৩১-লুকমান
(31:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
(31:1)
الٓمّٓۚ
অনুবাদ: আলিফ লাম মীম।
(31:2)
تِلْكَ اٰیٰتُ الْكِتٰبِ الْحَكِیْمِۙ
অনুবাদ: এগুলো জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত।
(31:3)
هُدًى وَّ رَحْمَةً لِّلْمُحْسِنِیْنَۙ
অনুবাদ: পথনির্দেশনা ও অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের জন্য
(31:4)
الَّذِیْنَ یُقِیْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَ یُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ هُمْ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ یُوْقِنُوْنَؕ
অনুবাদ: যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাতে বিশ্বাস করে।
(31:5)
اُولٰٓئِكَ عَلٰى هُدًى مِّنْ رَّبِّهِمْ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
অনুবাদ: এরাই তাদের রবের পক্ষ থেকে সঠিক পথে রয়েছে এবং এরাই সাফল্য লাভ করবে।
(31:6)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّشْتَرِیْ لَهْوَ الْحَدِیْثِ لِیُضِلَّ عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ بِغَیْرِ عِلْمٍ١ۖۗ وَّ یَتَّخِذَهَا هُزُوًا١ؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِیْنٌ
অনুবাদ: আর মানুষদেরই মধ্যে এমনও কেউ আছে, যে মনোমুগ্ধকর কথা কিনে আনে লোকদেরকে জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য এবং এ পথের আহ্বানকে হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়। এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব।
(31:7)
وَ اِذَا تُتْلٰى عَلَیْهِ اٰیٰتُنَا وَلّٰى مُسْتَكْبِرًا كَاَنْ لَّمْ یَسْمَعْهَا كَاَنَّ فِیْۤ اُذُنَیْهِ وَقْرًا١ۚ فَبَشِّرْهُ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍ
অনুবাদ: তাকে যখন আমার আয়াত শুনানো হয় তখন সে বড়ই দর্পভরে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে তা শুনেইনি, যেন তার কান কালা। বেশ, সুখবর শুনিয়ে দাও তাকে একটি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের।
(31:8)
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَهُمْ جَنّٰتُ النَّعِیْمِۙ
অনুবাদ: তবে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত,
(31:9)
خٰلِدِیْنَ فِیْهَا١ؕ وَعْدَ اللّٰهِ حَقًّا١ؕ وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ
অনুবাদ: যেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এ হচ্ছে আল্লাহর অকাট্য প্রতিশ্রুতি এবং তিনি পরাক্রমশালী ও জ্ঞানময়।
(31:10)
خَلَقَ السَّمٰوٰتِ بِغَیْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا وَ اَلْقٰى فِی الْاَرْضِ رَوَاسِیَ اَنْ تَمِیْدَ بِكُمْ وَ بَثَّ فِیْهَا مِنْ كُلِّ دَآبَّةٍ١ؕ وَ اَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَنْۢبَتْنَا فِیْهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ كَرِیْمٍ
