(2:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ =
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
(2:1)
الٓمّٓۚ
শব্দার্থ: الم = আলিফলা-মমী-ম,
অনুবাদ: আলিফ লাম মীম।
(2:2)
ذٰلِكَ الْكِتٰبُ لَا رَیْبَ فِیْهِ ۚۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِیْنَۙ
শব্দার্থ: ذَٰلِكَ = (এটা)সেই, الْكِتَابُ = মহাগ্রন্থ(আল্লাহর), لَا = নেই, رَيْبَ = কোনোসন্দেহ, فِيهِ = তাঁরমধ্যে, هُدًى = সৎপথনির্দেশ(হেদায়াত), لِلْمُتَّقِينَ = মুত্তাকীদেরজন্য,
অনুবাদ: এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। এটি হিদায়াত সেই ‘মুত্তাকী’দের জন্য
(2:3)
الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِالْغَیْبِ وَ یُقِیْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَ مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ یُنْفِقُوْنَۙ
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, يُؤْمِنُونَ = বিশ্বাসকরে, بِالْغَيْبِ = অদৃশ্যেরওপর, وَيُقِيمُونَ = এবংপ্রতিষ্ঠিতকরে, الصَّلَاةَ = সালাত, وَمِمَّا = ওতাহতেযা, رَزَقْنَاهُمْ = তাদেরআমরাজীবিকাদিয়েছি, يُنْفِقُونَ = তারাব্যয়করে,
অনুবাদ: যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, নামায কায়েম করে এবং যে রিযিক আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে খরচ করে।
(2:4)
وَ الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْكَ وَ مَاۤ اُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَۚ وَ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ یُوْقِنُوْنَؕ
শব্দার্থ: وَالَّذِينَ = এবংযারা, يُؤْمِنُونَ = বিশ্বাসকরে, بِمَا = ঐবিষয়েযা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছে, إِلَيْكَ = তোমারপ্রতি, وَمَا = এবংযা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছে, مِنْ = থেকে, قَبْلِكَ = তোমারপূর্বে, وَبِالْآخِرَةِ = এবংআখিরাতেরউপর, هُمْ = তারা, يُوقِنُونَ = দৃঢ়বিশ্বাসরাখে,
অনুবাদ: আর যে কিতাব তোমাদের ওপর নাযিল করা হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন) এবং তোমার আগে যেসব কিতাব নাযিল করা হয়েছিল সে সবগুলোর ওপর ঈমান আনে আর আখেরাতের ওপর একীন রাখে।
(2:5)
أُولَٰئِكَ عَلٰى هُدًى مِّنْ رَّبِّهِمْۗ وَ أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
শব্দার্থ: أُولَٰئِكَ = তারাই(প্রতিষ্ঠিত), عَلَىٰ = উপর, هُدًى = সত্যপথের, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, وَأُولَٰئِكَ = এবংতারাই(ঐসবলোক), هُمُ = যারা, الْمُفْلِحُونَ = সফলকাম,
অনুবাদ: এ ধরনের লোকেরা তাদের রবের পক্ষ থেকে সরল সত্য পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তারা কল্যাণ লাভের অধিকারী।
(2:6)
اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا سَوَآءٌ عَلَیْهِمْ ءَاَنْذَرْتَهُمْ اَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরেছে, سَوَاءٌ = সমান, عَلَيْهِمْ = তাদেরজন্যে, أَأَنْذَرْتَهُمْ = তাদের তুমি সতর্ক করকি, أَمْ = অথবা, لَمْ = না, تُنْذِرْهُمْ = সতর্ক কর তুমি তাদেরকে, لَا = না, يُؤْمِنُونَ = তারাঈমানআনবে,
অনুবাদ: যেসব লোক (একথাগুলো মেনে নিতে) অস্বীকার করেছে, তাদের জন্য সমান – তোমরা তাদের সতর্ক করো বা না করো, তারা মেনে নেবে না।
(2:7)
خَتَمَ اللّٰهُ عَلٰى قُلُوْبِهِمْ وَ عَلٰى سَمْعِهِمْؕ وَ عَلٰۤى اَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ٘ وَّ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِیْمٌ۠
শব্দার্থ: خَتَمَ = সিলমেরেদিয়েছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, عَلَىٰ = উপর, قُلُوبِهِمْ = তাদেরঅন্তরের, وَعَلَىٰ = এবংউপর, سَمْعِهِمْ = তাদেরশ্রবণশক্তির, وَعَلَىٰ = এবংউপর, أَبْصَارِهِمْ = তাদেরদৃষ্টিশক্তির, غِشَاوَةٌ = আবরণ(দিয়েছেন), وَلَهُمْ = এবংতাদেরজন্যে(রয়েছে), عَذَابٌ = শাস্তি, عَظِيمٌ = কঠিন,
অনুবাদ: আল্লাহ তাদের হৃদয়ে ও কানে মোহর মেরে দিয়েছেন। এবং তাদের চোখের ওপর আবরণ পড়ে গেছে। তারা কঠিন শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।
(2:8)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ بِالْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ مَا هُمْ بِمُؤْمِنِیْنَۘ
শব্দার্থ: وَمِنَ = এবংমধ্যহতে, النَّاسِ = মানুষের(এমনওআছে), مَنْ = যারা, يَقُولُ = বলে, آمَنَّا = আমরাঈমানএনেছি, بِاللَّهِ = আল্লাহরউপর, وَبِالْيَوْمِ = ওদিনেরউপর, الْآخِرِ = আখিরাতের, وَمَا = অথচনা, هُمْ = তারা, بِمُؤْمِنِينَ = মুমিন,
অনুবাদ: কিছু লোক এমনও আছে যারা বলে, আমরা আল্লাহর ওপর ও আখেরাতের দিনের ওপর ঈমান এনেছি, অথচ আসলে তারা মু’মিন নয়।
(2:9)
یُخٰدِعُوْنَ اللّٰهَ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا ۚ وَ مَا یَخْدَعُوْنَ اِلَّاۤ اَنْفُسَهُمْ وَ مَا یَشْعُرُوْنَؕ
শব্দার্থ: يُخَادِعُونَ = তারাপ্রতারিতকরতেচায়, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَالَّذِينَ = ও(তাদেরকে)যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, وَمَا = কিন্তুনা, يَخْدَعُونَ = তারাপ্রতারিতকরে, إِلَّا = ছাড়া, أَنْفُسَهُمْ = তাদেরনিজেদেরকে, وَمَا = এবংনা, يَشْعُرُونَ = তারাঅনুভবকরে,
অনুবাদ: তারা আল্লাহর সাথে ও যারা ঈমান এনেছে তাদের সাথে ধোঁকাবাজি করছে। কিন্তু আসলে তারা নিজেদেরকেই প্রতারণা করছে, তবে তারা এ ব্যাপারে সচেতন নয়।
(2:10)
فِیْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌۙ فَزَادَهُمُ اللّٰهُ مَرَضًاۚ وَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌۢ بِمَا كَانُوْا یَكْذِبُوْنَ
শব্দার্থ: فِي = মধ্যেআছে, قُلُوبِهِمْ = তাদেরঅন্তরসমূহের, مَرَضٌ = রোগ(আছে), فَزَادَهُمُ = বৃদ্ধিকরলেনতাই(আরও)তাদেরকে, اللَّهُ = আল্লাহ্, مَرَضًا = (তাদের)রোগ, وَلَهُمْ = এবংতাদেরজন্য(রয়েছে), عَذَابٌ = শাস্তি, أَلِيمٌ = কষ্টদায়ক, بِمَا = এজন্যেযে, كَانُوا = তারাছিল, يَكْذِبُونَ = তারামিথ্যাবলতো,
অনুবাদ: তাদের হৃদয়ে আছে একটি রোগ, আল্লাহ সে রোগ আরো বেশী বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর যে মিথ্যা তারা বলে তার বিনিময়ে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(2:11)
وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوْا فِی الْاَرْضِۙ قَالُوْۤا اِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, قِيلَ = বলাহয়, لَهُمْ = তাদেরউদ্দেশ্যে, لَا = না, تُفْسِدُوا = বিপর্যয়সৃষ্টিকরো, فِي = মধ্যে, الْأَرْضِ = পৃথিবীর, قَالُوا = তারাবলে, إِنَّمَا = মূলতঃ, نَحْنُ = আমরা, مُصْلِحُونَ = সংশোধনকারী,
অনুবাদ: যখনই তাদের বলা হয়েছে, যমীনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না, তারা একথাই বলেছে, আমরা তো সংশোধনকারী।
(2:12)
اَلَاۤ اِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُوْنَ وَ لٰكِنْ لَّا یَشْعُرُوْنَ
শব্দার্থ: أَلَا = সাবধান, إِنَّهُمْ = তারানিশ্চয়ই, هُمُ = তারাই, الْمُفْسِدُونَ = বিপর্যয়সৃষ্টিকারী, وَلَٰكِنْ = কিন্তু, لَا = না, يَشْعُرُونَ = তারাঅনুভবকরে,
অনুবাদ: সাবধান! এরাই ফাসাদ সৃষ্টিকারী, তবে তারা এ ব্যাপারে সচেতন নয়।
(2:13)
وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمْ اٰمِنُوْا كَمَاۤ اٰمَنَ النَّاسُ قَالُوْۤا اَنُؤْمِنُ كَمَاۤ اٰمَنَ السُّفَهَآءُؕ اَلَاۤ اِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَآءُ وَ لٰكِنْ لَّا یَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, قِيلَ = বলাহয়, لَهُمْ = তাদেরউদ্দেশ্যে, آمِنُوا = তোমরাঈমানআনো, كَمَا = যেমন, آمَنَ = ঈমানএনেছে, النَّاسُ = মানুষ, قَالُوا = তারাবলে, أَنُؤْمِنُ = আমরাকিঈমানআনবো, كَمَا = যেমন, آمَنَ = ঈমানএনেছে, السُّفَهَاءُ = বোকারা, أَلَا = সাবধান, إِنَّهُمْ = নিশ্চয়ইতারা, هُمُ = তারাই, السُّفَهَاءُ = বোকা, وَلَٰكِنْ = কিন্তু, لَا = না, يَعْلَمُونَ = তারাজানে,
অনুবাদ: আর যখন তাদের বলা হয়েছে, অন্য লোকেরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আনো তখন তারা এ জবাবই দিয়েছে- আমরা কি ঈমান আনবো নির্বোধদের মতো? সাবধান! আসলে এরাই নির্বোধ, কিন্তু এরা জানে না।
(2:14)
وَ اِذَا لَقُوا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قَالُوْۤا اٰمَنَّاۚۖ وَ اِذَا خَلَوْا اِلٰى شَیٰطِیْنِهِمْۙ قَالُوْۤا اِنَّا مَعَكُمْۙ اِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِءُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, لَقُوا = তারামিলিতহয়, الَّذِينَ = (তাদেরসাথে)যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, قَالُوا = তারাবলে, آمَنَّا = আমরাঈমানএনেছি, وَإِذَا = এবংযখন, خَلَوْا = গোপনেমিলে, إِلَىٰ = সাথে, شَيَاطِينِهِمْ = তাদেরশয়তান(বন্ধুদের), قَالُوا = তারাবলে, إِنَّا = নিশ্চয়ইআমরা, مَعَكُمْ = তোমাদেরসাথে, إِنَّمَا = মূলতঃ, نَحْنُ = আমরা, مُسْتَهْزِئُونَ = উপহাসকারী(মুমিনদেরসাথে),
অনুবাদ: যখন এরা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয়, বলেঃ “আমরা ঈমান এনেছি”, আবার যখন নিরিবিলিতে নিজেদের শয়তানদের সাথে মিলিত হয় তখন বলেঃ “আমরা তো আসলে তোমাদের সাথেই আছি আর ওদের সাথে তো নিছক তামাশা করছি।”
(2:15)
اَللّٰهُ یَسْتَهْزِئُ بِهِمْ وَ یَمُدُّهُمْ فِیْ طُغْیَانِهِمْ یَعْمَهُوْنَ
শব্দার্থ: اللَّهُ = আল্লাহ্, يَسْتَهْزِئُ = উপহাসকরেন, بِهِمْ = তাদেরসাথে, وَيَمُدُّهُمْ = এবংতাদেরঢিলদেন, فِي = মধ্যে, طُغْيَانِهِمْ = তাদেরঅবাধ্যতার, يَعْمَهُونَ = তারাউদভ্রান্তহয়েফিরে,
অনুবাদ: আল্লাহ এদের সাথে তামাশা করছেন, এদের রশি দীর্ঘায়িত বা ঢিল দিয়ে যাচ্ছেন এবং এরা নিজেদের আল্লাহদ্রোহিতার মধ্যে অন্ধের মতো পথ হাতড়ে মরছে।
(2:16)
أُولَٰئِكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰى۪ فَمَا رَبِحَتْ تِّجَارَتُهُمْ وَ مَا كَانُوْا مُهْتَدِیْنَ
শব্দার্থ: أُولَٰئِكَ = তারাই(ঐসবলোক), الَّذِينَ = যারা, اشْتَرَوُا = কিনেছে, الضَّلَالَةَ = পথভ্রশ্ততা, بِالْهُدَىٰ = সৎপথেরবিনিময়, فَمَا = সুতরাংনা, رَبِحَتْ = লাভজনকহয়, تِجَارَتُهُمْ = তাদেরব্যবসা, وَمَا = এবংনা, كَانُوا = তারাছিল, مُهْتَدِينَ = সৎপথেপরিচালিত,
অনুবাদ: এরাই হিদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহী কিনে নিয়েছে, কিন্তু এ সওদাটি তাদের জন্য লাভজনক নয় এবং এরা মোটেই সঠিক পথে অবস্থান করছে না।
(2:17)
مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِی اسْتَوْقَدَ نَارًاۚ فَلَمَّاۤ اَضَآءَتْ مَاحَوْلَهٗ ذَهَبَ اللّٰهُ بِنُوْرِهِمْ وَ تَرَكَهُمْ فِیْ ظُلُمٰتٍ لَّا یُبْصِرُوْنَ
শব্দার্থ: مَثَلُهُمْ = তাদেরউপমা, كَمَثَلِ = উপমাযেমন(একব্যক্তির), الَّذِي = যে, اسْتَوْقَدَ = জ্বালালো, نَارًا = আগুন, فَلَمَّا = অতঃপরযখন, أَضَاءَتْ = আলোকিতকরলো, مَا = যা, حَوْلَهُ = তারচারপাশে, ذَهَبَ = নিলেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, بِنُورِهِمْ = তাদেরআলোনিয়ে, وَتَرَكَهُمْ = এবংতাদেরছেড়েদিলেন, فِي = মধ্যে, ظُلُمَاتٍ = অন্ধকারসমূহের, لَا = না, يُبْصِرُونَ = তারাদেখতেপায়,
অনুবাদ: এদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে, যেমন এক ব্যক্তি আগুন জ্বালালো এবং যখনই সেই আগুন চারপাশ আলোকিত করলো তখন আল্লাহ তাদের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিলেন এবং তাদের ছেড়ে দিলেন এমন অবস্থায় যখন অন্ধকারের মধ্যে তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না।
(2:18)
صُمٌّۢ بُكْمٌ عُمْیٌ فَهُمْ لَا یَرْجِعُوْنَۙ
শব্দার্থ: صُمٌّ = বধির, بُكْمٌ = বোবা, عُمْيٌ = অন্ধ, فَهُمْ = সুতরাংতারা, لَا = না, يَرْجِعُونَ = প্রত্যাবর্তনকরবে,
অনুবাদ: তারা কালা, বোবা, অন্ধ। তারা আর ফিরে আসবে না।
(2:19)
اَوْ كَصَیِّبٍ مِّنَ السَّمَآءِ فِیْهِ ظُلُمٰتٌ وَّ رَعْدٌ وَّ بَرْقٌۚ یَجْعَلُوْنَ اَصَابِعَهُمْ فِیْۤ اٰذَانِهِمْ مِّنَ الصَّوَاعِقِ حَذَرَ الْمَوْتِؕ وَ اللّٰهُ مُحِیْطٌۢ بِالْكٰفِرِیْنَ
শব্দার্থ: أَوْ = অথবা, كَصَيِّبٍ = মতোবৃষ্টিপাতের, مِنَ = থেকে, السَّمَاءِ = আকাশ, فِيهِ = তারমধ্যে(আছে), ظُلُمَاتٌ = অন্ধকার, وَرَعْدٌ = এবংগর্জন, وَبَرْقٌ = ওবিদ্যুৎচমক, يَجْعَلُونَ = তারারাখে, أَصَابِعَهُمْ = তাদেরআঙ্গুলগুলোকে, فِي = মধ্যে, آذَانِهِمْ = তাদেরকানগুলোর, مِنَ = কারনে, الصَّوَاعِقِ = বজ্রধ্বনির, حَذَرَ = ভয়ে, الْمَوْتِ = মৃত্যুর, وَاللَّهُ = অথচআল্লাহ্, مُحِيطٌ = পরিবেষ্টনকারী, بِالْكَافِرِينَ = কাফিরদের,
অনুবাদ: অথবা এদের দৃষ্টান্ত এমন যে, আকাশ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। তার সাথে আছে অন্ধকার মেঘমালা, বজ্রের গর্জন ও বিদ্যুৎ চমক। বজ্রপাতের আওয়াজ শুনে নিজেদের প্রাণের ভয়ে এরা কানে আঙুল ঢুকিয়ে দেয়। আল্লাহ এ সত্য অস্বীকারকারীদেরকে সবদিক দিয়ে ঘিরে রেখেছেন।
(2:20)
یَكَادُ الْبَرْقُ یَخْطَفُ اَبْصَارَهُمْؕ كُلَّمَاۤ اَضَآءَ لَهُمْ مَّشَوْا فِیْهِۗۙ وَ اِذَاۤ اَظْلَمَ عَلَیْهِمْ قَامُوْاؕ وَ لَوْ شَآءَ اللّٰهُ لَذَهَبَ بِسَمْعِهِمْ وَ اَبْصَارِهِمْؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ۠
শব্দার্থ: يَكَادُ = প্রায়, الْبَرْقُ = বিদ্যুৎচমক, يَخْطَفُ = কেড়েনেয়, أَبْصَارَهُمْ = তাদেরদৃষ্টিসমূহের, كُلَّمَا = যখনই, أَضَاءَ = আলোকিতহয়, لَهُمْ = তাদেরজন্য, مَشَوْا = তারাচলে, فِيهِ = তারমধ্যে, وَإِذَا = এবংযখন, أَظْلَمَ = অন্ধকারহয়, عَلَيْهِمْ = তাদেরউপর, قَامُوا = তারাদাড়িয়েযায়, وَلَوْ = আরযদি, شَاءَ = চান, اللَّهُ = আল্লাহ্, لَذَهَبَ = অবশ্যইনিয়েনিবেন, بِسَمْعِهِمْ = তাদেরশ্রবণশক্তি, وَأَبْصَارِهِمْ = এবংতাদেরদর্শনশক্তি, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, عَلَىٰ = উপর, كُلِّ = সব, شَيْءٍ = কিছুর, قَدِيرٌ = সর্বশক্তিমান,
অনুবাদ: বিদ্যুৎ চমকে তাদের অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যেন বিদ্যুৎ শীগ্গির তাদের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নেবে। যখন সামান্য একটু আলো তারা অনুভব করে তখন তার মধ্যে তারা কিছুদূর চলে এবং যখন তাদের ওপর অন্ধকার ছেয়ে যায় তারা দাঁড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ চাইলে তাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি একেবারেই কেড়ে নিতে পারতেন। নিঃসন্দেহে তিনি সবকিছুর ওপর শক্তিশালী।
(2:21)
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوْا رَبَّكُمُ الَّذِیْ خَلَقَكُمْ وَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَۙ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, النَّاسُ = মানুষ, اعْبُدُوا = তোমরাইবাদতকরো, رَبَّكُمُ = তোমাদেররবের, الَّذِي = যিনি, خَلَقَكُمْ = তোমাদেরসৃষ্টিকরেছেন, وَالَّذِينَ = এবংযারা(ছিল), مِنْ = থেকে, قَبْلِكُمْ = তোমাদেরপূর্ব(তাদেরওস্রষ্টা), لَعَلَّكُمْ = তোমরাযেন, تَتَّقُونَ = বেঁচেচলতেপারো(পাপহতে),
অনুবাদ: হে মানব জাতি। ইবাদাত করো তোমাদের রবের, যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্বে যারা অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের সবার সৃষ্টিকর্তা, এভাবেই তোমরা নিষ্কৃতি লাভের আশা করতে পারো।
(2:22)
الَّذِیْ جَعَلَ لَكُمُ الْاَرْضَ فِرَاشًا وَّ السَّمَآءَ بِنَآءً۪ وَّ اَنْزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخْرَ جَ بِهٖ مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزْقًا لَّكُمْۚ فَلَا تَجْعَلُوْا لِلّٰهِ اَنْدَادًا وَّ اَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: الَّذِي = যিনি, جَعَلَ = করেছেন, لَكُمُ = তোমাদেরজন্য, الْأَرْضَ = পৃথিবীকে, فِرَاشًا = শয্যা, وَالسَّمَاءَ = ওআকাশকে, بِنَاءً = ছাদস্বরূপ, وَأَنْزَلَ = এবংবর্ষণকরেছেন, مِنَ = থেকে, السَّمَاءِ = আকাশ, مَاءً = পানি, فَأَخْرَجَ = এরপরবেরকরেছেন, بِهِ = তাদ্বারা, مِنَ = কোনো, الثَّمَرَاتِ = (নানাধরণের)ফলমূল, رِزْقًا = রিযকহিসাবে, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, فَلَا = অতএবনা, تَجْعَلُوا = দাড়করিও, لِلَّهِ = আল্লাহরসাথে, أَنْدَادًا = সমতুল্য(অন্যকাউকে), وَأَنْتُمْ = অথচতোমরা, تَعْلَمُونَ = জানো,
অনুবাদ: তিনিই তোমাদের জন্য মাটির শয্যা বিছিয়েছেন, আকাশের ছাদ তৈরি করেছেন, ওপর থেকে পানি বর্ষণ করেছেন এবং তার সাহায্যে সব রকমের ফসলাদি উৎপন্ন করে তোমাদের আহার যুগিয়েছেন। কাজেই একথা জানার পর তোমরা অন্যদেরকে আল্লাহর প্রতিপক্ষে পরিণত করো না।
(2:23)
وَ اِنْ كُنْتُمْ فِیْ رَیْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلٰى عَبْدِنَا فَاْتُوْا بِسُوْرَةٍ مِّنْ مِّثْلِهٖ۪ وَ ادْعُوْا شُهَدَآءَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِنْ = এবংযদি, كُنْتُمْ = তোমরাথাক, فِي = মধ্যে, رَيْبٍ = সন্দেহের, مِمَّا = তাহতেযা, نَزَّلْنَا = আমরাঅবতীর্ণকরেছি, عَلَىٰ = উপর, عَبْدِنَا = আমাদেরদাসের, فَأْتُوا = তবেতোমরাআনো, بِسُورَةٍ = একটিসূরা, مِنْ = মধ্যহতে, مِثْلِهِ = তারসদৃশ, وَادْعُوا = এবংতোমরাডাকো, شُهَدَاءَكُمْ = তোমাদেরসাক্ষীদেরকে, مِنْ = দিয়ে, دُونِ = বাদ, اللَّهِ = আল্লাহকে, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহও, صَادِقِينَ = সত্যবাদী,
অনুবাদ: আর যে কিতাবটি আমি আমার বান্দার ওপর নাযিল করেছি সেটি আমার কিনা- এ ব্যাপারে যদি তোমরা সন্দেহ পোষণ করে থাকো তাহলে তার মতো একটি সূরা তৈরি করে আনো এবং নিজেদের সমস্ত সমর্থক গোষ্ঠীকে ডেকে আনো – এক আল্লাহকে ছাড়া আর যার যার চাও তার সাহায্য নাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে এ কাজটি করে দেখাও।
(2:24)
فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا وَ لَنْ تَفْعَلُوْا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِیْ وَ قُوْدُهَا النَّاسُ وَ الْحِجَارَةُ ۚۖ اُعِدَّتْ لِلْكٰفِرِیْنَ
শব্দার্থ: فَإِنْ = কিন্তুযদি, لَمْ = না, تَفْعَلُوا = তোমরাকরো, وَلَنْ = এবংকখনওনা, تَفْعَلُوا = তোমরাকরতেপারবে, فَاتَّقُوا = তোমরাভয়করো, النَّارَ = আগুনের, الَّتِي = যা(এমনযে), وَقُودُهَا = তারইন্ধন(হবে), النَّاسُ = মানুষ, وَالْحِجَارَةُ = ওপাথরসমূহ, أُعِدَّتْ = যাপ্রস্তুুতকরাহয়েছে, لِلْكَافِرِينَ = কাফিরদেরজন্য,
অনুবাদ: কিন্তু যদি তোমরা এমনটি না করো আর নিঃসন্দেহে কখনই তোমরা এটা করতে পারবে না, তাহলে ভয় করো সেই আগুনকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যা তৈরি রাখা হয়েছে সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য।
(2:25)
وَ بَشِّرِ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُؕ كُلَّمَا رُزِقُوْا مِنْهَا مِنْ ثَمَرَةٍ رِّزْقًاۙ قَالُوْا هٰذَا الَّذِیْ رُزِقْنَا مِنْ قَبْلُۙ وَ اُتُوْا بِهٖ مُتَشَابِهًاؕ وَ لَهُمْ فِیْهَاۤ اَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌۗۙ وَّ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ
শব্দার্থ: وَبَشِّرِ = এবংসুসংবাদদাও, الَّذِينَ = (তাদেরকে)যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, وَعَمِلُوا = ওকাজকরেছে, الصَّالِحَاتِ = সৎ, أَنَّ = যে, لَهُمْ = তাদেরজন্যে(রয়েছে), جَنَّاتٍ = জান্নাত, تَجْرِي = প্রবাহিতহয়, مِنْ = দিয়ে, تَحْتِهَا = তারনিচ, الْأَنْهَارُ = ঝর্ণাধারা, كُلَّمَا = যখনই, رُزِقُوا = তাদেররিযকদেয়াহবে, مِنْهَا = তাথেকে, مِنْ = কোনো, ثَمَرَةٍ = ফলমূল, رِزْقًا = রিযকহিসেবে, قَالُوا = তারাবলবে, هَٰذَا = এটা, الَّذِي = (তাই)যা, رُزِقْنَا = আমাদেররিযকদেওয়াহয়েছিল, مِنْ = থেকে, قَبْلُ = পূর্ব, وَأُتُوا = এবংতাদেরকেযাদেওয়াহয়েছিল, بِهِ = (তাথেকে), مُتَشَابِهًا = সদৃশহবে(পরস্পরে), وَلَهُمْ = এবংতাদেরজন্যে, فِيهَا = তারমধ্যে(থাকবে), أَزْوَاجٌ = স্ত্রীরা, مُطَهَّرَةٌ = পবিত্র, وَهُمْ = এবংতারা, فِيهَا = তারমধ্যে, خَالِدُونَ = চিরস্থায়ীহবে,
অনুবাদ: আর হে নবী, যারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনবে এবং (এর বিধান অনুযায়ী) নিজেদের কার্যধারা সংশোধন করে নেবে তাদেরকে এ মর্মে সুখবর দাও যে, তাদের জন্য এমন সব বাগান আছে যার নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে ঝর্ণাধারা। সেই বাগানের ফল দেখতে দুনিয়ার ফলের মতই হবে। যখন কোন ফল তাদের দেয়া হবে খাবার জন্য, তারা বলে উঠবেঃ এ ধরনের ফলই ইতিপূর্বে দুনিয়ায় আমাদের দেয়া হতো। তাদের জন্য সেখানে থাকবে পাক-পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে থাকবে চিরকাল।
(2:26)
اِنَّ اللّٰهَ لَا یَسْتَحْیٖۤ اَنْ یَّضْرِبَ مَثَلًا مَّا بَعُوْضَةً فَمَا فَوْقَهَاؕ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَیَعْلَمُوْنَ اَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّهِمْۚ وَ اَمَّا الَّذِیْنَ كَفَرُوْا فَیَقُوْلُوْنَ مَا ذَاۤ اَرَادَ اللّٰهُ بِهٰذَا مَثَلًاۘ یُضِلُّ بِهٖ كَثِیْرًاۙ وَّ یَهْدِیْ بِهٖ كَثِیْرًاؕ وَ مَا یُضِلُّ بِهٖۤ اِلَّا الْفٰسِقِیْنَۙ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, لَا = না, يَسْتَحْيِي = লজ্জাবোধকরেন, أَنْ = যে, يَضْرِبَ = তিনিপেশকরবেন, مَثَلًا = দৃষ্টান্ত, مَا = যা, بَعُوضَةً = মশা, فَمَا = কিংবাযা, فَوْقَهَا = তারচেয়েক্ষুদ্রতর, فَأَمَّا = তাই, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, فَيَعْلَمُونَ = জানতেপারেতখন, أَنَّهُ = তানিশ্চয়ই, الْحَقُّ = সত্য, مِنْ = পক্ষথেকে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, وَأَمَّا = পক্ষান্তরে, الَّذِينَ = যারা, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরেছে, فَيَقُولُونَ = তারাবলেতখন, مَاذَا = কি, أَرَادَ = চেয়েছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, بِهَٰذَا = এইদিয়ে, مَثَلًا = উপমা, يُضِلُّ = তিনিবিভ্রান্তকরেন, بِهِ = তাদিয়ে, كَثِيرًا = অনেককে, وَيَهْدِي = এবংপথপ্রদর্শনকরেন, بِهِ = তাদিয়ে, كَثِيرًا = অনেককে, وَمَا = এবংনা, يُضِلُّ = বিভ্রান্তকরেন, بِهِ = এদিয়ে, إِلَّا = ছাড়া, الْفَاسِقِينَ = স্বত্বত্যাগীদেরকে,
অনুবাদ: অবশ্য আল্লাহ লজ্জা করেন না মশা বা তার চেয়ে তুচ্ছ কোন জিনিসের দৃষ্টান্ত দিতে। যারা সত্য গ্রহণকারী তারা এ দৃষ্টান্ত –উপমাগুলো দেখে জানতে পারে এগুলো সত্য, এগুলো এসেছে তাদের রবেরই পক্ষ থেকে, আর যারা (সত্যকে) গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয় তারা এগুলো শুনে বলতে থাকে, এ ধরনের দৃষ্টান্ত –উপমার সাথে আল্লাহর কী সম্পর্ক? এভাবে আল্লাহ একই কথার সাহায্যে অনেককে গোমরাহীতে লিপ্ত করেন আবার অনেককে দেখান সরল সোজা পথ।
(2:27)
الَّذِیْنَ یَنْقُضُوْنَ عَهْدَ اللّٰهِ مِنْۢ بَعْدِ مِیْثَاقِهٖ۪ وَ یَقْطَعُوْنَ مَاۤ اَمَرَ اللّٰهُ بِهٖۤ اَنْ یُّوْصَلَ وَ یُفْسِدُوْنَ فِی الْاَرْضِؕ أُولَٰئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, يَنْقُضُونَ = ভঙ্গকরে, عَهْدَ = প্রতিশ্রুতি, اللَّهِ = আল্লাহর, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = পরে, مِيثَاقِهِ = তাআবদ্ধহওয়ার, وَيَقْطَعُونَ = এবংতারাছিন্নকরে, مَا = যা, أَمَرَ = নির্দেশদিয়েছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, بِهِ = তাঁরসম্পর্কে, أَنْ = যে, يُوصَلَ = যুক্তকরতে, وَيُفْسِدُونَ = এবংতারাবিপর্যয়সৃষ্টিকরে, فِي = মধ্যে, الْأَرْضِ = পৃথিবীর, أُولَٰئِكَ = ঐসব(লোক), هُمُ = (তারাই), الْخَاسِرُونَ = ক্ষতিগ্রস্ত,
অনুবাদ: আর তিনি গোমরাহীর মধ্যে তাদেরকেই নিক্ষেপ করেন যারা ফাসেক, যারা আল্লাহর সাথে মজবুতভাবে অঙ্গীকার করার পর আবার তা ভেঙ্গে ফেলে, আল্লাহ যাকে জোড়ার হুকুম দিয়েছেন তাকে কেটে ফেলে এবং যমীনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে চলে। আসলে এরাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।
(2:28)
كَیْفَ تَكْفُرُوْنَ بِاللّٰهِ وَ كُنْتُمْ اَمْوَاتًا فَاَحْیَاكُمْۚ ثُمَّ یُمِیْتُكُمْ ثُمَّ یُحْیِیْكُمْ ثُمَّ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ
শব্দার্থ: كَيْفَ = কিরূপে, تَكْفُرُونَ = তোমরাঅবিশ্বাসকরবে, بِاللَّهِ = আল্লাহরউপর, وَكُنْتُمْ = অথচতোমরাছিলে, أَمْوَاتًا = মৃতঅবস্থায়, فَأَحْيَاكُمْ = পরেতিনিতোমাদেরজীবিতকরেছেন, ثُمَّ = এরপর, يُمِيتُكُمْ = তোমাদেরমৃত্যুদেবেন, ثُمَّ = এরপর, يُحْيِيكُمْ = তোমাদেরজীবিতকরবেন, ثُمَّ = এরপরে, إِلَيْهِ = তাঁরদিকেই, تُرْجَعُونَ = ফিরেযেতেহবেতোমাদেরকে,
অনুবাদ: তোমরা আল্লাহর সাথে কেমন করে কুফরীর আচরণ করতে পারো। অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদের জীবন দান করেছেন। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রাণ হরণ করবেন এবং অতঃপর তিনি তোমাদের জীবন দান করবেন। তারপর তাঁরই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে।
(2:29)
هُوَ الَّذِیْ خَلَقَ لَكُمْ مَّا فِی الْاَرْضِ جَمِیْعًاۗ ثُمَّ اسْتَوٰۤى اِلَى السَّمَآءِ فَسَوّٰىهُنَّ سَبْعَ سَمٰوٰتٍؕ وَ هُوَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ۠
শব্দার্থ: هُوَ = তিনিই(আল্লাহ), الَّذِي = যিনি, خَلَقَ = সৃষ্টিকরেছেন, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, مَا = যাকিছু, فِي = মধ্যে(আছে), الْأَرْضِ = পৃথিবীর, جَمِيعًا = সবকিছুকেই, ثُمَّ = এরপর, اسْتَوَىٰ = লক্ষ্যদিলেন, إِلَى = দিকে, السَّمَاءِ = আকাশের, فَسَوَّاهُنَّ = অতঃপরতাদেরকেসম্পূর্ণকরলেন, سَبْعَ = সাত, سَمَاوَاتٍ = আকাশ, وَهُوَ = এবংতিনি, بِكُلِّ = সব, شَيْءٍ = জিনিসসম্পর্কে, عَلِيمٌ = মহাজ্ঞানী,
অনুবাদ: তিনিই পৃথিবীতে তোমাদের জন্য সমস্ত জিনিস সৃষ্টি করলেন। তারপর ওপরের দিকে লক্ষ করলেন এবং সাত আকাশ বিন্যস্ত করলেন তিনি সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন।
(2:30)
وَ اِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلٰٓئِكَةِ اِنِّیْ جَاعِلٌ فِی الْاَرْضِ خَلِیْفَةًؕ قَالُوْۤا اَتَجْعَلُ فِیْهَا مَنْ یُّفْسِدُ فِیْهَا وَ یَسْفِكُ الدِّمَآءَۚ وَ نَحْنُ نُسَبِّحُ بِحَمْدِكَ وَ نُقَدِّسُ لَكَؕ قَالَ اِنِّیْۤ اَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, قَالَ = বলেছিলেন, رَبُّكَ = তোমাররব, لِلْمَلَائِكَةِ = ফেরেশতাদেরউদ্দেশে, إِنِّي = নিশ্চয়ইআমি, جَاعِلٌ = সৃষ্টিকারী, فِي = মধ্যে, الْأَرْضِ = পৃথিবীতর, خَلِيفَةً = প্রতিনিধি, قَالُوا = তারাবলেছিলো, أَتَجْعَلُ = আপনিকিসৃষ্টিকরবেন, فِيهَا = তারমধ্যে(পৃথিবীতে), مَنْ = যে, يُفْسِدُ = বিপর্যয়সৃষ্টিকরবে, فِيهَا = তারমধ্যে, وَيَسْفِكُ = ওঝরাবে, الدِّمَاءَ = রক্ত, وَنَحْنُ = এবংআমরাইতো, نُسَبِّحُ = পবিত্রমহিমাঘোষণাকরি, بِحَمْدِكَ = আপনারপ্রশংসা, وَنُقَدِّسُ = ওমহিমাঘোষণাকরি, لَكَ = আপনার, قَالَ = তিনিবলেছিলেন, إِنِّي = নিশ্চয়ইআমি, أَعْلَمُ = জানি, مَا = যা, لَا = না, تَعْلَمُونَ = তোমরাজান,
অনুবাদ: আবার সেই সময়ের কথা একটু স্মরণ কর যখন তোমাদের রব ফেরেশতাদের বলেছিলেন, “আমি পৃথিবীতে একজন খলীফা- প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে চাই।” তারা বললো, “আপনি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে নিযুক্ত করতে চান যে সেখানকার ব্যবস্থাপনাকে বিপর্যস্থ করবে এবং রক্তপাত করবে? আপনার প্রশংসা ও স্তুতিসহকারে তাসবীহ পাঠ এবং আপনার পবিত্রতা বর্ণনা তো আমরা করেই যাচ্ছি।” আল্লাহ বললেন, “আমি জানি যা তোমরা জানো না।”
(2:31)
وَ عَلَّمَ اٰدَمَ الْاَسْمَآءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى الْمَلٰٓئِكَةِۙ فَقَالَ اَنْۢبِـُٔوْنِیْ بِاَسْمَآءِ هٰۤؤُلَآءِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ
শব্দার্থ: وَعَلَّمَ = এবংশিখালেন, آدَمَ = আদমকে, الْأَسْمَاءَ = নামসমূহ, كُلَّهَا = সবকিছুর, ثُمَّ = এরপর, عَرَضَهُمْ = সেগুলোউপস্থাপনকরলেন, عَلَى = সামনে, الْمَلَائِكَةِ = ফেরেশতাদের, فَقَالَ = এরপরবললেন, أَنْبِئُونِي = আমাকেঅবহিতকরো, بِأَسْمَاءِ = নামসম্পর্কে, هَٰؤُلَاءِ = এসবের, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহও, صَادِقِينَ = সত্যবাদী,
অনুবাদ: অতঃপর আল্লাহ আদমকে সমস্ত জিনিসের নাম শেখালেন তারপর সেগুলো পেশ করলেন ফেরেশতাদের সামনে এবং বললেন, “যদি তোমাদের ধারণা সঠিক হয় (অর্থাৎ কোন প্রতিনিধি নিযুক্ত করলে ব্যবস্থাপনা বিপর্যস্ত হবে) তাহলে একটু বলতো দেখি এই জিনিসগুলোর নাম?”
(2:32)
قَالُوْا سُبْحٰنَكَ لَا عِلْمَ لَنَاۤ اِلَّا مَا عَلَّمْتَنَاؕ اِنَّكَ اَنْتَ الْعَلِیْمُ الْحَكِیْمُ
শব্দার্থ: قَالُوا = তারাবলেছিল, سُبْحَانَكَ = আপনিপবিত্র, لَا = না(আছে), عِلْمَ = জ্ঞান, لَنَا = আমাদের, إِلَّا = এছাড়া, مَا = যা, عَلَّمْتَنَا = আমাদেরআপনিশিখিয়েছেন, إِنَّكَ = নিশ্চয়ইআপনি, أَنْتَ = আপনিই, الْعَلِيمُ = মহাজ্ঞানী, الْحَكِيمُ = মহাবিজ্ঞ,
অনুবাদ: তারা বললোঃ “ত্রুটিমুক্ত তো একমাত্র আপনারই সত্তা, আমরা তো মাত্র ততটুকু জ্ঞান রাখি যতটুকু আপনি আমাদের দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে আপনি ছাড়া আর এমন কোন সত্তা নেই যিনি সবকিছু জানেন ও সবকিছু বোঝেন।”
(2:33)
قَالَ یٰۤاٰدَمُ اَنْۢبِئْهُمْ بِاَسْمَآئِهِمْۚ فَلَمَّاۤ اَنْۢبَاَهُمْ بِاَسْمَآئِهِمْۙ قَالَ اَلَمْ اَقُلْ لَّكُمْ اِنِّیْۤ اَعْلَمُ غَیْبَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِۙ وَ اَعْلَمُ مَا تُبْدُوْنَ وَ مَا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَ
শব্দার্থ: قَالَ = তিনিবললেন, يَاآدَمُ = হেআদম, أَنْبِئْهُمْ = তাদেরকেঅবহিতকরো, بِأَسْمَائِهِمْ = তাদেরনামগুলোসম্পর্কে, فَلَمَّا = অতঃপরযখন, أَنْبَأَهُمْ = সেতাদেরকেঅবহিতকরল, بِأَسْمَائِهِمْ = তাদেরনামগুলো, قَالَ = তিনিবললেন, أَلَمْ = আমিকি, أَقُلْ = বলিনি, لَكُمْ = তোমাদেরকে, إِنِّي = নিশ্চয়ই, أَعْلَمُ = আমিজানি, غَيْبَ = অদৃশ্যকে, السَّمَاوَاتِ = আকাশসমূহের, وَالْأَرْضِ = ওপাৃথিবীর, وَأَعْلَمُ = এবংআমিজানি, مَا = যা, تُبْدُونَ = তোমরাপ্রকাশকর, وَمَا = ওযা, كُنْتُمْ = তোমরা, تَكْتُمُونَ = গোপনকরো,
অনুবাদ: তখন আল্লাহ আদমকে বললেন, “তুমি ওদেরকে এই জিনিসগুলোর নাম বলে দাও।”যখন সে তাদেরকে সেসবের নাম জানিয়ে দিল তখন আল্লাহ বললেনঃ “আমি না তোমাদের বলেছিলাম, আমি আকাশ ও পৃথিবীর এমন সমস্ত নিগূঢ় তত্ত্ব জানি যা তোমাদের অগোচরে রয়ে গেছে? যা কিছু তোমরা প্রকাশ করে থাকো তা আমি জানি এবং যা কিছু তোমরা গোপন করো তাও আমি জানি।”
(2:34)
وَ اِذْ قُلْنَا لِلْمَلٰٓئِكَةِ اسْجُدُوْا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوْۤا اِلَّاۤ اِبْلِیْسَؕ اَبٰى وَ اسْتَكْبَرَ ق وَ كَانَ مِنَ الْكٰفِرِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবংযখন, قُلْنَا = আমরাবলেছিলাম, لِلْمَلَائِكَةِ = ফেরেশতাদেরকে, اسْجُدُوا = তোমরাসিজদাকরো, لِآدَمَ = আদমকে, فَسَجَدُوا = তখনতারাসিজদাকরল, إِلَّا = ব্যতীত, إِبْلِيسَ = ইবলিস, أَبَىٰ = সেঅমান্যকরল, وَاسْتَكْبَرَ = ওঅহংকারকরল, وَكَانَ = এবংসেহল, مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الْكَافِرِينَ = কাফিরদের,
অনুবাদ: তারপর যখন ফেরেশতাদের হুকুম দিলাম, আদমের সামনে নত হও, তখন সবাই অবনত হলো, কিন্তু ইবলিস অস্বীকার করলো। সে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকারে মেতে উঠলো এবং নাফরমানদের অন্তর্ভুক্ত হলো।
(2:35)
وَ قُلْنَا یٰۤاٰدَمُ اسْكُنْ اَنْتَ وَ زَوْجُكَ الْجَنَّةَ وَ كُلَا مِنْهَا رَغَدًا حَیْثُ شِئْتُمَا۪ وَ لَا تَقْرَبَا هٰذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُوْنَا مِنَ الظّٰلِمِیْنَ
শব্দার্থ: وَقُلْنَا = এবংআমরাবললাম, يَاآدَمُ = হেআদম, اسْكُنْ = বসবাসকরো, أَنْتَ = তুমি, وَزَوْجُكَ = ওতোমারস্ত্রী, الْجَنَّةَ = জান্নাতে, وَكُلَا = এবংদুজনেখাও, مِنْهَا = তাহতে, رَغَدًا = স্বাচ্ছন্দে, حَيْثُ = যেখানথেকে, شِئْتُمَا = তোমরাদুজনেচাও, وَلَا = এবংনা, تَقْرَبَا = দুজনেনিকটেযেয়ো, هَٰذِهِ = এই, الشَّجَرَةَ = গাছের, فَتَكُونَا = অতঃপরতোমরাদুজনেহবে, مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘনকারীদের,
অনুবাদ: তখন আমরা আদমকে বললাম, “তুমি ও তোমার স্ত্রী উভয়েই জান্নাতে থাকো এবং এখানে স্বাচ্ছন্দের সাথে ইচ্ছে মতো খেতে থাকো, তবে এই গাছটির কাছে যেয়ো না। অন্যথায় তোমরা দু’জন যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।”
(2:36)
فَاَزَلَّهُمَا الشَّیْطٰنُ عَنْهَا فَاَخْرَجَهُمَا مِمَّا كَانَا فِیْهِ۪ وَ قُلْنَا اهْبِطُوْا بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّۚ وَ لَكُمْ فِی الْاَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَّ مَتَاعٌ اِلٰى حِیْنٍ
শব্দার্থ: فَأَزَلَّهُمَا = তাদেরকেএরপরপদস্থলনঘটাল, الشَّيْطَانُ = শয়তান, عَنْهَا = তাহতে, فَأَخْرَجَهُمَا = তাদেরদুজনকেঅতঃপরবেরকরল, مِمَّا = সেখানথেকে, كَانَا = দুজনেছিল, فِيهِ = যারমধ্যে, وَقُلْنَا = এবংআমরাবললাম, اهْبِطُوا = তোমরানেমেযাও(এখানথেকে), بَعْضُكُمْ = তোমাদেরএকে, لِبَعْضٍ = অপরেরজন্যে, عَدُوٌّ = শত্রু, وَلَكُمْ = এবংতোমাদেরজন্যে, فِي = মধ্যে(থাকবে), الْأَرْضِ = পৃথিবীর, مُسْتَقَرٌّ = অবস্থান(কিছুকালের), وَمَتَاعٌ = ওজীবনসামগ্রী, إِلَىٰ = পর্যন্ত, حِينٍ = একটানির্দিষ্টসময়,
অনুবাদ: শেষ পর্যন্ত শয়তান তাদেরকে সেই গাছটির লোভ দেখিয়ে আমার হুকুমের আনুগত্য থেকে সরিয়ে দিল এবং যে অবস্থার মধ্যে তারা ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে ছাড়লো। আমি আদেশ করলাম, “এখন তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। তোমাদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পৃথিবীতে অবস্থান করতে ও জীবন অতিবাহিত করতে হবে।”
(2:37)
فَتَلَقّٰۤى اٰدَمُ مِنْ رَّبِّهٖ كَلِمٰتٍ فَتَابَ عَلَیْهِؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ
শব্দার্থ: فَتَلَقَّىٰ = তখনশিখেনিল, آدَمُ = আদম, مِنْ = নিকটহতে, رَبِّهِ = তাররবের, كَلِمَاتٍ = কিছুবাণী(ওক্ষমাচাইল), فَتَابَ = ফলেতিনিক্ষমাকরলেন, عَلَيْهِ = তাকে, إِنَّهُ = নিশ্চয়ইতিনি, هُوَ = তিনিই, التَّوَّابُ = বড়ক্ষমাশীল, الرَّحِيمُ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: তখন আদম তার রবের কাছ থেকে কয়েকটি বাক্য শিখে নিয়ে তাওবা করলো। তার রব তার এই তাওবা কবুল করে নিলেন। কারণ তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।
(2:38)
قُلْنَا اهْبِطُوْا مِنْهَا جَمِیْعًاۚ فَاِمَّا یَاْتِیَنَّكُمْ مِّنِّیْ هُدًى فَمَنْ تَبِـعَ هُدَایَ فَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ
শব্দার্থ: قُلْنَا = আমরাবললাম, اهْبِطُوا = তোমরানামো, مِنْهَا = এখানথেকে, جَمِيعًا = সবাই, فَإِمَّا = অতঃপরযখন, يَأْتِيَنَّكُمْ = তোমাদেরকাছেআসবেঅবশ্যই, مِنِّي = আমারপক্ষহতে, هُدًى = পথনির্দেশনা, فَمَنْ = তখনযে, تَبِعَ = অনুসরণকরবে, هُدَايَ = আমারপথনির্দেশনা, فَلَا = অতঃপরনেই, خَوْفٌ = কোনোভয়, عَلَيْهِمْ = তাদেরজন্যে, وَلَا = এবংনা, هُمْ = তারা, يَحْزَنُونَ = দুঃখিতহবে,
অনুবাদ: আমরা বললাম, “তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। এরপর যখন আমার পক্ষ থেকে কোন হিদায়াত তোমাদের কাছে পৌঁছুবে তখন যারা আমার সেই হিদায়াতের অনুসরণ করবে তাদের জন্য থাকবে না কোন ভয় দুঃখ বেদনা।
(2:39)
وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَاۤ أُولَٰئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَالَّذِينَ = এবংযারা, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরবে, وَكَذَّبُوا = ওমিথ্যামনেকরবে, بِآيَاتِنَا = আমারনিদর্শনসমূহকে, أُولَٰئِكَ = তারা, أَصْحَابُ = অধিবাসী(হবে), النَّارِ = (জাহান্নামের)আগুনের, هُمْ = তারা, فِيهَا = তারমধ্যে, خَالِدُونَ = চিরস্থায়ীহবে,
অনুবাদ: আর যারা একে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাবে এবং আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেবে তারা হবে আগুনের মধ্যে প্রবেশকারী। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।”
(2:40)
یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اذْكُرُوْا نِعْمَتِیَ الَّتِیْۤ اَنْعَمْتُ عَلَیْكُمْ وَ اَوْفُوْا بِعَهْدِیْۤ اُوْفِ بِعَهْدِكُمْۚ وَ اِیَّایَ فَارْهَبُوْنِ
শব্দার্থ: يَابَنِي = হেসন্তান, إِسْرَائِيلَ = ইসরাঈলের, اذْكُرُوا = তোমরাস্মরণকরো, نِعْمَتِيَ = আমারনেয়ামতের, الَّتِي = যা, أَنْعَمْتُ = আমিনেয়ামতদিয়েছি, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَأَوْفُوا = এবংতোমরাপূর্ণকরো, بِعَهْدِي = আমার(কাছেকৃত)প্রতিশ্রুতি, أُوفِ = আমিপূর্ণকর, بِعَهْدِكُمْ = তোমাদের(কাছেকৃত)প্রতিশ্রুতি, وَإِيَّايَ = এবংশুধুআমাকেই, فَارْهَبُونِ = তোমরাভয়করো,
অনুবাদ: হে বনী ইসরাঈল। আমার সেই নিয়ামতের কথা মনে করো, যা আমি তোমাদের দান করেছিলাম, আমার সাথে তোমাদের যে অঙ্গীকার ছিল, তা পূর্ণ করো, তা হলে তোমাদের সাথে আমার যে অঙ্গীকার ছিল, তা আমি পূর্ণ করবো এবং তোমরা একমাত্র আমাকেই ভয় করো।
(2:41)
وَ اٰمِنُوْا بِمَاۤ اَنْزَلْتُ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَكُمْ وَ لَا تَكُوْنُوْۤا اَوَّلَ كَافِرٍۭ بِهٖ۪ وَ لَا تَشْتَرُوْا بِاٰیٰتِیْ ثَمَنًا قَلِیْلًا٘ وَّ اِیَّایَ فَاتَّقُوْنِ
শব্দার্থ: وَآمِنُوا = এবংতোমরাঈমানআনো, بِمَا = ঐবিষয়েযা, أَنْزَلْتُ = আমিঅবতীর্ণকরেছি, مُصَدِّقًا = সমর্থনকারী, لِمَا = তারযা, مَعَكُمْ = তোমাদেরসাথেআছে, وَلَا = এবংনা, تَكُونُوا = তোমরাহয়ো, أَوَّلَ = প্রথম, كَافِرٍ = অস্বীকারকারী, بِهِ = তারপ্রতি, وَلَا = এবংনা, تَشْتَرُوا = তোমরাবিক্রয়করো, بِآيَاتِي = আমারআয়াতেরবিনিময়ে, ثَمَنًا = মূল্যে, قَلِيلًا = সামান্য, وَإِيَّايَ = এবংশুধুআমাকেই, فَاتَّقُونِ = অতএবতোমরাভয়করো,
অনুবাদ: আর আমি যে কিতাব পাঠিয়েছি তার ওপর ঈমান আন। তোমাদের কাছে আগে থেকেই যে কিতাব ছিল এটি তার সত্যতা সমর্থনকারী। কাজেই সবার আগে তোমরাই এর অস্বীকারকারী হয়ো না। সামান্য দামে আমার আয়াত বিক্রি করো না। আমার গযব থেকে আত্মরক্ষা করো।
(2:42)
وَ لَا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَ تَكْتُمُوا الْحَقَّ وَ اَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: وَلَا = এবংনা, تَلْبِسُوا = তোমরামিশ্রণকরো, الْحَقَّ = সত্যকে, بِالْبَاطِلِ = অসত্যেরসাথে, وَتَكْتُمُوا = এবংতোমরালুকাবে(না), الْحَقَّ = সত্যকে, وَأَنْتُمْ = এমতাবস্থায়যেতোমরা, تَعْلَمُونَ = জান,
অনুবাদ: মিথ্যার রঙে রাঙিয়ে সত্যকে সন্দেহযুক্ত করো না এবং জেনে বুঝে সত্যকে গোপন করার চেষ্টা করো না।
(2:43)
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ ارْكَعُوْا مَعَ الرّٰكِعِیْنَ
শব্দার্থ: وَأَقِيمُوا = এবংতোমরাপ্রতিষ্ঠাকরো, الصَّلَاةَ = সালাত, وَآتُوا = ওতোমরাদাও, الزَّكَاةَ = যাকাত, وَارْكَعُوا = এবংতোমরারুকুকরো, مَعَ = সাথে, الرَّاكِعِينَ = রুকুকারীদের,
অনুবাদ: নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং যারা আমার সামনে অবনত হচ্ছে তাদের সাথে তোমরাও অবনত হও।
(2:44)
اَتَاْمُرُوْنَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَ تَنْسَوْنَ اَنْفُسَكُمْ وَ اَنْتُمْ تَتْلُوْنَ الْكِتٰبَؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ
শব্দার্থ: أَتَأْمُرُونَ = তোমরানির্দেশদিচ্ছকি, النَّاسَ = মানুষদের, بِالْبِرِّ = সৎকাজের, وَتَنْسَوْنَ = আরতোমরাভুলেযাচ্ছ, أَنْفُسَكُمْ = তোমাদেরনিজেদেরকে, وَأَنْتُمْ = অথচতোমরা, تَتْلُونَ = তিলাওয়াতকর, الْكِتَابَ = কিতাব, أَفَلَا = নাতবেকি, تَعْقِلُونَ = তোমরাবুঝ,
অনুবাদ: তোমরা অন্যদের সৎকর্মশীলতার পথ অবলম্বন করতে বলো কিন্তু নিজেদের কথা ভুলে যাও। অথচ তোমরা কিতাব পাঠ করে থাকো। তোমরা কি জ্ঞান বুদ্ধি একটুও কাজে লাগাও না?
