১৮ মে ২০২১

১০ সুরা ইউনুস

  ১০-ইউনুস



(10:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(10:1)

الٓرٰ١۫ تِلْكَ اٰیٰتُ الْكِتٰبِ الْحَكِیْمِ




অনুবাদ:    আলিফ-লাম-রা। এগুলো এমন একটি কিতাবের আয়াত যা হিকমত ও জ্ঞানে পরিপূর্ণ।




(10:2)

اَكَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا اَنْ اَوْحَیْنَاۤ اِلٰى رَجُلٍ مِّنْهُمْ اَنْ اَنْذِرِ النَّاسَ وَ بَشِّرِ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنَّ لَهُمْ قَدَمَ صِدْقٍ عِنْدَ رَبِّهِمْ١ؔؕ قَالَ الْكٰفِرُوْنَ اِنَّ هٰذَا لَسٰحِرٌ مُّبِیْنٌ




অনুবাদ:    মানুষের জন্য এটা কি একটা আশ্চর্যের ব্যাপার হয়ে গেছে যে, আমি তাদেরই মধ্যে থেকে একজনকে নির্দেশ দিয়েছি, (গাফিলতিতে ডুবে থাকা) লোকদেরকে সজাগ করে দাও এবং যারা মেনে নেবে তাদেরকে এ মর্মে সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের কাছে যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা? (একথার ভিত্তিতেই কি) অস্বীকারকারীরা বলেছে, এ ব্যক্তি তো একজন সুস্পষ্ট যাদুকর?




(10:3)

اِنَّ رَبَّكُمُ اللّٰهُ الَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ فِیْ سِتَّةِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ یُدَبِّرُ الْاَمْرَ١ؕ مَا مِنْ شَفِیْعٍ اِلَّا مِنْۢ بَعْدِ اِذْنِهٖ١ؕ ذٰلِكُمُ اللّٰهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوْهُ١ؕ اَفَلَا تَذَكَّرُوْنَ




অনুবাদ:    আসলে তোমাদের রব সেই আল্লাহই, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর শাসন কর্তৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন এবং বিশ্ব-জগতের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করছেন। কোন শাফায়াতকারী (সুপারিশকারী) এমন নেই, যে তাঁর অনুমতি ছাড়া শাফায়াত করতে পারে। এ আল্লাহই হচ্ছেন তোমাদের রব। কাজেই তোমরা তাঁরই ইবাদত করো। এরপরও কি তোমাদের চৈতন্য হবে না?




(10:4)

اِلَیْهِ مَرْجِعُكُمْ جَمِیْعًا١ؕ وَعْدَ اللّٰهِ حَقًّا١ؕ اِنَّهٗ یَبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ یُعِیْدُهٗ لِیَجْزِیَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ بِالْقِسْطِ١ؕ وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لَهُمْ شَرَابٌ مِّنْ حَمِیْمٍ وَّ عَذَابٌ اَلِیْمٌۢ بِمَا كَانُوْا یَكْفُرُوْنَ




অনুবাদ:    তাঁরই দিকে তোমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে। এটা আল্লাহর পাকাপোক্ত ওয়াদা। নিঃসন্দেহে সৃষ্টির সূচনা তিনিই করেন তারপর তিনিই দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করবেন, যাতে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদেরকে পূর্ণ ইনসাফ সহকারে প্রতিদান দেয়া যায় এবং যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করে তারা পান করে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি নিজেদের সত্য অস্বীকৃতির প্রতিফল হিসেবে।




(10:5)

هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِیَآءً وَّ الْقَمَرَ نُوْرًا وَّ قَدَّرَهٗ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِیْنَ وَ الْحِسَابَ١ؕ مَا خَلَقَ اللّٰهُ ذٰلِكَ اِلَّا بِالْحَقِّ١ۚ یُفَصِّلُ الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یَّعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    তিনিই সূর্যকে করেছেন দীপ্তিশালী ও চন্দ্রকে আলোকময় এবং তার মঞ্জিলও ঠিকমত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যাতে তোমরা তার সাহায্যে বছর গণনা ও তারিখ হিসেব করতে পারো। আল্লাহ‌ এসব কিছু (খেলাচ্ছলে নয় বরং) উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সৃষ্টি করেছেন। তিনি নিজের নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে পেশ করেছেন যারা জ্ঞানবান তাদের জন্য।




(10:6)

اِنَّ فِی اخْتِلَافِ الَّیْلِ وَ النَّهَارِ وَ مَا خَلَقَ اللّٰهُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوْمٍ یَّتَّقُوْنَ




অনুবাদ:    অবশ্য দিন ও রাতের পরিবর্তনে এবং আল্লাহ‌ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তাতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা (ভুল দেখা ও ভুল আচরণ করা থেকে) আত্মরক্ষা করতে চায়।




(10:7)

اِنَّ الَّذِیْنَ لَا یَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا وَ رَضُوْا بِالْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ اطْمَاَنُّوْا بِهَا وَ الَّذِیْنَ هُمْ عَنْ اٰیٰتِنَا غٰفِلُوْنَۙ




অনুবাদ:    এ কথা সত্য, যারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না এবং পার্থিব জীবনেই পরিতৃপ্ত ও নিশ্চিন্তে থাকে আর যারা আমার নিদর্শনসমূহ থেকে গাফেল,




(10:8)

اُولٰٓئِكَ مَاْوٰىهُمُ النَّارُ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ




অনুবাদ:    তাদের শেষ আবাস হবে জাহান্নাম এমন সব অসৎ কাজের কর্মফল হিসেবে যেগুলো তারা (নিজেদের ভুল আকীদা ও ভুল কার্যধারার কারণে) ক্রমাগতভাবে আহরণ করতো।




(10:9)

اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَهْدِیْهِمْ رَبُّهُمْ بِاِیْمَانِهِمْ١ۚ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهِمُ الْاَنْهٰرُ فِیْ جَنّٰتِ النَّعِیْمِ




অনুবাদ:    আবার একথাও সত্য, যারা ইমান আনে (অর্থাৎ যারা এ কিতাবে পেশকৃত সত্যগুলো গ্রহণ করে) এবং সৎকাজ করতে থাকে, তাদেরকে তাদের রব তাদের ঈমানের কারণে সোজা পথে চালাবেন। নিয়ামত ভরা জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে।




(10:10)

دَعْوٰىهُمْ فِیْهَا سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ وَ تَحِیَّتُهُمْ فِیْهَا سَلٰمٌ١ۚ وَ اٰخِرُ دَعْوٰىهُمْ اَنِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ۠




অনুবাদ:    সেখানে তাদের ধ্বনি হবে “পবিত্র তুমি যে আল্লাহ”! তাদের দোয়া হবে, “শান্তি ও নিরাপত্তা হোক”! এবং তাদের সবকথার শেষ হবে এভাবে, “সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব-জাহানের রব আল্লাহর জন্য।”




(10:11)

وَ لَوْ یُعَجِّلُ اللّٰهُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسْتِعْجَالَهُمْ بِالْخَیْرِ لَقُضِیَ اِلَیْهِمْ اَجَلُهُمْ١ؕ فَنَذَرُ الَّذِیْنَ لَا یَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا فِیْ طُغْیَانِهِمْ یَعْمَهُوْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহ যদি লোকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার ব্যাপারে অতটাই তাড়াহুড়া করতেন যতটা দুনিয়ার ভালো চাওয়ার ব্যাপারে তারা তাড়াহুড়া করে থাকে, তাহলে তাদের কাজ করার অবকাশ কবেই খতম করে দেয়া হতো (কিন্তু আমার নিয়ম এটা নয়)। তাই যারা আমার সাথে সাক্ষাৎ করার আশা পোষণ করে না তাদেরকে আমি তাদের অবাধ্যতার মধ্যে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াবার জন্য ছেড়ে দেই।




(10:12)

وَ اِذَا مَسَّ الْاِنْسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنْۢبِهٖۤ اَوْ قَاعِدًا اَوْ قَآئِمًا١ۚ فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُ ضُرَّهٗ مَرَّ كَاَنْ لَّمْ یَدْعُنَاۤ اِلٰى ضُرٍّ مَّسَّهٗ١ؕ كَذٰلِكَ زُیِّنَ لِلْمُسْرِفِیْنَ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    মানুষের অবস্থা হচ্ছে, যখন সে কোন কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়, তখন সে দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আমাকে ডাকে। কিন্তু যখন আমি তার বিপদ হটিয়ে দেই তখন সে এমনভাবে চলতে থাকে যেন সে কখনো নিজের কোন খারাপ সময়ে আমাকে ডাকেইনি। ঠিক তেমনিভাবে সীমা অতিক্রমকারীদের জন্য তাদের কার্যক্রমকে সুশোভন করে দেয়া হয়েছে।




(10:13)

وَ لَقَدْ اَهْلَكْنَا الْقُرُوْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَمَّا ظَلَمُوْا١ۙ وَ جَآءَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَیِّنٰتِ وَ مَا كَانُوْا لِیُؤْمِنُوْا١ؕ كَذٰلِكَ نَجْزِی الْقَوْمَ الْمُجْرِمِیْنَ




অনুবাদ:    হে মানব জাতি! তোমাদের আগের জাতিদেরকে (যারা তাদের নিজেদের যুগে উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করেছিল) আমি ধ্বংস করে দিয়েছি-যখন তারা জুলুমের নীতি অবলম্বন করলো এবং তাদের রসূলগণ তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিশানী নিয়ে এলেন, কিন্তু তারা আদৌ ঈমান আনলো না। এভাবে আমি অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধের প্রতিফল দিয়ে থাকি।