অনুবাদ: তিনি আকাশসমূহ সৃষ্টি করেছেন স্তম্ভ ছাড়াই, যা তোমরা দেখতে পাও। তিনি পৃথিবীতে পাহাড় গেড়ে দিয়েছেন, যাতে তা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে। তিনি সব ধরনের জীব-জন্তু পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি এবং জমিতে নানা ধরনের উত্তম জিনিস উৎপন্ন করি।
(31:11)
هٰذَا خَلْقُ اللّٰهِ فَاَرُوْنِیْ مَا ذَا خَلَقَ الَّذِیْنَ مِنْ دُوْنِهٖ١ؕ بَلِ الظّٰلِمُوْنَ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ۠
অনুবাদ: এতো হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টি, এখন আমাকে একটু দেখাও তো দেখি অন্যেরা কি সৃষ্টি করেছে? - আসল কথা হচ্ছে এ জালেমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে।
(31:12)
وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا لُقْمٰنَ الْحِكْمَةَ اَنِ اشْكُرْ لِلّٰهِ١ؕ وَ مَنْ یَّشْكُرْ فَاِنَّمَا یَشْكُرُ لِنَفْسِهٖ١ۚ وَ مَنْ كَفَرَ فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِیٌّ حَمِیْدٌ
অনুবাদ: আমি লুকমানকে দান করেছিলাম সূক্ষ্মজ্ঞান। যাতে সে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয়। যে ব্যক্তি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে তার কৃতজ্ঞতা হবে তার নিজেরই জন্য লাভজনক। আর যে ব্যক্তি কুফরী করবে, সে ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ অমুখাপেক্ষী এবং নিজে নিজেই প্রশংসিত।
(31:13)
وَ اِذْ قَالَ لُقْمٰنُ لِابْنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللّٰهِ١ؔؕ اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ
অনুবাদ: স্মরণ করো যখন লুকমান নিজের ছেলেকে উপদেশ দিচ্ছিল, সে বললো, “হে পুত্র! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। যথার্থই শিরক অনেক বড় জুলুম।
(31:14)
وَ وَصَّیْنَا الْاِنْسَانَ بِوَالِدَیْهِ١ۚ حَمَلَتْهُ اُمُّهٗ وَهْنًا عَلٰى وَهْنٍ وَّ فِصٰلُهٗ فِیْ عَامَیْنِ اَنِ اشْكُرْ لِیْ وَ لِوَالِدَیْكَ١ؕ اِلَیَّ الْمَصِیْرُ
অনুবাদ: -আর প্রকৃতপক্ষে আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার হক চিনে নেবার জন্য নিজেই তাকিদ করেছি। তার মা দুর্বলতা সহ্য করে তাকে নিজের গর্ভে ধারণ করে এবং দু’বছর লাগে তার দুধ ছাড়তে। (এ জন্য আমি তাকে উপদেশ দিয়েছি) আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং নিজের পিতা-মাতার প্রতিও, আমার দিকেই তোমাকে ফিরে আসতে হবে।
(31:15)
وَ اِنْ جَاهَدٰكَ عَلٰۤى اَنْ تُشْرِكَ بِیْ مَا لَیْسَ لَكَ بِهٖ عِلْمٌ١ۙ فَلَا تُطِعْهُمَا وَ صَاحِبْهُمَا فِی الدُّنْیَا مَعْرُوْفًا١٘ وَّ اتَّبِعْ سَبِیْلَ مَنْ اَنَابَ اِلَیَّ١ۚ ثُمَّ اِلَیَّ مَرْجِعُكُمْ فَاُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: কিন্তু যদি তারা তোমার প্রতি আমার সাথে এমন কাউকে শরীক করার জন্য চাপ দেয় যাকে তুমি জানো না, তাহলে তুমি তাদের কথা কখনোই মেনে নিয়ো না। দুনিয়ায় তাদের সাথে সদাচার করতে থাকো কিন্তু মেনে চলো সে ব্যক্তির পথ যে আমার দিকে ফিরে এসেছে। তারপর তোমাদের সবাইকে ফিরে আসতে হবে আমারই দিকে। সে সময় তোমরা কেমন কাজ করছিলে তা আমি তোমাদের জানিয়ে দেবো।
(31:16)
