Text Message

১৯ মে ২০২১

২৮ কাসাস

  ২৮-ক্বাসাস



(28:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(28:1)

طٰسٓمّٓ




অনুবাদ:    তা-সীন-মীম।




(28:2)

تِلْكَ اٰیٰتُ الْكِتٰبِ الْمُبِیْنِ




অনুবাদ:    এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।




(28:3)

نَتْلُوْا عَلَیْكَ مِنْ نَّبَاِ مُوْسٰى وَ فِرْعَوْنَ بِالْحَقِّ لِقَوْمٍ یُّؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    আমি মূসা ও ফেরাউনের কিছু যথাযথ বৃত্তান্ত তোমাকে শুনাচ্ছি এমনসব লোকদের সুবিধার্থে যারা ঈমান আনে।




(28:4)

اِنَّ فِرْعَوْنَ عَلَا فِی الْاَرْضِ وَ جَعَلَ اَهْلَهَا شِیَعًا یَّسْتَضْعِفُ طَآئِفَةً مِّنْهُمْ یُذَبِّحُ اَبْنَآءَهُمْ وَ یَسْتَحْیٖ نِسَآءَهُمْ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ مِنَ الْمُفْسِدِیْنَ




অনুবাদ:    প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ফেরাউন পৃথিবীতে বিদ্রোহ করে এবং তার অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দেয়। তাদের মধ্য থেকে একটি দলকে সে লাঞ্ছিত করতো, তাদের ছেলেদের হত্যা করতো এবং মেয়েদের জীবিত রাখতো। আসলে সে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল।




(28:5)

وَ نُرِیْدُ اَنْ نَّمُنَّ عَلَى الَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْا فِی الْاَرْضِ وَ نَجْعَلَهُمْ اَئِمَّةً وَّ نَجْعَلَهُمُ الْوٰرِثِیْنَۙ




অনুবাদ:    আমি সংকল্প করেছিলাম, যাদেরকে পৃথিবীতে লাঞ্ছিত করে রাখা হয়েছিল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবো, তাদেরকে নেতৃত্ব দান করবো, তাদেরকেই উত্তরাধিকারী করবো,




(28:6)

وَ نُمَكِّنَ لَهُمْ فِی الْاَرْضِ وَ نُرِیَ فِرْعَوْنَ وَ هَامٰنَ وَ جُنُوْدَهُمَا مِنْهُمْ مَّا كَانُوْا یَحْذَرُوْنَ




অনুবাদ:    পৃথিবীতে তাদেরকে কর্তৃত্ব দান করবো। এবং তাদের থেকে ফেরাউন, হামান ও তার সৈন্যদেরকে সে সবকিছুই দেখিয়ে দেবো, যার আশঙ্কা তারা করতো।




(28:7)

وَ اَوْحَیْنَاۤ اِلٰۤى اُمِّ مُوْسٰۤى اَنْ اَرْضِعِیْهِ١ۚ فَاِذَا خِفْتِ عَلَیْهِ فَاَلْقِیْهِ فِی الْیَمِّ وَ لَا تَخَافِیْ وَ لَا تَحْزَنِیْ١ۚ اِنَّا رَآدُّوْهُ اِلَیْكِ وَ جَاعِلُوْهُ مِنَ الْمُرْسَلِیْنَ




অনুবাদ:    আমি মূসার মাকে ইশারা করলাম, “একে স্তন্যদান করো, তারপর যখন এর প্রাণের ভয় করবে তখন একে দরিয়ায় ভাসিয়ে দেবে এবং কোন ভয় ও দুঃখ করবে না, তাঁকে তোমারই কাছে ফিরিয়ে আনবো এবং তাঁকে রসূলদের অন্তর্ভুক্ত করবো।”




(28:8)

فَالْتَقَطَهٗۤ اٰلُ فِرْعَوْنَ لِیَكُوْنَ لَهُمْ عَدُوًّا وَّ حَزَنًا١ؕ اِنَّ فِرْعَوْنَ وَ هَامٰنَ وَ جُنُوْدَهُمَا كَانُوْا خٰطِئِیْنَ




অনুবাদ:    শেষ পর্যন্ত ফেরাউনের পরিবারবর্গ তাকে (দরিয়া থেকে) উঠিয়ে নিল, যাতে সে তাদের শত্রু এবং তাদের দুঃখের কারণ হয়। যথার্থই ফেরাউন, হামান ও তার সৈন্যরা (তাদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে) ছিল বড়ই অপরাধী।




(28:9)

وَ قَالَتِ امْرَاَتُ فِرْعَوْنَ قُرَّتُ عَیْنٍ لِّیْ وَ لَكَ١ؕ لَا تَقْتُلُوْهُ١ۖۗ عَسٰۤى اَنْ یَّنْفَعَنَاۤ اَوْ نَتَّخِذَهٗ وَلَدًا وَّ هُمْ لَا یَشْعُرُوْنَ




অনুবাদ:    ফেরাউনের স্ত্রী (তাকে) বললো, “এ শিশুটি আমার ও তোমার চোখ জুড়িয়েছে। কাজেই একে হত্যা করো না, বিচিত্র কি সে আমাদের জন্য উপকারী প্রমাণিত হতে পারে অথবা আমরা তাঁকে সন্তান হিসেবেই গ্রহণ করতে পারি।” আর তারা (এর পরিণাম) জানতো না।




(28:10)

وَ اَصْبَحَ فُؤَادُ اُمِّ مُوْسٰى فٰرِغًا١ؕ اِنْ كَادَتْ لَتُبْدِیْ بِهٖ لَوْ لَاۤ اَنْ رَّبَطْنَا عَلٰى قَلْبِهَا لِتَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    ওদিকে মূসার মায়ের মন অস্থির হয়ে পড়েছিল। সে তার রহস্য প্রকাশ করে দিতো যদি আমি তার মন সুদৃঢ় না করে দিতাম, যাতে সে (আমার অঙ্গীকারের প্রতি) বিশ্বাস স্থাপনকারীদের একজন হয়।




(28:11)

وَ قَالَتْ لِاُخْتِهٖ قُصِّیْهِ١٘ فَبَصُرَتْ بِهٖ عَنْ جُنُبٍ وَّ هُمْ لَا یَشْعُرُوْنَۙ




অনুবাদ:    সে শিশুর বোনকে বললো, এর পিছনে পিছনে যাও। কাজেই সে তাদের (শত্রুদের) অজ্ঞাতসারে তাকে দেখতে থাকলো।




(28:12)

وَ حَرَّمْنَا عَلَیْهِ الْمَرَاضِعَ مِنْ قَبْلُ فَقَالَتْ هَلْ اَدُلُّكُمْ عَلٰۤى اَهْلِ بَیْتٍ یَّكْفُلُوْنَهٗ لَكُمْ وَ هُمْ لَهٗ نٰصِحُوْنَ




অনুবাদ:    আর আমি পূর্বেই শিশুর জন্য স্তন্য দানকারিনীদের স্তন পান হারাম করে রেখেছিলাম। (এ অবস্থা দেখে) সে মেয়েটি তাদেরকে বললো, “আমি তোমাদের এমন পরিবারের সন্ধান দেবো যারা এর প্রতিপালনের দায়িত্ব নেবে এবং এর কল্যাণকামী হবে?”




