আর আল্লাহ প্রদত্ত এই সম্মান রক্ষা করা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে।
যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনো এবং রাসুলকে শক্তি জোগাও ও তাকে সম্মান করো; সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্র ও মহিমা ঘোষণা করো। ’ (সুরা ফাতহ, আয়াত : ৮-৯)উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম সা’দি (রহ.) বলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর অধিকার তিন প্রকার। এক. যা শুধু আল্লাহর সঙ্গে বিশেষায়িত। যেমন ইবাদত ও ইবাদতধর্মীয় আমল। এতে অন্য কারো অংশিদারিত্ব নেই।
দুই. যা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে বিশেষায়িত। যেমন—শক্তি জোগান, সম্মান ও সাহায্য করা।
তিন. যা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন ঈমান, ভালোবাসা ও আনুগত্য।
মুমিনদের কাছে সম্মান ও মর্যাদা হবে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি মূল্যবান। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মদিনাবাসী ও তাদের পার্শ্ববর্তী মরুবাসীদের জন্য সংগত নয়, আল্লাহর রাসুলের সহগামী না হয়ে পেছনে থেকে যাওয়া এবং তার জীবন অপেক্ষা তাদের নিজেদের জীবনকে প্রিয় জ্ঞান করা। ’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ১২০)
নবীজি (সা.)-এর প্রতি অসম্মান হয়—এমন বাক্য ব্যবহার তো দূরের কথা, সম্মানের ন্যূনতম সম্ভাবনা আছে—এমন কোনো শব্দও ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, ‘রাইনা’ বোলো না, বরং ‘উনজুরনা’ (আমাদের প্রতি লক্ষ করুন) বোলো। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১০৪)
‘রাইনা’ শব্দের বহুল ব্যবহৃত অর্থ অভিভাবক। তবে তার একটি অর্থ রাখাল হওয়া তা রাসুলের জন্য ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
যারা রাসুল (সা.)-এর প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করেন, আল্লাহ তাদের আমলকে নিষ্ফল করে দেবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা নবীর কণ্ঠস্বরের ওপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু কোরো না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চ স্বরে কথা বলো তার সঙ্গে সেভাবে উচ্চ স্বরে কথা বোলো না; কেননা এতে তোমাদের কর্ম নিষ্ফর হয়ে যাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে। ’ (সুরা হুজরাত, আয়াত : ২)
যারা আল্লাহর রাসুলের সঙ্গে শত্রুতায় লিপ্ত হয় তাদের প্রতি মহান আল্লাহর অভিশাপ। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহ ও রাসুলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। ’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৭)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া
সংগ্রহঃ দৈনিক কালের কন্ঠ