Al Quran লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Al Quran লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

১৯ মে ২০২১

২৬ শু আরা

  ২৬-শুআরা



(26:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(26:1)

طٰسٓمّٓ




অনুবাদ:    তা-সীন-মীম।




(26:2)

تِلْكَ اٰیٰتُ الْكِتٰبِ الْمُبِیْنِ




অনুবাদ:    এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।




(26:3)

لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ اَلَّا یَكُوْنُوْا مُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এ লোকেরা ঈমান আনছে না বলে তুমি যেন দুঃখে নিজের প্রাণ বিনষ্ট করে দিতে বসেছ।




(26:4)

اِنْ نَّشَاْ نُنَزِّلْ عَلَیْهِمْ مِّنَ السَّمَآءِ اٰیَةً فَظَلَّتْ اَعْنَاقُهُمْ لَهَا خٰضِعِیْنَ




অনুবাদ:    আমি চাইলে আকাশ থেকে এমন নিদর্শন অবতীর্ণ করতে পারতাম যার ফলে তাদের ঘাড় তার সামনে নত হয়ে যেতো।




(26:5)

وَ مَا یَاْتِیْهِمْ مِّنْ ذِكْرٍ مِّنَ الرَّحْمٰنِ مُحْدَثٍ اِلَّا كَانُوْا عَنْهُ مُعْرِضِیْنَ




অনুবাদ:    তাদের কাছে দয়াময়ের পক্ষ থেকে যে নতুন নসীহতই আসে, তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।




(26:6)

فَقَدْ كَذَّبُوْا فَسَیَاْتِیْهِمْ اَنْۢبٰٓؤُا مَا كَانُوْا بِهٖ یَسْتَهْزِءُوْنَ




অনুবাদ:    এখন যখন তারা মিথ্যা আরোপ করেছে, তখন তারা যে জিনিসের প্রতি বিদ্রূপ করে চলেছে, অচিরেই তার প্রকৃত স্বরূপ (বিভিন্ন পদ্ধতিতে) তারা অবগত হবে।




(26:7)

اَوَ لَمْ یَرَوْا اِلَى الْاَرْضِ كَمْ اَنْۢبَتْنَا فِیْهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ كَرِیْمٍ




অনুবাদ:    আর তারা কি কখনো পৃথিবীর প্রতি দৃষ্টিপাত করেনি? আমি কত রকমের কত বিপুল পরিমাণ উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ তার মধ্যে সৃষ্টি করেছি?




(26:8)

اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    নিশ্চয়ই তার মধ্যে একটি নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।




(26:9)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর যথার্থই তোমার রব পরাক্রান্ত এবং অনুগ্রহশীলও।




(26:10)

وَ اِذْ نَادٰى رَبُّكَ مُوْسٰۤى اَنِ ائْتِ الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَۙ




অনুবাদ:    তাদেরকে সে সময়ের কথা শুনাও যখন তোমার রব মূসাকে ডেকে বলেছিলেন, “জালেম সম্প্রদায়ের কাছে যাও-




(26:11)

قَوْمَ فِرْعَوْنَ١ؕ اَلَا یَتَّقُوْنَ




অনুবাদ:    ফেরাউনের সম্প্রদায়ের কাছে --- তারা কি ভয় করে না?”




(26:12)

قَالَ رَبِّ اِنِّیْۤ اَخَافُ اَنْ یُّكَذِّبُوْنِؕ




অনুবাদ:    সে বললো, “হে আমার রব! আমার ভয় হয় তারা আমাকে মিথ্যা বলবে,




(26:13)

وَ یَضِیْقُ صَدْرِیْ وَ لَا یَنْطَلِقُ لِسَانِیْ فَاَرْسِلْ اِلٰى هٰرُوْنَ




অনুবাদ:    আমার বক্ষ সংকুচিত হচ্ছে এবং আমার জিহ্বা সঞ্চালিত হচ্ছে না। আপনি হারুনের প্রতি রিসালাত পাঠান।




(26:14)

وَ لَهُمْ عَلَیَّ ذَنْۢبٌ فَاَخَافُ اَنْ یَّقْتُلُوْنِۚ




অনুবাদ:    আর আমার বিরুদ্ধে তো তাদের একটি অভিযোগও আছে। তাই আমার আশঙ্কা হয় তারা আমাকে হত্যা করে ফেলবে।”




(26:15)

قَالَ كَلَّا١ۚ فَاذْهَبَا بِاٰیٰتِنَاۤ اِنَّا مَعَكُمْ مُّسْتَمِعُوْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহ্ বললেন, “কখখনো না, তোমরা দু’জন যাও আমার নিদর্শনগুলো নিয়ে, আমি তোমাদের সাথে সবকিছু শুনতে থাকবো।




(26:16)

فَاْتِیَا فِرْعَوْنَ فَقُوْلَاۤ اِنَّا رَسُوْلُ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    ফেরাউনের কাছে যাও এবং তাকে বলো, রব্বুল আলামীন আমাদের পাঠিয়েছেন,




(26:17)

اَنْ اَرْسِلْ مَعَنَا بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَؕ




অনুবাদ:    যাতে তুমি বনী ইসরাঈলকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দাও সে জন্য।”




(26:18)

قَالَ اَلَمْ نُرَبِّكَ فِیْنَا وَلِیْدًا وَّ لَبِثْتَ فِیْنَا مِنْ عُمُرِكَ سِنِیْنَۙ




অনুবাদ:    ফেরাউন বললো, “আমরা কি তোমাকে আমাদের এখানে প্রতিপালন করিনি যখন ছোট্ট শিশুটি ছিলে? বেশ ক’টি বছর আমাদের এখানে কাটিয়েছো,




(26:19)

وَ فَعَلْتَ فَعْلَتَكَ الَّتِیْ فَعَلْتَ وَ اَنْتَ مِنَ الْكٰفِرِیْنَ




অনুবাদ:    এবং তারপর তুমি যে কর্মটি করেছ তাতো করেছোই; তুমি বড়ই অকৃতজ্ঞ।”




(26:20)

قَالَ فَعَلْتُهَاۤ اِذًا وَّ اَنَا مِنَ الضَّآلِّیْنَؕ




অনুবাদ:    মূসা জবাব দিল, “সে সময় অজ্ঞতার মধ্যে আমি সে কাজ করেছিলাম।




(26:21)

فَفَرَرْتُ مِنْكُمْ لَمَّا خِفْتُكُمْ فَوَهَبَ لِیْ رَبِّیْ حُكْمًا وَّ جَعَلَنِیْ مِنَ الْمُرْسَلِیْنَ




অনুবাদ:    তারপর তোমাদের ভয়ে আমি পালিয়ে গেলাম। এরপর আমার রব আমাকে “হুকুম” দান করলেন এবং আমাকে রসূলদের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন।




(26:22)

وَ تِلْكَ نِعْمَةٌ تَمُنُّهَا عَلَیَّ اَنْ عَبَّدْتَّ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَؕ




অনুবাদ:    আর তোমার অনুগ্রহের কথা যা তুমি আমার প্রতি দেখিয়েছো, তার আসল কথা হচ্ছে এই যে, তুমি বনী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছিলে।”




(26:23)

قَالَ فِرْعَوْنُ وَ مَا رَبُّ الْعٰلَمِیْنَؕ




অনুবাদ:    ফেরাউন বললো, “রব্বুল আলামীন আবার কে?”




(26:24)

قَالَ رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ مَا بَیْنَهُمَا١ؕ اِنْ كُنْتُمْ مُّوْقِنِیْنَ




অনুবাদ:    মূসা জবাব দিল, “আকাশসমূহ ও পৃথিবীর রব এবং আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে যা কিছু আছে তাদেরও রব, যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস স্থাপনকারী হও।”




(26:25)

قَالَ لِمَنْ حَوْلَهٗۤ اَلَا تَسْتَمِعُوْنَ




অনুবাদ:    ফেরাউন তার আশপাশের লোকদের বললো, “তোমরা শুনছো তো?”




(26:26)

قَالَ رَبُّكُمْ وَ رَبُّ اٰبَآئِكُمُ الْاَوَّلِیْنَ




অনুবাদ:    মূসা বললো, “তোমাদেরও রব এবং তোমাদের বাপ-দাদাদেরও রব যারা অতিক্রান্ত হয়ে গেছে।”




(26:27)

قَالَ اِنَّ رَسُوْلَكُمُ الَّذِیْۤ اُرْسِلَ اِلَیْكُمْ لَمَجْنُوْنٌ




অনুবাদ:    ফেরাউন (উপস্থিত লোকদের) বললো, “তোমাদের কাছে প্রেরিত তোমাদের এ রসূল সাহেবটি তো দেখছি একেবারেই পাগল।”




(26:28)

قَالَ رَبُّ الْمَشْرِقِ وَ الْمَغْرِبِ وَ مَا بَیْنَهُمَا١ؕ اِنْ كُنْتُمْ تَعْقِلُوْنَ




অনুবাদ:    মূসা বললো, “পূর্ব ও পশ্চিম এবং যা কিছু তার মাঝখানে আছে সবার রব, যদি তোমরা কিছু বুদ্ধি-জ্ঞানের অধিকারী হতে।”




(26:29)

قَالَ لَئِنِ اتَّخَذْتَ اِلٰهًا غَیْرِیْ لَاَجْعَلَنَّكَ مِنَ الْمَسْجُوْنِیْنَ




অনুবাদ:    ফেরাউন বললো, “যদি তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে মাবুদ বলে মেনে নাও, তাহলে কারাগারে যারা পচে মরছে তোমাকেও তাদের দলে ভিড়িয়ে দেবো।”




(26:30)

قَالَ اَوَ لَوْ جِئْتُكَ بِشَیْءٍ مُّبِیْنٍۚ




অনুবাদ:    মূসা বললো, “আমি যদি তোমার সামনে একটি সুস্পষ্ট জিনিস আনি তবুও?




(26:31)

قَالَ فَاْتِ بِهٖۤ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    ফেরাউন বললো, “বেশ তুমি আনো যদি তুমি সত্যবাদী হও।”




(26:32)

فَاَلْقٰى عَصَاهُ فَاِذَا هِیَ ثُعْبَانٌ مُّبِیْنٌۚۖ




অনুবাদ:    (তার মুখ থেকে একথা বের হতেই) মূসা নিজের লাঠিটি ছুঁড়ে মারলো। তৎক্ষনাৎ সেটি হলো একটি সাক্ষাত অজগর।




(26:33)

وَّ نَزَعَ یَدَهٗ فَاِذَا هِیَ بَیْضَآءُ لِلنّٰظِرِیْنَ۠




অনুবাদ:    তারপর সে নিজের হাত (বগলের ভেতর থেকে) টেনে বের করলো এবং তা সকল প্রত্যক্ষদর্শীর সামনে চকমক্ করছিল।




(26:34)

قَالَ لِلْمَلَاِ حَوْلَهٗۤ اِنَّ هٰذَا لَسٰحِرٌ عَلِیْمٌۙ




অনুবাদ:    ফেরাউন তার চারপাশে উপস্থিত সরদারদেরকে বললো, “এ ব্যক্তি নিশ্চয়ই একজন দক্ষ যাদুকর।




(26:35)

یُّرِیْدُ اَنْ یُّخْرِجَكُمْ مِّنْ اَرْضِكُمْ بِسِحْرِهٖ١ۖۗ فَمَا ذَا تَاْمُرُوْنَ




অনুবাদ:    নিজের যাদুর জোরে সে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে দিতে চায়। এখন বলো তোমরা কী হুকুম দিচ্ছো?”




(26:36)

قَالُوْۤا اَرْجِهْ وَ اَخَاهُ وَ ابْعَثْ فِی الْمَدَآئِنِ حٰشِرِیْنَۙ




অনুবাদ:    তারা বললো, “তাঁকে ও তাঁর ভাইকে আটক করো এবং শহরে শহরে হরকরা পাঠাও।




(26:37)

یَاْتُوْكَ بِكُلِّ سَحَّارٍ عَلِیْمٍ




অনুবাদ:    তারা প্রত্যেক সুদক্ষ যাদুকরকে তোমার কাছে নিয়ে আসুক।”




(26:38)

فَجُمِعَ السَّحَرَةُ لِمِیْقَاتِ یَوْمٍ مَّعْلُوْمٍۙ




অনুবাদ:    তাই একদিন নির্দিষ্ট সময়ে যাদুকরদেরকে একত্র করা হলো।




(26:39)

وَّ قِیْلَ لِلنَّاسِ هَلْ اَنْتُمْ مُّجْتَمِعُوْنَۙ




অনুবাদ:    এবং লোকদেরকে বলা হলো, “তোমরাও কি সমাবেশে যাবে?




(26:40)

لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ السَّحَرَةَ اِنْ كَانُوْا هُمُ الْغٰلِبِیْنَ




অনুবাদ:    হয়তো আমরা যাদুকরদের ধর্মের অনুসরণের ওপরই বহাল থাকবো, যদি তারা বিজয়ী হয়।”




(26:41)

فَلَمَّا جَآءَ السَّحَرَةُ قَالُوْا لِفِرْعَوْنَ اَئِنَّ لَنَا لَاَجْرًا اِنْ كُنَّا نَحْنُ الْغٰلِبِیْنَ




অনুবাদ:    যখন যাদুকররা ময়দানে এলো, তারা ফেরাউনকে বললো, “আমরা কি পুরস্কার পাবো, যদি আমরা বিজয়ী হই?”




(26:42)

قَالَ نَعَمْ وَ اِنَّكُمْ اِذًا لَّمِنَ الْمُقَرَّبِیْنَ




অনুবাদ:    সে বললো, “হ্যাঁ,, আর তোমরা তো সে সময় নিকটবর্তীদের মধ্যে শামিল হয়ে যাবে।”




(26:43)

قَالَ لَهُمْ مُّوْسٰۤى اَلْقُوْا مَاۤ اَنْتُمْ مُّلْقُوْنَ




অনুবাদ:    মূসা বললো, “তোমাদের যা নিক্ষেপ করার আছে নিক্ষেপ কর।”




(26:44)

فَاَلْقَوْا حِبَالَهُمْ وَ عِصِیَّهُمْ وَ قَالُوْا بِعِزَّةِ فِرْعَوْنَ اِنَّا لَنَحْنُ الْغٰلِبُوْنَ




অনুবাদ:    তারা তখনই নিজেদের দড়িদড়া ও লাঠিসোঁটা নিক্ষেপ করলো এবং বললো, “ফেরাউনের ইজ্জতের কসম, আমরাই বিজয়ী হবো।”




(26:45)

فَاَلْقٰى مُوْسٰى عَصَاهُ فَاِذَا هِیَ تَلْقَفُ مَا یَاْفِكُوْنَۚۖ




অনুবাদ:    তারপর মূসা নিজের লাঠিটি নিক্ষেপ করলো। অকস্মাত সে তাদের কৃত্রিম কীর্তিগুলো গ্রাস করতে থাকলো।




(26:46)

فَاُلْقِیَ السَّحَرَةُ سٰجِدِیْنَۙ




অনুবাদ:    তখন সকল যাদুকর স্বতঃস্ফূর্তভাবে সিজদাবনত হয়ে পড়লো




(26:47)

قَالُوْۤا اٰمَنَّا بِرَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    এবং বলে উঠলো, “মেনে নিলাম আমরা রব্বুল আলামীনকে---




(26:48)

رَبِّ مُوْسٰى وَ هٰرُوْنَ




অনুবাদ:    -মূসা ও হারুনের রবকে।”




(26:49)

قَالَ اٰمَنْتُمْ لَهٗ قَبْلَ اَنْ اٰذَنَ لَكُمْ١ۚ اِنَّهٗ لَكَبِیْرُكُمُ الَّذِیْ عَلَّمَكُمُ السِّحْرَ١ۚ فَلَسَوْفَ تَعْلَمُوْنَ١ؕ۬ لَاُقَطِّعَنَّ اَیْدِیَكُمْ وَ اَرْجُلَكُمْ مِّنْ خِلَافٍ وَّ لَاُوصَلِّبَنَّكُمْ اَجْمَعِیْنَۚ




অনুবাদ:    ফেরাউন বললো, “তোমরা মূসার কথা মেনে নিলে আমি তোমাদের অনুমতি দেবার আগেই! নিশ্চয়ই এ তোমাদের প্রধান, যে তোমাদের যাদু শিখিয়েছে। বেশ, এখনই তোমরা জানবে। আমি তোমাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করাবো এবং তোমাদের সবাইকে শূলবিদ্ধ করবো।”




(26:50)

قَالُوْا لَا ضَیْرَ١٘ اِنَّاۤ اِلٰى رَبِّنَا مُنْقَلِبُوْنَۚ




অনুবাদ:    তারা বলল, “কোন পরোয়া নেই, আমরা নিজেদের রবের কাছে পৌঁছে যাবো।




(26:51)

اِنَّا نَطْمَعُ اَنْ یَّغْفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطٰیٰنَاۤ اَنْ كُنَّاۤ اَوَّلَ الْمُؤْمِنِیْنَؕ۠




অনুবাদ:    আর আমরা আশা করি আমাদের রব আমাদের গোনাহ্ মাফ করে দেবেন, কেননা, সবার আগে আমরা ঈমান এনেছি।”




(26:52)

وَ اَوْحَیْنَاۤ اِلٰى مُوْسٰۤى اَنْ اَسْرِ بِعِبَادِیْۤ اِنَّكُمْ مُّتَّبَعُوْنَ




অনুবাদ:    আমি মূসার কাছে ওহী পাঠিয়েছি এই মর্মেঃ “রাতারাতি আমার বান্দাদের নিয়ে বের হয়ে যাও, তোমাদের পিছু নেয়া হবে।”




(26:53)

فَاَرْسَلَ فِرْعَوْنُ فِی الْمَدَآئِنِ حٰشِرِیْنَۚ




অনুবাদ:    এর ফলে ফেরাউন (সৈন্য একত্র করার জন্য) নগরে নগরে নকীব পাঠালো (এবং বলে পাঠালোঃ)




(26:54)

اِنَّ هٰۤؤُلَآءِ لَشِرْذِمَةٌ قَلِیْلُوْنَۙ




অনুবাদ:    এরা মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোক,




(26:55)

وَ اِنَّهُمْ لَنَا لَغَآئِظُوْنَۙ




অনুবাদ:    এরা আমাদের নারাজ করেছে




(26:56)

وَ اِنَّا لَجَمِیْعٌ حٰذِرُوْنَؕ




অনুবাদ:    এবং আমরা একটি দল, সদা-সতর্ক থাকাই আমাদের রীতি।”




(26:57)

فَاَخْرَجْنٰهُمْ مِّنْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍۙ




অনুবাদ:    এভাবে আমি তাদেরকে বের করে এনেছি তাদের বাগ-বাগীচা, নদী-নির্ঝরিনী,




(26:58)

وَّ كُنُوْزٍ وَّ مَقَامٍ كَرِیْمٍۙ




অনুবাদ:    ধন-ভাণ্ডার ও সুরম্য আবাসগৃহসমূহ থেকে।




(26:59)

كَذٰلِكَ١ؕ وَ اَوْرَثْنٰهَا بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَؕ




অনুবাদ:    এসব ঘটেছে তাদের সাথে আর (অন্যদিকে) আমি বনী ইসরাঈলকে ঐ সব জিনিসের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছি।




(26:60)

فَاَتْبَعُوْهُمْ مُّشْرِقِیْنَ




অনুবাদ:    সকাল হতেই তারা এদের পিছু নিয়ে বের হয়ে পড়লো।




(26:61)

فَلَمَّا تَرَآءَ الْجَمْعٰنِ قَالَ اَصْحٰبُ مُوْسٰۤى اِنَّا لَمُدْرَكُوْنَۚ




অনুবাদ:    দু’দল যখন পরস্পরকে দেখতে পেলো তখন মূসার সাথীরা চিৎকার করে উঠলো, “আমরা তো পাকড়াও হয়ে গেলাম।”




(26:62)

قَالَ كَلَّا١ۚ اِنَّ مَعِیَ رَبِّیْ سَیَهْدِیْنِ




অনুবাদ:    মূসা বললো, “কখখনো না, আমার সাথে আছেন আমার রব, তিনি নিশ্চয়ই আমাকে পথ দেখাবেন।”




(26:63)

فَاَوْحَیْنَاۤ اِلٰى مُوْسٰۤى اَنِ اضْرِبْ بِّعَصَاكَ الْبَحْرَ١ؕ فَانْفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَالطَّوْدِ الْعَظِیْمِۚ




অনুবাদ:    আমি মূসাকে ওহীর মাধ্যমে হুকুম দিলাম, “মারো তোমার লাঠি সাগরের বুকে।” সহসাই সাগর দীর্ণ হয়ে গেলো এবং তার প্রত্যেকটি টুকরা হয়ে গেলো এক একটি বিশাল পাহাড়ের মতো।




(26:64)

وَ اَزْلَفْنَا ثَمَّ الْاٰخَرِیْنَۚ




অনুবাদ:    এ জায়গায়ই আমি দ্বিতীয় দলটিকেও নিকটে আনলাম।




(26:65)

وَ اَنْجَیْنَا مُوْسٰى وَ مَنْ مَّعَهٗۤ اَجْمَعِیْنَۚ




অনুবাদ:    মূসা ও তাঁর সমস্ত লোককে যারা তার সঙ্গে ছিল আমি উদ্ধার করলাম




(26:66)

ثُمَّ اَغْرَقْنَا الْاٰخَرِیْنَؕ




অনুবাদ:    এবং অন্যদেরকে ডুবিয়ে দিলাম।




(26:67)

اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    এ ঘটনার মধ্যে আছে একটি নিদর্শন। কিন্তু এদের অধিকাংশ মান্যকারী নয়।




(26:68)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব পরাক্রমশালীও আবার দয়াময়ও।




(26:69)

وَ اتْلُ عَلَیْهِمْ نَبَاَ اِبْرٰهِیْمَۘ




অনুবাদ:    আর তাদেরকে ইবরাহীমের কাহিনী শুনিয়ে দাও,




(26:70)

اِذْ قَالَ لِاَبِیْهِ وَ قَوْمِهٖ مَا تَعْبُدُوْنَ




অনুবাদ:    যখন সে তার বাপ ও তার সম্প্রদায়কে জিজ্ঞেস করেছিল, “তোমরা কিসের পূজা করো?”




