নবি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
নবি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

১৮ জুলাই ২০২১

নবীজি সঃ এর প্রতিদিনের কর্ম পদ্ধতি

 


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। 

৬৭: আল-মুলক,:আয়াত: ২,

"কাজের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কে উত্তম তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীলও।"

সুরা: ৩৩-আহযাব
আয়াত নং :-২১

আসলে তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে ছিল একটি উত্তম আদর্শ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ‌ ও শেষ দিনের আকাঙ্ক্ষী এবং বেশী করে আল্লাহকে স্মরণ করে।

তাফসীর :

টিকা: যে প্রেক্ষাপটে এ আয়াতটি নাযিল হয়েছে সে দৃষ্টিতে বিচার করলে বলা যায়, যারা আহ্‌যাব যুদ্ধে সুবিধাবাদী ও পিঠ বাঁচানোর নীতি অবলম্বন করেছিল তাদেরকে শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যেই নবী করীমের ﷺ কর্মধারাকে এখানে আদর্শ হিসেবে পেশ করা হয়েছে। তাদেরকে বলা হচ্ছে, তোমরা ছিলে ঈমান, ইসলাম ও রসূলের আনুগত্যের দাবীদার। তোমাদের দেখা উচিত ছিল, তোমরা যে রাসূলের অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছো তিনি এ অবস্থায় কোন্ ধরনের নীতি অবলম্বন করেছিলেন। যদি কোন দলের নেতা নিজেদের নিরাপদ থাকার নীতি অবলম্বন করেন, নিজেই আরাম প্রিয় হন, নিজেই ব্যক্তিগত স্বার্থ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেন, বিপদের সময় নিজেই পালিয়ে যাবার প্রস্তুতি করতে থাকেন, তাহলে তার অনুসারীদের পক্ষ থেকে এ দুর্বলতাগুলোর প্রকাশ যুক্তিসঙ্গত হতে পারে। কিন্তু এখানে তো রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবস্থা এই ছিল যে, অন্যদের কাছে তিনি যে কষ্ট স্বীকার করার জন্য দাবী জানান তার প্রত্যেকটি কষ্ট স্বীকার করার ব্যাপারে তিনি সবার সাথে শরীক ছিলেন, সবার চেয়ে বেশী করে তিনি তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এমন কোন কষ্ট ছিল না যা অন্যরা বরদাশ্‌ত করেছিল কিন্তু তিনি করেননি। খন্দক খননকারীরে দলে তিনি নিজে শামিল ছিলেন। ক্ষুধা ও অন্যান্য কষ্ট সহ্য করার ক্ষেত্রে একজন সাধারণ মুসলমানের সাথে তিনি সমানভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অবরোধকালে তিনি সর্বক্ষণ যুদ্ধের ময়দানে হাজির ছিলেন এবং এক মুহূর্তের জন্যও শত্রুদের সামনে থেকে সরে যাননি। বনী কুরাইযার বিশ্বাসঘাতকতার পরে সমস্ত মুসলমানদের সন্তান ও পরিবারবর্গ যে বিপদের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল তাঁর সন্তান ও পরিবারবর্গও সেই একই বিপদের মুখে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল। তিনি নিজের সন্তান ও পরিবারবর্গের হেফাজতের জন্যও এমন কোন বিশেষ ব্যবস্থা করেননি যা অন্য মুসলমানের জন্য করেননি। যে মহান উদ্দেশ্যে তিনি মুসলমানদের কাছ থেকে ত্যাগ ও কুরবানীর দাবী করেছিলেন সে উদ্দেশ্যে সবার আগে এবং সবার চেয়ে বেশি করে তিনি নিজে নিজের সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলেন। তাই যে কেউ তাঁর অনুসরণের দাবীদার ছিল তাকে এ আর্দশ দেখে তারই অনুসরণ করা উচিত ছিল।

পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী এ ছিল এ আয়াতের নির্গলিতার্থ। কিন্তু এর শব্দগুলো ব্যাপক অর্থবোধক এবং এর উদ্দেশ্যকে কেবলমাত্র এ অর্থের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখার কোন কারণ নেই। আল্লাহ‌ এ কথা বলেননি যে, কেবলমাত্র এ দৃষ্টিতেই তাঁর রসূলের জীবন মুসলমানদের জন্য আর্দশ বরং শর্তহীন ও অবিমিশ্রভাবে তাঁকে আর্দশ গণ্য করেছেন। কাজেই এ আয়াতের দাবী হচ্ছে, মুসলমানরা সকল বিষয়েই তাঁর জীবনকে নিজেদের জন্য আর্দশ জীবন মনে করেবে এবং সেই অনুযায়ী নিজেদের চরিত্র ও জীবন গড়ে তুলবে।

টিকা:২) অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ‌ থেকে গাফিল তার জন্য এ জীবন আদর্শ নয়। কিন্তু তার জন্য অবশ্যই আদর্শ যে, কখনো ঘটনাক্রমে আল্লাহর নাম নেয় না বরং বেশী করে তাঁকে স্মরণ করে ও স্মরন রাখে। অনুরূপভাবে এ জীবন এমন ব্যক্তির জন্যও কোন আদর্শ নয় যে আল্লাহর কাছ থেকেও কিছু আশা করে না এবং আখেরাতের আগমনেরও প্রত্যাশা করে না। কিন্তু এমন ব্যক্তির জন্য তার অবশ্যই আদর্শ যে, আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দান আশা করে এবং যে একথা চিন্তা করে যে, একদিন আখেরাতের জীবন শুরু হবে যেখানে দুনিয়ার জীবনে তার মনোভাব ও নীতি আল্লাহর রসূলের ﷺ মনোভাব ও নীতির কতটুকু নিকটতর আছে তার ওপরই তার সমস্ত কল্যাণ নির্ভর করবে।

আল্লাহর রাসুল স ঃ এর আদর্শের চেয়ে আর কার আদর্শ উত্তম হতে পারে। 

১।ফজরের সময় :-

২।যুহরের সময় :-

৩। আসরের সময়:-

৪।মাগরিবের সময় :-     

৫। ঈশার সময় :- 

৬। রাতে ঘুম থেকে উঠে ঃ- 

আল্লাহর রাসুল সঃ তাই কাজের ব্যপারে খুবই সতরক ছিলেন। যদিও প্রতিদিনের কাজ এক রকম ছিল না। সাধারণ বা নিয়মিত কাজ যেমন পাচ ওয়াক্ত সালাত, স্ত্রীদের সময় দেওয়া, সাহাবিদের খোঁজ খবর নেয়া, সমাজ পরিচালনা করা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।

১।ফজরের সময় :-

খুব ভোরে আযানের সময় ঘুম থেকে উঠে মিসওয়াক করতেন দোয়া পড়তেন।

 "আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি আহইয়ানা বা'দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশূর। " 

অর্থ সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি নিদ্রারুপ মৃত্যুর পর আমাদের জীবিত করলেন আর তাঁরই নিকট আমাদের পুনরুত্থান। তারপর আযানের জবাব দিতেন এবং আযানের পর দোয়া করতেন। অতঃপর গোসল ওযু করতেন মাঝেমাঝে ওযু ছাড়াই যেতেন বলতেন আমার চক্ষু ঘুমায় অন্তর ঘুমায় না। 

ফজরের দুই রাকাত সুন্নত আদায় করতেন। এ সুন্নত নামাজে সাধারণত সূরা ফাতিহার সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস পড়তেন কখনো কখনো সুরা বাকারার 136 নাম্বার আয়াত ও পড়তেন। তিনি বলতেন- 

"দুনিয়া এবং তার মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছু হয়তো এই দুই রাকাত সুন্নত আমার নিকট অধিক মূল্যবান। "

ফজরের সুন্নত সালাতের পর স্ত্রীকে জাগ্রত পেলে গল্প করতেন। জাগ্রত না পেলে ডান কাত হয়ে জামাতের সময় হওয়ার আগ পরযন্ত শুয়ে থাকতেন। ফরজ গোসলের প্রয়োজনে তা লুকোতেন না বা লজ্জাবোধ করতেন না।

যখন নামাজে দাড়াতেন পিছনের মুসল্লিগন কাতারে সোজা হয়ে দাড়িয়েছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিতেন। ফজরের সালাতে ৬০ হতে ১০০ আয়াত তিলাওয়াত করতেন।আল্লাহ বলেন-

