২৯-আনকাবুত
(29:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
(29:1)
الٓمّٓۚ
অনুবাদ: আলিফ- লাম- মীম।
(29:2)
اَحَسِبَ النَّاسُ اَنْ یُّتْرَكُوْۤا اَنْ یَّقُوْلُوْۤا اٰمَنَّا وَ هُمْ لَا یُفْتَنُوْنَ
অনুবাদ: লোকেরা কি মনে করে রেখেছে, “আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না?
(29:3)
وَ لَقَدْ فَتَنَّا الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَلَیَعْلَمَنَّ اللّٰهُ الَّذِیْنَ صَدَقُوْا وَ لَیَعْلَمَنَّ الْكٰذِبِیْنَ
অনুবাদ: অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি, আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক।
(29:4)
اَمْ حَسِبَ الَّذِیْنَ یَعْمَلُوْنَ السَّیِّاٰتِ اَنْ یَّسْبِقُوْنَا١ؕ سَآءَ مَا یَحْكُمُوْنَ
অনুবাদ: আর যারা খারাপ কাজ করছে তারা কি মনে করে বসেছে তারা আমার থেকে এগিয়ে চলে যাবে? বড়ই ভুল সিদ্ধান্ত তারা করছে।
(29:5)
مَنْ كَانَ یَرْجُوْا لِقَآءَ اللّٰهِ فَاِنَّ اَجَلَ اللّٰهِ لَاٰتٍ١ؕ وَ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ
অনুবাদ: যে কেউ আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করার আশা করে (তার জানা উচিত) , আল্লাহর নির্ধারিত সময় আসবেই। আর আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।
(29:6)
وَ مَنْ جَاهَدَ فَاِنَّمَا یُجَاهِدُ لِنَفْسِهٖ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَغَنِیٌّ عَنِ الْعٰلَمِیْنَ
অনুবাদ: যে ব্যক্তিই প্রচেষ্টা- সংগ্রাম করবে সে নিজের ভালোর জন্যই করবে। আল্লাহ অবশ্যই বিশ্ববাসীদের প্রতি মুখাপেক্ষিতাহীন।
(29:7)
وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَیِّاٰتِهِمْ وَ لَنَجْزِیَنَّهُمْ اَحْسَنَ الَّذِیْ كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: আর যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদের দুষ্কৃতিগুলো আমি তাদের থেকে দূর করে দেবো এবং তাদেরকে তাদের সর্বোত্তম কাজগুলোর প্রতিদান দেবো।
(29:8)
وَ وَصَّیْنَا الْاِنْسَانَ بِوَالِدَیْهِ حُسْنًا١ؕ وَ اِنْ جَاهَدٰكَ لِتُشْرِكَ بِیْ مَا لَیْسَ لَكَ بِهٖ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا١ؕ اِلَیَّ مَرْجِعُكُمْ فَاُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: আমি মানুষকে নিজের পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু যদি তারা তোমার ওপর চাপ দেয় যে, তুমি এমন কোন (মা’বুদকে) আমার সাথে শরীক করো যাকে তুমি (আমার শরীক হিসেবে) জানো না, তাহলে তাদের আনুগত্য করো না। আমার দিকেই তোমাদের সবাইকে ফিরে আসতে হবে, তখন আমি তোমাদের জানাবো তোমরা কি করছিলে।
(29:9)
وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُدْخِلَنَّهُمْ فِی الصّٰلِحِیْنَ
অনুবাদ: আর যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করে থাকবে তাদেরকে আমি নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করবো।
(29:10)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ فَاِذَاۤ اُوْذِیَ فِی اللّٰهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللّٰهِ١ؕ وَ لَئِنْ جَآءَ نَصْرٌ مِّنْ رَّبِّكَ لَیَقُوْلُنَّ اِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ١ؕ اَوَ لَیْسَ اللّٰهُ بِاَعْلَمَ بِمَا فِیْ صُدُوْرِ الْعٰلَمِیْنَ
অনুবাদ: লোকদের মধ্যে এমন কেউ আছে যে বলে, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি কিন্তু যখন সে আল্লাহর ব্যাপারে নিগৃহীত হয়েছে তখন লোকদের চাপিয়ে দেয়া পরীক্ষাকে আল্লাহর আযাবের মতো মনে করে নিয়েছে। এখন যদি তোমার রবের পক্ষ থেকে বিজয় ও সাহায্য এসে যায়, তাহলে এ ব্যক্তিই বলবে, “আমরা তো তোমাদের সাথে ছিলাম।” বিশ্ববাসীদের মনের অবস্থা কি আল্লাহ ভালোভাবে জানেন না?
