৯-তওবা
(9:1)
بَرَآءَةٌ مِّنَ اللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖۤ اِلَى الَّذِیْنَ عٰهَدْتُّمْ مِّنَ الْمُشْرِكِیْنَؕ
অনুবাদ: সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষনা করা হলো আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে, যেসব মুশরিকের সাথে তোমরা চুক্তি করেছিলে তাদের সাথে।
(9:2)
فَسِیْحُوْا فِی الْاَرْضِ اَرْبَعَةَ اَشْهُرٍ وَّ اعْلَمُوْۤا اَنَّكُمْ غَیْرُ مُعْجِزِی اللّٰهِ١ۙ وَ اَنَّ اللّٰهَ مُخْزِی الْكٰفِرِیْنَ
অনুবাদ: কাজেই তোমরা দেশের মধ্যে আরো চার মাসকাল চলাফেরা করে নাও এবং জেনে রেখো তোমরা আল্লাহকে অক্ষম ও শক্তিহীন করতে পারবে না। আর আল্লাহ সত্য অস্বীকারকারীদের অবশ্যই লাঞ্ছিত করবেন।
(9:3)
وَ اَذَانٌ مِّنَ اللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖۤ اِلَى النَّاسِ یَوْمَ الْحَجِّ الْاَكْبَرِ اَنَّ اللّٰهَ بَرِیْٓءٌ مِّنَ الْمُشْرِكِیْنَ١ۙ۬ وَ رَسُوْلُهٗ١ؕ فَاِنْ تُبْتُمْ فَهُوَ خَیْرٌ لَّكُمْ١ۚ وَ اِنْ تَوَلَّیْتُمْ فَاعْلَمُوْۤا اَنَّكُمْ غَیْرُ مُعْجِزِی اللّٰهِ١ؕ وَ بَشِّرِ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا بِعَذَابٍ اَلِیْمٍۙ
অনুবাদ: আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে বড় হজ্বের দিনে সমস্ত মানুষের প্রতি সাধারণ ঘোষণা করা হচ্ছেঃ “আল্লাহ মুশরিকদের থেকে দায়িত্বমুক্ত এবং তাঁর রসূলও। এখন যদি তোমরা তওবা করে নাও তাহলে তা তোমাদেরই জন্য ভাল। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে খুব ভাল করেই বুঝে নাও, তোমরা আল্লাহকে শক্তি সামর্থহীন করতে পারবে না। আর হে নবী! অস্বীকারকারীদের কঠিন আযাবের সুখবর দিয়ে দাও।
(9:4)
اِلَّا الَّذِیْنَ عٰهَدْتُّمْ مِّنَ الْمُشْرِكِیْنَ ثُمَّ لَمْ یَنْقُصُوْكُمْ شَیْئًا وَّ لَمْ یُظَاهِرُوْا عَلَیْكُمْ اَحَدًا فَاَتِمُّوْۤا اِلَیْهِمْ عَهْدَهُمْ اِلٰى مُدَّتِهِمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُتَّقِیْنَ
অনুবাদ: তবে যেসব মুশরিকের সাথে তোমরা চুক্তি করেছো তারপর তারা তোমাদের সাথে নিজেদের চুক্তি রক্ষায় কোন ত্রুটি করেনি আর তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি তাদের ছাড়া। এ ধরনের লোকদের সাথে তোমরাও নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পালন করবে। কারণ আল্লাহ তাকওয়া তথা সংযম অবলম্বনকারীদেরকে পছন্দ করেন।
(9:5)
فَاِذَا انْسَلَخَ الْاَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِیْنَ حَیْثُ وَجَدْتُّمُوْهُمْ وَ خُذُوْهُمْ وَ احْصُرُوْهُمْ وَ اقْعُدُوْا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ١ۚ فَاِنْ تَابُوْا وَ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ فَخَلُّوْا سَبِیْلَهُمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
অনুবাদ: অতএব, হারাম মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে গেলে মুশরিকদের যেখানে পাও হত্যা করো এবং তাদের ধরো, ঘেরাও করো এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে বসে থাকো। তারপর যদি তারা তাওবা করে, নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাহলে তাদের ছেড়ে দাও। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(9:6)
وَ اِنْ اَحَدٌ مِّنَ الْمُشْرِكِیْنَ اسْتَجَارَكَ فَاَجِرْهُ حَتّٰى یَسْمَعَ كَلٰمَ اللّٰهِ ثُمَّ اَبْلِغْهُ مَاْمَنَهٗ١ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا یَعْلَمُوْنَ۠
অনুবাদ: আর যদি মুশরিকদের কোন ব্যক্তি আশ্রয় প্রার্থনা করে তোমার কাছে আসতে চায় (যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পারে) তাহলে তাকে আল্লাহর কালাম শোনা পর্যন্ত আশ্রয় দাও, তারপর তাকে তার নিরাপদ জায়গায় পৌঁছিয়ে দাও। এরা অজ্ঞ বলেই এটা করা উচিত।
(9:7)
كَیْفَ یَكُوْنُ لِلْمُشْرِكِیْنَ عَهْدٌ عِنْدَ اللّٰهِ وَ عِنْدَ رَسُوْلِهٖۤ اِلَّا الَّذِیْنَ عٰهَدْتُّمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ١ۚ فَمَا اسْتَقَامُوْا لَكُمْ فَاسْتَقِیْمُوْا لَهُمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُتَّقِیْنَ
অনুবাদ: মুশরিকদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কাছে কোন নিরাপত্তার অঙ্গীকার কেমন করে হাতে পারে? তবে যাদের সাথে তোমরা চুক্তি সম্পাদন করেছিলে মসজিদে হারামের কাছে তাদের কথা স্বতন্ত্র। কাজেই যতক্ষণ তারা তোমাদের জন্য সোজা-সরল থাকে ততক্ষণ তোমরাও তাদের জন্য সোজা-সরল থাকো। কারণ আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে পছন্দ করেন।
(9:8)
كَیْفَ وَ اِنْ یَّظْهَرُوْا عَلَیْكُمْ لَا یَرْقُبُوْا فِیْكُمْ اِلًّا وَّ لَا ذِمَّةً١ؕ یُرْضُوْنَكُمْ بِاَفْوَاهِهِمْ وَ تَاْبٰى قُلُوْبُهُمْ١ۚ وَ اَكْثَرُهُمْ فٰسِقُوْنَۚ
অনুবাদ: তবে তাদের ছাড়া অন্য মুশরিকদের জন্য নিরাপত্তা চুক্তি কেমন করে হতে পারে, যখন তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা তোমাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে পারলে তোমাদের ব্যাপারে কোন আত্মীয়তার পরোয়া করবে না এবং কোন অঙ্গীকারের দায়িত্বও নেবে না। তারা মুখের কথায় তোমাদের সন্তুষ্ট করে কিন্তু তাদের মন তা অস্বীকার করে। আর তাদের অধিকাংশই ফাসেক।
(9:9)
اِشْتَرَوْا بِاٰیٰتِ اللّٰهِ ثَمَنًا قَلِیْلًا فَصَدُّوْا عَنْ سَبِیْلِهٖ١ؕ اِنَّهُمْ سَآءَ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: তারা আল্লাহর আয়াতের বিনিময়ে সামান্যতম মূল্য গ্রহণ করে নিয়েছে। তারপর আল্লাহ পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা যা করতে অভ্যস্ত, তা অত্যন্ত খারাপ কাজ।
(9:10)
لَا یَرْقُبُوْنَ فِیْ مُؤْمِنٍ اِلًّا وَّ لَا ذِمَّةً١ؕ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُعْتَدُوْنَ
অনুবাদ: কোন মুমিনের ব্যাপারে তারা না আত্মীয়তার মর্যাদা রক্ষা করে, আর না কোন অঙ্গীকারের ধার ধারে। আগ্রাসন ও বাড়াবাড়ি সবসময় তাদের পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে।
(9:11)
فَاِنْ تَابُوْا وَ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ فَاِخْوَانُكُمْ فِی الدِّیْنِ١ؕ وَ نُفَصِّلُ الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یَّعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: কাজেই যদি তারা তাওবা করে নেয় এবং নামায কায়েম করে এবং যাকাত দেয় তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই। যারা জানে, তাদের জন্য আমার বিধান স্পষ্ট করে বর্ণনা করি।
(9:12)
وَ اِنْ نَّكَثُوْۤا اَیْمَانَهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ عَهْدِهِمْ وَ طَعَنُوْا فِیْ دِیْنِكُمْ فَقَاتِلُوْۤا اَئِمَّةَ الْكُفْرِ١ۙ اِنَّهُمْ لَاۤ اَیْمَانَ لَهُمْ لَعَلَّهُمْ یَنْتَهُوْنَ
অনুবাদ: আর যদি অঙ্গীকার করার পর তারা নিজেদের কসম ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দ্বীনের ওপর হামলা চালাতে থাকে তাহলে কুফরীর পতাকাবাহীদের সাথে যুদ্ধ করো। কারণ তাদের কসম বিশ্বাসযোগ্য নয়। হয়তো (এরপর তরবারীর ভয়েই) তারা নিরস্ত হবে।
(9:13)
اَلَا تُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا نَّكَثُوْۤا اَیْمَانَهُمْ وَ هَمُّوْا بِاِخْرَاجِ الرَّسُوْلِ وَ هُمْ بَدَءُوْكُمْ اَوَّلَ مَرَّةٍ١ؕ اَتَخْشَوْنَهُمْ١ۚ فَاللّٰهُ اَحَقُّ اَنْ تَخْشَوْهُ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ
অনুবাদ: তোমরা কি লড়াই করবে না এমন লোকদের সাথে যারা নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এসেছে এবং যারা রসূলকে দেশ থেকে বের করে দেবার দুরভিসন্ধি করেছিল আর বাড়াবাড়ির সূচনা তারাই করেছিল? তোমরা কি তাদেরকে ভয় করো? যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো, তাহলে আল্লাহকে ভয় করাই তোমাদের জন্য অধিক সমীচীন।
(9:14)
قَاتِلُوْهُمْ یُعَذِّبْهُمُ اللّٰهُ بِاَیْدِیْكُمْ وَ یُخْزِهِمْ وَ یَنْصُرْكُمْ عَلَیْهِمْ وَ یَشْفِ صُدُوْرَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِیْنَۙ
অনুবাদ: তাদের সাথে লড়াই করো, আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদের শাস্তি দেবেন, তাদেরকে লাঞ্ছিত ও অপদস্ত করবেন, তাদের মোকাবিলায় তোমাদের সাহায্য করবেন এবং অনেক মুমিনের অন্তর শীতল করে দেবেন।
(9:15)
وَ یُذْهِبْ غَیْظَ قُلُوْبِهِمْ١ؕ وَ یَتُوْبُ اللّٰهُ عَلٰى مَنْ یَّشَآءُ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: আর তাদের অন্তরের জ্বালা জুড়িয়ে দেবেন এবং যাকে ইচ্ছা তাওবা করার তাওফীকও দান করবেন। আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং তিনি মহাজ্ঞানী।
(9:16)
اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تُتْرَكُوْا وَ لَمَّا یَعْلَمِ اللّٰهُ الَّذِیْنَ جٰهَدُوْا مِنْكُمْ وَ لَمْ یَتَّخِذُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَ لَا رَسُوْلِهٖ وَ لَا الْمُؤْمِنِیْنَ وَلِیْجَةً١ؕ وَ اللّٰهُ خَبِیْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْنَ۠
