২১-আম্বিয়া
(21:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
(21:1)
اِقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَ هُمْ فِیْ غَفْلَةٍ مُّعْرِضُوْنَۚ
অনুবাদ: মানুষের হিসেব-নিকেশের সময় কাছে এসে গেছে, অথচ সে গাফলতির মধ্যে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আছে।
(21:2)
مَا یَاْتِیْهِمْ مِّنْ ذِكْرٍ مِّنْ رَّبِّهِمْ مُّحْدَثٍ اِلَّا اسْتَمَعُوْهُ وَ هُمْ یَلْعَبُوْنَۙ
অনুবাদ: তাদের কাছে তাদের রবের পক্ষ থেকে যে উপদেশ আসে, তা তারা দ্বিধাগ্রস্তভাবে শোনে এবং খেলার মধ্যে ডুবে থাকে,
(21:3)
لَاهِیَةً قُلُوْبُهُمْ١ؕ وَ اَسَرُّوا النَّجْوَى١ۖۗ الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا١ۖۗ هَلْ هٰذَاۤ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ١ۚ اَفَتَاْتُوْنَ السِّحْرَ وَ اَنْتُمْ تُبْصِرُوْنَ
অনুবাদ: তাদের মন (অন্য চিন্তায়) আচ্ছন্ন। আর জালেমরা পরস্পরের মধ্যে কানাকানি করে যে, “এ ব্যক্তি মূলত তোমাদের মতোই একজন মানুষ ছাড়া আর কি, তাহলে কি তোমরা দেখে শুনে যাদুর ফাঁদে পড়বে?”
(21:4)
قٰلَ رَبِّیْ یَعْلَمُ الْقَوْلَ فِی السَّمَآءِ وَ الْاَرْضِ١٘ وَ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ
অনুবাদ: রসূল বললো, আমার রব এমন প্রত্যেকটি কথা জানেন যা আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে বলা হয়, তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন।
(21:5)
بَلْ قَالُوْۤا اَضْغَاثُ اَحْلَامٍۭ بَلِ افْتَرٰىهُ بَلْ هُوَ شَاعِرٌ١ۖۚ فَلْیَاْتِنَا بِاٰیَةٍ كَمَاۤ اُرْسِلَ الْاَوَّلُوْنَ
অনুবাদ: তারা বলে, “বরং এসব বিক্ষিপ্ত স্বপ্ন, বরং এসব তার মনগড়া বরং এ ব্যক্তি কবি। নয়তো সে আনুক একটি নিদর্শন যেমন পূর্ববর্তীকালের নবীদেরকে পাঠানো হয়েছিল নিদর্শন সহকারে।”
(21:6)
مَاۤ اٰمَنَتْ قَبْلَهُمْ مِّنْ قَرْیَةٍ اَهْلَكْنٰهَا١ۚ اَفَهُمْ یُؤْمِنُوْنَ
অনুবাদ: অথচ এদের আগে আমি যেসব জনবসতিকে ধ্বংস করেছি, তাদের কেউ ঈমান আনেনি। এখন কি এরা ঈমান আনবে?
(21:7)
وَ مَاۤ اَرْسَلْنَا قَبْلَكَ اِلَّا رِجَالًا نُّوْحِیْۤ اِلَیْهِمْ فَسْئَلُوْۤا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ
অনুবাদ: আর হে মুহাম্মাদ! তোমার পূর্বেও আমি মানুষদেরকেই রসূল বানিয়ে পাঠিয়েছিলাম, যাদের কাছে আমি অহী পাঠাতাম। তোমরা যদি না জেনে থাকো তাহলে আহলে কিতাবদেরকে জিজ্ঞেস করো।
(21:8)
وَ مَا جَعَلْنٰهُمْ جَسَدًا لَّا یَاْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَ مَا كَانُوْا خٰلِدِیْنَ
অনুবাদ: সেই রসূলদেরকে আমি এমন দেহবিশিষ্ট করিনি যে, তারা খেতো না এবং তারা চিরজীবিও ছিল না।
(21:9)
ثُمَّ صَدَقْنٰهُمُ الْوَعْدَ فَاَنْجَیْنٰهُمْ وَ مَنْ نَّشَآءُ وَ اَهْلَكْنَا الْمُسْرِفِیْنَ
অনুবাদ: তারপর দেখে নাও আমি তাদের সাথে আমার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছি এবং তাদেরকে ও যাকে যাকে আমি চেয়েছি রক্ষা করেছি এবং সীমালংঘনকারীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি।
(21:10)
لَقَدْ اَنْزَلْنَاۤ اِلَیْكُمْ كِتٰبًا فِیْهِ ذِكْرُكُمْ١ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ۠
অনুবাদ: হে লোকেরা! আমি তোমাদের প্রতি এমন একটি কিতাব অবতীর্ণ করেছি যার মধ্যে তোমাদেরই কথা আছে, তোমরা কি বুঝ না?
(21:11)
وَ كَمْ قَصَمْنَا مِنْ قَرْیَةٍ كَانَتْ ظَالِمَةً وَّ اَنْشَاْنَا بَعْدَهَا قَوْمًا اٰخَرِیْنَ
অনুবাদ: কত অত্যাচারী জনবসতিকে আমি বিধ্বস্ত করে দিয়েছি এবং তাদের পর উঠিয়েছি অন্য জাতিকে।
(21:12)
فَلَمَّاۤ اَحَسُّوْا بَاْسَنَاۤ اِذَا هُمْ مِّنْهَا یَرْكُضُوْنَؕ
অনুবাদ: যখন তারা আমার আযাব অনুভব করলো, পালাতে লাগলো সেখান থেকে।
(21:13)
لَا تَرْكُضُوْا وَ ارْجِعُوْۤا اِلٰى مَاۤ اُتْرِفْتُمْ فِیْهِ وَ مَسٰكِنِكُمْ لَعَلَّكُمْ تُسْئَلُوْنَ
অনুবাদ: (বলা হলো) “পালায়ও না, চলে যাও তোমাদের গৃহে ও ভোগ্য সামগ্রীর মধ্যে, যেগুলোর মধ্যে তোমরা আরাম করছিলে, হয়তো তোমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
(21:14)
قَالُوْا یٰوَیْلَنَاۤ اِنَّا كُنَّا ظٰلِمِیْنَ
অনুবাদ: বলতে লাগলো, “হায়, আমাদের দুর্ভাগ্য! নিশ্চয়ই আমরা অপরাধী ছিলাম।”
(21:15)
فَمَا زَالَتْ تِّلْكَ دَعْوٰىهُمْ حَتّٰى جَعَلْنٰهُمْ حَصِیْدًا خٰمِدِیْنَ
অনুবাদ: আর তারা এ আর্তনাদ করতেই থাকে যতক্ষণ আমি তাদেরকে কাটা শস্যে পরিণত না করি, জীবনের একটি স্ফুলিংগও তাদের মধ্যে থাকেনি।
(21:16)
وَ مَا خَلَقْنَا السَّمَآءَ وَ الْاَرْضَ وَ مَا بَیْنَهُمَا لٰعِبِیْنَ
অনুবাদ: এ আকাশ ও পৃথিবী এবং এদের মধ্যে যা কিছুই আছে এগুলো আমি খেলাচ্ছলে তৈরি করিনি।
(21:17)
لَوْ اَرَدْنَاۤ اَنْ نَّتَّخِذَ لَهْوًا لَّاتَّخَذْنٰهُ مِنْ لَّدُنَّاۤ١ۖۗ اِنْ كُنَّا فٰعِلِیْنَ
অনুবাদ: যদি আমি কোন খেলনা তৈরি করতে চাইতাম এবং এমনি ধরনের কিছু আমাকে করতে হতো তাহলে নিজেরই কাছ থেকে করে নিতাম।