(2:45)
وَ اسْتَعِیْنُوْا بِالصَّبْرِ وَ الصَّلٰوةِؕ وَ اِنَّهَا لَكَبِیْرَةٌ اِلَّا عَلَى الْخٰشِعِیْنَۙ
শব্দার্থ: وَاسْتَعِينُوا = এবংতোমরাসাহায্যচাও, بِالصَّبْرِ = ধৈর্যেরমাধ্যমে, وَالصَّلَاةِ = ওসালাতের(মাধ্যমে), وَإِنَّهَا = এবংতানিশ্চয়ই, لَكَبِيرَةٌ = বড়(কঠিন)অবশ্যই, إِلَّا = তবে, عَلَى = উপর, الْخَاشِعِينَ = বিনীতদের(কঠিননয়),
অনুবাদ: সবর ও নামায সহকারে সাহায্য নাও। নিঃসন্দেহে নামায বড়ই কঠিন কাজ, কিন্তু সেসব অনুগত বান্দাদের জন্য কঠিন নয়।
(2:46)
الَّذِیْنَ یَظُنُّوْنَ اَنَّهُمْ مُّلٰقُوْا رَبِّهِمْ وَ اَنَّهُمْ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ۠
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, يَظُنُّونَ = বিশ্বাসকরে, أَنَّهُمْ = তারানিশ্চয়ই, مُلَاقُو = সাক্ষাতকারী, رَبِّهِمْ = তাদেররবেরসাথে, وَأَنَّهُمْ = এবংতারানিশ্চয়ই, إِلَيْهِ = তাঁরইদিকে, رَاجِعُونَ = প্রত্যাবর্তনকারী,
অনুবাদ: যারা মনে করে, সবশেষে তাদের মিলতে হবে তাদের রবের সাথে এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে।
(2:47)
یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اذْكُرُوْا نِعْمَتِیَ الَّتِیْۤ اَنْعَمْتُ عَلَیْكُمْ وَ اَنِّیْ فَضَّلْتُكُمْ عَلَى الْعٰلَمِیْنَ
শব্দার্থ: يَابَنِي = হেসন্তান, إِسْرَائِيلَ = ইসরাইলের, اذْكُرُوا = তোমরাস্মরণকরো, نِعْمَتِيَ = আমারনেয়ামতকে, الَّتِي = যা, أَنْعَمْتُ = আমিনেয়ামতদিয়েছি, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَأَنِّي = এবংআমি, فَضَّلْتُكُمْ = তোমাদেরকেশ্রেষ্ঠত্বদিয়েছি, عَلَى = উপর, الْعَالَمِينَ = বিশ্ববাসীর,
অনুবাদ: হে বনী ইসরাঈল! আমার সেই নিয়ামতের কথা স্মরণ করো, যা আমি তোমাদের দান করেছিলাম এবং একথাটিও যে, আমি দুনিয়ার সমস্ত জাতিদের ওপর তোমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছিলাম।
(2:48)
وَ اتَّقُوْا یَوْمًا لَّا تَجْزِیْ نَفْسٌ عَنْ نَّفْسٍ شَیْــٴًـا وَّ لَا یُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَّ لَا یُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَّ لَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ
শব্দার্থ: وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, يَوْمًا = সেদিনকে, لَا = (যখন)না, تَجْزِي = কাজেআসবে, نَفْسٌ = কোনোব্যক্তি, عَنْ = জন্যে, نَفْسٍ = (অন্যকোন)ব্যাক্তির, شَيْئًا = কিছুই(মাত্রও), وَلَا = এবংনা, يُقْبَلُ = গ্রহণকরাহবে, مِنْهَا = তারথেকে, شَفَاعَةٌ = কোনোসুপারিশ, وَلَا = আরনা, يُؤْخَذُ = নেওয়াহবে, مِنْهَا = তারথেকে, عَدْلٌ = কোনোবিনিময়, وَلَا = এবংনা, هُمْ = তাদের, يُنْصَرُونَ = সাহায্যকরাহবে,
অনুবাদ: আর ভয় করো সেই দিনকে যেদিন কেউ কারো সামান্যতমও কাজে লাগবে না, কারো পক্ষ থেকে সুপারিশ গৃহীত হবে না, বিনিময় নিয়ে কাউকে ছেড়ে দেয়া হবে না এবং অপরাধীরা কোথাও থেকে সাহায্য লাভ করতে পারবে না।
(2:49)
وَ اِذْ نَجَّیْنٰكُمْ مِّنْ اٰلِ فِرْعَوْنَ یَسُوْمُوْنَكُمْ سُوْٓءَ الْعَذَابِ یُذَبِّحُوْنَ اَبْنَآءَكُمْ وَ یَسْتَحْیُوْنَ نِسَآءَكُمْؕ وَ فِیْ ذٰلِكُمْ بَلَآءٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ عَظِیْمٌ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, نَجَّيْنَاكُمْ = তোমাদেরকেমুক্তিদিয়েছিলাম, مِنْ = হতে, آلِ = সম্প্রদায়ের, فِرْعَوْنَ = ফিরাউনের, يَسُومُونَكُمْ = তোমাদেরকেতারাযন্ত্রণাদিত, سُوءَ = নিকৃষ্ট, الْعَذَابِ = যন্ত্রণা, يُذَبِّحُونَ = তারাজবাইকরত, أَبْنَاءَكُمْ = তোমাদেরছেলেসন্তানদের, وَيَسْتَحْيُونَ = এবংজীবিতরাখত, نِسَاءَكُمْ = তোমাদেরকন্যাসন্তানদের, وَفِي = এবংমধ্যে(ছিল), ذَٰلِكُمْ = এর, بَلَاءٌ = পরীক্ষা, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّكُمْ = তোমাদেররবের, عَظِيمٌ = কঠিন,
অনুবাদ: স্মরণ করো সেই সময়ের কথা যখন আমরা ফেরাউনী দলের দাসত্ব থেকে তোমাদের মুক্তি দিয়েছিলাম। তারা তোমাদের কঠিন যন্ত্রণায় নিমজ্জিত করে রেখেছিল, তোমাদের পুত্র সন্তানদের যবেহ করতো এবং তোমাদের কন্যা সন্তানদের জীবিত রেখে দিতো। মূলত এ অবস্থায় তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য বড় কঠিন পরীক্ষা ছিল।
(2:50)
وَ اِذْ فَرَقْنَا بِكُمُ الْبَحْرَ فَاَنْجَیْنٰكُمْ وَ اَغْرَقْنَاۤ اٰلَ فِرْعَوْنَ وَ اَنْتُمْ تَنْظُرُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, فَرَقْنَا = আমরাবিভক্তকরেছিলাম, بِكُمُ = তোমাদের(জন্যে), الْبَحْرَ = সাগরকে, فَأَنْجَيْنَاكُمْ = এরপরআমরাউদ্ধারকরেছিলাম, وَأَغْرَقْنَا = এবংআমরাডুবিয়েদিয়েছিলাম, آلَ = সম্প্রদায়কে, فِرْعَوْنَ = ফেরাঊনের, وَأَنْتُمْ = এমতাবস্থায়তোমরা, تَنْظُرُونَ = দেখছিলে,
অনুবাদ: স্মরণ করো সেই সময়ের কথা যখন আমরা সাগর চিরে তোমাদের জন্য পথ করে দিয়েছিলাম, তারপর তার মধ্য দিয়ে তোমাদের নির্বিঘ্নে পার করে দিয়েছিলাম, আবার সেখানে তোমাদের চোখের সামনেই ফেরাউনী দলকে সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।
(2:51)
وَ اِذْ وٰعَدْنَا مُوْسٰۤى اَرْبَعِیْنَ لَیْلَةً ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِنْۢ بَعْدِهٖ وَ اَنْتُمْ ظٰلِمُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবংযখন, وَاعَدْنَا = নির্ধারিতকরেছিলাম, مُوسَىٰ = মূসারজন্যে, أَرْبَعِينَ = চল্লিশ, لَيْلَةً = রাত, ثُمَّ = এরপর, اتَّخَذْتُمُ = তোমরাগ্রহণকরেছিলে, الْعِجْلَ = গরুরবাছুরকে(উপাস্যরূপে), مِنْ = তার, بَعْدِهِ = পরে, وَأَنْتُمْ = যখনতোমরা, ظَالِمُونَ = সীমালঙ্ঘঙ্কারী(ছিলে),
অনুবাদ: স্মরণ করো সেই সময়ের কথা যখন আমরা মূসাকে চল্লিশ দিন-রাত্রির জন্য ডেকে নিয়েছিলাম, তখন তার অনুপস্থিতিতে তোমরা বাছুরকে নিজেদের উপাস্যে পরিণত করেছিল। সে সময় তোমরা অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করেছিলে।
(2:52)
ثُمَّ عَفَوْنَا عَنْكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ
শব্দার্থ: ثُمَّ = অতঃপর, عَفَوْنَا = আমরাক্ষমাকরেছিলাম, عَنْكُمْ = তোমাদেরপ্রতি, مِنْ = (থেকে), بَعْدِ = পরেও, ذَٰلِكَ = এর, لَعَلَّكُمْ = যেনতোমরা, تَشْكُرُونَ = কৃতজ্ঞতাপ্রকাশকর,
অনুবাদ: কিন্তু এরপরও আমরা তোমাদের মাফ করে দিয়েছিলাম এ জন্য যে, হয়তো এবার তোমরা কৃতজ্ঞ হবে।
(2:53)
وَ اِذْ اٰتَیْنَا مُوْسَى الْكِتٰبَ وَ الْفُرْقَانَ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, آتَيْنَا = আমরাদিয়েছিলাম, مُوسَى = মুসাকে, الْكِتَابَ = কিতাব, وَالْفُرْقَانَ = এবংফুরকান, لَعَلَّكُمْ = তোমরাযেন, تَهْتَدُونَ = সঠিকপথপ্রাপ্তহও,
অনুবাদ: স্মরণ করো (ঠিক যখন তোমরা এই যুলুম করছিলে সে সময়) আমরা মূসাকে কিতাব ও ফুরকান দিয়েছিলাম, যাতে তার মাধ্যমে তোমরা সোজা পথ পেতে পারো।
(2:54)
وَ اِذْ قَالَ مُوْسٰى لِقَوْمِهٖ یٰقَوْمِ اِنَّكُمْ ظَلَمْتُمْ اَنْفُسَكُمْ بِاتِّخَاذِكُمُ الْعِجْلَ فَتُوْبُوْۤا اِلٰى بَارِئِكُمْ فَاقْتُلُوْۤا اَنْفُسَكُمْؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ عِنْدَ بَارِئِكُمْؕ فَتَابَ عَلَیْكُمْؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, قَالَ = বলেছিল, مُوسَىٰ = মুসা, لِقَوْمِهِ = তারজাতিরউদ্দ্যেশে, يَاقَوْمِ = হেআমারজাতি, إِنَّكُمْ = তোমরানিশ্চয়ই, ظَلَمْتُمْ = তোমরাঅত্যাচারকরেছ, أَنْفُسَكُمْ = তোমাদেরনিজেদের(উপর), بِاتِّخَاذِكُمُ = তোমাদেরগ্রহণকরারমাধ্যমে, الْعِجْلَ = গোবাছুরকে(উপাস্যরূপে), فَتُوبُوا = সুতরাংতোমরাফিরেএস, إِلَىٰ = দিকে, بَارِئِكُمْ = তোমাদেরসৃষ্টিকর্তার, فَاقْتُلُوا = এরপরতোমরাপ্রাণসংহারকরো, أَنْفُسَكُمْ = তোমাদের(অপরাধী)লোকদেরকে, ذَٰلِكُمْ = এটাই, خَيْرٌ = উত্তম, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, عِنْدَ = কাছে, بَارِئِكُمْ = তোমাদেরস্রষ্টার, فَتَابَ = তিনিতখনক্ষমাকরলেন, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরকে, إِنَّهُ = তিনিনিশ্চয়ই, هُوَ = তিনিই, التَّوَّابُ = অতীবক্ষমাশীল, الرَّحِيمُ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: স্মরণ করো যখন মূসা(এই নিয়ামত নিয়ে ফিরে এসে) নিজের জাতিকে বললো, “হে লোকেরা! তোমরা বাছুরকে উপাস্য বানিয়ে নিজেদের ওপর বড়ই যুলুম করেছো, কাজেই তোমরা নিজেদের স্রষ্টার কাছে তাওবা করো এবং নিজেদেরকে হত্যা করো, এরই মধ্যে তোমাদের স্রষ্টার কাছে তোমাদের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। সে সময় তোমাদের স্রষ্টা তোমাদের তাওবা কবুল করে নিয়েছিলেন, কারণ তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।
(2:55)
وَ اِذْ قُلْتُمْ یٰمُوْسٰى لَنْ نُّؤْمِنَ لَكَ حَتّٰى نَرَى اللّٰهَ جَهْرَةً فَاَخَذَتْكُمُ الصّٰعِقَةُ وَ اَنْتُمْ تَنْظُرُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবংস্মরণকরযখন, قُلْتُمْ = তোমরাবলেছিলে, يَامُوسَىٰ = হেমুসা, لَنْ = কখনও, نُؤْمِنَ = আমরাঈমানআনব, لَكَ = তোমারউপর, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, نَرَى = আমরাদেখব, اللَّهَ = আল্লাহকে, جَهْرَةً = প্রকাশ্যভাবে, فَأَخَذَتْكُمُ = ফলেতোমাদেরকেধরেছিল, الصَّاعِقَةُ = বজ্রপাত, وَأَنْتُمْ = এঅবস্থায়যেতোমরা, تَنْظُرُونَ = দেখছিলে,
অনুবাদ: স্মরণ করো, যখন তোমরা মূসাকে বলেছিলে, “আমরা কখনো তোমার কথায় বিশ্বাস করবো না, যতক্ষণ না আমরা স্বচক্ষে আল্লাহকে তোমার সাথে প্রকাশ্যে (কথা বলতে) দেখবো।” সে সময় তোমাদের চোখের সামনে তোমাদের ওপর একটি ভয়াবহ বজ্রপাত হলো, তোমরা নিস্প্রাণ হয়ে পড়ে গেলে।
(2:56)
ثُمَّ بَعَثْنٰكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ
শব্দার্থ: ثُمَّ = এরপর, بَعَثْنَاكُمْ = তোমাদেরআমরাআবারজীবিতকরলাম, مِنْ = (থেকে), بَعْدِ = পরে, مَوْتِكُمْ = তোমাদেরমৃত্যুর, لَعَلَّكُمْ = যেনতোমরা, تَشْكُرُونَ = কৃতজ্ঞতাপ্রকাশকর,
অনুবাদ: কিন্তু আবার আমরা তোমাদের বাঁচিয়ে জীবিত করলাম, হয়তো এ অনুগ্রহের পর তোমরা কৃতজ্ঞ হবে।
(2:57)
وَ ظَلَّلْنَا عَلَیْكُمُ الْغَمَامَ وَ اَنْزَلْنَا عَلَیْكُمُ الْمَنَّ وَ السَّلْوٰىؕ كُلُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقْنٰكُمْؕ وَ مَا ظَلَمُوْنَا وَ لٰكِنْ كَانُوْۤا اَنْفُسَهُمْ یَظْلِمُوْنَ
শব্দার্থ: وَظَلَّلْنَا = এবংআমরাছায়াদিয়েছিলাম, عَلَيْكُمُ = তোমাদেরউপর, الْغَمَامَ = মেঘের, وَأَنْزَلْنَا = এবংআমরাপাঠিয়েছিলাম, عَلَيْكُمُ = তোমাদেরকাছে, الْمَنَّ = মান্না, وَالسَّلْوَىٰ = ওসালওয়া, كُلُوا = (বলেছিলাম)তোমরাখাও, مِنْ = হতে, طَيِّبَاتِ = পবিত্র(খাদ্য), مَا = যা, رَزَقْنَاكُمْ = তোমাদেরকেআমরাজীবিকাদিয়েছি, وَمَا = এবংনা, ظَلَمُونَا = আমাদের(উপর)তারাঅবিচারকরেছে, وَلَٰكِنْ = কিন্তু, كَانُوا = তারাছিল, أَنْفُسَهُمْ = তাদেরনিজেদের(উপর), يَظْلِمُونَ = অবিচারকরত,
অনুবাদ: আমরা তোমাদের ওপর মেঘমালার ছায়া দান করলাম, তোমাদের জন্য সরবরাহ করলাম মান্না ও সালওয়ার খাদ্য এবং তোমাদের বললাম, যে পবিত্র দ্রব্য-সামগ্রী আমরা তোমাদের দিয়েছি তা থেকে খাও। কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা কিছু করেছে তা আমাদের ওপর যুলুম ছিল না বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর যুলুম করেছে।
(2:58)
وَ اِذْ قُلْنَا ادْخُلُوْا هٰذِهِ الْقَرْیَةَ فَكُلُوْا مِنْهَا حَیْثُ شِئْتُمْ رَغَدًا وَّ ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَّ قُوْلُوْا حِطَّةٌ نَّغْفِرْ لَكُمْ خَطٰیٰكُمْؕ وَ سَنَزِیْدُ الْمُحْسِنِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবংস্মরণকরোযখন, قُلْنَا = আমরাবলেছিলাম, ادْخُلُوا = তোমরাপ্রবেশকর, هَٰذِهِ = এই, الْقَرْيَةَ = নগরীতে, فَكُلُوا = তোমরাখাও, مِنْهَا = তাহতে, حَيْثُ = যেভাবে, شِئْتُمْ = তোমরাযাও, رَغَدًا = স্বানন্দে, وَادْخُلُوا = এবংতোমরাপ্রবেশকরো, الْبَابَ = (নগর)দরজায়, سُجَّدًا = সিজদাঅবনতহয়ে, وَقُولُوا = এবংতোমরাবলো, حِطَّةٌ = ক্ষমারকথা, نَغْفِرْ = ক্ষমাকরবোআমরা, لَكُمْ = তোমাদেরপ্রতি, خَطَايَاكُمْ = তোমাদেরত্রুটিগুলোকে, وَسَنَزِيدُ = এবংঅচিরেই(অনুগ্রহ)বাড়িয়েদিব, الْمُحْسِنِينَ = সৎকর্মশীলদেরকে,
অনুবাদ: আরো স্মরণ করো যখন আমরা বলেছিলাম, “তোমাদের সামনের এই জনপদে প্রবেশ করো এবং সেখানকার উৎপন্ন দ্রব্যাদি যেমন ইচ্ছা খাও মজা করে। কিন্তু জনপদের দুয়ারে সিজদাবনত হয়ে প্রবেশ করবে ‘হিত্তাতুন’ ‘হিত্তাতুন’ বলতে বলতে। আমরা তোমাদের ত্রুটিগুলো মাফ করে দেবো এবং সৎকর্মশীলদের প্রতি অত্যধিক অনুগ্রহ করবো।”
(2:59)
فَبَدَّلَ الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا قَوْلًا غَیْرَ الَّذِیْ قِیْلَ لَهُمْ فَاَنْزَلْنَا عَلَى الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا رِجْزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا كَانُوْا یَفْسُقُوْنَ۠
শব্দার্থ: فَبَدَّلَ = কিন্তুপরিবর্তনকরল, الَّذِينَ = যারা, ظَلَمُوا = সীমালঙ্ঘনকরেছিল, قَوْلًا = কথা, غَيْرَ = অন্যকিছু, الَّذِي = (তাহতে)যা, قِيلَ = বলাহয়েছিল, لَهُمْ = তাদেরউদ্দেশ্যে, فَأَنْزَلْنَا = আমরাতাইঅবতীর্ণকরলাম, عَلَى = (তাদের)উপর, الَّذِينَ = যারা, ظَلَمُوا = সীমালঙ্ঘনকরেছিল, رِجْزًا = শাস্তি, مِنَ = থেকে, السَّمَاءِ = আকাশ, بِمَا = একারণেযা, كَانُوا = তারাছিল, يَفْسُقُونَ = তারাসত্যত্যাগকরে,
অনুবাদ: কিন্তু যে কথা বলা হয়েছিল যালেমরা তাকে বদলে অন্য কিছু করে ফেললো। শেষ পর্যন্ত যুলুমকারীদের ওপর আমরা আকাশ থেকে আযাব নাযিল করলাম। এ ছিল তারা যে নাফরমানি করছিল তার শাস্তি।
(2:60)
وَ اِذِ اسْتَسْقٰى مُوْسٰى لِقَوْمِهٖ فَقُلْنَا اضْرِبْ بِّعَصَاكَ الْحَجَرَؕ فَانْفَجَرَتْ مِنْهُ اثْنَتَا عَشْرَةَ عَیْنًاؕ قَدْ عَلِمَ كُلُّ اُنَاسٍ مَّشْرَبَهُمْؕ كُلُوْا وَ اشْرَبُوْا مِنْ رِّزْقِ اللّٰهِ وَ لَا تَعْثَوْا فِی الْاَرْضِ مُفْسِدِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِذِ = এবংস্মরণকরোযখন, اسْتَسْقَىٰ = পানিচাইল, مُوسَىٰ = মুসা, لِقَوْمِهِ = তারজাতিরজন্য, فَقُلْنَا = তখনআমরাবলেছিলাম, اضْرِبْ = আঘাতকর, بِعَصَاكَ = তোমারলাঠিদিয়ে, الْحَجَرَ = পাথরে, فَانْفَجَرَتْ = ফলেফেটেবেরহল, مِنْهُ = তাথেকে, اثْنَتَا = বারটি, عَشْرَةَ = (দশ), عَيْنًا = ঝর্ণা, قَدْ = নিশ্চয়ই, عَلِمَ = চিনেনিল, كُلُّ = প্রত্যেক, أُنَاسٍ = (গোত্রের)মানুষ, مَشْرَبَهُمْ = তাদেরপানিপানেরস্থান, كُلُوا = (বলাহল)তোমরাখাও, وَاشْرَبُوا = ওতোমরাপানকরো, مِنْ = থেকে, رِزْقِ = জীবিকা, اللَّهِ = আল্লাহ্র(দেয়া), وَلَا = এবংনা, تَعْثَوْا = তোমরাবিপর্যয়সৃষ্টিকরো, فِي = মধ্যে, الْأَرْضِ = পৃথিবীর, مُفْسِدِينَ = বিপর্যয়সৃষ্টিকারীহয়ে,
অনুবাদ: স্মরণ করো, যখন মূসা তার জাতির জন্য পানির দোয়া করলো, তখন আমরা বললাম, অমুক পাথরের ওপর তোমার লাঠিটি মারো। এর ফলে সেখান থেকে বারোটি ঝর্ণাধারা উৎসারিত হলো। প্রত্যেক গোত্র তার পানি গ্রহণের স্থান জেনে নিল। (সে সময় এ নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, ) আল্লাহ প্রদত্ত রিযিক খাও, পান করো এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।
(2:61)
وَ اِذْ قُلْتُمْ یٰمُوْسٰى لَنْ نَّصْبِرَ عَلٰى طَعَامٍ وَّاحِدٍ فَادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُخْرِ جْ لَنَا مِمَّا تُنْۢبِتُ الْاَرْضُ مِنْۢ بَقْلِهَا وَ قِثَّآئِهَا وَ فُوْمِهَا وَ عَدَسِهَا وَ بَصَلِهَاؕ قَالَ اَتَسْتَبْدِلُوْنَ الَّذِیْ هُوَ اَدْنٰى بِالَّذِیْ هُوَ خَیْرٌؕ اِهْبِطُوْا مِصْرًا فَاِنَّ لَكُمْ مَّا سَاَلْتُمْؕ وَ ضُرِبَتْ عَلَیْهِمُ الذِّلَّةُ وَ الْمَسْكَنَةُۗ وَ بَآءُوْ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰهِؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ كَانُوْا یَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ یَقْتُلُوْنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیْرِ الْحَقِّؕ ذٰلِكَ بِمَا عَصَوْا وَّ كَانُوْا یَعْتَدُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো), قُلْتُمْ = বলেছিলেতোমরা, يَامُوسَىٰ = হেমুসা, لَنْ = কখনওনা, نَصْبِرَ = আমরাধৈর্যধরতেপারব, عَلَىٰ = উপর, طَعَامٍ = খানার, وَاحِدٍ = একই(ধরণের), فَادْعُ = তাইদুআকরো, لَنَا = আমাদেরজন্য, رَبَّكَ = তোমাররবেরকাছে, يُخْرِجْ = (যেন)বেরকরেনতিনি, لَنَا = আমাদেরজন্য, مِمَّا = তাহতেযা, تُنْبِتُ = উৎপাদনকরে, الْأَرْضُ = মাটি, مِنْ = অর্থাৎ, بَقْلِهَا = তারশাকসবজি, وَقِثَّائِهَا = ওতারশশাকাকুড়, وَفُومِهَا = ওতারগম(বারসুন), وَعَدَسِهَا = ওতারমুশুরডাল, وَبَصَلِهَا = ওতারপেয়াজ(ইত্যাদি), قَالَ = তিনিবললেন, أَتَسْتَبْدِلُونَ = কিতোমরাপরিবর্তনকরতেচাও, الَّذِي = তাই, هُوَ = যা, أَدْنَىٰ = নগণ্যজিনিষ, بِالَّذِي = সেটারপরিবর্তে, هُوَ = যা, خَيْرٌ = উত্তম, اهْبِطُوا = (তাহলে)তোমরানামো, مِصْرًا = (কোনো)শহরে, فَإِنَّ = অতঃপরনিশ্চয়ই, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য(পাবে), مَا = যা, سَأَلْتُمْ = তোমরাচেয়েছ, وَضُرِبَتْ = এবংআপতিতহলো, عَلَيْهِمُ = তাদেরউপর, الذِّلَّةُ = অপমান, وَالْمَسْكَنَةُ = ওঅনটন, وَبَاءُوا = এবংপরিবেষ্টিতহলতারা, بِغَضَبٍ = রাগের, مِنَ = পক্ষহতে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, ذَٰلِكَ = এটা, بِأَنَّهُمْ = একারণেযেতারা, كَانُوا = তারাছিল, يَكْفُرُونَ = অস্বীকারকরতে, بِآيَاتِ = আয়াতগুলোরপ্রতি, اللَّهِ = আল্লাহ্র, وَيَقْتُلُونَ = ওতারাহত্যাকরছিল, النَّبِيِّينَ = নবীদেরকে, بِغَيْرِ = ব্যাতীত, الْحَقِّ = ন্যায়ভাবে, ذَٰلِكَ = এটা, بِمَا = একারণেযে, عَصَوْا = তারাঅবাধ্যতাকরেছিল, وَكَانُوا = এবংকরে, يَعْتَدُونَ = তারাসীমালঙ্ঘন,
অনুবাদ: স্মরণ করো, যখন তোমরা বলেছিলে, “হে মূসা! আমরা একই ধরনের খাবারের ওপর সবর করতে পারি না, তোমার রবের কাছে দোয়া করো যেন তিনি আমাদের জন্য শাক-সব্জি, গম, রসুন, পেঁয়াজ, ডাল ইত্যাদি কৃষিজাত দ্রব্যাদি উৎপন্ন করেন।” তখন মূসা বলেছিল, “তোমরা কি একটি উৎকৃষ্ট জিনিসের পরিবর্তে নিকৃষ্ট জিনিস নিতে চাও? তাহলে তোমরা কোন নগরে গিয়ে বসবাস করো, তোমরা যা কিছু চাও সেখানে পেয়ে যাবে।” অবশেষে অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছলো যার ফলে লাঞ্ছনা, অধঃপতন, দুরবস্থা ও অনটন তাদের ওপর চেপে বসলো এবং আল্লাহর গযব তাদেরকে ঘিরে ফেললো। এ ছিল তাদের আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী করার এবং পয়গম্বরদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার ফল। এটি ছিল তাদের নাফরমানির এবং শরীয়াতের সীমালংঘনের ফল।
(2:62)
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ الَّذِیْنَ هَادُوْا وَ النَّصٰرٰى وَ الصّٰبِـٕیْنَ مَنْ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَلَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْۚ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, وَالَّذِينَ = কিংবাযারা, هَادُوا = ইহুদীহয়েছে, وَالنَّصَارَىٰ = এবংখ্রিষ্টান, وَالصَّابِئِينَ = ওসাবী, مَنْ = যে(কেউ), آمَنَ = ঈমানআনবে, بِاللَّهِ = আল্লাহ্রউপর, وَالْيَوْمِ = ওদিনে, الْآخِرِ = আখিরাতের, وَعَمِلَ = এবংকাজকরবে, صَالِحًا = সৎ, فَلَهُمْ = ফলেতাদেরজন্য, أَجْرُهُمْ = তাদেরপুরস্কার(থাকবে), عِنْدَ = কাছে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, وَلَا = এবংনা, خَوْفٌ = ভয়(থাকবে), عَلَيْهِمْ = তাদেরজন্য, وَلَا = আরনা, هُمْ = তারা, يَحْزَنُونَ = দুঃখিতহবে,
অনুবাদ: নিশ্চিতভাবে জেনে রেখো, যারা শেষ নবীর প্রতি ঈমান আনে কিংবা ইহুদি, খৃষ্টান বা সাবি তাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তিই আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তার প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে এবং তাদের জন্য কোন ভয় ও মর্মবেদনার অবকাশ নেই।
(2:63)
وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَكُمْ وَ رَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّوْرَؕ خُذُوْا مَاۤ اٰتَیْنٰكُمْ بِقُوَّةٍ وَّ اذْكُرُوْا مَا فِیْهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, أَخَذْنَا = আমরাগ্রহণকরেছিলাম, مِيثَاقَكُمْ = তোমাদেরপ্রতিশ্রুতি, وَرَفَعْنَا = এবংআমরাউঠিয়েনিয়েছিলাম, فَوْقَكُمُ = তোমাদেরউপর, الطُّورَ = তুরপাহাড়, خُذُوا = (আরবলেছিলাম)তোমরাগ্রহণকরো, مَا = যা, آتَيْنَاكُمْ = তোমাদেরকেআমরাদিয়েছি, بِقُوَّةٍ = শক্তভাবে, وَاذْكُرُوا = এবংতোমরাস্মরণরাখো, مَا = (তা)যা, فِيهِ = তারমধ্যে(আছে), لَعَلَّكُمْ = তোমরাযাতে, تَتَّقُونَ = তাকওয়াঅবলম্বনকরতেপার,
অনুবাদ: স্মরণ করো সেই সময়ের কথা যখন আমরা ‘তূর’কে তোমাদের ওপর উঠিয়ে তোমাদের থেকে পাকাপোক্ত অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং বলেছিলামঃ “যে কিতাব আমরা তোমাদেরকে দিচ্ছি তাকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং তার মধ্যে যে সমস্ত নির্দেশ ও বিধান রয়েছে সেগুলো স্মরণ রেখো। এভাবেই আশা করা যেতে পারে যে, তোমরা তাকওয়ার পথে চলতে পারবে।”
(2:64)
ثُمَّ تَوَلَّیْتُمْ مِّنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَۚ فَلَوْ لَا فَضْلُ اللّٰهِ عَلَیْكُمْ وَ رَحْمَتُهٗ لَكُنْتُمْ مِّنَ الْخٰسِرِیْنَ
শব্দার্থ: ثُمَّ = আবার, تَوَلَّيْتُمْ = তোমরাফিরেগিয়েছিলে, مِنْ = (থেকে), بَعْدِ = পরথেকে, ذَٰلِكَ = এর, فَلَوْلَا = যদিতাইনা(হতো), فَضْلُ = অনুগ্রহ, اللَّهِ = আল্লাহ্র, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَرَحْمَتُهُ = ওতারদয়া, لَكُنْتُمْ = তোমরাঅবশ্যইহতে, مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الْخَاسِرِينَ = ক্ষতিগ্রস্তদের,
অনুবাদ: কিন্তু এরপর তোমরা নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে। তবুও আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর রহমত তোমাদের সঙ্গ ছাড়েনি নয়তো তোমরা কবেই ধ্বংস হয়ে যেতে।
(2:65)
وَ لَقَدْ عَلِمْتُمُ الَّذِیْنَ اعْتَدَوْا مِنْكُمْ فِی السَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُوْنُوْا قِرَدَةً خٰسِـٕیْنَۚ
শব্দার্থ: وَلَقَدْ = এবংনিশ্চয়ই, عَلِمْتُمُ = তোমরাজেনেছো, الَّذِينَ = তাদেরকেযারা, اعْتَدَوْا = সীমালঙ্ঘনকরেছিল, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যহতে, فِي = সম্পর্কে, السَّبْتِ = শনিবারের(বিধান), فَقُلْنَا = আমরাতখনবলেছিলাম, لَهُمْ = তাদের, كُونُوا = তোমরাহও, قِرَدَةً = বানর, خَاسِئِينَ = ঘৃণিত,
অনুবাদ: নিজেদের জাতির সেইসব লোকের ঘটনা তো তোমাদের জানাই আছে যারা শনিবারের বিধান ভেঙেছিল। আমরা তাদের বলে দিলামঃ বানর হয়ে যাও এবং এমনভাবে অবস্থান করো যাতে তোমাদের সবদিক থেকে লাঞ্ছনা গঞ্জনা সইতে হয়।
(2:66)
فَجَعَلْنٰهَا نَكَالًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهَا وَ مَا خَلْفَهَا وَ مَوْعِظَةً لِّلْمُتَّقِیْنَ
শব্দার্থ: فَجَعَلْنَاهَا = আমরাএরপরএটাকেবানিয়েছি, نَكَالًا = (শিক্ষামূলক)শাস্তি, لِمَا = তাদেরজন্যযারা(ছিল), بَيْنَ = আগে(মাঝে), يَدَيْهَا = তার(হাতের), وَمَا = ওযারা(ছিল), خَلْفَهَا = তারপরে, وَمَوْعِظَةً = এবংউপদেশ, لِلْمُتَّقِينَ = মুত্তাকীদেরজন্য,
অনুবাদ: এভাবে আমরা তাদের পরিণতিকে সমকালীন লোকদের এবং পরবর্তী বংশধরদের জন্য শিক্ষণীয় এবং যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য মহান উপদেশে পরিণত করেছি।
(2:67)
وَ اِذْ قَالَ مُوْسٰى لِقَوْمِهٖۤ اِنَّ اللّٰهَ یَاْمُرُكُمْ اَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةًؕ قَالُوْۤا اَتَتَّخِذُنَا هُزُوًاؕ قَالَ اَعُوْذُ بِاللّٰهِ اَنْ اَكُوْنَ مِنَ الْجٰهِلِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকর)যখন, قَالَ = বলেছিল, مُوسَىٰ = মুসা, لِقَوْمِهِ = তারজাতিরউদ্দেশে, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, يَأْمُرُكُمْ = তোমাদেরনির্দেশদিচ্ছেন, أَنْ = যে, تَذْبَحُوا = তোমরাজবাইকর, بَقَرَةً = একটিগাভীকে, قَالُوا = তারাবলেছিল, أَتَتَّخِذُنَا = আমাদেরতুমিগ্রহণকরেছকি, هُزُوًا = বিদ্রুপের(বস্তু)হিসেবে, قَالَ = সেবলল, أَعُوذُ = আমিআশ্রয়চাই, بِاللَّهِ = আল্লাহ্রকাছে, أَنْ = যে, أَكُونَ = আমিহব, مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الْجَاهِلِينَ = মূর্খদের,
অনুবাদ: এরপর স্মরণ করো সেই ঘটনার কথা যখন মূসা তার জাতিকে বললো, আল্লাহ তোমাদের একটি গাভী যবেহ করা হুকুম দিচ্ছেন। তারা বললো, তুমি কি আমাদের সাথে ঠাট্টা করছো? মূসা বললো, নিরেট মূর্খদের মতো কথা বলা থেকে আমি আল্লাহ কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।
(2:68)
قَالُوا ادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّنْ لَّنَا مَا هِیَ ؕ قَالَ اِنَّهٗ یَقُوْلُ اِنَّهَا بَقَرَةٌ لَّا فَارِضٌ وَّ لَا بِكْرٌؕ عَوَانٌۢ بَیْنَ ذٰلِكَؕ فَافْعَلُوْا مَا تُؤْمَرُوْنَ
শব্দার্থ: قَالُوا = তারাবলেছিল, ادْعُ = দোয়াকরো, لَنَا = আমাদেরজন্য, رَبَّكَ = তোমাররবেরকাছে(যেন), يُبَيِّنْ = তিনিবর্ননাকরেন, لَنَا = আমাদেরজন্য, مَا = কেমন, هِيَ = সেটা, قَالَ = সেবলল, إِنَّهُ = তিনিনিশ্চয়ই, يَقُولُ = বলেন, إِنَّهَا = তানিশ্চয়ই, بَقَرَةٌ = একটিগাভী, لَا = না, فَارِضٌ = বুড়ো, وَلَا = আরনা, بِكْرٌ = বাচ্চা, عَوَانٌ = মধ্যমবয়সের, بَيْنَ = মাঝামাঝি, ذَٰلِكَ = এর, فَافْعَلُوا = অতএবতোমরাকরো, مَا = যা, تُؤْمَرُونَ = তোমাদেরকেনির্দেশদেওয়াহয়েছে,
অনুবাদ: তারা বললো, আচ্ছা তাহলে তোমার রবের কাছে আবেদন করো তিনি যেন সেই গাভীর কিছু বিস্তারিত বিবরণ আমাদের জানিয়ে দেন। মূসা জবাব দিল আল্লাহ বলছেন, সেটি অবশ্যি এমন একটি গাভী হতে হবে যে বৃদ্ধা নয়, একেবারে ছোট্ট বাছুরটিও নয় বরং হবে মাঝারি বয়সের। কাজেই যেমনটি হুকুম দেয়া হয় ঠিক তেমনটিই করো।
(2:69)
قَالُوا ادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّنْ لَّنَا مَا لَوْنُهَاؕ قَالَ اِنَّهٗ یَقُوْلُ اِنَّهَا بَقَرَةٌ صَفْرَآءُۙ فَاقِعٌ لَّوْنُهَا تَسُرُّ النّٰظِرِیْنَ
শব্দার্থ: قَالُوا = তারাবলেছিল, ادْعُ = দোয়াকরো, لَنَا = আমাদেরজন্য, رَبَّكَ = তোমাররবেরকাছে, يُبَيِّنْ = তিনিবর্ণনাকরেন(যেন), لَنَا = আমাদেরজন্য, مَا = কীহবে, لَوْنُهَا = তাররং, قَالَ = সেবলল, إِنَّهُ = তিনিনিশ্চয়ই, يَقُولُ = বলেন, إِنَّهَا = তানিশ্চয়ই, بَقَرَةٌ = গাভী, صَفْرَاءُ = হলুদরঙের, فَاقِعٌ = উজ্জলগাড়, لَوْنُهَا = তাররং, تَسُرُّ = আনন্দদেয়, النَّاظِرِينَ = দর্শকদেরজন্য,
অনুবাদ: আবার তারা বলতে লাগলো, তোমার রবের কাছে আরো জিজ্ঞেস করো, তার রংটি কেমন? মূসা জবাব দিল, তিনি বলছেন, গাভীটি অবশ্যি হলুদ রংয়ের হতে হবে, তার রং এতই উজ্জল হবে যাতে তা দেখে মানুষের মন ভরে যাবে।
(2:70)
قَالُوا ادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّنْ لَّنَا مَا هِیَۙ اِنَّ الْبَقَرَ تَشٰبَهَ عَلَیْنَاؕ وَ اِنَّاۤ اِنْ شَآءَ اللّٰهُ لَمُهْتَدُوْنَ
শব্দার্থ: قَالُوا = তারাবলেছিল, ادْعُ = তুমিদোয়াকরো, لَنَا = আমদেরজন্য, رَبَّكَ = তোমাররবেরকাছে, يُبَيِّنْ = তিনিবর্ণনাকরেন(যেন), لَنَا = আমাদেরজন্য, مَا = কেমন, هِيَ = তা, إِنَّ = নিশ্চয়ই, الْبَقَرَ = গাভীটি, تَشَابَهَ = একইরকম, عَلَيْنَا = আমাদেরকাছে, وَإِنَّا = এবংনিশ্চয়ইআমরা, إِنْ = যদি, شَاءَ = চান, اللَّهُ = আল্লাহ্, لَمُهْتَدُونَ = অবশ্যইসঠিকজ্ঞানপ্রাপ্তহব,
অনুবাদ: আবার তারা বললো, তোমার রবের কাছ থেকে এবার পরিষ্কার ভাবে জেনে নাও, তিনি কেমন ধরনের গাভী চান? গাভীটি নির্ধারণ করার ব্যাপারে আমরা সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি। আল্লাহ চাইলে আমরা অবশ্যি এটি বের করে ফেলবো।
(2:71)
قَالَ اِنَّهٗ یَقُوْلُ اِنَّهَا بَقَرَةٌ لَّا ذَلُوْلٌ تُثِیْرُ الْاَرْضَ وَ لَا تَسْقِی الْحَرْثَۚ مُسَلَّمَةٌ لَّا شِیَةَ فِیْهَاؕ قَالُوا الْـٰٔنَ جِئْتَ بِالْحَقِّؕ فَذَبَحُوْهَا وَ مَا كَادُوْا یَفْعَلُوْنَ۠
শব্দার্থ: قَالَ = (মূসা)বলল, إِنَّهُ = তিনিনিশ্চয়ই, يَقُولُ = বলেন, إِنَّهَا = তানিশ্চয়ই, بَقَرَةٌ = একটিগাভী, لَا = না, ذَلُولٌ = লাগানহয়েছে, تُثِيرُ = চাষে, الْأَرْضَ = জমি, وَلَا = আরনা, تَسْقِي = সেচকরেছে, الْحَرْثَ = ক্ষেতে, مُسَلَّمَةٌ = সুস্থ্য, لَا = নেই, شِيَةَ = কোনোখুঁত, فِيهَا = তারমধ্যে, قَالُوا = তারাবলেছিল, الْآنَ = এখন, جِئْتَ = তুমিএনেছ(বর্ণনা), بِالْحَقِّ = সঠিকতথ্যনিয়ে, فَذَبَحُوهَا = তারাজবাইকরলতখনতা, وَمَا = এবংনা, كَادُوا = আগ্রহীছিল, يَفْعَلُونَ = তারাকরতে,
অনুবাদ: মূসা জবাব দিল আল্লাহ বলছেন, সেটি এমন একটি গাভী যাকে কোন কাজে নিযুক্ত করা হয়না, জমি চাষ বা ক্ষেতে পানি সেচ কোনটিই করে না, সুস্থ-সবল ও নিখুঁত। একথায় তারা বলে উঠলো, হ্যাঁ,, এবার তুমি ঠিক সন্ধান দিয়েছো। অতঃপর তারা তাকে যবেহ করলো, অন্যথায় তারা এমনটি করতো বলে মনে হচ্ছিল না।
(2:72)
وَ اِذْ قَتَلْتُمْ نَفْسًا فَادّٰرَءْتُمْ فِیْهَاؕ وَ اللّٰهُ مُخْرِ جٌ مَّا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَۚ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, قَتَلْتُمْ = তোমরাহত্যাকরেছিলে, نَفْسًا = একব্যক্তিকে, فَادَّارَأْتُمْ = তোমরাঅতঃপরএকেঅন্যেরওপরদোষচাপাচ্ছিলে, فِيهَا = সেব্যাপারে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ্, مُخْرِجٌ = প্রকাশকারী, مَا = যা, كُنْتُمْ = (আপনি), تَكْتُمُونَ = তোমরাগোপনকরছিলে,
অনুবাদ: আর স্মরণ করো সেই ঘটনার কথা যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে এবং একজন আর একজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিয়োগ আনছিলে। আর আল্লাহ সিদ্ধান্ত করেছিলেন তোমরা যা কিছু গোপন করছো তা তিনি প্রকাশ করে দেবেন।
(2:73)
فَقُلْنَا اضْرِبُوْهُ بِبَعْضِهَاؕ كَذٰلِكَ یُحْیِ اللّٰهُ الْمَوْتٰىۙ وَ یُرِیْكُمْ اٰیٰتِهٖ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ
শব্দার্থ: فَقُلْنَا = আমরাতখনবলেছিলাম, اضْرِبُوهُ = তাকেতোমরাআঘাতকর, بِبَعْضِهَا = তারকিছুঅংশদিয়ে(এবংসেবেঁচেউঠল), كَذَٰلِكَ = এভাবে, يُحْيِي = জীবিতকরেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, الْمَوْتَىٰ = মৃতকে, وَيُرِيكُمْ = এবংতোমাদেরদেখান, آيَاتِهِ = তাঁরনিদর্শনগুলোকে, لَعَلَّكُمْ = তোমরাযাতে, تَعْقِلُونَ = বুঝতেপার,
অনুবাদ: সে সময় আমরা হুকুম দিলাম, নিহতের লাশকে তার একটি অংশ দিয়ে আঘাত করো। দেখো এভাবে আল্লাহ মৃতদের জীবন দান করেন এবং তোমাদেরকে নিজের নিশানী দেখান, যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পারো।
(2:74)
ثُمَّ قَسَتْ قُلُوْبُكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ فَهِیَ كَالْحِجَارَةِ اَوْ اَشَدُّ قَسْوَةًؕ وَ اِنَّ مِنَ الْحِجَارَةِ لَمَا یَتَفَجَّرُ مِنْهُ الْاَنْهٰرُؕ وَ اِنَّ مِنْهَا لَمَا یَشَّقَّقُ فَیَخْرُ جُ مِنْهُ الْمَآءُؕ وَ اِنَّ مِنْهَا لَمَا یَهْبِطُ مِنْ خَشْیَةِ اللّٰهِؕ وَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
শব্দার্থ: ثُمَّ = পরে, قَسَتْ = কঠিনহয়েগেল, قُلُوبُكُمْ = তোমাদেরঅন্তরগুলো, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = পরে, ذَٰلِكَ = এর, فَهِيَ = তাঅতঃপর(হয়েগেল), كَالْحِجَارَةِ = মতোপাথরে, أَوْ = অথবা(তারচেয়েও), أَشَدُّ = অধিকতর, قَسْوَةً = কঠিন, وَإِنَّ = অথচনিশ্চয়ই, مِنَ = কিছু, الْحِجَارَةِ = পাথর(এমনওআছে), لَمَا = অবশ্যইযা, يَتَفَجَّرُ = ফেটেবেরহয়, مِنْهُ = তাহতে, الْأَنْهَارُ = ঝর্ণাধারা, وَإِنَّ = এবংনিশ্চয়ই, مِنْهَا = তারকিছু(এমনওআছে), لَمَا = অবশ্যইযা, يَشَّقَّقُ = ফেটেযায়, فَيَخْرُجُ = অতঃপরবেরহয়, مِنْهُ = তাথেকে, الْمَاءُ = পানি, وَإِنَّ = এবংনিশ্চয়ই, مِنْهَا = তারকিছু(এমনওআছে), لَمَا = অবশ্যইযা, يَهْبِطُ = ধসেপড়ে, مِنْ = কারণে, خَشْيَةِ = ভয়ের, اللَّهِ = আল্লাহ্র, وَمَا = এবংনা, اللَّهُ = আল্লাহ্, بِغَافِلٍ = অনবহিত, عَمَّا = তাহতেযা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকরছো,
অনুবাদ: কিন্তু এ ধরনের নিশানী দেখার পরও তোমাদের দিল কঠিন হয়ে গেছে, পাথরের মত কঠিন বরং তার চেয়েও কঠিন। কারণ এমন অনেক পাথর আছে যার মধ্য দিয়ে ঝরণাধারা প্রবাহিত হয় আবার অনেক পাথর ফেটে গেলে তার মধ্য থেকে পানি বের হয়ে আসে, আবার কোন কোন পাথর আল্লাহর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পড়েও যায়। আল্লাহ তোমাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে বেখবর নন।
(2:75)
اَفَتَطْمَعُوْنَ اَنْ یُّؤْمِنُوْا لَكُمْ وَ قَدْ كَانَ فَرِیْقٌ مِّنْهُمْ یَسْمَعُوْنَ كَلٰمَ اللّٰهِ ثُمَّ یُحَرِّفُوْنَهٗ مِنْۢ بَعْدِ مَا عَقَلُوْهُ وَ هُمْ یَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: أَفَتَطْمَعُونَ = তবেকিতোমরাআশাকর, أَنْ = যে, يُؤْمِنُوا = তারাঈমানআনবে, لَكُمْ = তোমাদের(দাওয়াতে), وَقَدْ = অথচনিশ্চয়ই, كَانَ = আছে, فَرِيقٌ = একদল, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যে, يَسْمَعُونَ = (যারা)শুনে, كَلَامَ = (কালাম)বাণী, اللَّهِ = আল্লাহ্র, ثُمَّ = পরে, يُحَرِّفُونَهُ = তাতারাবিকৃতকরে, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = এরপর, مَا = যা, عَقَلُوهُ = তাতারাবুঝেছিল, وَهُمْ = অথচতারা, يَعْلَمُونَ = (ভালভাবে)জানেও,
অনুবাদ: হে মুসলমানরা! তোমরা কি তাদের থেকে আশা করো তারা তোমাদের দাওয়াতের ওপর ঈমান আনবে? অথচ তাদের একটি দলের চিরাচরিত রীতি এই চলে আসছে যে, আল্লাহর কালাম শুনার পর খুব ভালো করে জেনে বুঝে সজ্ঞানে তার মধ্যে ‘তাহরীফ’ বা বিকৃতি সাধন করেছে।
(2:76)
وَ اِذَا لَقُوا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قَالُوْۤا اٰمَنَّا ۚۖ وَ اِذَا خَلَا بَعْضُهُمْ اِلٰى بَعْضٍ قَالُوْۤا اَتُحَدِّثُوْنَهُمْ بِمَا فَتَحَ اللّٰهُ عَلَیْكُمْ لِیُحَآجُّوْكُمْ بِهٖ عِنْدَ رَبِّكُمْؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, لَقُوا = তারামিলে(তাদেরসাথে), الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, قَالُوا = তারাবলে, آمَنَّا = আমরাঈমানএনেছি, وَإِذَا = এবংযখন, خَلَا = মিলেগোপনে, بَعْضُهُمْ = তাদেরকেউ, إِلَىٰ = সাথে, بَعْضٍ = কারো, قَالُوا = তারাবলে, أَتُحَدِّثُونَهُمْ = তাদেরকেতোমরাবলেদাওকি, بِمَا = ঐবিষয়েযা, فَتَحَ = প্রকাশকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরকাছে, لِيُحَاجُّوكُمْ = তোমাদেরবিরুদ্ধেযেনপ্রমাণপেশকরতেপারে, بِهِ = তাদিয়ে, عِنْدَ = কাছে, رَبِّكُمْ = তোমাদেররবের, أَفَلَا = নাতবেকি?, تَعْقِلُونَ = তোমরাবুঝ,
অনুবাদ: (মুহাম্মাদ রসূলুল্লাহর ওপর) যারা ঈমান এনেছে তাদের সাথে সাক্ষাত হলে বলে, আমরাও তাঁকে মানি। আবার যখন পরস্পরের সাথে নিরিবিলিতে কথা হয় তখন বলে, তোমরা কি বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে গেলে? এদেরকে তোমরা এমন সব কথা বলে দিচ্ছো যা আল্লাহ তোমাদের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছেন, ফলে এরা তোমাদের রবের কাছে তোমাদের মোকাবিলায় তোমাদের একথাকে প্রমাণ হিসেবে পেশ করবে?
(2:77)
اَوَ لَا یَعْلَمُوْنَ اَنَّ اللّٰهَ یَعْلَمُ مَا یُسِرُّوْنَ وَ مَا یُعْلِنُوْنَ
শব্দার্থ: أَوَلَا = নাকি, يَعْلَمُونَ = তারাজানে, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ্, يَعْلَمُ = জানেন, مَا = যাকিছু, يُسِرُّونَ = তারাগোপনকরে, وَمَا = ওযা, يُعْلِنُونَ = তারাপ্রকাশকরে,
অনুবাদ: এরা কি জানে না, যা কিছু এরা গোপন করছে এবং যা কিছু প্রকাশ করছে সমস্তই আল্লাহ জানেন?
(2:78)
وَ مِنْهُمْ اُمِّیُّوْنَ لَا یَعْلَمُوْنَ الْكِتٰبَ اِلَّاۤ اَمَانِیَّ وَ اِنْ هُمْ اِلَّا یَظُنُّوْنَ
শব্দার্থ: وَمِنْهُمْ = এবংতাদেরমধ্যেকিছু(আছে), أُمِّيُّونَ = নিরক্ষর, لَا = না, يَعْلَمُونَ = তারাজানে, الْكِتَابَ = কিতাব, إِلَّا = এছাড়া, أَمَانِيَّ = আশাআকাঙ্ক্ষা, وَإِنْ = এবংনা, هُمْ = তারা, إِلَّا = এছাড়া, يَظُنُّونَ = (অমূলক)ধারণাকরে,
অনুবাদ: এদের মধ্যে দ্বিতীয় একটি দল হচ্ছে নিরক্ষরদের। তাদের কিতাবের জ্ঞান নেই, নিজেদের ভিত্তিহীন আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো নিয়ে বসে আছে এবং নিছক অনুমান ও ধারণার ওপর নির্ভর করে চলছে।
(2:79)
فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ یَكْتُبُوْنَ الْكِتٰبَ بِاَیْدِیْهِمْۗ ثُمَّ یَقُوْلُوْنَ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللّٰهِ لِیَشْتَرُوْا بِهٖ ثَمَنًا قَلِیْلًاؕ فَوَیْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا كَتَبَتْ اَیْدِیْهِمْ وَ وَیْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا یَكْسِبُوْنَ
শব্দার্থ: فَوَيْلٌ = অতএবদুর্ভোগ, لِلَّذِينَ = তাদেরজন্য(যারা), يَكْتُبُونَ = লিখে, الْكِتَابَ = কিতাবে(অর্থাৎশরয়ীবিধান), بِأَيْدِيهِمْ = তাদেরহাতদিয়ে, ثُمَّ = পরে, يَقُولُونَ = তারাবলে, هَٰذَا = এটা(এসেছে), مِنْ = থেকে, عِنْدِ = নিকট, اللَّهِ = আল্লাহ্র, لِيَشْتَرُوا = (এরূপকরে)তারাকিনতেপারে, بِهِ = তাদিয়ে, ثَمَنًا = মূল্য(অর্থাৎস্বার্থ), قَلِيلًا = সামান্য, فَوَيْلٌ = অতএবদুর্ভোগ, لَهُمْ = তাদেরজন্য, مِمَّا = তাহতেযা, كَتَبَتْ = লিখেছে, أَيْدِيهِمْ = তাদেরহাত, وَوَيْلٌ = এবংদুর্ভোগ, لَهُمْ = তাদেরজন্য, مِمَّا = তাহতেযা, يَكْسِبُونَ = তারাউপার্জনকরেছে,
অনুবাদ: কাজেই তাদের জন্য ধ্বংস অবধারিত যারা স্বহস্তে শরীয়াতের লিখন লেখে তারপর লোকদের বলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। এভাবে তারা এর বিনিময়ে সামান্য স্বার্থ লাভ করে। তাদের হাতের এই লিখন তাদের ধ্বংসের কারণ এবং তাদের এই উপার্জনও তাদের ধ্বংসের উপকরণ।
(2:80)
وَ قَالُوْا لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ اِلَّاۤ اَیَّامًا مَّعْدُوْدَةًؕ قُلْ اَتَّخَذْتُمْ عِنْدَ اللّٰهِ عَهْدًا فَلَنْ یُّخْلِفَ اللّٰهُ عَهْدَهٗۤ اَمْ تَقُوْلُوْنَ عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: وَقَالُوا = এবংতারাবলে, لَنْ = কখনওনা, تَمَسَّنَا = আমাদেরকেস্পর্শকরবে, النَّارُ = আগুন, إِلَّا = (যদিওকরে)তবে, أَيَّامًا = কিছুদিন, مَعْدُودَةً = গোনাগাঁথা, قُلْ = তুমিবলো, أَتَّخَذْتُمْ = তোমরাগ্রহণকরেছকি, عِنْدَ = নিকটহতে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, عَهْدًا = অঙ্গীকার(যা), فَلَنْ = কখনওনা, يُخْلِفَ = ভঙ্গকরবেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, عَهْدَهُ = তাঁরঅঙ্গীকার, أَمْ = অথবা, تَقُولُونَ = তোমরাবলছ, عَلَى = উপর(সম্বন্ধে), اللَّهِ = আল্লাহর, مَا = যা, لَا = না, تَعْلَمُونَ = তোমরাজান,
অনুবাদ: তারা বলে, জাহান্নামের আগুন আমাদের কখনো স্পর্শ করবে না, তবে কয়েক দিনের শাস্তি হলেও হয়ে যেতে পারে। এদেরকে জিজ্ঞেস করো, তোমরা কি আল্লাহর কাছ থেকে কোন অঙ্গীকার নিয়েছো, যার বিরুদ্ধাচারণ তিনি করতে পারেন না? অথবা তোমরা আল্লাহর ওপর চাপিয়ে দিয়ে এমন কথা বলছো যে কথা তিনি নিজের ওপর চাপিয়ে নিয়েছেন বলে তোমাদের জানা নেই? আচ্ছা জাহান্নামের আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে না কেন?
(2:81)
بَلٰى مَنْ كَسَبَ سَیِّئَةً وَّ اَحَاطَتْ بِهٖ خَطِیْٓــٴَـتُهٗ فَأُولَٰئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ
শব্দার্থ: بَلَىٰ = বরং(সত্যহলো), مَنْ = যেকেউ, كَسَبَ = উপার্জনকরবে, سَيِّئَةً = পাপ, وَأَحَاطَتْ = এবংঘিরেনিয়েছে, بِهِ = তাকেনিয়ে, خَطِيئَتُهُ = তারপাপসমূহ, فَأُولَٰئِكَ = ফলেঐসবলোক, أَصْحَابُ = অধিবাসী(হবে), النَّارِ = আগুনের, هُمْ = তারাই, فِيهَا = তারমধ্যে, خَالِدُونَ = চিরস্থায়ীহবে,
অনুবাদ: যে ব্যক্তিই পাপ করবে এবং পাপের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে সে-ই জাহান্নামী হবে এবং জাহান্নামের আগুনে পুড়তে থাকবে চিরকাল।
(2:82)
وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ أُولَٰئِكَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَالَّذِينَ = আরযারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, وَعَمِلُوا = ওকাজকরেছে, الصَّالِحَاتِ = সৎ, أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, أَصْحَابُ = অধিবাসী(হবে), الْجَنَّةِ = জান্নাতের, هُمْ = তারাই, فِيهَا = তারমধ্যে, خَالِدُونَ = চিরস্থায়ীহবে,
অনুবাদ: আর যারা ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।
(2:83)
وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ لَا تَعْبُدُوْنَ اِلَّا اللّٰهَ وَ بِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّ ذِی الْقُرْبٰى وَ الْیَتٰمٰى وَ الْمَسٰكِیْنِ وَ قُوْلُوْا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَّ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَؕ ثُمَّ تَوَلَّیْتُمْ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْكُمْ وَ اَنْتُمْ مُّعْرِضُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, أَخَذْنَا = আমরানিয়েছিলাম, مِيثَاقَ = প্রতিশ্রুতি, بَنِي = বনী, إِسْرَائِيلَ = ইসরাঈলের(থেকে), لَا = (যে)না, تَعْبُدُونَ = তোমরাইবাদাতকরবে, إِلَّا = ছাড়া, اللَّهَ = আল্লাহর, وَبِالْوَالِدَيْنِ = এবংপিতামাতারসাথে, إِحْسَانًا = সদয়ব্যবহারকরবে, وَذِي = এবং, الْقُرْبَىٰ = আত্বীয়স্বজনের, وَالْيَتَامَىٰ = ওইয়াতীমদের, وَالْمَسَاكِينِ = ওদরিদ্রের(সাথে), وَقُولُوا = এবংতোমরাবলবে, لِلنَّاسِ = মানুষেরউদ্দেশে, حُسْنًا = ভালভাবে(কথা), وَأَقِيمُوا = এবংতোমরাপ্রতিষ্ঠাকরবে, الصَّلَاةَ = সলাত, وَآتُوا = ওতোমরাদেবে, الزَّكَاةَ = যাকাত, ثُمَّ = এরপরেও, تَوَلَّيْتُمْ = তোমরামুখফিরিয়েনিয়েছিলে, إِلَّا = ব্যতীত, قَلِيلًا = সামান্যকিছু(লোক), مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যহতে, وَأَنْتُمْ = এবংতোমরা(আজও), مُعْرِضُونَ = মুখফিরিয়েনিচ্ছ,
অনুবাদ: স্মরণ করো যখন ইসরাঈল সন্তানদের থেকে আমরা এই মর্মে পাকাপোক্ত অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, আল্লাহ ছাড়া আর কারোর ইবাদাত করবে না, মা-বাপ, আত্মীয়-পরিজন, ইয়াতিম ও মিসকিনদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে, লোকদেরকে ভালো কথা বলবে, নামায কায়েম করবে ও যাকাত দেবে। কিন্তু সামান্য কয়েকজন ছাড়া তোমরা সবাই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছিলে এবং এখনো ভেঙে চলছো।
(2:84)
وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَكُمْ لَا تَسْفِكُوْنَ دِمَآءَكُمْ وَ لَا تُخْرِجُوْنَ اَنْفُسَكُمْ مِّنْ دِیَارِكُمْ ثُمَّ اَقْرَرْتُمْ وَ اَنْتُمْ تَشْهَدُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবংযখন, أَخَذْنَا = আমরানিয়েছিলাম, مِيثَاقَكُمْ = তোমাদেরপ্রতিশ্রুতি, لَا = (যে)না, تَسْفِكُونَ = তোমরাঝরাবে, دِمَاءَكُمْ = তোমাদেররক্ত, وَلَا = নাএবং, تُخْرِجُونَ = তোমরাতাড়িয়েদেবে, أَنْفُسَكُمْ = তোমাদেরনিজেদেরকে, مِنْ = থেকে, دِيَارِكُمْ = তোমাদেরঘর, ثُمَّ = এরপর, أَقْرَرْتُمْ = তোমরাস্বীকারকরেছিলে, وَأَنْتُمْ = এবংতোমরাই, تَشْهَدُونَ = সাক্ষ্যদিচ্ছ,
অনুবাদ: আবার স্মরণ করো, যখন আমরা তোমাদের থেকে মজবুত অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এই মর্মে যে, তোমরা পরস্পরের রক্ত প্রবাহিত করবে না এবং একে অন্যকে গৃহ থেকে উচ্ছেদ করবে না। তোমরা এর অঙ্গীকার করেছিলে, তোমরা নিজেরাই এর সাক্ষী।
(2:85)
ثُمَّ اَنْتُمْ هٰۤؤُلَآءِ تَقْتُلُوْنَ اَنْفُسَكُمْ وَ تُخْرِجُوْنَ فَرِیْقًا مِّنْكُمْ مِّنْ دِیَارِهِمْ٘ تَظٰهَرُوْنَ عَلَیْهِمْ بِالْاِثْمِ وَ الْعُدْوَانِؕ وَ اِنْ یَّاْتُوْكُمْ اُسٰرٰى تُفٰدُوْهُمْ وَ هُوَ مُحَرَّمٌ عَلَیْكُمْ اِخْرَاجُهُمْؕ اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتٰبِ وَ تَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍۚ فَمَا جَزَآءُ مَنْ یَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ اِلَّا خِزْیٌ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَاۚ وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ یُرَدُّوْنَ اِلٰۤى اَشَدِّ الْعَذَابِؕ وَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
শব্দার্থ: ثُمَّ = আবার, أَنْتُمْ = তোমরাই, هَٰؤُلَاءِ = ঐসব(লোকযারা), تَقْتُلُونَ = তোমরাহত্যাকরছ, أَنْفُسَكُمْ = তোমাদেরনিজেদেরকে, وَتُخْرِجُونَ = এবংতোমরাতাড়িয়েদিচ্ছ, فَرِيقًا = একদলকে, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যথেকে, مِنْ = হতে, دِيَارِهِمْ = তাদেরঘরগুলো, تَظَاهَرُونَ = তোমরাসাহায্যকরছ, عَلَيْهِمْ = তাদেরবিরুদ্ধে, بِالْإِثْمِ = অন্যায়, وَالْعُدْوَانِ = ওসীমালঙ্ঘন, وَإِنْ = এবংযদি, يَأْتُوكُمْ = তোমাদেরকাছেআসে, أُسَارَىٰ = বন্দি(হয়ে), تُفَادُوهُمْ = তাদেরছাড়াওমুক্তিপণদিয়ে, وَهُوَ = অথচতা, مُحَرَّمٌ = নিষিদ্ধ, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, إِخْرَاجُهُمْ = তাদেরতাড়িয়েদেওয়া, أَفَتُؤْمِنُونَ = তোমরাতবেকিবিশ্বাসকর, بِبَعْضِ = কিছুঅংশের(ব্যাপারে), الْكِتَابِ = কিতাবের, وَتَكْفُرُونَ = এবংঅবিশ্বাসকর, بِبَعْضٍ = (অপর)কিছুঅংশকে, فَمَا = সুতরাংকী(হতেপারে), جَزَاءُ = প্রতিদান, مَنْ = যে, يَفْعَلُ = করবে, ذَٰلِكَ = এরূপ, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যথেকে, إِلَّا = এছাড়াযে, خِزْيٌ = অপমান, فِي = মধ্যে, الْحَيَاةِ = জীবনের, الدُّنْيَا = পার্থিব, وَيَوْمَ = এবংদিনে, الْقِيَامَةِ = কিয়ামাতের, يُرَدُّونَ = তারানিক্ষিপ্তহবে, إِلَىٰ = দিকে, أَشَدِّ = কঠোর, الْعَذَابِ = শাস্তির, وَمَا = এবংনা, اللَّهُ = আল্লাহ্, بِغَافِلٍ = উদাসীন, عَمَّا = এবিষয়েযা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকরছ,
অনুবাদ: কিন্তু আজ সেই তোমরাই নিজেদের ভাই-বেরাদারদেরকে হত্যা করছো, নিজেদের গোত্রীয় সম্পর্কযুক্ত কিছু লোককে বাস্তভিটা ছাড়া করছো, যুলুম ও অত্যধিক বাড়াবাড়ি সহকারে তাদের বিরুদ্ধে দল গঠন করছো এবং তারা যুদ্ধবন্দী হয়ে তোমাদের কাছে এলে তাদের মুক্তির জন্য তোমরা মুক্তিপণ আদায় করছো। অথচ তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে উচ্ছেদ করাই তোমাদের জন্য হারাম ছিল। তাহলে কি তোমরা কিতাবের একটি অংশের ওপর ঈমান আনছো এবং অন্য অংশের সাথে কুফরী করছো? তারপর তোমাদের মধ্য থেকে যারাই এমনটি করবে তাদের শাস্তি এ ছাড়া আর কি হতে পারে যে, দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছিত ও পর্যুদস্ত হবে এবং আখেরাতে তাদেরকে কঠিনতম শাস্তির দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে? তোমাদের কর্মকান্ড থেকে আল্লাহ বেখবর নন।
(2:86)
أُولَٰئِكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الْحَیٰوةَ الدُّنْیَا بِالْاٰخِرَةِ٘ فَلَا یُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَ لَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ۠
শব্দার্থ: أُولَٰئِكَ = ঐসব(লোক), الَّذِينَ = (তারাই)যারা, اشْتَرَوُا = কিনেনিয়েছে, الْحَيَاةَ = জীবনকে, الدُّنْيَا = পার্থিব, بِالْآخِرَةِ = আখিরাতেরবিনিময়ে, فَلَا = নাফলে, يُخَفَّفُ = হালকাকরাহবে, عَنْهُمُ = তাদেরথেকে, الْعَذَابُ = শাস্তি, وَلَا = এবংনা, هُمْ = তারা, يُنْصَرُونَ = সাহায্যপ্রাপ্তহবে,
অনুবাদ: এই লোকেরাই আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবন কিনে নিয়েছে। কাজেই তাদের শাস্তি কমানো হবে না এবং তারা কোন সাহায্যও পাবে না।
(2:87)
وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسَى الْكِتٰبَ وَ قَفَّیْنَا مِنْۢ بَعْدِهٖ بِالرُّسُلِ٘ وَ اٰتَیْنَا عِیْسَى ابْنَ مَرْیَمَ الْبَیِّنٰتِ وَ اَیَّدْنٰهُ بِرُوْحِ الْقُدُسِؕ اَفَكُلَّمَا جَآءَكُمْ رَسُوْلٌۢ بِمَا لَا تَهْوٰۤى اَنْفُسُكُمُ اسْتَكْبَرْتُمْۚ فَفَرِیْقًا كَذَّبْتُمْ٘ وَ فَرِیْقًا تَقْتُلُوْنَ
শব্দার্থ: وَلَقَدْ = এবংনিশ্চয়ই, آتَيْنَا = আমরাদিয়েছি, مُوسَى = মূসাকে, الْكِتَابَ = কিতাব, وَقَفَّيْنَا = এবংপর্যায়ক্রমেআমরাপাঠিয়েছি, مِنْ = থেকে, بَعْدِهِ = তারপর, بِالرُّسُلِ = রাসূলদেরকে, وَآتَيْنَا = এবংআমরাদিয়েছি, عِيسَى = ঈসাকে, ابْنَ = পুত্র, مَرْيَمَ = মারইয়ামের, الْبَيِّنَاتِ = সুস্পষ্টনিদর্শনসমূহ, وَأَيَّدْنَاهُ = ওতাকেআমরাসাহায্যকরেছি, بِرُوحِ = আত্মাদিয়ে, الْقُدُسِ = পবিত্র, أَفَكُلَّمَا = যখনইঅতঃপরকি, جَاءَكُمْ = তোমাদেরকাছেএসেছে, رَسُولٌ = কোনোরাসূল, بِمَا = তানিয়েযা, لَا = না, تَهْوَىٰ = পছন্দকরে, أَنْفُسُكُمُ = তোমাদেরমন, اسْتَكْبَرْتُمْ = তোমরাঅহঙ্কারকরেছ, فَفَرِيقًا = অতঃপরএকদলকে, كَذَّبْتُمْ = তোমরাঅস্বীকারকরছো, وَفَرِيقًا = আরএকদলকে, تَقْتُلُونَ = তোমরাহত্যাকরেছ,
অনুবাদ: আমরা মূসাকে কিতাব দিয়েছি। তারপর ক্রমাগতভাবে রসূল পাঠিয়েছি। অবশেষে ঈসা ইবনে মারয়ামকে পাঠিয়েছি উজ্জ্বল নিশানী দিয়ে এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করেছি। এরপর তোমরা এ কেমনতর আচরণ করে চলছো, যখনই কোন রসূল তোমাদের প্রবৃত্তির কামনা বিরোধী কোন জিনিস নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে তখনই তোমরা তার বিরুদ্ধাচরণ করেছো, কাউকে মিথ্যা বলেছো এবং কাউকে হত্যা করেছো।
(2:88)
وَ قَالُوْا قُلُوْبُنَا غُلْفٌؕ بَلْ لَّعَنَهُمُ اللّٰهُ بِكُفْرِهِمْ فَقَلِیْلًا مَّا یُؤْمِنُوْنَ
শব্দার্থ: وَقَالُوا = এবংতারাবলেছিল, قُلُوبُنَا = আমাদেরঅন্তর, غُلْفٌ = আচ্ছাদিত(সুরক্ষিত), بَلْ = বরং(সত্যহল), لَعَنَهُمُ = তাদেরকেঅভিশাপদিয়েছেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, بِكُفْرِهِمْ = তাদেরঅবিশ্বাসেরকারণে, فَقَلِيلًا = তাইকম(লোকই), مَا = যারা, يُؤْمِنُونَ = ঈমানআনবে,
অনুবাদ: তারা বলে, আমাদের হৃদয় সুরক্ষিত। না, আসলে তাদের কুফরীর কারণে তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হয়েছে, তাই তারা খুব কমই ঈমান এনে থাকে।
(2:89)
وَ لَمَّا جَآءَهُمْ كِتٰبٌ مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْۙ وَ كَانُوْا مِنْ قَبْلُ یَسْتَفْتِحُوْنَ عَلَى الَّذِیْنَ كَفَرُوْاۚ فَلَمَّا جَآءَهُمْ مَّا عَرَفُوْا كَفَرُوْا بِهٖ٘ فَلَعْنَةُ اللّٰهِ عَلَى الْكٰفِرِیْنَ
শব্দার্থ: وَلَمَّا = এবংযখন, جَاءَهُمْ = এসেছেতাদেরকাছে, كِتَابٌ = কিতাব, مِنْ = থেকে, عِنْدِ = নিকট, اللَّهِ = আল্লাহ্র, مُصَدِّقٌ = সত্যায়নকারী, لِمَا = তারজন্যযা, مَعَهُمْ = তাদেরসাথে(আছে), وَكَانُوا = এবংতারাছিল, مِنْ = (থেকে), قَبْلُ = পূর্বথেকে, يَسْتَفْتِحُونَ = বিজয়চাইত, عَلَى = উপর(বিরুদ্ধে), الَّذِينَ = (তাদের)যারা, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরেছে, فَلَمَّا = অতঃপরযখন, جَاءَهُمْ = আসলতাদেরকাছে, مَا = যা, عَرَفُوا = তারাজানত, كَفَرُوا = অস্বীকারকরল, بِهِ = তারপ্রতি, فَلَعْنَةُ = ফলেঅভিশাপ, اللَّهِ = আল্লাহ্র, عَلَى = উপর, الْكَافِرِينَ = প্রত্যাখ্যানকারীদের,
অনুবাদ: আর এখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের কাছে যে একটি কিতাব এসেছে তার সাথে তারা কেমন ব্যবহার করছে? তাদের কাছে আগে থেকেই কিতাবটি ছিল যদিও এটি তার সত্যতা স্বীকার করতো এবং যদিও এর আগমনের পূর্বে তারা নিজেরাই কাফেরদের মোকাবিলায় বিজয় ও সাহায্যের দোয়া চাইতো, তবুও যখন সেই জিনিসটি এসে গেছে এবং তাকে তারা চিনতেও পেরেছে তখন তাকে মেনে নিতে তারা অস্বীকার করেছে। আল্লাহর লানত এই অস্বীকারকারীদের ওপর।
(2:90)
بِئْسَمَا اشْتَرَوْا بِهٖۤ اَنْفُسَهُمْ اَنْ یَّكْفُرُوْا بِمَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ بَغْیًا اَنْ یُّنَزِّلَ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهٖ عَلٰى مَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖۚ فَبَآءُوْ بِغَضَبٍ عَلٰى غَضَبٍؕ وَ لِلْكٰفِرِیْنَ عَذَابٌ مُّهِیْنٌ
শব্দার্থ: بِئْسَمَا = কতইনিকৃষ্টতা, اشْتَرَوْا = তারাবিক্রিকরেছে, بِهِ = যারবিনিময়ে, أَنْفُسَهُمْ = তাদেরআত্মাকে, أَنْ = (থেকে), يَكْفُرُوا = তারাঅস্বীকারকরেযে, بِمَا = ঐবিষয়যা, أَنْزَلَ = অবতীর্ণকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, بَغْيًا = জিদবশতঃ, أَنْ = (এজন্য)যে, يُنَزِّلَ = অবতীর্ণকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, مِنْ = কারণে, فَضْلِهِ = তাঁরঅনুগ্রহের, عَلَىٰ = উপর, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিচান, مِنْ = মধ্যহতে, عِبَادِهِ = তাঁরবান্দাদের, فَبَاءُوا = তারাফলেপরিবেষ্টিতহয়েছে, بِغَضَبٍ = রাগদিয়ে, عَلَىٰ = উপর, غَضَبٍ = রাগের, وَلِلْكَافِرِينَ = এবংকাফিরদেরজন্য(রয়েছে), عَذَابٌ = শাস্তি, مُهِينٌ = অপমানকর,
অনুবাদ: যে জিনিসের সাহায্যে তারা মনের সান্ত্বনা লাভ করে, তা কতই না নিকৃষ্ট! সেটি হচ্ছে, আল্লাহ যে হিদায়াত নাযিল করেছেন তারা কেবল এই জিদের বশবর্তী হয়ে তাকে মেনে নিতে অস্বীকার করছে যে, আল্লাহ তাঁর যে বান্দাকে চেয়েছেন নিজের অনুগ্রহ (অহী ও রিসালাত) দান করেছেন। কাজেই এখন তারা উপর্যুপরি গযবের অধিকারী হয়েছে। আর এই ধরনের কাফেরদের জন্য চরম লাঞ্ছনার শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে।
(2:91)
وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمْ اٰمِنُوْا بِمَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ قَالُوْا نُؤْمِنُ بِمَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْنَا وَ یَكْفُرُوْنَ بِمَا وَرَآءَهٗۗ وَ هُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَهُمْؕ قُلْ فَلِمَ تَقْتُلُوْنَ اَنْۢبِیَآءَ اللّٰهِ مِنْ قَبْلُ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, قِيلَ = বলাহয়, لَهُمْ = তাদেরউদ্দেশে, آمِنُوا = তোমরাঈমানআনো, بِمَا = ঐবিষয়েযা, أَنْزَلَ = অবতীর্ণকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, قَالُوا = তারাবলে, نُؤْمِنُ = আমরাঈমানআনব, بِمَا = ঐবিষয়েযা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছে, عَلَيْنَا = আমাদেরউপর, وَيَكْفُرُونَ = ওতারাঅস্বীকারকরে, بِمَا = যা(আছে), وَرَاءَهُ = তাছাড়া, وَهُوَ = অথচসেটাই, الْحَقُّ = সত্য, مُصَدِّقًا = সত্যায়নকারী, لِمَا = তারজন্যযা, مَعَهُمْ = তাদেরসাথে(আছে), قُلْ = বলো, فَلِمَ = কেনতাহলে, تَقْتُلُونَ = তোমরাহত্যাকরেছ, أَنْبِيَاءَ = নবীদেরকে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, مِنْ = থেকে, قَبْلُ = পূর্ব, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহয়েথাক, مُؤْمِنِينَ = মুমিন,
অনুবাদ: যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা কিছু নাযিল করেছেন তার ওপর ঈমান আনো, তারা বলে, “আমরা কেবল আমাদের এখানে (অর্থাৎ বনী ইসরাঈলদের মধ্যে) যা কিছু নাযিল হয়েছে তার ওপর ঈমান আনি।” এর বাইরে যা কিছু এসেছে তার প্রতি ঈমান আনতে তারা অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। অথচ তা সত্য এবং তাদের কাছে পূর্ব থেকে যে শিক্ষা ছিল তার সত্যতার স্বীকৃতিও দিচ্ছে। তাদেরকে বলে দাওঃ যদি তোমরা তোমাদের ওখানে যে শিক্ষা নাযিল হয়েছিল তার ওপর ঈমান এনে থাকো, তাহলে ইতিপূর্বে আল্লাহর নবীদেরকে (যারা বনী ইসরাঈলদের মধ্যে জন্ম নিয়েছিলেন) হত্যা করেছিলে কেন?