অনুবাদ: তোমরা কি একথা মনে করে রেখেছো যে, তোমাদের এমনিই ছেড়ে দেয়া হবে? অথচ আল্লাহ এখনো দেখেননি তোমাদের মধ্য থেকে কারা (তাঁর পথে) সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালালো এবং আল্লাহ, রসূল ও মুমিনদের ছাড়া কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধু রূপে গ্রহণ করলো না? তোমরা যা কিছু করো, আল্লাহ তা জানেন।
(9:17)
مَا كَانَ لِلْمُشْرِكِیْنَ اَنْ یَّعْمُرُوْا مَسٰجِدَ اللّٰهِ شٰهِدِیْنَ عَلٰۤى اَنْفُسِهِمْ بِالْكُفْرِ١ؕ اُولٰٓئِكَ حَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ١ۖۚ وَ فِی النَّارِ هُمْ خٰلِدُوْنَ
অনুবাদ: মুশরিকগণ যখন নিজেরাই নিজেদের কুফরীর সাক্ষ্য দিচ্ছে তখন আল্লাহর মসজিদসমূহের রক্ষণাবেক্ষণকারী ও খাদেম হওয়া তাদের কাজ নয়। তাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে গেছে এবং তাদেরকে চিরকাল জাহান্নামে থাকতে হবে।
(9:18)
اِنَّمَا یَعْمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰهِ مَنْ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ اَقَامَ الصَّلٰوةَ وَ اٰتَى الزَّكٰوةَ وَ لَمْ یَخْشَ اِلَّا اللّٰهَ فَعَسٰۤى اُولٰٓئِكَ اَنْ یَّكُوْنُوْا مِنَ الْمُهْتَدِیْنَ
অনুবাদ: তারাই হতে পারে আল্লাহর মসজিদ আবাদকারী (রক্ষণাবেক্ষণকারী ও সেবক) যারা আল্লাহ ও পরকালকে মানে, নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করেনা। তাদেরই ব্যাপারে আশা করা যেতে পারে যে, তারা সঠিক সোজা পথে চলবে।
(9:19)
اَجَعَلْتُمْ سِقَایَةَ الْحَآجِّ وَ عِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ جٰهَدَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ لَا یَسْتَوٗنَ عِنْدَ اللّٰهِ١ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَۘ
অনুবাদ: তোমরা কি হাজীদের পানি পান করানো এবং মসজিদে হারামের রক্ষণাবেক্ষণ করাকে এমন ব্যক্তিদের কাজের সমান মনে করে নিয়েছ যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি এবং সংগ্রাম-সাধনা করেছে আল্লাহর পথে? এ উভয় দল আল্লাহর কাছে সমান নয়। আল্লাহ জালেমদের পথ দেখান না।
(9:20)
اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ هَاجَرُوْا وَ جٰهَدُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ١ۙ اَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللّٰهِ١ؕ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْفَآئِزُوْنَ
অনুবাদ: আল্লাহর কাছে তো তারাই উচ্চ মর্যাদার অধিকারী, যারা ঈমান এনেছে এবং তাঁর পথে ঘর-বাড়ি ছেড়েছে ও ধন-প্রাণ সমর্পণ করে জিহাদ করেছে। তারাই সফলকাম।
(9:21)
یُبَشِّرُهُمْ رَبُّهُمْ بِرَحْمَةٍ مِّنْهُ وَ رِضْوَانٍ وَّ جَنّٰتٍ لَّهُمْ فِیْهَا نَعِیْمٌ مُّقِیْمٌۙ
অনুবাদ: তাদের রব তাদেরকে নিজের রহমত, সন্তোষ ও এমন জান্নাতের সুখবর দেন, যেখানে তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী সুখের সামগ্রী।
(9:22)
خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عِنْدَهٗۤ اَجْرٌ عَظِیْمٌ
অনুবাদ: সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। অবশ্য আল্লাহর কাছে কাজের প্রতিদান দেবার জন্য অনেক কিছুই রয়েছে।
(9:23)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْۤا اٰبَآءَكُمْ وَ اِخْوَانَكُمْ اَوْلِیَآءَ اِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الْاِیْمَانِ١ؕ وَ مَنْ یَّتَوَلَّهُمْ مِّنْكُمْ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ
অনুবাদ: যে ঈমানদারগণ! তোমাদের বাপ ও ভাইয়েরা যদি ঈমানের ওপর কুফরীকে প্রাধান্য দেয় তাহলে তাদেরকেও নিজেদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তারাই জালেম।
(9:24)
قُلْ اِنْ كَانَ اٰبَآؤُكُمْ وَ اَبْنَآؤُكُمْ وَ اِخْوَانُكُمْ وَ اَزْوَاجُكُمْ وَ عَشِیْرَتُكُمْ وَ اَمْوَالُ اِ۟قْتَرَفْتُمُوْهَا وَ تِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَ مَسٰكِنُ تَرْضَوْنَهَاۤ اَحَبَّ اِلَیْكُمْ مِّنَ اللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ جِهَادٍ فِیْ سَبِیْلِهٖ فَتَرَبَّصُوْا حَتّٰى یَاْتِیَ اللّٰهُ بِاَمْرِهٖ١ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْفٰسِقِیْنَ۠
অনুবাদ: হে নবী! বলে দাও, যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান ও তোমাদের ভাই তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের উপার্জিত সম্পদ, তোমাদের যে ব্যবসায়ে মন্দা দেখা দেয়ার ভয়ে তোমরা তটস্থ থাক এবং তোমাদের যে বাসস্থানকে তোমরা খুবই পছন্দ কর-এসব যদি আল্লাহ ও তার রসূল এবং তাঁর পথে জিহাদ করার চাইতে তোমাদের কাছে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে আল্লাহর ফায়সালা তোমাদের কাছে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা কর আল্লাহ ফাসেকদেরকে কখনো সত্য পথের সন্ধান দেন না।
(9:25)
لَقَدْ نَصَرَكُمُ اللّٰهُ فِیْ مَوَاطِنَ كَثِیْرَةٍ١ۙ وَّ یَوْمَ حُنَیْنٍ١ۙ اِذْ اَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَیْئًا وَّ ضَاقَتْ عَلَیْكُمُ الْاَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّیْتُمْ مُّدْبِرِیْنَۚ
অনুবাদ: এর আগে আল্লাহ বহু ক্ষেত্রে তোমাদের সাহায্য করেছেন। এই তো সেদিন, হুনায়েন যুদ্ধের দিন (তাঁর সাহায্যের অভাবনীয় রূপ তোমরা দেখেছো) , সেদিন তোমাদের মনে তোমাদের সংখ্যাধিক্যের অহমিকা ছিল। কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি। আর এত বড় বিশাল পৃথিবীও তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল এবং তোমরা পেছনে ফিরে পালিয়ে গিয়েছিলে।
(9:26)
ثُمَّ اَنْزَلَ اللّٰهُ سَكِیْنَتَهٗ عَلٰى رَسُوْلِهٖ وَ عَلَى الْمُؤْمِنِیْنَ وَ اَنْزَلَ جُنُوْدًا لَّمْ تَرَوْهَا وَ عَذَّبَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا١ؕ وَ ذٰلِكَ جَزَآءُ الْكٰفِرِیْنَ
অনুবাদ: তারপর আল্লাহ তার প্রশান্তি নাযিল করেন তাঁর রসূলের ওপর ও মুমিনদের ওপর এবং সেনাদল নামান যাদেরকে তোমরা চোখে দেখতে পাচ্ছিলে না এবং সত্য অস্বীকারকারীদের শাস্তি দেন। কারণ যারা সত্য অস্বীকার করে এটাই তাদের প্রতিফল।
(9:27)
ثُمَّ یَتُوْبُ اللّٰهُ مِنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ عَلٰى مَنْ یَّشَآءُ١ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
অনুবাদ: তারপর (তোমরা এও দেখছো) এভাবে শাস্তি দেবার পর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাওবার তাওফীকও দান করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(9:28)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّمَا الْمُشْرِكُوْنَ نَجَسٌ فَلَا یَقْرَبُوا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ بَعْدَ عَامِهِمْ هٰذَا١ۚ وَ اِنْ خِفْتُمْ عَیْلَةً فَسَوْفَ یُغْنِیْكُمُ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهٖۤ اِنْ شَآءَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র, কাজেই এ বছরের পর তারা যেন আর মসজিদে হারামের কাছে না আসে। আর যদি তোমাদের দারিদ্রের ভয় থাকে, তাহলে আল্লাহ চাইলে তার নিজ অনুগ্রহে শীঘ্রই তোমাদের অভাব মুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ সবকিছু জানেন ও তিনি প্রজ্ঞাময়।
(9:29)
قَاتِلُوا الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ لَا بِالْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ لَا یُحَرِّمُوْنَ مَا حَرَّمَ اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗ وَ لَا یَدِیْنُوْنَ دِیْنَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ حَتّٰى یُعْطُوا الْجِزْیَةَ عَنْ یَّدٍ وَّ هُمْ صٰغِرُوْنَ۠
অনুবাদ: আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে যারা আল্লাহ ও পরকালের উপর ঈমান আনে না যা কিছু আল্লাহ ও তার রসূল হারাম গণ্য করেছেন তাকে হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দ্বীনকে নিজেদের দ্বীনে পরিণত করে না, তাদের সাথে যুদ্ধ করো, যে পর্যন্ত না তারা নিজের হাতে জিযিয়া দেয় ও পদানত হয়ে থাকে।
(9:30)
وَ قَالَتِ الْیَهُوْدُ عُزَیْرُ اِ۟بْنُ اللّٰهِ وَ قَالَتِ النَّصٰرَى الْمَسِیْحُ ابْنُ اللّٰهِ١ؕ ذٰلِكَ قَوْلُهُمْ بِاَفْوَاهِهِمْ١ۚ یُضَاهِئُوْنَ قَوْلَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا مِنْ قَبْلُ١ؕ قٰتَلَهُمُ اللّٰهُ١٘ۚ اَنّٰى یُؤْفَكُوْنَ
অনুবাদ: ইহুদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র এবং খৃস্টানরা বলে, মসীহ আল্লাহর পুত্র। এগুলো একেবারেই আজগুবী ও উদ্ভট কথাবার্তা। তাদের পূর্বে যারা কুফরিতে লিপ্ত হয়েছিল তাদের দেখাদেখি তারা এগুলো নিজেদের মুখে উচ্চারণ করে থাকে। আল্লাহর অভিশাপ পড়ুক তাদের ওপর, তারা কোথা থেকে ধোকা খাচ্ছে!