(28:13)

فَرَدَدْنٰهُ اِلٰۤى اُمِّهٖ كَیْ تَقَرَّ عَیْنُهَا وَ لَا تَحْزَنَ وَ لِتَعْلَمَ اَنَّ وَعْدَ اللّٰهِ حَقٌّ وَّ لٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ۠




অনুবাদ:    এভাবে আমি মূসাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে আনলাম, যাতে তার চোখ শীতল হয়, সে দুঃখ ভারাক্রান্ত না হয় এবং আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য বলে জেনে নেয়। কিন্তু অধিকাংশ লোক একথা জানে না।




(28:14)

وَ لَمَّا بَلَغَ اَشُدَّهٗ وَ اسْتَوٰۤى اٰتَیْنٰهُ حُكْمًا وَّ عِلْمًا١ؕ وَ كَذٰلِكَ نَجْزِی الْمُحْسِنِیْنَ




অনুবাদ:    মূসা যখন পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে গেলো এবং তার বিকাশ পূর্ণতা লাভ করলো তখন আমি তাকে হুকুম ও জ্ঞান দান করলাম, সৎলোকদেরকে আমি এ ধরণেরই প্রতিদান দিয়ে থাকি।




(28:15)

وَ دَخَلَ الْمَدِیْنَةَ عَلٰى حِیْنِ غَفْلَةٍ مِّنْ اَهْلِهَا فَوَجَدَ فِیْهَا رَجُلَیْنِ یَقْتَتِلٰنِ١٘ۗ هٰذَا مِنْ شِیْعَتِهٖ وَ هٰذَا مِنْ عَدُوِّهٖ١ۚ فَاسْتَغَاثَهُ الَّذِیْ مِنْ شِیْعَتِهٖ عَلَى الَّذِیْ مِنْ عَدُوِّهٖ١ۙ فَوَكَزَهٗ مُوْسٰى فَقَضٰى عَلَیْهِ١٘ۗ قَالَ هٰذَا مِنْ عَمَلِ الشَّیْطٰنِ١ؕ اِنَّهٗ عَدُوٌّ مُّضِلٌّ مُّبِیْنٌ




অনুবাদ:    (একদিন) সে শহরে এমন সময় প্রবেশ করলো যখন শহরবাসীরা উদাসীন ছিল। সেখানে সে দেখলো দু'জন লোক লড়াই করছে। একজন তার নিজের সম্প্রদায়ের এবং অন্যজন তার শত্রুসম্প্রদায়ের। তার সম্প্রদায়ের লোকটি শত্রুসম্প্রদায়ের লোকটির বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করার জন্য ডাক দিল। মূসা তাকে একটি ঘুষি মারলো এবং তাকে মেরে ফেললো। (এ কাণ্ড ঘটে যেতেই) মূসা বললো, “এটা শয়তানের কাজ, সে ভয়ংকর শত্রুএবং প্রকাশ্য পথভ্রষ্টকারী।”




(28:16)

قَالَ رَبِّ اِنِّیْ ظَلَمْتُ نَفْسِیْ فَاغْفِرْ لِیْ فَغَفَرَ لَهٗ١ؕ اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ




অনুবাদ:    তারপর সে বলতে লাগলো, “হে আমার রব! আমি নিজের ওপর জুলুম করেছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও? “ তখন আল্লাহ‌ তাঁকে ক্ষমা করে দিলেন তিনি ক্ষমাশীল মেহেরবান।




(28:17)

قَالَ رَبِّ بِمَاۤ اَنْعَمْتَ عَلَیَّ فَلَنْ اَكُوْنَ ظَهِیْرًا لِّلْمُجْرِمِیْنَ




অনুবাদ:    মূসা শপথ করলো, “হে আমার রব! তুমি আমার প্রতি এই যে অনুগ্রহ করেছো এরপর আমি আর অপরাধীদের সাহায্যকারী হবো না।”




(28:18)

فَاَصْبَحَ فِی الْمَدِیْنَةِ خَآئِفًا یَّتَرَقَّبُ فَاِذَا الَّذِی اسْتَنْصَرَهٗ بِالْاَمْسِ یَسْتَصْرِخُهٗ١ؕ قَالَ لَهٗ مُوْسٰۤى اِنَّكَ لَغَوِیٌّ مُّبِیْنٌ




অনুবাদ:    দ্বিতীয় দিন অতি প্রত্যুষে সে ভয়ে ভয়ে এবং সর্বদিক থেকে বিপদের আশঙ্কা করতে করতে শহরের মধ্যে চলছিল। সহসা দেখলো কি, সেই ব্যক্তি যে গতকাল সাহায্যের জন্য তাকে ডেকেছিল আজ আবার তাকে ডাকছে। মূসা বললো, “তুমি তো দেখছি স্পষ্টতই বিভ্রান্ত।”




(28:19)

فَلَمَّاۤ اَنْ اَرَادَ اَنْ یَّبْطِشَ بِالَّذِیْ هُوَ عَدُوٌّ لَّهُمَا١ۙ قَالَ یٰمُوْسٰۤى اَتُرِیْدُ اَنْ تَقْتُلَنِیْ كَمَا قَتَلْتَ نَفْسًۢا بِالْاَمْسِ١ۖۗ اِنْ تُرِیْدُ اِلَّاۤ اَنْ تَكُوْنَ جَبَّارًا فِی الْاَرْضِ وَ مَا تُرِیْدُ اَنْ تَكُوْنَ مِنَ الْمُصْلِحِیْنَ




অনুবাদ:    তারপর মূসা যখন শত্রু সম্প্রদায়ের লোকটিকে আক্রমণ করতে চাইলো তখন সে চিৎকার করে উঠলো, “হে মূসা! তুমি কি আজকে আমাকে ঠিক তেমনিভাবে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছো যেভাবে গতকাল একজনকে হত্যা করেছিলে? তুমি তো দেখছি এদেশে স্বেচ্ছাচারী হয়ে থাকতে চাও, সংস্কারক হতে চাও না?”




(28:20)

وَ جَآءَ رَجُلٌ مِّنْ اَقْصَا الْمَدِیْنَةِ یَسْعٰى١٘ قَالَ یٰمُوْسٰۤى اِنَّ الْمَلَاَ یَاْتَمِرُوْنَ بِكَ لِیَقْتُلُوْكَ فَاخْرُجْ اِنِّیْ لَكَ مِنَ النّٰصِحِیْنَ




অনুবাদ:    এরপর এক ব্যক্তি নগরীর দূর প্রান্ত থেকে ছুটে এলো এবং বললো, “হে মূসা! সরদারদের মধ্যে তোমাকে হত্যা করার পরামর্শ চলছে। এখান থেকে বের হয়ে যাও। আমি তোমার মঙ্গলাকাংখী।”




(28:21)

فَخَرَجَ مِنْهَا خَآئِفًا یَّتَرَقَّبُ١٘ قَالَ رَبِّ نَجِّنِیْ مِنَ الْقَوْمِ الظّٰلِمِیْنَ۠




অনুবাদ:    এ খবর শুনতেই মূসা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বেরিয়ে পড়লো এবং সে দোয়া করলো, “হে আমার রব! আমাকে জালেমদের হাত থেকে বাঁচাও।”




(28:22)

وَ لَمَّا تَوَجَّهَ تِلْقَآءَ مَدْیَنَ قَالَ عَسٰى رَبِّیْۤ اَنْ یَّهْدِیَنِیْ سَوَآءَ السَّبِیْلِ




অনুবাদ:    (মিসর থেকে বের হয়ে) যখন মূসা মাদয়ানের দিকে রওয়ানা হলো তখন সে বললো, “আশা করি আমার রব আমাকে সঠিক পথে চালিত করবেন।”




(28:23)

وَ لَمَّا وَرَدَ مَآءَ مَدْیَنَ وَجَدَ عَلَیْهِ اُمَّةً مِّنَ النَّاسِ یَسْقُوْنَ١٘۬ وَ وَجَدَ مِنْ دُوْنِهِمُ امْرَاَتَیْنِ تَذُوْدٰنِ١ۚ قَالَ مَا خَطْبُكُمَا١ؕ قَالَتَا لَا نَسْقِیْ حَتّٰى یُصْدِرَ الرِّعَآءُ١ٚ وَ اَبُوْنَا شَیْخٌ كَبِیْرٌ




