Text Message

২০ মে ২০২১

৪৬ আহকাফ

  ৪৬-আহক্বাফ



(46:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(46:1)

حٰمٓۚ




অনুবাদ:    হা-মী-ম।




(46:2)

تَنْزِیْلُ الْكِتٰبِ مِنَ اللّٰهِ الْعَزِیْزِ الْحَكِیْمِ




অনুবাদ:    এই কিতাব মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। ''




(46:3)

مَا خَلَقْنَا السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ وَ مَا بَیْنَهُمَاۤ اِلَّا بِالْحَقِّ وَ اَجَلٍ مُّسَمًّى١ؕ وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا عَمَّاۤ اُنْذِرُوْا مُعْرِضُوْنَ




অনুবাদ:    আমি যমীন ও আসমান এবং দুয়ের মাঝে যা কিছু আছে যথার্থ সত্যের ভিত্তিতে বিশেষ সময় নির্ধারিত করে সৃষ্টি করেছি। '' কিন্তু যে বিষয়ে এই কাফেরদের সাবধান করা হয়েছে তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে আছে।




(46:4)

قُلْ اَرَءَیْتُمْ مَّا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اَرُوْنِیْ مَا ذَا خَلَقُوْا مِنَ الْاَرْضِ اَمْ لَهُمْ شِرْكٌ فِی السَّمٰوٰتِ١ؕ اِیْتُوْنِیْ بِكِتٰبٍ مِّنْ قَبْلِ هٰذَاۤ اَوْ اَثٰرَةٍ مِّنْ عِلْمٍ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    হে নবী, এদের বলে দাও, “তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ডেকে থাকো কখনো কি তাদের ব্যাপারে ভেবে দেখেছো? আমাকে একটু দেখাও তো পৃথিবীতে তারা কি সৃষ্টি করেছে কিংবা আসমানসমূহের সৃষ্টি ও ব্যবস্থাপনায় তাদের কী অংশ আছে। যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে ইতিপূর্বে প্রেরিত কোন কিতাব কিংবা জ্ঞানের কোন অবশিষ্টাংশ (এসব আকীদা-বিশ্বাসের সমর্থনে) তোমাদের কাছে থাকলে নিয়ে এসো।”''




(46:5)

وَ مَنْ اَضَلُّ مِمَّنْ یَّدْعُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَنْ لَّا یَسْتَجِیْبُ لَهٗۤ اِلٰى یَوْمِ الْقِیٰمَةِ وَ هُمْ عَنْ دُعَآئِهِمْ غٰفِلُوْنَ




অনুবাদ:    সেই ব্যক্তির চেয়ে বেশী পথভ্রষ্ট কে যে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন সব সত্তাকে ডাকে যারা কিয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিতে সক্ষম নয়। '' এমনকি আহ্বানকারী যে তাকে আহবান করছে সে বিষয়েও সে অজ্ঞ।''




(46:6)

وَ اِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوْا لَهُمْ اَعْدَآءً وَّ كَانُوْا بِعِبَادَتِهِمْ كٰفِرِیْنَ




অনুবাদ:    যখন সমস্ত মানুষকে সমবেত করা হবে তখন তারা নিজেদের আহ্বানকারীর দুশমন হয়ে যাবে এবং ইবাদতকারীদের অস্বীকার করবে।




(46:7)

وَ اِذَا تُتْلٰى عَلَیْهِمْ اٰیٰتُنَا بَیِّنٰتٍ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لِلْحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمْ١ۙ هٰذَا سِحْرٌ مُّبِیْنٌؕ




অনুবাদ:    যখন এসব লোকদের আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ শুনানো হয় এবং সত্য তাদের সামনে আত্মপ্রকাশ করে তখন এই কাফেররা বলে এতো পরিষ্কার যাদু।




(46:8)