(26:71)

قَالُوْا نَعْبُدُ اَصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عٰكِفِیْنَ




অনুবাদ:    তারা বললো, “আমরা কতিপয় মূর্তির পূজা করি এবং তাদের সেবায় আমরা নিমগ্ন থাকি।”




(26:72)

قَالَ هَلْ یَسْمَعُوْنَكُمْ اِذْ تَدْعُوْنَۙ




অনুবাদ:    সে জিজ্ঞেস করলো, “তোমরা যখন তাদেরকে ডাকো তখন কি তারা তোমাদের কথা শোনে?




(26:73)

اَوْ یَنْفَعُوْنَكُمْ اَوْ یَضُرُّوْنَ




অনুবাদ:    অথবা তোমাদের কি কিছু উপকার বা ক্ষতি করে?”




(26:74)

قَالُوْا بَلْ وَجَدْنَاۤ اٰبَآءَنَا كَذٰلِكَ یَفْعَلُوْنَ




অনুবাদ:    তারা জবাব দিল, “না, বরং আমরা নিজেদের বাপ-দাদাকে এমনটিই করতে দেখেছি।”




(26:75)

قَالَ اَفَرَءَیْتُمْ مَّا كُنْتُمْ تَعْبُدُوْنَۙ




অনুবাদ:    এ কথায় ইবরাহীম বললো, “কখনো কি তোমরা (চোখ মেলে) সেই জিনিসগুলো দেখেছো যাদের বন্দেগী করতে




(26:76)

اَنْتُمْ وَ اٰبَآؤُكُمُ الْاَقْدَمُوْنَ٘ۖ




অনুবাদ:    তোমরা এবং তোমাদের অতীত পূর্বপুরুষেরা অভ্যস্ত?




(26:77)

فَاِنَّهُمْ عَدُوٌّ لِّیْۤ اِلَّا رَبَّ الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    এরা তো সবাই আমার দুশমন একমাত্র রব্বুল আলামীন ছাড়া,




(26:78)

الَّذِیْ خَلَقَنِیْ فَهُوَ یَهْدِیْنِۙ




অনুবাদ:    যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনিই আমাকে পথ দেখিয়েছেন।




(26:79)

وَ الَّذِیْ هُوَ یُطْعِمُنِیْ وَ یَسْقِیْنِۙ




অনুবাদ:    তিনি আমাকে খাওয়ান ও পান করান




(26:80)

وَ اِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ یَشْفِیْنِ۪ۙ




অনুবাদ:    এবং রোগাক্রান্ত হলে তিনিই আমাকে রোগমুক্ত করেন।




(26:81)

وَ الَّذِیْ یُمِیْتُنِیْ ثُمَّ یُحْیِیْنِۙ




অনুবাদ:    তিনি আমাকে মৃত্যু দান করবেন এবং পুনর্বার আমাকে জীবন দান করবেন।




(26:82)

وَ الَّذِیْۤ اَطْمَعُ اَنْ یَّغْفِرَ لِیْ خَطِیْٓئَتِیْ یَوْمَ الدِّیْنِؕ




অনুবাদ:    তাঁর কাছে আমি আশা করি, প্রতিদান দিবসে তিনি আমার অপরাধ ক্ষমা করবেন।”




(26:83)

رَبِّ هَبْ لِیْ حُكْمًا وَّ اَلْحِقْنِیْ بِالصّٰلِحِیْنَۙ




অনুবাদ:    (এরপর ইবরাহীম দোয়া করলোঃ) “হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করো এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে শামিল করো।




(26:84)

وَ اجْعَلْ لِّیْ لِسَانَ صِدْقٍ فِی الْاٰخِرِیْنَۙ




অনুবাদ:    আর পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে আমার সত্যিকার খ্যাতি ছড়িয়ে দিও




(26:85)

وَ اجْعَلْنِیْ مِنْ وَّرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِیْمِۙ




অনুবাদ:    এবং আমাকে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করো।




(26:86)

وَ اغْفِرْ لِاَبِیْۤ اِنَّهٗ كَانَ مِنَ الضَّآلِّیْنَۙ




অনুবাদ:    আর আমার বাপকে মাফ করে দিও, নিঃসন্দেহে তিনি পথভ্রষ্টদের দলভুক্ত ছিলেন




(26:87)

وَ لَا تُخْزِنِیْ یَوْمَ یُبْعَثُوْنَۙ




অনুবাদ:    এবং সেদিন আমাকে লাঞ্ছিত করো না যেদিন সবাইকে জীবিত করে উঠানো হবে,




(26:88)

یَوْمَ لَا یَنْفَعُ مَالٌ وَّ لَا بَنُوْنَۙ




অনুবাদ:    যেদিন অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে লাগবে না,




(26:89)

اِلَّا مَنْ اَتَى اللّٰهَ بِقَلْبٍ سَلِیْمٍؕ




অনুবাদ:    তবে যে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ নিয়ে আল্লাহর সামনে হাজির হবে।”




(26:90)

وَ اُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِیْنَۙ




অনুবাদ:    --(সেদিন) জান্নাত মুত্তাকীদের কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে




(26:91)

وَ بُرِّزَتِ الْجَحِیْمُ لِلْغٰوِیْنَۙ




অনুবাদ:    এবং জাহান্নাম পথভ্রষ্টদের সামনে খুলে দেয়া হবে।




(26:92)

وَ قِیْلَ لَهُمْ اَیْنَمَا كُنْتُمْ تَعْبُدُوْنَۙ




অনুবাদ:    আর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমরা যাদের ইবাদাত করতে তারা এখন কোথায়?




(26:93)

مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ١ؕ هَلْ یَنْصُرُوْنَكُمْ اَوْ یَنْتَصِرُوْنَؕ




অনুবাদ:    আল্লাহকে বাদ দিয়ে ( তোমরা যাদের ইবাদত করতে ? ) তারা কি এখন তোমাদের কিছু সাহায্য করছে অথবা আত্মরক্ষা করতে পারে?”




(26:94)

فَكُبْكِبُوْا فِیْهَا هُمْ وَ الْغَاوٗنَۙ




অনুবাদ:    তারপর সেই উপাস্যদেরকে এবং এই পথভ্রষ্টদেরকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে




(26:95)

وَ جُنُوْدُ اِبْلِیْسَ اَجْمَعُوْنَؕ




অনুবাদ:    আর ইবলীসের বাহিনীর সবাইকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে।




(26:96)

قَالُوْا وَ هُمْ فِیْهَا یَخْتَصِمُوْنَۙ




অনুবাদ:    সেখানে এরা সবাই পরস্পর ঝগড়া করবে এবং পথভ্রষ্টরা (নিজেদের উপাস্যদেরকে) বলবে,




(26:97)

تَاللّٰهِ اِنْ كُنَّا لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍۙ




অনুবাদ:    “আল্লাহর কসম আমরা তো স্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে ছিলাম,




(26:98)

اِذْ نُسَوِّیْكُمْ بِرَبِّ الْعٰلَمِیْنَ




অনুবাদ:    যখন তোমাদের দিচ্ছিলাম রব্বুল আলামীনের সমকক্ষের মর্যাদা।




(26:99)

وَ مَاۤ اَضَلَّنَاۤ اِلَّا الْمُجْرِمُوْنَ




অনুবাদ:    আর এ অপরাধীরাই আমাদেরকে ভ্রষ্টতায় লিপ্ত করেছে।




(26:100)

فَمَا لَنَا مِنْ شَافِعِیْنَۙ




অনুবাদ:    এখন আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই




(26:101)

وَ لَا صَدِیْقٍ حَمِیْمٍ




অনুবাদ:    এবং কোন অন্তরঙ্গ বন্ধুও নেই।




(26:102)

فَلَوْ اَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    হায় যদি আমাদের আবার একবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ মিলতো, তাহলে আমরা মু’মিন হয়ে যেতাম।”




(26:103)

اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    নিঃসন্দেহে এর মধ্যে একটি বড় নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু এদের অধিকাংশ মুমিন নয়।




(26:104)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব পরাক্রমশালীও এবং করুণাময়ও।




(26:105)

كَذَّبَتْ قَوْمُ نُوْحِ اِ۟لْمُرْسَلِیْنَۚۖ




অনুবাদ:    নূহের সম্প্রদায় রসূলদেরকে মিথ্যুক বললো।




(26:106)

اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ نُوْحٌ اَلَا تَتَّقُوْنَۚ




অনুবাদ:    স্মরণ কর যখন তাদের ভাই নূহ তাদেরকে বলেছিল, “তোমরা কি ভয় কর না?




(26:107)

اِنِّیْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِیْنٌۙ




অনুবাদ:    আমি তোমাদের জন্য একজন আমানতদার রসূল।




(26:108)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِۚ




অনুবাদ:    কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।




(26:109)

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ١ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۚ




অনুবাদ:    এ কাজে আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদানের প্রত্যাশী নই। আমাকে প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।




(26:110)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِؕ




অনুবাদ:    কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং (নির্দ্বিধায়) আমার আনুগত্য করো।”




(26:111)

قَالُوْۤا اَنُؤْمِنُ لَكَ وَ اتَّبَعَكَ الْاَرْذَلُوْنَؕ




অনুবাদ:    তারা জবাব দিল, “আমরা কি তোমাকে মেনে নেবো, অথচ নিকৃষ্টতম লোকেরা তোমার অনুসরণ করছে?”




(26:112)

قَالَ وَ مَا عِلْمِیْ بِمَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَۚ




অনুবাদ:    নূহ বললো, “তাদের কাজ কেমন, আমি কেমন করে জানবো।




(26:113)

اِنْ حِسَابُهُمْ اِلَّا عَلٰى رَبِّیْ لَوْ تَشْعُرُوْنَۚ




অনুবাদ:    তাদের হিসেব গ্রহণ করা তো আমার প্রতিপালকের কাজ। হায়! যদি তোমরা একটু সচেতন হতে।




(26:114)

وَ مَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الْمُؤْمِنِیْنَۚ




অনুবাদ:    যে ঈমান আনে তাকে তাড়িয়ে দেয়া আমার কাজ নয়।




(26:115)

اِنْ اَنَا اِلَّا نَذِیْرٌ مُّبِیْنٌؕ




অনুবাদ:    আমি তো মূলত একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।




(26:116)

قَالُوْا لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهِ یٰنُوْحُ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْمَرْجُوْمِیْنَؕ




অনুবাদ:    তারা বললো, “হে নূহ! যদি তুমি বিরত না হও, তাহলে তুমি অবশ্যই বিপর্যস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।”




(26:117)

قَالَ رَبِّ اِنَّ قَوْمِیْ كَذَّبُوْنِۚۖ




অনুবাদ:    নূহ দোয়া করলো, “হে আমার রব! আমার জাতি আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে।




(26:118)

فَافْتَحْ بَیْنِیْ وَ بَیْنَهُمْ فَتْحًا وَّ نَجِّنِیْ وَ مَنْ مَّعِیَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    এখন আমার ও তাদের মধ্যে সুস্পষ্ট ফায়সালা করে দাও এবং আমার সাথে যেসব মু’মিন আছে তাদেরকে রক্ষা করো।”




(26:119)

فَاَنْجَیْنٰهُ وَ مَنْ مَّعَهٗ فِی الْفُلْكِ الْمَشْحُوْنِۚ




অনুবাদ:    শেষ পর্যন্ত আমি একটি বোঝাই করা নৌযানে তাঁকে ও তাঁর সাথীদেরকে বাঁচিয়ে নিলাম,




(26:120)

ثُمَّ اَغْرَقْنَا بَعْدُ الْبٰقِیْنَؕ




অনুবাদ:    তারপর অবশিষ্ট লোকদেরকে ডুবিয়ে দিলাম।




(26:121)

اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    নিশ্চিতভাবে এর মধ্যে রয়েছে একটি নিদর্শন। কিন্তু তাদের অধিকাংশ তা মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।




(26:122)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর আসল ব্যাপার হচ্ছে, তোমার রব পরাক্রমশালী এবং করুণাময়ও।




(26:123)

كَذَّبَتْ عَادُ اِ۟لْمُرْسَلِیْنَۚۖ




অনুবাদ:    আদ জাতি রাসূলদের প্রতি মিথ্যারোপ করলো।




(26:124)

اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ هُوْدٌ اَلَا تَتَّقُوْنَۚ




অনুবাদ:    স্মরণ করো যখন তাদের ভাই হুদ তাদেরকে বলেছিলো, “তোমরা ভয় করছো না?




(26:125)

اِنِّیْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِیْنٌۙ




অনুবাদ:    আমি তোমাদের জন্য একজন আমানতদার রসূল।




(26:126)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِۚ




অনুবাদ:    কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।




(26:127)

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ١ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ




অনুবাদ:    আমি এ কাজে তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।




(26:128)

اَتَبْنُوْنَ بِكُلِّ رِیْعٍ اٰیَةً تَعْبَثُوْنَ




অনুবাদ:    তোমাদের এ কী অবস্থা, প্রত্যেক উঁচু জায়গায় অনর্থক একটি ইমারত বানিয়ে ফেলছো




(26:129)

وَ تَتَّخِذُوْنَ مَصَانِعَ لَعَلَّكُمْ تَخْلُدُوْنَۚ




অনুবাদ:    এবং বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছো, যেন তোমরা চিরকাল থাকবে?




(26:130)

وَ اِذَا بَطَشْتُمْ بَطَشْتُمْ جَبَّارِیْنَۚ




অনুবাদ:    আর যখন কারো ওপর হাত ওঠাও প্রবল একনায়ক হয়ে হাত ওঠাও।




(26:131)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِۚ




অনুবাদ:    কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।




(26:132)

وَ اتَّقُوا الَّذِیْۤ اَمَدَّكُمْ بِمَا تَعْلَمُوْنَۚ




অনুবাদ:    তাঁকে ভয় করো যিনি এমন কিছু তোমাদের দিয়েছেন যা তোমরা জানো।




(26:133)

اَمَدَّكُمْ بِاَنْعَامٍ وَّ بَنِیْنَۚۙ




অনুবাদ:    তোমাদের দিয়েছেন পশু, সন্তান-সন্ততি,




(26:134)

وَ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍۚ




অনুবাদ:    উদ্যান ও পানির প্রস্রবনসমূহ।




(26:135)

اِنِّیْۤ اَخَافُ عَلَیْكُمْ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍؕ




অনুবাদ:    আমি ভয় করছি তোমাদের ওপর একটি বড় দিনের আযাবের।”




(26:136)

قَالُوْا سَوَآءٌ عَلَیْنَاۤ اَوَ عَظْتَ اَمْ لَمْ تَكُنْ مِّنَ الْوٰعِظِیْنَۙ




অনুবাদ:    তারা জবাব দিল, “তুমি উপদেশ দাও বা না দাও, আমাদের জন্য এ সবই সমান।




(26:137)

اِنْ هٰذَاۤ اِلَّا خُلُقُ الْاَوَّلِیْنَۙ




অনুবাদ:    এ ব্যাপারগুলো তো এমনিই ঘটে চলে আসছে




(26:138)

وَ مَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِیْنَۚ




অনুবাদ:    এবং আমরা আযাবের শিকার হবো না।”




(26:139)

فَكَذَّبُوْهُ فَاَهْلَكْنٰهُمْ١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    শেষ পর্যন্ত তারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করলো এবং আমি তাদেরকে ধ্বংস করে দিলাম। নিশ্চিতভাবেই এর মধ্যে আছে একটি নিদর্শন। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মেনে নেয়নি।




(26:140)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব যেমন পরাক্রমশালী তেমন করুণাময়ও।




(26:141)

كَذَّبَتْ ثَمُوْدُ الْمُرْسَلِیْنَۚۖ




অনুবাদ:    সামূদ জাতি রসূলদের প্রতি মিথ্যারোপ করলো।




(26:142)

اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ صٰلِحٌ اَلَا تَتَّقُوْنَۚ




অনুবাদ:    স্মরণ করো যখন তাদের ভাই সালেহ তাদেরকে বললোঃ “তোমরা কি ভয় করো না?




(26:143)

اِنِّیْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِیْنٌۙ




অনুবাদ:    আমি তোমাদের জন্য একজন আমানতদার রসূল।




(26:144)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِۚ




অনুবাদ:    কাজেই তোমার আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।




(26:145)

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ١ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ




অনুবাদ:    এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান প্রত্যাশী নই। আমার প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।




(26:146)

اَتُتْرَكُوْنَ فِیْ مَا هٰهُنَاۤ اٰمِنِیْنَۙ




অনুবাদ:    এখানে যেসব জিনিস আছে সেগুলোর মাঝখানে কি তোমাদের এমনিই নিশ্চিন্তে থাকতে দেয়া হবে?




(26:147)

فِیْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍۙ




অনুবাদ:    এসব উদ্যান ও প্রস্রবনের মধ্যে?




(26:148)

وَّ زُرُوْعٍ وَّ نَخْلٍ طَلْعُهَا هَضِیْمٌۚ




অনুবাদ:    এসব শস্যক্ষেত ও রসালো গুচ্ছ বিশিষ্ট খেজুর বাগানের মধ্যে?




(26:149)

وَ تَنْحِتُوْنَ مِنَ الْجِبَالِ بُیُوْتًا فٰرِهِیْنَۚ




অনুবাদ:    তোমরা পাহাড় কেটে তার মধ্যে সগর্বে ইমারত নির্মাণ করছো।




(26:150)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِۚ




অনুবাদ:    আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।




(26:151)

وَ لَا تُطِیْعُوْۤا اَمْرَ الْمُسْرِفِیْنَۙ




অনুবাদ:    আর তোমরা সীমা লংঘনকারীদের আদেশের আনুগত্য করো না,




(26:152)

الَّذِیْنَ یُفْسِدُوْنَ فِی الْاَرْضِ وَ لَا یُصْلِحُوْنَ




অনুবাদ:    (এবং তাদেরও আনুগত্য করোনা) যেসব লাগামহীন লোক পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং কোন সংস্কার সাধন করে না ।




(26:153)

قَالُوْۤا اِنَّمَاۤ اَنْتَ مِنَ الْمُسَحَّرِیْنَۚ




অনুবাদ:    তারা জবাব দিল, “তুমি নিছক একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি।




(26:154)

مَاۤ اَنْتَ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا١ۖۚ فَاْتِ بِاٰیَةٍ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    তুমি আমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া আর কি? কোন নিদর্শন আনো, যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাকো।”




(26:155)

قَالَ هٰذِهٖ نَاقَةٌ لَّهَا شِرْبٌ وَّ لَكُمْ شِرْبُ یَوْمٍ مَّعْلُوْمٍۚ




অনুবাদ:    সালেহ বললো, “এ উটনীটি রইলো। এর পানি পান করার জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট এবং তোমাদের সবার পানি পান করার জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট রইলো।




(26:156)

وَ لَا تَمَسُّوْهَا بِسُوْٓءٍ فَیَاْخُذَكُمْ عَذَابُ یَوْمٍ عَظِیْمٍ




অনুবাদ:    একে কখনো পীড়ন করো না, অন্যথায় একটি মহাদিবসের আযাব তোমাদের উপর আপতিত হবে।”




(26:157)

فَعَقَرُوْهَا فَاَصْبَحُوْا نٰدِمِیْنَۙ




অনুবাদ:    তারা তার পায়ের গিঁঠের রগ কেটে দিল এবং শেষে অনুতপ্ত হতে থাকলো।




(26:158)

فَاَخَذَهُمُ الْعَذَابُ١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    আযাব তাদেরকে গ্রাস করলো। নিশ্চিতভাবেই এর মধ্যে রয়েছে একটি নিদর্শন। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মান্যকারী নয়।




(26:159)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব হচ্ছেন পরাক্রমশালী এবং দয়াময়ও।




(26:160)

كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوْطِ اِ۟لْمُرْسَلِیْنَۚۖ




অনুবাদ:    লূতের জাতি রসূলদের প্রতি মিথ্যারোপ করলো।




(26:161)

اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ لُوْطٌ اَلَا تَتَّقُوْنَۚ




অনুবাদ:    স্মরন করো যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বলেছিল, তোমরা কি ভয় করো না?




