১৯-মারিয়াম
(19:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
(19:1)
كٓهٰیٰعٓصٓ۫ۚ
অনুবাদ: কা-ফ্ হা-ইয়া-আই-ন্-সা-দ।
(19:2)
ذِكْرُ رَحْمَتِ رَبِّكَ عَبْدَهٗ زَكَرِیَّاۖۚ
অনুবাদ: এটি তোমার রবের অনুগ্রহের বিবরণ, যা তিনি তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি করেছিলেন,
(19:3)
اِذْ نَادٰى رَبَّهٗ نِدَآءً خَفِیًّا
অনুবাদ: যখন সে চুপে চুপে নিজের রবকে ডাকলো।
(19:4)
قَالَ رَبِّ اِنِّیْ وَهَنَ الْعَظْمُ مِنِّیْ وَ اشْتَعَلَ الرَّاْسُ شَیْبًا وَّ لَمْ اَكُنْۢ بِدُعَآئِكَ رَبِّ شَقِیًّا
অনুবাদ: সে বললো, “হে আমার রব! আমার হাড়গুলো পর্যন্ত নরম হয়ে গেছে, মাথা বার্ধক্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে; হে পরোয়ারদিগার! আমি কখনো তোমার কাছে দোয়া চেয়ে ব্যর্থ হইনি।
(19:5)
وَ اِنِّیْ خِفْتُ الْمَوَالِیَ مِنْ وَّرَآءِیْ وَ كَانَتِ امْرَاَتِیْ عَاقِرًا فَهَبْ لِیْ مِنْ لَّدُنْكَ وَلِیًّاۙ
অনুবাদ: আমি আমার পর নিজের স্বজন-স্বগোত্রীয়দের অসদাচরণের আশঙ্কা করি এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। (তথাপি) তুমি নিজের বিশেষ অনুগ্রহ বলে আমাকে একজন উত্তরাধিকারী দান করো,
(19:6)
یَّرِثُنِیْ وَ یَرِثُ مِنْ اٰلِ یَعْقُوْبَ١ۖۗ وَ اجْعَلْهُ رَبِّ رَضِیًّا
অনুবাদ: যে আমার উত্তরাধিকারী হবে এবং ইয়াকুব বংশেরও উত্তরাধিকারী হবে। আর হে পরোয়ারদিগার! তাকে একজন পছন্দনীয় মানুষে পরিণত করো।”
(19:7)
یٰزَكَرِیَّاۤ اِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلٰمِ اِ۟سْمُهٗ یَحْیٰى١ۙ لَمْ نَجْعَلْ لَّهٗ مِنْ قَبْلُ سَمِیًّا
অনুবাদ: (জবাব দেয়া হলো) “হে যাকারিয়া! আমি তোমাকে একটি পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি, যার নাম হবে ইয়াহইয়া, এ নামে কোন লোক আমি এর আগে সৃষ্টি করিনি।
(19:8)
قَالَ رَبِّ اَنّٰى یَكُوْنُ لِیْ غُلٰمٌ وَّ كَانَتِ امْرَاَتِیْ عَاقِرًا وَّ قَدْ بَلَغْتُ مِنَ الْكِبَرِ عِتِیًّا
অনুবাদ: সে বললো, “হে আমার রব! আমার ছেলে হবে কেমন করে যখন আমার স্ত্রী বন্ধ্যা এবং আমি বুড়ো হয়ে শুকিয়ে গেছি?”
(19:9)
قَالَ كَذٰلِكَ١ۚ قَالَ رَبُّكَ هُوَ عَلَیَّ هَیِّنٌ وَّ قَدْ خَلَقْتُكَ مِنْ قَبْلُ وَ لَمْ تَكُ شَیْئًا
অনুবাদ: জবাব এলো, “এমনটিই হবে” তোমার রব বলেন, এ তো আমার জন্য সামান্য ব্যাপার মাত্র, এর আগে আমি তোমাকে সৃষ্টি করেছি যখন তুমি কিছুই ছিলে না!