অনুবাদ:    আর যখন সে মাদয়ানের কুয়ার কাছে পৌঁছল, সে দেখলো, অনেক লোক তাদের পশুদের পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের থেকে আলাদা হয়ে একদিকে দু’টি মেয়ে নিজেদের পশুগুলো আগলে রাখছে। মূসা মেয়ে দু’টিকে জিজ্ঞেস করলো, “তোমাদের সমস্যা কি?” তারা বললো, “আমরা আমাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান করাতে পারি না যতক্ষণ না এ রাখালেরা তাদের জানোয়ারগুলো সরিয়ে নিয়ে যায়, আর আমাদের পিতা একজন অতি বৃদ্ধ ব্যক্তি।”




(28:24)

فَسَقٰى لَهُمَا ثُمَّ تَوَلّٰۤى اِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ اِنِّیْ لِمَاۤ اَنْزَلْتَ اِلَیَّ مِنْ خَیْرٍ فَقِیْرٌ




অনুবাদ:    একথা শুনে মূসা তাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান করিয়ে দিল। তারপর সে একটি ছায়ায় গিয়ে বসলো এবং বললো, “হে আমার প্রতিপালক! যে কল্যাণই তুমি আমার প্রতি নাযিল করবে আমি তার মুখাপেক্ষী।”




(28:25)

فَجَآءَتْهُ اِحْدٰىهُمَا تَمْشِیْ عَلَى اسْتِحْیَآءٍ١٘ قَالَتْ اِنَّ اَبِیْ یَدْعُوْكَ لِیَجْزِیَكَ اَجْرَ مَا سَقَیْتَ لَنَا١ؕ فَلَمَّا جَآءَهٗ وَ قَصَّ عَلَیْهِ الْقَصَصَ١ۙ قَالَ لَا تَخَفْ١۫ٙ نَجَوْتَ مِنَ الْقَوْمِ الظّٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    (বেশিক্ষণ অতিবাহিত হয়নি এমন সময়) ঐ দু’টি মেয়ের মধ্য থেকে একজন লজ্জাজড়িত পদ বিক্ষেপে তার কাছে এলো এবং বলতে লাগলো, “আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, আপনি আমাদের জানোয়ারগুলোকে যে পানি পান করিয়েছেন আপনাকে তার পারিশ্রমিক দেয়ার জন্য।” মূসা যখন তার কাছে পৌঁছল এবং নিজের সমস্ত কাহিনী তাকে শুনালো তখন সে বললো, “ভয় করো না, এখন তুমি জালেমদের হাত থেকে বেঁচে গেছো।”




(28:26)

قَالَتْ اِحْدٰىهُمَا یٰۤاَبَتِ اسْتَاْجِرْهُ١٘ اِنَّ خَیْرَ مَنِ اسْتَاْجَرْتَ الْقَوِیُّ الْاَمِیْنُ




অনুবাদ:    মেয়ে দু'জনের একজন তার পিতাকে বললো, “আব্বাজান! একে চাকরিতে নিয়োগ করো, কর্মচারী হিসেবে ব্যক্তিই উত্তম হতে পারে যে বলশালী ও আমানতদার।”




(28:27)

قَالَ اِنِّیْۤ اُرِیْدُ اَنْ اُنْكِحَكَ اِحْدَى ابْنَتَیَّ هٰتَیْنِ عَلٰۤى اَنْ تَاْجُرَنِیْ ثَمٰنِیَ حِجَجٍ١ۚ فَاِنْ اَتْمَمْتَ عَشْرًا فَمِنْ عِنْدِكَ١ۚ وَ مَاۤ اُرِیْدُ اَنْ اَشُقَّ عَلَیْكَ١ؕ سَتَجِدُنِیْۤ اِنْ شَآءَ اللّٰهُ مِنَ الصّٰلِحِیْنَ




অনুবাদ:    তার পিতা (মূসাকে) বললো, ) “আমি আমার এ দু’মেয়ের মধ্য থেকে একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে চাই। শর্ত হচ্ছে, তোমাকে আট বছর আমার এখানে চাকরি করতে হবে। আর যদি দশ বছর পুরো করে দাও, তাহলে তা তোমার ইচ্ছা। আমি তোমার ওপর কড়াকড়ি করতে চাই না। তুমি ইনশাআল্লাহ আমাকে সৎলোক হিসেবেই পাবে।




(28:28)

قَالَ ذٰلِكَ بَیْنِیْ وَ بَیْنَكَ١ؕ اَیَّمَا الْاَجَلَیْنِ قَضَیْتُ فَلَا عُدْوَانَ عَلَیَّ١ؕ وَ اللّٰهُ عَلٰى مَا نَقُوْلُ وَكِیْلٌ۠




অনুবাদ:    মূসা জবাব দিল, “আমার ও আপনার মধ্যে একথা স্থিরীকৃত হয়ে গেলো, এ দু’টি মেয়াদের মধ্য থেকে যেটাই আমি পূরণ করে দেবো তারপর আমার ওপর যেন কোন চাপ দেয়া না হয়। আর যা কিছু দাবী ও অঙ্গীকার আমরা করছি আল্লাহ‌ তার তত্বাবধায়ক।”




(28:29)

فَلَمَّا قَضٰى مُوْسَى الْاَجَلَ وَ سَارَ بِاَهْلِهٖۤ اٰنَسَ مِنْ جَانِبِ الطُّوْرِ نَارًا١ۚ قَالَ لِاَهْلِهِ امْكُثُوْۤا اِنِّیْۤ اٰنَسْتُ نَارًا لَّعَلِّیْۤ اٰتِیْكُمْ مِّنْهَا بِخَبَرٍ اَوْ جَذْوَةٍ مِّنَ النَّارِ لَعَلَّكُمْ تَصْطَلُوْنَ




অনুবাদ:    মূসা যখন মেয়াদ পূর্ণ করে দিল। এবং নিজের পরিবার পরিজন নিয়ে চললো তখন তূর পাহাড়ের দিক থেকে একটি আগুন দেখতে পেলো। সে তার পরিবারবর্গকে বললো, “থামো! আমি একটি আগুন দেখছি, হয়তো আমি সেখান থেকে কোন খবর আনতে পারি অথবা সেই আগুন থেকে কোন অংগারই নিয়ে আসতে পারি যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পারো।”




(28:30)

فَلَمَّاۤ اَتٰىهَا نُوْدِیَ مِنْ شَاطِئِ الْوَادِ الْاَیْمَنِ فِی الْبُقْعَةِ الْمُبٰرَكَةِ مِنَ الشَّجَرَةِ اَنْ یّٰمُوْسٰۤى اِنِّیْۤ اَنَا اللّٰهُ رَبُّ الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    সেখানে পৌঁছার পর উপত্যকার ডান কিনারায় পবিত্র ভূখণ্ডে একটি বৃক্ষ থেকে আহ্বান এলো, “হে মূসা! আমিই আল্লাহ, সমগ্র বিশ্বের অধিপতি।”




(28:31)

وَ اَنْ اَلْقِ عَصَاكَ١ؕ فَلَمَّا رَاٰهَا تَهْتَزُّ كَاَنَّهَا جَآنٌّ وَّلّٰى مُدْبِرًا وَّ لَمْ یُعَقِّبْ١ؕ یٰمُوْسٰۤى اَقْبِلْ وَ لَا تَخَفْ١۫ اِنَّكَ مِنَ الْاٰمِنِیْنَ




অনুবাদ:    আর (হুকুম দেয়া হলো) ছুঁড়ে দাও তোমার লাঠিটি। যখনই মূসা দেখলো লাঠিটি সাপের মতো মোচড় খাচ্ছে তখনই সে পেছন ফিরে ছুটতে লাগলো এবং একবার ফিরেও তাকালো না। বলা হলো, “হে মূসা! ফিরে এসো এবং ভয় করো না, তুমি সম্পূর্ণ নিরাপদ।




(28:32)

