৩৩-আহযাব
(33:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
(33:1)
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اتَّقِ اللّٰهَ وَ لَا تُطِعِ الْكٰفِرِیْنَ وَ الْمُنٰفِقِیْنَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلِیْمًا حَكِیْمًاۙ
অনুবাদ: হে নবী! আল্লাহকে ভয় করো এবং কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই সর্বজ্ঞ ও মহাজ্ঞানী।
(33:2)
وَّ اتَّبِعْ مَا یُوْحٰۤى اِلَیْكَ مِنْ رَّبِّكَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرًاۙ
অনুবাদ: তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যে বিষয়ের ইঙ্গিত করা হচ্ছে তার অনুসরণ করো। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা সবই জানেন।
(33:3)
وَّ تَوَكَّلْ عَلَى اللّٰهِ١ؕ وَ كَفٰى بِاللّٰهِ وَكِیْلًا
অনুবাদ: আল্লাহর প্রতি নির্ভর করো। কর্ম সম্পাদনের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
(33:4)
مَا جَعَلَ اللّٰهُ لِرَجُلٍ مِّنْ قَلْبَیْنِ فِیْ جَوْفِهٖ١ۚ وَ مَا جَعَلَ اَزْوَاجَكُمُ الّٰٓئِیْ تُظٰهِرُوْنَ مِنْهُنَّ اُمَّهٰتِكُمْ١ۚ وَ مَا جَعَلَ اَدْعِیَآءَكُمْ اَبْنَآءَكُمْ١ؕ ذٰلِكُمْ قَوْلُكُمْ بِاَفْوَاهِكُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ یَقُوْلُ الْحَقَّ وَ هُوَ یَهْدِی السَّبِیْلَ
অনুবাদ: আল্লাহ কোন ব্যক্তির দেহাভ্যন্তরে দু’টি হৃদয় রাখেননি। তোমাদের যেসব স্ত্রীকে তোমরা “যিহার” করো তাদেরকে আল্লাহ তোমাদের জননীও করেননি এবং তোমাদের পালক পুত্রদেরকেও তোমাদের প্রকৃত পুত্র করেননি। এসব তো হচ্ছে এমন ধরনের কথা যা তোমরা স্বমুখে উচ্চারণ করো, কিন্তু আল্লাহ এমন কথা বলেন যা প্রকৃত সত্য এবং তিনিই সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন।
(33:5)
اُدْعُوْهُمْ لِاٰبَآئِهِمْ هُوَ اَقْسَطُ عِنْدَ اللّٰهِ١ۚ فَاِنْ لَّمْ تَعْلَمُوْۤا اٰبَآءَهُمْ فَاِخْوَانُكُمْ فِی الدِّیْنِ وَ مَوَالِیْكُمْ١ؕ وَ لَیْسَ عَلَیْكُمْ جُنَاحٌ فِیْمَاۤ اَخْطَاْتُمْ بِهٖ١ۙ وَ لٰكِنْ مَّا تَعَمَّدَتْ قُلُوْبُكُمْ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا
অনুবাদ: পালক পুত্রদেরকে তাদের পিতার সাথে সম্পর্কিত করে ডাকো। এটি আল্লাহর কাছে বেশী ন্যায়সঙ্গত কথা। আর যদি তোমরা তাদের পিতৃ পরিচয় না জানো, তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই এবং বন্ধু। না জেনে যে কথা তোমরা বলো সেজন্য তোমাদের পাকড়াও করা হবে না, কিন্তু তোমরা অন্তরে যে সংকল্প করো সেজন্য অবশ্যই পাকড়াও হবে। আল্লাহ ক্ষমাকারী ও দয়াময়।
(33:6)
اَلنَّبِیُّ اَوْلٰى بِالْمُؤْمِنِیْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَ اَزْوَاجُهٗۤ اُمَّهٰتُهُمْ١ؕ وَ اُولُوا الْاَرْحَامِ بَعْضُهُمْ اَوْلٰى بِبَعْضٍ فِیْ كِتٰبِ اللّٰهِ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُهٰجِرِیْنَ اِلَّاۤ اَنْ تَفْعَلُوْۤا اِلٰۤى اَوْلِیٰٓئِكُمْ مَّعْرُوْفًا١ؕ كَانَ ذٰلِكَ فِی الْكِتٰبِ مَسْطُوْرًا
অনুবাদ: নিঃসন্দেহে নবী ঈমানদারদের কাছে তাদের নিজেদের তুলনায় অগ্রাধিকারী, আর নবীদের স্ত্রীগণ তাদের মা। কিন্তু আল্লাহর কিতাবের দৃষ্টিতে সাধারণ মু’মিন ও মুহাজিরদের তুলনায় আত্মীয়রা পরস্পরের বেশি হকদার। তবে নিজেদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে কোন সদ্ব্যবহার (করতে চাইলে তা) তোমরা করতে পারো। আল্লাহর কিতাবে এ বিধান লেখা আছে।
(33:7)
وَ اِذْ اَخَذْنَا مِنَ النَّبِیّٖنَ مِیْثَاقَهُمْ وَ مِنْكَ وَ مِنْ نُّوْحٍ وَّ اِبْرٰهِیْمَ وَ مُوْسٰى وَ عِیْسَى ابْنِ مَرْیَمَ١۪ وَ اَخَذْنَا مِنْهُمْ مِّیْثَاقًا غَلِیْظًاۙ
অনুবাদ: আর হে নবী! স্মরণ করো সেই অঙ্গীকারের কথা যা আমি নিয়েছি সকল নবীর কাছ থেকে, তোমার কাছ থেকে এবং নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও মারয়াম পুত্র ঈসার কাছ থেকেও। সবার কাছ থেকে আমি নিয়েছি পাকাপোক্ত অলংঘনীয় অঙ্গীকার
(33:8)
لِّیَسْئَلَ الصّٰدِقِیْنَ عَنْ صِدْقِهِمْ١ۚ وَ اَعَدَّ لِلْكٰفِرِیْنَ عَذَابًا اَلِیْمًا۠
অনুবাদ: যাতে সত্যবাদীদেরকে (তাদের রব) তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেন এবং কাফেরদের জন্য তো তিনি যন্ত্রণাদায়ক আযাব প্রস্তুত করেই রেখেছেন।
(33:9)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اذْكُرُوْا نِعْمَةَ اللّٰهِ عَلَیْكُمْ اِذْ جَآءَتْكُمْ جُنُوْدٌ فَاَرْسَلْنَا عَلَیْهِمْ رِیْحًا وَّ جُنُوْدًا لَّمْ تَرَوْهَا١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرًاۚ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ স্মরণ করো আল্লাহর অনুগ্রহ, যা (এই মাত্র) তিনি করলেন তোমাদের প্রতি, যখন সেনাদল তোমাদের ওপর চড়াও হলো আমি পাঠালাম তাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ধুলিঝড় এবং এমন সেনাবাহিনী রওয়ানা করলাম যা তোমরা দেখোনি। তোমরা তখন যা কিছু করছিলে আল্লাহ তা সব দেখছিলেন।