(19:10)
قَالَ رَبِّ اجْعَلْ لِّیْۤ اٰیَةً١ؕ قَالَ اٰیَتُكَ اَلَّا تُكَلِّمَ النَّاسَ ثَلٰثَ لَیَالٍ سَوِیًّا
অনুবাদ: যাকারিয়া বললেন, “হে আমার রব! আমার জন্য নিদর্শন স্থির করে দাও।” বললেন, “তোমার জন্য নিদর্শন হচ্ছে তুমি পরপর তিনদিন লোকদের সাথে কথা বলতে পারবে না।”
(19:11)
فَخَرَجَ عَلٰى قَوْمِهٖ مِنَ الْمِحْرَابِ فَاَوْحٰۤى اِلَیْهِمْ اَنْ سَبِّحُوْا بُكْرَةً وَّ عَشِیًّا
অনুবাদ: কাজেই সে মিহরাব থেকে বের হয়ে নিজের সম্প্রদায়ের সামনে এলো এবং ইশারায় তাদেরকে সকাল-সাঁঝে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করার নির্দেশ দিল।
(19:12)
یٰیَحْیٰى خُذِ الْكِتٰبَ بِقُوَّةٍ١ؕ وَ اٰتَیْنٰهُ الْحُكْمَ صَبِیًّاۙ
অনুবাদ: “হে ইয়াহইয়া! আল্লাহর কিতাবকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো।” আমি তাকে শৈশবেই “হুকুম” দান করেছি
(19:13)
وَّ حَنَانًا مِّنْ لَّدُنَّا وَ زَكٰوةً١ؕ وَ كَانَ تَقِیًّاۙ
অনুবাদ: এবং নিজের পক্ষ থেকে হৃদয়ের কোমলতা ও পবিত্রতা দান করেছি, আর সে ছিল খুবই আল্লাহভীরু
(19:14)
وَّ بَرًّۢا بِوَالِدَیْهِ وَ لَمْ یَكُنْ جَبَّارًا عَصِیًّا
অনুবাদ: এবং নিজের পিতামাতার অধিকার সচেতন, সে উদ্ধত ও নাফরমান ছিল না।
(19:15)
وَ سَلٰمٌ عَلَیْهِ یَوْمَ وُلِدَ وَ یَوْمَ یَمُوْتُ وَ یَوْمَ یُبْعَثُ حَیًّا۠
অনুবাদ: শান্তি তার প্রতি যেদিন সে জন্ম লাভ করে এবং যেদিন সে মৃত্যুবরণ করে আর যেদিন তাকে জীবিত করে উঠানো হবে।
(19:16)
وَ اذْكُرْ فِی الْكِتٰبِ مَرْیَمَ١ۘ اِذِ انْتَبَذَتْ مِنْ اَهْلِهَا مَكَانًا شَرْقِیًّاۙ
অনুবাদ: আর (হে মুহাম্মাদ) ! এই কিতাবে মারয়ামের অবস্থা বর্ণনা করো। যখন সে নিজের লোকদের থেকে আলাদা হয়ে পূর্ব দিকে নির্জনবাসী হয়ে গিয়েছিল
(19:17)
فَاتَّخَذَتْ مِنْ دُوْنِهِمْ حِجَابًا١۪۫ فَاَرْسَلْنَاۤ اِلَیْهَا رُوْحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِیًّا
অনুবাদ: এবং পর্দা টেনে তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করে নিয়েছিল। এ অবস্থায় আমি তার কাছে নিজের রূহকে (অর্থাৎ ফেরেশতাকে) পাঠালাম এবং সে তার সামনে একটি পূর্ণ মানবিক কায়া নিয়ে হাযির হলো।
(19:18)
قَالَتْ اِنِّیْۤ اَعُوْذُ بِالرَّحْمٰنِ مِنْكَ اِنْ كُنْتَ تَقِیًّا
অনুবাদ: মারয়াম অকস্মাৎ বলে উঠলো, “তুমি যদি আল্লাহকে ভয় করে থাকো তাহলে আমি তোমার হাত থেকে করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি।”
(19:19)
قَالَ اِنَّمَاۤ اَنَا رَسُوْلُ رَبِّكِ١ۖۗ لِاَهَبَ لَكِ غُلٰمًا زَكِیًّا
অনুবাদ: সে বললো, “আমি তো তোমার রবের দূত এবং আমাকে পাঠানো হয়েছে এ জন্য যে, আমি তোমাকে একটি পবিত্র পুত্র দান করবো?”
(19:20)
قَالَتْ اَنّٰى یَكُوْنُ لِیْ غُلٰمٌ وَّ لَمْ یَمْسَسْنِیْ بَشَرٌ وَّ لَمْ اَكُ بَغِیًّا
অনুবাদ: মারয়াম বললো, “আমার পুত্র হবে কেমন করে যখন কোন পুরুষ আমাকে স্পর্শও করেনি এবং আমি ব্যভিচারিনীও নই?”
(19:21)
قَالَ كَذٰلِكِ١ۚ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَیَّ هَیِّنٌ١ۚ وَ لِنَجْعَلَهٗۤ اٰیَةً لِّلنَّاسِ وَ رَحْمَةً مِّنَّا١ۚ وَ كَانَ اَمْرًا مَّقْضِیًّا
অনুবাদ: ফেরেশতা বললো, “এমনটিই হবে, তোমার রব বলেন, এমনটি করা আমার জন্য অতি সহজ আর আমি এটা এ জন্য করবো যে, এই ছেলেকে আমি লোকদের জন্য একটি নির্দশন ও নিজের পক্ষ থেকে একটি অনুগ্রহে পরিণত করবো এবং এ কাজটি হবেই।”
(19:22)
فَحَمَلَتْهُ فَانْتَبَذَتْ بِهٖ مَكَانًا قَصِیًّا
