْقِیٰمَةِؕ اِنَّكَ  لَا  تُخْلِفُ  الْمِیْعَادَ



অনুবাদ:    হে আমাদের রব! তোমার রসূলদের মাধ্যমে তুমি যেসব ওয়াদা করেছো আমাদের সাথে, সেগুলো পূর্ণ করো এবং কিয়ামতের দিন আমাদের লাঞ্ছনার গর্তে ফেলে দিয়ো না। নিঃসন্দেহে তুমি ওয়াদা খেলাপকারী নও।”



(3:195)
فَاسْتَجَابَ  لَهُمْ  رَبُّهُمْ  اَنِّیْ  لَاۤ  اُضِیْعُ  عَمَلَ  عَامِلٍ  مِّنْكُمْ  مِّنْ  ذَكَرٍ  اَوْ  اُنْثٰىۚ بَعْضُكُمْ  مِّنْۢ  بَعْضٍۚ فَالَّذِیْنَ  هَاجَرُوْا  وَ  اُخْرِجُوْا  مِنْ  دِیَارِهِمْ  وَ  اُوْذُوْا  فِیْ  سَبِیْلِیْ  وَ  قٰتَلُوْا  وَ  قُتِلُوْا  لَاُكَفِّرَنَّ  عَنْهُمْ  سَیِّاٰتِهِمْ  وَ  لَاُدْخِلَنَّهُمْ  جَنّٰتٍ  تَجْرِیْ  مِنْ  تَحْتِهَا  الْاَنْهٰرُۚ ثَوَابًا  مِّنْ  عِنْدِ  اللّٰهِؕ وَ  اللّٰهُ  عِنْدَهٗ  حُسْنُ  الثَّوَابِ



অনুবাদ:    জবাবে তাদের রব বললেনঃ “আমি তোমাদের কারো কর্মকাণ্ড নষ্ট করবো না। পুরুষ হও বা নারী, তোমরা সবাই একই জাতির অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যারা আমার জন্য নিজেদের স্বদেশ ভূমি ত্যাগ করেছে এবং আমার পথে যাদেরকে নিজেদের ঘর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া ও কষ্ট দেয়া হয়েছে এবং যারা আমার জন্য লড়েছে ও মারা গেছে, তাদের সমস্ত গোনাহ আমি মাফ করে দেবো এবং তাদেরকে এমন সব বাগানে প্রবেশ করাবো যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলবে। এসব হচ্ছে আল্লাহর কাছে তাদের প্রতিদান এবং সবচেয়ে ভালো প্রতিদান আল্লাহর কাছেই আছে।”



(3:196)
لَا  یَغُرَّنَّكَ  تَقَلُّبُ  الَّذِیْنَ  كَفَرُوْا  فِی  الْبِلَادِؕ



অনুবাদ:    হে নবী! দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে আল্লাহর নাফরমান লোকদের চলাফেরা যেন তোমাকে ধোঁকায় ফেলে না দেয়।



(3:197)
مَتَاعٌ  قَلِیْلٌ   ثُمَّ  مَاْوٰىهُمْ  جَهَنَّمُؕ وَ  بِئْسَ   الْمِهَادُ



অনুবাদ:    এটা নিছক কয়েক দিনের জীবনের সামান্য আনন্দ ফূর্তি মাত্র। তারপর এরা সবাই জাহান্নামে চলে যাবে, যা সবচেয়ে খারাপ স্থান।



(3:198)
لٰكِنِ  الَّذِیْنَ  اتَّقَوْا  رَبَّهُمْ  لَهُمْ  جَنّٰتٌ  تَجْرِیْ  مِنْ  تَحْتِهَا  الْاَنْهٰرُ  خٰلِدِیْنَ  فِیْهَا  نُزُلًا  مِّنْ  عِنْدِ  اللّٰهِؕ وَ  مَا  عِنْدَ  اللّٰهِ  خَیْرٌ  لِّلْاَبْرَارِ



অনুবাদ:    বিপরীত পক্ষে যারা নিজেদের রবকে ভয় করে জীবন যাপন করে তাদের জন্য এমন সব বাগান রয়েছে, যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলছে। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য মেহমানদারীর সরঞ্জাম। আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে, নেক লোকদের জন্য তাই ভালো।



(3:199)
وَ  اِنَّ  مِنْ  اَهْلِ  الْكِتٰبِ  لَمَنْ  یُّؤْمِنُ  بِاللّٰهِ  وَ  مَاۤ  اُنْزِلَ  اِلَیْكُمْ  وَ  مَاۤ  اُنْزِلَ  اِلَیْهِمْ  خٰشِعِیْنَ  لِلّٰهِۙ لَا  یَشْتَرُوْنَ  بِاٰیٰتِ  اللّٰهِ  ثَمَنًا  قَلِیْلًاؕ أُولَٰئِكَ  لَهُمْ  اَجْرُهُمْ  عِنْدَ  رَبِّهِمْؕ اِنَّ  اللّٰهَ  سَرِیْعُ  الْحِسَابِ



অনুবাদ:    আহলি কিতাবদের মধ্যেও এমন কিছু লোক আছে, যারা আল্লাহকে মানে তোমাদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তার ওপর ঈমান আনে এবং এর আগে তাদের নিজেদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছিল তার ওপরও ঈমান রাখে, যারা আল্লাহর সামনে বিনত মস্তক এবং আল্লাহর আয়াতকে সামান্য দামে বিক্রি করে না। তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে। আর তিনি হিসেব চুকিয়ে দেবার ব্যাপারে দেরী করেন না।



(3:200)
یٰۤاَیُّهَا  الَّذِیْنَ  اٰمَنُوا  اصْبِرُوْا  وَ  صَابِرُوْا  وَ  رَابِطُوْا   وَ  اتَّقُوا  اللّٰهَ  لَعَلَّكُمْ  تُفْلِحُوْنَ۠



অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে।

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

Islamic world

  Islamic World

জনপ্রিয় লেখা সমূহ