(33:10)
اِذْ جَآءُوْكُمْ مِّنْ فَوْقِكُمْ وَ مِنْ اَسْفَلَ مِنْكُمْ وَ اِذْ زَاغَتِ الْاَبْصَارُ وَ بَلَغَتِ الْقُلُوْبُ الْحَنَاجِرَ وَ تَظُنُّوْنَ بِاللّٰهِ الظُّنُوْنَا
অনুবাদ: যখন তারা ওপর ও নিচে থেকে তোমাদের ওপর চড়াও হলো, যখন ভয়ে চোখ বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছিল, প্রাণ হয়ে পড়েছিল ওষ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা প্রকার ধারণা পোষণ করতে শুরু করেছিলে
(33:11)
هُنَالِكَ ابْتُلِیَ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ زُلْزِلُوْا زِلْزَالًا شَدِیْدًا
অনুবাদ: তখন মু’মিনদেরকে নিদারুণ পরীক্ষা করা হলো এবং ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়া হলো।
(33:12)
وَ اِذْ یَقُوْلُ الْمُنٰفِقُوْنَ وَ الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ مَّا وَعَدَنَا اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗۤ اِلَّا غُرُوْرًا
অনুবাদ: স্মরণ করো যখন মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে রোগ ছিল তারা পরিষ্কার বলছিল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
(33:13)
وَ اِذْ قَالَتْ طَّآئِفَةٌ مِّنْهُمْ یٰۤاَهْلَ یَثْرِبَ لَا مُقَامَ لَكُمْ فَارْجِعُوْا١ۚ وَ یَسْتَاْذِنُ فَرِیْقٌ مِّنْهُمُ النَّبِیَّ یَقُوْلُوْنَ اِنَّ بُیُوْتَنَا عَوْرَةٌ١ۛؕ وَ مَا هِیَ بِعَوْرَةٍ١ۛۚ اِنْ یُّرِیْدُوْنَ اِلَّا فِرَارًا
অনুবাদ: যখন তাদের মধ্য থেকে একটি দল বললো, “হে ইয়াসরিববাসীরা! তোমাদের জন্য এখন অবস্থান করার কোন সুযোগ নেই, ফিরে চলো।” যখন তাদের একপক্ষ নবীর কাছে এই বলে ছুটি চাচ্ছিল যে, “আমাদের গৃহ বিপদাপন্ন,” অথচ তা বিপদাপন্ন ছিল না আসলে তারা (যুদ্ধক্ষেত্র থেকে) পালাতে চাচ্ছিল।
(33:14)
وَ لَوْ دُخِلَتْ عَلَیْهِمْ مِّنْ اَقْطَارِهَا ثُمَّ سُئِلُوا الْفِتْنَةَ لَاٰتَوْهَا وَ مَا تَلَبَّثُوْا بِهَاۤ اِلَّا یَسِیْرًا
অনুবাদ: যদি শহরের বিভিন্ন দিক থেকে শত্রুরা ঢুকে পড়তো এবং সেসময় তাদেরকে ফিতনা সৃষ্টি করার জন্য আহবান জানানো হতো, তাহলে তারা তাতেই লিপ্ত হয়ে যেতো এবং ফিতনায় শরীক হবার ব্যাপারে তারা খুব কমই ইতস্তত করতো।
(33:15)
وَ لَقَدْ كَانُوْا عَاهَدُوا اللّٰهَ مِنْ قَبْلُ لَا یُوَلُّوْنَ الْاَدْبَارَ١ؕ وَ كَانَ عَهْدُ اللّٰهِ مَسْئُوْلًا
অনুবাদ: তারা ইতিপূর্বে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল যে, তারা পৃষ্টপ্রদর্শন করবে না এবং আল্লাহর সাথে করা অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা তো হবেই।
(33:16)
قُلْ لَّنْ یَّنْفَعَكُمُ الْفِرَارُ اِنْ فَرَرْتُمْ مِّنَ الْمَوْتِ اَوِ الْقَتْلِ وَ اِذًا لَّا تُمَتَّعُوْنَ اِلَّا قَلِیْلًا
অনুবাদ: হে নবী! তাদেরকে বলো, যদি তোমরা মৃত্যু বা হত্যা থেকে পলায়ন করো, তাহলে এ পলায়নে তোমাদের কোন লাভ হবে না। এরপর জীবন উপভোগ করার সামান্য সুযোগই তোমরা পাবে।
(33:17)
قُلْ مَنْ ذَا الَّذِیْ یَعْصِمُكُمْ مِّنَ اللّٰهِ اِنْ اَرَادَ بِكُمْ سُوْٓءًا اَوْ اَرَادَ بِكُمْ رَحْمَةً١ؕ وَ لَا یَجِدُوْنَ لَهُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَلِیًّا وَّ لَا نَصِیْرًا
অনুবাদ: তাদেরকে বলো, কে তোমাদের রক্ষা করতে পারে আল্লাহর হাত থেকে যদি তিনি তোমাদের ক্ষতি করতে চান? আর কে তাঁর রহমতকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে যদি তিনি চান তোমাদের প্রতি মেহেরবানী করতে? আল্লাহর মোকাবিলায় তো তারা কোন পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী লাভ করতে পারে না।
(33:18)
قَدْ یَعْلَمُ اللّٰهُ الْمُعَوِّقِیْنَ مِنْكُمْ وَ الْقَآئِلِیْنَ لِاِخْوَانِهِمْ هَلُمَّ اِلَیْنَا١ۚ وَ لَا یَاْتُوْنَ الْبَاْسَ اِلَّا قَلِیْلًاۙ
অনুবাদ: আল্লাহ তোমাদের মধ্য থেকে তাদেরকে খুব ভালো করেই জানেন যারা (যুদ্ধের কাজে) বাঁধা দেয়, যারা নিজেদের ভাইদেরকে বলে, “এসো আমাদের দিকে,” যারা যুদ্ধে অংশ নিলেও নিয়ে থাকে শুধুমাত্র নামকাওয়াস্তে।
(33:19)
اَشِحَّةً عَلَیْكُمْ١ۖۚ فَاِذَا جَآءَ الْخَوْفُ رَاَیْتَهُمْ یَنْظُرُوْنَ اِلَیْكَ تَدُوْرُ اَعْیُنُهُمْ كَالَّذِیْ یُغْشٰى عَلَیْهِ مِنَ الْمَوْتِ١ۚ فَاِذَا ذَهَبَ الْخَوْفُ سَلَقُوْكُمْ بِاَلْسِنَةٍ حِدَادٍ اَشِحَّةً عَلَى الْخَیْرِ١ؕ اُولٰٓئِكَ لَمْ یُؤْمِنُوْا فَاَحْبَطَ اللّٰهُ اَعْمَالَهُمْ١ؕ وَ كَانَ ذٰلِكَ عَلَى اللّٰهِ یَسِیْرًا