(21:18)
بَلْ نَقْذِفُ بِالْحَقِّ عَلَى الْبَاطِلِ فَیَدْمَغُهٗ فَاِذَا هُوَ زَاهِقٌ١ؕ وَ لَكُمُ الْوَیْلُ مِمَّا تَصِفُوْنَ
অনুবাদ: কিন্তু আমি তো মিথ্যার ওপর সত্যের আঘাত হানি, যা মিথ্যার মাথা গুঁড়িয়ে দেয় এবং সে দেখতে দেখতে নিশ্চিহ্ন হয়। আর তোমাদের জন্য ধ্বংস! যেসব কথা তোমরা তৈরি করো সেগুলোর বদৌলতে।
(21:19)
وَ لَهٗ مَنْ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ وَ مَنْ عِنْدَهٗ لَا یَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِهٖ وَ لَا یَسْتَحْسِرُوْنَۚ
অনুবাদ: পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যে সৃষ্টিই আছে তা আল্লাহরই। আর যে (ফেরেশতারা) তাঁর কাছে আছে তারা না নিজেদেরকে বড় মনে করে তাঁর বন্দেগী থেকে বিমুখ হয় এবং না ক্লান্ত ও বিষণ্ন হয়,
(21:20)
یُسَبِّحُوْنَ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ لَا یَفْتُرُوْنَ
অনুবাদ: দিন রাত তাঁর প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করতে থাকে, বিরাম-বিশ্রাম নেয় না।
(21:21)
اَمِ اتَّخَذُوْۤا اٰلِهَةً مِّنَ الْاَرْضِ هُمْ یُنْشِرُوْنَ
অনুবাদ: এদের তৈরি মাটির দেবতাগুলো কি এমন পর্যায়ের যে, তারা (প্রাণহীনকে প্রাণ দান করে) দাঁড় করিয়ে দিতে পারে?
(21:22)
لَوْ كَانَ فِیْهِمَاۤ اٰلِهَةٌ اِلَّا اللّٰهُ لَفَسَدَتَا١ۚ فَسُبْحٰنَ اللّٰهِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا یَصِفُوْنَ
অনুবাদ: যদি আকাশে ও পৃথিবীতে এক আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোন ইলাহ হতো তাহলে (পৃথিবী ও আকাশ) উভয়ের ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যেতো। কাজেই এরা যেসব কথা বলে বেড়াচ্ছে আরশের রব আল্লাহ তা থেকে পাক-পবিত্র।
(21:23)
لَا یُسْئَلُ عَمَّا یَفْعَلُ وَ هُمْ یُسْئَلُوْنَ
অনুবাদ: তাঁর কাজের জন্য (কারো সামনে) তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে না বরং তাদেরকেই জবাবদিহি করতে হবে।
(21:24)
اَمِ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهٖۤ اٰلِهَةً١ؕ قُلْ هَاتُوْا بُرْهَانَكُمْ١ۚ هٰذَا ذِكْرُ مَنْ مَّعِیَ وَ ذِكْرُ مَنْ قَبْلِیْ١ؕ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ١ۙ الْحَقَّ فَهُمْ مُّعْرِضُوْنَ
অনুবাদ: তাঁকে বাদ দিয়ে তারা কি অন্য ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলো, তোমাদের প্রমাণ আনো। এ কিতাবও হাজির, যার মধ্যে আছে আমার যুগের লোকদের জন্য উপদেশ এবং সে কিতাবগুলোও হাজির, যেগুলোর মধ্যে ছিল আমার পূর্ববর্তী লোকদের জন্য নসিহত।” কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই প্রকৃত সত্য থেকে বেখবর, কাজেই মুখ ফিরিয়ে আছে।
(21:25)
وَ مَاۤ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِیْۤ اِلَیْهِ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعْبُدُوْنِ
অনুবাদ: আমি তোমার পূর্বে যে রসূলই পাঠিয়েছি তাঁর প্রতি এ অহী করেছি যে, আমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই কাজেই তোমরা আমারই বন্দেগী করো।
(21:26)
وَ قَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمٰنُ وَلَدًا سُبْحٰنَهٗ١ؕ بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُوْنَۙ
অনুবাদ: এরা বলে, “করুণাময় সন্তান গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ! তারা তো মর্যাদাশালী বান্দা।
(21:27)
لَا یَسْبِقُوْنَهٗ بِالْقَوْلِ وَ هُمْ بِاَمْرِهٖ یَعْمَلُوْنَ
অনুবাদ: তারা তাঁর সামনে অগ্রবর্তী হয়ে কথা বলে না এবং শুধুমাত্র তাঁর হুকুমে কাজ করে।
(21:28)
یَعْلَمُ مَا بَیْنَ اَیْدِیْهِمْ وَ مَا خَلْفَهُمْ وَ لَا یَشْفَعُوْنَ١ۙ اِلَّا لِمَنِ ارْتَضٰى وَ هُمْ مِّنْ خَشْیَتِهٖ مُشْفِقُوْنَ
অনুবাদ: যা কিছু তাদের সামনে আছে এবং যা কিছু আছে তাদের অগোচরে সবই তিনি জানেন। যাদের পক্ষে সুপারিশ শুনতে আল্লাহ সম্মত তাদের পক্ষে ছাড়া আর কারো সুপারিশ তারা করে না এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত।
(21:29)
وَ مَنْ یَّقُلْ مِنْهُمْ اِنِّیْۤ اِلٰهٌ مِّنْ دُوْنِهٖ فَذٰلِكَ نَجْزِیْهِ جَهَنَّمَ١ؕ كَذٰلِكَ نَجْزِی الظّٰلِمِیْنَ۠
অনুবাদ: আর তাদের মধ্যে যে বলবে, আল্লাহ ছাড়া আমিও একজন ইলাহ, তাকে আমি জাহান্নামের শাস্তি দান করবো, আমার এখানে এটিই জালেমদের প্রতিফল।
(21:30)
اَوَ لَمْ یَرَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اَنَّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنٰهُمَا١ؕ وَ جَعَلْنَا مِنَ الْمَآءِ كُلَّ شَیْءٍ حَیٍّ١ؕ اَفَلَا یُؤْمِنُوْنَ
অনুবাদ: যারা (নবীর কথা মেনে নিতে) অস্বীকার করেছে তারা কি চিন্তা করে না যে, এসব আকাশ ও পৃথিবী এক সাথে মিশে ছিল, তারপর আমি তাদেরকে আলাদা করলাম এবং পানি থেকে সৃষ্টি করলাম প্রত্যেকটি প্রাণীকে। তারা কি (আমার এ সৃষ্টি ক্ষমতাকে) মানে না?