(26:162)

اِنِّیْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِیْنٌۙ




অনুবাদ:    আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল।




(26:163)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِۚ




অনুবাদ:    কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।




(26:164)

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ١ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ




অনুবাদ:    এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদানের প্রত্যাশী নই। আমার প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।




(26:165)

اَتَاْتُوْنَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    তোমরা কি গোটা দুনিয়ার মধ্যে পুরুষদের কাছে যাও




(26:166)

وَ تَذَرُوْنَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِّنْ اَزْوَاجِكُمْ١ؕ بَلْ اَنْتُمْ قَوْمٌ عٰدُوْنَ




অনুবাদ:    এবং তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে তোমাদের রব তোমাদের জন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা পরিহার করে থাকো? বরং তোমরা তো সীমা-ই অতিক্রম করে গেছো।” ]




(26:167)

قَالُوْا لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهِ یٰلُوْطُ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُخْرَجِیْنَ




অনুবাদ:    তারা বললো, “হে লূত! যদি তুমি এসব কথা থেকে বিরত না হও, তাহলে আমাদের জনপদগুলো থেকে যেসব লোককে বের করে দেয়া হয়েছে তুমিও নির্ঘাত তাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।”




(26:168)

قَالَ اِنِّیْ لِعَمَلِكُمْ مِّنَ الْقَالِیْنَؕ




অনুবাদ:    সে বললো, “তোমাদের এসব কৃতকর্মের জন্য যারা দুঃখবোধ করে আমি তাদের অন্তর্ভূক্ত।




(26:169)

رَبِّ نَجِّنِیْ وَ اَهْلِیْ مِمَّا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    হে আমার রব! আমাকে ও আমার পরিবার-পরিজনকে এদের কুকর্ম থেকে মুক্তি দাও।”




(26:170)

فَنَجَّیْنٰهُ وَ اَهْلَهٗۤ اَجْمَعِیْنَۙ




অনুবাদ:    শেষে আমি তাঁকে ও তাঁর সমস্ত পরিবার পরিজনকে রক্ষা করলাম,




(26:171)

اِلَّا عَجُوْزًا فِی الْغٰبِرِیْنَۚ




অনুবাদ:    এক বৃদ্ধ ছাড়া, যে পেছনে অবস্থানকারীদের দলভূক্ত ছিল।




(26:172)

ثُمَّ دَمَّرْنَا الْاٰخَرِیْنَۚ




অনুবাদ:    তারপর অবশিষ্ট লোকদেরকে আমি ধ্বংস করে দিলাম




(26:173)

وَ اَمْطَرْنَا عَلَیْهِمْ مَّطَرًا١ۚ فَسَآءَ مَطَرُ الْمُنْذَرِیْنَ




অনুবাদ:    এবং তাদের ওপর বর্ষণ করলাম একটি বৃষ্টিধারা, যাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল তাদের ওপর বর্ষিত এ বৃষ্টি ছিল বড়ই নিকৃষ্ট।




(26:174)

اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    নিশ্চিতভাবেই এর মধ্যে রয়েছে একটি নিদর্শন। কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশই মান্যকারী নয়।




(26:175)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব পরাক্রমশালী এবং করুণাময়ও।




(26:176)

كَذَّبَ اَصْحٰبُ لْئَیْكَةِ الْمُرْسَلِیْنَۚۖ




অনুবাদ:    আইকাবাসীরা রসূলদের প্রতি মিথ্যারোপ করলো।




(26:177)

اِذْ قَالَ لَهُمْ شُعَیْبٌ اَلَا تَتَّقُوْنَۚ




অনুবাদ:    যখন শো’আইব তাদেরকে বলেছিল, “তোমরা কি ভয় করো না?




(26:178)

اِنِّیْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِیْنٌۙ




অনুবাদ:    আমি তোমাদের জন্য একজন আমানতদার রসূল।




(26:179)

فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِۚ




অনুবাদ:    কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।




(26:180)

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ١ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ




অনুবাদ:    আমি এ কাজে তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান প্রত্যাশী নই। আমার প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।




(26:181)

اَوْفُوا الْكَیْلَ وَ لَا تَكُوْنُوْا مِنَ الْمُخْسِرِیْنَۚ




অনুবাদ:    তোমরা মাপ পূর্ণ করে দাও এবং কাউকে কম দিয়ো না।




(26:182)

وَزِنُوْا بِالْقِسْطَاسِ الْمُسْتَقِیْمِۚ




অনুবাদ:    সঠিক পাল্লায় ওজন করো




(26:183)

وَ لَا تَبْخَسُوا النَّاسَ اَشْیَآءَهُمْ وَ لَا تَعْثَوْا فِی الْاَرْضِ مُفْسِدِیْنَۚ




অনুবাদ:    এবং লোকদেরকে তাদের জিনিস কম দিয়ো না। যমীনে বিপর্যয় ছড়িয়ে বেড়িও না




(26:184)

وَ اتَّقُوا الَّذِیْ خَلَقَكُمْ وَ الْجِبِلَّةَ الْاَوَّلِیْنَؕ




অনুবাদ:    এবং সেই সত্ত্বাকে ভয় করো যিনি তোমাদের ও অতীতের প্রজন্মকে সৃষ্টি করেছেন।”




(26:185)

قَالُوْۤا اِنَّمَاۤ اَنْتَ مِنَ الْمُسَحَّرِیْنَۙ




অনুবাদ:    তারা বললো, “তুমি নিছক একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি




(26:186)

وَ مَاۤ اَنْتَ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَ اِنْ نَّظُنُّكَ لَمِنَ الْكٰذِبِیْنَۚ




অনুবাদ:    এবং তুমি আমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছুই নও। আর আমরা তো তোমাকে একেবারেই মিথ্যুক মনে করি।




(26:187)

فَاَسْقِطْ عَلَیْنَا كِسَفًا مِّنَ السَّمَآءِ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِیْنَؕ




অনুবাদ:    যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে আকাশের একটি টুকরো ভেঙ্গে আমাদের ওপর ফেলে দাও।”




(26:188)

قَالَ رَبِّیْۤ اَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    শো’আইব বললো, আমার রব জানেন তোমরা যা কিছু করছো।”




(26:189)

فَكَذَّبُوْهُ فَاَخَذَهُمْ عَذَابُ یَوْمِ الظُّلَّةِ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍ




অনুবাদ:    তারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করলো। শেষ পর্যন্ত ছাতার দিনের আযাব তাদের ওপর এসে পড়লো এবং তা ছিল বড়ই ভয়াবহ দিনের আযাব।




(26:190)

اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً١ؕ وَ مَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    নিশ্চিতভাবেই এর মধ্যে রয়েছে একটি নিদর্শন। কিন্তু তাদের অধিকাংশ মান্যকারী নয়।




(26:191)

وَ اِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ۠




অনুবাদ:    আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব পরাক্রমশালী এবং দয়াময়ও।




(26:192)

وَ اِنَّهٗ لَتَنْزِیْلُ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ




অনুবাদ:    এটি রব্বুল আলামীনের নাযিল করা জিনিস।




(26:193)

نَزَلَ بِهِ الرُّوْحُ الْاَمِیْنُۙ




অনুবাদ:    একে নিয়ে আমানতদার রূহ অবতরণ করেছে




(26:194)

عَلٰى قَلْبِكَ لِتَكُوْنَ مِنَ الْمُنْذِرِیْنَ




অনুবাদ:    তোমার হৃদয়ে, যাতে তুমি তাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাও যারা (আল্লাহর পক্ষ থেকে আল্লাহর সৃষ্টির জন্য) সতর্ককারী হয়,




(26:195)

بِلِسَانٍ عَرَبِیٍّ مُّبِیْنٍؕ




অনুবাদ:    পরিষ্কার আরবী ভাষায়।




(26:196)

وَ اِنَّهٗ لَفِیْ زُبُرِ الْاَوَّلِیْنَ




অনুবাদ:    আর আগের লোকদের কিতাবেও এ কথা আছে।




(26:197)

اَوَ لَمْ یَكُنْ لَّهُمْ اٰیَةً اَنْ یَّعْلَمَهٗ عُلَمٰٓؤُا بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَؕ




অনুবাদ:    এটা কি এদের (মক্কাবাসীদের) জন্য কোন নিদর্শন নয় যে, বনী ইসরাইলের আলেম সমাজ একে জানে?




(26:198)

وَ لَوْ نَزَّلْنٰهُ عَلٰى بَعْضِ الْاَعْجَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    (কিন্তু এদের হঠকারিতা ও গোয়ার্তুমি এতদূর গড়িয়েছে যে) যদি আমি এটা কোন অনারব ব্যক্তির উপর নাযিল করে দিতাম




(26:199)

فَقَرَاَهٗ عَلَیْهِمْ مَّا كَانُوْا بِهٖ مُؤْمِنِیْنَؕ




অনুবাদ:    এবং সে এই (প্রাঞ্জল আরবীয় বাণী) তাদেরকে পড়ে শোনাত তবুও এরা মেনে নিতো না।




(26:200)

كَذٰلِكَ سَلَكْنٰهُ فِیْ قُلُوْبِ الْمُجْرِمِیْنَؕ




অনুবাদ:    অনুরূপভাবে একে (কথা) আমি অপরাধীদের হৃদয়ে বিদ্ধ করে দিয়েছি।




(26:201)

لَا یُؤْمِنُوْنَ بِهٖ حَتّٰى یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَۙ




অনুবাদ:    তারা এর প্রতি ঈমান আনে না যতক্ষণ না কঠিন শাস্তি দেখে নেয়।




(26:202)

فَیَاْتِیَهُمْ بَغْتَةً وَّ هُمْ لَا یَشْعُرُوْنَۙ




অনুবাদ:    তারপর যখন তা অসচেতন অবস্থায় তাদের ওপর এসে পড়ে




(26:203)

فَیَقُوْلُوْا هَلْ نَحْنُ مُنْظَرُوْنَؕ




অনুবাদ:    তখন তারা বলে, “এখন আমরা কি অবকাশ পেতে পারি?”




(26:204)

اَفَبِعَذَابِنَا یَسْتَعْجِلُوْنَ




অনুবাদ:    এরা কি আমার আযাব ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছে?




(26:205)

اَفَرَءَیْتَ اِنْ مَّتَّعْنٰهُمْ سِنِیْنَۙ




অনুবাদ:    তুমি কি কিছু ভেবে দেখেছো, যদি আমি তাদেরকে বছরের পর বছর ভোগ বিলাসের অবকাশও দিই




(26:206)

ثُمَّ جَآءَهُمْ مَّا كَانُوْا یُوْعَدُوْنَۙ




অনুবাদ:    এবং তারপর আবার সেই একই জিনিস তাদের ওপর এসে পড়ে যার ভয় তাদেরকে দেখানো হচ্ছে,




(26:207)

مَاۤ اَغْنٰى عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا یُمَتَّعُوْنَؕ




অনুবাদ:    তাহলে জীবন যাপনের এ উপকরণগুলো যা তারা এ যাবত পেয়ে আসছে এগুলো তাদের কোন্ কাজে লাগবে?




(26:208)

وَ مَاۤ اَهْلَكْنَا مِنْ قَرْیَةٍ اِلَّا لَهَا مُنْذِرُوْنَ٥ۗۛۖ




অনুবাদ:    (দেখো) আমি কখনো কোন জনপদকে ধ্বংস করিনি যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের জন্য সতর্ককারী না পাঠিয়েছি




(26:209)

ذِكْرٰى١ۛ۫ وَ مَا كُنَّا ظٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    এবং যোগ্য উপদেশদাতা না পাঠিয়েছি এবং আমি জালেম ছিলাম না।




(26:210)

وَ مَا تَنَزَّلَتْ بِهِ الشَّیٰطِیْنُ




অনুবাদ:    এ (সুস্পষ্ট কিতাবটি) নিয়ে শয়তানরা অবতীর্ণ হয়নি।




(26:211)

وَ مَا یَنْۢبَغِیْ لَهُمْ وَ مَا یَسْتَطِیْعُوْنَؕ




অনুবাদ:    এ কাজটি তাদের শোভাও পায় না। এবং তারা এমনটি করতেই পারে না।




(26:212)

اِنَّهُمْ عَنِ السَّمْعِ لَمَعْزُوْلُوْنَؕ




অনুবাদ:    তাদেরকে তো এর শ্রবণ থেকেও দূরে রাখা হয়েছে।




(26:213)

فَلَا تَدْعُ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ فَتَكُوْنَ مِنَ الْمُعَذَّبِیْنَۚ




অনুবাদ:    কাজেই হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর সাথে অন্য কোন মাবুদকে ডেকো না, নয়তো তুমিও শাস্তি লাভকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।




(26:214)

وَ اَنْذِرْ عَشِیْرَتَكَ الْاَقْرَبِیْنَۙ




অনুবাদ:    নিজের নিকটতম আত্নীয়-পরিজনদেরকে ভয় দেখাও




(26:215)

وَ اخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَۚ




অনুবাদ:    এবং মু’মিনদের মধ্য থেকে যারা তোমার অনুসরণ করে তাদের সাথে বিনম্র ব্যবহার করো।




(26:216)

فَاِنْ عَصَوْكَ فَقُلْ اِنِّیْ بَرِیْٓءٌ مِّمَّا تَعْمَلُوْنَۚ




অনুবাদ:    কিন্তু যদি তারা তোমার নাফরমানী করে তাহলে তাদেরকে বলে দাও, তোমরা যা কিছু করো আমি তা থেকে দায়মুক্ত।




(26:217)

وَ تَوَكَّلْ عَلَى الْعَزِیْزِ الرَّحِیْمِۙ




অনুবাদ:    আর সেই পরাক্রান্ত ও দয়াময়ের উপর নির্ভর করো




(26:218)

الَّذِیْ یَرٰىكَ حِیْنَ تَقُوْمُۙ




অনুবাদ:    যিনি তোমাকে দেখতে থাকেন যখন তুমি ওঠো




(26:219)

وَ تَقَلُّبَكَ فِی السّٰجِدِیْنَ




অনুবাদ:    এবং সিজ্‌দাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা ও নড়া-চড়ার প্রতি দৃষ্টি রাখেন।




(26:220)

اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ




অনুবাদ:    তিনি সব কিছুই শোনেন ও জানেন।




(26:221)

هَلْ اُنَبِّئُكُمْ عَلٰى مَنْ تَنَزَّلُ الشَّیٰطِیْنُؕ




অনুবাদ:    হে লোকেরা! আমি তোমাদের জানাবো শয়তানরা কার ওপর অবতীর্ণ হয়?




(26:222)

تَنَزَّلُ عَلٰى كُلِّ اَفَّاكٍ اَثِیْمٍۙ




অনুবাদ:    তারা তো প্রত্যেক জালিয়াত বদকারের উপর অবতীর্ণ হয়।




(26:223)

یُّلْقُوْنَ السَّمْعَ وَ اَكْثَرُهُمْ كٰذِبُوْنَؕ




অনুবাদ:    শোনা কথা কানে ঢুকিয়ে দেয় এবং এর বেশির ভাগই হয় মিথ্যা।




(26:224)

وَ الشُّعَرَآءُ یَتَّبِعُهُمُ الْغَاوٗنَؕ




অনুবাদ:    আর কবিরা! তাদের পেছনে চলে পথভ্রান্ত যারা।




(26:225)

اَلَمْ تَرَ اَنَّهُمْ فِیْ كُلِّ وَادٍ یَّهِیْمُوْنَۙ




অনুবাদ:    তুমি কি দেখো না তারা উপত্যকায় উপত্যকায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায়




(26:226)

وَ اَنَّهُمْ یَقُوْلُوْنَ مَا لَا یَفْعَلُوْنَۙ




অনুবাদ:    এবং এমনসব কথা বলে যা তারা করে না?




(26:227)

اِلَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ ذَكَرُوا اللّٰهَ كَثِیْرًا وَّ انْتَصَرُوْا مِنْۢ بَعْدِ مَا ظُلِمُوْا١ؕ وَ سَیَعْلَمُ الَّذِیْنَ ظَلَمُوْۤا اَیَّ مُنْقَلَبٍ یَّنْقَلِبُوْنَ۠




অনুবাদ:    তারা ছাড়া যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরন করে আর তাদের প্রতি জুলুম করা হলে শুধুমাত্র প্রতিশোধ নেয়। ---আর জুলুমকারীরা শীঘ্রই জানবে তাদের পরিণাম কি!


২৫ ফুরকান

  ২৫-ফুরকান



(25:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(25:1)

تَبٰرَكَ الَّذِیْ نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلٰى عَبْدِهٖ لِیَكُوْنَ لِلْعٰلَمِیْنَ نَذِیْرَاۙ




অনুবাদ:    বড়ই বরকত সম্পন্ন তিনি যিনি এ ফুরকান তাঁর বান্দার ওপর নাযিল করেছেন যাতে সে সারা বিশ্ববাসীর জন্য সতর্ককারী হয়।




(25:2)

اِ۟لَّذِیْ لَهٗ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ لَمْ یَتَّخِذْ وَلَدًا وَّ لَمْ یَكُنْ لَّهٗ شَرِیْكٌ فِی الْمُلْكِ وَ خَلَقَ كُلَّ شَیْءٍ فَقَدَّرَهٗ تَقْدِیْرًا




অনুবাদ:    যিনি পৃথিবী ও আকাশের রাজত্বের মালিক, যিনি কাউকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেননি, যাঁর সাথে রাজত্বে কেউ শরীক নেই, যিনি প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টি করেছেন তারপর তার একটি তাকদীর নির্ধারিত করে দিয়েছেন।




(25:3)

وَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهٖۤ اٰلِهَةً لَّا یَخْلُقُوْنَ شَیْئًا وَّ هُمْ یُخْلَقُوْنَ وَ لَا یَمْلِكُوْنَ لِاَنْفُسِهِمْ ضَرًّا وَّ لَا نَفْعًا وَّ لَا یَمْلِكُوْنَ مَوْتًا وَّ لَا حَیٰوةً وَّ لَا نُشُوْرًا




অনুবাদ:    লোকেরা তাঁকে বাদ দিয়ে এমন সব উপাস্য তৈরি করে নিয়েছে যারা কোন জিনিস সৃষ্টি করে না বরং নিজেরাই সৃষ্ট, যারা নিজেদের জন্যও কোন উপকার বা অপকার করার ক্ষমতা রাখে না, যারা না জীবন-মৃত্যু দান করতে পারে আর না মৃতদেরকে আবার জীবিত করতে পারে।




(25:4)

وَ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اِنْ هٰذَاۤ اِلَّاۤ اِفْكُ اِ۟فْتَرٰىهُ وَ اَعَانَهٗ عَلَیْهِ قَوْمٌ اٰخَرُوْنَ١ۛۚ فَقَدْ جَآءُوْ ظُلْمًا وَّ زُوْرًاۚۛ




অনুবাদ:    যারা নবীর কথা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে তারা বলে, এ ফুরকান একটি মনগড়া জিনিস, যাকে এ ব্যক্তি নিজেই তৈরি করেছে এবং অপর কিছু লোক তার এ কাজে তাকে সাহায্য করেছে। বড়ই জুলুম ও ডাহা মিথ্যায় তারা এসে পৌঁছেছে।




(25:5)

وَ قَالُوْۤا اَسَاطِیْرُ الْاَوَّلِیْنَ اكْتَتَبَهَا فَهِیَ تُمْلٰى عَلَیْهِ بُكْرَةً وَّ اَصِیْلًا




অনুবাদ:    বলে, এসব পুরাতন লোকদের লেখা জিনিস- যেগুলো এ ব্যক্তি লিখিয়ে নিয়েছে এবং তা তাকে সকাল-সাঁঝে শুনানো হয়।




(25:6)

قُلْ اَنْزَلَهُ الَّذِیْ یَعْلَمُ السِّرَّ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! বলো, “একে নাযিল করেছেন তিনিই যিনি পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর রহস্য জানেন।” আসলে তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়ার্দ্র।




(25:7)

وَ قَالُوْا مَالِ هٰذَا الرَّسُوْلِ یَاْكُلُ الطَّعَامَ وَ یَمْشِیْ فِی الْاَسْوَاقِ١ؕ لَوْ لَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِ مَلَكٌ فَیَكُوْنَ مَعَهٗ نَذِیْرًاۙ




অনুবাদ:    তার বলে, “এ কেমন রসূল, যে খাবার খায় এবং হাটে বাজারে ঘুরে বেড়ায়? কেন তার কাছে কোন ফেরেশতা পাঠানো হয়নি, যে তার সাথে থাকতো এবং (অস্বীকারকারীদেরকে) ধমক দিতো?