(29:11)
وَ لَیَعْلَمَنَّ اللّٰهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ لَیَعْلَمَنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ
অনুবাদ: আর আল্লাহ তো অবশ্যই দেখবেন কারা ঈমান এনেছে এবং কারা মুনাফিক।
(29:12)
وَ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّبِعُوْا سَبِیْلَنَا وَ لْنَحْمِلْ خَطٰیٰكُمْ١ؕ وَ مَا هُمْ بِحٰمِلِیْنَ مِنْ خَطٰیٰهُمْ مِّنْ شَیْءٍ١ؕ اِنَّهُمْ لَكٰذِبُوْنَ
অনুবাদ: এ কাফেররা মু’মিনদেরকে বলে, তোমরা আমাদের পথ অনুসরণ করো এবং আমরা তোমাদের গুনাহখাতাগুলো নিজেদের ওপর চাপিয়ে নেবো, অথচ তাদের গুনাহখাতার কিছুই তারা নিজের ওপর চাপিয়ে নেবে না, তারা ডাহা মিথ্যা বলছে।
(29:13)
وَ لَیَحْمِلُنَّ اَثْقَالَهُمْ وَ اَثْقَالًا مَّعَ اَثْقَالِهِمْ١٘ وَ لَیُسْئَلُنَّ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ عَمَّا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ۠
অনুবাদ: হ্যাঁ নিশ্চয়ই তারা নিজেদের বোঝাও বইবে এবং নিজেদের বোঝার সাথে অন্য অনেক বোঝাও। আর তারা যে মিথ্যাচার চালিয়ে এসেছে কিয়ামতের দিন নিশ্চয়ই তাদেরকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
(29:14)
وَ لَقَدْ اَرْسَلْنَا نُوْحًا اِلٰى قَوْمِهٖ فَلَبِثَ فِیْهِمْ اَلْفَ سَنَةٍ اِلَّا خَمْسِیْنَ عَامًا١ؕ فَاَخَذَهُمُ الطُّوْفَانُ وَ هُمْ ظٰلِمُوْنَ
অনুবাদ: আমি নূহকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই এবং সে তাদের মধ্যে থাকে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর। শেষ পর্যন্ত তুফান তাদেরকে ঘিরে ফেলে এমন অবস্থায় যখন তারা জালেম ছিল।
(29:15)
فَاَنْجَیْنٰهُ وَ اَصْحٰبَ السَّفِیْنَةِ وَ جَعَلْنٰهَاۤ اٰیَةً لِّلْعٰلَمِیْنَ
অনুবাদ: তারপর আমি নূহকে ও নৌকা আরোহীদেরকে রক্ষা করি এবং একে বিশ্ববাসীর জন্য একটি শিক্ষণীয় নিদর্শন করে রাখি।
(29:16)
وَ اِبْرٰهِیْمَ اِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ اعْبُدُوا اللّٰهَ وَ اتَّقُوْهُ١ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: আর ইবরাহীমকে পাঠাই যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলে, “আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাঁকে ভয় করো। এটা তোমাদের জন্য ভালো যদি তোমরা জানো।
(29:17)
اِنَّمَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اَوْثَانًا وَّ تَخْلُقُوْنَ اِفْكًا١ؕ اِنَّ الَّذِیْنَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ لَا یَمْلِكُوْنَ لَكُمْ رِزْقًا فَابْتَغُوْا عِنْدَ اللّٰهِ الرِّزْقَ وَ اعْبُدُوْهُ وَ اشْكُرُوْا لَهٗ١ؕ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ
অনুবাদ: তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে পূজা করছো তারা তো নিছক মূর্তি আর তোমরা একটি মিথ্যা তৈরি করছো। আসলে আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তোমরা পূজা করো তারা তোমাদের কোন রিযিকও দেবার ক্ষমতা রাখে না, আল্লাহর কাছে রিযিক চাও, তাঁরই বন্দেগী করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তারই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে।
(29:18)
وَ اِنْ تُكَذِّبُوْا فَقَدْ كَذَّبَ اُمَمٌ مِّنْ قَبْلِكُمْ١ؕ وَ مَا عَلَى الرَّسُوْلِ اِلَّا الْبَلٰغُ الْمُبِیْنُ
অনুবাদ: আর যদি তোমরা মিথ্যা আরোপ করো, তাহলে পূর্বে বহু জাতি মিথ্যা আরোপ করেছে এবং রাসূলের ওপর পরিষ্কারভাবে পয়গাম পৌঁছিয়ে দেয়া ছাড়া আর কোন দায়িত্ব নেই।”