(2:92)
وَ لَقَدْ جَآءَكُمْ مُّوْسٰى بِالْبَیِّنٰتِ ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِنْۢ بَعْدِهٖ وَ اَنْتُمْ ظٰلِمُوْنَ
শব্দার্থ: وَلَقَدْ = এবংনিশ্চয়ই, جَاءَكُمْ = তোমাদেরকাছেএসেছিল, مُوسَىٰ = মূসা, بِالْبَيِّنَاتِ = সুস্পষ্টনিদর্শনসমূহনিয়ে, ثُمَّ = এরপর, اتَّخَذْتُمُ = গ্রহণকরেছিলেতোমরা, الْعِجْلَ = গোবাছুরকে(উপাস্যরূপে), مِنْ = থেকে, بَعْدِهِ = তারপর, وَأَنْتُمْ = এবংতোমরা(ছিলে), ظَالِمُونَ = সীমালঙ্ঘনকারী,
অনুবাদ: তোমাদের কাছে মূসা এসেছিল কেমন সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে। তারপরও তোমরা এমনি যালেম হয়ে গিয়েছিলে যে, সে একটু আড়াল হতেই তোমরা বাছুরকে উপাস্য বানিয়ে বসেছিলে।
(2:93)
وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَكُمْ وَ رَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّوْرَؕ خُذُوْا مَاۤ اٰتَیْنٰكُمْ بِقُوَّةٍ وَّ اسْمَعُوْاؕ قَالُوْا سَمِعْنَا وَ عَصَیْنَاۗ وَ اُشْرِبُوْا فِیْ قُلُوْبِهِمُ الْعِجْلَ بِكُفْرِهِمْؕ قُلْ بِئْسَمَا یَاْمُرُكُمْ بِهٖۤ اِیْمَانُكُمْ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবংযখন, أَخَذْنَا = আমরাগ্রহণকরেছিলাম, مِيثَاقَكُمْ = তোমাদেরপ্রতিশ্রুতি, وَرَفَعْنَا = এবংউঠিয়েছিলাম, فَوْقَكُمُ = তোমাদেরউপর, الطُّورَ = তুরপাহাড়কে, خُذُوا = (বলেছিলাম)তোমরাধরো, مَا = (তা)যা, آتَيْنَاكُمْ = তোমাদেরকেআমরাদিয়েছি, بِقُوَّةٍ = শক্তভাবে, وَاسْمَعُوا = ওতোমরাশুনো, قَالُوا = তারাবলেছিল, سَمِعْنَا = আমরাশুনলাম, وَعَصَيْنَا = কিন্তুআমরাঅমান্যকরলাম, وَأُشْرِبُوا = এবংসিঞ্চিতহয়েছিল, فِي = মধ্যে, قُلُوبِهِمُ = তাদেরঅন্তরগুলোর, الْعِجْلَ = গোবাছুর(পূজা), بِكُفْرِهِمْ = অবিশ্বাসেরকারণেতাদের, قُلْ = বলো, بِئْسَمَا = কতইনানিকৃষ্ট, يَأْمُرُكُمْ = তোমাদেরনির্দেশদেয়, بِهِ = যারপ্রতি, إِيمَانُكُمْ = তোমাদেরঈমান, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহয়েথাক, مُؤْمِنِينَ = মুমিন,
অনুবাদ: তারপর সেই অঙ্গীকারের কথাটাও একবার স্মরণ করো, যা আমি তোমাদের থেকে নিয়েছিলাম তূর পাহাড়কে তোমাদের ওপর উঠিয়ে রেখে। আমি জোর দিয়েছিলাম, যে পথনির্দেশ আমি তোমাদেরকে দিচ্ছি, দৃঢ়ভাবে তা মেনে চলো এবং মন দিয়ে শুনো। তোমাদের পূর্বসূরীরা বলেছিল, আমরা শুনেছি কিন্তু মানবো না। তাদের বাতিল প্রিয়তা ও অন্যায় প্রবণতার কারণে তাদের হৃদয় প্রদেশে বাছুরই অবস্থান গেড়ে বসেছে। যদি তোমরা মু'মিন হয়ে থাকো, তাহলে এ কেমন ঈমান, যা তোমাদেরকে এহেন খারাপ কাজের নির্দেশ দেয়?
(2:94)
قُلْ اِنْ كَانَتْ لَكُمُ الدَّارُ الْاٰخِرَةُ عِنْدَ اللّٰهِ خَالِصَةً مِّنْ دُوْنِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ
শব্দার্থ: قُلْ = বলো, إِنْ = যদি, كَانَتْ = হয়(নির্দিষ্ট), لَكُمُ = তোমাদেরজন্য, الدَّارُ = ঘর, الْآخِرَةُ = আখিরাতের, عِنْدَ = কাছে, اللَّهِ = আল্লাহ, خَالِصَةً = কেবল(তোমাদেরই), مِنْ = থেকে(দিয়ে), دُونِ = ব্যতীত(বাদ), النَّاسِ = (সমগ্র)মানুষকে, فَتَمَنَّوُا = তোমরাতাহলেকামনাকরো, الْمَوْتَ = মৃত্যুর, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহয়েথাক, صَادِقِينَ = সত্যবাদী,
অনুবাদ: তাদেরকে বলো, যদি সত্যি সত্যিই আল্লাহ সমগ্র মানবতাকে বাদ দিয়ে একমাত্র তোমাদের জন্য আখেরাতের ঘর নির্দিষ্ট করে থাকেন, তাহলে তো তোমাদের মৃত্যু কামনা করা উচিত —যদি তোমাদের এই ধারণায় তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।
(2:95)
وَ لَنْ یَّتَمَنَّوْهُ اَبَدًۢا بِمَا قَدَّمَتْ اَیْدِیْهِمْؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌۢ بِالظّٰلِمِیْنَ
শব্দার্থ: وَلَنْ = কিন্তুনিশ্চয়ইনা, يَتَمَنَّوْهُ = তাকামনাকরবেতারা, أَبَدًا = কখনও, بِمَا = একারণেযা, قَدَّمَتْ = আগেপাঠিয়েছে, أَيْدِيهِمْ = তাদেরহাত, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ্, عَلِيمٌ = খুবইঅবহিত, بِالظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘঙ্কারীদেরসম্পর্কে,
অনুবাদ: নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, তারা কখনো এটা কামনা করবে না। কারণ তারা স্বহস্তে যা কিছু উপার্জন করে সেখানে পাঠিয়েছে তার স্বাভাবিক দাবী এটিই (অর্থাৎ তারা সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করবে না) । আল্লাহ ঐ সব যালেমদের অবস্থা ভালোভাবেই জানেন।
(2:96)
وَ لَتَجِدَنَّهُمْ اَحْرَصَ النَّاسِ عَلٰى حَیٰوةٍۚۛ وَ مِنَ الَّذِیْنَ اَشْرَكُوْاۚۛ یَوَدُّ اَحَدُهُمْ لَوْ یُعَمَّرُ اَلْفَ سَنَةٍۚ وَ مَا هُوَ بِمُزَحْزِحِهٖ مِنَ الْعَذَابِ اَنْ یُّعَمَّرَؕ وَ اللّٰهُ بَصِیْرٌۢ بِمَا یَعْمَلُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَلَتَجِدَنَّهُمْ = এবংতোমরাঅবশ্যইতাদেরকেপাবে, أَحْرَصَ = অত্যধিকলোভী, النَّاسِ = মানুষেরমধ্যে, عَلَىٰ = প্রতি, حَيَاةٍ = বেঁচেথাকার, وَمِنَ = এবং(তাদের)চেয়েও, الَّذِينَ = যারা, أَشْرَكُوا = শিরককরে, يَوَدُّ = চায়, أَحَدُهُمْ = তাদেরপ্রত্যেকে, لَوْ = যদি, يُعَمَّرُ = আয়ুদেয়াহত, أَلْفَ = একহাজার, سَنَةٍ = বছরের, وَمَا = অথচনা, هُوَ = তা(অর্থাৎদীর্ঘায়ু), بِمُزَحْزِحِهِ = তাকেটলাতেপারবে, مِنَ = থেকে, الْعَذَابِ = শাস্তি, أَنْ = যে, يُعَمَّرَ = আয়ুদেয়াহয়ও, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ্, بَصِيرٌ = খুবদেখেন, بِمَا = ঐবিষয়যা, يَعْمَلُونَ = তারাকরছে,
অনুবাদ: বেঁচে থাকার ব্যাপারে তোমরা তাদেরকে পাবে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে লোভী। এমনকি এ ব্যাপারে তারা মুশরিকদের চাইতেও এগিয়ে রয়েছে। এদের প্রত্যেকে চায় কোনক্রমে সে যেন হাজার বছর বাঁচতে পারে। অথচ দীর্ঘ জীবন কোন অবস্থায়ই তাকে আযাব থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে না। যে ধরনের কাজ এরা করছে আল্লাহ তার সবই দেখছেন।
(2:97)
قُلْ مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِیْلَ فَاِنَّهٗ نَزَّلَهٗ عَلٰى قَلْبِكَ بِاِذْنِ اللّٰهِ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ وَ هُدًى وَّ بُشْرٰى لِلْمُؤْمِنِیْنَ
শব্দার্থ: قُلْ = বলো, مَنْ = যে, كَانَ = হবে, عَدُوًّا = শত্রু, لِجِبْرِيلَ = জিব্রাইলের(সেজেনেরাখুক), فَإِنَّهُ = সেনিশ্চয়ই, نَزَّلَهُ = তাঅবতীর্ণকরেছে, عَلَىٰ = উপর, قَلْبِكَ = তোমারঅন্তরে, بِإِذْنِ = অনুমতিনিয়ে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, مُصَدِّقًا = সত্যায়নকারী, لِمَا = (তারজন্য)যা, بَيْنَ = মাঝে, يَدَيْهِ = তারসামনে(আছে), وَهُدًى = এবংপথপ্রদর্শক, وَبُشْرَىٰ = ওসুসংবাদ, لِلْمُؤْمِنِينَ = মুমিনদেরজন্য,
অনুবাদ: ওদেরকে বলে দাও, যে ব্যক্তি জিব্রীলের সাথে শত্রুতা করে তার জেনে রাখা উচিত, জিব্রীল আল্লাহরই হুকুমে এই কুরআন তোমার দিলে অবতীর্ণ করেছে এটি পূর্বে আগত কিতাবগুলোর সত্যতা স্বীকার করে ও তাদের প্রতি সমর্থন যোগায় এবং ঈমানদারদের জন্য পথনির্দেশনা ও সাফল্যের বার্তাবাহী।
(2:98)
مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِّلّٰهِ وَ مَلٰٓئِكَتِهٖ وَ رُسُلِهٖ وَ جِبْرِیْلَ وَ مِیْكٰىلَ فَاِنَّ اللّٰهَ عَدُوٌّ لِّلْكٰفِرِیْنَ
শব্দার্থ: مَنْ = যে, كَانَ = হবে, عَدُوًّا = শত্রু, لِلَّهِ = আল্লাহ্রজন্য, وَمَلَائِكَتِهِ = ওতাঁরফেরেশতাদের, وَرُسُلِهِ = ওতাররাসূলদের, وَجِبْرِيلَ = ওজীব্রাঈলের, وَمِيكَالَ = ওমিকাঈলের, فَإِنَّ = নিশ্চয়ইফলে, اللَّهَ = আল্লাহ্(হবেন), عَدُوٌّ = শত্রু, لِلْكَافِرِينَ = (সেইসব)কাফিরদেরজন্য,
অনুবাদ: (যদি এই কারণে তারা জিব্রীলের প্রতি শত্রুতার মনোভাব পোষণ করে থাকে তাহলে তাদেরকে বলে দাও) যে ব্যক্তি আল্লাহ তাঁর ফেরেশতা, তাঁর রসূলগণ, জিব্রীল ও মীকাইলের শত্রু আল্লাহ সেই কাফেরদের শত্রু।
(2:99)
وَ لَقَدْ اَنْزَلْنَاۤ اِلَیْكَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍۚ وَ مَا یَكْفُرُ بِهَاۤ اِلَّا الْفٰسِقُوْنَ
শব্দার্থ: وَلَقَدْ = এবংনিশ্চয়ই, أَنْزَلْنَا = আমরাঅবতীর্ণকরেছি, إِلَيْكَ = তোমারপ্রতি, آيَاتٍ = আয়াতসমূহ, بَيِّنَاتٍ = সুস্পষ্ট, وَمَا = এবংনা, يَكْفُرُ = অস্বীকারকরে, بِهَا = তারপ্রতি, إِلَّا = ছাড়া, الْفَاسِقُونَ = সত্যত্যাগী,
অনুবাদ: আমি তোমার প্রতি এমন সব আয়াত নাযিল করেছি যেগুলো দ্ব্যর্থহীন সত্যের প্রকাশে সমুজ্জ্বল। একমাত্র ফাসেক গোষ্ঠী ছাড়া আর কেউ তার অনুগামিতায় অস্বীকৃতি জানায়নি।
(2:100)
اَوَ كُلَّمَا عٰهَدُوْا عَهْدًا نَّبَذَهٗ فَرِیْقٌ مِّنْهُمْؕ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ
শব্দার্থ: أَوَكُلَّمَا = এমননয়কিযখনই, عَاهَدُوا = তারাপ্রতিশ্রুতিদিয়েছে, عَهْدًا = কোনপ্রতিশ্রুতি, نَبَذَهُ = তানিক্ষেপকরেছে, فَرِيقٌ = কোনোএকদল, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যথেকে, بَلْ = বরং, أَكْثَرُهُمْ = তাদেরঅধিকাংশ, لَا = না, يُؤْمِنُونَ = বিশ্বাসকরে,
অনুবাদ: যখনই তারা কোন অঙ্গীকার করেছে তখনই কি তাদের কোন না কোন উপদল নিশ্চিতরূপেই তার বুড়ো আঙুল দেখায়নি। বরং তাদের অধিকাংশই সাচ্চা দিলে ঈমান আনে না।
(2:101)
وَ لَمَّا جَآءَهُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِیْقٌ مِّنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَۗۙ كِتٰبَ اللّٰهِ وَرَآءَ ظُهُوْرِهِمْ كَاَنَّهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ٘
শব্দার্থ: وَلَمَّا = এবংযখনই, جَاءَهُمْ = তাদেরকাছেএসেছে, رَسُولٌ = কোনরাসূল, مِنْ = থেকে, عِنْدِ = কাছ, اللَّهِ = আল্লাহ্র, مُصَدِّقٌ = সত্যায়নকারী, لِمَا = (তারজন্য)যা, مَعَهُمْ = তাদেরসাথে(আছে), نَبَذَ = নিক্ষেপকরেছে, فَرِيقٌ = কোনোএকদল, مِنَ = (তাদের)মধ্যথেকে, الَّذِينَ = যাদের, أُوتُوا = দেয়াহয়েছে, الْكِتَابَ = কিতাব, كِتَابَ = কিতাব, اللَّهِ = আল্লাহর, وَرَاءَ = পিছনে, ظُهُورِهِمْ = তাদেরপিঠের, كَأَنَّهُمْ = তারাযেন, لَا = না, يَعْلَمُونَ = তারাজানেই,
অনুবাদ: আর যখনই তাদের কাছে পূর্ব থেকে রক্ষিত কিতাবের সত্যতা প্রমাণ করে ও তার প্রতি সমর্থন দিয়ে কোন রসূল এসেছে তখনই এই আহলি কিতাবদের একটি উপদল আল্লাহর কিতাবকে এমনভাবে পেছনে ঠেলে দিয়েছে যেন তারা কিছু জানেই না।
(2:102)
وَ اتَّبَعُوْا مَا تَتْلُوا الشَّیٰطِیْنُ عَلٰى مُلْكِ سُلَیْمٰنَۚ وَ مَا كَفَرَ سُلَیْمٰنُ وَ لٰكِنَّ الشَّیٰطِیْنَ كَفَرُوْا یُعَلِّمُوْنَ النَّاسَ السِّحْرَۗ وَ مَاۤ اُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَیْنِ بِبَابِلَ هَارُوْتَ وَ مَارُوْتَؕ وَ مَا یُعَلِّمٰنِ مِنْ اَحَدٍ حَتّٰى یَقُوْلَاۤ اِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْؕ فَیَتَعَلَّمُوْنَ مِنْهُمَا مَا یُفَرِّقُوْنَ بِهٖ بَیْنَ الْمَرْءِ وَ زَوْجِهٖؕ وَ مَا هُمْ بِضَآرِّیْنَ بِهٖ مِنْ اَحَدٍ اِلَّا بِاِذْنِ اللّٰهِؕ وَ یَتَعَلَّمُوْنَ مَا یَضُرُّهُمْ وَ لَا یَنْفَعُهُمْؕ وَ لَقَدْ عَلِمُوْا لَمَنِ اشْتَرٰىهُ مَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ﳴ وَ لَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهٖۤ اَنْفُسَهُمْؕ لَوْ كَانُوْا یَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: وَاتَّبَعُوا = এবংতারাঅনুসরণকরেছে, مَا = (তার)যা, تَتْلُو = পাঠকরত, الشَّيَاطِينُ = শয়তানরা, عَلَىٰ = সম্পর্কে, مُلْكِ = রাজত্বের, سُلَيْمَانَ = সুলায়মানের, وَمَا = আরনা, كَفَرَ = অবিশ্বাসকরেছিল, سُلَيْمَانُ = সুলাইমান, وَلَٰكِنَّ = কিন্তু, الشَّيَاطِينَ = শয়তানরা, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরেছিল, يُعَلِّمُونَ = (তারাই)শিখাত, النَّاسَ = মানুষদেরকে, السِّحْرَ = জাদু, وَمَا = এবং(আয়ত্ত্বকরত)যা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছিল, عَلَى = উপর, الْمَلَكَيْنِ = দুইফেরেশতার, بِبَابِلَ = বাবেল(শহরে), هَارُوتَ = হারুত, وَمَارُوتَ = ওমারূত(নামের), وَمَا = অথচনা, يُعَلِّمَانِ = দুজনেশিখিয়েছে, مِنْ = কোনো, أَحَدٍ = কাউকে, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يَقُولَا = দুজনেবলেছে, إِنَّمَا = মূলত, نَحْنُ = আমরা, فِتْنَةٌ = পরীক্ষা(মাত্র), فَلَا = অতএবনা, تَكْفُرْ = অবিশ্বাসকরো, فَيَتَعَلَّمُونَ = তবুওতারাশিখে, مِنْهُمَا = তাদেরদুজনথেকে, مَا = যা, يُفَرِّقُونَ = তারাবিচ্ছেদঘটাত, بِهِ = তাদিয়ে, بَيْنَ = মাঝে, الْمَرْءِ = পুরুষের(স্বামীর), وَزَوْجِهِ = ওতারস্ত্রীর, وَمَا = এবংনা, هُمْ = তারা, بِضَارِّينَ = ক্ষতিকরতেপারত, بِهِ = এদিয়ে, مِنْ = কোনো, أَحَدٍ = কাউকে, إِلَّا = এছাড়া, بِإِذْنِ = অনুমতিনিয়ে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, وَيَتَعَلَّمُونَ = এবংতারাশিখে, مَا = (এমনকিছু)যা, يَضُرُّهُمْ = ক্ষতিকরততাদের, وَلَا = এবংনা, يَنْفَعُهُمْ = তাদেরউপকারকরত, وَلَقَدْ = এবংনিশ্চয়ই, عَلِمُوا = তারাজেনেছিল, لَمَنِ = অবশ্যইযেকেউ, اشْتَرَاهُ = তাকিনবে, مَا = নেই, لَهُ = তারজন্য, فِي = মধ্যে, الْآخِرَةِ = আখিরাতে, مِنْ = কোনো, خَلَاقٍ = অংশ, وَلَبِئْسَ = এবংঅবশ্যইকতনিকৃষ্ট, مَا = তা, شَرَوْا = বিনিময়েতারাবিক্রিকরে, بِهِ = যার, أَنْفُسَهُمْ = তাদেরজীবনকে, لَوْ = যদি, كَانُوا = (তারা), يَعْلَمُونَ = তারাজানতো,
অনুবাদ: আর এই সঙ্গে তারা এমন সব জিনিসের অনুসরণ করাতে মেতে ওঠে, যেগুলো শয়তানরা পেশ করতো সুলাইমানী রাজত্বের নামে। অথচ সুলাইমান কোন দিন কুফরী করেনি। কুফরী করেছে সেই শয়তানরা, যারা লোকদেরকে যাদু শেখাতো। তারা ব্যবিলনে দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছিল তা আয়ত্ব করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। অথচ তারা(ফেরেশতারা) যখনই কাউকে এর শিক্ষা দিতো, তাকে পরিষ্কার ভাষায় এই বলে সতর্ক করে দিতোঃ দেখো, আমরা নিছক একটি পরীক্ষা মাত্র, তুমি কুফরীতে লিপ্ত হয়ো না। এরপরও তারা তাদের থেকে এমন জিনিস শিখতো, যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছিন্নতা এনে দিতো। একথা সুস্পষ্ট, আল্লাহর হুকুম ছাড়া এ উপায়ে তারা কাউকেও ক্ষতি করতে পারতো না। কিন্তু এ সত্ত্বেও তারা এমন জিনিস শিখতো যা তাদের নিজেদের জন্য লাভজনক ছিল না বরং ছিল ক্ষতিকর। তারা ভালো করেই জানতো, এর ক্রেতার জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই। কতই না নিকৃষ্ট জিনিসের বিনিময়ে তারা বিকিয়ে দিল নিজেদের জীবন!হায়, যদি তারা একথা জানতো!
(2:103)
وَ لَوْ اَنَّهُمْ اٰمَنُوْا وَ اتَّقَوْا لَمَثُوْبَةٌ مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ خَیْرٌؕ لَوْ كَانُوْا یَعْلَمُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَلَوْ = এবংযদি, أَنَّهُمْ = তারা, آمَنُوا = ঈমানআনত, وَاتَّقَوْا = এবংতাকওয়াঅবলম্বনকরত, لَمَثُوبَةٌ = অবশ্যইপুরস্কারপেত, مِنْ = থেকে, عِنْدِ = নিকট, اللَّهِ = আল্লাহ্র, خَيْرٌ = উত্তম, لَوْ = যদি, كَانُوا = (তারা), يَعْلَمُونَ = তারাজানত,
অনুবাদ: যদি তারা ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বন করতো, তাহলে আল্লাহর কাছে তার প্রতিদান লাভ করতো এটি তাদের জন্য হোত বেশী ভালো। হায়, যদি তারা একথা জানতো।
(2:104)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَقُوْلُوْا رَاعِنَا وَ قُوْلُوا انْظُرْنَا وَ اسْمَعُوْاؕ وَ لِلْكٰفِرِیْنَ عَذَابٌ اَلِیْمٌ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, لَا = না, تَقُولُوا = তোমরাবলো, رَاعِنَا = রায়িনা, وَقُولُوا = বরংতোমরাবলো, انْظُرْنَا = উনজুরনা, وَاسْمَعُوا = এবংতোমরাশুনো, وَلِلْكَافِرِينَ = এবংকাফিরদেরজন্য(রয়েছে), عَذَابٌ = শাস্তি, أَلِيمٌ = নিদারুণ,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! ‘রাইনা’ বলো না বরং ‘উন্যুরনা’ বলো এবং মনোযোগ সহকারে কথা শোনো। এই কাফেররা তো যন্ত্রণাদায়ক আযাব লাভের উপযুক্ত।
(2:105)
مَا یَوَدُّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا مِنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ وَ لَا الْمُشْرِكِیْنَ اَنْ یُّنَزَّلَ عَلَیْكُمْ مِّنْ خَیْرٍ مِّنْ رَّبِّكُمْؕ وَ اللّٰهُ یَخْتَصُّ بِرَحْمَتِهٖ مَنْ یَّشَآءُؕ وَ اللّٰهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِیْمِ
শব্দার্থ: مَا = না, يَوَدُّ = চায়, الَّذِينَ = যারা, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরেছে, مِنْ = মধ্যহতে, أَهْلِ = আহলে, الْكِتَابِ = কিতাবের, وَلَا = এবংনা, الْمُشْرِكِينَ = মুশরিকদের(মধ্যহতে), أَنْ = যে, يُنَزَّلَ = অবতীর্ণহোক, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, مِنْ = কোনো, خَيْرٍ = কল্যাণ, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّكُمْ = তোমাদেররবের, وَاللَّهُ = কিন্তুআল্লাহ্, يَخْتَصُّ = বিশেষভাবেমনোনীতকরেন, بِرَحْمَتِهِ = তারদয়াদিয়ে, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিচান, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ্, ذُو = (একটি), الْفَضْلِ = অনুগ্রহেরঅধিকারী, الْعَظِيمِ = মহা,
অনুবাদ: আহলি কিতাব বা মুশরিকদের মধ্য থেকে যারা সত্যের দাওয়াত গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা কখনোই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর কোন কল্যাণ নাযিল হওয়া পছন্দ করে না। কিন্তু আল্লাহ যাকে চান নিজের রহমত দানের জন্য বাছাই করে নেন এবং তিনি বড়ই অনুগ্রহশীল।
(2:106)
مَا نَنْسَخْ مِنْ اٰیَةٍ اَوْ نُنْسِهَا نَاْتِ بِخَیْرٍ مِّنْهَاۤ اَوْ مِثْلِهَاؕ اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ
শব্দার্থ: مَا = যা, نَنْسَخْ = আমরারহিতকরি, مِنْ = (অর্থাৎ)কোনো, آيَةٍ = আয়াত, أَوْ = অথবা, نُنْسِهَا = তাআমরাভুলিয়েদিই, نَأْتِ = আনিআমরা, بِخَيْرٍ = উত্তম, مِنْهَا = তারচেয়ে, أَوْ = অথবা, مِثْلِهَا = তারঅনুরূপ, أَلَمْ = নাকি, تَعْلَمْ = তুমিজান, أَنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, عَلَىٰ = উপর, كُلِّ = সব, شَيْءٍ = কিছুর, قَدِيرٌ = সর্বশক্তিমান,
অনুবাদ: আমি যে আয়াতকে ‘মানসুখ’ করি বা ভুলিয়ে দেই, তার জায়গায় আনি তার চাইতে ভালো অথবা কমপক্ষে ঠিক তেমনটিই।
(2:107)
اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللّٰهَ لَهٗ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِؕ وَ مَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ مِنْ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیْرٍ
শব্দার্থ: أَلَمْ = নাকি, تَعْلَمْ = তুমিজান, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ্(এমনযে), لَهُ = তাঁরইজন্যে, مُلْكُ = সার্বভৌমত্ব, السَّمَاوَاتِ = আকাশের, وَالْأَرْضِ = ওপৃথিবীর, وَمَا = এবং, لَكُمْ = নেইতোমাদেরজন্য, مِنْ = দিয়ে(থেকে), دُونِ = বাদ, اللَّهِ = আল্লাহ্কে, مِنْ = কোনো, وَلِيٍّ = বন্ধু, وَلَا = আরনা, نَصِيرٍ = কোনোসাহায্যকারী,
অনুবাদ: তুমি কি জানো না, আল্লাহ সব জিনিসের ওপর ক্ষমতাশালী? তুমি কি জানো না, পৃথিবী ও আকাশের শাসন কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর? আর তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী নেই।
(2:108)
اَمْ تُرِیْدُوْنَ اَنْ تَسْــٴَـلُوْا رَسُوْلَكُمْ كَمَا سُئِلَ مُوْسٰى مِنْ قَبْلُؕ وَ مَنْ یَّتَبَدَّلِ الْكُفْرَ بِالْاِیْمَانِ فَقَدْ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِیْلِ
শব্দার্থ: أَمْ = কি, تُرِيدُونَ = তোমরাচাও, أَنْ = যে, تَسْأَلُوا = প্রশ্নকরবে, رَسُولَكُمْ = তোমাদেররাসূলকে, كَمَا = যেমন, سُئِلَ = প্রশ্নকরাহয়েছিল, مُوسَىٰ = মূসা, مِنْ = থেকে, قَبْلُ = পূর্বে, وَمَنْ = এবংযে, يَتَبَدَّلِ = পরিবর্তনকরল, الْكُفْرَ = অবিশ্বাস, بِالْإِيمَانِ = ঈমানেরবদলে, فَقَدْ = নিশ্চয়ই, ضَلَّ = সেহারাল, سَوَاءَ = সরলসোজা, السَّبِيلِ = পথ,
অনুবাদ: তাহলে তোমরা কি তোমাদের রসূলের কাছে সেই ধরনের প্রশ্ন ও দাবী করতে চাও যেমন এর আগে মূসার কাছে করা হয়েছিল? অথচ যে ব্যক্তি ঈমানী নীতিকে কুফরী নীতিতে পরিবর্তিত করেছে, সে-ই সত্য-সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
(2:109)
وَدَّ كَثِیْرٌ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ یَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ اِیْمَانِكُمْ كُفَّارًا ۚۖ حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ اَنْفُسِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الْحَقُّۚ فَاعْفُوْا وَ اصْفَحُوْا حَتّٰى یَاْتِیَ اللّٰهُ بِاَمْرِهٖؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ
শব্দার্থ: وَدَّ = কামনাকরে, كَثِيرٌ = অনেকে, مِنْ = মধ্যথেকে, أَهْلِ = অধিকারীদের, الْكِتَابِ = কিতাবের, لَوْ = যদি, يَرُدُّونَكُمْ = তোমাদেরফিরাতেপারত, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = পর, إِيمَانِكُمْ = তোমাদেরঈমানের, كُفَّارًا = অবিশ্বাস, حَسَدًا = হিংসাবশত, مِنْ = থেকে, عِنْدِ = কাছে, أَنْفُسِهِمْ = তাদেরনিজেদের, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = এরপর, مَا = যা, تَبَيَّنَ = সুস্পষ্টহয়েছে, لَهُمُ = তাদেরকাছে, الْحَقُّ = প্রকৃতসত্য, فَاعْفُوا = অতএবতোমরাক্ষমাকরো, وَاصْفَحُوا = ওউপেক্ষাকরো, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يَأْتِيَ = (ফায়সালাকরে)দেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, بِأَمْرِهِ = তাঁরনির্দেশদিয়ে, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, عَلَىٰ = উপর, كُلِّ = সব, شَيْءٍ = কিছুর, قَدِيرٌ = সর্বশক্তিমান,
অনুবাদ: আহ্লি কিতাবদের অধিকাংশই তোমাদেরকে কোনক্রমে ঈমান থেকে আবার কুফরীর দিকে ফিরিয়ে নিতে চায়। যদিও হক তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে গেছে তবুও নিজেদের হিংসাত্মক মনোবৃত্তির কারণে এটিই তাদের কামনা। এর জবাবে তোমরা ক্ষমা ও উপেক্ষার নীতি অবলম্বন করো। যতক্ষণ না আল্লাহ নিজেই এর কোন ফায়সালা করে দেন। নিশ্চিত জেনো, আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাশীল।
(2:110)
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ
শব্দার্থ: وَأَقِيمُوا = এবংতোমরাপ্রতিষ্ঠাকরো, الصَّلَاةَ = সলাত, وَآتُوا = ওতোমরাআদায়করো, الزَّكَاةَ = যাকাত, وَمَا = এবংযা, تُقَدِّمُوا = তোমরাআগেপাঠাবে, لِأَنْفُسِكُمْ = তোমাদেরনিজেদেরজন্য, مِنْ = কোনো, خَيْرٍ = কল্যাণ, تَجِدُوهُ = তাতোমরাপাবে, عِنْدَ = কাছে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, بِمَا = ঐব্যাপারে, تَعْمَلُونَ = তোমরাকরছ, بَصِيرٌ = খুবদেখছেন,
অনুবাদ: নামায কায়েম করো ও যাকাত দাও। নিজেদের পরকালের জন্য তোমরা যা কিছু সৎকাজ করে আগে পাঠিয়ে দেবে, তা সবই আল্লাহর ওখানে মজুত পাবে। তোমরা যা কিছু করো সবই আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে।
(2:111)
وَ قَالُوْا لَنْ یَّدْخُلَ الْجَنَّةَ اِلَّا مَنْ كَانَ هُوْدًا اَوْ نَصٰرٰىؕ تِلْكَ اَمَانِیُّهُمْؕ قُلْ هَاتُوْا بُرْهَانَكُمْ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ
শব্দার্থ: وَقَالُوا = এবংতারাবলে, لَنْ = কখনওনা, يَدْخُلَ = প্রবেশকরবে(অন্যকেউ), الْجَنَّةَ = জান্নাতে, إِلَّا = এছাড়া, مَنْ = যে, كَانَ = হবে, هُودًا = ইহুদী, أَوْ = অথবা, نَصَارَىٰ = খ্রিষ্টান, تِلْكَ = এটা, أَمَانِيُّهُمْ = তাদেরমিথ্যাআসামাত্র, قُلْ = বলো, هَاتُوا = তোমরানিয়েআস, بُرْهَانَكُمْ = তোমাদেরপ্রমাণ, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহও, صَادِقِينَ = সত্যবাদী,
অনুবাদ: তারা বলে, কোন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না, যে পর্যন্ত না সে ইহুদি হয় অথবা (খৃস্টানদের ধারণামতে) খৃস্টান হয়। এগুলো হচ্ছে তাদের আকাংখা। তাদেরকে বলে দাও, তোমাদের প্রমাণ আনো, যদি নিজেদের দাবীর ব্যাপারে তোমরা সত্যবাদী হও।
(2:112)
بَلٰىۗ مَنْ اَسْلَمَ وَجْهَهٗ لِلّٰهِ وَ هُوَ مُحْسِنٌ فَلَهٗۤ اَجْرُهٗ عِنْدَ رَبِّهٖ ۪ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ۠
শব্দার্থ: بَلَىٰ = তবেহ্যাঁ, مَنْ = যে, أَسْلَمَ = সঁপেদিয়েছে, وَجْهَهُ = তারসত্তাকে, لِلَّهِ = আল্লাহ্রজন্য, وَهُوَ = এবংসে, مُحْسِنٌ = সত্যনিষ্ঠও, فَلَهُ = তবেতারজন্য, أَجْرُهُ = তারপ্রতিফল(রয়েছে), عِنْدَ = কাছে, رَبِّهِ = তাররবের, وَلَا = এবংনা(আছে), خَوْفٌ = কোনোভয়, عَلَيْهِمْ = তাদেরজন্য, وَلَا = আরনা, هُمْ = তারা, يَحْزَنُونَ = চিন্তাকরবে,
অনুবাদ: (আসলে তোমাদের বা অন্য কারোর কোন বিশেষত্ব নেই। ) সত্য বলতে কি যে ব্যক্তিই নিজের সত্ত্বাকে আল্লাহর আনুগত্যে সোপর্দ করবে এবং কার্যত সৎপথে চলবে, তার জন্য তার রবের কাছে আছে এর প্রতিদান। আর এই ধরনের লোকদের জন্য কোন ভয় বা মর্মবেদনার অবকাশ নেই।
(2:113)
وَ قَالَتِ الْیَهُوْدُ لَیْسَتِ النَّصٰرٰى عَلٰى شَیْءٍ ۪ وَّ قَالَتِ النَّصٰرٰى لَیْسَتِ الْیَهُوْدُ عَلٰى شَیْءٍۙ وَّ هُمْ یَتْلُوْنَ الْكِتٰبَؕ كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِیْنَ لَا یَعْلَمُوْنَ مِثْلَ قَوْلِهِمْۚ فَاللّٰهُ یَحْكُمُ بَیْنَهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ فِیْمَا كَانُوْا فِیْهِ یَخْتَلِفُوْنَ
শব্দার্থ: وَقَالَتِ = এবংবলে, الْيَهُودُ = ইহূদীরা, لَيْسَتِ = নেই, النَّصَارَىٰ = খ্রিষ্টানরা, عَلَىٰ = উপর, شَيْءٍ = কোনকিছুর(প্রতিষ্ঠিত), وَقَالَتِ = এবংবলে, النَّصَارَىٰ = খ্রিষ্টানরা, لَيْسَتِ = নেই, الْيَهُودُ = ইহুদীরা, عَلَىٰ = উপর, شَيْءٍ = কোনকিছুর(প্রতিষ্ঠিত), وَهُمْ = অথচতারা, يَتْلُونَ = তিলাওয়াতকরে, الْكِتَابَ = কিতাব, كَذَٰلِكَ = এভাবে, قَالَ = (তারাও)বলে, الَّذِينَ = যারা, لَا = না, يَعْلَمُونَ = জানে(প্রকৃতসত্য), مِثْلَ = মতো, قَوْلِهِمْ = তাদেরকথার, فَاللَّهُ = অতএবআল্লাহ্, يَحْكُمُ = মীমাংসাকরবেন, بَيْنَهُمْ = তাদেরমাঝে, يَوْمَ = দিনে, الْقِيَامَةِ = কিয়ামাতের, فِيمَا = সেবিষয়েযা, كَانُوا = তারাছিল, فِيهِ = সেব্যাপারে, يَخْتَلِفُونَ = তারামতবিরোধকরত,
অনুবাদ: ইহুদিরা বলে, খৃস্টানদের কাছে কিছুই নেই। খৃস্টানরা বলে ইহুদিদের কাছে কিছুই নেই। অথচ তারা উভয়ই কিতাব পড়ে। আর যাদের কাছে কিতাবের জ্ঞান নেই তারাও এ ধরনের কথা বলে থাকে। এরা যে মত বিরোধে লিপ্ত হয়েছে কিয়ামতের দিন আল্লাহ এর চূড়ান্ত মীমাংসা করে দেবেন।
(2:114)
وَ مَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللّٰهِ اَنْ یُّذْكَرَ فِیْهَا اسْمُهٗ وَ سَعٰى فِیْ خَرَابِهَاؕ أُولَٰئِكَ مَا كَانَ لَهُمْ اَنْ یَّدْخُلُوْهَاۤ اِلَّا خَآئِفِیْنَ۬ؕ لَهُمْ فِی الدُّنْیَا خِزْیٌ وَّ لَهُمْ فِی الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِیْمٌ
শব্দার্থ: وَمَنْ = এবংকে(আছে), أَظْلَمُ = বড়সীমালঙ্ঘনকারী, مِمَّنْ = তারচেয়েযে, مَنَعَ = বাধাদেয়, مَسَاجِدَ = মাসজিদে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, أَنْ = যে, يُذْكَرَ = স্মরণকরা, فِيهَا = তারমধ্যে, اسْمُهُ = তারনাম, وَسَعَىٰ = এবংসেচেষ্টাকরে, فِي = ব্যাপারে, خَرَابِهَا = তারধ্বংসের, أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, مَا = নয়, كَانَ = (সঙ্গত)ছিল, لَهُمْ = তাদেরজন্য, أَنْ = যে, يَدْخُلُوهَا = তাতেপ্রবেশকরবে, إِلَّا = এছাড়াযে, خَائِفِينَ = ভীতহয়ে, لَهُمْ = তাদেরজন্য(রয়েছে), فِي = মধ্যে, الدُّنْيَا = পৃথিবীর, خِزْيٌ = লাঞ্ছনা, وَلَهُمْ = ওতাদেরজন্য(রয়েছে), فِي = মধ্যে, الْآخِرَةِ = আখিরাতের, عَذَابٌ = শাস্তি, عَظِيمٌ = কঠিন,
অনুবাদ: আর তার চাইতে বড় যালেম আর কে হবে যে আল্লাহর ঘরে তাঁর নাম স্মরণ করা থেকে মানুষকে বাধা দেয় এবং সেগুলো ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায়? এই ধরনের লোকেরা এসব ইবাদাতগৃহে প্রবেশের যোগ্যতা রাখে না আর যদি কখনো প্রবেশ করে, তাহলে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় প্রবেশ করতে পারে। তাদের জন্য রয়েছে এ দুনিয়ায় লাঞ্ছনা এবং আখেরাতে বিরাট শাস্তি।
(2:115)
وَ لِلّٰهِ الْمَشْرِقُ وَ الْمَغْرِبُۗ فَاَیْنَمَا تُوَلُّوْا فَثَمَّ وَجْهُ اللّٰهِؕ اِنَّ اللّٰهَ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: وَلِلَّهِ = এবংআল্লাহরইজন্যে, الْمَشْرِقُ = পূর্ব, وَالْمَغْرِبُ = ওপশ্চিম, فَأَيْنَمَا = অতএবযেদিকেই, تُوَلُّوا = মুখফিরাওতোমরা, فَثَمَّ = অতঃপরসেখানেই, وَجْهُ = দিক, اللَّهِ = আল্লাহ্র, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, وَاسِعٌ = সর্বব্যাপী, عَلِيمٌ = সবকিছুজানেন,
অনুবাদ: পূর্ব ও পশ্চিম সব আল্লাহর। তোমরা যেদিকে মুখ ফিরাবে সেদিকেই আল্লাহর চেহারা বিরাজমান। আল্লাহ বড়ই ব্যাপকতার অধিকারী এবং তিনি সবকিছু জ্ঞাত।
(2:116)
وَ قَالُوا اتَّخَذَ اللّٰهُ وَلَدًاۙ سُبْحٰنَهٗؕ بَلْ لَّهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِؕ كُلٌّ لَّهٗ قٰنِتُوْنَ
শব্দার্থ: وَقَالُوا = এবংতারাবলে, اتَّخَذَ = গ্রহণকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, وَلَدًا = সন্তান, سُبْحَانَهُ = তিনিপবিত্র, بَلْ = বরং, لَهُ = (রয়েছে)তাঁরজন্যে, مَا = যাকিছু(আছে), فِي = মধ্যে, السَّمَاوَاتِ = আকাশসমূহের, وَالْأَرْضِ = ওপৃথিবীর, كُلٌّ = সবকিছুই, لَهُ = তাঁরইজন্য, قَانِتُونَ = অনুগত,
অনুবাদ: তারা বলে, আল্লাহ কাউকে ছেলে হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ পবিত্র এসব কথা থেকে। আসলে পৃথিবী ও আকাশের সমস্ত জিনিসই তাঁর মালিকানাধীন, সবকিছুই তাঁর নির্দেশের অনুগত।
(2:117)
بَدِیْعُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِؕ وَ اِذَا قَضٰۤى اَمْرًا فَاِنَّمَا یَقُوْلُ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُ
শব্দার্থ: بَدِيعُ = (তিনি)স্রষ্টা, السَّمَاوَاتِ = আকাশসমূহের, وَالْأَرْضِ = ওপৃথিবীর, وَإِذَا = এবংযখন, قَضَىٰ = সিদ্ধান্তকরেন, أَمْرًا = কোনোকাজ(করার), فَإِنَّمَا = শুধুমাত্র, يَقُولُ = বলেন, لَهُ = তার, كُنْ = হও, فَيَكُونُ = তখনইতাহয়েযায়,
অনুবাদ: তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর স্রষ্টা। তিনি যে বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেন সে সম্পর্কে কেবলমাত্র হুকুম দেন ‘হও’, তাহলেই তা হয়ে যায়।
(2:118)
وَ قَالَ الَّذِیْنَ لَا یَعْلَمُوْنَ لَوْ لَا یُكَلِّمُنَا اللّٰهُ اَوْ تَاْتِیْنَاۤ اٰیَةٌؕ كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ مِّثْلَ قَوْلِهِمْؕ تَشَابَهَتْ قُلُوْبُهُمْؕ قَدْ بَیَّنَّا الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یُّوْقِنُوْنَ
শব্দার্থ: وَقَالَ = এবংবলে, الَّذِينَ = যারা, لَا = না, يَعْلَمُونَ = জানে, لَوْلَا = কেননা, يُكَلِّمُنَا = আমাদেরসাথেকথাবলেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, أَوْ = অথবা, تَأْتِينَا = আমাদেরকাছেআসে(না), آيَةٌ = কোনোনিদর্শন, كَذَٰلِكَ = এভাবে, قَالَ = বলেছিল, الَّذِينَ = যারা(ছিল), مِنْ = (থেকে), قَبْلِهِمْ = তাদেরপূর্বে, مِثْلَ = অনূরূপ, قَوْلِهِمْ = তাদেরকথার, تَشَابَهَتْ = সদৃশহয়েছে, قُلُوبُهُمْ = তাদেরঅন্তরসমুহ, قَدْ = নিশ্চয়ই, بَيَّنَّا = বর্ণনাকরেছিআমরা, الْآيَاتِ = নিদর্শনসমূহ, لِقَوْمٍ = (সেই)সম্প্রদায়েরজন্য, يُوقِنُونَ = (যারা)বিশ্বাসকরে,
অনুবাদ: অজ্ঞ লোকেরা বলে, আল্লাহ নিজে আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন অথবা কোন নিশানী আমাদের কাছে আসে না কেন? এদের আগের লোকেরাও এমনি ধারা কথা বলতো। এদের সবার (আগের ও পরের পথভ্রষ্টদের) মানসিকতা একই। দৃঢ় বিশ্বাসীদের জন্য আমরা নিশানীসমূহ সুস্পষ্ট করে দিয়েছি।
(2:119)
اِنَّاۤ اَرْسَلْنٰكَ بِالْحَقِّ بَشِیْرًا وَّ نَذِیْرًاۙ وَّ لَا تُسْــٴَـلُ عَنْ اَصْحٰبِ الْجَحِیْمِ
শব্দার্থ: إِنَّا = নিশ্চয়ইআমরা, أَرْسَلْنَاكَ = তোমাকেপাঠিয়েছি, بِالْحَقِّ = সত্যদিয়ে, بَشِيرًا = সুসংবাদদাতা, وَنَذِيرًا = ওসতর্ককারীহিসাবে, وَلَا = এবংনা, تُسْأَلُ = তোমাকেজিজ্ঞাসাকরাহবে, عَنْ = সম্পর্কে, أَصْحَابِ = আধিবাসীদের, الْجَحِيمِ = জাহান্নামের,
অনুবাদ: (এর চাইতে বড় নিশানী আর কি হতে পারে যে) আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সত্য জ্ঞান সহকারে সুসংবাদ দানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারী রূপে। যারা জাহান্নামের সাথে সম্পর্ক জুড়েছে তাদের জন্য তুমি দায়ী নও এবং তোমাকে জবাবদিহি করতে হবে না।
(2:120)
وَ لَنْ تَرْضٰى عَنْكَ الْیَهُوْدُ وَ لَا النَّصٰرٰى حَتّٰى تَتَّبِـعَ مِلَّتَهُمْؕ قُلْ اِنَّ هُدَى اللّٰهِ هُوَ الْهُدٰىؕ وَ لَئِنِ اتَّبَعْتَ اَهْوَآءَهُمْ بَعْدَ الَّذِیْ جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِۙ مَا لَكَ مِنَ اللّٰهِ مِنْ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیْرٍؔ
শব্দার্থ: وَلَنْ = এবংকখনওনা, تَرْضَىٰ = খুশিহবে, عَنْكَ = তোমারপ্রতি, الْيَهُودُ = ইহূদীরা, وَلَا = আরনা, النَّصَارَىٰ = খ্রিষ্টানরা, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, تَتَّبِعَ = তুমিঅনুসরণকরবে, مِلَّتَهُمْ = তাদেরধর্মাদর্শ, قُلْ = বলো, إِنَّ = নিশ্চয়ই, هُدَى = পথনির্দেশনা, اللَّهِ = আল্লাহ্র, هُوَ = সেটাই, الْهُدَىٰ = সঠিকপথনির্দেশনা, وَلَئِنِ = এবংঅবশ্যইযদি, اتَّبَعْتَ = তুমিঅনুসরণকর, أَهْوَاءَهُمْ = তাদেরখেয়ালখুশির, بَعْدَ = পরেও, الَّذِي = যা, جَاءَكَ = তোমারকাছেএসেছে, مِنَ = থেকে, الْعِلْمِ = (সঠিক)জ্ঞান, مَا = না, لَكَ = তোমারজন্য(পাবে), مِنَ = হতে, اللَّهِ = আল্লাহ্(বাঁচাতে), مِنْ = কোনো, وَلِيٍّ = বন্ধু, وَلَا = আরনা, نَصِيرٍ = কোনোসাহায্যকারী,
অনুবাদ: ইহুদি ও খৃস্টানরা তোমার প্রতি কখনোই সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের পথে চলতে থাকো। পরিষ্কার বলে দাও, পথ মাত্র একটিই, যা আল্লাহ বাতলে দিয়েছেন। অন্যথায় তোমার কাছে যে জ্ঞান এসেছে তারপরও যদি তুমি তাদের ইচ্ছা ও বাসনা অনুযায়ী চলতে থাকো, তাহলে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষাকারী তোমর কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী থাকবে না।
(2:121)
اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْكِتٰبَ یَتْلُوْنَهٗ حَقَّ تِلَاوَتِهٖؕ أُولَٰئِكَ یُؤْمِنُوْنَ بِهٖؕ وَ مَنْ یَّكْفُرْ بِهٖ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ۠
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, آتَيْنَاهُمُ = তাদেরআমরাদিয়েছি, الْكِتَابَ = কিতাব, يَتْلُونَهُ = তাতারাতিলাওয়াত, حَقَّ = যথোপযুক্ত, تِلَاوَتِهِ = তারতিলাওয়াত, أُولَٰئِكَ = তারাই, يُؤْمِنُونَ = ঈমানআনে, بِهِ = এরউপর, وَمَنْ = এবংযে, يَكْفُرْ = অস্বীকারকরে, بِهِ = তারপ্রতি, فَأُولَٰئِكَ = ঐসব(লোক)মূলত, هُمُ = তারাই, الْخَاسِرُونَ = ক্ষতিগ্রস্থ,
অনুবাদ: যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা তাকে যথাযথভাবে পাঠ করে। তারা তার ওপর সাচ্চা দিলে ঈমান আনে। আর যারা তার সাথে কুফরীর নীতি অবলম্বন করে তারাই আসলে ক্ষতিগ্রস্ত।
(2:122)
یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اذْكُرُوْا نِعْمَتِیَ الَّتِیْۤ اَنْعَمْتُ عَلَیْكُمْ وَ اَنِّیْ فَضَّلْتُكُمْ عَلَى الْعٰلَمِیْنَ
শব্দার্থ: يَابَنِي = হেবনী, إِسْرَائِيلَ = ইসরাঈল, اذْكُرُوا = তোমরাস্মরণকরো, نِعْمَتِيَ = আমারঅনুগ্রহের(কথা), الَّتِي = যা, أَنْعَمْتُ = আমিঅনুগ্রহদিয়েছি, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَأَنِّي = ওআমিনিশ্চয়ই, فَضَّلْتُكُمْ = তোমাদেরকেশ্রেষ্ঠত্বদিয়েছি, عَلَى = উপর, الْعَالَمِينَ = সারাবিশ্বের,
অনুবাদ: হে বনী ইসরাঈল! তোমাদের আমি যে নিয়ামত দান করেছিলাম এবং বিশ্বের জাতিদের ওপর তোমাদের যে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছিলাম তার কথা স্মরণ করো।
(2:123)
وَ اتَّقُوْا یَوْمًا لَّا تَجْزِیْ نَفْسٌ عَنْ نَّفْسٍ شَیْــٴًـا وَّ لَا یُقْبَلُ مِنْهَا عَدْلٌ وَّ لَا تَنْفَعُهَا شَفَاعَةٌ وَّ لَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ
শব্দার্থ: وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, يَوْمًا = সেদিনের, لَا = না, تَجْزِي = কাজেআসবে, نَفْسٌ = কোনোব্যক্তি, عَنْ = জন্য, نَفْسٍ = কোনোব্যক্তির, شَيْئًا = কিছুমাত্রও, وَلَا = এবংনা, يُقْبَلُ = গ্রহণকরাহবে, مِنْهَا = তারথেকে, عَدْلٌ = কোনোবিনিময়, وَلَا = এবংনা, تَنْفَعُهَا = তাকেউপকারদেবে, شَفَاعَةٌ = কোনোসুপারিশ, وَلَا = এবংনা, هُمْ = তারা, يُنْصَرُونَ = সাহায্যপ্রাপ্তহবে,
অনুবাদ: আর সেই দিনকে ভয় করো, যেদিন কেউ কারো কোন কাজে আসবে না, কারোর থেকে ফিদিয়া (বিনিময়) গ্রহণ করা হবে না, কোন সুপারিশ মানুষের জন্য লাভজনক হবে না এবং অপরাধীরা কোথাও কোন সাহায্য পাবে না।
(2:124)
وَ اِذِ ابْتَلٰۤى اِبْرٰهٖمَ رَبُّهٗ بِكَلِمٰتٍ فَاَتَمَّهُنَّؕ قَالَ اِنِّیْ جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ اِمَامًاؕ قَالَ وَ مِنْ ذُرِّیَّتِیْؕ قَالَ لَا یَنَالُ عَهْدِی الظّٰلِمِیْنَ
শব্দার্থ: وَإِذِ = এবং(স্মরণকরো)যখন, ابْتَلَىٰ = পরীক্ষাকরেছিলেন, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহীমকে, رَبُّهُ = তাররব, بِكَلِمَاتٍ = কয়েকটাকথাদ্বারা, فَأَتَمَّهُنَّ = সেঅতঃপরসেগুলোপূর্ণকরল, قَالَ = (আল্লাহ্)বললেন, إِنِّي = নিশ্চয়ইআমি, جَاعِلُكَ = তোমাকেনিয়োগকরব, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্য, إِمَامًا = নেতাহিসাবে, قَالَ = সেবলল, وَمِنْ = এবংথেকেও, ذُرِّيَّتِي = আমারবংশধরদের, قَالَ = (আল্লাহ্)বললেন, لَا = না, يَنَالُ = প্রযোজ্যহবে, عَهْدِي = আমারপ্রতিশ্রুতি, الظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘনকারীদের(জন্য),
অনুবাদ: স্মরণ করো যখন ইবরাহীমকে তার রব কয়েকটি ব্যাপারে পরীক্ষা করলেন এবং সেসব পরীক্ষায় সে পুরোপুরি উত্রে গেলো, তখন তিনি বললেনঃ “আমি তোমাকে সকল মানুষের নেতার পদে অধিষ্ঠিত করবো।” ইবরাহীম বললোঃ “আর আমার সন্তানদের সাথেও কি এই অঙ্গীকার?” জবাব দিলেনঃ “আমার এ অঙ্গীকার যালেমদের ব্যাপারে নয়।”
(2:125)
وَ اِذْ جَعَلْنَا الْبَیْتَ مَثَابَةً لِّلنَّاسِ وَ اَمْنًاؕ وَ اتَّخِذُوْا مِنْ مَّقَامِ اِبْرٰهٖمَ مُصَلًّىؕ وَ عَهِدْنَاۤ اِلٰۤى اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ اَنْ طَهِّرَا بَیْتِیَ لِلطَّآئِفِیْنَ وَ الْعٰكِفِیْنَ وَ الرُّكَّعِ السُّجُوْدِ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, جَعَلْنَا = আমরানির্দিষ্টকরেছলাম, الْبَيْتَ = (কাবা)ঘরকে, مَثَابَةً = মিলনকেন্দ্র, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্যে, وَأَمْنًا = ওশাস্তির(জায়গাহিসেবে), وَاتَّخِذُوا = এবং(নির্দেশদিলাম)তোমরাগ্রহণকরো, مِنْ = থেকে, مَقَامِ = দাঁড়ানোরজায়গাকে, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহিমের, مُصَلًّى = সলাতেরজায়গাহিসেবে, وَعَهِدْنَا = এবংআমরাআদেশকরেছিলাম, إِلَىٰ = প্রতি, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহীমের, وَإِسْمَاعِيلَ = ওইসমাঈলের(প্রতি), أَنْ = যে, طَهِّرَا = পবিত্ররাখো(উভয়ে), بَيْتِيَ = আমারঘরকে, لِلطَّائِفِينَ = তওয়াফকারীদেরজন্য, وَالْعَاكِفِينَ = ওইতিকাফকারীদের, وَالرُّكَّعِ = ওরুকুকারীদের, السُّجُودِ = সিজদাকারীদের(জন্য),
অনুবাদ: আর স্মরণ করো তখনকার কথা যখন আমি এই গৃহকে (কা’বা) লোকদের জন্য কেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল গণ্য করেছিরাম এবং ইবরাহীম যেখানে ইবাদাত করার জন্য দাঁড়ায় সে স্থানটিকে স্থায়ীভাবে নামাযের স্থানে পরিণত করার হুকুম দিয়েছিলাম। আর ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে তাকীদ করে বলেছিলাম, আমার এই গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকূ’-সিজদাকারীদের জন্য পাক-পবিত্র রাখো।
(2:126)
وَ اِذْ قَالَ اِبْرٰهٖمُ رَبِّ اجْعَلْ هٰذَا بَلَدًا اٰمِنًا وَّ ارْزُقْ اَهْلَهٗ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَنْ اٰمَنَ مِنْهُمْ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِؕ قَالَ وَ مَنْ كَفَرَ فَاُمَتِّعُهٗ قَلِیْلًا ثُمَّ اَضْطَرُّهٗۤ اِلٰى عَذَابِ النَّارِؕ وَ بِئْسَ الْمَصِیْرُ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, قَالَ = বলেছিল, إِبْرَاهِيمُ = ইবরাহীম, رَبِّ = হেআমাররব, اجْعَلْ = বানাও, هَٰذَا = এই, بَلَدًا = নগরকে, آمِنًا = নিরাপদ, وَارْزُقْ = ওজীবিকাদাও, أَهْلَهُ = তারঅধিবাসীদের, مِنَ = থেকে, الثَّمَرَاتِ = (সবরকমের)ফলমূল, مَنْ = যেকেউ, آمَنَ = ঈমানআনবে, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যথেকে, بِاللَّهِ = আল্লাহ্রউপরই, وَالْيَوْمِ = ওদিনে, الْآخِرِ = আখিরাতের, قَالَ = (আল্লাহ্)বললেন, وَمَنْ = আরযেকেউ, كَفَرَ = অবিশ্বাসকরবে, فَأُمَتِّعُهُ = তাকেওউপভোগকরাব, قَلِيلًا = কিছুদিনপর্যন্ত, ثُمَّ = এরপর, أَضْطَرُّهُ = তাকেআমিবাধ্যকরব, إِلَىٰ = দিকে, عَذَابِ = শাস্তির, النَّارِ = আগুনের, وَبِئْسَ = এবং(তা)অতিনিকৃষ্ট, الْمَصِيرُ = স্থান,
অনুবাদ: আর এও স্মরণ করো যে, ইবরাহীম দোয়া করেছিলঃ “হে আমার রব! এই শহরকে শান্তি ও নিরাপত্তার শহর বানিয়ে দাও। আর এর অধিবাসীদের মধ্য থেকে যারা আল্লাহ ও আখেরাতকে মানবে তাদেরকে সব রকমের ফলের আহার্য দান করো।” জবাবে তার রব বললেনঃ “আর যে মানবে না, দুনিয়ার গুটিকয় দিনের জীবনের সামগ্রী আমি তাকেও দেবো। কিন্তু সব শেষে তাকে জাহান্নামের আযাবের মধ্যে নিক্ষেপ করবো এবং সেটি নিকৃষ্টতম আবাস।”
(2:127)
وَ اِذْ یَرْفَعُ اِبْرٰهٖمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَیْتِ وَ اِسْمٰعِیْلُؕ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّاؕ اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবং(স্মরণকরো)যখন, يَرْفَعُ = উঠায়, إِبْرَاهِيمُ = ইবরাহীম, الْقَوَاعِدَ = প্রাচীরবাভিত্তি, مِنَ = এর, الْبَيْتِ = (কাবা)ঘর, وَإِسْمَاعِيلُ = ওইসমাঈল, رَبَّنَا = (তারাবলেছিল)হেআমাদেররব, تَقَبَّلْ = প্রহনকরো, مِنَّا = আমাদেরথেকে(একাজ), إِنَّكَ = তুমিনিশ্চয়ই, أَنْتَ = তুমিই, السَّمِيعُ = শ্রবণকারী, الْعَلِيمُ = সবকিছুজ্ঞাত,
অনুবাদ: আর স্মরণ করো, ইবরাহীম ও ইসমাঈল যখন এই গৃহের প্রাচীর নির্মাণ করছিল, তারা দোয়া করে বলছিলঃ “হে আমাদের রব! আমাদের এই খিদমত কবুল করে নাও। তুমি সবকিছু শ্রবণকারী ও সবকিছু জ্ঞাত।
(2:128)
رَبَّنَا وَ اجْعَلْنَا مُسْلِمَیْنِ لَكَ وَ مِنْ ذُرِّیَّتِنَاۤ اُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ ۪ وَ اَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَ تُبْ عَلَیْنَاۚ اِنَّكَ اَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ
শব্দার্থ: رَبَّنَا = হেআমাদেররব, وَاجْعَلْنَا = এবংআমাদেরকেবানাও, مُسْلِمَيْنِ = উভয়কেঅনুগত, لَكَ = তোমারইজন্য, وَمِنْ = এবংমধ্যেহতেও, ذُرِّيَّتِنَا = আমাদেরবংশধরদের, أُمَّةً = একটিজাতি(বানাও), مُسْلِمَةً = অনুগত, لَكَ = তোমারই, وَأَرِنَا = এবংআমাদেরকেদেখাও, مَنَاسِكَنَا = আমাদেরইবাদাতেরনিয়মপদ্ধতি, وَتُبْ = এবংক্ষমাশীলহও, عَلَيْنَا = আমাদেরউপর, إِنَّكَ = নিশ্চয়ইতুমি, أَنْتَ = তুমিই, التَّوَّابُ = ক্ষমাশীল, الرَّحِيمُ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: হে আমাদের রব! আমাদের দু’জনকে তোমার মুসলিম (নির্দেশের অনুগত) বানিয়ে দাও। আমাদের বংশ থেকে এমন একটি জাতির সৃষ্টি করো যে হবে তোমার মুসলিম। তোমার ইবাদাতের পদ্ধতি আমাদের বলে দাও এবং আমাদের ভুলচুক মাফ করে দাও। তুমি বড়ই ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।
(2:129)
رَبَّنَا وَ ابْعَثْ فِیْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِكَ وَ یُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ یُزَكِّیْهِمْؕ اِنَّكَ اَنْتَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ۠
শব্দার্থ: رَبَّنَا = হেআমাদেররব, وَابْعَثْ = এবংপাঠাও, فِيهِمْ = তাদেরমাঝে, رَسُولًا = একজনরাসূল, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যহতে, يَتْلُو = সেতিলাওাতকরবে, عَلَيْهِمْ = তাদেরকাছে, آيَاتِكَ = তোমারআয়াতগুলোকে, وَيُعَلِّمُهُمُ = এবংতাদেরসেশিখাবে, الْكِتَابَ = কিতাব, وَالْحِكْمَةَ = ওপ্রজ্ঞা, وَيُزَكِّيهِمْ = ওতাদেরপরিশুদ্ধকরবে, إِنَّكَ = তুমিনিশ্চয়ই, أَنْتَ = তুমিই, الْعَزِيزُ = পরাক্রমশালী, الْحَكِيمُ = মহাবিজ্ঞ,
অনুবাদ: হে আমাদের রব! এদের মধ্যে স্বয়ং এদের জাতি পরিসর থেকে এমন একজন রসূল পাঠাও যিনি এদেরকে তোমার আয়াত পাঠ করে শুনাবেন, এদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেবেন এবং এদের জীবন পরিশুদ্ধ করে সুসজ্জিত করবেন। অবশ্যি তুমি বড়ই প্রতিপত্তিশালী ও জ্ঞানবান।
(2:130)
وَ مَنْ یَّرْغَبُ عَنْ مِّلَّةِ اِبْرٰهٖمَ اِلَّا مَنْ سَفِهَ نَفْسَهٗؕ وَ لَقَدِ اصْطَفَیْنٰهُ فِی الدُّنْیَاۚ وَ اِنَّهٗ فِی الْاٰخِرَةِ لَمِنَ الصّٰلِحِیْنَ
শব্দার্থ: وَمَنْ = আরকে, يَرْغَبُ = মুখফেরাবে, عَنْ = হতে, مِلَّةِ = দীন, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহীমের, إِلَّا = এছাড়া, مَنْ = যে, سَفِهَ = নির্বোধবানিয়েছে, نَفْسَهُ = তারনিজেকে, وَلَقَدِ = এবংনিশ্চয়ই, اصْطَفَيْنَاهُ = তাকেআমরামনোনীতকরেছি, فِي = মধ্যে, الدُّنْيَا = পৃথিবীর, وَإِنَّهُ = এবংসেনিশ্চয়ই(হবে), فِي = মধ্যে, الْآخِرَةِ = আখিরাতের, لَمِنَ = অন্তর্ভুক্তঅবশ্যই, الصَّالِحِينَ = সৎলোকদের,