(25:8)

اَوْ یُلْقٰۤى اِلَیْهِ كَنْزٌ اَوْ تَكُوْنُ لَهٗ جَنَّةٌ یَّاْكُلُ مِنْهَا١ؕ وَ قَالَ الظّٰلِمُوْنَ اِنْ تَتَّبِعُوْنَ اِلَّا رَجُلًا مَّسْحُوْرًا




অনুবাদ:    অথবা আর কিছু না হলেও তাঁর জন্য অন্তত কিছু ধন-সম্পদ অবতীর্ণ করা হতো অথবা তাঁর কাছে থাকতো অন্তত কোন বাগান, যা থেকে সে (নিশ্চিন্তে) রুজি সংগ্রহ করতো?” আর জালেমরা বলে, “তোমরা তো একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছো।”




(25:9)

اُنْظُرْ كَیْفَ ضَرَبُوْا لَكَ الْاَمْثَالَ فَضَلُّوْا فَلَا یَسْتَطِیْعُوْنَ سَبِیْلًا۠




অনুবাদ:    দেখো, কেমন সব উদ্ভট ধরনের যুক্তি তারা তোমার সামনে খাড়া করেছে, তারা এমন বিভ্রান্ত হয়েছে যে, কোন কাজের কথাই তাদের মাথায় আসছে না।




(25:10)

تَبٰرَكَ الَّذِیْۤ اِنْ شَآءَ جَعَلَ لَكَ خَیْرًا مِّنْ ذٰلِكَ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ١ۙ وَ یَجْعَلْ لَّكَ قُصُوْرًا




অনুবাদ:    বড়ই বরকত সম্পন্ন তিনি যিনি চাইলে তাঁর নির্ধারিত জিনিস থেকে অনেক বেশী ও উৎকৃষ্টতর জিনিস তোমাকে দিতে পারেন, (একটি নয়) অনেকগুলো বাগান যেগুলোর পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বড় বড় প্রাসাদ।




(25:11)

بَلْ كَذَّبُوْا بِالسَّاعَةِ١۫ وَ اَعْتَدْنَا لِمَنْ كَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِیْرًاۚ




অনুবাদ:    আসল কথা হচ্ছে, এরা “সে সময়টিকে” মিথ্যা বলেছে এবং যে সে সময়কে মিথ্যা বলে তার জন্য আমি জ্বলন্ত আগুন তৈরি করে রেখেছি।




(25:12)

اِذَا رَاَتْهُمْ مِّنْ مَّكَانٍۭ بَعِیْدٍ سَمِعُوْا لَهَا تَغَیُّظًا وَّ زَفِیْرًا




অনুবাদ:    আগুন যখন দূর থেকে এদের দেখবে তখন এরা তার ক্রুদ্ধ ও উত্তেজিত চিৎকার শুনতে পাবে।




(25:13)

وَ اِذَاۤ اُلْقُوْا مِنْهَا مَكَانًا ضَیِّقًا مُّقَرَّنِیْنَ دَعَوْا هُنَالِكَ ثُبُوْرًاؕ




অনুবাদ:    আর যখন এরা শৃংখলিত অবস্থায় তার মধ্যে একটি সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষিপ্ত হবে তখন নিজেদের মৃত্যুকে ডাকতে থাকবে।




(25:14)

لَا تَدْعُوا الْیَوْمَ ثُبُوْرًا وَّاحِدًا وَّ ادْعُوْا ثُبُوْرًا كَثِیْرًا




অনুবাদ:    (তখন তাদের বলা হবে) আজ একটি মৃত্যুকে নয় বরং বহু মৃত্যুকে ডাকো।




(25:15)

قُلْ اَذٰلِكَ خَیْرٌ اَمْ جَنَّةُ الْخُلْدِ الَّتِیْ وُعِدَ الْمُتَّقُوْنَ١ؕ كَانَتْ لَهُمْ جَزَآءً وَّ مَصِیْرًا




অনুবাদ:    এদের বলো, এ পরিণাম ভালো অথবা সেই চিরন্তন জান্নাত যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছ মুত্তাকীদেরকে? সেটি হবে তাদের কর্মফল এবং তাদের সফরের শেষ মঞ্জিল।




(25:16)

لَهُمْ فِیْهَا مَا یَشَآءُوْنَ خٰلِدِیْنَ١ؕ كَانَ عَلٰى رَبِّكَ وَعْدًا مَّسْئُوْلًا




অনুবাদ:    সেখানে তাদের প্রত্যেকটি ইচ্ছা পূর্ণ হবে। তার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল। তা প্রদান করা হবে তোমার রবের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত একটি অবশ্য পালনীয় প্রতিশ্রুতি।




(25:17)

وَ یَوْمَ یَحْشُرُهُمْ وَ مَا یَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ فَیَقُوْلُ ءَاَنْتُمْ اَضْلَلْتُمْ عِبَادِیْ هٰۤؤُلَآءِ اَمْ هُمْ ضَلُّوا السَّبِیْلَؕ




অনুবাদ:    আর সেদিনই (তোমার রব) তাদেরও ঘিরে আনবেন এবং তাদের উপাস্যদেরও আল্লাহকে বাদ দিয়ে আজ তারা যাদের পূজা করছে। তারপর তিনি তাদের জিজ্ঞেস করবেন, “তোমরা কি আমার এ বান্দাদের গোমরাহ করেছিলে? অথবা এরা নিজেরাই সহজ সরল সত্য পথ থেকে বিচ্যূত হয়ে পড়েছিল?”




(25:18)

قَالُوْا سُبْحٰنَكَ مَا كَانَ یَنْۢبَغِیْ لَنَاۤ اَنْ نَّتَّخِذَ مِنْ دُوْنِكَ مِنْ اَوْلِیَآءَ وَ لٰكِنْ مَّتَّعْتَهُمْ وَ اٰبَآءَهُمْ حَتّٰى نَسُوا الذِّكْرَ١ۚ وَ كَانُوْا قَوْمًۢا بُوْرًا




অনুবাদ:    তারা বলবে, “পাক-পবিত্র আপনার সত্তা! আপনাকে ছাড়া অন্য কাউকে আমাদের প্রভুরূপে গ্রহণ করার ক্ষমতাও তো আমাদের ছিল না কিন্তু আপনি এদের এবং এদের বাপ-দাদাদের খুব বেশী জীবনোপকরণ দিয়েছেন, এমনকি এরা শিক্ষা ভুলে গিয়েছে এবং দুর্ভাগ্যপীড়িত হয়েছে।




(25:19)

فَقَدْ كَذَّبُوْكُمْ بِمَا تَقُوْلُوْنَ١ۙ فَمَا تَسْتَطِیْعُوْنَ صَرْفًا وَّ لَا نَصْرًا١ۚ وَ مَنْ یَّظْلِمْ مِّنْكُمْ نُذِقْهُ عَذَابًا كَبِیْرًا




অনুবাদ:    এভাবে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে তারা (তোমাদের উপাস্যরা) তোমাদের কথাগুলোকে যা আজ তোমরা বলছো, তারপর না তোমরা নিজেদের দুর্ভাগ্যকে ঠেকাতে পারবে, না পারবে কোথাও থেকে সাহায্য লাভ করতে এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে-ই জুলুম করবে তাকে আমি কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো।




(25:20)

وَ مَاۤ اَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِیْنَ اِلَّاۤ اِنَّهُمْ لَیَاْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَ یَمْشُوْنَ فِی الْاَسْوَاقِ١ؕ وَ جَعَلْنَا بَعْضَكُمْ لِبَعْضٍ فِتْنَةً١ؕ اَتَصْبِرُوْنَ١ۚ وَ كَانَ رَبُّكَ بَصِیْرًا۠




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তোমার পূর্বে যে রসূলই আমি পাঠিয়েছি তারা সবাই আহার করতো ও বাজারে চলাফেরা করতো। আসলে আমি তোমাদের পরস্পরকে পরস্পরের জন্য পরীক্ষার মাধ্যমে পরিণত করেছি। তোমরা কি সবর করবে? তোমাদের রব সবকিছু দেখেন।




(25:21)

وَ قَالَ الَّذِیْنَ لَا یَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا لَوْ لَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْنَا الْمَلٰٓئِكَةُ اَوْ نَرٰى رَبَّنَا١ؕ لَقَدِ اسْتَكْبَرُوْا فِیْۤ اَنْفُسِهِمْ وَ عَتَوْ عُتُوًّا كَبِیْرًا




অনুবাদ:    যারা আমার সামনে হাজির হবার আশা করে না তারা বলে, “কেন আমাদের কাছে ফেরেশতা পাঠানো হয় না? অথবা আমরা আমাদের রবকে দেখি না কেন? বড়ই অহংকার করে তারা নিজেদের মনে মনে এবং সীমা অতিক্রম করে গেছে তারা অবাধ্যতায়।




(25:22)

یَوْمَ یَرَوْنَ الْمَلٰٓئِكَةَ لَا بُشْرٰى یَوْمَئِذٍ لِّلْمُجْرِمِیْنَ وَ یَقُوْلُوْنَ حِجْرًا مَّحْجُوْرًا




অনুবাদ:    যেদিন তারা ফেরেশতাদের দেখবে সেটা অপরাধীদের জন্য কোন সুসংবাদের দিন হবে না। চিৎকার করে উঠবে তারা, “হে আল্লাহ! বাচাও, বাচাও”




(25:23)

وَ قَدِمْنَاۤ اِلٰى مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَآءً مَّنْثُوْرًا




অনুবাদ:    এবং তাদের সমস্ত কৃতকর্ম নিয়ে আমি ধূলোর মতো উড়িয়ে দেবো।




(25:24)

اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ یَوْمَئِذٍ خَیْرٌ مُّسْتَقَرًّا وَّ اَحْسَنُ مَقِیْلًا




অনুবাদ:    সেদিন যারা জান্নাতের অধিকারী হবে তারাই উৎকৃষ্ট স্থানে অবস্থান করবে এবং দুপুর কাটাবার জন্য চমৎকার জায়গা পাবে।




(25:25)

وَ یَوْمَ تَشَقَّقُ السَّمَآءُ بِالْغَمَامِ وَ نُزِّلَ الْمَلٰٓئِكَةُ تَنْزِیْلًا




অনুবাদ:    আকাশ ফুঁড়ে একটি মেঘমালার সেদিন উদয় হবে এবং ফেরেশতাদের দলে দলে নামিয়ে দেয়া হবে।




(25:26)

اَلْمُلْكُ یَوْمَئِذِ اِ۟لْحَقُّ لِلرَّحْمٰنِ١ؕ وَ كَانَ یَوْمًا عَلَى الْكٰفِرِیْنَ عَسِیْرًا




অনুবাদ:    সেদিন প্রকৃত রাজত্ব হবে শুধুমাত্র দয়াময়ের এবং সেটি হবে অস্বীকারকারীদের জন্য বড়ই কঠিন দিন।




(25:27)

وَ یَوْمَ یَعَضُّ الظَّالِمُ عَلٰى یَدَیْهِ یَقُوْلُ یٰلَیْتَنِی اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُوْلِ سَبِیْلًا




অনুবাদ:    জালেমরা সেদিন নিজেদের হাত কামড়াতে থাকবে এবং বলতে থাকবে, “হায়! যদি আমি রসুলের সহযোগী হতাম।




(25:28)

یٰوَیْلَتٰى لَیْتَنِیْ لَمْ اَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِیْلًا




অনুবাদ:    হায়! আমার দুর্ভাগ্য, হায়! যদি আমি অমুক লোককে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করতাম।




(25:29)

لَقَدْ اَضَلَّنِیْ عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ اِذْ جَآءَنِیْ١ؕ وَ كَانَ الشَّیْطٰنُ لِلْاِنْسَانِ خَذُوْلًا




অনুবাদ:    তার প্ররোচনার কারণে আমার কাছে আসা উপদেশ আমি মানিনি। মানুষের জন্য শয়তান বড়ই বিশ্বাসঘাতক প্রমাণিত হয়েছে।”




(25:30)

وَ قَالَ الرَّسُوْلُ یٰرَبِّ اِنَّ قَوْمِی اتَّخَذُوْا هٰذَا الْقُرْاٰنَ مَهْجُوْرًا




অনুবাদ:    আর রসূল বলবে, “হে আমার রব! আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা এ কুরআনকে হাসি-ঠাট্টার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিল।”




(25:31)

وَ كَذٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِیٍّ عَدُوًّا مِّنَ الْمُجْرِمِیْنَ١ؕ وَ كَفٰى بِرَبِّكَ هَادِیًا وَّ نَصِیْرًا




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! আমিতো এভাবে অপরাধীদেরকে প্রত্যেক নবীর শত্রুতে পরিণত করেছি এবং তোমার জন্য তোমার রবই পথ দেখানোর ও সাহায্য দানের জন্য যথেষ্ট।




(25:32)

وَ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لَوْ لَا نُزِّلَ عَلَیْهِ الْقُرْاٰنُ جُمْلَةً وَّاحِدَةً١ۛۚ كَذٰلِكَ١ۛۚ لِنُثَبِّتَ بِهٖ فُؤَادَكَ وَ رَتَّلْنٰهُ تَرْتِیْلًا




অনুবাদ:    অস্বীকারকারীরা বলে, “এ ব্যক্তির কাছে সমগ্র কুরআন একই সাথে নাযিল করা হলো না কেন?” ---হ্যাঁ, এমন করা হয়েছে এজন্য, যাতে আমি একে ভালোভাবে তোমার মনে গেঁথে দিতে থাকি এবং (এ উদ্দেশ্যে) একে একটি বিশেষ ক্রমধারা অনুযায়ী আলাদা আলাদা অংশে সাজিয়ে দিয়েছি।




(25:33)

وَ لَا یَاْتُوْنَكَ بِمَثَلٍ اِلَّا جِئْنٰكَ بِالْحَقِّ وَ اَحْسَنَ تَفْسِیْرًاؕ




অনুবাদ:    আর (এর মধ্যে এ কল্যাণকর উদ্দেশ্যও রয়েছে যে) যখনই তারা তোমার সামনে কোন অভিনব কথা (অথবা অদ্ভূত ধরনের প্রশ্ন) নিয়ে এসেছে তার সঠিক জবাব যথাসময়ে আমি তোমাকে দিয়েছি এবং সর্বোত্তম পদ্ধতিতে বক্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছি।




(25:34)

اَلَّذِیْنَ یُحْشَرُوْنَ عَلٰى وُجُوْهِهِمْ اِلٰى جَهَنَّمَ١ۙ اُولٰٓئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا وَّ اَضَلُّ سَبِیْلًا۠




অনুবাদ:    ---যাদেরকে উপুড় করে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়া হবে তাদের অবস্থান বড়ই খারাপ এবং তাদের পথ সীমাহীন ভ্রান্তিতে পরিপূর্ণ।




(25:35)

وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسَى الْكِتٰبَ وَ جَعَلْنَا مَعَهٗۤ اَخَاهُ هٰرُوْنَ وَزِیْرًاۚۖ




অনুবাদ:    আমি মুসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তাঁর সাথে তাঁর ভাই হারুনকে সাহায্যকারী হিসেবে লাগিয়েছিলাম




(25:36)

فَقُلْنَا اذْهَبَاۤ اِلَى الْقَوْمِ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا١ؕ فَدَمَّرْنٰهُمْ تَدْمِیْرًاؕ




অনুবাদ:    আর তাদের বলেছিলাম, যাও সেই সম্প্রদায়ের কাছে যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা বলেছে। শেষ পর্যন্ত তাদের আমি ধ্বংস করে দিলাম।




(25:37)

وَ قَوْمَ نُوْحٍ لَّمَّا كَذَّبُوا الرُّسُلَ اَغْرَقْنٰهُمْ وَ جَعَلْنٰهُمْ لِلنَّاسِ اٰیَةً١ؕ وَ اَعْتَدْنَا لِلظّٰلِمِیْنَ عَذَابًا اَلِیْمًاۚۖ




অনুবাদ:    একই অবস্থা হলো নূহের সম্প্রদায়েরও যখন তারা রসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করলো, আমি তাদের ডুবিয়ে দিলাম এবং সারা দুনিয়ার লোকদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয়ে পরিণত করলাম, আর এ জালেমদের জন্য আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ঠিক করে রেখেছি।




(25:38)

وَّ عَادًا وَّ ثَمُوْدَاۡ وَ اَصْحٰبَ الرَّسِّ وَ قُرُوْنًۢا بَیْنَ ذٰلِكَ كَثِیْرًا




অনুবাদ:    এভাবে আদ ও সামূদ এবং আসহাবুর রস্ ও মাঝখানের শতাব্দীগুলোর বহু লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।




(25:39)

وَ كُلًّا ضَرَبْنَا لَهُ الْاَمْثَالَ١٘ وَ كُلًّا تَبَّرْنَا تَتْبِیْرًا




অনুবাদ:    তাদের প্রত্যেককে আমি (পূর্বে ধ্বংস প্রাপ্তদের) দৃষ্টান্ত দিয়ে দিয়ে বুঝিয়েছি এবং শেষ পর্যন্ত প্রত্যেককে ধ্বংস করে দিয়েছি।




(25:40)

وَ لَقَدْ اَتَوْا عَلَى الْقَرْیَةِ الَّتِیْۤ اُمْطِرَتْ مَطَرَ السَّوْءِ١ؕ اَفَلَمْ یَكُوْنُوْا یَرَوْنَهَا١ۚ بَلْ كَانُوْا لَا یَرْجُوْنَ نُشُوْرًا




অনুবাদ:    আর সেই জনপদের ওপর দিয়ে তো তারা যাতায়াত করেছে যার ওপর নিকৃষ্টতম বৃষ্টি বর্ষণ করা হয়েছিল। তারা কি তার অবস্থা দেখে থাকেনি? কিন্তু তারা মৃত্যুর পরের জীবনের আশাই করে না।




(25:41)

وَ اِذَا رَاَوْكَ اِنْ یَّتَّخِذُوْنَكَ اِلَّا هُزُوًا١ؕ اَهٰذَا الَّذِیْ بَعَثَ اللّٰهُ رَسُوْلًا




অনুবাদ:    তারা যখন তোমাকে দেখে, তোমাকে বিদ্রূপের পাত্রে পরিণত করে। (বলে) , “এ লোককে আল্লাহ‌ রসূল করে পাঠিয়েছেন?




(25:42)

اِنْ كَادَ لَیُضِلُّنَا عَنْ اٰلِهَتِنَا لَوْ لَاۤ اَنْ صَبَرْنَا عَلَیْهَا١ؕ وَ سَوْفَ یَعْلَمُوْنَ حِیْنَ یَرَوْنَ الْعَذَابَ مَنْ اَضَلُّ سَبِیْلًا




অনুবাদ:    এতো আমাদের পথভ্রষ্ট করে নিজেদের দেবতাদের থেকেই সরিয়ে দিতো যদি না আমরা তাদের প্রতি অটল বিশ্বাসী হয়ে থাকতাম। বেশ, সে সময় দূরে নয় যখন শাস্তি দেখে তারা নিজেরাই জানবে ভ্রষ্টতায় কে দূরে চলে গিয়েছিল।




(25:43)

اَرَءَیْتَ مَنِ اتَّخَذَ اِلٰهَهٗ هَوٰىهُ١ؕ اَفَاَنْتَ تَكُوْنُ عَلَیْهِ وَكِیْلًاۙ




অনুবাদ:    কখনো কি তুমি সেই ব্যক্তির অবস্থা ভেবে দেখেছো, যে তার নিজের প্রবৃত্তির কামনাকে প্রভু রূপে গ্রহণ করেছে? তুমি কি এহেন ব্যক্তিকে সঠিক পথে নিয়ে আসার দায়িত্ব নিতে পার?