اَمْ یَقُوْلُوْنَ افْتَرٰىهُ١ؕ قُلْ اِنِ افْتَرَیْتُهٗ فَلَا تَمْلِكُوْنَ لِیْ مِنَ اللّٰهِ شَیْئًا١ؕ هُوَ اَعْلَمُ بِمَا تُفِیْضُوْنَ فِیْهِ١ؕ كَفٰى بِهٖ شَهِیْدًۢا بَیْنِیْ وَ بَیْنَكُمْ١ؕ وَ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ




অনুবাদ:    তারা কি বলতে চায় যে রসূল নিজেই এসব রচনা করেছেন? তাদের বলে দাওঃ “আমি নিজেই যদি তা রচনা করে থাকি তাহলে কোন কিছু আমাকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করতে পারবে না। যেসব কথা তোমরা তৈরী করছো আল্লাহ তা ভাল করেই জানেন। আমার ও তোমাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য তিনিই যথেষ্ট। তিনি অতীব ক্ষমাশীল ও দয়ালু।




(46:9)

قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِّنَ الرُّسُلِ وَ مَاۤ اَدْرِیْ مَا یُفْعَلُ بِیْ وَ لَا بِكُمْ١ؕ اِنْ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوْحٰۤى اِلَیَّ وَ مَاۤ اَنَا اِلَّا نَذِیْرٌ مُّبِیْنٌ




অনুবাদ:    এদের বলো, ‘আমি কোন অভিনব রসূল নই। কাল তোমাদের সাথে কী আচরণ করা হবে এবং আমার সাথেই বা কী আচরণ করা হবে তা আমি জানি না। আমি তো কেবল সেই অহীর অনুসরণ করি যা আমার কাছে পাঠানো হয় এবং আমি সুস্পষ্ট সাবধানকারী ছাড়া আর কিছুই নই।




(46:10)

قُلْ اَرَءَیْتُمْ اِنْ كَانَ مِنْ عِنْدِ اللّٰهِ وَ كَفَرْتُمْ بِهٖ وَ شَهِدَ شَاهِدٌ مِّنْۢ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ عَلٰى مِثْلِهٖ فَاٰمَنَ وَ اسْتَكْبَرْتُمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ۠




অনুবাদ:    হে নবী (সা.) ! তাদের বলো, তোমরা কি কখনো একথা ভেবে দেখেছো, যদি এই বাণী আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসে থাকে আর তোমরা তা প্রত্যাখ্যান করো (তাহলে তোমাদের পরিণাম কী হবে)? এ রকম একটি বাণী সম্পর্কে তো বনী ইসরাঈলদের একজন সাক্ষী সাক্ষ্যও দিয়েছে। সে ঈমান এনেছে। কিন্তু তোমরা আত্মম্ভরিতায় ডুবে আছো। এ রকম জালেমদের আল্লাহ‌ হিদায়াত দান করেন না’।




(46:11)

وَ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَوْ كَانَ خَیْرًا مَّا سَبَقُوْنَاۤ اِلَیْهِ١ؕ وَ اِذْ لَمْ یَهْتَدُوْا بِهٖ فَسَیَقُوْلُوْنَ هٰذَاۤ اِفْكٌ قَدِیْمٌ




অনুবাদ:    যারা মানতে অস্বীকার করেছে তারা মু’মিনদের সম্পর্কে বলে, এই কিতাব মেনে নেয়া যদি কোন ভাল কাজ হতো তাহলে এ ব্যাপারে এসব লোক আমাদের চেয়ে অগ্রগামী হতে পারতো না। যেহেতু এরা তা থেকে হিদায়াত লাভ করেনি তাই তারা অবশ্যই বলবে, এটা পুরনো মিথ্যা।




(46:12)

وَ مِنْ قَبْلِهٖ كِتٰبُ مُوْسٰۤى اِمَامًا وَّ رَحْمَةً١ؕ وَ هٰذَا كِتٰبٌ مُّصَدِّقٌ لِّسَانًا عَرَبِیًّا لِّیُنْذِرَ الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا١ۖۗ وَ بُشْرٰى لِلْمُحْسِنِیْنَۚ