(10:14)

ثُمَّ جَعَلْنٰكُمْ خَلٰٓئِفَ فِی الْاَرْضِ مِنْۢ بَعْدِهِمْ لِنَنْظُرَ كَیْفَ تَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    এখন তাদের পরে আমি পৃথিবীতে তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছি, তোমরা কেমন আচরণ করো তা দেখার জন্য।




(10:15)

وَ اِذَا تُتْلٰى عَلَیْهِمْ اٰیَاتُنَا بَیِّنٰتٍ١ۙ قَالَ الَّذِیْنَ لَا یَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا ائْتِ بِقُرْاٰنٍ غَیْرِ هٰذَاۤ اَوْ بَدِّلْهُ١ؕ قُلْ مَا یَكُوْنُ لِیْۤ اَنْ اُبَدِّلَهٗ مِنْ تِلْقَآئِ نَفْسِیْ١ۚ اِنْ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوْحٰۤى اِلَیَّ١ۚ اِنِّیْۤ اَخَافُ اِنْ عَصَیْتُ رَبِّیْ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍ




অনুবাদ:    যখন তাদেরকে আমার সুস্পষ্ট ও পরিষ্কার কথা শুনানো হয় তখন যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না তারা বলে, এটার পরিবর্তে অন্য কোন কুরআন আনো অথবা এর মধ্যে কিছু পরিবর্তন করো। হে মুহাম্মাদ! ওদেরকে বলে দাও, “নিজের পক্ষ থেকে এর মধ্যে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন করা আমার কাজ নয়। আমি তো শুধুমাত্র আমার কাছে যে অহী পাঠানো হয়, তার অনুসারী। যদি আমি আমার রবের নাফরমানী করি তাহলে আমার একটি ভয়াবহ দিনের আযাবের আশঙ্কা হয়।”




(10:16)

قُلْ لَّوْ شَآءَ اللّٰهُ مَا تَلَوْتُهٗ عَلَیْكُمْ وَ لَاۤ اَدْرٰىكُمْ بِهٖ١ۖ٘ فَقَدْ لَبِثْتُ فِیْكُمْ عُمُرًا مِّنْ قَبْلِهٖ١ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ




অনুবাদ:    আর বলো, যদি এটিই হতো আল্লাহর ইচ্ছা তাহলে আমি এ কুরআন তোমাদের কখনো শুনাতাম না এবং আল্লাহ‌ তোমাদেরকে এর খবরও দিতেন না। আমি তো এর আগে তোমাদের মধ্যে জীবনের দীর্ঘকাল অতিবাহিত করেছি, তবুও কি তোমরা বুদ্ধি-বিবেচনা করে কাজ করতে পার না?




(10:17)

فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا اَوْ كَذَّبَ بِاٰیٰتِهٖ١ؕ اِنَّهٗ لَا یُفْلِحُ الْمُجْرِمُوْنَ




অনুবাদ:    তারপর যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বানিয়ে তাকে আল্লাহর কথা বলে প্রচার করে অথবা আল্লাহর যথার্থ আয়াতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে? নিঃসন্দেহে অপরাধী কোন দিন সফলকাম হতে পারে না।




(10:18)

وَ یَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَا یَضُرُّهُمْ وَ لَا یَنْفَعُهُمْ وَ یَقُوْلُوْنَ هٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنْدَ اللّٰهِ١ؕ قُلْ اَتُنَبِّئُوْنَ اللّٰهَ بِمَا لَا یَعْلَمُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الْاَرْضِ١ؕ سُبْحٰنَهٗ وَ تَعٰلٰى عَمَّا یُشْرِكُوْنَ




অনুবাদ:    এ লোকেরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদত করছে তারা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না। আর তারা বলে এরা আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী। হে মুহাম্মাদ! ওদেরকে বলে দাও, “তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ের খবর দিচ্ছো যার অস্তিত্বের কথা তিনি আকাশেও জানেন না এবং যমিনেও না!” তারা যে শিরক্ করে তা থেকে তিনি পাক-পবিত্র এবং তার উর্ধ্বে।




(10:19)

وَ مَا كَانَ النَّاسُ اِلَّاۤ اُمَّةً وَّاحِدَةً فَاخْتَلَفُوْا١ؕ وَ لَوْ لَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِنْ رَّبِّكَ لَقُضِیَ بَیْنَهُمْ فِیْمَا فِیْهِ یَخْتَلِفُوْنَ




অনুবাদ:    শুরুতে সমস্ত মানুষ ছিল একই জাতি। পরবর্তীকালে তারা বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস ও মত-পথ তৈরী করে নেয়। আর যদি তোমার রবের পক্ষ থেকে আগেভাগেই একটি কথা স্থিরীকৃত না হতো তাহলো যে বিষয়ে তারা পরস্পর মতবিরোধ করছে তার মীমাংসা হয়ে যেতো




(10:20)

وَ یَقُوْلُوْنَ لَوْ لَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْهِ اٰیَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ١ۚ فَقُلْ اِنَّمَا الْغَیْبُ لِلّٰهِ فَانْتَظِرُوْا١ۚ اِنِّیْ مَعَكُمْ مِّنَ الْمُنْتَظِرِیْنَ۠




অনুবাদ:    আর এই যে তারা বলে যে, এ নবীর প্রতি তার রবের পক্ষ থেকে কোন নির্দশন অবতীর্ণ করা হয়নি কেন? এর জবাবে তুমি তাদেরকে বলে দাও, “গায়েবের মালিক তো একমাত্র আল্লাহ, ঠিক আছে, তোমরা অপেক্ষা করো, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করবো।”




(10:21)

وَ اِذَاۤ اَذَقْنَا النَّاسَ رَحْمَةً مِّنْۢ بَعْدِ ضَرَّآءَ مَسَّتْهُمْ اِذَا لَهُمْ مَّكْرٌ فِیْۤ اٰیَاتِنَا١ؕ قُلِ اللّٰهُ اَسْرَعُ مَكْرًا١ؕ اِنَّ رُسُلَنَا یَكْتُبُوْنَ مَا تَمْكُرُوْنَ




অনুবাদ:    লোকদের অবস্থা হচ্ছে, বিপদের পরে যখন আমি তাদের রহমতের স্বাদ ভোগ করতে দেই তখনই তারা আমার নিদর্শনের ব্যাপারে ধড়িবাজী শুরু করে দেয়। তাদেরকে বলো, আল্লাহ‌ তার চালাকিতে তোমাদের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন। তাঁর ফেরেশতারা তোমাদের সমস্ত চালাকী লিখে রাখছে।




(10:22)

هُوَ الَّذِیْ یُسَیِّرُكُمْ فِی الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ١ؕ حَتّٰۤى اِذَا كُنْتُمْ فِی الْفُلْكِ١ۚ وَ جَرَیْنَ بِهِمْ بِرِیْحٍ طَیِّبَةٍ وَّ فَرِحُوْا بِهَا جَآءَتْهَا رِیْحٌ عَاصِفٌ وَّ جَآءَهُمُ الْمَوْجُ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ وَّ ظَنُّوْۤا اَنَّهُمْ اُحِیْطَ بِهِمْ١ۙ دَعَوُا اللّٰهَ مُخْلِصِیْنَ لَهُ الدِّیْنَ١ۚ۬ لَئِنْ اَنْجَیْتَنَا مِنْ هٰذِهٖ لَنَكُوْنَنَّ مِنَ الشّٰكِرِیْنَ




অনুবাদ:    তিনিই তোমাদের জলে-স্থলে চলাচলের ব্যবস্থা করেন। কাজেই যখন তোমরা নৌকায় চড়ে অনুকূল বাতাসে আনন্দে সফর করতে থাকো, তারপর অকস্মাত বিরুদ্ধ বাতাস প্রবল হয়ে ওঠে, চারদিক থেকে ঢেউয়ের আঘাত লাগতে থাকে এবং আরোহীরা মনে করতে থাকে তারা তরঙ্গ বেষ্টিতে হয়ে গেছে তখন সবাই নিজের আনুগত্যকে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করে তার কাছে দোয়া করতে থাকে এবং বলতে থাকে, “যদি তুমি আমাদের এ বিপদ থেকে উদ্ধার করো তাহলে আমরা শোকরগুজার বান্দা হয়ে যাবো।”




(10:23)

فَلَمَّاۤ اَنْجٰىهُمْ اِذَا هُمْ یَبْغُوْنَ فِی الْاَرْضِ بِغَیْرِ الْحَقِّ١ؕ یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اِنَّمَا بَغْیُكُمْ عَلٰۤى اَنْفُسِكُمْ١ۙ مَّتَاعَ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١٘ ثُمَّ اِلَیْنَا مَرْجِعُكُمْ فَنُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    কিন্তু যখন তিনি তাদেরকে বিপদমুক্ত করেন তখন তারাই সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পৃথিবীতে বিদ্রোহ করতে থাকে। হে মানুষ! তোমাদের এ বিদ্রোহ উল্টা তোমাদের বিরুদ্ধেই চলে যাচ্ছে। দুনিয়ার কয়েকদিনের আরাম আয়েশ (ভোগ করে নাও) , তারপর আমার দিকেই তোমাদের ফিরে আসতে হবে। তোমরা কি কাজে লিপ্ত ছিলে তা তখন তোমাদের আমি জানিয়ে দেবো।