অনুবাদ: এখন কে ইবরাহীমের পদ্ধতিকে ঘৃণা করবে?হ্যাঁ, যে নিজেকে মূর্খতা ও নির্বুদ্ধিতায় আচ্ছন্ন করেছে সে ছাড়া আর কে এ কাজ করতে পারে? ইবরাহীমকে তো আমি দুনিয়ায় নিজের জন্য নির্বাচিত করেছিলাম আর আখেরাতে সে সৎকর্মশীলদের মধ্যে গণ্য হবে।
(2:131)
اِذْ قَالَ لَهٗ رَبُّهٗۤ اَسْلِمْۙ قَالَ اَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعٰلَمِیْنَ
শব্দার্থ: إِذْ = (সেছিলএমনযে)যখন, قَالَ = বলেছিলেন, لَهُ = তার, رَبُّهُ = তাররব, أَسْلِمْ = তুমিআত্মসমর্পণকরো, قَالَ = সেবলেছিল, أَسْلَمْتُ = আমিআত্মসমর্পণকরলাম, لِرَبِّ = রবেরকাছে, الْعَالَمِينَ = জগতের,
অনুবাদ: তার অবস্থা ছিল এই যে, যখন তার রব তাকে বললো, “মুসলিম হয়ে যাও।” তখনই সে বলে উঠলো, “আমি বিশ্ব-জাহানের প্রভুর ‘মুসলিম’ হয়ে গেলাম।”
(2:132)
وَ وَصّٰى بِهَاۤ اِبْرٰهٖمُ بَنِیْهِ وَ یَعْقُوْبُؕ یٰبَنِیَّ اِنَّ اللّٰهَ اصْطَفٰى لَكُمُ الدِّیْنَ فَلَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَ اَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَؕ
শব্দার্থ: وَوَصَّىٰ = এবংজোরনির্দেশদিয়েছিল, بِهَا = এসম্বন্ধে, إِبْرَاهِيمُ = ইবরাহীম, بَنِيهِ = তারসন্তানদেরকে, وَيَعْقُوبُ = এবংইয়াকুবও, يَابَنِيَّ = (সেবলেছিল)হেআমারসন্তানেরা, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, اصْطَفَىٰ = মনোনীতকরেছেন, لَكُمُ = তোমাদেরজন্য, الدِّينَ = (এই)দীনকে, فَلَا = নাঅতএব, تَمُوتُنَّ = তোমরামৃত্যুবরণকরো, إِلَّا = এছাড়া, وَأَنْتُمْ = তোমরাযখন, مُسْلِمُونَ = আত্মসমর্পণকারীহবে,
অনুবাদ: ঐ একই পথে চলার জন্য সে তার সন্তানদের উপদেশ দিয়েছিল এবং এরই উপদেশ দিয়েছিল ইয়াকুবও তার সন্তানদেরকে। সে বলেছিল, “আমার সন্তানেরা! আল্লাহ তোমাদের জন্য এই দ্বীনটিই পছন্দ করেছেন। কাজেই আমৃত্যু তোমরা মুসলিম থেকো।”
(2:133)
اَمْ كُنْتُمْ شُهَدَآءَ اِذْ حَضَرَ یَعْقُوْبَ الْمَوْتُۙ اِذْ قَالَ لِبَنِیْهِ مَا تَعْبُدُوْنَ مِنْۢ بَعْدِیْؕ قَالُوْا نَعْبُدُ اِلٰهَكَ وَ اِلٰهَ اٰبَآئِكَ اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ اِلٰهًا وَّاحِدًاۖ ۚ وَّ نَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ
শব্দার্থ: أَمْ = অথবা(কি), كُنْتُمْ = তোমরাছিলে, شُهَدَاءَ = উপস্থিত, إِذْ = যখন, حَضَرَ = উপস্থিতহয়েছিল, يَعْقُوبَ = ইয়াকুবের, الْمَوْتُ = মৃত্যু, إِذْ = যখন, قَالَ = সেবলেছিল, لِبَنِيهِ = তারপুত্রদেরউদ্দেশ্য, مَا = কার, تَعْبُدُونَ = তোমরাউপাসনাকরবে, مِنْ = থেকে, بَعْدِي = আমারপর, قَالُوا = তারাবলেছিল, نَعْبُدُ = ইবাদাতকরবআমরা, إِلَٰهَكَ = তোমারইলাহকে, وَإِلَٰهَ = এবংইলাহ, آبَائِكَ = তোমারপূর্বপুরুষের, إِبْرَاهِيمَ = (অর্থাৎ)ইবরাহীমের, وَإِسْمَاعِيلَ = ওইসমাঈলের, وَإِسْحَاقَ = ওইসহাকের(ইলাহকে), إِلَٰهًا = (যিনি)ইলাহ, وَاحِدًا = একই, وَنَحْنُ = এবংআমরা, لَهُ = তাঁরইকাছে, مُسْلِمُونَ = আত্মসমর্পণকারী,
অনুবাদ: তোমরা কি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলে, যখন ইয়াকুব এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছিল?মৃত্যুকালে সে তার সন্তানদের জিজ্ঞেস করলোঃ“আমার পর তোমরা কার বন্দেগী করবে?” তারা সবাই জবাব দিলঃ“আমরা সেই এক আল্লাহর বন্দেগী করবো, যাকে আপনি এবং আপনার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক ইলাহ হিসেবে মেনে এসেছেন আর আমরা তাঁরই অনুগত- মুসলিম।”
(2:134)
تِلْكَ اُمَّةٌ قَدْ خَلَتْۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَ لَكُمْ مَّا كَسَبْتُمْۚ وَ لَا تُسْــٴَـلُوْنَ عَمَّا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ
শব্দার্থ: تِلْكَ = সেই, أُمَّةٌ = জাতি, قَدْ = নিশ্চয়ই, خَلَتْ = গতহয়েছে, لَهَا = তারজন্য(আছে), مَا = যা, كَسَبَتْ = সেঅর্জনকরেছে, وَلَكُمْ = আরতোমাদেরজন্য(আছে), مَا = যা, كَسَبْتُمْ = তোমরাঅর্জনকরেছ, وَلَا = এবংনা, تُسْأَلُونَ = তোমাদেরপ্রশ্নকরাহবে, عَمَّا = সেসম্পর্কেযা, كَانُوا = তারাছিল, يَعْمَلُونَ = তারাকাজকরছিল,
অনুবাদ: এরা ছিল কিছু লোক। এরা তো অতীত হয়ে গেছে। তারা যা কিছু উপার্জন করেছে, তা তাদের নিজেদের জন্যই আর তোমরা যা উপার্জন করবে, তা তোমাদের জন্য। তারা কি করতো সে কথা তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে না।
(2:135)
وَ قَالُوْا كُوْنُوْا هُوْدًا اَوْ نَصٰرٰى تَهْتَدُوْاؕ قُلْ بَلْ مِلَّةَ اِبْرٰهٖمَ حَنِیْفًاؕ وَ مَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ
শব্দার্থ: وَقَالُوا = এবংতারাবলে, كُونُوا = তোমরাহও, هُودًا = ইহুদী, أَوْ = অথবা, نَصَارَىٰ = খ্রিষ্টান, تَهْتَدُوا = তোমরাসঠিকপথপাবে, قُلْ = বলো, بَلْ = (নাতানয়)বরং, مِلَّةَ = (গ্রহণকর)দীনকে, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহীমের, حَنِيفًا = একনিষ্ঠভাবে, وَمَا = এবংনা, كَانَ = সেছিল, مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الْمُشْرِكِينَ = মুশরিকদের,
অনুবাদ: ইহুদিরা বলে, “ইহুদি হয়ে যাও, তাহলে সঠিক পথ পেয়ে যাবে।” খৃস্টানরা বলে, “খৃস্টান হয়ে যাও, তা হলে হিদায়াত লাভ করতে পারবে।” ওদেরকে বলে দাও, “না, তা নয়; বরং এ সবকিছু ছেড়ে একমাত্র ইবরাহীমের পদ্ধতি অবলম্বন করো। আর ইবরাহীম মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”
(2:136)
قُوْلُوْۤا اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْنَا وَ مَاۤ اُنْزِلَ اِلٰۤى اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ وَ الْاَسْبَاطِ وَ مَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰى وَ عِیْسٰى وَ مَاۤ اُوْتِیَ النَّبِیُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْۚ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ٘ وَ نَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ
শব্দার্থ: قُولُوا = (হেমুসলমান)তোমরাবলো, آمَنَّا = আমরাঈমানএনেছি, بِاللَّهِ = আল্লাহ্রউপর, وَمَا = এবংযা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছে, إِلَيْنَا = আমাদেরপ্রতি, وَمَا = এবংযা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছে, إِلَىٰ = প্রতি, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহীমের, وَإِسْمَاعِيلَ = ওইসমাঈলের, وَإِسْحَاقَ = ওইসহাকের, وَيَعْقُوبَ = ওইয়াকুবের, وَالْأَسْبَاطِ = ও(তাদের)বংশধরদের(উপর), وَمَا = এবংযা, أُوتِيَ = দেওয়াহয়েছে, مُوسَىٰ = মূসাকে, وَعِيسَىٰ = ওঈসাকে, وَمَا = এবংযা, أُوتِيَ = দেয়াহয়েছে, النَّبِيُّونَ = নবীদেরকে, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, لَا = না, نُفَرِّقُ = আমরাপার্থক্যকরি, بَيْنَ = মাঝে, أَحَدٍ = কারো, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যহতে, وَنَحْنُ = এবংআমরা, لَهُ = তাঁরইকাছে, مُسْلِمُونَ = আত্মসমর্পণকারী(মুসলিম)হয়েছি,
অনুবাদ: হে মুসলমানরা!তোমরা বলো, “আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, যে হিদায়াত আমাদের জন্য নাযিল হয়েছে তার প্রতি এবং যা ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও ইয়াকুবের সন্তানদের তাদের রবের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল তার প্রতি। তাদের কারোর মধ্যে আমরা কোন পার্থক্য করি না। আমরা সবাই আল্লাহর অনুগত মুসলিম।”
(2:137)
۪ فَاِنْ اٰمَنُوْا بِمِثْلِ مَاۤ اٰمَنْتُمْ بِهٖ فَقَدِ اهْتَدَوْاۚ وَ اِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّمَا هُمْ فِیْ شِقَاقٍۚ فَسَیَكْفِیْكَهُمُ اللّٰهُۚ وَ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُؕ
শব্দার্থ: فَإِنْ = অতএবযদি, آمَنُوا = তারাঈমানআনে, بِمِثْلِ = অনুরূপ, مَا = যেমন, آمَنْتُمْ = তোমরাঈমানএনেছ, بِهِ = তারউপর, فَقَدِ = তবেনিশ্চয়ই, اهْتَدَوْا = তারাসঠিকপথপাবে, وَإِنْ = আরযদি, تَوَلَّوْا = তারামুখফিরায়েনেয়, فَإِنَّمَا = তবেপ্রকৃতপক্ষে, هُمْ = তারা, فِي = মধ্যে(লিপ্ত), شِقَاقٍ = বিরোধের, فَسَيَكْفِيكَهُمُ = সুতরাংতাদেরবিরুদ্ধেতোমারজন্যযথেষ্ট, اللَّهُ = আল্লাহই, وَهُوَ = এবংতিনি, السَّمِيعُ = সবকিছুশোনেন, الْعَلِيمُ = সবকিছুজানেন,
অনুবাদ: তোমরা যেমনি ঈমান এনেছো তারাও যদি ঠিক তেমনিভাবে ঈমান আনে, তাহলে তারা হিদায়াতের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলতে হবে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে সোজা কথায় বলা যায়, তারা হঠধর্মিতার পথ অবলম্বন করেছে। কাজেই নিশ্চিন্ত হয়ে যাও, তাদের মোকাবিলায় তোমাদের সহায়তার জন্য আল্লাহ-ই যথেষ্ট। তিনি সবকিছু শুনেন ও জানেন।
(2:138)
صِبْغَةَ اللّٰهِۚ وَ مَنْ اَحْسَنُ مِنَ اللّٰهِ صِبْغَةً٘ وَّ نَحْنُ لَهٗ عٰبِدُوْنَ
শব্দার্থ: صِبْغَةَ = (গ্রহণকর)রং(অর্থাৎদীন), اللَّهِ = আল্লাহ্র, وَمَنْ = এবংকে(আছে), أَحْسَنُ = বেশী, مِنَ = চেয়ে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, صِبْغَةً = রঙে, وَنَحْنُ = এবংআমরা, لَهُ = তাঁরই, عَابِدُونَ = ইবাদাতকারী,
অনুবাদ: বলোঃ “আল্লাহর রঙ ধারণ করো! আর কার রঙ তার চেয়ে ভালো? আমরা তো তাঁরই ইবাদাতকারী।”
(2:139)
قُلْ اَتُحَآجُّوْنَنَا فِی اللّٰهِ وَ هُوَ رَبُّنَا وَ رَبُّكُمْۚ وَ لَنَاۤ اَعْمَالُنَا وَ لَكُمْ اَعْمَالُكُمْۚ وَ نَحْنُ لَهٗ مُخْلِصُوْنَۙ
শব্দার্থ: قُلْ = বলো, أَتُحَاجُّونَنَا = আমাদেরসাথেকিতর্ককরছ, فِي = ব্যাপারে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, وَهُوَ = অথচতিনি, رَبُّنَا = আমাদেররব, وَرَبُّكُمْ = ওতোমাদেররব, وَلَنَا = এবংআমাদেরজন্য, أَعْمَالُنَا = আমাদেরকাজ, وَلَكُمْ = ওতোমাদেরজন্য, أَعْمَالُكُمْ = তোমাদেরকাজ, وَنَحْنُ = এবংআমরা, لَهُ = তাঁরই, مُخْلِصُونَ = একনিষ্ঠভাবে(দাসত্বকারী),
অনুবাদ: হে নবী! এদেরকে বলে দাওঃ“তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে আমাদের সাথে ঝগড়া করছো? অথচ তিনিই আমাদের রব এবং তোমাদেরও। আমাদের কাজ আমাদের জন্য, তোমাদের কাজ তোমাদের জন্য। আর আমরা নিজেদের ইবাদাতকে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করেছি।
(2:140)
اَمْ تَقُوْلُوْنَ اِنَّ اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ وَ الْاَسْبَاطَ كَانُوْا هُوْدًا اَوْ نَصٰرٰىؕ قُلْ ءَاَنْتُمْ اَعْلَمُ اَمِ اللّٰهُؕ وَ مَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَهٗ مِنَ اللّٰهِؕ وَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
শব্দার্থ: أَمْ = অথবা(কি), تَقُولُونَ = তোমরাবল, إِنَّ = নিশ্চয়ই, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহীম, وَإِسْمَاعِيلَ = ওইসমাঈল, وَإِسْحَاقَ = ওইসহাক, وَيَعْقُوبَ = ওইয়াকুব, وَالْأَسْبَاطَ = এবং(তাদের)বংশধর, كَانُوا = তারাছিল, هُودًا = ইহুদী, أَوْ = অথবা, نَصَارَىٰ = খ্রিষ্টান, قُلْ = বলো, أَأَنْتُمْ = তোমরাকি, أَعْلَمُ = বেশিজান, أَمِ = অথবা, اللَّهُ = আল্লাহ্(বেশিজানেন), وَمَنْ = এবংকে, أَظْلَمُ = বড়সীমালঙ্ঘনকারী, مِمَّنْ = তারচেয়েযে, كَتَمَ = গোপনকরে, شَهَادَةً = একটিসাক্ষ্য(বাপ্রমাণ), عِنْدَهُ = (যাআছে)তারকাছে, مِنَ = পক্ষহতে, اللَّهِ = আল্লাহ্র, وَمَا = এবংনা, اللَّهُ = আল্লাহ্, بِغَافِلٍ = উদাসীন, عَمَّا = সেসম্পর্কেযা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকাজকরছ,
অনুবাদ: অথবা তোমরা কি একথা বলতে চাও যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও ইয়াকুব-সন্তানরা সবাই ইহুদি বা খৃস্টান ছিল?” বলো, “তোমরা বেশী জানো, না আল্লাহ বেশী জানেন? তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে, যার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সাক্ষ্য রয়েছে এবং সে তা গোপন করে চলে? তোমাদের কর্মকান্ডের ব্যাপারে আল্লাহ গাফেল নন।
(2:141)
تِلْكَ اُمَّةٌ قَدْ خَلَتْۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَ لَكُمْ مَّا كَسَبْتُمْۚ وَ لَا تُسْــٴَـلُوْنَ عَمَّا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ۠
শব্দার্থ: تِلْكَ = সেই, أُمَّةٌ = জাতি, قَدْ = নিশ্চয়ই, خَلَتْ = অতীতহয়েছেতা, لَهَا = তারজন্য(আছে), مَا = যা, كَسَبَتْ = সেউপার্জনকরেছে, وَلَكُمْ = এবংতোমাদেরজন্য, مَا = যা, كَسَبْتُمْ = তোমরাউপার্জনকরেছ, وَلَا = এবংনা, تُسْأَلُونَ = তোমাদেরপ্রশ্নকরাহবে, عَمَّا = সেসম্পর্কেযা, كَانُوا = তারাছিল, يَعْمَلُونَ = তারাকাজকরতে,
অনুবাদ: তারা ছিল কিছু লোক। তারা আজ আর নেই। তারা যা কিছু উপার্জন করেছিল তা ছিল তাদের নিজেদের জন্য। আর তোমরা যা উপার্জন করবে তা তোমাদের জন্য। তাদের কাজের ব্যাপারে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে না।”
(2:142)
سَیَقُوْلُ السُّفَهَآءُ مِنَ النَّاسِ مَا وَلّٰىهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِیْ كَانُوْا عَلَیْهَاؕ قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ وَ الْمَغْرِبُؕ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ
শব্দার্থ: سَيَقُولُ = বলবেঅচিরেই, السُّفَهَاءُ = নির্বোধরা, مِنَ = মধ্যহতে, النَّاسِ = মানুষদের, مَا = কিসে, وَلَّاهُمْ = তাদেরমুখফিরাল, عَنْ = হতে, قِبْلَتِهِمُ = তাদেরকিবলা, الَّتِي = সেই(কিবলাহতে), كَانُوا = তারাছিল, عَلَيْهَا = যারদিকে(মুখকরত), قُلْ = বলো, لِلَّهِ = আল্লাহরই, الْمَشْرِقُ = পূর্ব, وَالْمَغْرِبُ = ওপশ্চিম, يَهْدِي = তিনিপথদেখান, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিচান, إِلَىٰ = দিকে, صِرَاطٍ = পথের, مُسْتَقِيمٍ = সরলসোজা,
অনুবাদ: অবশ্যি নির্বোধ লোকেরা বলবে, “এদের কি হয়েছে, প্রথমে এরা যে কিব্লার দিকে মুখ করে নামায পড়তো, তা থেকে হাঠৎ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে? হে নবী! ওদেরকে বলে দাও, “পূর্ব ও পশ্চিম সবই আল্লাহর। আল্লাহ যাকে চান তাকে সোজা পথ দেখান।”
(2:143)
وَ كَذٰلِكَ جَعَلْنٰكُمْ اُمَّةً وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ وَ یَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَیْكُمْ شَهِیْدًاؕ وَ مَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِیْ كُنْتَ عَلَیْهَاۤ اِلَّا لِنَعْلَمَ مَنْ یَّتَّبِـعُ الرَّسُوْلَ مِمَّنْ یَّنْقَلِبُ عَلٰى عَقِبَیْهِؕ وَ اِنْ كَانَتْ لَكَبِیْرَةً اِلَّا عَلَى الَّذِیْنَ هَدَى اللّٰهُؕ وَ مَا كَانَ اللّٰهُ لِیُضِیْعَ اِیْمَانَكُمْؕ اِنَّ اللّٰهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوْفٌ رَّحِیْمٌ
শব্দার্থ: وَكَذَٰلِكَ = এবংএভাবে, جَعَلْنَاكُمْ = তোমাদেরআমরাবানিয়েছি, أُمَّةً = একটিজাতি, وَسَطًا = মধ্যমপন্থী, لِتَكُونُوا = তোমরাহওযেন, شُهَدَاءَ = সাক্ষী, عَلَى = উপর(জন্য), النَّاسِ = (পৃথিবীর)মানুষের, وَيَكُونَ = ওহয়, الرَّسُولُ = রাসূল, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর(জন্য), شَهِيدًا = সাক্ষী, وَمَا = এবংনা, جَعَلْنَا = আমরাবানিয়েছিলাম, الْقِبْلَةَ = কিবলা, الَّتِي = সেটাকে, كُنْتَ = তুমিছিলে, عَلَيْهَا = যারউপর, إِلَّا = এছাড়া, لِنَعْلَمَ = আমরাযেনজানতেপারি, مَنْ = কে, يَتَّبِعُ = অনুসরণকরে, الرَّسُولَ = রাসূলকে(আর), مِمَّنْ = কেতাদেরমধ্যহতে, يَنْقَلِبُ = ফিরেযায়, عَلَىٰ = উপর, عَقِبَيْهِ = তারদুইগোড়ালির(অর্থাৎউল্টোদিকে), وَإِنْ = এবংযদিও, كَانَتْ = তাছিল(মেনেচলা), لَكَبِيرَةً = অবশ্যইকঠিন, إِلَّا = তবে(নয়কঠিন), عَلَى = (তাদের)উপর, الَّذِينَ = যাদেরকে, هَدَى = পথদেখিয়েছেন, اللَّهُ = আল্লাহ্, وَمَا = এবংনন, كَانَ = (ছিল), اللَّهُ = আল্লাহ্(এরূপযে), لِيُضِيعَ = নষ্টকরবেন, إِيمَانَكُمْ = তোমাদেরঈমান, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, بِالنَّاسِ = মানুষেরউপর, لَرَءُوفٌ = বড়ইদয়ালু, رَحِيمٌ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি ‘মধ্যপন্থী’ উম্মাতে পরিণত করেছি, যাতে তোমরা দুনিয়াবাসীদের ওপর সাক্ষী হতে পারো এবং রসূল হতে পারেন তোমাদের ওপর সাক্ষী। প্রথমে যে দিকে মুখ করে তুমি নামায পড়তে, তাকে তো কে রসূলের অনুসরণ করে এবং কে উল্টো দিকে ফিরে যায়, আমি শুধু তা দেখার জন্য কিব্লাহ নির্দিষ্ট করেছিলাম। এটি ছিল অত্যন্ত কঠিন বিষয়, তবে তাদের জন্য মোটেই কঠিন প্রমাণিত হয়নি যারা আল্লাহর হিদায়াত লাভ করেছিল। আল্লাহ তোমাদের এই ঈমানকে কখনো নষ্ট করবেন না। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, তিনি মানুষের জন্য অত্যন্ত স্নেহশীল ও করুণাময়।
(2:144)
قَدْ نَرٰى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِی السَّمَآءِۚ فَلَنُوَلِّیَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضٰىهَا۪ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِؕ وَ حَیْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ شَطْرَهٗؕ وَ اِنَّ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ لَیَعْلَمُوْنَ اَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ
২-বাক্বারা
(2:145)
وَ لَئِنْ اَتَیْتَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ بِكُلِّ اٰیَةٍ مَّا تَبِعُوْا قِبْلَتَكَۚ وَ مَاۤ اَنْتَ بِتَابِـعٍ قِبْلَتَهُمْۚ وَ مَا بَعْضُهُمْ بِتَابِـعٍ قِبْلَةَ بَعْضٍؕ وَ لَئِنِ اتَّبَعْتَ اَهْوَآءَهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِۙ اِنَّكَ اِذًا لَّمِنَ الظّٰلِمِیْنَۘ
শব্দার্থ: وَلَئِنْ = এবংঅবশ্যইযদি, أَتَيْتَ = তুমিআস, الَّذِينَ = (তাদেরকে)যাদের, أُوتُوا = দেয়াহয়েছে, الْكِتَابَ = কিতাব, بِكُلِّ = সবনিয়ে, آيَةٍ = নিদর্শন, مَا = (তবুও)না, تَبِعُوا = অনুসরণকরবেতারা, قِبْلَتَكَ = তোমারকিবলার, وَمَا = এবংনও, أَنْتَ = তুমি, بِتَابِعٍ = অনুসারী, قِبْلَتَهُمْ = তাদেরকিবলার, وَمَا = এবংনয়, بَعْضُهُمْ = তাদেরকেউ, بِتَابِعٍ = অনুসারী, قِبْلَةَ = কিবলার, بَعْضٍ = কারোর, وَلَئِنِ = এবংঅবশ্যইযদি, اتَّبَعْتَ = তুমিঅনুসরণকর, أَهْوَاءَهُمْ = তাদেরখেয়ালখুশির, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = এরপরও, مَا = যা, جَاءَكَ = তোমারকাছেএসেছে, مِنَ = থেকে, الْعِلْمِ = (সঠিক)জ্ঞান, إِنَّكَ = নিশ্চয়ইতুমি, إِذًا = তাহলে, لَمِنَ = অবশ্যইঅন্তর্ভুক্ত, الظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘনকারীদের,
অনুবাদ: তুমি এই আহ্লি কিতাবদের কাছে যে কোন নিশানীই আনো না কেন, এরা তোমার কিব্লার অনুসারী কখনোই হবে না। তোমাদের পক্ষেও তাদের কিব্লার অনুগামী হওয়া সম্ভব নয় আর এদের কোন একটি দলও অন্য দলের কিব্লার অনুসারী হতে প্রস্তুত নয়। তোমাদের কাছে যে জ্ঞান এসেছে তা লাভ করার পর যদি তোমরা তাদের ইচ্ছা ও বাসনার অনুসারী হও, তাহলে নিঃসন্দেহে তোমরা জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(2:146)
اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْكِتٰبَ یَعْرِفُوْنَهٗ كَمَا یَعْرِفُوْنَ اَبْنَآءَهُمْؕ وَ اِنَّ فَرِیْقًا مِّنْهُمْ لَیَكْتُمُوْنَ الْحَقَّ وَ هُمْ یَعْلَمُوْنَؔ
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, آتَيْنَاهُمُ = তাদেরকেআমরাদিয়েছি, الْكِتَابَ = কিতাব, يَعْرِفُونَهُ = তাতারাচিনে, كَمَا = যেমন, يَعْرِفُونَ = তারাচিনে, أَبْنَاءَهُمْ = তাদেরসন্তানদেরকে, وَإِنَّ = এবংনিশ্চয়ই, فَرِيقًا = একদল, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যহতে, لَيَكْتُمُونَ = অবশ্যইগোপনকরে, الْحَقَّ = সত্যকে, وَهُمْ = এমতাবস্থায়যেতারা, يَعْلَمُونَ = জানেও,
অনুবাদ: যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা এই স্থানটিকে (যাকে কিব্লাহ বানানো হয়েছে) এমনভাবে চেনে যেমন নিজেদের সন্তানদেরকে চেনে। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে একটি দল সত্যকে জেনে বুঝে গোপন করেছে।
(2:147)
اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِیْنَ۠
শব্দার্থ: الْحَقُّ = প্রকৃতসত্য, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّكَ = তোমাররবের, فَلَا = নাতাই, تَكُونَنَّ = তোমরাহবে, مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الْمُمْتَرِينَ = সন্দেহপোষণকারীর,
অনুবাদ: এটি নির্দ্বিধায় তোমাদের রবের পক্ষ থেকে আগত একটি চূড়ান্ত সত্য, কাজেই এ ব্যাপারে তোমরা কখনোই কোনো প্রকার সন্দেহের শিকার হয়ো না।
(2:148)
وَ لِكُلٍّ وِّجْهَةٌ هُوَ مُوَلِّیْهَا فَاسْتَبِقُوا الْخَیْرٰتِﳳ اَیْنَ مَا تَكُوْنُوْا یَاْتِ بِكُمُ اللّٰهُ جَمِیْعًاؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ
শব্দার্থ: وَلِكُلٍّ = এবংপ্রত্যেকেরজন্য, وِجْهَةٌ = একটিদিক(আছে), هُوَ = সে, مُوَلِّيهَا = মুখফিরায়তারদিকে, فَاسْتَبِقُوا = তোমরাতাইপ্রতিযোগিতাকরো, الْخَيْرَاتِ = কল্যাণের, أَيْنَ = যেখানেই, مَا = (কি), تَكُونُوا = তোমরাথাক, يَأْتِ = আসবেন, بِكُمُ = তোমাদেরকে, اللَّهُ = আল্লাহ্, جَمِيعًا = সকলকেই(একসাথে), إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ্, عَلَىٰ = উপর, كُلِّ = সব, شَيْءٍ = কিছুর, قَدِيرٌ = সর্বশক্তিমান,
অনুবাদ: প্রত্যেকের জন্য একটি দিক আছে, সে দিকেই সে ফেরে। কাজেই তোমরা ভালোর দিকে এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাকো না কেন আল্লাহ তোমাদেরকে পেয়ে যাবেন। তাঁর ক্ষমতার বাইরে কিছুই নেই।
(2:149)
وَ مِنْ حَیْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِؕ وَ اِنَّهٗ لَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَؕ وَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
শব্দার্থ: وَمِنْ = এবংথেকেই, حَيْثُ = যেখান, خَرَجْتَ = তুমিবেরহও, فَوَلِّ = তখনফিরাও, وَجْهَكَ = তোমারমুখ, شَطْرَ = দিকে, الْمَسْجِدِ = মাসজিদে, الْحَرَامِ = হারামের, وَإِنَّهُ = এবংতানিশ্চয়ই, لَلْحَقُّ = অবশ্যইসত্য, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّكَ = তোমাররবের, وَمَا = এবংনন, اللَّهُ = আল্লাহ্, بِغَافِلٍ = উদাসীন, عَمَّا = তাহতেযা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকরেছ,
অনুবাদ: তুমি যেখান থেকেই যাওনা কেন, সেখানেই তোমার মুখ (নামাযের সময়) মসজিদে হারামের দিকে ফেরাও। কারণ এটা তোমার রবের সম্পূর্ণ সত্য ভিত্তিক ফায়সালা। আল্লাহ তোমাদের কর্মকান্ডের ব্যাপারে বেখবর নন।
(2:150)
وَ مِنْ حَیْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِؕ وَ حَیْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ شَطْرَهٗۙ لِئَلَّا یَكُوْنَ لِلنَّاسِ عَلَیْكُمْ حُجَّةٌۗۙ اِلَّا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا مِنْهُمْۗ فَلَا تَخْشَوْهُمْ وَ اخْشَوْنِیْۗ وَ لِاُتِمَّ نِعْمَتِیْ عَلَیْكُمْ وَ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَۙۛ
শব্দার্থ: وَمِنْ = এবংহতেই, حَيْثُ = যেখান, خَرَجْتَ = তুমিবেরহও, فَوَلِّ = তুমিতখনফিরাও, وَجْهَكَ = তোমারমুখ, شَطْرَ = দিকে, الْمَسْجِدِ = মসজিদে, الْحَرَامِ = হারামের, وَحَيْثُ = এবংযেখানেই, مَا = (কি), كُنْتُمْ = তোমরাথাক, فَوَلُّوا = তোমরাতখনফিরাবে, وُجُوهَكُمْ = তোমাদেরমুখ, شَطْرَهُ = তারদিকে, لِئَلَّا = নাযেন, يَكُونَ = হয়, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্য, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরবিরুদ্ধে, حُجَّةٌ = কোনপ্রমাণ, إِلَّا = তবে, الَّذِينَ = যারা, ظَلَمُوا = সীমালঙ্ঘনকরেছে, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যেথেকে(তাদেরকথাভিন্ন), فَلَا = নাতাই, تَخْشَوْهُمْ = ভয়করতাদেরকে, وَاخْشَوْنِي = বরংতোমরাআমাকেইভয়করো, وَلِأُتِمَّ = এবংআমিপূর্ণকরিযেন, نِعْمَتِي = আমারঅনুগ্রহ, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَلَعَلَّكُمْ = ওআশাকরাযায়তোমরা, تَهْتَدُونَ = সঠিকপথেচলবে,
অনুবাদ: আর যেখান থেকেই তুমি চল না কেন তোমার মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফেরাও এবং যেখানেই তোমরা থাকো না কেন সে দিকেই মুখ করে নামায পড়ো, যাতে লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ খাড়া করতে না পারে- তবে যারা যালেম, তাদের মুখ কোন অবস্থায়ই বন্ধ হবে না। কাজেই তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় করো – আর এ জন্য যে, আমি তোমাদের ওপর নিজের অনুগ্রহ পূর্ণ করে দেবো এবং এই আশায় যে, আমার এই নির্দেশের আনুগত্যের ফলে তোমরা ঠিক তেমনিভাবে সাফল্যের পথ লাভ করবে
(2:151)
كَمَاۤ اَرْسَلْنَا فِیْكُمْ رَسُوْلًا مِّنْكُمْ یَتْلُوْا عَلَیْكُمْ اٰیٰتِنَا وَ یُزَكِّیْكُمْ وَ یُعَلِّمُكُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ یُعَلِّمُكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَؕۛ
শব্দার্থ: كَمَا = যেমন, أَرْسَلْنَا = আমরাপ্রেরণকরেছি, فِيكُمْ = তোমাদেরমধ্যে, رَسُولًا = একজনরাসূল, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যহতে, يَتْلُو = সেতিলাওয়াতকরে, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরকাছে, آيَاتِنَا = আমাদেরআয়াতসমূহ, وَيُزَكِّيكُمْ = ওতোমাদেরকেপরিশুদ্ধকরে, وَيُعَلِّمُكُمُ = এবংতোমাদেরকেশিক্ষাদেয়, الْكِتَابَ = কিতাব, وَالْحِكْمَةَ = ওপ্রজ্ঞা, وَيُعَلِّمُكُمْ = আরতোমাদেরকেশিক্ষাদেয়, مَا = যা, لَمْ = না, تَكُونُوا = তোমরাথাক, تَعْلَمُونَ = জানতে,
অনুবাদ: যেমনিভাবে (তোমরা এই জিনিসটি থেকেও সাফল্য লাভের সৌভাগ্য অর্জন করেছো যে, ) আমি তোমাদের মধ্যে স্বয়ং তোমাদের থেকেই একজন রসূল পাঠিয়েছি, যে তোমাদেরকে আমার আয়াত পড়ে শুনায়, তোমাদের জীবন পরিশুদ্ধ করে সুসজ্জিত করে, তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয় এবং এমন সব কথা তোমাদের শেখায়, যা তোমরা জানতে না।
(2:152)
فَاذْكُرُوْنِیْۤ اَذْكُرْكُمْ وَ اشْكُرُوْا لِیْ وَ لَا تَكْفُرُوْنِ۠
শব্দার্থ: فَاذْكُرُونِي = সুতরাংস্মরণকরোতোমরাআমাকে, أَذْكُرْكُمْ = আমিস্মরণকরবতোমাদেরকে, وَاشْكُرُوا = এবংকৃতজ্ঞতাপ্রকাশকরো, لِي = আমারপ্রতি, وَلَا = এবংনা, تَكْفُرُونِ = তোমরাঅকৃতজ্ঞহয়ো,
অনুবাদ: কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ রাখো, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ রাখবো আর আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং আমার নিয়ামত অস্বীকার করো না।
(2:153)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اسْتَعِیْنُوْا بِالصَّبْرِ وَ الصَّلٰوةِؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِیْنَ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, اسْتَعِينُوا = তোমরাসাহায্যচাও, بِالصَّبْرِ = ধৈর্য্যদ্বারা, وَالصَّلَاةِ = ওসলাতের(মাধ্যমে), إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ(আছেন), مَعَ = সাথে, الصَّابِرِينَ = ধৈর্যশীলদের,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! সবর ও নামাযের দ্বারা সাহায্য গ্রহণ করো, আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন।
(2:154)
وَ لَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ یُّقْتَلُ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ اَمْوَاتٌؕ بَلْ اَحْیَآءٌ وَّ لٰكِنْ لَّا تَشْعُرُوْنَ
শব্দার্থ: وَلَا = এবংনা, تَقُولُوا = তোমরাবলো, لِمَنْ = (তাদের)যারা, يُقْتَلُ = নিহতহয়, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথে, اللَّهِ = আল্লাহর, أَمْوَاتٌ = মৃত, بَلْ = বরং, أَحْيَاءٌ = তারাজীবিত, وَلَٰكِنْ = কিন্তু, لَا = না, تَشْعُرُونَ = তোমরাঅনুভবকর,
অনুবাদ: আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না। এই ধরনের লোকেরা আসলে জীবিত। কিন্তু তাদের জীবন সম্পর্কে তোমাদের কোন চেতনা থাকে না।
(2:155)
وَ لَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَ الْجُوْ عِ وَ نَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَ الْاَنْفُسِ وَ الثَّمَرٰتِؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَۙ
শব্দার্থ: وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ = এবংতোমাদেরঅবশ্যইপরীক্ষাকরবআমরা, بِشَيْءٍ = কিছুজিনিসদিয়ে, مِنَ = যেমন, الْخَوْفِ = ভয়, وَالْجُوعِ = ওক্ষুধা, وَنَقْصٍ = ওক্ষয়ক্ষতি, مِنَ = কিছু, الْأَمْوَالِ = ধনসম্পদের, وَالْأَنْفُسِ = ওজীবনের, وَالثَّمَرَاتِ = ওফলফসলাদির, وَبَشِّرِ = এবংসুসংবাদদাও, الصَّابِرِينَ = (ঐসব)ধৈর্যশীলদের,
অনুবাদ: আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো। এ অবস্থায় যারা সবর করে
(2:156)
الَّذِیْنَ اِذَاۤ اَصَابَتْهُمْ مُّصِیْبَةٌۙ قَالُوْۤا اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَؕ
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, إِذَا = যখন, أَصَابَتْهُمْ = তাদেরউপরএসেপড়ে, مُصِيبَةٌ = কোনোবিপদ, قَالُوا = (তখন)তারাবলে, إِنَّا = নিশ্চয়ইআমরা, لِلَّهِ = আল্লাহরইজন্যে, وَإِنَّا = ওনিশ্চয়ইআমরা, إِلَيْهِ = তাঁরইদিকে, رَاجِعُونَ = প্রত্যাবর্তনকারী,
অনুবাদ: এবং যখনই কোন বিপদ আসে বলেঃ “আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে, — তাদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও।
(2:157)
أُولَٰئِكَ عَلَیْهِمْ صَلَوٰتٌ مِّنْ رَّبِّهِمْ وَ رَحْمَةٌ وَ أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُوْنَ
শব্দার্থ: أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, عَلَيْهِمْ = তাদেরউপর(রয়েছে), صَلَوَاتٌ = বিপুলঅনুগ্রহ, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, وَرَحْمَةٌ = এবংদয়া, وَأُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, هُمُ = তারাই, الْمُهْتَدُونَ = সঠিকপথপ্রাপ্ত,
অনুবাদ: তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের ওপর বিপুল অনুগ্রহ বর্ষিত হবে, তাঁর রহমত তাদেরকে ছায়াদান করবে এবং এই ধরণের লোকরাই হয় সত্যানুসারী।
(2:158)
اِنَّ الصَّفَا وَ الْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ اللّٰهِۚ فَمَنْ حَجَّ الْبَیْتَ اَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِ اَنْ یَّطَّوَّفَ بِهِمَاؕ وَ مَنْ تَطَوَّعَ خَیْرًاۙ فَاِنَّ اللّٰهَ شَاكِرٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الصَّفَا = সাফা, وَالْمَرْوَةَ = ওমারওয়া, مِنْ = অন্তর্ভুক্ত, شَعَائِرِ = নিদর্শনসমূহের, اللَّهِ = আল্লাহর, فَمَنْ = সুতরাংযে, حَجَّ = হজ্জকরবে, الْبَيْتَ = (কাবা)ঘরের, أَوِ = বা, اعْتَمَرَ = ওমরাকরবে, فَلَا = সেক্ষেত্রেনেই, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْهِ = তারজন্য, أَنْ = যে, يَطَّوَّفَ = সেপ্রদক্ষিণকরবে, بِهِمَا = তারদুইয়ের(মাঝে), وَمَنْ = আরযেকেউ, تَطَوَّعَ = স্বেচ্ছায়করে, خَيْرًا = কোনোকল্যাণ, فَإِنَّ = নিশ্চয়ইতবে, اللَّهَ = আল্লাহ, شَاكِرٌ = (তার)মূল্যদানকারী, عَلِيمٌ = খুবঅবহিত,
অনুবাদ: নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিশানীসমূহের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহ্র হজ্ব বা উমরাহ করে তার জন্য ঐ দুই পাহাড়ের মাঝখানে ‘সাঈ’ করায় কোন গোনাহ নেই। আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সাগ্রহে কোন সৎ ও কল্যাণের কাজ করে, আল্লাহ্ তা জানেন এবং তার যথার্থ মর্যাদা ও মূল্য দান করবেন।
(2:159)
اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْتُمُوْنَ مَاۤ اَنْزَلْنَا مِنَ الْبَیِّنٰتِ وَ الْهُدٰى مِنْۢ بَعْدِ مَا بَیَّنّٰهُ لِلنَّاسِ فِی الْكِتٰبِۙ أُولَٰئِكَ یَلْعَنُهُمُ اللّٰهُ وَ یَلْعَنُهُمُ اللّٰعِنُوْنَۙ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, يَكْتُمُونَ = গোপনকরে, مَا = যা, أَنْزَلْنَا = আমরাঅবতীর্ণকরেছি, مِنَ = থেকে, الْبَيِّنَاتِ = স্পষ্টনিদর্শনাদি, وَالْهُدَىٰ = ওপথনির্দেশ, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = এরপরও, مَا = যা, بَيَّنَّاهُ = তাস্পষ্টবর্ণনাকরেছিআমরা, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্যে, فِي = মধ্যে, الْكِتَابِ = কিতাবের, أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, يَلْعَنُهُمُ = তাদেরকেঅভিশাপদেন, اللَّهُ = আল্লাহ, وَيَلْعَنُهُمُ = ওতাদেরকেঅভিশাপদেয়, اللَّاعِنُونَ = অভিশাপকারীরা,
অনুবাদ: যারা আমার অবতীর্ণ উজ্জ্বল শিক্ষাবলী ও বিধানসমূহ গোপন করে, অথচ সমগ্র মানবতাকে পথের সন্ধান দেবার জন্য আমি সেগুলো আমার কিতাবে বর্ণনা করে দিয়েছি, নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ তাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করেন এবং সকল অভিশাপ বর্ষণকারীরাও তাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করে।
(2:160)
اِلَّا الَّذِیْنَ تَابُوْا وَ اَصْلَحُوْا وَ بَیَّنُوْا فَأُولَٰئِكَ اَتُوْبُ عَلَیْهِمْۚ وَ اَنَا التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ
শব্দার্থ: إِلَّا = ছাড়া, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, تَابُوا = তওবাকরেছে, وَأَصْلَحُوا = ওসংশোধিতহয়েছে, وَبَيَّنُوا = এবং(স্পষ্টভাবেসত্য)বর্ণনাকরেছে, فَأُولَٰئِكَ = অতঃপরঐসবলোক, أَتُوبُ = আমিক্ষমাকরব, عَلَيْهِمْ = তাদেরউপর, وَأَنَا = এবংআমি, التَّوَّابُ = বড়ক্ষমাশীল, الرَّحِيمُ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: তবে যারা এই নীতি পরিহার করে, নিজেদের কর্মনীতি সংশোধন করে নেয় এবং যা কিছু গোপন করে যাচ্ছিল সেগুলো বিবৃত করতে থাকে, তাদেরকে আমি ক্ষমা করে দেবো আর আসলে আমি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(2:161)
اِنَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ مَاتُوْا وَ هُمْ كُفَّارٌ أُولَٰئِكَ عَلَیْهِمْ لَعْنَةُ اللّٰهِ وَ الْمَلٰٓئِكَةِ وَ النَّاسِ اَجْمَعِیْنَۙ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরেছে, وَمَاتُوا = ওমরেগেছে, وَهُمْ = এঅবস্থায়যেতারা, كُفَّارٌ = কাফির(ছিল), أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, عَلَيْهِمْ = তাদেরউপর, لَعْنَةُ = অভিশাপ, اللَّهِ = আল্লাহর, وَالْمَلَائِكَةِ = ওফেরেশতাদের, وَالنَّاسِ = ওমানুষের, أَجْمَعِينَ = সকলেরই,
অনুবাদ: যারা কুফরীর নীতি অবলম্বন করেছে এবং কুফরীর অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের ওপর আল্লাহর ফেরেশতাদের ও সমগ্র মানবতার লানত।
(2:162)
خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۚ لَا یُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَ لَا هُمْ یُنْظَرُوْنَ
শব্দার্থ: خَالِدِينَ = তারাচিরস্থায়ীহবে, فِيهَا = তারমধ্যে, لَا = না, يُخَفَّفُ = কমানোহবে, عَنْهُمُ = তাদেরথেকে, الْعَذَابُ = শাস্তি, وَلَا = আরনা, هُمْ = তাদের, يُنْظَرُونَ = অবকাশদেয়াহবে,
অনুবাদ: এই লানত বিদ্ধ অবস্থায় তারা চিরকাল অবস্থান করবে, তাদের শাস্তি হ্রাস পাবে না এবং তাদের অন্য কোন অবকাশও দেয়া হবে না।
(2:163)
وَ اِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِیْمُ۠
শব্দার্থ: وَإِلَٰهُكُمْ = এবংতোমাদেরইলাহ, إِلَٰهٌ = ইলাহ, وَاحِدٌ = একই, لَا = নেই, إِلَٰهَ = কোনোইলাহ, إِلَّا = ছাড়া, هُوَ = তিনি, الرَّحْمَٰنُ = করুণাময়, الرَّحِيمُ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: তোমাদের আল্লাহ এক ও একক। সেই দয়াবান ও করুণাময় আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ্ নেই।
(2:164)
اِنَّ فِیْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ اخْتِلَافِ الَّیْلِ وَ النَّهَارِ وَ الْفُلْكِ الَّتِیْ تَجْرِیْ فِی الْبَحْرِ بِمَا یَنْفَعُ النَّاسَ وَ مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ مِنَ السَّمَآءِ مِنْ مَّآءٍ فَاَحْیَا بِهِ الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَ بَثَّ فِیْهَا مِنْ كُلِّ دَآبَّةٍ ۪ وَّ تَصْرِیْفِ الرِّیٰحِ وَ السَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَیْنَ السَّمَآءِ وَ الْاَرْضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوْمٍ یَّعْقِلُوْنَ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, فِي = মধ্যে(আছে), خَلْقِ = সৃষ্টির, السَّمَاوَاتِ = আকাশমন্ডলীর, وَالْأَرْضِ = ওপৃথিবীর, وَاخْتِلَافِ = ওপরিবর্তনের, اللَّيْلِ = রাতের, وَالنَّهَارِ = ওদিনের, وَالْفُلْكِ = ওনৌযানসমূহে, الَّتِي = যা, تَجْرِي = চলে, فِي = মধ্যে, الْبَحْرِ = সাগরের, بِمَا = তানিয়ে, يَنْفَعُ = উপকারদেয়, النَّاسَ = মানুষের, وَمَا = এবংযাকিছু, أَنْزَلَ = বর্ষণকরে, اللَّهُ = আল্লাহ, مِنَ = থেকে, السَّمَاءِ = আকাশ, مِنْ = থেকে, مَاءٍ = পানি, فَأَحْيَا = অতপরজীবিতকরেন, بِهِ = তাদিয়ে, الْأَرْضَ = জমিনকে, بَعْدَ = পর, مَوْتِهَا = তারমৃত্যুর, وَبَثَّ = ওবিস্তারঘটান, فِيهَا = তারমধ্যে, مِنْ = থেকে, كُلِّ = সব(রকমের), دَابَّةٍ = প্রাণী, وَتَصْرِيفِ = ওপ্রবাহে, الرِّيَاحِ = বাতাসের, وَالسَّحَابِ = ওমেঘমালার, الْمُسَخَّرِ = (যা)নিয়ন্ত্রিত, بَيْنَ = মাঝে, السَّمَاءِ = আকাশের, وَالْأَرْضِ = ওপৃথিবীর, لَآيَاتٍ = অবশ্যইনিদর্শনাদি, لِقَوْمٍ = সম্প্রদায়েরজন্যে(রয়েছে), يَعْقِلُونَ = (যারা)জ্ঞানরাখে,
অনুবাদ: (এই সত্যটি চিহ্নিত করার জন্য যদি কোন নিদর্শন বা আলামতের প্রয়োজন হয় তাহলে) যারা বুদ্ধি-বিবেক ব্যবহার করে তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর ঘটনাকৃতিতে, রাত্রদিনের অনবরত আবর্তনে, মানুষের প্রয়োজনীয় ও উপকারী সামগ্রী নিয়ে সাগর দরিয়ার চলমান জলযানসমূহে, বৃষ্টিধারার মধ্যে, যা আল্লাহ বর্ষণ করেন ওপর থেকে তারপর তার মাধ্যমে মৃত ভূমিকে জীবন দান করেন এবং নিজের এই ব্যবস্থাপনার বদৌলতে পৃথিবীতে সব রকমের প্রাণী ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেন, আর বায়ু প্রবাহে এবং আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালায় অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে।
(2:165)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّتَّخِذُ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اَنْدَادًا یُّحِبُّوْنَهُمْ كَحُبِّ اللّٰهِؕ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰهِؕ وَ لَوْ یَرَى الَّذِیْنَ ظَلَمُوْۤا اِذْ یَرَوْنَ الْعَذَابَۙ اَنَّ الْقُوَّةَ لِلّٰهِ جَمِیْعًاۙ وَّ اَنَّ اللّٰهَ شَدِیْدُ الْعَذَابِ
শব্দার্থ: وَمِنَ = কিন্তুমধ্যে, النَّاسِ = মানুষের(এমনওআছে), مَنْ = যারা, يَتَّخِذُ = গ্রহণকরে, مِنْ = থেকে(দিয়ে), دُونِ = বাদ, اللَّهِ = আল্লাহকে, أَنْدَادًا = (অন্যকে)সমতুল্যরূপে, يُحِبُّونَهُمْ = তাদেরকেতারাভালবাসে, كَحُبِّ = মতোভালবাসার, اللَّهِ = আল্লাহর(প্রতিহওয়াউচিৎ), وَالَّذِينَ = অথচযারা, آمَنُوا = ঈমানআনে(তাদেররয়েছে), أَشَدُّ = সবচেয়েদৃঢ়, حُبًّا = ভালবাসা, لِلَّهِ = আল্লাহরজন্যে, وَلَوْ = এবংযদি(আজ), يَرَى = (ভেবে)দেখত, الَّذِينَ = যারা, ظَلَمُوا = অবিচারকরেছে, إِذْ = যখন, يَرَوْنَ = তারাদেখবে, الْعَذَابَ = শাস্তি(এবংঅনুভবকরবে), أَنَّ = যে, الْقُوَّةَ = শক্তি, لِلَّهِ = আল্লাহরইজন্য, جَمِيعًا = সবটুকুই, وَأَنَّ = এবংএওযে, اللَّهَ = আল্লাহ, شَدِيدُ = কঠোর, الْعَذَابِ = শাস্তিদানে,
অনুবাদ: কিন্তু (আল্লাহ্র একত্বের প্রমাণ নির্দেশক এসব সুস্পষ্ট নিদর্শন থাকা সত্ত্বেও) কিছু লোক আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে তাঁর সমকক্ষ ও প্রতিপক্ষ দাঁড় করায় এবং তাদেরকে এমন ভালোবাসে যেমন আল্লাহকে ভালোবাসা উচিত – অথচ ঈমানদাররা সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে ভালোবাসে। হায়! আযাব সামনে দেখে এই জালেমরা যা কিছু অনুধাবন করার তা যদি আজই অনুধাবন করতো যে, সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর অধীন এবং শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ অত্যন্ত কঠোর।
(2:166)
اِذْ تَبَرَّاَ الَّذِیْنَ اتُّبِعُوْا مِنَ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْا وَ رَاَوُا الْعَذَابَ وَ تَقَطَّعَتْ بِهِمُ الْاَسْبَابُ
শব্দার্থ: إِذْ = যখন, تَبَرَّأَ = সম্পর্কছিন্নকরবে, الَّذِينَ = (তারা)যাদের, اتُّبِعُوا = অনুসরণকরাহয়েছিল(অর্থাৎনেতারা), مِنَ = হতে, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, اتَّبَعُوا = অনুসরণকরত(অর্থাৎঅনুসারীদের), وَرَأَوُا = ওদেখবে, الْعَذَابَ = শাস্তি, وَتَقَطَّعَتْ = বিচ্ছিন্নহবে, بِهِمُ = তাদেরসাথে, الْأَسْبَابُ = সকলউপায়উপকরণ(সম্পর্ক),
অনুবাদ: যখন তিনি শাস্তি দেবেন তখন এই সমস্ত নেতা ও প্রধান ব্যক্তিরা, দুনিয়ায় যাদের অনুসরণ করা হতো, তাদের অনুগামীদের সাথে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করতে থাকবে। কিন্তু শাস্তি তারা পাবেই এবং তাদের সমস্ত উপায়- উপকরণের ধারা ছিন্ন হয়ে যাবে।
(2:167)
وَ قَالَ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْا لَوْ اَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّاَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّءُوْا مِنَّاؕ كَذٰلِكَ یُرِیْهِمُ اللّٰهُ اَعْمَالَهُمْ حَسَرٰتٍ عَلَیْهِمْؕ وَ مَا هُمْ بِخٰرِجِیْنَ مِنَ النَّارِ۠
শব্দার্থ: وَقَالَ = এবংবলবে, الَّذِينَ = যারা, اتَّبَعُوا = অনুসরণকরেছিল, لَوْ = যদি, أَنَّ = নিশ্চিত(এমনহত), لَنَا = আমাদেরজন্যে, كَرَّةً = একবার(ফিরারসুযোগ), فَنَتَبَرَّأَ = আমরাওতবেসম্পর্কছিন্নকরতাম, مِنْهُمْ = তাদেরথেকে, كَمَا = যেমন(আজ), تَبَرَّءُوا = সম্পর্কছিন্নকরেছেতারা, مِنَّا = আমাদেরথেকে, كَذَٰلِكَ = এভাবে, يُرِيهِمُ = তাদেরদেখাবেন, اللَّهُ = আল্লাহ, أَعْمَالَهُمْ = তাদেরকাজকর্মগুলোকে, حَسَرَاتٍ = পরিতাপরূপে, عَلَيْهِمْ = তাদেরকাছে, وَمَا = এবংনা, هُمْ = তারা, بِخَارِجِينَ = বহির্গমনকারী, مِنَ = হতে, النَّارِ = (দোযখের)আগুন,
অনুবাদ: আর যেসব লোক দুনিয়ায় তাদের অনুসারী ছিল তারা বলতে থাকবে, হায়! যদি আমাদের আর একবার সুযোগ দেয়া হতো, তাহলে আজ এরা যেমন আমাদের সাথে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করছে তেমনি আমরাও এদের সাথে সম্পর্কহীন হয়ে দেখিয়ে দিতাম। এভাবেই দুনিয়ায় এরা যে সমস্ত কাজ করছে সেগুলো আল্লাহ তাদের সামনে এমনভাবে উপস্থিত করবেন যাতে তারা কেবল দুঃখ ও আক্ষেপই করতে থাকবে কিন্তু জাহান্নামের আগুন থেকে বের হবার কোন পথই খুঁজে পাবে না।
(2:168)
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ كُلُوْا مِمَّا فِی الْاَرْضِ حَلٰلًا طَیِّبًا ﳲ وَّ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِؕ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, النَّاسُ = মানবজাতি, كُلُوا = তোমরাখাও, مِمَّا = তাহতেযা, فِي = মধ্যে(আছে), الْأَرْضِ = পৃথিবীর, حَلَالًا = হালাল, طَيِّبًا = পবিত্র, وَلَا = এবংনা, تَتَّبِعُوا = তোমরাঅনুসরণকরো, خُطُوَاتِ = পদাঙ্কগুলোর, الشَّيْطَانِ = শয়তানের, إِنَّهُ = সেনিশ্চয়ই, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, عَدُوٌّ = শত্রু, مُبِينٌ = প্রকাশ্য,
অনুবাদ: হে মানব জাতি! পৃথিবীতে যে সমস্ত হালাল ও পাক জিনিস রয়েছে সেগুলো খাও এবং শয়তানের দেখানো পথে চলো না। সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
(2:169)
اِنَّمَا یَاْمُرُكُمْ بِالسُّوْٓءِ وَ الْفَحْشَآءِ وَ اَنْ تَقُوْلُوْا عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: إِنَّمَا = মূলতঃ, يَأْمُرُكُمْ = তোমাদেরকেনির্দেশদেয়সে, بِالسُّوءِ = পাপকাজেরপ্রতি, وَالْفَحْشَاءِ = ওঅশ্লীল, وَأَنْ = এবংযেন, تَقُولُوا = তোমরাবল(এমনকথা), عَلَى = সম্বন্ধে, اللَّهِ = আল্লাহর, مَا = যা, لَا = না, تَعْلَمُونَ = তোমরাজান,
অনুবাদ: সে তোমাদের অসৎকাজ ও অনাচারের নির্দেশ দেয় আর একথাও শেখায় যে, তোমরা আল্লাহর নামে এমন সব কথা বলো যেগুলো আল্লাহ বলেছেন বলে তোমাদের জানা নেই।
(2:170)
وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمُ اتَّبِعُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ قَالُوْا بَلْ نَتَّبِـعُ مَاۤ اَلْفَیْنَا عَلَیْهِ اٰبَآءَنَاؕ اَوَ لَوْ كَانَ اٰبَآؤُهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ شَیْــٴًـا وَّ لَا یَهْتَدُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, قِيلَ = বলাহয়, لَهُمُ = তাদের, اتَّبِعُوا = তোমরাঅনুসরণকরো, مَا = যা, أَنْزَلَ = অবতীর্ণকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, قَالُوا = তারাবলে, بَلْ = বরং, نَتَّبِعُ = আমরাঅনুসরণকরব, مَا = তা, أَلْفَيْنَا = আমরাপেয়েছি, عَلَيْهِ = যারউপর, آبَاءَنَا = আমাদেরবাপ-দাদাদেরকে, أَوَلَوْ = যদিওকি, كَانَ = ছিল, آبَاؤُهُمْ = বাপদাদারাতাদের(এমনযে), لَا = না, يَعْقِلُونَ = তারাবুঝতো, شَيْئًا = কিছুই, وَلَا = এবংনা, يَهْتَدُونَ = তারাসৎপথেচলত,
অনুবাদ: তাদের যখন বলা হয়, আল্লাহ যে বিধান নাযিল করেছেন তা মেনে চলো, জবাবে তারা বলে, আমাদের বাপ-দাদাদের যে পথের অনুসারী পেয়েছি আমরা তো সে পথে চলবো। আচ্ছা, তাদের বাপ-দাদারা যদি একটুও বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ না করে থেকে থাকে এবং সত্য-সঠিক পথের সন্ধান না পেয়ে থাকে তাহলেও কি তারা তাদের অনুসরণ করে যেতে থাকবে?