(9:31)
اِتَّخَذُوْۤا اَحْبَارَهُمْ وَ رُهْبَانَهُمْ اَرْبَابًا مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَ الْمَسِیْحَ ابْنَ مَرْیَمَ١ۚ وَ مَاۤ اُمِرُوْۤا اِلَّا لِیَعْبُدُوْۤا اِلٰهًا وَّاحِدًا١ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ١ؕ سُبْحٰنَهٗ عَمَّا یُشْرِكُوْنَ
অনুবাদ: তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেদের উলামা ও দরবেশদেরকে নিজেদের খোদায় পরিণত করেছে। এবং এভাবে মারিয়াম পুত্র মসীহকেও। অথচ তাদের মা’বুদ ছাড়া আর কারোর বন্দেগী করার হুকুম দেয়া হয়নি, এমন এক মাবুদ যিনি ছাড়া ইবাদত লাভের যোগ্যতা সম্পন্ন আর কেউ নেই। তারা যেসব মুশরিকী কথা বলে তা থেকে তিনি পাক পবিত্র।
(9:32)
یُرِیْدُوْنَ اَنْ یُّطْفِئُوْا نُوْرَ اللّٰهِ بِاَفْوَاهِهِمْ وَ یَاْبَى اللّٰهُ اِلَّاۤ اَنْ یُّتِمَّ نُوْرَهٗ وَ لَوْ كَرِهَ الْكٰفِرُوْنَ
অনুবাদ: তারা চায় তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে। কিন্তু আল্লাহ তার আলোকে পূর্ণতা দান না করে ক্ষান্ত হবেন না, তা কাফেরদের কাছে যতই অপ্রীতিকর হোক না কেন।
(9:33)
هُوَ الَّذِیْۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَهٗ بِالْهُدٰى وَ دِیْنِ الْحَقِّ لِیُظْهِرَهٗ عَلَى الدِّیْنِ كُلِّهٖ١ۙ وَ لَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُوْنَ
অনুবাদ: আল্লাহই তার রসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দ্বীন সহকারে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সকল প্রকার দ্বীনের ওপর বিজয়ী করেন, মুশরিকরা একে যতই অপছন্দ করুক না কেন।
(9:34)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّ كَثِیْرًا مِّنَ الْاَحْبَارِ وَ الرُّهْبَانِ لَیَاْكُلُوْنَ اَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَ یَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ وَ الَّذِیْنَ یَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَ الْفِضَّةَ وَ لَا یُنْفِقُوْنَهَا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ۙ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍۙ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! এ আহলে কিতাবদের অধিকাংশ আলেম ও দরবেশের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায় পদ্ধতিতে খায় এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে। যারা সোনা রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রণাময় আযাবের সুখবর দাও।
(9:35)
یَّوْمَ یُحْمٰى عَلَیْهَا فِیْ نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوٰى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَ جُنُوْبُهُمْ وَ ظُهُوْرُهُمْ١ؕ هٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِاَنْفُسِكُمْ فَذُوْقُوْا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُوْنَ
অনুবাদ: একদিন আসবে যখন এ সোনা ও রূপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর তারই সাহায্যে তাদের কপালে, পার্শ্বদেশে ও পিঠে দাগ দেয়া হবে- এ সেই সম্পদ যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করেছিলে। নাও, এখন তোমাদের জমা করা সম্পদের স্বাদ গ্রহণ কর।
(9:36)
اِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عِنْدَ اللّٰهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِیْ كِتٰبِ اللّٰهِ یَوْمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ مِنْهَاۤ اَرْبَعَةٌ حُرُمٌ١ؕ ذٰلِكَ الدِّیْنُ الْقَیِّمُ١ۙ۬ فَلَا تَظْلِمُوْا فِیْهِنَّ اَنْفُسَكُمْ وَ قَاتِلُوا الْمُشْرِكِیْنَ كَآفَّةً كَمَا یُقَاتِلُوْنَكُمْ كَآفَّةً١ؕ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِیْنَ
অনুবাদ: আসলে যখন আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তখন থেকেই আল্লাহর লিখন ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারো চলে আসছে। এর মধ্যে চারটি হারাম মাস। এটিই সঠিক বিধান। কাজেই এ চার মাসে নিজেদের ওপর জুলুম করো না। আর মুশরিকদের সাথে সবাই মিলে লড়াই করো যেমন তারা সবাই মিলে তোমাদের সাথে লড়াই করে। এবং জেনে রাখো আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথেই আছেন।
(9:37)
اِنَّمَا النَّسِیْٓءُ زِیَادَةٌ فِی الْكُفْرِ یُضَلُّ بِهِ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا یُحِلُّوْنَهٗ عَامًا وَّ یُحَرِّمُوْنَهٗ عَامًا لِّیُوَاطِئُوْا عِدَّةَ مَا حَرَّمَ اللّٰهُ فَیُحِلُّوْا مَا حَرَّمَ اللّٰهُ١ؕ زُیِّنَ لَهُمْ سُوْٓءُ اَعْمَالِهِمْ١ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْكٰفِرِیْنَ۠
অনুবাদ: “নাসী” (মাসকে পিছিয়ে দেয়া) তো কুফরীর মধ্যে আরো একটি কুফরী কর্ম, যার সাহায্যে এ কাফেদের কে ভ্রষ্টতায় লিপ্ত করা হয়ে থাকে। কোন বছর একটি মাসকে হালাল করে নেয় এবং কোন বছর তাকে আবার হারাম করে নেয়, যাতে আল্লাহর হারাম মাসের সংখ্যাও পুরা করতে পারে এবং আল্লাহর হারাম করাকেও হালাল করতে পারে। তাদের খারাপ কাজগুলোকে তাদের জন্য শোভনীয় করে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ সত্য- অস্বীকারকারীদেরকে হেদায়াত দান করেন না।
(9:38)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَا لَكُمْ اِذَا قِیْلَ لَكُمُ انْفِرُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ اثَّاقَلْتُمْ اِلَى الْاَرْضِ١ؕ اَرَضِیْتُمْ بِالْحَیٰوةِ الدُّنْیَا مِنَ الْاٰخِرَةِ١ۚ فَمَا مَتَاعُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا فِی الْاٰخِرَةِ اِلَّا قَلِیْلٌ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি হলো, যখনই তোমাদের আল্লাহর পথে বের হতে বলা হলো, অমনি তোমরা মাটি কামড়ে পড়ে থাকলে? তোমরা কি আখেরাতের মোকাবিলায় দুনিয়ার জীবন পছন্দ করে নিয়েছো? যদি তাই হয় তাহলে তোমরা মনে রেখো, দুনিয়ার জীবনের এমন সাজ সরঞ্জাম আখেরাতে খুব সামান্য বলে প্রমাণিত হবে।
(9:39)
اِلَّا تَنْفِرُوْا یُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا اَلِیْمًا١ۙ۬ وَّ یَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَیْرَكُمْ وَ لَا تَضُرُّوْهُ شَیْئًا١ؕ وَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ
অনুবাদ: তোমরা যদি না বের হও তাহলে আল্লাহ তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন এবং তোমাদের জায়গায় আর একটি দলকে ওঠাবেন, আর তোমরা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তিশালী।
(9:40)
اِلَّا تَنْصُرُوْهُ فَقَدْ نَصَرَهُ اللّٰهُ اِذْ اَخْرَجَهُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا ثَانِیَ اثْنَیْنِ اِذْ هُمَا فِی الْغَارِ اِذْ یَقُوْلُ لِصَاحِبِهٖ لَا تَحْزَنْ اِنَّ اللّٰهَ مَعَنَا١ۚ فَاَنْزَلَ اللّٰهُ سَكِیْنَتَهٗ عَلَیْهِ وَ اَیَّدَهٗ بِجُنُوْدٍ لَّمْ تَرَوْهَا وَ جَعَلَ كَلِمَةَ الَّذِیْنَ كَفَرُوا السُّفْلٰى١ؕ وَ كَلِمَةُ اللّٰهِ هِیَ الْعُلْیَا١ؕ وَ اللّٰهُ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: তোমরা যদি নবীকে সাহায্য না কর, তাহলে কোন পরোয়া নেই। আল্লাহ তাকে এমন সময় সাহায্য করেছেন যখন কাফেররা তাকে বের করে দিয়েছিল, যখন সে ছিল মাত্র দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয় জন, যখন তারা দু’জন গুহার মধ্যে ছিল, তখন সে তার সাথীকে বলেছিল, চিন্তিত হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। সে সময় আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে তার ওপর মানসিক প্রশান্তি নাযিল করেন এবং এমন সেনাদল পাঠিয়ে তাকে সাহায্য করেন, যা তোমরা দেখনি এবং তিনি কাফেরদের বক্তব্যকে নিচু করে দেন। আর আল্লাহর কথা তো সমুন্নত আছেই। আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।
(9:41)
اِنْفِرُوْا خِفَافًا وَّ ثِقَالًا وَّ جَاهِدُوْا بِاَمْوَالِكُمْ وَ اَنْفُسِكُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: ---বের হও, হালকা কিংবা ভারী যাই হওনা কেন, এবং জিহাদ করো আল্লাহর পথে নিজের ধন-প্রাণ দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে।
(9:42)
لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِیْبًا وَّ سَفَرًا قَاصِدًا لَّاتَّبَعُوْكَ وَ لٰكِنْۢ بَعُدَتْ عَلَیْهِمُ الشُّقَّةُ١ؕ وَ سَیَحْلِفُوْنَ بِاللّٰهِ لَوِ اسْتَطَعْنَا لَخَرَجْنَا مَعَكُمْ١ۚ یُهْلِكُوْنَ اَنْفُسَهُمْ١ۚ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ اِنَّهُمْ لَكٰذِبُوْنَ۠
অনুবাদ: হে নবী! যদি সহজ লাভের সম্ভাবনা থাকতো এবং সফর হালকা হতো, তাহলে তারা নিশ্চয়ই তোমার পেছনে চলতে উদ্যত হতো। কিন্তু তাদের জন্য তো এ পথ বড়ই কঠিন হয়ে গেছে। এখন তারা আল্লাহর কসম খেয়ে খেয়ে বলবে, যদি আমরা চলতে পারতাম তাহলে অবশ্যই তোমাদের সাথে চলতাম। তারা নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আল্লাহ ভালো করেই জানেন তারা মিথ্যাবাদী।
(9:43)
عَفَا اللّٰهُ عَنْكَ١ۚ لِمَ اَذِنْتَ لَهُمْ حَتّٰى یَتَبَیَّنَ لَكَ الَّذِیْنَ صَدَقُوْا وَ تَعْلَمَ الْكٰذِبِیْنَ
অনুবাদ: হে নবী! আল্লাহ তোমাকে মাফ করুন, তুমি তাদের অব্যাহতি দিলে কেন? (তোমরা নিজের তাদের অব্যাহতি না দেয়া উচিত ছিল) এভাবে তুমি জানতে পারতে কারা সত্যবাদী এবং কারা মিথ্যুক।
(9:44)
لَا یَسْتَاْذِنُكَ الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ اَنْ یُّجَاهِدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌۢ بِالْمُتَّقِیْنَ
অনুবাদ: যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, তারা কখনো তোমার কাছে তাদের ধন ও প্রাণ দিয়ে জিহাদ করা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য আবেদন জানাবে না। আল্লাহ মুত্তাকীদের খুব ভাল করেই জানেন।
(9:45)
اِنَّمَا یَسْتَاْذِنُكَ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ ارْتَابَتْ قُلُوْبُهُمْ فَهُمْ فِیْ رَیْبِهِمْ یَتَرَدَّدُوْنَ
অনুবাদ: এমন আবেদন তো একমাত্র তারাই করে; যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে না, যাদের মনে রয়েছে সন্দেহ এবং এ সন্দেহের দোলায় তারা দোদুল্যমান।
(9:46)
وَ لَوْ اَرَادُوا الْخُرُوْجَ لَاَعَدُّوْا لَهٗ عُدَّةً وَّ لٰكِنْ كَرِهَ اللّٰهُ انْۢبِعَاثَهُمْ فَثَبَّطَهُمْ وَ قِیْلَ اقْعُدُوْا مَعَ الْقٰعِدِیْنَ
অনুবাদ: যদি সত্যি সত্যিই তাদের বের হবার ইচ্ছা থাকতো তাহলে তারা সেজন্য কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করতো। কিন্তু তাদের অংশগ্রহণ আল্লাহ কাছে পছন্দনীয় ছিল না। তাই তিনি তাদের শিথিল করে দিলেন এবং বলে দেয়া হলোঃ বসে থাকো, যারা বসে আছে তাদের সাথে।