(10:24)

اِنَّمَا مَثَلُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا كَمَآءٍ اَنْزَلْنٰهُ مِنَ السَّمَآءِ فَاخْتَلَطَ بِهٖ نَبَاتُ الْاَرْضِ مِمَّا یَاْكُلُ النَّاسُ وَ الْاَنْعَامُ١ؕ حَتّٰۤى اِذَاۤ اَخَذَتِ الْاَرْضُ زُخْرُفَهَا وَ ازَّیَّنَتْ وَ ظَنَّ اَهْلُهَاۤ اَنَّهُمْ قٰدِرُوْنَ عَلَیْهَاۤ١ۙ اَتٰىهَاۤ اَمْرُنَا لَیْلًا اَوْ نَهَارًا فَجَعَلْنٰهَا حَصِیْدًا كَاَنْ لَّمْ تَغْنَ بِالْاَمْسِ١ؕ كَذٰلِكَ نُفَصِّلُ الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یَّتَفَكَّرُوْنَ




অনুবাদ:    দুনিয়ার এ জীবন (যার নেশায় মাতাল হয়ে তোমরা আমার নিশানীগুলোর প্রতি উদাসীন হয়ে যাচ্ছো) এর দৃষ্টান্ত হচ্ছে, যেমন আকাশ থেকে আমি পানি বর্ষণ করলাম, তার ফলে যমীনের উৎপাদন, যা মানুষ ও জীব-জন্তু খায়, ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে গেল। তারপর ঠিক এমন সময় যখন যমীন তার ভরা বসন্তে পৌঁছে গেল এবং ক্ষেতগুলো শস্যশ্যামল হয়ে উঠলো। আর তার মালিকরা মনে করলো এবার তারা এগুলো ভোগ করতে সক্ষম হবে, এমন সময় অকস্মাত রাতে বা দিনে আমার হুকুম এসে গেলো। আমি তাকে এমনভাবে ধ্বংস করলাম যেন কাল সেখানে কিছুই ছিল না। এভাবে আমি বিশদভাবে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করে থাকি তাদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে।




(10:25)

وَ اللّٰهُ یَدْعُوْۤا اِلٰى دَارِ السَّلٰمِ١ؕ وَ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ




অনুবাদ:    (তোমরা এ অস্থায়ী জীবনের প্রতারণা জালে আবদ্ধ হচ্ছো) আর আল্লাহ‌ তোমাদের শান্তির ভুবনের দিকে আহবান জানাচ্ছেন। (হেদায়াত তার ইখতিয়ারভুক্ত) যাকে তিনি চান সোজা পথ দেখান।




(10:26)

لِلَّذِیْنَ اَحْسَنُوا الْحُسْنٰى وَ زِیَادَةٌ١ؕ وَ لَا یَرْهَقُ وُجُوْهَهُمْ قَتَرٌ وَّ لَا ذِلَّةٌ١ؕ اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ١ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ




অনুবাদ:    যারা কল্যাণের পথ অবলম্বন করেছে তাদের জন্য আছে কল্যাণ এবং আরো বেশী। কলঙ্ক কালিম বা লাঞ্ছনা তাদের চেহারাকে আবৃত করবে না। তারা জান্নাতের হকদার, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।




(10:27)

وَ الَّذِیْنَ كَسَبُوا السَّیِّاٰتِ جَزَآءُ سَیِّئَةٍۭ بِمِثْلِهَا١ۙ وَ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ١ؕ مَا لَهُمْ مِّنَ اللّٰهِ مِنْ عَاصِمٍ١ۚ كَاَنَّمَاۤ اُغْشِیَتْ وُجُوْهُهُمْ قِطَعًا مِّنَ الَّیْلِ مُظْلِمًا١ؕ اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِ١ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ




অনুবাদ:    আর যারা খারাপ কাজ করেছে, তারা তাদের খারাপ কাজ অনুযায়ীই প্রতিফল পাবে। লাঞ্ছনা তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে। আল্লাহর হাত থেকে তাদেরকে বাঁচাবার কেউ থাকবে না। তাদের চেহারা যেন আঁধার রাতের কালো আবরণে আচ্ছাদিত হবে। তারা দোজখের হকদার, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।




(10:28)

وَ یَوْمَ نَحْشُرُهُمْ جَمِیْعًا ثُمَّ نَقُوْلُ لِلَّذِیْنَ اَشْرَكُوْا مَكَانَكُمْ اَنْتُمْ وَ شُرَكَآؤُكُمْ١ۚ فَزَیَّلْنَا بَیْنَهُمْ وَ قَالَ شُرَكَآؤُهُمْ مَّا كُنْتُمْ اِیَّانَا تَعْبُدُوْنَ




অনুবাদ:    যেদিন আমি তাদের সবাইকে এক সাথে (আমার আদালতে) একত্র করবো তারপর যারা শিরক করেছে তাদেরকে বলবো, থেমে যাও, তোমরাও এবং তোমাদের তৈরী করা শরীকরাও। তারপর আমি তাদের মাঝখান থেকে অপরিচিতির আচরণ সরিয়ে নেবো। তখন তারা যাদেরকে শরীক করেছিল তারা বলবে, “তোমরা তো আমাদের ইবাদত করতে না।




(10:29)

فَكَفٰى بِاللّٰهِ شَهِیْدًۢا بَیْنَنَا وَ بَیْنَكُمْ اِنْ كُنَّا عَنْ عِبَادَتِكُمْ لَغٰفِلِیْنَ




অনুবাদ:    আমাদের ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহর সাক্ষ যথেষ্ট, (তোমরা আমাদের ইবাদত, করতে থাকলেও) আমরা তোমাদের এ ইবাদত সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।”




(10:30)

هُنَالِكَ تَبْلُوْا كُلُّ نَفْسٍ مَّاۤ اَسْلَفَتْ وَ رُدُّوْۤا اِلَى اللّٰهِ مَوْلٰىهُمُ الْحَقِّ وَ ضَلَّ عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ۠




অনুবাদ:    সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তিই তার কৃতকর্মের স্বাদ নেবে। সবাইকে তার প্রকৃত মালিক আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে এবং তারা যে সমস্ত মিথ্যা তৈরী করে রেখেছিল। তা সব উদাও হয়ে যাবে।




(10:31)

قُلْ مَنْ یَّرْزُقُكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الْاَرْضِ اَمَّنْ یَّمْلِكُ السَّمْعَ وَ الْاَبْصَارَ وَ مَنْ یُّخْرِجُ الْحَیَّ مِنَ الْمَیِّتِ وَ یُخْرِجُ الْمَیِّتَ مِنَ الْحَیِّ وَ مَنْ یُّدَبِّرُ الْاَمْرَ١ؕ فَسَیَقُوْلُوْنَ اللّٰهُ١ۚ فَقُلْ اَفَلَا تَتَّقُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, “কে তোমাদের আকাশ ও পৃথিবী থেকে রিযিক দেয়? এই শুনার ও দেখার শক্তি কার কর্তৃত্বে আছে? কে প্রাণহীন থেকে সজীবকে এবং সজীব থেকে প্রাণহীনকে বের করে? কে চালাচ্ছে এই বিশ্ব ব্যবস্থাপনা?” তারা নিশ্চয়ই বলবে, আল্লাহ। বলো, তবুও কি তোমরা (সত্যের বিরোধী পথে চলার ব্যাপারে। ) সতর্ক হচ্ছো না?




(10:32)

فَذٰلِكُمُ اللّٰهُ رَبُّكُمُ الْحَقُّ١ۚ فَمَا ذَا بَعْدَ الْحَقِّ اِلَّا الضَّلٰلُ١ۖۚ فَاَنّٰى تُصْرَفُوْنَ




অনুবাদ:    তাহলে তো এ আল্লাহই তোমাদের আসল রব। কাজেই সত্যের পরে গোমরাহী ও বিভ্রান্তি ছাড়া আর কি বাকি আছে? সুতরাং তোমরা কোন দিকে চালিত হচ্ছো?




(10:33)

كَذٰلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِیْنَ فَسَقُوْۤا اَنَّهُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    (হে নবী! দেখো) এভাবে নাফরমানীর পথ অবলম্বনকারীদের ওপর তোমরা রবের কথা সত্য প্রতিপন্ন হয়েছে যে, তারা ঈমান আনবে না।




(10:34)

قُلْ هَلْ مِنْ شُرَكَآئِكُمْ مَّنْ یَّبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ یُعِیْدُهٗ١ؕ قُلِ اللّٰهُ یَبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ یُعِیْدُهٗ فَاَنّٰى تُؤْفَكُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, তোমাদের তৈরী করা, শরীকদের মধ্যে কেউ আছে কি যে সৃষ্টির সূচনা করে আবার তার পুনরাবৃত্তিও করে?-বলো, একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টির সূচনা করে এবং তার পুনরাবৃত্তির ঘটনা, কাজেই তোমরা কোন উল্টো পথে চলে যাচ্ছো?