(2:171)
وَ مَثَلُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا كَمَثَلِ الَّذِیْ یَنْعِقُ بِمَا لَا یَسْمَعُ اِلَّا دُعَآءً وَّ نِدَآءًؕ صُمٌّۢ بُكْمٌ عُمْیٌ فَهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ
শব্দার্থ: وَمَثَلُ = এবংউপমা, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, كَفَرُوا = অস্বীকারকরেছে, كَمَثَلِ = এরূপ, الَّذِي = (একরাখাল)যে, يَنْعِقُ = (চিৎকারকরে)ডাকে, بِمَا = ঐবিষয়যা, لَا = না, يَسْمَعُ = শুনে(তারপশু), إِلَّا = এছাড়া, دُعَاءً = হাঁকডাক, وَنِدَاءً = ওআওয়াজ, صُمٌّ = বধির, بُكْمٌ = বোবা, عُمْيٌ = অন্ধ, فَهُمْ = তারাতাই(কোনোকথাই), لَا = না, يَعْقِلُونَ = বুঝতেপারে,
অনুবাদ: আল্লাহ্ প্রদর্শিত পথে চলতে যারা অস্বীকার করেছে তাদের অবস্থা ঠিক তেমনি যেমন রাখাল তার পশুদের ডাকতে থাকে কিন্তু হাক ডাকের আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই তাদের কানে পৌঁছে না। তারা কালা, বোবা ও অন্ধ, তাই কিছুই বুঝতে পারে না।
(2:172)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُلُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقْنٰكُمْ وَ اشْكُرُوْا لِلّٰهِ اِنْ كُنْتُمْ اِیَّاهُ تَعْبُدُوْنَ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, كُلُوا = তোমরাখাও, مِنْ = হতে, طَيِّبَاتِ = পবিত্রজিনিসগুলো, مَا = যা, رَزَقْنَاكُمْ = তোমাদেরজীবিকাদিয়েছিআমরা, وَاشْكُرُوا = ওতোমরাকৃতজ্ঞতাপ্রকাশকরো, لِلَّهِ = আল্লাহরকাছে, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহও(এমনযে), إِيَّاهُ = শুধুতাকেই, تَعْبُدُونَ = তোমরাইবাদাতকর,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহর ইবাদাতকারী হয়ে থাকো, তাহলে যে সমস্ত পাক-পবিত্র জিনিস আমি তোমাদের দিয়েছি সেগুলো নিশ্চিন্তে খাও এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।
(2:173)
اِنَّمَا حَرَّمَ عَلَیْكُمُ الْمَیْتَةَ وَ الدَّمَ وَ لَحْمَ الْخِنْزِیْرِ وَ مَاۤ اُهِلَّ بِهٖ لِغَیْرِ اللّٰهِۚ فَمَنِ اضْطُرَّ غَیْرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
শব্দার্থ: إِنَّمَا = মূলতঃ, حَرَّمَ = (হারাম)করেছেন, عَلَيْكُمُ = তোমাদেরউপর, الْمَيْتَةَ = মৃত(জন্তু), وَالدَّمَ = ও(প্রবাহিত)রক্ত, وَلَحْمَ = মাংস, الْخِنْزِيرِ = শুকরের, وَمَا = এবংতা, أُهِلَّ = নামনেয়াহয়েছে, بِهِ = যারউপর, لِغَيْرِ = ছাড়া, اللَّهِ = আল্লাহ(অন্যকারো), فَمَنِ = যেতবে, اضْطُرَّ = নিরুপায়হয়েযায়, غَيْرَ = না, بَاغٍ = বিদ্রোহী(হয়ে), وَلَا = আরনা, عَادٍ = সীমালংঘনকারী, فَلَا = নেইতবে, إِثْمَ = কোনোপাপ, عَلَيْهِ = তারউপর, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, غَفُورٌ = বড়ক্ষমাশীল, رَحِيمٌ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: আল্লাহ্র পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর যদি কোন নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকে তাহলে তা হচ্ছে এই যে, মৃতদেহ খেয়ো না, রক্ত ও শূকরের গোশত থেকে দূরে থাকো। আর এমন কোন জিনিস খেয়ো না যার ওপর আল্লাহ ছাড়া আর কারোর নাম নেয়া হয়েছে। তবে যে ব্যক্তি অক্ষমতার মধ্যে অবস্থান করে এবং এ অবস্থায় আইন ভঙ্গ করার কোন প্রেরণা ছাড়াই বা প্রয়োজনের সীমা না পেরিয়ে এর মধ্য থেকে কোনটা খায়, সেজন্য তার কোন গোনাহ হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(2:174)
اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْتُمُوْنَ مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ مِنَ الْكِتٰبِ وَ یَشْتَرُوْنَ بِهٖ ثَمَنًا قَلِیْلًاۙ أُولَٰئِكَ مَا یَاْكُلُوْنَ فِیْ بُطُوْنِهِمْ اِلَّا النَّارَ وَ لَا یُكَلِّمُهُمُ اللّٰهُ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ وَ لَا یُزَكِّیْهِمْۖ ۚ وَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, يَكْتُمُونَ = গোপনকরে, مَا = যা, أَنْزَلَ = অবতীর্ণকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, مِنَ = হতে, الْكِتَابِ = কিতাব, وَيَشْتَرُونَ = ওতারাকিনে(ক্রয়করে), بِهِ = বিনিময়ে, ثَمَنًا = মূল্য(অর্থাৎস্বার্থ), قَلِيلًا = অতিনগণ্য, أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, مَا = না, يَأْكُلُونَ = তারাখায়, فِي = মধ্যে, بُطُونِهِمْ = তাদেরপেটের, إِلَّا = এছাড়া, النَّارَ = আগুন, وَلَا = এবংনা, يُكَلِّمُهُمُ = তাদেরসাথেকথাবলবেন, اللَّهُ = আল্লাহ, يَوْمَ = দিনে, الْقِيَامَةِ = কিয়ামাতের, وَلَا = এবংনা, يُزَكِّيهِمْ = তাদেরকেপরিশুদ্ধকরবেন, وَلَهُمْ = ওতাদেরজন্যে(রয়েছে), عَذَابٌ = শাস্তি, أَلِيمٌ = নিদারুণ,
অনুবাদ: মূলতঃ আল্লাহ তাঁর কিতাবে যে সমস্ত বিধান অবতীর্ণ করেছেন সেগুলো যারা গোপন করে এবং সামান্য পার্থিব স্বার্থের বেদীমূলে সেগুলো বিসর্জন দেয় তারা আসলে আগুন দিয়ে নিজেদের পেট ভর্তি করছে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথাই বলবেন না, তাদের পত্রিতার ঘোষণাও দেবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(2:175)
أُولَٰئِكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰى وَ الْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِۚ فَمَاۤ اَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّارِ
শব্দার্থ: أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, الَّذِينَ = (তারাই)যারা, اشْتَرَوُا = কিনেছে, الضَّلَالَةَ = ভ্রান্তপথ, بِالْهُدَىٰ = সঠিকপথেরপরিবর্তে, وَالْعَذَابَ = এবংশাস্তি, بِالْمَغْفِرَةِ = ক্ষমারপরিবর্তে, فَمَا = অতঃপরকতইনা, أَصْبَرَهُمْ = ধৈর্যশীল, عَلَى = উপর, النَّارِ = আগুনের,
অনুবাদ: এরাই হিদায়াতের বিনিময়ে ভ্রষ্টতা কিনে নিয়েছে এবং ক্ষমার বিনিময়ে কিনেছে শাস্তি। এদের কী অদ্ভুত সাহস দেখো। জাহান্নামের আযাব বরদাস্ত করার জন্য এরা প্রস্তুত হয়ে গেছে।
(2:176)
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ نَزَّلَ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّؕ وَ اِنَّ الَّذِیْنَ اخْتَلَفُوْا فِی الْكِتٰبِ لَفِیْ شِقَاقٍۭ بَعِیْدٍ۠
শব্দার্থ: ذَٰلِكَ = এটা, بِأَنَّ = এজন্যযে, اللَّهَ = আল্লাহ, نَزَّلَ = অবতীর্ণকরেছেন, الْكِتَابَ = কিতাব, بِالْحَقِّ = সত্যসহকারে, وَإِنَّ = এবংনিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, اخْتَلَفُوا = মতভেদকরেছে, فِي = মধ্যে, الْكِتَابِ = কিতাবের, لَفِي = অবশ্যইমধ্যে(আছে), شِقَاقٍ = বিশুদ্ধতার, بَعِيدٍ = (প্রকৃতসত্যহতে)বহুদূরে,
অনুবাদ: এসব কিছুই ঘটার কারণ হচ্ছে এই যে, আল্লাহ তো যথার্থ সত্য অনুযায়ী কিতাব নাযিল করেছিলেন কিন্তু যারা কিতাবে মতবিরোধ উদ্ভাবন করেছে তারা নিজেদের বিরোধের ক্ষেত্রে সত্য থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে।
(2:177)
لَیْسَ الْبِرَّ اَنْ تُوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَ الْمَغْرِبِ وَ لٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ الْمَلٰٓئِكَةِ وَ الْكِتٰبِ وَ النَّبِیّٖنَۚ وَ اٰتَى الْمَالَ عَلٰى حُبِّهٖ ذَوِی الْقُرْبٰى وَ الْیَتٰمٰى وَ الْمَسٰكِیْنَ وَ ابْنَ السَّبِیْلِۙ وَ السَّآئِلِیْنَ وَ فِی الرِّقَابِۚ وَ اَقَامَ الصَّلٰوةَ وَ اٰتَى الزَّكٰوةَۚ وَ الْمُوْفُوْنَ بِعَهْدِهِمْ اِذَا عٰهَدُوْاۚ وَ الصّٰبِرِیْنَ فِی الْبَاْسَآءِ وَ الضَّرَّآءِ وَ حِیْنَ الْبَاْسِؕ أُولَٰئِكَ الَّذِیْنَ صَدَقُوْاؕ وَ أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُتَّقُوْنَ
শব্দার্থ: لَيْسَ = নেই, الْبِرَّ = পূণ্য, أَنْ = যে, تُوَلُّوا = তোমরাওফেরাবে, وُجُوهَكُمْ = তোমাদেরমুখ, قِبَلَ = দিকে, الْمَشْرِقِ = পূর্ব, وَالْمَغْرِبِ = অথবাপশ্চিমে, وَلَٰكِنَّ = কিন্তু, الْبِرَّ = পূণ্য(হল), مَنْ = যেকেউ, آمَنَ = ঈমানআনল, بِاللَّهِ = আল্লাহরপ্রতি, وَالْيَوْمِ = ওদিনের, الْآخِرِ = আখিরাতের, وَالْمَلَائِكَةِ = ওফেরেশতাদের, وَالْكِتَابِ = ওকিতাবের, وَالنَّبِيِّينَ = ওনবীদের(প্রতি), وَآتَى = এবংদানকরল, الْمَالَ = সম্পদ, عَلَىٰ = কারণে, حُبِّهِ = তাঁরইভালবাসার, ذَوِي = সম্পন্ন, الْقُرْبَىٰ = নিকটআত্নীয়স্বজনদেরকে, وَالْيَتَامَىٰ = ওইয়াতিমদেরকে, وَالْمَسَاكِينَ = ওঅভাবগ্রস্ত, وَابْنَ = (এবংপুত্র), السَّبِيلِ = ওপথিকদেরকে, وَالسَّائِلِينَ = ওসাহায্যপ্রার্থীদেরকে, وَفِي = এবংজন্যে, الرِّقَابِ = দাসমুক্তির, وَأَقَامَ = এবংপ্রতিষ্ঠাকরে, الصَّلَاةَ = সলাত, وَآتَى = ওপ্রদানকরে, الزَّكَاةَ = যাকাত, وَالْمُوفُونَ = এবংপূর্ণকারী, بِعَهْدِهِمْ = তাদেরপ্রতিশ্রুতি, إِذَا = যখন, عَاهَدُوا = প্রতিশ্রুতিকরেতারা, وَالصَّابِرِينَ = এবংধৈর্যধারণকারী, فِي = মধ্যে, الْبَأْسَاءِ = অর্থসংকটের, وَالضَّرَّاءِ = ওরোগব্যাধিতে, وَحِينَ = ওসময়ে, الْبَأْسِ = সংগ্রামসংকটে, أُولَٰئِكَ = তারাঐসবলোক, الَّذِينَ = যারা, صَدَقُوا = সত্যঅবলম্বনকরেছে(ঈমানেরদাবীতে), وَأُولَٰئِكَ = এবংঐসবলোক, هُمُ = তারাই, الْمُتَّقُونَ = মুত্তাকী,
অনুবাদ: তোমাদের মুখ পূর্ব দিকে বা পশ্চিম দিকে ফিরাবার মধ্যে কোন পুণ্য নেই। বরং সৎকাজ হচ্ছে এই যে, মানুষ আল্লাহ, কিয়ামতের দিন, ফেরেশতা আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাব ও নবীদেরকে মনে প্রাণে মেনে নেবে এবং আল্লাহর প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের প্রাণপ্রিয় ধন-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন, এতীম, মিসকীন, মুসাফির, সাহায্য প্রার্থী ও ক্রীতদাসদের মুক্ত করার জন্য ব্যয় করবে। আর নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দান করবে। যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করবে এবং বিপদে-অনটনে ও হক–বাতিলের সংগ্রামে সবর করবে তারাই সৎ ও সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই মুত্তাকী।
(2:178)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَیْكُمُ الْقِصَاصُ فِی الْقَتْلٰىؕ اَلْحُرُّ بِالْحُرِّ وَ الْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَ الْاُنْثٰى بِالْاُنْثٰىؕ فَمَنْ عُفِیَ لَهٗ مِنْ اَخِیْهِ شَیْءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالْمَعْرُوْفِ وَ اَدَآءٌ اِلَیْهِ بِاِحْسَانٍؕ ذٰلِكَ تَخْفِیْفٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ رَحْمَةٌؕ فَمَنِ اعْتَدٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَلَهٗ عَذَابٌ اَلِیْمٌ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, كُتِبَ = ফরজকরাহয়েছে, عَلَيْكُمُ = তোমাদেরউপর, الْقِصَاصُ = কিসাস(বদলা), فِي = ব্যাপারে, الْقَتْلَى = (অন্যায়)হত্যার, الْحُرُّ = স্বাধীনব্যাক্তি, بِالْحُرِّ = স্বাধীনব্যাক্তিরপরিবর্তে, وَالْعَبْدُ = ওক্রীতদাস, بِالْعَبْدِ = ক্রীতদাসেরপরিবর্তে, وَالْأُنْثَىٰ = এবংমহিলা, بِالْأُنْثَىٰ = মহিলারপরিবর্তে, فَمَنْ = অতঃপরতার(ক্ষেত্রে), عُفِيَ = ক্ষমাকরেদেয়াহয়, لَهُ = তারজন্য, مِنْ = পক্ষহতে, أَخِيهِ = তারভাইয়ের, شَيْءٌ = কোনোকিছু, فَاتِّبَاعٌ = তবেঅনুসরণকরা, بِالْمَعْرُوفِ = সদয়ভাবে, وَأَدَاءٌ = এবং(রক্তপণ)আদায়করা, إِلَيْهِ = তারকাছে, بِإِحْسَانٍ = নিষ্ঠারসাথে(অপরিহার্যহবে), ذَٰلِكَ = এটা, تَخْفِيفٌ = লাঘব, مِنْ = পক্ষথেকে, رَبِّكُمْ = তোমাদেররবের, وَرَحْمَةٌ = এবংরহমত(দয়া), فَمَنِ = যেঅতঃপর, اعْتَدَىٰ = সীমালংঘনকরবে, بَعْدَ = পর, ذَٰلِكَ = এর, فَلَهُ = তারজন্যে(আছে), عَذَابٌ = শাস্তি, أَلِيمٌ = অতিকষ্টদায়ক,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য হত্যার ব্যাপারে কিসাসের বিধান লিখে দেয়া হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি হত্যা করে থাকলে তার বদলায় ঐ স্বাধীন ব্যক্তিকেই হত্যা করা হবে, দাস হত্যাকারী হলে ঐ দাসকেই হত্যা করা হবে, আর নারী এই অপরাধ সংঘটিত করলে সেই নারীকে হত্যা করেই এর কিসাস নেয়া হবে। তবে কোন হত্যাকারীর সাথে তার ভাই যদি কিছু কোমল ব্যবহার করতে প্রস্তুত হয়, তাহলে প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী রক্তপণ দানের ব্যবস্থা হওয়া উচিত এবং সততার সঙ্গে রক্তপণ আদায় করা হত্যাকারীর জন্য অপরিহার্য। এটা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে দন্ড হ্রাস ও অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করবে তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(2:179)
وَ لَكُمْ فِی الْقِصَاصِ حَیٰوةٌ یّٰۤاُولِی الْاَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ
শব্দার্থ: وَلَكُمْ = এবংতোমাদেরজন্যে(রয়েছে), فِي = মধ্যে, الْقِصَاصِ = কিসাসের(বদলার), حَيَاةٌ = জীবন, يَاأُولِي = হেলোকেরা, الْأَلْبَابِ = বোধ(সম্পন্ন), لَعَلَّكُمْ = আশাকরাযায়, تَتَّقُونَ = তোমরাসাবধানহয়েচলবে,
অনুবাদ: হে বুদ্ধি – বিবেক সম্পন্ন লোকেরা! তোমাদের জন্য কিসাসের মধ্যে জীবন রয়েছে। আশা করা যায়, তোমরা এই আইনের বিরুদ্ধাচরণ করার ব্যাপারে সতর্ক হবে।
(2:180)
كُتِبَ عَلَیْكُمْ اِذَا حَضَرَ اَحَدَكُمُ الْمَوْتُ اِنْ تَرَكَ خَیْرَا ۖۚ الْوَصِیَّةُ لِلْوَالِدَیْنِ وَ الْاَقْرَبِیْنَ بِالْمَعْرُوْفِ ۚ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِیْنَؕ
শব্দার্থ: كُتِبَ = ফরজকরাহয়েছে, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, إِذَا = যখন, حَضَرَ = উপস্থিতহয়, أَحَدَكُمُ = তোমাদেরকারও, الْمَوْتُ = মৃত্যু, إِنْ = যদি, تَرَكَ = সেছেড়েযায়, خَيْرًا = ধনসম্পত্তি, الْوَصِيَّةُ = ওসীয়তকরা(জোরনির্দেশ), لِلْوَالِدَيْنِ = পিতা-মাতারজন্য, وَالْأَقْرَبِينَ = ওআত্নীয়-স্বজনদের(জন্যে), بِالْمَعْرُوفِ = ন্যায়অনুযায়ী, حَقًّا = একটিঅধিকার, عَلَى = উপর, الْمُتَّقِينَ = মুত্তাকীদের,
অনুবাদ: তোমাদের কারোর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে এবং সে ধন –সম্পত্তি ত্যাগ করে যেতে থাকলে পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনদের জন্য প্রচলিত ন্যায়নীতি অনুযায়ী অসিয়ত করে যাওয়াকে তার জন্য ফরয করা হয়েছে, মুত্তাকীদের জন্য এটা একটা অধিকার।
(2:181)
فَمَنْۢ بَدَّلَهٗ بَعْدَ مَا سَمِعَهٗ فَاِنَّمَاۤ اِثْمُهٗ عَلَى الَّذِیْنَ یُبَدِّلُوْنَهٗؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌؕ
শব্দার্থ: فَمَنْ = যেঅতঃপর, بَدَّلَهُ = তাপরিবর্তনকরে, بَعْدَمَا = এরপরেওযা, سَمِعَهُ = তাশুনেছে, فَإِنَّمَا = মূলতঃতবে, إِثْمُهُ = তারগুনাহ, عَلَى = উপর, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, يُبَدِّلُونَهُ = তাপরিবর্তনকরেছে, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, سَمِيعٌ = সবকিছুশুনেন, عَلِيمٌ = সবকিছুজানেন,
অনুবাদ: তারপর যদি কেউ এই অসিয়ত শুনার পর তার মধ্যে পরিবর্তন করে ফেলে তাহলে ঐ পরিবর্তনকারীরাই এর সমস্ত গোনাহের ভাগী হবে। আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন।
(2:182)
فَمَنْ خَافَ مِنْ مُّوْصٍ جَنَفًا اَوْ اِثْمًا فَاَصْلَحَ بَیْنَهُمْ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ۠
শব্দার্থ: فَمَنْ = যেতবে, خَافَ = ভয়করে, مِنْ = হতে, مُوصٍ = ওসীয়তকারী, جَنَفًا = পক্ষপাতিত্বের, أَوْ = বা, إِثْمًا = অন্যায়ের, فَأَصْلَحَ = তারপরসেমীমাংসাকরেদেবে, بَيْنَهُمْ = তাদেরমাঝে, فَلَا = তবেনেই, إِثْمَ = কোনোগোনাহ, عَلَيْهِ = তারউপর, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, غَفُورٌ = ক্ষমাশীল, رَحِيمٌ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: তবে যদি কেউ অসিয়তকারীর পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে পক্ষপাতিত্ব বা হক নষ্ট হবার আশঙ্কা করে এবং সে বিষয়টির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তাহলে তার কোন গোনাহ হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(2:183)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَیْكُمُ الصِّیَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَۙ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, كُتِبَ = ফরজকরাহয়েছে, عَلَيْكُمُ = তোমাদেরউপর, الصِّيَامُ = রোযা(সাওম), كَمَا = যেমন, كُتِبَ = ফরজকরাহয়েছিল, عَلَى = উপর, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, مِنْ = থেকে, قَبْلِكُمْ = তোমাদেরপূর্বে(ছিলো), لَعَلَّكُمْ = আশাকরাযায়, تَتَّقُونَ = তোমরাতাকওয়াঅবলম্বনকরবে,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোযা ফরয করে দেয়া হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অনুসারীদের ওপর ফরয করা হয়েছিল। এ থেকে আশা করা যায়, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণাবলী সৃষ্টি হয়ে যাবে।
(2:184)
اَیَّامًا مَّعْدُوْدٰتٍؕ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَّرِیْضًا اَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ اَیَّامٍ اُخَرَؕ وَ عَلَى الَّذِیْنَ یُطِیْقُوْنَهٗ فِدْیَةٌ طَعَامُ مِسْكِیْنٍؕ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَیْرًا فَهُوَ خَیْرٌ لَّهٗؕ وَ اَنْ تَصُوْمُوْا خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: أَيَّامًا = দিনগুলোতে, مَعْدُودَاتٍ = নির্দিষ্টসংখ্যক, فَمَنْ = যেঅতঃপর, كَانَ = হবে, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যে, مَرِيضًا = অসুস্থ, أَوْ = অথবা, عَلَىٰ = মধ্যে, سَفَرٍ = সফরের, فَعِدَّةٌ = সংখ্যা(পূরণকরবে), مِنْ = থেকে, أَيَّامٍ = দিনগুলো, أُخَرَ = অন্যান্য, وَعَلَى = এবংউপর, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, يُطِيقُونَهُ = তারসামর্থ্যরাখে(কিন্তুরাখবেনা), فِدْيَةٌ = বিনিময়দিবে, طَعَامُ = খাদ্যদানকরে, مِسْكِينٍ = একঅভাবগ্রস্তকে, فَمَنْ = যেঅতঃপর, تَطَوَّعَ = স্বেচ্ছায়করে(অতিরিক্ত), خَيْرًا = কোনোকল্যাণ, فَهُوَ = তাহলেতা, خَيْرٌ = উত্তম, لَهُ = তারজন্যে, وَأَنْ = কিন্তুযে, تَصُومُوا = তোমাদেররোজা(সাওম)রাখবে, خَيْرٌ = উত্তম, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরা, تَعْلَمُونَ = জানতে,
অনুবাদ: এ কতিপয় নির্দিষ্ট দিনের রোযা। যদি তোমাদের কেউ হয়ে থাকে রোগগ্রস্ত অথবা মুসাফির তাহলে সে যেন অন্য দিনগুলোয় এই সংখ্যা পূর্ণ করে। আর যাদের রোযা রাখার সামর্থ আছে (এরপরও রাখে না) তারা যেন ফিদিয়া দেয়। একটি রোযার ফিদিয়া একজন মিসকিনকে খাওয়ানো। আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সানন্দে কিছু বেশী সৎকাজ করে, তা তার জন্য ভালো। তবে যদি তোমরা সঠিক বিষয় অনুধাবন করে থাকো তাহলে তোমাদের জন্য রোযা রাখাই ভালো।
(2:185)
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِیْۤ اُنْزِلَ فِیْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰى وَ الْفُرْقَانِۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْیَصُمْهُؕ وَ مَنْ كَانَ مَرِیْضًا اَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ اَیَّامٍ اُخَرَؕ یُرِیْدُ اللّٰهُ بِكُمُ الْیُسْرَ وَ لَا یُرِیْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ٘ وَ لِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَ لِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ وَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ
শব্দার্থ: شَهْرُ = মাস, رَمَضَانَ = রমাদান, الَّذِي = যা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছে, فِيهِ = তারমধ্যে, الْقُرْآنُ = কুরআন(যা), هُدًى = সঠিকপথনির্দেশনা, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্য, وَبَيِّنَاتٍ = এবংসুস্পষ্টনিদর্শন, مِنَ = থেকে, الْهُدَىٰ = সঠিকপথের, وَالْفُرْقَانِ = এবংন্যায়ওবাতিলেরপার্থক্যকারী, فَمَنْ = সুতরাংযেকেউ, شَهِدَ = পাবে, مِنْكُمُ = তোমাদেরমধ্যে, الشَّهْرَ = এমাস, فَلْيَصُمْهُ = তাতেসেরোজা(সাওম)রাখেযেন, وَمَنْ = এবংযে, كَانَ = হবে, مَرِيضًا = অসুস্থ, أَوْ = অথবা, عَلَىٰ = মধ্যে, سَفَرٍ = সফরের(থাকবে), فَعِدَّةٌ = তবেসংখ্যা(পূর্ণকরবে), مِنْ = থেকে, أَيَّامٍ = দিনগুলো, أُخَرَ = অন্যান্য, يُرِيدُ = চান, اللَّهُ = আল্লাহ, بِكُمُ = তোমাদেরজন্য, الْيُسْرَ = সহজতা, وَلَا = এবংনা, يُرِيدُ = তিনিচান, بِكُمُ = তোমাদেরজন্য, الْعُسْرَ = কঠোরতা, وَلِتُكْمِلُوا = এবংতোমরাপূর্ণকরযেন, الْعِدَّةَ = সংখ্যা, وَلِتُكَبِّرُوا = এবংতোমরাযেনমহিমাপ্রকাশকর, اللَّهَ = আল্লাহর, عَلَىٰ = জন্য, مَا = যে, هَدَاكُمْ = তিনিতোমাদেরপথদেখিয়েছেন, وَلَعَلَّكُمْ = এবংআশাকরাযায়, تَشْكُرُونَ = তোমরাকৃতজ্ঞতাপ্রকাশকরবে,
অনুবাদ: রমযানের মাস, এ মাসেই কুরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানবজাতির জন্য পুরোপুরি হিদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন শিক্ষা সম্বলিত, যা সত্য-সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয়। কাজেই এখন থেকে যে ব্যক্তি এ মাসের সাক্ষাত পাবে তার জন্য এই সম্পূর্ণ মাসটিতে রোযা রাখা অপরিহার্য এবং যে ব্যক্তি রোগগ্রস্ত হয় বা সফরে থাকে, সে যেন অন্য দিনগুলোয় রোযার সংখ্যা পূর্ণ করে। আল্লাহ তোমাদের সাথে নরম নীতি অবলম্বন করতে চান, কঠোর নীতি অবলম্বন করতে চান না। তাই তোমাদেরকে এই পদ্ধতি জানানো হচ্ছে, যাতে তোমরা রোযার সংখ্যা পূর্ণ করতে পারো এবং আল্লাহ তোমাদের যে হিদায়াত দান করেছেন সেজন্য যেন তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে ও তার স্বীকৃতি দিতে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো।
(2:186)
وَ اِذَا سَاَلَكَ عِبَادِیْ عَنِّیْ فَاِنِّیْ قَرِیْبٌؕ اُجِیْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِۙ فَلْیَسْتَجِیْبُوْا لِیْ وَ لْیُؤْمِنُوْا بِیْ لَعَلَّهُمْ یَرْشُدُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, سَأَلَكَ = তোমাকেপ্রশ্নকরে, عِبَادِي = আমারবান্দারা, عَنِّي = আমারসম্পর্কে, فَإِنِّي = তখন(বল)আমিনিশ্চয়ই, قَرِيبٌ = নিকটেই, أُجِيبُ = আমিসাড়াদিই, دَعْوَةَ = ডাকে, الدَّاعِ = প্রার্থনাকারীর, إِذَا = যখন, دَعَانِ = আমাকেডাকে, فَلْيَسْتَجِيبُوا = অতএবতারাওসাড়াদিক, لِي = আমার, وَلْيُؤْمِنُوا = এবংতারাঈমানআনুক, بِي = আমারউপর, لَعَلَّهُمْ = হয়ততারা, يَرْشُدُونَ = সত্যেরসন্ধানপাবে,
অনুবাদ: আর হে নবী! আমার বান্দা যদি তোমার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তাহলে তাদেরকে বলে দাও, আমি তাদের কাছেই আছি। যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাক শুনি এবং জবাব দেই, কাজেই তাদের আমার আহবানে সাড়া দেয়া এবং আমার ওপর ঈমান আনা উচিত একথা তুমি তাদের শুনিয়ে দাও, হয়তো সত্য-সরল পথের সন্ধান পাবে।
(2:187)
اُحِلَّ لَكُمْ لَیْلَةَ الصِّیَامِ الرَّفَثُ اِلٰى نِسَآئِكُمْؕ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَ اَنْتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّؕ عَلِمَ اللّٰهُ اَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُوْنَ اَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَیْكُمْ وَ عَفَا عَنْكُمْۚ فَالْــٴٰـنَ بَاشِرُوْهُنَّ وَ ابْتَغُوْا مَا كَتَبَ اللّٰهُ لَكُمْ۪ وَ كُلُوْا وَ اشْرَبُوْا حَتّٰى یَتَبَیَّنَ لَكُمُ الْخَیْطُ الْاَبْیَضُ مِنَ الْخَیْطِ الْاَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ۪ ثُمَّ اَتِمُّوا الصِّیَامَ اِلَى الَّیْلِۚ وَ لَا تُبَاشِرُوْهُنَّ وَ اَنْتُمْ عٰكِفُوْنَۙ فِی الْمَسٰجِدِؕ تِلْكَ حُدُوْدُ اللّٰهِ فَلَا تَقْرَبُوْهَاؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ اٰیٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ یَتَّقُوْنَ
শব্দার্থ: أُحِلَّ = (হালাল)করাহয়েছে, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, لَيْلَةَ = রাতে, الصِّيَامِ = সাওমের, الرَّفَثُ = স্ত্রীসহবাস, إِلَىٰ = সাথে, نِسَائِكُمْ = তোমাদেরস্ত্রীদের, هُنَّ = তারা, لِبَاسٌ = পোশাক, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, وَأَنْتُمْ = ওতোমরা, لِبَاسٌ = পোশাক, لَهُنَّ = তাদেরজন্যে, عَلِمَ = জেনেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, أَنَّكُمْ = তোমরাযে, كُنْتُمْ = তোমরাছিলে, تَخْتَانُونَ = প্রতারণাকরতে, أَنْفُسَكُمْ = তোমাদেরনিজেদের(সাথে), فَتَابَ = তওবাগ্রহণকরলেন, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَعَفَا = এবংক্ষমাকরলেন, عَنْكُمْ = তোমাদের, فَالْآنَ = অতএবএখন, بَاشِرُوهُنَّ = তাদেরসাথেতোমরাসহবাসকরো, وَابْتَغُوا = এবংতোমরাসন্ধানকরো, مَا = যা, كَتَبَ = লিখেদিয়েছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, وَكُلُوا = ওতোমরাখাও, وَاشْرَبُوا = ওতোমরাপানকরো, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يَتَبَيَّنَ = স্পষ্টহয়েযায়, لَكُمُ = তোমাদেরকাছে, الْخَيْطُ = রেখা, الْأَبْيَضُ = সাদা(অর্থাৎসুবেহসাদেক), مِنَ = হতে, الْخَيْطِ = রেখা, الْأَسْوَدِ = কাল(অর্থাৎরাতেরঅন্ধকার), مِنَ = থেকে, الْفَجْرِ = ফজরে, ثُمَّ = এরপর, أَتِمُّوا = তোমরাপূর্ণকরো, الصِّيَامَ = সাওম, إِلَى = পর্যন্ত, اللَّيْلِ = রাত্র(অর্থাৎসূর্যাস্ত), وَلَا = এবংনা, تُبَاشِرُوهُنَّ = তাদেরসাথেতোমরাসহবাসকর, وَأَنْتُمْ = এমতাবস্থায়তোমরা, عَاكِفُونَ = এতিকাফরত, فِي = মধ্যে, الْمَسَاجِدِ = মসজিদের, تِلْكَ = এই, حُدُودُ = সীমাসমূহ, اللَّهِ = আল্লাহর, فَلَا = নাতাই, تَقْرَبُوهَا = তারনিকটেযাবেতোমরা, كَذَٰلِكَ = এভাবে, يُبَيِّنُ = স্পষ্টবর্ণনাকরেন, اللَّهُ = আল্লাহ, آيَاتِهِ = তারনিদর্শনগুলো, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্যে, لَعَلَّهُمْ = আশাকরাযায়তারা, يَتَّقُونَ = তাকওয়াঅবলম্বনকরবে,
অনুবাদ: রোযার সময় রাতের বেলা স্ত্রীদের কাছে যাওয়া তোমাদের জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতে পেরেছেন, তোমরা চুপি চুপি নিজেরাই নিজেদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছিলে। কিন্তু তিনি তোমাদের অপরাধ মাফ করে দিয়েছেন এবং তোমাদের ক্ষমা করেছেন। এখন তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে রাত্রিবাস করো এবং যে স্বাদ আল্লাহ তোমাদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন তা গ্রহণ করো। আর পানাহার করতে থাকো। যতক্ষণ না রাত্রির কালো রেখার বুক চিরে প্রভাতের সাদা রেখা সুস্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয়। তখন এসব কাজ ত্যাগ করে রাত পর্যন্ত নিজের রোযা পূর্ণ করো। আর যখন তোমরা মসজিদে ই’তিকাফে বসো তখন স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো না। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা, এর ধারে কাছেও যেয়ো না। এভাবে আল্লাহ তাঁর বিধান লোকদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, আশা করা যায় এর ফলে তারা ভুল কর্মনীতি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে।
(2:188)
وَ لَا تَاْكُلُوْۤا اَمْوَالَكُمْ بَیْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَ تُدْلُوْا بِهَاۤ اِلَى الْحُكَّامِ لِتَاْكُلُوْا فَرِیْقًا مِّنْ اَمْوَالِ النَّاسِ بِالْاِثْمِ وَ اَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَلَا = এবংনা, تَأْكُلُوا = তোমরাখেয়ো, أَمْوَالَكُمْ = ধন-সম্পদসমূহকে, بَيْنَكُمْ = তোমাদেরপরস্পরের, بِالْبَاطِلِ = অন্যায়ভাবে, وَتُدْلُوا = তোমরা(না)পেশকর, بِهَا = তানিয়ে, إِلَى = কাছে, الْحُكَّامِ = বিচারকদের, لِتَأْكُلُوا = তোমরাখেতেপারযেন, فَرِيقًا = কিয়দংশ, مِنْ = হতে, أَمْوَالِ = ধন-সম্পদের, النَّاسِ = মানুষের, بِالْإِثْمِ = অন্যায়ভাবে, وَأَنْتُمْ = এমতাবস্থায়তোমরা, تَعْلَمُونَ = জান,
অনুবাদ: আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অবৈধ পদ্ধতিতে খেয়ো না এবং শাসকদের সামনেও এগুলোকে এমন কোন উদ্দেশ্যে পেশ করো না যার ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে তোমরা অন্যের সম্পদের কিছু অংশ খাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাও।
(2:189)
یَسْــٴَـلُوْنَكَ عَنِ الْاَهِلَّةِؕ قُلْ هِیَ مَوَاقِیْتُ لِلنَّاسِ وَ الْحَجِّؕ وَ لَیْسَ الْبِرُّ بِاَنْ تَاْتُوا الْبُیُوْتَ مِنْ ظُهُوْرِهَا وَ لٰكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقٰىۚ وَ اْتُوا الْبُیُوْتَ مِنْ اَبْوَابِهَا۪ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
শব্দার্থ: يَسْأَلُونَكَ = তোমাকেতারাজিজ্ঞেসকরে, عَنِ = সম্বন্ধে, الْأَهِلَّةِ = নতুনচাঁদ, قُلْ = তুমিবলো, هِيَ = তা, مَوَاقِيتُ = সময়(তারিখ)নির্দেশক, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্য, وَالْحَجِّ = ওহজ্জের, وَلَيْسَ = এবংনেই, الْبِرُّ = পূণ্য, بِأَنْ = যেএতে, تَأْتُوا = তোমরাআস, الْبُيُوتَ = ঘরগুলোতে, مِنْ = হতে, ظُهُورِهَا = তারপিছনদিক, وَلَٰكِنَّ = কিন্তু, الْبِرَّ = পূণ্য, مَنِ = যেকেউ, اتَّقَىٰ = তাকওয়াঅবলম্বনকরবে, وَأْتُوا = এবংতোমরাআসো, الْبُيُوتَ = ঘরগুলোতে, مِنْ = দিয়ে, أَبْوَابِهَا = তারসম্মুখদরজাগুলো, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, لَعَلَّكُمْ = আশাকরাযায়, تُفْلِحُونَ = তোমরাসফলহবে,
অনুবাদ: লোকেরা তোমাকে চাঁদ ছোট বড়ো হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছে। বলে দাওঃ এটা হচ্ছে লোকদের জন্য তারিখ নির্ণয় ও হজ্ব্বের আলামত তাদেরকে আরো বলে দাওঃ তোমাদের পেছন দিক দিয়ে গৃহে প্রবেশ করার মধ্যে কোন নেকী নেই। আসলে নেকী রয়েছে আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচার মধ্যেই, কাজেই তোমরা দরজা পথেই নিজেদের গৃহে প্রবেশ করো। তবে আল্লাহকে ভয় করতে থাকো, হয়তো তোমরা সাফল্য লাভে সক্ষম হবে।
(2:190)
وَ قَاتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ الَّذِیْنَ یُقَاتِلُوْنَكُمْ وَ لَا تَعْتَدُوْاؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الْمُعْتَدِیْنَ
শব্দার্থ: وَقَاتِلُوا = এবংতোমরাযুদ্ধকরো, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, الَّذِينَ = (তাদেরসাথে)যারা, يُقَاتِلُونَكُمْ = তোমাদেরসাথেযুদ্ধকরে, وَلَا = কিন্তুনা, تَعْتَدُوا = তোমরাসীমালংঘনকরো, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, لَا = না, يُحِبُّ = ভালবাসেন, الْمُعْتَدِينَ = সীমালংঘনকারীদেরকে,
অনুবাদ: আর তোমরা আল্লাহর পথে তাদের সাথে যুদ্ধ করো, যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, কিন্তু বাড়াবাড়ি করো না। কারণ যারা বাড়াবাড়ি করে আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন না।
(2:191)
وَ اقْتُلُوْهُمْ حَیْثُ ثَقِفْتُمُوْهُمْ وَ اَخْرِجُوْهُمْ مِّنْ حَیْثُ اَخْرَجُوْكُمْ وَ الْفِتْنَةُ اَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِۚ وَ لَا تُقٰتِلُوْهُمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتّٰى یُقٰتِلُوْكُمْ فِیْهِۚ فَاِنْ قٰتَلُوْكُمْ فَاقْتُلُوْهُمْؕ كَذٰلِكَ جَزَآءُ الْكٰفِرِیْنَ
শব্দার্থ: وَاقْتُلُوهُمْ = এবংতাদেরকেহত্যাকরো, حَيْثُ = যেখানেই, ثَقِفْتُمُوهُمْ = তাদেরকেতোমরাপাও, وَأَخْرِجُوهُمْ = ওতাদেরকেবেরকরেদাও, مِنْ = থেকে, حَيْثُ = যেখান, أَخْرَجُوكُمْ = তোমাদেরবেরকরেছেতারা, وَالْفِتْنَةُ = এবংবিপর্যয়, أَشَدُّ = গুরুতর, مِنَ = চেয়ে, الْقَتْلِ = হত্যার, وَلَا = এবংনা, تُقَاتِلُوهُمْ = তাদেরসাথেযুদ্ধকর, عِنْدَ = কাছে, الْمَسْجِدِ = মসজিদে, الْحَرَامِ = হারামের, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يُقَاتِلُوكُمْ = তোমাদেরসাথেযুদ্ধকরেতারা, فِيهِ = তারমধ্যে, فَإِنْ = তবেযদি, قَاتَلُوكُمْ = তোমাদেরসাথেযুদ্ধকরেতারা, فَاقْتُلُوهُمْ = তাহলেতোমরাহত্যাকরো, كَذَٰلِكَ = এরূপই, جَزَاءُ = শাস্তি, الْكَافِرِينَ = কাফেরদের,
অনুবাদ: তাদের সাথে যেখানেই তোমাদের মোকাবিলা হয় তোমরা যুদ্ধ করো এবং তাদের উৎখাত করো সেখান থেকে যেখান থেকে তারা তোমাদেরকে উৎখাত করেছে। কারণ হত্যা যদিও খারাপ, ফিতনা তার চেয়েও বেশী খারাপ। আর মসজিদে হারামের কাছে যতক্ষণ তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে, তোমরাও যুদ্ধ করো না। কিন্তু যদি তারা সেখানে যুদ্ধ করতে সংকোচবোধ না করে, তাহলে তোমরাও নিঃসংকোচে তাদেরকে হত্যা করো। কারণ এটাই এই ধরনের কাফেরদের যোগ্য শাস্তি।
(2:192)
فَاِنِ انْتَهَوْا فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
শব্দার্থ: فَإِنِ = অতঃপরযদি, انْتَهَوْا = তারাবিরতহয়, فَإِنَّ = তবেনিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, غَفُورٌ = ক্ষমাশীল, رَحِيمٌ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: তারপর যদি তারা বিরত হয় তাহলে জেনে রাখো আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।
(2:193)
وَ قٰتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ وَّ یَكُوْنَ الدِّیْنُ لِلّٰهِؕ فَاِنِ انْتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ اِلَّا عَلَى الظّٰلِمِیْنَ
শব্দার্থ: وَقَاتِلُوهُمْ = এবংতোমরাযুদ্ধকরতেথাকোতাদেরকে, حَتَّىٰ = যতক্ষণ, لَا = না, تَكُونَ = থাকে, فِتْنَةٌ = বিপর্যয়, وَيَكُونَ = ওহয়, الدِّينُ = দ্বীন, لِلَّهِ = আল্লাহরজন্যে(নির্দিষ্ট), فَإِنِ = যদিঅতঃপর, انْتَهَوْا = তারাবিরতহয়, فَلَا = নেইতবে, عُدْوَانَ = আক্রমণের(সুযোগ), إِلَّا = ছাড়া, عَلَى = উপর, الظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘনকারীদের,
অনুবাদ: তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকো যতক্ষণ না ফিতনা নির্মূল হয়ে যায় এবং দ্বীন একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয় তাহলে জেনে রাখো যালেমদের ছাড়া আর কারোর ওপর হস্তক্ষেপ করা বৈধ নয়।
(2:194)
اَلشَّهْرُ الْحَرَامُ بِالشَّهْرِ الْحَرَامِ وَ الْحُرُمٰتُ قِصَاصٌؕ فَمَنِ اعْتَدٰى عَلَیْكُمْ فَاعْتَدُوْا عَلَیْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدٰى عَلَیْكُمْ۪ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِیْنَ
শব্দার্থ: الشَّهْرُ = মাস, الْحَرَامُ = পবিত্র, بِالشَّهْرِ = মাসবিনিময়ে, الْحَرَامِ = পবিত্র, وَالْحُرُمَاتُ = এবংসমস্তপবিত্রবিষয়(লংঘনের), قِصَاصٌ = বদলা(রয়েছে), فَمَنِ = যেতাই, اعْتَدَىٰ = বাড়াবাড়িকরবে, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, فَاعْتَدُوا = তোমরাওতখনবাড়াবাড়িরবদলানাও, عَلَيْهِ = তারউপর, بِمِثْلِ = অনুরূপ, مَا = যেমন, اعْتَدَىٰ = বাড়াবাড়িকরেছে, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরাখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, مَعَ = সাথে(আছেন), الْمُتَّقِينَ = মুত্তাকীদের,
অনুবাদ: হারাম মাসের বিনিময় হারাম মাসই হতে পারে এবং সমস্ত মর্যাদা সমপর্যায়ের বিনিময়ের অধিকারী হবে। কাজেই যে ব্যক্তি তোমার ওপর হস্তক্ষেপ করবে তুমিও তার ওপর ঠিক তেমনিভাবে হস্তক্ষেপ করো। তবে আল্লাহকে ভয় করতে থাকো এবং একথা জেনে রাখো যে, আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাঁর নির্ধারিত সীমালংঘন করা থেকে বিরত থাকে।
(2:195)
وَ اَنْفِقُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ لَا تُلْقُوْا بِاَیْدِیْكُمْ اِلَى التَّهْلُكَةِ ﳝ وَ اَحْسِنُوْاۚۛ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَ
শব্দার্থ: وَأَنْفِقُوا = এবংতোমরাব্যয়করো, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, وَلَا = এবংনা, تُلْقُوا = তোমরানিক্ষেপকরো, بِأَيْدِيكُمْ = তোমাদেরহাতে(নিজেদেরকে), إِلَى = দিকে, التَّهْلُكَةِ = ধ্বংসের, وَأَحْسِنُوا = এবংতোমরাঅনুগ্রহকরো, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, يُحِبُّ = ভালবাসেন, الْمُحْسِنِينَ = অনুগ্রহকারীদেরকে,
অনুবাদ: আল্লাহর পথে ব্যয় করো এবং নিজের হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করো না। অনুগ্রহ প্রদর্শনের পথ অবলম্বন করো, কেননা আল্লাহ অনুগ্রহ প্রদর্শনকারীদেরকে ভালোবাসেন।
(2:196)
وَ اَتِمُّوا الْحَجَّ وَ الْعُمْرَةَ لِلّٰهِؕ فَاِنْ اُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَیْسَرَ مِنَ الْهَدْیِۚ وَ لَا تَحْلِقُوْا رُءُوْسَكُمْ حَتّٰى یَبْلُغَ الْهَدْیُ مَحِلَّهٗؕ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَّرِیْضًا اَوْ بِهٖۤ اَذًى مِّنْ رَّاْسِهٖ فَفِدْیَةٌ مِّنْ صِیَامٍ اَوْ صَدَقَةٍ اَوْ نُسُكٍۚ فَاِذَاۤ اَمِنْتُمْٙ فَمَنْ تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ اِلَى الْحَجِّ فَمَا اسْتَیْسَرَ مِنَ الْهَدْیِۚ فَمَنْ لَّمْ یَجِدْ فَصِیَامُ ثَلٰثَةِ اَیَّامٍ فِی الْحَجِّ وَ سَبْعَةٍ اِذَا رَجَعْتُمْؕ تِلْكَ عَشَرَةٌ كَامِلَةٌؕ ذٰلِكَ لِمَنْ لَّمْ یَكُنْ اَهْلُهٗ حَاضِرِی الْمَسْجِدِ الْحَرَامِؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ شَدِیْدُ الْعِقَابِ۠
শব্দার্থ: وَأَتِمُّوا = এবংতোমরাপূর্ণকরো, الْحَجَّ = হজ্জ, وَالْعُمْرَةَ = ওওমরাহ, لِلَّهِ = আল্লাহরইজন্যে, فَإِنْ = অতঃপরযদি, أُحْصِرْتُمْ = তোমরাবাধাপ্রাপ্তহও, فَمَا = যাতবে, اسْتَيْسَرَ = সহজলভ্যহয়, مِنَ = থেকে, الْهَدْيِ = কুরবানি(তাইপেশকর), وَلَا = এবংনা, تَحْلِقُوا = তোমরামুণ্ডনকরো, رُءُوسَكُمْ = তোমাদেরমাথা, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يَبْلُغَ = পৌঁছে, الْهَدْيُ = কুরবানি(তাইপেশকর), مَحِلَّهُ = তারস্থানে, فَمَنْ = যেঅতঃপর, كَانَ = হয়, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যে, مَرِيضًا = পীড়িত, أَوْ = বা, بِهِ = তারআছে, أَذًى = কষ্টদায়ক, مِنْ = মধ্যে, رَأْسِهِ = তারমাথার, فَفِدْيَةٌ = তবেবিনিময়(দিবে), مِنْ = দ্বারা, صِيَامٍ = একটিসাওমের, أَوْ = বা, صَدَقَةٍ = সদকা, أَوْ = বা, نُسُكٍ = কুরবানি(দ্বারা), فَإِذَا = অতঃপরযখন, أَمِنْتُمْ = তোমরানিরাপদহও, فَمَنْ = যেতখন, تَمَتَّعَ = লাভবানহতেচায়, بِالْعُمْرَةِ = ওমরাহর, إِلَى = পর্যন্ত, الْحَجِّ = হজ্জ, فَمَا = যাতবে, اسْتَيْسَرَ = সহজলভ্যহবে, مِنَ = থেকে, الْهَدْيِ = কুরবানি(দেবে), فَمَنْ = কিন্তুযে, لَمْ = না, يَجِدْ = পায়, فَصِيَامُ = তাহলেসাওমরাখবে, ثَلَاثَةِ = তিন, أَيَّامٍ = দিনের, فِي = মধ্যে, الْحَجِّ = হজ্জের, وَسَبْعَةٍ = ওসাত(দিন), إِذَا = যখন, رَجَعْتُمْ = তোমরাফিরবে, تِلْكَ = এই, عَشَرَةٌ = দশ(দিন), كَامِلَةٌ = পূর্ণ(রোযারাখবে), ذَٰلِكَ = এটা, لِمَنْ = তারজন্যেযার, لَمْ = না, يَكُنْ = হয়, أَهْلُهُ = তারপরিজনবর্গ, حَاضِرِي = বাসিন্দা, الْمَسْجِدِ = মসজিদে, الْحَرَامِ = হারামের, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরাখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, شَدِيدُ = কঠোর, الْعِقَابِ = (মন্দকাজের)শাস্তিদানে,
অনুবাদ: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যখন হজ্ব ও উমরাহ করার নিয়ত করো তখন তা পূর্ণ করো। আর যদি কোথাও আটকা পড়ো তাহলে যে কুরবানী তোমাদের আয়ত্বাধীন হয় তাই আল্লাহর উদ্দেশ্যে পেশ করো। আর কুরবানী তার নিজের জায়গায় পৌঁছে না যাওয়া পর্যন্ত তোমরা নিজেদের মাথা মুণ্ডন করো না। তবে যে ব্যক্তি রোগগ্রস্ত হয় অথবা যার মাথায় কোন কষ্ট থাকে এবং সেজন্য মাথা মুণ্ডন না করে তাহলে তার ‘ফিদিয়া’ হিসেবে রোযা রাখা বা সাদকা দেয়া অথবা কুরবানী করা উচিত। তারপর যদি তোমাদের নিরাপত্তা অর্জিত হয় (এবং তোমরা হজ্বের আগে মক্কায় পৌঁছে যাও) তাহলে তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি হজ্ব্বের সময় আসা পর্যন্ত উমরাহ্র সুযোগ লাভ করে সে যেন সামর্থ অনুযায়ী কুরবানী করে। আর যদি কুরবানীর যোগাড় না হয়, তাহলে হজ্ব্বের যামানায় তিনটি রোযা এবং সাতটি রোযা ঘরে ফিরে গিয়ে, এভাবে পুরো দশটি রোযা যেন রাখে। এই সুবিধে তাদের জন্য যাদের বাড়ী-ঘর মসজিদে হারামের কাছাকাছি নয়। আল্লাহর এ সমস্ত বিধানের বিরোধিতা করা থেকে দূরে থাকো এবং ভালোভাবে জেনে নাও আল্লাহ কঠিন শাস্তি প্রদানকারী।
(2:197)
اَلْحَجُّ اَشْهُرٌ مَّعْلُوْمٰتٌۚ فَمَنْ فَرَضَ فِیْهِنَّ الْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَ لَا فُسُوْقَۙ وَ لَا جِدَالَ فِی الْحَجِّؕ وَ مَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَیْرٍ یَّعْلَمْهُ اللّٰهُ ط وَ تَزَوَّدُوْا فَاِنَّ خَیْرَ الزَّادِ التَّقْوٰى٘ وَ اتَّقُوْنِ یٰۤاُولِی الْاَلْبَابِ
শব্দার্থ: الْحَجُّ = হজ্জের, أَشْهُرٌ = মাসগুলো, مَعْلُومَاتٌ = সুবিদিত, فَمَنْ = তাইযেকেউ, فَرَضَ = স্থিরকরল, فِيهِنَّ = তারমধ্যে, الْحَجَّ = হজ্জকরার, فَلَا = নাতখন, رَفَثَ = যৌনসম্ভোগকরবে(হজ্জেরসময়), وَلَا = এবংনা, فُسُوقَ = অন্যায়আচরণকরবে, وَلَا = এবংনা, جِدَالَ = কলহ-বিবাদকরবে, فِي = মধ্যে, الْحَجِّ = হজ্জের, وَمَا = এবংযা, تَفْعَلُوا = তোমরাকর, مِنْ = কোনো, خَيْرٍ = কল্যাণ, يَعْلَمْهُ = তাজানেন, اللَّهُ = আল্লাহ, وَتَزَوَّدُوا = এবংতোমরাপাথেয়সাথেনাও, فَإِنَّ = নিশ্চয়ইতবে, خَيْرَ = উত্তম, الزَّادِ = পাথেয়(হল), التَّقْوَىٰ = তাকওয়া, وَاتَّقُونِ = এবংআমাকেতোমরাভয়করো, يَاأُولِي = হে, الْأَلْبَابِ = বুদ্ধিমানলোকেরা,
অনুবাদ: হজ্বের মাসগুলো সবার জানা। যে ব্যক্তি এই নির্দিষ্ট মাসগুলোতে হজ্ব করার নিয়ত করে, তার জেনে রাখা উচিত, হজ্বের সময়ে সে যেন যৌন সম্ভোগ, দুষ্কর্ম ও ঝগড়া –বিবাদে লিপ্ত না হয়। আর যা কিছু সৎকাজ তোমরা করবে আল্লাহ তা জানেন। হজ্ব সফরের জন্য পাথেয় সঙ্গে নিয়ে যাও আর সবচেয়ে ভালো পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া। কাজেই হে বুদ্ধিমানেরা! আমার নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকো।
(2:198)
لَیْسَ عَلَیْكُمْ جُنَاحٌ اَنْ تَبْتَغُوْا فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكُمْؕ فَاِذَاۤ اَفَضْتُمْ مِّنْ عَرَفٰتٍ فَاذْكُرُوا اللّٰهَ عِنْدَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ۪ وَ اذْكُرُوْهُ كَمَا هَدٰىكُمْۚ وَ اِنْ كُنْتُمْ مِّنْ قَبْلِهٖ لَمِنَ الضَّآلِّیْنَ
শব্দার্থ: لَيْسَ = নেই, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, جُنَاحٌ = কোনপাপ, أَنْ = যে, تَبْتَغُوا = তোমরাসন্ধানকরবে, فَضْلًا = অনুগ্রহ, مِنْ = কাছথেকে, رَبِّكُمْ = তোমাদেররবের, فَإِذَا = অতঃপরযখন, أَفَضْتُمْ = তোমরাপ্রত্যাবর্তনকর, مِنْ = থেকে, عَرَفَاتٍ = আরাফাত, فَاذْكُرُوا = তোমরাস্মরণকরো, اللَّهَ = আল্লাহকে, عِنْدَ = কাছে, الْمَشْعَرِ = মাশআরিল, الْحَرَامِ = হারামের(মুজাদালেফায়), وَاذْكُرُوهُ = এবংতাকেস্মরণকরো, كَمَا = যেমন, هَدَاكُمْ = তোমাদেরনির্দেশদিয়েছেনতিনি, وَإِنْ = এবংযদিও, كُنْتُمْ = তোমরাছিলে, مِنْ = থেকে, قَبْلِهِ = এরপূর্বেই, لَمِنَ = অবশ্যইঅন্তর্ভুক্ত, الضَّالِّينَ = পথভ্রষ্টদের,
অনুবাদ: আর হজ্বের সাথে সাথে তোমরা যদি তোমাদের রবের অনুগ্রহের সন্ধান করতে থাকো তাহলে তাতে কোন দোষ নেই। তারপর আরাফাত থেকে অগ্রসর হয়ে ‘মাশআরুল হারাম’ (মুয্দালিফা) এর কাছে থেমে আল্লাহকে স্মরণ করো এবং এমনভাবে স্মরণ করো যেভাবে স্মরণ করার জন্য তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। নয়তো ইতিপূর্বে তোমরা তো ছিলে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।
(2:199)
ثُمَّ اَفِیْضُوْا مِنْ حَیْثُ اَفَاضَ النَّاسُ وَ اسْتَغْفِرُوا اللّٰهَؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
শব্দার্থ: ثُمَّ = এরপর, أَفِيضُوا = তোমরাপ্রত্যাবর্তনকরো, مِنْ = থেকে, حَيْثُ = যেখান, أَفَاضَ = প্রত্যাবর্তনকরে, النَّاسُ = মানুষ, وَاسْتَغْفِرُوا = এবংতোমরাক্ষমাচাও, اللَّهَ = আল্লাহর(কাছে), إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, غَفُورٌ = ক্ষমাশীল, رَحِيمٌ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: তারপর যেখান থেকে আর সবাই ফিরে আসে তোমরাও সেখান থেকে ফিরে এসো এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিঃসন্দেহে তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(2:200)
فَاِذَا قَضَیْتُمْ مَّنَاسِكَكُمْ فَاذْكُرُوا اللّٰهَ كَذِكْرِكُمْ اٰبَآءَكُمْ اَوْ اَشَدَّ ذِكْرًاؕ فَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا وَ مَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ
শব্দার্থ: فَإِذَا = অতঃপরযখন, قَضَيْتُمْ = তোমরাসম্পন্নকরবে, مَنَاسِكَكُمْ = তোমাদেরহজ্জেরঅনুষ্ঠানাদি, فَاذْكُرُوا = তখনতোমরাস্মরণকরবে, اللَّهَ = আল্লাহকে, كَذِكْرِكُمْ = তোমরাস্মরণকরতেযেমন, آبَاءَكُمْ = তোমাদেরবাপ-দাদাদেরকে, أَوْ = বরং(এখন), أَشَدَّ = অধিকতর, ذِكْرًا = স্মরণকর(আল্লাহকে), فَمِنَ = অতঃপরকিছু, النَّاسِ = মানুষ(এমনআছে), مَنْ = যারা, يَقُولُ = বলে, رَبَّنَا = হেআমাদেররব, آتِنَا = আমাদেরদাও, فِي = মধ্যে, الدُّنْيَا = (এই)পৃথিবীর, وَمَا = আরনেই, لَهُ = তারজন্যে, فِي = মধ্যে, الْآخِرَةِ = আখেরাতের, مِنْ = কোনো, خَلَاقٍ = অংশ,
অনুবাদ: অতঃপর যখন তোমরা নিজেদের হজ্বের অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করবে তখন আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে যেমন ইতিপূর্বে তোমাদের বাপ-দাদাদেরকে স্মরণ করতে বরং তার চেয়ে অনেক বেশী করে স্মরণ করবে। (তবে আল্লাহকে স্মরণকারী লোকদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে) তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় সবকিছু দিয়ে দাও। এই ধরনের লোকের জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই।
(2:201)
وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّ فِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ
শব্দার্থ: وَمِنْهُمْ = এবংতাদেরমধ্যে(এমনওআছে), مَنْ = যারা, يَقُولُ = বলে, رَبَّنَا = হেআমাদেররব, آتِنَا = আমাদেরদাও, فِي = মধ্যে, الدُّنْيَا = (এই)পৃথিবীর, حَسَنَةً = কল্যাণ, وَفِي = ও, الْآخِرَةِ = আখেরাতেরমধ্যে, حَسَنَةً = কল্যাণ, وَقِنَا = এবংআমাদেরবাঁচাও, عَذَابَ = শাস্তি(হতে), النَّارِ = দোজখেরআগুনের,
অনুবাদ: আবার কেউ বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় কল্যাণ দাও এবং আখেরাতেও কল্যাণ দাও এবং আগুনের আযাব থেকে আমাদের বাঁচাও।
(2:202)
أُولَٰئِكَ لَهُمْ نَصِیْبٌ مِّمَّا كَسَبُوْاؕ وَ اللّٰهُ سَرِیْعُ الْحِسَابِ
শব্দার্থ: أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, لَهُمْ = তাদেরজন্য(রয়েছে), نَصِيبٌ = অংশ(উভয়স্থানে), مِمَّا = তাথেকেযা, كَسَبُوا = তারাঅর্জনকরেছে, وَاللَّهُ = আরআল্লাহ, سَرِيعُ = দ্রুত, الْحِسَابِ = হিসাবনিতে,
অনুবাদ: এই ধরনের লোকেরা নিজেদের উপার্জন অনুযায়ী (উভয় স্থানে) অংশ পাবে। মূলত হিসেব সম্পন্ন করতে আল্লাহর একটুও বিলন্ব হয় না।
(2:203)
وَ اذْكُرُوا اللّٰهَ فِیْۤ اَیَّامٍ مَّعْدُوْدٰتٍؕ فَمَنْ تَعَجَّلَ فِیْ یَوْمَیْنِ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِۚ وَ مَنْ تَاَخَّرَ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِۙ لِمَنِ اتَّقٰىؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّكُمْ اِلَیْهِ تُحْشَرُوْنَ
শব্দার্থ: وَاذْكُرُوا = এবংতোমরাস্মরণকরো, اللَّهَ = আল্লাহকে, فِي = মধ্যে, أَيَّامٍ = দিনগুলোর, مَعْدُودَاتٍ = নির্দিষ্টসংখ্যক, فَمَنْ = যেঅতঃপর, تَعَجَّلَ = তাড়াতাড়িকরে, فِي = মধ্যে, يَوْمَيْنِ = দুইদিনের(চলেআসে), فَلَا = নেইতবে, إِثْمَ = কোনপাপ, عَلَيْهِ = তারউপর, وَمَنْ = আরযে, تَأَخَّرَ = বিলম্বকরে(ফিরে), فَلَا = তাতেওনাই, إِثْمَ = কোনপাপ, عَلَيْهِ = তারউপর, لِمَنِ = তারজন্যযে, اتَّقَىٰ = তাকওয়াঅবলম্বনকরে, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরাখো, أَنَّكُمْ = যেতোমাদেরকে, إِلَيْهِ = তারইদিকে, تُحْشَرُونَ = একত্রকরাহবে,