(9:47)
لَوْ خَرَجُوْا فِیْكُمْ مَّا زَادُوْكُمْ اِلَّا خَبَالًا وَّ لَاۡاَوْضَعُوْا خِلٰلَكُمْ یَبْغُوْنَكُمُ الْفِتْنَةَ١ۚ وَ فِیْكُمْ سَمّٰعُوْنَ لَهُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌۢ بِالظّٰلِمِیْنَ
অনুবাদ: যদি তারা তোমাদের সাথে বের হতো তাহলে তোমাদের মধ্যে অনিষ্ট ছাড়া আর কিছুই বাড়াতো না। তারা ফিতনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের মধ্যে প্রচেষ্টা চালাতো। আর তোমাদের লোকদের অবস্থা হচ্ছে, তাদের মধ্যে এখনো এমন লোক আছে যারা তাদের কথা আড়ি পেতে শোনে। আল্লাহ এ জালেমদের খুব ভাল করেই চেনেন।
(9:48)
لَقَدِ ابْتَغَوُا الْفِتْنَةَ مِنْ قَبْلُ وَ قَلَّبُوْا لَكَ الْاُمُوْرَ حَتّٰى جَآءَ الْحَقُّ وَ ظَهَرَ اَمْرُ اللّٰهِ وَ هُمْ كٰرِهُوْنَ
অনুবাদ: এর আগেও এরা ফিতনা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে এবং তোমাদের ব্যর্থ করার জন্য ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন ধরনের কৌশল খাটিয়েছে। এ সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সত্য এসে গেছে এবং আল্লাহ উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
(9:49)
وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ ائْذَنْ لِّیْ وَ لَا تَفْتِنِّیْ١ؕ اَلَا فِی الْفِتْنَةِ سَقَطُوْا١ؕ وَ اِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِیْطَةٌۢ بِالْكٰفِرِیْنَ
অনুবাদ: তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে, যে বলে আমাকে অব্যাহতি দিন এবং আমাকে পাপের ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না। শুনে রাখো, এরা তো ঝুঁকির মধ্যেই পড়ে আছে এবং জাহান্নাম এ কাফেরদের ঘিরে রেখেছে।
(9:50)
اِنْ تُصِبْكَ حَسَنَةٌ تَسُؤْهُمْ١ۚ وَ اِنْ تُصِبْكَ مُصِیْبَةٌ یَّقُوْلُوْا قَدْ اَخَذْنَاۤ اَمْرَنَا مِنْ قَبْلُ وَ یَتَوَلَّوْا وَّ هُمْ فَرِحُوْنَ
অনুবাদ: তোমার ভাল কিছু হলে তা, তাদের কষ্ট দেয় এবং তোমার ওপর কোন বিপদ এলে তারা খুশী মনে সরে পড়ে এবং বলতে থাকে, “ভালই হয়েছে, আমরা আগে ভাগেই আমাদের ব্যাপার সেরে নিয়েছি।”
(9:51)
قُلْ لَّنْ یُّصِیْبَنَاۤ اِلَّا مَا كَتَبَ اللّٰهُ لَنَا١ۚ هُوَ مَوْلٰىنَا١ۚ وَ عَلَى اللّٰهِ فَلْیَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ
অনুবাদ: তাদের বলে দাও, “আল্লাহ আমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা ছাড়া আর কোন (ভাল বা মন্দ) কিছুই আমাদের হয় না। আল্লাহই আমাদের অভিভাবক ও কার্যনির্বাহক এবং ঈমানদারদের তাঁর ওপরই ভরসা করা উচিত।”
(9:52)
قُلْ هَلْ تَرَبَّصُوْنَ بِنَاۤ اِلَّاۤ اِحْدَى الْحُسْنَیَیْنِ١ؕ وَ نَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ اَنْ یُّصِیْبَكُمُ اللّٰهُ بِعَذَابٍ مِّنْ عِنْدِهٖۤ اَوْ بِاَیْدِیْنَا١ۖ٘ فَتَرَبَّصُوْۤا اِنَّا مَعَكُمْ مُّتَرَبِّصُوْنَ
অনুবাদ: তাদের বলে দাও, “তোমরা আমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের অপেক্ষায় আছো তা দুটি ভালোর একটি ছাড়া আর কি? অন্যদিকে আমরা তোমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের অপেক্ষায় আছি তা হচ্ছে এই যে আল্লাহ হয় নিজেই তোমাদের শাস্তি দেবেন, না হয় আমাদের হাত দিয়ে দেয়াবেন, তাহলে এখন তোমরা অপেক্ষা করো এবং আমরা ও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় থাকছি।”
(9:53)
قُلْ اَنْفِقُوْا طَوْعًا اَوْ كَرْهًا لَّنْ یُّتَقَبَّلَ مِنْكُمْ١ؕ اِنَّكُمْ كُنْتُمْ قَوْمًا فٰسِقِیْنَ
অনুবাদ: তাদের বলে দাও, “তোমরা নিজেদের ধন-সম্পদ স্বেচ্ছায় ও সানন্দে ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছাকৃত ভাবে ব্যয় কর, তা গৃহীত হবে না। কারণ তোমরা ফাসেক গোষ্ঠী।”
(9:54)
وَ مَا مَنَعَهُمْ اَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقٰتُهُمْ اِلَّاۤ اَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللّٰهِ وَ بِرَسُوْلِهٖ وَ لَا یَاْتُوْنَ الصَّلٰوةَ اِلَّا وَ هُمْ كُسَالٰى وَ لَا یُنْفِقُوْنَ اِلَّا وَ هُمْ كٰرِهُوْنَ
অনুবাদ: তাদের দেয়া সম্পদ গৃহীত না হবার এছাড়া আর কোন কারণ নেই যে, তারা আল্লাহ ও তার রসূলের সাথে কুফরী করেছে, নামাযের জন্য যখন আসে আড়মোড় ভাংতে ভাংতে আসে এবং আল্লাহর পথে খরচ করলে তা করে অনিচ্ছাকৃত ভাবে।
(9:55)
فَلَا تُعْجِبْكَ اَمْوَالُهُمْ وَ لَاۤ اَوْلَادُهُمْ١ؕ اِنَّمَا یُرِیْدُ اللّٰهُ لِیُعَذِّبَهُمْ بِهَا فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ تَزْهَقَ اَنْفُسُهُمْ وَ هُمْ كٰفِرُوْنَ
অনুবাদ: তাদের ধন-দৌলত ও সন্তানের আধিক্য দেখে তোমরা প্রতারিত হয়ো না। আল্লাহ চান, এ জিনিসগুলোর মাধ্যমে দুনিয়ার জীবনে তাদের শাস্তি দিতে। আর তারা যদি প্রাণও দিয়ে দেয়, তাহলে তখন তারা থাকবে সত্য অস্বীকার করার অবস্থায়।
(9:56)
وَ یَحْلِفُوْنَ بِاللّٰهِ اِنَّهُمْ لَمِنْكُمْ١ؕ وَ مَا هُمْ مِّنْكُمْ وَ لٰكِنَّهُمْ قَوْمٌ یَّفْرَقُوْنَ
অনুবাদ: তারা আল্লাহর কসম খেয়ে খেয়ে বলে, আমরা তোমাদেরই লোক। অথচ তারা মোটেই তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। আসলে তারা এমন একদল লোক যারা তোমাদের ভয় করে।
(9:57)
لَوْ یَجِدُوْنَ مَلْجَاً اَوْ مَغٰرٰتٍ اَوْ مُدَّخَلًا لَّوَلَّوْا اِلَیْهِ وَ هُمْ یَجْمَحُوْنَ
অনুবাদ: যদি তারা কোন আশ্রয় পেয়ে যায় অথবা কোন গিরি-গুহা কিংবা ভিতরে প্রবেশ করার মত কোন জায়গা, তাহলে দৌড়ে গিয়ে সেখানে লুকিয়ে থাকবে।
(9:58)
وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّلْمِزُكَ فِی الصَّدَقٰتِ١ۚ فَاِنْ اُعْطُوْا مِنْهَا رَضُوْا وَ اِنْ لَّمْ یُعْطَوْا مِنْهَاۤ اِذَا هُمْ یَسْخَطُوْنَ
অনুবাদ: হে নবী! তাদের কেউ কেউ সাদকাহ বন্টনের ব্যাপারে তোমার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাচ্ছে। এ সম্পদ থেকে যদি তাদের কিছু দেয়া হয় তাহলে তারা খুশী হয়ে যায়, আর না দেয়া হলে বিগড়ে যেতে থাকে।
(9:59)
وَ لَوْ اَنَّهُمْ رَضُوْا مَاۤ اٰتٰىهُمُ اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗ١ۙ وَ قَالُوْا حَسْبُنَا اللّٰهُ سَیُؤْتِیْنَا اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهٖ وَ رَسُوْلُهٗۤ١ۙ اِنَّاۤ اِلَى اللّٰهِ رٰغِبُوْنَ۠
অনুবাদ: কতই না ভাল হতো, আল্লাহ ও তার রসূল যা কিছুই তাদের দিয়েছিলেন তাতে যদি তারা সন্তুষ্ট থাকতো এবং বলতো, “আল্লাহ আমাদের জন্য যথেষ্ট। তিনি নিজের অনুগ্রহ থেকে আমাদের আরো অনেক কিছু দেবেন এবং তাঁর রসূলও আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন। আমরা আল্লাহরই প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রেখেছি।”
(9:60)
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلْفُقَرَآءِ وَ الْمَسٰكِیْنِ وَ الْعٰمِلِیْنَ عَلَیْهَا وَ الْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الْغٰرِمِیْنَ وَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ ابْنِ السَّبِیْلِ١ؕ فَرِیْضَةً مِّنَ اللّٰهِ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: এ সাদকা গুলো তো আসলে ফকীর মিসকীনদের জন্য। আর যারা সাদকা সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত এবং যাদের মন জয় করা প্রয়োজন তাদের জন্য। তাছাড়া দাস মুক্ত করার, ঋণগ্রস্তদের সাহায্য করার, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের উপকারে ব্যয় করার জন্য। এটা আল্লাহর পক্ষে থেকে একটি বিধান এবং আল্লাহ সবকিছু জানেন, তিনি বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ।
(9:61)
وَ مِنْهُمُ الَّذِیْنَ یُؤْذُوْنَ النَّبِیَّ وَ یَقُوْلُوْنَ هُوَ اُذُنٌ١ؕ قُلْ اُذُنُ خَیْرٍ لَّكُمْ یُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَ یُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِیْنَ وَ رَحْمَةٌ لِّلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ١ؕ وَ الَّذِیْنَ یُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللّٰهِ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ
অনুবাদ: তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা নিজেদের কথা দ্বারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে এ ব্যক্তি অতিশয় কর্ণপাতকারী। বলে দাও, “সে এরূপ করে কেবল তোমাদের ভালোর জন্যই। সে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং ঈমানদারদেরকে বিশ্বাস করে। তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমানদার তাদের জন্য সে পরিপূর্ণ রহমত। আর যারা আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।”
(9:62)
یَحْلِفُوْنَ بِاللّٰهِ لَكُمْ لِیُرْضُوْكُمْ١ۚ وَ اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗۤ اَحَقُّ اَنْ یُّرْضُوْهُ اِنْ كَانُوْا مُؤْمِنِیْنَ
অনুবাদ: তারা তোমাদের সন্তুষ্ট করার জন্য তোমাদের সামনে কসম খায়। অথচ যদি তার মুমিন হয়ে থাকে তাহলে তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে সন্তুষ্ট করার কথা চিন্তা করবে, কারণ তারাই এর বেশী হকদার।
(9:63)
اَلَمْ یَعْلَمُوْۤا اَنَّهٗ مَنْ یُّحَادِدِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ فَاَنَّ لَهٗ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِیْهَا١ؕ ذٰلِكَ الْخِزْیُ الْعَظِیْمُ
অনুবাদ: তারা কি জানে না, যারা আল্লাহ ও তার রসূলের মোকাবিলা করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, তার মধ্য তারা চিরকাল থাকবে। এটি একটি বিরাট লাঞ্ছনার ব্যাপার।
(9:64)
یَحْذَرُ الْمُنٰفِقُوْنَ اَنْ تُنَزَّلَ عَلَیْهِمْ سُوْرَةٌ تُنَبِّئُهُمْ بِمَا فِیْ قُلُوْبِهِمْ١ؕ قُلِ اسْتَهْزِءُوْا١ۚ اِنَّ اللّٰهَ مُخْرِجٌ مَّا تَحْذَرُوْنَ
অনুবাদ: এ মুনাফিকরা ভয় করেছে, মুসলমানদের ওপর এমন একটি সূরা না নাযিল হয়ে যায়, যা তাদের মনের গোপন কথা প্রকাশ করে দেবে। হে নবী! তাদের বলে দাও, “বেশ ঠাট্টা করতেই থাকো, তবে তোমরা যে জিনিসটির প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয় করছো আল্লাহ তা প্রকাশ করে দেবেন।”
(9:65)
وَ لَئِنْ سَاَلْتَهُمْ لَیَقُوْلُنَّ اِنَّمَا كُنَّا نَخُوْضُ وَ نَلْعَبُ١ؕ قُلْ اَبِاللّٰهِ وَ اٰیٰتِهٖ وَ رَسُوْلِهٖ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِءُوْنَ
অনুবাদ: যদি তাদের জিজ্ঞেস করো, তোমরা কি কথা বলছিলে? তাহলে তারা ঝটপট বলে দেবে, আমরা তো হাসি-তামাসা ও পরিহাস করছিলাম। তাদের বলো, তোমাদের হাসি-তামাসা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রসূলের সাথে ছিল?