اُسْلُكْ یَدَكَ فِیْ جَیْبِكَ تَخْرُجْ بَیْضَآءَ مِنْ غَیْرِ سُوْٓءٍ١٘ وَّ اضْمُمْ اِلَیْكَ جَنَاحَكَ مِنَ الرَّهْبِ فَذٰنِكَ بُرْهَانٰنِ مِنْ رَّبِّكَ اِلٰى فِرْعَوْنَ وَ مَلَاۡئِهٖ١ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا قَوْمًا فٰسِقِیْنَ




অনুবাদ:    তোমার হাত বগলে রাখো উজ্জল হয়ে বের হয়ে আসবে কোন প্রকার কষ্ট ছাড়াই। এবং ভীতিমুক্ত হবার জন্য নিজের হাত দু’টি চেপে ধরো। এ দু’টি উজ্জল নিদর্শন তোমার রবের পক্ষ থেকে ফেরাউন ও তার সভাসদদের সামনে পেশ করার জন্য, তারা বড়ই নাফরমান।”




(28:33)

قَالَ رَبِّ اِنِّیْ قَتَلْتُ مِنْهُمْ نَفْسًا فَاَخَافُ اَنْ یَّقْتُلُوْنِ




অনুবাদ:    মূসা নিবেদন করলো, “হে আমার প্রভু! আমি যে তাদের একজন লোককে হত্যা করে ফেলেছি, ভয় হচ্ছে, তারা আমাকে মেরে ফেলবে।




(28:34)

وَ اَخِیْ هٰرُوْنُ هُوَ اَفْصَحُ مِنِّیْ لِسَانًا فَاَرْسِلْهُ مَعِیَ رِدْاً یُّصَدِّقُنِیْۤ١٘ اِنِّیْۤ اَخَافُ اَنْ یُّكَذِّبُوْنِ




অনুবাদ:    আর আমার ভাই হারূন আমার চেয় বেশী বাকপটু, তাকে সাহায্যকারী হিসেবে আমার সাথে পাঠাও, যাতে সে আমাকে সমর্থন দেয়, আমার ভয় হচ্ছে, তারা আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করবে।”




(28:35)

قَالَ سَنَشُدُّ عَضُدَكَ بِاَخِیْكَ وَ نَجْعَلُ لَكُمَا سُلْطٰنًا فَلَا یَصِلُوْنَ اِلَیْكُمَا١ۛۚ بِاٰیٰتِنَاۤ١ۛۚ اَنْتُمَا وَ مَنِ اتَّبَعَكُمَا الْغٰلِبُوْنَ




অনুবাদ:    বললেন, তোমার ভাইয়ের সাহায্যে আমি তোমার শক্তি বৃদ্ধি করবো এবং তোমাদের দু’জনকে এমনই প্রতিপত্তি দান করবো যে, তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আমার নিদর্শনগুলোর জোরে তোমরা ও তোমাদের অনুসারীরাই বিজয় লাভ করবে।”




(28:36)

فَلَمَّا جَآءَهُمْ مُّوْسٰى بِاٰیٰتِنَا بَیِّنٰتٍ قَالُوْا مَا هٰذَاۤ اِلَّا سِحْرٌ مُّفْتَرًى وَّ مَا سَمِعْنَا بِهٰذَا فِیْۤ اٰبَآئِنَا الْاَوَّلِیْنَ




অনুবাদ:    তারপর মূসা যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে পৌঁছলো তখন তারা বললো, এসব বানোয়াট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়। আর এসব কথা তো আমরা আমাদের বাপ দাদার কালে কখনো শুনিনি।




(28:37)

وَ قَالَ مُوْسٰى رَبِّیْۤ اَعْلَمُ بِمَنْ جَآءَ بِالْهُدٰى مِنْ عِنْدِهٖ وَ مَنْ تَكُوْنُ لَهٗ عَاقِبَةُ الدَّارِ١ؕ اِنَّهٗ لَا یُفْلِحُ الظّٰلِمُوْنَ




অনুবাদ:    মূসা জবাব দিল, “আমার রব তার অবস্থা ভালো জানেন, যে তার পক্ষ থেকে পথনির্দেশনা নিয়ে এসেছে এবং কার শেষ পরিণতি ভালো হবে তাও তিনিই ভালো জানেন, আসলে জালেম কখনো সফলকাম হয় না।”




(28:38)

وَ قَالَ فِرْعَوْنُ یٰۤاَیُّهَا الْمَلَاُ مَا عَلِمْتُ لَكُمْ مِّنْ اِلٰهٍ غَیْرِیْ١ۚ فَاَوْقِدْ لِیْ یٰهَامٰنُ عَلَى الطِّیْنِ فَاجْعَلْ لِّیْ صَرْحًا لَّعَلِّیْۤ اَطَّلِعُ اِلٰۤى اِلٰهِ مُوْسٰى١ۙ وَ اِنِّیْ لَاَظُنُّهٗ مِنَ الْكٰذِبِیْنَ




অনুবাদ:    আর ফেরাউন বললো, “হে সভাসদবর্গ! তো আমি নিজেকে ছাড়া তোমাদের আর কোন প্রভু আছে বলে জানি না। ওহে হামান! আমার জন্য ইট পুড়িয়ে একটি উঁচু প্রাসাদ তৈরি করো, হয়তো তাতে উঠে আমি মূসার প্রভুকে দেখতে পাবো, আমিতো তাঁকে মিথ্যুক মনে করি।”




(28:39)

وَ اسْتَكْبَرَ هُوَ وَ جُنُوْدُهٗ فِی الْاَرْضِ بِغَیْرِ الْحَقِّ وَ ظَنُّوْۤا اَنَّهُمْ اِلَیْنَا لَا یُرْجَعُوْنَ




অনুবাদ:    সে এবং তার সৈন্যরা পৃথিবীতে কোন সত্য ছাড়াই নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার করলো এবং মনে করলো তাদের কখনো আমার কাছে ফিরে আসতে হবে না।




(28:40)

فَاَخَذْنٰهُ وَ جُنُوْدَهٗ فَنَبَذْنٰهُمْ فِی الْیَمِّ١ۚ فَانْظُرْ كَیْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الظّٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    শেষে আমি তাকে ও তার সৈন্যদেরকে পাকড়াও করলাম এবং সাগরে নিক্ষেপ করলাম। এখন এ জালেমদের পরিণাম কি হয়েছে দেখে নাও।




(28:41)

وَ جَعَلْنٰهُمْ اَئِمَّةً یَّدْعُوْنَ اِلَى النَّارِ١ۚ وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ لَا یُنْصَرُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে আমি জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী নেতা করেছিলাম এবং কিয়ামতের দিন তারা কোথাও থেকে কোন সাহায্য লাভ করতে পারবে না।




(28:42)

وَ اَتْبَعْنٰهُمْ فِیْ هٰذِهِ الدُّنْیَا لَعْنَةً١ۚ وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ هُمْ مِّنَ الْمَقْبُوْحِیْنَ۠




অনুবাদ:    এ দুনিয়ায় আমি তাদের পেছনে লাগিয়ে দিয়েছি অভিসম্পাত এবং কিয়ামতের দিন তারা হবে বড়ই ঘৃণার্হ ও ধিকৃত।




(28:43)

وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسَى الْكِتٰبَ مِنْۢ بَعْدِ مَاۤ اَهْلَكْنَا الْقُرُوْنَ الْاُوْلٰى بَصَآئِرَ لِلنَّاسِ وَ هُدًى وَّ رَحْمَةً لَّعَلَّهُمْ یَتَذَكَّرُوْنَ




অনুবাদ:    পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোকে ধ্বংস করার পর আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম লোকদের জন্য আত্মজ্ঞান লাভের সহায়ক। পথনির্দেশনা ও রহমত হিসেবে, যাতে লোকেরা শিক্ষা গ্রহণ করে।