অনুবাদ: যারা তোমাদের সাথে সহযোগিতা করার ব্যাপারে বড়ই কৃপণ। বিপদের সময় এমনভাবে চোখ উলটিয়ে তোমাদের দিকে তাকাতে থাকে যেন কোন মৃত্যুপথযাত্রী মূর্ছিত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিপদ চলে গেলে এই লোকেরাই আবার স্বার্থলোভী হয়ে তীক্ষ্ণ ভাষায় তোমাদেরকে বিদ্ধ করতে থাকে। তারা কখনো ঈমান আনেনি, তাই আল্লাহ তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড ধ্বংস করে দিয়েছেন এবং এমনটি করা আল্লাহর জন্য অত্যন্ত সহজ।
(33:20)
یَحْسَبُوْنَ الْاَحْزَابَ لَمْ یَذْهَبُوْا١ۚ وَ اِنْ یَّاْتِ الْاَحْزَابُ یَوَدُّوْا لَوْ اَنَّهُمْ بَادُوْنَ فِی الْاَعْرَابِ یَسْاَلُوْنَ عَنْ اَنْۢبَآئِكُمْ١ؕ وَ لَوْ كَانُوْا فِیْكُمْ مَّا قٰتَلُوْۤا اِلَّا قَلِیْلًا۠
অনুবাদ: তারা মনে করছে আক্রমণকারী দল এখনো চলে যায়নি। আর যদি আক্রমণকারীরা আবার এসে যায়, তাহলে তাদের মন চায় এ সময় তারা কোথাও মরুভূমিতে বেদুইনের মধ্যে গিয়ে বসতো এবং সেখান থেকে তোমাদের খবরাখবর নিতো। তবুও যদি তারা তোমাদের মধ্যে থাকেও তাহলে যুদ্ধে খুব কমই অংশ নেবে।
(33:21)
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِیْ رَسُوْلِ اللّٰهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ یَرْجُوا اللّٰهَ وَ الْیَوْمَ الْاٰخِرَ وَ ذَكَرَ اللّٰهَ كَثِیْرًاؕ
অনুবাদ: আসলে তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে ছিল একটি উত্তম আদর্শ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ ও শেষ দিনের আকাঙ্ক্ষী এবং বেশী করে আল্লাহকে স্মরণ করে।
(33:22)
وَ لَمَّا رَاَ الْمُؤْمِنُوْنَ الْاَحْزَابَ١ۙ قَالُوْا هٰذَا مَا وَعَدَنَا اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗ وَ صَدَقَ اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗ١٘ وَ مَا زَادَهُمْ اِلَّاۤ اِیْمَانًا وَّ تَسْلِیْمًاؕ
অনুবাদ: আর সাচ্চা মু’মিনদের (অবস্থা সে সময় এমন ছিল,) ) যখন আক্রমণকারী সেনাদলকে দেখলো তারা চিৎকার করে উঠলো, “এতো সেই জিনিসই যার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ ও তাঁর রসূল আমাদের দিয়েছিলেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কথা পুরোপুরি সত্য ছিল।” এ ঘটনা তাদের ঈমান ও আত্মসমর্পণ আরো বেশী বাড়িয়ে দিল।
(33:23)
مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللّٰهَ عَلَیْهِ١ۚ فَمِنْهُمْ مَّنْ قَضٰى نَحْبَهٗ وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّنْتَظِرُ١ۖ٘ وَ مَا بَدَّلُوْا تَبْدِیْلًاۙ
অনুবাদ: ঈমানদারদের মধ্যে এমন লোক আছে যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করে দেখালো। তাদের কেউ নিজের নজরানা পূর্ণ করেছে এবং কেউ সময় আসার প্রতীক্ষায় আছে। তারা তাদের নীতি পরিবর্তন করেনি।
(33:24)
لِّیَجْزِیَ اللّٰهُ الصّٰدِقِیْنَ بِصِدْقِهِمْ وَ یُعَذِّبَ الْمُنٰفِقِیْنَ اِنْ شَآءَ اَوْ یَتُوْبَ عَلَیْهِمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ غَفُوْرًا رَّحِیْمًاۚ
অনুবাদ: (এসব কিছু হলো এজন্য) যাতে আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যতার পুরস্কার দেন এবং মুনাফিকদেরকে চাইলে শাস্তি দেন এবং চাইলে তাদের তাওবা কবুল করে নেন। অবশ্যই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(33:25)
وَ رَدَّ اللّٰهُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا بِغَیْظِهِمْ لَمْ یَنَالُوْا خَیْرًا١ؕ وَ كَفَى اللّٰهُ الْمُؤْمِنِیْنَ الْقِتَالَ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ قَوِیًّا عَزِیْزًاۚ
অনুবাদ: আল্লাহ কাফেরদের মুখ ফিরিয়ে দিয়েছেন, তারা বিফল হয়ে নিজেদের অন্তর্জ্বালা সহকারে এমনিই ফিরে গেছে এবং মু’মিনদের পক্ষ থেকে লড়াই করার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত।
(33:26)
وَ اَنْزَلَ الَّذِیْنَ ظَاهَرُوْهُمْ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ مِنْ صَیَاصِیْهِمْ وَ قَذَفَ فِیْ قُلُوْبِهِمُ الرُّعْبَ فَرِیْقًا تَقْتُلُوْنَ وَ تَاْسِرُوْنَ فَرِیْقًاۚ
অনুবাদ: তারপর আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে যারাই এর আক্রমণকারীদের সাথে সহযোগিতা করেছিল তাদের দুর্গ থেকে আল্লাহ তাদেরকে নামিয়ে এনেছেন এবং তাদের অন্তরে তিনি এমন ভীতি সঞ্চার করেছেন যার ফলে আজ তাদের একটি দলকে তোমরা হত্যা করছো এবং অন্য একটি দলকে করছো বন্দী।
(33:27)
وَ اَوْرَثَكُمْ اَرْضَهُمْ وَ دِیَارَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ وَ اَرْضًا لَّمْ تَطَئُوْهَا١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرًا۠
অনুবাদ: তিনি তোমাদেরকে তাদের জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পদের ওয়ারিস করে দিয়েছেন এবং এমন এলাকা তোমাদের দিয়েছেন যাকে তোমরা কখনো পদানত করোনি। আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতা সম্পন্ন।