অনুবাদ:    অথচ এর পূর্বে মূসার কিতাব পথ-প্রদর্শক ও রহমত হয়ে এসেছিলো। আর এ কিতাবে তার সত্যায়নকারী, আরবী ভাষায় এসেছে যাতে জালেমদের সাবধান করে দেয় এবং সৎ আচরণ গ্রহণ-কারীদের সুসংবাদ দান করে।




(46:13)

اِنَّ الَّذِیْنَ قَالُوْا رَبُّنَا اللّٰهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوْا فَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَۚ




অনুবাদ:    যারা ঘোষণা করেছে আল্লাহই আমাদের রব, অতঃপর তার ওপরে স্থির থেকেছে নিশ্চয়ই তাদের জন্য কোন ভয় নেই এবং তারা মন মরা ও দুঃখ ভারাক্রান্ত হবে না।




(46:14)

اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا١ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    এ ধরনের সব মানুষ জান্নাতে যাবে। তারা সেখানে চিরদিন থাকবে, তাদের সেই কাজের বিনিময়ে যা তারা পৃথিবীতে করেছিলো।




(46:15)

وَ وَصَّیْنَا الْاِنْسَانَ بِوَالِدَیْهِ اِحْسٰنًا١ؕ حَمَلَتْهُ اُمُّهٗ كُرْهًا وَّ وَضَعَتْهُ كُرْهًا١ؕ وَ حَمْلُهٗ وَ فِصٰلُهٗ ثَلٰثُوْنَ شَهْرًا١ؕ حَتّٰۤى اِذَا بَلَغَ اَشُدَّهٗ وَ بَلَغَ اَرْبَعِیْنَ سَنَةً١ۙ قَالَ رَبِّ اَوْزِعْنِیْۤ اَنْ اَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِیْۤ اَنْعَمْتَ عَلَیَّ وَ عَلٰى وَالِدَیَّ وَ اَنْ اَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضٰىهُ وَ اَصْلِحْ لِیْ فِیْ ذُرِّیَّتِیْ١ؕۚ اِنِّیْ تُبْتُ اِلَیْكَ وَ اِنِّیْ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ




অনুবাদ:    আমি মানুষকে এই মর্মে নির্দেশনা দিয়েছি যে, তারা যেন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে। তার মা কষ্ট করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছিলো এবং কষ্ট করেই তাকে প্রসব করেছিলো। তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান করাতে ত্রিশ মাস লেগেছে। এমন কি যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌঁছেছে এবং তারপর চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয়েছে তখন বলেছেঃ “হে আমার রব, তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে যেসব নিয়ামত দান করেছো আমাকে তার শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক দাও। আর এমন সৎ কাজ করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ করো। আমার সন্তানদেরকে সৎ বানিয়ে আমাকে সুখ দাও। আমি তোমার কাছে তাওবা করছি। আমি নির্দেশের অনুগত (মুসলিম) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।”




(46:16)

اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ اَحْسَنَ مَا عَمِلُوْا وَ نَتَجَاوَزُ عَنْ سَیِّاٰتِهِمْ فِیْۤ اَصْحٰبِ الْجَنَّةِ١ؕ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذِیْ كَانُوْا یُوْعَدُوْنَ




অনুবাদ:    এ ধরনের মানুষের কাছে থেকে তাদের উত্তম আমলসমূহ আমি গ্রহণ করে থাকি, তাদের মন্দ কাজসমূহ ক্ষমা করে দিই। যে প্রতিশ্রুতি তাদের দিয়ে আসা হয়েছে তা ছিলো সত্য প্রতিশ্রুতি। সেই প্রতিশ্রুতি অনুসারে এরা জান্নাতী লোকদের অন্তর্ভূক্ত হবে।




(46:17)