অনুবাদ: এ এই হাতেগোণা কয়েকটি দিন, এ দিন কটি তোমাদের আল্লাহর স্মরণে অতিবাহিত করতে হবে। যদি কেউ তাড়াতাড়ি করে দুদিনে ফিরে আসে, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যদি কেউ একটু বেশীক্ষণ অবস্থান করে ফিরে আসে তবে তাতেও কোন ক্ষতি নেই। তবে শর্ত হচ্ছে, এই দিনগুলো তাকে তাকওয়ার সাথে অতিবাহিত করতে হবে। আল্লাহর নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকো এবং খুব ভালোভাবে জেনে রাখো, একদিন তাঁর দরবারে তোমাদের হাযির হতে হবে।
(2:204)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یُّعْجِبُكَ قَوْلُهٗ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ یُشْهِدُ اللّٰهَ عَلٰى مَا فِیْ قَلْبِهٖۙ وَ هُوَ اَلَدُّ الْخِصَامِ
শব্দার্থ: وَمِنَ = এবংমধ্যে(কেউকেউ), النَّاسِ = লোকদের(এমনওআছে), مَنْ = যে, يُعْجِبُكَ = তোমাকেমুগ্ধকরে, قَوْلُهُ = তারকথাবার্তা, فِي = মধ্যে, الْحَيَاةِ = জীবনের, الدُّنْيَا = পার্থিব, وَيُشْهِدُ = ওসেসাক্ষীরাখে, اللَّهَ = আল্লাহকে, عَلَىٰ = (এর)উপর, مَا = যা, فِي = মধ্যে(আছে), قَلْبِهِ = তারঅন্তরের, وَهُوَ = এবংসে, أَلَدُّ = সাংঘাতিক, الْخِصَامِ = ঝগড়াটে,
অনুবাদ: মানুষের মধ্যে এমন লোক আছে পার্থিব জীবনে যার কথা তোমার কাছে বড়ই চমৎকার মনে হয় এবং নিজের সদিচ্ছার ব্যাপারে সে বারবার আল্লাহকে সাক্ষী মানে। কিন্তু আসলে সে সত্যের নিকৃষ্টতম শত্রু।
(2:205)
وَ اِذَا تَوَلّٰى سَعٰى فِی الْاَرْضِ لِیُفْسِدَ فِیْهَا وَ یُهْلِكَ الْحَرْثَ وَ النَّسْلَؕ وَ اللّٰهُ لَا یُحِبُّ الْفَسَادَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, تَوَلَّىٰ = সেকর্তৃত্বপায়, سَعَىٰ = সেচেষ্টাকরে, فِي = মধ্যে, الْأَرْضِ = পৃথিবীর, لِيُفْسِدَ = বিপর্যয়সৃষ্টিরজন্যে, فِيهَا = তারমধ্যে, وَيُهْلِكَ = ওধ্বংসকরতে, الْحَرْثَ = শস্যক্ষেত, وَالنَّسْلَ = ওজীব-জন্তুরবংশ, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, لَا = না, يُحِبُّ = পছন্দকরনে, الْفَسَادَ = বিপর্যয়,
অনুবাদ: যখন সে কর্তৃত্ব লাভ করে, পৃথিবীতে তার সমস্ত প্রচেষ্টা-সাধনা নিয়োজিত করে বিপর্যয় সৃষ্টি এবং শস্যক্ষেত ও মানব বংশ ধ্বংস করার কাজে। অথচ আল্লাহ (যাকে সে সাক্ষী মেনেছিল) বিপর্যয় মোটেই পছন্দ করেন না।
(2:206)
وَ اِذَا قِیْلَ لَهُ اتَّقِ اللّٰهَ اَخَذَتْهُ الْعِزَّةُ بِالْاِثْمِ فَحَسْبُهٗ جَهَنَّمُؕ وَ لَبِئْسَ الْمِهَادُ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, قِيلَ = বলাহয়, لَهُ = তারউদ্দেশে, اتَّقِ = ভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, أَخَذَتْهُ = তাকেধরে, الْعِزَّةُ = (তার)মর্যাদাসম্মান, بِالْإِثْمِ = পাপের(পথে), فَحَسْبُهُ = তারজন্যেতাইযথেষ্ট, جَهَنَّمُ = জাহান্নাম, وَلَبِئْسَ = এবং(তা)অবশ্যইঅতিনিকৃষ্ট, الْمِهَادُ = আবাস,
অনুবাদ: আর যখন তাকে বলা হয়, আল্লাহকে ভয় করো তখন তার আত্মাভিমান তাকে পাপের পথে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়, এই ধরনের লোকের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট এবং সেটি নিকৃষ্টতম আবাস।
(2:207)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّشْرِیْ نَفْسَهُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللّٰهِؕ وَ اللّٰهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ
শব্দার্থ: وَمِنَ = এবংমধ্যহতে, النَّاسِ = লোকদের(এমনওআছে), مَنْ = যে, يَشْرِي = বিক্রিকরে, نَفْسَهُ = তারপ্রাণ, ابْتِغَاءَ = উদ্দেশ্যে, مَرْضَاتِ = সন্তুষ্টির, اللَّهِ = আল্লাহর, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, رَءُوفٌ = খুবদয়ালু, بِالْعِبَادِ = এধরনেরদাসদেরসাথে,
অনুবাদ: অন্যদিকে মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অভিযানে যে নিজের প্রাণ সমর্পণ করে। এই ধরনের বান্দার ওপর আল্লাহ অত্যন্ত স্নেহশীল ও মেহেরবান।
(2:208)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا ادْخُلُوْا فِی السِّلْمِ كَآفَّةً۪ وَ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِؕ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = ওহে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছো, ادْخُلُوا = তোমরাপ্রবেশকরো, فِي = মধ্যে, السِّلْمِ = ইসলামের, كَافَّةً = সম্পূর্ণভাবে, وَلَا = এবংনা, تَتَّبِعُوا = তোমরাঅনুসরণকরো, خُطُوَاتِ = পদাঙ্কগুলোর, الشَّيْطَانِ = শয়তানের, إِنَّهُ = সেনিশ্চয়ই, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, عَدُوٌّ = শত্রু, مُبِينٌ = প্রকাশ্য,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা পুরোপুরি ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের অনুসারী হয়ো না, কেননা সে তোমাদের সুস্পষ্ট দুশমন।
(2:209)
فَاِنْ زَلَلْتُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْكُمُ الْبَیِّنٰتُ فَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ
শব্দার্থ: فَإِنْ = অতঃপরযদি, زَلَلْتُمْ = তোমরাপদস্খলনকর, مِنْ = (এর), بَعْدِ = পরথেকে, مَا = যা, جَاءَتْكُمُ = তোমাদেরকাছেএসেছে, الْبَيِّنَاتُ = সুস্পষ্টনিদর্শন, فَاعْلَمُوا = তোমরাতবেজেনেরাখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, عَزِيزٌ = মহাপরাক্রমশালী, حَكِيمٌ = মহাবিজ্ঞ,
অনুবাদ: তোমাদের কাছে যে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন হিদায়াত এসে গেছে তা লাভ করার পরও যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে তাহলে ভালোভাবে জেনে রাখো আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।
(2:210)
هَلْ یَنْظُرُوْنَ اِلَّاۤ اَنْ یَّاْتِیَهُمُ اللّٰهُ فِیْ ظُلَلٍ مِّنَ الْغَمَامِ وَ الْمَلٰٓئِكَةُ وَ قُضِیَ الْاَمْرُؕ وَ اِلَى اللّٰهِ تُرْجَعُ الْاُمُوْرُ۠
শব্দার্থ: هَلْ = কি, يَنْظُرُونَ = তারাঅপেক্ষাকরছে, إِلَّا = এছাড়া, أَنْ = যে, يَأْتِيَهُمُ = তাদেরকাছেআসবেন, اللَّهُ = আল্লাহ, فِي = মধ্যে, ظُلَلٍ = ছায়ার, مِنَ = হতে, الْغَمَامِ = মেঘমালা, وَالْمَلَائِكَةُ = এবংফেরেশতারাও, وَقُضِيَ = আরমীমাংসাহয়েযাবে, الْأَمْرُ = সবকাজের, وَإِلَى = এবংদিকে, اللَّهِ = আল্লাহর, تُرْجَعُ = প্রত্যাবর্তিতহবে, الْأُمُورُ = সবব্যাপার,
অনুবাদ: (এই সমস্ত উপদেশ ও হিদায়াতের পরও যদি লোকেরা সোজা পথে না চলে, তাহলে) তারা কি এখন এই অপেক্ষায় বসে আছে যে, আল্লাহ মেঘমালার ছায়া দিয়ে ফেরেশতাদের বিপুল জমায়েত সঙ্গে নিয়ে নিজেই সামনে এসে যাবেন এবং তখন সবকিছুর মীমাংসা হয়ে যাবে? সমস্ত ব্যাপার তো শেষ পর্যন্ত আল্লাহরই সামনে উপস্থাপিত হবে।
(2:211)
سَلْ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ كَمْ اٰتَیْنٰهُمْ مِّنْ اٰیَةٍۭ بَیِّنَةٍؕ وَ مَنْ یُّبَدِّلْ نِعْمَةَ اللّٰهِ مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُ فَاِنَّ اللّٰهَ شَدِیْدُ الْعِقَابِ
শব্দার্থ: سَلْ = জিজ্ঞাসাকরো, بَنِي = বনী, إِسْرَائِيلَ = ইসরাঈলদেরকে, كَمْ = কত, آتَيْنَاهُمْ = তাদেরকেদিয়েছিআমরা, مِنْ = থেকে, آيَةٍ = নিদর্শন, بَيِّنَةٍ = সুস্পষ্ট, وَمَنْ = এবংযে, يُبَدِّلْ = পরিবর্তনকরে, نِعْمَةَ = অনুগ্রহ, اللَّهِ = আল্লাহর, مِنْ = (এর), بَعْدِ = পরথেকে, مَا = যা, جَاءَتْهُ = তারকাছেএসেছে, فَإِنَّ = তাহলেনিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, شَدِيدُ = কঠোর, الْعِقَابِ = (অন্যায়ের)শাস্তিদানে,
অনুবাদ: বনী ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস করো, কেমন সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো আমি তাদেরকে দেখিয়েছি! আবার তাদেরকে একথাও জিজ্ঞেস করো আল্লাহর নিয়ামত লাভ করার পর যে জাতি তাকে দুর্ভাগ্যে পরিণত করে তাকে আল্লাহ কেমন কঠিন শাস্তিদান করেন।
(2:212)
زُیِّنَ لِلَّذِیْنَ كَفَرُوا الْحَیٰوةُ الدُّنْیَا وَ یَسْخَرُوْنَ مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْاۘ وَ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا فَوْقَهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِؕ وَ اللّٰهُ یَرْزُقُ مَنْ یَّشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ
শব্দার্থ: زُيِّنَ = সুশোভিতকরাহয়েছে, لِلَّذِينَ = তাদেরজন্যে, كَفَرُوا = অবিশ্বাসকরেছে(যারা), الْحَيَاةُ = জীবনকে, الدُّنْيَا = পার্থিব, وَيَسْخَرُونَ = ওতারাবিদ্রূপকরে, مِنَ = মধ্যহতে, الَّذِينَ = (তাদেরকে)যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, وَالَّذِينَ = অথচযারা, اتَّقَوْا = তাকওয়াঅবলম্বনকরে, فَوْقَهُمْ = তাদেরউপর(মর্যাদাসম্পন্নহবে), يَوْمَ = দিনে, الْقِيَامَةِ = কিয়ামতের, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يَرْزُقُ = জীবিকাদেন, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিচান, بِغَيْرِ = ছাড়া, حِسَابٍ = কোনোহিসাব,
অনুবাদ: যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে তাদের জন্য দুনিয়ার জীবন বড়ই প্রিয় ও মনোমুগ্ধকর করে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ধরনের লোকেরা ঈমানের পথ অবলম্বনকারীদেরকে বিদ্রূপ করে। কিন্তু কিয়ামতের দিন তাকওয়া অবলম্বনকারীরাই তাদের মোকাবিলায় উন্নত মর্যাদার আসীন হবে। আর দুনিয়ার জীবিকার ক্ষেত্রে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত দান করে থাকেন।
(2:213)
كَانَ النَّاسُ اُمَّةً وَّاحِدَةً فَبَعَثَ اللّٰهُ النَّبِیّٖنَ مُبَشِّرِیْنَ وَ مُنْذِرِیْنَ۪ وَ اَنْزَلَ مَعَهُمُ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّ لِیَحْكُمَ بَیْنَ النَّاسِ فِیْمَا اخْتَلَفُوْا فِیْهِؕ وَ مَا اخْتَلَفَ فِیْهِ اِلَّا الَّذِیْنَ اُوْتُوْهُ مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ الْبَیِّنٰتُ بَغْیًۢا بَیْنَهُمْۚ فَهَدَى اللّٰهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لِمَا اخْتَلَفُوْا فِیْهِ مِنَ الْحَقِّ بِاِذْنِهٖؕ وَ اللّٰهُ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ
শব্দার্থ: كَانَ = ছিল, النَّاسُ = সবমানুষ, أُمَّةً = জাতি, وَاحِدَةً = একই, فَبَعَثَ = (তাদেরপথভ্রষ্টতার)পাঠালেন, اللَّهُ = আল্লাহ, النَّبِيِّينَ = নবীদেরকে, مُبَشِّرِينَ = সুসংবাদদাতা, وَمُنْذِرِينَ = ওসতর্ককারী(হিসেবে), وَأَنْزَلَ = এবংঅবতীর্ণকরলেন, مَعَهُمُ = তাদেরসাথে, الْكِتَابَ = কিতাব, بِالْحَقِّ = সত্যসহ, لِيَحْكُمَ = তিনিমীমাংসাকরতেপারেনযাতে, بَيْنَ = মাঝে, النَّاسِ = মানুষের, فِيمَا = সেবিষয়েযা, اخْتَلَفُوا = তারামতভেদকরেছিলো, فِيهِ = তারমধ্যে, وَمَا = এবংনি, اخْتَلَفَ = মতভেদকরে, فِيهِ = তারমধ্যে, إِلَّا = এছাড়া, الَّذِينَ = যাদের, أُوتُوهُ = তাদেয়াহয়েছিল, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = পর, مَا = যা, جَاءَتْهُمُ = তাদেরকাছেএসেছে, الْبَيِّنَاتُ = স্পষ্টনিদর্শনগুলো, بَغْيًا = বাড়াবাড়ির(কারণে), بَيْنَهُمْ = তাদেরমাঝে, فَهَدَى = অতঃপরপথদেখালেন’, اللَّهُ = আল্লাহ, الَّذِينَ = (তাদেরকে)যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, لِمَا = যেবিষয়ে, اخْتَلَفُوا = তারামতভেদকরেছিলো, فِيهِ = তারমধ্যে, مِنَ = সম্পর্কে, الْحَقِّ = সত্য, بِإِذْنِهِ = তারঅনুমতিরমাধ্যমে(ওঅনুগ্রহে), وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يَهْدِي = পথদেখান, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিচান, إِلَىٰ = দিকে, صِرَاطٍ = পথের, مُسْتَقِيمٍ = সহজ-সরল,
অনুবাদ: প্রথমে সব মানুষ একই পথের অনুসারী ছিল। (তারপর এ অবস্থা অপরিবর্তিত থাকেনি, তাদের মধ্যে মতভেদের সূচনা হয়) তখন আল্লাহ নবী পাঠান। তারা ছিলেন সত্য সঠিক পথের অনুসারীদের জন্য সুসংবাদদাতা এবং অসত্য ও বেঠিক পথ অবলন্বনের পরিণতির ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শনকারী। আর তাদের সাথে সত্য কিতাব পাঠান, যাতে সত্য সম্পর্কে তাদের মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল তার মীমাংসা করা যায়।---(এবং প্রথমে তাদেরকে সত্য সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া হয়নি বলে এ মতভেদগুলো সৃষ্টি হয়েছিল, তা নয়) মতভেদ তারাই করেছিল যাদেরকে সত্যের জ্ঞান দান করা হয়েছিল। তারা সুস্পষ্ট পথনির্দেশ লাভ করার পরও কেবলমাত্র পরস্পরের ওপর বাড়াবাড়ি করতে চাচ্ছিল বলেই সত্য পরিহার করে বিভিন্ন পথ উদ্ভাবন করে। --- কাজেই যারা নবীদের ওপর ঈমান এনেছে তাদেরকে আল্লাহ নিজের ইচ্ছাক্রমে সেই সত্যের পথ দিয়েছেন, যে ব্যাপারে লোকেরা মতবিরোধ করেছিল। আল্লাহ যাকে চান সত্য সঠিক পথ দেখিয়ে দেন।
(2:214)
اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَ لَمَّا یَاْتِكُمْ مَّثَلُ الَّذِیْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْؕ مَسَّتْهُمُ الْبَاْسَآءُ وَ الضَّرَّآءُ وَ زُلْزِلُوْا حَتّٰى یَقُوْلَ الرَّسُوْلُ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ مَتٰى نَصْرُ اللّٰهِؕ اَلَاۤ اِنَّ نَصْرَ اللّٰهِ قَرِیْبٌ
শব্দার্থ: أَمْ = কি, حَسِبْتُمْ = তোমরামনেকরেছ, أَنْ = যে, تَدْخُلُوا = তোমরাপ্রবেশকরবে, الْجَنَّةَ = জান্নাতে, وَلَمَّا = অথচএখনও, يَأْتِكُمْ = তোমাদেরআসেনি, مَثَلُ = (তাদের)অবস্থা, الَّذِينَ = যারা, خَلَوْا = গতহয়েছে, مِنْ = (থেকে), قَبْلِكُمْ = তোমাদেরপূর্বেথেকে, مَسَّتْهُمُ = তাদেরস্পর্শকরেছিল, الْبَأْسَاءُ = অভাব-অনটন, وَالضَّرَّاءُ = ওদুঃখদারিদ্র, وَزُلْزِلُوا = এবংতাদেরকম্পিতকরাহয়েছিল, حَتَّىٰ = এমনকি, يَقُولَ = বলল, الرَّسُولُ = রাসূল, وَالَّذِينَ = এবংযারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছিল, مَعَهُ = তারসাথে, مَتَىٰ = কখন(আসবে), نَصْرُ = সাহায্য, اللَّهِ = আল্লাহর, أَلَا = জেনেরেখো, إِنَّ = নিশ্চয়ই, نَصْرَ = সাহায্য, اللَّهِ = আল্লাহর, قَرِيبٌ = নিকটে,
অনুবাদ: তোমরা কি মনে করেছো, এমনিতেই তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে? অথচ তোমাদের আগে যারা ঈমান এনেছিল তাদের ওপর যা কিছু নেমে এসেছিল এখনও তোমাদের ওপর সেসব নেমে আসেনি। তাদের ওপর নেমে এসেছিল কষ্ট-ক্লেশ ও বিপদ-মুসিবত, তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়েছিল। এমনকি সমকালীন রসূল এবং তাঁর সাথে যারা ঈমান এনেছিল তারা চীৎকার করে বলে উঠেছিল, আল্লাহর সাহায্য কবে আসবে? তখন তাদেরকে এই বলে সান্ত্বনা দেয়া হয়েছিল, অবশ্যই আল্লাহর সাহায্য নিকটেই।
(2:215)
یَسْــٴَـلُوْنَكَ مَا ذَا یُنْفِقُوْنَؕ قُلْ مَاۤ اَنْفَقْتُمْ مِّنْ خَیْرٍ فَلِلْوَالِدَیْنِ وَ الْاَقْرَبِیْنَ وَ الْیَتٰمٰى وَ الْمَسٰكِیْنِ وَ ابْنِ السَّبِیْلِؕ وَ مَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَیْرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: يَسْأَلُونَكَ = তোমাকেতারাপ্রশ্নকরে, مَاذَا = কি, يُنْفِقُونَ = ব্যয়করবেতারা, قُلْ = তুমিবলো, مَا = যা, أَنْفَقْتُمْ = তোমরাব্যয়কর, مِنْ = হতে, خَيْرٍ = ধন-সম্পদ, فَلِلْوَالِدَيْنِ = তাপিতা-মাতারজন্যে(তবে), وَالْأَقْرَبِينَ = এবংআত্মীয়-স্বজনদের, وَالْيَتَامَىٰ = ওইয়াতীমদের, وَالْمَسَاكِينِ = ওঅভাবগ্রস্তদের, وَابْنِ = ও, السَّبِيلِ = মুসাফিরদের(পথেরজন্যব্যয়করবে), وَمَا = এবংযাকিছু, تَفْعَلُوا = তোমরাকর, مِنْ = থেকে, خَيْرٍ = কল্যাণ, فَإِنَّ = নিশ্চয়ইতবেই, اللَّهَ = আল্লাহ, بِهِ = তাসম্পর্কে, عَلِيمٌ = খুবঅবহিত,
অনুবাদ: লোকেরা জিজ্ঞেস করছে, আমরা কি ব্যয় করবো? জবাব দাও, যে অর্থই তোমরা ব্যয় কর না কেন তা নিজেদের পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকিন ও মুসাফিরদের জন্য ব্যয় করো। আর যে সৎকাজই তোমরা করবে সে সম্পর্কে আল্লাহ অবগত হবেন।
(2:216)
كُتِبَ عَلَیْكُمُ الْقِتَالُ وَ هُوَ كُرْهٌ لَّكُمْۚ وَ عَسٰۤى اَنْ تَكْرَهُوْا شَیْــٴًـا وَّ هُوَ خَیْرٌ لَّكُمْۚ وَ عَسٰۤى اَنْ تُحِبُّوْا شَیْــٴًـا وَّ هُوَ شَرٌّ لَّكُمْؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ وَ اَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ۠
শব্দার্থ: كُتِبَ = ফরজকরাহল, عَلَيْكُمُ = তোমাদেরওপর, الْقِتَالُ = যুদ্ধ, وَهُوَ = অথচতা, كُرْهٌ = অপ্রিয়, لَكُمْ = তোমাদেরকাছে, وَعَسَىٰ = কিন্তুহতেপারে, أَنْ = যে, تَكْرَهُوا = তোমরাঅপছন্দকর, شَيْئًا = কোনোজিনিস, وَهُوَ = অথচতা, خَيْرٌ = কল্যাণকর, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, وَعَسَىٰ = আবারহতেপারে, أَنْ = যে, تُحِبُّوا = তোমরাপছন্দকর, شَيْئًا = কোনোজিনিস, وَهُوَ = অথচতা, شَرٌّ = অকল্যাণকর, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يَعْلَمُ = জানেন, وَأَنْتُمْ = কিন্তুতোমরা, لَا = না, تَعْلَمُونَ = জান,
অনুবাদ: তোমাদের যুদ্ধ করার হুকুম দেয়া হয়েছে এবং তা তোমাদের কাছে অপ্রীতিকর। হতে পারে কোন জিনিস তোমাদের কাছে অপ্রীতিকর অথচ তা তোমাদের জন্য ভালো। আবার হতে পারে কোন জিনিস তোমরা পছন্দ করো অথচ তা তোমাদের জন্য খারাপ। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।
(2:217)
یَسْــٴَـلُوْنَكَ عَنِ الشَّهْرِ الْحَرَامِ قِتَالٍ فِیْهِؕ قُلْ قِتَالٌ فِیْهِ كَبِیْرٌؕ وَ صَدٌّ عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ كُفْرٌۢ بِهٖ وَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِۗ وَ اِخْرَاجُ اَهْلِهٖ مِنْهُ اَكْبَرُ عِنْدَ اللّٰهِۚ وَ الْفِتْنَةُ اَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِؕ وَ لَا یَزَالُوْنَ یُقَاتِلُوْنَكُمْ حَتّٰى یَرُدُّوْكُمْ عَنْ دِیْنِكُمْ اِنِ اسْتَطَاعُوْاؕ وَ مَنْ یَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِیْنِهٖ فَیَمُتْ وَ هُوَ كَافِرٌ فَأُولَٰئِكَ حَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِۚ وَ أُولَٰئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ
শব্দার্থ: يَسْأَلُونَكَ = তোমাকেপ্রশ্নকরেতারা, عَنِ = সম্পর্কে, الشَّهْرِ = মাসে, الْحَرَامِ = নিষিদ্ধ, قِتَالٍ = যুদ্ধকরা, فِيهِ = তারমধ্যে, قُلْ = তুমিবলো, قِتَالٌ = যুদ্ধকরা, فِيهِ = তারমধ্যে, كَبِيرٌ = বড়(পাপ), وَصَدٌّ = কিন্তুবাধাদেওয়া, عَنْ = হতে, سَبِيلِ = পথ, اللَّهِ = আল্লাহর, وَكُفْرٌ = ওঅস্বীকারকরা, بِهِ = তারপ্রতি, وَالْمَسْجِدِ = ওমসজিদে, الْحَرَامِ = হারামে(যেতেবাধাদান), وَإِخْرَاجُ = ওবেরকরেদেওয়া, أَهْلِهِ = তারবাসিন্দাদেরকে, مِنْهُ = তাথেকে, أَكْبَرُ = অনেকবড়(পাপ), عِنْدَ = কাছে, اللَّهِ = আল্লাহর, وَالْفِتْنَةُ = এবংবিপর্যয়(সৃষ্টিকরা), أَكْبَرُ = অনেকবড়পাপ, مِنَ = চেয়েও, الْقَتْلِ = হত্যার, وَلَا = এবংনা, يَزَالُونَ = তারাথামবে(অর্থাৎসর্বদাই), يُقَاتِلُونَكُمْ = তোমাদেরসাথেযুদ্ধকরবে, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يَرُدُّوكُمْ = তোমাদেরকেফিরাতেপারবে, عَنْ = হতে, دِينِكُمْ = তোমাদেরদ্বীন, إِنِ = যদি, اسْتَطَاعُوا = তারাকরতেপারে, وَمَنْ = এবংযেকেউ, يَرْتَدِدْ = ফিরেযাবে, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যথেকে, عَنْ = হতে, دِينِهِ = তারদ্বীন, فَيَمُتْ = অতঃপরমারাযাবে, وَهُوَ = এঅবস্থায়যেসে, كَافِرٌ = কাফের, فَأُولَٰئِكَ = তাহলেঐসবলোকদের, حَبِطَتْ = নষ্টহয়েযাবে, أَعْمَالُهُمْ = তাদেরসবকাজ-কর্ম, فِي = মধ্যে, الدُّنْيَا = পৃথিবীর, وَالْآخِرَةِ = ওপরকালের, وَأُولَٰئِكَ = এবংঐসবলোক, أَصْحَابُ = অধিবাসীহবে, النَّارِ = আগুনের, هُمْ = তারাই, فِيهَا = তারমধ্যে, خَالِدُونَ = চিরস্থায়ীহবে,
অনুবাদ: লোকেরা তোমাকে হারাম মাসে যুদ্ধ করার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছে। বলে দাওঃ ঐ মাসে যুদ্ধ করা অত্যন্ত খারাপ কাজ। কিন্তু আল্লাহর পথ থেকে লোকদেরকে বিরত রাখা, আল্লাহর সাথে কুফরী করা, মসজিদে হারামের পথ আল্লাহ – বিশ্বাসীদের জন্য বন্ধ করে দেয়া এবং হারাম শরীফের অধিবাসীদেরকে সেখান থেকে বের করে দেয়া আল্লাহর নিকট তার চাইতেও বেশী খারাপ কাজ। আর ফিত্না হত্যাকান্ডের চাইতেও গুরুতর অপরাধ। তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেই যাবে, এমন কি তাদের ক্ষমতায় কুলোলে তারা তোমাদেরকে এই দ্বীন থেকেও ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। (আর একথা খুব ভালোভাবেই জেনে রাখো), তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তিই এই দ্বীন থেকে ফিরে যাবে এবং কাফের অবস্থায় মারা যাবে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে উভয় স্থানে তার সমস্ত কর্মকান্ড ব্যর্থ হয়ে যাবে। এই ধরনের সমস্ত লোকই জাহান্নামের বাসিন্দা এবং তারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।
(2:218)
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ الَّذِیْنَ هَاجَرُوْا وَ جٰهَدُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِۙ أُولَٰئِكَ یَرْجُوْنَ رَحْمَتَ اللّٰهِؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, وَالَّذِينَ = ওযারা, هَاجَرُوا = হিজরতকরেছে, وَجَاهَدُوا = ওজিহাদকরেছে, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, أُولَٰئِكَ = ঐসবলোকেরা, يَرْجُونَ = আশাকরে, رَحْمَتَ = দয়ার, اللَّهِ = আল্লাহর, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, غَفُورٌ = বড়ক্ষমাশীল, رَحِيمٌ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: বিপরীত পক্ষে যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহর পথে বাড়ি-ঘর ত্যাগ করেছে ও জিহাদ করেছে তারা সঙ্গতভাবেই আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। আর আল্লাহ তাদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন এবং তাদের প্রতি নিজের করুণাধারা বর্ষণ করবেন।
(2:219)
یَسْــٴَـلُوْنَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَ الْمَیْسِرِؕ قُلْ فِیْهِمَاۤ اِثْمٌ كَبِیْرٌ وَّ مَنَافِعُ لِلنَّاسِ٘ وَ اِثْمُهُمَاۤ اَكْبَرُ مِنْ نَّفْعِهِمَاؕ وَ یَسْــٴَـلُوْنَكَ مَا ذَا یُنْفِقُوْنَ۬ؕ قُلِ الْعَفْوَؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ لَكُمُ الْاٰیٰتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُوْنَۙ
শব্দার্থ: يَسْأَلُونَكَ = তোমাকেতারাজিজ্ঞাসাকরে, عَنِ = সম্পর্কে, الْخَمْرِ = মদ(পান), وَالْمَيْسِرِ = ওজুয়া(খেলা), قُلْ = তুমিবলো, فِيهِمَا = দু’টিরমধ্যে(রয়েছে), إِثْمٌ = পাপ(ক্ষতি), كَبِيرٌ = বড়, وَمَنَافِعُ = ওউপকারও(কিছু), لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্য, وَإِثْمُهُمَا = কিন্তুসেদু’টিরপাপ(ক্ষতি), أَكْبَرُ = অধিকতর(ক্ষতিকর), مِنْ = চেয়েও, نَفْعِهِمَا = দু’টিরউপকারের, وَيَسْأَلُونَكَ = এবংতোমাকেতারাপ্রশ্নকরে, مَاذَا = কী, يُنْفِقُونَ = তারাব্যয়করবে, قُلِ = তুমিবলো, الْعَفْوَ = (যা)উদ্বৃত্ত, كَذَٰلِكَ = এভাবে, يُبَيِّنُ = বর্ণনাকরেন, اللَّهُ = আল্লাহ, لَكُمُ = তোমাদেরজন্যে, الْآيَاتِ = নিদর্শনবলী, لَعَلَّكُمْ = আশাকরাযায়তোমরা, تَتَفَكَّرُونَ = চিন্তা-ভাবনাকরবে,
অনুবাদ: তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছেঃ মদও জুয়ার ব্যাপারে নির্দেশ কি? বলে দাওঃ ঐ দু’টির মধ্যে বিরাট ক্ষতিকর বিষয় রয়েছে যদিও লোকদের জন্য তাতে কিছুটা উপকারিতাও আছে, কিন্তু তাদের উপকারিতার চেয়ে গোনাহ অনেক বেশী। তোমাকে জিজ্ঞেস করছেঃ আমরা আল্লাহর পথে কি ব্যয় করবো? বলে দাওঃ যা কিছু তোমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য দ্ব্যর্থহীন সুস্পষ্ট বিধান বর্ণনা করেন, হয়তো তোমরা চিন্তা করবে
(2:220)
فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِؕ وَ یَسْــٴَـلُوْنَكَ عَنِ الْیَتٰمٰىؕ قُلْ اِصْلَاحٌ لَّهُمْ خَیْرٌؕ وَ اِنْ تُخَالِطُوْهُمْ فَاِخْوَانُكُمْؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ الْمُفْسِدَ مِنَ الْمُصْلِحِؕ وَ لَوْ شَآءَ اللّٰهُ لَاَعْنَتَكُمْؕ اِنَّ اللّٰهَ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ
শব্দার্থ: فِي = সম্পর্কে, الدُّنْيَا = ইহকাল, وَالْآخِرَةِ = ওপরকাল, وَيَسْأَلُونَكَ = এবংতোমাকেতারাপ্রশ্নকরে, عَنِ = (আচরণ)সম্পর্কে, الْيَتَامَىٰ = ইয়াতীমদের(সাথে), قُلْ = তুমিবলো, إِصْلَاحٌ = সুব্যবস্থাকরা, لَهُمْ = তাদেরজন্যে, خَيْرٌ = উত্তম, وَإِنْ = এবংযদি, تُخَالِطُوهُمْ = তাদেরসাথে(খরচপত্রে)সংমিশ্রণকর(দোষনেই), فَإِخْوَانُكُمْ = তারাতাহলেতোমাদেরভাই, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يَعْلَمُ = জানেন, الْمُفْسِدَ = অনিষ্টকারীকে(পৃথককরতে), مِنَ = হতে, الْمُصْلِحِ = হিতকারী, وَلَوْ = এবংযদি, شَاءَ = চাইতেন, اللَّهُ = আল্লাহ, لَأَعْنَتَكُمْ = তোমাদেরকেঅবশ্যইকষ্টেফেলতেপারতেন, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, عَزِيزٌ = পরাক্রমশালী, حَكِيمٌ = মহাবিজ্ঞ,
অনুবাদ: দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানের জন্য । জিজ্ঞেস করছেঃ এতিমদের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হবে? বলে দাওঃ যে কর্মপদ্ধতি তাদের জন্য কল্যাণকর তাই অবলম্বন করা ভালো। তোমরা যদি তোমাদের নিজেদের ও তাদের খরচপাতি ও থাকা-খাওয়া যৌথ ব্যবস্থাপনায় রাখো তাহলে তাতে কোন ক্ষতি নেই। তারা তো তোমাদের ভাই। অনিষ্টকারী ও হীতকারী উভয়ের অবস্থা আল্লাহ জানেন। আল্লাহ চাইলে এ ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কঠোর ব্যবহার করতেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতা ও পরাক্রমের অধিকারী হবার সাথে সাথে জ্ঞান ও হিকমতের অধিকারী।
(2:221)
وَ لَا تَنْكِحُوا الْمُشْرِكٰتِ حَتّٰى یُؤْمِنَّؕ وَ لَاَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَیْرٌ مِّنْ مُّشْرِكَةٍ وَّ لَوْ اَعْجَبَتْكُمْۚ وَ لَا تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِیْنَ حَتّٰى یُؤْمِنُوْاؕ وَ لَعَبْدٌ مُّؤْمِنٌ خَیْرٌ مِّنْ مُّشْرِكٍ وَّ لَوْ اَعْجَبَكُمْؕ أُولَٰئِكَ یَدْعُوْنَ اِلَى النَّارِ ۚۖ وَ اللّٰهُ یَدْعُوْۤا اِلَى الْجَنَّةِ وَ الْمَغْفِرَةِ بِاِذْنِهٖۚ وَ یُبَیِّنُ اٰیٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ یَتَذَكَّرُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَلَا = এবংনা, تَنْكِحُوا = তোমরাবিয়েকরো, الْمُشْرِكَاتِ = মুশরিকনারীদেরকে, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يُؤْمِنَّ = ঈমানআনে, وَلَأَمَةٌ = এবংঅবশ্যইক্রীতদাসী, مُؤْمِنَةٌ = মুমিননারী, خَيْرٌ = উত্তম, مِنْ = থেকে, مُشْرِكَةٍ = মুশরিকনারী, وَلَوْ = এবংযদিও, أَعْجَبَتْكُمْ = তোমাদেরমুগ্ধকরেসে, وَلَا = এবংনা, تُنْكِحُوا = তোমরাবিয়েদিও(মুসলিমনারীকে), الْمُشْرِكِينَ = মুশরিকপুরুষদের(সাথে), حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يُؤْمِنُوا = তারাঈমানআনে, وَلَعَبْدٌ = এবংঅবশ্যইক্রীতদাস, مُؤْمِنٌ = মু’মিন, خَيْرٌ = উত্তম, مِنْ = অপেক্ষা, مُشْرِكٍ = মুশরিকপুরুষ, وَلَوْ = এবংযদিও, أَعْجَبَكُمْ = তোমাদেরমুগ্ধকরেসে, أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, يَدْعُونَ = ডাকে(তোমাদেরকে), إِلَى = দিকে, النَّارِ = (আগুনের), وَاللَّهُ = আরআল্লাহ, يَدْعُو = ডাকেন, إِلَى = দিকে, الْجَنَّةِ = জান্নাতের, وَالْمَغْفِرَةِ = ওক্ষমার, بِإِذْنِهِ = তাঁরঅনুমতিমাধ্যমে(ওঅনুগ্রহে), وَيُبَيِّنُ = এবংস্পষ্টবর্ণনাকরেন, آيَاتِهِ = তাঁরনিদর্শনাবলী, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্য, لَعَلَّهُمْ = আশাকরাযায়তারা, يَتَذَكَّرُونَ = শিক্ষাগ্রহণকরবে,
অনুবাদ: মুশরিক নারীদেরকে কখনো বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। একটি সম্ভ্রান্ত মুশরিক নারী তোমাদের মনহরণ করলেও একটি মু’মিন দাসী তার চেয়ে ভালো। আর মুশরিক পুরুষদের সাথে নিজেদের নারীদের কখনো বিয়ে দিয়ো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। একজন সম্ভ্রান্ত মুশরিক পুরুষ তোমাদের মুগ্ধ করলেও একজন মুসলিম দাস তার চেয়ে ভালো। তারা তোমাদের আহবান জানাচ্ছে আগুনের দিকে আর আল্লাহ নিজ ইচ্ছায় তোমাদেরকে আহবান জানাচ্ছেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। তিনি নিজের বিধান সুস্পষ্ট ভাষায় লোকদের সামনে বিবৃত করেন। আশা করা যায়, তারা শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণ করবে।
(2:222)
وَ یَسْــٴَـلُوْنَكَ عَنِ الْمَحِیْضِؕ قُلْ هُوَ اَذًىۙ فَاعْتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الْمَحِیْضِۙ وَ لَا تَقْرَبُوْهُنَّ حَتّٰى یَطْهُرْنَۚ فَاِذَا تَطَهَّرْنَ فَاْتُوْهُنَّ مِنْ حَیْثُ اَمَرَكُمُ اللّٰهُؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیْنَ وَ یُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِیْنَ
শব্দার্থ: وَيَسْأَلُونَكَ = এবংতোমাকেতারাপ্রশ্নকরে, عَنِ = সম্পর্কে, الْمَحِيضِ = (রজঃস্রাব), قُلْ = তুমিবলো, هُوَ = তা, أَذًى = অশুচিকষ্ট, فَاعْتَزِلُوا = তাইতোমরাদূরেথাক, النِّسَاءَ = স্ত্রীদের(থেকে), فِي = (মধ্যে), الْمَحِيضِ = (রজঃস্রাব)কালে, وَلَا = এবংনা, تَقْرَبُوهُنَّ = তাদেরনিকটেযেয়ো(স্ত্রীমিলনে), حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يَطْهُرْنَ = তারাপবিত্রহয়(রজঃস্রাববন্ধহয়), فَإِذَا = অতঃপরযখন, تَطَهَّرْنَ = তারাপবিত্রহয়(উত্তমরূপেগোসলকরে), فَأْتُوهُنَّ = তখনতাদেরকাছেআসো, مِنْ = (থেকে), حَيْثُ = যেমনভাবে, أَمَرَكُمُ = তোমাদেরকেনির্দেশদিয়েছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, يُحِبُّ = ভালবাসেন, التَّوَّابِينَ = তওবাকারীদেরকে, وَيُحِبُّ = ওভালবাসেন, الْمُتَطَهِّرِينَ = পবিত্রতাঅবলম্বনকারীদের,
অনুবাদ: তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, হায়েয সম্পর্কে নির্দেশ কি? বলে দাওঃ সেটি একটি অশুচিকর ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থা। এ সময় স্ত্রীদের থেকে দূরে থাকো এবং তারা পাক-সাফ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ধারে কাছেও যেয়ো না। তারপর যখন তারা পাক-পবিত্র হয়ে যায়, তাদের কাছে যাও যেভাবে যাবার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা অসৎকাজ থেকে বিরত থাকে ও পবিত্রতা অবলম্বন করে।
(2:223)
نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ۪ فَاْتُوْا حَرْثَكُمْ اَنّٰى شِئْتُمْ٘ وَ قَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّكُمْ مُّلٰقُوْهُؕ وَ بَشِّرِ الْمُؤْمِنِیْنَ
শব্দার্থ: نِسَاؤُكُمْ = তোমাদেরস্ত্রীরা, حَرْثٌ = শস্যক্ষেত্র, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, فَأْتُوا = অতএবতোমরাযাও, حَرْثَكُمْ = তোমাদেরশস্যক্ষেত্রে, أَنَّىٰ = যেভাবে, شِئْتُمْ = তোমরাচাও, وَقَدِّمُوا = এবংতোমরাআগেপাঠাও, لِأَنْفُسِكُمْ = তোমাদেরনিজেদেরজন্যে, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَاعْلَمُوا = এবংজেনেরাখোতোমরা, أَنَّكُمْ = তোমরাযে, مُلَاقُوهُ = তাঁরসাক্ষাৎকারী(হবে), وَبَشِّرِ = এবংসুসংবাদদাও, الْمُؤْمِنِينَ = মু’মিনদেরকে,
অনুবাদ: তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের কৃষিক্ষেত। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের কৃষিক্ষেতে যাও। তবে নিজেদের ভবিষ্যতের চিন্তা করো। এবং আল্লাহর অসন্তোষ থেকে দূরে থাকো। একদিন তোমাদের অবশ্যি তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে হবে, একথা ভালোভাবেই জেনে রাখো। আর হে নবী! যারা তোমার বিধান মেনে নেয় তাদেরকে সাফল্য ও সৌভাগ্যের সুখবর শুনিয়ে দাও।
(2:224)
وَ لَا تَجْعَلُوا اللّٰهَ عُرْضَةً لِّاَیْمَانِكُمْ اَنْ تَبَرُّوْا وَ تَتَّقُوْا وَ تُصْلِحُوْا بَیْنَ النَّاسِؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: وَلَا = এবংনা, تَجْعَلُوا = তোমরাব্যবহারকরো, اللَّهَ = আল্লাহর(নামকে), عُرْضَةً = লক্ষ্যবস্তুহিসেবে, لِأَيْمَانِكُمْ = তোমাদেরশপথেরজন্য, أَنْ = যে(না), تَبَرُّوا = তোমরাসৎকাজকরবে, وَتَتَّقُوا = ও(না)তোমরাআত্মসংযমকরবে, وَتُصْلِحُوا = ও(না)তোমরাশান্তিস্থাপনকরবে, بَيْنَ = মাঝে, النَّاسِ = মানুষের, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, سَمِيعٌ = সবকিছুশুনেন, عَلِيمٌ = সবকিছুজানেন,
অনুবাদ: যে শপথের উদ্দেশ্য হয় সৎকাজ, তাকওয়া ও মানব কল্যাণমূলক কাজ থেকে বিরত থাকা, তেমন ধরণের শপথবাক্য উচ্চারণ করার জন্য আল্লাহর নাম ব্যবহার করো না। আল্লাহ তোমাদের সমস্ত কথা শুনছেন এবং তিনি সবকিছু জানেন।
(2:225)
لَا یُؤَاخِذُكُمُ اللّٰهُ بِاللَّغْوِ فِیْۤ اَیْمَانِكُمْ وَ لٰكِنْ یُّؤَاخِذُكُمْ بِمَا كَسَبَتْ قُلُوْبُكُمْؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ حَلِیْمٌ
শব্দার্থ: لَا = না, يُؤَاخِذُكُمُ = তোমাদেরকেধরবেন, اللَّهُ = আল্লাহ, بِاللَّغْوِ = অর্থহীন(শপথের)জন্য, فِي = মধ্যে, أَيْمَانِكُمْ = তোমাদেরশপথগুলোর, وَلَٰكِنْ = কিন্তু, يُؤَاخِذُكُمْ = তোমাদেরকেতিনিধরবেন, بِمَا = একারণেযা, كَسَبَتْ = (অর্জনকরেছে), قُلُوبُكُمْ = তোমাদেরঅন্তরগুলো, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, غَفُورٌ = বড়ক্ষমাশীল, حَلِيمٌ = বড়সহনশীল,
অনুবাদ: তোমরা অনিচ্ছায় যেসব অর্থহীন শপথ করে ফেলো সেগুলোর জন্য আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন না, কিন্তু আন্তরিকতার সাথে তোমরা যেসব শপথ গ্রহণ করো সেগুলোর জন্য অবশ্যি পাকড়াও করবেন। আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও সহিষ্ণু।
(2:226)
لِلَّذِیْنَ یُؤْلُوْنَ مِنْ نِّسَآئِهِمْ تَرَبُّصُ اَرْبَعَةِ اَشْهُرٍۚ فَاِنْ فَآءُوْ فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
শব্দার্থ: لِلَّذِينَ = (তাদের)জন্যযারা, يُؤْلُونَ = (সম্পর্কনারাখার)শপথকরে, مِنْ = হতে, نِسَائِهِمْ = তাদেরস্ত্রীদের, تَرَبُّصُ = অপেক্ষাকরবে, أَرْبَعَةِ = চার, أَشْهُرٍ = মাস, فَإِنْ = অতঃপরযদি, فَاءُوا = তারাফিরেআসে, فَإِنَّ = নিশ্চয়ইতবে, اللَّهَ = আল্লাহ, غَفُورٌ = ক্ষমাশীল, رَحِيمٌ = পরমদয়ালু,
অনুবাদ: যেসব লোক নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সম্পর্ক না রাখার কসম খেয়ে বসে তাদের জন্য রয়েছে চার মাসের অবকাশ। যদি তারা রুজু করে (ফিরে আসে) তাহলে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
(2:227)
وَ اِنْ عَزَمُوا الطَّلَاقَ فَاِنَّ اللّٰهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: وَإِنْ = এবংযদি, عَزَمُوا = তারাসংকল্পকরে, الطَّلَاقَ = তালাকের, فَإِنَّ = তবেনিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, سَمِيعٌ = সবকিছুশুনেন, عَلِيمٌ = সবকিছুজানেন,
অনুবাদ: আর যদি তারা তালাক দেবার সংকল্প করে তাহলে জেনে রাখো আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন।
(2:228)
وَ الْمُطَلَّقٰتُ یَتَرَبَّصْنَ بِاَنْفُسِهِنَّ ثَلٰثَةَ قُرُوْٓءٍؕ وَ لَا یَحِلُّ لَهُنَّ اَنْ یَّكْتُمْنَ مَا خَلَقَ اللّٰهُ فِیْۤ اَرْحَامِهِنَّ اِنْ كُنَّ یُؤْمِنَّ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِؕ وَ بُعُوْلَتُهُنَّ اَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِیْ ذٰلِكَ اِنْ اَرَادُوْۤا اِصْلَاحًاؕ وَ لَهُنَّ مِثْلُ الَّذِیْ عَلَیْهِنَّ بِالْمَعْرُوْفِ۪ وَ لِلرِّجَالِ عَلَیْهِنَّ دَرَجَةٌؕ وَ اللّٰهُ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ۠
শব্দার্থ: وَالْمُطَلَّقَاتُ = এবংতালাকপ্রাপ্তাস্ত্রীরা, يَتَرَبَّصْنَ = অপেক্ষাকরবে, بِأَنْفُسِهِنَّ = তাদেরনিজেদেরজন্যে, ثَلَاثَةَ = তিন, قُرُوءٍ = রজঃস্রাবকাল(পর্যন্ত), وَلَا = এবংনা, يَحِلُّ = বৈধহবে, لَهُنَّ = তাদেরজন্যে, أَنْ = যে, يَكْتُمْنَ = তারাগোপনকরবে, مَا = যা, خَلَقَ = সৃষ্টিকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, فِي = মধ্যে, أَرْحَامِهِنَّ = তাদেরগর্ভাশয়ে, إِنْ = যদি, كُنَّ = থাকেতারা, يُؤْمِنَّ = ঈমানএনে, بِاللَّهِ = আল্লাহরউপর, وَالْيَوْمِ = ওদিনে, الْآخِرِ = আখেরাতের(উপর), وَبُعُولَتُهُنَّ = এবংতাদেরস্বামীরা, أَحَقُّ = বেশিঅধিকারী, بِرَدِّهِنَّ = তাদেরকেফিরিয়েনেওয়ারব্যাপারে, فِي = ক্ষেত্রে, ذَٰلِكَ = এই, إِنْ = যদি, أَرَادُوا = তারাচায়, إِصْلَاحًا = আপোষনিষ্পত্তি(করতে), وَلَهُنَّ = এবংতাদের(অর্থাৎস্ত্রীদেরঅধিকারআছে), مِثْلُ = যেমন, الَّذِي = তার(অর্থাৎস্বামীর), عَلَيْهِنَّ = তাদেরউপর(অধিকারআছে), بِالْمَعْرُوفِ = ন্যায়সংগতভাবে, وَلِلرِّجَالِ = এবংপুরুষদেরজন্যে(আছে), عَلَيْهِنَّ = তাদেরউপর, دَرَجَةٌ = একটিমর্যাদাআছে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, عَزِيزٌ = মহাপরাক্রমশালী, حَكِيمٌ = মহাবিজ্ঞ,
অনুবাদ: তালাক প্রাপ্তাগণ তিনবার মাসিক ঋতুস্রাব পর্যন্ত নিজেদেরকে বিরত রাখবে। আর আল্লাহ তাদের গর্ভাশয়ে যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তাকে গোপন করা তাদের জন্য বৈধ নয়। তাদের কখনো এমনটি করা উচিত নয়, যদি তারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী হয়, তাদের স্বামীরা পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনে প্রস্তুত হয়, তাহলে তারা এই অবকাশ কালের মধ্যে তাদেরকে নিজের স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নেবার অধিকারী হবে। নারীদের জন্যও ঠিক তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে যেমন পুরুষদের অধিকার আছে তাদের ওপর। তবে পুরুষদের তাদের ওপর একটি মর্যাদা আছে। আর সবার ওপরে আছেন আল্লাহ সর্বাধিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী, বিচক্ষণ ও জ্ঞানী।
(2:229)
اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ۪ فَاِمْسَاكٌۢ بِمَعْرُوْفٍ اَوْ تَسْرِیْحٌۢ بِاِحْسَانٍؕ وَ لَا یَحِلُّ لَكُمْ اَنْ تَاْخُذُوْا مِمَّاۤ اٰتَیْتُمُوْهُنَّ شَیْــٴًـا اِلَّاۤ اَنْ یَّخَافَاۤ اَلَّا یُقِیْمَا حُدُوْدَ اللّٰهِؕ فَاِنْ خِفْتُمْ اَلَّا یُقِیْمَا حُدُوْدَ اللّٰهِۙ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِمَا فِیْمَا افْتَدَتْ بِهٖؕ تِلْكَ حُدُوْدُ اللّٰهِ فَلَا تَعْتَدُوْهَاۚ وَ مَنْ یَّتَعَدَّ حُدُوْدَ اللّٰهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ
শব্দার্থ: الطَّلَاقُ = তালাক, مَرَّتَانِ = দুইবার, فَإِمْسَاكٌ = অতঃপররেখেদেওয়া, بِمَعْرُوفٍ = ন্যায়সংগতভাবে, أَوْ = অথবা, تَسْرِيحٌ = মুক্তকরেদেয়া, بِإِحْسَانٍ = সদয়ভাবে(উত্তম), وَلَا = এবংনা, يَحِلُّ = বৈধহবে, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, أَنْ = যে, تَأْخُذُوا = তোমরাগ্রহণকরবে, مِمَّا = তাথেকেযা, آتَيْتُمُوهُنَّ = তোমরাদিয়েছতাদেরকে, شَيْئًا = কোনোকিছুই, إِلَّا = এছাড়া, أَنْ = যদি, يَخَافَا = দু’জনেভয়করে, أَلَّا = নাযে, يُقِيمَا = দু’জনেরক্ষাকরতেপারবে, حُدُودَ = সীমারেখাগুলো, اللَّهِ = আল্লাহর, فَإِنْ = যদিতাই, خِفْتُمْ = তোমরাভয়করো, أَلَّا = যেনা, يُقِيمَا = দুজনেরক্ষাকরতেপারবে, حُدُودَ = সীমারেখাগুলোকে, اللَّهِ = আল্লাহর, فَلَا = নেইতবে, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْهِمَا = তাদেরদুজনেরউপর, فِيمَا = এরমধ্যেযা, افْتَدَتْ = সেনিষ্কৃতিচাইলে(স্ত্রীবিচ্ছেদঘটায়), بِهِ = তারবিনিময়ে, تِلْكَ = এটা, حُدُودُ = সীমারেখা, اللَّهِ = আল্লাহর, فَلَا = অতএবনা, تَعْتَدُوهَا = তাতোমরালংঘনকরো, وَمَنْ = এবংযে, يَتَعَدَّ = লংঘনকরবে, حُدُودَ = সীমারেখাগুলোকে, اللَّهِ = আল্লাহর, فَأُولَٰئِكَ = ঐসবলোকতাহলে, هُمُ = তারাই, الظَّالِمُونَ = অত্যাচারী(হবে),
অনুবাদ: তালাক দু’বার। তারপর সোজাসুজি স্ত্রীকে রেখে দিবে অথবা ভালোভাবে বিদায় করে দেবে। আর তাদেরকে যা কিছু দিয়েছো বিদায় করার সময় তা থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য বৈধ নয়। তবে এটা স্বতন্ত্র, স্বামী-স্ত্রী যদি আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না বলে আশঙ্কা করে, তাহলে এহেন অবস্থায় যদি তোমরা আশঙ্কা করো, তারা উভয়ে আল্লাহ নির্ধারিত সীমার মধ্যে অবস্থান করতে পারবে না, তাহলে স্ত্রীর কিছু বিনিময় দিয়ে তার স্বামী থেকে বিচ্ছেদ লাভ করায় কোন ক্ষতি নেই। এগুলো আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা, এগুলো অতিক্রম করো না। মূলত যারাই আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা অতিক্রম করবে তারাই জালেম।
(2:230)
فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهٗ مِنْۢ بَعْدُ حَتّٰى تَنْكِحَ زَوْجًا غَیْرَهٗؕ فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِمَاۤ اَنْ یَّتَرَاجَعَاۤ اِنْ ظَنَّاۤ اَنْ یُّقِیْمَا حُدُوْدَ اللّٰهِؕ وَ تِلْكَ حُدُوْدُ اللّٰهِ یُبَیِّنُهَا لِقَوْمٍ یَّعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: فَإِنْ = অতঃপরযদি, طَلَّقَهَا = তাকেসেতালাকদেয়, فَلَا = নাতবে, تَحِلُّ = (বৈধ)হবে, لَهُ = তারজন্য, مِنْ = থেকে, بَعْدُ = পরে(তালাকের), حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, تَنْكِحَ = সেবিয়েকরবে, زَوْجًا = (অন্য)স্বামীকে, غَيْرَهُ = সেছাড়া, فَإِنْ = অতঃপরযদি, طَلَّقَهَا = সেতাকেতালাকদেয়, فَلَا = নেইতবে, جُنَاحَ = পাপ, عَلَيْهِمَا = তাদেরদুজনেরউপর, أَنْ = যে, يَتَرَاجَعَا = পরস্পরেফিরেআসবে, إِنْ = যদি, ظَنَّا = দুজনেইমনেকরে, أَنْ = যে, يُقِيمَا = তারাদুজনেরক্ষাকরতেপারবে, حُدُودَ = সীমারেখা, اللَّهِ = আল্লাহর, وَتِلْكَ = এবংএটা, حُدُودُ = সীমারেখা, اللَّهِ = আল্লাহর, يُبَيِّنُهَا = তাস্পষ্টবর্ণনাকরেনতিনি, لِقَوْمٍ = সম্প্রদায়েরজন্যে, يَعْلَمُونَ = (যারা)জানে,
অনুবাদ: অতঃপর যদি (দু’বার তালাক দেবার পর স্বামী তার স্ত্রীকে তৃতীয় বার) তালাক দেয়, তাহলে ঐ স্ত্রী তার জন্য হালাল হবে না। তবে যদি দ্বিতীয় কোন ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে হয় এবং সে তাকে তালাক দেয়, তাহলে এক্ষেত্রে প্রথম স্বামী এবং এই মহিলা যদি আল্লাহর সীমারেখার মধ্যে অবস্থান করতে পারবে বলে মনে করে তাহলে তাদের উভয়ের জন্য পরস্পরের দিকে ফিরে আসায় কোন ক্ষতি নেই। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা। (এগুলো ভঙ্গ করার পরিণতি) যারা জানে তাদের হিদায়াতের জন্য এগুলো সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন।
(2:231)
وَ اِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَاَمْسِكُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ اَوْ سَرِّحُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ ۪ وَّ لَا تُمْسِكُوْهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعْتَدُوْاۚ وَ مَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهٗؕ وَ لَا تَتَّخِذُوْۤا اٰیٰتِ اللّٰهِ هُزُوًا٘ وَّ اذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللّٰهِ عَلَیْكُمْ وَ مَاۤ اَنْزَلَ عَلَیْكُمْ مِّنَ الْكِتٰبِ وَ الْحِكْمَةِ یَعِظُكُمْ بِهٖؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ۠
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, طَلَّقْتُمُ = তোমরাতালাকদাও, النِّسَاءَ = স্ত্রীদেরকে, فَبَلَغْنَ = তারাঅতঃপরপৌঁছে, أَجَلَهُنَّ = তাদেরমেয়াদে, فَأَمْسِكُوهُنَّ = তাদেরকেরেখেদাওতখন, بِمَعْرُوفٍ = ন্যায়সঙ্গতভাবে, أَوْ = অথবা, سَرِّحُوهُنَّ = তাদেরমুক্তকরেদাও, بِمَعْرُوفٍ = ন্যায়সংগতভাবে, وَلَا = এবংনা, تُمْسِكُوهُنَّ = তাদেরকেতোমরাআটকেরেখো, ضِرَارًا = ক্ষতির(উদ্দেশ্যে), لِتَعْتَدُوا = বাড়াবাড়িকরারজন্যে, وَمَنْ = এবংযেকেউ, يَفْعَلْ = করবে, ذَٰلِكَ = এটা, فَقَدْ = তাহলেনিশ্চয়ই, ظَلَمَ = অবিচারকরবে, نَفْسَهُ = তারানিজের(উপর), وَلَا = এবংনা, تَتَّخِذُوا = তোমরাগ্রহণকরো, آيَاتِ = নিদর্শনাবলীকে, اللَّهِ = আল্লাহর, هُزُوًا = ঠাট্টাতামাশারবস্তুহিসেবেহিসেবে, وَاذْكُرُوا = এবংতোমরাস্মরণকরো, نِعْمَتَ = অনুগ্রহকে, اللَّهِ = আল্লাহর, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَمَا = এবংযা, أَنْزَلَ = অবতীর্ণকরেছেন, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, مِنَ = থেকে, الْكِتَابِ = কিতাব, وَالْحِكْمَةِ = ওপ্রজ্ঞা, يَعِظُكُمْ = তোমাদেরকেতিনিউপদেশদিচ্ছেন, بِهِ = তাদিয়ে, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরাখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, بِكُلِّ = সবসম্পর্কে, شَيْءٍ = কিছুর, عَلِيمٌ = খুবঅবহিত,
অনুবাদ: আর যখন তোমরা স্ত্রীদের তালাক দিয়ে দাও এবং তাদের ইদ্দত পূর্ণ হবার পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন হয় সোজাসুজি তাদেরকে রেখে দাও আর নয়তো ভালোভাবে বিদায় করে দাও। নিছক কষ্ট দেবার জন্য তাদেরকে আটকে রেখো না। কারণ এটা হবে বাড়াবাড়ি। আর যে ব্যক্তি এমনটি করবে সে আসলে নিজের ওপর জুলুম করবে। আল্লাহর আয়াতকে খেলা –তামাসায় পরিণত করো না। ভুলে যেয়ো না আল্লাহ তোমাদের কত বড় নিয়ামত দান করেছেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দান করছেন, যে কিতাব ও হিকমাত তিনি তোমাদের ওপর নাযিল করেছেন তাকে মর্যাদা দান করো। আল্লাহকে ভয় করো এবং ভালোভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ সব কথা জানেন।
(2:232)
وَ اِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ اَنْ یَّنْكِحْنَ اَزْوَاجَهُنَّ اِذَا تَرَاضَوْا بَیْنَهُمْ بِالْمَعْرُوْفِؕ ذٰلِكَ یُوْعَظُ بِهٖ مَنْ كَانَ مِنْكُمْ یُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِؕ ذٰلِكُمْ اَزْكٰى لَكُمْ وَ اَطْهَرُؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ وَ اَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِذَا = এবংযখন, طَلَّقْتُمُ = তালাকদাওতোমরা, النِّسَاءَ = স্ত্রীদেরকে, فَبَلَغْنَ = অতঃপরতারাপৌঁছেযায়, أَجَلَهُنَّ = তাদেরমেয়াদে, فَلَا = নাতখন, تَعْضُلُوهُنَّ = তাদেরকেবাধাদিয়ো, أَنْ = যে, يَنْكِحْنَ = তারাবিয়েকরতেচায়, أَزْوَاجَهُنَّ = তাদের(পূর্বের)স্বামীকে, إِذَا = যখন, تَرَاضَوْا = তারাপরস্পরসম্মতহয়, بَيْنَهُمْ = তাদেরমাঝে, بِالْمَعْرُوفِ = ন্যায়সংগতউপায়ে, ذَٰلِكَ = এটা, يُوعَظُ = উপদেশদেয়াহচ্ছে, بِهِ = তারপ্রতি, مَنْ = (তারজন্যে)যেকেউ, كَانَ = হয়, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যথেকে, يُؤْمِنُ = ঈমানএনেথাকে, بِاللَّهِ = আল্লাহরউপর, وَالْيَوْمِ = ওদিনের, الْآخِرِ = আখেরাতের, ذَٰلِكُمْ = এটা, أَزْكَىٰ = শুদ্ধতমপন্থা, لَكُمْ = তোমাদেরজন্যে, وَأَطْهَرُ = ওপবিত্রতম, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يَعْلَمُ = জানেন, وَأَنْتُمْ = আরতোমরা, لَا = না, تَعْلَمُونَ = জান,
অনুবাদ: তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের তালাক দেয়ার পর যখন তারা ইদ্দত পূর্ণ করে নেয় তখন তাদের নিজেদের প্রস্তাবিত স্বামীদের সাথে বিয়ের ব্যাপারে তোমরা বাধা দিয়ো না, যখন তারা প্রচলিত পদ্ধতিতে পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে সম্মত হয়। এ ধরনের পদক্ষেপ কখনো গ্রহণ না করার জন্য তোমাদের উপদেশ দেয়া হচ্ছে, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনে থাকো। এ থেকে বিরত থাকাই তোমাদের জন্য সবচেয়ে পরিমার্জিত ও সর্বাধিক পবিত্র পদ্ধতি। আল্লাহ জানেন কিন্তু তোমরা জানো না।
(2:233)
وَ الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَؕ وَ عَلَى الْمَوْلُوْدِ لَهٗ رِزْقُهُنَّ وَ كِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوْفِؕ لَا تُكَلَّفُ نَفْسٌ اِلَّا وُسْعَهَاۚ لَا تُضَآرَّ وَالِدَةٌۢ بِوَلَدِهَا وَ لَا مَوْلُوْدٌ لَّهٗ بِوَلَدِهٖۗ وَ عَلَى الْوَارِثِ مِثْلُ ذٰلِكَۚ فَاِنْ اَرَادَا فِصَالًا عَنْ تَرَاضٍ مِّنْهُمَا وَ تَشَاوُرٍ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِمَاؕ وَ اِنْ اَرَدْتُّمْ اَنْ تَسْتَرْضِعُوْۤا اَوْلَادَكُمْ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ اِذَا سَلَّمْتُمْ مَّاۤ اٰتَیْتُمْ بِالْمَعْرُوْفِؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ
শব্দার্থ: وَالْوَالِدَاتُ = এবংমায়েরা, يُرْضِعْنَ = স্তন্যপানকরাবে, أَوْلَادَهُنَّ = তাদেরসন্তানদের, حَوْلَيْنِ = দু’বছর, كَامِلَيْنِ = পূর্ণ, لِمَنْ = তারজন্যযে(বাপ), أَرَادَ = চায়, أَنْ = যে, يُتِمَّ = পূর্ণকরবে, الرَّضَاعَةَ = স্তন্যপানকরানোরসময়, وَعَلَى = এবং(দায়িত্বতার)উপর, الْمَوْلُودِ = যারনবজাতক, لَهُ = জন্য, رِزْقُهُنَّ = তাদের(অর্থাৎমাদের)জীবিকা, وَكِسْوَتُهُنَّ = ওতাদেরপোশাকের, بِالْمَعْرُوفِ = ন্যায়সংগতউপায়ে, لَا = না, تُكَلَّفُ = দায়িত্বভারদেওয়াহবে, نَفْسٌ = কাউকে, إِلَّا = এছাড়া, وُسْعَهَا = তারসামর্থ্য, لَا = না, تُضَارَّ = ক্ষতিগ্রস্তকরাহবে, وَالِدَةٌ = মাকে, بِوَلَدِهَا = তারসন্তানেরকারণে, وَلَا = আরনা, مَوْلُودٌ = যারনবজাতক(অর্থাৎবাপকে), لَهُ = জন্য, بِوَلَدِهِ = তারসন্তানেরকারণে, وَعَلَى = এবংউপর, الْوَارِثِ = উত্তরাধিকারীর, مِثْلُ = অনুরূপ, ذَٰلِكَ = এটা(অধিকার), فَإِنْ = অতঃপরযদি, أَرَادَا = উভয়েচায়, فِصَالًا = দুধছাড়াতে, عَنْ = মাধ্যমে, تَرَاضٍ = পরস্পরসম্মতির, مِنْهُمَا = উভয়পক্ষের, وَتَشَاوُرٍ = ওপরামর্শেরভিত্তিতে, فَلَا = নেইতবে, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْهِمَا = তাদেরউভয়েরউপর, وَإِنْ = এবংযদি, أَرَدْتُمْ = তোমরাচাও, أَنْ = যে, تَسْتَرْضِعُوا = তোমরাদুধপানকরাবে(কোনোধাত্রীদিয়ে), أَوْلَادَكُمْ = তোমাদেরসন্তানদের, فَلَا = নেইতবে, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, إِذَا = যখন, سَلَّمْتُمْ = তোমরাঅর্পনকর, مَا = যা, آتَيْتُمْ = তোমরাদিতেচেয়েছিলে, بِالْمَعْرُوفِ = সংগতভাবে, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরাখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, بِمَا = ঐবিষয়যা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকাজকরছ, بَصِيرٌ = সবকিছুদেখেন,
অনুবাদ: যে পিতা তার সন্তানের দুধ পানের সময়-কাল পূর্ণ করতে চায়, সে ক্ষেত্রে মায়েরা পুরো দু’বছর নিজেদের সন্তানদের দুধ পান করাবে। এ অবস্থায় সন্তানদের পিতাকে প্রচলিত পদ্ধতিতে মায়েদের খোরাক পোশাক দিতে হবে। কিন্তু কারোর ওপর তার সামর্থের বেশী বোঝা চাপিয়ে দেয়া উচিৎ নয়। কোন মা’কে এ জন্য কষ্ট দেয়া যাবে না যে সন্তানটি তার। আবার কোন বাপকেও এ জন্য কষ্টদেয়া যাবে না যে, এটি তারই সন্তান। দুধ দানকারিণীর এ অধিকার যেমন সন্তানের পিতার ওপর আছে তেমনি আছে তার ওয়ারিশের ওপরও। কিন্তু যদি উভয় পক্ষ পারস্পরিক সম্মতি ও পরামর্শক্রমে দুধ ছাড়াতে চায়, তাহলে এমনটি করায় কোন ক্ষতি নেই। আর যদি তোমার সন্তানদের অন্য কোন মহিলার দুধ পান করাবার কথা তুমি চিন্তা করে থাকো, তাহলে তাতেও কোন ক্ষতি নেই, তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, এ জন্য যা কিছু বিনিময় নির্ধারণ করবে তা প্রচলিত পদ্ধতিতে আদায় করবে। আল্লাহকে ভয় করো এবং জেনে রাখো, তোমরা যা কিছু করো না কেন সবই আল্লাহর নজরে আছে।
(2:234)
وَ الَّذِیْنَ یُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَ یَذَرُوْنَ اَزْوَاجًا یَّتَرَبَّصْنَ بِاَنْفُسِهِنَّ اَرْبَعَةَ اَشْهُرٍ وَّ عَشْرًاۚ فَاِذَا بَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ فِیْمَا فَعَلْنَ فِیْۤ اَنْفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوْفِؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ
শব্দার্থ: وَالَّذِينَ = এবংযারা, يُتَوَفَّوْنَ = মারাযায়, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যেথেকে, وَيَذَرُونَ = এবংতারারেখেযায়, أَزْوَاجًا = স্ত্রীদেরকে, يَتَرَبَّصْنَ = তারাঅপেক্ষায়রাখবে(অর্থাৎস্ত্রীরা), بِأَنْفُسِهِنَّ = তাদেরনিজেদেরকে, أَرْبَعَةَ = চার, أَشْهُرٍ = মাস, وَعَشْرًا = ওদশ(দিনপর্যন্ত), فَإِذَا = অতঃপরযখন, بَلَغْنَ = তারাপৌঁছে, أَجَلَهُنَّ = তাদেরমেয়াদে, فَلَا = নেইতখন, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, فِيمَا = সেক্ষেত্রেযা, فَعَلْنَ = তারাকরে, فِي = সম্পর্কে, أَنْفُسِهِنَّ = তাদেরনিজেদের, بِالْمَعْرُوفِ = ন্যায়সংগতভাবে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, بِمَا = ঐবিষয়েযা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকাজকর, خَبِيرٌ = সবিশেষঅবহিত,
অনুবাদ: তোমাদের মধ্য থেকে যারা মারা যায়, তাদের পরে যদি তাদের স্ত্রীরা জীবিত থাকে, তাহলে তাদের চার মাস দশ দিন নিজেদেরকে (বিবাহ থেকে) বিরত রাখতে হবে। তারপর তাদের ইদ্দত পূর্ণ হয়ে গেলে তারা ইচ্ছামতো নিজেদের ব্যাপারে প্রচলিত পদ্ধতিতে যা চায় করতে পারে, তোমাদের ওপর এর কোন দায়িত্ব নেই। আল্লাহ তোমাদের সবার কর্মকান্ড সম্পর্কে অবহিত।
(2:235)
وَ لَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ فِیْمَا عَرَّضْتُمْ بِهٖ مِنْ خِطْبَةِ النِّسَآءِ اَوْ اَكْنَنْتُمْ فِیْۤ اَنْفُسِكُمْؕ عَلِمَ اللّٰهُ اَنَّكُمْ سَتَذْكُرُوْنَهُنَّ وَ لٰكِنْ لَّا تُوَاعِدُوْهُنَّ سِرًّا اِلَّاۤ اَنْ تَقُوْلُوْا قَوْلًا مَّعْرُوْفًا۬ؕ وَ لَا تَعْزِمُوْا عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتّٰى یَبْلُغَ الْكِتٰبُ اَجَلَهٗؕ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ یَعْلَمُ مَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ فَاحْذَرُوْهُۚ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ حَلِیْمٌ۠
শব্দার্থ: وَلَا = এবংনেই, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, فِيمَا = সেক্ষেত্রেযা, عَرَّضْتُمْ = তোমরাআভাস-ইঙ্গিতেপ্রকাশকর, بِهِ = তা, مِنْ = বিষয়টি, خِطْبَةِ = বিয়েরপ্রস্তাবের, النِّسَاءِ = (বিধবা)নারীদের, أَوْ = বা, أَكْنَنْتُمْ = তোমরাগোপনকর, فِي = মধ্যে, أَنْفُسِكُمْ = তোমাদেরমনের, عَلِمَ = জানেন, اللَّهُ = আল্লাহ, أَنَّكُمْ = তোমরাযে, سَتَذْكُرُونَهُنَّ = তাদেরকেআলোচনাকরবেতোমরা, وَلَٰكِنْ = কিন্তু, لَا = না, تُوَاعِدُوهُنَّ = তাদেরকেঅঙ্গীকারকরবেতোমরা, سِرًّا = গোপনে, إِلَّا = এছাড়া, أَنْ = যে, تَقُولُوا = তোমরাবলবে, قَوْلًا = কথা, مَعْرُوفًا = বিধিমতো, وَلَا = এবংনা, تَعْزِمُوا = তোমরাসংকল্পকরো, عُقْدَةَ = বন্ধনের, النِّكَاحِ = বিয়ের, حَتَّىٰ = যতক্ষণনা, يَبْلُغَ = পৌঁছে, الْكِتَابُ = বিধান(অর্থাৎইদ্দত), أَجَلَهُ = তারনির্দিষ্টসময়ে, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরেখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, يَعْلَمُ = জানেন, مَا = যা(আছে), فِي = মধ্যে, أَنْفُسِكُمْ = তোমাদেরমনের, فَاحْذَرُوهُ = অতএবতাকেতোমরাভয়করো, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরেখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, غَفُورٌ = ক্ষমাশীল, حَلِيمٌ = বড়সহনশীল,
অনুবাদ: ইদ্দতকালে তোমরা এই বিধবাদেরকে বিয়ে করার ইচ্ছা ইশারা ইঙ্গিতে প্রকাশ করলে অথবা মনের গোপন কোণে লুকিয়ে রাখলে কোন ক্ষতি নেই। আল্লাহ জানেন, তাদের চিন্তা তোমাদের মনে জাগবেই। কিন্তু দেখো, তাদের সাথে কোন গোপন চুক্তি করো না। যদি কোন কথা বলতে হয়, প্রচলিত ও পরিচিত পদ্ধতিতে বলো। তবে বিবাহ বন্ধনের সিদ্ধান্ত ততক্ষণ করবে না যতক্ষণ না ইদ্দত পূর্ণ হয়ে যায়। খুব ভালোভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের মনের অবস্থাও জানেন। কাজেই তাঁকে ভয় করো এবং একথাও জেনে রাখো, আল্লাহ ধৈর্যশীল এবং ছোট-খাটো ত্রুটিগুলো এমনিতেই ক্ষমা করে দেন।
(2:236)
لَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ اِنْ طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ مَا لَمْ تَمَسُّوْهُنَّ اَوْ تَفْرِضُوْا لَهُنَّ فَرِیْضَةً ۚۖ وَّ مَتِّعُوْهُنَّۚ عَلَى الْمُوْسِعِ قَدَرُهٗ وَ عَلَى الْمُقْتِرِ قَدَرُهٗۚ مَتَاعًۢا بِالْمَعْرُوْفِۚ حَقًّا عَلَى الْمُحْسِنِیْنَ
শব্দার্থ: لَا = নেই, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, إِنْ = যদি, طَلَّقْتُمُ = তোমরাতালাকদাও, النِّسَاءَ = স্ত্রীদেরকে, مَا = যেপর্যন্ত, لَمْ = না, تَمَسُّوهُنَّ = তাদেরকেস্পর্শকর, أَوْ = অথবা, تَفْرِضُوا = তোমরাধার্যকর(নাই), لَهُنَّ = তাদেরজন্য, فَرِيضَةً = কোনোমোহর, وَمَتِّعُوهُنَّ = এবংতাদেরকেকিছুখরচপত্রদাও, عَلَى = উপর, الْمُوسِعِ = সংগতিসম্পন্নব্যক্তি, قَدَرُهُ = তারসাধ্যমত, وَعَلَى = ওউপর, الْمُقْتِرِ = বিত্তহীনের, قَدَرُهُ = তারসাধ্যমত, مَتَاعًا = খরচপত্রদেবে, بِالْمَعْرُوفِ = ন্যায়সংগতভাবে, حَقًّا = কর্তব্য, عَلَى = উপর, الْمُحْسِنِينَ = সৎকর্মশীললোকদের,
অনুবাদ: নিজেদের স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার বা মোহরানা নির্ধারণ করার আগেই যদি তোমরা তালাক দিয়ে দাও তাহলে এতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। এ অবস্থায় তাদেরকে অবশ্যই কিছু না কিছু দিতে হবে। সচ্ছল ব্যক্তি তার সাধ্যমত এবং দরিদ্র তার সংস্থান অনুযায়ী প্রচলিত পদ্ধতিতে দেবে। সৎলোকদের ওপর এটি একটি অধিকার।
(2:237)
وَ اِنْ طَلَّقْتُمُوْهُنَّ مِنْ قَبْلِ اَنْ تَمَسُّوْهُنَّ وَ قَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِیْضَةً فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ اِلَّاۤ اَنْ یَّعْفُوْنَ اَوْ یَعْفُوَا الَّذِیْ بِیَدِهٖ عُقْدَةُ النِّكَاحِؕ وَ اَنْ تَعْفُوْۤا اَقْرَبُ لِلتَّقْوٰىؕ وَ لَا تَنْسَوُا الْفَضْلَ بَیْنَكُمْؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ
শব্দার্থ: وَإِنْ = এবংযদি, طَلَّقْتُمُوهُنَّ = তাদেরকেতোমরাতালাকদিয়েদাও, مِنْ = থেকে, قَبْلِ = এরপূর্বেই, أَنْ = যে, تَمَسُّوهُنَّ = তাদেরকেস্পর্শকরবে, وَقَدْ = অথচনিশ্চয়ই, فَرَضْتُمْ = তোমরাধার্যকরেছ, لَهُنَّ = তাদেরজন্য, فَرِيضَةً = মোহর, فَنِصْفُ = অর্ধেকতবে, مَا = যা, فَرَضْتُمْ = তোমরাধার্যকরেছ(মোহর), إِلَّا = কিন্তু, أَنْ = যেছাড়া(স্ত্রীরা), يَعْفُونَ = তারাক্ষমাপ্রকাশকরে(নানেয়), أَوْ = অথবা, يَعْفُوَ = সেক্ষমাকরে(পূর্ণদেয়), الَّذِي = যে(পুরুষ), بِيَدِهِ = যারহাতেরমধ্যে(রয়েছে), عُقْدَةُ = বন্ধন, النِّكَاحِ = বিয়ের(তাস্বতন্ত্রকথা), وَأَنْ = এবং(এও)যে, تَعْفُوا = তোমরাক্ষমাকরবে, أَقْرَبُ = (তা)নিকটতর, لِلتَّقْوَىٰ = তাকওয়ারক্ষেত্রে, وَلَا = এবংনা, تَنْسَوُا = তোমরাভুলেযেয়ো, الْفَضْلَ = সহৃদয়তা, بَيْنَكُمْ = তোমাদেরমাঝে, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, بِمَا = ঐবিষয়যা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকাজকর, بَصِيرٌ = খুবদেখেন,
অনুবাদ: আর যদি তাদেরকে স্পর্শ করার আগেই তোমরা তালাক দিয়ে দাও কিন্তু মোহরানা নির্ধারিত হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে এ অবস্থায় মোহরানার অর্ধেক তাদেরকে দিতে হবে। স্ত্রী যদি নরম নীতি অবলম্বন করে, (এবং মোহরানা না নেয়) অথবা সেই ব্যক্তি নরম নীতি অবলম্বন করে, যার হাতে বিবাহ বন্ধন নিবদ্ধ (এবং সম্পূর্ণ মোহরানা দিয়ে দেয়) তাহলে সেটা অবশ্য স্বতন্ত্র কথা। আর তোমরা (অর্থাৎ পুরুষরা) নরম নীতি অবলম্বন করো। এ অবস্থায় এটি তাকওয়ার সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যশীল। পারস্পরিক ব্যাপারে তোমরা উদারতা ও সহৃদয়তার নীতি ভুলে যেয়ো না। তোমাদের কার্যাবলী আল্লাহ দেখছেন।
(2:238)
حٰفِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَ الصَّلٰوةِ الْوُسْطٰىۗ وَ قُوْمُوْا لِلّٰهِ قٰنِتِیْنَ
শব্দার্থ: حَافِظُوا = তোমরাসংরক্ষণকরো, عَلَى = প্রতি, الصَّلَوَاتِ = সবসালাতগুলোর, وَالصَّلَاةِ = এবং(বিশেষকরে)সালাত, الْوُسْطَىٰ = মধ্যবর্তী(অর্থাৎআছরের), وَقُومُوا = এবংতোমরাদাঁড়িয়েযাও, لِلَّهِ = আল্লাহরজন্য, قَانِتِينَ = একান্তবিনীতভাবে,
অনুবাদ: তোমাদের নামাযগুলো সংরক্ষণ করো, বিশেষ করে এমন নামায যাতে নামাযের সমস্ত গুণের সমন্বয় ঘটেছে। আল্লাহর সামনে এমনভাবে দাঁড়াও যেমন অনুগত সেবকরা দাঁড়ায়।
(2:239)
فَاِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا اَوْ رُكْبَانًاۚ فَاِذَاۤ اَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللّٰهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: فَإِنْ = অতঃপরযদি, خِفْتُمْ = তোমরাভয়করো, فَرِجَالًا = তবেহেঁটেচলাঅবস্থায়, أَوْ = বা, رُكْبَانًا = আরোহীঅবস্থায়(সালাতপড়বে), فَإِذَا = অতঃপরযখন, أَمِنْتُمْ = তোমরানিরাপদহও, فَاذْكُرُوا = স্মরণকরোতখন, اللَّهَ = আল্লাহকে, كَمَا = যেমন, عَلَّمَكُمْ = তোমাদেরতিনিশিখিয়েছেন, مَا = যা, لَمْ = না, تَكُونُوا = তোমরাহও, تَعْلَمُونَ = তোমরাজানতে,
অনুবাদ: অশান্তি বা গোলযোগের সময় হলে পায়ে হেঁটে অথবা বাহনে চড়ে যেভাবেই সম্ভব নামায পড়ো। আর যখন শান্তি স্থাপিত হয়ে যায় তখন আল্লাহকে সেই পদ্ধতিতে স্মরণ করো, যা তিনি তোমাদের শিখিয়েছেন, যে সম্পর্কে ইতিপূর্বে তোমরা অনবহিত ছিলে।
(2:240)
وَ الَّذِیْنَ یُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَ یَذَرُوْنَ اَزْوَاجًا ۚۖ وَّصِیَّةً لِّاَزْوَاجِهِمْ مَّتَاعًا اِلَى الْحَوْلِ غَیْرَ اِخْرَاجٍۚ فَاِنْ خَرَجْنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ فِیْ مَا فَعَلْنَ فِیْۤ اَنْفُسِهِنَّ مِنْ مَّعْرُوْفٍؕ وَ اللّٰهُ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ
শব্দার্থ: وَالَّذِينَ = এবংযারা, يُتَوَفَّوْنَ = মারাযায়, مِنْكُمْ = তোমাদেরমধ্যহতে, وَيَذَرُونَ = এবংতারারেখেযায়, أَزْوَاجًا = স্ত্রীদেরকে, وَصِيَّةً = (তাদেরউচিৎ)জোরনির্দেশকরা, لِأَزْوَاجِهِمْ = তাদেরস্ত্রীদেরজন্যে, مَتَاعًا = ভরণপোষণের, إِلَى = পর্যন্ত, الْحَوْلِ = একবছর, غَيْرَ = ছাড়া, إِخْرَاجٍ = বহিষ্কার(ঘরথেকে), فَإِنْ = যদিতবে, خَرَجْنَ = তারাবেরহয়(নিজেরাই), فَلَا = নেইতবে, جُنَاحَ = কোনোপাপ, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, فِي = সেক্ষেত্রে, مَا = যা, فَعَلْنَ = তারাকরেছে, فِي = ব্যাপারে, أَنْفُسِهِنَّ = তাদেরনিজেদের, مِنْ = থেকে, مَعْرُوفٍ = ন্যায়সংগতভাবে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, عَزِيزٌ = পরাক্রমশালী, حَكِيمٌ = মহাবিজ্ঞ,
অনুবাদ: তোমাদের মধ্য থেকে যারা মারা যায় এবং তাদের পরে তাদের স্ত্রীরা বেঁচে থাকে, তাদের স্ত্রীদের যাতে এক বছর পর্যন্ত ভরণপোষণ করা হয় এবং ঘর থেকে বের করে না দেয়া হয় সেজন্য স্ত্রীদের পক্ষে মৃত্যুর পূর্বে অসিয়ত করে যাওয়া উচিৎ। তবে যদি তারা নিজেরাই বের হয়ে যায় তাহলে তাদের নিজেদের ব্যাপারে প্রচলিত পদ্ধতিতে তারা যাই কিছু করুক না কেন তার কোন দায়-দায়িত্ব তোমাদের ওপর নেই। আল্লাহ সবার ওপর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতাশালী এবং তিনি অতি বিজ্ঞ।
(2:241)
وَ لِلْمُطَلَّقٰتِ مَتَاعٌۢ بِالْمَعْرُوْفِؕ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِیْنَ
শব্দার্থ: وَلِلْمُطَلَّقَاتِ = এবংতালাকপ্রাপ্তাদেরজন্যে, مَتَاعٌ = কিছুভরণপোষণদেওয়া, بِالْمَعْرُوفِ = উপযুক্তভাবে, حَقًّا = কর্তব্য, عَلَى = উপর, الْمُتَّقِينَ = মুত্তাকীদের,
অনুবাদ: অনুরূপভাবে যেসব স্ত্রীকে তালাক দেয়া হয়েছে তাদেরকেও সঙ্গতভাবে কিছু না কিছু দিয়ে বিদায় করা উচিত। এটা মুত্তাকীদের ওপর আরোপিত অধিকার।
(2:242)
كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ لَكُمْ اٰیٰتِهٖ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ۠
শব্দার্থ: كَذَٰلِكَ = এভাবে, يُبَيِّنُ = বর্ণনাকরেন, اللَّهُ = আল্লাহ, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, آيَاتِهِ = তাঁরবিধানাবলীকে, لَعَلَّكُمْ = তোমরাযেন, تَعْقِلُونَ = বুঝতেপার,
অনুবাদ: এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর বিধান পরিষ্কার ভাষায় তোমাদের জানিয়ে দেন। আশা করা যায়, তোমরা ভেবেচিন্তে কাজ করবে।
(2:243)
اَلَمْ تَرَ اِلَى الَّذِیْنَ خَرَجُوْا مِنْ دِیَارِهِمْ وَ هُمْ اُلُوْفٌ حَذَرَ الْمَوْتِ۪ فَقَالَ لَهُمُ اللّٰهُ مُوْتُوْا۫ ثُمَّ اَحْیَاهُمْؕ اِنَّ اللّٰهَ لَذُوْ فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَ لٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا یَشْكُرُوْنَ
শব্দার্থ: أَلَمْ = নিকি, تَرَ = তুমিদেখ, إِلَى = প্রতি, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, خَرَجُوا = বেরহয়েছিল, مِنْ = থেকে, دِيَارِهِمْ = ঘরগুলোতাদের, وَهُمْ = অথচতারা(ছিল), أُلُوفٌ = হাজারহাজার, حَذَرَ = ভয়ে, الْمَوْتِ = মৃত্যুর, فَقَالَ = অতঃপরবললেন, لَهُمُ = তাদেরউদ্দেশে, اللَّهُ = আল্লাহ, مُوتُوا = তোমরামরেযাও, ثُمَّ = এরপর, أَحْيَاهُمْ = তিনিজীবিতকরলেন(আবার)তাদেরকে, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, لَذُو = (অধিকারী), فَضْلٍ = অনুগ্রহের, عَلَى = উপর, النَّاسِ = মানুষের, وَلَٰكِنَّ = কিন্তু, أَكْثَرَ = অধিকাংশ, النَّاسِ = মানুষ, لَا = না, يَشْكُرُونَ = তারাকৃতজ্ঞতাপ্রকাশকরে,
অনুবাদ: তুমি কি তাদের অবস্থা সম্পর্কে কিছু চিন্তা করেছো, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বের হয়ে পড়েছিল এবং তারা সংখ্যায়ও ছিল হাজার হাজার? আল্লাহ তাদের বলেছিলেনঃ মরে যাও, তারপর তিনি তাদের পুনর্বার জীবন দান করেছিলেন। আসলে আল্লাহ মানুষের ওপর বড়ই অনুগ্রহকারী কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
(2:244)
وَ قَاتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: وَقَاتِلُوا = এবংযুদ্ধকরোতোমরা, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরেখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, سَمِيعٌ = সবকিছুশুনেন, عَلِيمٌ = সবকিছুদেখেন,
অনুবাদ: হে মুসলমানরা! আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো এবং ভালোভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ।
(2:245)
مَنْ ذَا الَّذِیْ یُقْرِضُ اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا فَیُضٰعِفَهٗ لَهٗۤ اَضْعَافًا كَثِیْرَةًؕ وَ اللّٰهُ یَقْبِضُ وَ یَبْصُۜطُ۪ وَ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ
শব্দার্থ: مَنْ = কে, ذَا = সে(এমন), الَّذِي = যে, يُقْرِضُ = ঋণদেবে, اللَّهَ = আল্লাহকে, قَرْضًا = ঋণ, حَسَنًا = উত্তম, فَيُضَاعِفَهُ = তিনিতাবৃদ্ধিএরপরকরবেন, لَهُ = তারজন্য, أَضْعَافًا = গুণবৃদ্ধি, كَثِيرَةً = অনেক, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يَقْبِضُ = সংকুচিতকরেন, وَيَبْسُطُ = ওসম্প্রসারিতকরেন, وَإِلَيْهِ = এবংতাঁরইদিকে, تُرْجَعُونَ = তোমাদেরফিরিয়েনেয়াহবে,
অনুবাদ: তোমাদের মধ্যে কে আল্লাহকে ‘করযে হাসানা’ দিতে প্রস্তুত, যাতে আল্লাহ তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তাকে ফেরত দেবেন?কমাবার ক্ষমতা আল্লাহর আছে, বাড়াবারও এবং তাঁরই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে।
(2:246)
اَلَمْ تَرَ اِلَى الْمَلَاِ مِنْۢ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ مِنْۢ بَعْدِ مُوْسٰىۘ اِذْ قَالُوْا لِنَبِیٍّ لَّهُمُ ابْعَثْ لَنَا مَلِكًا نُّقَاتِلْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِؕ قَالَ هَلْ عَسَیْتُمْ اِنْ كُتِبَ عَلَیْكُمُ الْقِتَالُ اَلَّا تُقَاتِلُوْاؕ قَالُوْا وَ مَا لَنَاۤ اَلَّا نُقَاتِلَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ قَدْ اُخْرِجْنَا مِنْ دِیَارِنَا وَ اَبْنَآئِنَاؕ فَلَمَّا كُتِبَ عَلَیْهِمُ الْقِتَالُ تَوَلَّوْا اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْهُمْؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌۢ بِالظّٰلِمِیْنَ
শব্দার্থ: أَلَمْ = নিকি, تَرَ = তুমিদেখ, إِلَى = প্রতি, الْمَلَإِ = প্রধানদের, مِنْ = মধ্যথেকে, بَنِي = বনী, إِسْرَائِيلَ = ইসরাঈলদের, مِنْ = থেকে, بَعْدِ = পর, مُوسَىٰ = মূসার, إِذْ = যখন, قَالُوا = তারাবলেছিল, لِنَبِيٍّ = নবীর, لَهُمُ = তাদেরজন্য, ابْعَثْ = পাঠান, لَنَا = আমাদেরজন্য, مَلِكًا = একজনরাজা, نُقَاتِلْ = যুদ্ধকরবআমরা(তারনের্তৃত্বে), فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, قَالَ = সেবলল, هَلْ = যদি, عَسَيْتُمْ = তোমরাআশাকর, إِنْ = যদি, كُتِبَ = ফরজকরাহয়, عَلَيْكُمُ = তোমাদেরউপর, الْقِتَالُ = যুদ্ধ, أَلَّا = যেনা, تُقَاتِلُوا = তোমরাযুদ্ধকরবে, قَالُوا = তারাবলেছিল, وَمَا = এবংকি, لَنَا = আমাদেরহয়েছে, أَلَّا = যেনা, نُقَاتِلَ = আমরাযুদ্ধকরব, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, وَقَدْ = অথচনিশ্চয়ই, أُخْرِجْنَا = আমাদেরকেবেরকরেদেওয়াহয়েছে, مِنْ = হতে, دِيَارِنَا = আমাদেরঘরবাড়ি, وَأَبْنَائِنَا = ওআমাদেরসন্তানদের(হতে), فَلَمَّا = অতঃপরযখন, كُتِبَ = ফরজকরাহল, عَلَيْهِمُ = তাদেরউপর, الْقِتَالُ = যুদ্ধের, تَوَلَّوْا = তারাপিঠফিরাল, إِلَّا = এছাড়া, قَلِيلًا = স্বল্পসংখ্যক, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যহতে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, عَلِيمٌ = খুবঅবহিত, بِالظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘনকারীসম্পর্কে,
অনুবাদ: আবার তোমরা কি এ ব্যাপারেও চিন্তা করেছো, যা মূসার পরে বনী ইসরাঈলের সরদারদের সাথে ঘটেছিল? তারা নিজেদের নবীকে বলেছিলঃ আমাদের জন্য একজন বাদশাহ ঠিক করে দাও, যাতে আমরা আল্লাহর পথে লড়াই করতে পারি। নবী জিজ্ঞেস করলোঃ তোমাদের লড়াই করার হুকুম দেয়ার পর তোমরা লড়তে যাবে না, এমনটি হবে না তো? তারা বলতে লাগলোঃ এটা কেমন করে হতে পারে, আমরা আল্লাহর পথে লড়বো না, অথচ আমাদের বাড়ি-ঘর থেকে আমাদের বের করে দেয়া হয়েছে, আমাদের সন্তানদের আমাদের থেকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে? কিন্তু যখন তাদের লড়াই করার হুকুম দেয়া হলো, তাদের স্বল্পসংখ্যক ছাড়া বাদবাকি সবাই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করলো। আল্লাহ তাদের প্রত্যেকটি জালেমকে জানেন।
(2:247)
وَ قَالَ لَهُمْ نَبِیُّهُمْ اِنَّ اللّٰهَ قَدْ بَعَثَ لَكُمْ طَالُوْتَ مَلِكًاؕ قَالُوْۤا اَنّٰى یَكُوْنُ لَهُ الْمُلْكُ عَلَیْنَا وَ نَحْنُ اَحَقُّ بِالْمُلْكِ مِنْهُ وَ لَمْ یُؤْتَ سَعَةً مِّنَ الْمَالِؕ قَالَ اِنَّ اللّٰهَ اصْطَفٰىهُ عَلَیْكُمْ وَ زَادَهٗ بَسْطَةً فِی الْعِلْمِ وَ الْجِسْمِؕ وَ اللّٰهُ یُؤْتِیْ مُلْكَهٗ مَنْ یَّشَآءُؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: وَقَالَ = এবংবলেছিল, لَهُمْ = তাদেরউদ্দেশে, نَبِيُّهُمْ = তাদেরনবী, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, قَدْ = অবশ্যই, بَعَثَ = পাঠিয়েছেন, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, طَالُوتَ = তালুতকে, مَلِكًا = রাজাহিসেবে, قَالُوا = তারাবলেছিল, أَنَّىٰ = কিরূপে, يَكُونُ = হবে, لَهُ = তারজন্য, الْمُلْكُ = রাজত্ব, عَلَيْنَا = আমাদেরউপর, وَنَحْنُ = অথচআমরা, أَحَقُّ = অধিকযোগ্য, بِالْمُلْكِ = রাজত্বের, مِنْهُ = তারচেয়ে, وَلَمْ = এবংনি, يُؤْتَ = দেওয়াহয়তাকে, سَعَةً = প্রাচুর্য, مِنَ = মাধ্যমে, الْمَالِ = ধনসম্পদের, قَالَ = সেবলল, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, اصْطَفَاهُ = তাকেমনোনীতকরেছেন, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, وَزَادَهُ = ওতাকেবেশিদিয়েছেন, بَسْطَةً = প্রসারতা, فِي = মধ্যে, الْعِلْمِ = জ্ঞানের, وَالْجِسْمِ = ওশারীরিকশক্তিতে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يُؤْتِي = দেন, مُلْكَهُ = তাঁররাজত্ব, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিচান, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, وَاسِعٌ = প্রাচুর্যময়, عَلِيمٌ = মহাজ্ঞানী,
অনুবাদ: তাদের নবী তাদেরকে বললোঃ আল্লাহ তোমাদের জন্য তালুতকে বাদশাহ বানিয়ে দিয়েছেন। একথা শুনে তারা বললোঃ “সে কেমন করে আমাদের ওপর বাদশাহ হবার অধিকার লাভ করলো? তার তুলনায় বাদশাহী লাভের অধিকার আমাদের অনেক বেশী। সে তো কোন বড় সম্পদশালী লোকও নয়।” নবী জবাব দিলঃ “আল্লাহ্ তোমাদের মোকাবিলায় তাকেই নবী মনোনীত করেছেন এবং তাকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিক উভয় ধরনের যোগ্যতা ব্যাপকহারে দান করেছেন। আর আল্লাহ তাঁর রাজ্য যাকে ইচ্ছা দান করার ইখতিয়ার রাখেন। আল্লাহ অত্যন্ত ব্যাপকতার অধিকারী এবং সবকিছুই তাঁর জ্ঞান-সীমার মধ্যে রয়েছে।”
(2:248)
وَ قَالَ لَهُمْ نَبِیُّهُمْ اِنَّ اٰیَةَ مُلْكِهٖۤ اَنْ یَّاْتِیَكُمُ التَّابُوْتُ فِیْهِ سَكِیْنَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ بَقِیَّةٌ مِّمَّا تَرَكَ اٰلُ مُوْسٰى وَ اٰلُ هٰرُوْنَ تَحْمِلُهُ الْمَلٰٓئِكَةُؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ۠
শব্দার্থ: وَقَالَ = এবংবলল, لَهُمْ = তাদেরউদ্দেশে, نَبِيُّهُمْ = তাদেরনবী, إِنَّ = নিশ্চয়ই, آيَةَ = নিদর্শন(হবে), مُلْكِهِ = তাররাজত্বের, أَنْ = (এই)যে, يَأْتِيَكُمُ = তোমাদেরকাছেআসবে, التَّابُوتُ = সেইসিন্ধুক, فِيهِ = যারমধ্যে(আছে), سَكِينَةٌ = প্রশান্তি, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّكُمْ = তোমাদেররবের, وَبَقِيَّةٌ = ওঅবশিষ্ট, مِمَّا = তাহতেযা, تَرَكَ = ছেড়েগেছে, آلُ = বংশধর, مُوسَىٰ = মূসার, وَآلُ = ওবংশধর, هَارُونَ = হারুনের, تَحْمِلُهُ = তাবহনকরেচলছে, الْمَلَائِكَةُ = ফেরেশতারা, إِنَّ = নিশ্চয়ই, فِي = মধ্যে(রয়েছে), ذَٰلِكَ = এর, لَآيَةً = অবশ্যইনিদর্শন, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহও, مُؤْمِنِينَ = মুমিন,
অনুবাদ: এই সঙ্গে তাদের নবী তাদের একথাও জানিয়ে দিলঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে বাদশাহ নিযুক্ত করার আলামত হচ্ছে এই যে, তার আমলে সেই সিন্ধুকটি তোমরা ফিরিয়ে পাবে, যার মধ্যে রয়েছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য মানসিক প্রশান্তির সামগ্রী, যার মধ্যে রয়েছে মূসার পরিবারের ও হারুনের পরিবারের পরিত্যক্ত বরকতপূর্ণ জিনিসপত্র এবং যাকে এখন ফেরেশতারা বহন করে ফিরছে। যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাকো তাহলে এটি তোমাদের জন্য অনেক বড় নিশানী।
(2:249)
فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوْتُ بِالْجُنُوْدِۙ قَالَ اِنَّ اللّٰهَ مُبْتَلِیْكُمْ بِنَهَرٍۚ فَمَنْ شَرِبَ مِنْهُ فَلَیْسَ مِنِّیْۚ وَ مَنْ لَّمْ یَطْعَمْهُ فَاِنَّهٗ مِنِّیْۤ اِلَّا مَنِ اغْتَرَفَ غُرْفَةًۢ بِیَدِهٖۚ فَشَرِبُوْا مِنْهُ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْهُمْؕ فَلَمَّا جَاوَزَهٗ هُوَ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗۙ قَالُوْا لَا طَاقَةَ لَنَا الْیَوْمَ بِجَالُوْتَ وَ جُنُوْدِهٖؕ قَالَ الَّذِیْنَ یَظُنُّوْنَ اَنَّهُمْ مُّلٰقُوا اللّٰهِۙ كَمْ مِّنْ فِئَةٍ قَلِیْلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِیْرَةًۢ بِاِذْنِ اللّٰهِؕ وَ اللّٰهُ مَعَ الصّٰبِرِیْنَ
শব্দার্থ: فَلَمَّا = যখনঅতঃপর, فَصَلَ = রওনাহল, طَالُوتُ = তালুত, بِالْجُنُودِ = সৈন্যদেরনিয়ে, قَالَ = বলল, إِنَّ = নিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, مُبْتَلِيكُمْ = তোমাদেরপরীক্ষাকরবেন, بِنَهَرٍ = একটানদীদিয়ে, فَمَنْ = যেঅতঃপর, شَرِبَ = পানকরবে, مِنْهُ = তাথেকে, فَلَيْسَ = সেনয়তখন, مِنِّي = আমারদলে, وَمَنْ = এবংযে, لَمْ = না, يَطْعَمْهُ = তারস্বাদনেবে, فَإِنَّهُ = নিশ্চয়ইতবেসে, مِنِّي = আমারদলভুক্ত(থাকবে), إِلَّا = কিন্তু, مَنِ = যে, اغْتَرَفَ = আঁজলাভরেনেবে(পানি), غُرْفَةً = একআঁজলা, بِيَدِهِ = তারহাতদিয়ে(সেটাভিন্ন), فَشَرِبُوا = তারাঅতঃপরপানকরল, مِنْهُ = তাথেকে, إِلَّا = ছাড়া, قَلِيلًا = স্বল্পসংখ্যক, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যহতে, فَلَمَّا = অতঃপরযখন, جَاوَزَهُ = তাঅতিক্রমকরল, هُوَ = সে, وَالَّذِينَ = ওযারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছিল, مَعَهُ = তারসাথে, قَالُوا = তারাবলেছিল, لَا = নেই, طَاقَةَ = শক্তি, لَنَا = আমাদেরকাছে, الْيَوْمَ = আজ, بِجَالُوتَ = জালুতেরসাথে, وَجُنُودِهِ = ওতারসৈন্যদের(সাথেযুদ্ধের), قَالَ = বলল, الَّذِينَ = যারা, يَظُنُّونَ = মনেকরত, أَنَّهُمْ = তারাযে, مُلَاقُو = সাক্ষাৎকারী, اللَّهِ = আল্লাহরসাথে, كَمْ = কত, مِنْ = থেকে, فِئَةٍ = দল(রয়েছে), قَلِيلَةٍ = ছোটছোট, غَلَبَتْ = বিজয়ীহয়েছে(যারা), فِئَةً = দলের(উপর), كَثِيرَةً = বড়বড়, بِإِذْنِ = অনুমতিক্রমে, اللَّهِ = আল্লাহর, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, مَعَ = (সাথেআছেন), الصَّابِرِينَ = ধৈর্যশীল,
অনুবাদ: তারপর তালুত যখন সেনাবিহনী নিয়ে এগিয়ে চললো, সে বললোঃ “আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নদীতে তোমাদের পরীক্ষা হবে। যে তার পানি পান করবে সে আমার সহযোগী নয়। একমাত্র সে-ই আমার সহযোগী যে তার পানি থেকে নিজের পিপাসা নিবৃ্ত্ত করবে না। তবে এক আধ আজঁলা কেউ পান করতে চাইলে করতে পারে। কিন্তু স্বল্প সংখ্যক লোক ছাড়া বাকি সবাই সেই নদীর পানি আকন্ঠপান করলো। অতঃপর তালুত ও তার সাথী মুসলমানরা যখন নদী পেরিয়ে সামনে এগিয়ে গেলো তখন তারা তালুতকে বলে দিল, আজ জালুত ও তার সেনাদলের মোকাবিলা করার ক্ষমতা আমাদের নেই। কিন্তু যারা একথা মনে করছিল যে, তাদের একদিন আল্লাহর সাথে মোলাকাত হবে, তারা বললোঃ “অনেক বারই দেখা গেছে, স্বল্প সংখ্যক লোকের একটি দল আল্লাহর হুকুমে একটি বিরাট দলের ওপর বিজয় লাভ করেছে। আল্লাহ সবরকারীদের সাথি।”
(2:250)
وَ لَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَ جُنُوْدِهٖ قَالُوْا رَبَّنَاۤ اَفْرِغْ عَلَیْنَا صَبْرًا وَّ ثَبِّتْ اَقْدَامَنَا وَ انْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِیْنَؕ
শব্দার্থ: وَلَمَّا = এবংযখন, بَرَزُوا = তারাসম্মুখীনহল, لِجَالُوتَ = জালুতেরবিরুদ্ধে, وَجُنُودِهِ = ওতারসৈন্যদের(বিরুদ্ধে), قَالُوا = বলেছিলতারা, رَبَّنَا = হেআমাদেররব, أَفْرِغْ = ঢেলেদাও(দানকরো), عَلَيْنَا = আমাদেরওপর, صَبْرًا = ধৈর্য, وَثَبِّتْ = ওদৃঢ়করো, أَقْدَامَنَا = আমাদেরপাগুলোকে, وَانْصُرْنَا = এবংআমাদেরকেসাহায্যকরো, عَلَى = বিরুদ্ধে, الْقَوْمِ = জাতির, الْكَافِرِينَ = কাফির,
অনুবাদ: আর যখন তারা জালুত ও তার সেনাদলের মোকাবিলায় বের হলো, তারা দোয়া করলোঃ “হে আমাদের রব! আমাদের সবর দান করো, আমাদের অবিচলিত রাখ এবং এই কাফের দলের ওপর আমাদের বিজয় দান করো।”
(2:251)
فَهَزَمُوْهُمْ بِاِذْنِ اللّٰهِ وَ قَتَلَ دَاوٗدُ جَالُوْتَ وَ اٰتٰىهُ اللّٰهُ الْمُلْكَ وَ الْحِكْمَةَ وَ عَلَّمَهٗ مِمَّا یَشَآءُؕ وَ لَوْ لَا دَفْعُ اللّٰهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍۙ لَّفَسَدَتِ الْاَرْضُ وَ لٰكِنَّ اللّٰهَ ذُوْ فَضْلٍ عَلَى الْعٰلَمِیْنَ
শব্দার্থ: فَهَزَمُوهُمْ = তারাঅতঃপরপরাজিতকরলতাদেরকে, بِإِذْنِ = অনুমতিক্রমে, اللَّهِ = আল্লাহর, وَقَتَلَ = এবংহত্যাকরল, دَاوُودُ = দাঊদ, جَالُوتَ = জালুতকে, وَآتَاهُ = এবংতাকেদিয়েদিয়েছিলেন, اللَّهُ = আল্লাহ, الْمُلْكَ = রাজত্ব, وَالْحِكْمَةَ = ওপ্রজ্ঞা, وَعَلَّمَهُ = ওতাকেশিক্ষাদিয়েছিলেন, مِمَّا = তাথেকে(বিভিন্নজিনিসের)যা, يَشَاءُ = তিনিচেয়েছেন, وَلَوْلَا = এবংযদিনা, دَفْعُ = প্রতিহত(করাহত), اللَّهِ = আল্লাহর(পক্ষহতে), النَّاسَ = মানুষের, بَعْضَهُمْ = তাদেরকাউকে, بِبَعْضٍ = (অন্য)কাউকেদিয়ে, لَفَسَدَتِ = (তাহলে)অবশ্যইবিপর্যস্তহয়েযেত, الْأَرْضُ = পৃথিবী, وَلَٰكِنَّ = কিন্তু, اللَّهَ = আল্লাহ, ذُو = (অধিকারী), فَضْلٍ = (অনুগ্রহের), عَلَى = উপর, الْعَالَمِينَ = বিশ্বজগতের,
অনুবাদ: অবশেষে আল্লাহর হুকুমে তারা কাফেরদের পরাজিত করলো। আর দাউদ জালুতকে হত্যা করলো এবং আল্লাহ তাকে রাজ্য ও প্রজ্ঞা দান করলেন আর সেই সাথে যা যা তিনি চাইলেন তাকে শিখিয়ে দিলেন। এভাবে আল্লাহ যদি মানুষদের একটি দলের সাহায্যে আর একটি দলকে দমন না করতে থাকতেন, তাহলে পৃথিবীর ব্যবস্থাপনা বিপর্যস্ত হতো। কিন্তু দুনিয়াবাসীদের ওপর আল্লাহর অপার করুণা (যে, তিনি এভাবে বিপর্যয় রোধের ব্যবস্থা করতেন) ।
(2:252)
تِلْكَ اٰیٰتُ اللّٰهِ نَتْلُوْهَا عَلَیْكَ بِالْحَقِّؕ وَ اِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِیْنَ
শব্দার্থ: تِلْكَ = এই, آيَاتُ = নিদর্শনাদি, اللَّهِ = আল্লাহর, نَتْلُوهَا = তাতিলাওয়াতকরছিআমরা, عَلَيْكَ = তোমারকাছে, بِالْحَقِّ = যথাযথভাবে, وَإِنَّكَ = এবংতুমিনিশ্চয়ই, لَمِنَ = অবশ্যইঅর্ন্তভুক্ত, الْمُرْسَلِينَ = রাসূলদের,
অনুবাদ: এগুলো আল্লাহর আয়াত। আমি ঠিকমতো এগুলো তোমাকে শুনিয়ে যাচ্ছি। আর তুমি নিশ্চিতভাবে প্রেরিত পুরুষদের (রসূলদের) অন্তর্ভুক্ত।
(2:253)
تِلْكَ الرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلٰى بَعْضٍۘ مِنْهُمْ مَّنْ كَلَّمَ اللّٰهُ وَ رَفَعَ بَعْضَهُمْ دَرَجٰتٍؕ وَ اٰتَیْنَا عِیْسَى ابْنَ مَرْیَمَ الْبَیِّنٰتِ وَ اَیَّدْنٰهُ بِرُوْحِ الْقُدُسِؕ وَ لَوْ شَآءَ اللّٰهُ مَا اقْتَتَلَ الَّذِیْنَ مِنْۢ بَعْدِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ الْبَیِّنٰتُ وَ لٰكِنِ اخْتَلَفُوْا فَمِنْهُمْ مَّنْ اٰمَنَ وَ مِنْهُمْ مَّنْ كَفَرَؕ وَ لَوْ شَآءَ اللّٰهُ مَا اقْتَتَلُوْا۫ وَ لٰكِنَّ اللّٰهَ یَفْعَلُ مَا یُرِیْدُ۠
শব্দার্থ: تِلْكَ = এই, الرُّسُلُ = রাসূলগণ, فَضَّلْنَا = আমরামর্যাদাদিয়েছি, بَعْضَهُمْ = তাদেরকাউকে, عَلَىٰ = উপর, بَعْضٍ = কারও, مِنْهُمْ = তাদেরমধ্যেহতে, مَنْ = কারও(সাথে), كَلَّمَ = বলেছেনকথা, اللَّهُ = আল্লাহ, وَرَفَعَ = এবংউন্নীতকরেছেন, بَعْضَهُمْ = তাদেরকাউকে, دَرَجَاتٍ = (উচ্চ)মর্যাদায়, وَآتَيْنَا = এবংআমরাদিয়েছি, عِيسَى = ঈসাকে, ابْنَ = পুত্র, مَرْيَمَ = মারইয়ামের, الْبَيِّنَاتِ = সুষ্পষ্টপ্রমাণসমূহ, وَأَيَّدْنَاهُ = এবংতাকেসাহায্যকরেছিআমরা, بِرُوحِ = আত্মাদিয়ে, الْقُدُسِ = পবিত্র(অর্থাৎজিবরাইল), وَلَوْ = এবংযদি, شَاءَ = চাইতেন, اللَّهُ = আল্লাহ, مَا = না, اقْتَتَلَ = তারাপরস্পরযুদ্ধকরত, الَّذِينَ = যারা(ছিল), مِنْ = থেকে, بَعْدِهِمْ = তাদেরপরে, مِنْ = থেকেও, بَعْدِ = এরপর, مَا = যা, جَاءَتْهُمُ = তাদেরকাছেএসেছিল, الْبَيِّنَاتُ = সুষ্পষ্টনিদর্শনাদি, وَلَٰكِنِ = কিন্তু, اخْتَلَفُوا = মতবিরোধকরলতারা, فَمِنْهُمْ = তাদেরপরেমধ্যথেকে, مَنْ = কেউ, آمَنَ = ঈমানআনল, وَمِنْهُمْ = আবারতাদেরমধ্যেথেকে, مَنْ = কেউ, كَفَرَ = অস্বীকারকরল, وَلَوْ = এবংযদি, شَاءَ = ইচ্ছাকরতেন, اللَّهُ = আল্লাহ, مَا = না, اقْتَتَلُوا = তারাএকেঅপরেলড়ত, وَلَٰكِنَّ = কিন্তু, اللَّهَ = আল্লাহ, يَفْعَلُ = করেন, مَا = যা, يُرِيدُ = তিনিচান,
অনুবাদ: এই রসূলদের (যারা আমার পক্ষ থেকে মানবতার হিদায়াতের জন্য নিযুক্ত) একজনকে আর একজনের ওপর আমি অধিক মর্যাদাশালী করেছি। তাদের কারোর সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন, কাউকে তিনি অন্য দিক দিয়ে উন্নত মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন, অবশেষ ঈসা ইবনে মারয়ামকে উজ্জ্বল নিশানীসমূহ দান করেছেন এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করেছেন। যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে এই রসূলদের পর যারা উজ্জ্বল নিশানীসমূহ দেখেছিল তারা কখনো পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত হতো না। কিন্তু (লোকদেরকে বলপূর্বক মতবিরোধ থেকে বিরত রাখা আল্লাহর ইচ্ছা ছিল না, তাই) তারা পরস্পর মতবিরোধ করলো, তারপর তাদের মধ্য থেকে কেউ ঈমান আনলো আর কেউ কুফরীর পথ অবলম্বন করলো। হ্যাঁ,, আল্লাহ চাইলে তারা কখ্খনো যুদ্ধে লিপ্ত হতো না, কিন্তু আল্লাহ যা চান, তাই করেন।
(2:254)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْفِقُوْا مِمَّا رَزَقْنٰكُمْ مِّنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَ یَوْمٌ لَّا بَیْعٌ فِیْهِ وَ لَا خُلَّةٌ وَّ لَا شَفَاعَةٌؕ وَ الْكٰفِرُوْنَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, أَنْفِقُوا = তোমরাব্যয়করো, مِمَّا = তাথেকেযা, رَزَقْنَاكُمْ = তোমাদেরআমরাজীবিকাদিয়েছি, مِنْ = থেকে, قَبْلِ = এরপূর্ব, أَنْ = যে, يَأْتِيَ = আসবে, يَوْمٌ = দিন, لَا = না, بَيْعٌ = কেনাবেচাহবে, فِيهِ = তারমধ্যে, وَلَا = আরনা, خُلَّةٌ = বন্ধুত্ব, وَلَا = আরনা, شَفَاعَةٌ = সুপারিশ(কাজেআসবে), وَالْكَافِرُونَ = এবংকাফিররা, هُمُ = তারাই, الظَّالِمُونَ = সীমালঙ্ঘনকারী,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদের যা কিছু ধন-সম্পদ দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করো, সেই দিনটি আসার আগে, যেদিন কেনাবেচা চলবে না, বন্ধুত্ব কাজে লাগবে না এবং কারো কোন সুপারিশও কাজে আসবে না। আর জালেম আসলে সেই ব্যক্তি যে কুফরী নীতি অবলম্বন করে।
(2:255)
اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ اَلْحَیُّ الْقَیُّوْمُ ﳛ لَا تَاْخُذُهٗ سِنَةٌ وَّ لَا نَوْمٌؕ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِؕ مَنْ ذَا الَّذِیْ یَشْفَعُ عِنْدَهٗۤ اِلَّا بِاِذْنِهٖؕ یَعْلَمُ مَا بَیْنَ اَیْدِیْهِمْ وَ مَا خَلْفَهُمْۚ وَ لَا یُحِیْطُوْنَ بِشَیْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَۚ وَسِعَ كُرْسِیُّهُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَۚ وَ لَا یَـُٔوْدُهٗ حِفْظُهُمَاۚ وَ هُوَ الْعَلِیُّ الْعَظِیْمُ
শব্দার্থ: اللَّهُ = আল্লাহ, لَا = নেই, إِلَٰهَ = কোনোইলাহ, إِلَّا = ছাড়া, هُوَ = তিনি, الْحَيُّ = চিরঞ্জীব, الْقَيُّومُ = সর্বসত্তারধারক, لَا = না, تَأْخُذُهُ = তাকেস্পর্শকরতেপারে, سِنَةٌ = তন্দ্রা, وَلَا = আরনা, نَوْمٌ = ঘুম, لَهُ = তাঁরইজন্য, مَا = যাকিছু, فِي = মধ্যে(আছে), السَّمَاوَاتِ = আকাশসমূহের, وَمَا = এবংযাকিছু, فِي = মধ্যে(আছে), الْأَرْضِ = পৃথিবীর, مَنْ = কে, ذَا = সে(এমনসম্পন্ন), الَّذِي = যে, يَشْفَعُ = সুপারিশকরবে, عِنْدَهُ = তাঁরকাছে, إِلَّا = ছাড়া, بِإِذْنِهِ = তাঁরঅনুমতি, يَعْلَمُ = তিনিজানেন, مَا = যা(আছে), بَيْنَ = (মাঝে), أَيْدِيهِمْ = তাদেরসামনে(হাতের), وَمَا = এবংযাকিছু, خَلْفَهُمْ = তাদেরপিছনে, وَلَا = এবংনা, يُحِيطُونَ = তারাআয়ত্তকরতেপারে, بِشَيْءٍ = সামান্যকিছুও, مِنْ = হতে, عِلْمِهِ = তাঁরজ্ঞান, إِلَّا = এছাড়া, بِمَا = যাসেবিষয়ে, شَاءَ = তিনিচান, وَسِعَ = পরিব্যাপ্তকরেআছে, كُرْسِيُّهُ = তাঁর(কর্তৃত্ব)আসন, السَّمَاوَاتِ = আকাশসমূহে, وَالْأَرْضَ = ওপৃথিবীতে, وَلَا = এবংনা, يَئُودُهُ = তাঁকেক্লান্তকরে, حِفْظُهُمَا = এদুটোররক্ষণাবেক্ষণ, وَهُوَ = এবংতিনি, الْعَلِيُّ = সুউচ্চ(সত্তা), الْعَظِيمُ = সুমহান,
অনুবাদ: আল্লাহ এমন এক চিরঞ্জীব ও চিরন্তন সত্তা যিনি সমগ্র বিশ্ব-জাহানের দায়িত্বভার বহন করছেন, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি ঘুমান না এবং তন্দ্রাও তাঁকে স্পর্শ করে না। পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে সবই তাঁর। কে আছে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? যা কিছু মানুষের সামনে আছে তা তিনি জানেন এবং যা কিছু তাদের অগোচরে আছে সে সম্পর্কেও তিনি অবগত। তিনি নিজে যে জিনিসের জ্ঞান মানুষকে দিতে চান সেটুকু ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ব করতে পারে না। তাঁর কর্তৃত্ব আকাশ ও পৃথিবী ব্যাপী। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষন তাঁকে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত করে না। মূলত তিনিই এক মহান ও শ্রেষ্ঠ সত্তা।
(2:256)
لَاۤ اِكْرَاهَ فِی الدِّیْنِ قَدْ تَّبَیَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَیِّۚ فَمَنْ یَّكْفُرْ بِالطَّاغُوْتِ وَ یُؤْمِنْۢ بِاللّٰهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰىۗ لَا انْفِصَامَ لَهَاؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: لَا = নেই, إِكْرَاهَ = জবরদস্তি, فِي = মধ্যে, الدِّينِ = দীনের, قَدْ = নিশ্চয়ই, تَبَيَّنَ = স্পষ্টহয়েছে, الرُّشْدُ = সত্যপথ, مِنَ = হতে, الْغَيِّ = ভ্রান্তপথ, فَمَنْ = যেঅতঃপর, يَكْفُرْ = অস্বীকারকরবে, بِالطَّاغُوتِ = তাগুতের(অসত্যদেবতার)প্রতি, وَيُؤْمِنْ = ওঈমানআনবে, بِاللَّهِ = আল্লাহরউপর, فَقَدِ = তাহলেনিশ্চয়ই, اسْتَمْسَكَ = সেধারণকরল, بِالْعُرْوَةِ = রাশি(বাহাতলকে), الْوُثْقَىٰ = সুদৃঢ়করে, لَا = না, انْفِصَامَ = ছিন্নহওয়ার, لَهَا = যা, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, سَمِيعٌ = সবশুনেন, عَلِيمٌ = সবজানেন,
অনুবাদ: দ্বীনের ব্যাপারে কোন জোর-জবরদস্তি নেই। ভ্রান্ত মত ও পথ থেকে সঠিক মত ও পথকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। এখন যে কেউ তাগুতকে অস্বীকার করে আল্লাহর ওপর ঈমান আনে, সে এমন একটি মজবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরে, যা কখনো ছিন্ন হয় না। আর আল্লাহ (যাকে সে অবলম্বন হিসেবে আঁকড়ে ধরেছে) সবকিছু শোনেন ও জানেন।
(2:257)
اَللّٰهُ وَلِیُّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْاۙ یُخْرِجُهُمْ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَى النُّوْرِ۬ؕ وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اَوْلِیٰٓـٴُـھُمُ الطَّاغُوْتُۙ یُخْرِجُوْنَهُمْ مِّنَ النُّوْرِ اِلَى الظُّلُمٰتِؕ أُولَٰئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ۠
শব্দার্থ: اللَّهُ = আল্লাহ, وَلِيُّ = অভিভাবক, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, يُخْرِجُهُمْ = তিনিতাদেরবেরকরেআনেন, مِنَ = হতে, الظُّلُمَاتِ = অন্ধকারগুলো, إِلَى = দিকে, النُّورِ = আলোর, وَالَّذِينَ = এবংযারা, كَفَرُوا = অস্বীকারকরেছে, أَوْلِيَاؤُهُمُ = তাদেরঅভিভাবক, الطَّاغُوتُ = তাগুত(অসত্যদেবতা), يُخْرِجُونَهُمْ = তাদেরকেতারাবেরকরেনিয়েযায়, مِنَ = থেকে, النُّورِ = আলো, إِلَى = দিকে, الظُّلُمَاتِ = অন্ধকারগুলোর, أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক, أَصْحَابُ = অধিবাসী, النَّارِ = (জাহান্নামের)আগুনের, هُمْ = তারা, فِيهَا = তারমধ্যে, خَالِدُونَ = চিরস্থায়ীহবে,
অনুবাদ: যারা ঈমান আনে আল্লাহ তাদের সাহায্যকারী ও সহায়। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর মধ্যে নিয়ে আসেন। আর যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করে তাদের সাহায্যকারী ও সহায় হচ্ছে তাগুত। সে তাদের আলোক থেকে অন্ধকারের মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। এরা আগুনের অধিবাসী। সেখানে থাকবে এরা চিরকালের জন্য।
(2:258)
اَلَمْ تَرَ اِلَى الَّذِیْ حَآجَّ اِبْرٰهٖمَ فِیْ رَبِّهٖۤ اَنْ اٰتٰىهُ اللّٰهُ الْمُلْكَۘ اِذْ قَالَ اِبْرٰهٖمُ رَبِّیَ الَّذِیْ یُحْیٖ وَ یُمِیْتُۙ قَالَ اَنَا اُحْیٖ وَ اُمِیْتُؕ قَالَ اِبْرٰهٖمُ فَاِنَّ اللّٰهَ یَاْتِیْ بِالشَّمْسِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَاْتِ بِهَا مِنَ الْمَغْرِبِ فَبُهِتَ الَّذِیْ كَفَرَؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَۚ
শব্দার্থ: أَلَمْ = নিকি, تَرَ = তুমিদেখ, إِلَى = প্রতি, الَّذِي = (তার)যে, حَاجَّ = বিতর্ককরেছিল, إِبْرَاهِيمَ = ইবরাহীমের(সাথে), فِي = সম্বন্ধে, رَبِّهِ = তাররব, أَنْ = (এজন্য)যে, آتَاهُ = তাকেদিয়েছিলেন, اللَّهُ = আল্লাহ, الْمُلْكَ = রাজত্ব, إِذْ = যখন, قَالَ = বলেছিল, إِبْرَاهِيمُ = ইবরাহীম, رَبِّيَ = আমাররব(হচ্ছেন), الَّذِي = (ঐসত্তা)যিনি, يُحْيِي = জীবিতকরেন, وَيُمِيتُ = এবংমৃত্যুঘটান, قَالَ = সেবলল, أَنَا = আমি, أُحْيِي = জীবনদানকরি, وَأُمِيتُ = ওমৃত্যুঘটাই, قَالَ = বলল, إِبْرَاهِيمُ = ইবরাহীম, فَإِنَّ = নিশ্চয়ইতবে, اللَّهَ = আল্লাহ, يَأْتِي = আনেন, بِالشَّمْسِ = সূর্যকেনিয়ে, مِنَ = হতে, الْمَشْرِقِ = পূর্বদিক, فَأْتِ = তুমিতাহলেআনো, بِهَا = তাকেনিয়ে, مِنَ = হতে, الْمَغْرِبِ = পশ্চিমদিক, فَبُهِتَ = হতবুদ্ধিহয়েতখনগেল, الَّذِي = যে, كَفَرَ = অস্বীকারকরেছিল, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, لَا = না, يَهْدِي = সঠিকপথদেখান, الْقَوْمَ = সম্প্রদায়কে, الظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘনকারী,
অনুবাদ: তুমি সেই ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে চিন্তা করোনি, যে ইবরাহীমের সাথে তর্ক করেছিল? তর্ক করেছিল এই কথা নিয়ে যে, ইবরাহীমের রব কে? এবং তর্ক এ জন্য করেছিল যে, আল্লাহ তাকে রাষ্ট্রক্ষমতা দান করেছিলেন। যখন ইবরাহীম বললোঃযার হাতে জীবন ও মৃত্যু তিনিই আমার রব। জবাবে সে বললোঃ জীবন ও মৃত্যু আমার হাতে। ইবরাহীম বললোঃ তাই যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে, আল্লাহ পূর্ব দিক থেকে সূর্য উঠান, দেখি তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উঠাও। একথা শুনে সেই সত্য অস্বীকারকারী হতবুদ্ধি হয়ে গেলো কিন্তু আল্লাহ জালেমদের সঠিক পথ দেখান না।
(2:259)
اَوْ كَالَّذِیْ مَرَّ عَلٰى قَرْیَةٍ وَّ هِیَ خَاوِیَةٌ عَلٰى عُرُوْشِهَاۚ قَالَ اَنّٰى یُحْیٖ هٰذِهِ اللّٰهُ بَعْدَ مَوْتِهَاۚ فَاَمَاتَهُ اللّٰهُ مِائَةَ عَامٍ ثُمَّ بَعَثَهٗؕ قَالَ كَمْ لَبِثْتَؕ قَالَ لَبِثْتُ یَوْمًا اَوْ بَعْضَ یَوْمٍؕ قَالَ بَلْ لَّبِثْتَ مِائَةَ عَامٍ فَانْظُرْ اِلٰى طَعَامِكَ وَ شَرَابِكَ لَمْ یَتَسَنَّهْۚ وَ انْظُرْ اِلٰى حِمَارِكَ وَ لِنَجْعَلَكَ اٰیَةً لِّلنَّاسِ وَ انْظُرْ اِلَى الْعِظَامِ كَیْفَ نُنْشِزُهَا ثُمَّ نَكْسُوْهَا لَحْمًاؕ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَهٗۙ قَالَ اَعْلَمُ اَنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ
শব্দার্থ: أَوْ = অথবা, كَالَّذِي = যেদৃষ্টান্ত(ঐলোকের), مَرَّ = অতিক্রমকরছিল, عَلَىٰ = উপরদিয়ে, قَرْيَةٍ = একনগরের, وَهِيَ = এমনঅবস্থায়যেতা(ছিল), خَاوِيَةٌ = ধ্বংসস্তুপহয়েছিল, عَلَىٰ = উপর, عُرُوشِهَا = তারছাদগুলোর, قَالَ = সেবলল, أَنَّىٰ = কিরূপে, يُحْيِي = জীবিতকরবেন, هَٰذِهِ = এটাকে, اللَّهُ = আল্লাহ, بَعْدَ = পর, مَوْتِهَا = তার(মৃত্যুর), فَأَمَاتَهُ = তাকেতখনমৃত্যুদিলেন, اللَّهُ = আল্লাহ, مِائَةَ = একশত, عَامٍ = বছর(পর্যন্ত), ثُمَّ = এরপর, بَعَثَهُ = তাকেপুনরুজ্জীবিতকরলেন, قَالَ = (তাকে)বললেন, كَمْ = কতকাল, لَبِثْتَ = তুমিঅবস্থানকরেছ, قَالَ = সেবলল, لَبِثْتُ = অবস্থানকরেছিআমি, يَوْمًا = একদিন, أَوْ = কিংবা, بَعْضَ = কিছুঅংশ, يَوْمٍ = দিনের, قَالَ = তিনিবললেন, بَلْ = বরং, لَبِثْتَ = তুমিঅবস্থানকরেছ, مِائَةَ = একশত, عَامٍ = বছর, فَانْظُرْ = অতঃপরলক্ষকরো, إِلَىٰ = দিকে, طَعَامِكَ = তোমারখাদ্যের, وَشَرَابِكَ = ওতোমারপানীয়ের(দিকে), لَمْ = নি, يَتَسَنَّهْ = বিকৃতহয়, وَانْظُرْ = এবংলক্ষকরোতুমি, إِلَىٰ = প্রতি, حِمَارِكَ = তোমারগাধার, وَلِنَجْعَلَكَ = এবংতোমাকেআমরাবানাতেপারি, آيَةً = নিদর্শন, لِلنَّاسِ = মানুষেরজন্য, وَانْظُرْ = ওতুমিদেখো, إِلَى = প্রতি, الْعِظَامِ = হাড়গুলোর, كَيْفَ = কীভাবে, نُنْشِزُهَا = আমরাতাসংযোজিতকরি, ثُمَّ = এরপর, نَكْسُوهَا = তাঢেকেদিইআমরা, لَحْمًا = গোশত(দিয়ে), فَلَمَّا = অতঃপরযখন, تَبَيَّنَ = প্রকাশপেল, لَهُ = তারনিকটে, قَالَ = সেবলল, أَعْلَمُ = আমিজানি, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, عَلَىٰ = ওপর, كُلِّ = সব, شَيْءٍ = কিছুরই, قَدِيرٌ = সর্বশক্তিমান,
অনুবাদ: অথবা দৃষ্টান্তস্বরূপ সেই ব্যক্তিকে দেখো যে এমন একটি লোকালয় অতিক্রম করেছিল, যার গৃহের ছাদগুলো উপুড় হয়ে পড়েছিল। সে বললোঃ এই ধ্বংসপ্রাপ্ত জনবসতি, একে আল্লাহ আবার কিভাবে জীবিত করবেন? একথায় আল্লাহ তার প্রাণ হরণ করলেন এবং সে একশো বছর পর্যন্ত মৃত পড়ে রইলো। তারপর আল্লাহ পুনর্বার তাকে জীবন দান করলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ বলো, তুমি কত বছর পড়েছিলে? জবাব দিলঃ এই, এক দিন বা কয়েক ঘন্টা পড়েছিলাম। আল্লাহ বললেনঃ “বরং একশোটি বছর এই অবস্থায় তোমার ওপর দিয়ে চলে গেছে। এবার নিজের খাবার ও পানীয়ের ওপর একবার নজর বুলাও, দেখো তার মধ্যে কোন সামান্য পরিবর্তনও আসেনি। অন্যদিকে তোমার গাধাটিকে দেখো (তার পাঁজরগুলোও পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে)। আর এটা আমি এ জন্য করেছি যে, মানুষের জন্য তোমাকে আমি একটি নিদর্শন হিসেবে দাঁড় করাতে চাই। তারপর দেখো, এই অস্থিপাঁজরটি, কিভাবে একে উঠিয়ে এর গায়ে গোশত ও চামড়া লাগিয়ে দিই।” এভাবে সত্য যখন তার সামনে সুস্পষ্ট হয়ে উঠলো তখন সে বলে উঠলোঃ “আমি জানি, আল্লাহ সবকিছুর ওপর শক্তিশালী।”