১৭: বনী ইসরাঈল,:আয়াত: ৭৮,

"নামায কায়েম করো  সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে  রাতের অন্ধকার পর্যন্ত এবং ফজরে কুরআন পড়ারও ব্যবস্থা করো। কারণ ফজরের কুরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।"

রাসুল সঃ মুসলিম উম্মাহর জন্য বেশী বেশী দোয়া করতেন।সালাত শেষে কেবলামুখী হয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকতেন এবং দোয়া করতেন -"আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি(আস্তাগফিরুল্লাহ ৩বার)। হে আল্লাহ আপনি শান্তিময়,আপনার নিকট থেকেই শান্তি বর্ষিত  হয়।"আপনি বরকত ময়, হে মহিমাময় ও সন্মানের অধিকারী।" মুসনাদ আহমদ :২২৪০৮; ইবনে মাজাহ ৯২৮। 

এরপর জিকিরে মশগুল হতেন।সুবানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার পড়ে শুরু করতেন।এরপর রাসুল সঃ কে ঘিরে থাকা সাহাবাদের সদুউপদেশ দিতেন। বলতেন তোমারা যারা বেচে থাকবে অনেক মতানৈক্য দেখতে পাবে।সে সময় তোমাদের করতব্য হলো- আমার সুন্নত ও খুলাফায়ে রাশেদীনের অনুসরন করা।  

এরপর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়াসাল্লাম  সাহাবীদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বের হতেন, কারো কোন সমস্যা আছে কিনা? কেউ কোনো স্বপ্ন দেখেছে কিনা? এবং উপকারী কথা শিক্ষা দিতেন।কখনো কখনো সাহাবাদের সাথে খাবার খেতেন।তার পর নবিজি সঃ মসজিদে ফিরে এসে দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করতেন। এ সময় ও কিছু সাহাবী আসতেন এবং নবিজি সঃ এর সাথে কথা বলতেন। 
আল্লাহর রাসুল একবার বললেন- 
"সব চেয়ে বড় গুনা হল আল্লাহর সাথে শরীক করা,মাতা পিতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। "-তিরমিজি :১৯০১; মুসনাদ আহম্মদ:২০৩৯৪।বিভিন্ন বিষয় আলোচনার পর সাহাবারা চলে যেতেন এবং নবিজি সঃ মদিনার পথে হাটতে বের হতেন। এ সময় অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখতেন, বাগানে বেড়াতেন।
তারপর উম্মুল মুমিনিনদের মধ্যে যার ভাগে থাকার তারিখ থাকত তার কক্ষে যেতেন। ঘরের সবাইকে সালাম দেওয়া, মিসওয়াক করা এবং দোহার সালাত চার,ছয় বা আট রাকাত পড়তেন। প্রতি শনিবার মধ্য সকালে কুবায় গিয়ে মসজিদ আল কুবায় নামাজ আদায় করতেন।

জোহরের চার রাকাত সুন্নত সালাত ঘরেই আদায় করতেন। ফরজ সালাতের সময় হলে কখনো কখনো স্ত্রীদের চুমু দিয়ে বের হতেন। সময়ে সময়ে হাসান,  হুসাইন  বা উমামা বিনতে জয়নাবকে কোলে করেই মসজিদে যেতেন। 
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিসসাল্লাম একবার এক যাকাত আদায়কারীর উদ্দেশ্যে  বলেছিলেন -"কাউকে কোন দায়িত্ব দিলে তার উচিৎ নয় নিজের জন্য কিছু সংগ্রহ করা। কারণ সে তার পিতামাতার ঘরে বসে দেখতো যে তাকে কেউ উপহার দেয় কিনা? 
নামাজ পড়ে মিম্বরে বসে সাহাদের প্রশ্নের উত্তর দিতেন।
আসরের আজান হওয়ার পর চার রাকাত সুন্নত নামাজের জন্য উৎসাহ  দিতেন।আছরের সালাতে যুহরের সালাতের অরধেক কুরআন তিলাওয়াত করতেন।সালাত শেষে সাহাবিদের দিকে ঘুতে বসতেন এবং কিছু বলার থাকলে বলতেন।একবার তিনি বললেন-" যদি কোন মুসলিম উত্তম রুপে তার উপর ফরজ করা পবিত্রতা অর্জন করে পাচ ওয়াক্ত ফরজ সালাত আদায় করে তা হলে এটি সালাতের মধ্যবর্তী সময়ে তার দারা সংঘটিত পাপ গুলোর ক্ষমা নিশ্চিত করে দেয়।" সহি মুসলিম :২৩১।
আসরের পর পারিবারিক আলোচনায় আয়শা রাঃ বিভিন্ন প্রশ্ন করতেন এবং আল্লাহর রাসুল সঃ তার উত্তর দিতেন।আসরের পর সাহাবিরা তাদের ঘরে মাঝেমাঝে দাওয়াত দিতেন। তিনিও দাওয়াত রক্ষা করতেন।
 