(10:35)

قُلْ هَلْ مِنْ شُرَكَآئِكُمْ مَّنْ یَّهْدِیْۤ اِلَى الْحَقِّ١ؕ قُلِ اللّٰهُ یَهْدِیْ لِلْحَقِّ١ؕ اَفَمَنْ یَّهْدِیْۤ اِلَى الْحَقِّ اَحَقُّ اَنْ یُّتَّبَعَ اَمَّنْ لَّا یَهِدِّیْۤ اِلَّاۤ اَنْ یُّهْدٰى١ۚ فَمَا لَكُمْ١۫ كَیْفَ تَحْكُمُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, তোমাদের তৈরী করা শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি যে সত্যের দিকে পথনির্দেশ করে? বলো, একমাত্র আল্লাহই সত্যের দিকে পথনির্দেশ করেন তাহলে বলো, যিনি সত্যের দিকে পথনির্দেশ করেন তিনি আনুগত্য লাভের বেশী হকদার না যাকে পথ না দেখলে পথ পায় না- সে বেশী হকদার? তোমাদের হয়েছে কি? কেমন উল্টো সিদ্ধান্ত করে বসছো?




(10:36)

وَ مَا یَتَّبِعُ اَكْثَرُهُمْ اِلَّا ظَنًّا١ؕ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغْنِیْ مِنَ الْحَقِّ شَیْئًا١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌۢ بِمَا یَفْعَلُوْنَ




অনুবাদ:    আসলে তাদের বেশীরভাগ লোকই নিছক আন্দাজ-অনুমানের পেছনে চলছে। অথচ আন্দাজ-অনুমান দ্বারা সত্যের প্রয়োজন কিছুমাত্র মেটে না। তারা যা কিছু করছে তা আল্লাহ‌ ভালভাবেই জানেন।




(10:37)

وَ مَا كَانَ هٰذَا الْقُرْاٰنُ اَنْ یُّفْتَرٰى مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَ لٰكِنْ تَصْدِیْقَ الَّذِیْ بَیْنَ یَدَیْهِ وَ تَفْصِیْلَ الْكِتٰبِ لَا رَیْبَ فِیْهِ مِنْ رَّبِّ الْعٰلَمِیْنَ۫




অনুবাদ:    আর এ কুরআন আল্লাহর অহী ও শিক্ষা ছাড়া রচনা করা যায় না। বরং এ হচ্ছে যা কিছু আগে এসেছিল তার সত্যায়ন এবং আল কিতাবের বিশদ বিবরণ। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এটি বিশ্বজাহানের অধিকর্তার পক্ষ থেকে এসেছে।




(10:38)

اَمْ یَقُوْلُوْنَ افْتَرٰىهُ١ؕ قُلْ فَاْتُوْا بِسُوْرَةٍ مِّثْلِهٖ وَ ادْعُوْا مَنِ اسْتَطَعْتُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    তারা কি একথা বলে, পয়গম্বর নিজেই এটা রচনা করেছে? বলো, “তোমাদের এ দোষারোপের ব্যাপারে তোমরা যতি সত্যবাদী হয়ে থাকো তাহলে এরই মতো একটি সূরা রচনা করে আনো এবং এক আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাকে ডাকতে পারো সাহায্যের জন্য ডেকে নাও”




(10:39)

بَلْ كَذَّبُوْا بِمَا لَمْ یُحِیْطُوْا بِعِلْمِهٖ وَ لَمَّا یَاْتِهِمْ تَاْوِیْلُهٗ١ؕ كَذٰلِكَ كَذَّبَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَانْظُرْ كَیْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الظّٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    আসল ব্যাপার হচ্ছে, যে জিনিসটি এদের জ্ঞানের আওতায় আসেনি এবং যার পরিমাণও এদের সামনে নেই তাকে এরা (অনর্থক আন্দাজে) মিথ্যা বলে। এমনি ভাবে এদের আগের লোকেরাও মিথ্যা আরোপ করেছে। কাজেই দেখো জালেমদের পরিণাম কী হয়েছে!




(10:40)

وَ مِنْهُمْ مَّنْ یُّؤْمِنُ بِهٖ وَ مِنْهُمْ مَّنْ لَّا یُؤْمِنُ بِهٖ١ؕ وَ رَبُّكَ اَعْلَمُ بِالْمُفْسِدِیْنَ۠




অনুবাদ:    তাদের মধ্য থেকে কিছু লোক ঈমান আনবে এবং কিছু লোক ঈমান আনবে না। আর তোমার রব এ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদেরকে ভালভাবেই জানেন।




(10:41)

وَ اِنْ كَذَّبُوْكَ فَقُلْ لِّیْ عَمَلِیْ وَ لَكُمْ عَمَلُكُمْ١ۚ اَنْتُمْ بَرِیْٓئُوْنَ مِمَّاۤ اَعْمَلُ وَ اَنَا بَرِیْٓءٌ مِّمَّا تَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    যদি তারা তোমরা প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তাহলে তুমি বলে দাও, আমার আমল আমার জন্য এবং তোমাদের আমল তোমাদের জন্য। আমি যা কিছু করি তার দায়িত্ব থেকে তোমরা মুক্ত এবং তোমরা যা কিছু করছো তার দায়িত্ব থেকে আমি মুক্ত।




(10:42)

وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّسْتَمِعُوْنَ اِلَیْكَ١ؕ اَفَاَنْتَ تُسْمِعُ الصُّمَّ وَ لَوْ كَانُوْا لَا یَعْقِلُوْنَ




অনুবাদ:    তাদের মধ্যে বহু লোক আছে যারা তোমার কথা শোনে। কিন্তু তুমি কি বধিরদের শুনাবে তারা কিছু না বুঝলেও?




(10:43)

وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّنْظُرُ اِلَیْكَ١ؕ اَفَاَنْتَ تَهْدِی الْعُمْیَ وَ لَوْ كَانُوْا لَا یُبْصِرُوْنَ




অনুবাদ:    তাদের মধ্যে বহু লোক আছে যারা তোমাকে দেখে। কিন্তু তুমি কি অন্ধদের পথ দেখাবে, তারা কিছু না দেখতে পেলেও?




(10:44)

اِنَّ اللّٰهَ لَا یَظْلِمُ النَّاسَ شَیْئًا وَّ لٰكِنَّ النَّاسَ اَنْفُسَهُمْ یَظْلِمُوْنَ




অনুবাদ:    আসলে আল্লাহ‌ মানুষের প্রতি জুলুম করেন না, মানুষ নিজেই নিজের প্রতি জুলুম করে।




(10:45)

وَ یَوْمَ یَحْشُرُهُمْ كَاَنْ لَّمْ یَلْبَثُوْۤا اِلَّا سَاعَةً مِّنَ النَّهَارِ یَتَعَارَفُوْنَ بَیْنَهُمْ١ؕ قَدْ خَسِرَ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِلِقَآءِ اللّٰهِ وَ مَا كَانُوْا مُهْتَدِیْنَ




অনুবাদ:    ((আজ তারা দুনিয়ার জীবন নিয়ে মত্ত হয়ে আছে। ) আর যেদিন আল্লাহ‌ তাদেরকে একত্র করবেন সেদিন। (এ দুনিয়ার জীবন তাদের কাছে এমন ঠেকাবে) যেন মনে হবে তারা পরস্পরের মধ্যে পরিচয় লাভের উদ্দেশ্য নিছক একদণ্ডের জন্য অবস্থান করেছিল। (সে সময় নিশ্চিতভাবে জানা যাবে) প্রকৃতপক্ষে যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতকে মিথ্যা বলেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তারা মোটেই সঠিক পথে ছিল না।




(10:46)

وَ اِمَّا نُرِیَنَّكَ بَعْضَ الَّذِیْ نَعِدُهُمْ اَوْ نَتَوَفَّیَنَّكَ فَاِلَیْنَا مَرْجِعُهُمْ ثُمَّ اللّٰهُ شَهِیْدٌ عَلٰى مَا یَفْعَلُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে যেসব খারাপ পরিণামের ভয় দেখাচ্ছি সেগুলোর কোন অংশ যদি তোমার জীবদ্দশায় দেখিয়ে দেই অথবা এর আগেই তোমাকে উঠিয়ে নেই, সর্বাবস্থায় তাদের আমারই দিকে ফিরে আসতে হবে এবং তারা যা কিছু করছে আল্লাহ‌ তার সাক্ষী।




(10:47)

وَ لِكُلِّ اُمَّةٍ رَّسُوْلٌ١ۚ فَاِذَا جَآءَ رَسُوْلُهُمْ قُضِیَ بَیْنَهُمْ بِالْقِسْطِ وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন রসূল রয়েছে। যখন কোন উম্মতের কাছে তাদের রসূল এসে যায় তখন পূর্ণ ইনসাফ সহকারে তাদের বিষয়ের ফায়সালা করে দেয়া হয় এবং তাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও জুলুম করা হয় না।




(10:48)

وَ یَقُوْلُوْنَ مَتٰى هٰذَا الْوَعْدُ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    তারা বলে যদি তোমার এ হুমকি সত্য হয় তাহলে এটা কবে কার্যকারী হবে?




(10:49)

قُلْ لَّاۤ اَمْلِكُ لِنَفْسِیْ ضَرًّا وَّ لَا نَفْعًا اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰهُ١ؕ لِكُلِّ اُمَّةٍ اَجَلٌ١ؕ اِذَا جَآءَ اَجَلُهُمْ فَلَا یَسْتَاْخِرُوْنَ سَاعَةً وَّ لَا یَسْتَقْدِمُوْنَ




অনুবাদ:    বলো, “নিজের লাভ-ক্ষতিও আমার ইখতিয়ার নেই। সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।” প্রত্যেক জাতির জন্য অবকাশের একটি নির্দিষ্ট সময় আছে, এ সময় পূর্ণ হয়ে গেলে তারা মুহূর্তকালও সামনে পেছনে করতে পারবে না।




(10:50)

قُلْ اَرَءَیْتُمْ اِنْ اَتٰىكُمْ عَذَابُهٗ بَیَاتًا اَوْ نَهَارًا مَّا ذَا یَسْتَعْجِلُ مِنْهُ الْمُجْرِمُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে বলো, তোমরা কি কখনো একথাও চিন্তা করেছো যে, যদি আল্লাহর আযাব অকম্মাত রাতে বা দিনে এসে যায় (তাহলে তোমরা কি করতে পারো?) এটা এমন কি জিনিস যে জন্য অপরাধীরা তাড়াহুড়া করতে চায়?