(29:19)
اَوَ لَمْ یَرَوْا كَیْفَ یُبْدِئُ اللّٰهُ الْخَلْقَ ثُمَّ یُعِیْدُهٗ١ؕ اِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللّٰهِ یَسِیْرٌ
অনুবাদ: এরা কি কখনো লক্ষ্য করেনি আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর তার পুনরাবৃত্তি করেন? নিশ্চয়ই এ (পুনরাবৃত্তি) আল্লাহর জন্য সহজতর।
(29:20)
قُلْ سِیْرُوْا فِی الْاَرْضِ فَانْظُرُوْا كَیْفَ بَدَاَ الْخَلْقَ ثُمَّ اللّٰهُ یُنْشِئُ النَّشْاَةَ الْاٰخِرَةَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌۚ
অনুবাদ: এদেরকে বলো, পৃথিবীর বুকে চলাফেরা করো এবং দেখো তিনি কিভাবে সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর আল্লাহ দ্বিতীয়বারও জীবন দান করবেন। অবশ্যই আল্লাহ সব জিনিসের ওপর শক্তিশালী।
(29:21)
یُعَذِّبُ مَنْ یَّشَآءُ وَ یَرْحَمُ مَنْ یَّشَآءُ١ۚ وَ اِلَیْهِ تُقْلَبُوْنَ
অনুবাদ: যাকে চান শাস্তি দেন এবং যার প্রতি চান করুণা বর্ষণ করেন, তাঁরই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে।
(29:22)
وَ مَاۤ اَنْتُمْ بِمُعْجِزِیْنَ فِی الْاَرْضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ١٘ وَ مَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ مِنْ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیْرٍ۠
অনুবাদ: তোমরা না পৃথিবীতে অক্ষমকারী, না আকাশে এবং আল্লাহর হাত থেকে রক্ষা করার মতো কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী তোমাদের নেই।
(29:23)
وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ لِقَآئِهٖۤ اُولٰٓئِكَ یَئِسُوْا مِنْ رَّحْمَتِیْ وَ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ
অনুবাদ: যারা আল্লাহর আয়াত এবং তার সাথে সাক্ষাত অস্বীকার করে, তারা আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ে গেছে এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(29:24)
فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوا اقْتُلُوْهُ اَوْ حَرِّقُوْهُ فَاَنْجٰىهُ اللّٰهُ مِنَ النَّارِ١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوْمٍ یُّؤْمِنُوْنَ
অনুবাদ: তারপর সেই জাতির জবাব এছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, তারা বললো, “একে হত্যা করো অথবা পুড়িয়ে ফেলো।” শেষ পর্য্ন্ত আল্লাহ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করেন। অবশ্যই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে।
(29:25)
وَ قَالَ اِنَّمَا اتَّخَذْتُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ اَوْثَانًا١ۙ مَّوَدَّةَ بَیْنِكُمْ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۚ ثُمَّ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ یَكْفُرُ بَعْضُكُمْ بِبَعْضٍ وَّ یَلْعَنُ بَعْضُكُمْ بَعْضًا١٘ وَّ مَاْوٰىكُمُ النَّارُ وَ مَا لَكُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَۗۙ
অনুবাদ: আর সে বললো, “তোমরা দুনিয়ার জীবনের তো আল্লাহকে বাদ দিয়ে মূর্তিগুলোকে নিজেদের মধ্যে প্রীতি- ভালোবাসার মাধ্যমে পরিণত করে নিয়েছো। কিন্তু কিয়ামতের দিন তোমরা পরস্পরকে অস্বীকার এবং পরস্পরের প্রতি অভিসম্পাত করবে আর আগুন তোমাদের আবাস হবে এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী হবে না।”
(29:26)
فَاٰمَنَ لَهٗ لُوْطٌ١ۘ وَ قَالَ اِنِّیْ مُهَاجِرٌ اِلٰى رَبِّیْ١ؕ اِنَّهٗ هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ
অনুবাদ: সে সময় লূত তাকে মেনে নেয় এবং ইবরাহীমকে বলে, আমি আমার রবের দিকে হিজরত করছি, তিনি পরাক্রমশালীও জ্ঞানী।
(29:27)
وَ وَهَبْنَا لَهٗۤ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ وَ جَعَلْنَا فِیْ ذُرِّیَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَ الْكِتٰبَ وَ اٰتَیْنٰهُ اَجْرَهٗ فِی الدُّنْیَا١ۚ وَ اِنَّهٗ فِی الْاٰخِرَةِ لَمِنَ الصّٰلِحِیْنَ
অনুবাদ: আর আমি তাকে ইসহাক ও ইয়াকুব (এর মতো সন্তান) দান করি এবং তার বংশধরদের মধ্যে রেখে দিই নবুওয়াত ও কিতাব এবং তাকে দুনিয়ায় এর প্রতিদান দিই আর আখেরাতে সে নিশ্চিতভাবেই সৎকর্মশালীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(29:28)
وَ لُوْطًا اِذْ قَالَ لِقَوْمِهٖۤ اِنَّكُمْ لَتَاْتُوْنَ الْفَاحِشَةَ١٘ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ اَحَدٍ مِّنَ الْعٰلَمِیْنَ
অনুবাদ: আর আমি লূত কে পাঠাই যখন সে তার সম্প্রদায়কে বললো, “তোমরা তো এমন অশ্লীল কাজ করছো যা তোমাদের পূর্বে বিশ্ববাসীদের মধ্যে কেউ করেনি।
(29:29)
اَئِنَّكُمْ لَتَاْتُوْنَ الرِّجَالَ وَ تَقْطَعُوْنَ السَّبِیْلَ١ۙ۬ وَ تَاْتُوْنَ فِیْ نَادِیْكُمُ الْمُنْكَرَ١ؕ فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوا ائْتِنَا بِعَذَابِ اللّٰهِ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِیْنَ
অনুবাদ: তোমাদের অবস্থা কি এ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, তোমরা পুরুষদের কাছে যাচ্ছো, রাহাজানি করছো এবং নিজেদের মজলিসে খারাপ কাজ করছো? তারপর তার সম্প্রদায়ের কাছে এছাড়া আর কোন জবাব ছিল না যে, তারা বললো, “নিয়ে এসো আল্লাহর আযাব যদি তুমি সত্যবাদী হও।”
(29:30)
قَالَ رَبِّ انْصُرْنِیْ عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِیْنَ۠
অনুবাদ: লূত বললো, “হে আমার রব! এ বিপর্যয় সৃষ্টিকারী লোকদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করো।”
(29:31)
وَ لَمَّا جَآءَتْ رُسُلُنَاۤ اِبْرٰهِیْمَ بِالْبُشْرٰى١ۙ قَالُوْۤا اِنَّا مُهْلِكُوْۤا اَهْلِ هٰذِهِ الْقَرْیَةِ١ۚ اِنَّ اَهْلَهَا كَانُوْا ظٰلِمِیْنَۚۖ
অনুবাদ: আর যখন আমার প্রেরিতগণ ইবরাহীমের কাছে সুসংবাদ নিয়ে পৌঁছলো, তারা তাকে বললো, “আমরা এ জনপদের লোকদেরকে ধ্বংস করে দেবো, এর অধিবাসীরা বড়ই জালেম হয়ে গেছে।”
(29:32)
قَالَ اِنَّ فِیْهَا لُوْطًا١ؕ قَالُوْا نَحْنُ اَعْلَمُ بِمَنْ فِیْهَا١٘ٙ لَنُنَجِّیَنَّهٗ وَ اَهْلَهٗۤ اِلَّا امْرَاَتَهٗ١٘ۗ كَانَتْ مِنَ الْغٰبِرِیْنَ
অনুবাদ: ইবরাহীম বললো, “সেখানে তো লূত আছে।” তারা বললো, “আমরা ভালোভাবেই জানি সেখানে কে কে আছে, আমরা তাকে ও তার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবো তার স্ত্রীকে ছাড়া;” সে ছিল পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
(29:33)
وَ لَمَّاۤ اَنْ جَآءَتْ رُسُلُنَا لُوْطًا سِیْٓءَ بِهِمْ وَ ضَاقَ بِهِمْ ذَرْعًا وَّ قَالُوْا لَا تَخَفْ وَ لَا تَحْزَنْ١۫ اِنَّا مُنَجُّوْكَ وَ اَهْلَكَ اِلَّا امْرَاَتَكَ كَانَتْ مِنَ الْغٰبِرِیْنَ
অনুবাদ: তারপর যখন আমার প্রেরিতগণ লূতের কাছে পৌঁছলো তাদের আগমনে সে অত্যন্ত বিব্রত ও সংকুচিত হৃদয় হয়ে পড়লো। তারা বললো, “ভয় করো না এবং দুঃখও করো না। আমরা তোমাকে ও তোমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবো, তোমার স্ত্রীকে ছাড়া, সে পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
(29:34)