(2:260)
وَ اِذْ قَالَ اِبْرٰهٖمُ رَبِّ اَرِنِیْ كَیْفَ تُحْیِ الْمَوْتٰىؕ قَالَ اَوَ لَمْ تُؤْمِنْؕ قَالَ بَلٰى وَ لٰكِنْ لِّیَطْمَئِنَّ قَلْبِیْؕ قَالَ فَخُذْ اَرْبَعَةً مِّنَ الطَّیْرِ فَصُرْهُنَّ اِلَیْكَ ثُمَّ اجْعَلْ عَلٰى كُلِّ جَبَلٍ مِّنْهُنَّ جُزْءًا ثُمَّ ادْعُهُنَّ یَاْتِیْنَكَ سَعْیًاؕ وَ اعْلَمْ اَنَّ اللّٰهَ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ۠
শব্দার্থ: وَإِذْ = এবংযখন, قَالَ = বলল, إِبْرَاهِيمُ = ইবরাহীম, رَبِّ = হেআমাররব, أَرِنِي = দেখাওআমাকে, كَيْفَ = কীভাবে, تُحْيِي = তুমিজীবিতকর, الْمَوْتَىٰ = মৃতদেরকে, قَالَ = তিনিবললেন, أَوَلَمْ = নাকি, تُؤْمِنْ = তুমিবিশ্বাসকর, قَالَ = সেবলল, بَلَىٰ = হ্যাঁঅবশ্যই, وَلَٰكِنْ = কিন্তু, لِيَطْمَئِنَّ = প্রশান্তলাভকরে, قَلْبِي = আমারঅন্তর, قَالَ = তিনিবললেন, فَخُذْ = তুমিতাহলেধরো, أَرْبَعَةً = চারটি, مِنَ = থেকে, الطَّيْرِ = পাখি, فَصُرْهُنَّ = তাদেরকেএরপরপোষমানাও, إِلَيْكَ = তোমারপ্রতি, ثُمَّ = এরপর, اجْعَلْ = রেখেদাও, عَلَىٰ = উপর, كُلِّ = প্রত্যেক, جَبَلٍ = পাহাড়ের, مِنْهُنَّ = তাদেরথেকে, جُزْءًا = (কর্তিতএকএক)অংশ, ثُمَّ = এরপর, ادْعُهُنَّ = তাদেরকেডাকো, يَأْتِينَكَ = তোমারকাছেআসবে, سَعْيًا = দৌড়ে, وَاعْلَمْ = এবংতুমিজেনেরাখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, عَزِيزٌ = পরাক্রমশালী, حَكِيمٌ = মহাবিজ্ঞ,
অনুবাদ: আর সেই ঘটনাটিও সামনে রাখো, যখন ইব্রাহীম বলেছিলঃ “আমার প্রভু! আমাকে দেখিয়ে দাও কিভাবে তুমি মৃতদের পুনর্জীবিত করো।” বললেনঃ তুমি কি বিশ্বাস করো না? ইব্রাহীম জবাব দিলঃ বিশ্বাস তো করি, তবে মানসিক নিশ্চিন্ততা লাভ করতে চাই। বললেনঃ ঠিক আছে, তুমি চারটি পাখি নাও এবং তাদেরকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও। তারপর তাদের এক একটি অংশ এক একটি পাহাড়ের ওপর রাখো। এরপর তাদেরকে ডাকো। তারা তোমার কাছে দৌড়ে চলে আসবে। ভালোভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী ও জ্ঞানময়।
(2:261)
مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۢبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ كُلِّ سُنْۢبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍؕ وَ اللّٰهُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَآءُؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: مَثَلُ = উপমা(তাদেরঐরূপ), الَّذِينَ = যারা, يُنْفِقُونَ = ব্যয়করে, أَمْوَالَهُمْ = তাদেরধনসম্পদ, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, كَمَثَلِ = মতোউপমা, حَبَّةٍ = একটাশস্যদানা(বীজের), أَنْبَتَتْ = তাউৎপন্নকরে, سَبْعَ = সাতটি, سَنَابِلَ = শীষ, فِي = মধ্যে(আছে), كُلِّ = প্রত্যেকটি, سُنْبُلَةٍ = শীষে, مِائَةُ = একশত, حَبَّةٍ = শস্যদানা, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يُضَاعِفُ = বৃদ্ধিকরেনবহুগুনে, لِمَنْ = তারজন্যযাকে, يَشَاءُ = তিনিইচ্ছাকরেন, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, وَاسِعٌ = প্রাচুর্যময়, عَلِيمٌ = সর্বজ্ঞ,
অনুবাদ: যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের ব্যয়ের দৃষ্টান্ত হচ্ছেঃ যেমন একটি শস্যবীজ বপন করা হয় এবং তা থেকে সাতটি শীষ উৎপন্ন হয়, যার প্রত্যেকটি শীষে থাকে একশতটি করে শস্যকণা। এভাবে আল্লাহ যাকে চান, তার কাজে প্রাচুর্য দান করেন। তিনি মুক্তহস্ত ও সর্বজ্ঞ।
(2:262)
اَلَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ثُمَّ لَا یُتْبِعُوْنَ مَاۤ اَنْفَقُوْا مَنًّا وَّ لَاۤ اَذًىۙ لَّهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْۚ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, يُنْفِقُونَ = ব্যয়করে, أَمْوَالَهُمْ = তাদেরধনসম্পদ, فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, ثُمَّ = এরপর, لَا = না, يُتْبِعُونَ = তারাপেছনেথাকে, مَا = (তার)যা, أَنْفَقُوا = তারাব্যয়করেছে, مَنًّا = (অনুগ্রহকরার)খোটা, وَلَا = আরনা, أَذًى = কষ্ট, لَهُمْ = তাদেরজন্য(রয়েছে), أَجْرُهُمْ = তাদেরপুরস্কার, عِنْدَ = কাছে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, وَلَا = এবংনেই, خَوْفٌ = কোনোভয়, عَلَيْهِمْ = তাদেরজন্য, وَلَا = আরনা, هُمْ = তারা, يَحْزَنُونَ = দুঃখকরবে,
অনুবাদ: যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে এবং ব্যয় করার পর নিজেদের অনুগ্রহের কথা বলে বেড়ায় না আর কাউকে কষ্টও দেয় না, তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে এবং তাদের কোন দুঃখ, মর্মবেদনা ও ভয় নেই।
(2:263)
قَوْلٌ مَّعْرُوْفٌ وَّ مَغْفِرَةٌ خَیْرٌ مِّنْ صَدَقَةٍ یَّتْبَعُهَاۤ اَذًىؕ وَ اللّٰهُ غَنِیٌّ حَلِیْمٌ
শব্দার্থ: قَوْلٌ = কথা, مَعْرُوفٌ = ভাল, وَمَغْفِرَةٌ = ওক্ষমা, خَيْرٌ = উত্তম, مِنْ = চেয়ে, صَدَقَةٍ = (এমন)দানের, يَتْبَعُهَا = যারপেছনেআসে, أَذًى = কষ্ট, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, غَنِيٌّ = অভাবমুক্ত, حَلِيمٌ = পরমসহনশীল,
অনুবাদ: একটি মিষ্টি কথা এবং কোন অপ্রীতিকর ব্যাপারে সামান্য উদারতা ও ক্ষমা প্রদর্শন এমনি দানের চেয়ে ভালো, যার পেছনে আসে দুঃখ ও মর্মজ্বালা। মূলত আল্লাহ করো মুখাপেক্ষী নন, সহনশীলতাই তাঁর গুণ।
(2:264)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقٰتِكُمْ بِالْمَنِّ وَ الْاَذٰىۙ كَالَّذِیْ یُنْفِقُ مَالَهٗ رِئَآءَ النَّاسِ وَ لَا یُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِؕ فَمَثَلُهٗ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَیْهِ تُرَابٌ فَاَصَابَهٗ وَابِلٌ فَتَرَكَهٗ صَلْدًاؕ لَا یَقْدِرُوْنَ عَلٰى شَیْءٍ مِّمَّا كَسَبُوْاؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْكٰفِرِیْنَ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, لَا = না, تُبْطِلُوا = তোমরানষ্টকরো, صَدَقَاتِكُمْ = তোমাদেরদানসমূহ, بِالْمَنِّ = (অনুগ্রহপ্রদানের)খোটাদিয়ে, وَالْأَذَىٰ = ওকষ্ট(দিয়ে), كَالَّذِي = (ঐব্যক্তির)মতোযে, يُنْفِقُ = ব্যয়করে, مَالَهُ = তারধনসম্পদ, رِئَاءَ = দেখানোরজন্য, النَّاسِ = মানুষ, وَلَا = আরনা, يُؤْمِنُ = বিশ্বাসকরে, بِاللَّهِ = আল্লাহরপ্রতি, وَالْيَوْمِ = ওদিনে, الْآخِرِ = আখিরাতের, فَمَثَلُهُ = সুতরাংতারউপমা, كَمَثَلِ = উপমারমতো, صَفْوَانٍ = একটিপাথরেরমসৃণ, عَلَيْهِ = তারউপর(আছে), تُرَابٌ = মাটি, فَأَصَابَهُ = তাতেঅতঃপরবর্ষিতহয়, وَابِلٌ = প্রবলবৃষ্টি, فَتَرَكَهُ = ফলেতাকেরেখেদেয়, صَلْدًا = পরিস্কারকরে, لَا = না, يَقْدِرُونَ = তারাসক্ষমহয়(কাজেলাগাতে), عَلَىٰ = এক্ষেত্রে, شَيْءٍ = কোনোকিছুই, مِمَّا = তাহতেযা, كَسَبُوا = তারাঅর্জনকরেছে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, لَا = না, يَهْدِي = সৎপথেপরিচালিতকরেন, الْقَوْمَ = সম্প্রদায়কে, الْكَافِرِينَ = (যারা)অস্বীকারকারী,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ!তোমরা অনুগ্রহের কথা বলে বেড়িয়ে ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাতকে সেই ব্যক্তির মতো নষ্ট করে দিয়ো না যে নিছক লোক দেখাবার জন্য নিজের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, অথচ সে আল্লাহর ওপর ঈমান রাখে না এবং পরকালেও বিশ্বাস করে না। তার ব্যয়ের দৃষ্টান্ত হচ্ছেঃ একটি মসৃণ পাথরখন্ডের ওপর মাটির আস্তর জমেছিল। প্রবল বর্ষণের ফলে সমস্ত মাটি ধুয়ে গেলো। এখন সেখানে রয়ে গেলো শুধু পরিষ্কার পাথর খন্ডটি। এই ধরনের লোকেরা দান – খয়রাত করে যে নেকী অর্জন করে বলে মনে করে তার কিছুই তাদের হাতে আসে না। আর কাফেরদের সোজা পথ দেখানো আল্লাহর নিয়ম নয়।
(2:265)
وَ مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللّٰهِ وَ تَثْبِیْتًا مِّنْ اَنْفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍۭ بِرَبْوَةٍ اَصَابَهَا وَابِلٌ فَاٰتَتْ اُكُلَهَا ضِعْفَیْنِۚ فَاِنْ لَّمْ یُصِبْهَا وَابِلٌ فَطَلٌّؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ
শব্দার্থ: وَمَثَلُ = এবংউপমা, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, يُنْفِقُونَ = ব্যয়করে, أَمْوَالَهُمُ = তাদেরসম্পদগুলো, ابْتِغَاءَ = সন্ধানে, مَرْضَاتِ = সন্তুষ্টির, اللَّهِ = আল্লাহর, وَتَثْبِيتًا = এবংসুদৃঢ়করতে, مِنْ = বিষয়টিকে, أَنْفُسِهِمْ = তাদেরআত্মার, كَمَثَلِ = (তাদের)উপমাযেমন, جَنَّةٍ = একটিবাগানের, بِرَبْوَةٍ = উঁচুভূমিতেঅবস্থিত, أَصَابَهَا = তাতেবর্ষিতহয়, وَابِلٌ = প্রবলবৃষ্টি, فَآتَتْ = আসেঅতঃপর, أُكُلَهَا = তারফলমূল, ضِعْفَيْنِ = দ্বিগুণ, فَإِنْ = যদিতবে, لَمْ = না, يُصِبْهَا = তাতেবর্ষিতহয়, وَابِلٌ = প্রবলবৃষ্টি, فَطَلٌّ = সামান্যতবেবৃষ্টিই(যথেষ্ট), وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, بِمَا = ঐবিষয়েযা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকাজকরছ, بَصِيرٌ = সম্যকদ্রষ্টা,
অনুবাদ: বিপরীত পক্ষে যারা পূর্ণ মানসিক একাগ্রতা ও অবিচলতা সহকারে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের এই ব্যয়ের দৃষ্টান্ত হচ্ছেঃ কোন উচ্চ ভূমিতে একটি বাগান, প্রবল বৃষ্টিপাত হলে সেখানে দ্বিগুণ ফলন হয়। আর প্রবল বৃষ্টিপাত না হলে সামান্য হালকা বৃষ্টিপাতই তার জন্য যথেষ্ট। আর তোমরা যা কিছু করো সবই আল্লাহর দৃষ্টি সীমার মধ্যে রয়েছে।
(2:266)
اَیَوَدُّ اَحَدُكُمْ اَنْ تَكُوْنَ لَهٗ جَنَّةٌ مِّنْ نَّخِیْلٍ وَّ اَعْنَابٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُۙ لَهٗ فِیْهَا مِنْ كُلِّ الثَّمَرٰتِۙ وَ اَصَابَهُ الْكِبَرُ وَ لَهٗ ذُرِّیَّةٌ ضُعَفَآءُﳚ فَاَصَابَهَاۤ اِعْصَارٌ فِیْهِ نَارٌ فَاحْتَرَقَتْؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ لَكُمُ الْاٰیٰتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُوْنَ۠
শব্দার্থ: أَيَوَدُّ = কামনাকরেকি, أَحَدُكُمْ = তোমাদেরকেউ, أَنْ = যে, تَكُونَ = হবে, لَهُ = তারজন্য, جَنَّةٌ = একটিবাগান, مِنْ = এর, نَخِيلٍ = খেজুর, وَأَعْنَابٍ = ওআঙ্গুরের, تَجْرِي = প্রবাহিতহয়, مِنْ = দিয়ে, تَحْتِهَا = তারনিচ, الْأَنْهَارُ = ঝর্ণাসমূহ, لَهُ = তার(আছে), فِيهَا = তারমধ্যে, مِنْ = থেকে, كُلِّ = সবধরণের, الثَّمَرَاتِ = ফলমূল, وَأَصَابَهُ = এবংতারআপতিতহল, الْكِبَرُ = বার্ধক্য, وَلَهُ = যখনতারআছে, ذُرِّيَّةٌ = সন্তানসন্ততি, ضُعَفَاءُ = দুর্বল, فَأَصَابَهَا = তাকেঅতঃপরআঘাতকরল, إِعْصَارٌ = ঘূর্ণিঝড়, فِيهِ = তারমধ্য(আছে), نَارٌ = আগুন, فَاحْتَرَقَتْ = পুড়েগেলঅতঃপর(সেইবাগান), كَذَٰلِكَ = এভাবে, يُبَيِّنُ = বর্ণনাকরেন, اللَّهُ = আল্লাহ, لَكُمُ = তোমাদেরজন্য, الْآيَاتِ = নিদর্শনাবলী, لَعَلَّكُمْ = আশাকরাযায়তোমরা, تَتَفَكَّرُونَ = চিন্তাকরবে,
অনুবাদ: তোমাদের কেউ কি পছন্দ করে, তার একটি সবুজ শ্যামল বাগান থাকবে, সেখানে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে, খেজুর, আঙ্গুর ও সব রকম ফলে পরিপূর্ণ থাকবে এবং বাগানটি ঠিক এমন এক সময় প্রবল উষ্ণ বায়ু প্রবাহে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে সে নিজে বৃদ্ধ হয়ে গেছে এবং তার সন্তানরাও তখনো যোগ্য হয়ে উঠেনি? এভাবেই আল্লাহ তাঁর কথা তোমাদের সামনে বর্ণনা করেন, যেন তোমরা চিন্তা-ভাবনা করতে পারো।
(2:267)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْفِقُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا كَسَبْتُمْ وَ مِمَّاۤ اَخْرَجْنَا لَكُمْ مِّنَ الْاَرْضِ۪ وَ لَا تَیَمَّمُوا الْخَبِیْثَ مِنْهُ تُنْفِقُوْنَ وَ لَسْتُمْ بِاٰخِذِیْهِ اِلَّاۤ اَنْ تُغْمِضُوْا فِیْهِؕ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ غَنِیٌّ حَمِیْدٌ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, أَنْفِقُوا = ব্যয়করতোমরা, مِنْ = হতে, طَيِّبَاتِ = পবিত্রজিনিসগুলো, مَا = যা, كَسَبْتُمْ = তোমরাঅর্জনকরেছ, وَمِمَّا = এবংতাহতেওযা, أَخْرَجْنَا = বেরকরেছিআমরা, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, مِنَ = থেকে, الْأَرْضِ = জমি, وَلَا = এবংনা, تَيَمَّمُوا = তোমরাসংকল্পকরো, الْخَبِيثَ = নিকৃষ্টবস্তুগুলোকে, مِنْهُ = তাথেকে, تُنْفِقُونَ = ব্যয়করতে, وَلَسْتُمْ = অথচতোমরানও, بِآخِذِيهِ = তাগ্রহণকারী, إِلَّا = এছাড়া, أَنْ = যে, تُغْمِضُوا = তোমরাচোখবন্ধকরেথাক, فِيهِ = তাহতে, وَاعْلَمُوا = এবংতোমরাজেনেরেখো, أَنَّ = যে, اللَّهَ = আল্লাহ, غَنِيٌّ = অভাবমুক্ত, حَمِيدٌ = প্রশংসিত,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! যে অর্থ তোমরা উপার্জন করেছো এবং যা কিছু আমি জমি থেকে তোমাদের জন্য বের করে দিয়েছি, তা থেকে উৎকৃষ্ট অংশ আল্লাহর পথে ব্যয় করো। তাঁর পথে ব্যয় করার জন্য তোমরা যেন সবচেয়ে খারাপ জিনিস বাছাই করার চেষ্টা করো না। কারণ ঐ জিনিসই যদি কেউ তোমাদের দেয়, তাহলে তোমরা কখনো তা নিতে রাজি হও না, যদি না তা নেবার ব্যাপারে তোমরা চোখ বন্ধ করে থাকো। তোমাদের জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন এবং তিনি সর্বোত্তম গুণে গুণান্বিত।
(2:268)
اَلشَّیْطٰنُ یَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَ یَاْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَآءِۚ وَ اللّٰهُ یَعِدُكُمْ مَّغْفِرَةً مِّنْهُ وَ فَضْلًاؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌۖۙ
শব্দার্থ: الشَّيْطَانُ = শয়তান, يَعِدُكُمُ = তোমাদেরভয়দেখায়, الْفَقْرَ = দারিদ্র্যের, وَيَأْمُرُكُمْ = এবংনির্দেশদেয়, بِالْفَحْشَاءِ = অশ্লীলতার, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, يَعِدُكُمْ = তোমাদেরপ্রতিশ্রুতিদেন, مَغْفِرَةً = ক্ষমার, مِنْهُ = তাঁরথেকে, وَفَضْلًا = ওতাঁরঅনুগ্রহের, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, وَاسِعٌ = প্রাচুর্যময়, عَلِيمٌ = সর্বজ্ঞ,
অনুবাদ: শয়তান তোমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায় এবং লজ্জাকর কর্মনীতি অবলম্বন করতে প্রলুব্ধ করে কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের আশ্বাস দেন। আল্লাহ বড়ই উদারহস্ত ও মহাজ্ঞানী।
(2:269)
یُّؤْتِی الْحِكْمَةَ مَنْ یَّشَآءُۚ وَ مَنْ یُّؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ اُوْتِیَ خَیْرًا كَثِیْرًاؕ وَ مَا یَذَّكَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الْاَلْبَابِ
শব্দার্থ: يُؤْتِي = দেনতিনি, الْحِكْمَةَ = প্রজ্ঞা, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিইচ্ছাকরেন, وَمَنْ = এবংযাকে, يُؤْتَ = দেয়াহয়েছে, الْحِكْمَةَ = প্রজ্ঞা, فَقَدْ = তবেনিশ্চয়ই, أُوتِيَ = তাকেদেয়াহয়েছে, خَيْرًا = কল্যাণ, كَثِيرًا = অনেক, وَمَا = এবংনা, يَذَّكَّرُ = শিক্ষানেয়(এথেকে), إِلَّا = এছাড়া, أُولُو = সম্পন্নরা, الْأَلْبَابِ = বোধশক্তি,
অনুবাদ: তিনি যাকে চান, হিকমত দান করেন। আর যে ব্যক্তি হিকমত লাভ করে সে আসলে বিরাট সম্পদ লাভ করেছে। এই কথা থেকে কেবলমাত্র তারাই শিক্ষা লাভ করে যারা বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী।
(2:270)
وَ مَاۤ اَنْفَقْتُمْ مِّنْ نَّفَقَةٍ اَوْ نَذَرْتُمْ مِّنْ نَّذْرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ یَعْلَمُهٗؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیْنَ مِنْ اَنْصَارٍ
শব্দার্থ: وَمَا = এবংযা, أَنْفَقْتُمْ = তোমরাব্যয়করেছ, مِنْ = কোনো, نَفَقَةٍ = খরচাখরচ, أَوْ = অথবা, نَذَرْتُمْ = তোমরামানতকর, مِنْ = কোনো, نَذْرٍ = মানত, فَإِنَّ = নিশ্চয়ইঅতঃপর, اللَّهَ = আল্লাহ, يَعْلَمُهُ = তাজানেন, وَمَا = এবংনেই, لِلظَّالِمِينَ = সীমালঙ্ঘনকারীদেরজন্য, مِنْ = কোনো, أَنْصَارٍ = সাহায্যকারী,
অনুবাদ: তোমরা যা কিছু ব্যয় করেছো এবং যা মানতও করেছো আল্লাহ তা সবই জানেন। আর জালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই।
(2:271)
اِنْ تُبْدُوا الصَّدَقٰتِ فَنِعِمَّا هِیَۚ وَ اِنْ تُخْفُوْهَا وَ تُؤْتُوْهَا الْفُقَرَآءَ فَهُوَ خَیْرٌ لَّكُمْؕ وَ یُكَفِّرُ عَنْكُمْ مِّنْ سَیِّاٰتِكُمْؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ
শব্দার্থ: إِنْ = যদি, تُبْدُوا = তোমরাপ্রকাশ্যেদাও, الصَّدَقَاتِ = সদকাসমূহ, فَنِعِمَّا = উত্তমতবে, هِيَ = তা, وَإِنْ = আরযদি, تُخْفُوهَا = তাতোমরাগোপনেকর, وَتُؤْتُوهَا = ওতোমরাতাদাও, الْفُقَرَاءَ = অভাবগ্রস্তদেরকে, فَهُوَ = তাতবে, خَيْرٌ = (আরও)ভালো, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, وَيُكَفِّرُ = এবংদূরকরবেন, عَنْكُمْ = তোমাদেরথেকে, مِنْ = কিছুকিছু, سَيِّئَاتِكُمْ = তোমাদেরপাপগুলো, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, بِمَا = ঐবিষয়যা, تَعْمَلُونَ = তোমরাকাজকর, خَبِيرٌ = ভালোভাবেঅবহিত,
অনুবাদ: যদি তোমাদের দান-সাদ্কাগুলো প্রকাশ্যে করো, তাহলে তাও ভালো, তবে যদি গোপনে অভাবীদের দাও, তাহলে তোমাদের জন্য এটিই বেশী ভালো। এভাবে তোমাদের অনেক গোনাহ নির্মূল হয়ে যায়। আর তোমরা যা কিছু করে থাকো আল্লাহ অবশ্যি তা জানেন।
(2:272)
لَیْسَ عَلَیْكَ هُدٰىهُمْ وَ لٰكِنَّ اللّٰهَ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُؕ وَ مَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ فَلِاَنْفُسِكُمْؕ وَ مَا تُنْفِقُوْنَ اِلَّا ابْتِغَآءَ وَجْهِ اللّٰهِؕ وَ مَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ یُّوَفَّ اِلَیْكُمْ وَ اَنْتُمْ لَا تُظْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: لَيْسَ = নয়, عَلَيْكَ = তোমারউপর(দায়িত্ব), هُدَاهُمْ = তাদেরসৎপথগ্রহণের, وَلَٰكِنَّ = কিন্তু, اللَّهَ = আল্লাহ, يَهْدِي = পথদেখান, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিচান, وَمَا = এবংযা, تُنْفِقُوا = তোমরাব্যয়কর, مِنْ = কোনো, خَيْرٍ = সম্পদ, فَلِأَنْفُسِكُمْ = তোমাদেরতবেতানিজেদেরজন্য, وَمَا = এবংনা, تُنْفِقُونَ = তোমরাব্যয়কর, إِلَّا = এছাড়াযে, ابْتِغَاءَ = সন্ধানে, وَجْهِ = চেহারা, اللَّهِ = আল্লাহর, وَمَا = এবংযা, تُنْفِقُوا = তোমরাখরচকর, مِنْ = কোনো, خَيْرٍ = সম্পদ, يُوَفَّ = পূর্ণদেয়াহবে, إِلَيْكُمْ = তোমাদেরপ্রতি, وَأَنْتُمْ = ওতোমাদের(প্রতি), لَا = না, تُظْلَمُونَ = অন্যায়করাহবে,
অনুবাদ: মানুষকে হিদায়াত দান করার দায়িত্ব তোমাদের ওপর অর্পিত হয়নি। আল্লাহ যাকে চান তাকে হিদায়াত দান করেন। তোমরা যে ধন-সম্পদ দান–খয়রাত করো, তা তোমাদের নিজেদের জন্য ভালো। তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করার জন্যই তো অর্থ ব্যয় করে থাকো। কাজেই দান-খয়রাত করে তোমরা যা কিছু অর্থ ব্যয় করবে, তার পুরোপুরি প্রতিদান দেয়া হবে এবং এক্ষেত্রে কোনক্রমেই তোমাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হবে না।
(2:273)
لِلْفُقَرَآءِ الَّذِیْنَ اُحْصِرُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ لَا یَسْتَطِیْعُوْنَ ضَرْبًا فِی الْاَرْضِ٘ یَحْسَبُهُمُ الْجَاهِلُ اَغْنِیَآءَ مِنَ التَّعَفُّفِۚ تَعْرِفُهُمْ بِسِیْمٰىهُمْۚ لَا یَسْــٴَـلُوْنَ النَّاسَ اِلْحَافًاؕ وَ مَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِیْمٌ۠
শব্দার্থ: لِلْفُقَرَاءِ = অভাবগ্রস্তদেরজন্য, الَّذِينَ = যারা, أُحْصِرُوا = আটকেপড়েছে(ব্যস্ততারকারণে), فِي = মধ্যে, سَبِيلِ = পথের, اللَّهِ = আল্লাহর, لَا = না, يَسْتَطِيعُونَ = তারাপারে, ضَرْبًا = ঘোরাফিরাকরতে, فِي = মধ্যে, الْأَرْضِ = পৃথিবীর(অর্থাৎউপার্জনকরতে), يَحْسَبُهُمُ = তাদেরকেমনেকরে, الْجَاهِلُ = অজ্ঞলোকেরা, أَغْنِيَاءَ = অভাবমুক্ত, مِنَ = কারণে, التَّعَفُّفِ = নাচাওয়ার, تَعْرِفُهُمْ = তাদেরকেতুমিচিনবে, بِسِيمَاهُمْ = তাদেরলক্ষণদিয়ে, لَا = না, يَسْأَلُونَ = তারাচায়, النَّاسَ = মানুষ(থেকে), إِلْحَافًا = নাছোড়হয়ে, وَمَا = এবংযা, تُنْفِقُوا = তোমরাব্যয়কর, مِنْ = হতে, خَيْرٍ = সম্পদ, فَإِنَّ = অতঃপরনিশ্চয়ই, اللَّهَ = আল্লাহ, بِهِ = তাসম্পর্কে, عَلِيمٌ = খুবঅবহিত,
অনুবাদ: বিশেষ করে এমন সব গরীব লোক সাহায্য লাভের অধিকারী, যারা আল্লাহর কাজে এমনভাবে জড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত অর্থোপার্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে পারে না এবং তাদের আত্মমর্যাদাবোধ দেখে অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে সচ্ছল বলে মনে করে। তাদের চেহারা দেখেই তুমি তাদের ভেতরের অবস্থা জানতে পারো। মানুষের পেছনে লেগে থেকে কিছু চাইবে, এমন লোক তারা নয়। তাদের সাহায্যার্থে তোমরা যা কিছু অর্থ ব্যয় করবে, তা আল্লাহর দৃষ্টির অগোচরে থাকবে না।
(2:274)
اَلَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ بِالَّیْلِ وَ النَّهَارِ سِرًّا وَّ عَلَانِیَةً فَلَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْۚ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَؔ
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, يُنْفِقُونَ = ব্যয়করে, أَمْوَالَهُمْ = তাদেরসম্পদসমূহকে, بِاللَّيْلِ = রাতে, وَالنَّهَارِ = ওদিনে, سِرًّا = গোপনে, وَعَلَانِيَةً = ওপ্রকাশ্যে, فَلَهُمْ = ফলে(রয়েছে)তাদেরজন্য, أَجْرُهُمْ = তাদেরপুরস্কার, عِنْدَ = কাছে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, وَلَا = এবংনেই, خَوْفٌ = কোনোভয়, عَلَيْهِمْ = তাদেরজন্য, وَلَا = এবংনা, هُمْ = তারা, يَحْزَنُونَ = দুঃখিতহবে,
অনুবাদ: যারা নিজেদের ধন-সম্পদ দিনরাত গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে এবং তাদের কোন ভয় ও দুঃখ নেই।
(2:275)
اَلَّذِیْنَ یَاْكُلُوْنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوْمُوْنَ اِلَّا كَمَا یَقُوْمُ الَّذِیْ یَتَخَبَّطُهُ الشَّیْطٰنُ مِنَ الْمَسِّؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْۤا اِنَّمَا الْبَیْعُ مِثْلُ الرِّبٰواۘ وَ اَحَلَّ اللّٰهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰواؕ فَمَنْ جَآءَهٗ مَوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ فَانْتَهٰى فَلَهٗ مَا سَلَفَؕ وَ اَمْرُهٗۤ اِلَى اللّٰهِؕ وَ مَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যারা, يَأْكُلُونَ = খায়, الرِّبَا = সুদ, لَا = না, يَقُومُونَ = তারাদাঁড়াবে, إِلَّا = এছাড়া, كَمَا = যেমন, يَقُومُ = দাঁড়ায়, الَّذِي = সেই(ব্যক্তি), يَتَخَبَّطُهُ = যাকেপাগলকরেছে, الشَّيْطَانُ = শয়তান, مِنَ = দ্বারা, الْمَسِّ = (তার)স্পর্শ, ذَٰلِكَ = এটা, بِأَنَّهُمْ = এজন্যযেতারা, قَالُوا = বলে, إِنَّمَا = মূলতঃ, الْبَيْعُ = ব্যবসাও, مِثْلُ = মতো, الرِّبَا = সুদেরই, وَأَحَلَّ = অথচবৈধকরেছেন, اللَّهُ = আল্লাহ, الْبَيْعَ = ব্যবসাকে, وَحَرَّمَ = ওনিষিদ্ধকরেছেন, الرِّبَا = সুদকে, فَمَنْ = অতঃপরযে, جَاءَهُ = তারকাছেএসেছে, مَوْعِظَةٌ = উপদেশ, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّهِ = তাররবের, فَانْتَهَىٰ = সেঅতঃপরবিরতহয়েছে(সুদখোরীহতে), فَلَهُ = তবেতারজন্য, مَا = যা, سَلَفَ = অতীতহয়ছে(হয়েগেছে), وَأَمْرُهُ = এবংতারব্যাপার(সোপর্দ), إِلَى = কাছে, اللَّهِ = আল্লাহ, وَمَنْ = আরযে, عَادَ = পুনরাবৃত্তিকরবে, فَأُولَٰئِكَ = তাহলেঐসবলোক, أَصْحَابُ = অধিবাসী(হবে), النَّارِ = আগুনের, هُمْ = তারা, فِيهَا = তারমধ্যে, خَالِدُونَ = চিরস্থায়ীহবে,
অনুবাদ: কিন্তু যারা সুদ খায় তাদের অবস্থা হয় ঠিক সেই লোকটির মতো যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে। তাদের এই অবস্থায় উপনীত হবার কারণ হচ্ছে এই যে, তারা বলেঃ “ব্যবসা তো সুদেরই মতো।” অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। কাজেই যে ব্যক্তির কাছে তার রবের পক্ষ থেকে এই নসীহত পৌঁছে যায় এবং ভবিষ্যতে সুদখোরী থেকে সে বিরত হয়, সে ক্ষেত্রে যা কিছু সে খেয়েছে তাতো খেয়ে ফেলেছেই এবং এ ব্যাপারটি আল্লাহর কাছে সোপর্দ হয়ে গেছে। আর এই নির্দেশের পরও যে ব্যক্তি আবার এই কাজ করে, সে জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে সে থাকবে চিরকাল।
(2:276)
یَمْحَقُ اللّٰهُ الرِّبٰوا وَ یُرْبِی الصَّدَقٰتِؕ وَ اللّٰهُ لَا یُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ اَثِیْمٍ
শব্দার্থ: يَمْحَقُ = নিশ্চিহ্নকরেন, اللَّهُ = আল্লাহ, الرِّبَا = সুদকে, وَيُرْبِي = ওবর্ধিতকরেন, الصَّدَقَاتِ = দানকে, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, لَا = না, يُحِبُّ = ভালোবাসেন, كُلَّ = প্রত্যেক, كَفَّارٍ = অকৃতজ্ঞ, أَثِيمٍ = পাপীকে,
অনুবাদ: আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত ও বিকশিত করেন। আর আল্লাহ অকৃতজ্ঞ দুষ্কৃতকারীকে পছন্দ করেন না।
(2:277)
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ لَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْۚ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছে, وَعَمِلُوا = ওকাজকরেছে, الصَّالِحَاتِ = সৎ, وَأَقَامُوا = ওপ্রতিষ্ঠাকরেছে, الصَّلَاةَ = সালাত, وَآتَوُا = ওদিয়েছে, الزَّكَاةَ = যাকাত, لَهُمْ = তাদেরজন্য(রয়েছে), أَجْرُهُمْ = তাদেরপুরস্কার, عِنْدَ = কাছে, رَبِّهِمْ = তাদেররবের, وَلَا = এবংনা, خَوْفٌ = ভয়(থাকবে), عَلَيْهِمْ = তাদেরউপর, وَلَا = আরনা, هُمْ = তারা, يَحْزَنُونَ = তারাদুঃখিতহবে,
অনুবাদ: অবশ্যি যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাদের প্রতিদান নিঃসন্দেহে তাদের রবের কাছে আছে এবং তাদের কোন ভয় ও মর্মজ্বালাও নেই।
(2:278)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, اتَّقُوا = তোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَذَرُوا = এবংছেড়েদাও, مَا = যা, بَقِيَ = বকেয়াআছে, مِنَ = হতে, الرِّبَا = সুদ, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাহও, مُؤْمِنِينَ = মুমিন,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং লোকদের কাছে তোমাদের যে সুদ বাকি রয়ে গেছে তা ছেড়ে দাও, যদি যথার্থই তোমরা ঈমান এনে থাকো।
(2:279)
فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖۚ وَ اِنْ تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوْسُ اَمْوَالِكُمْۚ لَا تَظْلِمُوْنَ وَ لَا تُظْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: فَإِنْ = অতঃপরযদি, لَمْ = না, تَفْعَلُوا = তোমরাকর, فَأْذَنُوا = তোমরাতবেঘোষণাশুনেরাখো, بِحَرْبٍ = যুদ্ধের(বিষয়ে), مِنَ = পক্ষহতে, اللَّهِ = আল্লাহর, وَرَسُولِهِ = ওতাঁররাসূল, وَإِنْ = আরযদি, تُبْتُمْ = তোমরাতওবাকর, فَلَكُمْ = তবে(থাকবে)তোমাদেরজন্য, رُءُوسُ = মূলধন, أَمْوَالِكُمْ = তোমাদেরসম্পদের, لَا = না, تَظْلِمُونَ = তোমরাঅবিচারকরো, وَلَا = আরনা, تُظْلَمُونَ = অবিচারকরাহবে(তোমাদেরউপর),
অনুবাদ: কিন্তু যদি তোমরা এমনটি না করো তাহলে জেনে রাখো, এটা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। এখনো তাওবা করে নাও (এবং সুদ ছেড়ে দাও) তাহলে তোমরা আসল মূলধনের অধিকারী হবে। তোমরা জুলুম করবে না এবং তোমাদের ওপর জুলুম করাও হবে না।
(2:280)
وَ اِنْ كَانَ ذُوْ عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ اِلٰى مَیْسَرَةٍؕ وَ اَنْ تَصَدَّقُوْا خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
শব্দার্থ: وَإِنْ = এবংযদি, كَانَ = হয়(খাতক), ذُو = (একটি), عُسْرَةٍ = অভাবগ্রস্ত, فَنَظِرَةٌ = অবসরতবেদেবে, إِلَىٰ = পর্যন্ত, مَيْسَرَةٍ = সচ্ছলতা, وَأَنْ = এবংযে, تَصَدَّقُوا = তোমদেরসদকাকরেদেওয়া, خَيْرٌ = উত্তম, لَكُمْ = তোমাদেরজন্য, إِنْ = যদি, كُنْتُمْ = তোমরাছিলে, تَعْلَمُونَ = তোমরাজানতে,
অনুবাদ: তোমাদের ঋণগ্রহীতা অভাবী হলে সচ্ছলতা লাভ করা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দাও। আর যদি সাদ্কা করে দাও, তাহলে এটা তোমাদের জন্য বেশী ভালো হবে, যদি তোমরা জানতে।
(2:281)
وَ اتَّقُوْا یَوْمًا تُرْجَعُوْنَ فِیْهِ اِلَى اللّٰهِۗ ثُمَّ تُوَفّٰى كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ۠
শব্দার্থ: وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, يَوْمًا = সেদিনের, تُرْجَعُونَ = তোমরাপ্রত্যাবর্তিতহবে, فِيهِ = যারমধ্যে, إِلَى = দিকে, اللَّهِ = আল্লাহরই, ثُمَّ = এরপর, تُوَفَّىٰ = পূর্ণদেয়াহবে, كُلُّ = প্রত্যেক, نَفْسٍ = ব্যক্তিকে, مَا = যা, كَسَبَتْ = সেঅর্জনকরেছে, وَهُمْ = এবংতাদেরকে, لَا = না, يُظْلَمُونَ = অবিচারকরাহবে,
অনুবাদ: যেদিন তোমরা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে সেদিনের অপমান ও বিপদ থেকে বাঁচো। সেখানে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার উপার্জিত সৎকর্মের ও অপকর্মের পুরোপুরি প্রতিদান দেয়া হবে এবং কারো ওপর কোন জুলুম করা হবে না।
(2:282)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا تَدَایَنْتُمْ بِدَیْنٍ اِلٰۤى اَجَلٍ مُّسَمًّى فَاكْتُبُوْهُؕ وَ لْیَكْتُبْ بَّیْنَكُمْ كَاتِبٌۢ بِالْعَدْلِ۪ وَ لَا یَاْبَ كَاتِبٌ اَنْ یَّكْتُبَ كَمَا عَلَّمَهُ اللّٰهُ فَلْیَكْتُبْۚ وَ لْیُمْلِلِ الَّذِیْ عَلَیْهِ الْحَقُّ وَ لْیَتَّقِ اللّٰهَ رَبَّهٗ وَ لَا یَبْخَسْ مِنْهُ شَیْــٴًـاؕ فَاِنْ كَانَ الَّذِیْ عَلَیْهِ الْحَقُّ سَفِیْهًا اَوْ ضَعِیْفًا اَوْ لَا یَسْتَطِیْعُ اَنْ یُّمِلَّ هُوَ فَلْیُمْلِلْ وَلِیُّهٗ بِالْعَدْلِؕ وَ اسْتَشْهِدُوْا شَهِیْدَیْنِ مِنْ رِّجَالِكُمْۚ فَاِنْ لَّمْ یَكُوْنَا رَجُلَیْنِ فَرَجُلٌ وَّ امْرَاَتٰنِ مِمَّنْ تَرْضَوْنَ مِنَ الشُّهَدَآءِ اَنْ تَضِلَّ اِحْدٰىهُمَا فَتُذَكِّرَ اِحْدٰىهُمَا الْاُخْرٰىؕ وَ لَا یَاْبَ الشُّهَدَآءُ اِذَا مَا دُعُوْاؕ وَ لَا تَسْــٴَـمُوْۤا اَنْ تَكْتُبُوْهُ صَغِیْرًا اَوْ كَبِیْرًا اِلٰۤى اَجَلِهٖؕ ذٰلِكُمْ اَقْسَطُ عِنْدَ اللّٰهِ وَ اَقْوَمُ لِلشَّهَادَةِ وَ اَدْنٰۤى اَلَّا تَرْتَابُوْۤا اِلَّاۤ اَنْ تَكُوْنَ تِجَارَةً حَاضِرَةً تُدِیْرُوْنَهَا بَیْنَكُمْ فَلَیْسَ عَلَیْكُمْ جُنَاحٌ اَلَّا تَكْتُبُوْهَاؕ وَ اَشْهِدُوْۤا اِذَا تَبَایَعْتُمْ۪ وَ لَا یُضَآرَّ كَاتِبٌ وَّ لَا شَهِیْدٌ۬ؕ وَ اِنْ تَفْعَلُوْا فَاِنَّهٗ فُسُوْقٌۢ بِكُمْؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَؕ وَ یُعَلِّمُكُمُ اللّٰهُؕ وَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমানএনেছ, إِذَا = যখন, تَدَايَنْتُمْ = তোমরাপরস্পরেআদান-প্রদানকর, بِدَيْنٍ = ঋণের, إِلَىٰ = পর্যন্ত, أَجَلٍ = মেয়াদ, مُسَمًّى = নির্দিষ্ট, فَاكْتُبُوهُ = তাতোমরাতখনলিখেরাখো, وَلْيَكْتُبْ = এবংযেনলেখে, بَيْنَكُمْ = তোমাদেরমাঝে, كَاتِبٌ = একজনলেখক, بِالْعَدْلِ = ন্যায্যভাবে, وَلَا = এবংনা, يَأْبَ = অস্বীকারকরবে, كَاتِبٌ = কোনোলেখক, أَنْ = যে(না), يَكْتُبَ = সেলিখবে, كَمَا = যেমন, عَلَّمَهُ = শিখিয়েছেনতাকে, اللَّهُ = আল্লাহ, فَلْيَكْتُبْ = অতএবসেযেনলেখে, وَلْيُمْلِلِ = এবংযেনসেলিখিয়েনেয়(লেখ্যবিষয়), الَّذِي = সেই(ব্যক্তি), عَلَيْهِ = যারউপর(আছে), الْحَقُّ = অধিকার(অর্থাৎঋণগ্রহীতা), وَلْيَتَّقِ = এবংসেভয়করেযেন(লেখক), اللَّهَ = আল্লাহকে(যিনি), رَبَّهُ = তাররব, وَلَا = এবংনা, يَبْخَسْ = কমকরবে, مِنْهُ = তাথেকে, شَيْئًا = কিছুই, فَإِنْ = অতঃপরযদি, كَانَ = হয়, الَّذِي = সে, عَلَيْهِ = যারউপর, الْحَقُّ = অধিকার(অর্থাৎঋণগ্রহীতা), سَفِيهًا = নির্বোধ, أَوْ = বা, ضَعِيفًا = দুর্বল, أَوْ = বা, لَا = না, يَسْتَطِيعُ = সেপারে, أَنْ = যে, يُمِلَّ = সেলিখিয়েনেবে, هُوَ = সে, فَلْيُمْلِلْ = তবেযেনলিখিয়েনেয়, وَلِيُّهُ = তারঅভিভাবক, بِالْعَدْلِ = ন্যায্যভাবে, وَاسْتَشْهِدُوا = এবংতোমরাসাক্ষীরাখো, شَهِيدَيْنِ = দুজনসাক্ষী, مِنْ = মধ্যহতে, رِجَالِكُمْ = তোমাদেরপুরুষদের, فَإِنْ = অতঃপরযদি, لَمْ = না, يَكُونَا = থাকে, رَجُلَيْنِ = দুজনপুরুষ, فَرَجُلٌ = তবেএকজনপুরুষ, وَامْرَأَتَانِ = ওদুজনমহিলা, مِمَّنْ = (তাদের)হতেযাদের, تَرْضَوْنَ = তোমরাপছন্দকর, مِنَ = মধ্যহতে, الشُّهَدَاءِ = সাক্ষীদের, أَنْ = যে, تَضِلَّ = ভুলকরলে, إِحْدَاهُمَا = দুজনেরএকজন(মহিলাদের), فَتُذَكِّرَ = তখনস্মরণকরাবে, إِحْدَاهُمَا = দুজনেরএকজন(মহিলা), الْأُخْرَىٰ = অন্যজনকে, وَلَا = এবংনা, يَأْبَ = অস্বীকারকরবে, الشُّهَدَاءُ = সাক্ষীরা, إِذَا = যখন, مَا = (কি), دُعُوا = তাদেরডাকাহবে, وَلَا = এবংনা, تَسْأَمُوا = তোমরাবিরক্তিবোধকরবে, أَنْ = যে, تَكْتُبُوهُ = তাতোমরালিখবে, صَغِيرًا = ছোট(ব্যাপারহোক), أَوْ = বা, كَبِيرًا = বড়(হোক), إِلَىٰ = পর্যন্ত, أَجَلِهِ = তারমেয়াদ, ذَٰلِكُمْ = এটা, أَقْسَطُ = অধিকতরন্যায়সঙ্গত, عِنْدَ = কাছে, اللَّهِ = আল্লাহর, وَأَقْوَمُ = ওদৃঢ়তর, لِلشَّهَادَةِ = সাক্ষ্যপ্রমাণেরজন্য, وَأَدْنَىٰ = ওঅধিকনিকটবর্তী, أَلَّا = যেননা, تَرْتَابُوا = তোমরাসন্দেহকর, إِلَّا = তবে, أَنْ = যে(সব), تَكُونَ = হয়েথাকে, تِجَارَةً = ব্যবসা, حَاضِرَةً = নগদ, تُدِيرُونَهَا = তাতোমরাপরস্পরপরিচালনাকর, بَيْنَكُمْ = তোমাদেরমাঝে, فَلَيْسَ = নেইতবে, عَلَيْكُمْ = তোমাদেরউপর, جُنَاحٌ = কোনোপাপ, أَلَّا = যদিনা, تَكْتُبُوهَا = তাতোমরালিখেরাখ, وَأَشْهِدُوا = এবংতোমরাসাক্ষীরাখো, إِذَا = যখন, تَبَايَعْتُمْ = তোমরাবেচাকেনাকর, وَلَا = এবংনা, يُضَارَّ = ক্ষতিগ্রস্তকরাযাবে, كَاتِبٌ = লেখককে, وَلَا = আরনা, شَهِيدٌ = সাক্ষীকে, وَإِنْ = এবংযদি, تَفْعَلُوا = তোমরাকর, فَإِنَّهُ = তবেতানিশ্চয়ই, فُسُوقٌ = অন্যায়, بِكُمْ = তোমাদেরজন্য, وَاتَّقُوا = এবংতোমরাভয়করো, اللَّهَ = আল্লাহকে, وَيُعَلِّمُكُمُ = এবংতোমাদেরকেশিক্ষাদেন, اللَّهُ = আল্লাহ, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, بِكُلِّ = সম্পর্কে, شَيْءٍ = সবকিছু, عَلِيمٌ = খুবঅবহিত,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! যখন কোন নির্ধারিত সময়ের জন্য তোমরা পরস্পরে মধ্যে ঋণের লেনদেন করো তখন লিখে রাখো উভয় পক্ষের মধ্যে ইনসাফ সহকারে এক ব্যক্তি দলীল লিখে দেবে। আল্লাহ যাকে লেখাপড়ার যোগ্যতা দিয়েছেন তার লিখতে অস্বীকার করা উচিত নয়। সে লিখবে এবং লেখার বিষয়বস্তু বলে দেবে সেই ব্যক্তি যার ওপর ঋণ চাপছে (অর্থাৎ ঋণগ্রহীতা) । তার রব আল্লাহকে তার ভয় করা উচিত। যে বিষয় স্থিরীকৃত হয়েছে তার থেকে যেন কোন কিছুর কম বেশি না করা হয়। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি বুদ্ধিহীন বা দুর্বল হয় অথবা লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে, তাহলে তার অভিভাবক ইনসাফ সহকারে লেখার বিষয়বস্তু বলে দেবে। তারপর নিজেদের পুরুষদের মধ্য থেকে দুই ব্যক্তিকে তার স্বাক্ষী রাখো। আর যদি দু’জন পুরুষ না পাওয়া যায় তাহলে একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা সাক্ষী হবে, যাতে একজন ভুলে গেলে অন্যজন তাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। এসব সাক্ষী এমন লোকদের মধ্য থেকে হতে হবে যাদের সাক্ষ্য তোমাদের কাছে গ্রহণীয়। সাক্ষীদেরকে সাক্ষ্য দেবার জন্য বললে তারা যেন অস্বীকার না করে। ব্যাপার ছোট হোক বা বড়, সময়সীমা নির্ধারণ সহকারে দলীল লেখাবার ব্যাপারে তোমরা গড়িমসি করো না। আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য এই পদ্ধতি অধিকতর ন্যায়সঙ্গত, এর সাহায্যে সাক্ষ্য প্রতিষ্ঠা বেশী সহজ হয় এবং তোমাদের সন্দেহ-সংশয়ে লিপ্ত হবার সম্ভাবনা কমে যায়। তবে যেসব ব্যবসায়িক লেনদেন তোমরা পরস্পরের মধ্যে হাতে হাতে করে থাকো, সেগুলো না লিখলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু ব্যবসায়িক বিষয়গুলো স্থিরীকৃত করার সময় সাক্ষী রাখো। লেখক ও সাক্ষীকে কষ্ট দিয়ো না। এমনটি করলে গোনাহের কাজ করবে। আল্লাহর গযব থেকে আত্মরক্ষা করো। তিনি তোমাদের সঠিক কর্মপদ্ধতি শিক্ষা দান করেন এবং তিনি সবকিছু জানেন।
(2:283)
وَ اِنْ كُنْتُمْ عَلٰى سَفَرٍ وَّ لَمْ تَجِدُوْا كَاتِبًا فَرِهٰنٌ مَّقْبُوْضَةٌؕ فَاِنْ اَمِنَ بَعْضُكُمْ بَعْضًا فَلْیُؤَدِّ الَّذِی اؤْتُمِنَ اَمَانَتَهٗ وَ لْیَتَّقِ اللّٰهَ رَبَّهٗؕ وَ لَا تَكْتُمُوا الشَّهَادَةَؕ وَ مَنْ یَّكْتُمْهَا فَاِنَّهٗۤ اٰثِمٌ قَلْبُهٗؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِیْمٌ۠
শব্দার্থ: وَإِنْ = এবংযদি, كُنْتُمْ = তোমরাথাক, عَلَىٰ = মধ্যে, سَفَرٍ = সফরের, وَلَمْ = এবংনা, تَجِدُوا = তোমরাপাও, كَاتِبًا = কোনোলেখক, فَرِهَانٌ = তবেবন্ধকিবস্তু, مَقْبُوضَةٌ = হস্তগত(রাখতেপার), فَإِنْ = অতঃপরযদি, أَمِنَ = বিশ্বাসকরে, بَعْضُكُمْ = তোমাদেরকেউ, بَعْضًا = অন্যকে, فَلْيُؤَدِّ = তবেসেযেনফিরেয়েদেয়, الَّذِي = যার(উপর), اؤْتُمِنَ = বিশ্বাসকরাহয়েছিল, أَمَانَتَهُ = তারআমানতের, وَلْيَتَّقِ = এবংসেযেনভয়করে, اللَّهَ = আল্লাহকে, رَبَّهُ = (যিনি)তাররব, وَلَا = এবংনা, تَكْتُمُوا = তোমরাগোপনকরবে, الشَّهَادَةَ = সাক্ষ্য, وَمَنْ = এবংযে, يَكْتُمْهَا = তাগোপনকরবে, فَإِنَّهُ = তাহলেসেনিশ্চয়ই, آثِمٌ = পাপী, قَلْبُهُ = তারঅন্তর, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, بِمَا = সেবিষয়ে, تَعْمَلُونَ = তোমরাকাজকর, عَلِيمٌ = খুবঅবহিত,
অনুবাদ: যদি তোমরা সফরে থাকো এবং এ অবস্থায় দলীল লেখার জন্য কোন লেখক না পাও, তাহলে বন্ধক রেখে কাজ সম্পন্ন করো। যদি তোমাদের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তি অন্যের ওপর ভরসা করে তার সাথে কোন কাজ কারবার করে, তাহলে যার ওপর ভরসা করা হয়েছে সে যেন তার আমানত যথাযথরূপে আদায় করে এবং নিজের রব আল্লাহকে ভয় করে। আর সাক্ষ্য কোনোক্রমেই গোপন করো না। যে ব্যক্তি সাক্ষ গোপন করে তার হৃদয় গোনাহর সংস্পর্শে কলুষিত। আর আল্লাহ তোমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে বেখবর নন।
(2:284)
لِلّٰهِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِؕ وَ اِنْ تُبْدُوْا مَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ اَوْ تُخْفُوْهُ یُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللّٰهُؕ فَیَغْفِرُ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ یُعَذِّبُ مَنْ یَّشَآءُؕ وَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ
শব্দার্থ: لِلَّهِ = আল্লাহরজন্য, مَا = যাকিছু, فِي = মধ্যে(আছে), السَّمَاوَاتِ = আকাশসমূহের, وَمَا = ওযাকিছু, فِي = মধ্যে(আছে), الْأَرْضِ = পৃথিবীর, وَإِنْ = এবংযদি, تُبْدُوا = তোমরাপ্রকাশকর, مَا = যাকিছু, فِي = মধ্যে(আছে), أَنْفُسِكُمْ = তোমাদেরমনের, أَوْ = অথবা, تُخْفُوهُ = গোপনকরতোমরাতা, يُحَاسِبْكُمْ = তোমাদেরকেহিসাবনিবেন, بِهِ = তাসম্পর্কে, اللَّهُ = আল্লাহ, فَيَغْفِرُ = অতঃপরক্ষমাকরবেন, لِمَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিইচ্ছাকরবেন, وَيُعَذِّبُ = এবংতিনিশাস্তিদিবেন, مَنْ = যাকে, يَشَاءُ = তিনিইচ্ছাকরবেন, وَاللَّهُ = এবংআল্লাহ, عَلَىٰ = উপর, كُلِّ = সব, شَيْءٍ = কিছুর, قَدِيرٌ = সর্বশক্তিমান,
অনুবাদ: আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর। তোমরা নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করো বা লুকিয়ে রাখো, আল্লাহ অবশ্যি তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। তারপর তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন, এটা তাঁর এখতিয়ারাধীন। তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তি খাটাবার অধিকারী।
(2:285)
اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَ الْمُؤْمِنُوْنَؕ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ مَلٰٓئِكَتِهٖ وَ كُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ۫ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ۫ وَ قَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ق غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ اِلَیْكَ الْمَصِیْرُ
শব্দার্থ: آمَنَ = ঈমানএনেছে, الرَّسُولُ = রাসূল, بِمَا = ঐবিষয়যা, أُنْزِلَ = অবতীর্ণকরাহয়েছে, إِلَيْهِ = তাঁরপ্রতি, مِنْ = পক্ষহতে, رَبِّهِ = তাঁররবের, وَالْمُؤْمِنُونَ = এবংমুমিনরাও, كُلٌّ = সবাই, آمَنَ = ঈমানএনেছে, بِاللَّهِ = আল্লাহরউপর, وَمَلَائِكَتِهِ = এবংতাঁরফেরেশতাদের, وَكُتُبِهِ = ওতাঁরকিতাবগুলোর, وَرُسُلِهِ = এবংতাঁররাসূলদের(উপর), لَا = (তারাবলে)না, نُفَرِّقُ = আমরাপার্থক্যকরি, بَيْنَ = মাঝে, أَحَدٍ = কারো, مِنْ = মধ্যহতে, رُسُلِهِ = তাঁররাসূলদের, وَقَالُوا = এবংতারাবলে, سَمِعْنَا = আমরাশুনলাম, وَأَطَعْنَا = এবংআমরামানলাম, غُفْرَانَكَ = আমরাতোমারক্ষমা(চাই), رَبَّنَا = হেআমাদেররব, وَإِلَيْكَ = এবংতোমারইকাছে, الْمَصِيرُ = প্রত্যাবর্তন(হবে),
অনুবাদ: রসূল তার রবের পক্ষ থেকে তার ওপর যে হিদায়াত নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছে। আর যেসব লোক ঐ রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাও ঐ হিদায়াতকে মনে-প্রাণে স্বীকার করে নিয়েছে। তারা সবাই আল্লাহকে, তাঁর ফেরেশতাদেরকে, তাঁর কিতাবসমূহকে ও তাঁর রসূলদেরকে মানে এবং তাদের বক্তব্য হচ্ছেঃ “আমরা আল্লাহর রসূলদের একজনকে আর একজন থেকে আলাদা করি না। আমরা নির্দেশ শুনেছি ও অনুগত হয়েছি। হে প্রভু! আমরা তোমার কাছে গোনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা করছি। আমাদের তোমারই দিকে ফিরে যেতে হবে।
(2:286)
لَا یُكَلِّفُ اللّٰهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَاؕ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَ عَلَیْهَا مَا اكْتَسَبَتْؕ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَاۤ اِنْ نَّسِیْنَاۤ اَوْ اَخْطَاْنَاۚ رَبَّنَا وَ لَا تَحْمِلْ عَلَیْنَاۤ اِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَى الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِنَاۚ رَبَّنَا وَ لَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖۚ وَ اعْفُ عَنَّاٙ وَ اغْفِرْ لَنَاٙ وَ ارْحَمْنَاٙ اَنْتَ مَوْلٰىنَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِیْنَ۠
শব্দার্থ: لَا = না, يُكَلِّفُ = দায়িত্বভারদেন, اللَّهُ = আল্লাহ, نَفْسًا = কোনোব্যক্তিকে, إِلَّا = এছাড়াযা, وُسْعَهَا = তারসামর্থ্য(আছে), لَهَا = তারজন্য(আছে), مَا = যা(পূণ্য), كَسَبَتْ = সেঅর্জনকরেছে, وَعَلَيْهَا = এবংতারবিরুদ্ধে, مَا = যা(পাপ), اكْتَسَبَتْ = সেঅর্জনকরেছে, رَبَّنَا = হেআমাদেররব, لَا = না, تُؤَاخِذْنَا = আমাদেরকেপাকড়াওকরো, إِنْ = যদি, نَسِينَا = আমরাভুলেযাই, أَوْ = বা, أَخْطَأْنَا = আমরাভুলকরি, رَبَّنَا = হেআমাদেররব, وَلَا = এবংনা, تَحْمِلْ = চাপিয়েদিও, عَلَيْنَا = আমাদেরউপর, إِصْرًا = বোঝা, كَمَا = যেমন, حَمَلْتَهُ = তাতুমিচাপিয়েদিয়েছিলে, عَلَى = উপর, الَّذِينَ = (তাদের)যারা, مِنْ = থেকে, قَبْلِنَا = আমাদেরপূর্বছিল, رَبَّنَا = হেআমাদেররব, وَلَا = এবংনা, تُحَمِّلْنَا = আমাদেরউপরচাপিয়েদিও, مَا = তা, لَا = নেই, طَاقَةَ = শক্তি, لَنَا = আমাদেরকাছে, بِهِ = যার, وَاعْفُ = এবংমোচনকরেদাও(ত্রুটি), عَنَّا = আমাদেরথেকে, وَاغْفِرْ = এবংক্ষমাকরো, لَنَا = আমাদেরকে, وَارْحَمْنَا = এবংআমাদেরউপরদয়াকরো, أَنْتَ = তুমিই, مَوْلَانَا = আমাদেরঅভিভাবক, فَانْصُرْنَا = আমাদেরসাহায্যকরতাই, عَلَى = বিরুদ্ধে, الْقَوْمِ = সম্প্রদায়ের, الْكَافِرِينَ = (যারা)কাফির,
অনুবাদ: আল্লাহ কারোর ওপর তার সামর্থের অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপান না। প্রত্যেক ব্যক্তি যে নেকী উপার্জন করেছে তার ফল তার নিজেরই জন্য এবং যে গোনাহ সে অর্জন করেছে, তার প্রতিফলও তারই উপর বর্তাবে। (হে ঈমানদারগণ, তোমরা এভাবে দোয়া চাওঃ) হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যেসব গোনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ্য আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো।
Al-Fatihah (the Opening)
2. Al-Baqarah (the Cow)
3. Aali Imran (the Family of Imran)
4. An-Nisa’ (the Women)
5. Al-Ma’idah (the Table)
6. Al-An’am (the Cattle)
7. Al-A’raf (the Heights)
8. Al-Anfal (the Spoils of War)
9. At-Taubah (the Repentance)
10. Yunus (Yunus)
11. Hud (Hud)
12. Yusuf (Yusuf)
13. Ar-Ra’d (the Thunder)
14. Ibrahim (Ibrahim)
15. Al-Hijr (the Rocky Tract)
16. An-Nahl (the Bees)
17. Al-Isra’ (the Night Journey)
18. Al-Kahf (the Cave)
19. Maryam (Maryam)
20. Ta-Ha (Ta-Ha)
21. Al-Anbiya’ (the Prophets)
22. Al-Haj (the Pilgrimage)
23. Al-Mu’minun (the Believers)
24. An-Nur (the Light)
25. Al-Furqan (the Criterion)
26. Ash-Shu’ara’ (the Poets)
27. An-Naml (the Ants)
28. Al-Qasas (the Stories)
29. Al-Ankabut (the Spider)
30. Ar-Rum (the Romans)
31. Luqman (Luqman)
32. As-Sajdah (the Prostration)
33. Al-Ahzab (the Combined Forces)
34. Saba’ (the Sabeans)
35. Al-Fatir (the Originator)
36. Ya-Sin (Ya-Sin)
37. As-Saffah (Those Ranges in Ranks)
38. Sad (Sad)
39. Az-Zumar (the Groups)
40. Ghafar (the Forgiver)
41. Fusilat (Distinguished)
42. Ash-Shura (the Consultation)
43. Az-Zukhruf (the Gold)
44. Ad-Dukhan (the Smoke)
45. Al-Jathiyah (the Kneeling)
46. Al-Ahqaf (the Valley)
47. Muhammad (Muhammad)
48. Al-Fat’h (the Victory)
49. Al-Hujurat (the Dwellings)
50. Qaf (Qaf)
51. Adz-Dzariyah (the Scatterers)
52. At-Tur (the Mount)
53. An-Najm (the Star)
54. Al-Qamar (the Moon)
55. Ar-Rahman (the Most Gracious)
56. Al-Waqi’ah (the Event)
57. Al-Hadid (the Iron)
58. Al-Mujadilah (the Reasoning)
59. Al-Hashr (the Gathering)
60. Al-Mumtahanah (the Tested)
61. As-Saf (the Row)
62. Al-Jum’ah (Friday)
63. Al-Munafiqun (the Hypocrites)
64. At-Taghabun (the Loss & Gain)
65. At-Talaq (the Divorce)
66. At-Tahrim (the Prohibition)
67. Al-Mulk – (the Kingdom)
68. Al-Qalam (the Pen)
69. Al-Haqqah (the Inevitable)
70. Al-Ma’arij (the Elevated Passages)
71. Nuh (Nuh)
72. Al-Jinn (the Jinn)
73. Al-Muzammil (the Wrapped)
74. Al-Mudaththir (the Cloaked)
75. Al-Qiyamah (the Resurrection)
76. Al-Insan (the Human)
77. Al-Mursalat (Those Sent Forth)
78. An-Naba’ (the Great News)
79. An-Nazi’at (Those Who Pull Out)
80. ‘Abasa (He Frowned)
81. At-Takwir (the Overthrowing)
82. Al-Infitar (the Cleaving)
83. Al-Mutaffifin (Those Who Deal in Fraud)
84. Al-Inshiqaq (the Splitting Asunder)
85. Al-Buruj (the Stars)
86. At-Tariq (the Nightcomer)
87. Al-A’la (the Most High)
88. Al-Ghashiyah (the Overwhelming)
89. Al-Fajr (the Dawn)
90. Al-Balad (the City)
91. Ash-Shams (the Sun)
92. Al-Layl (the Night)
93. Adh-Dhuha (the Forenoon)
94. Al-Inshirah (the Opening Forth)
95. At-Tin (the Fig)
96. Al-‘Alaq (the Clot)
97. Al-Qadar (the Night of Decree)
98. Al-Bayinah (the Proof)
99. Az-Zalzalah (the Earthquake)
100. Al-‘Adiyah (the Runners)
101. Al-Qari’ah (the Striking Hour)
102. At-Takathur (the Piling Up)
103. Al-‘Asr (the Time)
104. Al-Humazah (the Slanderer)
105. Al-Fil (the Elephant)
106. Quraish (Quraish)
107. Al-Ma’un (the Assistance)
108. Al-Kauthar (the River of Abundance)
109. Al-Kafirun (the Disbelievers)