(10:51)

اَثُمَّ اِذَا مَا وَقَعَ اٰمَنْتُمْ بِهٖ١ؕ آٰلْئٰنَ وَ قَدْ كُنْتُمْ بِهٖ تَسْتَعْجِلُوْنَ




অনুবাদ:    সেটা যখন তোমাদের ওপর এসে পড়বে তখন কি তোমরা ঈমান আনবে? এখন বাঁচতে চাও? অথচ তোমরাইতো তাগাদা দিচ্ছিলে যে, ওটা শিগগির এসে পড়ুক।




(10:52)

ثُمَّ قِیْلَ لِلَّذِیْنَ ظَلَمُوْا ذُوْقُوْا عَذَابَ الْخُلْدِ١ۚ هَلْ تُجْزَوْنَ اِلَّا بِمَا كُنْتُمْ تَكْسِبُوْنَ




অনুবাদ:    তারপর জালেমদেরকে বলা, হবে এখন অনন্ত আযাবের স্বাদ আস্বাদন করো, তোমরা যা কিছু উপার্জন করতে তার শাস্তি ছাড়া তোমাদের আর কি বিনিময় দেয়া যেতে পারে?




(10:53)

وَ یَسْتَنْۢبِئُوْنَكَ اَحَقٌّ هُوَ١ؔؕ قُلْ اِیْ وَ رَبِّیْۤ اِنَّهٗ لَحَقٌّ١ؔؕۚ وَ مَاۤ اَنْتُمْ بِمُعْجِزِیْنَ۠




অনুবাদ:    তারপর তারা জিজ্ঞেস করে যে, তুমি যা বলছো তা কি যথার্থই সত্য? বলো, “আমার রবের কসম, এটা যথার্থই সত্য এবং এর প্রকাশ হবার পথে বাধা দেবার মতো শক্তি তোমাদের নেই।”




(10:54)

وَ لَوْ اَنَّ لِكُلِّ نَفْسٍ ظَلَمَتْ مَا فِی الْاَرْضِ لَافْتَدَتْ بِهٖ١ؕ وَ اَسَرُّوا النَّدَامَةَ لَمَّا رَاَوُا الْعَذَابَ١ۚ وَ قُضِیَ بَیْنَهُمْ بِالْقِسْطِ وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহর নাফরমানী করেছে এমন প্রতিটি ব্যক্তির কাছে যদি সারা দুনিয়ার ধন-দৌলত থাকতো তাহলে সেই আযাব থেকে বাঁচার বিনিময়ে সে তা দিতে উদ্যত হতো। যখন তারা এ আযাব দেখবে তখন তারা মনে মনে পস্তাতে থাকবে। কিন্তু তাদের মধ্যে পূর্ণ ইনসাফ সহকারে ফায়সালা করা হবে, তাদের প্রতি কোন জুলুম হবে না।




(10:55)

اَلَاۤ اِنَّ لِلّٰهِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ اَلَاۤ اِنَّ وَعْدَ اللّٰهِ حَقٌّ وَّ لٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    শোনো, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব আল্লাহরই। শুনে রাখো, আল্লাহর অঙ্গীকার সত্য, কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না।




(10:56)

هُوَ یُحْیٖ وَ یُمِیْتُ وَ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ




অনুবাদ:    তিনিই জীবন দেন, তিনিই মৃত্যু দেন এবং তারই দিকে সবাইকে ফিরে যেতে হবে।




(10:57)

یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ شِفَآءٌ لِّمَا فِی الصُّدُوْرِ١ۙ۬ وَ هُدًى وَّ رَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    হে লোকেরা! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নসীহত এসে গেছে। এটি এমন জিনিস যা অন্তরের রোগের নিরাময় এবং যে তা গ্রহণ করে নেয় তার জন্য পথনির্দেশনা ও রহমত।




(10:58)

قُلْ بِفَضْلِ اللّٰهِ وَ بِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْیَفْرَحُوْا١ؕ هُوَ خَیْرٌ مِّمَّا یَجْمَعُوْنَ




অনুবাদ:    হে নবী! বলো, “এ জিনিসটি যে, তিনি পাঠিয়েছেন এটি আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তার মেহেরবানী। এ জন্য তো লোকদের আনন্দিত হওয়া উচিত। তারা যা কিছু জমা করছে সে সবের চেয়ে এটি অনেক ভাল।”




(10:59)

قُلْ اَرَءَیْتُمْ مَّاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ لَكُمْ مِّنْ رِّزْقٍ فَجَعَلْتُمْ مِّنْهُ حَرَامًا وَّ حَلٰلًا١ؕ قُلْ آٰللّٰهُ اَذِنَ لَكُمْ اَمْ عَلَى اللّٰهِ تَفْتَرُوْنَ




অনুবাদ:    হে নবী! তাদেরকে বলো, তোমরা কি কখনো একথাও চিন্তা করেছো যে আল্লাহ‌ তোমাদের জন্য যে রিযিক অবতীর্ণ করেছিলেন তার মধ্য থেকে তোমরা নিজেরাই কোনটাকে হারাম ও কোনটাকে হালাল করে নিয়েছো? তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, আল্লাহ‌ কি তোমাদেরকে এর অনুমতি দিয়েছিলেন? নাকি তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করছো?




(10:60)

وَ مَا ظَنُّ الَّذِیْنَ یَفْتَرُوْنَ عَلَى اللّٰهِ الْكَذِبَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَذُوْ فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَ لٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا یَشْكُرُوْنَ۠




অনুবাদ:    যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করছে তারা কি মনে করে, কিয়ামতের দিন তাদের সাথে কেমন ব্যবহার করা হবে? আল্লাহ‌ তো লোকদের প্রতি অনুগ্রহ পরায়ণ কিন্তু অধিকাংশ মানুষ শোকর গুজারী করে না।




(10:61)

وَ مَا تَكُوْنُ فِیْ شَاْنٍ وَّ مَا تَتْلُوْا مِنْهُ مِنْ قُرْاٰنٍ وَّ لَا تَعْمَلُوْنَ مِنْ عَمَلٍ اِلَّا كُنَّا عَلَیْكُمْ شُهُوْدًا اِذْ تُفِیْضُوْنَ فِیْهِ١ؕ وَ مَا یَعْزُبُ عَنْ رَّبِّكَ مِنْ مِّثْقَالِ ذَرَّةٍ فِی الْاَرْضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ وَ لَاۤ اَصْغَرَ مِنْ ذٰلِكَ وَ لَاۤ اَكْبَرَ اِلَّا فِیْ كِتٰبٍ مُّبِیْنٍ




অনুবাদ:    হে নবী! তুমি যে অবস্থায়ই থাকো এবং কুরআন থেকে যা কিছুই শুনাতে থাকো। আর হে লোকরা, তোমরাও যা কিছু করো সে সবের মধ্যে আমি তোমাদের দেখতে থাকি। আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে কোন অণু পরিমাণ বস্তুও এমন নেই এবং তার চেয়ে ছোট্ট বা বড় কোন জিনিস ও নেই, যা তোমাদের রবের দৃষ্টিতে অগোচরে আছে এবং যা একটি সুস্পষ্ট কিতাবে লেখা নেই।




(10:62)

اَلَاۤ اِنَّ اَوْلِیَآءَ اللّٰهِ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَۚۖ




অনুবাদ:    শোনো, যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের কোন ভয় ও মর্ম যাতনার অবকাশ নেই -




(10:63)

الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ كَانُوْا یَتَّقُوْنَؕ




অনুবাদ:    - ( তারা হচ্ছে সেই সব লোক) যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করেছে ।




(10:64)

لَهُمُ الْبُشْرٰى فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ فِی الْاٰخِرَةِ١ؕ لَا تَبْدِیْلَ لِكَلِمٰتِ اللّٰهِ١ؕ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُؕ




অনুবাদ:    দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জীবনে তাদের জন্য শুধু সুসংবাদই রয়েছে। আল্লাহর কথার পরিবর্তন নেই। এটিই মহাসাফল্য।




(10:65)

وَ لَا یَحْزُنْكَ قَوْلُهُمْ١ۘ اِنَّ الْعِزَّةَ لِلّٰهِ جَمِیْعًا١ؕ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ




অনুবাদ:    হে নবী! এরা তোমাকে যেসব কথা বলেছে তা যেন তোমাকে মর্মাহত না করে। সমস্ত মর্যাদা আল্লাহর হাতে এবং তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন।




(10:66)

اَلَاۤ اِنَّ لِلّٰهِ مَنْ فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَنْ فِی الْاَرْضِ١ؕ وَ مَا یَتَّبِعُ الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ شُرَكَآءَ١ؕ اِنْ یَّتَّبِعُوْنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنْ هُمْ اِلَّا یَخْرُصُوْنَ