اِنَّا مُنْزِلُوْنَ عَلٰۤى اَهْلِ هٰذِهِ الْقَرْیَةِ رِجْزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا كَانُوْا یَفْسُقُوْنَ
অনুবাদ: আমরা এ জনপদের লোকদের ওপর আকাশ থেকে আযাব নাযিল করতে যাচ্ছি তারা যে পাপাচার করে আসছে তার কারণে।”
(29:35)
وَ لَقَدْ تَّرَكْنَا مِنْهَاۤ اٰیَةًۢ بَیِّنَةً لِّقَوْمٍ یَّعْقِلُوْنَ
অনুবাদ: আর আমি সে জনপদের একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছি তাদের জন্য যারা বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করে।
(29:36)
وَ اِلٰى مَدْیَنَ اَخَاهُمْ شُعَیْبًا١ۙ فَقَالَ یٰقَوْمِ اعْبُدُوا اللّٰهَ وَ ارْجُوا الْیَوْمَ الْاٰخِرَ وَ لَا تَعْثَوْا فِی الْاَرْضِ مُفْسِدِیْنَ
অনুবাদ: আর মাদইয়ানের দিকে আমি পাঠালাম তাদের ভাই শু’আইবকে। সে বললো, “হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! আল্লাহর বন্দেগী করো, শেষ দিনের প্রত্যাশী হও এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হয়ে বাড়াবাড়ি করে বেড়িও না।”
(29:37)
فَكَذَّبُوْهُ فَاَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَاَصْبَحُوْا فِیْ دَارِهِمْ جٰثِمِیْنَ٘
অনুবাদ: কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করলো। শেষে একটি প্রচণ্ড ভূমিকম্প তাদেরকে পাকড়াও করলো এবং তারা নিজেদের ঘরের মধ্যে মরে পড়ে থাকলো।
(29:38)
وَ عَادًا وَّ ثَمُوْدَاۡ وَ قَدْ تَّبَیَّنَ لَكُمْ مِّنْ مَّسٰكِنِهِمْ١۫ وَ زَیَّنَ لَهُمُ الشَّیْطٰنُ اَعْمَالَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ السَّبِیْلِ وَ كَانُوْا مُسْتَبْصِرِیْنَۙ
অনুবাদ: আর আদ ও সামূদ কে আমি ধ্বংস করেছি। তারা যেখানে থাকতো সেসব জায়গা তোমরা দেখেছো তাদের কার্যাবলীকে শয়তান তাদের জন্য সুদৃশ্য বানিয়ে দিল এবং তাদেরকে সোজা পথ থেকে বিচ্যুত করলো অথচ তারা ছিল বুদ্ধি সচেতন।
(29:39)
وَ قَارُوْنَ وَ فِرْعَوْنَ وَ هَامٰنَ١۫ وَ لَقَدْ جَآءَهُمْ مُّوْسٰى بِالْبَیِّنٰتِ فَاسْتَكْبَرُوْا فِی الْاَرْضِ وَ مَا كَانُوْا سٰبِقِیْنَۚۖ
অনুবাদ: আর কারূন, ফেরাঊন ও হামানকে আমি ধ্বংস করি। মূসা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে আসে কিন্তু তারা পৃথিবীতে অহংকার করে অথচ তারা অগ্রগমনকারী ছিল না।
(29:40)
فَكُلًّا اَخَذْنَا بِذَنْۢبِهٖ١ۚ فَمِنْهُمْ مَّنْ اَرْسَلْنَا عَلَیْهِ حَاصِبًا١ۚ وَ مِنْهُمْ مَّنْ اَخَذَتْهُ الصَّیْحَةُ١ۚ وَ مِنْهُمْ مَّنْ خَسَفْنَا بِهِ الْاَرْضَ١ۚ وَ مِنْهُمْ مَّنْ اَغْرَقْنَا١ۚ وَ مَا كَانَ اللّٰهُ لِیَظْلِمَهُمْ وَ لٰكِنْ كَانُوْۤا اَنْفُسَهُمْ یَظْلِمُوْنَ
অনুবাদ: শেষ পর্যন্ত প্রত্যেককে আমি তার গুনাহের জন্য পাকড়াও করি। তারপর তাদের মধ্য থেকে কারোর ওপর আমি পাথর বর্ষণকারী বাতাস প্রবাহিত করি এবং কাউকে একটি প্রচণ্ড বিষ্ফোরণ আঘাত হানে আবার কাউকে আমি ভূগর্ভে প্রোথিত করি এবং কাউকে ডুবিয়ে দিই। আল্লাহ তাদের প্রতি জুলুমকারী ছিলেন না কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করছিল।
(29:41)
مَثَلُ الَّذِیْنَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اَوْلِیَآءَ كَمَثَلِ الْعَنْكَبُوْتِ١ۚۖ اِتَّخَذَتْ بَیْتًا١ؕ وَ اِنَّ اَوْهَنَ الْبُیُوْتِ لَبَیْتُ الْعَنْكَبُوْتِ١ۘ لَوْ كَانُوْا یَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নিয়েছে তাদের দৃষ্টান্ত হলো মাকড়সা। সে নিজের একটি ঘর তৈরি করে এবং সব ঘরের চেয়ে বেশি দুর্বল হয় মাকড়সার ঘর। হায় যদি এরা জানতো!