(28:44)

وَ مَا كُنْتَ بِجَانِبِ الْغَرْبِیِّ اِذْ قَضَیْنَاۤ اِلٰى مُوْسَى الْاَمْرَ وَ مَا كُنْتَ مِنَ الشّٰهِدِیْنَۙ




অনুবাদ:    (হে মুহাম্মাদ!) তুমি সে সময় পশ্চিম প্রান্তে উপস্থিত ছিলে না। যখন আমি মূসাকে এ শরীয়াত দান করেছিলাম এবং তুমি সাক্ষীদের অন্তর্ভুক্তও ছিল না।




(28:45)

وَ لٰكِنَّاۤ اَنْشَاْنَا قُرُوْنًا فَتَطَاوَلَ عَلَیْهِمُ الْعُمُرُ١ۚ وَ مَا كُنْتَ ثَاوِیًا فِیْۤ اَهْلِ مَدْیَنَ تَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِنَا١ۙ وَ لٰكِنَّا كُنَّا مُرْسِلِیْنَ




অনুবাদ:    বরং এরপর (তোমার যুগ পর্যন্ত) আমি বহু প্রজন্মের উদ্ভব ঘটিয়েছি এবং তাদের ওপর অনেক যুগ অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তুমি মাদয়ানবাসীদের মধ্যেও উপস্থিত ছিলে না, যাতে তাদেরকে আমার আয়াত শুনাতে পারতে কিন্তু আমি সে সময়কার এসব তথ্য জানাচ্ছি।




(28:46)

وَ مَا كُنْتَ بِجَانِبِ الطُّوْرِ اِذْ نَادَیْنَا وَ لٰكِنْ رَّحْمَةً مِّنْ رَّبِّكَ لِتُنْذِرَ قَوْمًا مَّاۤ اَتٰىهُمْ مِّنْ نَّذِیْرٍ مِّنْ قَبْلِكَ لَعَلَّهُمْ یَتَذَكَّرُوْنَ




অনুবাদ:    আর তুমি তূর পাহাড়ের পাশেও তখন উপস্থিত ছিলে না যখন আমি (মূসাকে প্রথমবার) ডেকেছিলাম। কিন্তু এটা তোমার রবের অনুগ্রহ (যার ফলে তোমাকে এসব তথ্য দেয়া হচ্ছে) যাতে তুমি তাদেরকে সতর্ক করো যাদের কাছে তোমার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসেনি, হয়তো তারা সচেতন হয়ে যাবে।




(28:47)

وَ لَوْ لَاۤ اَنْ تُصِیْبَهُمْ مُّصِیْبَةٌۢ بِمَا قَدَّمَتْ اَیْدِیْهِمْ فَیَقُوْلُوْا رَبَّنَا لَوْ لَاۤ اَرْسَلْتَ اِلَیْنَا رَسُوْلًا فَنَتَّبِعَ اٰیٰتِكَ وَ نَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    (আর আমি এজন্য করেছি যাতে) এমনটি যেন না হয় যে, তাদের নিজেদের কৃতকর্মের বদৌলতে কোন বিপদ তাদের ওপর এসে যায়, আর তারা বলে, “হে আমাদের রব! তুমি কেন আমাদের কাছে কোন রসূল পাঠাওনি? তাহলে তো আমরা তোমার আয়াত মেনে চলতাম এবং ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।




(28:48)

فَلَمَّا جَآءَهُمُ الْحَقُّ مِنْ عِنْدِنَا قَالُوْا لَوْ لَاۤ اُوْتِیَ مِثْلَ مَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰى١ؕ اَوَ لَمْ یَكْفُرُوْا بِمَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰى مِنْ قَبْلُ١ۚ قَالُوْا سِحْرٰنِ تَظٰهَرَا١ٙ۫ وَ قَالُوْۤا اِنَّا بِكُلٍّ كٰفِرُوْنَ




অনুবাদ:    কিন্তু যখন আমার কাছ থেকে সত্য তাদের কাছে পৌঁছে গেলো তখন তারা বলতে লাগলো, মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল কেন তাকে সেসব দেয়া হলো না? এর আগে মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তা কি তারা অস্বীকার করেনি? তারা বললো, “দু’টোই যাদু, যা একে অন্যকে সাহায্য করে।” আর বললো, “আমরা কোনটাই মানি না।”




(28:49)

قُلْ فَاْتُوْا بِكِتٰبٍ مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ هُوَ اَهْدٰى مِنْهُمَاۤ اَتَّبِعْهُ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    (হে নবী!) তাদেরকে বলো, “বেশ, যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তাহলে আনো আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন কিতাব, যা এ দু’টির চাইতে বেশী হিদায়াতদানকারী হবে; আমি তারই অনুসরণ করবো।”




(28:50)

فَاِنْ لَّمْ یَسْتَجِیْبُوْا لَكَ فَاعْلَمْ اَنَّمَا یَتَّبِعُوْنَ اَهْوَآءَهُمْ١ؕ وَ مَنْ اَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوٰىهُ بِغَیْرِ هُدًى مِّنَ اللّٰهِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ۠




অনুবাদ:    এখন যদি তারা তোমার এ দাবী পূর্ণ না করে, তাহলে জেনে রাখো, তারা আসলে নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর হিদায়াত ছাড়াই নিছক নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট আর কে হবে? আল্লাহ‌ এ ধরনের জালেমদেরকে কখনো হিদায়াত দান করেন না।




(28:51)

وَ لَقَدْ وَصَّلْنَا لَهُمُ الْقَوْلَ لَعَلَّهُمْ یَتَذَكَّرُوْنَؕ




অনুবাদ:    আর আমি তো অনবরত তাদের কাছে (উপদেশ বাণী) পৌঁছিয়ে দিয়েছি, যাতে তারা গাফলতি থেকে সজাগ হয়ে যায়।




(28:52)

اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلِهٖ هُمْ بِهٖ یُؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    যাদেরকে আমি এর আগে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এর (কুরআন) প্রতি ঈমান আনে।




(28:53)

وَ اِذَا یُتْلٰى عَلَیْهِمْ قَالُوْۤا اٰمَنَّا بِهٖۤ اِنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّنَاۤ اِنَّا كُنَّا مِنْ قَبْلِهٖ مُسْلِمِیْنَ




অনুবাদ:    আর যখন তাদেরকে এটা শুনানো হয়, তারা বলো, “আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি, এটি যথার্থই সত্য আমাদের রবের পক্ষ থেকে, আমরা তো আগে থেকেই মুসলিম।”




(28:54)

اُولٰٓئِكَ یُؤْتَوْنَ اَجْرَهُمْ مَّرَّتَیْنِ بِمَا صَبَرُوْا وَ یَدْرَءُوْنَ بِالْحَسَنَةِ السَّیِّئَةَ وَ مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ یُنْفِقُوْنَ




অনুবাদ:    তারা এমন লোক যাদেরকে দু’বার পারিশ্রমিক দেয়া হবে এমন অবিচলতার প্রতিদানে যা তারা দেখিয়েছে। তারা ভালো দিয়ে মন্দের মোকাবিলা করেছে এবং আমি তাদেরকে যা কিছু রিযিক দিয়েছি তা ব্যয় করে।




(28:55)

وَ اِذَا سَمِعُوا اللَّغْوَ اَعْرَضُوْا عَنْهُ وَ قَالُوْا لَنَاۤ اَعْمَالُنَا وَ لَكُمْ اَعْمَالُكُمْ١٘ سَلٰمٌ عَلَیْكُمْ١٘ لَا نَبْتَغِی الْجٰهِلِیْنَ




অনুবাদ:    আর যখন তারা বাজে কথা শুনেছে, একথা বলে তা থেকে আলাদা হয়ে গেছে যে, “আমাদের কর্মকাণ্ড আমাদের জন্য এবং তোমাদের কর্মকাণ্ড তোমাদের জন্য, তোমাদের প্রতি সালাম, আমরা মূর্খদের মতো পথ অবলম্বন করতে চাই না।”