মাগরিবের আজানের পর পরই তিনি মসজিদে আসতেন।তাড়াতাড়িই মাগরিবের নামাজের জামাত শেষ করতেন। তিনি নিরদেশ দেন,"তোমাদের রাতের খাবার হাজির হলে নামাজের জন্য খাবার গ্রহনে বিলম্ব করো না।তিনি খাবার গ্রহণ ও দুধ পান করলে কুলি করতেন। তিনি বলেন দুধে চরবি আছে। কখনো কখনো এক টুকরো গোসত বা এক গ্লাস দুধ স্ত্রীর সাথে ভাগাভাগি করে খেতেন।
ঈশার একটু বিলম্ব করে আদায় করতেন। একবার ঈশার নামাজ সংক্ষেপে কিন্তু নিখুঁতভাবে ভাবে আদায় করলেন।মাঝে মাঝে বাচ্চাদের কান্নার আওয়াজ শুনলে ছোট সুরা দিয়ে তাড়াতাড়ি নামাজ শেষ করতেন মহিদের সুবিধার জন্য। 
ঈশার সালাতের পর খুব কম কথা বলতেন। মহিলারা বের হয়ে গেলে তিনি বের হতেন এবং সাথে পুরুষ সাহাবারা বের হতেন। ঘরে ফিরে দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা সালাত আদায় করতেন। পরিবারের সাথে খোশ গল্প করতেন।মাঝেমধ্যে হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ কে নিয়ে আবু বকরের ঘরে সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ  আলোচনা করতেন।
তারপর বাড়িতে গিয়ে যখন ঘুমাতে চাইতেন তখন বিছানায় রাখা এক টুকরো কাপড় দিয়ে কোমরের নিচের অংশ ঢেকে রাখতেন, জুব্বা খুলে রাখতেন। স্ত্রীর সাথে এক চাদরের নিচে শুয়ে পড়তেন।পশমের তৈরি তোশক, একই উপাদানে তৈরি একটি মাত্র বালিশ স্ত্রীর সাথে ভাগাভাগি ঘুমাতেন। দিনে বা রাতে যখনি ঘুম থেকে উঠতেন তখনই মিসওয়াক করতেন। মিসওয়ায়ক বালিশের পাশেই থাকত।
নিজের ব্যবহৃত মিসওয়াক স্ত্রীকে দিতেন, ধোয়ার আগেই স্ত্রী ব্যবহার করে ধুয়ে  নবীজি (সঃ)কে দিতেন। 
সাধারনত ফরজ গোসল করে ঘুমাতেন।  কখনো কখনো অজু করে ঘুমাতেন।
ঘুম থেকে উঠে গোসল করতেন। ঘুমানোর আগে এবং ঘুম থেকে উঠে দোয়া করতে
 
রাতে ঘুম থেকে উঠে গোসল প্রয়োজন হলে পবিত্র হয়ে কোরআন তিলাওয়াত করতেন সুরা আলে ইমরানের ১৯০-২০০ নং আয়াত-,-আলে-ইমরান

"(3:190)
اِنَّ فِیْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ اخْتِلَافِ الَّیْلِ وَ النَّهَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الْاَلْبَابِۚۙ

অনুবাদ:    পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের পালাক্রমে যাওয়া আসার মধ্যে সেই সমস্ত বুদ্ধিমান লোকদের জন্য রয়েছে বহুতর নিদর্শন -