وَ الَّذِیْ قَالَ لِوَالِدَیْهِ اُفٍّ لَّكُمَاۤ اَتَعِدٰنِنِیْۤ اَنْ اُخْرَجَ وَ قَدْ خَلَتِ الْقُرُوْنُ مِنْ قَبْلِیْ١ۚ وَ هُمَا یَسْتَغِیْثٰنِ اللّٰهَ وَیْلَكَ اٰمِنْ١ۖۗ اِنَّ وَعْدَ اللّٰهِ حَقٌّ١ۖۚ فَیَقُوْلُ مَا هٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِیْرُ الْاَوَّلِیْنَ




অনুবাদ:    আর যে ব্যক্তি তার পিতা মাতাকে বললো : “আহ! তোমরা বিরক্তির একশেষ করে দিলে। তোমরা কি আমাকে এ ভয় দেখাচ্ছো যে, মৃত্যুর পর আমি আবার কবর থেকে উত্তোলিত হবো? আমার পূর্বে তো আরো বহু মানুষ চলে গেছে। (তাদের কেউ তো জীবিত হয়ে ফিরে আসেনি) ।” মা-বাপ আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলেঃ “আরে হতভাগা, বিশ্বাস কর। আল্লাহর ওয়াদা সত্য।” কিন্তু সে বলে, “এসব তো প্রাচীনকালের বস্তাপচা কাহিনী”




(46:18)

اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ حَقَّ عَلَیْهِمُ الْقَوْلُ فِیْۤ اُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِمْ مِّنَ الْجِنِّ وَ الْاِنْسِ١ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا خٰسِرِیْنَ




অনুবাদ:    এরাই সেই সব লোক যাদের ব্যাপারে আযাবের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। এদের পূর্বে জ্বীন ও মানুষদের মধ্য থেকে (এই প্রকৃতির) যেসব ক্ষুদ্র দল অতীত হয়েছে এরাও গিয়ে তাদের সাথে মিলিত হবে। নিশ্চয়ই এরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার লোক।




(46:19)

وَ لِكُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوْا١ۚ وَ لِیُوَفِّیَهُمْ اَعْمَالَهُمْ وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    উভয় দলের প্রত্যেক মানুষের মর্যাদা হবে তাদের কর্ম অনুযায়ী। যাতে আল্লাহ‌ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেন। তাদের প্রতি মোটেই জুলুম করা হবে না।




(46:20)

وَ یَوْمَ یُعْرَضُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا عَلَى النَّارِ١ؕ اَذْهَبْتُمْ طَیِّبٰتِكُمْ فِیْ حَیَاتِكُمُ الدُّنْیَا وَ اسْتَمْتَعْتُمْ بِهَا١ۚ فَالْیَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُوْنِ بِمَا كُنْتُمْ تَسْتَكْبِرُوْنَ فِی الْاَرْضِ بِغَیْرِ الْحَقِّ وَ بِمَا كُنْتُمْ تَفْسُقُوْنَ۠




অনুবাদ:    অতঃপর এসব কাফেরদের যখন আগুনের সামনে এনে দাঁড় করানো হবে তখন তাদের বলা হবে, ‘তোমরা নিজের অংশের নিয়ামতসমূহ দুনিয়ার জীবনেই ভোগ করে নিঃশেষ করে ফেলেছো এবং তা ভোগ করেছো এবং যে নাফরমানি করেছো সে কারণে আজ তোমাদের লাঞ্ছনাকর আযাব দেয়া হবে’।




(46:21)

وَ اذْكُرْ اَخَا عَادٍ١ؕ اِذْ اَنْذَرَ قَوْمَهٗ بِالْاَحْقَافِ وَ قَدْ خَلَتِ النُّذُرُ مِنْۢ بَیْنِ یَدَیْهِ وَ مِنْ خَلْفِهٖۤ اَلَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّا اللّٰهَ١ؕ اِنِّیْۤ اَخَافُ عَلَیْكُمْ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍ




অনুবাদ:    এদেরকে ‘আদের ভাই (হূদ)- এর কাহিনী কিছুটা শুনাও যখন সে আহক্বাফ:ে তার কওমকে সতর্ক করেছিলো। -এ ধরনের সতর্ককারী পূর্বেও এসেছিলো এবং তার পরেও এসেছে- যে আল্লাহ ছাড়া আর কারো বন্দেগী করো না। তোমাদের ব্যাপারে আমার এক বড় ভয়ংকর দিনের আযাবের আশঙ্কা আছে।




(46:22)

قَالُوْۤا اَجِئْتَنَا لِتَاْفِكَنَا عَنْ اٰلِهَتِنَا١ۚ فَاْتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    তারা বললোঃ “তুমি কি এ জন্য এসেছো যে, আমাদের প্রতারিত করে আমাদের উপাস্যদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে দেবে? ঠিক আছে, তুমি যদি প্রকৃত সত্যবাদী হয়ে থাকো তাহলে আমাদের যে আযাবের ভীতি প্রদর্শন করে থাকো তা নিয়ে এসো।”




(46:23)

قَالَ اِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللّٰهِ١ۖ٘ وَ اُبَلِّغُكُمْ مَّاۤ اُرْسِلْتُ بِهٖ وَ لٰكِنِّیْۤ اَرٰىكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُوْنَ




অনুবাদ:    সে বললো : এ ব্যাপারের জ্ঞান শুধু আল্লাহরই আছে। যে পয়গাম দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়েছে আমি সেই পয়গাম তোমাদের কাছে পৌঁছিয়ে দিচ্ছি। তবে আমি দেখছি, তোমরা অজ্ঞতা প্রদর্শন করছো।




(46:24)

فَلَمَّا رَاَوْهُ عَارِضًا مُّسْتَقْبِلَ اَوْدِیَتِهِمْ١ۙ قَالُوْا هٰذَا عَارِضٌ مُّمْطِرُنَا١ؕ بَلْ هُوَ مَا اسْتَعْجَلْتُمْ بِهٖ١ؕ رِیْحٌ فِیْهَا عَذَابٌ اَلِیْمٌۙ




অনুবাদ:    পরে যখন তারা সেই আযাবকে তাদের উপত্যকার দিকে আসতে দেখলো, বলতে শুরু করলো : এই তো মেঘ, আমাদের ‘ওপর প্রচুর বারিবর্ষণ করবে- না’, এটা বরং সেই জিনিস যার জন্য তোমরা হাড়াহুড়া করছিলে। এটা প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস, যার মধ্যে কষ্টদায়ক আযাব এগিয়ে আসছে।




(46:25)

تُدَمِّرُ كُلَّ شَیْءٍۭ بِاَمْرِ رَبِّهَا فَاَصْبَحُوْا لَا یُرٰۤى اِلَّا مَسٰكِنُهُمْ١ؕ كَذٰلِكَ نَجْزِی الْقَوْمَ الْمُجْرِمِیْنَ




অনুবাদ:    তার রবের নির্দেশে প্রতিটি বস্তুকে ধ্বংস করে ফেলবে। অবশেষে তাদের অবস্থা দাঁড়ালো এই সে, তাদের বসবাসের স্থান ছাড়া সেখানে আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হতো না। এভাবেই আমি অপরাধীদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।




(46:26)

وَ لَقَدْ مَكَّنّٰهُمْ فِیْمَاۤ اِنْ مَّكَّنّٰكُمْ فِیْهِ وَ جَعَلْنَا لَهُمْ سَمْعًا وَّ اَبْصَارًا وَّ اَفْئِدَةً١ۖ٘ فَمَاۤ اَغْنٰى عَنْهُمْ سَمْعُهُمْ وَ لَاۤ اَبْصَارُهُمْ وَ لَاۤ اَفْئِدَتُهُمْ مِّنْ شَیْءٍ اِذْ كَانُوْا یَجْحَدُوْنَ١ۙ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ حَاقَ بِهِمْ مَّا كَانُوْا بِهٖ یَسْتَهْزِءُوْنَ۠