(33:28)
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ قُلْ لِّاَزْوَاجِكَ اِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَیٰوةَ الدُّنْیَا وَ زِیْنَتَهَا فَتَعَالَیْنَ اُمَتِّعْكُنَّ وَ اُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِیْلًا
অনুবাদ: হে নবী! তোমার স্ত্রীদেরকে বলো, যদি তোমরা দুনিয়া এবং তার ভূষণ চাও, তাহলে এসো আমি তোমাদের কিছু দিয়ে ভালোভাবে বিদায় করে দিই।
(33:29)
وَ اِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ وَ الدَّارَ الْاٰخِرَةَ فَاِنَّ اللّٰهَ اَعَدَّ لِلْمُحْسِنٰتِ مِنْكُنَّ اَجْرًا عَظِیْمًا
অনুবাদ: আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও আখেরাতের প্রত্যাশী হও, তাহলে জেনে রাখো তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল তাদের জন্য আল্লাহ মহা প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
(33:30)
یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ مَنْ یَّاْتِ مِنْكُنَّ بِفَاحِشَةٍ مُّبَیِّنَةٍ یُّضٰعَفْ لَهَا الْعَذَابُ ضِعْفَیْنِ١ؕ وَ كَانَ ذٰلِكَ عَلَى اللّٰهِ یَسِیْرًا
অনুবাদ: হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ কোন সুস্পষ্ট অশ্লীল কাজ করবে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। আল্লাহর জন্য এটা খুবই সহজ কাজ।
(33:31)
وَ مَنْ یَّقْنُتْ مِنْكُنَّ لِلّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ تَعْمَلْ صَالِحًا نُّؤْتِهَاۤ اَجْرَهَا مَرَّتَیْنِ١ۙ وَ اَعْتَدْنَا لَهَا رِزْقًا كَرِیْمًا
অনুবাদ: আর তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে এবং সৎকাজ করবে তাকে আমি দু’বার প্রতিদান দেবো এবং আমি তার জন্য সম্মানজনক রিযিকের ব্যবস্থা করে রেখেছি।
(33:32)
یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ لَسْتُنَّ كَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ اِنِ اتَّقَیْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَیَطْمَعَ الَّذِیْ فِیْ قَلْبِهٖ مَرَضٌ وَّ قُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوْفًاۚ
অনুবাদ: হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা সাধারণ নারীদের মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাকো, তাহলে মিহি স্বরে কথা বলো না, যাতে মনের গলদে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে, বরং পরিষ্কার সোজা ও স্বাভাবিকভাবে কথা বলো।
(33:33)
وَ قَرْنَ فِیْ بُیُوْتِكُنَّ وَ لَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِیَّةِ الْاُوْلٰى وَ اَقِمْنَ الصَّلٰوةَ وَ اٰتِیْنَ الزَّكٰوةَ وَ اَطِعْنَ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ١ؕ اِنَّمَا یُرِیْدُ اللّٰهُ لِیُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَیْتِ وَ یُطَهِّرَكُمْ تَطْهِیْرًاۚ
অনুবাদ: নিজেদের গৃহ মধ্যে অবস্থান করো। এবং পূর্বের জাহেলী যুগের মতো সাজসজ্জা দেখিয়ে বেড়িও না। নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো। আল্লাহ তো চান, তোমাদের নবী পরিবার থেকে ময়লা দূর করতে এবং তোমাদের পুরোপুরি পাক-পবিত্র করে দিতে।
(33:34)
وَ اذْكُرْنَ مَا یُتْلٰى فِیْ بُیُوْتِكُنَّ مِنْ اٰیٰتِ اللّٰهِ وَ الْحِكْمَةِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ لَطِیْفًا خَبِیْرًا۠
অনুবাদ: আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানের যেসব কথা তোমাদের গৃহে শুনানো হয়। তা মনে রেখো। অবশ্যই আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী ও সর্ব অবহিত।
(33:35)
اِنَّ الْمُسْلِمِیْنَ وَ الْمُسْلِمٰتِ وَ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ وَ الْقٰنِتِیْنَ وَ الْقٰنِتٰتِ وَ الصّٰدِقِیْنَ وَ الصّٰدِقٰتِ وَ الصّٰبِرِیْنَ وَ الصّٰبِرٰتِ وَ الْخٰشِعِیْنَ وَ الْخٰشِعٰتِ وَ الْمُتَصَدِّقِیْنَ وَ الْمُتَصَدِّقٰتِ وَ الصَّآئِمِیْنَ وَ الصّٰٓئِمٰتِ وَ الْحٰفِظِیْنَ فُرُوْجَهُمْ وَ الْحٰفِظٰتِ وَ الذّٰكِرِیْنَ اللّٰهَ كَثِیْرًا وَّ الذّٰكِرٰتِ١ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمْ مَّغْفِرَةً وَّ اَجْرًا عَظِیْمًا
অনুবাদ: একথা সুনিশ্চিত যে, যে পুরুষ ও নারী মুসলিম, মু’মিন, হুকুমের অনুগত, সত্যবাদী, সবরকারী, আল্লাহর সামনে বিনত, সাদকাদানকারী, রোযা পালনকারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণকারী আল্লাহ তাদের জন্য মাগফিরাত এবং প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
(33:36)