(25:44)

اَمْ تَحْسَبُ اَنَّ اَكْثَرَهُمْ یَسْمَعُوْنَ اَوْ یَعْقِلُوْنَ١ؕ اِنْ هُمْ اِلَّا كَالْاَنْعَامِ بَلْ هُمْ اَضَلُّ سَبِیْلًا۠




অনুবাদ:    তুমি কি মনে করো তাদের অধিকাংশ লোক শোনে ও বোঝে? তারা পশুর মতো বরং তারও অধম।




(25:45)

اَلَمْ تَرَ اِلٰى رَبِّكَ كَیْفَ مَدَّ الظِّلَّ١ۚ وَ لَوْ شَآءَ لَجَعَلَهٗ سَاكِنًا١ۚ ثُمَّ جَعَلْنَا الشَّمْسَ عَلَیْهِ دَلِیْلًاۙ




অনুবাদ:    তুমি কি দেখ না কিভাবে তোমার রব ছায়া বিস্তার করেন? তিনি চাইলে একে চিরন্তন ছায়ায় পরিণত করতেন। আমি সূর্যকে করেছি তার পথ-নির্দেশক।




(25:46)

ثُمَّ قَبَضْنٰهُ اِلَیْنَا قَبْضًا یَّسِیْرًا




অনুবাদ:    তারপর (যতই সূর্য উঠতে থাকে) আমি এ ছায়াকে ধীরে ধীরে নিজের দিকে গুটিয়ে নিতে থাকি।




(25:47)

وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ لَكُمُ الَّیْلَ لِبَاسًا وَّ النَّوْمَ سُبَاتًا وَّ جَعَلَ النَّهَارَ نُشُوْرًا




অনুবাদ:    আর তিনিই রাতকে তোমাদের জন্য পোশাক, ঘুমকে মৃত্যুর শান্তি এবং দিনকে জীবন্ত হয়ে উঠার সময়ে পরিণত করেছেন।




(25:48)

وَ هُوَ الَّذِیْۤ اَرْسَلَ الرِّیٰحَ بُشْرًۢا بَیْنَ یَدَیْ رَحْمَتِهٖ١ۚ وَ اَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً طَهُوْرًاۙ




অনুবাদ:    আর নিজের রহমতের আগেভাগে বাতাসকে সুসংবাদদাতারুপে পাঠান। তারপর আকাশ থেকে বর্ষণ করেন বিশুদ্ধ পানি




(25:49)

لِّنُحْیَِۧ بِهٖ بَلْدَةً مَّیْتًا وَّ نُسْقِیَهٗ مِمَّا خَلَقْنَاۤ اَنْعَامًا وَّ اَنَاسِیَّ كَثِیْرًا




অনুবাদ:    একটি মৃত এলাকাকে তার মাধ্যমে জীবন দান করার এবং নিজের সৃষ্টির মধ্য থেকে বহুতর পশু ও মানুষকে তা পান করবার জন্য।




(25:50)

وَ لَقَدْ صَرَّفْنٰهُ بَیْنَهُمْ لِیَذَّكَّرُوْا١ۖ٘ فَاَبٰۤى اَكْثَرُ النَّاسِ اِلَّا كُفُوْرًا




অনুবাদ:    এ বিস্ময়কর কার্যকলাপ আমি বার বার তাদের সামনে আনি যাতে তারা কিছু শিক্ষা গ্রহণ করে কিন্তু অধিকাংশ লোক কুফরী ও অকৃতজ্ঞতা ছাড়া অন্য কোন মনোভাব পোষণ করতে অস্বীকার করে।




(25:51)

وَ لَوْ شِئْنَا لَبَعَثْنَا فِیْ كُلِّ قَرْیَةٍ نَّذِیْرًا٘ۖ




অনুবাদ:    যদি আমি চাইতাম তাহলে এক একটি জনবসতিতে এক একজন ভীতি প্রদর্শনকারী পাঠাতে পারতাম।”




(25:52)

فَلَا تُطِعِ الْكٰفِرِیْنَ وَ جَاهِدْهُمْ بِهٖ جِهَادًا كَبِیْرًا




অনুবাদ:    কাজেই হে নবী, কাফেরদের কথা কখনো মেনে নিয়ো না এবং এ কুরআন নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বৃহত্তম জিহাদ করো।




(25:53)

وَ هُوَ الَّذِیْ مَرَجَ الْبَحْرَیْنِ هٰذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ وَّ هٰذَا مِلْحٌ اُجَاجٌ١ۚ وَ جَعَلَ بَیْنَهُمَا بَرْزَخًا وَّ حِجْرًا مَّحْجُوْرًا




অনুবাদ:    আর তিনিই দুই সাগরকে মিলিত করেছেন। একটি সুস্বাদু ও মিষ্ট এবং অন্যটি লোনা ও খার। আর দু’য়ের মাঝে একটি অন্তরাল রয়েছে, একটি বাঁধা তাদের একাকার হবার পথে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে রেখেছে।




(25:54)

وَ هُوَ الَّذِیْ خَلَقَ مِنَ الْمَآءِ بَشَرًا فَجَعَلَهٗ نَسَبًا وَّ صِهْرًا١ؕ وَ كَانَ رَبُّكَ قَدِیْرًا




অনুবাদ:    আর তিনিই পানি থেকে একটি মানুষ তৈরি করেছেন, আবার তার থেকে বংশীয় ও শ্বশুরালয়ের দু’টি আলাদা ধারা চালিয়েছেন। তোমার রব বড়ই শক্তি সম্পন্ন।




(25:55)

وَ یَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَا یَنْفَعُهُمْ وَ لَا یَضُرُّهُمْ١ؕ وَ كَانَ الْكَافِرُ عَلٰى رَبِّهٖ ظَهِیْرًا




অনুবাদ:    এক আল্লাহকে বাদ দিয়ে লোকেরা এমন সব সত্তার পূজা করছে যারা না তাদের উপকার করতে পারে, না অপকার। আবার অতিরিক্ত হচ্ছে এই যে, কাফের নিজের রবের মোকাবিলায় প্রত্যেক বিদ্রোহীর সাহায্যকারী হয়ে আছে।




(25:56)

وَ مَاۤ اَرْسَلْنٰكَ اِلَّا مُبَشِّرًا وَّ نَذِیْرًا




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ। তোমাকে তো আমি শুধুমাত্র একজন সুসংবাদ দানকারী ও সতর্ককারী করে পাঠিয়েছি।




(25:57)

قُلْ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ اِلَّا مَنْ شَآءَ اَنْ یَّتَّخِذَ اِلٰى رَبِّهٖ سَبِیْلًا




অনুবাদ:    এদের বলে দাও “এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না, যে চায় সে তার নিজের রবের পথ অবলম্বন করুক, এটিই আমার প্রতিদান। -(ক)




(25:58)

وَ تَوَكَّلْ عَلَى الْحَیِّ الَّذِیْ لَا یَمُوْتُ وَ سَبِّحْ بِحَمْدِهٖ١ؕ وَ كَفٰى بِهٖ بِذُنُوْبِ عِبَادِهٖ خَبِیْرَا٤ۚۛۙ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! ভরসা করো এমন আল্লাহর প্রতি যিনি জীবিত এবং কখনো মরবেন না। তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করো। নিজের বান্দাদের গোনাহের ব্যাপারে কেবল তাঁরই জানা যথেষ্ট




(25:59)

اِ۟لَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ وَ مَا بَیْنَهُمَا فِیْ سِتَّةِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ١ۛۚ اَلرَّحْمٰنُ فَسْئَلْ بِهٖ خَبِیْرًا




অনুবাদ:    তিনিই ছয় দিনে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং তাদের মাঝখানে যা কিছু আছে সব তৈরি করে রেখে দিয়েছেন, তারপর তিনিই (বিশ্ব-জাহানের সিংহাসন) আরশে সমাসীন হয়েছেন, তিনিই রহমান, যে জানে তাকে জিজ্ঞেস করো তাঁর অবস্থা সম্পর্কে।




(25:60)

وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمُ اسْجُدُوْا لِلرَّحْمٰنِ قَالُوْا وَ مَا الرَّحْمٰنُ١ۗ اَنَسْجُدُ لِمَا تَاْمُرُنَا وَ زَادَهُمْ نُفُوْرًا۠۩

সেজদা



অনুবাদ:    তাদেরকে যখন বলা হয়, এই রহমানকে সিজদাহ করো তখন তারা বলে, “রহমান কি? তুমি যার কথা বলবে তাকেই কি আমারা সিজদা করতে থাকবো?” এ উপদেশটি উল্টো তাদের ঘৃণা আরো বাড়িয়ে দেয়।




(25:61)

تَبٰرَكَ الَّذِیْ جَعَلَ فِی السَّمَآءِ بُرُوْجًا وَّ جَعَلَ فِیْهَا سِرٰجًا وَّ قَمَرًا مُّنِیْرًا




অনুবাদ:    অসীম বরকত সম্পন্ন তিনি যিনি আকাশে বুরুজ নির্মাণ করেছেন এবং তার মধ্যে একটি প্রদীপ ও একটি আলোকময় চাঁদ উজ্জ্বল করেছেন। ]




(25:62)

وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ اَرَادَ اَنْ یَّذَّكَّرَ اَوْ اَرَادَ شُكُوْرًا




অনুবাদ:    তিনিই রাত ও দিনকে পরস্পরের স্থলাভিষিক্ত করেছেন এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে শিক্ষা গ্রহণ করতে অথবা কৃতজ্ঞ হতে চায়।




(25:63)

وَ عِبَادُ الرَّحْمٰنِ الَّذِیْنَ یَمْشُوْنَ عَلَى الْاَرْضِ هَوْنًا وَّ اِذَا خَاطَبَهُمُ الْجٰهِلُوْنَ قَالُوْا سَلٰمًا




অনুবাদ:    রহমানের (আসল) বান্দা তারাই যারা পৃথিবীর বুকে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মূর্খরা তাদের সাথে কথা বলতে থাকলে বলে দেয়, তোমাদের সালাম।




(25:64)

وَ الَّذِیْنَ یَبِیْتُوْنَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَّ قِیَامًا




অনুবাদ:    তারা নিজেদের রবের সামনে সিজদায় অবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়ে দেয়। ]




(25:65)

وَ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ١ۖۗ اِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًاۗۖ




অনুবাদ:    তারা দোয়া করতে থাকেঃ “হে আমাদের রব! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদের বাঁচাও, তার আযাব তো সর্বনাশা।




(25:66)

اِنَّهَا سَآءَتْ مُسْتَقَرًّا وَّ مُقَامًا




অনুবাদ:    আশ্রয়স্থল ও আবাস হিসেবে তা বড়ই নিকৃষ্ট জায়গা।




(25:67)

وَ الَّذِیْنَ اِذَاۤ اَنْفَقُوْا لَمْ یُسْرِفُوْا وَ لَمْ یَقْتُرُوْا وَ كَانَ بَیْنَ ذٰلِكَ قَوَامًا




অনুবাদ:    তারা যখন ব্যয় করে তখন অযথা ব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না বরং উভয় প্রান্তিকের মাঝামাঝি তাদের ব্যয় ভারসাম্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে।




(25:68)

وَ الَّذِیْنَ لَا یَدْعُوْنَ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ وَ لَا یَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِیْ حَرَّمَ اللّٰهُ اِلَّا بِالْحَقِّ وَ لَا یَزْنُوْنَ١ۚ وَ مَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ یَلْقَ اَثَامًاۙ




অনুবাদ:    তারা আল্লাহ‌ ছাড়া আর কোন উপাস্যকে ডাকে না, আল্লাহ‌ যে প্রাণকে হারাম করেছেন কোন সঙ্গত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। এসব যে-ই করে সে তার গোনাহের শাস্তি ভোগ করবে।




(25:69)

یُّضٰعَفْ لَهُ الْعَذَابُ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ وَ یَخْلُدْ فِیْهٖ مُهَانًاۗۖ




অনুবাদ:    কিয়ামতের দিন তাকে উপর্যুপরি শাস্তি দেয়া হবে এবং সেখানেই সে পড়ে থাকবে চিরকাল লাঞ্ছিত অবস্থায়।




(25:70)

اِلَّا مَنْ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَاُولٰٓئِكَ یُبَدِّلُ اللّٰهُ سَیِّاٰتِهِمْ حَسَنٰتٍ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا




অনুবাদ:    তবে তারা ছাড়া যারা (ঐসব গোনাহের পর) তাওবা করেছে এবং ইমান এনে সৎকাজ করতে থেকেছে। এ ধরনের লোকদের অসৎ কাজগুলোকে আল্লাহ‌ সৎকাজের দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন এবং আল্লাহ‌ বড়ই ক্ষমাশীল ও মেহেরবান।




(25:71)

وَ مَنْ تَابَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَاِنَّهٗ یَتُوْبُ اِلَى اللّٰهِ مَتَابًا




অনুবাদ:    যে ব্যক্তি তাওবা করে সৎকাজের পথ অবলম্বন করে, সে তো আল্লাহর দিকে ফিরে আসার মতই ফিরে আসে।




(25:72)

وَ الَّذِیْنَ لَا یَشْهَدُوْنَ الزُّوْرَ١ۙ وَ اِذَا مَرُّوْا بِاللَّغْوِ مَرُّوْا كِرَامًا




অনুবাদ:    ---(আর রহমানের বান্দা হচ্ছে তারা) যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং কোন বাজে জিনিসের কাছ দিয়ে পথ অতিক্রম করতে থাকলে ভদ্রলোকের মত অতিক্রম করে যায়।




(25:73)

وَ الَّذِیْنَ اِذَا ذُكِّرُوْا بِاٰیٰتِ رَبِّهِمْ لَمْ یَخِرُّوْا عَلَیْهَا صُمًّا وَّ عُمْیَانًا




অনুবাদ:    তাদের যদি তাদের রবের আয়াত শুনিয়ে উপদেশ দেয়া হয় তাহলে তারা তার প্রতি অন্ধ বধির হয়ে থাকে না।




(25:74)

وَ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْیُنٍ وَّ اجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِیْنَ اِمَامًا




অনুবাদ:    তারা প্রার্থনা করে থাকে, “হে আমাদের রব! আমাদের নিজেদের স্ত্রীদের ও নিজেদের সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম।”




(25:75)

اُولٰٓئِكَ یُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوْا وَ یُلَقَّوْنَ فِیْهَا تَحِیَّةً وَّ سَلٰمًاۙ




অনুবাদ:    (এরাই নিজেদের সবরের ফল উন্নত মনজিলের আকারে পাবে। অভিবাদন ও সালাম সহকারে তাদের সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে।




(25:76)

خٰلِدِیْنَ فِیْهَا١ؕ حَسُنَتْ مُسْتَقَرًّا وَّ مُقَامًا




অনুবাদ:    তারা সেখানে থাকবে চিরকাল। কী চমৎকার সেই আশ্রয় এবং সেই আবাস!




(25:77)

قُلْ مَا یَعْبَؤُا بِكُمْ رَبِّیْ لَوْ لَا دُعَآؤُكُمْ١ۚ فَقَدْ كَذَّبْتُمْ فَسَوْفَ یَكُوْنُ لِزَامًا۠




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! লোকদের বলো, “আমার রবের তোমাদের কি প্রয়োজন, যদি তোমারা তাঁকে না ডাকো। এখন যে তোমরা মিথ্যা আরোপ করেছো, শিগগীর এমন শাস্তি পাবে যে, তার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব হবে না।”


১৭ বনি ইসরায়েল

  ১৭-বনী ইসরাঈল



(17:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(17:1)

سُبْحٰنَ الَّذِیْۤ اَسْرٰى بِعَبْدِهٖ لَیْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اِلَى الْمَسْجِدِ الْاَقْصَا الَّذِیْ بٰرَكْنَا حَوْلَهٗ لِنُرِیَهٗ مِنْ اٰیٰتِنَا١ؕ اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیْعُ الْبَصِیْرُ




অনুবাদ:    পবিত্র তিনি যিনি নিয়ে গেছেন এক রাতে নিজের বান্দাকে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আক্‌সা পর্যন্ত, যার পরিবেশকে তিনি বরকতময় করেছেন, যাতে তাকে নিজের কিছু নিদর্শন দেখান। আসলে তিনিই সবকিছুর শ্রোতা ও দ্রষ্টা।




(17:2)

وَ اٰتَیْنَا مُوْسَى الْكِتٰبَ وَ جَعَلْنٰهُ هُدًى لِّبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اَلَّا تَتَّخِذُوْا مِنْ دُوْنِیْ وَكِیْلًاؕ




অনুবাদ:    আমি ইতিপূর্বে মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তাঁকে বনী ইসরাঈলের জন্য পথনির্দেশনার মাধ্যম করেছিলাম এ তাগিদ সহকারে যে, আমাকে ছাড়া আর কাউকে নিজের অভিভাবক করো না।




(17:3)

ذُرِّیَّةَ مَنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوْحٍ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ عَبْدًا شَكُوْرًا




অনুবাদ:    তোমরা তাদের আওলাদ যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় উঠিয়েছিলাম এবং নূহ একজন কৃতজ্ঞ বান্দা ছিল।




(17:4)

وَ قَضَیْنَاۤ اِلٰى بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ فِی الْكِتٰبِ لَتُفْسِدُنَّ فِی الْاَرْضِ مَرَّتَیْنِ وَ لَتَعْلُنَّ عُلُوًّا كَبِیْرًا




অনুবাদ:    তারপর আমি নিজের কিতাবে বনী ইস্রাঈলকে এ মর্মে সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে, তোমরা দু’বার পৃথিবীতে বিরাট বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং ভীষণ বিদ্রোহাত্মক আচরণ করবে। ]




(17:5)

فَاِذَا جَآءَ وَعْدُ اُوْلٰىهُمَا بَعَثْنَا عَلَیْكُمْ عِبَادًا لَّنَاۤ اُولِیْ بَاْسٍ شَدِیْدٍ فَجَاسُوْا خِلٰلَ الدِّیَارِ وَ كَانَ وَعْدًا مَّفْعُوْلًا




অনুবাদ:    শেষ পর্যন্ত যখন এদের মধ্য থেকে প্রথম বিদ্রোহের সময়টি এলো তখন হে বনী ইসরাঈল! আমি তোমাদের মুকাবিলায় নিজের এমন একদল বান্দার আবির্ভাব ঘটালাম, যারা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তারা তোমাদের দেশে প্রবেশ করে সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এটি একটি প্রতিশ্রুতি ছিল, যা পূর্ণ হওয়াই ছিল অবধারিত।




(17:6)

ثُمَّ رَدَدْنَا لَكُمُ الْكَرَّةَ عَلَیْهِمْ وَ اَمْدَدْنٰكُمْ بِاَمْوَالٍ وَّ بَنِیْنَ وَ جَعَلْنٰكُمْ اَكْثَرَ نَفِیْرًا




অনুবাদ:    এরপর আমি তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় লাভের সুযোগ করে দিয়েছি এবং তোমাদেরকে সাহায্য করেছি অর্থ ও সন্তানের সাহায্যে আর তোমাদের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি।




(17:7)

اِنْ اَحْسَنْتُمْ اَحْسَنْتُمْ لِاَنْفُسِكُمْ١۫ وَ اِنْ اَسَاْتُمْ فَلَهَا١ؕ فَاِذَا جَآءَ وَعْدُ الْاٰخِرَةِ لِیَسُوْٓءٗا وُجُوْهَكُمْ وَ لِیَدْخُلُوا الْمَسْجِدَ كَمَا دَخَلُوْهُ اَوَّلَ مَرَّةٍ وَّ لِیُتَبِّرُوْا مَا عَلَوْا تَتْبِیْرًا




অনুবাদ:    দেখো, তোমরা ভাল কাজ করে থাকলে তা তোমাদের নিজেদের জন্যই ভাল ছিল আর খারাপ কাজ করে থাকলে তোমাদের নিজেদেরই জন্য তা খারাপ প্রমাণিত হবে। তারপর যখন পরবর্তী প্রতিশ্রুতির সময় এসেছে তখন আমি অন্য শত্রুদেরকে তোমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছি, যাতে তারা তোমাদের চেহারা বিকৃত করে দেয় এবং (বায়তুল মাক্দিসের) মসজিদে এমনভাবে ঢুকে পড়ে যেমন প্রথমবার শত্রুরা ঢুকে পড়েছিল আর যে জিনিসের ওপরই তাদের হাত পড়ে তাকে ধ্বংস করে রেখে দেয়।




(17:8)

عَسٰى رَبُّكُمْ اَنْ یَّرْحَمَكُمْ١ۚ وَ اِنْ عُدْتُّمْ عُدْنَا١ۘ وَ جَعَلْنَا جَهَنَّمَ لِلْكٰفِرِیْنَ حَصِیْرًا




অনুবাদ:    এখন তোমাদের রব তোমাদের প্রতি করুণা করতে পারেন। কিন্তু যদি তোমরা আবার নিজেদের আগের আচরণের পুনরাবৃত্তি করো তাহলে আমিও আবার আমার শাস্তির পুনরাবৃত্তি করবো। আর নিয়ামত অস্বীকারকারীদের জন্য আমি জাহান্নামকে কয়েদখানা বানিয়ে রেখেছি।




(17:9)

