Text Message

আল কুরআন, ৬

 ৬-আনয়াম



(6:0)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ




অনুবাদ:    পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




(6:1)

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ وَ جَعَلَ الظُّلُمٰتِ وَ النُّوْرَ١ؕ۬ ثُمَّ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا بِرَبِّهِمْ یَعْدِلُوْنَ




অনুবাদ:    প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি পৃথিবী ও আকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং অন্ধকার ও আলোর উৎপত্তি ঘটিয়েছেন। তবুও সত্যের দাওয়াত অস্বীকারকারীরা অন্যদেরকে তাদের রবের সমকক্ষ দাঁড় করাচ্ছে।




(6:2)

هُوَ الَّذِیْ خَلَقَكُمْ مِّنْ طِیْنٍ ثُمَّ قَضٰۤى اَجَلًا١ؕ وَ اَجَلٌ مُّسَمًّى عِنْدَهٗ ثُمَّ اَنْتُمْ تَمْتَرُوْنَ




অনুবাদ:    তিনিই তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে। তারপর তোমাদের জন্য নির্ধারিত করেছেন জীবনের একটি সময়সীমা এবং আর একটি সময়সীমাও আছে, যা তাঁর কাছে স্থিরীকৃত, কিন্তু তোমরা কেবল সন্দেহেই লিপ্ত রয়েছে।




(6:3)

وَ هُوَ اللّٰهُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ فِی الْاَرْضِ١ؕ یَعْلَمُ سِرَّكُمْ وَ جَهْرَكُمْ وَ یَعْلَمُ مَا تَكْسِبُوْنَ




অনুবাদ:    তিনিই এক আল্লাহ‌ আকাশেও আছেন এবং পৃথিবীতেও, তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য সব অবস্থান জানেন এবং ভালো বা মন্দ যা-ই তোমাদের উপার্জন করো তাও তিনি ভালোভাবেই অবগত।




(6:4)

وَ مَا تَاْتِیْهِمْ مِّنْ اٰیَةٍ مِّنْ اٰیٰتِ رَبِّهِمْ اِلَّا كَانُوْا عَنْهَا مُعْرِضِیْنَ




অনুবাদ:    মানুষের অবস্থা দাঁড়িয়েছে এই যে, তাদের রবের নিদর্শন সমূহের মধ্য থেকে এমন কোন নিদর্শন নেই যা তাদের সামনে আসার পর তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি।




(6:5)

فَقَدْ كَذَّبُوْا بِالْحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمْ١ؕ فَسَوْفَ یَاْتِیْهِمْ اَنْۢبٰٓؤُا مَا كَانُوْا بِهٖ یَسْتَهْزِءُوْنَ




অনুবাদ:    অনুরূপভাবে এখন যে সত্য তাদের কাছে এসেছে তাকেও তারা মিথ্যা বলেছে। ঠিক আছে, এতদিন পর্যন্ত যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রূপ করে এসেছে শীঘ্রই সে সম্পর্কে কিছু খবর তাদের কাছে পৌঁছবে।




(6:6)

اَلَمْ یَرَوْا كَمْ اَهْلَكْنَا مِنْ قَبْلِهِمْ مِّنْ قَرْنٍ مَّكَّنّٰهُمْ فِی الْاَرْضِ مَا لَمْ نُمَكِّنْ لَّكُمْ وَ اَرْسَلْنَا السَّمَآءَ عَلَیْهِمْ مِّدْرَارًا١۪ وَّ جَعَلْنَا الْاَنْهٰرَ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهِمْ فَاَهْلَكْنٰهُمْ بِذُنُوْبِهِمْ وَ اَنْشَاْنَا مِنْۢ بَعْدِهِمْ قَرْنًا اٰخَرِیْنَ




অনুবাদ:    তারা কি দেখেনি তাদের পূর্বে এমনি ধরনের কত মানব গোষ্ঠীকে আমি ধ্বংস করেছি, যারা নিজ নিজ যুগে ছিল দোর্দণ্ড প্রতাপশালী? পৃথিবীতে তাদেরকে এমন কর্তৃত্ব দিয়েছিলাম, যা তোমাদেরকেও দেইনি। তাদের ওপর আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম এবং তাদের পাদদেশে নদী প্রবাহিত করেছিলাম। (কিন্তু যখন তারা নিয়ামতের প্রতি অকৃজ্ঞতা প্রকাশ করলো তখন) অবশেষে তাদের গোনাহের কারণে তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি এবং তাদের জায়গায় পরবর্তী যুগের মানবগোষ্ঠী সৃষ্টি করেছি।




(6:7)

وَ لَوْ نَزَّلْنَا عَلَیْكَ كِتٰبًا فِیْ قِرْطَاسٍ فَلَمَسُوْهُ بِاَیْدِیْهِمْ لَقَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اِنْ هٰذَاۤ اِلَّا سِحْرٌ مُّبِیْنٌ




অনুবাদ:    হে নবী! যদি তোমার প্রতি কাগজে লেখা কোন কিতাবও নাযিল করতাম এবং লোকেরা নিজেদের হাত দিয়ে তা স্পর্শ করেও দেখে নিতো, তাহলেও আজ যারা সত্যকে অস্বীকার করছে তারা তখন বলতো, এটা সুস্পষ্ট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।




(6:8)

وَ قَالُوْا لَوْ لَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْهِ مَلَكٌ١ؕ وَ لَوْ اَنْزَلْنَا مَلَكًا لَّقُضِیَ الْاَمْرُ ثُمَّ لَا یُنْظَرُوْنَ




অনুবাদ:    তারা বলে, এ নবীর কাছে কোন ফেরেশতা পাঠানো হয় না কেন? যদি ফেরেশতা পাঠাতাম, তাহলে এতদিনে কবেই ফায়সালা হয়ে যেতো, তখন তাদেরকে আর কোন অবকাশই দেয়া হতো না।




(6:9)

وَ لَوْ جَعَلْنٰهُ مَلَكًا لَّجَعَلْنٰهُ رَجُلًا وَّ لَلَبَسْنَا عَلَیْهِمْ مَّا یَلْبِسُوْنَ




অনুবাদ:    যদি ফেরেশতা পাঠাতাম তাহলেও তাকে মানুষের আকৃতিতেই পাঠাতাম এবং এভাবে তাদেরকে ঠিক তেমনি সংশয়ে লিপ্ত করতাম যেমন তারা এখন লিপ্ত রয়েছে।




(6:10)

وَ لَقَدِ اسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّنْ قَبْلِكَ فَحَاقَ بِالَّذِیْنَ سَخِرُوْا مِنْهُمْ مَّا كَانُوْا بِهٖ یَسْتَهْزِءُوْنَ۠




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তোমার পূর্বেও অনেক রসূলের প্রতি বিদ্রূপ করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্রূপকারীরা যে অকাট্য সত্য নিয়ে বিদ্রূপ করতো, সেটাই অবশেষে তাদের ওপর চেপে বসেছিল।




(6:11)

قُلْ سِیْرُوْا فِی الْاَرْضِ ثُمَّ انْظُرُوْا كَیْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِیْنَ




অনুবাদ:    এদেরকে বলে দাও, পৃথিবীর বুকে একটু চলাফেরা করে দেখো, যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কি হয়েছে।




(6:12)

قُلْ لِّمَنْ مَّا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ قُلْ لِّلّٰهِ١ؕ كَتَبَ عَلٰى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ١ؕ لَیَجْمَعَنَّكُمْ اِلٰى یَوْمِ الْقِیٰمَةِ لَا رَیْبَ فِیْهِ١ؕ اَلَّذِیْنَ خَسِرُوْۤا اَنْفُسَهُمْ فَهُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    এদেরকে জিজ্ঞেস করো, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সেগুলো কার? –বলো, সবকিছু আল্লাহরই। অনুগ্রহের পথ অবলম্বন করা তিনি নিজের জন্য অপরিহার্য করে দিয়েছেন। (এ জন্যই তিনি নাফরমানী ও সীমালংঘন করার অপরাধে তোমাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে পাকড়াও করেন না। ) কিয়ামতের দিন তিনি তোমাদের সবাইকে অবশ্যি একত্র করবেন। এটি এমন একটি সত্য যার মধ্যে সংশয়-সন্দেহের কোন অবকাশই নেই। কিন্তু যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে তারা একথা মানে না।




(6:13)

وَ لَهٗ مَا سَكَنَ فِی الَّیْلِ وَ النَّهَارِ١ؕ وَ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ




অনুবাদ:    রাতের আঁধারে ও দিনের আলোয় যা কিছু বিরাজমান সবই আল্লাহর এবং তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন।




(6:14)

قُلْ اَغَیْرَ اللّٰهِ اَتَّخِذُ وَلِیًّا فَاطِرِ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ هُوَ یُطْعِمُ وَ لَا یُطْعَمُ١ؕ قُلْ اِنِّیْۤ اُمِرْتُ اَنْ اَكُوْنَ اَوَّلَ مَنْ اَسْلَمَ وَ لَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ




অনুবাদ:    বলো, আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমি কি আর কাউকে নিজের অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করবো? সেই আল্লাহকে বাদ দিয়ে –যিনি পৃথিবী ও আকাশের স্রষ্টা এবং যিনি জীবিকা দান করেন, জীবিকা গ্রহণ করেন না। বলো, আমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে যেন আমি সবার আগে তাঁর সামনে আনুগত্যের শির নত করি। (আর তাগিদ করা হয়েছে, কেউ শিরক করলে করুক) কিন্তু তুমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।




(6:15)

قُلْ اِنِّیْۤ اَخَافُ اِنْ عَصَیْتُ رَبِّیْ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍ




অনুবাদ:    যদি আমি আমার রবের নাফরমানী করি, তাহলে ভয় হয় একটি মহা (ভয়ংকর) দিনে আমাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।




(6:16)

مَنْ یُّصْرَفْ عَنْهُ یَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمَهٗ١ؕ وَ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْمُبِیْنُ




অনুবাদ:    সেদিন যে ব্যক্তি শাস্তি থেকে রেহাই পাবে আল্লাহ‌ তার প্রতি বড়ই অনুগ্রহ করেছেন এবং এটিই সুস্পষ্ট সাফল্য।




(6:17)

وَ اِنْ یَّمْسَسْكَ اللّٰهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهٗۤ اِلَّا هُوَ١ؕ وَ اِنْ یَّمْسَسْكَ بِخَیْرٍ فَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ




অনুবাদ:    যদি আল্লাহ‌ তোমার কোন ধরনের ক্ষতি করেন তাহলে তিনি ছাড়া আর কেউ নেই যে তোমাকে ঐ ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারে। আর যদি তিনি তোমার কোন কল্যাণ করেন, তাহলে তিনি সবকিছুর ওপর শক্তিশালী।




(6:18)

وَ هُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهٖ١ؕ وَ هُوَ الْحَكِیْمُ الْخَبِیْرُ




অনুবাদ:    তিনি নিজের বান্দাদের ওপর পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন এবং তিনি জ্ঞানী ও সবকিছু জানেন।




(6:19)

قُلْ اَیُّ شَیْءٍ اَكْبَرُ شَهَادَةً١ؕ قُلِ اللّٰهُ١ۙ۫ شَهِیْدٌۢ بَیْنِیْ وَ بَیْنَكُمْ١۫ وَ اُوْحِیَ اِلَیَّ هٰذَا الْقُرْاٰنُ لِاُنْذِرَكُمْ بِهٖ وَ مَنْۢ بَلَغَ١ؕ اَئِنَّكُمْ لَتَشْهَدُوْنَ اَنَّ مَعَ اللّٰهِ اٰلِهَةً اُخْرٰى١ؕ قُلْ لَّاۤ اَشْهَدُ١ۚ قُلْ اِنَّمَا هُوَ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ وَّ اِنَّنِیْ بَرِیْٓءٌ مِّمَّا تُشْرِكُوْنَۘ




অনুবাদ:    এদেরকে জিজ্ঞেস করো, কার সাক্ষ্য সবচেয়ে বড়? –বলো, আল্লাহ‌ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। আর এ কুরআন আমার কাছে পাঠানো হয়েছে অহীর মাধ্যমে, যাতে তোমাদের এবং আর যার যার কাছে এটি পৌঁছে যায় তাদের সবাইকে আমি সতর্ক করি। সত্যিই কি তোমরা এমন সাক্ষ্য দিতে সক্ষম যে, আল্লাহর সাথে আরো ইলাহ আছে? বলে দাও, আমি তো কখনোই এমন সাক্ষ্য দিতে পারি না। বলো, আল্লাহ‌ তো একজনই এবং তোমরা যে শিরকে লিপ্ত রয়েছো আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।




(6:20)

اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْكِتٰبَ یَعْرِفُوْنَهٗ كَمَا یَعْرِفُوْنَ اَبْنَآءَهُمْ١ۘ اَلَّذِیْنَ خَسِرُوْۤا اَنْفُسَهُمْ فَهُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ۠




অনুবাদ:    যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা এ বিষয়টি এমন সন্দেহাতীতভাবে চেনে যেমন নিজেদের সন্তানদেরকে চেনার ব্যাপারে তারা সন্দেহের শিকার হয় না। কিন্তু যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে তারা একথা মানে না।




(6:21)

وَ مَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا اَوْ كَذَّبَ بِاٰیٰتِهٖ١ؕ اِنَّهٗ لَا یُفْلِحُ الظّٰلِمُوْنَ




অনুবাদ:    আর তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা দোষারোপ করে অথবা আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে? অবশ্যি এ ধরনের জালেমরা কখনই সফলকাম হতে পারে না।




(6:22)

وَ یَوْمَ نَحْشُرُهُمْ جَمِیْعًا ثُمَّ نَقُوْلُ لِلَّذِیْنَ اَشْرَكُوْۤا اَیْنَ شُرَكَآؤُكُمُ الَّذِیْنَ كُنْتُمْ تَزْعُمُوْنَ




অনুবাদ:    যেদিন এদের সবাইকে একত্র করবো এবং মুশরিকদেরকে জিজ্ঞেস করবো, এখন তোমাদের মনগড়া সেই শরীকরা কোথায়, যাদেরকে তোমরা নিজেদের ইলাহ মনে করতে?




(6:23)

ثُمَّ لَمْ تَكُنْ فِتْنَتُهُمْ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوْا وَ اللّٰهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِیْنَ




অনুবাদ:    তখন তারা এ (মিথ্যা বিবৃতি দেয়া) ছাড়া আর কোন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারবে না যে, হে আমাদের প্রভু! তোমার কসম, আমরা কখনো মুশরিক ছিলাম না।




(6:24)

اُنْظُرْ كَیْفَ كَذَبُوْا عَلٰۤى اَنْفُسِهِمْ وَ ضَلَّ عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ




অনুবাদ:    দেখো, সে সময় এরা কিভাবে নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে নেবে এবং সেখানে তাদের বানোয়াট মাবূদ উধাও হয়ে যাবে।




(6:25)

وَ مِنْهُمْ مَّنْ یَّسْتَمِعُ اِلَیْكَ١ۚ وَ جَعَلْنَا عَلٰى قُلُوْبِهِمْ اَكِنَّةً اَنْ یَّفْقَهُوْهُ وَ فِیْۤ اٰذَانِهِمْ وَقْرًا١ؕ وَ اِنْ یَّرَوْا كُلَّ اٰیَةٍ لَّا یُؤْمِنُوْا بِهَا١ؕ حَتّٰۤى اِذَا جَآءُوْكَ یُجَادِلُوْنَكَ یَقُوْلُ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اِنْ هٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِیْرُ الْاَوَّلِیْنَ




অনুবাদ:    এদের কিছু লোক কান পেতে তোমার কথা শোনে কিন্তু অবস্থা হচ্ছে এই যে, আমি তাদের অন্তরের ওপর আবরণ ফেলে দিয়েছি যার ফলে তারা এর কিছুই বোঝে না এবং তাদের কানে ভার রেখে দিয়েছি (যার ফলে সবকিছু শোনার পরও তারা কিছুই শোনে না) । তারা যে নিদর্শনই প্রত্যক্ষ করুক তার ওপর ঈমান আনবে না। এমনকি যখন তারা তোমার কাছে এসে তোমার সাথে ঝগড়া করে তখন তাদের মধ্য থেকে যারা অস্বীকার করার সিদ্ধান্ত করে ফেলেছে তারা (সমস্ত কথা শোনার পর) একথাই বলে যে, এটি প্রাচীন কালের একটি গালগল্প ছাড়া আর কিছুই নয়।




(6:26)

وَ هُمْ یَنْهَوْنَ عَنْهُ وَ یَنْئَوْنَ عَنْهُ١ۚ وَ اِنْ یُّهْلِكُوْنَ اِلَّاۤ اَنْفُسَهُمْ وَ مَا یَشْعُرُوْنَ