(9:66)
لَا تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ اِیْمَانِكُمْ١ؕ اِنْ نَّعْفُ عَنْ طَآئِفَةٍ مِّنْكُمْ نُعَذِّبْ طَآئِفَةًۢ بِاَنَّهُمْ كَانُوْا مُجْرِمِیْنَ۠
অনুবাদ: এখন আর ওযর পেশ করো না। তোমরা ঈমান আনার পর কুফরী করেছো, যদি আমরা তোমাদের একটি দলকে মাফও করে দেই তাহলে আরেকটি দলকে তো আমরা অবশ্যই শাস্তি দেবো। কারণ তারা অপারাধী।
(9:67)
اَلْمُنٰفِقُوْنَ وَ الْمُنٰفِقٰتُ بَعْضُهُمْ مِّنْۢ بَعْضٍ١ۘ یَاْمُرُوْنَ بِالْمُنْكَرِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوْفِ وَ یَقْبِضُوْنَ اَیْدِیَهُمْ١ؕ نَسُوا اللّٰهَ فَنَسِیَهُمْ١ؕ اِنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ
অনুবাদ: মুনাফিক পুরুষ ও নারী পরস্পরের দোসর। খারাপ কাজের হুকুম দেয়, ভাল কাজের নিষেধ করে এবং কল্যাণ থেকে নিজেদের হাত গুটিয়ে রাখে। তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, ফলে আল্লাহও তাদেরকে ভুলে গেছেন।
(9:68)
وَعَدَ اللّٰهُ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ الْمُنٰفِقٰتِ وَ الْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا١ؕ هِیَ حَسْبُهُمْ١ۚ وَ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ١ۚ وَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّقِیْمٌۙ
অনুবাদ: নিশ্চিতভাবেই এ মুনাফিকরাই ফাসেক। এ মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং কাফেরদের জন্য আল্লাহ জাহান্নামের আগুনের ওয়াদা করেছেন। তার মধ্যে তারা চিরকাল থাকবে। সেটিই তাদের জন্য উপযুক্ত। আল্লাহর অভিশাপ তাদের ওপর এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব।
(9:69)
كَالَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَانُوْۤا اَشَدَّ مِنْكُمْ قُوَّةً وَّ اَكْثَرَ اَمْوَالًا وَّ اَوْلَادًا١ؕ فَاسْتَمْتَعُوْا بِخَلَاقِهِمْ فَاسْتَمْتَعْتُمْ بِخَلَاقِكُمْ كَمَا اسْتَمْتَعَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ بِخَلَاقِهِمْ وَ خُضْتُمْ كَالَّذِیْ خَاضُوْا١ؕ اُولٰٓئِكَ حَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ١ۚ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ
অনুবাদ: তোমাদের আচরণ তোমাদের পূর্ববর্তীদের মতোই। তারা ছিল তোমাদের চাইতে বেশী শক্তিশালী এবং তোমাদের চাইতে বেশী সম্পদ ও সন্তানের মালিক। তারপর তারা দুনিয়ায় নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছে এবং তোমরাও একইভাবে নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করছো। যেমন তারা করেছিল এবং তারা যেমন অনর্থক বিতর্কে লিপ্ত ছিল তেমনি বিতর্কে তোমরাও লিপ্ত রয়েছো। কাজেই তাদের পরিণতি হয়েছে এই যে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাদের সমস্ত কাজকর্ম পণ্ড হয়ে গেছে এবং তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
(9:70)
اَلَمْ یَاْتِهِمْ نَبَاُ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ قَوْمِ نُوْحٍ وَّ عَادٍ وَّ ثَمُوْدَ١ۙ۬ وَ قَوْمِ اِبْرٰهِیْمَ وَ اَصْحٰبِ مَدْیَنَ وَ الْمُؤْتَفِكٰتِ١ؕ اَتَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَیِّنٰتِ١ۚ فَمَا كَانَ اللّٰهُ لِیَظْلِمَهُمْ وَ لٰكِنْ كَانُوْۤا اَنْفُسَهُمْ یَظْلِمُوْنَ
অনুবাদ: তাদের কাছে কি তাদের পূর্ববর্তীদের ইতিহাস পৌঁছেনি? নূহের জাতির, আদ, সামূদ ও ইবরাহীমের জাতির, মাদইয়ানের অধিবাসীদের এবং যে জনবসতিগুলো উল্টে দেয়া হয়েছিল সেগুলোর? তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট নিশানীসহ তাদের কাছে এসেছিলেন। এরপর তাদের ওপর জুলুম করা আল্লাহর কাজ ছিল না বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিলেন।
(9:71)
وَ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتُ بَعْضُهُمْ اَوْلِیَآءُ بَعْضٍ١ۘ یَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَ یُقِیْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَ یُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ یُطِیْعُوْنَ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ١ؕ اُولٰٓئِكَ سَیَرْحَمُهُمُ اللّٰهُ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, এরা সবাই পরস্পরের বন্ধু ও সহযোগী। এরা ভাল কাজের হুকুম দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে। এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাযিল হবেই। অবশ্যই আল্লাহ সবার ওপর পরাক্রমশালী এবং জ্ঞানী ও বিজ্ঞ।
(9:72)
وَعَدَ اللّٰهُ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا وَ مَسٰكِنَ طَیِّبَةً فِیْ جَنّٰتِ عَدْنٍ١ؕ وَ رِضْوَانٌ مِّنَ اللّٰهِ اَكْبَرُ١ؕ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ۠
অনুবাদ: এ মুমিন পুরুষ ও নারীকে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদেরকে তিনি এমন বাগান দান করবেন যার নিম্নদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান হবে এবং তারা তার মধ্যে চিরকাল বাস করবে। এসব চির সবুজ বাগানে তাদের জন্য থাকবে বাসগৃহ এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।
(9:73)
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ اغْلُظْ عَلَیْهِمْ١ؕ وَ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ١ؕ وَ بِئْسَ الْمَصِیْرُ
অনুবাদ: হে নবী! পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাফের ও মুনাফিক উভয়ের মোকাবিল করো এবং তাদের প্রতি কঠোর হও। শেষ পর্যন্ত তাদের আবাস হবে জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট অবস্থান স্থল।
(9:74)
یَحْلِفُوْنَ بِاللّٰهِ مَا قَالُوْا١ؕ وَ لَقَدْ قَالُوْا كَلِمَةَ الْكُفْرِ وَ كَفَرُوْا بَعْدَ اِسْلَامِهِمْ وَ هَمُّوْا بِمَا لَمْ یَنَالُوْا١ۚ وَ مَا نَقَمُوْۤا اِلَّاۤ اَنْ اَغْنٰىهُمُ اللّٰهُ وَ رَسُوْلُهٗ مِنْ فَضْلِهٖ١ۚ فَاِنْ یَّتُوْبُوْا یَكُ خَیْرًا لَّهُمْ١ۚ وَ اِنْ یَّتَوَلَّوْا یُعَذِّبْهُمُ اللّٰهُ عَذَابًا اَلِیْمًا١ۙ فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ١ۚ وَ مَا لَهُمْ فِی الْاَرْضِ مِنْ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیْرٍ
অনুবাদ: তারা আল্লাহর নামে কসম খেয়ে খেয়ে বলে, আমরা ও কথা বলিনি। অথচ তারা নিশ্চয়ই সেই কুফরীর কথাটা বলেছে। তারা ইসলাম গ্রহণের পর কুফরী অবলম্বন করেছে। তারা এমনসব কিছু করার সংকল্প করেছিল যা করতে পারেনি। আল্লাহ ও তাঁর রসূল নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাব মুক্ত করে দিয়েছেন বলেই তাদের এত ক্রোধ ও আক্রোশ! এখন যদি তারা নিজেদের এহন আচরণ থেকে বিরত হয়, তাহলে তাদের জন্যই ভাল। আর যদি বিরত না হয়, তাহলে আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন এবং পৃথিবীতে তাদের পক্ষ অবলম্বনকারী ও সাহায্যকারী কেউ থাকবে না।
(9:75)
وَ مِنْهُمْ مَّنْ عٰهَدَ اللّٰهَ لَئِنْ اٰتٰىنَا مِنْ فَضْلِهٖ لَنَصَّدَّقَنَّ وَ لَنَكُوْنَنَّ مِنَ الصّٰلِحِیْنَ
অনুবাদ: তাদের মধ্যে এমনও কিছু লোক আছে যারা আল্লাহর কাছে অঙ্গীকার করেছিল, যদি তিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদের ধন্য করেন তাহলে আমরা দান করবো এবং সৎ হয়ে যাবো।
(9:76)
فَلَمَّاۤ اٰتٰىهُمْ مِّنْ فَضْلِهٖ بَخِلُوْا بِهٖ وَ تَوَلَّوْا وَّ هُمْ مُّعْرِضُوْنَ
অনুবাদ: কিন্তু যখন আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে বিত্তশালী করে দিলেন তখন তারা কার্পণ্য করতে লাগলো এবং নিজেদের অঙ্গীকার থেকে এমনভাবে পিছটান দিল যে, তার কোন পরোয়াই তাদের রইল না।
(9:77)
فَاَعْقَبَهُمْ نِفَاقًا فِیْ قُلُوْبِهِمْ اِلٰى یَوْمِ یَلْقَوْنَهٗ بِمَاۤ اَخْلَفُوا اللّٰهَ مَا وَعَدُوْهُ وَ بِمَا كَانُوْا یَكْذِبُوْنَ
অনুবাদ: ফলে তারা আল্লাহর সাথে এই যে অঙ্গীকার ভঙ্গ করলো এবং এই যে, মিথ্যা বলতে থাকলো, এ কারণে আল্লাহ তাদের অন্তরে মুনাফিকী বদ্ধমূল করে দিলেন, তার দরবারে তাদের উপস্থিতির দিন পর্যন্ত তা তাদের পিছু ছাড়বে না।
(9:78)
اَلَمْ یَعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ یَعْلَمُ سِرَّهُمْ وَ نَجْوٰىهُمْ وَ اَنَّ اللّٰهَ عَلَّامُ الْغُیُوْبِۚ
অনুবাদ: তারা কি জানে না, আল্লাহ তাদের গোপন কথাও গোপন সলা-পরামর্শ পর্যন্ত জানেন এবং তিনি সমস্ত অদৃশ্য বিষয়ও পুরোপুরি অবগত?
(9:79)
اَلَّذِیْنَ یَلْمِزُوْنَ الْمُطَّوِّعِیْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ فِی الصَّدَقٰتِ وَ الَّذِیْنَ لَا یَجِدُوْنَ اِلَّا جُهْدَهُمْ فَیَسْخَرُوْنَ مِنْهُمْ١ؕ سَخِرَ اللّٰهُ مِنْهُمْ١٘ وَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ
অনুবাদ: (তিনি এমন সব কৃপণ ধনীদেরকে ভাল করেই জানেন) যারা ঈমানদেরদের সন্তোষ ও আগ্রহ সহকারে আর্থিক ত্যাগ স্বীকারের প্রতি দোষ ও অপবাদ আরোপ করে এবং যাদের কাছে (আল্লাহর পথে দান করার জন্য) নিজেরা কষ্ট সহ্য করে যা কিছু দান করে তাছাড়া আর কিছুই নেই, তাদেরকে বিদ্রূপ করে। আল্লাহ এ বিদ্রূপকারীদেরকে বিদ্রূপ করেন। এদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। আল্লাহ এ বিদ্রূপকারীদেরকে বিদ্রূপ করেন। এদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
(9:80)
اِسْتَغْفِرْ لَهُمْ اَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ١ؕ اِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِیْنَ مَرَّةً فَلَنْ یَّغْفِرَ اللّٰهُ لَهُمْ١ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ١ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْفٰسِقِیْنَ۠
অনুবাদ: হে নবী! তুমি এ ধরনের লোকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো বা না করো, তুমি যদি এদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমা প্রার্থনা কর তাহলেও আল্লাহ তাদেরকে কখনই ক্ষমা করবেন না। কারণ তারা আল্লাহ ও তার রসূলের সাথে কুফরী করেছে। আর আল্লাহ ফাসেকদেরকে মুক্তির পথ দেখান না।
(9:81)
فَرِحَ الْمُخَلَّفُوْنَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلٰفَ رَسُوْلِ اللّٰهِ وَ كَرِهُوْۤا اَنْ یُّجَاهِدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ قَالُوْا لَا تَنْفِرُوْا فِی الْحَرِّ١ؕ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ اَشَدُّ حَرًّا١ؕ لَوْ كَانُوْا یَفْقَهُوْنَ
অনুবাদ: যাদেরকে পিছনে থেকে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল তারা আল্লাহর রসূলের সাথে সহযোগিতা না করারও ঘরে বসে থাকার জন্য আনন্দিত হলো এবং তারা নিজেদের ধন-প্রাণ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে অপছন্দ করলো। তারা লোকদেরকে বললো, “এ প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বের হয়ো না।” তাদেরকে বলে দাও, জাহান্নামের আগুন এর চেয়েও বেশী গরম, হায়! যদি তাদের সেই চেতনা থাকতো!