(28:56)

اِنَّكَ لَا تَهْدِیْ مَنْ اَحْبَبْتَ وَ لٰكِنَّ اللّٰهَ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ١ۚ وَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِیْنَ




অনুবাদ:    হে নবী! তুমি যাকে চাও তাকে হিদায়াত দান করতে পারো না কিন্তু আল্লাহ‌ যাকে চান তাকে হিদায়াত দান করেন এবং যারা হিদায়াত গ্রহণ করে তাদেরকে তিনি খুব ভাল করেই জানেন।




(28:57)

وَ قَالُوْۤا اِنْ نَّتَّبِعِ الْهُدٰى مَعَكَ نُتَخَطَّفْ مِنْ اَرْضِنَا١ؕ اَوَ لَمْ نُمَكِّنْ لَّهُمْ حَرَمًا اٰمِنًا یُّجْبٰۤى اِلَیْهِ ثَمَرٰتُ كُلِّ شَیْءٍ رِّزْقًا مِّنْ لَّدُنَّا وَ لٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    তারা বলে, “যদি আমরা তোমার সাথে এ হেদায়াতের অনুসরণ করি তাহলে নিজেদের দেশ থেকে আমাদেরকে উৎখাত করে দেয়া হবে।” এটা কি সত্য নয়, একটি নিরাপদ হারমকে আমি তাদের জন্য অবস্থানস্থলে পরিণত করেছি, যেদিকে সব ধরনের ফলমূল চলে আসে আমার পক্ষ থেকে রিযিক হিসেবে? কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।




(28:58)

وَ كَمْ اَهْلَكْنَا مِنْ قَرْیَةٍۭ بَطِرَتْ مَعِیْشَتَهَا١ۚ فَتِلْكَ مَسٰكِنُهُمْ لَمْ تُسْكَنْ مِّنْۢ بَعْدِهِمْ اِلَّا قَلِیْلًا١ؕ وَ كُنَّا نَحْنُ الْوٰرِثِیْنَ




অনুবাদ:    আর এমন কত জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যেখানকার লোকেরা তাদের সম্পদ-সম্পত্তির দম্ভ করতো। কাজেই দেখে নাও, ঐসব তাদের ঘরবাড়ি পড়ে আছে, যেগুলোর মধ্যে তাদের পরে কদাচিৎ কেউ বসবাস করেছে, শেষ পর্যন্ত আমিই হয়েছি উত্তরাধিকারী।




(28:59)

وَ مَا كَانَ رَبُّكَ مُهْلِكَ الْقُرٰى حَتّٰى یَبْعَثَ فِیْۤ اُمِّهَا رَسُوْلًا یَّتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِنَا١ۚ وَ مَا كُنَّا مُهْلِكِی الْقُرٰۤى اِلَّا وَ اَهْلُهَا ظٰلِمُوْنَ




অনুবাদ:    আর তোমার রব জনপদগুলো ধ্বংস করেন না যতক্ষণ না তাদের কেন্দ্রে একজন রসূল পাঠান, যে তাদের কাছে আমার আয়াত শুনায়। আর আমি জনপদগুলো ধ্বংস করি না যতক্ষণ না সেগুলোর বাসিন্দারা জালেম হয়ে যায়।




(28:60)

وَ مَاۤ اُوْتِیْتُمْ مِّنْ شَیْءٍ فَمَتَاعُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ زِیْنَتُهَا١ۚ وَ مَا عِنْدَ اللّٰهِ خَیْرٌ وَّ اَبْقٰى١ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ۠




অনুবাদ:    তোমাদের যা কিছুই দেয়া হয়েছে তা নিছক দুনিয়ার জীবনের সাজ-সরঞ্জাম এবং তার সৌন্দর্য-শোভা আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে তা হচ্ছে তার চেয়ে ভালো এবং অধিকতর স্থায়ী। তোমার কি বিবেচনা করবে না?




(28:61)

اَفَمَنْ وَّعَدْنٰهُ وَعْدًا حَسَنًا فَهُوَ لَاقِیْهِ كَمَنْ مَّتَّعْنٰهُ مَتَاعَ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا ثُمَّ هُوَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ مِنَ الْمُحْضَرِیْنَ




অনুবাদ:    আচ্ছা, যাকে আমি উত্তম প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং সে তা পেতে যাচ্ছে, সে ব্যক্তি কি কখনো এমন ব্যক্তির মতো হতে পারে, যাকে আমি কেবলমাত্র দুনিয়ার জীবনের সাজ-সরঞ্জাম দিয়েছি এবং তারপর কিয়ামতের দিনের শাস্তির জন্য তাকে হাজির করা হবে?




(28:62)

وَ یَوْمَ یُنَادِیْهِمْ فَیَقُوْلُ اَیْنَ شُرَكَآءِیَ الَّذِیْنَ كُنْتُمْ تَزْعُمُوْنَ




অনুবাদ:    আর (তারা যেন ভুলে না যায়) সে দিনটি যখন তিনি তাদেরকে ডাকবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন, “কোথায় তারা যাদেরকে তোমরা আমার শরীক বলে মনে করতে?”




(28:63)

قَالَ الَّذِیْنَ حَقَّ عَلَیْهِمُ الْقَوْلُ رَبَّنَا هٰۤؤُلَآءِ الَّذِیْنَ اَغْوَیْنَا١ۚ اَغْوَیْنٰهُمْ كَمَا غَوَیْنَا١ۚ تَبَرَّاْنَاۤ اِلَیْكَ١٘ مَا كَانُوْۤا اِیَّانَا یَعْبُدُوْنَ




অনুবাদ:    এ উক্তি যাদের ওপর প্রযোজ্য হবে তারা বলবে, “হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই এ লোকদেরকেই আমরা গোমরাহ করেছিলাম। এদেরকে ঠিক সেভাবেই গোমরাহ করেছিলাম যেভাবে আমরা নিজেরা গোমরাহ হয়েছিলাম। আমরা আপনার সামনে দায় মুক্তির কথা প্রকাশ করছি। এরা তো আমাদের বন্দেগী করতো না।”




(28:64)

وَ قِیْلَ ادْعُوْا شُرَكَآءَكُمْ فَدَعَوْهُمْ فَلَمْ یَسْتَجِیْبُوْا لَهُمْ وَ رَاَوُا الْعَذَابَ١ۚ لَوْ اَنَّهُمْ كَانُوْا یَهْتَدُوْنَ




অনুবাদ:    তারপর তাদেরকে বলা হবে, এবার তোমরা যাদেরকে শরীক বানিয়েছিলে তাদেরকে ডাকো। এরা তাদেরকে ডাকবে কিন্তু তারা এদের কোন জবাব দেবে না এবং এরা আযাব দেখে নেবে। হায়! এরা যদি হিদায়াত গ্রহণকারী হতো!




(28:65)

وَ یَوْمَ یُنَادِیْهِمْ فَیَقُوْلُ مَا ذَاۤ اَجَبْتُمُ الْمُرْسَلِیْنَ




অনুবাদ:    আর তারা (যেন না ভুলে যায়) সেদিনের কথা যেদিন তিনি ডাকবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন, “যে রসূল পাঠানো হয়েছিল তাদেরকে তোমরা কি জবাব দিয়েছিলে?”