অনুবাদ:    তারা এ মহাসত্যবাণী গ্রহণ করা থেকে লোকদেরকে বিরত রাখে এবং নিজেরাও এর কাছ থেকে দূরে পালায়। (তারা মনে করে এ ধরনের কাজ করে তারা তোমার কিছু ক্ষতি করছে) অথচ আসলে তারা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংসের পথ প্রশস্ত করছে। কিন্তু এটা তারা উপলব্ধি করে না।




(6:27)

وَ لَوْ تَرٰۤى اِذْ وُقِفُوْا عَلَى النَّارِ فَقَالُوْا یٰلَیْتَنَا نُرَدُّ وَ لَا نُكَذِّبَ بِاٰیٰتِ رَبِّنَا وَ نَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    হায়! যদি তুমি সে সময়ের অবস্থা দেখতে পারতে যখন তাদেরকে জাহান্নামের কিনারে দাঁড় করানো হবে। সে সময় তারা বলবে, হায়! যদি এমন কোন উপায় হতো যার ফলে আমরা আবার দুনিয়ায় প্রেরিত হতাম তখন আমাদের রবের নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা বলতাম না এবং মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম।




(6:28)

بَلْ بَدَا لَهُمْ مَّا كَانُوْا یُخْفُوْنَ مِنْ قَبْلُ١ؕ وَ لَوْ رُدُّوْا لَعَادُوْا لِمَا نُهُوْا عَنْهُ وَ اِنَّهُمْ لَكٰذِبُوْنَ




অনুবাদ:    আসলে একথা তারা নিছক এ জন্য বলবে যে, তারা যে সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল তা সে সময় আবরণমুক্ত হয়ে তাদের সামনে এসে যাবে। নয়তো তাদেরকে যদি আগের জীবনের দিকে ফেরত পাঠানো হয় তাহলে আবার তারা সে সবকিছুই করে যাবে যা করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল। তারা তো মিথ্যুকই




(6:29)

وَ قَالُوْۤا اِنْ هِیَ اِلَّا حَیَاتُنَا الدُّنْیَا وَ مَا نَحْنُ بِمَبْعُوْثِیْنَ




অনুবাদ:    (তাই নিজেদের মনোবাঞ্চা প্রকাশ করার ক্ষেত্রেও তারা মিথ্যারই আশ্রয় নেবে) । আজ এরা বলে, জীবন বলতে যা কিছু আছে, তা কেবল এ দুনিয়ার জীবনটুকুই এবং মরার পর আমাদের আর কোনক্রমেই উঠানো হবে না।




(6:30)

وَ لَوْ تَرٰۤى اِذْ وُقِفُوْا عَلٰى رَبِّهِمْ١ؕ قَالَ اَلَیْسَ هٰذَا بِالْحَقِّ١ؕ قَالُوْا بَلٰى وَ رَبِّنَا١ؕ قَالَ فَذُوْقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ۠




অনুবাদ:    হায়! সেই দৃশ্যটা যদি তোমরা দেখতে পারতে যখন এদেরকে এদের রবের সামনে দাঁড় করানো হবে। সে সময় এদের রব এদেরকে জিজ্ঞেস করবেন, “এটা কি সত্য নয়?” এরা বলবে, “হ্যাঁ, হে আমাদের রব! এটা সত্যই।” তিনি বলবেন, “আচ্ছা, এবার তাহলে নিজেদের সত্য অস্বীকারের ফলস্বরূপ আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো।”




(6:31)

قَدْ خَسِرَ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِلِقَآءِ اللّٰهِ١ؕ حَتّٰۤى اِذَا جَآءَتْهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً قَالُوْا یٰحَسْرَتَنَا عَلٰى مَا فَرَّطْنَا فِیْهَا١ۙ وَ هُمْ یَحْمِلُوْنَ اَوْزَارَهُمْ عَلٰى ظُهُوْرِهِمْ١ؕ اَلَا سَآءَ مَا یَزِرُوْنَ




অনুবাদ:    যারা আল্লাহর সাথে নিজেদের সাক্ষাতের ঘোষণাকে মিথ্যা গণ্য করেছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যখন অকস্মাৎ সে সময় এসে যাবে তখন এরাই বলবে, “হায়, আফসোস! এ ব্যাপারে আমাদের কেমন ভুল হয়ে গেছে।” আর তারা নিজেদের পিঠে নিজেদের গোনাহের বোঝা বহন করতে থাকবে। দেখো, কেমন নিকৃষ্ট বোঝা এরা বহন করে চলেছে!




(6:32)

وَ مَا الْحَیٰوةُ الدُّنْیَاۤ اِلَّا لَعِبٌ وَّ لَهْوٌ١ؕ وَ لَلدَّارُ الْاٰخِرَةُ خَیْرٌ لِّلَّذِیْنَ یَتَّقُوْنَ١ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ




অনুবাদ:    দুনিয়ার জীবন তো একটি খেল-তামাসার ব্যাপার। আসলে যারা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে চায় তাদের জন্য আখেরাতের আবাসই ভালো। তবে কি তোমরা বুদ্ধি-বিবেচনাকে কাজে লাগাবে না?




(6:33)

قَدْ نَعْلَمُ اِنَّهٗ لَیَحْزُنُكَ الَّذِیْ یَقُوْلُوْنَ فَاِنَّهُمْ لَا یُكَذِّبُوْنَكَ وَ لٰكِنَّ الظّٰلِمِیْنَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ یَجْحَدُوْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! একথা অবশ্যি জানি, এরা যেসব কথা তৈরী করে, তা তোমাকে কষ্ট দেয় কিন্তু এরা তোমাকে মিথ্যা বলে না বরং এ জালেমরা আসলে আল্লাহর আয়াতকেই অস্বীকার করছে।




(6:34)

وَ لَقَدْ كُذِّبَتْ رُسُلٌ مِّنْ قَبْلِكَ فَصَبَرُوْا عَلٰى مَا كُذِّبُوْا وَ اُوْذُوْا حَتّٰۤى اَتٰىهُمْ نَصْرُنَا١ۚ وَ لَا مُبَدِّلَ لِكَلِمٰتِ اللّٰهِ١ۚ وَ لَقَدْ جَآءَكَ مِنْ نَّبَاِی الْمُرْسَلِیْنَ




অনুবাদ:    তোমার পূর্বেও অনেক রসূলকে মিথ্যা বলা হয়েছে কিন্তু তাদের ওপর যে মিথ্যা আরোপ করা হয়েছে এবং যে কষ্ট দেয়া হয়েছে, তাতে তাঁরা সবর করেছে। শেষ পর্যন্ত তাদের কাছে আমার সাহায্য পৌঁছে গেছে। আল্লাহর কথাগুলো পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারোর নেই এবং আগের রসূলদের সাথে যা কিছু ঘটে গেছে তার খবর তো তোমার কাছে পৌঁছে গেছে।




(6:35)

وَ اِنْ كَانَ كَبُرَ عَلَیْكَ اِعْرَاضُهُمْ فَاِنِ اسْتَطَعْتَ اَنْ تَبْتَغِیَ نَفَقًا فِی الْاَرْضِ اَوْ سُلَّمًا فِی السَّمَآءِ فَتَاْتِیَهُمْ بِاٰیَةٍ١ؕ وَ لَوْ شَآءَ اللّٰهُ لَجَمَعَهُمْ عَلَى الْهُدٰى فَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْجٰهِلِیْنَ




অনুবাদ:    তবুও যদি তাদের উপেক্ষা তোমার কাছে অসহনীয় হয়ে থাকে তাহলে তোমার মধ্যে কিছু শক্তি থাকলে তুমি ভূগর্ভে কোন সুড়ংগ খুঁজে নাও অথবা আকাশে সিঁড়ি লাগাও এবং তাদের কাছে কোন নিদর্শন আনার চেষ্টা করো। আল্লাহ চাইলে এদের সবাইকে হেদায়াতের ওপর একত্র করতে পারতেন। কাজেই মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।




(6:36)

اِنَّمَا یَسْتَجِیْبُ الَّذِیْنَ یَسْمَعُوْنَ١ؔؕ وَ الْمَوْتٰى یَبْعَثُهُمُ اللّٰهُ ثُمَّ اِلَیْهِ یُرْجَعُوْنَؐ




অনুবাদ:    সত্যের দাওয়াতে তারাই সাড়া দেয় যারা শোনে। আর মৃতদেরকে তো আল্লাহ‌ কবর থেকেই ওঠাবেন, তারপর তাদেরকে (তাঁর আদালতে হাযির হবার জন্য) ফিরিয়ে আনা হবে।




(6:37)

وَ قَالُوْا لَوْ لَا نُزِّلَ عَلَیْهِ اٰیَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ١ؕ قُلْ اِنَّ اللّٰهَ قَادِرٌ عَلٰۤى اَنْ یُّنَزِّلَ اٰیَةً وَّ لٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    তারা বলে, এ নবীর ওপর তাঁর রবের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেন? বলো, আল্লাহ‌ নিদর্শন অবতীর্ণ করার পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক অজ্ঞতায় ডুবে আছে।




(6:38)

وَ مَا مِنْ دَآبَّةٍ فِی الْاَرْضِ وَ لَا طٰٓئِرٍ یَّطِیْرُ بِجَنَاحَیْهِ اِلَّاۤ اُمَمٌ اَمْثَالُكُمْ١ؕ مَا فَرَّطْنَا فِی الْكِتٰبِ مِنْ شَیْءٍ ثُمَّ اِلٰى رَبِّهِمْ یُحْشَرُوْنَ




অনুবাদ:    ভূপৃষ্ঠে বিচরণশীল কোন প্রাণী এবং বাতাসে ডানা বিস্তার করে উড়ে চলা কোন পাখিকেই দেখ না কেন, এরা সবাই তোমাদের মতই বিভিন্ন শ্রেণী। তাদের ভাগ্যলিপিতে কোন কিছু লিখতে আমি বাদ দেইনি। তারপর তাদের সবাইকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে।




(6:39)

وَ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا صُمٌّ وَّ بُكْمٌ فِی الظُّلُمٰتِ١ؕ مَنْ یَّشَاِ اللّٰهُ یُضْلِلْهُ١ؕ وَ مَنْ یَّشَاْ یَجْعَلْهُ عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ




অনুবাদ:    কিন্তু যারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা বলে তারা বধির ও বোবা, তারা অন্ধকারে ডুবে আছে, আল্লাহ যাকে চান বিপথগামী করেন আবার যাকে চান সত্য সরল পথে পরিচালিত করেন।




(6:40)

قُلْ اَرَءَیْتَكُمْ اِنْ اَتٰىكُمْ عَذَابُ اللّٰهِ اَوْ اَتَتْكُمُ السَّاعَةُ اَغَیْرَ اللّٰهِ تَدْعُوْنَ١ۚ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ




অনুবাদ:    এদেরকে বলো, একটু ভেবে চিন্তে বলতো দেখি, যদি তোমাদের ওপর কখনো আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন বড় রকমের বিপদ এসে পড়ে অথবা শেষ সময় এসে যায়, তাহলে সে সময় কি তোমরা আল্লাহ‌ ছাড়া আর কাউকে ডাকো? বলো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।




(6:41)

بَلْ اِیَّاهُ تَدْعُوْنَ فَیَكْشِفُ مَا تَدْعُوْنَ اِلَیْهِ اِنْ شَآءَ وَ تَنْسَوْنَ مَا تُشْرِكُوْنَ۠




অনুবাদ:    তখন তোমরা একমাত্র আল্লাহকেই ডেকে থাকো। তারপর তিনি চাইলে তোমাদেরকে সেই বিপদমুক্ত করেন। যাদেরকে তোমরা তাঁর সাথে শরীক করতে তাদের কথা এ সময় একদম ভুলে গিয়ে থাকো।




(6:42)

وَ لَقَدْ اَرْسَلْنَاۤ اِلٰۤى اُمَمٍ مِّنْ قَبْلِكَ فَاَخَذْنٰهُمْ بِالْبَاْسَآءِ وَ الضَّرَّآءِ لَعَلَّهُمْ یَتَضَرَّعُوْنَ




অনুবাদ:    তোমার পূর্বে অনেক মানব গোষ্ঠীর কাছে আমি রসূল পাঠিয়েছি এবং তাদেরকে বিপদ ও কষ্টের মুখে নিক্ষেপ করেছি, যাতে তারা বিনীতভাবে আমার সামনে মাথা নত করে।




(6:43)

فَلَوْ لَاۤ اِذْ جَآءَهُمْ بَاْسُنَا تَضَرَّعُوْا وَ لٰكِنْ قَسَتْ قُلُوْبُهُمْ وَ زَیَّنَ لَهُمُ الشَّیْطٰنُ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    কাজেই যখন আমার পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কঠোরতা আরোপিত হলো তখন তারা বিনম্র হলো না কেন? বরং তাদের মন আরো বেশী কঠিন হয়ে গেছে এবং শয়তান তাদেরকে এ মর্মে নিশ্চয়তা বিধান করেছে যে, তোমরা যা কিছু করছো ভালই করছো।




(6:44)

فَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُكِّرُوْا بِهٖ فَتَحْنَا عَلَیْهِمْ اَبْوَابَ كُلِّ شَیْءٍ١ؕ حَتّٰۤى اِذَا فَرِحُوْا بِمَاۤ اُوْتُوْۤا اَخَذْنٰهُمْ بَغْتَةً فَاِذَا هُمْ مُّبْلِسُوْنَ




অনুবাদ:    তারপর যখন তারা তাদের যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তা ভুলে গেলো তখন তাদের জন্য সমৃদ্ধির সকল দরজা খুলে দিলাম। শেষ পর্যন্ত তারা যখন তাদেরকে যা কিছু দান করা হয়েছিল তার মধ্যে নিমগ্ন হয়ে গেলো তখন অকস্মাত তাদেরকে পাকড়াও করলাম এবং তখন অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছিল যে, তারা সব রকমের কল্যাণ থেকে নিরাশ হয়ে পড়েছিল।




(6:45)

فَقُطِعَ دَابِرُ الْقَوْمِ الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا١ؕ وَ الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ




অনুবাদ:    এ ভাবে যারা জুলুম করেছিল তাদের শিকড় কেটে দেয়া হলো। আর সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব প্রভু আল্লাহর জন্য (কারণ তিনিই তাদের শিকড় কেটে দিয়েছে) ।




(6:46)

قُلْ اَرَءَیْتُمْ اِنْ اَخَذَ اللّٰهُ سَمْعَكُمْ وَ اَبْصَارَكُمْ وَ خَتَمَ عَلٰى قُلُوْبِكُمْ مَّنْ اِلٰهٌ غَیْرُ اللّٰهِ یَاْتِیْكُمْ بِهٖ١ؕ اُنْظُرْ كَیْفَ نُصَرِّفُ الْاٰیٰتِ ثُمَّ هُمْ یَصْدِفُوْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলো, তোমরা কি কখনো একথা ভেবে দেখেছো, যদি আল্লাহ‌ তোমাদের থেকে তোমাদের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি ছিনিয়ে নেন এবং তোমাদের হৃদয়ে মোহর মেরে দেন তাহলে আল্লাহ‌ ছাড়া আর কোন্‌ ইলাহ আছে যে এ শক্তিগুলো তোমাদের ফিরিয়ে দিতে পারে? দেখো, কিভাবে আমরা বারবার আমাদের নিশানীগুলো তাদের সামনে পেশ করি এবং এরপরও তারা কিভাবে এগুলো থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়।




(6:47)

قُلْ اَرَءَیْتَكُمْ اِنْ اَتٰىكُمْ عَذَابُ اللّٰهِ بَغْتَةً اَوْ جَهْرَةً هَلْ یُهْلَكُ اِلَّا الْقَوْمُ الظّٰلِمُوْنَ




অনুবাদ:    বলো, তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো, যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে অকস্মাৎ অথবা প্রকাশ্যে আযাব এসে যায় তাহলে জালেমরা ছাড়া আর কেউ ধ্বংস হবে কি?