(21:31)
وَ جَعَلْنَا فِی الْاَرْضِ رَوَاسِیَ اَنْ تَمِیْدَ بِهِمْ١۪ وَ جَعَلْنَا فِیْهَا فِجَاجًا سُبُلًا لَّعَلَّهُمْ یَهْتَدُوْنَ
অনুবাদ: আর আমি পৃথিবীতে পাহাড় বসিয়ে দিয়েছি, যাতে সে তাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং তার মধ্যে চওড়া পথ তৈরি করে দিয়েছি, হয়তো লোকেরা নিজেদের পথ জেনে নেবে।
(21:32)
وَ جَعَلْنَا السَّمَآءَ سَقْفًا مَّحْفُوْظًا١ۖۚ وَّ هُمْ عَنْ اٰیٰتِهَا مُعْرِضُوْنَ
অনুবাদ: আর আমি আকাশকে করেছি একটি সুরক্ষিত ছাদ, কিন্তু তারা এমন যে, এ নিদর্শনাবলীর প্রতি দৃষ্টিই দেয় না।
(21:33)
وَ هُوَ الَّذِیْ خَلَقَ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ وَ الشَّمْسَ وَ الْقَمَرَ١ؕ كُلٌّ فِیْ فَلَكٍ یَّسْبَحُوْنَ
অনুবাদ: আর আল্লাহই রাত ও দিন তৈরি করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকেই এক একটি কক্ষপথে সাঁতার কাটছে।
(21:34)
وَ مَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّنْ قَبْلِكَ الْخُلْدَ١ؕ اَفَاۡئِنْ مِّتَّ فَهُمُ الْخٰلِدُوْنَ
অনুবাদ: আর (হে মুহাম্মাদ!) অনন্ত জীবন তো আমি তোমার পূর্বেও কোন মানুষকে দেইনি; যদি তুমি মরে যাও তাহলে এরা কি চিরকাল বেঁচে থাকবে?
(21:35)
كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِ١ؕ وَ نَبْلُوْكُمْ بِالشَّرِّ وَ الْخَیْرِ فِتْنَةً١ؕ وَ اِلَیْنَا تُرْجَعُوْنَ
অনুবাদ: প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর আমি ভালো ও মন্দ অবস্থার মধ্যে ফেলে তোমাদের সবাইকে পরীক্ষা করছি, শেষ পর্যন্ত তোমাদের আমার দিকে ফিরে আসতে হবে।
(21:36)
وَ اِذَا رَاٰكَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اِنْ یَّتَّخِذُوْنَكَ اِلَّا هُزُوًا١ؕ اَهٰذَا الَّذِیْ یَذْكُرُ اٰلِهَتَكُمْ١ۚ وَ هُمْ بِذِكْرِ الرَّحْمٰنِ هُمْ كٰفِرُوْنَ
অনুবাদ: এ সত্য অস্বীকারকারীরা যখন তোমাকে দেখে, তোমাকে বিদ্রূপের পাত্রে পরিণত করে। বলে, “এ কি সেই ব্যক্তি যে তোমাদের দেব-দেবীদের সমালোচনা করে?” অথচ তাদের নিজেদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা করুণাময়ের যিকরের অস্বীকারকারী।
(21:37)
خُلِقَ الْاِنْسَانُ مِنْ عَجَلٍ١ؕ سَاُورِیْكُمْ اٰیٰتِیْ فَلَا تَسْتَعْجِلُوْنِ
অনুবাদ: মানুষ দ্রুততাপ্রবণ সৃষ্টি। এখনই আমি তোমাদের দেখিয়ে দিচ্ছি নিজের নিদর্শনাবলী, আমাকে তাড়াহুড়া করতে বলো না।
(21:38)
وَ یَقُوْلُوْنَ مَتٰى هٰذَا الْوَعْدُ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ
অনুবাদ: ---এরা বলে, “এ হুমকি কবে পূর্ণ হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?”
(21:39)
لَوْ یَعْلَمُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا حِیْنَ لَا یَكُفُّوْنَ عَنْ وُّجُوْهِهِمُ النَّارَ وَ لَا عَنْ ظُهُوْرِهِمْ وَ لَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ
অনুবাদ: হায়! যদি এ কাফেরদের সেই সময়ের কিছু জ্ঞান থাকতো যখন এরা নিজেদের মুখ ও পিঠ আগুন থেকে বাঁচাতে পারবে না এবং এদেরকে কোথাও থেকে সাহায্যও করা হবে না।
(21:40)
بَلْ تَاْتِیْهِمْ بَغْتَةً فَتَبْهَتُهُمْ فَلَا یَسْتَطِیْعُوْنَ رَدَّهَا وَ لَا هُمْ یُنْظَرُوْنَ
অনুবাদ: সে আপদ তাদের ওপর আকস্মিকভাবে এসে পড়বে এবং তাদেরকে হঠাৎ এমনভাবে চেপে ধরবে যে, তারা তার প্রতিরোধও করতে পারবে না। এবং মুহূর্তকালের অবকাশও লাভ করতে সক্ষম হবে না।
(21:41)
وَ لَقَدِ اسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّنْ قَبْلِكَ فَحَاقَ بِالَّذِیْنَ سَخِرُوْا مِنْهُمْ مَّا كَانُوْا بِهٖ یَسْتَهْزِءُوْنَ۠
অনুবাদ: তোমার পূর্বের রসূলদেরকেও বিদ্রূপ করা হয়েছে কিন্তু বিদ্রূপকারীরা যা নিয়ে বিদ্রূপ করতো, শেষ পর্যন্ত তারই কবলে তাদেরকে পড়তে হয়েছে।
(21:42)
قُلْ مَنْ یَّكْلَؤُكُمْ بِالَّیْلِ وَ النَّهَارِ مِنَ الرَّحْمٰنِ١ؕ بَلْ هُمْ عَنْ ذِكْرِ رَبِّهِمْ مُّعْرِضُوْنَ
অনুবাদ: হে মুহাম্মাদ! ওদেরকে বলে দাও, কে তোমাদের রাতে ও দিনে রহমানের হাত থেকে বাঁচাতে পারে? কিন্তু তারা নিজেদের রবের উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
(21:43)
اَمْ لَهُمْ اٰلِهَةٌ تَمْنَعُهُمْ مِّنْ دُوْنِنَا١ؕ لَا یَسْتَطِیْعُوْنَ نَصْرَ اَنْفُسِهِمْ وَ لَا هُمْ مِّنَّا یُصْحَبُوْنَ
অনুবাদ: তাদের কাছে কি এমন কিছু ইলাহ আছে যারা আমার মুকাবিলায় তাদেরকে রক্ষা করবে? তারা না নিজেদেরকে সাহায্য করতে পারে, না আমার সমর্থন লাভ করে।
(21:44)
بَلْ مَتَّعْنَا هٰۤؤُلَآءِ وَ اٰبَآءَهُمْ حَتّٰى طَالَ عَلَیْهِمُ الْعُمُرُ١ؕ اَفَلَا یَرَوْنَ اَنَّا نَاْتِی الْاَرْضَ نَنْقُصُهَا مِنْ اَطْرَافِهَا١ؕ اَفَهُمُ الْغٰلِبُوْنَ
অনুবাদ: আসল কথা হচ্ছে, তাদেরকে ও তাদের পূর্বপুরুষদেরকে আমি জীবনের উপায়-উপকরণ দিয়েই এসেছি। এমনকি তারা দিন পেয়ে গেছে। কিন্তু তারা কি দেখে না, আমি বিভিন্ন দিক থেকে পৃথিবীকে সংকুচিত করে আনছি? তবুও কি তারা বিজয়ী হবে?