وَ مَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَّ لَا مُؤْمِنَةٍ اِذَا قَضَى اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗۤ اَمْرًا اَنْ یَّكُوْنَ لَهُمُ الْخِیَرَةُ مِنْ اَمْرِهِمْ١ؕ وَ مَنْ یَّعْصِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِیْنًاؕ
অনুবাদ: যখন আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন বিষয়ের ফায়সালা দিয়ে দেন তখন কোন মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারীর সেই ব্যাপারে নিজে ফায়সালা করার কোন অধিকার নেই। আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করে সে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত হয়।
(33:37)
وَ اِذْ تَقُوْلُ لِلَّذِیْۤ اَنْعَمَ اللّٰهُ عَلَیْهِ وَ اَنْعَمْتَ عَلَیْهِ اَمْسِكْ عَلَیْكَ زَوْجَكَ وَ اتَّقِ اللّٰهَ وَ تُخْفِیْ فِیْ نَفْسِكَ مَا اللّٰهُ مُبْدِیْهِ وَ تَخْشَى النَّاسَ١ۚ وَ اللّٰهُ اَحَقُّ اَنْ تَخْشٰىهُ١ؕ فَلَمَّا قَضٰى زَیْدٌ مِّنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنٰكَهَا لِكَیْ لَا یَكُوْنَ عَلَى الْمُؤْمِنِیْنَ حَرَجٌ فِیْۤ اَزْوَاجِ اَدْعِیَآئِهِمْ اِذَا قَضَوْا مِنْهُنَّ وَطَرًا١ؕ وَ كَانَ اَمْرُ اللّٰهِ مَفْعُوْلًا
অনুবাদ: হে নবী! স্মরণ করো, যখন আল্লাহ এবং তুমি যার প্রতি অনুগ্রহ করেছিলে তাকে তুমি বলছিলে, “তোমার স্ত্রীকে ত্যাগ করো না এবং আল্লাহকে ভয় করো।” সে সময় তুমি তোমার মনের মধ্যে যে কথা গোপন করছিলে আল্লাহ তা প্রকাশ করতে চাচ্ছিলেন, তুমি লোকভয় করছিলে, অথচ আল্লাহ এর বেশী হকদার যে, তুমি তাঁকে ভয় করবে। তারপর তখন তার ওপর থেকে যায়েদের সকল প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল তখন আমি সেই (তালাকপ্রাপ্তা মহিলার) বিয়ে তোমার সাথে দিয়ে দিলাম, যাতে মু’মিনদের জন্য তাদের পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে কোন প্রকার সংকীর্ণতা না থাকে যখন তাদের ওপর থেকে তাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। আর আল্লাহর হুকুম তো কার্যকর হয়েই থাকে।
(33:38)
مَا كَانَ عَلَى النَّبِیِّ مِنْ حَرَجٍ فِیْمَا فَرَضَ اللّٰهُ لَهٗ١ؕ سُنَّةَ اللّٰهِ فِی الَّذِیْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلُ١ؕ وَ كَانَ اَمْرُ اللّٰهِ قَدَرًا مَّقْدُوْرَا٘ۙ
অনুবাদ: নবীর জন্য এমন কোন কাজে কোন বাঁধা নেই যা আল্লাহ তার জন্য নির্ধারণ করেছেন ইতিপূর্বে যেসব নবী অতীত হয়ে গেছেন তাদের ব্যাপারে এটিই ছিল আল্লাহর নিয়ম, আর আল্লাহর হুকুম হয় একটি চূড়ান্ত স্থিরীকৃত সিদ্ধান্ত।
(33:39)
اِ۟لَّذِیْنَ یُبَلِّغُوْنَ رِسٰلٰتِ اللّٰهِ وَ یَخْشَوْنَهٗ وَ لَا یَخْشَوْنَ اَحَدًا اِلَّا اللّٰهَ١ؕ وَ كَفٰى بِاللّٰهِ حَسِیْبًا
অনুবাদ: (এ হচ্ছে আল্লাহর নিয়ম তাদের জন্য) যারা আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়ে থাকে, তাঁকেই ভয় করে এবং এক আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না আর হিসেব গ্রহণের জন্য কেবলমাত্র আল্লাহই যথেষ্ট।
(33:40)
مَا كَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنْ رِّجَالِكُمْ وَ لٰكِنْ رَّسُوْلَ اللّٰهِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمًا۠
অনুবাদ: (হে লোকেরা!) মুহাম্মাদ তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে কারোর পিতা নয় কিন্তু সে আল্লাহর রসূল এবং শেষ নবী আর আল্লাহ সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন।
(33:41)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اذْكُرُوا اللّٰهَ ذِكْرًا كَثِیْرًاۙ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করো
(33:42)
وَّ سَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّ اَصِیْلًا
অনুবাদ: এবং সকাল সাঁঝে তাঁর মহিমা ঘোষণা করতে থাকো।
(33:43)
هُوَ الَّذِیْ یُصَلِّیْ عَلَیْكُمْ وَ مَلٰٓئِكَتُهٗ لِیُخْرِجَكُمْ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَى النُّوْرِ١ؕ وَ كَانَ بِالْمُؤْمِنِیْنَ رَحِیْمًا
অনুবাদ: তিনিই তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য দোয়া করে, যাতে তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের মধ্যে নিয়ে আসেন, তিনি মু’মিনদের প্রতি বড়ই মেহেরবান।
(33:44)
تَحِیَّتُهُمْ یَوْمَ یَلْقَوْنَهٗ سَلٰمٌ١ۚۖ وَ اَعَدَّ لَهُمْ اَجْرًا كَرِیْمًا
অনুবাদ: যেদিন তারা তাঁর সাথে সাক্ষাত করবে, তাদের অভ্যর্থনা হবে সালামের মাধ্যমে, এবং তাদের জন্য আল্লাহ বড়ই সম্মানজনক প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
(33:45)
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اِنَّاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّ مُبَشِّرًا وَّ نَذِیْرًاۙ
অনুবাদ: হে নবী! আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী করে
(33:46)