(6:48)

وَ مَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِیْنَ اِلَّا مُبَشِّرِیْنَ وَ مُنْذِرِیْنَ١ۚ فَمَنْ اٰمَنَ وَ اَصْلَحَ فَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ




অনুবাদ:    আমি যে রসূল পাঠাই তা তো কেবল এ জন্যই পাঠাই যে, তারা সৎকর্মশীলদের জন্য সুসংবাদ দানকারী এবং দুষ্কৃতকারীদের জন্য ভীতি প্রদর্শনকারী হবে। তারপর যারা তাদের কথা মেনে নেবে এবং নিজেদের কর্মনীতি সংশোধন করবে তাদের জন্য কোন ভয় ও দুঃখের কারণ নেই।




(6:49)

وَ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا یَمَسُّهُمُ الْعَذَابُ بِمَا كَانُوْا یَفْسُقُوْنَ




অনুবাদ:    আর যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা বলবে তাদেরকে নিজেদের নাফরমানীর শাস্তি ভোগ করতেই হবে।




(6:50)

قُلْ لَّاۤ اَقُوْلُ لَكُمْ عِنْدِیْ خَزَآئِنُ اللّٰهِ وَ لَاۤ اَعْلَمُ الْغَیْبَ وَ لَاۤ اَقُوْلُ لَكُمْ اِنِّیْ مَلَكٌ١ۚ اِنْ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوْحٰۤى اِلَیَّ١ؕ قُلْ هَلْ یَسْتَوِی الْاَعْمٰى وَ الْبَصِیْرُ١ؕ اَفَلَا تَتَفَكَّرُوْنَ۠




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলো, “আমি তোমাদের একথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধনভাণ্ডার আছে, আমি গায়েবের জ্ঞানও রাখি না এবং তোমাদের একথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো কেবলমাত্র সে অহীর অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি নাযিল করা হয়।” তারপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা-ভাবনা করো না?




(6:51)

وَ اَنْذِرْ بِهِ الَّذِیْنَ یَخَافُوْنَ اَنْ یُّحْشَرُوْۤا اِلٰى رَبِّهِمْ لَیْسَ لَهُمْ مِّنْ دُوْنِهٖ وَلِیٌّ وَّ لَا شَفِیْعٌ لَّعَلَّهُمْ یَتَّقُوْنَ




অনুবাদ:    আর হে মুহাম্মাদ! তুমি এ অহীর জ্ঞানের সাহায্যে তাদেরকে নসিহত করো যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রবের সামনে কখনো এমন অবস্থায় পেশ করা হবে যে, সেখানে তাদের সাহায্য-সমর্থন বা সুপারিশ করার জন্য তিনি ছাড়া আর কেউ (ক্ষমতা ও কর্তৃত্বশালী) থাকবে না। হয়তো (এ নসিহতের কারণে সতর্ক হয়ে) তারা আল্লাহভীতির পথ অবলম্বন করবে।




(6:52)

وَ لَا تَطْرُدِ الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدٰوةِ وَ الْعَشِیِّ یُرِیْدُوْنَ وَجْهَهٗ١ؕ مَا عَلَیْكَ مِنْ حِسَابِهِمْ مِّنْ شَیْءٍ وَّ مَا مِنْ حِسَابِكَ عَلَیْهِمْ مِّنْ شَیْءٍ فَتَطْرُدَهُمْ فَتَكُوْنَ مِنَ الظّٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    আর যারা তাদের রবকে দিন-রাত ডাকতে থাকে এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রচেষ্টারত থাকে তাদেরকে তোমার কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিয়ো না। তাদের কৃতকর্ম থেকে কোন জিনিসের (জবাবদিহির) দায়িত্ব তোমার ওপর নেই এবং তোমার কৃতকর্ম থেকেও কোন জিনিসের (জবাবদিহির) দায়িত্ব তাদের ওপর নেই। এ সত্ত্বেও যদি তুমি তাদেরকে দূরে ঠেলে দাও তাহলে তুমি জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।




(6:53)

وَ كَذٰلِكَ فَتَنَّا بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لِّیَقُوْلُوْۤا اَهٰۤؤُلَآءِ مَنَّ اللّٰهُ عَلَیْهِمْ مِّنْۢ بَیْنِنَا١ؕ اَلَیْسَ اللّٰهُ بِاَعْلَمَ بِالشّٰكِرِیْنَ




অনুবাদ:    আসলে আমি এভাবে মানুষের মধ্য থেকে এক দলকে আর এক দলের সাহায্যে পরীক্ষা করেছি, যাতে তারা এদেরকে দেখে বলে, “এরা কি সেসব লোক, আমাদের মধ্য থেকে যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন?” –হ্যাঁ, আল্লাহ কি তাঁর শোকরগুজার বান্দা কারা, সেটা এদের চাইতে বেশী জানেন না?




(6:54)

وَ اِذَا جَآءَكَ الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِاٰیٰتِنَا فَقُلْ سَلٰمٌ عَلَیْكُمْ كَتَبَ رَبُّكُمْ عَلٰى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ١ۙ اَنَّهٗ مَنْ عَمِلَ مِنْكُمْ سُوْٓءًۢا بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابَ مِنْۢ بَعْدِهٖ وَ اَصْلَحَ فَاَنَّهٗ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ




অনুবাদ:    আমার আয়াতের প্রতি যারা ঈমান আনে তারা যখন তোমার কাছে আসে তখন তাদেরকে বলো, “তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।” তোমাদের রব দয়া ও অনুগ্রহের নীতি নিজের জন্য অপরিহার্য করে নিয়েছেন। তোমাদের কেউ যদি অজ্ঞতা বশত কোন খারাপ কাজ করে বসে, তারপর তাওবা করে এবং সংশোধন করে নেয়, তাহলে তিনি তাকে মাফ করে দেন এবং নরম নীতি অবলম্বন করেন, এটি তাঁর দয়া ও অনুগ্রহেরই প্রকাশ।




(6:55)

وَ كَذٰلِكَ نُفَصِّلُ الْاٰیٰتِ وَ لِتَسْتَبِیْنَ سَبِیْلُ الْمُجْرِمِیْنَ۠




অনুবাদ:    আর এভাবে আমি আমার নিশানীগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করে থাকি যাতে অপরাধীদের পথ একেবারে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।




(6:56)

قُلْ اِنِّیْ نُهِیْتُ اَنْ اَعْبُدَ الَّذِیْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ١ؕ قُلْ لَّاۤ اَتَّبِعُ اَهْوَآءَكُمْ١ۙ قَدْ ضَلَلْتُ اِذًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُهْتَدِیْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলে দাও, তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য যাদেরকে ডাকো তাদের বন্দেগী করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। বলো, আমি তোমাদের ইচ্ছা-বাসনার অনুসরণ করবো না। এমনটি করলে আমি বিপথগামী হবো এবং সরল-সত্য পথ লাভকারীদের অন্তর্ভুক্ত থাকবো না।




(6:57)

قُلْ اِنِّیْ عَلٰى بَیِّنَةٍ مِّنْ رَّبِّیْ وَ كَذَّبْتُمْ بِهٖ١ؕ مَا عِنْدِیْ مَا تَسْتَعْجِلُوْنَ بِهٖ١ؕ اِنِ الْحُكْمُ اِلَّا لِلّٰهِ١ؕ یَقُصُّ الْحَقَّ وَ هُوَ خَیْرُ الْفٰصِلِیْنَ




অনুবাদ:    বলো, আমার রবের পক্ষ থেকে আমি একটি উজ্জ্বল প্রমাণের ওপর প্রতিষ্ঠিত আছি এবং তোমরা তাকে মিথ্যা বলেছো। এখন তোমরা যে জিনিসটি তাড়াতাড়ি চাচ্ছো সেটি আমার ক্ষমতার আওতাধীন নয়। ফায়সালার সমস্ত ক্ষমতা আল্লাহর হাতে। তিনিই সত্য বিবৃত করেন এবং তিনিই সবচেয়ে ভাল ফায়সালাকারী।




(6:58)

قُلْ لَّوْ اَنَّ عِنْدِیْ مَا تَسْتَعْجِلُوْنَ بِهٖ لَقُضِیَ الْاَمْرُ بَیْنِیْ وَ بَیْنَكُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ اَعْلَمُ بِالظّٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    বলো, তোমরা যে জিনিসটি তাড়াতাড়ি চাচ্ছো সেটি যদি আমার আওতার মধ্যে থাকতো তাহলে তো আমার ও তোমাদের মধ্যে কবেই ফায়সালা হয়ে যেতো। কিন্তু জালেমদের সাথে কোন্‌ ধরনের ব্যবহার করা উচিত তা আল্লাহই ভাল জানেন।




(6:59)

وَ عِنْدَهٗ مَفَاتِحُ الْغَیْبِ لَا یَعْلَمُهَاۤ اِلَّا هُوَ١ؕ وَ یَعْلَمُ مَا فِی الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ١ؕ وَ مَا تَسْقُطُ مِنْ وَّرَقَةٍ اِلَّا یَعْلَمُهَا وَ لَا حَبَّةٍ فِیْ ظُلُمٰتِ الْاَرْضِ وَ لَا رَطْبٍ وَّ لَا یَابِسٍ اِلَّا فِیْ كِتٰبٍ مُّبِیْنٍ




অনুবাদ:    তাঁরই কাছে আছে অদৃশ্যের চাবি, তিনি ছাড়া আর কেউ তা জানে না। জলে- স্থলে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন। তাঁর অজ্ঞাতসারে গাছের একটি পাতাও পড়ে না। মৃত্তিকার অন্ধকার প্রদেশে এমন একটি শস্যকণাও নেই যে সম্পর্কে তিনি অবগত নন। শুষ্ক ও আর্দ্র সবকিছুই একটি সুস্পষ্ট কিতাবে লিখিত আছে।




(6:60)

وَ هُوَ الَّذِیْ یَتَوَفّٰىكُمْ بِالَّیْلِ وَ یَعْلَمُ مَا جَرَحْتُمْ بِالنَّهَارِ ثُمَّ یَبْعَثُكُمْ فِیْهِ لِیُقْضٰۤى اَجَلٌ مُّسَمًّى١ۚ ثُمَّ اِلَیْهِ مَرْجِعُكُمْ ثُمَّ یُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ۠




অনুবাদ:    তিনিই রাত্রিকালে তোমাদের মৃত্যু ঘটান এবং দিবসে তোমরা যা কিছু করো তা জানেন। আবার পরদিন তোমাদের সেই কর্মজগতে ফেরত পাঠান, যাতে জীবনের নির্ধারিত সময়-কাল পূর্ণ হয়। সবশেষে তাঁরই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে। তখন তিনি জানিয়ে দেবেন তোমরা কি কাজে লিপ্ত ছিলে।




(6:61)

وَ هُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهٖ وَ یُرْسِلُ عَلَیْكُمْ حَفَظَةً١ؕ حَتّٰۤى اِذَا جَآءَ اَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَ هُمْ لَا یُفَرِّطُوْنَ




অনুবাদ:    তিনি নিজের বান্দাদের ওপর পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন এবং তোমাদের ওপর রক্ষক নিযুক্ত করে পাঠান। অবশেষে যখন তোমাদের কারোর মৃত্যুর সময় সমুপস্থিত হয় তখন তাঁর প্রেরিত ফেরেশতারা তার প্রাণ বের করে নেয় এবং নিজেদের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তারা সামান্যতম শৈথিল্যও দেখায় না।




(6:62)

ثُمَّ رُدُّوْۤا اِلَى اللّٰهِ مَوْلٰىهُمُ الْحَقِّ١ؕ اَلَا لَهُ الْحُكْمُ١۫ وَ هُوَ اَسْرَعُ الْحٰسِبِیْنَ




অনুবাদ:    তারপর তাদের প্রকৃত মালিক ও প্রভু আল্লাহর দিকে তাদের সবাইকে ফিরিয়ে আনা হয়। সাবধান হয়ে যাও, ফায়সালা করার যাবতীয় ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছেন একমাত্র তিনিই এবং তিনি হিসেব গ্রহণের ব্যাপারে অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন।




(6:63)

قُلْ مَنْ یُّنَجِّیْكُمْ مِّنْ ظُلُمٰتِ الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ تَدْعُوْنَهٗ تَضَرُّعًا وَّ خُفْیَةً١ۚ لَئِنْ اَنْجٰىنَا مِنْ هٰذِهٖ لَنَكُوْنَنَّ مِنَ الشّٰكِرِیْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এদেরকে জিজ্ঞেস করো, জল-স্থলের গভীর অন্ধকারে কে তোমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে? কার কাছে তোমরা কাতর কণ্ঠে ও চুপে চুপে প্রার্থনা করো? কার কাছে বলে থাকো, এ বিপদ থেকে আমাদের উদ্ধার করলে আমরা অবশ্যি তোমার শোকরগুজারী করবো?




(6:64)

قُلِ اللّٰهُ یُنَجِّیْكُمْ مِّنْهَا وَ مِنْ كُلِّ كَرْبٍ ثُمَّ اَنْتُمْ تُشْرِكُوْنَ




অনুবাদ:    –বলো, আল্লাহ‌ তোমাদের এ থেকে এবং প্রতিটি দুঃখ–কষ্ট থেকে মুক্তি দেন। এরপরও তোমরা অন্যদেরকে তাঁর সাথে শরীক করো।




(6:65)

قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلٰۤى اَنْ یَّبْعَثَ عَلَیْكُمْ عَذَابًا مِّنْ فَوْقِكُمْ اَوْ مِنْ تَحْتِ اَرْجُلِكُمْ اَوْ یَلْبِسَكُمْ شِیَعًا وَّ یُذِیْقَ بَعْضَكُمْ بَاْسَ بَعْضٍ١ؕ اُنْظُرْ كَیْفَ نُصَرِّفُ الْاٰیٰتِ لَعَلَّهُمْ یَفْقَهُوْنَ




অনুবাদ:    বলো, তিনি ওপর থেকে বা তোমাদের পদতল থেকে তোমাদের ওপর কোন আযাব নাযিল করতে অথবা তোমাদের বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে এক দলকে আর এক দলের শক্তির স্বাদ গ্রহণ করিয়ে দিতে সক্ষম। দেখো, আমি কিভাবে বারবার বিভিন্ন পদ্ধতিতে আমার নিদর্শনসমূহ তাদের সামনে পেশ করছি, হয়তো তারা এ সত্যটি অনুধাবন করবে।




(6:66)

وَ كَذَّبَ بِهٖ قَوْمُكَ وَ هُوَ الْحَقُّ١ؕ قُلْ لَّسْتُ عَلَیْكُمْ بِوَكِیْلٍؕ




অনুবাদ:    তোমার জাতি সেটি অস্বীকার করছে। অথচ সেটি সত্য। এদেরকে বলে দাও, আমাকে তোমাদের ওপর হাবিলদার নিযুক্ত করা হয়নি।




(6:67)

لِكُلِّ نَبَاٍ مُّسْتَقَرٌّ١٘ وَّ سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    প্রত্যেকটি খবর প্রকাশিত হবার একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। শীঘ্রই তোমরা নিজেরাই পরিণাম জানতে পারবে।




(6:68)

وَ اِذَا رَاَیْتَ الَّذِیْنَ یَخُوْضُوْنَ فِیْۤ اٰیٰتِنَا فَاَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتّٰى یَخُوْضُوْا فِیْ حَدِیْثٍ غَیْرِهٖ١ؕ وَ اِمَّا یُنْسِیَنَّكَ الشَّیْطٰنُ فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرٰى مَعَ الْقَوْمِ الظّٰلِمِیْنَ




অনুবাদ:    আর হে মুহাম্মাদ! যখন তুমি দেখো, লোকেরা আমার আয়াতের মধ্যে দোষ খুঁজে বেড়াচ্ছে তখন তাদের কাছ থেকে সরে যাও, যে পর্যন্ত না তারা এ আলোচনা বাদ দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত হয়। আর যদি কখনো শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দেয়, তাহলে যখনই তোমার মধ্যে এ ভুলের অনুভূতি জাগে তারপর আর এ জালেম লোকদের কাছে বসো না।




(6:69)

وَ مَا عَلَى الَّذِیْنَ یَتَّقُوْنَ مِنْ حِسَابِهِمْ مِّنْ شَیْءٍ وَّ لٰكِنْ ذِكْرٰى لَعَلَّهُمْ یَتَّقُوْنَ




অনুবাদ:    তাদের কৃতকর্ম থেকে কোন কিছুর দায়-দায়িত্ব সতর্কতা অবলম্বনকারীদের ওপর নেই। তবে নসীহত করা তাদের কর্তব্য। হয়তো তারা ভুল কর্মনীতি অবলম্বন করা থেকে বেঁচে যাবে।




(6:70)

وَ ذَرِ الَّذِیْنَ اتَّخَذُوْا دِیْنَهُمْ لَعِبًا وَّ لَهْوًا وَّ غَرَّتْهُمُ الْحَیٰوةُ الدُّنْیَا وَ ذَكِّرْ بِهٖۤ اَنْ تُبْسَلَ نَفْسٌۢ بِمَا كَسَبَتْ١ۖۗ لَیْسَ لَهَا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَلِیٌّ وَّ لَا شَفِیْعٌ١ۚ وَ اِنْ تَعْدِلْ كُلَّ عَدْلٍ لَّا یُؤْخَذْ مِنْهَا١ؕ اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ اُبْسِلُوْا بِمَا كَسَبُوْا١ۚ لَهُمْ شَرَابٌ مِّنْ حَمِیْمٍ وَّ عَذَابٌ اَلِیْمٌۢ بِمَا كَانُوْا یَكْفُرُوْنَ۠