(21:45)
قُلْ اِنَّمَاۤ اُنْذِرُكُمْ بِالْوَحْیِ١ۖ٘ وَ لَا یَسْمَعُ الصُّمُّ الدُّعَآءَ اِذَا مَا یُنْذَرُوْنَ
অনুবাদ: তাদেরকে বলে দাও, “আমি তো অহীর ভিত্তিতে তোমাদেরকে জানাচ্ছি”-কিন্তু বধিররা ডাক শুনতে পায় না, যখন তাদেরকে সতর্ক করা হয়।
(21:46)
وَ لَئِنْ مَّسَّتْهُمْ نَفْحَةٌ مِّنْ عَذَابِ رَبِّكَ لَیَقُوْلُنَّ یٰوَیْلَنَاۤ اِنَّا كُنَّا ظٰلِمِیْنَ
অনুবাদ: আর যদি তোমার রবের আযাব তাদেরকে সামান্য স্পর্শ করে যায়, তাহলে তারা তৎক্ষণাত চিৎকার দিয়ে উঠবে, হায়! আমাদের দুর্ভাগ্য, অবশ্যই আমরা অপরাধী ছিলাম।
(21:47)
وَ نَضَعُ الْمَوَازِیْنَ الْقِسْطَ لِیَوْمِ الْقِیٰمَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَیْئًا١ؕ وَ اِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ اَتَیْنَا بِهَا١ؕ وَ كَفٰى بِنَا حٰسِبِیْنَ
অনুবাদ: কিয়ামতের দিন আমি যথাযথ ওজন করার দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করবো। ফলে কোন ব্যক্তির প্রতি সামান্যতম জুলুম হবে না। যার তিল পরিমাণও কোন কর্ম থাকবে তাও আমি সামনে আনবো এবং হিসেব করার জন্য আমি যথেষ্ট।
(21:48)
وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسٰى وَ هٰرُوْنَ الْفُرْقَانَ وَ ضِیَآءً وَّ ذِكْرًا لِّلْمُتَّقِیْنَۙ
অনুবাদ: পূর্বে আমি মূসা ও হারুনকে দিয়েছিলাম ফুরকান, জ্যোতি ও ‘যিকির’ এমনসব মুত্তাকীদের কল্যাণার্থে
(21:49)
الَّذِیْنَ یَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَیْبِ وَ هُمْ مِّنَ السَّاعَةِ مُشْفِقُوْنَ
অনুবাদ: যারা না দেখে তাদের রবকে ভয় করে এবং যারা (হিসেবে-নিকেশের) সে সময়ের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত।
(21:50)
وَ هٰذَا ذِكْرٌ مُّبٰرَكٌ اَنْزَلْنٰهُ١ؕ اَفَاَنْتُمْ لَهٗ مُنْكِرُوْنَ۠
অনুবাদ: আর এখন এ বরকত সম্পন্ন “যিকির” আমি (তোমাদের জন্য) নাযিল করেছি। তবুও কি তোমরা একে মেনে নিতে অস্বীকার করো?
(21:51)
وَ لَقَدْ اٰتَیْنَاۤ اِبْرٰهِیْمَ رُشْدَهٗ مِنْ قَبْلُ وَ كُنَّا بِهٖ عٰلِمِیْنَۚ
অনুবাদ: এরও আগে আমি ইবরাহীমকে শুভ বুদ্ধি ও সত্যের জ্ঞান দান করেছিলাম এবং আমি তাকে খুব ভালোভাবেই জানতাম।
(21:52)
اِذْ قَالَ لِاَبِیْهِ وَ قَوْمِهٖ مَا هٰذِهِ التَّمَاثِیْلُ الَّتِیْۤ اَنْتُمْ لَهَا عٰكِفُوْنَ
অনুবাদ: সে সময়ের কথা স্মরণ করো যখন সে তাঁর নিজের বাপকে ও জাতিকে বলেছিল, “এ মূর্তিগুলো কেমন, যেগুলোর প্রতি তোমরা ভক্তিতে গদগদ হচ্ছো?”
(21:53)
قَالُوْا وَجَدْنَاۤ اٰبَآءَنَا لَهَا عٰبِدِیْنَ
অনুবাদ: তারা জবাব দিলঃ “আমাদের বাপ-দাদাদেরকে আমরা এদের ইবাদাতরত অবস্থায় পেয়েছি।”
(21:54)
قَالَ لَقَدْ كُنْتُمْ اَنْتُمْ وَ اٰبَآؤُكُمْ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ
অনুবাদ: সে বললো, “তোমরাও পথভ্রষ্ট এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও সুস্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যেই অবস্থান করছিল।”
(21:55)
قَالُوْۤا اَجِئْتَنَا بِالْحَقِّ اَمْ اَنْتَ مِنَ اللّٰعِبِیْنَ
অনুবাদ: তারা বললো, “তুমি কি আমাদের সামনে তোমার প্রকৃত মনের কথা বলছো, না নিছক কৌতুক করছো?”
