. . আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি মধ্যপন্থী জাতিতে পরিণত করেছি, যাতে
তোমরা দুনিয়াবাসীদের ওপর সাক্ষী হতে পারো এবং রাসূল সা: হতে পারেন তোমাদের ওপর
সাক্ষী’ (সূরা বাকারা-১৪৩)।
গোঁড়ামি ও চরমপন্থা শব্দ দু’টি সামনে আসলে বনি ইসরাইল জাতির ইতিহাস
হৃদয় পটে ভেসে উঠে। এ জাতির প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল গোঁড়ামি ও
চরমপন্থা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বনি ইসরাইলদের হিদায়াতের জন্য অসংখ্য নবী ও রাসূল
পাঠিয়েছিলেন এবং পৃথিবীবাসীর নেতৃত্বের আসনে সমাসীন করে আল্লাহ তায়ালা তাদের
ইতিহাসকে অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী করেছিলেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে বনি
ইসরাইল! আমার সেই নিয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আমি তোমাদের দান করেছিলাম এবং এ
কথাটিও যে আমি দুনিয়ার সমস্ত জাতির ওপর তোমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছিলাম’ (সূরা
বাকারা-৪৮)। পৃথিবীর ইতিহাসের এক দীর্ঘকালব্যাপী তারা এ নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত
ছিল। কিন্তু গোঁড়ামি ও চরমপন্থার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদেরকে নেতৃত্বের
আসন থেকে অপসারিত করে মধ্যমপন্থী জাতি হিসেবে ‘উম্মতে মুহাম্মদ সা:-এর হাতে নেতৃত্বের
দণ্ড তুলে দিলেন। আল কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় ইসরাইল জাতির গোঁড়ামির ইতিহাস বর্ণিত
হয়েছে। তাদের গোঁড়ামির ইতিহাসে বহু ঘটনা মানবতার জন্য অনন্তকাল উজ্জ্বল
দিকনির্দেশনা লাভের দীপশিখা হিসেবে কাজ করবে।’ আল কুরআনের ইতিহাসে পৃথিবীর
ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগুলোর ধ্বংসের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো চরমপন্থা অবলম্বন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘পূর্ববর্তী ইবরাহিমের জাতি এবং আদ, সামুদ ও
নুহের জাতিসমূহ এবং মাদায়েনবাসী ও মুতাফিকাতধারীদের ইতিহাস কি তারা জানে না? তাদের
কাছে নবীরা সুস্পষ্ট নির্দেশমালা নিয়ে এসেছিলেন। আল্লাহ তাদের ওপর জুলুম করেননি, বরং
তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল। পক্ষান্তরে ঈমানদার নারী-পুরুষরা পরস্পরের
মিত্র ও সহযোগী। তারা ভালো কাজের আদেশ করে ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে’ (সূরা
তাওবা ৭০-৭১)।