অনুবাদ: মারয়াম এ সন্তানকে গর্ভে ধারণ করলো এবং এ গর্ভসহ একটি দূরবর্তী স্থানে চলে গেলো।
(19:23)
فَاَجَآءَهَا الْمَخَاضُ اِلٰى جِذْعِ النَّخْلَةِ١ۚ قَالَتْ یٰلَیْتَنِیْ مِتُّ قَبْلَ هٰذَا وَ كُنْتُ نَسْیًا مَّنْسِیًّا
অনুবাদ: তারপর প্রসব বেদনা তাকে একটি খেজুর গাছের তলে পৌঁছে দিল। সে বলতে থাকলো, “হায়! যদি আমি এর আগেই মরে যেতাম এবং আমার নাম-নিশানাই না থাকতো।”
(19:24)
فَنَادٰىهَا مِنْ تَحْتِهَاۤ اَلَّا تَحْزَنِیْ قَدْ جَعَلَ رَبُّكِ تَحْتَكِ سَرِیًّا
অনুবাদ: ফেরেশতা পায়ের দিক থেকে তাকে ডেকে বললো, “দুঃখ করো না, তোমার রব তোমার নীচে একটি নহর প্রবাহিত করেছেন
(19:25)
وَ هُزِّیْۤ اِلَیْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسٰقِطْ عَلَیْكِ رُطَبًا جَنِیًّا٘
অনুবাদ: এবং তুমি এ গাছের কাণ্ডটি একটু নাড়া দাও, তোমার ওপর তরতাজা খেজুর ঝরে পড়বে।
(19:26)
فَكُلِیْ وَ اشْرَبِیْ وَ قَرِّیْ عَیْنًا١ۚ فَاِمَّا تَرَیِنَّ مِنَ الْبَشَرِ اَحَدًا١ۙ فَقُوْلِیْۤ اِنِّیْ نَذَرْتُ لِلرَّحْمٰنِ صَوْمًا فَلَنْ اُكَلِّمَ الْیَوْمَ اِنْسِیًّاۚ
অনুবাদ: তারপর তুমি খাও, পান করো এবং নিজের চোখ জুড়াও। তারপর যদি তুমি মানুষের দেখা পাও তাহলে তাকে বলে দাও, আমি করুণাময়ের জন্য রোযার মানত মেনেছি, তাই আজ আমি কারোর সাথে কথা বলবো না।”
(19:27)
فَاَتَتْ بِهٖ قَوْمَهَا تَحْمِلُهٗ١ؕ قَالُوْا یٰمَرْیَمُ لَقَدْ جِئْتِ شَیْئًا فَرِیًّا
অনুবাদ: তারপর সে এই শিশুটি নিয়ে নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে এলো। লোকেরা বলতে লাগলো, “হে মারয়াম! তুমি তো মহা পাপ করে ফেলেছো।
(19:28)
یٰۤاُخْتَ هٰرُوْنَ مَا كَانَ اَبُوْكِ امْرَاَ سَوْءٍ وَّ مَا كَانَتْ اُمُّكِ بَغِیًّاۖۚ
অনুবাদ: হে হারুণের বোন! না তোমার বাপ কোন খারাপ লোক ছিল, না তোমার মা ছিল কোন ব্যভিচারিনী।” -(ক)
(19:29)
فَاَشَارَتْ اِلَیْهِ١ؕ قَالُوْا كَیْفَ نُكَلِّمُ مَنْ كَانَ فِی الْمَهْدِ صَبِیًّا
অনুবাদ: মারয়াম শিশুর প্রতি ইশারা করলো। লোকেরা বললো, “কোলের শিশুর সাথে আমরা কি কথা বলবো?
(19:30)
قَالَ اِنِّیْ عَبْدُ اللّٰهِ١ؕ۫ اٰتٰىنِیَ الْكِتٰبَ وَ جَعَلَنِیْ نَبِیًّاۙ
অনুবাদ: শিশু বলে উঠলো, “আমি আল্লাহর বান্দা, তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন ও নবী করেছেন
(19:31)
وَّ جَعَلَنِیْ مُبٰرَكًا اَیْنَ مَا كُنْتُ١۪ وَ اَوْصٰنِیْ بِالصَّلٰوةِ وَ الزَّكٰوةِ مَا دُمْتُ حَیًّا٢۪ۖ
অনুবাদ: এবং বরকতময় করেছেন যেখানেই আমি থাকি না কেন আর যতদিন আমি বেঁচে থাকবো ততদিন নামায ও যাকাত আদায়ের হুকুম দিয়েছেন।
(19:32)
وَّ بَرًّۢا بِوَالِدَتِیْ١٘ وَ لَمْ یَجْعَلْنِیْ جَبَّارًا شَقِیًّا
অনুবাদ: আর নিজের মায়ের হক আদায়কারী করেছেন, -(ক) এবং আমাকে অহংকারী ও হতভাগা করেননি।
(19:33)
وَ السَّلٰمُ عَلَیَّ یَوْمَ وُلِدْتُّ وَ یَوْمَ اَمُوْتُ وَ یَوْمَ اُبْعَثُ حَیًّا
অনুবাদ: শান্তি আমার প্রতি যখন আমি জন্ম নিয়েছি ও যখন আমি মরবো এবং যখন আমাকে জীবিত করে উঠানো হবে।”
(19:34)
ذٰلِكَ عِیْسَى ابْنُ مَرْیَمَ١ۚ قَوْلَ الْحَقِّ الَّذِیْ فِیْهِ یَمْتَرُوْنَ
অনুবাদ: এ হচ্ছে মারয়ামের পুত্র ঈসা এবং এ হচ্ছে তার সম্পর্কে সত্য কথা, যে ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ করছে।
(19:35)
مَا كَانَ لِلّٰهِ اَنْ یَّتَّخِذَ مِنْ وَّلَدٍ١ۙ سُبْحٰنَهٗ١ؕ اِذَا قَضٰۤى اَمْرًا فَاِنَّمَا یَقُوْلُ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُؕ
অনুবাদ: কাউকে সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়। তিনি পবিত্র সত্তা। তিনি যখন কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন তখন বলেন, হয়ে যাও, অমনি তা হয়ে যায়।
(19:36)
وَ اِنَّ اللّٰهَ رَبِّیْ وَ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوْهُ١ؕ هٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِیْمٌ
অনুবাদ: আর (ঈসা বলেছিল) আল্লাহ আমার রব এবং তোমাদেরও রব। কাজেই তোমরা তার বন্দেগী করো। এটিই সোজা পথ।
(19:37)
فَاخْتَلَفَ الْاَحْزَابُ مِنْۢ بَیْنِهِمْ١ۚ فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ كَفَرُوْا مِنْ مَّشْهَدِ یَوْمٍ عَظِیْمٍ
অনুবাদ: কিন্তু তারপর বিভিন্ন দল পরস্পর মতবিরোধ করতে থাকলো। যারা কুফরী করলো তাদের জন্য সে সময়টি হবে বড়ই ধ্বংসকর যখন তারা একটি মহাদিবস দেখবে।
(19:38)
اَسْمِعْ بِهِمْ وَ اَبْصِرْ١ۙ یَوْمَ یَاْتُوْنَنَا لٰكِنِ الظّٰلِمُوْنَ الْیَوْمَ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ
অনুবাদ: যখন তারা আমার সামনে হাযির হবে সেদিন তাদের কানও খুব স্পষ্ট শুনবে এবং তাদের চোখও খুব স্পষ্ট দেখবে কিন্তু আজ এই জালেমরা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে লিপ্ত।
(19:39)
وَ اَنْذِرْهُمْ یَوْمَ الْحَسْرَةِ اِذْ قُضِیَ الْاَمْرُ١ۘ وَ هُمْ فِیْ غَفْلَةٍ وَّ هُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ
অনুবাদ: হে মুহাম্মাদ! যখন এরা গাফেল রয়েছে এবং ঈমান আনছে না তখন এ অবস্থায় এদেরকে সেই দিনের ভয় দেখাও যেদিন ফায়সালা করে দেয়া হবে এবং পরিতাপ করা ছাড়া আর কোন গতি থাকবে না।
(19:40)
اِنَّا نَحْنُ نَرِثُ الْاَرْضَ وَ مَنْ عَلَیْهَا وَ اِلَیْنَا یُرْجَعُوْنَ۠
অনুবাদ: শেষ পর্যন্ত আমিই হবো পৃথিবী ও তার সমস্ত জিনিসের উত্তরাধিকারী এবং এ সবকিছু আমারই দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে।
(19:41)
وَ اذْكُرْ فِی الْكِتٰبِ اِبْرٰهِیْمَ١ؕ۬ اِنَّهٗ كَانَ صِدِّیْقًا نَّبِیًّا
অনুবাদ: আর এই কিতাবে ইবরাহীমের কথা বর্ণনা করো। নিঃসন্দেহে সে একজন সত্যনিষ্ঠ মানুষ এবং একজন নবী ছিল
(19:42)
اِذْ قَالَ لِاَبِیْهِ یٰۤاَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا یَسْمَعُ وَ لَا یُبْصِرُ وَ لَا یُغْنِیْ عَنْكَ شَیْئًا
অনুবাদ: (এদেরকে সেই সময়ের কথা একটু স্মরণ করিয়ে দাও) যখন সে নিজের বাপকে বললো, “আব্বাজান! আপনি কেন এমন জিনিসের ইবাদত করেন, যা শোনেও না দেখেও না এবং আপনার কোন কাজও করতে পারে না?
(19:43)
یٰۤاَبَتِ اِنِّیْ قَدْ جَآءَنِیْ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَمْ یَاْتِكَ فَاتَّبِعْنِیْۤ اَهْدِكَ صِرَاطًا سَوِیًّا
অনুবাদ: আব্বাজান! আমার কাছে এমন এক জ্ঞান এসেছে যা আপনার কাছে আসেনি, আপনি আমার অনুসরণ করে চলুন, আমি আপনাকে সোজাপথ দেখিয়ে দেবো।
(19:44)
یٰۤاَبَتِ لَا تَعْبُدِ الشَّیْطٰنَ١ؕ اِنَّ الشَّیْطٰنَ كَانَ لِلرَّحْمٰنِ عَصِیًّا
অনুবাদ: আব্বাজান! আপনি শয়তানের বন্দেগী করবেন না। শয়তান তো করুণাময়ের অবাধ্য।
(19:45)
یٰۤاَبَتِ اِنِّیْۤ اَخَافُ اَنْ یَّمَسَّكَ عَذَابٌ مِّنَ الرَّحْمٰنِ فَتَكُوْنَ لِلشَّیْطٰنِ وَلِیًّا
অনুবাদ: আব্বাজান! আমার ভয় হয় আপনি করুণাময়ের আযাবের শিকার হন কি না এবং শয়তানের সাথী হয়ে যান কি না।”
(19:46)
قَالَ اَرَاغِبٌ اَنْتَ عَنْ اٰلِهَتِیْ یٰۤاِبْرٰهِیْمُ١ۚ لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهِ لَاَرْجُمَنَّكَ وَ اهْجُرْنِیْ مَلِیًّا