অনুবাদ:    জেনে রেখো, আকাশের অধিবাসী, হোক বা পৃথিবীর, সবাই আল্লাহর মালিকানাধীন। আর যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে (নিজেদের মনগড়া) কিছু শরীকদের ডাকছে তারা নিছক আন্দাজ ও ধারণার অনুগামী এবং তারা শুধু অনুমানই করে।




(10:67)

هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ لَكُمُ الَّیْلَ لِتَسْكُنُوْا فِیْهِ وَ النَّهَارَ مُبْصِرًا١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوْمٍ یَّسْمَعُوْنَ




অনুবাদ:    তিনিই তোমাদের জন্য রাত তৈরী করেছেন, যাতে তোমরা তাতে প্রশান্তি লাভ করতে পারো এবং দিনকে উজ্জ্বল করেছেন। এর মধ্যে শিক্ষা আছে এমন লোকদের জন্য যারা (খোলা কানে নবীর দাওয়াত) শোনে।




(10:68)

قَالُوا اتَّخَذَ اللّٰهُ وَلَدًا سُبْحٰنَهٗ١ؕ هُوَ الْغَنِیُّ١ؕ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِ١ؕ اِنْ عِنْدَكُمْ مِّنْ سُلْطٰنٍۭ بِهٰذَا١ؕ اَتَقُوْلُوْنَ عَلَى اللّٰهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    লোকেরা বলে, আল্লাহ‌ কাউকে পুত্র বানিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ-তিনি মহান-পবিত্র! তিনি তো অভাবমুক্ত। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তার মালিকানাধীন। একথার সপক্ষে তোমাদের কাছে কি প্রমাণ আছে? তোমরা কি আল্লাহর সপক্ষে এমন সব কথা বলো যা তোমাদের জানা নেই?




(10:69)

قُلْ اِنَّ الَّذِیْنَ یَفْتَرُوْنَ عَلَى اللّٰهِ الْكَذِبَ لَا یُفْلِحُوْنَؕ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! বলো, যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তারা কখনো সফলকাম হতে পারে না।




(10:70)

مَتَاعٌ فِی الدُّنْیَا ثُمَّ اِلَیْنَا مَرْجِعُهُمْ ثُمَّ نُذِیْقُهُمُ الْعَذَابَ الشَّدِیْدَ بِمَا كَانُوْا یَكْفُرُوْنَ۠




অনুবাদ:    দুনিয়ার দুদিনের জীবন ভোগ করে নাও, তারপর আমার দিকে তাদের ফিরে আসতে হবে, তখন তারা যে কুফরী করছে তার প্রতিফল স্বরূপ তাদেরকে কঠোর শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাবো।




(10:71)

وَ اتْلُ عَلَیْهِمْ نَبَاَ نُوْحٍ١ۘ اِذْ قَالَ لِقَوْمِهٖ یٰقَوْمِ اِنْ كَانَ كَبُرَ عَلَیْكُمْ مَّقَامِیْ وَ تَذْكِیْرِیْ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ فَعَلَى اللّٰهِ تَوَكَّلْتُ فَاَجْمِعُوْۤا اَمْرَكُمْ وَ شُرَكَآءَكُمْ ثُمَّ لَا یَكُنْ اَمْرُكُمْ عَلَیْكُمْ غُمَّةً ثُمَّ اقْضُوْۤا اِلَیَّ وَ لَا تُنْظِرُوْنِ




অনুবাদ:    তাদেরকে নূহের কথা শুনাও। সেই সময়ের কথা যখন সে তার কওমকে বলেছিল হে আমার কওমের লোকেরা! যদি তোমাদের মধ্যে আমার অবস্থান ও বসবাস এবং আল্লাহর আয়াত শুনিয়ে শুনিয়ে তোমাদের গাফলতি থেকে জাগিয়ে তোলা তোমাদের কাছে অসহনীয় হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে আমি আল্লাহর ওপর ভরসা করি, তোমরা নিজেদের তৈরী করা শরীকদের সঙ্গে নিয়ে একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত করে নাও এবং তোমাদের সামনে যে পরিকল্পনা আছে সে সম্পর্কে খুব ভালোভাবে চিন্তা করে নাও, যাতে করে কোন একটি দিকও তোমাদের দৃষ্টির আড়ালে না থেকে যায়। তারপর আমার বিরুদ্ধে তাকে সক্রিয় করো এবং আমাকে মোটিই অবকাশ দিয়ো না




(10:72)

فَاِنْ تَوَلَّیْتُمْ فَمَا سَاَلْتُكُمْ مِّنْ اَجْرٍ١ؕ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلَى اللّٰهِ١ۙ وَ اُمِرْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ




অনুবাদ:    তোমরা আমার নসীহত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছো। (এতে আমার কি ক্ষতি করছো) , আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইনি। আমার প্রতিদান তো আল্লাহর কাছে। আমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে (কেউ স্বীকার করুক বা না করুক) আমি যেন মুসলিম হিসেবে থাকি।




(10:73)

فَكَذَّبُوْهُ فَنَجَّیْنٰهُ وَ مَنْ مَّعَهٗ فِی الْفُلْكِ وَ جَعَلْنٰهُمْ خَلٰٓئِفَ وَ اَغْرَقْنَا الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا١ۚ فَانْظُرْ كَیْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُنْذَرِیْنَ




অনুবাদ:    তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে, ফলে আমি তাকে এবং তার সাথে যারা নৌকায় ছিল সবাইকে রক্ষা করেছি এবং তাদেরকেই পৃথিবীতে স্থলাভিষিক্ত করেছি আর যার আমার আয়াতকে মিথ্যা বলেছিল তাদের সবাইকে ডুবিয়ে দিয়েছে। কাজেই যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল (এবং তারপরও তারা মেনে নেয়নি) তাদের পরিণাম কি দেখো!




(10:74)

ثُمَّ بَعَثْنَا مِنْۢ بَعْدِهٖ رُسُلًا اِلٰى قَوْمِهِمْ فَجَآءُوْهُمْ بِالْبَیِّنٰتِ فَمَا كَانُوْا لِیُؤْمِنُوْا بِمَا كَذَّبُوْا بِهٖ مِنْ قَبْلُ١ؕ كَذٰلِكَ نَطْبَعُ عَلٰى قُلُوْبِ الْمُعْتَدِیْنَ




অনুবাদ:    তারপর নূহের পর আমি বিভিন্ন পয়গম্বরকে তাদের কওমের কাছে পাঠাই এবং তারা সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে তাদের কাছে আসে। কিন্তু যে জিনিসকে তারা আগেই মিথ্যা বলেছিল তাকে আর মেনে নিতে প্রস্তুত হলো না। এভাবে আমি সীমা অতিক্রমকারীদের দিলে মোহর মেরে দেই।




(10:75)

ثُمَّ بَعَثْنَا مِنْۢ بَعْدِهِمْ مُّوْسٰى وَ هٰرُوْنَ اِلٰى فِرْعَوْنَ وَ مَلَاۡئِهٖ بِاٰیٰتِنَا فَاسْتَكْبَرُوْا وَ كَانُوْا قَوْمًا مُّجْرِمِیْنَ




অনুবাদ:    তারপর মুসা ও হারুনকে আমি তাদের পরে আমার নিদর্শনসহ ফেরাউন ও তার সরদারদের কাছে পাঠাই। কিন্তু তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকারে মত্ত হয় এবং তারা ছিল অপরাধী সম্প্রদায়।




(10:76)

فَلَمَّا جَآءَهُمُ الْحَقُّ مِنْ عِنْدِنَا قَالُوْۤا اِنَّ هٰذَا لَسِحْرٌ مُّبِیْنٌ




অনুবাদ:    পরে যখন আমার কাছ থেকে সত্য তাদের সামনে আসে, তারা বলে দেয়, এ তো সুস্পষ্ট যাদু।




(10:77)

قَالَ مُوْسٰۤى اَتَقُوْلُوْنَ لِلْحَقِّ لَمَّا جَآءَكُمْ١ؕ اَسِحْرٌ هٰذَا١ؕ وَ لَا یُفْلِحُ السّٰحِرُوْنَ




অনুবাদ:    মুসা বললো, সত্য, যখন তোমাদের সামনে এলো তখন তোমরা তার সম্পর্কে এমন (কথা) বলছো? এ কি যাদু? অথচ যাদুকর সফলকাম হয় না।




(10:78)

قَالُوْۤا اَجِئْتَنَا لِتَلْفِتَنَا عَمَّا وَجَدْنَا عَلَیْهِ اٰبَآءَنَا وَ تَكُوْنَ لَكُمَا الْكِبْرِیَآءُ فِی الْاَرْضِ١ؕ وَ مَا نَحْنُ لَكُمَا بِمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    তারা জবাবে বললো, “তুমি কি যে পথে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের পেয়েছি সে পথ থেকে আমাদের ফিরিয়ে দিতে এবং যাতে যমীনে তোমাদের দু’জনের প্রাধান্য কায়েম হয়ে যায়, সেজন্য এসেছো? তোমাদের কথা তো আমরা মেনে নিতে প্রস্তুত নই।”




(10:79)

وَ قَالَ فِرْعَوْنُ ائْتُوْنِیْ بِكُلِّ سٰحِرٍ عَلِیْمٍ




অনুবাদ:    আর ফেরাউন (নিজের লোকদের) বললো, সকল দক্ষ ও অভিজ্ঞ যাদুকরকে আমার কাছে হাযির করো।