اِنَّ هٰذَا الْقُرْاٰنَ یَهْدِیْ لِلَّتِیْ هِیَ اَقْوَمُ وَ یُبَشِّرُ الْمُؤْمِنِیْنَ الَّذِیْنَ یَعْمَلُوْنَ الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَهُمْ اَجْرًا كَبِیْرًاۙ




অনুবাদ:    আসলে এ কুরআন এমন পথ দেখায় যা একেবারেই সোজা। যারা একে নিয়ে ভাল কাজ করতে থাকে তাদেরকে সে সুখবর দেয় এ মর্মে যে, তাদের জন্য বিরাট প্রতিদান রয়েছে।




(17:10)

وَّ اَنَّ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ اَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا اَلِیْمًا۠




অনুবাদ:    আর যারা আখেরাত মানে না তাদেরকে এ সংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছি।




(17:11)

وَ یَدْعُ الْاِنْسَانُ بِالشَّرِّ دُعَآءَهٗ بِالْخَیْرِ١ؕ وَ كَانَ الْاِنْسَانُ عَجُوْلًا




অনুবাদ:    মানুষ অকল্যাণ কামনা করে সেভাবে--- যেভাবে কল্যাণ কামনা করা উচিত। মানুষ বড়ই দ্রুতকামী।




(17:12)

وَ جَعَلْنَا الَّیْلَ وَ النَّهَارَ اٰیَتَیْنِ فَمَحَوْنَاۤ اٰیَةَ الَّیْلِ وَ جَعَلْنَاۤ اٰیَةَ النَّهَارِ مُبْصِرَةً لِّتَبْتَغُوْا فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِیْنَ وَ الْحِسَابَ١ؕ وَ كُلَّ شَیْءٍ فَصَّلْنٰهُ تَفْصِیْلًا




অনুবাদ:    দেখো, আমি রাত ও দিনকে দু’টি নিদর্শন বানিয়েছি। রাতের নিদর্শনকে বানিয়েছি আলোহীন এবং দিনের নিদর্শনকে করেছি আলোকোজ্জ্বল, যাতে তোমরা তোমাদের রবের অনুগ্রহ তালাশ করতে পারো এবং মাস ও বছরের হিসেব জানতে সক্ষম হও। এভাবে আমি প্রত্যেকটি জিনিসকে আলাদাভাবে পৃথক করে রেখেছি।




(17:13)

وَ كُلَّ اِنْسَانٍ اَلْزَمْنٰهُ طٰٓئِرَهٗ فِیْ عُنُقِهٖ١ؕ وَ نُخْرِجُ لَهٗ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ كِتٰبًا یَّلْقٰىهُ مَنْشُوْرًا




অনুবাদ:    প্রত্যেক মানুষের ভাল-মন্দ কাজের নিদর্শন আমি তার গলায় ঝুলিয়ে রেখেছি এবং কিয়ামতের দিন তার জন্য বের করবো একটি লিখন, যাকে সে খোলা কিতাবের আকারে পাবে।




(17:14)

اِقْرَاْ كِتٰبَكَ١ؕ كَفٰى بِنَفْسِكَ الْیَوْمَ عَلَیْكَ حَسِیْبًاؕ




অনুবাদ:    পড়ো, নিজের আমলনামা, আজ নিজের হিসেব করার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট।




(17:15)

مَنِ اهْتَدٰى فَاِنَّمَا یَهْتَدِیْ لِنَفْسِهٖ١ۚ وَ مَنْ ضَلَّ فَاِنَّمَا یَضِلُّ عَلَیْهَا١ؕ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِّزْرَ اُخْرٰى١ؕ وَ مَا كُنَّا مُعَذِّبِیْنَ حَتّٰى نَبْعَثَ رَسُوْلًا




অনুবাদ:    যে ব্যক্তিই সৎপথ অবলম্বন করে, তার সৎপথ অবলম্বন তার নিজের জন্যই কল্যাণকর হয়। আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হয়, তার পথভ্রষ্টতার ধ্বংসকারিতা তার ওপরই বর্তায়। কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না। আর আমি (হক ও বাতিলের পার্থক্য বুঝাবার জন্য) একজন পয়গম্বর না পাঠিয়ে দেয়া পর্যন্ত কাউকে আযাব দেই না।




(17:16)

وَ اِذَاۤ اَرَدْنَاۤ اَنْ نُّهْلِكَ قَرْیَةً اَمَرْنَا مُتْرَفِیْهَا فَفَسَقُوْا فِیْهَا فَحَقَّ عَلَیْهَا الْقَوْلُ فَدَمَّرْنٰهَا تَدْمِیْرًا




অনুবাদ:    যখন আমি কোন জনবসতিকে ধ্বংস করার সংকল্প করি তখন তার সমৃদ্ধিশালী লোকদেরকে নির্দেশ দিয়ে থাকি, ফলে তারা সেখানে নাফরমানী করতে থাকে আর তখন আযাবের ফায়সালা সেই জনবসতির ওপর বলবত হয়ে যায় এবং আমি তাকে ধ্বংস করে দেই।




(17:17)

وَ كَمْ اَهْلَكْنَا مِنَ الْقُرُوْنِ مِنْۢ بَعْدِ نُوْحٍ١ؕ وَ كَفٰى بِرَبِّكَ بِذُنُوْبِ عِبَادِهٖ خَبِیْرًۢا بَصِیْرًا




অনুবাদ:    দেখো, কত মানব গোষ্ঠী নূহের পরে আমার হুকুমে ধ্বংস হয়ে গেছে। তোমার রব নিজের বান্দাদের গুনাহ সম্পর্কে পুরোপুরি জানেন এবং তিনি সবকিছু দেখছেন।




(17:18)

مَنْ كَانَ یُرِیْدُ الْعَاجِلَةَ عَجَّلْنَا لَهٗ فِیْهَا مَا نَشَآءُ لِمَنْ نُّرِیْدُ ثُمَّ جَعَلْنَا لَهٗ جَهَنَّمَ١ۚ یَصْلٰىهَا مَذْمُوْمًا مَّدْحُوْرًا




অনুবাদ:    যে কেউ আশু লাভের আকাঙ্ক্ষা করে, তাকে আমি এখানেই যা কিছু দিতে চাই দিয়ে দেই, তারপর তার ভাগে জাহান্নাম লিখে দেই, যার উত্তাপ সে ভুগবে নিন্দিত ও ধিকৃত হয়ে।




(17:19)

وَ مَنْ اَرَادَ الْاٰخِرَةَ وَ سَعٰى لَهَا سَعْیَهَا وَ هُوَ مُؤْمِنٌ فَاُولٰٓئِكَ كَانَ سَعْیُهُمْ مَّشْكُوْرًا




অনুবাদ:    আর যে ব্যক্তি আখেরাতের প্রত্যাশী হয় এবং সেজন্য প্রচেষ্টা চালায়, যেমন সেজন্য প্রচেষ্টা চালানো উচিত এবং সে হয় মুমিন, এক্ষেত্রে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির প্রচেষ্টার যথোচিত মর্যাদা দেয়া হবে।




(17:20)

كُلًّا نُّمِدُّ هٰۤؤُلَآءِ وَ هٰۤؤُلَآءِ مِنْ عَطَآءِ رَبِّكَ١ؕ وَ مَا كَانَ عَطَآءُ رَبِّكَ مَحْظُوْرًا




অনুবাদ:    এদেরকেও এবং ওদেরকেও, দু’দলকেই আমি (দুনিয়ায়) জীবন উপকরণ দিয়ে যাচ্ছি, এ হচ্ছে তোমার রবের দান এবং তোমার রবের দান রুখে দেবার কেউ নেই।




(17:21)

اُنْظُرْ كَیْفَ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلٰى بَعْضٍ١ؕ وَ لَلْاٰخِرَةُ اَكْبَرُ دَرَجٰتٍ وَّ اَكْبَرُ تَفْضِیْلًا




অনুবাদ:    কিন্তু দেখো, দুনিয়াতেই আমি একটি দলকে অন্য একটির ওপর কেমন শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে রেখেছি এবং আখেরাতে তার মর্যাদা আরো অনেক বেশী হবে এবং তার শ্রেষ্ঠত্বও আরো অধিক হবে।




(17:22)

لَا تَجْعَلْ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ فَتَقْعُدَ مَذْمُوْمًا مَّخْذُوْلًا۠




অনুবাদ:    আল্লাহর সাথে দ্বিতীয় কাউকে মাবুদে পরিণত করো না। অন্যথায় নিন্দিত ও অসহায়-বান্ধব হারা হয়ে পড়বে।




(17:23)

وَ قَضٰى رَبُّكَ اَلَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّاۤ اِیَّاهُ وَ بِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا١ؕ اِمَّا یَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ اَحَدُهُمَاۤ اَوْ كِلٰهُمَا فَلَا تَقُلْ لَّهُمَاۤ اُفٍّ وَّ لَا تَنْهَرْهُمَا وَ قُلْ لَّهُمَا قَوْلًا كَرِیْمًا




অনুবাদ:    তোমার রব ফায়সালা করে দিয়েছেনঃ (এক) তোমরা কারোর ইবাদাত করো না, একমাত্র তাঁরই ইবাদাত করো। (দুই) পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো। যদি তোমাদের কাছে তাদের কোন একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে “উহ্” পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো।




(17:24)

وَ اخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَ قُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّیٰنِیْ صَغِیْرًاؕ




অনুবাদ:    আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।




(17:25)

رَبُّكُمْ اَعْلَمُ بِمَا فِیْ نُفُوْسِكُمْ١ؕ اِنْ تَكُوْنُوْا صٰلِحِیْنَ فَاِنَّهٗ كَانَ لِلْاَوَّابِیْنَ غَفُوْرًا




অনুবাদ:    তোমাদের রব খুব ভালো করেই জানেন তোমাদের মনে কি আছে। যদি তোমরা সৎকর্মশীল হয়ে জীবন যাপন করো, তাহলে তিনি এমন লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল যারা নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে বন্দেগীর নীতি অবলম্বন করার দিকে ফিরে আসে।




(17:26)

وَ اٰتِ ذَا الْقُرْبٰى حَقَّهٗ وَ الْمِسْكِیْنَ وَ ابْنَ السَّبِیْلِ وَ لَا تُبَذِّرْ تَبْذِیْرًا




অনুবাদ:    (তিন) আত্মীয়কে তার অধিকার দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও তাদের অধিকার দাও। (চার) বাজে খরচ করো না।




(17:27)

اِنَّ الْمُبَذِّرِیْنَ كَانُوْۤا اِخْوَانَ الشَّیٰطِیْنِ١ؕ وَ كَانَ الشَّیْطٰنُ لِرَبِّهٖ كَفُوْرًا




অনুবাদ:    নিশ্চয়ই যারা বাজে খরচ করে তারা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার রবের প্রতি অকৃতজ্ঞ।




(17:28)

وَ اِمَّا تُعْرِضَنَّ عَنْهُمُ ابْتِغَآءَ رَحْمَةٍ مِّنْ رَّبِّكَ تَرْجُوْهَا فَقُلْ لَّهُمْ قَوْلًا مَّیْسُوْرًا




অনুবাদ:    (পাচ) যদি তাদের থেকে (অর্থাৎ অভাবী, আত্মীয়-স্বজন, মিসকীন ও মুসাফির) তোমাকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হয় এজন্য যে, এখনো তুমি প্রত্যাশিত রহমতের সন্ধান করে ফিরছো, তাহলে তাদেরকে নরম জবাব দাও।




(17:29)

وَ لَا تَجْعَلْ یَدَكَ مَغْلُوْلَةً اِلٰى عُنُقِكَ وَ لَا تَبْسُطْهَا كُلَّ الْبَسْطِ فَتَقْعُدَ مَلُوْمًا مَّحْسُوْرًا




অনুবাদ:    (ছয়) নিজের হাত গলায় বেঁধে রেখো না এবং তাকে একেবারে খোলাও ছেড়ে দিয়ো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও অক্ষম হয়ে যাবে।




(17:30)

اِنَّ رَبَّكَ یَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ یَقْدِرُ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ بِعِبَادِهٖ خَبِیْرًۢا بَصِیْرًا۠




অনুবাদ:    তোমার রব যার জন্য চান রিযিক প্রশস্ত করে দেন আবার যার জন্য চান সংকীর্ণ করে দেন। তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন এবং তাদেরকে দেখছেন।




(17:31)

وَ لَا تَقْتُلُوْۤا اَوْلَادَكُمْ خَشْیَةَ اِمْلَاقٍ١ؕ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَ اِیَّاكُمْ١ؕ اِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْاً كَبِیْرًا




অনুবাদ:    (সাত) দারিদ্রের আশঙ্কায় নিজেদের সন্তান হত্যা করো না। আমি তাদেরকেও রিযিক দেবো এবং তোমাদেরকেও। আসলে তাদেরকে হত্যা করা একটি মহাপাপ।




(17:32)

وَ لَا تَقْرَبُوا الزِّنٰۤى اِنَّهٗ كَانَ فَاحِشَةً١ؕ وَ سَآءَ سَبِیْلًا




অনুবাদ:    (আট) যিনার কাছেও যেয়ো না, ওটা অত্যন্ত খারাপ কাজ এবং খুবই জঘন্য পথ।




(17:33)

وَ لَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِیْ حَرَّمَ اللّٰهُ اِلَّا بِالْحَقِّ١ؕ وَ مَنْ قُتِلَ مَظْلُوْمًا فَقَدْ جَعَلْنَا لِوَلِیِّهٖ سُلْطٰنًا فَلَا یُسْرِفْ فِّی الْقَتْلِ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ مَنْصُوْرًا




অনুবাদ:    (নয়) আল্লাহ‌ যাকে হত্যা করা হারাম করে দিয়েছেন, সত্য ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করো না। আর যে ব্যক্তি মজলুম অবস্থায় নিহত হয়েছে তার অভিভাবককে আমি কিসাস দাবী করার অধিকার দান করেছি। কাজেই হত্যার ব্যাপারে তার সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়, তাকে সাহায্য করা হবে।




(17:34)

وَ لَا تَقْرَبُوْا مَالَ الْیَتِیْمِ اِلَّا بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ حَتّٰى یَبْلُغَ اَشُدَّهٗ١۪ وَ اَوْفُوْا بِالْعَهْدِ١ۚ اِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُوْلًا




অনুবাদ:    (দশ) ইয়াতীমের সম্পত্তির ধারে কাছে যেয়ো না, তবে হ্যাঁ সদুপায়ে, যে পর্যন্ত না সে বয়োপ্রাপ্ত হয়ে যায়। (এগার) প্রতিশ্রুতি পালন করো, অবশ্যই প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে।




(17:35)

وَ اَوْفُوا الْكَیْلَ اِذَا كِلْتُمْ وَ زِنُوْا بِالْقِسْطَاسِ الْمُسْتَقِیْمِ١ؕ ذٰلِكَ خَیْرٌ وَّ اَحْسَنُ تَاْوِیْلًا




অনুবাদ:    (বার) মেপে দেবার সময় পরিমাপ পাত্র ভরে দাও এবং ওজন করে দেবার সময় সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করো। এটিই ভাল পদ্ধতি এবং পরিণামের দিক দিয়েও এটিই উত্তম।




(17:36)

وَ لَا تَقْفُ مَا لَیْسَ لَكَ بِهٖ عِلْمٌ١ؕ اِنَّ السَّمْعَ وَ الْبَصَرَ وَ الْفُؤَادَ كُلُّ اُولٰٓئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُوْلًا




অনুবাদ:    (তের) এমন কোন জিনিসের পেছনে লেগে যেয়ো না যে সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই। নিশ্চিতভাবেই চোখ, কান ও দিল সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।




(17:37)

وَ لَا تَمْشِ فِی الْاَرْضِ مَرَحًا١ۚ اِنَّكَ لَنْ تَخْرِقَ الْاَرْضَ وَ لَنْ تَبْلُغَ الْجِبَالَ طُوْلًا




অনুবাদ:    (চৌদ্দ) যমীনে দম্ভভরে চলো না। তুমি না যমীনকে চিরে ফেলতে পারবে, না পাহাড়ের উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে।




(17:38)

كُلُّ ذٰلِكَ كَانَ سَیِّئُهٗ عِنْدَ رَبِّكَ مَكْرُوْهًا




অনুবাদ:    এ বিষয়গুলোর মধ্য থেকে প্রত্যেকটির খারাপ দিক তোমার রবের কাছে অপছন্দনীয়।




(17:39)

ذٰلِكَ مِمَّاۤ اَوْحٰۤى اِلَیْكَ رَبُّكَ مِنَ الْحِكْمَةِ١ؕ وَ لَا تَجْعَلْ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ فَتُلْقٰى فِیْ جَهَنَّمَ مَلُوْمًا مَّدْحُوْرًا




অনুবাদ:    তোমার রব তোমাকে অহীর মাধ্যমে যে হিকমতের কথাগুলো বলেছেন এগুলো তার অন্তর্ভুক্ত। আর দেখো, আল্লাহর সাথে অন্য কোন মাবুদ স্থির করে নিয়ো না, অন্যথায় তোমাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে নিন্দিত এবং সব রকমের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত অবস্থায়।




(17:40)

اَفَاَصْفٰىكُمْ رَبُّكُمْ بِالْبَنِیْنَ وَ اتَّخَذَ مِنَ الْمَلٰٓئِكَةِ اِنَاثًا١ؕ اِنَّكُمْ لَتَقُوْلُوْنَ قَوْلًا عَظِیْمًا۠




অনুবাদ:    কেমন অদ্ভূত কথা, তোমাদের রব তোমাদের পুত্র সন্তান দিয়ে অনুগৃহীত করেছেন এবং নিজের জন্য ফেরেশতাদেরকে কন্যা সন্তান বানিয়ে নিয়েছেন? এটা ভয়ানক মিথ্যা কথা, যা তোমরা নিজেদের মুখে উচ্চারণ করছো।




(17:41)

وَ لَقَدْ صَرَّفْنَا فِیْ هٰذَا الْقُرْاٰنِ لِیَذَّكَّرُوْا١ؕ وَ مَا یَزِیْدُهُمْ اِلَّا نُفُوْرًا




অনুবাদ:    আমি এ কুরআনে নানা ভাবে লোকদেরকে বুঝিয়েছি যেন তারা সজাগ হয়, কিন্তু তারা সত্য থেকে আরো বেশী দূরে সরে যাচ্ছে।




(17:42)

قُلْ لَّوْ كَانَ مَعَهٗۤ اٰلِهَةٌ كَمَا یَقُوْلُوْنَ اِذًا لَّابْتَغَوْا اِلٰى ذِی الْعَرْشِ سَبِیْلًا




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, যদি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহও থাকতো যেমন এরা বলে, তাহলে সে আরশের মালিকের জায়গায় পৌঁছে যাবার জন্য নিশ্চয়ই চেষ্টা করতো।




(17:43)

سُبْحٰنَهٗ وَ تَعٰلٰى عَمَّا یَقُوْلُوْنَ عُلُوًّا كَبِیْرًا




অনুবাদ:    পাক-পবিত্র তিনি এবং এরা যেসব কথা বলছে তিনি তার অনেক ঊর্ধ্বে।




(17:44)

تُسَبِّحُ لَهُ السَّمٰوٰتُ السَّبْعُ وَ الْاَرْضُ وَ مَنْ فِیْهِنَّ١ؕ وَ اِنْ مِّنْ شَیْءٍ اِلَّا یُسَبِّحُ بِحَمْدِهٖ وَ لٰكِنْ لَّا تَفْقَهُوْنَ تَسْبِیْحَهُمْ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ حَلِیْمًا غَفُوْرًا




অনুবাদ:    তাঁর পবিত্রতা তো বর্ণনা করছে সাত আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে সব জিনিসই। এমন কোন জিনিস নেই যা তাঁর প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছে না, কিন্তু তোমরা তাদের পবিত্রতা ও মহিমা কীর্তন বুঝতে পারো না। আসলে তিনি বড়ই সহিষ্ণু ও ক্ষমাশীল।




(17:45)

وَ اِذَا قَرَاْتَ الْقُرْاٰنَ جَعَلْنَا بَیْنَكَ وَ بَیْنَ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ حِجَابًا مَّسْتُوْرًاۙ




অনুবাদ:    যখন তুমি কুরআন পড়ো তখন আমি তোমার ও যারা আখেরাতের প্রতি ঈমান আনে না তাদের মাঝখানে একটি পর্দা ঝুলিয়ে দেই।




(17:46)

وَّ جَعَلْنَا عَلٰى قُلُوْبِهِمْ اَكِنَّةً اَنْ یَّفْقَهُوْهُ وَ فِیْۤ اٰذَانِهِمْ وَقْرًا١ؕ وَ اِذَا ذَكَرْتَ رَبَّكَ فِی الْقُرْاٰنِ وَحْدَهٗ وَلَّوْا عَلٰۤى اَدْبَارِهِمْ نُفُوْرًا




অনুবাদ:    এবং তাদের মনের ওপর এমন আবরণ চড়িয়ে দেই যেন তারা কিছুই বুঝে না এবং তাদের কানে তালা লাগিয়ে দেই। আর যখন তুমি কুরআনে নিজের একমাত্র রবের কথা পড়ো তখন তারা ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয়।




(17:47)

نَحْنُ اَعْلَمُ بِمَا یَسْتَمِعُوْنَ بِهٖۤ اِذْ یَسْتَمِعُوْنَ اِلَیْكَ وَ اِذْ هُمْ نَجْوٰۤى اِذْ یَقُوْلُ الظّٰلِمُوْنَ اِنْ تَتَّبِعُوْنَ اِلَّا رَجُلًا مَّسْحُوْرًا




অনুবাদ:    আমি জানি, যখন তারা কান লাগিয়ে তোমার কথা শোনে তখন আসলে কি শোনে এবং যখন বসে পরস্পর কানাকানি করে তখন কি বলে। এ জালেমরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, তোমরা এই যে লোকটির পেছনে চলছো এতো একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি।




(17:48)

اُنْظُرْ كَیْفَ ضَرَبُوْا لَكَ الْاَمْثَالَ فَضَلُّوْا فَلَا یَسْتَطِیْعُوْنَ سَبِیْلًا




অনুবাদ:    ---দেখো, কী সব কথা এরা তোমার ওপর ছুঁড়ে দিচ্ছে, এরা পথভ্রষ্ট হয়েছে, এরা পথ পায় না।




(17:49)

وَ قَالُوْۤا ءَاِذَا كُنَّا عِظَامًا وَّ رُفَاتًا ءَاِنَّا لَمَبْعُوْثُوْنَ خَلْقًا جَدِیْدًا




অনুবাদ:    তারা বলে, “আমরা যখন শুধুমাত্র হাড় ও মাটি হয়ে যাবো তখন কি আমাদের আবার নতুন করে পয়দা করে ওঠানো হবে?”




