২৩ জুন ২০২০

হতাশায় নবীদের জীবন থেকে শিক্ষাঃ





জীবন ফুলশয্যাময় নয়। সুন্দর এ পৃথিবীতে কেউ চিরসুখী নয়। কারণ দুনিয়া প্রকৃত সুখ ও ভোগের জায়গা নয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি মানুষকে কষ্টনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা আল-বালাদ, আয়াত : ৪)
 

কারো আনন্দ-শোক বা হাসি-কান্না তার আয়ত্তাধীন নয়। এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। তিনিই কারণ সৃষ্টি করেন এবং কারণাদিকে ক্রিয়াশক্তি দান করেন। তিনি ইচ্ছা করলে মুহূর্তের মধ্যে ক্রন্দনকারীর মুখে হাসি ফোটাতে পারেন এবং হাস্যরতদের কাঁদিয়ে দিতে পারেন। জীবনের ভাঙা-গড়ার এ দর্শন যে উপলব্ধি করতে পারে, সাময়িক আনন্দকে সে চূড়ান্ত জ্ঞান করে না। সুখ ও ভোগে গা ভাসিয়ে দেয় না। আবার দুঃখের দিনে আশাহত হয় না। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না। আসুন, নবীদের জীবনের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নিই।

১.   আপনি অবরুদ্ধ, ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। মন ভীষণ খারাপ? কত দিন ধরে? তিন মাস? চার মাস? এক বছর? আপনি কি জানেন আমাদের প্রিয় নবী (সা.) তিন বছর পর্যন্ত শুআবে আবু তালেবে কাফিরদের দ্বারা অবরুদ্ধ-বেষ্টিত ছিলেন। একসময় খাদ্যের সংকট দেখা দেয়। এমনও হয়েছে, তিনি ক্ষুধার তাড়নায় গাছের পাতা খেয়েছেন। আপনার দুঃখ-কষ্ট কি এর চেয়েও বেশি?

২.   যখন রক্তসম্পর্কীয় কেউ আপনার সঙ্গে প্রতারণা করে, ভেঙে পড়বেন না। মনে রাখবেন, ইউসুফ (আ.) নিজ ভাইদের দ্বারা প্রতারিত ও গভীর কূপে নিক্ষিপ্ত হয়েও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

৩.   মাতা-পিতা থেকে কষ্ট পেলে মন খারাপ করবেন না। ইবরাহিম (আ.) নিজ পিতার দ্বারাই আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন।

৪.   ঘোর বিপদে চারদিকে অন্ধকার দেখলেও হতাশ হবেন না। ইউনুস (আ.) সাগরে মাছের পেটের অন্ধকার প্রকোষ্ট থেকেও উদ্ধার হয়েছিলেন।

৫.   আপনার বিরুদ্ধে অপবাদ ও গুজব রটলে ভেঙে পড়বেন না। আয়েশা (রা.)-এর বিরুদ্ধেও অপবাদ আরোপ করা হয়েছিল। আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করেছেন।
৬.   তীব্র অসুস্থতায় হতাশ হবেন না। আইয়ুব (আ.) আপনার চেয়ে হাজার গুণ বেশি অসুস্থ ছিলেন। পরে তিনি সুস্থ হয়েছেন।
৭.   যখন আপনি নির্জন ও একাকিত্বে ভোগেন, ভেঙে পড়বেন না। আদম (আ.)-কে, প্রথমে একাকী সঙ্গীবিহীন সৃষ্টি করা হয়েছিল। অথচ তিনিই এ পৃথিবীকে আবাদ করেছেন।
৮.   পরিবার ও সন্তানকে সৎপথে আনার সব চেষ্টা ব্যর্থ হলেও হতাশ হবেন না। চেষ্টা চালিয়ে যান। নুহ (আ.) সাড়ে নয় শ বছর দাওয়াত দিয়ে মাত্র ৮০ জনকে হেদায়েতের পথে আনতে পেরেছিলেন। কিন্তু তিনি তো আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাবেন।
৯.   মানুষ আপনাকে নিয়ে বিদ্রুপ করলে mভেঙে পড়বেন না। আমাদের নবীসহ যুগে যুগে সব নবীকে নিয়ে অজ্ঞ ও অবিশ্বাসীরা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছিল, কিন্তু পরিশেষে নবীরাই সফল হয়েছেন।
১০.  একের পর এক বিপদে হতাশ হবেন না। আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের বেশি বেশি পরীক্ষায় ফেলেন। নবী-রাসুলদের তিনি সর্বাধিক পরীক্ষা করেছেন। পরিশেষে তাঁদের উদ্ধার করেছিলেন।
কাজেই আসুন, আমরা আল্লাহমুখী হই, সব দুঃখ মুছে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
  Source: Kalerkantha



বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

Islamic world

  Islamic World

জনপ্রিয় লেখা সমূহ