(10:80)

فَلَمَّا جَآءَ السَّحَرَةُ قَالَ لَهُمْ مُّوْسٰۤى اَلْقُوْا مَاۤ اَنْتُمْ مُّلْقُوْنَ




অনুবাদ:    -যখন যাদুকররা সে গেলো, মুসা তাদেরকে বললো, যা কিছু তোমাদের নিক্ষেপ করার আছে নিক্ষেপ করো।




(10:81)

فَلَمَّاۤ اَلْقَوْا قَالَ مُوْسٰى مَا جِئْتُمْ بِهِ١ۙ السِّحْرُ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَیُبْطِلُهٗ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِیْنَ




অনুবাদ:    তারপর যখন তারা নিজেদের ভোজবাজি, নিক্ষেপ করলো, মুসা, বললো, তোমরা এই যা কিছু নিক্ষেপ করেছো এগুলো যাদু। আল্লাহ এখনই একে ব্যর্থ করে দেবেন। ফাসাদ সৃষ্টিকরীদের কাজকে আল্লাহ‌ সার্থক হতে দেন না।




(10:82)

وَ یُحِقُّ اللّٰهُ الْحَقَّ بِكَلِمٰتِهٖ وَ لَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُوْنَ۠




অনুবাদ:    আর অপরাধীদের কাছে যতই বিরক্তিকর হোক না কেন আল্লাহ‌ তার ফরমানের সাহায্যে সত্যকে সত্য করেই দেখিয়ে দেন।




(10:83)

فَمَاۤ اٰمَنَ لِمُوْسٰۤى اِلَّا ذُرِّیَّةٌ مِّنْ قَوْمِهٖ عَلٰى خَوْفٍ مِّنْ فِرْعَوْنَ وَ مَلَاۡئِهِمْ اَنْ یَّفْتِنَهُمْ١ؕ وَ اِنَّ فِرْعَوْنَ لَعَالٍ فِی الْاَرْضِ١ۚ وَ اِنَّهٗ لَمِنَ الْمُسْرِفِیْنَ




অনুবাদ:    (তারপর দেখো) মুসাকে তার কওমের কতিপয় নওজোয়ান ছাড়া কেউ মেনে নেয়নি, ফেরাউনের ভয়ে এবং তাদের নিজেদেরই কওমের নেতৃস্থানীয় লোকদের ভয়ে। (তাদের আশঙ্কা ছিল) ফেরাউন তাদের ওপর নির্যাতন চালাবে। আর প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে এই যে, ফেরাউন দুনিয়ায় পরাক্রমশালী ছিল এবং সে এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল যারা কোন সীমানা মানে না।




(10:84)

وَ قَالَ مُوْسٰى یٰقَوْمِ اِنْ كُنْتُمْ اٰمَنْتُمْ بِاللّٰهِ فَعَلَیْهِ تَوَكَّلُوْۤا اِنْ كُنْتُمْ مُّسْلِمِیْنَ




অনুবাদ:    মুসা তার কওমকে বললো, হে লোকেরা! যদি তোমরা সত্যিই আল্লাহর প্রতি ঈমান রেখে থাকো তাহলে তার ওপর ভরসা করো, যদি তোমরা মুসলিম-আত্মসর্ম্পণনকারী হও।




(10:85)

فَقَالُوْا عَلَى اللّٰهِ تَوَكَّلْنَا١ۚ رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلْقَوْمِ الظّٰلِمِیْنَۙ




অনুবাদ:    তারা জবাব দিল, আমরা আল্লাহরই ওপর ভরসা করলাম। হে আমাদের রব! আমাদেরকে জালেমদের নির্যাতনের শিকারে পরিণত করো না।




(10:86)

وَ نَجِّنَا بِرَحْمَتِكَ مِنَ الْقَوْمِ الْكٰفِرِیْنَ




অনুবাদ:    এবং তোমার রহমতের সাহায্যে কাফেরদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো।




(10:87)

وَ اَوْحَیْنَاۤ اِلٰى مُوْسٰى وَ اَخِیْهِ اَنْ تَبَوَّاٰ لِقَوْمِكُمَا بِمِصْرَ بُیُوْتًا وَّ اجْعَلُوْا بُیُوْتَكُمْ قِبْلَةً وَّ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ١ؕ وَ بَشِّرِ الْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    আর আমি মূসা ও তার ভাইকে ইশারা করলাম এই বলে যে, মিসরে নিজের কওমের জন্য কতিপয় গৃহের সংস্থান করো, নিজেদের ঐ গৃহগুলোকে কিবলায় পরিণত করো এবং নামায কায়েম করো। আর ঈমানদারদেরকে সুখবর দাও।




(10:88)

وَ قَالَ مُوْسٰى رَبَّنَاۤ اِنَّكَ اٰتَیْتَ فِرْعَوْنَ وَ مَلَاَهٗ زِیْنَةً وَّ اَمْوَالًا فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۙ رَبَّنَا لِیُضِلُّوْا عَنْ سَبِیْلِكَ١ۚ رَبَّنَا اطْمِسْ عَلٰۤى اَمْوَالِهِمْ وَ اشْدُدْ عَلٰى قُلُوْبِهِمْ فَلَا یُؤْمِنُوْا حَتّٰى یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ




অনুবাদ:    মুসা দোয়া করলো, হে আমাদের রব! তুমি ফেরাউন ও তার সরদারদেরকে দুনিয়ার জীবনের শোভা-সৌন্দর্য ও ধন-সম্পদ দান করেছো। হে আমাদের রব! একি এ জন্য যে, তারা মানুষকে তোমার পথ থেকে বিপথে সরিয়ে দেবে? হে আমাদের রব! এদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দাও এবং এদের অন্তরে এমনভাবে মোহর মেরে দাও যাতে মর্মন্তুদ শাস্তি ভোগ না করা পর্যন্ত যেন এরা ঈমান না আনে।




(10:89)

قَالَ قَدْ اُجِیْبَتْ دَّعْوَتُكُمَا فَاسْتَقِیْمَا وَ لَا تَتَّبِعٰٓنِّ سَبِیْلَ الَّذِیْنَ لَا یَعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহ জবাবে বললেন, তোমাদের দু’জনের দোয়া কবুল করা হলো। তোমরা দু’জন অবিচল থাকো এবং মূর্খদের পথ কখনো অনুসরণ করো না।




(10:90)

وَ جٰوَزْنَا بِبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ الْبَحْرَ فَاَتْبَعَهُمْ فِرْعَوْنُ وَ جُنُوْدُهٗ بَغْیًا وَّ عَدْوًا١ؕ حَتّٰۤى اِذَاۤ اَدْرَكَهُ الْغَرَقُ١ۙ قَالَ اٰمَنْتُ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا الَّذِیْۤ اٰمَنَتْ بِهٖ بَنُوْۤا اِسْرَآءِیْلَ وَ اَنَا مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ




অনুবাদ:    আর আমি বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করে নিয়ে গেলাম। তারপর ফেরাউন ও তার সেনাদল জুলুম নির্যাতন ও সীমালঙ্ঘন করার উদ্দেশ্য তাদের পেছনে চললো। অবশেষে যখন ফেরাউন ডুবতে থাকলো তখন বলে উঠলো, আমি মেনে নিলাম, বনী ইসরাঈল যার উপর ঈমান এনেছে, তিনি ছাড়া আর কোন প্রকৃত ইলাহ নেই এবং আমিও আনুগত্যের শির নতকারীদের অন্তর্ভুক্ত।




(10:91)

آٰلْئٰنَ وَ قَدْ عَصَیْتَ قَبْلُ وَ كُنْتَ مِنَ الْمُفْسِدِیْنَ




অনুবাদ:    (জবাব দেয়া হলো) এখন ঈমান আনছো! অথচ এর আগে পর্যন্ত তুমি নাফরমানী চালিয়ে এসেছো এবং তুমি বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের একজন ছিলে।




(10:92)

فَالْیَوْمَ نُنَجِّیْكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُوْنَ لِمَنْ خَلْفَكَ اٰیَةً١ؕ وَ اِنَّ كَثِیْرًا مِّنَ النَّاسِ عَنْ اٰیٰتِنَا لَغٰفِلُوْنَ۠




অনুবাদ:    এখন তো আমি কেবল তোমার লাশটাকেই রক্ষা করবো যাতে তুমি পরবর্তীদের জন্য শিক্ষণীয় নিদর্শন হয়ে থাকো। যদিও অনেক মানুষ এমন আছে যারা আমার নিদর্শনসমূহ থেকে উদাসীন।




(10:93)

وَ لَقَدْ بَوَّاْنَا بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ مُبَوَّاَ صِدْقٍ وَّ رَزَقْنٰهُمْ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ١ۚ فَمَا اخْتَلَفُوْا حَتّٰى جَآءَهُمُ الْعِلْمُ١ؕ اِنَّ رَبَّكَ یَقْضِیْ بَیْنَهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ فِیْمَا كَانُوْا فِیْهِ یَخْتَلِفُوْنَ




অনুবাদ:    বনী ইসরাঈলকে আমি খুব ভালো আবাসভূমি দিয়েছি এবং অতি উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ তাদেরকে দান করেছি। তারপর যখন তাদের কাছে জ্ঞান এসে গেলো, তখনই তারা পরস্পরে মতভেদ করলো নিশ্চয়ই তোমার রব কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে সেই জিনিসের ফায়সালা করে দেবেন, যে ব্যাপারে তারা মতভেদে লিপ্ত ছিল।