(17:50)

قُلْ كُوْنُوْا حِجَارَةً اَوْ حَدِیْدًاۙ




অনুবাদ:    এদেরকে বলে দাও, “তোমরা পাথর বা লোহাই হয়ে যাও




(17:51)

اَوْ خَلْقًا مِّمَّا یَكْبُرُ فِیْ صُدُوْرِكُمْ١ۚ فَسَیَقُوْلُوْنَ مَنْ یُّعِیْدُنَا١ؕ قُلِ الَّذِیْ فَطَرَكُمْ اَوَّلَ مَرَّةٍ١ۚ فَسَیُنْغِضُوْنَ اِلَیْكَ رُءُوْسَهُمْ وَ یَقُوْلُوْنَ مَتٰى هُوَ١ؕ قُلْ عَسٰۤى اَنْ یَّكُوْنَ قَرِیْبًا




অনুবাদ:    অথবা তার চেয়েও বেশী কঠিন কোন জিনিস, যার অবস্থান তোমাদের ধারণায় জীবনীশক্তি লাভ করার বহুদূরে (তবুও তোমাদের ওঠানো হবেই)।” তারা নিশ্চয়ই জিজ্ঞেস করবে, “কে আমাদের আবার জীবনের দিকে ফিরিয়ে আনবে?” জবাবে বলো, “তিনিই, যিনি প্রথমবার তোমাদের পয়দা করেন।” তারা মাথা নেড়ে নেড়ে জিজ্ঞেস করবে, “আচ্ছা, তাহলে এটা কবে হবে?” তুমি বলে দাও, অবাক হবার কিছুই নেই, সে সময়টা হয়তো নিকটেই এসে গেছে।




(17:52)

یَوْمَ یَدْعُوْكُمْ فَتَسْتَجِیْبُوْنَ بِحَمْدِهٖ وَ تَظُنُّوْنَ اِنْ لَّبِثْتُمْ اِلَّا قَلِیْلًا۠




অনুবাদ:    যেদিন তিনি তোমাদের ডাকবেন, তোমরা তাঁর প্রশংসাবাণী উচ্চারণ করতে করতে তাঁর ডাকের জবাবে বের হয়ে আসবে এবং তখন তোমাদের এ ধারণা হবে যে, তোমরা অল্প কিছুক্ষণ মাত্র এ অবস্থায় কাটিয়েছ।




(17:53)

وَ قُلْ لِّعِبَادِیْ یَقُوْلُوا الَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ١ؕ اِنَّ الشَّیْطٰنَ یَنْزَغُ بَیْنَهُمْ١ؕ اِنَّ الشَّیْطٰنَ كَانَ لِلْاِنْسَانِ عَدُوًّا مُّبِیْنًا




অনুবাদ:    আর হে মুহাম্মাদ! আমার বান্দাদেরকে বলে দাও, তারা যেন মুখে এমন কথা বলে যা সর্বোত্তম। আসলে শয়তান মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করে। প্রকৃতপক্ষে শয়তান হচ্ছে মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।




(17:54)

رَبُّكُمْ اَعْلَمُ بِكُمْ١ؕ اِنْ یَّشَاْ یَرْحَمْكُمْ اَوْ اِنْ یَّشَاْ یُعَذِّبْكُمْ١ؕ وَ مَاۤ اَرْسَلْنٰكَ عَلَیْهِمْ وَكِیْلًا




অনুবাদ:    তোমাদের রব তোমাদের অবস্থা সম্পর্কে বেশী জানেন। তিনি চাইলে তোমাদের প্রতি দয়া করেন এবং চাইলে তোমাদের শাস্তি দেন। আর হে নবী! আমি তোমাকে লোকদের ওপর হাবিলদার করে পাঠাইনি।




(17:55)

وَ رَبُّكَ اَعْلَمُ بِمَنْ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ وَ لَقَدْ فَضَّلْنَا بَعْضَ النَّبِیّٖنَ عَلٰى بَعْضٍ وَّ اٰتَیْنَا دَاوٗدَ زَبُوْرًا




অনুবাদ:    তোমার রব পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টিসমূহকে বেশী জানেন। আমি কতক নবীকে কতক নবীর ওপর মর্যাদা দিয়েছি এবং আমি দাউদকে যাবুর দিয়েছিলাম।




(17:56)

قُلِ ادْعُوا الَّذِیْنَ زَعَمْتُمْ مِّنْ دُوْنِهٖ فَلَا یَمْلِكُوْنَ كَشْفَ الضُّرِّ عَنْكُمْ وَ لَا تَحْوِیْلًا




অনুবাদ:    এদেরকে বলো, ডাক দিয়ে দেখো তোমাদের সেই মাবুদদেরকে, যাদেরকে তোমরা আল্লাহ ছাড়া (নিজেদের কার্যোদ্ধারকারী) মনে করো, তারা তোমাদের কোন কষ্ট দূর করতে পারবে না এবং তা পরিবর্তন করতেও পারবে না।




(17:57)

اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ یَبْتَغُوْنَ اِلٰى رَبِّهِمُ الْوَسِیْلَةَ اَیُّهُمْ اَقْرَبُ وَ یَرْجُوْنَ رَحْمَتَهٗ وَ یَخَافُوْنَ عَذَابَهٗ١ؕ اِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ كَانَ مَحْذُوْرًا




অনুবাদ:    এরা যাদেরকে ডাকে তারা তো নিজেরাই নিজেদের রবের নৈকট্য লাভের উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছে যে, কে তাঁর নিকটতর হয়ে যাবে এবং এরা তাঁর রহমতের প্রত্যাশী এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে ভীত। আসলে তোমার রবের শাস্তি ভয় করার মতো।




(17:58)

وَ اِنْ مِّنْ قَرْیَةٍ اِلَّا نَحْنُ مُهْلِكُوْهَا قَبْلَ یَوْمِ الْقِیٰمَةِ اَوْ مُعَذِّبُوْهَا عَذَابًا شَدِیْدًا١ؕ كَانَ ذٰلِكَ فِی الْكِتٰبِ مَسْطُوْرًا




অনুবাদ:    আর এমন কোন জনপদ নেই, যা আমি কিয়ামতের আগে ধ্বংস করে দেবো না অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দেবো না, আল্লাহর লিখনে এটা লেখা আছে।




(17:59)

وَ مَا مَنَعَنَاۤ اَنْ نُّرْسِلَ بِالْاٰیٰتِ اِلَّاۤ اَنْ كَذَّبَ بِهَا الْاَوَّلُوْنَ١ؕ وَ اٰتَیْنَا ثَمُوْدَ النَّاقَةَ مُبْصِرَةً فَظَلَمُوْا بِهَا١ؕ وَ مَا نُرْسِلُ بِالْاٰیٰتِ اِلَّا تَخْوِیْفًا




অনুবাদ:    আর এদের পূর্ববর্তী লোকেরা নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে বলেই তো আমি নিদর্শন পাঠানো থেকে বিরত রয়েছি। (যেমন দেখে নাও) সামূদকে আমি প্রকাশ্যে উটনী এনে দিলাম এবং তারা তার ওপর জুলুম করলো। আমি নিদর্শন তো এজন্য পাঠাই যাতে লোকেরা তা দেখে ভয় পায়।




(17:60)

وَ اِذْ قُلْنَا لَكَ اِنَّ رَبَّكَ اَحَاطَ بِالنَّاسِ١ؕ وَ مَا جَعَلْنَا الرُّءْیَا الَّتِیْۤ اَرَیْنٰكَ اِلَّا فِتْنَةً لِّلنَّاسِ وَ الشَّجَرَةَ الْمَلْعُوْنَةَ فِی الْقُرْاٰنِ١ؕ وَ نُخَوِّفُهُمْ١ۙ فَمَا یَزِیْدُهُمْ اِلَّا طُغْیَانًا كَبِیْرًا۠




অনুবাদ:    স্মরণ করো হে মুহাম্মাদ! আমি তোমাকে বলে দিয়েছিলাম, তোমার রব এ লোকদেরকে ঘিরে রেখেছেন। আর এই যা কিছু এখনই আমি তোমাকে দেখিয়েছি একে এবং কুরআনে অভিশপ্ত গাছকে আমি এদের জন্য একটি ফিতনা বানিয়ে রেখে দিয়েছি। আমি এদেরকে অনবরত সতর্ক করে যাচ্ছি কিন্তু প্রতিটি সতর্ক সংকেত এদের অবাধ্যতা বাড়িয়ে চলছে।




(17:61)

وَ اِذْ قُلْنَا لِلْمَلٰٓئِكَةِ اسْجُدُوْا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوْۤا اِلَّاۤ اِبْلِیْسَ١ؕ قَالَ ءَاَسْجُدُ لِمَنْ خَلَقْتَ طِیْنًاۚ




অনুবাদ:    আর স্মরণ করো, যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো, তখন সবাই সিজদা করলো কিন্তু ইবলীস করলো না। সে বললো, “আমি কি তাকে সিজদা করবো যাকে তুমি বানিয়েছো মাটি দিয়ে?”




(17:62)

قَالَ اَرَءَیْتَكَ هٰذَا الَّذِیْ كَرَّمْتَ عَلَیَّ١٘ لَئِنْ اَخَّرْتَنِ اِلٰى یَوْمِ الْقِیٰمَةِ لَاَحْتَنِكَنَّ ذُرِّیَّتَهٗۤ اِلَّا قَلِیْلًا




অনুবাদ:    তারপর সে বললো, “দেখোতো ভালো করে, তুমি যে একে আমার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছো, এ কি এর যোগ্য ছিল? যদি তুমি আমাকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত অবকাশ দাও তাহলে আমি তার সমস্ত সন্তান-সন্ততির মূলোচ্ছেদ করে দেবো, মাত্র সামান্য ক’জনই আমার হাত থেকে নিস্তার পাবে।”




(17:63)

قَالَ اذْهَبْ فَمَنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ فَاِنَّ جَهَنَّمَ جَزَآؤُكُمْ جَزَآءً مَّوْفُوْرًا




অনুবাদ:    আল্লাহ বললেন, “ঠিক আছে, তুমি যাও, এদের মধ্য থেকে যারাই তোমার অনুসরণ করবে তুমিসহ তাদের সবার জন্য জাহান্নামই হবে পূর্ণ প্রতিদান।




(17:64)

وَ اسْتَفْزِزْ مَنِ اسْتَطَعْتَ مِنْهُمْ بِصَوْتِكَ وَ اَجْلِبْ عَلَیْهِمْ بِخَیْلِكَ وَ رَجِلِكَ وَ شَارِكْهُمْ فِی الْاَمْوَالِ وَ الْاَوْلَادِ وَعِدْهُمْ١ؕ وَ مَا یَعِدُهُمُ الشَّیْطٰنُ اِلَّا غُرُوْرًا




অনুবাদ:    তুমি যাকে যাকে পারো তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে পদস্খলিত করো, তাদের ওপর অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনীর আক্রমণ চালাও, ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে তাদের সাথে শরীক হয়ে যাও এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতির জালে আটকে ফেলো, ---আর শয়তানের প্রতিশ্রুতি ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়,




(17:65)

اِنَّ عِبَادِیْ لَیْسَ لَكَ عَلَیْهِمْ سُلْطٰنٌ١ؕ وَ كَفٰى بِرَبِّكَ وَكِیْلًا




অনুবাদ:    নিশ্চিতভাবেই আমার বান্দাদের ওপর তোমার কোনো কর্তৃত্ব অর্জিত হবে না এবং ভরসা করার জন্য তোমার রবই যথেষ্ট।




(17:66)

رَبُّكُمُ الَّذِیْ یُزْجِیْ لَكُمُ الْفُلْكَ فِی الْبَحْرِ لِتَبْتَغُوْا مِنْ فَضْلِهٖ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ بِكُمْ رَحِیْمًا




অনুবাদ:    তোমাদের (আসল) রব তো তিনিই যিনি সমুদ্রে তোমাদের নৌযান পরিচালনা করেন, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ তালাশ করতে পারো। আসলে তিনি তোমাদের অবস্থার প্রতি বড়ই করুণাশীল।




(17:67)

وَ اِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فِی الْبَحْرِ ضَلَّ مَنْ تَدْعُوْنَ اِلَّاۤ اِیَّاهُ١ۚ فَلَمَّا نَجّٰىكُمْ اِلَى الْبَرِّ اَعْرَضْتُمْ١ؕ وَ كَانَ الْاِنْسَانُ كَفُوْرًا




অনুবাদ:    যখন সাগরে তোমাদের ওপর বিপদ আসে তখন সেই একজন ছাড়া আর যাকে তোমরা ডাকো সবাই অন্তর্হিত হয়ে যায়। কিন্তু যখন তিনি তোমাদের রক্ষা করে স্থলদেশে পৌঁছিয়ে দেন তখন তোমরা তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও। মানুষ সত্যিই বড়ই অকৃতজ্ঞ।




(17:68)

اَفَاَمِنْتُمْ اَنْ یَّخْسِفَ بِكُمْ جَانِبَ الْبَرِّ اَوْ یُرْسِلَ عَلَیْكُمْ حَاصِبًا ثُمَّ لَا تَجِدُوْا لَكُمْ وَكِیْلًاۙ




অনুবাদ:    আচ্ছা, তাহলে তোমরা কি এ ব্যাপারে একেবারেই নির্ভীক যে, আল্লাহ কখনো স্থলদেশেই তোমাদেরকে যমীনের মধ্যে প্রোথিত করে দেবেন না অথবা তোমাদের ওপর পাথর বর্ষণকারী ঘূর্ণি পাঠাবেন না এবং তোমরা তার হাত থেকে বাঁচার জন্য কোন সহায়ক পাবে না?




(17:69)

اَمْ اَمِنْتُمْ اَنْ یُّعِیْدَكُمْ فِیْهِ تَارَةً اُخْرٰى فَیُرْسِلَ عَلَیْكُمْ قَاصِفًا مِّنَ الرِّیْحِ فَیُغْرِقَكُمْ بِمَا كَفَرْتُمْ١ۙ ثُمَّ لَا تَجِدُوْا لَكُمْ عَلَیْنَا بِهٖ تَبِیْعًا




অনুবাদ:    আর তোমাদের কি এ ধরনের কোন আশঙ্কা নেই যে, আল্লাহ আবার কোন সময় তোমাদের সাগরে নিয়ে যাবেন এবং তোমাদের অকৃতজ্ঞতার দরুন তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ঘূর্ণি পাঠিয়ে তোমাদের ডুবিয়ে দেবেন এবং তোমরা এমন কাউকে পাবে না যে, তাঁর কাছে তোমাদের এ পরিণতির জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে?




(17:70)

وَ لَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِیْۤ اٰدَمَ وَ حَمَلْنٰهُمْ فِی الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ وَ رَزَقْنٰهُمْ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ وَ فَضَّلْنٰهُمْ عَلٰى كَثِیْرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِیْلًا۠




অনুবাদ:    ---এতো আমার অনুগ্রহ, আমি বনী আদমকে মর্যাদা দিয়েছি এবং তাদেরকে জলে-স্থলে সওয়ারী দান করেছি, তাদেরকে পাক-পবিত্র জিনিস থেকে রিযিক দিয়েছি এবং নিজের বহু সৃষ্টির ওপর তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দিয়েছি।




(17:71)

یَوْمَ نَدْعُوْا كُلَّ اُنَاسٍۭ بِاِمَامِهِمْ١ۚ فَمَنْ اُوْتِیَ كِتٰبَهٗ بِیَمِیْنِهٖ فَاُولٰٓئِكَ یَقْرَءُوْنَ كِتٰبَهُمْ وَ لَا یُظْلَمُوْنَ فَتِیْلًا




অনুবাদ:    তারপর সেই দিনের কথা মনে করো যেদিন আমি মানুষের প্রত্যেকটি দলকে তার নেতা সহকারে ডাকবো। সেদিন যাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেয়া হবে তারা নিজেদের কার্যকলাপ পাঠ করবে এবং তাদের ওপর সামান্যতমও জুলুম করা হবে না




(17:72)

وَ مَنْ كَانَ فِیْ هٰذِهٖۤ اَعْمٰى فَهُوَ فِی الْاٰخِرَةِ اَعْمٰى وَ اَضَلُّ سَبِیْلًا




অনুবাদ:    আর যে ব্যক্তি এ দুনিয়াতে অন্ধ হয়ে থাকে সে আখেরাতেও অন্ধ হয়েই থাকবে বরং পথ লাভ করার ব্যাপারে সে অন্ধের চেয়েও বেশী ব্যর্থ।




(17:73)

وَ اِنْ كَادُوْا لَیَفْتِنُوْنَكَ عَنِ الَّذِیْۤ اَوْحَیْنَاۤ اِلَیْكَ لِتَفْتَرِیَ عَلَیْنَا غَیْرَهٗ١ۖۗ وَ اِذًا لَّاتَّخَذُوْكَ خَلِیْلًا




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তোমার কাছে আমি যে অহী পাঠিয়েছি তা থেকে তোমাকে ফিরিয়ে রাখার জন্য এ লোকেরা তোমাকে বিভ্রাটের মধ্যে ঠেলে দেবার প্রচেষ্টায় কসুর করেনি, যাতে তুমি আমার নামে নিজের পক্ষ থেকে কোন কথা তৈরি করো। যদি তুমি এমনটি করতে তাহলে তারা তোমাকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করতো।




(17:74)

وَ لَوْ لَاۤ اَنْ ثَبَّتْنٰكَ لَقَدْ كِدْتَّ تَرْكَنُ اِلَیْهِمْ شَیْئًا قَلِیْلًاۗۙ




অনুবাদ:    আর যদি আমি তোমাকে মজবুত না রাখতাম তাহলে তোমার পক্ষে তাদের দিকে কিছু না কিছু ঝুঁকে পড়া অসম্ভব ব্যাপার ছিল না।




(17:75)

اِذًا لَّاَذَقْنٰكَ ضِعْفَ الْحَیٰوةِ وَ ضِعْفَ الْمَمَاتِ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ عَلَیْنَا نَصِیْرًا




অনুবাদ:    কিন্তু যদি তুমি এমনটি করতে তাহলে আমি এ দুনিয়ায় তোমাকে দ্বিগুণ শাস্তির মজা টের পাইয়ে দিতাম এবং আখেরাতেও, তারপর আমার মোকাবিলায় তুমি কোন সাহায্যকারী পেতে না।




(17:76)

وَ اِنْ كَادُوْا لَیَسْتَفِزُّوْنَكَ مِنَ الْاَرْضِ لِیُخْرِجُوْكَ مِنْهَا وَ اِذًا لَّا یَلْبَثُوْنَ خِلٰفَكَ اِلَّا قَلِیْلًا




অনুবাদ:    আর এরা এ দেশ থেকে তোমাকে উৎখাত করার এবং এখান থেকে তোমাকে বের করে দেবার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু যদি এরা এমনটি করে তাহলে তোমার পর এরা নিজেরাই এখানে বেশীক্ষণ থাকতে পারবে না।