অনুবাদ:    যারা নিজেদের দ্বীনকে খেল-তামাশায় পরিণত করেছে এবং দুনিয়ার জীবন যাদেরকে প্রতারণায় নিক্ষেপ করেছে তাদেরকে পরিত্যাগ করো। তবে এ কুরআন শুনিয়ে উপদেশ দিতে ও সতর্ক করতে থাকো, যাতে কোন ব্যক্তি নিজের কর্মকাণ্ডের দরুন ধ্বংসের শিকার না হয়, যখন আল্লাহর হাত থেকে তাকে বাঁচাবার জন্য কোন রক্ষাকারী, সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী থাকবে না, আর যদি সে সম্ভাব্য সকল জিনিসের বিনিময়ে নিষ্কৃতি লাভ করতে চায় তাহলে তাও গৃহীত হবে না। কারণ, এ ধরনের লোকেরা তো নিজেরাই নিজেদের কৃতকর্মের ফলে ধরা পড়ে যাবে। নিজেদের সত্য অস্বীকৃতির বিনিময়ে তারা পান করার জন্য পাবে ফুটন্ত পানি আর ভোগ করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।




(6:71)

قُلْ اَنَدْعُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَا یَنْفَعُنَا وَ لَا یَضُرُّنَا وَ نُرَدُّ عَلٰۤى اَعْقَابِنَا بَعْدَ اِذْ هَدٰىنَا اللّٰهُ كَالَّذِی اسْتَهْوَتْهُ الشَّیٰطِیْنُ فِی الْاَرْضِ حَیْرَانَ١۪ لَهٗۤ اَصْحٰبٌ یَّدْعُوْنَهٗۤ اِلَى الْهُدَى ائْتِنَا١ؕ قُلْ اِنَّ هُدَى اللّٰهِ هُوَ الْهُدٰى١ؕ وَ اُمِرْنَا لِنُسْلِمَ لِرَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, আমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদেরকে ডাকবো, যারা আমাদের উপকারও করতে পারে না, অপকারও করতে পারে না? আর আল্লাহ‌ যখন আমাদের সোজা পথ দেখিয়ে দিয়েছেন তখন আবার কি আমরা উল্টো দিকে ফিরে যাবো? আমরা কি নিজেদের অবস্থা সে ব্যক্তির মতো করে নেবো, যাকে শয়তানরা মরুভূমির বুকে পথ ভুলিয়ে দিয়েছে এবং সে হয়রান, পেরেশান ও উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে? অথচ তার সাথীরা তাকে চীৎকার করে ডেকে বলছে, এদিকে এসো, এখানে রয়েছে সোজা পথ? বলো, আসলে আল্লাহর হেদায়াতই একমাত্র সঠিক ও নির্ভুল হেদায়াত এবং তাঁর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছে, বিশ্ব-জাহানের প্রভুর সামনে আনুগত্যের শির নত করে দাও,




(6:72)

وَ اَنْ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اتَّقُوْهُ١ؕ وَ هُوَ الَّذِیْۤ اِلَیْهِ تُحْشَرُوْنَ




অনুবাদ:    নামায কায়েম করো এবং তাঁর নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকো। তাঁরই কাছে তোমাদের সমবেত করা হবে।




(6:73)

وَ هُوَ الَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ بِالْحَقِّ١ؕ وَ یَوْمَ یَقُوْلُ كُنْ فَیَكُوْنُ١ؕ۬ قَوْلُهُ الْحَقُّ١ؕ وَ لَهُ الْمُلْكُ یَوْمَ یُنْفَخُ فِی الصُّوْرِ١ؕ عٰلِمُ الْغَیْبِ وَ الشَّهَادَةِ١ؕ وَ هُوَ الْحَكِیْمُ الْخَبِیْرُ




অনুবাদ:    তিনিই যথাযথভাবে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আর যেদিন তিনি বলবেন, হাশর হয়ে যাও, সেদিনই তা হয়ে যাবে। তাঁর কথা যথার্থ অকাট্য সত্য। আর যেদিন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিন রাজত্ব হবে একমাত্র তাঁরই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন এবং তিনি প্রজ্ঞাময় ও সবকিছু জানেন।




(6:74)

وَ اِذْ قَالَ اِبْرٰهِیْمُ لِاَبِیْهِ اٰزَرَ اَتَتَّخِذُ اَصْنَامًا اٰلِهَةً١ۚ اِنِّیْۤ اَرٰىكَ وَ قَوْمَكَ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ




অনুবাদ:    ইবরাহীমের ঘটনা স্মরণ করো যখন সে তাঁর পিতা আযরকে বলেছিল, “তুমি কি মূর্তিগুলোকে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করছো? আমি তো দেখছি, তুমি ও তোমার জাতি প্রকাশ্য গোমরাহীতে লিপ্ত।




(6:75)

وَ كَذٰلِكَ نُرِیْۤ اِبْرٰهِیْمَ مَلَكُوْتَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ لِیَكُوْنَ مِنَ الْمُوْقِنِیْنَ




অনুবাদ:    ইবরাহীমকে এভাবেই আমি যমীন ও আসমানের রাজ্য পরিচালন ব্যবস্থা দেখাতাম। আর এ জন্য দেখাতাম যে, এভাবে সে দৃঢ় বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।




(6:76)

فَلَمَّا جَنَّ عَلَیْهِ الَّیْلُ رَاٰ كَوْكَبًا١ۚ قَالَ هٰذَا رَبِّیْ١ۚ فَلَمَّاۤ اَفَلَ قَالَ لَاۤ اُحِبُّ الْاٰفِلِیْنَ




অনুবাদ:    অতঃপর যখন রাত তাকে আচ্ছন্ন করলো তখন একটি নক্ষত্র দেখে সে বললোঃ এ আমার রব। কিন্তু যখন তা ডুবে গেলো, সে বললোঃ যারা ডুবে যায় আমি তো তাদের ভক্ত নই।




(6:77)

فَلَمَّا رَاَ الْقَمَرَ بَازِغًا قَالَ هٰذَا رَبِّیْ١ۚ فَلَمَّاۤ اَفَلَ قَالَ لَئِنْ لَّمْ یَهْدِنِیْ رَبِّیْ لَاَكُوْنَنَّ مِنَ الْقَوْمِ الضَّآلِّیْنَ




অনুবাদ:    তারপর যখন চাঁদকে আলো বিকীরণ করতে দেখলো, বললোঃ এ আমার রব। কিন্তু যখন তাও ডুবে গেলো তখন বললোঃ আমার রব যদি আমাকে পথ না দেখাতেন তাহলে আমি পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম।




(6:78)

فَلَمَّا رَاَ الشَّمْسَ بَازِغَةً قَالَ هٰذَا رَبِّیْ هٰذَاۤ اَكْبَرُ١ۚ فَلَمَّاۤ اَفَلَتْ قَالَ یٰقَوْمِ اِنِّیْ بَرِیْٓءٌ مِّمَّا تُشْرِكُوْنَ




অনুবাদ:    এরপর যখন সূর্যকে দীপ্তিমান দেখলো তখন বললোঃ এ আমার রব, এটি সবচেয়ে বড়! কিন্তু তাও যখন ডুবে গেলো তখন ইবরাহীম চীৎকার করে বলে উঠলোঃ “হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! তোমরা যাদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করো তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।




(6:79)

اِنِّیْ وَجَّهْتُ وَجْهِیَ لِلَّذِیْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ حَنِیْفًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِیْنَۚ




অনুবাদ:    আমি তো একনিষ্ঠভাবে নিজের মুখ সেই সত্তার দিকে ফিরিয়ে নিয়েছি যিনি যমীন ও আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং আমি কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।”




(6:80)

وَ حَآجَّهٗ قَوْمُهٗ١ؕ قَالَ اَتُحَآجُّوْٓنِّیْ فِی اللّٰهِ وَ قَدْ هَدٰىنِ١ؕ وَ لَاۤ اَخَافُ مَا تُشْرِكُوْنَ بِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ یَّشَآءَ رَبِّیْ شَیْئًا١ؕ وَسِعَ رَبِّیْ كُلَّ شَیْءٍ عِلْمًا١ؕ اَفَلَا تَتَذَكَّرُوْنَ




অনুবাদ:    তাঁর সম্প্রদায় তাঁর সাথে বিতর্কে লিপ্ত হলো। তাতে সে তাঁর সম্প্রদায়কে বললোঃ তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে আমার সাথে বিতর্ক করছো? অথচ তিনি আমাকে সত্য-সরল পথ দেখিয়ে দিয়েছেন এবং তোমরা যাদেরকে তাঁর সাথে শরীক করছো তাদেরকে আমি ভয় করি না, তবে আমার রব যদি কিছু চান তাহলে অবশ্যি তা হতে পারে। আমার রবের জ্ঞান সকল জিনিসের ওপর পরিব্যাপ্ত। এরপরও কি তোমাদের চেতনার উদয় হবে না?




(6:81)

وَ كَیْفَ اَخَافُ مَاۤ اَشْرَكْتُمْ وَ لَا تَخَافُوْنَ اَنَّكُمْ اَشْرَكْتُمْ بِاللّٰهِ مَا لَمْ یُنَزِّلْ بِهٖ عَلَیْكُمْ سُلْطٰنًا١ؕ فَاَیُّ الْفَرِیْقَیْنِ اَحَقُّ بِالْاَمْنِ١ۚ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَۘ




অনুবাদ:    আর তোমরা যাদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করেছো তাদেরকে আমি কেমন করে ভয় করবো যখন তোমরা এমন সব জিনিসকে আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্বে শরীক করতে ভয় করো না যাদের জন্য তিনি তোমাদের কাছে কোন সনদ অবতীর্ণ করেননি? আমাদের এ দু’দলের মধ্যে কে বেশী নিরাপত্তা লাভের অধিকারী? বলো, যদি তোমরা কিছু জ্ঞানের অধিকারী হয়ে থাকো।




(6:82)

اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ لَمْ یَلْبِسُوْۤا اِیْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ اُولٰٓئِكَ لَهُمُ الْاَمْنُ وَ هُمْ مُّهْتَدُوْنَ۠




অনুবাদ:    আসলে তো নিরাপত্তা ও নিশ্চিন্ততা তাদেরই জন্য এবং সত্য-সরল পথে তারাই পরিচালিত যারা ঈমান এনেছে এবং যারা নিজেদের ঈমানকে জুলুমের সাথে মিশিয়ে ফেলেনি।




(6:83)

وَ تِلْكَ حُجَّتُنَاۤ اٰتَیْنٰهَاۤ اِبْرٰهِیْمَ عَلٰى قَوْمِهٖ١ؕ نَرْفَعُ دَرَجٰتٍ مَّنْ نَّشَآءُ١ؕ اِنَّ رَبَّكَ حَكِیْمٌ عَلِیْمٌ




অনুবাদ:    ইবরাহীমকে তাঁর জাতির মোকাবিলায় আমি এ যুক্তি-প্রমাণ প্রদান করেছিলাম। আমি যাকে চাই উন্নত মর্যাদা দান করি। প্রকৃত সত্য হচ্ছে এই যে, তোমার রব প্রজ্ঞাময় ও জ্ঞানী।




(6:84)

وَ وَهَبْنَا لَهٗۤ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ١ؕ كُلًّا هَدَیْنَا١ۚ وَ نُوْحًا هَدَیْنَا مِنْ قَبْلُ وَ مِنْ ذُرِّیَّتِهٖ دَاوٗدَ وَ سُلَیْمٰنَ وَ اَیُّوْبَ وَ یُوْسُفَ وَ مُوْسٰى وَ هٰرُوْنَ١ؕ وَ كَذٰلِكَ نَجْزِی الْمُحْسِنِیْنَۙ




অনুবাদ:    তারপর আমি ইবরাহীমকে ইসহাক ও ইয়াকূবের মতো সন্তান দিয়েছি এবং সবাইকে সত্য পথ দেখিয়েছি, (সে সত্য পথ যা) ইতিপূর্বে নূহকে দেখিয়েছিলাম। আর তাঁরই বংশধরদের থেকে দাউদ, সুলাইমান, আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারুণকে (হেদায়াত দান করেছি) । এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে তাদের সৎকাজের বদলা দিয়ে থাকি।




(6:85)

وَ زَكَرِیَّا وَ یَحْیٰى وَ عِیْسٰى وَ اِلْیَاسَ١ؕ كُلٌّ مِّنَ الصّٰلِحِیْنَۙ




অনুবাদ:    (তাঁরই সন্তানদের থেকে) যাকারিয়া, ইয়াহিয়া, ঈসা ও ইলিয়াসকে (সত্য পথের পথিক বানিয়েছি) । তাদের প্রত্যেকে ছিল সৎ।




(6:86)

وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ الْیَسَعَ وَ یُوْنُسَ وَ لُوْطًا١ؕ وَ كُلًّا فَضَّلْنَا عَلَى الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    (তাঁরই বংশ থেকে) ইসমাঈল, আল ইয়াসা, ইউনুস ও লূতকে (পথ দেখিয়েছি) । তাদের মধ্য থেকে প্রত্যেককে আমি সমস্ত দুনিয়াবাসীর ওপর মর্যাদা সম্পন্ন করেছি।




(6:87)

وَ مِنْ اٰبَآئِهِمْ وَ ذُرِّیّٰتِهِمْ وَ اِخْوَانِهِمْ١ۚ وَ اجْتَبَیْنٰهُمْ وَ هَدَیْنٰهُمْ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ




অনুবাদ:    তাছাড়া তাদের বাপ-দাদা, সন্তান-সন্ততি ও ভ্রাতৃ সমাজ থেকে অনেককে আমি সম্মানিত করেছি, নিজের খেদমতের জন্য তাদেরকে নির্বাচিত করেছি এবং সত্য-সরল পথের দিকে তাদেরকে পরিচালিত করেছি।




(6:88)

ذٰلِكَ هُدَى اللّٰهِ یَهْدِیْ بِهٖ مَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ١ؕ وَ لَوْ اَشْرَكُوْا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    এটি হচ্ছে আল্লাহর হেদায়াত, নিজের বান্দাদের মধ্য থেকে তিনি যাকে চান তাকে এর সাহায্যে হেদায়াত দান করেন। কিন্তু যদি তারা কোন শির্‌ক করে থাকতো তাহলে তাদের সমস্ত কৃতকর্ম ধ্বংস হয়ে যেতো।




(6:89)

اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحُكْمَ وَ النُّبُوَّةَ١ۚ فَاِنْ یَّكْفُرْ بِهَا هٰۤؤُلَآءِ فَقَدْ وَ كَّلْنَا بِهَا قَوْمًا لَّیْسُوْا بِهَا بِكٰفِرِیْنَ




অনুবাদ:    তাদেরকে আমি কিতাব, হুকুম ও নবুওয়াত দান করেছিলাম। এখন যদি এরা তা মানতে অস্বীকার করে তাহলে (কোন পরোয়া নেই) আমি অন্য এমন কিছু লোকের হাতে এ নিয়ামত সোপর্দ করে দিয়েছি যারা এগুলো অস্বীকার করে না।




(6:90)

اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ هَدَى اللّٰهُ فَبِهُدٰىهُمُ اقْتَدِهْ١ؕ قُلْ لَّاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ اَجْرًا١ؕ اِنْ هُوَ اِلَّا ذِكْرٰى لِلْعٰلَمِیْنَ۠




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! তারাই আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়াত প্রাপ্ত ছিল, তাদেরই পথে তুমি চল এবং বলে দাও, এ (তাবলীগ ও হেদায়াতের) কাজে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন পারিশ্রমিক চাই না। এটি সারা দুনিয়াবাসীর জন্য একটি সাধারণ উপদেশমালা।




(6:91)

وَ مَا قَدَرُوا اللّٰهَ حَقَّ قَدْرِهٖۤ اِذْ قَالُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ عَلٰى بَشَرٍ مِّنْ شَیْءٍ١ؕ قُلْ مَنْ اَنْزَلَ الْكِتٰبَ الَّذِیْ جَآءَ بِهٖ مُوْسٰى نُوْرًا وَّ هُدًى لِّلنَّاسِ تَجْعَلُوْنَهٗ قَرَاطِیْسَ تُبْدُوْنَهَا وَ تُخْفُوْنَ كَثِیْرًا١ۚ وَ عُلِّمْتُمْ مَّا لَمْ تَعْلَمُوْۤا اَنْتُمْ وَ لَاۤ اٰبَآؤُكُمْ١ؕ قُلِ اللّٰهُ١ۙ ثُمَّ ذَرْهُمْ فِیْ خَوْضِهِمْ یَلْعَبُوْنَ