(10:94)

فَاِنْ كُنْتَ فِیْ شَكٍّ مِّمَّاۤ اَنْزَلْنَاۤ اِلَیْكَ فَسْئَلِ الَّذِیْنَ یَقْرَءُوْنَ الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلِكَ١ۚ لَقَدْ جَآءَكَ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِیْنَۙ




অনুবাদ:    এখন যদি তোমার সেই হিদায়াতের ব্যাপারে সমান্যও সন্দেহ থেকে থাকে যা আমি তোমার ওপর নাযিল করেছি তাহলে যারা আগে থেকেই কিতাব পড়ছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করে নাও। প্রকৃতপক্ষে তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার কাছে এ কিতাব মহাসত্য হয়েই এসেছে।




(10:95)

وَ لَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِ اللّٰهِ فَتَكُوْنَ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ




অনুবাদ:    কাজেই তুমি সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না এবং যারা আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা বলেছে তাদের মধ্যেও শামিল হয়ো না, তাহলে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের দলভুক্ত হবে।




(10:96)

اِنَّ الَّذِیْنَ حَقَّتْ عَلَیْهِمْ كَلِمَتُ رَبِّكَ لَا یُؤْمِنُوْنَۙ




অনুবাদ:    আসলে যাদের ব্যাপারে তোমার রবের কথা সত্য সাব্যস্ত হয়েছে তারা কখনই ঈমান আনবে না




(10:97)

وَ لَوْ جَآءَتْهُمْ كُلُّ اٰیَةٍ حَتّٰى یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ




অনুবাদ:    তাদের সামনে যতই নিদর্শন এসে যাক না কেন, যতক্ষণ না যন্ত্রণাদায়ক আযাব চাক্ষুস দেখে নেবে।




(10:98)

فَلَوْ لَا كَانَتْ قَرْیَةٌ اٰمَنَتْ فَنَفَعَهَاۤ اِیْمَانُهَاۤ اِلَّا قَوْمَ یُوْنُسَ١ؕ لَمَّاۤ اٰمَنُوْا كَشَفْنَا عَنْهُمْ عَذَابَ الْخِزْیِ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ مَتَّعْنٰهُمْ اِلٰى حِیْنٍ




অনুবাদ:    এমন কোন দৃষ্টান্ত আছে কি যে, একটি জনবসতি চাক্ষুষ আযাব দেখে ঈমান এনেছে এবং তার ঈমান তার জন্য সুফলদায়ক প্রমাণিত হয়েছে? ইউনুসের কওম ছাড়া (এর কোন নজির নেই) তারা যখন ঈমান এনেছিল তখন অবশ্যই আমি তাদের ওপর থেকে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনার আযাব হটিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাদেরকে একটি সময় পর্যন্ত জীবন উপভোগ করার সুযোগ দিয়েছিলাম।




(10:99)

وَ لَوْ شَآءَ رَبُّكَ لَاٰمَنَ مَنْ فِی الْاَرْضِ كُلُّهُمْ جَمِیْعًا١ؕ اَفَاَنْتَ تُكْرِهُ النَّاسَ حَتّٰى یَكُوْنُوْا مُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    যদি তোমার রবের ইচ্ছা হতো (যে, যমীনে সবাই হবে মুমিন ও অনুগত) তাহলে সারা দুনিয়াবাসী ঈমান আনতো। তবে কি তুমি মুমিন হবার জন্য লোকদের ওপর জবরদস্তি করবে?




(10:100)

وَ مَا كَانَ لِنَفْسٍ اَنْ تُؤْمِنَ اِلَّا بِاِذْنِ اللّٰهِ١ؕ وَ یَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِیْنَ لَا یَعْقِلُوْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহর হুকুম ছাড়া কেউই ঈমান আনতে পারে না। আর আল্লাহর রীতি হচ্ছে, যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে কাজ করে না তাদের ওপর কলুষতা চাপিয়ে দেন।




(10:101)

قُلِ انْظُرُوْا مَا ذَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ وَ مَا تُغْنِی الْاٰیٰتُ وَ النُّذُرُ عَنْ قَوْمٍ لَّا یُؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে বলো, “পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে চোখ মেলে দেখো।” আর যারা ঈমান আনতেই চায় না তাদের জন্য নির্দশন ও উপদেশ তিরস্কার কীইবা উপকারে আসতে পারে।




(10:102)

فَهَلْ یَنْتَظِرُوْنَ اِلَّا مِثْلَ اَیَّامِ الَّذِیْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِهِمْ١ؕ قُلْ فَانْتَظِرُوْۤا اِنِّیْ مَعَكُمْ مِّنَ الْمُنْتَظِرِیْنَ




অনুবাদ:    এখন তারা এছাড়া আর কিসের প্রতীক্ষায় আছে যে, তাদের আগে চলে যাওয়া লোকেরা যে দুঃসময় দেখেছে তারাও তাই দেখবে? তাদেরকে বলো, “ঠিক আছে, অপেক্ষা করো আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।”




(10:103)

ثُمَّ نُنَجِّیْ رُسُلَنَا وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كَذٰلِكَ١ۚ حَقًّا عَلَیْنَا نُنْجِ الْمُؤْمِنِیْنَ۠




অনুবাদ:    তারপর (যখন এমন সময় আসে তখন) আমি নিজের রসূলদের এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে রক্ষা করি। এটিই আমার রীতি। মুমিনদের রক্ষা করা আমার দায়িত্ব।




(10:104)

قُلْ یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اِنْ كُنْتُمْ فِیْ شَكٍّ مِّنْ دِیْنِیْ فَلَاۤ اَعْبُدُ الَّذِیْنَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَ لٰكِنْ اَعْبُدُ اللّٰهَ الَّذِیْ یَتَوَفّٰىكُمْ١ۖۚ وَ اُمِرْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَۙ




অনুবাদ:    হে নবী! বলে দাও, হে লোকেরা! যদি তোমরা এখনো পর্যন্ত আমার দ্বীনের ব্যাপারে কোন সন্দেহের মধ্যে থাকো তাহলে শুনে রাখো, তোমরা আল্লাহ‌ ছাড়া যাদের বন্দেগী করো আমি তাদের বন্দেগী করি না বরং আমি কেবলমাত্র এমন আল্লাহর বন্দেগী করি যার করতলে রয়েছে তোমাদের মৃত্যু।




(10:105)

وَ اَنْ اَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّیْنِ حَنِیْفًا١ۚ وَ لَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ




অনুবাদ:    আমাকে মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হবার জন্য হুকুম দেয়া হয়েছে। আর আমাকে বলা হয়েছে, তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে ঠিকভাবে এ দ্বীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত করো। এবং কখখোনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।




(10:106)

وَ لَا تَدْعُ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَا یَنْفَعُكَ وَ لَا یَضُرُّكَ١ۚ فَاِنْ فَعَلْتَ فَاِنَّكَ اِذًا مِّنَ الظّٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কোন সত্তাকে ডেকো না, যে তোমার না কোন উপকার করতে পারে, না ক্ষতি করতে পারে। যদি তুমি এমনটি করো তাহলে জালেমদের দলভুক্ত হবে।




(10:107)

وَ اِنْ یَّمْسَسْكَ اللّٰهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهٗۤ اِلَّا هُوَ١ۚ وَ اِنْ یُّرِدْكَ بِخَیْرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضْلِهٖ١ؕ یُصِیْبُ بِهٖ مَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ١ؕ وَ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ




অনুবাদ:    যদি আল্লাহ‌ তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন তাহলে তিনি ছাড়া আর কেউ নেই যে, এ বিপদ দুর করতে পারে। আর যদি তিনি তোমার কোন মঙ্গল চান তাহলে তার অনুগ্রহ রদ করারও কেউ নেই। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে থেকে যাকে চান অনুগ্রহ করেন এবং তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।”




(10:108)

قُلْ یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَكُمُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكُمْ١ۚ فَمَنِ اهْتَدٰى فَاِنَّمَا یَهْتَدِیْ لِنَفْسِهٖ١ۚ وَ مَنْ ضَلَّ فَاِنَّمَا یَضِلُّ عَلَیْهَا١ۚ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیْكُمْ بِوَكِیْلٍؕ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! বলে দাও, “হে লোকেরা! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এসে গেছে। এখন যারা সোজা পথ অবলম্বন করবে তাদের সোজা পথ অবলম্বন তাদের জন্যই কল্যাণকর হবে। এবং যারা ভুল পথ অবলম্বন করবে তাদের ভুল পথ অবলম্বন তাদের জন্যই ধ্বংসকর হবে। আর “আমি তোমাদের ওপর হাবিলদার হয়ে আসিনি।




(10:109)

وَ اتَّبِعْ مَا یُوْحٰۤى اِلَیْكَ وَ اصْبِرْ حَتّٰى یَحْكُمَ اللّٰهُ١ۖۚ وَ هُوَ خَیْرُ الْحٰكِمِیْنَ۠




অনুবাদ:    হে নবী! তোমার কাছে অহীর মাধ্যমে যে হেদায়াত পাঠানো হচ্ছে তুমি তার অনুসরণ করো। আর আল্লাহ‌ ফায়সালা দান করা পর্যন্ত সবর করো এবং তিনিই সবচেয়ে ভালো ফায়সালাকারী।


বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

Islamic world

  Islamic World

জনপ্রিয় লেখা সমূহ