یٰبُنَیَّ اِنَّهَاۤ اِنْ تَكُ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ فَتَكُنْ فِیْ صَخْرَةٍ اَوْ فِی السَّمٰوٰتِ اَوْ فِی الْاَرْضِ یَاْتِ بِهَا اللّٰهُ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَطِیْفٌ خَبِیْرٌ
অনুবাদ: (আর লুকমান বলেছিল) “হে পুত্র! কোন জিনিস যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয় এবং তা লুকিয়ে থাকে পাথরের মধ্যে, আকাশে বা পৃথিবীতে কোথাও, তাহলে আল্লাহ তা বের করে নিয়ে আসবেন। তিনি সূক্ষ্মদর্শী এবং সবকিছু জানেন।
(31:17)
یٰبُنَیَّ اَقِمِ الصَّلٰوةَ وَ اْمُرْ بِالْمَعْرُوْفِ وَ انْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَ اصْبِرْ عَلٰى مَاۤ اَصَابَكَ١ؕ اِنَّ ذٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْاُمُوْرِۚ
অনুবাদ: হে পুত্র! নামায কায়েম করো, সৎকাজের হুকুম দাও, খারাপ কাজে নিষেধ করো এবং যা কিছু বিপদই আসুক সেজন্য সবর করো। একথাগুলোর জন্য বড়ই তাকিদ করা হয়েছে।
(31:18)
وَ لَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَ لَا تَمْشِ فِی الْاَرْضِ مَرَحًا١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُوْرٍۚ
অনুবাদ: আর মানুষের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কথা বলো না, পৃথিবীর বুকে চলো না উদ্ধত ভঙ্গিতে, আল্লাহ পছন্দ করেন না আত্মম্ভরী ও অহংকারীকে।
(31:19)
وَ اقْصِدْ فِیْ مَشْیِكَ وَ اغْضُضْ مِنْ صَوْتِكَ١ؕ اِنَّ اَنْكَرَ الْاَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِیْرِ۠
অনুবাদ: নিজের চলনে ভারসাম্য আনো এবং নিজের আওয়াজ নীচু করো। সব আওয়াজের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হচ্ছে গাধার আওয়াজ।
(31:20)
اَلَمْ تَرَوْا اَنَّ اللّٰهَ سَخَّرَ لَكُمْ مَّا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِ وَ اَسْبَغَ عَلَیْكُمْ نِعَمَهٗ ظَاهِرَةً وَّ بَاطِنَةً١ؕ وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یُّجَادِلُ فِی اللّٰهِ بِغَیْرِ عِلْمٍ وَّ لَا هُدًى وَّ لَا كِتٰبٍ مُّنِیْرٍ
অনুবাদ: তোমরা কি দেখো না, আল্লাহ যমীন ও আসমানের সমস্ত জিনিস তোমাদের জন্য অনুগত ও বশীভুত করে রেখেছেন এবং তোমাদের প্রতি তার প্রকাশ্য ও গোপন নিয়ামতসমূহ সম্পূর্ণ করে দিয়েছেন? এরপর অবস্থা হচ্ছে এই যে, মানুষের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে, তাদের নেই কোনো প্রকার জ্ঞান, পথনির্দেশনা বা আলোক প্রদর্শনকারী কিতাব।
(31:21)
وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمُ اتَّبِعُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ قَالُوْا بَلْ نَتَّبِعُ مَا وَجَدْنَا عَلَیْهِ اٰبَآءَنَا١ؕ اَوَ لَوْ كَانَ الشَّیْطٰنُ یَدْعُوْهُمْ اِلٰى عَذَابِ السَّعِیْرِ
অনুবাদ: আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার আনুগত্য করো তখন তারা বলে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে যে রীতির ওপর পেয়েছি তার আনুগত্য করবো। শয়তান যদি তাদেরকে জ্বলন্ত আগুনের দিকেও আহ্বান করতে থাকে তবুও কি তারা তারই আনুগত্য করবে?