(28:66)

فَعَمِیَتْ عَلَیْهِمُ الْاَنْۢبَآءُ یَوْمَئِذٍ فَهُمْ لَا یَتَسَآءَلُوْنَ




অনুবাদ:    সেদিন তাদের কোন জবাব থাকবে না, তারা নিজেদের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে না।




(28:67)

فَاَمَّا مَنْ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَعَسٰۤى اَنْ یَّكُوْنَ مِنَ الْمُفْلِحِیْنَ




অনুবাদ:    তবে যে ব্যক্তি আজ তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে সে-ই সাফল্য লাভের আশা করতে পারে।




(28:68)

وَ رَبُّكَ یَخْلُقُ مَا یَشَآءُ وَ یَخْتَارُ١ؕ مَا كَانَ لَهُمُ الْخِیَرَةُ١ؕ سُبْحٰنَ اللّٰهِ وَ تَعٰلٰى عَمَّا یُشْرِكُوْنَ




অনুবাদ:    তোমার রব যা চান সৃষ্টি করেন এবং (তিনি নিজেই নিজের কাজের জন্য যাকে চান) নির্বাচিত করে নেন। এ নির্বাচন তাদের কাজ নয়। আল্লাহ পবিত্র এবং তারা যে শিরক করে তার অনেক ঊর্ধ্বে।




(28:69)

وَ رَبُّكَ یَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُوْرُهُمْ وَ مَا یُعْلِنُوْنَ




অনুবাদ:    তোমার রব জানেন যা কিছু তারা মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখে এবং যা কিছু তারা প্রকাশ করে।




(28:70)

وَ هُوَ اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ١ؕ لَهُ الْحَمْدُ فِی الْاُوْلٰى وَ الْاٰخِرَةِ١٘ وَ لَهُ الْحُكْمُ وَ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ




অনুবাদ:    তিনিই এক আল্লাহ‌ যিনি ছাড়া ইবাদাতের আর কোন হকদার নেই। তাঁরই জন্য প্রশংসা দুনিয়ায়ও, আখেরাতেও। শাসন কর্তৃত্ব তাঁরই এবং তাঁরই দিকে তোমরা ফিরে যাবে।




(28:71)

قُلْ اَرَءَیْتُمْ اِنْ جَعَلَ اللّٰهُ عَلَیْكُمُ الَّیْلَ سَرْمَدًا اِلٰى یَوْمِ الْقِیٰمَةِ مَنْ اِلٰهٌ غَیْرُ اللّٰهِ یَاْتِیْكُمْ بِضِیَآءٍ١ؕ اَفَلَا تَسْمَعُوْنَ




অনুবাদ:    হে নবী! তাদেরকে বলো, তোমরা কি কখনো চিন্তা করেছো, আল্লাহ‌ যদি কিয়ামত পর্যন্ত তোমাদের ওপর চিরকালের জন্য রাত্রিকে অব্যাহত রাখেন, তাহলে আল্লাহ‌ ছাড়া আর কোন্ মাবুদ আছে তোমাদের আলো এনে দেবে? তোমরা কি শুনছো না?




(28:72)

قُلْ اَرَءَیْتُمْ اِنْ جَعَلَ اللّٰهُ عَلَیْكُمُ النَّهَارَ سَرْمَدًا اِلٰى یَوْمِ الْقِیٰمَةِ مَنْ اِلٰهٌ غَیْرُ اللّٰهِ یَاْتِیْكُمْ بِلَیْلٍ تَسْكُنُوْنَ فِیْهِ١ؕ اَفَلَا تُبْصِرُوْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো, আল্লাহ‌ যদি কিয়ামত পর্যন্ত তোমাদের ওপর চিরকালের জন্য দিবস অব্যাহত রাখেন তাহলে আল্লাহ‌ ছাড়া আর কোন্ মাবুদ আছে তোমাদের রাত্রি এনে দেবে, যাতে তোমরা তার মধ্যে বিশ্রাম করতে পারো? তোমরা কি ভেবে দেখছো না? এটা ছিল




(28:73)

وَ مِنْ رَّحْمَتِهٖ جَعَلَ لَكُمُ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ لِتَسْكُنُوْا فِیْهِ وَ لِتَبْتَغُوْا مِنْ فَضْلِهٖ وَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ




অনুবাদ:    তাঁরই অনুগ্রহ, তিনি তোমাদের জন্য তৈরী করেছেন রাত ও দিন, যাতে তোমরা (রাতে) শান্তি এবং (দিনে) নিজের রবের অনুগ্রহ সন্ধান করতে পারো, হয়তো তোমরা শোকরগুজার হবে।




(28:74)

وَ یَوْمَ یُنَادِیْهِمْ فَیَقُوْلُ اَیْنَ شُرَكَآءِیَ الَّذِیْنَ كُنْتُمْ تَزْعُمُوْنَ




অনুবাদ:    (তারা যেন স্মরণ রাখে) সেদিনে কথা যখন তিনি তাদেরকে ডাকবেন, তারপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন, “কোথায় তারা যাদেরকে তোমরা আমার শরীক মনে করতে?




(28:75)

وَ نَزَعْنَا مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ شَهِیْدًا فَقُلْنَا هَاتُوْا بُرْهَانَكُمْ فَعَلِمُوْۤا اَنَّ الْحَقَّ لِلّٰهِ وَ ضَلَّ عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ۠




অনুবাদ:    আর আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে একজন সাক্ষী বের করে আনবো তারপর বলবো, “আনো এবার তোমাদের প্রমাণগুলো।” সে সময় তারা জানবে, সত্য রয়েছে আল্লাহর কাছে এবং তারা যা কিছু মিথ্যা বানিয়ে রেখেছিল তা সবই উধাও হয়ে যাবে।




(28:76)

اِنَّ قَارُوْنَ كَانَ مِنْ قَوْمِ مُوْسٰى فَبَغٰى عَلَیْهِمْ١۪ وَ اٰتَیْنٰهُ مِنَ الْكُنُوْزِ مَاۤ اِنَّ مَفَاتِحَهٗ لَتَنُوْٓاُ بِالْعُصْبَةِ اُولِی الْقُوَّةِ١ۗ اِذْ قَالَ لَهٗ قَوْمُهٗ لَا تَفْرَحْ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الْفَرِحِیْنَ




অনুবাদ:    একথা সত্য, কারূণ ছিল মূসার সম্প্রদায়ের লোক, তারপর সে নিজের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠলো। আর আমি তাকে এতটা ধনরত্ন দিয়ে রেখেছিলাম যে, তাদের চাবিগুলো বলবান লোকদের একটি দল বড় কষ্টে বহন করতে পারতো। একবার যখন এ সম্প্রদায়ের লোকেরা তাকে বললো, “অহংকার করো না, আল্লাহ‌ অহংকারকারীদেরকে পছন্দ করেন না।




(28:77)

وَ ابْتَغِ فِیْمَاۤ اٰتٰىكَ اللّٰهُ الدَّارَ الْاٰخِرَةَ وَ لَا تَنْسَ نَصِیْبَكَ مِنَ الدُّنْیَا وَ اَحْسِنْ كَمَاۤ اَحْسَنَ اللّٰهُ اِلَیْكَ وَ لَا تَبْغِ الْفَسَادَ فِی الْاَرْضِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الْمُفْسِدِیْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহ তোমাকে যে সম্পদ দিয়েছেন তা দিয়ে আখেরাতের ঘর তৈরি করার কথা চিন্তা করো এবং দুনিয়া থেকেও নিজের অংশ ভুলে যেয়ো না। অনুগ্রহ করো যেমন আল্লাহ‌ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করো না। আল্লাহ‌ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না।”




(28:78)

قَالَ اِنَّمَاۤ اُوْتِیْتُهٗ عَلٰى عِلْمٍ عِنْدِیْ١ؕ اَوَ لَمْ یَعْلَمْ اَنَّ اللّٰهَ قَدْ اَهْلَكَ مِنْ قَبْلِهٖ مِنَ الْقُرُوْنِ مَنْ هُوَ اَشَدُّ مِنْهُ قُوَّةً وَّ اَكْثَرُ جَمْعًا١ؕ وَ لَا یُسْئَلُ عَنْ ذُنُوْبِهِمُ الْمُجْرِمُوْنَ