(3:191)
الَّذِیْنَ یَذْكُرُوْنَ اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوْدًا وَّ عَلٰى جُنُوْبِهِمْ وَ یَتَفَكَّرُوْنَ فِیْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بَاطِلًا١ۚ سُبْحٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

অনুবাদ:    যে সমস্ত বুদ্ধিমান লোক উঠতে, বসতে ও শয়নে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর গঠনাকৃতি নিয়ে চিন্তা- ভাবনা করে, (তারা আপনা আপনি বলে ওঠেঃ) “হে আমাদের প্রভু! এসব তুমি অনর্থক ও উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে সৃষ্টি করো নি। বাজে ও নিরর্থক কাজ করা থেকে তুমি পাক-পবিত্র ও মুক্ত। কাজেই হে প্রভু! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করো।

(3:192)
رَبَّنَاۤ اِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ اَخْزَیْتَهٗ١ؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیْنَ مِنْ اَنْصَارٍ

অনুবাদ:    তুমি যাকে জাহান্নামে ফেলে দিয়েছো, তাকে আসলে বড়ই লাঞ্ছনা ও অপমানের মধ্যে ঠেলে দিয়েছো এবং এহেন জালেমদের কোন সাহায্যকারী হবে না।

(3:193)
رَبَّنَاۤ اِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِیًا یُّنَادِیْ لِلْاِیْمَانِ اَنْ اٰمِنُوْا بِرَبِّكُمْ فَاٰمَنَّا١ۖۗ رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَ كَفِّرْ عَنَّا سَیِّاٰتِنَا وَ تَوَفَّنَا مَعَ الْاَبْرَارِۚ

অনুবাদ:    হে আমাদের মালিক! আমরা একজন আহ্বানকারীর আহ্বান শুনেছিলাম। তিনি ঈমানের দিকে আহবান করছিলেন। তিনি বলছিলেন, তোমরা নিজেদের রবকে মেনে নাও। আমরা তার আহবান গ্রহণ করেছি। কাজেই, হে আমাদের প্রভু! আমরা যেসব গোনাহ করছি তা মাফ করে দাও। আমাদের মধ্যে যেসব অসৎবৃত্তি আছে সেগুলো আমাদের থেকে দূর করে দাও এবং নেক লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করো।

(3:194)
رَبَّنَا وَ اٰتِنَا مَا وَعَدْتَّنَا عَلٰى رُسُلِكَ وَ لَا تُخْزِنَا یَوْمَ الْقِیٰمَةِ١ؕ اِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِیْعَادَ

অনুবাদ:    হে আমাদের রব! তোমার রসূলদের মাধ্যমে তুমি যেসব ওয়াদা করেছো আমাদের সাথে, সেগুলো পূর্ণ করো এবং কিয়ামতের দিন আমাদের লাঞ্ছনার গর্তে ফেলে দিয়ো না। নিঃসন্দেহে তুমি ওয়াদা খেলাপকারী নও।”

(3:195)
فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ اَنِّیْ لَاۤ اُضِیْعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنْكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ اَوْ اُنْثٰى١ۚ بَعْضُكُمْ مِّنْۢ بَعْضٍ١ۚ فَالَّذِیْنَ هَاجَرُوْا وَ اُخْرِجُوْا مِنْ دِیَارِهِمْ وَ اُوْذُوْا فِیْ سَبِیْلِیْ وَ قٰتَلُوْا وَ قُتِلُوْا لَاُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَیِّاٰتِهِمْ وَ لَاُدْخِلَنَّهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ١ۚ ثَوَابًا مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ١ؕ وَ اللّٰهُ عِنْدَهٗ حُسْنُ الثَّوَابِ

অনুবাদ:    জবাবে তাদের রব বললেনঃ “আমি তোমাদের কারো কর্মকাণ্ড নষ্ট করবো না। পুরুষ হও বা নারী, তোমরা সবাই একই জাতির অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যারা আমার জন্য নিজেদের স্বদেশ ভূমি ত্যাগ করেছে এবং আমার পথে যাদেরকে নিজেদের ঘর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া ও কষ্ট দেয়া হয়েছে এবং যারা আমার জন্য লড়েছে ও মারা গেছে, তাদের সমস্ত গোনাহ আমি মাফ করে দেবো এবং তাদেরকে এমন সব বাগানে প্রবেশ করাবো যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলবে। এসব হচ্ছে আল্লাহর কাছে তাদের প্রতিদান এবং সবচেয়ে ভালো প্রতিদান আল্লাহর কাছেই আছে।”