(9:82)
فَلْیَضْحَكُوْا قَلِیْلًا وَّ لْیَبْكُوْا كَثِیْرًا١ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ
অনুবাদ: এখন তাদের কম হাসা ও বেশী কাঁদা উচিত। কারণ তারা যে গুনাহ উপার্জন করেছে তার প্রতিদান এ ধরনেরই হয়ে থাকে (যে, সেজন্য তাদের কাঁদা উচিত।)
(9:83)
فَاِنْ رَّجَعَكَ اللّٰهُ اِلٰى طَآئِفَةٍ مِّنْهُمْ فَاسْتَاْذَنُوْكَ لِلْخُرُوْجِ فَقُلْ لَّنْ تَخْرُجُوْا مَعِیَ اَبَدًا وَّ لَنْ تُقَاتِلُوْا مَعِیَ عَدُوًّا١ؕ اِنَّكُمْ رَضِیْتُمْ بِالْقُعُوْدِ اَوَّلَ مَرَّةٍ فَاقْعُدُوْا مَعَ الْخٰلِفِیْنَ
অনুবাদ: যদি আল্লাহ তাদের মধ্যে তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান এবং আগামীতে তাদের মধ্য থেকে কোন দল জিহাদ করার জন্য তোমার কাছে অনুমতি চায় তাহলে পরিষ্কার বলে দেবে, “এখন আর তোমরা কখনো আমরা সাথে যেতে পারবে না এবং আমার সঙ্গী হয়ে কোন দুশমনের সাথে লড়াইও করতে পারবে না। তোমরা তো প্রথমে বসে থাকাই পছন্দ করেছিলে, তাহলে এখন যারা ঘরে বসে আছে তাদের সাথে তোমরাও বসে থাকো।”
(9:84)
وَ لَا تُصَلِّ عَلٰۤى اَحَدٍ مِّنْهُمْ مَّاتَ اَبَدًا وَّ لَا تَقُمْ عَلٰى قَبْرِهٖ١ؕ اِنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ مَاتُوْا وَ هُمْ فٰسِقُوْنَ
অনুবাদ: আর আগামীতে তাদের মধ্য থেকে কেউ মারা গেলে তার জানাযার নামাযও তুমি কখনো পড়বে না এবং কখনো তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না। কারণ তারা আল্লাহ ও তার রসূলকে অস্বীকার করেছে এবং তাদের মৃত্যু হয়েছে ফাসেক অবস্থায়।
(9:85)
وَ لَا تُعْجِبْكَ اَمْوَالُهُمْ وَ اَوْلَادُهُمْ١ؕ اِنَّمَا یُرِیْدُ اللّٰهُ اَنْ یُّعَذِّبَهُمْ بِهَا فِی الدُّنْیَا وَ تَزْهَقَ اَنْفُسُهُمْ وَ هُمْ كٰفِرُوْنَ
অনুবাদ: তাদের ধনাঢ্যতা ও তাদের অধিক সংখ্যক সন্তান সন্ততি তোমাকে যেন প্রতারিত না করে। আল্লাহ তো তাদেরকে এ ধন ও সম্পদের সাহায্যে এ দুনিয়ায়ই সাজা দেবার সংকল্প করে ফেলেছেন এবং কাফের থাকা অবস্থায় তাদের মৃত্যু হোক-এটাই চেয়েছেন।
(9:86)
وَ اِذَاۤ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ اَنْ اٰمِنُوْا بِاللّٰهِ وَ جَاهِدُوْا مَعَ رَسُوْلِهِ اسْتَاْذَنَكَ اُولُوا الطَّوْلِ مِنْهُمْ وَ قَالُوْا ذَرْنَا نَكُنْ مَّعَ الْقٰعِدِیْنَ
অনুবাদ: আল্লাহকে মেনে চলো এবং তাঁর রসূলের সহযোগী হয়ে জিহাদ করো, এ মর্মে যখনই কোন সূরা নাযিল হয়েছে তোমরা দেখেছো, তাদের মধ্যে যারা সমার্থবান ছিল তারাই তোমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছে, জিহাদে অংশগ্রহণ করা থেকে তাদেরকে রেহাই দেয়া হোক এবং তারা বলেছে, আমাদের ছেড়ে দাও। যারা বসে আছে তাদের সাথে আমরা বসে থাকবো।
(9:87)
رَضُوْا بِاَنْ یَّكُوْنُوْا مَعَ الْخَوَالِفِ وَ طُبِعَ عَلٰى قُلُوْبِهِمْ فَهُمْ لَا یَفْقَهُوْنَ
অনুবাদ: তারা গৃহবাসীনি মেয়েদের সাথে শামিল হয়ে ঘরে থাকতে চেয়েছে এবং তাদের দিলে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। তাই তারা কিছুই বুঝতে পারছে না।
(9:88)
لٰكِنِ الرَّسُوْلُ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ١ؕ وَ اُولٰٓئِكَ لَهُمُ الْخَیْرٰتُ١٘ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
অনুবাদ: অন্যদিকে রসূল ও তার ঈমানদার সাথীরা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করেছে। সমস্ত কল্যাণ এখন তাদের জন্য এবং তারাই সফলকাম হবে।
(9:89)
اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا١ؕ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ۠
অনুবাদ: আল্লাহ তাদের জন্য এমন বাগান তৈরী করে রেখেছেন। যার নিম্নদেশে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হচ্ছে। তার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল। এটাই মহা সাফল্য।
(9:90)
وَ جَآءَ الْمُعَذِّرُوْنَ مِنَ الْاَعْرَابِ لِیُؤْذَنَ لَهُمْ وَ قَعَدَ الَّذِیْنَ كَذَبُوا اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ١ؕ سَیُصِیْبُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا مِنْهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ
অনুবাদ: গ্রামীণ আরবের মধ্যে থেকেও অনেক লোক এলো। তারা ওযর পেশ করলো, যাতে তাদেরকেও পিছনে থেকে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। যারা আল্লাহ ও তার রসূলের সাথে ঈমানের মিথ্যা অঙ্গীকার করেছিল তারাই এভাবে বসে রইল। এ গ্রামীণ আরবদের মধ্য থেকে যারাই কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে শীঘ্রই তারা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি ভোগ করবে।
(9:91)
لَیْسَ عَلَى الضُّعَفَآءِ وَ لَا عَلَى الْمَرْضٰى وَ لَا عَلَى الَّذِیْنَ لَا یَجِدُوْنَ مَا یُنْفِقُوْنَ حَرَجٌ اِذَا نَصَحُوْا لِلّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ١ؕ مَا عَلَى الْمُحْسِنِیْنَ مِنْ سَبِیْلٍ١ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌۙ
অনুবাদ: দুর্বল ও রুগ্ন লোকেরা এবং যেসব লোক জিহাদে শরীক হবার জন্য পাথেয় পায় না, তারা যদি পিছনে থেকে যায় তাহলে তাতে কোন ক্ষতি নেই, যখন তারা আন্তরিকভাবে আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বস্ত। এ ধরনের সৎকর্মশীলদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন অবকাশই নেই। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(9:92)
وَّ لَا عَلَى الَّذِیْنَ اِذَا مَاۤ اَتَوْكَ لِتَحْمِلَهُمْ قُلْتَ لَاۤ اَجِدُ مَاۤ اَحْمِلُكُمْ عَلَیْهِ١۪ تَوَلَّوْا وَّ اَعْیُنُهُمْ تَفِیْضُ مِنَ الدَّمْعِ حَزَنًا اَلَّا یَجِدُوْا مَا یُنْفِقُوْنَؕ
অনুবাদ: অনুরূপভাবে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের কোন সুযোগ নেই যারা নিজেরা এসে তোমার কাছে আবেদন করেছিল, তাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করতে, কিন্তু তুমি বলেছিলে আমি তোমাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করতে পারছি না। তখন তারা বাধ্য হয়ে ফিরে গিয়েছিল। তখন তাদের অবস্থা এই ছিল যে, তাদের চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল এবং নিজেদের অর্থ ব্যয়ে জিহাদে শরীক হতে অসমর্থ হবার দরুন তাদের মনে বড়ই কষ্ট হচ্ছিল।
(9:93)
اِنَّمَا السَّبِیْلُ عَلَى الَّذِیْنَ یَسْتَاْذِنُوْنَكَ وَ هُمْ اَغْنِیَآءُ١ۚ رَضُوْا بِاَنْ یَّكُوْنُوْا مَعَ الْخَوَالِفِ١ۙ وَ طَبَعَ اللّٰهُ عَلٰى قُلُوْبِهِمْ فَهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: অবশ্যই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে যারা বিত্তশালী হবার পরও জিহাদে অংশগ্রহণ করা থেকে তোমার কাছে অব্যাহতি চাচ্ছে। তারা পুরবাসিনীদের সাথে থাকাই পছন্দ করেছে। আল্লাহ তাদের দিলে মোহর মেরে দিয়েছেন, তাই তারা এখন কিছুই জানে না। (যে, আল্লাহর কাজে তাদের এহেন কর্মনীতি গ্রহণের ফল কী দাঁড়াবে।)
(9:94)
یَعْتَذِرُوْنَ اِلَیْكُمْ اِذَا رَجَعْتُمْ اِلَیْهِمْ١ؕ قُلْ لَّا تَعْتَذِرُوْا لَنْ نُّؤْمِنَ لَكُمْ قَدْ نَبَّاَنَا اللّٰهُ مِنْ اَخْبَارِكُمْ١ؕ وَ سَیَرَى اللّٰهُ عَمَلَكُمْ وَ رَسُوْلُهٗ ثُمَّ تُرَدُّوْنَ اِلٰى عٰلِمِ الْغَیْبِ وَ الشَّهَادَةِ فَیُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: তোমরা যখন ফিরে তাদের কাছে পৌঁছবে তখন তারা নানা ধরনের ওযর পেশ করতে থাকবে। কিন্তু তুমি পরিষ্কার বলে দেবে, “বাহানাবাজী করো না, আমরা তোমাদের কোন কথাই বিশ্বাস করবো না। তোমাদের অবস্থা আল্লাহ আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। এখন আল্লাহ ও তাঁর রসূল তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ করবেন। তারপর তোমাদেরকে তাঁরই দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে, যিনি প্রকাশ্য ও গোপন সবকিছুই জানেন এবং তোমরা কি কাজ করছিলে তা তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন।”
(9:95)
سَیَحْلِفُوْنَ بِاللّٰهِ لَكُمْ اِذَا انْقَلَبْتُمْ اِلَیْهِمْ لِتُعْرِضُوْا عَنْهُمْ١ؕ فَاَعْرِضُوْا عَنْهُمْ١ؕ اِنَّهُمْ رِجْسٌ١٘ وَّ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ١ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ
অনুবাদ: তোমরা ফিরে এলে তারা তোমাদের সামনে কসম খাবে, যাতে তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা করো। ঠিক আছে, তোমরা অবশ্যই তাদেরকে উপেক্ষা করো কারণ তারা অপবিত্র এবং তাদের আসল আবাস জাহান্নাম। তাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ এটি তাদের ভাগ্যে জুটবে।
(9:96)
یَحْلِفُوْنَ لَكُمْ لِتَرْضَوْا عَنْهُمْ١ۚ فَاِنْ تَرْضَوْا عَنْهُمْ فَاِنَّ اللّٰهَ لَا یَرْضٰى عَنِ الْقَوْمِ الْفٰسِقِیْنَ
অনুবাদ: তারা তোমাদের সামনে কসম খাবে যাতে তোমরা তাদের প্রতি তুষ্ট হও। অথচ তোমরা তাদের প্রতি তুষ্ট হলেও আল্লাহ কখনো এহেন ফাসেকদের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না।
(9:97)
اَلْاَعْرَابُ اَشَدُّ كُفْرًا وَّ نِفَاقًا وَّ اَجْدَرُ اَلَّا یَعْلَمُوْا حُدُوْدَ مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ عَلٰى رَسُوْلِهٖ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: এ বেদুইন আরবরা কুফরী ও মুনাফিকীতে বেশী কঠোর এবং আল্লাহ তাঁর রসূলের প্রতি যে দ্বীন নাযিল করেছেন তার সীমারেখা সম্পর্কে তাদের অজ্ঞ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। আল্লাহ সবকিছু জানেন, তিনি জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।
(9:98)
وَ مِنَ الْاَعْرَابِ مَنْ یَّتَّخِذُ مَا یُنْفِقُ مَغْرَمًا وَّ یَتَرَبَّصُ بِكُمُ الدَّوَآئِرَ١ؕ عَلَیْهِمْ دَآئِرَةُ السَّوْءِ١ؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ
অনুবাদ: এ গ্রামীণদের মধ্যে এমন এমন লোকও রয়েছে যারা আল্লাহর পথে কিছু ব্যয় করলে তাকে নিজেদের ওপর জোরপূর্বক চাপানো অর্থদণ্ড মনে করে এবং তোমাদের ব্যাপারে কালের আবর্তনের প্রতীক্ষা করছে (অর্থাৎ তোমরা কোন বিপদের মুখে পড়লে যে শাসন ব্যবস্থার আনুগত্যের শৃংখল তোমরা তাদের গলায় বেঁধে দিয়েছ তা তারা গলা থেকে নামিয়ে ফেলবে। ) অথচ মন্দের আবর্তন তাদের ওপরই চেপে বসেছে। আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।