وَّ دَاعِیًا اِلَى اللّٰهِ بِاِذْنِهٖ وَ سِرَاجًا مُّنِیْرًا
অনুবাদ: আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে।
(33:47)
وَ بَشِّرِ الْمُؤْمِنِیْنَ بِاَنَّ لَهُمْ مِّنَ اللّٰهِ فَضْلًا كَبِیْرًا
অনুবাদ: সুসংবাদ দাও তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে (তোমার প্রতি) যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট অনুগ্রহ।
(33:48)
وَ لَا تُطِعِ الْكٰفِرِیْنَ وَ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ دَعْ اَذٰىهُمْ وَ تَوَكَّلْ عَلَى اللّٰهِ١ؕ وَ كَفٰى بِاللّٰهِ وَكِیْلًا
অনুবাদ: আর কখনো দমিত হয়ো না কাফের ও মুনাফিকদের কাছে, পরোয়া করো না তাদের পীড়নের এবং ভরসা করো আল্লাহর প্রতি। আল্লাহই যথেষ্ট এজন্য যে, মানুষ তাঁর হাতে তার যাবতীয় বিষয় সোপর্দ করে দেবে।
(33:49)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا نَكَحْتُمُ الْمُؤْمِنٰتِ ثُمَّ طَلَّقْتُمُوْهُنَّ مِنْ قَبْلِ اَنْ تَمَسُّوْهُنَّ فَمَا لَكُمْ عَلَیْهِنَّ مِنْ عِدَّةٍ تَعْتَدُّوْنَهَا١ۚ فَمَتِّعُوْهُنَّ وَ سَرِّحُوْهُنَّ سَرَاحًا جَمِیْلًا
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিয়ে করো এবং তারপর তাদেরকে স্পর্শ করার আগে তালাক দিয়ে দাও তখন তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য কোনো ইদ্দত অপরিহার্য নয়, যা পুরা হবার দাবী তোমরা করতে পারো। কাজেই তাদেরকে কিছু অর্থ দাও এবং ভালোভাবে বিদায় করো।
(33:50)
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اِنَّاۤ اَحْلَلْنَا لَكَ اَزْوَاجَكَ الّٰتِیْۤ اٰتَیْتَ اُجُوْرَهُنَّ وَ مَا مَلَكَتْ یَمِیْنُكَ مِمَّاۤ اَفَآءَ اللّٰهُ عَلَیْكَ وَ بَنٰتِ عَمِّكَ وَ بَنٰتِ عَمّٰتِكَ وَ بَنٰتِ خَالِكَ وَ بَنٰتِ خٰلٰتِكَ الّٰتِیْ هَاجَرْنَ مَعَكَ١٘ وَ امْرَاَةً مُّؤْمِنَةً اِنْ وَّهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِیِّ اِنْ اَرَادَ النَّبِیُّ اَنْ یَّسْتَنْكِحَهَا١ۗ خَالِصَةً لَّكَ مِنْ دُوْنِ الْمُؤْمِنِیْنَ١ؕ قَدْ عَلِمْنَا مَا فَرَضْنَا عَلَیْهِمْ فِیْۤ اَزْوَاجِهِمْ وَ مَا مَلَكَتْ اَیْمَانُهُمْ لِكَیْلَا یَكُوْنَ عَلَیْكَ حَرَجٌ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا
অনুবাদ: হে নবী! আমি তোমার জন্য হালাল করে দিয়েছি তোমার স্ত্রীদেরকে যাদের মহর তুমি আদায় করে দিয়েছো এবং এমন নারীদেরকে যারা আল্লাহ প্রদত্ত বাঁদীদের মধ্য থেকে তোমার মালিকানাধীন হয়েছে আর তোমার চাচাত, ফুফাত, মামাত, খালাত বোনদেরকে, যারা তোমার সাথে হিজরত করেছে এবং এমন মু’মিন নারীকে যে নিজেকে নবীর কাছে নিবেদন করেছে যদি নবী তাকে বিয়ে করতে চায়, এ সুবিধাদান বিশেষ করে তোমার জন্য, অন্য মু’মিনদের জন্য নয়। সাধারণ মু’মিনদের ওপর তাদের স্ত্রী ও বাঁদীদের ব্যাপারে আমি যে সীমারেখা নির্ধারণ করেছি তা আমি জানি, (তোমাকে এ সীমারেখা থেকে এজন্য আলাদা রেখেছি) যাতে তোমার কোন অসুবিধা না হয়, আর আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মেহেরবান।
(33:51)
تُرْجِیْ مَنْ تَشَآءُ مِنْهُنَّ وَ تُئْوِیْۤ اِلَیْكَ مَنْ تَشَآءُ١ؕ وَ مَنِ ابْتَغَیْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْكَ١ؕ ذٰلِكَ اَدْنٰۤى اَنْ تَقَرَّ اَعْیُنُهُنَّ وَ لَا یَحْزَنَّ وَ یَرْضَیْنَ بِمَاۤ اٰتَیْتَهُنَّ كُلُّهُنَّ١ؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ مَا فِیْ قُلُوْبِكُمْ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلِیْمًا حَلِیْمًا
অনুবাদ: তোমাকে ইখতিয়ার দেয়া হচ্ছে, তোমার স্ত্রীদের মধ্য থেকে যাকে চাও নিজের থেকে আলাদা করে রাখো, যাকে চাও নিজের সাথে রাখো এবং যাকে চাও আলাদা রাখার পরে নিজের কাছে ডেকে নাও। এতে তোমার কোন ক্ষতি নেই। এভাবে বেশী আশা করা যায় যে, তাদের চোখ শীতল থাকবে এবং তারা দুঃখিত হবে না আর যা কিছুই তুমি তাদেরকে দেবে তাতে তারা সবাই সন্তুষ্ট থাকবে। আল্লাহ জানেন যা কিছু তোমাদের অন্তরে আছে এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সহনশীল।
(33:52)
لَا یَحِلُّ لَكَ النِّسَآءُ مِنْۢ بَعْدُ وَ لَاۤ اَنْ تَبَدَّلَ بِهِنَّ مِنْ اَزْوَاجٍ وَّ لَوْ اَعْجَبَكَ حُسْنُهُنَّ اِلَّا مَا مَلَكَتْ یَمِیْنُكَ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ رَّقِیْبًا۠
অনুবাদ: এরপর তোমার জন্য অন্য নারীরা হালাল নয় এবং এদের জায়গায় অন্য স্ত্রীদের আনবে এ অনুমতিও নেই, তাদের সৌন্দর্য তোমাকে যতই মুগ্ধ করুক না কেন, তবে বাঁদীদের মধ্য থেকে তোমার অনুমতি আছে। আল্লাহ সবকিছু দেখাশুনা করছেন।