অনুবাদ:    এতে সে বললো, “এসব কিছু তো আমি যে জ্ঞান লাভ করেছি তার ভিত্তিতে আমাকে দেয়া হয়েছে।” --সে কি এ কথা জানতো না যে, আল্লাহ‌ এর পূর্বে এমন বহু লোককে ধ্বংস করে দিয়েছেন যারা এর চেয়ে বেশী বাহুবল ও জনবলের অধিকারী ছিল? অপরাধীদেরকে তো তাদের গোনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় না।




(28:79)

فَخَرَجَ عَلٰى قَوْمِهٖ فِیْ زِیْنَتِهٖ١ؕ قَالَ الَّذِیْنَ یُرِیْدُوْنَ الْحَیٰوةَ الدُّنْیَا یٰلَیْتَ لَنَا مِثْلَ مَاۤ اُوْتِیَ قَارُوْنُ١ۙ اِنَّهٗ لَذُوْ حَظٍّ عَظِیْمٍ




অনুবাদ:    একদিন সে তার সম্প্রদায়ের সামনে বের হলো পূর্ণ জাঁকজমক সহকারে। যারা দুনিয়ার জীবনের ঐশ্বর্যের জন্য লালায়িত ছিল তারা তাকে দেখে বললো, “আহা! কারূণকে যা দেয়া হয়েছে তা যদি আমরাও পেতাম! সে তো বড়ই সৌভাগ্যবান।”




(28:80)

وَ قَالَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْعِلْمَ وَیْلَكُمْ ثَوَابُ اللّٰهِ خَیْرٌ لِّمَنْ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا١ۚ وَ لَا یُلَقّٰىهَاۤ اِلَّا الصّٰبِرُوْنَ




অনুবাদ:    কিন্তু যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছিল তারা বলতে লাগলো, “তোমাদের ভাবগতিক দেখে আফসোস হয়। আল্লাহর সওয়াব তার জন্য ভালো যে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, আর এ সম্পদ সবরকারীরা ছাড়া আর কেউ লাভ করে না।”




(28:81)

فَخَسَفْنَا بِهٖ وَ بِدَارِهِ الْاَرْضَ١۫ فَمَا كَانَ لَهٗ مِنْ فِئَةٍ یَّنْصُرُوْنَهٗ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ١ۗ وَ مَا كَانَ مِنَ الْمُنْتَصِرِیْنَ




অনুবাদ:    শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ও তার গৃহকে ভূগর্ভে পুতে ফেললাম। তখন আল্লাহর মোকাবিলায় তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসার মতো সাহায্যকারীদের কোন দল ছিল না এবং সে নিজেও নিজেকে সাহায্য করতে পারলো না।




(28:82)

وَ اَصْبَحَ الَّذِیْنَ تَمَنَّوْا مَكَانَهٗ بِالْاَمْسِ یَقُوْلُوْنَ وَیْكَاَنَّ اللّٰهَ یَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ وَ یَقْدِرُ١ۚ لَوْ لَاۤ اَنْ مَّنَّ اللّٰهُ عَلَیْنَا لَخَسَفَ بِنَا١ؕ وَیْكَاَنَّهٗ لَا یُفْلِحُ الْكٰفِرُوْنَ۠




অনুবাদ:    যারা আগের দিন তার মতো মর্যাদা লাভের আকাংখা পোষণ করছিল তারা বলতে লাগলো, “আফসোস, আমরা ভুলে গিয়েছিলাম যে, আল্লাহ‌ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা তার রিযিক প্রসারিত করেন এবং যাকে ইচ্ছা তাকে সীমিত রিযিক দেন। যদি আল্লাহ‌ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন, তাহলে আমাদেরও ভূগর্ভে পুতে ফেলতেন। আফসোস, আমাদের মনে ছিল না, কাফেররা সফলকাম হয় না”




(28:83)

تِلْكَ الدَّارُ الْاٰخِرَةُ نَجْعَلُهَا لِلَّذِیْنَ لَا یُرِیْدُوْنَ عُلُوًّا فِی الْاَرْضِ وَ لَا فَسَادًا١ؕ وَ الْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِیْنَ




অনুবাদ:    সে আখেরাতের গৃহ তো আমি তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেবো যারা পৃথিবীতে নিজেদের বড়াই চায় না এবং চায় না বিপর্যয় সৃষ্টি করতে। আর শুভ পরিণাম রয়েছে মুত্তাকীদের জন্যই।




(28:84)

مَنْ جَآءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ خَیْرٌ مِّنْهَا١ۚ وَ مَنْ جَآءَ بِالسَّیِّئَةِ فَلَا یُجْزَى الَّذِیْنَ عَمِلُوا السَّیِّاٰتِ اِلَّا مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    যে কেউ ভাল কাজ নিয়ে আসবে তার জন্য রয়েছে তার চেয়ে ভাল ফল এবং যে কেউ খারাপ কাজ নিয়ে আসে তার জানা উচিৎ যে, অসৎ কর্মশীলরা যেমন কাজ করতো ঠিক তেমনটিই প্রতিদান পাবে।




(28:85)

اِنَّ الَّذِیْ فَرَضَ عَلَیْكَ الْقُرْاٰنَ لَرَآدُّكَ اِلٰى مَعَادٍ١ؕ قُلْ رَّبِّیْۤ اَعْلَمُ مَنْ جَآءَ بِالْهُدٰى وَ مَنْ هُوَ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ




অনুবাদ:    হে নবী! নিশ্চিত জেনো, যিনি এ কুরআন তোমার ওপর ন্যস্ত করেছেন তিনি তোমাকে একটি উত্তম পরিণতিতে পৌঁছিয়ে দেবেন। তাদেরকে বলে দাও, “আমার রব ভালো করেই জানেন কে হিদায়াত নিয়ে এসেছে এবং কে প্রকাশ্য গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে।”




(28:86)

وَ مَا كُنْتَ تَرْجُوْۤا اَنْ یُّلْقٰۤى اِلَیْكَ الْكِتٰبُ اِلَّا رَحْمَةً مِّنْ رَّبِّكَ فَلَا تَكُوْنَنَّ ظَهِیْرًا لِّلْكٰفِرِیْنَ٘




অনুবাদ:    তুমি মোটেই আশা করোনি যে, তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করা হবে। এতো নিছক তোমার রবের মেহেরবানী (তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে) কাজেই তুমি কাফেরদের সাহায্যকারী হয়ো না। ]




(28:87)

وَ لَا یَصُدُّنَّكَ عَنْ اٰیٰتِ اللّٰهِ بَعْدَ اِذْ اُنْزِلَتْ اِلَیْكَ وَ ادْعُ اِلٰى رَبِّكَ وَ لَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَۚ




অনুবাদ:    আর এমনটি যেন কখনো না হয় যে, আল্লাহর আয়াত যখন তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয় তখন কাফেররা তোমাকে তা থেকে বিরত রাখে। নিজের রবের দিকে দাওয়াত দাও এবং কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না




(28:88)

وَ لَا تَدْعُ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ١ۘ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ١۫ كُلُّ شَیْءٍ هَالِكٌ اِلَّا وَجْهَهٗ١ؕ لَهُ الْحُكْمُ وَ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ۠




অনুবাদ:    এবং আল্লাহর সাথে অন্য মাবুদদেরকে ডেকো না। তিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। সব জিনিসই ধ্বংস হবে কেবলমাত্র তাঁর সত্ত্বা ছাড়া। শাসন কর্তৃত্ব একমাত্র তাঁরই এবং তাঁরই দিকে তোমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে।


বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

পারিবারিক সুখ শান্তির জন্য দোয়া।

 আল কুরআন, ২৫  আল-ফুরকান, আয়াত: ৭৪ وَ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْیُنٍ وَّ ا...

জনপ্রিয় লেখা সমূহ