(21:56)
قَالَ بَلْ رَّبُّكُمْ رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ الَّذِیْ فَطَرَهُنَّ١ۖ٘ وَ اَنَا عَلٰى ذٰلِكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِیْنَ
অনুবাদ: সে জবাব দিল, “না, বরং আসলে তোমাদের রব তিনিই যিনি পৃথিবী ও আকাশের রব এবং এদের স্রষ্টা। এর স্বপক্ষে আমি তোমাদের সামনে সাক্ষ্য দিচ্ছি।
(21:57)
وَ تَاللّٰهِ لَاَكِیْدَنَّ اَصْنَامَكُمْ بَعْدَ اَنْ تُوَلُّوْا مُدْبِرِیْنَ
অনুবাদ: আর আল্লাহর কসম, তোমাদের অনুপস্থিতিতে আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ব্যাপারে অবশ্যি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
(21:58)
فَجَعَلَهُمْ جُذٰذًا اِلَّا كَبِیْرًا لَّهُمْ لَعَلَّهُمْ اِلَیْهِ یَرْجِعُوْنَ
অনুবাদ: সে অনুসারে সে সেগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেললো এবং শুধুমাত্র বড়টিকে ছেড়ে দিল, যাতে তারা হয়তো তার দিকে ফিরে আসতে পারে।
(21:59)
قَالُوْا مَنْ فَعَلَ هٰذَا بِاٰلِهَتِنَاۤ اِنَّهٗ لَمِنَ الظّٰلِمِیْنَ
অনুবাদ: (তারা এসে মূর্তিগুলোর এ অবস্থা দেখে) বলতে লাগলো, “আমাদের ইলাহদের এ অবস্থা করলো কে, বড়ই জালেম সে।”
(21:60)
قَالُوْا سَمِعْنَا فَتًى یَّذْكُرُهُمْ یُقَالُ لَهٗۤ اِبْرٰهِیْمُؕ
অনুবাদ: (কেউ কেউ) বললো, “আমরা এক যুবককে এদের কথা বলতে শুনেছিলাম, তাঁর নাম ইবরাহীম।”
(21:61)
قَالُوْا فَاْتُوْا بِهٖ عَلٰۤى اَعْیُنِ النَّاسِ لَعَلَّهُمْ یَشْهَدُوْنَ
অনুবাদ: তারা বললো, “তাহলে তাকে ধরে নিয়ে এসো সবার সামনে, যাতে লোকেরা দেখে নেয়” (কিভাবে তাঁকে শাস্তি দেয়া হয়)।
(21:62)
قَالُوْۤا ءَاَنْتَ فَعَلْتَ هٰذَا بِاٰلِهَتِنَا یٰۤاِبْرٰهِیْمُؕ
অনুবাদ: (ইবরাহীমকে নিয়ে আসার পর) তারা জিজ্ঞেস করলো, “ওহে ইবরাহীম! তুমি কি আমাদের ইলাহদের সাথে এ কাণ্ড করেছো?”
(21:63)
قَالَ بَلْ فَعَلَهٗ١ۖۗ كَبِیْرُهُمْ هٰذَا فَسْئَلُوْهُمْ اِنْ كَانُوْا یَنْطِقُوْنَ
অনুবাদ: সে জবাব দিল, “বরং এসব কিছু এদের এ সরদারটি করেছে, এদেরকেই জিজ্ঞেস করো, যদি এরা কথা বলতে পারে।”
(21:64)
فَرَجَعُوْۤا اِلٰۤى اَنْفُسِهِمْ فَقَالُوْۤا اِنَّكُمْ اَنْتُمُ الظّٰلِمُوْنَۙ
অনুবাদ: একথা শুনে তারা নিজেদের বিবেকের দিকে ফিরলো এবং (মনে মনে) বলতে লাগলো, “সত্যিই তোমরা নিজেরাই জালেম।”
(21:65)
ثُمَّ نُكِسُوْا عَلٰى رُءُوْسِهِمْ١ۚ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا هٰۤؤُلَآءِ یَنْطِقُوْنَ
অনুবাদ: কিন্তু আবার তাদের মত পাল্টে গেলো এবং বলতে থাকলো, “তুমি জানো, এরা কথা বলে না।”
(21:66)
قَالَ اَفَتَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَا یَنْفَعُكُمْ شَیْئًا وَّ لَا یَضُرُّكُمْؕ
অনুবাদ: ইবরাহীম বললো, “তাহলে তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমনসব জিনিসের পূজা করছো যারা তোমাদের না উপকার করতে পারে, না ক্ষতি?
(21:67)
اُفٍّ لَّكُمْ وَ لِمَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ١ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ
অনুবাদ: ধিক তোমাদেরকে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব উপাস্যের তোমরা পূজা করছো তাদেরকে। তোমাদের কি একটুও বুদ্ধি নেই?”
(21:68)
قَالُوْا حَرِّقُوْهُ وَ انْصُرُوْۤا اٰلِهَتَكُمْ اِنْ كُنْتُمْ فٰعِلِیْنَ
অনুবাদ: তারা বললো, “পুড়িয়ে ফেলো একে এবং সাহায্য করো তোমাদের উপাস্যদেরকে, যদি তোমরা কিছু করতে চাও।”
(21:69)
قُلْنَا یٰنَارُ كُوْنِیْ بَرْدًا وَّ سَلٰمًا عَلٰۤى اِبْرٰهِیْمَۙ
অনুবাদ: আমি বললামঃ “হে আগুন! ঠাণ্ডা হয়ে যাও এবং নিরাপদ হয়ে যাও ইবরাহীমের জন্য।”
(21:70)
وَ اَرَادُوْا بِهٖ كَیْدًا فَجَعَلْنٰهُمُ الْاَخْسَرِیْنَۚ
অনুবাদ: তারা চাচ্ছিল ইবরাহীমের ক্ষতি করতে কিন্তু আমি তাদেরকে ভীষণভাবে ব্যর্থ করে দিলাম।
(21:71)
وَ نَجَّیْنٰهُ وَ لُوْطًا اِلَى الْاَرْضِ الَّتِیْ بٰرَكْنَا فِیْهَا لِلْعٰلَمِیْنَ
অনুবাদ: আর আমি তাঁকে ও লূতকে বাঁচিয়ে এমন দেশের দিকে নিয়ে গেলাম যেখানে আমি দুনিয়াবাসীদের জন্য বরকত রেখেছিলাম।
(21:72)
وَ وَهَبْنَا لَهٗۤ اِسْحٰقَ١ؕ وَ یَعْقُوْبَ نَافِلَةً١ؕ وَ كُلًّا جَعَلْنَا صٰلِحِیْنَ
অনুবাদ: আর তাঁকে আমি ইসহাক দান করলাম এবং এর ওপর অতিরিক্ত ইয়াকুব এবং প্রত্যেককে করলাম সৎকর্মশীল।
(21:73)
وَ جَعَلْنٰهُمْ اَئِمَّةً یَّهْدُوْنَ بِاَمْرِنَا وَ اَوْحَیْنَاۤ اِلَیْهِمْ فِعْلَ الْخَیْرٰتِ وَ اِقَامَ الصَّلٰوةِ وَ اِیْتَآءَ الزَّكٰوةِ١ۚ وَ كَانُوْا لَنَا عٰبِدِیْنَۚۙ