অনুবাদ:    তারা আল্লাহ‌ সম্পর্কে বড়ই ভুল অনুমান করলো যখন তারা বললো, আল্লাহ‌ কোন মানুষের ওপর কিছুই নাযিল করেননি। তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, তাহলে মূসা যে কিতাবটি এনেছিল, যা ছিল সমস্ত মানুষের জন্য আলো ও পথ নির্দেশনা, যাকে তোমরা খণ্ড বিখণ্ড করে রাখছো, কিছু দেখাও আর কিছু লুকিয়ে রাখো এবং যার মাধ্যমে তোমাদের এমন জ্ঞান দান করা হয়েছে, যা তোমাদেরও ছিল না, তোমাদের বাপ-দাদাদেরও ছিল না।---কে তা নাযিল করেছিল কেবল এতটুকুই বলে দাওঃ আল্লাহ, তারপর তাদেরকে তাদের যুক্তিবাদের খেলায় মেতে থাকতে দাও।




(6:92)

وَ هٰذَا كِتٰبٌ اَنْزَلْنٰهُ مُبٰرَكٌ مُّصَدِّقُ الَّذِیْ بَیْنَ یَدَیْهِ وَ لِتُنْذِرَ اُمَّ الْقُرٰى وَ مَنْ حَوْلَهَا١ؕ وَ الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ یُؤْمِنُوْنَ بِهٖ وَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ یُحَافِظُوْنَ




অনুবাদ:    (সে কিতাবের মতো) এটি একটা কিতাব, যা আমি নাযিল করেছি, বড়ই কল্যাণ ও বরকতপূর্ণ, এর পূর্বে যা এসেছিল তার সত্যতা প্রমাণকারী এবং এর সাহায্যে তুমি জনপদসমূহের এ কেন্দ্র (অর্থাৎ মক্কা) ও তার চারপাশের অধিবাসীদেরকে সতর্ক করবে। যারা আখেরাত বিশ্বাস করে তারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনে এবং নিজেদের নামাযগুলো নিয়মিত যথাযথভাবে হেফাজত করে।




(6:93)

وَ مَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا اَوْ قَالَ اُوْحِیَ اِلَیَّ وَ لَمْ یُوْحَ اِلَیْهِ شَیْءٌ وَّ مَنْ قَالَ سَاُنْزِلُ مِثْلَ مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ١ؕ وَ لَوْ تَرٰۤى اِذِ الظّٰلِمُوْنَ فِیْ غَمَرٰتِ الْمَوْتِ وَ الْمَلٰٓئِكَةُ بَاسِطُوْۤا اَیْدِیْهِمْ١ۚ اَخْرِجُوْۤا اَنْفُسَكُمْ١ؕ اَلْیَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُوْنِ بِمَا كُنْتُمْ تَقُوْلُوْنَ عَلَى اللّٰهِ غَیْرَ الْحَقِّ وَ كُنْتُمْ عَنْ اٰیٰتِهٖ تَسْتَكْبِرُوْنَ




অনুবাদ:    আর সে ব্যক্তির চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে যে আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ রটায় অথবা বলে আমার কাছে অহী এসেছে অথচ তার ওপর কোন অহী নাযিল করা হয়নি অথবা যে আল্লাহর নাযিল করা জিনিসের মোকাবিলায় বলে, আমিও এমন জিনিস নাযিল করে দেখিয়ে দেবো? হায়! তুমি যদি জালেমদেরকে সে অবস্থায় দেখতে পেতে যখন তারা মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকবে এবং ফেরেশতারা হাত বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলতে থাকবে। “নাও, তোমাদের প্রাণ বের করে দাও।” তোমরা আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করে যেসব অন্যায় ও অসত্য কথা বলতে এবং তাঁর আয়াতের বিরুদ্ধে যে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে তারই শাস্তি স্বরূপ আজ তোমাদের অবমাননাকর শাস্তি দেয়া হবে।




(6:94)

وَ لَقَدْ جِئْتُمُوْنَا فُرَادٰى كَمَا خَلَقْنٰكُمْ اَوَّلَ مَرَّةٍ وَّ تَرَكْتُمْ مَّا خَوَّلْنٰكُمْ وَرَآءَ ظُهُوْرِكُمْ١ۚ وَ مَا نَرٰى مَعَكُمْ شُفَعَآءَكُمُ الَّذِیْنَ زَعَمْتُمْ اَنَّهُمْ فِیْكُمْ شُرَكٰٓؤُا١ؕ لَقَدْ تَّقَطَّعَ بَیْنَكُمْ وَ ضَلَّ عَنْكُمْ مَّا كُنْتُمْ تَزْعُمُوْنَ۠




অনুবাদ:    (আর আল্লাহ‌ বলবেনঃ) “দেখো এবার তোমরা ঠিক তেমনি নিঃসঙ্গ ও একাকী আমার সামনে হাযির হয়ে গেছো যেমনটি তোমাদের প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, যা কিছু তোমাদের দুনিয়ায় দিয়েছিলাম তা সব তোমরা পেছনে রেখে এসেছো এবং এখন তোমাদের সাথে তোমাদের সেসব সুপারিশকারীদেরকেও দেখছি না যাদের সম্পর্কে তোমরা মনে করতে তোমাদের কার্য সম্পাদন করার ব্যাপারে তাদেরও কিছুটা অবদান আছে। তোমাদের মধ্যকার সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমরা যেসব ধারণা করতে তা সবই তোমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে।”




(6:95)

اِنَّ اللّٰهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَ النَّوٰى١ؕ یُخْرِجُ الْحَیَّ مِنَ الْمَیِّتِ وَ مُخْرِجُ الْمَیِّتِ مِنَ الْحَیِّ١ؕ ذٰلِكُمُ اللّٰهُ فَاَنّٰى تُؤْفَكُوْنَ




অনুবাদ:    আল্লাহই শস্যবীজ ও আঁটি বিদীর্ণকারী। তিনিই জীবিতকে মৃত থেকে বের করেন এবং তিনিই বের করেন মৃতকে জীবিত থেকে। এ সমস্ত কাজ তো আল্লাহই করেন, তাহলে তোমরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন্‌ দিকে ছুটে চলছো?




(6:96)

فَالِقُ الْاِصْبَاحِ١ۚ وَ جَعَلَ الَّیْلَ سَكَنًا وَّ الشَّمْسَ وَ الْقَمَرَ حُسْبَانًا١ؕ ذٰلِكَ تَقْدِیْرُ الْعَزِیْزِ الْعَلِیْمِ




অনুবাদ:    রাতের আবরণ দীর্ণ করে তিনিই ফোটান উষার আলো। তিনিই রাতকে করেছেন প্রশান্তিকাল। চন্দ্র ও সূর্যের উদয়াস্তের হিসেব তিনিই নির্দিষ্ট করেছেন। এসব কিছুই সেই জবরদস্ত ক্ষমতা ও জ্ঞানের অধিকারীর নির্ধারিত পরিমাপ।




(6:97)

وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ لَكُمُ النُّجُوْمَ لِتَهْتَدُوْا بِهَا فِیْ ظُلُمٰتِ الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ١ؕ قَدْ فَصَّلْنَا الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یَّعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    আর তিনিই তারকাগুলোকে বানিয়েছেন তোমাদের জন্য পৃথিবী ও সমুদ্রের গভীর অন্ধকারে পথের দিশা জানার মাধ্যম। দেখো, আমি নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি তাদের জন্য যারা জ্ঞান রাখে।




(6:98)

وَ هُوَ الَّذِیْۤ اَنْشَاَكُمْ مِّنْ نَّفْسٍ وَّاحِدَةٍ فَمُسْتَقَرٌّ وَّ مُسْتَوْدَعٌ١ؕ قَدْ فَصَّلْنَا الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یَّفْقَهُوْنَ




অনুবাদ:    আর তিনিই একটি মাত্র প্রাণসত্তা থেকে তোমাদের সকলকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর প্রত্যেকের জন্য রয়েছে একটি অবস্থান স্থল এবং তাকে সোপর্দ করার একটি জায়গা। এ নিদর্শনগুলো সুস্পষ্ট করে দিয়েছি তাদের জন্য যারা জ্ঞান বুদ্ধি রাখে।




(6:99)

وَ هُوَ الَّذِیْۤ اَنْزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً١ۚ فَاَخْرَجْنَا بِهٖ نَبَاتَ كُلِّ شَیْءٍ فَاَخْرَجْنَا مِنْهُ خَضِرًا نُّخْرِجُ مِنْهُ حَبًّا مُّتَرَاكِبًا١ۚ وَ مِنَ النَّخْلِ مِنْ طَلْعِهَا قِنْوَانٌ دَانِیَةٌ وَّ جَنّٰتٍ مِّنْ اَعْنَابٍ وَّ الزَّیْتُوْنَ وَ الرُّمَّانَ مُشْتَبِهًا وَّ غَیْرَ مُتَشَابِهٍ١ؕ اُنْظُرُوْۤا اِلٰى ثَمَرِهٖۤ اِذَاۤ اَثْمَرَ وَ یَنْعِهٖ١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكُمْ لَاٰیٰتٍ لِّقَوْمٍ یُّؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    আর তিনিই আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। তারপর তার সাহায্যে সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপাদন করেছেন। এরপর তা থেকে সবুজ শ্যামল ক্ষেত ও বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। তারপর তা থেকে ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা উৎপাদন করেছেন। আর খেজুর গাছের মাথি থেকে খেজুরের কাঁদির পর কাঁদি সৃষ্টি করেছেন, যা বোঝার ভারে নুয়ে পড়ে। আর সজ্জিত করেছেন আংগুর, যয়তুন ও ডালিমের বাগান। এসবের ফলগুলো পরস্পরের সাথে সাদৃশ্যও রাখে আবার প্রত্যেকে পৃথক বৈশিষ্ট্যেরও অধিকারী। এ গাছ যখন ফলবান হয় তখন এর ফল ধরা ও ফল পাকার অবস্থাটি একটু গভীর দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করো এসব জিনিসের মধ্যে ঈমানদারদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।




(6:100)

وَ جَعَلُوْا لِلّٰهِ شُرَكَآءَ الْجِنَّ وَ خَلَقَهُمْ وَ خَرَقُوْا لَهٗ بَنِیْنَ وَ بَنٰتٍۭ بِغَیْرِ عِلْمٍ١ؕ سُبْحٰنَهٗ وَ تَعٰلٰى عَمَّا یَصِفُوْنَ۠




অনুবাদ:    এসব সত্ত্বেও লোকেরা জ্বিনদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করলো, অথচ তিনি তাদের সৃষ্টিকর্তা। আর তারা না জেনে বুঝে তাঁর জন্য পুত্র ও কন্যা তৈরী করে ফেললো, অথচ এরা যেসব কথা বলে তা থেকে তিনি পবিত্র এবং তার উর্ধ্বে।




(6:101)

بَدِیْعُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ١ؕ اَنّٰى یَكُوْنُ لَهٗ وَلَدٌ وَّ لَمْ تَكُنْ لَّهٗ صَاحِبَةٌ١ؕ وَ خَلَقَ كُلَّ شَیْءٍ١ۚ وَ هُوَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ




অনুবাদ:    তিনি তো আসমান ও যমীনের উদ্ভাবক। তাঁর কোন সন্তান হতে পারে কেমন করে, যখন তাঁর কোন জীবন সঙ্গিনী নেই? তিনি প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি সবকিছুর জ্ঞান রাখেন।




(6:102)

ذٰلِكُمُ اللّٰهُ رَبُّكُمْ١ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ١ۚ خَالِقُ كُلِّ شَیْءٍ فَاعْبُدُوْهُ١ۚ وَ هُوَ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ وَّكِیْلٌ




অনুবাদ:    এ তো আল্লাহ‌ তোমাদের রব। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। সবকিছুর তিনিই স্রষ্টা। কাজেই তোমরা তাঁরই বন্দেগী করো। তিনি সবকিছুর তত্বাবধায়ক।




(6:103)

لَا تُدْرِكُهُ الْاَبْصَارُ١٘ وَ هُوَ یُدْرِكُ الْاَبْصَارَ١ۚ وَ هُوَ اللَّطِیْفُ الْخَبِیْرُ




অনুবাদ:    দৃষ্টিশক্তি তাঁকে দেখতে অক্ষম কিন্তু তিনি দৃষ্টিকে আয়ত্ব করে নেন। তিনি অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী ও সর্বজ্ঞ।




(6:104)

قَدْ جَآءَكُمْ بَصَآئِرُ مِنْ رَّبِّكُمْ١ۚ فَمَنْ اَبْصَرَ فَلِنَفْسِهٖ١ۚ وَ مَنْ عَمِیَ فَعَلَیْهَا١ؕ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیْكُمْ بِحَفِیْظٍ




অনুবাদ:    দেখো, তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে অন্তর্দৃষ্টির আলো এসে গেছে। এখন যে ব্যক্তি নিজের দৃষ্টিশক্তিকে কাজে লাগাবে, সে নিজেরই কল্যাণ সাধন করবে। আর যে অন্ধ সাজবে, সে নিজেই নিজের ক্ষতি করবে। আমি তো তোমাদের পাহারাদার নই।




(6:105)

وَ كَذٰلِكَ نُصَرِّفُ الْاٰیٰتِ وَ لِیَقُوْلُوْا دَرَسْتَ وَ لِنُبَیِّنَهٗ لِقَوْمٍ یَّعْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    এভাবে আমার আয়াত আমি বার বার বিভিন্ন পদ্ধতিতে বর্ণনা করে থাকি। এ জন্য বর্ণনা করি যাতে এরা বলে, তুমি কারোর কাছ শিখে এসেছো এবং যারা জ্ঞানের অধিকারী তাদের কাছে প্রকৃত সত্যকে উজ্জ্বল করে তুলে ধরতে চাই।




(6:106)

اِتَّبِعْ مَاۤ اُوْحِیَ اِلَیْكَ مِنْ رَّبِّكَ١ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ١ۚ وَ اَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِیْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! সে অহীর অনুসরণ করো, যা তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, কারণ সে একক রব ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং এ মুশরিকদের পেছনে লেগে থেকো না।




(6:107)

وَ لَوْ شَآءَ اللّٰهُ مَاۤ اَشْرَكُوْا١ؕ وَ مَا جَعَلْنٰكَ عَلَیْهِمْ حَفِیْظًا١ۚ وَ مَاۤ اَنْتَ عَلَیْهِمْ بِوَكِیْلٍ




অনুবাদ:    যদি আল্লাহর ইচ্ছা হতো, তাহলে (তিনি নিজেই এমন ব্যবস্থা করতে পারতেন যাতে) এরা শিরক করতো না। তোমাকে এদের ওপর পাহারাদার নিযুক্ত করিনি এবং তুমি এদের অভিভাবকও নও।




(6:108)

وَ لَا تَسُبُّوا الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ فَیَسُبُّوا اللّٰهَ عَدْوًۢا بِغَیْرِ عِلْمٍ١ؕ كَذٰلِكَ زَیَّنَّا لِكُلِّ اُمَّةٍ عَمَلَهُمْ١۪ ثُمَّ اِلٰى رَبِّهِمْ مَّرْجِعُهُمْ فَیُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    আর (হে ঈমানদারগণ!) এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকে তোমরা তাদেরকে গালি দিয়ো না। কেননা, এরা শিরক থেকে আরো খানিকটা অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত যেন আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে। আমি তো এভাবে প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের কার্যক্রমকে সুশোভন করে দিয়েছি। তারপর তাদের ফিরে আসতে হবে তাদের রবের দিকে। তখন তিনি তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদেরকে জানিয়ে দেবেন।




(6:109)

وَ اَقْسَمُوْا بِاللّٰهِ جَهْدَ اَیْمَانِهِمْ لَئِنْ جَآءَتْهُمْ اٰیَةٌ لَّیُؤْمِنُنَّ بِهَا١ؕ قُلْ اِنَّمَا الْاٰیٰتُ عِنْدَ اللّٰهِ وَ مَا یُشْعِرُكُمْ١ۙ اَنَّهَاۤ اِذَا جَآءَتْ لَا یُؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    এরা শক্ত কসম খেয়ে বলছে, যদি কোন নিদর্শন আমাদের সামনে এসে যায় তাহলে আমরা তার প্রতি ঈমান আনবো। হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলে দাও, “নিদর্শন তো রয়েছে আল্লাহর কাছে।” আর তোমাদের কিভাবে বুঝানো যাবে যে, নিদর্শন এসে গেলেও এরা বিশ্বাস করবে না।




(6:110)

وَ نُقَلِّبُ اَفْئِدَتَهُمْ وَ اَبْصَارَهُمْ كَمَا لَمْ یُؤْمِنُوْا بِهٖۤ اَوَّلَ مَرَّةٍ وَّ نَذَرُهُمْ فِیْ طُغْیَانِهِمْ یَعْمَهُوْنَ۠