(29:42)
اِنَّ اللّٰهَ یَعْلَمُ مَا یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖ مِنْ شَیْءٍ١ؕ وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ
অনুবাদ: এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যে জিনিসকেই ডাকে আল্লাহ তাকে খুব ভালোভাবেই জানেন এবং তিনিই পরাক্রান্ত ও জ্ঞানী।
(29:43)
وَ تِلْكَ الْاَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ١ۚ وَ مَا یَعْقِلُهَاۤ اِلَّا الْعٰلِمُوْنَ
অনুবাদ: মানুষকে উপদেশ দেবার জন্য আমি এ দৃষ্টান্তগুলো দিয়েছি কিন্তু এগুলো একমাত্র তারাই বুঝে যারা জ্ঞান সম্পন্ন।
(29:44)
خَلَقَ اللّٰهُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ بِالْحَقِّ١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً لِّلْمُؤْمِنِیْنَ۠
অনুবাদ: আল্লাহ আসমান ও যমীনকে সত্য-ভিত্তিতে সৃষ্টি করেছেন, প্রকৃতপক্ষে এর মধ্যে একটি নিদর্শন রয়েছে মু’মিনদের জন্য।
(29:45)
اُتْلُ مَاۤ اُوْحِیَ اِلَیْكَ مِنَ الْكِتٰبِ وَ اَقِمِ الصَّلٰوةَ١ؕ اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَآءِ وَ الْمُنْكَرِ١ؕ وَ لَذِكْرُ اللّٰهِ اَكْبَرُ١ؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ مَا تَصْنَعُوْنَ
অনুবাদ: (হে নবী!) তোমার প্রতি অহির মাধ্যমে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তা তেলাওয়াত করো এবং নামায কায়েম করো, নিশ্চিতভাবেই নামায অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণ এর চাইতেও বড় জিনিস। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কিছু করো।
(29:46)
وَ لَا تُجَادِلُوْۤا اَهْلَ الْكِتٰبِ اِلَّا بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ١ۖۗ اِلَّا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا مِنْهُمْ وَ قُوْلُوْۤا اٰمَنَّا بِالَّذِیْۤ اُنْزِلَ اِلَیْنَا وَ اُنْزِلَ اِلَیْكُمْ وَ اِلٰهُنَا وَ اِلٰهُكُمْ وَاحِدٌ وَّ نَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ
অনুবাদ: আর উত্তম পদ্ধতিতে ছাড়া আহলে কিতাবের সাথে বিতর্ক করো না, তবে তাদের মধ্যে যারা জালেম তাদেরকে বলো, “আমরা ঈমান এনেছি আমাদের প্রতি যা পাঠানো হয়েছে তার প্রতি এবং তোমাদের প্রতি যা পাঠানো হয়েছিল তার প্রতিও, আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ একজনই এবং আমরা তারই আদেশ পালনকারী।”
(29:47)
وَ كَذٰلِكَ اَنْزَلْنَاۤ اِلَیْكَ الْكِتٰبَ١ؕ فَالَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْكِتٰبَ یُؤْمِنُوْنَ بِهٖ١ۚ وَ مِنْ هٰۤؤُلَآءِ مَنْ یُّؤْمِنُ بِهٖ١ؕ وَ مَا یَجْحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا الْكٰفِرُوْنَ
অনুবাদ: (হে নবী) আমি এভাবেই তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, এ জন্য যাদেরকে আমি প্রথমে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে বিশ্বাস করে এবং এদের অনেকেও এতে বিশ্বাস করছে, আর আমার আয়াত একমাত্র কাফেররাই অস্বীকার করে।
(29:48)
وَ مَا كُنْتَ تَتْلُوْا مِنْ قَبْلِهٖ مِنْ كِتٰبٍ وَّ لَا تَخُطُّهٗ بِیَمِیْنِكَ اِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُوْنَ
অনুবাদ: (হে নবী) ইতিপূর্বে তুমি কোন কিতাব পড়তে না এবং স্বহস্তে লিখতেও না, যদি এমনটি হতো, তাহলে মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করতে পারতো।
(29:49)
بَلْ هُوَ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ فِیْ صُدُوْرِ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْعِلْمَ١ؕ وَ مَا یَجْحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا الظّٰلِمُوْنَ
অনুবাদ: আসলে এগুলো হচ্ছে উজ্জ্বল নিদর্শন এমন লোকদের মনের মধ্যে যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে এবং জালেমরা ছাড়া আর কেউ আমার আয়াত অস্বীকার করে না।
(29:50)
وَ قَالُوْا لَوْ لَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْهِ اٰیٰتٌ مِّنْ رَّبِّهٖ١ؕ قُلْ اِنَّمَا الْاٰیٰتُ عِنْدَ اللّٰهِ١ؕ وَ اِنَّمَاۤ اَنَا نَذِیْرٌ مُّبِیْنٌ