অনুবাদ: বাপ বললো, “ইবরাহীম! তুমি কি আমার মাবুদদের থেকে বিমুখ হয়েছো? যদি তুমি বিরত না হও তাহলে আমি পাথরের আঘাতে তোমাকে শেষ করে দেবো। ব্যাস তুমি চিরদিনের জন্য আমার থেকে আলাদা হয়ে যাও।”
(19:47)
قَالَ سَلٰمٌ عَلَیْكَ١ۚ سَاَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّیْ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ بِیْ حَفِیًّا
অনুবাদ: ইবরাহীম বললো, “আপনাকে সালাম। আমি আমার রবের কাছে আপনাকে মাফ করে দেবার জন্য দোয়া করবো। -(ক) আমার রব আমার প্রতি বড়ই মেহেরবান।
(19:48)
وَ اَعْتَزِلُكُمْ وَ مَا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَ اَدْعُوْا رَبِّیْ١ۖ٘ عَسٰۤى اَلَّاۤ اَكُوْنَ بِدُعَآءِ رَبِّیْ شَقِیًّا
অনুবাদ: আমি আপনাদেরকে ত্যাগ করছি এবং আপনারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকেন তাদেরকেও, আমি তো আমার রবকেই ডাকবো। আশা করি আমি নিজের রবকে ডেকে ব্যর্থ হবো না।”
(19:49)
فَلَمَّا اعْتَزَلَهُمْ وَ مَا یَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ١ۙ وَهَبْنَا لَهٗۤ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ١ؕ وَ كُلًّا جَعَلْنَا نَبِیًّا
অনুবাদ: অতঃপর যখন সে তাদের থেকে এবং তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদত করতো তাদের থেকে আলাদা হয়ে গেলো এবং তখন আমি তাকে ইসহাক ও ইয়াকুবের মতো সন্তান দিলাম এবং প্রত্যেককে নবী করলাম।
(19:50)
وَ وَهَبْنَا لَهُمْ مِّنْ رَّحْمَتِنَا وَ جَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِیًّا۠
অনুবাদ: আর তাদেরকে নিজের অনুগ্রহ দান করলাম এবং তাদেরকে দিলাম যথার্থ নাম-যশ।
(19:51)
وَ اذْكُرْ فِی الْكِتٰبِ مُوْسٰۤى١٘ اِنَّهٗ كَانَ مُخْلَصًا وَّ كَانَ رَسُوْلًا نَّبِیًّا
অনুবাদ: আর এ কিতাবে মূসার কথা স্মরণ করো। সে ছিল এক বাছাই করা ব্যক্তি এবং ছিল রাসূল-নবী।
(19:52)
وَ نَادَیْنٰهُ مِنْ جَانِبِ الطُّوْرِ الْاَیْمَنِ وَ قَرَّبْنٰهُ نَجِیًّا
অনুবাদ: আমি তাকে তূরের ডান দিক থেকে ডাকলাম এবং গোপন আলাপের মাধ্যমে তাকে নৈকট্য দান করলাম।
(19:53)
وَ وَهَبْنَا لَهٗ مِنْ رَّحْمَتِنَاۤ اَخَاهُ هٰرُوْنَ نَبِیًّا
অনুবাদ: আর নিজ অনুগ্রহে তার ভাই হারুণকে নবী বানিয়ে তাকে সাহায্যকারী হিসেবে দিলাম।
(19:54)
وَ اذْكُرْ فِی الْكِتٰبِ اِسْمٰعِیْلَ١٘ اِنَّهٗ كَانَ صَادِقَ الْوَعْدِ وَ كَانَ رَسُوْلًا نَّبِیًّاۚ
অনুবাদ: আর এ কিতাবে ইসমাঈলের কথা স্মরণ করো। সে ছিল ওয়াদা পালনে সত্যনিষ্ঠ এবং ছিল রাসূল-নবী।
(19:55)
وَ كَانَ یَاْمُرُ اَهْلَهٗ بِالصَّلٰوةِ وَ الزَّكٰوةِ١۪ وَ كَانَ عِنْدَ رَبِّهٖ مَرْضِیًّا
অনুবাদ: সে নিজের পরিবারবর্গকে নামায ও যাকাতের হুকুম দিতো এবং নিজের রবের কাছে ছিল একজন পছন্দনীয় ব্যক্তি।
(19:56)
وَ اذْكُرْ فِی الْكِتٰبِ اِدْرِیْسَ١٘ اِنَّهٗ كَانَ صِدِّیْقًا نَّبِیًّاۗۙ
অনুবাদ: আর এ কিতাবে ইদরিসের কথা স্মরণ করো। সে একজন সত্যনিষ্ঠ মানুষ এবং একজন নবী।
(19:57)
وَّ رَفَعْنٰهُ مَكَانًا عَلِیًّا
অনুবাদ: আর তাকে আমি উঠিয়েছিলাম উন্নত স্থানে।
(19:58)
اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ اَنْعَمَ اللّٰهُ عَلَیْهِمْ مِّنَ النَّبِیّٖنَ مِنْ ذُرِّیَّةِ اٰدَمَ١ۗ وَ مِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوْحٍ١٘ وَّ مِنْ ذُرِّیَّةِ اِبْرٰهِیْمَ وَ اِسْرَآءِیْلَ١٘ وَ مِمَّنْ هَدَیْنَا وَ اجْتَبَیْنَا١ؕ اِذَا تُتْلٰى عَلَیْهِمْ اٰیٰتُ الرَّحْمٰنِ خَرُّوْا سُجَّدًا وَّ بُكِیًّا۩