অনুবাদ: আর আমি তাঁদেরকে নেতা বানিয়ে দিলাম, তারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথনির্দেশনা দিতো এবং আমি তাঁদেরকে অহীর মাধ্যমে সৎকাজের, নামায কায়েম করার ও যাকাত দেবার নির্দেশ দিয়েছিলাম এবং তারা আমার ইবাদাত করতো।
(21:74)
وَ لُوْطًا اٰتَیْنٰهُ حُكْمًا وَّ عِلْمًا وَّ نَجَّیْنٰهُ مِنَ الْقَرْیَةِ الَّتِیْ كَانَتْ تَّعْمَلُ الْخَبٰٓئِثَ١ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا قَوْمَ سَوْءٍ فٰسِقِیْنَۙ
অনুবাদ: আর লূতকে আমি প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করেছিলাম এবং তাকে এমন জনপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম যার অধিবাসীরা বদ কাজে লিপ্ত ছিল--- আসলে তারা ছিল বড়ই দুরাচারী পাপিষ্ঠ জাতি---
(21:75)
وَ اَدْخَلْنٰهُ فِیْ رَحْمَتِنَا١ؕ اِنَّهٗ مِنَ الصّٰلِحِیْنَ۠
অনুবাদ: আর লূতকে আমি নিজের রহমতের আওতায় নিয়ে নিয়েছিলাম, সে ছিল সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।
(21:76)
وَ نُوْحًا اِذْ نَادٰى مِنْ قَبْلُ فَاسْتَجَبْنَا لَهٗ فَنَجَّیْنٰهُ وَ اَهْلَهٗ مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِیْمِۚ
অনুবাদ: আর এ একই নিয়ামত আমি নূহকে দান করেছিলাম। স্মরণ করো যখন এদের সবার আগে সে আমাকে ডেকেছিল, আমি তাঁর দোয়া কবুল করেছিলাম এবং তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে মহাবিপদ থেকে বাঁচিয়েছিলাম।
(21:77)
وَ نَصَرْنٰهُ مِنَ الْقَوْمِ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا١ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا قَوْمَ سَوْءٍ فَاَغْرَقْنٰهُمْ اَجْمَعِیْنَ
অনুবাদ: আর এমন সম্প্রদায়ের মুকাবিলায় তাঁকে সাহায্য করেছিলাম যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছিল। তারা খুবই খারাপ লোক ছিল, কাজেই আমি তাদের সবাইকে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।
(21:78)
وَ دَاوٗدَ وَ سُلَیْمٰنَ اِذْ یَحْكُمٰنِ فِی الْحَرْثِ اِذْ نَفَشَتْ فِیْهِ غَنَمُ الْقَوْمِ١ۚ وَ كُنَّا لِحُكْمِهِمْ شٰهِدِیْنَۗۙ
অনুবাদ: আর এ নিয়ামতই আমি দাউদ ও সুলাইমানকে দান করেছিলাম। স্মরণ করো সে সময়ের কথা, যখন তারা উভয়ই একটি শস্য ক্ষেতের মোকদ্দমার ফায়সালা করছিল, যেখানে রাতের বেলা ছড়িয়ে পড়েছিল অন্য লোকদের ছাগল এবং আমি নিজেই দেখছিলাম তাদের বিচার।
(21:79)
فَفَهَّمْنٰهَا سُلَیْمٰنَ١ۚ وَ كُلًّا اٰتَیْنَا حُكْمًا وَّ عِلْمًا١٘ وَّ سَخَّرْنَا مَعَ دَاوٗدَ الْجِبَالَ یُسَبِّحْنَ وَ الطَّیْرَ١ؕ وَ كُنَّا فٰعِلِیْنَ
অনুবাদ: সে সময় আমি সুলাইমানকে সঠিক ফায়সালা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম, অথচ প্রজ্ঞা ও জ্ঞান আমি উভয়কেই দান করেছিলাম। দাউদের সাথে আমি পর্বতরাজী ও পক্ষীকূলকে অনুগত করে দিয়েছিলাম, যারা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতো, এ কাজের কর্তা আমিই ছিলাম।
(21:80)
وَ عَلَّمْنٰهُ صَنْعَةَ لَبُوْسٍ لَّكُمْ لِتُحْصِنَكُمْ مِّنْۢ بَاْسِكُمْ١ۚ فَهَلْ اَنْتُمْ شٰكِرُوْنَ
অনুবাদ: আর আমি তাঁকে তোমাদের উপকারার্থে বর্ম নির্মাণ শিল্প শিখিয়েছিলাম, যাতে তোমাদেরকে পরস্পরের আঘাত থেকে রক্ষা করে, তাহলে কি তোমরা কৃতজ্ঞ হবে?
(21:81)
وَ لِسُلَیْمٰنَ الرِّیْحَ عَاصِفَةً تَجْرِیْ بِاَمْرِهٖۤ اِلَى الْاَرْضِ الَّتِیْ بٰرَكْنَا فِیْهَا١ؕ وَ كُنَّا بِكُلِّ شَیْءٍ عٰلِمِیْنَ
অনুবাদ: আর সুলাইমানের জন্য আমি প্রবল বায়ু প্রবাহকে বশীভূত করে দিয়েছিলাম, যা তাঁর হুকুমে এমন দেশের দিকে প্রবাহিত হতো যার মধ্যে আমি বরকত রেখেছিলাম আমি সব জিনিসের জ্ঞান রাখি।
(21:82)
وَ مِنَ الشَّیٰطِیْنِ مَنْ یَّغُوْصُوْنَ لَهٗ وَ یَعْمَلُوْنَ عَمَلًا دُوْنَ ذٰلِكَ١ۚ وَ كُنَّا لَهُمْ حٰفِظِیْنَۙ
অনুবাদ: আর শয়তানের মধ্য থেকে এমন অনেককে আমি তাঁর অনুগত করে দিয়েছিলাম যারা তাঁর জন্য ডুবুরীর কাজ করতো এবং এছাড়া অন্য কাজও করতো, আমিই ছিলাম এদের সবার তত্ত্বাবধায়ক।
(21:83)
وَ اَیُّوْبَ اِذْ نَادٰى رَبَّهٗۤ اَنِّیْ مَسَّنِیَ الضُّرُّ وَ اَنْتَ اَرْحَمُ الرّٰحِمِیْنَۚۖ
অনুবাদ: আর (এ একই বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান) আমি আইয়ুবকে দিয়েছিলাম। স্মরণ করো, যখন সে তাঁর রবকে ডাকলো, “আমি রোগগ্রস্ত হয়ে গেছি এবং তুমি করুণাকারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ করুণাকারী।”
(21:84)
فَاسْتَجَبْنَا لَهٗ فَكَشَفْنَا مَا بِهٖ مِنْ ضُرٍّ وَّ اٰتَیْنٰهُ اَهْلَهٗ وَ مِثْلَهُمْ مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِنْدِنَا وَ ذِكْرٰى لِلْعٰبِدِیْنَ