অনুবাদ:    আমি তাদেরকে এমন কিছু দিয়েছিলাম যা তোমাদের দেইনি। আমি তাদেরকে কান, চোখ, হৃদয়-মন সব কিছু দিয়েছিলাম। কিন্তু না সে কান তাদের কোন কাজে লেগেছে, না চোখ, না হৃদয়-মন। কারণ, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করতো। তারা সেই জিনিসের পাল্লায় পড়ে গেল যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো।




(46:27)

وَ لَقَدْ اَهْلَكْنَا مَا حَوْلَكُمْ مِّنَ الْقُرٰى وَ صَرَّفْنَا الْاٰیٰتِ لَعَلَّهُمْ یَرْجِعُوْنَ




অনুবাদ:    আমি তোমাদের আশে পাশের বহু এলাকার বহু সংখ্যক জনপদ ধ্বংস করেছি। আমি আমার আয়াতসমূহ পাঠিয়ে বার বার নানাভাবে তাদের বুঝিয়েছি, হয়তো তারা বিরত হবে।




(46:28)

فَلَوْ لَا نَصَرَهُمُ الَّذِیْنَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ قُرْبَانًا اٰلِهَةً١ؕ بَلْ ضَلُّوْا عَنْهُمْ١ۚ وَ ذٰلِكَ اِفْكُهُمْ وَ مَا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ




অনুবাদ:    কিন্তু আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব সত্তাকে তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম মনে করে উপাস্য বানিয়ে নিয়েছিলো তারা কেন তাদেরকে সাহায্য করলো না। বরং তারা তাদের থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলো। এটা ছিল তাদের মিথ্যা এবং মনগড়া আকীদা-বিশ্বাসের পরিণাম, যা তারা গড়ে নিয়েছিলো।




(46:29)

وَ اِذْ صَرَفْنَاۤ اِلَیْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ یَسْتَمِعُوْنَ الْقُرْاٰنَ١ۚ فَلَمَّا حَضَرُوْهُ قَالُوْۤا اَنْصِتُوْا١ۚ فَلَمَّا قُضِیَ وَ لَّوْا اِلٰى قَوْمِهِمْ مُّنْذِرِیْنَ




অনুবাদ:    (আর সেই ঘটনাও উল্লেখযোগ্য) যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে নিয়ে এসেছিলাম, যাতে তারা কুরআন শোনে। যখন তারা সেইখানে পৌঁছলো (যেখানে তুমি কুরআন পাঠ করছিলে) তখন পরস্পরকে বললো : চুপ করো। যখন তা পাঠ করা শেষ হলো তখন তারা সতর্ককারী হয়ে নিজ কওমের কাছে ফিরে গেল।




(46:30)

قَالُوْا یٰقَوْمَنَاۤ اِنَّا سَمِعْنَا كِتٰبًا اُنْزِلَ مِنْۢ بَعْدِ مُوْسٰى مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ یَهْدِیْۤ اِلَى الْحَقِّ وَ اِلٰى طَرِیْقٍ مُّسْتَقِیْمٍ




অনুবাদ:    তারা গিয়ে বললো : হে আমাদের কওমের লোকজন! আমরা এমন কিতাব শুনেছি যা মূসার পরে নাযিল করা হয়েছে। যা ইতিপূর্বেকার সমস্ত কিতাবকে সমর্থন করে, ন্যায় ও সঠিক পথপ্রদর্শন করে।




(46:31)

یٰقَوْمَنَاۤ اَجِیْبُوْا دَاعِیَ اللّٰهِ وَ اٰمِنُوْا بِهٖ یَغْفِرْ لَكُمْ مِّنْ ذُنُوْبِكُمْ وَ یُجِرْكُمْ مِّنْ عَذَابٍ اَلِیْمٍ




অনুবাদ:    হে আমাদের কওমের লোকেরা, আল্লাহর প্রতি আহ্বানকারীর আহবানে সাড়া দাও এবং তাঁর প্রতি ঈমান আনো। আল্লাহ‌ তোমাদের গোনাহ মাফ করবেন এবং কষ্টদায়ক আযাব থেকে রক্ষা করবেন।