সেজদা
অনুবাদ: এরা হচ্ছে এমন সব নবী, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেন আদম সন্তানদের মধ্য থেকে এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম তাদের বংশধরদের থেকে, আর ইবরাহীমের বংশধরদের থেকে ও ইসরাঈলের বংশধরদের থেকে, আর এরা ছিল তাদের মধ্য থেকে যাদেরকে আমি সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছিলাম এবং বাছাই করে নিয়েছিলাম। এদের অবস্থা এই ছিল যে, যখন করুণাময়ের আয়াত এদেরকে শুনানো হতো তখন কান্নারত অবস্থায় সিজদায় লুটিয়ে পড়তো।
(19:59)
فَخَلَفَ مِنْۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ اَضَاعُوا الصَّلٰوةَ وَ اتَّبَعُوا الشَّهَوٰتِ فَسَوْفَ یَلْقَوْنَ غَیًّاۙ
অনুবাদ: তারপর এদের পর এমন নালায়েক লোকেরা এদের স্থলাভিষিক্ত হলো যারা নামায নষ্ট করলো এবং প্রবৃত্তির কামনার দাসত্ব করলো। তাই শীঘ্রই তারা গোমরাহীর পরিণামের মুখোমুখি হবে।
(19:60)
اِلَّا مَنْ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَاُولٰٓئِكَ یَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ وَ لَا یُظْلَمُوْنَ شَیْئًاۙ
অনুবাদ: তবে যারা তাওবা করবে, ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের সামান্যতম অধিকারও ক্ষুণ্ন হবে না।
(19:61)
جَنّٰتِ عَدْنِ اِ۟لَّتِیْ وَعَدَ الرَّحْمٰنُ عِبَادَهٗ بِالْغَیْبِ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ وَعْدُهٗ مَاْتِیًّا
অনুবাদ: তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত, যার প্রতিশ্রুতি করুণাময় নিজের বান্দাদের কাছে অদৃশ্য পন্থায় দিয়ে রেখেছেন। আর অবশ্যই এ প্রতিশ্রুতি পালিত হবেই।
(19:62)
لَا یَسْمَعُوْنَ فِیْهَا لَغْوًا اِلَّا سَلٰمًا١ؕ وَ لَهُمْ رِزْقُهُمْ فِیْهَا بُكْرَةً وَّ عَشِیًّا
অনুবাদ: সেখানে তারা কোন বাজে কথা শুনবে না, যা কিছুই শুনবে ঠিকই শুনবে। আর সকাল-সন্ধ্যায় তারা অনবরত নিজেদের রিযিক লাভ করতে থাকবে।
(19:63)
تِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِیْ نُوْرِثُ مِنْ عِبَادِنَا مَنْ كَانَ تَقِیًّا
অনুবাদ: এ হচ্ছে সেই জান্নাত, যার উত্তরাধিকারী করবো আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মুত্তাকীদেরকে।
(19:64)
وَ مَا نَتَنَزَّلُ اِلَّا بِاَمْرِ رَبِّكَ١ۚ لَهٗ مَا بَیْنَ اَیْدِیْنَا وَ مَا خَلْفَنَا وَ مَا بَیْنَ ذٰلِكَ١ۚ وَ مَا كَانَ رَبُّكَ نَسِیًّاۚ
অনুবাদ: হে মুহাম্মাদ! আমি আপনার রবের হুকুম ছাড়া অবতরণ করি না। যা কিছু আমাদের সামনে ও যা কিছু পেছনে এবং যা কিছু এর মাঝখানে আছে তার প্রত্যেকটি জিনিসের তিনিই মালিক এবং আপনার রব ভুলে যান না।
(19:65)
رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ مَا بَیْنَهُمَا فَاعْبُدْهُ وَ اصْطَبِرْ لِعِبَادَتِهٖ١ؕ هَلْ تَعْلَمُ لَهٗ سَمِیًّا۠
অনুবাদ: তিনি আসমান ও যমীনের এবং এ দূয়ের মাঝখানে যা কিছু আছে সবকিছুর রব। কাজেই আপনি তার বন্দেগী করুন এবং তার বন্দেগীর ওপর অবিচল থাকুন। আপনার জানা মতে তাঁর সমকক্ষ কোন সত্তা আছে কি?
(19:66)
وَ یَقُوْلُ الْاِنْسَانُ ءَاِذَا مَا مِتُّ لَسَوْفَ اُخْرَجُ حَیًّا
অনুবাদ: মানুষ বলে, সত্যিই কি যখন আমি মরে যবো তখন আবার আমাকে জীবিত করে বের করে আনা হবে?
(19:67)
اَوَ لَا یَذْكُرُ الْاِنْسَانُ اَنَّا خَلَقْنٰهُ مِنْ قَبْلُ وَ لَمْ یَكُ شَیْئًا
অনুবাদ: মানুষের কি স্মরণ হয় না, আমি আগেই তাকে সৃষ্টি করেছি যখন সে কিছুই ছিল না?