অনুবাদ: এরা বলে “কেনই বা এই ব্যক্তির ওপর নিদর্শনাবলী অবর্তীর্ণ করা হয়নি এর রবের পক্ষ থেকে?” বলো, “নিদর্শনাবলী তো রয়েছে আল্লাহর কাছে এবং আমি কেবলমাত্র পরিষ্কারভাবে সতর্ককারী।”
(29:51)
اَوَ لَمْ یَكْفِهِمْ اَنَّاۤ اَنْزَلْنَا عَلَیْكَ الْكِتٰبَ یُتْلٰى عَلَیْهِمْ١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَرَحْمَةً وَّ ذِكْرٰى لِقَوْمٍ یُّؤْمِنُوْنَ۠
অনুবাদ: আর এদের জন্য কি এ (নিদর্শন) যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদেরকে পড়ে শুনানো হয়? আসলে যারা ঈমান আনে তাদের জন্য এর মধ্যে রয়েছে রহমত ও নসিহত।
(29:52)
قُلْ كَفٰى بِاللّٰهِ بَیْنِیْ وَ بَیْنَكُمْ شَهِیْدًا١ۚ یَعْلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِالْبَاطِلِ وَ كَفَرُوْا بِاللّٰهِ١ۙ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ
অনুবাদ: (হে নবী!) বলো, “আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষ্যের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর মধ্যে সবকিছু জানেন। যারা বাতিলকে মানে ও আল্লাহকে অমান্য করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।”
(29:53)
وَ یَسْتَعْجِلُوْنَكَ بِالْعَذَابِ١ؕ وَ لَوْ لَاۤ اَجَلٌ مُّسَمًّى لَّجَآءَهُمُ الْعَذَابُ١ؕ وَ لَیَاْتِیَنَّهُمْ بَغْتَةً وَّ هُمْ لَا یَشْعُرُوْنَ
অনুবাদ: এরা তোমার কাছে দাবী করছে আযাব দ্রুত আনার জন্য। যদি একটি সময় নির্ধারিত না করে দেয়া হতো, তাহলে তাদের ওপর আযাব এসেই যেতো এবং নিশ্চিতভাবেই (ঠিক সময় মতো) তা অকস্মাৎ এমন অবস্থায় এসে যাবেই যখন তারা জানতেও পারবে না।
(29:54)
یَسْتَعْجِلُوْنَكَ بِالْعَذَابِ١ؕ وَ اِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِیْطَةٌۢ بِالْكٰفِرِیْنَۙ
অনুবাদ: এরা তোমার কাছে আযাব দ্রুত আনার দাবী করছে অথচ জাহান্নাম এ কাফেরদেরকে ঘেরাও করে নিয়েছে
(29:55)
یَوْمَ یَغْشٰىهُمُ الْعَذَابُ مِنْ فَوْقِهِمْ وَ مِنْ تَحْتِ اَرْجُلِهِمْ وَ یَقُوْلُ ذُوْقُوْا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: (এবং এরা জানতে পারবে) সেদিন যখন আযাব এদেরকে ওপর থেকে ঢেকে ফেলবে এবং পায়ের নীচে থেকেও আর বলবে, যেসব কাজ তোমরা করতে এবার তার মজা বোঝো।
(29:56)
یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّ اَرْضِیْ وَاسِعَةٌ فَاِیَّایَ فَاعْبُدُوْنِ
অনুবাদ: হে আমার বান্দারা, যারা ঈমান এনেছো! আমার যমীন প্রশস্ত, কাজেই তোমরা আমারই বন্দেগী করো।
(29:57)
كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِ١۫ ثُمَّ اِلَیْنَا تُرْجَعُوْنَ
অনুবাদ: প্রত্যেক জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ পেতে হবে। তারপর তোমাদের সবাইকে আমার দিকে ফিরিয়ে আনা হবে
(29:58)
وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُبَوِّئَنَّهُمْ مِّنَ الْجَنَّةِ غُرَفًا تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا١ؕ نِعْمَ اَجْرُ الْعٰمِلِیْنَۗۖ
অনুবাদ: যারা ঈমান এনেছে এবং যারা সৎকাজ করেছে তাদেরকে আমি জান্নাতের উঁচুও উন্নত ইমারতের মধ্যে রাখবো, যেগুলোর নিচে দিয়ে নদী বয়ে যেতে থাকবে। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। কতই না উত্তম প্রতিদান কর্মশীলদের জন্য
(29:59)
الَّذِیْنَ صَبَرُوْا وَ عَلٰى رَبِّهِمْ یَتَوَكَّلُوْنَ
অনুবাদ: -তাদের জন্য যারা সবর করেছে এবং যারা নিজেদের রবের প্রতি আস্থা রাখে।
(29:60)
وَ كَاَیِّنْ مِّنْ دَآبَّةٍ لَّا تَحْمِلُ رِزْقَهَا١ۗۖ اَللّٰهُ یَرْزُقُهَا وَ اِیَّاكُمْ١ۖ٘ وَ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ
অনুবাদ: কত জীব- জানোয়ার আছে যারা নিজেদের জীবিকা বহন করে না। আল্লাহই তাদেরকে জীবিকা দেন এবং তোমাদের জীবিকাদাতাও তিনিই, তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন।
(29:61)
وَ لَئِنْ سَاَلْتَهُمْ مَّنْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ وَ سَخَّرَ الشَّمْسَ وَ الْقَمَرَ لَیَقُوْلُنَّ اللّٰهُ١ۚ فَاَنّٰى یُؤْفَكُوْنَ
অনুবাদ: যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করো পৃথিবী ও আকাশসমূহ কে সৃষ্টি করেছেন এবং চন্দ্র ও সূর্যকে কে নিয়ন্ত্রিত করে রেখেছেন তাহলে অবশ্যই তারা বলবে আল্লাহ, এরপর এরা প্রতারিত হচ্ছে কোন দিক থেকে?