অনুবাদ:    প্রথমবারে যেমন তারা এর প্রতি ঈমান আনেনি ঠিক তেমনিভাবেই আমি তাদের অন্তর ও দৃষ্টিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি। আমি এদেরকে এদের বিদ্রোহ ও অবাধ্যতার মধ্যে উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াবার জন্য ছেড়ে দিচ্ছি।




(6:111)

وَ لَوْ اَنَّنَا نَزَّلْنَاۤ اِلَیْهِمُ الْمَلٰٓئِكَةَ وَ كَلَّمَهُمُ الْمَوْتٰى وَ حَشَرْنَا عَلَیْهِمْ كُلَّ شَیْءٍ قُبُلًا مَّا كَانُوْا لِیُؤْمِنُوْۤا اِلَّاۤ اَنْ یَّشَآءَ اللّٰهُ وَ لٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ یَجْهَلُوْنَ




অনুবাদ:    যদি আমি তাদের কাছে ফেরেশতাও নাযিল করতাম, মৃতেরাও তাদের সাথে কথা বলতে থাকতো এবং সারা দুনিয়ার সমস্ত জিনিসও তাদের চোখের সামনে একসাথে তুলে ধরতাম, তাহলেও তারা ঈমান আনতো না। তবে তারা ঈমান আনুক এটা যদি আল্লাহর ইচ্ছা হয়, তাহলে অবশ্যি অন্য কথা কিন্তু বেশীর ভাগ লোক অজ্ঞের মতো কথা বলে থাকে।




(6:112)

وَ كَذٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِیٍّ عَدُوًّا شَیٰطِیْنَ الْاِنْسِ وَ الْجِنِّ یُوْحِیْ بَعْضُهُمْ اِلٰى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُوْرًا١ؕ وَ لَوْ شَآءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوْهُ فَذَرْهُمْ وَ مَا یَفْتَرُوْنَ




অনুবাদ:    আর এভাবে আমি সবসময় মনুষ্য জাতীয় শয়তান ও জিন জাতীয় শয়তানদেরকে প্রত্যেক নবীর দুশমনে পরিণত করেছি, তারা ধোঁকা ও প্রতারণার ছলে পরস্পরকে চমকপ্রদ কথা বলতো। তোমার রব চাইলে তারা এমনটি কখনো করতো না। কাজেই তারদেরকে তাদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও, তারা মিথ্যা রচনা করতে থাকুক।




(6:113)

وَ لِتَصْغٰۤى اِلَیْهِ اَفْئِدَةُ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ وَ لِیَرْضَوْهُ وَ لِیَقْتَرِفُوْا مَا هُمْ مُّقْتَرِفُوْنَ




অনুবাদ:    (এসব কিছু আমি তাদেরকে এ জন্য করতে দিচ্ছি যে) যারা আখেরাত বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর এ (সুদৃশ্য) প্রতারণার প্রতি ঝুঁকে পড়ুক, তারা এর প্রতি তুষ্ট থাকুক এবং যেসব দুষ্কর্ম তারা করতে চায় সেগুলো করতে থাকুক।




(6:114)

اَفَغَیْرَ اللّٰهِ اَبْتَغِیْ حَكَمًا وَّ هُوَ الَّذِیْۤ اَنْزَلَ اِلَیْكُمُ الْكِتٰبَ مُفَصَّلًا١ؕ وَ الَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْكِتٰبَ یَعْلَمُوْنَ اَنَّهٗ مُنَزَّلٌ مِّنْ رَّبِّكَ بِالْحَقِّ فَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِیْنَ




অনুবাদ:    এমতাবস্থায় আমি কি আল্লাহ‌ ছাড়া অন্য কোন মীমাংসাকারীর সন্ধান করবো? অথচ তিনি পূর্ণ বিস্তারিত বিবরণসহ তোমাদের কিতাব নাযিল করেছেন। আর যাদেরকে আমি (তোমার আগে) কিতাব দিয়েছিলাম তারা জানে এ কিতাবটি তোমার রবেরই পক্ষ থেকে সত্য সহকারে নাযিল হয়েছে। কাজেই তুমি সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।




(6:115)

وَ تَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَّ عَدْلًا١ؕ لَا مُبَدِّلَ لِكَلِمٰتِهٖ١ۚ وَ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ




অনুবাদ:    সত্যতা ও ইনসাফের দিক দিয়ে তোমার রবের কথা পূর্ণাংগ, তাঁর ফরমানসমূহ পরিবর্তন করার কেউ নেই এবং তিনি সবকিছু শুনেন ও জানেন।




(6:116)

وَ اِنْ تُطِعْ اَكْثَرَ مَنْ فِی الْاَرْضِ یُضِلُّوْكَ عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ اِنْ یَّتَّبِعُوْنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنْ هُمْ اِلَّا یَخْرُصُوْنَ




অনুবাদ:    আর হে মুহাম্মাদ! যদি তুমি দুনিয়ায় বসবাসকারী অধিকাংশ লোকের কথায় চলো তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে। তারা তো চলে নিছক আন্দাজ-অনুমানের ভিত্তিতে এবং তারা কেবল আন্দাজ-অনুমানই করে থাকে।




(6:117)

اِنَّ رَبَّكَ هُوَ اَعْلَمُ مَنْ یَّضِلُّ عَنْ سَبِیْلِهٖ١ۚ وَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِیْنَ




অনুবাদ:    আসলে তোমার রবই ভাল জানেন, কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে আছে আর কে সত্য-সরল পথে অবিচল রয়েছে।




(6:118)

فَكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّٰهِ عَلَیْهِ اِنْ كُنْتُمْ بِاٰیٰتِهٖ مُؤْمِنِیْنَ




অনুবাদ:    এখন যদি তোমরা আল্লাহর আয়াতসমূহ বিশ্বাস করে থাকো, তাহলে যে পশুর ওপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তার গোশ্‌ত খাও।




(6:119)

وَ مَا لَكُمْ اَلَّا تَاْكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّٰهِ عَلَیْهِ وَ قَدْ فَصَّلَ لَكُمْ مَّا حَرَّمَ عَلَیْكُمْ اِلَّا مَا اضْطُرِرْتُمْ اِلَیْهِ١ؕ وَ اِنَّ كَثِیْرًا لَّیُضِلُّوْنَ بِاَهْوَآئِهِمْ بِغَیْرِ عِلْمٍ١ؕ اِنَّ رَبَّكَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِیْنَ




অনুবাদ:    যে জিনিসের ওপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে সেটি না খাওয়ার তোমাদের কি কারণ থাকতে পারে? অথচ যেসব জিনিসের ব্যবহার আল্লাহ‌ নিরূপায় অবস্থা ছাড়া অন্য সব অবস্থায় হারাম করে দিয়েছেন সেগুলোর বিশদ বিবরণ ও তিনি তোমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। অধিকাংশ লোকের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা জ্ঞান ছাড়া নিছক নিজেদের খেয়াল খুশী অনুযায়ী বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলে থাকে। তোমার রব এ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে খুব ভাল করেই জানেন।




(6:120)

وَ ذَرُوْا ظَاهِرَ الْاِثْمِ وَ بَاطِنَهٗ١ؕ اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْسِبُوْنَ الْاِثْمَ سَیُجْزَوْنَ بِمَا كَانُوْا یَقْتَرِفُوْنَ




অনুবাদ:    তোমরা প্রকাশ্য গোনাহসমূহ থেকে বাঁচো এবং গোপন গোনাহসমূহ থেকেও। যারা গোনাহে লিপ্ত হয়, তাদেরকে নিজেদের সব কৃতকর্মের প্রতিফল ভোগ করতেই হবে।




(6:121)

وَ لَا تَاْكُلُوْا مِمَّا لَمْ یُذْكَرِ اسْمُ اللّٰهِ عَلَیْهِ وَ اِنَّهٗ لَفِسْقٌ١ؕ وَ اِنَّ الشَّیٰطِیْنَ لَیُوْحُوْنَ اِلٰۤى اَوْلِیٰٓئِهِمْ لِیُجَادِلُوْكُمْ١ۚ وَ اِنْ اَطَعْتُمُوْهُمْ اِنَّكُمْ لَمُشْرِكُوْنَ۠




অনুবাদ:    আর যে পশুকে আল্লাহর নামে যবেই করা হয়নি তার গোশ্‌ত খেয়ো না। এটা অবশ্যি মহাপাপ। শয়তানরা তাদের সাথীদের অন্তরে সন্দেহ ও আপত্তির উদ্ভব ঘটায়, যাতে তারা তোমাদের সাথে ঝগড়া করতে পারে। কিন্তু যদি তোমরা তাদের আনুগত্য করো তাহলে অবশ্যি তোমরা মুশরিক হবে।




(6:122)

اَوَ مَنْ كَانَ مَیْتًا فَاَحْیَیْنٰهُ وَ جَعَلْنَا لَهٗ نُوْرًا یَّمْشِیْ بِهٖ فِی النَّاسِ كَمَنْ مَّثَلُهٗ فِی الظُّلُمٰتِ لَیْسَ بِخَارِجٍ مِّنْهَا١ؕ كَذٰلِكَ زُیِّنَ لِلْكٰفِرِیْنَ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    যে ব্যক্তি প্রথমে মৃত ছিল, পরে আমি তাকে জীবন দিয়েছি এবং তাকে এমন আলো দিয়েছি যার উজ্জ্বল আভায় সে মানুষের মধ্যে জীবন পথে চলতে পারে, সে কি এমন ব্যক্তির মতো হতে পারে, যে অন্ধকারের বুকে পড়ে আছে এবং কোনক্রমেই সেখানে বের হয় না? কাফেরদের জন্য তো এভাবেই তাদের কর্মকাণ্ডকে সুদৃশ্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে।




(6:123)

وَ كَذٰلِكَ جَعَلْنَا فِیْ كُلِّ قَرْیَةٍ اَكٰبِرَ مُجْرِمِیْهَا لِیَمْكُرُوْا فِیْهَا١ؕ وَ مَا یَمْكُرُوْنَ اِلَّا بِاَنْفُسِهِمْ وَ مَا یَشْعُرُوْنَ




অনুবাদ:    আর এভাবে প্রতিটি লোকালয়ে আমি অপরাধীদের লাগিয়ে দিয়েছি, যাতে তারা নিজেদের প্রতারণা ও প্রবঞ্চনার জাল ছাড়তে পারে। আসলে নিজেদের প্রতারণার জালে তারা নিজেরাই আবদ্ধ হয় কিন্তু তারা এর চেতনা রাখে না।




(6:124)

وَ اِذَا جَآءَتْهُمْ اٰیَةٌ قَالُوْا لَنْ نُّؤْمِنَ حَتّٰى نُؤْتٰى مِثْلَ مَاۤ اُوْتِیَ رُسُلُ اللّٰهِ١ؔۘؕ اَللّٰهُ اَعْلَمُ حَیْثُ یَجْعَلُ رِسَالَتَهٗ١ؕ سَیُصِیْبُ الَّذِیْنَ اَجْرَمُوْا صَغَارٌ عِنْدَ اللّٰهِ وَ عَذَابٌ شَدِیْدٌۢ بِمَا كَانُوْا یَمْكُرُوْنَ




অনুবাদ:    তাদের সামনে কোন আয়াত এলে তারা বলে, “আল্লাহর রসূলদেরকে যে জিনিস দেয়া হয়েছে যতক্ষণ না তা আমাদের দেয়া হয় ততক্ষণ আমরা মানবো না।” আল্লাহ নিজের রিসালাতের কাজ কাকে দিয়ে কিভাবে নেবেন তা তিনি নিজেই ভাল জানেন। এ অপরাধীরা নিজেদের প্রতারণা ও কূট কৌশলের অপরাধে আল্লাহর কাছে অচিরেই লাঞ্ছনা ও কঠিন আযাবের সম্মুখীন হবে।




(6:125)

فَمَنْ یُّرِدِ اللّٰهُ اَنْ یَّهْدِیَهٗ یَشْرَحْ صَدْرَهٗ لِلْاِسْلَامِ١ۚ وَ مَنْ یُّرِدْ اَنْ یُّضِلَّهٗ یَجْعَلْ صَدْرَهٗ ضَیِّقًا حَرَجًا كَاَنَّمَا یَصَّعَّدُ فِی السَّمَآءِ١ؕ كَذٰلِكَ یَجْعَلُ اللّٰهُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ




অনুবাদ:    প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ‌ যাকে সত্যপথ দেখাবার সংকল্প করেন তার বক্ষদেশ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। আর যাকে তিনি গোমরাহীতে নিক্ষেপ করার সংকল্প করেন তার বক্ষদেশ সংকীর্ণ করে দেন এবং এমনভাবে তাকে সংকুচিত করতে থাকেন যে, (ইসলামের কথা চিন্তা করতেই) তার মনে হতে থাকে যেন তার আত্মা আকাশের দিকে উড়ে যাচ্ছে। এভাবে আল্লাহ্‌ (সত্য থেকে দূরে পলায়ন ও সত্যের প্রতি ঘৃণার) আবিলতা ও অপবিত্রতা বেঈমানদের ওপর চাপিয়ে দেন।




(6:126)

وَ هٰذَا صِرَاطُ رَبِّكَ مُسْتَقِیْمًا١ؕ قَدْ فَصَّلْنَا الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یَّذَّكَّرُوْنَ




অনুবাদ:    অথচ এ পথটিই তোমাদের রবের সোজা পথ। আর তার নিদর্শনগুলো তাদের জন্য সুস্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যারা উপদেশ গ্রহণ করে।




(6:127)

لَهُمْ دَارُ السَّلٰمِ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَ هُوَ وَلِیُّهُمْ بِمَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের কাছে শান্তির আবাস এবং তিনি তাদের অভিভাবক। কারণ, তারা সঠিক কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করেছে।




(6:128)

وَ یَوْمَ یَحْشُرُهُمْ جَمِیْعًا١ۚ یٰمَعْشَرَ الْجِنِّ قَدِ اسْتَكْثَرْتُمْ مِّنَ الْاِنْسِ١ۚ وَ قَالَ اَوْلِیٰٓؤُهُمْ مِّنَ الْاِنْسِ رَبَّنَا اسْتَمْتَعَ بَعْضُنَا بِبَعْضٍ وَّ بَلَغْنَاۤ اَجَلَنَا الَّذِیْۤ اَجَّلْتَ لَنَا١ؕ قَالَ النَّارُ مَثْوٰىكُمْ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰهُ١ؕ اِنَّ رَبَّكَ حَكِیْمٌ عَلِیْمٌ




অনুবাদ:    যেদিন আল্লাহ‌ তাদের সবাইকে ঘেরাও করে একত্র করবেন সেদিন তিনি জিনদের সম্বোধন করে বলবেন, “হে জিন সম্প্রদায়! তোমরা তো মানুষদেরকে অনেক বেশী তোমাদের অনুগামী করেছো।” মানুষদের মধ্য থেকে যারা তাদের বন্ধু ছিল তারা বলবে, “হে আমাদের রব! আমাদের মধ্য থেকে প্রত্যেকে প্রত্যেককে খুব বেশী ব্যবহার করেছে এবং তুমি আমাদের জন্য যে সময় নির্ধারিত করেছিলে এখন আমরা সেখানে পৌঁছে গেছি।” আল্লাহ্‌ বলবেন, “বেশ, এখন আগুনই তোমাদের আবাস। সেখানে তোমরা থাকবে চিরকাল।” তা থেকে রক্ষা পাবে একমাত্র তারাই যাদেরকে আল্লাহ্‌ রক্ষা করতে চাইবেন। নিঃসন্দেহে তোমাদের রব জ্ঞানময় ও সবকিছু জানেন।




(6:129)

وَ كَذٰلِكَ نُوَلِّیْ بَعْضَ الظّٰلِمِیْنَ بَعْضًۢا بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ۠




অনুবাদ:    দেখো এভাবে আমি (আখেরাতে) জালেমদেরকে পরস্পরের সাথী বানিয়ে দেবো (দুনিয়ায় তারা এক সাথে মিলে) যা কিছু উপার্জন করেছিল তার কারণে।




(6:130)

یٰمَعْشَرَ الْجِنِّ وَ الْاِنْسِ اَلَمْ یَاْتِكُمْ رُسُلٌ مِّنْكُمْ یَقُصُّوْنَ عَلَیْكُمْ اٰیٰتِیْ وَ یُنْذِرُوْنَكُمْ لِقَآءَ یَوْمِكُمْ هٰذَا١ؕ قَالُوْا شَهِدْنَا عَلٰۤى اَنْفُسِنَا وَ غَرَّتْهُمُ الْحَیٰوةُ الدُّنْیَا وَ شَهِدُوْا عَلٰۤى اَنْفُسِهِمْ اَنَّهُمْ كَانُوْا كٰفِرِیْنَ




