৭৩-মুজ্জাম্মিল
(73:0)
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
(73:1)
یٰۤاَیُّهَا الْمُزَّمِّلُۙ
অনুবাদ: হে বস্ত্র মুড়ি দিয়ে শয়নকারী
(73:2)
قُمِ الَّیْلَ اِلَّا قَلِیْلًاۙ
অনুবাদ: রাতের বেলা নামাযে রত থাকো। তবে কিছু সময় ছাড়া
(73:3)
نِّصْفَهٗۤ اَوِ انْقُصْ مِنْهُ قَلِیْلًاۙ
অনুবাদ: অর্ধেক রাত, কিংবা তার চেয়ে কিছু কম করো।
(73:4)
اَوْ زِدْ عَلَیْهِ وَ رَتِّلِ الْقُرْاٰنَ تَرْتِیْلًاؕ
অনুবাদ: অথবা তার ওপর কিছু বাড়িয়ে নাও। আর কুরআন থেমে থেমে পাঠ করো।
(73:5)
اِنَّا سَنُلْقِیْ عَلَیْكَ قَوْلًا ثَقِیْلًا
অনুবাদ: আমি অতি শীঘ্র তোমার ওপর একটি গুরুভার বাণী নাযিল করবো।
(73:6)
اِنَّ نَاشِئَةَ الَّیْلِ هِیَ اَشَدُّ وَطْاً وَّ اَقْوَمُ قِیْلًاؕ
অনুবাদ: প্রকৃতপক্ষে রাতের বেলা জেগে ওঠা প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বেশী কার্যকর এবং যথাযথভাবে কুরআন পড়ার জন্য উপযুক্ত সময়
(73:7)
اِنَّ لَكَ فِی النَّهَارِ سَبْحًا طَوِیْلًاؕ
অনুবাদ: দিনের বেলা তো তোমার অনেক ব্যস্ততা রয়েছে।
(73:8)
وَ اذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ وَ تَبَتَّلْ اِلَیْهِ تَبْتِیْلًاؕ
অনুবাদ: নিজ প্রভুর নাম স্মরণ করতে থাকো। এবং সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাঁরই জন্য হয়ে যাও।
(73:9)
رَبُّ الْمَشْرِقِ وَ الْمَغْرِبِ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ فَاتَّخِذْهُ وَكِیْلًا
অনুবাদ: তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের মালিক। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তাই তাঁকেই নিজের উকীল হিসেবে গ্রহণ করো।
(73:10)
وَ اصْبِرْ عَلٰى مَا یَقُوْلُوْنَ وَ اهْجُرْهُمْ هَجْرًا جَمِیْلًا
অনুবাদ: আর লোকেরা যা বলে বেড়াচ্ছে সে বিষয়ে ধৈর্যধারণ করো এবং ভদ্রভাবে তাদের থেকে আলাদা হয়ে যাও।
(73:11)
وَ ذَرْنِیْ وَ الْمُكَذِّبِیْنَ اُولِی النَّعْمَةِ وَ مَهِّلْهُمْ قَلِیْلًا
অনুবাদ: এসব মিথ্যা আরোপকারী, সম্পদশালী লোকদের সাথে বুঝাপড়ার ব্যাপারটা তুমি আমার ওপর ছেড়ে দাও। আর কিছু কালের জন্য এদেরকে এ অবস্থায়ই থাকতে দাও।
(73:12)
اِنَّ لَدَیْنَاۤ اَنْكَالًا وَّ جَحِیْمًاۙ
অনুবাদ: আমার কাছে (এদের জন্য) আছে শক্ত বেড়ি, জ্বলন্ত আগুন,
(73:13)
وَّ طَعَامًا ذَا غُصَّةٍ وَّ عَذَابًا اَلِیْمًاۗ
অনুবাদ: গলায় আটকে যাওয়া খাবার এবং যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
(73:14)
یَوْمَ تَرْجُفُ الْاَرْضُ وَ الْجِبَالُ وَ كَانَتِ الْجِبَالُ كَثِیْبًا مَّهِیْلًا
অনুবাদ: এসব হবে সেদিন যেদিন পৃথিবী ও পর্বতমালা কেঁপে উঠবে এবং পাহাড় গুলোর অবস্থা হবে এমন যেন বালুর স্তুপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে।
(73:15)
اِنَّاۤ اَرْسَلْنَاۤ اِلَیْكُمْ رَسُوْلًا١ۙ۬ شَاهِدًا عَلَیْكُمْ كَمَاۤ اَرْسَلْنَاۤ اِلٰى فِرْعَوْنَ رَسُوْلًاؕ
অনুবাদ: আমি তোমাদের নিকট একজন রসূল পাঠিয়েছি তোমাদের জন্য সাক্ষী স্বরূপ যেমন ফেরাউনের নিকট একজন রসূল পাঠিয়ে ছিলাম।
(73:16)
فَعَصٰى فِرْعَوْنُ الرَّسُوْلَ فَاَخَذْنٰهُ اَخْذًا وَّبِیْلًا
অনুবাদ: দেখো, ফেরাউন যখন সে রসূলের কথা মানলো না তখন আমি তাকে কঠোরভাবে পাকড়াও করলাম।
(73:17)
فَكَیْفَ تَتَّقُوْنَ اِنْ كَفَرْتُمْ یَوْمًا یَّجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِیْبَاۗۖ
অনুবাদ: তোমরা যদি মানতে অস্বীকার করো তাহলে সেদিন কিভাবে রক্ষা পাবে যেদিনটি শিশুকে বৃদ্ধ বানিয়ে দেবে?