(17:77)

سُنَّةَ مَنْ قَدْ اَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنْ رُّسُلِنَا وَ لَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِیْلًا۠




অনুবাদ:    এটি আমার স্থায়ী কর্মপদ্ধতি। তোমার পূর্বে আমি যেসব রসূল পাঠিয়েছিলাম তাদের সবার ব্যাপারে এ কর্মপদ্ধতি আরোপ করেছিলাম। আর আমার কর্মপদ্ধতিতে তুমি কোন পরিবর্তন দেখতে পাবে না।




(17:78)

اَقِمِ الصَّلٰوةَ لِدُلُوْكِ الشَّمْسِ اِلٰى غَسَقِ الَّیْلِ وَ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ١ؕ اِنَّ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُوْدًا




অনুবাদ:    নামায কায়েম করো সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নিয়ে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত এবং ফজরে কুরআন পড়ারও ব্যবস্থা করো। কারণ ফজরের কুরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।




(17:79)

وَ مِنَ الَّیْلِ فَتَهَجَّدْ بِهٖ نَافِلَةً لَّكَ١ۖۗ عَسٰۤى اَنْ یَّبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا




অনুবাদ:    আর রাতে তাহাজ্জুদ পড়ো এটি তোমার জন্য নফল। অচিরেই তোমার রব তোমাকে “প্রশংসিত স্থানে” প্রতিষ্ঠিত করবেন।




(17:80)

وَ قُلْ رَّبِّ اَدْخِلْنِیْ مُدْخَلَ صِدْقٍ وَّ اَخْرِجْنِیْ مُخْرَجَ صِدْقٍ وَّ اجْعَلْ لِّیْ مِنْ لَّدُنْكَ سُلْطٰنًا نَّصِیْرًا




অনুবাদ:    আর দোয়া করোঃ হে আমার পরওয়ারদিগার! আমাকে যেখানেই তুমি নিয়ে যাও সত্যতার সাথে নিয়ে যাও এবং যেখান থেকেই বের করো সত্যতার সাথে বের করো। এবং তোমার পক্ষ থেকে একটি কর্তৃত্বশীল পরাক্রান্ত শক্তিকে আমার সাহায্যকারী বানিয়ে দাও।




(17:81)

وَ قُلْ جَآءَ الْحَقُّ وَ زَهَقَ الْبَاطِلُ١ؕ اِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوْقًا




অনুবাদ:    আর ঘোষণা করে দাও, “সত্য এসে গেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, মিথ্যার তো বিলুপ্ত হবারই কথা।”




(17:82)

وَ نُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْاٰنِ مَا هُوَ شِفَآءٌ وَّ رَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِیْنَ١ۙ وَ لَا یَزِیْدُ الظّٰلِمِیْنَ اِلَّا خَسَارًا




অনুবাদ:    আমি এই কুরআনের অবতরণ প্রক্রিয়ায় এমন সব বিষয় অবতীর্ণ করছি যা মু’মিনদের জন্য নিরাময় ও রহমত এবং জালেমদের জন্য ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করে না।




(17:83)

وَ اِذَاۤ اَنْعَمْنَا عَلَى الْاِنْسَانِ اَعْرَضَ وَ نَاٰ بِجَانِبِهٖ١ۚ وَ اِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ كَانَ یَئُوْسًا




অনুবাদ:    মানুষের অবস্থা হচ্ছে এই যে, যখন আমি তাকে নিয়ামত দান করি তখন সে গর্ব করে ও পিঠ ফিরিয়ে নেয় এবং যখন সামান্য বিপদের মুখোমুখি হয় তখন হতাশ হয়ে যেতে থাকে।




(17:84)

قُلْ كُلٌّ یَّعْمَلُ عَلٰى شَاكِلَتِهٖ١ؕ فَرَبُّكُمْ اَعْلَمُ بِمَنْ هُوَ اَهْدٰى سَبِیْلًا۠




অনুবাদ:    হে নবী! এদেরকে বলে দাও, “প্রত্যেকে নিজ নিজ পথে কাজ করছে, এখন একমাত্র তোমাদের রবই ভাল জানেন কে আছে সরল-সঠিক পথে।”




(17:85)

وَ یَسْئَلُوْنَكَ عَنِ الرُّوْحِ١ؕ قُلِ الرُّوْحُ مِنْ اَمْرِ رَبِّیْ وَ مَاۤ اُوْتِیْتُمْ مِّنَ الْعِلْمِ اِلَّا قَلِیْلًا




অনুবাদ:    এরা তোমাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করছে। বলে দাও, “এ রূহ আমার রবের হুকুমে আসে কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছো।”




(17:86)

وَ لَئِنْ شِئْنَا لَنَذْهَبَنَّ بِالَّذِیْۤ اَوْحَیْنَاۤ اِلَیْكَ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ بِهٖ عَلَیْنَا وَكِیْلًاۙ




অনুবাদ:    আর হে মুহাম্মাদ! আমি চাইলে তোমার কাছ থেকে সবকিছুই ছিনিয়ে নিতে পারতাম, যা আমি অহীর মাধ্যমে তোমাকে দিয়েছি, তারপর তুমি আমার মোকাবিলায় কোন সহায়ক পাবে না, যে তা ফিরিয়ে আনতে পারে।




(17:87)

اِلَّا رَحْمَةً مِّنْ رَّبِّكَ١ؕ اِنَّ فَضْلَهٗ كَانَ عَلَیْكَ كَبِیْرًا




অনুবাদ:    এই যে যা কিছু তুমি লাভ করেছো, এসব তোমার রবের হুকুম, আসলে তাঁর অনুগ্রহ তোমার প্রতি অনেক বড়।




(17:88)

قُلْ لَّئِنِ اجْتَمَعَتِ الْاِنْسُ وَ الْجِنُّ عَلٰۤى اَنْ یَّاْتُوْا بِمِثْلِ هٰذَا الْقُرْاٰنِ لَا یَاْتُوْنَ بِمِثْلِهٖ وَ لَوْ كَانَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ ظَهِیْرًا




অনুবাদ:    বলে দাও, যদি মানুষ ও জিন সবাই মিলে কুরআনের মতো কোন একটি জিনিস আনার চেষ্টা করে তাহলে তারা আনতে পারবে না, তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়ে গেলেও।




(17:89)

وَ لَقَدْ صَرَّفْنَا لِلنَّاسِ فِیْ هٰذَا الْقُرْاٰنِ مِنْ كُلِّ مَثَلٍ١٘ فَاَبٰۤى اَكْثَرُ النَّاسِ اِلَّا كُفُوْرًا




অনুবাদ:    আমি এ কুরআনে লোকদেরকে নানাভাবে বুঝিয়েছি কিন্তু অধিকাংশ লোক অস্বীকার করার ওপরই অবিচল থাকে।




(17:90)

وَ قَالُوْا لَنْ نُّؤْمِنَ لَكَ حَتّٰى تَفْجُرَ لَنَا مِنَ الْاَرْضِ یَنْۢبُوْعًاۙ




অনুবাদ:    তারা বলে, “আমরা তোমার কথা মানবো না যতক্ষণ না তুমি ভূমি বিদীর্ণ করে আমাদের জন্য একটি ঝরণাধারা উৎসারিত করে দেবে।




(17:91)

اَوْ تَكُوْنَ لَكَ جَنَّةٌ مِّنْ نَّخِیْلٍ وَّ عِنَبٍ فَتُفَجِّرَ الْاَنْهٰرَ خِلٰلَهَا تَفْجِیْرًاۙ




অনুবাদ:    অথবা তোমার খেজুর ও আংগুরের একটি বাগান হবে এবং তুমি তার মধ্যে প্রবাহিত করে দেবে নদী-নালা।




(17:92)

اَوْ تُسْقِطَ السَّمَآءَ كَمَا زَعَمْتَ عَلَیْنَا كِسَفًا اَوْ تَاْتِیَ بِاللّٰهِ وَ الْمَلٰٓئِكَةِ قَبِیْلًاۙ




অনুবাদ:    অথবা তুমি আকাশ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে তোমার হুমকি অনুযায়ী আমাদের ওপর ফেলে দেবে। অথবা আল্লাহ‌ ও ফেরেশতাদেরকে আমাদের সামনে নিয়ে আসবে।




(17:93)

اَوْ یَكُوْنَ لَكَ بَیْتٌ مِّنْ زُخْرُفٍ اَوْ تَرْقٰى فِی السَّمَآءِ١ؕ وَ لَنْ نُّؤْمِنَ لِرُقِیِّكَ حَتّٰى تُنَزِّلَ عَلَیْنَا كِتٰبًا نَّقْرَؤُهٗ١ؕ قُلْ سُبْحَانَ رَبِّیْ هَلْ كُنْتُ اِلَّا بَشَرًا رَّسُوْلًا۠




অনুবাদ:    অথবা তোমার জন্য সোনার একটি ঘর তৈরি হবে। অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে এবং তোমার আরোহণ করার কথাও আমরা বিশ্বাস করবো না যতক্ষণ না তুমি আমাদের প্রতি একটি লিখিত পত্র আনবে, যা আমরা পড়বো।” হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, পাক-পবিত্র আমার পরওয়ারদিগার, আমি কি একজন বাণীবাহক মানুষ ছাড়া অন্য কিছু?




(17:94)

وَ مَا مَنَعَ النَّاسَ اَنْ یُّؤْمِنُوْۤا اِذْ جَآءَهُمُ الْهُدٰۤى اِلَّاۤ اَنْ قَالُوْۤا اَبَعَثَ اللّٰهُ بَشَرًا رَّسُوْلًا




অনুবাদ:    লোকদের কাছে যখনই কোন পথনির্দেশ আসে তখন তাদের একটা কথাই তাদের ঈমান আনার পথ রুদ্ধ করে দেয়। কথাটা এই যে, “আল্লাহ কি মানুষকে রসূল বানিয়ে পাঠিয়েছেন?”




(17:95)

قُلْ لَّوْ كَانَ فِی الْاَرْضِ مَلٰٓئِكَةٌ یَّمْشُوْنَ مُطْمَئِنِّیْنَ لَنَزَّلْنَا عَلَیْهِمْ مِّنَ السَّمَآءِ مَلَكًا رَّسُوْلًا




অনুবাদ:    তাদেরকে বলো, যদি পৃথিবীতে ফেরেশতারা নিশ্চিন্তভাবে চলাফেরা করতো তাহলে নিশ্চয়ই আমি কোনো ফেরেশতাকেই তাদের কাছে রসূল বানিয়ে পাঠাতাম।




(17:96)

قُلْ كَفٰى بِاللّٰهِ شَهِیْدًۢا بَیْنِیْ وَ بَیْنَكُمْ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ بِعِبَادِهٖ خَبِیْرًۢا بَصِیْرًا




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলে দাও, আমারও তোমাদের শুধু একমাত্র আল্লাহর সাক্ষ্যই যথেষ্ট। তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন এবং সবকিছু দেখছেন।




(17:97)

وَ مَنْ یَّهْدِ اللّٰهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ١ۚ وَ مَنْ یُّضْلِلْ فَلَنْ تَجِدَ لَهُمْ اَوْلِیَآءَ مِنْ دُوْنِهٖ١ؕ وَ نَحْشُرُهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ عَلٰى وُجُوْهِهِمْ عُمْیًا وَّ بُكْمًا وَّ صُمًّا١ؕ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ١ؕ كُلَّمَا خَبَتْ زِدْنٰهُمْ سَعِیْرًا




অনুবাদ:    যাকে আল্লাহ পথ দেখান সে-ই পথ লাভ করে এবং যাদেরকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন তাদের জন্য তুমি তাঁকে ছাড়া আর কোন সহায়ক ও সাহায্যকারী পেতে পারো না। এ লোকগুলোকে আমি কিয়ামতের দিন উপুড় করে টেনে আনবো অন্ধ, বোবা ও বধির করে। এদের আবাস জাহান্নাম। যখনই তার আগুন স্তিমিত হতে থাকবে আমি তাকে আরো জোরে জ্বালিয়ে দেবো।




(17:98)

ذٰلِكَ جَزَآؤُهُمْ بِاَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاٰیٰتِنَا وَ قَالُوْۤا ءَاِذَا كُنَّا عِظَامًا وَّ رُفَاتًا ءَاِنَّا لَمَبْعُوْثُوْنَ خَلْقًا جَدِیْدًا




অনুবাদ:    এটা হচ্ছে তাদের এ কাজের প্রতিদান যে, তারা আমার নিদর্শন অস্বীকার করেছে এবং বলেছে “যখন আমরা শুধুমাত্র হাড় ও মাটি হয়ে যাবো তখন কি আবার আমাদের নতুন করে পয়দা করে উঠানো হবে?




(17:99)

اَوَ لَمْ یَرَوْا اَنَّ اللّٰهَ الَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ قَادِرٌ عَلٰۤى اَنْ یَّخْلُقَ مِثْلَهُمْ وَ جَعَلَ لَهُمْ اَجَلًا لَّا رَیْبَ فِیْهِ١ؕ فَاَبَى الظّٰلِمُوْنَ اِلَّا كُفُوْرًا




অনুবাদ:    তারা কি খেয়াল করেনি, যে আল্লাহ‌ পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলী সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করার অবশ্যই ক্ষমতা রাখেন? তিনি তাদের হাশরের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করে রেখেছেন, যার আগমন অবধারিত। কিন্তু জালেমরা জিদ ধরেছে যে তারা তা অস্বীকারই করে যাবে।




(17:100)

قُلْ لَّوْ اَنْتُمْ تَمْلِكُوْنَ خَزَآئِنَ رَحْمَةِ رَبِّیْۤ اِذًا لَّاَمْسَكْتُمْ خَشْیَةَ الْاِنْفَاقِ١ؕ وَ كَانَ الْاِنْسَانُ قَتُوْرًا۠




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলে দাও, যদি আমার রবের রহমতের ভাণ্ডার তোমাদের অধীনে থাকতো তাহলে তোমরা ব্যয় হয়ে যাবার আশঙ্কায় নিশ্চিতভাবেই তা ধরে রাখতে। সত্যিই মানুষ বড়ই সংকীর্ণমনা।




(17:101)

وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسٰى تِسْعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ فَسْئَلْ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اِذْ جَآءَهُمْ فَقَالَ لَهٗ فِرْعَوْنُ اِنِّیْ لَاَظُنُّكَ یٰمُوْسٰى مَسْحُوْرًا




অনুবাদ:    আমি মূসাকে নয়টি নিদর্শন দিয়েছিলাম, সেগুলো সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। এখন নিজেরাই তোমরা বনী ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস করে দেখে নাও যখন সেগুলো তাদের সামনে এলো তখন ফেরাউন তো একথাই বলেছিল, “হে মূসা! আমার মতে তুমি অবশ্যই একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি।”




(17:102)

قَالَ لَقَدْ عَلِمْتَ مَاۤ اَنْزَلَ هٰۤؤُلَآءِ اِلَّا رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ بَصَآئِرَ١ۚ وَ اِنِّیْ لَاَظُنُّكَ یٰفِرْعَوْنُ مَثْبُوْرًا




অনুবাদ:    মূসা এর জবাবে বললো, “তুমি খুব ভাল করেই জানো এ প্রজ্ঞাময় নিদর্শনগুলো আকাশ ও পৃথিবীর রব ছাড়া আর কেউ নাযিল করেননি আর আমার মনে হয় হে ফেরাউন! তুমি নিশ্চয়ই একজন হতভাগা ব্যক্তি।




(17:103)

فَاَرَادَ اَنْ یَّسْتَفِزَّهُمْ مِّنَ الْاَرْضِ فَاَغْرَقْنٰهُ وَ مَنْ مَّعَهٗ جَمِیْعًاۙ




অনুবাদ:    শেষ পর্যন্ত ফেরাউন মূসা ও বনী ইস্রাঈলকে দুনিয়ার বুক থেকে উৎখাত করার সংকল্প করলো। কিন্তু আমি তাকে ও তার সঙ্গী-সাথীদেরকে এক সাথে ডুবিয়ে দিলাম




(17:104)

وَّ قُلْنَا مِنْۢ بَعْدِهٖ لِبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اسْكُنُوا الْاَرْضَ فَاِذَا جَآءَ وَعْدُ الْاٰخِرَةِ جِئْنَا بِكُمْ لَفِیْفًاؕ




অনুবাদ:    এবং এরপর বনী ইস্রাঈলকে বললাম, এখন তোমরা পৃথিবীতে বসবাস করো, তারপর যখন আখেরাতের প্রতিশ্রুতির সময় এসে যাবে তখন আমি তোমাদের সবাইকে এক সাথে হাযির করবো।




(17:105)

وَ بِالْحَقِّ اَنْزَلْنٰهُ وَ بِالْحَقِّ نَزَلَ١ؕ وَ مَاۤ اَرْسَلْنٰكَ اِلَّا مُبَشِّرًا وَّ نَذِیْرًاۘ




অনুবাদ:    এ কুরআনকে আমি সত্য সহকারে নাযিল করেছি এবং সত্য সহকারেই এটি নাযিল হয়েছে। আর হে মুহাম্মাদ! তোমাকে আমি এছাড়া আর কোন কাজে পাঠাইনি যে, (যে মেনে নেবে তাকে) সুসংবাদ দিয়ে দেবে এবং (যে মেনে নেবে না তাকে) সাবধান করে দেবে।




(17:106)

وَ قُرْاٰنًا فَرَقْنٰهُ لِتَقْرَاَهٗ عَلَى النَّاسِ عَلٰى مُكْثٍ وَّ نَزَّلْنٰهُ تَنْزِیْلًا




অনুবাদ:    আর এ কুরআনকে আমি সামান্য সামান্য করে নাযিল করেছি, যাতে তুমি থেমে থেমে তা লোকদেরকে শুনিয়ে দাও এবং তাকে আমি (বিভিন্ন সময়) পর্যায়ক্রমে নাযিল করেছি।




(17:107)

قُلْ اٰمِنُوْا بِهٖۤ اَوْ لَا تُؤْمِنُوْا١ؕ اِنَّ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهٖۤ اِذَا یُتْلٰى عَلَیْهِمْ یَخِرُّوْنَ لِلْاَذْقَانِ سُجَّدًاۙ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলে দাও, তোমরা একে মানো বা না মানো, যাদেরকে এর আগে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদেরকে যখন এটা শুনানো হয় তখন তারা আনত মস্তকে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে




(17:108)

وَّ یَقُوْلُوْنَ سُبْحٰنَ رَبِّنَاۤ اِنْ كَانَ وَعْدُ رَبِّنَا لَمَفْعُوْلًا




অনুবাদ:    এবং বলে ওঠে, “পাক-পবিত্র আমাদের রব, আমাদের রবের প্রতিশ্রুতি তো পূর্ণ হয়েই থাকে।”




(17:109)

وَ یَخِرُّوْنَ لِلْاَذْقَانِ یَبْكُوْنَ وَ یَزِیْدُهُمْ خُشُوْعًا۩




অনুবাদ:    এবং তারা নত মুখে কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং তা শুনে তাদের দ্বীনতা আরো বেড়ে যায়।

সেজদা



(17:110)

قُلِ ادْعُوا اللّٰهَ اَوِ ادْعُوا الرَّحْمٰنَ١ؕ اَیًّا مَّا تَدْعُوْا فَلَهُ الْاَسْمَآءُ الْحُسْنٰى١ۚ وَ لَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَ لَا تُخَافِتْ بِهَا وَ ابْتَغِ بَیْنَ ذٰلِكَ سَبِیْلًا


অনুবাদ:    হে নবী! এদেরকে বলে দাও, আল্লাহ‌ বা রহমান যে নামেই ডাকো না কেন, তাঁর জন্য সবই ভাল নাম। আর নিজের নামায খুব বেশী উচ্চ কণ্ঠেও পড়বে না, বেশী ক্ষীণ কণ্ঠেও না, বরং এ দু’য়ের মাঝামাঝি মধ্যম পর্যায়ের কণ্ঠস্বর অবলম্বন করবে।


(17:111)

وَ قُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِیْ لَمْ یَتَّخِذْ وَلَدًا وَّ لَمْ یَكُنْ لَّهٗ شَرِیْكٌ فِی الْمُلْكِ وَ لَمْ یَكُنْ لَّهٗ وَلِیٌّ مِّنَ الذُّلِّ وَ كَبِّرْهُ تَكْبِیْرًا۠


অনুবাদ:    আর বলো, সেই আল্লাহর প্রশংসা, যিনি কোন পুত্রও গ্রহণ করেননি। তাঁর বাদশাহীতে কেউ শরীকও হয়নি এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে, কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভর হবে।” আর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করো, চূড়ান্ত পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব।


বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

Islamic world

  Islamic World

জনপ্রিয় লেখা সমূহ