অনুবাদ: আমি তাঁর দোয়া কবুল করেছিলাম, তাঁর যে কষ্ট ছিল তা দূর করে দিয়েছিলাম এবং শুধুমাত্র তাঁর পরিবার-পরিজনই তাঁকে দেইনি বরং এই সাথে এ পরিমাণ আরো দিয়েছিলাম, নিজের বিশেষ করুণা হিসেবে এবং এজন্য যে, এটা একটা শিক্ষা হবে ইবাদাতকারীদের জন্য।
(21:85)
وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِدْرِیْسَ وَ ذَا الْكِفْلِ١ؕ كُلٌّ مِّنَ الصّٰبِرِیْنَۚۖ
অনুবাদ: আর এ নিয়ামতই ইসমাঈল, ইদরিস ও যুলকিফ্লকে দিয়েছিলাম, এরা সবাই সবরকারী ছিল
(21:86)
وَ اَدْخَلْنٰهُمْ فِیْ رَحْمَتِنَا١ؕ اِنَّهُمْ مِّنَ الصّٰلِحِیْنَ
অনুবাদ: এবং এদেরকে আমি নিজের অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছিলাম, তারা ছিল সৎকর্মশীল।
(21:87)
وَ ذَا النُّوْنِ اِذْ ذَّهَبَ مُغَاضِبًا فَظَنَّ اَنْ لَّنْ نَّقْدِرَ عَلَیْهِ فَنَادٰى فِی الظُّلُمٰتِ اَنْ لَّاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنْتَ سُبْحٰنَكَ١ۖۗ اِنِّیْ كُنْتُ مِنَ الظّٰلِمِیْنَۚۖ
অনুবাদ: আর মাছওয়ালাকেও আমি অনুগ্রহভাজন করেছিলাম। স্মরণ করো যখন সে রাগান্বিত হয়ে চলে গিয়েছিল এবং মনে করেছিল আমি তাকে পাকড়াও করবো না। শেষে সে অন্ধকারের মধ্য থেকে ডেকে উঠলোঃ “তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, পবিত্র তোমার সত্তা, অবশ্যই আমি অপরাধ করেছি।”
(21:88)
فَاسْتَجَبْنَا لَهٗ١ۙ وَ نَجَّیْنٰهُ مِنَ الْغَمِّ١ؕ وَ كَذٰلِكَ نُـْۨجِی الْمُؤْمِنِیْنَ
অনুবাদ: তখন আমি তাঁর দোয়া কবুল করেছিলাম এবং দুঃখ থেকে তাঁকে মুক্তি দিয়েছিলাম, আর এভাবেই আমি মুমিনদেরকে উদ্ধার করে থাকি।
(21:89)
وَ زَكَرِیَّاۤ اِذْ نَادٰى رَبَّهٗ رَبِّ لَا تَذَرْنِیْ فَرْدًا وَّ اَنْتَ خَیْرُ الْوٰرِثِیْنَۚۖ
অনুবাদ: আর যাকারিয়ার কথা (স্মরণ করো), যখন সে তাঁর রবকে ডেকে বলেছিলঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একাকী ছেড়ে দিয়ো না এবং সবচেয়ে ভালো উত্তরাধিকারী তো তুমিই।”
(21:90)
فَاسْتَجَبْنَا لَهٗ١٘ وَ وَهَبْنَا لَهٗ یَحْیٰى وَ اَصْلَحْنَا لَهٗ زَوْجَهٗ١ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا یُسٰرِعُوْنَ فِی الْخَیْرٰتِ وَ یَدْعُوْنَنَا رَغَبًا وَّ رَهَبًا١ؕ وَ كَانُوْا لَنَا خٰشِعِیْنَ
অনুবাদ: কাজেই আমি তাঁর দোয়া কবুল করেছিলাম এবং তাঁকে ইয়াহ্ইয়া দান করেছিলাম, আর তাঁর স্ত্রীকে তাঁর জন্য যোগ্য করে দিয়েছিলাম। তারা সৎকাজে আপ্রাণ চেষ্টা করতো, আমাকে ডাকতো আশা ও ভীতি সহকারে এবং আমার সামনে ছিল অবনত হয়ে।
(21:91)
وَ الَّتِیْۤ اَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِیْهَا مِنْ رُّوْحِنَا وَ جَعَلْنٰهَا وَ ابْنَهَاۤ اٰیَةً لِّلْعٰلَمِیْنَ
অনুবাদ: আর সেই মহিলা যে নিজের সতীত্ব রক্ষা করেছিল, আমি তার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছিলাম নিজের রূহ থেকে এবং তাকে ও তার পুত্রকে সারা দুনিয়ার জন্য নিদর্শনে পরিণত করেছিলাম।
(21:92)
اِنَّ هٰذِهٖۤ اُمَّتُكُمْ اُمَّةً وَّاحِدَةً١ۖ٘ وَّ اَنَا رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوْنِ
অনুবাদ: তোমাদের এ উম্মত আসলে একই উম্মত। আর আমি তোমাদের রব। কাজেই তোমরা আমার ইবাদাত করো।
(21:93)
وَ تَقَطَّعُوْۤا اَمْرَهُمْ بَیْنَهُمْ١ؕ كُلٌّ اِلَیْنَا رٰجِعُوْنَ۠
অনুবাদ: কিন্তু (নিজেদের কার্যকলাপের মাধ্যমে) লোকেরা পরস্পরের মধ্যে নিজেদের দ্বীনকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে। সবাইকে আমার দিকে ফিরে আসতে হবে।
(21:94)
فَمَنْ یَّعْمَلْ مِنَ الصّٰلِحٰتِ وَ هُوَ مُؤْمِنٌ فَلَا كُفْرَانَ لِسَعْیِهٖ١ۚ وَ اِنَّا لَهٗ كٰتِبُوْنَ
অনুবাদ: কাজেই যে ব্যক্তি মু’মিন থাকা অবস্থায় সৎকাজ করে, তার কাজের অমর্যাদা করা হবে না এবং আমি তা লিখে রাখছি।
(21:95)
وَ حَرٰمٌ عَلٰى قَرْیَةٍ اَهْلَكْنٰهَاۤ اَنَّهُمْ لَا یَرْجِعُوْنَ
অনুবাদ: আর যে জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি তার অধিবাসীরা আবার ফিরে আসবে, এটা সম্ভব নয়।
(21:96)
حَتّٰۤى اِذَا فُتِحَتْ یَاْجُوْجُ وَ مَاْجُوْجُ وَ هُمْ مِّنْ كُلِّ حَدَبٍ یَّنْسِلُوْنَ
অনুবাদ: এমন কি যখন ইয়াজুজ ও মাজুজকে খুলে দেয়া হবে, প্রতি উচ্চ ভূমি থেকে তারা বের হয়ে পড়বে
(21:97)
وَ اقْتَرَبَ الْوَعْدُ الْحَقُّ فَاِذَا هِیَ شَاخِصَةٌ اَبْصَارُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا١ؕ یٰوَیْلَنَا قَدْ كُنَّا فِیْ غَفْلَةٍ مِّنْ هٰذَا بَلْ كُنَّا ظٰلِمِیْنَ
অনুবাদ: এবং সত্য ওয়াদা পুরা হবার সময় কাছে এসে যাবে তখন যারা কুফরী করেছিল হঠাৎ তাদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। তারা বলবে, “হায়, আমাদের দুর্ভাগ্য। আমরা তো এ বিষয়ে গাফেল ছিলাম বরং আমরা দোষী ছিলাম।”