(9:99)
وَ مِنَ الْاَعْرَابِ مَنْ یُّؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ یَتَّخِذُ مَا یُنْفِقُ قُرُبٰتٍ عِنْدَ اللّٰهِ وَ صَلَوٰتِ الرَّسُوْلِ١ؕ اَلَاۤ اِنَّهَا قُرْبَةٌ لَّهُمْ١ؕ سَیُدْخِلُهُمُ اللّٰهُ فِیْ رَحْمَتِهٖ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ۠
অনুবাদ: আবার এ গ্রামীণদের মধ্য থেকে কিছু লোক এমনও আছে যারা আল্লাহ ও কিয়ামতের দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং যা কিছু খরচ করে তাকে আল্লাহর দরবারে নৈকট্য লাভের এবং রসূলের কাছ থেকে রহমতের দোয়া লাভের উপায় হিসেবে গ্রহণ করে। হ্যাঁ,, অবশ্যি তা তাদের জন্য নৈকট্য লাভের উপায় এবং আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে রহমতের মধ্যে প্রবেশ করাবেন। অবশ্যি আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(9:100)
وَ السّٰبِقُوْنَ الْاَوَّلُوْنَ مِنَ الْمُهٰجِرِیْنَ وَ الْاَنْصَارِ وَ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْهُمْ بِاِحْسَانٍ١ۙ رَّضِیَ اللّٰهُ عَنْهُمْ وَ رَضُوْا عَنْهُ وَ اَعَدَّ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ تَحْتَهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا١ؕ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
অনুবাদ: মুহাজির ও আনসারদের মধ্য থেকে যারা সবার আগে ঈমানের দাওয়াত গ্রহণ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে এবং যারা পরে নিষ্ঠা সহকারে তাদের অনুসরণ করছে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তাদের জন্য এমন বাগান তৈরী করে রেখেছেন যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে এবং তারা তার মধ্যে থাকবে চিরকাল। এটাই মহা সাফল্য।
(9:101)
وَ مِمَّنْ حَوْلَكُمْ مِّنَ الْاَعْرَابِ مُنٰفِقُوْنَ١ۛؕ وَ مِنْ اَهْلِ الْمَدِیْنَةِ١ؔۛ۫ مَرَدُوْا عَلَى النِّفَاقِ١۫ لَا تَعْلَمُهُمْ١ؕ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْ١ؕ سَنُعَذِّبُهُمْ مَّرَّتَیْنِ ثُمَّ یُرَدُّوْنَ اِلٰى عَذَابٍ عَظِیْمٍۚ
অনুবাদ: তোমাদের আশেপাশে যেসব বেদুইন থাকে তাদের মধ্যে রয়েছে অনেক মুনাফিক। অনুরূপভাবে মদীনাবাসীদের মধ্যেও রয়েছে এমন কিছু মুনাফিক, যারা মুনাফিকীতে পাকাপোক্ত হয়ে গেছে। তোমরা তাদেরকে চিন না, আমি চিনি তাদেরকে। শীঘ্রই আমি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দেবো। তারপর আরো বেশী বড় শাস্তির জন্য তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।
(9:102)
وَ اٰخَرُوْنَ اعْتَرَفُوْا بِذُنُوْبِهِمْ خَلَطُوْا عَمَلًا صَالِحًا وَّ اٰخَرَ سَیِّئًا١ؕ عَسَى اللّٰهُ اَنْ یَّتُوْبَ عَلَیْهِمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
অনুবাদ: আরো কিছু লোক আছে, যারা নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিয়েছে। তাদের কাজকর্ম মিশ্র ধরনের কিছু ভাল, কিছু মন্দ। অসম্ভব নয়, আল্লাহ তাদের প্রতি আবার মেহেরবান হয়ে যাবেন। কারণ, তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(9:103)
خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَ تُزَكِّیْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَیْهِمْ١ؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ
অনুবাদ: হে নবী! তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা নিয়ে তাদেরকে পাক পবিত্র করো, (নেকীর পথে) তাদেরকে এগিয়ে দাও এবং তাদের জন্য রহমতের দোয়া করো। তোমার দোয়া তাদের সান্তনার কারণ হবে। আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।
(9:104)
اَلَمْ یَعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ هُوَ یَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهٖ وَ یَاْخُذُ الصَّدَقٰتِ وَ اَنَّ اللّٰهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ
অনুবাদ: তারা কি জানে না, আল্লাহই তার বান্দাদের তাওবা কবুল করেন, তাদের দান-খয়রাত গ্রহণ করেন এবং আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়?
(9:105)
وَ قُلِ اعْمَلُوْا فَسَیَرَى اللّٰهُ عَمَلَكُمْ وَ رَسُوْلُهٗ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ١ؕ وَ سَتُرَدُّوْنَ اِلٰى عٰلِمِ الْغَیْبِ وَ الشَّهَادَةِ فَیُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَۚ
অনুবাদ: আর হে নবী! তাদেরকে বলে দাও, তোমরা কাজ করতে থাকো। আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনরা তোমাদের কাজের ধারা এখন কেমন থাকে তা দেখবেন। তারপর তোমাদের তাঁর দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে যিনি প্রকাশ্যে ও গোপনে সবকিছু জানেন এবং তোমরা কি করতে তা তিনি তোমাদের বলে দেবেন।
(9:106)
وَ اٰخَرُوْنَ مُرْجَوْنَ لِاَمْرِ اللّٰهِ اِمَّا یُعَذِّبُهُمْ وَ اِمَّا یَتُوْبُ عَلَیْهِمْ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ
অনুবাদ: অপর কিছু লোকের ব্যাপার এখনো আল্লাহর হুকুমের অপেক্ষায় আছে, তিনি চাইলে তাদেরকে শাস্তি দেবেন, আবার চাইলে তাদের প্রতি নতুন করে অনুগ্রহ করবেন। আল্লাহ সবকিছু জানেন তিনি জ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ।
(9:107)
وَ الَّذِیْنَ اتَّخَذُوْا مَسْجِدًا ضِرَارًا وَّ كُفْرًا وَّ تَفْرِیْقًۢا بَیْنَ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ اِرْصَادًا لِّمَنْ حَارَبَ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ مِنْ قَبْلُ١ؕ وَ لَیَحْلِفُنَّ اِنْ اَرَدْنَاۤ اِلَّا الْحُسْنٰى١ؕ وَ اللّٰهُ یَشْهَدُ اِنَّهُمْ لَكٰذِبُوْنَ
অনুবাদ: আরো কিছু লোক আছে, যারা একটি মসজিদ নির্মাণ করেছে (সত্যের দাওয়াতকে) ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে, (আল্লাহর বন্দেগী করার পরিবর্তে) কুফরী করার জন্য মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এবং (এ বাহ্যিক ইবাদতগাহকে) এমন এক ব্যক্তির জন্য গোপন ঘাটি বানাবার উদ্দেশ্যে যে ইতিপূর্বে আল্লাহ ও তার রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল। তারা অবশই কসম খেয়ে বলবে, ভালো ছাড়া আর কোন ইচ্ছাই আমাদের ছিল না। কিন্তু আল্লাহ সাক্ষী, তারা একেবারেই মিথ্যেবাদী।
(9:108)
لَا تَقُمْ فِیْهِ اَبَدًا١ؕ لَمَسْجِدٌ اُسِّسَ عَلَى التَّقْوٰى مِنْ اَوَّلِ یَوْمٍ اَحَقُّ اَنْ تَقُوْمَ فِیْهِ١ؕ فِیْهِ رِجَالٌ یُّحِبُّوْنَ اَنْ یَّتَطَهَّرُوْا١ؕ وَ اللّٰهُ یُحِبُّ الْمُطَّهِّرِیْنَ
অনুবাদ: তুমি কখনো সেই ঘরে দাঁড়াবে না। যে মসজিদে প্রথম দিন থেকে তাকওয়ার ভিত্তেতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল সেই মসজিদটি দাঁড়ানোরই (ইবাদতের জন্য) তোমার পক্ষে অধিকতর সমীচীন। সেখানে এমন লোক আছে যারা পাক-পবিত্র থাকা পছন্দ করে এবং আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে ভালবাসেন।
(9:109)
اَفَمَنْ اَسَّسَ بُنْیَانَهٗ عَلٰى تَقْوٰى مِنَ اللّٰهِ وَ رِضْوَانٍ خَیْرٌ اَمْ مَّنْ اَسَّسَ بُنْیَانَهٗ عَلٰى شَفَا جُرُفٍ هَارٍ فَانْهَارَ بِهٖ فِیْ نَارِ جَهَنَّمَ١ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ
অনুবাদ: তাহলে তুমি কি মনে করো, যে ব্যক্তি আল্লাহ ভীতি ও তার সন্তুষ্টি অর্জনের উপর নিজের ইমারতের ভিত্তি স্থাপন করলো সে ভাল, না যে ব্যক্তি তার ইমারতের ভিত উঠালো একটি পতাকার স্থিতিহীন ফাঁপা প্রান্তের ওপর এবং তা তাকে নিয়ে সোজা জাহান্নামের আগুনে গিয়ে পড়লো? এ ধরনের জালেমদের কে আল্লাহ কখনো সোজা পথ দেখান না।
(9:110)
لَا یَزَالُ بُنْیَانُهُمُ الَّذِیْ بَنَوْا رِیْبَةً فِیْ قُلُوْبِهِمْ اِلَّاۤ اَنْ تَقَطَّعَ قُلُوْبُهُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ۠
অনুবাদ: তারা এই যে ইমারত নির্মাণ করেছে এটা সবসময় তাদের মনে সন্দেহের কারণ হয়ে থাকবে (যার বের হয়ে যাওয়ার আর কোন উপায়ই এখন নেই) যে পর্যন্ত না তাদের অন্তর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আল্লাহ অত্যন্তসচেতন, জ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ।
(9:111)
اِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰى مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اَنْفُسَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ بِاَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ١ؕ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ فَیَقْتُلُوْنَ وَ یُقْتَلُوْنَ١۫ وَعْدًا عَلَیْهِ حَقًّا فِی التَّوْرٰىةِ وَ الْاِنْجِیْلِ وَ الْقُرْاٰنِ١ؕ وَ مَنْ اَوْفٰى بِعَهْدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَیْعِكُمُ الَّذِیْ بَایَعْتُمْ بِهٖ١ؕ وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
অনুবাদ: প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে। তাদের প্রতি তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে(জান্নাতের ওয়াদা) আল্লাহর জিম্মায় একটি পাকাপোক্ত ওয়াদা বিশেষ। আর আল্লাহর চাইতে বেশী নিজের ওয়াদা পূরণকারী আর কে আছে? কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে যে কেনা-বেচা করছো সেজন্য আনন্দ করো। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।
(9:112)
اَلتَّآئِبُوْنَ الْعٰبِدُوْنَ الْحٰمِدُوْنَ السَّآئِحُوْنَ الرّٰكِعُوْنَ السّٰجِدُوْنَ الْاٰمِرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ النَّاهُوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَ الْحٰفِظُوْنَ لِحُدُوْدِ اللّٰهِ١ؕ وَ بَشِّرِ الْمُؤْمِنِیْنَ
অনুবাদ: আল্লাহর দিকে বারবার প্রত্যাগমনকারী তার ইবাদতকারী, তার প্রশংসা বানী উচ্চারণকারী, তার জন্য যমীনে বিচরণকারী তার সামনে রুকূ ও সিজদাকারী, সৎকাজের আদেশকারী, অসৎকাজ থেকে বিরতকারী এবং আল্লাহর সীমারেখা সংরক্ষণকারী (সেই সব মুমিন হয়ে থাকে যারা আল্লাহর সাথে কেনাবেচার সওদা করে) আর হে নবী! এ মুমিনদেরকে সুখবর দাও!