(31:22)
وَ مَنْ یُّسْلِمْ وَجْهَهٗۤ اِلَى اللّٰهِ وَ هُوَ مُحْسِنٌ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى١ؕ وَ اِلَى اللّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ
অনুবাদ: যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং কার্যত সে সৎকর্মশীল, সে তো বাস্তবিকই শক্ত করে আঁকড়ে ধরে একটি নির্ভরযোগ্য আশ্রয়। আর যাবতীয় বিষয়ের শেষ ফায়সালা রয়েছে আল্লাহরই হাতে।
(31:23)
وَ مَنْ كَفَرَ فَلَا یَحْزُنْكَ كُفْرُهٗ١ؕ اِلَیْنَا مَرْجِعُهُمْ فَنُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوْا١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ
অনুবাদ: এরপর যে কুফরী করে তার কুফরী যেন তোমাকে বিষণ্ন না করে। তাদেরকে ফিরে তো আসতে হবে আমারই দিকে। তখন আমি তাদেরকে জানিয়ে দেবো তারা কি সব কাজ করে এসেছে। অবশ্যই আল্লাহ অন্তরের গোপন কথাও জানেন।
(31:24)
نُمَتِّعُهُمْ قَلِیْلًا ثُمَّ نَضْطَرُّهُمْ اِلٰى عَذَابٍ غَلِیْظٍ
অনুবাদ: আমি স্বল্পকাল তাদেরকে দুনিয়ায় ভোগ করার সুযোগ দিচ্ছি, তারপর তাদেরকে টেনে নিয়ে যাবো একটি কঠিন শাস্তির দিকে।
(31:25)
وَ لَئِنْ سَاَلْتَهُمْ مَّنْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ لَیَقُوْلُنَّ اللّٰهُ١ؕ قُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ١ؕ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলী কে সৃষ্টি করেছেন, তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবে আল্লাহ। বলো, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্য। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে অধিকাংশ লোক জানে না।
(31:26)
لِلّٰهِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ هُوَ الْغَنِیُّ الْحَمِیْدُ
অনুবাদ: আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই। নিঃসন্দেহ আল্লাহ অমুখাপেক্ষী ও নিজে নিজেই প্রশংসিত।
(31:27)
وَ لَوْ اَنَّ مَا فِی الْاَرْضِ مِنْ شَجَرَةٍ اَقْلَامٌ وَّ الْبَحْرُ یَمُدُّهٗ مِنْۢ بَعْدِهٖ سَبْعَةُ اَبْحُرٍ مَّا نَفِدَتْ كَلِمٰتُ اللّٰهِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: পৃথিবীতে যত গাছ আছে তা সবই যদি কলম হয়ে যায় এবং সমুদ্র (দোয়াত হয়ে যায়) , তাকে আরো সাতটি সমুদ্র কালি সরবরাহ করে তবুও আল্লাহর কথা (লেখা) শেষ হবে না। অবশ্যই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও জ্ঞানী।
(31:28)
مَا خَلْقُكُمْ وَ لَا بَعْثُكُمْ اِلَّا كَنَفْسٍ وَّاحِدَةٍ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِیْعٌۢ بَصِیْرٌ
অনুবাদ: তোমাদের সমগ্র মানবজাতিকে সৃষ্টি করা এবং তারপর পুনর্বার তাদেরকে জীবিত করা (তার জন্য) নিছক একটিমাত্র প্রাণী (সৃষ্টি করা এবং তাকে পুনরুজ্জীবিত) করার মতই ব্যাপার। আসলে আল্লাহ সবকিছুই শোনেন ও দেখেন।
(31:29)
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ یُوْلِجُ الَّیْلَ فِی النَّهَارِ وَ یُوْلِجُ النَّهَارَ فِی الَّیْلِ وَ سَخَّرَ الشَّمْسَ وَ الْقَمَرَ١٘ كُلٌّ یَّجْرِیْۤ اِلٰۤى اَجَلٍ مُّسَمًّى وَّ اَنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ
অনুবাদ: তুমি কি দেখো না, আল্লাহ রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে নিয়ে আসেন এবং দিনকে রাতের মধ্যে? তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মের অধীন করে রেখেছেন, সবই চলছে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। আর (তুমি কি জানো না) তোমরা যা কিছুই করো না কেন আল্লাহ তা জানেন।
(31:30)
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ هُوَ الْحَقُّ وَ اَنَّ مَا یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهِ الْبَاطِلُ١ۙ وَ اَنَّ اللّٰهَ هُوَ الْعَلِیُّ الْكَبِیْرُ۠
অনুবাদ: এ সবকিছু এ কারণে যে, আল্লাহই হচ্ছেন সত্য এবং তাকে বাদ দিয়ে অন্য যেসব জিনিসকে এরা ডাকে তা সবই মিথ্যা, আর (এ কারণে যে, ) আল্লাহই সমুচ্চ ও শ্রেষ্ঠ।
(31:31)
اَلَمْ تَرَ اَنَّ الْفُلْكَ تَجْرِیْ فِی الْبَحْرِ بِنِعْمَتِ اللّٰهِ لِیُرِیَكُمْ مِّنْ اٰیٰتِهٖ١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوْرٍ
অনুবাদ: তুমি কি দেখো না সমুদ্রে নৌযান চলে আল্লাহর অনুগ্রহে, যাতে তিনি তোমাদের দেখাতে পারেন তার কিছু নিদর্শন। আসলে এর মধ্যে রয়েছে বহু নিদর্শন প্রত্যেক সবর ও শোকরকারীর জন্য।
(31:32)
وَ اِذَا غَشِیَهُمْ مَّوْجٌ كَالظُّلَلِ دَعَوُا اللّٰهَ مُخْلِصِیْنَ لَهُ الدِّیْنَ١ۚ۬ فَلَمَّا نَجّٰىهُمْ اِلَى الْبَرِّ فَمِنْهُمْ مُّقْتَصِدٌ١ؕ وَ مَا یَجْحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا كُلُّ خَتَّارٍ كَفُوْرٍ
অনুবাদ: আর যখন (সমুদ্রে) একটি তরঙ্গ তাদেরকে ছেয়ে ফেলে ছাউনির মতো তখন তারা আল্লাহকে ডাকে নিজেদের আনুগত্যকে একদম তাঁর জন্য একান্ত করে নিয়ে। তারপর যখন তিনি তাদেরকে উদ্ধার করে স্থলদেশে পৌঁছিয়ে দেন তখন তাদের কেউ কেউ মাঝপথ বেছে নেয়, আর প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতক ও অকৃতজ্ঞ ছাড়া আর কেউ আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে না।
(31:33)
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمْ وَ اخْشَوْا یَوْمًا لَّا یَجْزِیْ وَالِدٌ عَنْ وَّلَدِهٖ١٘ وَ لَا مَوْلُوْدٌ هُوَ جَازٍ عَنْ وَّالِدِهٖ شَیْئًا١ؕ اِنَّ وَعْدَ اللّٰهِ حَقٌّ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ الْحَیٰوةُ الدُّنْیَا١ٙ وَ لَا یَغُرَّنَّكُمْ بِاللّٰهِ الْغَرُوْرُ
অনুবাদ: হে মানুষেরা! তোমাদের রবের ক্রোধ থেকে সতর্ক হও এবং সেদিনের ভয় করো যেদিন কোন পিতা নিজের পুত্রের পক্ষ থেকে প্রতিদান দেবে না এবং কোন পুত্রই নিজের পিতার পক্ষ থেকে কোন প্রতিদান দেবে না। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। কাজেই এ দুনিয়ার জীবন যেন তোমাদের প্রতারিত না করে এবং প্রতারক যেন তোমাকে আল্লাহর ব্যাপারে প্রতারিত করতে সক্ষম না হয়।
(31:34)
اِنَّ اللّٰهَ عِنْدَهٗ عِلْمُ السَّاعَةِ١ۚ وَ یُنَزِّلُ الْغَیْثَ١ۚ وَ یَعْلَمُ مَا فِی الْاَرْحَامِ١ؕ وَ مَا تَدْرِیْ نَفْسٌ مَّا ذَا تَكْسِبُ غَدًا١ؕ وَ مَا تَدْرِیْ نَفْسٌۢ بِاَیِّ اَرْضٍ تَمُوْتُ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌ خَبِیْرٌ۠
অনুবাদ: একমাত্র আল্লাহই সেই সময়ের জ্ঞান রাখেন। তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তিনিই জানেন মাতৃগর্ভে কি লালিত হচ্ছে। কোন প্রাণসত্তা জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কোন ব্যক্তির জানা নেই তার মৃত্যু হবে কোন যমীনে। আল্লাহই সকল জ্ঞানের অধিকারী এবং তিনি সবকিছু জানেন।