(19:68)
فَوَرَبِّكَ لَنَحْشُرَنَّهُمْ وَ الشَّیٰطِیْنَ ثُمَّ لَنُحْضِرَنَّهُمْ حَوْلَ جَهَنَّمَ جِثِیًّاۚ
অনুবাদ: তোমার রবের কসম, আমি নিশ্চয়ই তাদেরকে এবং তাদের সাথে শয়তানদেরকেও ঘেরাও করে আনবো, তারপর তাদেরকে এনে জাহান্নামের চারদিকে নতজানু করে ফেলে দেবো।
(19:69)
ثُمَّ لَنَنْزِعَنَّ مِنْ كُلِّ شِیْعَةٍ اَیُّهُمْ اَشَدُّ عَلَى الرَّحْمٰنِ عِتِیًّاۚ
অনুবাদ: তারপর প্রত্যেক দলের মধ্যে যে ব্যক্তি করুণাময়ের বেশী অবাধ্য ও বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল তাকে ছেঁটে বের করে আনবো।
(19:70)
ثُمَّ لَنَحْنُ اَعْلَمُ بِالَّذِیْنَ هُمْ اَوْلٰى بِهَا صِلِیًّا
অনুবাদ: তারপর আমি জানি তাদের মধ্য থেকে কারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবার বেশী হকদার।
(19:71)
وَ اِنْ مِّنْكُمْ اِلَّا وَارِدُهَا١ۚ كَانَ عَلٰى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِیًّاۚ
অনুবাদ: তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে জাহান্নাম অতিক্রম করবে না। এতো একটা স্থিরীকৃত ব্যাপার, যা সম্পন্ন করা তোমার রবের দায়িত্ব।
(19:72)
ثُمَّ نُنَجِّی الَّذِیْنَ اتَّقَوْا وَّ نَذَرُ الظّٰلِمِیْنَ فِیْهَا جِثِیًّا
অনুবাদ: তারপর যারা (দুনিয়ায়) মুত্তাকী ছিল তাদেরকে আমি বাঁচিয়ে নেবো এবং জালেমদেরকে তার মধ্যে নিক্ষিপ্ত অবস্থায় রেখে দেবো।
(19:73)
وَ اِذَا تُتْلٰى عَلَیْهِمْ اٰیٰتُنَا بَیِّنٰتٍ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا١ۙ اَیُّ الْفَرِیْقَیْنِ خَیْرٌ مَّقَامًا وَّ اَحْسَنُ نَدِیًّا
অনুবাদ: এদেরকে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াত শুনানো হয় তখন অস্বীকারকারীরা ঈমানদারদেরকে বলে, “বলো, আমাদের দু’দলের মধ্যে কে ভালো অবস্থায় আছে এবং কার মজলিসগুলো বেশী জাঁকালো?”
(19:74)
وَ كَمْ اَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِّنْ قَرْنٍ هُمْ اَحْسَنُ اَثَاثًا وَّ رِءْیًا
অনুবাদ: অথচ এদের আগে আমি এমন কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি যারা এদের চেয়ে বেশী সাজ-সরঞ্জামের অধিকারী ছিল এবং বাহ্যিক শান-শওকতের দিক দিয়েও ছিল এদের চেয়ে বেশী অগ্রসর।
(19:75)
قُلْ مَنْ كَانَ فِی الضَّلٰلَةِ فَلْیَمْدُدْ لَهُ الرَّحْمٰنُ مَدًّا١ۚ۬ حَتّٰۤى اِذَا رَاَوْا مَا یُوْعَدُوْنَ اِمَّا الْعَذَابَ وَ اِمَّا السَّاعَةَ١ؕ فَسَیَعْلَمُوْنَ مَنْ هُوَ شَرٌّ مَّكَانًا وَّ اَضْعَفُ جُنْدًا
অনুবাদ: এদেরকে বলো, যে ব্যক্তি গোমরাহীতে লিপ্ত হয় করুণাময় তাকে ঢিল দিতে থাকেন, এমনকি এ ধরনের লোকেরা যখন এমন জিনিস দেখে নেয় যার ওয়াদা তাদের সাথে করা হয়- তা আল্লাহর আযাব হোক বা কিয়ামতের সময়- তখন তারা জানতে পারে, কার অবস্থা খারাপ এবং কার দল দুর্বল!
(19:76)
وَ یَزِیْدُ اللّٰهُ الَّذِیْنَ اهْتَدَوْا هُدًى١ؕ وَ الْبٰقِیٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَیْرٌ عِنْدَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَّ خَیْرٌ مَّرَدًّا
অনুবাদ: বিপরীত পক্ষে যারা সত্য-সঠিক পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদেরকে সঠিক পথে চলার ক্ষেত্রে উন্নতি দান করেন এবং স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের প্রতিদান ও পরিণামের দিক দিয়ে ভালো।
(19:77)
اَفَرَءَیْتَ الَّذِیْ كَفَرَ بِاٰیٰتِنَا وَ قَالَ لَاُوْتَیَنَّ مَالًا وَّ وَلَدًاؕ
অনুবাদ: তারপর তুমি কি দেখেছো সে লোককে যে আমার আয়াতসমূহ মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং বলে, আমাকে তো ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করা হতে থাকবেই?
(19:78)
اَطَّلَعَ الْغَیْبَ اَمِ اتَّخَذَ عِنْدَ الرَّحْمٰنِ عَهْدًاۙ
অনুবাদ: সে কি গায়েবের খবর জেনে গেছে অথবা সে রহমানের থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে রেখেছে?