(9:113)
مَا كَانَ لِلنَّبِیِّ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْ یَّسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِیْنَ وَ لَوْ كَانُوْۤا اُولِیْ قُرْبٰى مِنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمْ اَنَّهُمْ اَصْحٰبُ الْجَحِیْمِ
অনুবাদ: নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের পক্ষে মুশরিকদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা, সঙ্গত নয়, তারা তাদের আত্মীয়-স্বজন হলেই বা কি এসে যায়, যখন একথা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামেরই উপযুক্ত।
(9:114)
وَ مَا كَانَ اسْتِغْفَارُ اِبْرٰهِیْمَ لِاَبِیْهِ اِلَّا عَنْ مَّوْعِدَةٍ وَّعَدَهَاۤ اِیَّاهُ١ۚ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَهٗۤ اَنَّهٗ عَدُوٌّ لِّلّٰهِ تَبَرَّاَ مِنْهُ١ؕ اِنَّ اِبْرٰهِیْمَ لَاَوَّاهٌ حَلِیْمٌ
অনুবাদ: ইবরাহীম তার বাপের জন্য যে মাগফিরাতের দোয়া করেছিল তা তো সেই ওয়াদার কারণে ছিল যা সে তার বাপের সাথে করেছিল্ কিন্তু যখন তার কাছে একথা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, তার বাপ আল্লাহর দুশমন তখন সে তার প্রতি বিমুখ হয়ে গেছে। যথার্থই ইবরাহীম কোমল হৃদয়, আল্লাহ ভীরু ও ধৈর্যশীল ছিল।
(9:115)
وَ مَا كَانَ اللّٰهُ لِیُضِلَّ قَوْمًۢا بَعْدَ اِذْ هَدٰىهُمْ حَتّٰى یُبَیِّنَ لَهُمْ مَّا یَتَّقُوْنَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ
অনুবাদ: লোকদেরকে হেদায়াত দান করার পর আবার গোমরাহীতে লিপ্ত করা আল্লাহর রীতি নয়, যতক্ষণ না তিনি তাদেরকে কোন জিনিস থেকে সংযত হয়ে চলতে হবে তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন। আসলে আল্লাহ প্রত্যেকটি জিনিসের জ্ঞান রাখেন।
(9:116)
اِنَّ اللّٰهَ لَهٗ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ یُحْیٖ وَ یُمِیْتُ١ؕ وَ مَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ مِنْ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیْرٍ
অনুবাদ: আর এও সত্য, আসমান ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন, জীবন ও মৃত্যু তাঁরই ইখতিয়ার ভুক্ত এবং তোমাদের এমন কোন সহায় ও সাহায্যকারী নেই যে তোমাদেরকে তাঁর হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
(9:117)
لَقَدْ تَّابَ اللّٰهُ عَلَى النَّبِیِّ وَ الْمُهٰجِرِیْنَ وَ الْاَنْصَارِ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْهُ فِیْ سَاعَةِ الْعُسْرَةِ مِنْۢ بَعْدِ مَا كَادَ یَزِیْغُ قُلُوْبُ فَرِیْقٍ مِّنْهُمْ ثُمَّ تَابَ عَلَیْهِمْ١ؕ اِنَّهٗ بِهِمْ رَءُوْفٌ رَّحِیْمٌۙ
অনুবাদ: আল্লাহ নবীকে মাফ করে দিয়েছেন এবং অত্যন্ত কঠিন সময়ে যে মুহাজির ও আনসারগণ নবীর সাথে সহযোগিতা করেন তাদেরকেও মাফ করে দিয়েছেন। যদিও তাদের মধ্য থেকে কিছু লোকের দিল বক্রতার দিকে আকৃষ্ট হতে যাচ্ছিল (কিন্তু তারা এ বক্রতার অনুগামী না হয়ে নবীর সহযোগী হয়েছেন। ফলে) আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দিয়েছেন। নিঃসন্দেহে এলোকদের প্রতি তিনি স্নেহশীল ও মেহেরবান।
(9:118)
وَّ عَلَى الثَّلٰثَةِ الَّذِیْنَ خُلِّفُوْا١ؕ حَتّٰۤى اِذَا ضَاقَتْ عَلَیْهِمُ الْاَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَ ضَاقَتْ عَلَیْهِمْ اَنْفُسُهُمْ وَ ظَنُّوْۤا اَنْ لَّا مَلْجَاَ مِنَ اللّٰهِ اِلَّاۤ اِلَیْهِ١ؕ ثُمَّ تَابَ عَلَیْهِمْ لِیَتُوْبُوْا١ؕ اِنَّ اللّٰهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ۠
অনুবাদ: আর যে তিনজনের ব্যাপার মুলতবী করে দেয়া হয়েছিল তাদেরকেও তিনি মাফ করে দিয়েছেন পৃথিবী তার সমগ্র ব্যাপকতা সত্ত্বেও যখন তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে গেলো, তাদের নিজেদের প্রাণও তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ালো এবং তারা জেনে নিল যে, আল্লাহর হাত থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিজের রহমতের আশ্রয় ছাড়া আর কোন আশ্রয়স্থল নেই তখন আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের দিকে ফিরলেন যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে। অবশ্যই আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
(9:119)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ كُوْنُوْا مَعَ الصّٰدِقِیْنَ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সহযোগি হও।
(9:120)
مَا كَانَ لِاَهْلِ الْمَدِیْنَةِ وَ مَنْ حَوْلَهُمْ مِّنَ الْاَعْرَابِ اَنْ یَّتَخَلَّفُوْا عَنْ رَّسُوْلِ اللّٰهِ وَ لَا یَرْغَبُوْا بِاَنْفُسِهِمْ عَنْ نَّفْسِهٖ١ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ لَا یُصِیْبُهُمْ ظَمَاٌ وَّ لَا نَصَبٌ وَّ لَا مَخْمَصَةٌ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ لَا یَطَئُوْنَ مَوْطِئًا یَّغِیْظُ الْكُفَّارَ وَ لَا یَنَالُوْنَ مِنْ عَدُوٍّ نَّیْلًا اِلَّا كُتِبَ لَهُمْ بِهٖ عَمَلٌ صَالِحٌ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُضِیْعُ اَجْرَ الْمُحْسِنِیْنَۙ
অনুবাদ: মদীনাবাসী ও তাদের আশপাশে বেদুইনদের জন্য আল্লাহর রসূলকে ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকা এবং তার ব্যাপারে বেপরোয়া হয়ে নিজেদের জীবনের চিন্তায় মশগুল হয়ে যাওয়া কোন ক্রমেই সমীচীন ছিল না। কারণ আল্লাহর পথে তারা যখনই ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও শারীরিক কষ্ট ভোগ করবে, যখনই এমন পথ অবলম্বন করবে যা সত্য অমান্য কারীদের কাছে অসহনীয় এবং যখনই কোন দুশমনের ওপর (সত্যের প্রতি দুশমনির) প্রতিশোধ নেবে তৎক্ষনাৎ তার বদলে তাদের জন্য একটি সৎকাজ লেখা হবেই। এর ব্যতিক্রম কখনো হবে না। অবশ্যই আল্লাহর দরবারে সৎ কর্মশীলদের পরিশ্রম বিফল যায় না।
(9:121)
وَ لَا یُنْفِقُوْنَ نَفَقَةً صَغِیْرَةً وَّ لَا كَبِیْرَةً وَّ لَا یَقْطَعُوْنَ وَادِیًا اِلَّا كُتِبَ لَهُمْ لِیَجْزِیَهُمُ اللّٰهُ اَحْسَنَ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: অনুরূপভাবে তারা যখনই (আল্লাহর পথে) কম বা বেশী কিছু সম্পদ ব্যয় করবে এবং (সংগ্রাম সাধনায়) যখনই কোন উপত্যকা অতিক্রম করবে, অমনি তা তাদের নামে লেখা হয়ে যাবে, যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের এ ভাল কাজের পুরস্কার দান করেন।
(9:122)
وَ مَا كَانَ الْمُؤْمِنُوْنَ لِیَنْفِرُوْا كَآفَّةً١ؕ فَلَوْ لَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآئِفَةٌ لِّیَتَفَقَّهُوْا فِی الدِّیْنِ وَ لِیُنْذِرُوْا قَوْمَهُمْ اِذَا رَجَعُوْۤا اِلَیْهِمْ لَعَلَّهُمْ یَحْذَرُوْنَ۠
অনুবাদ: আর মুমিনদের সবার এক সাথে বের হয়ে পড়ার কোন দরকার ছিল না। কিন্তু তাদের জনবসতির প্রত্যেক অংশের কিছু লোক বেরিয়ে এলে ভাল হতো। তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করতো এবং ফিরে গিয়ে নিজের এলাকার লোকদের কে সতর্ক করতো, যাতে তারা (অমুসলমানী আচরণ থেকে) বিরত থাকতো, এমনটি হলো না কেন?
(9:123)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قَاتِلُوا الَّذِیْنَ یَلُوْنَكُمْ مِّنَ الْكُفَّارِ وَ لْیَجِدُوْا فِیْكُمْ غِلْظَةً١ؕ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِیْنَ
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! সত্য অস্বীকারকারীদের মধ্যে যারা তোমাদের নিকটবর্তী তাদের সাথে যুদ্ধ করো। তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রাখো আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
(9:124)
وَ اِذَا مَاۤ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْهُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ اَیُّكُمْ زَادَتْهُ هٰذِهٖۤ اِیْمَانًا١ۚ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْهُمْ اِیْمَانًا وَّ هُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَ
অনুবাদ: যখন কোন নতুন সূরা নাযিল হয় তখন তাদের কেউ কেউ (ঠাট্টা করে মুসলমানদের) জিজ্ঞেস করে, বলো, এর ফলে তোমাদের কার ঈমান বেড়ে গেছে? (এর জবাব হচ্ছে) যারা ঈমান এনেছে (প্রত্যেকটি অবতীর্ণ সুরা) যথার্থই ঈমান বাড়িয়েই দিয়েছে এবং তারা এর ফলে আনন্দিত।
(9:125)
وَ اَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْهُمْ رِجْسًا اِلٰى رِجْسِهِمْ وَ مَاتُوْا وَ هُمْ كٰفِرُوْنَ
অনুবাদ: তবে যাদের অন্তরে (মুনাফিকী) রোগ বাসা বেঁধেছিল তাদের পূর্ব কলুষতার ওপর (প্রত্যেকটি নতুন সূরা) আরো একটি কলুষতা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং তারা মৃত্যু পর্যন্ত কুফরীতে লিপ্ত রয়েছে।
(9:126)
اَوَ لَا یَرَوْنَ اَنَّهُمْ یُفْتَنُوْنَ فِیْ كُلِّ عَامٍ مَّرَّةً اَوْ مَرَّتَیْنِ ثُمَّ لَا یَتُوْبُوْنَ وَ لَا هُمْ یَذَّكَّرُوْنَ
অনুবাদ: এরা কি দেখে না, প্রতি বছর এদেরকে দুএকটি পরীক্ষার মুখোমুখি করা হয়? কিন্তু এরপরও এরা তাওবাও করে না কোন শিক্ষাও গ্রহণ করে না।
(9:127)
وَ اِذَا مَاۤ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ نَّظَرَ بَعْضُهُمْ اِلٰى بَعْضٍ١ؕ هَلْ یَرٰىكُمْ مِّنْ اَحَدٍ ثُمَّ انْصَرَفُوْا١ؕ صَرَفَ اللّٰهُ قُلُوْبَهُمْ بِاَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا یَفْقَهُوْنَ
অনুবাদ: যখন কোন সূরা নাযিল হয়, এরা চোখের ইশারায় একে অন্যকে জিজ্ঞেস করে, তোমাদের কেউ দেখতে পায়নি তো? তারপর চুপে চুপে সরে পড়ে। আল্লাহ তাদের মন বিমুখ করে দিয়েছেন কারণ তারা এমন একদল লোক যাদের বোধশক্তি নেই।
(9:128)
لَقَدْ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ اَنْفُسِكُمْ عَزِیْزٌ عَلَیْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِیْصٌ عَلَیْكُمْ بِالْمُؤْمِنِیْنَ رَءُوْفٌ رَّحِیْمٌ
অনুবাদ: দেখো, তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকে একজন রসূল। তোমাদের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের কল্যাণকামী। মুমিনদের প্রতি সে স্নেহশীল ও করুণাসিক্ত।
(9:129)
فَاِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِیَ اللّٰهُ١ۖۗ٘ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ١ؕ عَلَیْهِ تَوَكَّلْتُ وَ هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِیْمِ۠
অনুবাদ: - এখন যদি তারা তোমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে হে নবী! তাদেরকে বলে দাও, “আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট তিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। আমি তার ওপরই ভরসা করেছি এবং তিনি মহা আরশের অধিপতি।”