অনুবাদ:    (এ সময় আল্লাহ তাদেরকে একথাও জিজ্ঞেস করবেন) “হে জ্বীন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে কি রসূলরা আসেনি, যারা তোমাদেরকে আমার আয়াত শোনাতো এবং এ দিনটির পরিণাম সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করতো?” তারা বলবে, “হ্যাঁ, আমরা নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছি।” আজ দুনিয়ার জীবন এদেরকে প্রতারণা জালে আবদ্ধ করে রেখেছে কিন্তু সেদিন এরা কাফের ছিল বলে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে।




(6:131)

ذٰلِكَ اَنْ لَّمْ یَكُنْ رَّبُّكَ مُهْلِكَ الْقُرٰى بِظُلْمٍ وَّ اَهْلُهَا غٰفِلُوْنَ




অনুবাদ:    (একথা প্রমাণ করার জন্য তাদের কাছ থেকে এ সাক্ষ্য নেয়া হবে যে,) তোমাদের রব জনপদগুলোকে জুলুম সহকারে ধ্বংস করতেন না যখন সেখানকার অধিবাসীরা প্রকৃত সত্য অবগত নয়।




(6:132)

وَ لِكُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوْا١ؕ وَ مَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا یَعْمَلُوْنَ




অনুবাদ:    প্রত্যেক ব্যক্তির মর্যাদা তার কার্য অনুযায়ী হয়। আর তোমার রব মানুষের কাজের ব্যাপারে বেখবর নন।




(6:133)

وَ رَبُّكَ الْغَنِیُّ ذُو الرَّحْمَةِ١ؕ اِنْ یَّشَاْ یُذْهِبْكُمْ وَ یَسْتَخْلِفْ مِنْۢ بَعْدِكُمْ مَّا یَشَآءُ كَمَاۤ اَنْشَاَكُمْ مِّنْ ذُرِّیَّةِ قَوْمٍ اٰخَرِیْنَؕ




অনুবাদ:    তোমার রব কারোর মুখাপেক্ষী নন এবং দয়া ও করুণা তাঁর রীতি। তিনি চাইলে তোমাদের সরিয়ে দিতে এবং তোমাদের জায়গায় তাঁর পছন্দমত অন্য লোকদের এনে বসাতে পারেন, যেমন তিনি তোমাদের আবির্ভূত করেছেন অন্য কিছু লোকের বংশধারা থেকে।




(6:134)

اِنَّ مَا تُوْعَدُوْنَ لَاٰتٍ١ۙ وَّ مَاۤ اَنْتُمْ بِمُعْجِزِیْنَ




অনুবাদ:    তোমাদের কাছে যে জিনিসের ওয়াদা করা হয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই আসবে। আর তোমরা আল্লাহকে অক্ষম করে দেবার ক্ষমতা রাখো না।




(6:135)

قُلْ یٰقَوْمِ اعْمَلُوْا عَلٰى مَكَانَتِكُمْ اِنِّیْ عَامِلٌ١ۚ فَسَوْفَ تَعْلَمُوْنَ١ۙ مَنْ تَكُوْنُ لَهٗ عَاقِبَةُ الدَّارِ١ؕ اِنَّهٗ لَا یُفْلِحُ الظّٰلِمُوْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! বলে দাও, হে লোকেরা, তোমরা নিজেদের জায়গায় কাজ করে যেতে থাকো এবং আমিও নিজের জায়গায় কাজ করে যেতে থাকি, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে পরিণাম কার জন্য মঙ্গলজনক হবে। তবে জালেম কখনো সফলকাম হতে পারে না, এটি একটি চিরন্তন সত্য।




(6:136)

وَ جَعَلُوْا لِلّٰهِ مِمَّا ذَرَاَ مِنَ الْحَرْثِ وَ الْاَنْعَامِ نَصِیْبًا فَقَالُوْا هٰذَا لِلّٰهِ بِزَعْمِهِمْ وَ هٰذَا لِشُرَكَآئِنَا١ۚ فَمَا كَانَ لِشُرَكَآئِهِمْ فَلَا یَصِلُ اِلَى اللّٰهِ١ۚ وَ مَا كَانَ لِلّٰهِ فَهُوَ یَصِلُ اِلٰى شُرَكَآئِهِمْ١ؕ سَآءَ مَا یَحْكُمُوْنَ




অনুবাদ:    এ লোকেরা আল্লাহর জন্য তাঁরই সৃষ্ট ক্ষেত-খামার ও গবাদি পশুর মধ্য থেকে একটি অংশ নির্দিষ্ট করেছে আর নিজেদের ধারণা অনুযায়ী বলছে, এটি আল্লাহর জন্য এবং এটি আমাদের বানানো আল্লাহর শরীকদের জন্য। তারপর যে অংশ তাদের বানানো শরীকদের জন্য, তা তো আল্লাহর কাছে পৌঁছে না কিন্তু যে অংশ আল্লাহর জন্য তা তাদের বানানো শরীকদের কাছে পৌঁছে যায়। কতই না খারাপ ফায়সালা করে এরা!




(6:137)

وَ كَذٰلِكَ زَیَّنَ لِكَثِیْرٍ مِّنَ الْمُشْرِكِیْنَ قَتْلَ اَوْلَادِهِمْ شُرَكَآؤُهُمْ لِیُرْدُوْهُمْ وَ لِیَلْبِسُوْا عَلَیْهِمْ دِیْنَهُمْ١ؕ وَ لَوْ شَآءَ اللّٰهُ مَا فَعَلُوْهُ فَذَرْهُمْ وَ مَا یَفْتَرُوْنَ




অনুবাদ:    আর এভাবেই বহু মুশরিকের জন্য তাদের শরীকরা নিজেদের সন্তান হত্যা করাকে সুশোভন করে দিয়েছে, যাতে তাদেরকে ধ্বংসের আবর্তে নিক্ষেপ করতে এবং তাদের দ্বীনকে তাদের কাছে সংশয়িত করে তুলতে পারে। আল্লাহ চাইলে তারা এমনটি করতো না। কাজেই তাদেরকে দাও, তারা নিজেদের মিথ্যা রচনায় ডুবে থাক।




(6:138)

وَ قَالُوْا هٰذِهٖۤ اَنْعَامٌ وَّ حَرْثٌ حِجْرٌ١ۖۗ لَّا یَطْعَمُهَاۤ اِلَّا مَنْ نَّشَآءُ بِزَعْمِهِمْ وَ اَنْعَامٌ حُرِّمَتْ ظُهُوْرُهَا وَ اَنْعَامٌ لَّا یَذْكُرُوْنَ اسْمَ اللّٰهِ عَلَیْهَا افْتِرَآءً عَلَیْهِ١ؕ سَیَجْزِیْهِمْ بِمَا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ




অনুবাদ:    তারা বলে, এ পশু ও এ ক্ষেত-খামার সুরক্ষিত। এগুলো একমাত্র তারাই খেতে পারে যাদেরকে আমরা খাওয়াতে চাই। অথচ এ বিধি-নিষেধ তাদের মনগড়া। তারপর কিছু পশুর পিঠে চড়া ও তাদের পিঠে মাল বহন করা হারাম করে দেয়া হয়েছে আবার কিছু পশুর ওপর তারা আল্লাহর নাম নেয় না। আর এসব কিছু আল্লাহ‌ সম্পর্কে তাদের মিথ্যা রটনা। শীঘ্রই আল্লাহ‌ তাদেরকে এ মিথ্যা রটনার প্রতিফল দেবেন।




(6:139)

وَ قَالُوْا مَا فِیْ بُطُوْنِ هٰذِهِ الْاَنْعَامِ خَالِصَةٌ لِّذُكُوْرِنَا وَ مُحَرَّمٌ عَلٰۤى اَزْوَاجِنَا١ۚ وَ اِنْ یَّكُنْ مَّیْتَةً فَهُمْ فِیْهِ شُرَكَآءُ١ؕ سَیَجْزِیْهِمْ وَصْفَهُمْ١ؕ اِنَّهٗ حَكِیْمٌ عَلِیْمٌ




অনুবাদ:    আর তারা বলে, এ পশুদের পেটে যা কিছু আছে তা আমাদের পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট এবং আমাদের স্ত্রীদের জন্য সেগুলো হারাম। কিন্তু যদি তা মৃত হয় তাহলে উভয়েই তা খাবার ব্যাপারে শরীক হতে পারে। তাদের এ মনগড়া কথার প্রতিফল আল্লাহ‌ তাদেরকে অবশ্যি দেবেন। অবশ্যি তিনি প্রজ্ঞাময় ও সবকিছু জানেন।




(6:140)

قَدْ خَسِرَ الَّذِیْنَ قَتَلُوْۤا اَوْلَادَهُمْ سَفَهًۢا بِغَیْرِ عِلْمٍ وَّ حَرَّمُوْا مَا رَزَقَهُمُ اللّٰهُ افْتِرَآءً عَلَى اللّٰهِ١ؕ قَدْ ضَلُّوْا وَ مَا كَانُوْا مُهْتَدِیْنَ۠




অনুবাদ:    নিঃসন্দেহে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা নিজেদের সন্তানদেরকে নির্বুদ্ধিতা ও অজ্ঞতাবশত হত্যা করেছে এবং আল্লাহর দেয়া জীবিকাকে আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা ধারণাবশত হারাম গণ্য করেছে নিঃসন্দেহে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং তারা কখনোই সত্য পথ লাভকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।




(6:141)

وَ هُوَ الَّذِیْۤ اَنْشَاَ جَنّٰتٍ مَّعْرُوْشٰتٍ وَّ غَیْرَ مَعْرُوْشٰتٍ وَّ النَّخْلَ وَ الزَّرْعَ مُخْتَلِفًا اُكُلُهٗ وَ الزَّیْتُوْنَ وَ الرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا وَّ غَیْرَ مُتَشَابِهٍ١ؕ كُلُوْا مِنْ ثَمَرِهٖۤ اِذَاۤ اَثْمَرَ وَ اٰتُوْا حَقَّهٗ یَوْمَ حَصَادِهٖ١ۖ٘ وَ لَا تُسْرِفُوْا١ؕ اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الْمُسْرِفِیْنَۙ




অনুবাদ:    তিনি আল্লাহই নানা প্রকার লতাগুল্ম ও বাগান সৃষ্টি করেছেন। খেজুর বীথি সৃষ্টি করেছেন। শস্য উৎপাদন করেছেন, তা থেকে নানা প্রকার খাদ্য সংগৃহীত হয়। যাইতুন ও ডালিম বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন, এদের ফলের মধ্যে বাহ্যিক সাদৃশ্য থাকলেও স্বাদ বিভিন্ন। এগুলোর ফল খাও যখন ফলবান হয় এবং এগুলোর ফসল কাটার সময় আল্লাহর হক আদায় করো আর সীমা অতিক্রম করো না। কারণ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে আল্লাহ‌ পছ্ন্দ করেন না।




(6:142)

وَ مِنَ الْاَنْعَامِ حَمُوْلَةً وَّ فَرْشًا١ؕ كُلُوْا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللّٰهُ وَ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ١ؕ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌۙ




অনুবাদ:    আবার তিনিই গবাদী পশুর মধ্যে এমন পশুও সৃষ্টি করেছেন, যাদের সাহায্যে যাত্রী ও ভারবহনের কাজ নেয়া হয় এবং যাদেরকে খাদ্য ও বিছানার কাজেও ব্যবহার করা হয়। খাও এ জিনিসগুলো থেকে, যা আল্লাহ‌ তোমাদের দান করেছেন এবং শয়তানের অনুসরণ করো না, কারণ সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।




(6:143)

ثَمٰنِیَةَ اَزْوَاجٍ١ۚ مِنَ الضَّاْنِ اثْنَیْنِ وَ مِنَ الْمَعْزِ اثْنَیْنِ١ؕ قُلْ ءٰٓالذَّكَرَیْنِ حَرَّمَ اَمِ الْاُنْثَیَیْنِ اَمَّا اشْتَمَلَتْ عَلَیْهِ اَرْحَامُ الْاُنْثَیَیْنِ١ؕ نَبِّئُوْنِیْ بِعِلْمٍ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَۙ




অনুবাদ:    এ আটটি নর ও মাদী, দু’টি মেষ শ্রেণীর ও দু’টি ছাগল শ্রেণীর। হে মুহাম্মাদ! এদেরকে জিজ্ঞেস করো, আল্লাহ এদের নর দু’টি হারাম করেছেন, না মাদী দু’টি অথবা মেষ ও ছাগলের পেটে যে বাচ্চা আছে সেগুলো? যথার্থ জ্ঞানের ভিত্তিতে আমাকে জানাও যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।




(6:144)

وَ مِنَ الْاِبِلِ اثْنَیْنِ وَ مِنَ الْبَقَرِ اثْنَیْنِ١ؕ قُلْ ءٰٓالذَّكَرَیْنِ حَرَّمَ اَمِ الْاُنْثَیَیْنِ اَمَّا اشْتَمَلَتْ عَلَیْهِ اَرْحَامُ الْاُنْثَیَیْنِ١ؕ اَمْ كُنْتُمْ شُهَدَآءَ اِذْ وَصّٰىكُمُ اللّٰهُ بِهٰذَا١ۚ فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا لِّیُضِلَّ النَّاسَ بِغَیْرِ عِلْمٍ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ۠




অনুবাদ:    আর এভাবে দু’টি উট শ্রেণীর ও দু’টি গাভী শ্রেণীর মধ্য থেকে। জিজ্ঞেস করো, আল্লাহ এদের নর দু’টি হারাম করেছেন, না মাদী দু’টি, না সেই বাচ্চা যা উটনী ও গাভীর পেটে রয়েছে? তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে যখন আল্লাহ‌ তোমাদেরকে এদের হারাম হুকুম দিয়েছিলেন? কাজেই তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে যে আল্লাহর নামে মিথ্যা কথা বলে? তার উদ্দেশ্য হচ্ছে, সঠিক জ্ঞান ছাড়াই মানুষকে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করা। নিঃসন্দেহে আল্লাহ‌ এহেন জালেমদের সত্য-সঠিক পথ দেখান না।




(6:145)

قُلْ لَّاۤ اَجِدُ فِیْ مَاۤ اُوْحِیَ اِلَیَّ مُحَرَّمًا عَلٰى طَاعِمٍ یَّطْعَمُهٗۤ اِلَّاۤ اَنْ یَّكُوْنَ مَیْتَةً اَوْ دَمًا مَّسْفُوْحًا اَوْ لَحْمَ خِنْزِیْرٍ فَاِنَّهٗ رِجْسٌ اَوْ فِسْقًا اُهِلَّ لِغَیْرِ اللّٰهِ بِهٖ١ۚ فَمَنِ اضْطُرَّ غَیْرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَاِنَّ رَبَّكَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলে দাও, যে ওহী আমার কাছে এসেছে তার মধ্যে তো আমি এমন কিছু পাই না যা খাওয়া কারো ওপর হারাম হতে পারে, তবে মরা, বহমান রক্ত বা শুয়োরের গোশ্‌ত ছাড়া। কারণ তা নাপাক। অথবা যদি অবৈধ হয় আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর নামে যবেহ করার কারণে। তবে অক্ষম অবস্থায় যে ব্যক্তি (তার মধ্য থেকে কোন জিনিস খেয়ে নেবে) নাফরমানীর ইচ্ছা না করে এবং প্রয়োজনের সীমা না পেরিয়ে, সেক্ষেত্রে অবশ্যি তোমার রব ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।




(6:146)

وَ عَلَى الَّذِیْنَ هَادُوْا حَرَّمْنَا كُلَّ ذِیْ ظُفُرٍ١ۚ وَ مِنَ الْبَقَرِ وَ الْغَنَمِ حَرَّمْنَا عَلَیْهِمْ شُحُوْمَهُمَاۤ اِلَّا مَا حَمَلَتْ ظُهُوْرُهُمَاۤ اَوِ الْحَوَایَاۤ اَوْ مَا اخْتَلَطَ بِعَظْمٍ١ؕ ذٰلِكَ جَزَیْنٰهُمْ بِبَغْیِهِمْ١ۖ٘ وَ اِنَّا لَصٰدِقُوْنَ




অনুবাদ:    আর যারা ইহুদীবাদ অবলম্বন করেছে তাদের জন্য নখরধারী প্রাণী হারাম করেছিলাম এবং গরু ও ছাগলের চর্বিও, তবে যা তাদের পিঠ, অন্ত্র বা হাড়ের সাথে লেগে থাকে তা ছাড়া। তাদের সীমালংঘনের দরুন তাদেরকে এ শাস্তিটি দিয়েছিলাম। আর এই যা কিছু আমি বলছি সবই সত্য।




(6:147)