(19:79)
كَلَّا١ؕ سَنَكْتُبُ مَا یَقُوْلُ وَ نَمُدُّ لَهٗ مِنَ الْعَذَابِ مَدًّاۙ
অনুবাদ: -কখখনো নয়, সে যা কিছু বলছে তা আমি লিখে নেবো। এবং তার জন্য আযাবের পসরা আরো বাড়িয়ে দেবো।
(19:80)
وَّ نَرِثُهٗ مَا یَقُوْلُ وَ یَاْتِیْنَا فَرْدًا
অনুবাদ: যে সাজ-সরঞ্জাম ও জনবলের কথা এ ব্যক্তি বলছে তা সব আমার কাছেই থেকে যাবে এবং সে একাকী আমার সামনে হাযির হয়ে যাবে।
(19:81)
وَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اٰلِهَةً لِّیَكُوْنُوْا لَهُمْ عِزًّاۙ
অনুবাদ: এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেদের কিছু খোদা বানিয়ে রেখেছে, যাতে তারা এদের পৃষ্ঠপোষক হয়।
(19:82)
كَلَّا١ؕ سَیَكْفُرُوْنَ بِعِبَادَتِهِمْ وَ یَكُوْنُوْنَ عَلَیْهِمْ ضِدًّا۠
অনুবাদ: কেউ পৃষ্ঠপোষক হবে না। তারা সবাই এদের ইবাদতের কথা অস্বীকার করবে এবং উল্টো এদের বিরোধী হয়ে পড়বে।
(19:83)
اَلَمْ تَرَ اَنَّاۤ اَرْسَلْنَا الشَّیٰطِیْنَ عَلَى الْكٰفِرِیْنَ تَؤُزُّهُمْ اَزًّاۙ
অনুবাদ: তুমি কি দেখো না আমি এ সত্য অস্বীকারকারীদের উপর শয়তানদের ছেড়ে রেখেছি, যারা এদেরকে (সত্য বিরোধিতায়) খুব বেশী করে প্ররোচনা দিচ্ছে?
(19:84)
فَلَا تَعْجَلْ عَلَیْهِمْ١ؕ اِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّاۚ
অনুবাদ: বেশ, তাহলে এখন এদের উপর আযাব নাযিল করার জন্য অস্থির হয়ো না, আমি এদের দিন গণনা করছি।
(19:85)
یَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِیْنَ اِلَى الرَّحْمٰنِ وَفْدًاۙ
অনুবাদ: সেদিনটি অচিরেই আসবে যেদিন মুত্তাকীদেরকে মেহমান হিসেবে রহমানের সামনে পেশ করবো
(19:86)
وَّ نَسُوْقُ الْمُجْرِمِیْنَ اِلٰى جَهَنَّمَ وِرْدًاۘ
অনুবাদ: এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত পশুর মতো জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবো।
(19:87)
لَا یَمْلِكُوْنَ الشَّفَاعَةَ اِلَّا مَنِ اتَّخَذَ عِنْدَ الرَّحْمٰنِ عَهْدًاۘ
অনুবাদ: সে সময় যে রহমানের কাছ থেকে পরোয়ানা হাসিল করেছে তার ছাড়া আর কারো সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না।
(19:88)
وَ قَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمٰنُ وَلَدًاؕ
অনুবাদ: তারা বলে, রহমান কাউকে পুত্র গ্রহণ করেছেন-
(19:89)
لَقَدْ جِئْتُمْ شَیْئًا اِدًّاۙ
অনুবাদ: মারাত্মক বাজে কথা যা তোমরা তৈরী করে এনেছো।
(19:90)
تَكَادُ السَّمٰوٰتُ یَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَ تَنْشَقُّ الْاَرْضُ وَ تَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّاۙ
অনুবাদ: আকাশ ফেটে পড়ার, পৃথিবী বিদীর্ণ হবার এবং পাহাড় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে
(19:91)
اَنْ دَعَوْا لِلرَّحْمٰنِ وَلَدًاۚ
অনুবাদ: এজন্য যে, লোকেরা রহমানের জন্য সন্তান থাকার দাবী করেছে!
(19:92)
وَ مَا یَنْۢبَغِیْ لِلرَّحْمٰنِ اَنْ یَّتَّخِذَ وَلَدًاؕ
অনুবাদ: কাউকে সন্তান গ্রহণ করা রহমানের জন্য শোভন নয়।
(19:93)
اِنْ كُلُّ مَنْ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ اِلَّاۤ اٰتِی الرَّحْمٰنِ عَبْدًاؕ
অনুবাদ: পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যা কিছু আছে সবই তাঁর সামনে বান্দা হিসেবে উপস্থিত হবে।
(19:94)
لَقَدْ اَحْصٰىهُمْ وَ عَدَّهُمْ عَدًّاؕ
অনুবাদ: সবাইকে তিনি ঘিরে রেখেছেন এবং তিনি সবাইকে গণনা করে রেখেছেন।
(19:95)
وَ كُلُّهُمْ اٰتِیْهِ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ فَرْدًا
অনুবাদ: সবাই কিয়ামতের দিন একাকী অবস্থায় তাঁর সামনে আসবে।
(19:96)
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ سَیَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمٰنُ وُدًّا
অনুবাদ: নিঃসন্দেহে যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে শীঘ্রই রহমান তাদের জন্য অন্তরে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেবেন।
(19:97)
فَاِنَّمَا یَسَّرْنٰهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ الْمُتَّقِیْنَ وَ تُنْذِرَ بِهٖ قَوْمًا لُّدًّا
অনুবাদ: বস্তুত হে মুহাম্মাদ! এ বাণীকে আমি সহজ করে তোমার ভাষায় এজন্য নাযিল করেছি যাতে তুমি মুত্তাকীদেরকে সুখবর দিতে ও হঠকারীদেরকে ভয় দেখাতে পারো।
(19:98)
وَ كَمْ اَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِّنْ قَرْنٍ١ؕ هَلْ تُحِسُّ مِنْهُمْ مِّنْ اَحَدٍ اَوْ تَسْمَعُ لَهُمْ رِكْزًا۠
অনুবাদ: এদের পূর্বে আমি কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি। আজ কি কোথাও তাদের নাম-নিশানা দেখতে পাও অথবা কোথাও শুনতে পাও তাদের ক্ষীণতম আওয়াজ?