(21:98)
اِنَّكُمْ وَ مَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ حَصَبُ جَهَنَّمَ١ؕ اَنْتُمْ لَهَا وٰرِدُوْنَ
অনুবাদ: অবশ্যই তোমরা এবং তোমাদের যেসব মাবুদকে তোমরা পূজা করো, সবাই জাহান্নামের ইন্ধন, সেখানেই তোমাদের যেতে হবে।
(21:99)
لَوْ كَانَ هٰۤؤُلَآءِ اٰلِهَةً مَّا وَرَدُوْهَا١ؕ وَ كُلٌّ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ
অনুবাদ: যদি তারা সত্যিই আল্লাহ হতো, তাহলে সেখানে যেতো না। এখন সবাইকে চিরদিন তারই মধ্যে থাকতে হবে।
(21:100)
لَهُمْ فِیْهَا زَفِیْرٌ وَّ هُمْ فِیْهَا لَا یَسْمَعُوْنَ
অনুবাদ: সেখানে তারা হাঁসফাঁস করতে থাকবে এবং তাদের অবস্থা এমন হবে যে, তারা কোন কথা শুনতে পাবে না।
(21:101)
اِنَّ الَّذِیْنَ سَبَقَتْ لَهُمْ مِّنَّا الْحُسْنٰۤى١ۙ اُولٰٓئِكَ عَنْهَا مُبْعَدُوْنَۙ
অনুবাদ: তবে যাদের ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে পূর্বাহ্নেই কল্যাণের ফায়সালা হয়ে গিয়েছে তাদেরকে অবশ্যি এ থেকে দূরে রাখা হবে,
(21:102)
لَا یَسْمَعُوْنَ حَسِیْسَهَا١ۚ وَ هُمْ فِیْ مَا اشْتَهَتْ اَنْفُسُهُمْ خٰلِدُوْنَۚ
অনুবাদ: তার সামান্যতম খস্খসানিও তারা শুনবে না এবং তারা চিরকাল নিজেদের মন মতো জিনিসের মধ্যে অবস্থান করবে।
(21:103)
لَا یَحْزُنُهُمُ الْفَزَعُ الْاَكْبَرُ وَ تَتَلَقّٰىهُمُ الْمَلٰٓئِكَةُ١ؕ هٰذَا یَوْمُكُمُ الَّذِیْ كُنْتُمْ تُوْعَدُوْنَ
অনুবাদ: সেই চরম ভীতিকর অবস্থা তাদেরকে একটুও পেরেশান করবে না এবং ফেরেশতারা এগিয়ে এসে তাদেরকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাবে এই বলে, “এ তোমাদের সেই দিন যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হতো।”
(21:104)
یَوْمَ نَطْوِی السَّمَآءَ كَطَیِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ١ؕ كَمَا بَدَاْنَاۤ اَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِیْدُهٗ١ؕ وَعْدًا عَلَیْنَا١ؕ اِنَّا كُنَّا فٰعِلِیْنَ
অনুবাদ: সেদিন, যখন আকাশকে আমি এমনভাবে গুটিয়ে ফেলবো যেমন বাণ্ডিলের মধ্যে গুটিয়ে রাখা হয় লিখিত কাগজ, যেভাবে আমি প্রথমে সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম ঠিক তেমনিভাবে আবার তার পুনরাবৃত্তি করবো, এ একটি প্রতিশ্রুতি, যা আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত এবং এ কাজ আমাকে অবশ্যই করতে হবে।
(21:105)
وَ لَقَدْ كَتَبْنَا فِی الزَّبُوْرِ مِنْۢ بَعْدِ الذِّكْرِ اَنَّ الْاَرْضَ یَرِثُهَا عِبَادِیَ الصّٰلِحُوْنَ
অনুবাদ: আর যবুরে আমি উপদেশের পর একথা লিখে দিয়েছি যে, যমীনের উত্তরাধিকারী হবে আমার নেক বান্দারা।
(21:106)
اِنَّ فِیْ هٰذَا لَبَلٰغًا لِّقَوْمٍ عٰبِدِیْنَؕ
অনুবাদ: এর মধ্যে একটি বড় খবর আছে ইবাদাতকারী লোকদের জন্য।
(21:107)
وَ مَاۤ اَرْسَلْنٰكَ اِلَّا رَحْمَةً لِّلْعٰلَمِیْنَ
অনুবাদ: হে মুহাম্মাদ! আমি যে তোমাকে পাঠিয়েছি, এটা আসলে দুনিয়াবাসীদের জন্য আমার রহমত।
(21:108)
قُلْ اِنَّمَا یُوْحٰۤى اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ١ۚ فَهَلْ اَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ
অনুবাদ: এদেরকে বলো, “আমার কাছে যে অহী আসে তা হচ্ছে এই যে, কেবলমাত্র এক ইলাহই তোমাদের ইলাহ, তারপর কি তোমরা আনুগত্যের শির নত করছো?”
(21:109)
فَاِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ اٰذَنْتُكُمْ عَلٰى سَوَآءٍ١ؕ وَ اِنْ اَدْرِیْۤ اَقَرِیْبٌ اَمْ بَعِیْدٌ مَّا تُوْعَدُوْنَ
অনুবাদ: যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে বলে দাও, “আমি সোচ্চার কণ্ঠে তোমাদের জানিয়ে দিয়েছি। এখন আমি জানি না, তোমাদের সাথে যে বিষয়ের ওয়াদা করা হচ্ছে তা আসন্ন, না দূরবর্তী।
(21:110)
اِنَّهٗ یَعْلَمُ الْجَهْرَ مِنَ الْقَوْلِ وَ یَعْلَمُ مَا تَكْتُمُوْنَ
অনুবাদ: আল্লাহ সে কথাও জানেন যা সোচ্চার কণ্ঠে বলা হয় এবং তাও যা তোমরা গোপনে করো।
(21:111)
وَ اِنْ اَدْرِیْ لَعَلَّهٗ فِتْنَةٌ لَّكُمْ وَ مَتَاعٌ اِلٰى حِیْنٍ
অনুবাদ: আমিতো মনে করি, হয়তো এটা (বিলম্ব) তোমাদের জন্য এটা পরীক্ষা এবং একটা বিশেষ সময় পর্যন্ত তোমাদের জীবন উপভোগ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
(21:112)
قٰلَ رَبِّ احْكُمْ بِالْحَقِّ١ؕ وَ رَبُّنَا الرَّحْمٰنُ الْمُسْتَعَانُ عَلٰى مَا تَصِفُوْنَ۠
অনুবাদ: (শেষে) রসূল বললোঃ হে আমার রব! তুমি ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করে দাও। আর হে লোকেরা! তোমরা যেসব কথা তৈরি করছো তার মুকাবিলায় আমাদের দয়াময় রবই আমাদের সাহায্যকারী সহায়ক।”