(33:53)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُیُوْتَ النَّبِیِّ اِلَّاۤ اَنْ یُّؤْذَنَ لَكُمْ اِلٰى طَعَامٍ غَیْرَ نٰظِرِیْنَ اِنٰىهُ١ۙ وَ لٰكِنْ اِذَا دُعِیْتُمْ فَادْخُلُوْا فَاِذَا طَعِمْتُمْ فَانْتَشِرُوْا وَ لَا مُسْتَاْنِسِیْنَ لِحَدِیْثٍ١ؕ اِنَّ ذٰلِكُمْ كَانَ یُؤْذِی النَّبِیَّ فَیَسْتَحْیٖ مِنْكُمْ١٘ وَ اللّٰهُ لَا یَسْتَحْیٖ مِنَ الْحَقِّ١ؕ وَ اِذَا سَاَلْتُمُوْهُنَّ مَتَاعًا فَسْئَلُوْهُنَّ مِنْ وَّرَآءِ حِجَابٍ١ؕ ذٰلِكُمْ اَطْهَرُ لِقُلُوْبِكُمْ وَ قُلُوْبِهِنَّ١ؕ وَ مَا كَانَ لَكُمْ اَنْ تُؤْذُوْا رَسُوْلَ اللّٰهِ وَ لَاۤ اَنْ تَنْكِحُوْۤا اَزْوَاجَهٗ مِنْۢ بَعْدِهٖۤ اَبَدًا١ؕ اِنَّ ذٰلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللّٰهِ عَظِیْمًا
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! নবী গৃহে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করো না, খাবার সময়ের অপেক্ষায়ও থেকো না। হ্যাঁ, যদি তোমাদের খাবার জন্য ডাকা হয়, তাহলে অবশ্যই এসো কিন্তু খাওয়া হয়ে গেলে চলে যাও, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না। তোমাদের এসব আচরণ নবীকে কষ্ট দেয় কিন্তু তিনি লজ্জায় কিছু বলেন না এবং আল্লাহ হককথা বলতে লজ্জা করেন না। নবীর স্ত্রীদের কাছে যদি তোমাদের কিছু চাইতে হয় তাহলে পর্দার পেছন থেকে চাও। এটা তোমাদের এবং তাদের মনের পবিত্রতার জন্য বেশী উপযোগী। তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেয়া মোটেই জায়েয নয় এবং তাঁর পরে তাঁর স্ত্রীদেরকে বিয়ে করাও জায়েয নয়, এটা আল্লাহর দৃষ্টিতে মস্তবড় গোনাহ।
(33:54)
اِنْ تُبْدُوْا شَیْئًا اَوْ تُخْفُوْهُ فَاِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمًا
অনুবাদ: তোমরা কোন কথা প্রকাশ বা গোপন করো আল্লাহ সবকিছুই জানেন।
(33:55)
لَا جُنَاحَ عَلَیْهِنَّ فِیْۤ اٰبَآئِهِنَّ وَ لَاۤ اَبْنَآئِهِنَّ وَ لَاۤ اِخْوَانِهِنَّ وَ لَاۤ اَبْنَآءِ اِخْوَانِهِنَّ وَ لَاۤ اَبْنَآءِ اَخَوٰتِهِنَّ وَ لَا نِسَآئِهِنَّ وَ لَا مَا مَلَكَتْ اَیْمَانُهُنَّ١ۚ وَ اتَّقِیْنَ اللّٰهَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ شَهِیْدًا
অনুবাদ: নবীর স্ত্রীদের গৃহে তাদের বাপ, ছেলে ভাই-ভাতিজা, ভাগনা সাধারণ মেলামেশার মহিলারা এবং তাদের মালিকাধীন দাসদাসীরা এলে কোন ক্ষতি নেই। (হে নারীগণ!) তোমাদের আল্লাহর নাফরমানি থেকে দূরে থাকা উচিত। আল্লাহ প্রত্যেকটি জিনিসের প্রতি দৃষ্টি রাখেন।
(33:56)
اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِكَتَهٗ یُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِیِّ١ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَیْهِ وَ سَلِّمُوْا تَسْلِیْمًا
অনুবাদ: আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরূদ পাঠান। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠাও।
(33:57)
اِنَّ الَّذِیْنَ یُؤْذُوْنَ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ وَ اَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِیْنًا
অনুবাদ: যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয় তাদেরকে আল্লাহ দুনিয়ায় ও আখেরাতে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক আযাবের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
(33:58)
وَ الَّذِیْنَ یُؤْذُوْنَ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ بِغَیْرِ مَا اكْتَسَبُوْا فَقَدِ احْتَمَلُوْا بُهْتَانًا وَّ اِثْمًا مُّبِیْنًا۠
অনুবাদ: আর যারা মু’মিন পুরুষ ও মহিলাদেরকে কোন অপরাধ ছাড়াই কষ্ট দেয় তারা একটি বড় অপবাদ ও সুস্পষ্ট গোনাহর বোঝা নিজেদের ঘাড়ে চাপিয়ে নিয়েছে।
(33:59)
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ قُلْ لِّاَزْوَاجِكَ وَ بَنٰتِكَ وَ نِسَآءِ الْمُؤْمِنِیْنَ یُدْنِیْنَ عَلَیْهِنَّ مِنْ جَلَابِیْبِهِنَّ١ؕ ذٰلِكَ اَدْنٰۤى اَنْ یُّعْرَفْنَ فَلَا یُؤْذَیْنَ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا
অনুবাদ: হে নবী! তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মু’মিনদের নারীদেরকে বলে দাও তারা যেন তাদের চাদরের প্রান্ত তাদের ওপর টেনে নেয়। এটি অধিকতর উপযোগী পদ্ধতি, যাতে তাদেরকে চিনে নেয়া যায় এবং কষ্ট না দেয়া হয়। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(33:60)
لَئِنْ لَّمْ یَنْتَهِ الْمُنٰفِقُوْنَ وَ الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ وَّ الْمُرْجِفُوْنَ فِی الْمَدِیْنَةِ لَنُغْرِیَنَّكَ بِهِمْ ثُمَّ لَا یُجَاوِرُوْنَكَ فِیْهَاۤ اِلَّا قَلِیْلًا٤ۖۛۚ
অনুবাদ: যদি মুনাফিকরা এবং যাদের মনে গলদ আছে তারা আর যারা মদীনায় উত্তেজনাকর গুজব ছড়ায়, তারা নিজেদের তৎপরতা থেকে বিরত না হয়, তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবার জন্য তোমাকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে দেবো; তারপর খুব কমই তারা এ নগরীতে তোমার সাথে থাকতে পারবে।