(3:196)
لَا یَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا فِی الْبِلَادِؕ

অনুবাদ:    হে নবী! দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে আল্লাহর নাফরমান লোকদের চলাফেরা যেন তোমাকে ধোঁকায় ফেলে না দেয়।

(3:197)
مَتَاعٌ قَلِیْلٌ١۫ ثُمَّ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ١ؕ وَ بِئْسَ الْمِهَادُ

অনুবাদ:    এটা নিছক কয়েক দিনের জীবনের সামান্য আনন্দ ফূর্তি মাত্র। তারপর এরা সবাই জাহান্নামে চলে যাবে, যা সবচেয়ে খারাপ স্থান।

(3:198)
لٰكِنِ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ لَهُمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا نُزُلًا مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ١ؕ وَ مَا عِنْدَ اللّٰهِ خَیْرٌ لِّلْاَبْرَارِ

অনুবাদ:    বিপরীত পক্ষে যারা নিজেদের রবকে ভয় করে জীবন যাপন করে তাদের জন্য এমন সব বাগান রয়েছে, যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলছে। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য মেহমানদারীর সরঞ্জাম। আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে, নেক লোকদের জন্য তাই ভালো।

(3:199)
وَ اِنَّ مِنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَمَنْ یُّؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْكُمْ وَ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِمْ خٰشِعِیْنَ لِلّٰهِ١ۙ لَا یَشْتَرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ ثَمَنًا قَلِیْلًا١ؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ

অনুবাদ:    আহলি কিতাবদের মধ্যেও এমন কিছু লোক আছে, যারা আল্লাহকে মানে তোমাদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তার ওপর ঈমান আনে এবং এর আগে তাদের নিজেদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছিল তার ওপরও ঈমান রাখে, যারা আল্লাহর সামনে বিনত মস্তক এবং আল্লাহর আয়াতকে সামান্য দামে বিক্রি করে না। তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে। আর তিনি হিসেব চুকিয়ে দেবার ব্যাপারে দেরী করেন না।

(3:200)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اصْبِرُوْا وَ صَابِرُوْا وَ رَابِطُوْا١۫ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ۠

অনুবাদ:    হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে।"
.  
এরপর মিসওয়াক, ওজু সেরে রাতের সালাতে দাড়াতেন এবং গভীর মনযোগ সহকারে নামাজ পড়তেন। দীর্ঘ সময় কুরআন তেলওয়াত করতেন এবং রুকু, সেজদায় দীর্ঘ সময় কাটাতেন। 
রাতের এক ষষ্ঠাংশ বাকি থাকতে অর্থাৎ প্রায় শেষ প্রহরে তসবিহ, দু,য়া, নিকটাত্মীয়দের প্রতি স্নেহশীল আচরন এবং ইন্তেকাল করা সাথীদের কল্যান কামনার পর বিশ্রামের উদ্দেশ্যে যেতেন। 
ঘুমানোর দু,য়া:
ঘুমানোর সময় এই দুআ'টি পড়বে- أَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوْتُ 
  • আল্লাহুম্মা বিস্মিকা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া।
  • ঘুম থেকে উঠার পর দু,য়া :
    • الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا، وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ
      উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বা‘দা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিন্ নুশূর
      অর্থঃ হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তাঁরই নিকট সকলের পুনরুত্থান।
      বুখারী ফাতহুল বারী ১১/১১৩, নং ৬৩১৪;
      মুসলিম ৪/২০৮৩, নং ২৭১১।
সহায়ক গ্রন্থ:- নবীজির(সঃ) দিনলিপি
শাইখ আব্দুল ওয়াহহাব ইবনু নাসির আত তুরাইরি। 
সহায়ক apps : Al Quran Search and Browse

          ---------

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

Islamic world

  Islamic World

জনপ্রিয় লেখা সমূহ