(29:62)
اَللّٰهُ یَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ وَ یَقْدِرُ لَهٗ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ
অনুবাদ: আল্লাহই তার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা রিযিক প্রসারিত করে দেন এবং যাকে ইচ্ছা সংকীর্ণ করে দেন। নিশ্চিতভাবে আল্লাহ সব জিনিস জানেন।
(29:63)
وَ لَئِنْ سَاَلْتَهُمْ مَّنْ نَّزَّلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَحْیَا بِهِ الْاَرْضَ مِنْۢ بَعْدِ مَوْتِهَا لَیَقُوْلُنَّ اللّٰهُ١ؕ قُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ١ؕ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ۠
অনুবাদ: আর যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, কে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন এবং তার সাহায্যে মৃত পতিত ভূমিকে সঞ্জীবিত করেছেন, তাহলে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। বলো, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য কিন্তু অধিকাংশ লোক বোঝে না।
(29:64)
وَ مَا هٰذِهِ الْحَیٰوةُ الدُّنْیَاۤ اِلَّا لَهْوٌ وَّ لَعِبٌ١ؕ وَ اِنَّ الدَّارَ الْاٰخِرَةَ لَهِیَ الْحَیَوَانُ١ۘ لَوْ كَانُوْا یَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: আর এ দুনিয়ার জীবন একটি খেলা ও মন ভুলানোর সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়। আসল জীবনের গৃহতো হচ্ছে পরকালীন গৃহ, হায়! যদি তারা জানতো।
(29:65)
فَاِذَا رَكِبُوْا فِی الْفُلْكِ دَعَوُا اللّٰهَ مُخْلِصِیْنَ لَهُ الدِّیْنَ١ۚ۬ فَلَمَّا نَجّٰىهُمْ اِلَى الْبَرِّ اِذَا هُمْ یُشْرِكُوْنَۙ
অনুবাদ: যখন তারা নৌযানে আরোহণ করে তখন নিজেদের দ্বীনকে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করে নিয়ে তার কাছে প্রার্থনা করে। তারপর যখন তিনি তাদেরকে উদ্ধার করে স্থলে ভিড়িয়ে দেন তখন সহসা তারা শিরক করতে থাকে,
(29:66)
لِیَكْفُرُوْا بِمَاۤ اٰتَیْنٰهُمْ١ۙۚ وَ لِیَتَمَتَّعُوْا١ٙ فَسَوْفَ یَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: যাতে আল্লাহ প্রদত্ত নাজাতের ওপর তার অনুগ্রহ অস্বীকার করতে এবং দুনিয়ার জীবনের মজা ভোগ করতে পারে। বেশ, শিগগীর তারা জেনে যাবে।
(29:67)
اَوَ لَمْ یَرَوْا اَنَّا جَعَلْنَا حَرَمًا اٰمِنًا وَّ یُتَخَطَّفُ النَّاسُ مِنْ حَوْلِهِمْ١ؕ اَفَبِالْبَاطِلِ یُؤْمِنُوْنَ وَ بِنِعْمَةِ اللّٰهِ یَكْفُرُوْنَ
অনুবাদ: তারা কি দেখে না, আমি একটি নিরাপদ হারম বানিয়ে দিয়েছি, অথচ তাদের আশেপাশে লোকদেরকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়? এরপরও কি তারা বাতিলকে মেনে নেবে এবং আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকার করবে?
(29:68)
وَ مَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا اَوْ كَذَّبَ بِالْحَقِّ لَمَّا جَآءَهٗ١ؕ اَلَیْسَ فِیْ جَهَنَّمَ مَثْوًى لِّلْكٰفِرِیْنَ
অনুবাদ: তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা সত্যকে মিথ্যা বলে, যখন তা তার সামনে এসে গেছে? জাহান্নামই কি এ ধরনের কাফেরদের আবাস নয়?
(29:69)
وَ الَّذِیْنَ جَاهَدُوْا فِیْنَا لَنَهْدِیَنَّهُمْ سُبُلَنَا١ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِیْنَ۠
অনুবাদ: যারা আমার জন্য সংগ্রাম- সাধনা করবে তাদেরকে আমি আমার পথ দেখাবো। আর অবশ্যই আল্লাহ সৎকর্মশালীদেরই সাথে আছেন।