(33:61)
مَّلْعُوْنِیْنَ١ۛۚ اَیْنَمَا ثُقِفُوْۤا اُخِذُوْا وَ قُتِّلُوْا تَقْتِیْلًا
অনুবাদ: তাদের ওপর লানত বর্ষিত হবে চারদিক থেকে, যেখানেই পাওয়া যাবে তাদেরকে পাকড়াও করা হবে এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে।
(33:62)
سُنَّةَ اللّٰهِ فِی الَّذِیْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلُ١ۚ وَ لَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللّٰهِ تَبْدِیْلًا
অনুবাদ: এটিই আল্লাহর সুন্নাত, এ ধরনের লোকদের ব্যাপারে পূর্ব থেকে এটিই চলে আসছে এবং তুমি আল্লাহর সুন্নাতে কোন পরিবর্তন পাবে না।
(33:63)
یَسْئَلُكَ النَّاسُ عَنِ السَّاعَةِ١ؕ قُلْ اِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ اللّٰهِ١ؕ وَ مَا یُدْرِیْكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِیْبًا
অনুবাদ: লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, কিয়ামত কবে আসবে? বলো, একমাত্র আল্লাহই এর জ্ঞান রাখেন। তুমি কী জানো, হয়তো তা নিকটেই এসে গেছে।
(33:64)
اِنَّ اللّٰهَ لَعَنَ الْكٰفِرِیْنَ وَ اَعَدَّ لَهُمْ سَعِیْرًاۙ
অনুবাদ: মোটকথা এ বিষয়টি নিশ্চিত যে, আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য উৎক্ষিপ্ত আগুনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন,
(33:65)
خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا١ۚ لَا یَجِدُوْنَ وَلِیًّا وَّ لَا نَصِیْرًاۚ
অনুবাদ: যার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল, কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।
(33:66)
یَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوْهُهُمْ فِی النَّارِ یَقُوْلُوْنَ یٰلَیْتَنَاۤ اَطَعْنَا اللّٰهَ وَ اَطَعْنَا الرَّسُوْلَا
অনুবাদ: যেদিন তাদের চেহারা আগুনে ওলট পালট করা হবে তখন তারা বলবে “হায়! যদি আমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করতাম।”
(33:67)
وَ قَالُوْا رَبَّنَاۤ اِنَّاۤ اَطَعْنَا سَادَتَنَا وَ كُبَرَآءَنَا فَاَضَلُّوْنَا السَّبِیْلَا
অনুবাদ: আরো বলবে, “হে আমাদের রব! আমরা আমাদের সরদারদের ও বড়দের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদের সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করেছে।
(33:68)
رَبَّنَاۤ اٰتِهِمْ ضِعْفَیْنِ مِنَ الْعَذَابِ وَ الْعَنْهُمْ لَعْنًا كَبِیْرًا۠
অনুবাদ: হে আমাদের রব! তাদেরকে দ্বিগুণ আযাব দাও এবং তাদের প্রতি কঠোর লানত বর্ষণ করো।”
(33:69)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِیْنَ اٰذَوْا مُوْسٰى فَبَرَّاَهُ اللّٰهُ مِمَّا قَالُوْا١ؕ وَ كَانَ عِنْدَ اللّٰهِ وَجِیْهًاؕ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! তাদের মতো হয়ে যেয়ো না যারা মূসাকে কষ্ট দিয়েছিল, তারপর আল্লাহ তাদের তৈরি করা কথা থেকে তাকে দায়মুক্ত করেন এবং সে আল্লাহর কাছে ছিল সম্মানিত।
(33:70)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ قُوْلُوْا قَوْلًا سَدِیْدًاۙ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।
(33:71)
یُّصْلِحْ لَكُمْ اَعْمَالَكُمْ وَ یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ١ؕ وَ مَنْ یُّطِعِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِیْمًا
অনুবাদ: আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ ঠিকঠাক করে দেবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ মাফ করে দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে সে বড় সাফল্য অর্জন করে।
(33:72)
اِنَّا عَرَضْنَا الْاَمَانَةَ عَلَى السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ الْجِبَالِ فَاَبَیْنَ اَنْ یَّحْمِلْنَهَا وَ اَشْفَقْنَ مِنْهَا وَ حَمَلَهَا الْاِنْسَانُ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ ظَلُوْمًا جَهُوْلًاۙ
অনুবাদ: আমি এ আমানতকে আকাশসমূহ, পৃথিবী ও পর্বতরাজির ওপর পেশ করি, তারা একে বহন করতে রাজি হয়নি এবং তা থেকে ভীত হয়ে পড়ে। কিন্তু মানুষ একে বহন করেছে, নিঃসন্দেহে সে বড় জালেম ও অজ্ঞ।
(33:73)
لِّیُعَذِّبَ اللّٰهُ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ الْمُنٰفِقٰتِ وَ الْمُشْرِكِیْنَ وَ الْمُشْرِكٰتِ وَ یَتُوْبَ اللّٰهُ عَلَى الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا۠
অনুবাদ: এ আমানতের বোঝা উঠাবার অনির্বায ফল হচ্ছে এই যে, আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং মুশরিক পুরুষ ও নারীদেরকে সাজা দেবেন এবং মু’মিন পুরুষ ও নারীদের তাওবা কবুল করবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।