(73:18)
اِ۟لسَّمَآءُ مُنْفَطِرٌۢ بِهٖ١ؕ كَانَ وَعْدُهٗ مَفْعُوْلًا
অনুবাদ: যেদিনের কঠোরতায় আকাশ মণ্ডল বিদীর্ণ হয়ে যেতে থাকবে? আল্লাহর প্রতিশ্রুতি তো পূর্ণ হবেই।
(73:19)
اِنَّ هٰذِهٖ تَذْكِرَةٌ١ۚ فَمَنْ شَآءَ اتَّخَذَ اِلٰى رَبِّهٖ سَبِیْلًا۠
অনুবাদ: এ একটি উপদেশ বাণী। অতএব যে চায় সে তার প্রভুর পথ অবলম্বন করুক।
(73:20)
اِنَّ رَبَّكَ یَعْلَمُ اَنَّكَ تَقُوْمُ اَدْنٰى مِنْ ثُلُثَیِ الَّیْلِ وَ نِصْفَهٗ وَ ثُلُثَهٗ وَ طَآئِفَةٌ مِّنَ الَّذِیْنَ مَعَكَ١ؕ وَ اللّٰهُ یُقَدِّرُ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ١ؕ عَلِمَ اَنْ لَّنْ تُحْصُوْهُ فَتَابَ عَلَیْكُمْ فَاقْرَءُوْا مَا تَیَسَّرَ مِنَ الْقُرْاٰنِ١ؕ عَلِمَ اَنْ سَیَكُوْنُ مِنْكُمْ مَّرْضٰى١ۙ وَ اٰخَرُوْنَ یَضْرِبُوْنَ فِی الْاَرْضِ یَبْتَغُوْنَ مِنْ فَضْلِ اللّٰهِ١ۙ وَ اٰخَرُوْنَ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ۖ٘ فَاقْرَءُوْا مَا تَیَسَّرَ مِنْهُ١ۙ وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَقْرِضُوا اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا١ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ هُوَ خَیْرًا وَّ اَعْظَمَ اَجْرًا١ؕ وَ اسْتَغْفِرُوا اللّٰهَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ۠
অনুবাদ: হে নবী, তোমার রব জানেন যে, তুমি কোন সময় রাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, কোন সময় অর্ধাংশ এবং কোন সময় এক তৃতীয়াংশ সময় ইবাদতে দাঁড়িয়ে কাটিয়ে দাও। তোমার সঙ্গী একদল লোকও এ কাজ করে। রাত এবং দিনের সময়ের হিসেব আল্লাহই রাখেন। তিনি জানেন, তোমরা সময়ের সঠিক হিসেব রাখতে পারো না। তাই তিনি তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। এখন থেকে কুরআন শরীফের যতটুকু স্বাচ্ছন্দে পড়তে পারবে ততটুকুই পড়বে। তিনি জানেন, তোমাদের মধ্যকার কিছু লোক হবে অসুস্থ, কিছু লোক আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে ভ্রমণরত, এবং কিছু লোক আল্লাহর পথে লড়াই করে। তাই কুরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায় ততটাই পড়তে থাকো। নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে “কর্জে হাসানা” দিতে থাকো। তোমরা নিজের জন্য যে পরিমাণ কল্যাণ অগ্রিম পাঠিয়ে দেবে তা আল্লাহর কাছে প্রস্তুত পাবে। সেটিই অধিক উত্তম এবং পুরস্কার হিসেবে অনেক বড়। আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।