فَاِنْ كَذَّبُوْكَ فَقُلْ رَّبُّكُمْ ذُوْ رَحْمَةٍ وَّاسِعَةٍ١ۚ وَ لَا یُرَدُّ بَاْسُهٗ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِیْنَ




অনুবাদ:    এখন তারা যদি তোমার কথা না মানে তাহলে তাদেরকে বলে দাও, তোমাদের রবের অনুগ্রহ সর্বব্যাপী এবং অপরাধীদের ওপর থেকে তাঁর আযাব রদ করা যেতে পারে না।




(6:148)

سَیَقُوْلُ الَّذِیْنَ اَشْرَكُوْا لَوْ شَآءَ اللّٰهُ مَاۤ اَشْرَكْنَا وَ لَاۤ اٰبَآؤُنَا وَ لَا حَرَّمْنَا مِنْ شَیْءٍ١ؕ كَذٰلِكَ كَذَّبَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ حَتّٰى ذَاقُوْا بَاْسَنَا١ؕ قُلْ هَلْ عِنْدَكُمْ مِّنْ عِلْمٍ فَتُخْرِجُوْهُ لَنَا١ؕ اِنْ تَتَّبِعُوْنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنْ اَنْتُمْ اِلَّا تَخْرُصُوْنَ




অনুবাদ:    এ মুশরিকরা (তোমাদের এসব কথার জবাবে) নিশ্চয়ই বলবে, “যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে আমরা শিরকও করতাম না, আমাদের বাপ-দাদারাও শিরক করতো না। আর আমরা কোন জিনিসকে হারামও গণ্য করতাম না।” এ ধরনের উদ্ভট কথা তৈরী করে করে এদের পূর্ববর্তী লোকেরাও সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, এভাবে তারা অবশেষে আমার আযাবের স্বাদ গ্রহণ করেছে। এদেরকে বলে দাও, “তোমাদের কাছে কোন জ্ঞান আছে কি? থাকলে আমার কাছে পেশ করো। তোমরা তো নিছক অনুমানের ওপর চলছো এবং শুধুমাত্র ধারণা ও আন্দাজ করা ছাড়া তোমাদের কাছে আর কিছুই নেই।”




(6:149)

قُلْ فَلِلّٰهِ الْحُجَّةُ الْبَالِغَةُ١ۚ فَلَوْ شَآءَ لَهَدٰىكُمْ اَجْمَعِیْنَ




অনুবাদ:    তাহলে বলো, (তোমাদের এ যুক্তির মোকাবিলায়) প্রকৃত সত্যে উপনীত অকাট্য যুক্তি তো আল্লাহর কাছে আছে। অবশ্যি যদি আল্লাহ‌ চাইতেন তাহলে তোমাদের সবাইকে সঠিক পথ দেখাতেন।




(6:150)

قُلْ هَلُمَّ شُهَدَآءَكُمُ الَّذِیْنَ یَشْهَدُوْنَ اَنَّ اللّٰهَ حَرَّمَ هٰذَا١ۚ فَاِنْ شَهِدُوْا فَلَا تَشْهَدْ مَعَهُمْ١ۚ وَ لَا تَتَّبِعْ اَهْوَآءَ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا وَ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ وَ هُمْ بِرَبِّهِمْ یَعْدِلُوْنَ۠




অনুবাদ:    এদেরকে বলে দাও, “আনো তোমাদের সাক্ষী, যে এ সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহই এ জিনিসগুলো হারাম করেছেন।” তারপর যদি তারা সাক্ষ্য দিয়ে দেয় তাহলে তুমি তাদের সাথে সাক্ষ্য দিয়ো না এবং যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে, যারা আখেরাত অস্বীকারকারী এবং অন্যদেরকে নিজেদের রবের সমকক্ষ দাঁড় করায় কখ্‌খনো তাদের খেয়াল খুশী অনুযায়ী চলো না।




(6:151)

قُلْ تَعَالَوْا اَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَیْكُمْ اَلَّا تُشْرِكُوْا بِهٖ شَیْئًا وَّ بِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا١ۚ وَ لَا تَقْتُلُوْۤا اَوْلَادَكُمْ مِّنْ اِمْلَاقٍ١ؕ نَحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَ اِیَّاهُمْ١ۚ وَ لَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَ مَا بَطَنَ١ۚ وَ لَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِیْ حَرَّمَ اللّٰهُ اِلَّا بِالْحَقِّ١ؕ ذٰلِكُمْ وَصّٰىكُمْ بِهٖ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, এসো আমি তোমাদের শুনাই তোমাদের রব তোমাদের ওপর কি বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন। (এক) তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না। (দুই) পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো। (তিন) দারিদ্রের ভয়ে নিজের সন্তানদেরকে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে জীবিকা দিচ্ছি এবং তাদেরকেও দেবো। (চার) প্রকাশ্যে বা গোপনে অশ্লীল বিষয়ের ধারে কাছেও যাবে না। (পাঁচ) আল্লাহ‌ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন ন্যায় সঙ্গতভাবে ছাড়া তাকে ধ্বংস করো না। তিনি তোমাদের এ বিষয়গুলোর নির্দেশ দিয়েছেন, সম্ভবত তোমরা ভেবে-চিন্তে কাজ করবে।




(6:152)

وَ لَا تَقْرَبُوْا مَالَ الْیَتِیْمِ اِلَّا بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ حَتّٰى یَبْلُغَ اَشُدَّهٗ١ۚ وَ اَوْفُوا الْكَیْلَ وَ الْمِیْزَانَ بِالْقِسْطِ١ۚ لَا نُكَلِّفُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا١ۚ وَ اِذَا قُلْتُمْ فَاعْدِلُوْا وَ لَوْ كَانَ ذَا قُرْبٰى١ۚ وَ بِعَهْدِ اللّٰهِ اَوْفُوْا١ؕ ذٰلِكُمْ وَصّٰىكُمْ بِهٖ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَۙ




অনুবাদ:    (ছয়) আর তোমরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত এতিমের সম্পদের ধারে কাছেও যেয়ো না, তবে উত্তম পদ্ধতিতে যেতে পারো। (সাত) ওজন ও পরিমাপে পুরোপুরি ইনসাফ করো, প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর আমি ততটুকু দায়িত্বের বোঝা রাখি যতটুকু তার সামর্থ্যের মধ্যে রয়েছে। (আট) যখন কথা বলো, ন্যায্য কথা বলো, চাই তা তোমার আত্মীয়-স্বজনের ব্যাপারই হোক না কেন। (নয়) আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ করো। এ বিষয়গুলোর নির্দেশ আল্লাহ‌ তোমাদের দিয়েছেন, সম্ভবত তোমরা নসীহত গ্রহণ করবে।




(6:153)

وَ اَنَّ هٰذَا صِرَاطِیْ مُسْتَقِیْمًا فَاتَّبِعُوْهُ١ۚ وَ لَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِیْلِهٖ١ؕ ذٰلِكُمْ وَصّٰىكُمْ بِهٖ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ




অনুবাদ:    (দশ) এছাড়াও তাঁর নির্দেশ হচ্ছে এইঃ এটিই আমার সোজা পথ। তোমরা এ পথেই চলো এবং অন্য পথে চলো না। কারণ তা তোমাদের তাঁর পথ থেকে সরিয়ে ছিন্নভিন্ন করে দেবে। এ হেদায়াত তোমাদের রব তোমাদেরকে দিয়েছেন, সম্ভবত তোমরা বাঁকা পথ অবলম্বন করা থেকে বাঁচতে পারবে।




(6:154)

ثُمَّ اٰتَیْنَا مُوْسَى الْكِتٰبَ تَمَامًا عَلَى الَّذِیْۤ اَحْسَنَ وَ تَفْصِیْلًا لِّكُلِّ شَیْءٍ وَّ هُدًى وَّ رَحْمَةً لَّعَلَّهُمْ بِلِقَآءِ رَبِّهِمْ یُؤْمِنُوْنَ۠




অনুবাদ:    তারপর আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, যা সৎকর্মশীল মানুষের প্রতি নিয়ামতের পূর্ণতা এবং প্রত্যেকটি জিনিসের বিশদ বিবরণ, সরাসরি পথ নির্দেশ ও রহমত ছিল, (এবং তা এ জন্য বনী ইসরাঈলকে দেয়া হয়েছিল যে,) সম্ভবত লোকেরা নিজেদের রবের সাথে সাক্ষাতের প্রতি ঈমান আনবে।




(6:155)

وَ هٰذَا كِتٰبٌ اَنْزَلْنٰهُ مُبٰرَكٌ فَاتَّبِعُوْهُ وَ اتَّقُوْا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَۙ




অনুবাদ:    আর এভাবেই এ কিতাব আমি নাযিল করেছি একটি বরকতপূর্ণ কিতাব হিসেবে। কাজেই তোমরা এর অনুসরণ করো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করো, হয়তো তোমাদের প্রতি রহম করা হবে।




(6:156)

اَنْ تَقُوْلُوْۤا اِنَّمَاۤ اُنْزِلَ الْكِتٰبُ عَلٰى طَآئِفَتَیْنِ مِنْ قَبْلِنَا١۪ وَ اِنْ كُنَّا عَنْ دِرَاسَتِهِمْ لَغٰفِلِیْنَۙ




অনুবাদ:    এখন তোমরা আর একথা বলতে পারো না যে, কিতাব তো দেয়া হয়েছিল আমাদের পূর্বের দু’টি দলকে এবং তারা কি পড়তো পড়াতো তাতো আমরা কিছুই জানি না।




(6:157)

اَوْ تَقُوْلُوْا لَوْ اَنَّاۤ اُنْزِلَ عَلَیْنَا الْكِتٰبُ لَكُنَّاۤ اَهْدٰى مِنْهُمْ١ۚ فَقَدْ جَآءَكُمْ بَیِّنَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ هُدًى وَّ رَحْمَةٌ١ۚ فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ كَذَّبَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ صَدَفَ عَنْهَا١ؕ سَنَجْزِی الَّذِیْنَ یَصْدِفُوْنَ عَنْ اٰیٰتِنَا سُوْٓءَ الْعَذَابِ بِمَا كَانُوْا یَصْدِفُوْنَ




অনুবাদ:    আর এখন তোমরা এ অজুহাতও দিতে পারো না যে, যদি আমাদের ওপর কিতাব নাযিল করা হতো তাহলে আমরা তাদের চাইতে বেশী সত্য পথানুসারী প্রমাণিত হতাম। তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ, পথ নির্দেশ ও রহমত এসে গেছে। এখন তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে, যে আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা বলে এবং তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? যারা আমার আয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাদের এ সত্য বিমুখতার কারণে তাদেরকে আমি নিকৃষ্টতম শাস্তি দেবো।




(6:158)

هَلْ یَنْظُرُوْنَ اِلَّاۤ اَنْ تَاْتِیَهُمُ الْمَلٰٓئِكَةُ اَوْ یَاْتِیَ رَبُّكَ اَوْ یَاْتِیَ بَعْضُ اٰیٰتِ رَبِّكَ١ؕ یَوْمَ یَاْتِیْ بَعْضُ اٰیٰتِ رَبِّكَ لَا یَنْفَعُ نَفْسًا اِیْمَانُهَا لَمْ تَكُنْ اٰمَنَتْ مِنْ قَبْلُ اَوْ كَسَبَتْ فِیْۤ اِیْمَانِهَا خَیْرًا١ؕ قُلِ انْتَظِرُوْۤا اِنَّا مُنْتَظِرُوْنَ




অনুবাদ:    লোকেরা কি এখন এ জন্য অপেক্ষা করছে যে, তাদের সামনে ফেরেশতারা এসে দাঁড়াবে অথবা তোমার রব নিজেই এসে যাবেন বা তোমার রবের কোন কোন সুস্পষ্ট নিশানী প্রকাশিত হবে? যেদিন তোমরা বিশেষ কোন নিশানী প্রকাশিত হয়ে যাবে তখন এমন কোন ব্যক্তির ঈমান কোন কাজে লাগবে না যে প্রথমে ঈমান আনেনি অথবা যে তার ঈমানের সাহায্যে কোন কল্যাণ অর্জন করতে পারেনি। হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলে দাও, তোমরা অপেক্ষা করো, আমরাও অপেক্ষা করছি।




(6:159)

اِنَّ الَّذِیْنَ فَرَّقُوْا دِیْنَهُمْ وَ كَانُوْا شِیَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِیْ شَیْءٍ١ؕ اِنَّمَاۤ اَمْرُهُمْ اِلَى اللّٰهِ ثُمَّ یُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا یَفْعَلُوْنَ




অনুবাদ:    যারা নিজেদের দ্বীনকে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে নিঃসন্দেহে তাদের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি আল্লাহর ওপর ন্যস্ত রয়েছে। তারা কি করেছে, সে কথা তিনিই তাদেরকে জানাবেন।




(6:160)

مَنْ جَآءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ عَشْرُ اَمْثَالِهَا١ۚ وَ مَنْ جَآءَ بِالسَّیِّئَةِ فَلَا یُجْزٰۤى اِلَّا مِثْلَهَا وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ




অনুবাদ:    যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে হাযির হবে সৎকাজ নিয়ে তার জন্য রয়েছে দশগুণ প্রতিফল আর যে ব্যক্তি অসৎকাজ নিয়ে আসবে সে ততটুকু প্রতিফল পাবে যতটুকু অপরাধ সে করেছে এবং কারোর ওপর জুলুম করা হবে না।




(6:161)

قُلْ اِنَّنِیْ هَدٰىنِیْ رَبِّیْۤ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ١ۚ۬ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰهِیْمَ حَنِیْفًا١ۚ وَ مَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ




অনুবাদ:    হে মুহাম্মাদ! বলো, আমার রব নিশ্চিতভাবেই আমাকে সোজা পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। একদম সঠিক নির্ভুল দ্বীন, যার মধ্যে কোন বক্রতা নেই, ইবরাহীমের পদ্ধতি, যাকে সে একাগ্রচিত্তে একমুখী হয়ে গ্রহণ করেছিল এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।




(6:162)

قُلْ اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ




অনুবাদ:    বলো, আমার নামায, আমার ইবাদাতের সমস্ত অনুষ্ঠান, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছু আল্লাহ‌ রব্বুল আলামীনের জন্য,




(6:163)

لَا شَرِیْكَ لَهٗ١ۚ وَ بِذٰلِكَ اُمِرْتُ وَ اَنَا اَوَّلُ الْمُسْلِمِیْنَ




অনুবাদ:    যার কোন শরীক নেই। এরই নির্দেশ আমাকে দেয়া হয়েছে এবং সবার আগে আমিই আনুগত্যের শির নতকারী।




(6:164)

قُلْ اَغَیْرَ اللّٰهِ اَبْغِیْ رَبًّا وَّ هُوَ رَبُّ كُلِّ شَیْءٍ١ؕ وَ لَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍ اِلَّا عَلَیْهَا١ۚ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِّزْرَ اُخْرٰى١ۚ ثُمَّ اِلٰى رَبِّكُمْ مَّرْجِعُكُمْ فَیُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ فِیْهِ تَخْتَلِفُوْنَ




অনুবাদ:    বলো, আমি কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোন রবের সন্ধান করবো অথচ তিনিই সকল কিছুর মালিক? প্রত্যেক ব্যক্তি যা কিছু উপার্জন করে সেজন্য সে নিজে দায়ী, কেউ কারো বোঝা বহন করবে না তারপর তোমাদের সবাইকে তোমাদের রবের দিকে ফিরে যেতে হবে। সে সময় তোমাদের মত বিরোধের প্রকৃত স্বরূপ তিনি তোমাদের সামনে উন্মুক্ত করে দেবেন।




(6:165)

وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَكُمْ خَلٰٓئِفَ الْاَرْضِ وَ رَفَعَ بَعْضَكُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجٰتٍ لِّیَبْلُوَكُمْ فِیْ مَاۤ اٰتٰىكُمْ١ؕ اِنَّ رَبَّكَ سَرِیْعُ الْعِقَابِ١ۖ٘ وَ اِنَّهٗ لَغَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ۠




অনুবাদ:    তিনিই তোমাদের করেছেন দুনিয়ার প্রতিনিধি এবং যা কিছু তোমাদের দিয়েছেন তাতে তোমাদের পরীক্ষার উদ্দেশ্যে তোমাদের কাউকে অন্যের ওপর অধিক মর্যাদা দান করেছেন। নিঃসন্দেহে তোমার রব শাস্তি দেবার ব্যাপারে অতি তৎপর এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও করুণাময়।


বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

পারিবারিক সুখ শান্তির জন্য দোয়া।

 আল কুরআন, ২৫  আল-ফুরকান, আয়াত: ৭৪ وَ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْیُنٍ وَّ ا...

জনপ্রিয় লেখা সমূহ