(46:32)

وَ مَنْ لَّا یُجِبْ دَاعِیَ اللّٰهِ فَلَیْسَ بِمُعْجِزٍ فِی الْاَرْضِ وَ لَیْسَ لَهٗ مِنْ دُوْنِهٖۤ اَوْلِیَآءُ١ؕ اُولٰٓئِكَ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ




অনুবাদ:    আর যে আল্লাহর পক্ষ থেকে আহ্বানকারীর আহবানে সাড়া দেবে না সে না পৃথিবীতে এমন শক্তি রাখে যে আল্লাহকে নিরূপায় ও অক্ষম করে ফেলতে পারে, না তার এমন কোন সাহায্যকারী ও পৃষ্ঠপোষক আছে যে আল্লাহর হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে পারে। এসব লোক সুস্পষ্ট গোমরাহীর মধ্যে ডুবে আছে।




(46:33)

اَوَ لَمْ یَرَوْا اَنَّ اللّٰهَ الَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ وَ لَمْ یَعْیَ بِخَلْقِهِنَّ بِقٰدِرٍ عَلٰۤى اَنْ یُّحْیَِۧ الْمَوْتٰى١ؕ بَلٰۤى اِنَّهٗ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ




অনুবাদ:    যে আল্লাহ‌ এই পৃথিবী ও আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং এগুলো সৃষ্টি করতে যিনি পরিশ্রান্ত হননি তিনি অবশ্যই মৃতদের জীবিত করে তুলতে সক্ষম, এসব লোক কি তা বুঝে না? কেন পারবেন না, অবশ্যই তিনি সব কিছু করতে সক্ষম।




(46:34)

وَ یَوْمَ یُعْرَضُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا عَلَى النَّارِ١ؕ اَلَیْسَ هٰذَا بِالْحَقِّ١ؕ قَالُوْا بَلٰى وَ رَبِّنَا١ؕ قَالَ فَذُوْقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ




অনুবাদ:    যে দিন এসব কাফেরকে আগুনের সামনে হাজির করা হবে সেদিন তাদের জিজ্ঞেস করা হবে, “এটা কি বাস্তব ও সত্য নয়?” এরা বলবে “হ্যাঁ, আমাদের রবের শপথ, (এটা প্রকৃতই সত্য) ।” আল্লাহ বলবেন : “ঠিক আছে, তাহলে তোমরা যে অস্বীকার করতে তার পরিণতি হিসেবে এখন আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো।”




(46:35)

فَاصْبِرْ كَمَا صَبَرَ اُولُوا الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ وَ لَا تَسْتَعْجِلْ لَّهُمْ١ؕ كَاَنَّهُمْ یَوْمَ یَرَوْنَ مَا یُوْعَدُوْنَ١ۙ لَمْ یَلْبَثُوْۤا اِلَّا سَاعَةً مِّنْ نَّهَارٍ١ؕ بَلٰغٌ١ۚ فَهَلْ یُهْلَكُ اِلَّا الْقَوْمُ الْفٰسِقُوْنَ۠




অনুবাদ:    অতএব, হে নবী, দৃঢ়চেতা রসূলদের মত ধৈর্য ধারণ করো এবং তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না। এদেরকে এখন যে জিনিসের ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে যেদিন এরা তা দেখবে সেদিন এদের মনে হবে যেন পৃথিবীতে অল্প কিছুক্ষণের বেশি অবস্থান করেনি। কথা পৌঁছিয়ে দেয়া হয়েছে। অবাধ্য লোকেরা ছাড়া কি আর কেউ ধ্বংস হবে?


বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

পারিবারিক সুখ শান্তির জন্য দোয়া।

 আল কুরআন, ২৫  আল-ফুরকান, আয়াত: ৭৪ وَ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْیُنٍ وَّ ا...

জনপ্রিয় লেখা সমূহ